1. faysal.ce@gmail.com : dakshinermashal :
  2. abuhasan670934@gmail.com : Hasan :
  3. sakalctc.bd@gmail.com : Nityananda Sarkar : Nityananda Sarkar
বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন
১ শ্রাবণ, ১৪৩২
Latest Posts
📰পাইকগাছায় বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত📰পাইকগাছায় ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের চারা ধ্বংস 📰সাতক্ষীরায় ভারী বৃষ্টিতে পানিবন্দী শত শত পরিবার📰তৃতীয় মাত্রা’র সম্পাদকের সুস্থতা কামনা সাতক্ষীরা জেলা সাংবাদিক ফোরামের 📰তালায় দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধিতে সমবায় সদস্যদের মাঝে চেক বিতরণ📰শ্যামনগরে বজ্রপাতে মৎস্য চাষীর মৃত্যু📰 অপরিকল্পিত স্লুইস গেটের জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে লাবসার ১৭ টি গ্রাম,  পানিবন্দী হাজার হাজার মানুষ 📰তালা যুব পানি কমিটির সভা শেষে ইউএনও’র কাছে স্মারকলিপি প্রদান📰ছাত্ররাজনীতিকে ‘না’ বললো খু‌বির সহস্রাধিক নবীন শিক্ষার্থী📰সাতক্ষীরায় ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখির বাসা

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই, ২০১৮
  • ১৬৮৫ সংবাদটি পড়া হয়েছে

মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): কঠোর পরিশ্রম এবং অসামান্য শৈল্পিকতায় বাসা তৈরি করে দৃষ্টান্ত হয়ে আছে বাবুই পাখি। বাবুই পাখির এ অসামান্য পরিশ্রম এবং শিল্পি মনোভাবকে কেন্দ্র করেই কবি রজনীকান্ত সেন লিখেছিলেন কালজয়ী কবিতা ‘স্বাধীনতার সুখ’। ‘স্বাধীনতার সুখ’ কবিতায় কবি রজনীকান্ত সেন চড়–ই এবং বাবুই পাখির মধ্যে কথাপোকথন আকারে বাবুই পাখির নিজের তৈরি অনন্য বাসার যে পরিচয় দিয়েছেন তা আজ কেবলমাত্র বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ। কালের বিবর্তনে আজ বাবুই পাখির বাসা নেই বললেই চলে।

এখন আর চোখে পড়ে না বাবুই পাখি ও তার নিজের তৈরি দৃষ্টিনন্দন সেই ছোট্ট বাসা তৈরির নৈসর্গিক দৃশ্য। হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির বয়ন শিল্পী, স্থপতি এবং সামাজিক বন্ধনের কারিগর বাবুই পাখি ও তার বাসা। খড়, তালপাতা, ঝাউ ও কাশবনের লতাপাতা দিয়ে বাবুই পাখি উঁচু তালগাছে বাসা বাঁধে। সেই বাসা দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড়েও তাদের বাসা পড়ে যেতনা। বাবুই পাখির শক্ত বুননের এ বাসাটি শিল্পের এক অনন্য সৃষ্টি যা টেনে ছেঁড়াও কষ্টকর। এক সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে সারি সারি উঁচু তালগাছ আর বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা দেখা যেত। এখন তা আর সচরাচর চোখে পড়ে না। কালের বিবর্তনে ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে সেই দৃষ্টি ভোলানো পাখিটিকে ও তার নিজের তৈরি বাসা যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে নৈস্বর্গীক রূপ দিত, তা আজ আমরা হারাতে বসেছি।

বাবুই Ploceidae গোত্রের অন্তর্গত একদল প্যাসারাইন পাখি। খুব সুন্দর বাসা বোনে বলে এরা “তাঁতী পাখি” (Weaver Bird) নামেও পরিচিত। বেশ জটিল গঠন আর খুব সুন্দও আকৃতির এর বাসা। এরা মূলত বীজভোজী পাখি, সে জন্য তাদের ঠোঁটের আকৃতি বীজ ভক্ষণের উপযোগী, চোঙাকার আর গোড়ায় মোটা।

বাবুই সাধারণত দলবদ্ধভাবে জীবনযাপন করতে পছন্দ করে। এজন্য গ্রামাঞ্চলের তালগাছে একাধিক বাবুই পাখির বাসা লক্ষ করা যায়। বাংলাদেশে তিন ধরনের বাবুই দেখা যায় এগুলো হলো দেশি বাবুই (Ploceus philippinus), দাগি বাবুই (Ploceus manzar) ও বাংলা বাবুই (Ploceus bengalensis)।

বাবুই পাখির একটি অনন্য অসাধারণ বৈশিষ্ট এর বাসা বানানোর কৌশল। এরা বাসা বানানোর জন্য খুবই পরিশ্রম করে। এদের বাসা উল্টানো কলসির মত দেখতে। বাসা বুননে এরা ঘাস, খড়, নলখাগড়া ও হোগলার বন ব্যাবহার করে। ঠোঁট দিয়ে ঘাসের আস্তরণ সাজিয়ে নিপুণ যতেœ বাবুই তার বাসা তৈরি করে। পরম যতেœ পেট দিয়ে ঘষে (পালিশ করে) গোল অবয়ব মসৃণ করে। শুরুতে দুটি নিম্নমুখী গর্ত থাকে। পরে একদিক বন্ধ করে ডিম রাখার জায়গা হয়। অন্যদিকটি লম্বা করে প্রবেশ ও প্রস্থান পথ হয়। শোনা যায় বাবুই জোনাকী ধরে এনে রাতে বাসায় আলো জ্বালানোর ব্যাবস্থা করে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য হারিয় যাচ্ছে বাবুই পাখি। অনেক অসচেতন মানুষ বাবুইয়ের বাসা ভেঙে ফেলে, একারণেও এদের সংখ্যা রহস্যজনকভাবে কমে যাচ্ছে। দেশে বাবুইয়ের বাসা বুননের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নল ও হোগলার বন কমে যাওয়া ও বাবুইয়ের সংখ্যা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ।
এ ব্যাপাওে সাতক্ষীরা জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা সমরেশ চন্দ্র দাশ বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তন এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য বাবুই পাখির বসবাসের যথাযোগ্য স্থান ও পরিবেশ কমে যাচ্ছে। যে কারণে বাবুই পাখি এবং এর বাসা বিলুপ্তির পথে।

বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই-
“কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই;
আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকার ‘পরে,
তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে।”
বাবুই হাসিয়া কহে- “সন্দেহ কি তায়?
কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়;
পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা,
নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর, খাসা।”

একসময় হয়তো রজনীকান্ত সেনের এ কালজয়ী কবিতা শুধু বইয়ের পাতায়ই থেকে যাবে। আগমী প্রজন্ম হয়তো দেখতে পাবে না বাবুই পাখির গর্বের সেই নিজ হাতে গড়া খাসা কাচা ঘর।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :
© All rights reserved © 2025
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd