Category: রাজনীতি

  • কলকাতায় গোপন কার্যালয় খুলেছে আ’লীগ

    কলকাতায় গোপন কার্যালয় খুলেছে আ’লীগ

    বিবিসি বাংলার অনুসন্ধান

    কলকাতা লাগোয়া উপনগরীটাতে শয়ে শয়ে বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স, রাত-দিন লাখ লাখ মানুষের ভিড় সেখানে। ব্যস্ত এই এলাকায় একটি বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সে এমন কয়েকজন যাতায়াত করছেন, যাদের কয়েক মাস আগেও সেখানে দেখা যেত না। ওই বাণিজ্যিক পরিসরে যাতায়াত করেন, এমন বেশিরভাগই চেনেন না এই নবাগতদের, চেনার কথাও নয়।

    তবে এদের অনেকেই মাত্র এক বছর আগেও বাংলাদেশের সবথেকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। তারা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলির শীর্ষ এবং মধ্যম স্তরের নেতা।

    তারা যে বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সটিতে যাতায়াত করছেন কয়েক মাস ধরে, সেখানেই ‘দলীয় দফতর’ খুলেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।  এই ‘পার্টি অফিস’টি নতুন।

    এর আগে, ২০২৪ সালের পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পরের কয়েক মাসে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে যারা ভারতে অবস্থান করছেন, তারা নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো বৈঠক বা দলীয় দফতরের কাজকর্ম চালাতেন নিজেদের বাসাবাড়িতেই

    বড় বৈঠকগুলি অবশ্য করতে হত কোনো রেস্তরা বা ব্যাঙ্কয়েট হল ভাড়া করে। সেকারণেই একটা নির্দিষ্ট ‘পার্টি অফিস’এর দরকার ছিল বলে জানাচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

    কীরকম সেই ‘পার্টি অফিস’?

    বাণিজ্যিক পরিসরটির পেছনের দিকের ভবনটির আট তলায় লিফট দিয়ে উঠে বাঁদিকে গেলেই সার দিয়ে বাণিজ্যিক সংস্থার দফতর। করিডোরের দুদিকে হাল্কা বাদামী রঙের একের পর এক দরজা। তারমধ্যেই একটিতে আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস। শুধু বাইরে কেন, পাঁচশো বা ছয়শো স্কোয়ার ফুটের ঘরটিতে উঁকি মারলেও কেউ বুঝতে পারবেন না যে এই ঘরটির সঙ্গে কোনোভাবে আওয়ামী লীগ জড়িত আছে।

    কোনো সাইন বোর্ড, শেখ হাসিনা অথবা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের কোনো ছবি কোথাও নেই ঘরটির বাইরে বা ভেতরে।

    “বঙ্গবন্ধু বা নেত্রীর কোনো ছবি, সাইনবোর্ড কোনো কিছুই আমরা রাখি নি খুবই সচেতন ভাবে। আমরা চাইনি যে এই ঘরটার পরিচিতি প্রকাশ করতে। এমনকি একটা দলীয় দফতরে যেসব ফাইল ইত্যাদি থাকে, সেসবও এখানে রাখা হয় না। নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ, বৈঠক ইত্যাদির জন্য একটা ঘর দরকার ছিল, এটা পাওয়া গেছে। এটাকে আমরা পার্টি অফিসই বলি, কিন্তু আদতে এটা একটা বাণিজ্যিক অফিস। আগে যে সংস্থা কাজ করত এখানে, তাদেরই ছেড়ে যাওয়া চেয়ার, টেবিল এসবই আমরা ব্যবহার করি,” বলছিলেন একজন আওয়ামী লীগ নেতা।

    তিনিই জানালেন, ৩০-৩৫ জনের বৈঠক এই দফতরেই হয়ে যায়, কিন্তু একটু চাপাচাপি করে বসতে হয়। ছোটখাটো বৈঠক বিভিন্ন নেতাদের বাসাবাড়িতে এখনও হয়। তবে বড় বৈঠকগুলি, যেখানে শ দুয়েক নেতা-কর্মী হাজির হওয়ার কথা, সেরকম বৈঠকের জন্য কোনো ব্যাঙ্কয়েট হল বা কোনো রেস্তরাঁর একটি অংশ ভাড়া নিয়ে নেওয়া হয়।

    কারা যাতায়াত করেন ‘পার্টি অফিসে’?

    গত বছরের পাঁচই অগাস্টের পর বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলির অনেক শীর্ষ নেতা এবং প্রাক্তন মন্ত্রীই কলকাতা বা তার আশপাশের অঞ্চলে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছেন।

    এর বাইরে বিভিন্ন পেশাজীবী, সরকারি কর্মচারী, পুলিশ কর্মকর্তা এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাও চলে এসেছেন ভারতে। মাস ছয়েক আগে আওয়ামী লীগের সূত্রগুলি জানিয়েছিল যে অন্তত ৭০ জন সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জেলার সভাপতি-সম্পাদক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, মেয়র সহ শীর্ষ নেতৃত্বের প্রায় দুশো জন কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে থাকছেন।

    এদের কেউ সপরিবারে থাকেন, আবার কোথাও একসঙ্গে কয়েকজন মিলেও একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন। কারও পরিবার মাঝে মাঝে বাংলাদেশ থেকে এসেও কিছুদিন কাটিয়ে যান।

    “এখন যে সংখ্যাটা খুব বেশী বেড়েছে তা নয়। বর্তমানে দ্বাদশ সংসদের ৮০ জনের মতো সংসদ সদস্য এবং তারও আগে সংসদ সদস্য ছিলেন, এমন ১০-১২ জন নেতা আছেন এখানে। আবার এমনও কয়েকজন এসেছেন যারা কলকাতায় এসে আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা অন্যান্য দেশে চলে গেছেন,” বলছিলেন এক আওয়ামী লীগ নেতা।

    সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতারাও থাকেন কলকাতার আশেপাশেই।

    কলকাতা বা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আওয়ামী লীগের যে শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বাস করছেন, তাদের প্রায় সবাই ‘পার্টি অফিসে’ যাতায়াত করে থাকেন।

    “তবে অফিস খোলার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। যেরকম প্রয়োজন, সেরকমই আসেন নেতারা। আবার রোজই যে সবাই আসেন, তাও নয়। আসলে প্রয়োজনীয়তা ছিল একটা নির্দিষ্ট জায়গা গড়ে তোলা, সে জন্যই এই পার্টি অফিস,” জানাচ্ছিলেন ওই নেতা।

    আওয়ামী লীগের এই নতুন পার্টি দফতরের ব্যাপারে ওই বাণিজ্যিক পরিসরে যাতায়াত করা সাধারণ মানুষ যে কিছু জানবেন না, সেটাই স্বাভাবিক।

    দলেরও কোন স্তরের নেতা-কর্মীরা এই দফতরের ব্যাপারে কতটা জানেন, সেটা জানা যায় নি।

    কিন্তু এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে ভারতীয় গোয়েন্দারা এই দফতরের ব্যাপারে জানেন এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের শীর্ষ স্তরের অনুমোদন ছাড়া এই দলীয় দফতর থেকে আওয়ামী লীগের কাজকর্ম চলতে পারত না।

    যেভাবে দল চলছে এক বছর ধরে

    গত একবছরের কিছুটা কম সময় ধরে ভারত থেকেই আওয়ামী লীগ পরিচালিত হচ্ছে। দলটির নেত্রী শেখ হাসিনা দিল্লির কাছাকাছি কোথাও থাকেন, আর বড় অংশ থাকেন কলকাতা সংলগ্ন অঞ্চলে।

    তবে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্র লীগের সভাপতি সাদ্দাম হুসেইন বলছিলেন, “এই ধারণাটা ঠিক নয় যে ভারত থেকে দল চলছে। মূল দল বা সহযোগী সংগঠনগুলোর কতজন নেতা-ই বা ভারত অথবা অন্যান্য দেশে রয়েছেন? বেশিরভাগ তো এখনও বাংলাদেশেই আছেন।”

    কিন্তু দলের নেত্রী শেখ হাসিনা এবং শীর্ষ নেতৃত্বের একটা বড় অংশ ভারতে আছেন বলে সেখান থেকেই যে রাজনৈতিক দিশা-নির্দেশ দেওয়া বা দলীয় অবস্থান চূড়ান্ত হবে, সেটাই স্বাভাবিক।

    তবুও দু সপ্তাহ আগে পর্যন্তও শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সরাসরি দেখা হয় নি দল-নেত্রীর।

    গত ৩১শে জুলাই শীর্ষ নেতৃত্বের কয়েকজনকে দিল্লিতে এক বৈঠকে ডেকেছিলেন শেখ হাসিনা।

    আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা ওই বৈঠকের বিষয়টি বিবিসি বাংলার কাছে নিশ্চিত করেছিলেন, তবে বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, কোথায় বৈঠক হয়েছে, সে ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি ওই নেতারা।

    দলের নেত্রীর সঙ্গে ওই বৈঠকটি ছাড়া এবং নিজেদের মধ্যে সশরীরে দেখা সাক্ষাৎ এবং বৈঠক ছাড়া দলটির বাকি সব কাজই চলে ভার্চুয়াল মাধ্যমে।

    বিভিন্ন স্তরের নেতা কর্মীদের জন্য আলাদা হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ, টেলিগ্রাম গ্রুপ ইত্যাদি গড়া হয়েছে। এছাড়া নিয়মিতই লাইভ অনুষ্ঠান করে থাকে দলটি। এরকম লাইভ অনুষ্ঠানে মাঝে মাঝেই যোগ দেন শেখ হাসিনা নিজেও।

    সেসব আলোচনাগুলিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা যেমন হয়, তেমনই আবার মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মী – যারা বাংলাদেশেই থেকে গেছেন, তাদের নির্দেশনাও দেওয়া হয়ে থাকে।

    প্রাক্তন সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ বলছিলেন, “তথ্য প্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের ফলে আমরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে পারছি, তাদের মতামত জানতে পারছি, কী করণীয় সে ব্যাপারে নির্দেশনা দিতে পারছি।

    “এই ভার্চুয়াল মাধ্যমে বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে তরুণ প্রজন্মের। কোনো একটা ব্যবস্থা বদলানোতে এই তরুণ প্রজন্মের বড় ভূমিকা থাকে। আমরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাদের কাছেই পৌঁছানোর চেষ্টা করছি,” বলছিলেন মি. দেবনাথ।

    ‘কর্মীরা দেশে মার খাচ্ছেন, নেতারা কেন ভারতে?’

    সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে মাঝে মাঝেই এই প্রশ্ন ওঠে যে আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা যখন দেশে মার খাচ্ছেন, গ্রেফতার হয়ে জেলে যাচ্ছেন, তখন শীর্ষ নেতৃত্বের একটা বড় অংশ কেন ভারতে পালিয়ে আছেন।

    “এই প্রশ্ন ওঠা যে খুব অযৌক্তিক তা নয়। কিন্তু বাস্তবতা হল, ১৯৭১ এ যদি তখনকার নেতৃত্ব ভারতে চলে এসে প্রবাসী সরকার গঠন না করতেন, তাহলে কী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা করা সম্ভব হত? আমি ৭১-এর সঙ্গে তুলনা করছি না বর্তমান সময়ের, কিন্তু এরকম উদাহরণ আমাদের দেশেও রয়েছে, অন্যান্য দেশেও আছে যে বিদেশ থেকে দল পরিচালনা করে, শক্তি সঞ্চয় করে দেশে ফিরে ক্ষমতা দখল করেছেন নেতারা। পাকিস্তানে নওয়াজ শরিফ বা বেনজির ভুট্টো বলুন বা আমাদের দেশের তারেক রহমান। সবাই তো বিদেশ থেকেই দল পরিচালনা করেছেন বা এখনও করছেন,” বলছিলেন প্রাক্তন সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ।

    তার প্রশ্ন, “দেশে থাকলে হয় জেলে থাকতে হত, মেরেও ফেলতে পারত। কিন্তু তাহলে আমাদের যে রাজনৈতিক কাজকর্ম – বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরা, দলকে আবারও সংগঠিত করা – সেগুলো কি আমরা করতে পারতাম?”

    নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র লীগের সভাপতিও ভারতে

    বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র লীগের সভাপতি সাদ্দাম হুসেইন ভারতে অবস্থান করছেন গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে।

    তিনি বলছিলেন, “গত একবছর ধরে ক্যাম্পাসটা খুব মিস করি। দেশে থাকলেও যে গত এক বছরে ক্যাম্পাসে যেতে পারতাম তা নয়।

    “হাজার হাজার ছাত্রলীগের কর্মী-সমর্থক তারা তো দেশে থেকেও ক্যাম্পাসে যেতে পারছেন না একবছর ধরে। তাদের ক্লাস করতে দেওয়া হয় না, তারা পরীক্ষা দিতে পারেন না, পাশ করলেও সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে না। এদের সবার শিক্ষাক্রমটাই শেষ করে দেওয়া হয়েছে,” বলছিলেন মি. হোসেইন।

    “এটা যে শুধু ছাত্রলীগের কর্মীদের সঙ্গে করা হচ্ছে তা নয়। আওয়ামী লীগ করেন বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এমন পরিবারের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গেও এই একই ঘটনা হচ্ছে। শুধু যে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে হচ্ছে, তাও নয়। এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারে নি বহু ছাত্রছাত্রী – শুধুমাত্র তারা আওয়ামী লীগ ঘরানার পরিবারের সন্তান বলে,” বলছিলেন সাদ্দাম হোসেইন।

    অর্থায়ন কী ভাবে হচ্ছে?

    ভার্চুয়াল মাধ্যমে দলীয় প্রচার প্রচারণার জন্য খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় না ঠিকই, কিন্তু খরচ তো আছে।

    আবার যেসব নেতা কর্মীরা ভারতে অবস্থান করছেন, তাদের ব্যক্তিগত খরচও চালাতে হয়। কীভাবে সেসবের জন্য অর্থের সংস্থান হচ্ছে?

    আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বিবিসিকে বলেছেন, দেশে,বিদেশে থাকা শুভাকাঙ্খীরাই তাদের খরচ চালাচ্ছেন।

    দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদেরের কথায়, “সাংগঠনিক ভাবে অগাস্টের পরে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে, সেই অন্ধকার অতিক্রম করা কঠিন কাজ। যেসব নেতা-কর্মী দেশে বা বিদেশে আছেন, তারাই এই দু:সময়ে এগিয়ে আসছেন, অর্থ সাহায্য করছেন। কর্মীরা এখানে কষ্ট করেই আছেন, তবে মনোবলই আমাদের সম্বল।”

    আরেক নেতা নাম উল্লেখ না করার শর্তে বলছিলেন, দেশ থেকে তার পরিবার-পরিজন এবং সহকর্মীরা প্রয়োজন মতো অর্থ পাঠিয়ে দেন।

    “তবে এই একবছরে আমাদের জীবনযাত্রায় অনেক পরিবর্তন আনতে হয়েছে,” বলছিলেন পঙ্কজ দেবনাথ।

    তার কথায়, “আমরা যে এখানে মানবেতর জীবন যাপন করছি, বা ৭১-এর যুদ্ধের সময়ের মতো শরণার্থী শিবিরে থাকছি তা নয়। কিন্তু আমাদের মধ্যে যাদের মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত জীবনযাত্রা ছিল, সে সবই পরিবর্তন করতে হয়েছে। যারা ঢাকায় হয়তো গাড়ি ছাড়া চলতেন না, তাদের এখন কলকাতার গণ-পরিবহন ব্যবহার করতে হচ্ছে।

    “যেমন আমি একটি ফ্ল্যাটে আরও তিনজনের সঙ্গে থাকি। বাসে, ট্রেনে বা মেট্রো রেলে যাতায়াত করি। আবার সহকর্মীদের মোটরসাইকেল বা বাইকেও চেপে ঘোরাঘুরি করি। যদি কয়েকজন মিলে একসঙ্গে কোথাও যেতে হয়, তখন হয়তো ট্যাক্সিতে উঠলাম। ভাড়াটা ভাগাভাগি করে নিলে গায়ে লাগে না। আসলে সঞ্চিত অর্থে যতটা স্বল্প খরচে চলা যায়,” বলছিলেন মি. দেবনাথ।

    কিন্তু কতদিন থাকবেন তারা দেশ ছেড়ে?

    ওবায়েদুল কাদের বলছেন, “দিনক্ষণ ঠিক করে ওভাবে তো রাজনৈতিক লড়াই হয় না, আবার লড়াই ছাড়া উপায়ও নেই।”

     

    সৌজন্য : বিবিসি বাংলা

  • আসনের সীমানা পরিবর্তনে বৈষম্যের শিকার আশাশুনি-শ্যামনগরের মানুষ

    আসনের সীমানা পরিবর্তনে বৈষম্যের শিকার আশাশুনি-শ্যামনগরের মানুষ

    সাতক্ষীরার দুটি সংসদীয় আসন পুনর্ববিন্যাস সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশন কর্তৃক খসড়া গেজেট প্রকাশ করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন জেলার আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার রাজনৈতিক দলের নেতারা। বৈষম্যের শিকার হয়েছে উল্লেখ করে তারা প্রকাশিত গেজেট বাতিল করে পূর্বের ন্যায় আসন বিন্যাসের দাবি জানিয়েছেন।

    এদিকে আসন বিন্যাসের খবর জানার পরপরই বুধবার রাতে শ্যামনগরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। তারা নির্বাচন কমিশনারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানায়। একই সাথে আজ বৃহস্পতিবার বিকালে আশাশুনি উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে উপজেলা বিএনপি।

    সাতক্ষীরা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এর উত্তরে যশোর, পূর্বে খুলনা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অবস্থিত। ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধে ভরপুর এ জেলা। ১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ৫টি সংসদীয় আসন নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা গঠিত হয়। কিন্তু ২০০৬ সালে ১টি আসন বিলুপ্ত করে, করা হয় ৪টি আসন। যা এই অঞ্চলের সঙ্গে বৈষম্য এবং মানুষের মধ্যে একটি ক্ষোভ সৃষ্টি করে। ফের সাতক্ষীরার দুটি আসন বিন্যাসের খবরে নতুন করে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে বিএনপি ও জামায়াত দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে।

    সাতক্ষীরা-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক ডক্টর মনিরুজ্জামান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে আমরা প্রয়োজনে শ্যামনগরের সর্বস্তরের জনসাধারণকে সাথে নিয়ে শ্যামনগর থেকে ঢাকা পর্যন্ত লং মার্চ করব।

    শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সামিউল আযম মনির বলেন, আমরা এই আসন বিন্যাসের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনারের গেজেট বাতিল করে পূর্বের আসন বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছি।

    আশাশুনি উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশনারের এই সিদ্ধান্ত আমরা মানবো না। কেননা শ্যামনগরের সাথে আশাশুনি উপজেলার কোন যোগাযোগ নেই। আমরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আগামী ১০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করব। এছাড়া নির্বাচন কমিশনারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা বৃহস্পতিবার বিকালে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছি।

    আশাশুনি উপজেলা জামায়াতের আমির তারিকুজ্জামান তুষার বলেন, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক এই আসন বিন্যাসের আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমাদের দাবি আশাশুনিকে পূর্বের মতো আলাদা একটি আসন করে ৫ টি সংসদীয় আসন করা হোক। আশাশুনির সাথে শ্যামনগরকে নিয়ে আসন বিন্যাস আমরা মানব না। আমরা এ বিষয় নির্বাচন কমিশনের দ্রুত অভিযোগ করব।

    প্রসঙ্গত, জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ৩৯টির সীমানা পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিভিন্ন জেলায় পরিবর্তন এনে বুধবার (৩০ জুলাই) সংসদীয় আসনের সীমানার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে সরকার। কিন্তু সেখানে আবারও সাতক্ষীরার মানুষের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে।

    শ্যামনগর দেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ একটি জনপদ। একইভাবে আশাশুনিও প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ একটি উপজেলা। দুটি উপজেলার ভৌগোলিক অবস্থান বা সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা মোটেও সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। উপজেলা দুটির মানুষও কখন এমন আসন বিন্যাসের কথা চিন্তা করেনি। এখানে দুটি আলাদা সংসদীয় আসন অতিব জরুরি।

    ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে গণতান্ত্রিক প্রতিটি অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সাতক্ষীরার মানুষ সবসময় সামনের কাতারে থেকেছে। দক্ষিণবঙ্গের মানুষের এই আত্মত্যাগ ও অবদানের মধ্যে ইতিহাসে সামনের পাতায় থাকবে সাতক্ষীরা। তাই ৪টি নয় ৫টি সংসদীয় আসন চায় সাতক্ষীরাবাসী। এটি এ অঞ্চলের প্রাণের দাবি।

    সাতক্ষীরার ৪টা আসনের মধ্যে তালা-কলারোয়া (১), সদর (২) আসন সীমানা নিয়ে কারোরই কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু বিপত্তি, ৩ এবং ৪ আসন নিয়ে। এই দুই আসনের সীমানা পরিবর্তন করে ৩টি আসন করা যায়। যেমনটি সাতক্ষীরার শুরু থেকে হয়ে আসছিল। ভৌগোলিক অবস্থান, যোগাযোগ ব্যবস্থা, প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণতা এবং জনসংখ্যা বিবেচনায় সাতক্ষীরায় ৫টি সংসদীয় আসন করার জোর দাবি জানায়।

    কারণ, আসনের সীমানা পরিবর্তন করে খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে, তাতে সাতক্ষীরার মানুষের সাথে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। এই বৈষম্য দূর করে, এই মজলুম জনপদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি সকলের। সাতক্ষীরার মানুষ প্রত্যাশা করেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশন আসন বন্টনের খসড়া পুনঃ বিবেচনা করবে। সেই সাথে সাতক্ষীরায় ৫টি সংসদীয় আসন করে সীমানা নির্ধারণ করবে।

  • এনসিপি ইনসাফের ভিত্তিতে দুর্নীতি ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়তে চায়

    এনসিপি ইনসাফের ভিত্তিতে দুর্নীতি ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়তে চায়

     সাতক্ষীরায় জাতীয় নাগরিক পার্টির পথসভা

    আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংগঠনিক তৎপরতা জোরদার করতে সাতক্ষীরায় পদযাত্রা ও পথসভায় অংশ নিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। শনিবার দুপুট  সাড়ে ১২টার দিকে তালা উপজেলার কুমিরা ফুটবল মাঠে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ পৌঁছালে স্থানীয় নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে তাদের ফুলেল সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এসময় এলাকাজুড়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ।
    দলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহসহ কেন্দ্রীয় পর্যায়ের প্রায় এক ডজন নেতা এ সফরে অংশ নেন।
    কুমিরায় সংক্ষিপ্ত পথসভা শেষে তারা শহরের দিকে রওনা হন। দুপুর দেড়টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের খুলনা রোড মোড়ে শহীদ আসিফ চত্বরে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, রোদ বৃষ্টি ঝড় উপেক্ষা করে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির নেতৃবৃন্দ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সনদ চেয়েছি, বিচার চেয়েছি এবং নতুন সংবিধান চেয়েছি।
    কিন্তু সকল জনদাবির বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে একটি পক্ষ। তারা পুরাতন বন্দোবস্ত ধরে রাখতে চায়, তারা পুরাতন রাজনীতি টিকিয়ে রাখতে চায়, তারা চাঁদাবাজ এবং সন্ত্রাসকে টিকিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু আমরা বলেছি, গণঅভ্যুত্থানের পরে, এত মানুষের জীবন দানের পরে, তারা যদি মনে করে, তারা আগের পুরাতন রাজনীতি করবে, তাহলে তা এত সহজ হবে না। গণঅভ্যুত্থানের শক্তি এখনও মাঠে আছে। এখনো তাদের গর্জন রয়েছে।
    তারা ভেবেছিল— দুই তিনটা আসন দেখিয়ে, ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারার লোভ দেখিয়ে, তারা গণঅভ্যুত্থানের শক্তিকে কিনে নিবে। কিন্তু যারা বিপ্লবের শক্তি, যারা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে, তাদেরকে কিনে নেওয়ার সাধ্য কোন রাজনৈতিক দলের হয়নি। বলা হয়েছে —দরজা নাকি খোলা আছে, আমরা বলেছি, ৫ ই আগস্ট দরজা আমরা খুলে দিয়েছিলাম। ৫ই আগস্ট আমরা বলেছিলাম —আসুন জাতীয় সরকার গঠন করি, দেশটাকে পুনর্গঠন করি, সকল বিভাজন সবকিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে, বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তুলি। কিন্তু তারা আমাদের সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।
    তারা বলেছিল তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। আবার বলেছিল ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারা ছাড়া দেশ সংস্কারে তাদের কোন সমর্থন পাওয়া যায়নি। আমরা বলেছিলাম —আমরা দেশের ভিতরে শত্রু তৈরি করতে চাই না। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ পুনর্গঠন করতে চাই। আমরা এখনো বলছি —নির্বাচনী ভাগ-বাটোয়ারা নয়, দেশ সংস্কারে আমাদের দরজা এখনো খোলা আছে। যদি এবার দরজা বন্ধ হয়, জনগণ আপনাদেরকে আর ক্ষমা করবে না।প্রিয় সাতক্ষীরাবাসি, আপনারা উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দা। যারা ঘূর্ণিঝড় প্রতিকূলতার মধ্যেও, আপনারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সত্বেও, এই দেশকে উপকূলে পাহারা দিয়ে যাচ্ছেন। সাতক্ষীরার শিক্ষার অব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যের অভাবে ব্যবস্থাপনা, যাতায়াতের অব্যবস্থাপনার কথা আমরা জানি।
    সাতক্ষীরাবাসি এখনো রেললাইনের সুযোগ পায় না। ৫৪ বছর হয়ে গেছে এখনো রেল সংযোগ সাতক্ষীরায় এসে পৌঁছায়নি। আমরা কি সাতক্ষীরায় রেললাইন চাই? আমরা কি সাতক্ষীরার উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা চাই? আমরা কি সাতক্ষীরায় উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চাই? জনতার উদ্দেশ্যে এমন প্রশ্ন রেখে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের জলবায়ু রক্ষা করতে হবে, আমাদের সুন্দরবন ও উপকূল রক্ষা করতে হবে। জলবায়ু নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি কাজ করবে। সাতক্ষীরার মাটি ও মানুষকে রক্ষা করার জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টি কাজ করবে।
    আপনারা জাতীয় নাগরিক পার্টির সাথে থাকবেন—আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, চাঁদাবাজদের ভয় পাওয়ার কোন কারণ নাই। যে দেশের ছাত্র- মেহনতি জনতা ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে দিল্লি পাঠাতে পারে, সে দেশের ছাত্র-জনতা কোন চাঁদাবাজকে ভয় পাবে না। ছাত্র জনতা ও নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, নতুন করে প্রস্তুতি নিন।
    আমাদেরকে বৈষম্য ও দুর্নীতি বিরোধী ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র গড়তে হবে। সেকারণে আমাদের শহীদেরা রক্ত দিয়েছিল, সাতক্ষীরার মানুষ রক্ত দিয়েছিল তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
    সভায় এনসিপির সাংগঠনিক সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়নি। আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর পূর্ব পর্যন্ত আমাদের এ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
    জাতীয় নাগরিক পার্টির সাতক্ষীরা জেলার সমম্বয়ক কামরুজ্জামান বুলুর সভাপতিত্বে পথসভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মেজবাহ কামাল ও চিকিংসক তাসনীম জারা। এছাড়া মঞ্চে স্লোগান দেন দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
    পথসভার আগে শহীদ আসিফ চত্বর এলাকায় জুলাই-বিপ্লবে আহত ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন নেতৃবৃন্দ। পরে একটি পদযাত্রা শহীদ আসিফ চত্বর থেকে বের হয়ে নিউমার্কেট মোড়ে শেষ হয়। এরপর নিউমার্কেট এলাকায় আল বারাকা হোটেলের দ্বিতীয় তলায় জেলা কার্যালয় উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
    এতে শত শত নেতাকর্মী অংশ নেন, যাদের অনেকেই ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও দলীয় পতাকা বহন করছিলেন।
    পদযাত্রা ও জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষ থেকে আগেই কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংস্কার করা হয়।# সাতক্ষীরা প্রতিনিধি। তাং-১২.০৭.২৫ ছবি আছে।
  • আনিসুল-রুহুল-চুন্নু‌কে জাপা থে‌কে অব্যাহ‌তি, শামীম মহাসচিব

    আনিসুল-রুহুল-চুন্নু‌কে জাপা থে‌কে অব্যাহ‌তি, শামীম মহাসচিব

    জাতীয় পার্টির (জাপা) সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এবং কো-চেয়ারম্যান ও মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুকে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সোমবার (৭ জুলাই) জাপার দফতর সম্পাদকের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

    বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৫ জুন জেলা/মহানগরের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক/আহ্বায়ক, সদস্য সচিবদের মতবিনিময় সভায় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কো-চেয়ারম্যান ও মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনে এবং শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। গত ২৮ জুন দলের প্রেসিডিয়াম সভায়ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে এই ৩ নেতাকে দলীয় সকল পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

    বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এমতাবস্থায় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের গঠনতন্ত্রে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো- চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এবং কো- চেয়ারম্যান ও মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুকে প্রাথমিক সদস্যসহ দলীয় সকল পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। এ আদেশ ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

    একই সাথে মুজিবুল হক চুন্নুকে সরিয়ে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী’কে জাতীয় পার্টির মহাসচিব পদে নিয়োগ দিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। সোমবার (৭ জুলাই) পাঠানো আরও একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দলটির যুগ্মসচিব পদমর্যাদায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী।

    এর আগে গত কয়েকদিন ধরে প্রেসিডিয়ামের সভা ডাকাকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টিতে অস্থিরতা চলছে। দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন।

    এই বিষয়টির সুরাহা হওয়ার আগেই মজিবুল হক চুন্নু পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন মহাসচিব নিয়োগ দিলো দলটি। নতুন মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী এর আগে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন।

  • ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে তালার যুবদল নেতা মোমিনকে বহিষ্কারের গুজব

    ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে তালার যুবদল নেতা মোমিনকে বহিষ্কারের গুজব

    নিজস্ব প্রতিনিধি :
    সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুল মোমিনকে বহিষ্কারের নামে একটি ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার (৭ জুলাই) হাবিবুল ইসলাম হাবিব নামে একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে বিএনপির নাম, লোগো এবং লেটারহেড ব্যবহার করে ওই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে মোমিনকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি করা হয়, যা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।


    এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় যুবদল নেতা আব্দুল মোমিন বলেন, “এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি মিথ্যা প্রচারণা। দলের প্রতি আমার আনুগত্য শতভাগ রয়েছে। কেউ রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এই ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়েছে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”
    তালা উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মোস্তফা হোসেন মন্টু বলেন, “মোমিনের বিরুদ্ধে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে। এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।” তিনি আরও বলেন, “সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব ভাইয়ের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি কুচক্রী মহল হাবিব ভাইয়ের নামে একটি ফেক আইডি খুলে বিভিন্ন সময়ে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি।”
    তালা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মির্জা আতিয়া রহমান বলেন, “আমার কাছে বহিষ্কারের কোনো তথ্য নেই। আমরা এ ধরনের অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাই। এ ধরনের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রচারণা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হোক।”
    এদিকে বিএনপি ও যুবদলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ভুয়া বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং সবাইকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

  • সাতক্ষীরায় দু:স্থদের খাবার বিতরণে শহীদ জিয়ার শাহাদাত বার্ষিকী পালন

    সাতক্ষীরায় দু:স্থদের খাবার বিতরণে শহীদ জিয়ার শাহাদাত বার্ষিকী পালন

    শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম) এর ৪৪তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির উদ্যোগে দুস্থদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার (৩০ মে) দুপুর ১২ টায় সাতক্ষীরা শহরের নিউ মার্কেট চত্ত্বরে এই খাবার বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

    সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহবায়ক এইচ এম রহমাতুল্লাহ পলাশের সভাপতিত্বে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জেলা সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু, যুগ্ম আহবায়ক মো. আবুল হাসান হাদী, যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি প্রমুখ। এ সময় বিএনপি’র বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

    খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির আহবায়ক এইচ এম রহমাতুল্লাহ পলাশ বলেন, কৃষি ও শিল্পে বিপ্লব, খাল খনন ও বৃক্ষরোপণ, শিক্ষা ও প্রশাসন সংস্কার, আইনের শাসন ও বাকস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা, সরকারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক ও সাংবিধানিক সংস্কারে গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন প্রতিটি ক্ষেত্রে শহীদ জিয়া রেখে গেছেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত, এক অমোচনীয় চিহ্ন। মাত্র চার বছরে তিনি বাংলাদেশকে এগিয়ে দিয়েছিলেন চার দশকের চেয়েও বেশি যা আজও ইতিহাসের উজ্জ্বলতম অধ্যায় হয়ে আছে।

    এদিকে জেলা শ্রমিক দলের আয়োজনে শহরের সঙ্গীতা মোড়ে দুপুরে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। সাতক্ষীরা জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুস সামাদের সভাপতিত্বে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি শেখ মিলন হোসেন, মো. ইব্রাহিম খলিল টুটুল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মিয়ারাজ আলী, দপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান, সদর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি শেখ মামুনুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনিরুল ইসলাম মনি, পৌর শ্রমিক দলের আহবায়ক রেজাউল ইসলাম রেজা, যুগ্ম আহবায়ক মো. শাহাদাত হোসেন, জেলা ইমরত শ্রমিক দলের সভাপতি তফুর আলী, জাতীয়তাবাদী ট্রাক, ট্রাক্টর কাভার্ডভ্যান, ট্রাংকলরী শ্রমিকদল ভি.আই.পি সাতক্ষীরা শাখার সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম গাজীসহ জেলা, উপজেলা ও পৌর শ্রমিক দলের নেতৃবৃন্দ।

  • সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজ মোড়ে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ

    সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজ মোড়ে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ

    সাতক্ষীরা প্রতিনিধি  :  জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার (৩০ মে) বিকাল ৩টায় সাতক্ষীরা পৌর ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে সার্কিট হাউজ মোড়ে এই খাবার বিতরণ করা হয়। সাতক্ষীরা পৌরসভার ৯নং ওর্ডের সভাপতি প্রার্থী ইলিয়াস হোসেন বকুলের সভাপতিত্বে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা পৌর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন রাজু।এ সময় দুইশত অসহায় দুস্থদের মাঝে এই খাবার বিতরণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা তাঁতী দলের সাবেক যুগ্ন-আহবায়ক আব্দুল আজিজ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম,সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি সামাদ আলী, শ্রমিক দলের নেতা রেজাউল ইসলাম রেজা, নাসির খান, আজিবারসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

  • গুম হওয়া সাতক্ষীরার  বিএনপি নেতা আবু সেলিমকে ফিরিয়ে দিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ 

    গুম হওয়া সাতক্ষীরার  বিএনপি নেতা আবু সেলিমকে ফিরিয়ে দিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ 

    সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
    আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম হওয়া সাতক্ষীরা আলিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আলহাজ্ব আব্দুর রউফের একমাত্র পুত্র সদর উপজেলা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও আলিপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সেলিমকে ফিরিয়ে দিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ  অনুষ্ঠিত  হয়েছে।
    সাতক্ষীরা সদর উপজেলা যুবদলের আয়োজনে বৃহস্পতিবার(২৯ মে) বিকালে শহরের ইটাগাছা হাটের মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে  খুলনা রোডস্থ মোড়  শহীদ আসিফ চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়।
    জেলা যুবদলের সাবেক সমন্বয়ক  আইনুল ইসলাম নান্টা’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন  সাবেক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ তারিকুর হাসান, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, জেলা বিএনপির সদস্য প্রভাষক আতাউর রহমান,জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুর রউফ,  আলিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম, আলিপুর ইউনিয়নের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাদিউজ্জামান বাদশা,জেলা যুবদলের নেতা আলিমুজ্জামান আলীম ও ফরিদ হোসেন, শ্রমিক নেতা রেজাউল ইসলাম রেজা,প্রভাষক শহিদুল ইসলাম, আবু  সেলিম, শিক্ষক শাহিনুর রহমান, আবু  সেলিমের বড় ছেলে সামির সোয়েদ রাদমীম ও ছোট ছেলে আব্দুল্লাহ সিয়াম জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু রায়হান প্রমুখ উপস্থিত।
    বক্তারা বলেন, বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে হাসিনা সরকার আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে গুম করেছে। আজও তাদের খুঁজেও পাওয়া যায়নি। তাদের জন্য পরিবারের লোকজন অপেক্ষায় রয়েছে। ২০১১ সালের ২৯ শে মে এই দিনে ঢাকা থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে সাতক্ষীরার যুবদল নেতা আবু সেলিমকে  তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ ১৪ বছর পেরিয়ে ১৫ বছরের পদার্পণ হচ্ছে তার কোন সন্ধান মেলেনি। সাতক্ষীরার আবুল সেলিম গুমের পিছনে সাতক্ষীরা আওয়ামী লীগ নেতা শওকত হোসেন জড়িত আছে, তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ড  নিলে আবু সেলিমকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে বলে বক্তারা জানান ।
     শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আয়নাঘর থেকে গুম হওয়া কয়েকজন ফিরে এসেছে। আমরা সাতক্ষীরার যুবদলের নেতা আবু সেলিমসহ বাকিদেরও ফেরত চাই।
    সমগ্র সমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা কৃষকদলের সাবেক আহবায়ক আহসানুল কাদির স্বপন।
  • জামায়াতকে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ থেকে মুক্ত ঘোষণা কানাডার ট্রাইব্যুনালের

    জামায়াতকে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ থেকে মুক্ত ঘোষণা কানাডার ট্রাইব্যুনালের

    বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন নয় এবং তারা কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয় বলে জানিয়েছে কানাডার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ড (আইআরবি)। এই রায় ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রোটেকশন অ্যাক্ট (আইআরপিএ) এর ধারা ৩৪(১)(এফ)-এর আওতায় কানাডার সরকারের করা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

    এ সিদ্ধান্তটি আসে ২ বছর ধরে চলা আইনি লড়াইয়ের পর, যা ২০২২ সালে কানাডার বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সির (সিবিএসএ) একটি প্রতিবেদনের পর শুরু হয়েছিল। সিবিএসএ অভিযোগ করেছিল- জনৈক রহমান নামে এক ব্যক্তি জামায়াতে ইসলামীর সদস্য (রোকন) হওয়ার কারণে কানাডায় প্রবেশের অনুপযুক্ত। কারণ সিবিএসএর মতে জামায়াত সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত। তবে, ট্রাইব্যুনাল আজকের রায়ে এ অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দিয়েছেন।

    এ রায়ের গুরুত্ব খুব বেশি। আইআরবির এ সিদ্ধান্তটি শুধু উক্ত রহমানের জন্যই নয়, বরং জামায়াতে ইসলামীর সুনামের জন্যও এক গুরুত্বপূর্ণ ও নজিরবিহীন রায় বলে বিবেচিত হচ্ছে। ট্রাইব্যুনাল দুটি পূর্ণাঙ্গ দিবস এবং অতিরিক্ত আরও আড়াই দিন শুনানি পরিচালনা করে। কয়েক হাজার পৃষ্ঠার নথিও এ সময় পর্যালোচনা করা হয়।

    এছাড়া, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসবাদ ও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়, যাদের সবাই জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে সাক্ষ্য দেন।

    ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়

    সন্ত্রাসবাদের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই: রায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে যে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই।

    বিশ্বখ্যাত বিশেষজ্ঞদের সাক্ষ্য গ্রহণ: তিনজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গবেষক এই মামলা চলাকালে সন্ত্রাসবাদ, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক আন্দোলন, ও ইসলামী সংগঠনগুলোর বিষয়ে শপথ নিয়ে সাক্ষ্য দেন, যা বিশ্বাসযোগ্য, নিরপেক্ষ এবং ধারাবাহিক বলে প্রমাণিত হয়।

    রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে: ট্রাইব্যুনাল তার পর্যবেক্ষনে জানিয়েছে যে, জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগের শিকার হয়ে আসছে, বিশেষ করে রাজনৈতিকভাবে যারা ভিন্ন আদর্শ লালন করেন তারা জামায়াতের বিষয়ে বহু বছর ধরেই প্রোপাগান্ডা চালিয়ে আসছেন।

    ২০২৪ সালের আগস্টের বাংলাদেশে অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ইতিবাচক ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে।

    আইনের শাসনের প্রতি প্রতিশ্রুতি: এই রায় কানাডার ন্যায়বিচার, সততা ও সুবিচারের প্রতি প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেছে এবং উল্লেখ করেছে যে কোনো সংগঠনকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক চাপ বা বিদেশি সরকারের বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে সন্ত্রাসী ঘোষণা করা যায় না।

    জামায়াতে ইসলামীর জন্য আইনি বিজয়

    মামলায় জামায়াতে ইসলামীকে সফলভাবে প্রতিনিধিত্ব করেন ওডব্লিউএস ল-এর ব্যারিস্টার ওয়াশিম আহমেদ। এই রায় সম্পর্কে তিনি বলেন,“এই রায় জামায়াতে ইসলামী আইনি মর্যাদা পাওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় বিজয়। এটি স্পষ্ট বার্তা দেয় যে অভিযোগগুলোর ভিত্তি হতে হবে বাস্তব প্রমাণ এবং নিরপেক্ষ মূল্যায়নের ওপর, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নয়।”

    গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনালের দেওয়া লিখিত সিদ্ধান্তে রহমানকে সম্পূর্ণরূপে নির্দোষ ঘোষণা করা হয় এবং সিবিএসএর সমস্ত অভিযোগ খারিজ করা হয়। এ রায় ভবিষ্যতে অনুরূপ মামলাগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির স্থাপন করবে। কারণ অনেক সময়ই দেখা যায়, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের মিথ্যা অভিযোগ এনে তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে।

  • আজহারুলের মুক্তির দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল

    আজহারুলের মুক্তির দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল

    সাতক্ষীরা : বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি ও নিবন্ধন পূর্নবহালের দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের উদ্যোগে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
    মঙ্গলবার (১৮ফেব্রুয়ারী) বিকালে সাতক্ষীরা ছয়আনি মসজিদ প্রাঙ্গন থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা জেলা সহকারী সেক্রেটারি ওমর ফারুখ, আব্দুর ওয়ারেছ, মাস্টার হাবিবুর রহমান,মাওলানা আনিছুর রহমান,  মাস্টার আশরাফুজ্জামান সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের  ও বিভিন্ন উপজেলা জামায়াতের নেতৃবৃন্দ।
    জামায়াত নেতারা অবিলম্বে কেন্দ্রীয় নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি ও দ্রুত নিবন্ধন পূর্নবহালের দাবি জানান। তা না হলে আরো কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারী দেন তারা।
  • মানবাধিকার দিবসে সাতক্ষীরায় জামায়াতে ইসলামীর আলোচনা সভা

    মানবাধিকার দিবসে সাতক্ষীরায় জামায়াতে ইসলামীর আলোচনা সভা

    বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী সাতক্ষীরা জেলা শাখার উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
    ১০ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) সাতক্ষীরা মুন্সিপাড়া আল আমিন ট্রাস্ট মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
    সাতক্ষীরা জামায়াতের মানবাধিকার বিভাগের সভাপতি ও জেলা কর্মপরিষদ সদস্য এড. আব্দুস সুবহান মুকুলের সভাপতিত্বে ও শহর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী এড আবু তালেবের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা জামায়াতের  সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক ওবায়দুল্লাহ। সভায় অন্যান্যের মধ্যে জেলা শুরা সদস্য এড. আজিজুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও জেলা অফিস সেক্রেটারী রুহুল আমিন, সদর জামায়াতের কর্মপরিসদ সদস্য আনিছুর রহমান, দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার জেলা সংবাদদাতা আবু সাইদ বিশ্বাস, সাংবাদিক শাহজান মিঠুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
     সভায় প্রধান অধ্যাপক ওবায়দুল্লাহ বলেন, কোন মানব রচিত সংবিধান দিয়ে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়, মানব রচিত মতবাদ শুধু পৃথিবীতে মারামারি, খুনাখুনি অস্ত্রের ঝংকার , দুর্ভিক্ষ এবং বিশৃঙ্খলাই সৃষ্টি করে। এর প্রমান ফিলিস্তিন সিরিয়া আফগানিস্তান কাশ্মীর সহ সর্বশেষ রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধ। অথচ রাসুল আকরাম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম আল  কুরআনের রাজ কায়েমের মাধ্যমেই অশান্ত বিশৃংখল জাতিকে একটি সুন্দর জাতিতে পরিণত করেছিলেন।
  • সাতক্ষীরায় জামায়াতের ৭ উপজেলা আমীরগণের শপথ

    সাতক্ষীরায় জামায়াতের ৭ উপজেলা আমীরগণের শপথ

    সাতক্ষীরা সংবাদদাতা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা জেলা শাখার উদ্যোগে ২০২৫ ও ২০২৬ সেশনের জন্য নির্বাচিত উপজেলা আমীরগণের শপথ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। ৯ ডিসেম্বর সোমবার বিকাল ৫ টায় সাতক্ষীরা আল—আমিন ট্রাস্টের কাজী শামসুর রহমান মিলনায়তনে সাতক্ষীরা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুলের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী মাওলানা আজিজুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও সাতক্ষীরা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল নির্বাচিত উপজেলা আমীরগণের শপথ বাক্য পাঠ করান। এসময় জামায়াতের কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও সাতক্ষীরা জামায়াতের সাবেক আমীর মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, ফরিদপুর জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা বদরুদ্দিন, সাতক্ষীরা জামায়াতের নায়েবে আমীর শেখ নুরুল হুদা, ডা.মাহমুদুল হক, সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক ওমর ফারুক, অধ্যাপক ওবায়দুল্লাহ, শহর ছাত্রশিবিরের সভাপতি আল মামুন, জেলা সভাপতি ইমামুল ইসলাম সহ কর্মপররিষদ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
    ২০২৫ ও ২০২৬ সেশনের জন্য উপজেলা আমীর হিসাবে যারা শপথ গ্রহন করেন তারা হলেন.. ১) মাওলানা মফিদুল্লাহ—( তালা উপজেলা), ২) মাওলানা কামরুজ্জামান (কলারোয়া উপজেলা), ৩) মোঃ জাহিদুল ইসলাম—(সাতক্ষীরা শহর), ৪) তারিকুজ্জামান তুষার—(আশাশুনি উপজেলা), ৫) মাওলানা অলিউল ইসলাম—(দেবহাটা উপজেলা), ৬) মাওলানা আব্দুল ওহাব—( কালিগঞ্জ উপজেলা) এবং ৭) মাওঃ আব্দুর রহমান—( শ্যামনগর উপজেলা)

    প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, দায়িত্ব আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে, এই দায়িত্ব আমানত হিসাবে গ্রহন করে ঈমানদারীর সাথে পালন করা আমাদের কর্তব্য। দেশ,জাতি সৎ ও যোগ্য মানুষ খুঁজে বেড়াচ্ছে। জামায়াত সেই মানুষ তৈরীর কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের গণপ্রত্যাশা পুরনে ঐতিহাসিক ভুমিকা পালন করতে হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

  • শনিবার সাতক্ষীরায় আসছেন জামায়াতের আমীর

    শনিবার সাতক্ষীরায় আসছেন জামায়াতের আমীর

    বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান শনিবার (৩০ নভেম্বর) সাতক্ষীরায় আসছেন। বেলা দুইটায় সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

    জামায়াতের আমীরের আগমন উপলক্ষ্যে শুক্রবার দুপুরের পর সাতক্ষীরার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সম্মেলনস্থল সার্বিক পরিবেশ পরিদর্শন করেছেন দলটির নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মুহা. ইজ্জতউল্লাহ। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমীর শহিদুল ইসলাম মুকুল, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা আজিজুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক ওবায়দুল্লাহ, ওমর ফারুক, শহর শিবিরের সভাপতি আল মামুন, সুরা সদস্য নজরুল ইসলাম, শহর সহকারী সেক্রেটারী হাবিবুর রহমান প্রমুখ।

    অধ্যক্ষ মুহা. ইজ্জতউল্লাহ মাঠ পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের বলেন, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী ও ফ্যাসীবাদী শক্তির পতন ঘটানোর মাধ্যমে দেশে নতুন করে সূর্যোদয় ঘটেছে। আমরা এই ঐতিহাসিক বিজয়কে ধরে রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। দেশে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বৈরাচার সৃষ্ট সব জঞ্জালমুক্ত করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সম্মেলনে লক্ষাধিক জামায়াত নেতাকর্মীর সমাবেশ ঘটবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। জামায়াতে আমীরের সমাবেশ সফল করতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

  • হাসিনাকে ফেরত না দিলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক সুখের হবে না: ড. ইউনূস

    হাসিনাকে ফেরত না দিলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক সুখের হবে না: ড. ইউনূস

    প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

    সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত থেকে তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, বিচারের মুখোমুখি করতে হাসিনাকে অবশ্যই ফিরিয়ে দিতে হবে ভারতকে।

    এছাড়া হাসিনাকে ফিরিয়ে না দিলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে খুব একটা সুখের সম্পর্ক তৈরি হবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস এসব কথা বলেন।

    একইসঙ্গে আওয়ামী লীগকে আগামী জাতীয় সংসদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেওয়া হবে কিনা, সে প্রশ্নেও কথা বলেছেন নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।

    সোমবার (১৮ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়।

    সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ঢাকায় নিজের বাসভবনে দ্য হিন্দুর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ড. ইউনূস ভারতের সাথে সম্পর্ক এবং সংস্কারের পরিকল্পনার বিষয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। তিনি তার সরকার গঠনের ১০০ দিনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলেন এবং উগ্রপন্থার উত্থান ও হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোকে “প্রোপাগান্ডা” বলে অভিহিত করেছেন।

    ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ৫ আগস্টের ঘটনা কীভাবে প্রভাবিত করতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, কেন এটা (ভারতের জন্য ধাক্কা) হবে? বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে ভারতেরও ওই দিনটি উদযাপন করা উচিত যে, বাংলাদেশ এমন একটি শাসন থেকে মুক্ত হয়েছে যেখানে মানুষ কষ্ট পেয়েছে, অনেককে হত্যা করা হয়েছে, অনেককে গুম করা হয়েছে এবং অনেক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়েছে। ভারতের উচিত আমাদের তরুণদের যোগদান করা এবং একসাথে উদযাপন করা, যেমনটা অন্যান্য অনেক দেশ করে থাকে।

    দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর ভারতে শেখ হাসিনার উপস্থিতি উভয় দেশের সম্পর্কের জন্য অসুবিধা সৃষ্টি করছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, হাসিনার ভারতে বসবাস করা, অন্তত আপাতত কোনো সমস্যা নয়। তবে তিনি বাংলাদেশের বিষয়ে কথা বললে সমস্যা। তিনি বাংলাদেশিদের সাথে কথা বলছেন এবং এটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। তিনি তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন, এটাই সমস্যা।

    হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, আমরা তাকে ফিরিয়ে আনতে সব আইনি উপায় অবলম্বন করব।

    তবে প্রত্যার্পণ চুক্তি অনুযায়ী যদি ভারত হাসিনাকে ফিরিয়ে না দেয় তাহলে কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আপনি বলতে চাচ্ছেন— ভারত চুক্তি লঙ্ঘন করবে? হ্যাঁ, চুক্তিতে এই ধরনের ধারা আছে, কিন্তু হাসিনাকে রাখতে যদি ভারত সরকার সেগুলোকে ব্যবহার করে তাহলে আমাদের (বাংলাদেশ ও ভারত) মধ্যে খুব একটা সুখের সম্পর্ক তৈরি হবে না। আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার খুবই স্বল্পস্থায়ী, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সবকিছু আমরা মিমাংসা করতে পারব না। কিন্তু এটা (হাসিনাকে ফেরত না দেওয়ার বিষয়টি) আমাদের পরে আসা কোনো সরকারও উপেক্ষা করবে না।

  • ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত

    ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত

    নিজস্ব প্রতিনিধি : ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সাতক্ষীরা জেলা শাখার উদ্যোগে বর্ণনাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ৭ নভেম্বর জেলা বিএনপির আয়োজনে বেলা সাড়ে ১১ টায় শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জেলা বিএনপি, পৌর বিএনপি,সদর উপজেলা বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল, কৃষক দল, শ্রমিক দল ও থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ব্যানার ও বিভিন্ন রঙের বেলুন, ফেস্টুন ও ফ্লাগ নিয়ে সুসজ্জিত হয়ে সভাস্থলে সমবেত হয়। এরপর এক বর্ণাঢ্য আয়োজনে উৎসব মুখর পরিবেশ র‌্যালি  সহকারে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সাতক্ষীরা খুলনা রোড মোড়ে মিলিত হয়। এসময় সংক্ষিপ্ত আলোচনা মধ্য দিয়ে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি শেষ হয়। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ ইফতেখার আলী’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান হবি,জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তাসকিন আহমেদ চিশতি, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মোঃ শের আলী, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মোঃ আব্দুস সামাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সোহেল আহমেদ মানিক, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আবু জাহিদ ডাবলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান মুকুল, জেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক  কাউন্সিলর শফিকুল আলম বাবু, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব মোঃ সালাহউদ্দিন লিটন, জেলা জাসাস এর সভাপতি শেখ জিল্লুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফারুক হোসেন প্রমুখ। এসময় জেল বিএনপি’র সকল অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

  • ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান রোমান্টিক রেভ্যুলেশন

    ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান রোমান্টিক রেভ্যুলেশন

    ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে রোমান্টিক রেভ্যুলেশন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান

    শনিবার (২৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ভাষা আন্দোলনের সিপাহসালার ও দেশ বরেণ্য জাতীয় নেতা অলি আহাদের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় তিনি এ কথা বলেন।

    স্মরণ সভার আয়োজন করেছেন ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল) এবং অলি আহাদ স্মৃতি সংসদ।

    মঈন খান বলেন, আজকে বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্রজনতার যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে আমি বিশ্বাস করি— এই বিজয় একটি রোমান্টিক রেভ্যুলেশন। এ কথা বলার কারণ হলো, ছাত্রদের এই জনবল আপাতদৃষ্টিতে আড়াই মাসে কিছু জায়গায় বিভেদ, সাম্য, ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে।

    তিনি বলেন, আজকে আমরা যে প্রক্রিয়ার ভেতরে আছি, সত্যিকার মুক্তির জন্য মানুষ যেভাবে জীবনকে বিসর্জন দিয়েছেন, আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন, সে আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে আজকে এসে আমার মনে হয়েছে— আমরা সেই রোমান্টিক রেভ্যুলেশনের ধারাবাহিকতাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

    নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশের মানুষ লড়াই করে স্বৈরাচারকে হারিয়েছে। দেশ এমনভাবে পঁচে গেছে সেজন্য সংস্কার করতে হবে।

    বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, পুরোনো প্রতিহিংসায় বাংলাদেশের রাজনীতি আর ফিরবে না। কোনও সাম্রাজ্যবাদীর কাছে এ জাতি আর মাথা নত করবে না। গণঅভ্যুত্থানের বিজয়কে আমাদের ধারণ করতে হবে।

    গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, অলি আহাদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তার অবদান এই বাংলায় চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

    তিনি বলেন, দেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার এখনও পতন হয়নি। এই ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থাকে ভাঙতে হবে।

    স্মরণ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, কবি আব্দুল হাই সিকদার, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টির (এনজিপি) সাংগঠনিক সম্পাদক মীর আমির হোসেন আমু প্রমুখ।

  • পঁচাত্তরের পর ২৪-এর আন্দোলনে তছনছ আওয়ামী লীগ 

    পঁচাত্তরের পর ২৪-এর আন্দোলনে তছনছ আওয়ামী লীগ 

    শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর চরম সংকটে পড়েছে আওয়ামী লীগ। পতন ও সংকটের ধরন ভিন্ন হলেও এবারের সংকট দলটিকে পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্টের মতো ‘ছন্নছাড়া’ অবস্থায় ফেলে দিয়েছে।

    গত জুলাই এবং অগাস্টে তীব্র ছাত্র আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর দলটির অন্য নেতাদের অনেকেই আত্মগোপন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অনেকে ভারতে কিংবা অন্য দেশে চলে গেছেন। এছাড়া অনেকে আটক হয়ে কারাগারে আছেন।

    দলটির দুয়েকজন নেতার নামে বিচ্ছিন্নভাবে দুয়েকটি বিবৃতি গণমাধ্যমে আসলেও দলের নেতৃত্ব কিংবা কার্যক্রম কোনোটাই এখন দৃশ্যমান নয়। এমনকি ঢাকায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও আন্দোলনকারীদের হামলার তছনছ হয়ে গেছে।

    ঊনপঞ্চাশ বছর আগে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পরও ভয়াবহ এক সংকটকালের মুখোমুখি হতে হয়েছিলো দেশের সবচেয়ে প্রাচীন এই রাজনৈতিক দলটিকে।

    ইতিহাসবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলছেন, ১৯৭৫ ও ২০২৪- উভয় ঘটনাই দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে ছন্নছাড়া অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। দুটি ঘটনাই দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়েছে।

    রাজনৈতিক গবেষক ও লেখক মহিউদ্দিন আহমদ বলছেন, পনেরই অগাস্ট ছিল রক্তাক্ত ও সহিংস। অনেক হত্যাকাণ্ড হয়েছে। কিন্তু এবার তা হয়নি। কিন্তু উভয় ঘটনার পরিণতিতেই কঠিন সংকটে পড়েছে দলটি।

    ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টের পরের পরিস্থিতি:

    উনিশশো পঁচাত্তরের ১৫ই অগাস্টে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে যখন আক্রমণ হয়, তখন কোনো ধরনের প্রতিরোধ ছাড়াই পুরো বাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সপরিবারে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে হত্যাকারীরা। শেখ মুজিবুর রহমানের দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় তখন বেঁচে গিয়েছিলেন। এ ঘটনায় কার্যত তছনছ হয়ে পড়েছিল আওয়ামী লীগ। এর জের ধরে পরে তখন সারাদেশে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়ে দলটি।

    তখন সে বাড়ির নিচতলায় একটি কক্ষে কর্মরত ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী এ এফ এম মুহিতুল ইসলাম। মুহিতুল ইসলাম ২০১৬ সালে মারা যান। ১৯৯৬ সালে তিনি শেখ মুজিব হত্যা মামলার বাদী হয়েছিলেন।

    ২০১০ সালে বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুহিতুল ইসলাম বলেছিলেন, একজন রাষ্ট্রপতির বাড়িতে যে ধরনের নিরাপত্তা থাকা দরকার সেটি ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে ছিল না। তাছাড়া রাষ্ট্রপতির বাড়িতে আক্রমণের পরেও কোনো তরফ থেকে কোনো ধরনের সহায়তা আসেনি।

    হত্যাকাণ্ডের পর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত সেনাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তৎকালীন আওয়ামী লীগেরই একজন সিনিয়র নেতা এবং মন্ত্রিপরিষদের সদস্য খন্দকার মোশতাক আহমেদ রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন। এরপর আওয়ামী লীগের যারা মোশতাক সরকারকে সমর্থন করেননি তারা অনেকে আত্মগোপনে যান। অনেক নেতা পরবর্তীতে আটক হয়ে দীর্ঘসময় ধরে কারাভোগ করেন। অনেকে ভারতে চলে যান। পরবর্তীতে আব্দুল কাদের সিদ্দিকীসহ কেউ কেউ আবার প্রতিরোধ তৈরির চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

    সে বছর ১৫ অগাস্টের আগে শেখ মুজিবুর রহমান কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ বা বাকশাল পদ্ধতি প্রবর্তন করেছিলেন। পরে ১৯৭৬ সালে রাজনৈতিক দলগুলো নিবন্ধনের সুযোগ পেলে তখন আবার আওয়ামী লীগ নামেই দলটি নিবন্ধিত হয়ে রাজনীতি শুরু করেছিলো।

    মহিউদ্দিন আহমদ বলছেন, আওয়ামী লীগ নামে দলটি আবার ফিরে আসলো ১৯৭৬ সালে। তবে শেখ মুজিব ছাড়া দ্বিতীয় কোনো নেতা তৈরি না হওয়ায় তার হত্যাকাণ্ডের পর দলের মধ্যে দলাদলি শুরু হয়। এক পর্যায়ে দল কয়েক ভাগে ভাগ হলো।

    এরপর ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ (মালেক) ৩৯টি এবং আওয়ামী লীগ (মিজান) দুটি আসন লাভ করে। আওয়ামী লীগের একটি অংশ আবার বাকশালকেও সক্রিয় করে।

    এর আগেই দেওয়ান ফরিদ গাজী এবং আব্দুল মালেক উকিলের নেতৃত্বে দুটি অংশ হয়ে যায় আওয়ামী লীগের। এর বাইরে দল থেকে বেরিয়ে আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ এবং এমএজি ওসমানি আলাদা দল গঠন করেছিলেন।

    মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, শেখ মুজিব রক্ষীবাহিনী এবং অন্য বাহিনীর ওপর নির্ভর করে দেশ শাসন করেছিলেন। দলের সব ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়েছিলেন। ফলে দল হয়েছিলো মুজিব নির্ভর। এ কারণে ১৫ই অগাস্টের পর দলকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

    তিনি বলেছেন, ১৫ অগাস্ট পরবর্তী সরকার পরবর্তীকালে এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠিত হবার সুযোগ দিয়েছিল।

    এরপর দল টেকানোর জন্য দলের বিবদমান নেতারাই ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি করে ঢাকায় নিয়ে এসেছিলেন। এরপর থেকে এ পর্যন্ত শেখ হাসিনাই দলের সভাপতি পদে আছেন।

    ২০২৪ সালের অগাস্ট পরবর্তী পরিস্থিতি:

    ব্যাপক ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পাঁচই অগাস্ট ক্ষমতা ছেড়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এর পরপরই ঢাকায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর, ঢাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ কয়েকটি কার্যালয়ে ব্যাপক হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। দেশের বহু জায়গায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, দোকানপাটেও হামলার ঘটনা ঘটেছে।

    গোপালগঞ্জে শুধু আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা ‘শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে’ দাবি করে গত পাঁচই অগাস্টের পরপর বেশ কয়েক দফায় কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

    শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরপরই দলের নেতারা আত্মগোপনে চলে যান এবং দলটির কোনো স্তরের কোনো নেতাকেই আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। শেখ হাসিনাসহ দলের সব নেতার বিরুদ্ধেই বহু মামলা দায়ের হয়েছে।

    এরপর গত দুইমাসে দলের নেতা ও সাবেক মন্ত্রী এমপিদের অনেককেই আটক করেছে পুলিশ যার মধ্যে আছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, দীপু মনি, সালমান এফ রহমানসহ অনেকেই।

    সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ এবং মাহবুব উল আলম হানিফসহ সহ সিনিয়র নেতারা, যাদের আটকের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি তারা কে কোথায় আছেন নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, ওবায়দুল কাদের এবং জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ নেতাদের বড় একটি অংশ ভারতে চলে গেছেন। কেউ কেউ ভারত হয়ে অন্য দেশে গেছেন। যদিও নিরপেক্ষ কোনো সূত্র থেকে এসব তথ্যের সত্যতা যাচাই করা যায়নি।

    দলের কোনো নেতাকে প্রকাশ্যে দেখা না গেলেও কয়েকটি বিবৃতি গণমাধ্যমে এসেছে জাহাঙ্গীর কবির নানক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং মাহবুব উল আলম হানিফের নামে। এছাড়া দল এবং শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যাখ্যা করে একাধিকবার ভিডিও বার্তা দিয়েছেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। এমন অবস্থায় গত দেড় দশকেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগে চরম নেতৃত্বশূন্যতা দেখা দিয়েছে।

    এতে সাংগঠনিকভাবে দলটি রীতিমত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন দলটির তৃণমূলের নেতারা। তাদের অনেকেই এখন উদ্বেগ ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। গণমাধ্যমে কথা বলার সময় কেউ তাদের নামও প্রকাশ করতে চান না।

    মহিউদ্দিন আহমদ বলছিলেন, দুই মাস হয়ে গেছে সরকারের পতন হয়েছে। এখনো কিন্তু নেতা হিসেবে কেউ দাঁড়াতে পারছেন না। এখন শেখ হাসিনার ছেলে বিবৃতি দিচ্ছেন। কথা বলছেন। তার পরিবারের বাইরে দলের কোনো নেতাকে এখনো দেখা যাচ্ছে না।

    অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলছেন, শেখ হাসিনার আমলে যে পরিমাণ অন্যায় অত্যাচার হয়েছে তার প্রতিক্রিয়ায় এবারে দলটির অবস্থা আরও সংকটাপন্ন। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিলো। কিন্তু এবারে সরকারের পতনের পর তার সব চিহ্ন মুছে দেয়া হয়েছে। দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ছন্নছাড়া হয়ে গেছে।

    শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার পরপরই তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছিলেন, আমার মা আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। আমার মনে হয় এখানেই শেষ। আমার পরিবার এবং আমি – আমাদের যথেষ্ট হয়েছে।

    তবে কিছুদিনের মধ্যেই অবশ্য তাকে ভিন্ন সুরে বলতে শোনা গেছে, ‘অবশ্যই তিনি (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশে ফিরবেন, যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে।’

    এরপর সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন শোনা গেছে, শিগগিরই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। যদিও পরে এ বিষয়টি আওয়ামী লীগের কোনো পর্যায় থেকে নিশ্চিত করেননি দায়িত্বশীল কেউ।

    সূত্র: বিবিসি।

  • সংবিধানে সংশোধনী এনে নির্বাচন চাইল বিএনপি

    সংবিধানে সংশোধনী এনে নির্বাচন চাইল বিএনপি

    বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, গণপরিষদ গঠন কিংবা সংবিধান পুনর্লিখন নয়। বর্তমান সংবিধানে কিছু সংশোধনী এনে, নির্বাচন দিয়ে জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

    বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

    সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যেসব সংস্কার প্রয়োজন সেগুলো আগে করা প্রয়োজন। আশা করি, জনগণের মুক্তি এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয় এমন সংস্কারগুলো অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত করবে।’

    তিনি বলেন, ‘বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা হবে। স্বৈরাচার পতনের পর আবারও ক্ষমতায় আসায় স্বপ্ন দেখছে। পাশের দেশে বসে বাংলাদেশ অস্থিরতা তৈরির পায়তারা করছে শেখ হাসিনা। স্বৈরাচারের দোসররা এখনও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে রয়েছে।’