আজ ০১:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
খাজরায় ৮ দলীয় নক আউট ফুটবল টুর্নামেন্টে ১ম সেমিফাইনাল গোলশূন্য ড্র ভক্তদের সঙ্গে নিজের জীবন দর্শন ভাগ করলেন ইশা সাহা ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পোস্টাল ভোটিং অ্যাপে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে সোনার দামে নতুন রেকর্ড, প্রতি ভরি ২ লাখ ১৮ হাজার টাকা নারী নির্যাতন ও সাইবার সহিংসতা রোধে কালিগঞ্জে মতবিনিময় সভা প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করে চেয়ার দখলের অভিযোগ: শিক্ষকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন সাতক্ষীরা-০৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী কাজী আলাউদ্দীন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের আকস্মিক ভূমি অফিস পরিদর্শন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ প্রাঙ্গণে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ওসমান হাদি কোমরপুর ৮ দলীয় নক আউট ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের আকস্মিক ভূমি অফিস পরিদর্শন

প্রবাদে আছে মড়ার উপর খড়ার ঘা, বেরসিক তৎকালীন জেলা প্রশাসক কাউকে না জানিয়ে হঠাৎ ইউনিয়ন ভূমি অফিস পরিদর্শনে এসে কাউকে না পেয়ে উপস্থিত থাকা মাস্টার রোলে দৈনিক ১শত টাকা বেতনের ঝাড়ুদার বৃদ্ধা নাসিমার চাকরি গেল। এ যেন বুড়ো মরতে ,খুনের দায়ে নাসিমার ফাঁসি হলো, যত দোষ নন্দ ঘোষ। আর এই সুযোগে উপজেলা ভূমি অফিসের নাজির, এসিল্যান্ড মোটা অংকের ঘূষ বাণিজ্যে মারুফ হোসেন নামে অন্য একজনকে চাকরি দিয়ে নাসিমাকে চাকরি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে এলাকার জনপ্রতিনিধি, এলাকাবাসী এবং ভুক্তভোগী ঐ ঝাড়ুদার। সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে জয়পত্র কাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গত ১০ অক্টোবর এ ঘটনা ঘটে। জয়পত্র কাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দীর্ঘদিন যাবত অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। উক্ত ভূমি অফিসে পলাশ ,রাজ্জাক সহ একাধিক দালালদের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ ও দখলে রেখে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ফলাও ভাবে প্রকাশ পেলে টনক নড়ে জেলা প্রশাসনের। গত ১০ অক্টোবর জয়পত্র কাটি ভূমি অফিসে তহশিলদার নুরুল, পিয়ন ইমরান সহ দায়িত্বশীল কেউ অফিসে আসেনি বা ছিল না। অফিসে ঝাড়ুদার নাসিমা খাতুন সহ চান্দুলিয়া বাড়ি পলাশ এবং আব্দুর রাজ্জাক নামে দু, দালাল অফিস থেকে কম্পিউটারে সরকারি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে কাজ করছিল। ঝাড়ুদার নাসিমার ঝাড়ু দেওয়া ছাড়াও অফিসের তহশিলদারের নির্দেশে দুপুরে রান্না করা লাগতো। অফিসে দালাল পলাশ ও আব্দুর রাজ্জাককে রেখে ঝাড়ুদার নাসিমা ডাল আনতে যায় পাশের দোকানে। হঠাৎ ১০ টার দিকে আকস্মিকভাবে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাক আহমেদ অফিসে প্রবেশ করে কাউকে না পেয়ে দালাল পলাশ এবং রাজ্জাককে জিজ্ঞেস করে তারা এই অফিসের কিনা। তখন তিনি অফিসের কর্মচারী না হয়ে ভূমি অফিসের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে অনুপস্থিত তহশীলদার নুরুল ইসলাম এবং পিয়ন ইমরানকে শোকজের নির্দেশ দেন। ওই সময় ঝাড়ুদার নাসিমা এসে জেলা প্রশাসককে না চিনে তিনি কে জানতে চান। পরে তহশিলদার নুরুল ইসলামের স্ত্রী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এবং পিয়ন ইমরান অসুস্থ বলে তাদেরকে কারণ দর্শানো এবং জবাব দাখিল করলে তাদেরকে পুরস্কার স্বরূপ বদলি করা হলেও কপাল পোড়ে মাস্টার রোলে দৈনিক ১০০ টাকা বেতনের ঝাড়ুদার বৃদ্ধা নাসিমার। তাকে চাকরীচুত্য করে তাড়িয়ে দেয়া হয়। নাসিমা দীর্ঘ ১ যুগ ধরে জয়পত্র কাঠি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে মাস্টার রোলে দৈনিক ১০০ টাকা বেতনে ঝাড়ুদার হিসাবে চাকরি করে আসছে। গরিব অসহায় ঝাড়ু দেওয়া ছাড়াও ওই অফিসের নায়েবের নির্দেশে দুপুরে অফিসের সবার জন্য রান্না করে বাড়তি কিছু টাকা পেত। সে টাকা দিয়ে তার অসহায় পরিবার কোন রকমে দু’মুঠো ভাত খাওয়ার সুযোগ পেতো। নাসিমা বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডলকে জানালেও উপজেলা ভূমি অফিসের অসৎ কর্মকর্তা ও নাজিরের জোগ সাজোগ তাকে চাকরি থেকে বিতাড়িত করে মোটা অংকের টাকা নিয়ে উত্তর শ্রীপুর গ্রামের মারুফ নামে একজনকে ঝাড়ুদার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে ভুক্তভোগীর পরিবার দাবী করেছেন। বর্তমান স্বামী হারা নাসিমা দু মুঠো ভাতের জন্য মানবতার জীবন যাপন করছে। এ বিষয়ে জয়পত্র কাটি তৎকালীন নায়েব নুরুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান তার স্ত্রী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি থাকায় ছুটিতে ছিল। এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার ভূমি মইনুল ইসলাম খান এ প্রতিনিধিকে জানান নায়েব নুরুল ছুটিতে ছিল এবং পিয়ন ইমরান অফিসের একটি ফাইল নিয়ে কালিগঞ্জ ছিল। কিন্তু ঝাড়ুদার নাসিমা ভুল স্বীকার না করায় তাকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে সেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কে? এর কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

ট্যাগস:

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

খাজরায় ৮ দলীয় নক আউট ফুটবল টুর্নামেন্টে ১ম সেমিফাইনাল গোলশূন্য ড্র

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের আকস্মিক ভূমি অফিস পরিদর্শন

আপডেট সময়: ০২:০৩:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রবাদে আছে মড়ার উপর খড়ার ঘা, বেরসিক তৎকালীন জেলা প্রশাসক কাউকে না জানিয়ে হঠাৎ ইউনিয়ন ভূমি অফিস পরিদর্শনে এসে কাউকে না পেয়ে উপস্থিত থাকা মাস্টার রোলে দৈনিক ১শত টাকা বেতনের ঝাড়ুদার বৃদ্ধা নাসিমার চাকরি গেল। এ যেন বুড়ো মরতে ,খুনের দায়ে নাসিমার ফাঁসি হলো, যত দোষ নন্দ ঘোষ। আর এই সুযোগে উপজেলা ভূমি অফিসের নাজির, এসিল্যান্ড মোটা অংকের ঘূষ বাণিজ্যে মারুফ হোসেন নামে অন্য একজনকে চাকরি দিয়ে নাসিমাকে চাকরি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে এলাকার জনপ্রতিনিধি, এলাকাবাসী এবং ভুক্তভোগী ঐ ঝাড়ুদার। সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে জয়পত্র কাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গত ১০ অক্টোবর এ ঘটনা ঘটে। জয়পত্র কাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দীর্ঘদিন যাবত অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। উক্ত ভূমি অফিসে পলাশ ,রাজ্জাক সহ একাধিক দালালদের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ ও দখলে রেখে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ফলাও ভাবে প্রকাশ পেলে টনক নড়ে জেলা প্রশাসনের। গত ১০ অক্টোবর জয়পত্র কাটি ভূমি অফিসে তহশিলদার নুরুল, পিয়ন ইমরান সহ দায়িত্বশীল কেউ অফিসে আসেনি বা ছিল না। অফিসে ঝাড়ুদার নাসিমা খাতুন সহ চান্দুলিয়া বাড়ি পলাশ এবং আব্দুর রাজ্জাক নামে দু, দালাল অফিস থেকে কম্পিউটারে সরকারি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে কাজ করছিল। ঝাড়ুদার নাসিমার ঝাড়ু দেওয়া ছাড়াও অফিসের তহশিলদারের নির্দেশে দুপুরে রান্না করা লাগতো। অফিসে দালাল পলাশ ও আব্দুর রাজ্জাককে রেখে ঝাড়ুদার নাসিমা ডাল আনতে যায় পাশের দোকানে। হঠাৎ ১০ টার দিকে আকস্মিকভাবে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাক আহমেদ অফিসে প্রবেশ করে কাউকে না পেয়ে দালাল পলাশ এবং রাজ্জাককে জিজ্ঞেস করে তারা এই অফিসের কিনা। তখন তিনি অফিসের কর্মচারী না হয়ে ভূমি অফিসের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে অনুপস্থিত তহশীলদার নুরুল ইসলাম এবং পিয়ন ইমরানকে শোকজের নির্দেশ দেন। ওই সময় ঝাড়ুদার নাসিমা এসে জেলা প্রশাসককে না চিনে তিনি কে জানতে চান। পরে তহশিলদার নুরুল ইসলামের স্ত্রী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এবং পিয়ন ইমরান অসুস্থ বলে তাদেরকে কারণ দর্শানো এবং জবাব দাখিল করলে তাদেরকে পুরস্কার স্বরূপ বদলি করা হলেও কপাল পোড়ে মাস্টার রোলে দৈনিক ১০০ টাকা বেতনের ঝাড়ুদার বৃদ্ধা নাসিমার। তাকে চাকরীচুত্য করে তাড়িয়ে দেয়া হয়। নাসিমা দীর্ঘ ১ যুগ ধরে জয়পত্র কাঠি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে মাস্টার রোলে দৈনিক ১০০ টাকা বেতনে ঝাড়ুদার হিসাবে চাকরি করে আসছে। গরিব অসহায় ঝাড়ু দেওয়া ছাড়াও ওই অফিসের নায়েবের নির্দেশে দুপুরে অফিসের সবার জন্য রান্না করে বাড়তি কিছু টাকা পেত। সে টাকা দিয়ে তার অসহায় পরিবার কোন রকমে দু’মুঠো ভাত খাওয়ার সুযোগ পেতো। নাসিমা বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডলকে জানালেও উপজেলা ভূমি অফিসের অসৎ কর্মকর্তা ও নাজিরের জোগ সাজোগ তাকে চাকরি থেকে বিতাড়িত করে মোটা অংকের টাকা নিয়ে উত্তর শ্রীপুর গ্রামের মারুফ নামে একজনকে ঝাড়ুদার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে ভুক্তভোগীর পরিবার দাবী করেছেন। বর্তমান স্বামী হারা নাসিমা দু মুঠো ভাতের জন্য মানবতার জীবন যাপন করছে। এ বিষয়ে জয়পত্র কাটি তৎকালীন নায়েব নুরুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান তার স্ত্রী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি থাকায় ছুটিতে ছিল। এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার ভূমি মইনুল ইসলাম খান এ প্রতিনিধিকে জানান নায়েব নুরুল ছুটিতে ছিল এবং পিয়ন ইমরান অফিসের একটি ফাইল নিয়ে কালিগঞ্জ ছিল। কিন্তু ঝাড়ুদার নাসিমা ভুল স্বীকার না করায় তাকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে সেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কে? এর কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি।