1. faysal.ce@gmail.com : dakshinermashal :
  2. abuhasan670934@gmail.com : Hasan :
  3. sakalctc.bd@gmail.com : Nityananda Sarkar : Nityananda Sarkar
বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১১ অপরাহ্ন
২৫ আশ্বিন, ১৪৩১
Latest Posts

শ্রদ্ধা: তারামন বিবি- সীমাহীন সাহসের নাম

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : শনিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৮
  • ৬৬৫ সংবাদটি পড়া হয়েছে


জায়েদ হাসান:

১৯৭১ সাল। ১৬ ডিসেম্বর। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয় বাংলাদেশ। বিশ্বের বুকে রচিত হয় এক নতুন ইতিহাস। নতুন এক মানচিত্র। আর এই জয় ছিনিয়ে আনতে জীবন বাজি রেখেছিলে বেশ কয়েকজন নারী। তাদের মধ্যে একজন হলেন তারামন বেগম । মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি তারামন বিবি নামে পরিচিত ছিলেন।

অসীম সাহসিকতার এক প্রতীক তারামন বিবি। মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১ নং সেক্টরে নিজ গ্রাম কুড়িগ্রাম জেলার শংকর মাধবপুরে ছিলেন তিনি। তখন ১১ নং সেক্টরের নেতৃত্বে ছিলেন সেক্টর কমান্ডার আবু তাহের। মুহিব হাবিলদার নামে এক মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবিকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করেন। তিনি তারামনকে ক্যাম্পে রান্নার জন্য নিয়ে আসেন। তখন ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরী ছিলেন তিনি।

সেই দিনটির কথা মনে করে এই বীর নারী জানান, তখন সন্ধ্যা। রান্নার জন্য কচুরমুখি তুলছিলেন। এ সময় পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন এক মুক্তিযোদ্ধা। তার নাম মুহিব হাবিলদার। তিনি তাকে তার সঙ্গে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যেতে চাইলেন। রান্নার কাজের জন্য। বিষয়টি মাকে জানালেন। কিন্তু মা দেশের কথা ভেবে ক্যাম্পে যেতে অনুমতি দিলেন।

মুহিব হাবিলদার তারামন বিবিকে তার ধর্মমেয়ে বানালেন। ক্যাম্পে মূলত রান্নার কাজই করতেন তিনি। আর অস্ত্রগুলো মুছে পরিষ্কার করতেন। রান্নার ফাঁকে ফাঁকে মুহিব হাবিলদার তাকে অস্ত্র চালানো শেখাতেন।

তারামন বিবির ভাষ্য, তাকে প্রথমে রাইফেল চালানো শেখানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ছোট হওয়ায় বুকে ব্যথা পেতেন।পরে স্টেনগান চালানো শেখেন। পরবর্তীতে সহকর্মীদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। পাকিস্তানি বাহিনীর খবর সংগ্রহ করতেন।

১৯৭১ সালে একদিন দুপুরে খাওয়ার সময় পাকিস্তানি বাহিনী একটি গানবোট নিয়ে হানা দেয় তারামন বিবির ক্যাম্পে। সেদিন সহযোদ্ধাদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন তিনি। সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে শত্রুদের পরাস্ত করেন। এরপর বেশ কয়েকটি যুদ্ধে পুরুষ সহযোদ্ধাদের পাশাপাশি অস্ত্র হাতে লড়াই করেন এই বীর নারী।

ক্যাম্পে তিনিই ছিলেন সবার ছোট। তাই সবাই তাকে খুব আদর করত। একদিন দুপুরে খাওয়ার সময় পাকিস্তানি বাহিনী একটি গানবোট নিয়ে তাদের দিকে আসতে থাকে। খবর পেয়ে তিনিও তার সহযোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। শত্রুকে পরাস্ত করেন। পরবর্তী সময়ে তারামন বিবি বেশ কয়েকটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ভাগ্যের জোরে কয়েকবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন।

যুদ্ধ শেষে মায়ের কাছে ফিরে আসেন তারামন। ১৯৭৩ সালে তৎকালিন সরকার মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ‘বীর প্রতীক’ উপাধিতে ভূষিত করে তাকে। তারপর ১৯৭৪ সালে আবদুল মজিদের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। এই নারীর এক ছেলে আবু তাহের, ও মাজেদা খাতুন নামে এক মেয়ে আছে।

এরপর তারামন বিবিকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্বাধীনতা অর্জনের ২৪ বছর পরও তার সন্ধান মেলেনি। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ১৯৯৫ সালের দিকে তার সন্ধান মেলে। ময়মনসিংহের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক বিমল কান্তি তাকে খুঁজে বের করেন। নারী সংগঠনগুলো তাকে ঢাকায় নিয়ে আসে। ওই বছর ১৯ ডিসেম্বর তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে তারামন বিবির হাতে বীরত্বের সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।

১৯৫৭ সালে রাজীবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের শংকর মাধবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তারামন বিবি। তার বাবার নাম আবদুস সোহবান ও মায়ের নাম কুলসুম বিবি। তিনি অস্ত্র হাতে ১১ নম্বর সেক্টরের অধীন রৌমারী রণাঙ্গনের কোদালকাটির সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন।

মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাসেই চিরবিদায় নিলেন একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা বীরপ্রতীক তারামন বিবি। সুত্র : ইত্তেফাক

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :
© All rights reserved © 2024
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd