1. faysal.ce@gmail.com : dakshinermashal :
  2. abuhasan670934@gmail.com : Hasan :
  3. sakalctc.bd@gmail.com : Nityananda Sarkar : Nityananda Sarkar
বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২২ অপরাহ্ন
১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১
Latest Posts
📰‘বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক নয়াদিল্লি’📰আগরতলার বাংলাদেশ হাইকমিশনে কনস্যুলার সেবা বন্ধ📰গণমাধ্যমে মতামত দেওয়ায় Huawei” কর্তৃক ভোক্তা অধিকার সংগঠক মহিউদ্দীনের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলার নিন্দা ও অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহবান📰শ্যামনগরে কৃষিতে ক্ষতিকর কীটনাশকের ব্যবহার হ্রাসকরণের দাবিতে মানববন্ধন  📰২৬ তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস -২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে সাতক্ষীরায় বর্ণাঢ্য র‍্যালি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত📰সাতক্ষীরার চন্দনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন📰যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সাতক্ষীরার উদ্যোগে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন📰সাতক্ষীরা সদরে মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন 📰আশাশুনির গাজীপুর মাদরাসার অধ্যক্ষের দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত অনুষ্ঠিত 📰সাতক্ষীরায় ক্যাব’র মানববন্ধন

বনের রাজা

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : শনিবার, ২ জুন, ২০১৮
  • ১১৭৫ সংবাদটি পড়া হয়েছে

আহমেদ সাব্বির

বনের রাজা বাঘ। বাঘের যেমন রাশভারী মেজাজ, তেমনি গট্ মট্ চলন। তাঁর ছায়াটি দেখলে বনের পশুদের পিলে চমকে যায়। গুটিসুটি মেরে গর্তে লুকায়। পাখিরা ফুড়–ৎ করে উড়ে পালায়। রাজামশাই একবার গর্জন করলে গোটা বন ঠক্ ঠক্ কওে কাঁপতে থাকে। আর তাঁর আদেশ অমান্য করলে নিশ্চিত মৃত্যু।

কিন্তু এক বনে বাস করতা এক বাঘ। বিশাল দেহ তাঁর। দেখতে ভয়ংকর। গায়ে হলুদ-ডোরা দাগ। সে ছিল বনের রাজা। কিন্তু রাজা হলে কি হবে? কেউ তাকে কানাকড়ি দাম দিত না। ভয় পাওয়াতো দূরের কথা, বনের হরিণ, শেয়াল, বানর, ময়ূও, গ-ার, কুমির, খরগোশ, হাতি সবই ছিল। কিন্তু ওরা কেউ বাঘকে রাজা বলে মানতো না। এজন্য বাঘের দুঃখের সীমা ছিল না। কী বিশাল দেহ তাঁর। পাকা শিকারীর মতো গোঁফ। গায়ে অসূরের মতো শক্তি। কিন্তু কোন মর্যাদা নেই তাঁর। সবাই তাকে উপহাস করতো।

একদিন ভোর বেলা। ঘুম থেকে জেগে বেশ জোরেশোরে একটা গর্জন করলেন রাজামশাই। অমনি ছুটে এলো গ-ার। রেগেমেগে বলল- এ্যাই! সাত সকালে অত জোরে চিৎকার করলি কেন? আমার কাঁচা ঘুমটা ভেঙে গেল।
রাজা মশাই বললেন- আমি তো বনের রাজা। আমি তো গর্জন করবই। গর্জন করাই তো আমার স্বভাব।
ক্স এ্যা.., খুব রাজাগিরি শিখেছিস না? গায়ে মানে না আপনি মোড়ল। ফের যদি কোনদিন চিৎকার করেছিস তো চড় দিয়ে দাঁত ফেলে দেব।
গ-ারের কথা শুনে মহারাজ মনে মনে খুব দুঃখ পেলেন। সেদিন খুব খিদেও পেয়েছিল তাঁর। হাই তুলতে তুলতে তিনি ভাবলেন- অনেক দিন মাংস খাওয়া হয় না। আজ একটা হরিণ শিকার করলে মন্দ হয় না। অন্তত দু’তিন দিন ধরে খাওয়া যাবে। তিনি হাঁটতে হাঁটতে গভীর বনের দিকে চলে এলেন। হরিণ কোথায় পাওয়া যায় খুঁজতে লাগলেন। পথিমধ্যে দেখা হলো শিয়ালের সঙ্গে। সে ছিল ভিষণ চালাক। রাজাকে দেখে মাথা নিচু করে সালাম জানালো। বলর-
ক্স জয় হোক মহারাজের। তা পায়ে হেঁটে কোথায় চলেছেন হুজুর?
ক্স একটু হাঁটতে বের হলাম আর কি।
ক্স তা আমাকে খবর দিলেন না কেন? হাতি পাঠিয়ে দিতাম। ওর পিঠে চড়েই ভ্রমণে বের হতেন।
শিয়ালের কথা শুনে রাজামশাই আল্লদে গদ গদ হয়ে গেলেন। বললেন- সকাল থেকে শরীরটা ম্যাজ ম্যাজ করছিল। ভাবলাম একটু হাওয়া খেয়ে আসি। তা তোমার খবর কি? পাঠশালা কেমন চলছে?
চলছে কোন রকমে আর কি?
কোন অসুবিধা হলে আমাকে জানাবে কিন্তু।
মহারাজ মহানুভব। আপনার মতো দয়ালু রাজা থাকতে আমাদের আর অসুবিধা কোথায়? কী মাহান! কী উদার! অন্যরা কেবল বুঝলো না।
বাঘরাজা বললেন- আচ্ছা এখানে হরিণ পাওয়া যাবে কোথায় বলতে পার? ক’দিন ধরে হরিণের মাংস খেতে ইচ্ছে করছে। শিয়াল বলল- খুব পারি মহারাজ। তবে একটু দূরে। উত্তরের জঙ্গলে। আমার ডেরার কাছেই। আপনি চাইলে আমি পথ দেখিয়ে নিয়ে যেতে পারি। কিন্তু…….।
কিন্তু কি?
না মানে, আমার পায়ে বাতের ব্যথাটা বেশ বেড়েছে। গত রাত থেকে টনটন করছিল। হনুমানজির কাছথেকে তেলপড়া আনতেই এদিনে এসেছিলাম। বেয়াদবি মাফ করবেন হুজুর। অতটা পথ হেঁটে যেতে আমার খুব পেরেশানি হবে।
মহারাজ বললেন- তা তো ঠিকই। তুমি বরং এক কাজ করো। আমার পিঠেই চড়ে বসো। আমিই তোমাকে নিয়ে যাচ্ছি।
দুষ্টু শিয়াল বাঘের পিঠে চড়ে আমোদ করতে করতে নিজের ডেরার দিকে রওনা হলো। পথে দেখা হলো হাতির সঙ্গে। শিয়ালের কা- দেখে হাতি হেসে ফেলল। শিয়াল বলল- মহারাজের শরীরটা জমে গিয়েছিল। আমি একটু ব্যায়াম করাচ্ছি আরকি। ঠিক বলি নি মহারাজ? মহারা বললেন- হুমমম।

বাঘরাজা হাঁটতে হাঁটতে উত্তরের জঙ্গলে এসে পড়লেন। একটু দূরে একটা হরিণকে তাঁর বাচ্চাদের নিয়ে চরাতে দেখা গেল। শিয়াল বাঘের পিঠ থেকে লাফিয়ে নিচে নামলো। বলল- মহারাজ আপনি এখন যত খুশি হরিণ শিকার করুন। আপনাকে আর বিরক্ত করা সমিচীন হবে না। আমি বরং যাই। বলেই সে সুড়ুৎ করে একটা গর্তে ঢুকে পড়লো।
রাজামশাই হরিণ দেখে খুব খুশি হলেন। কিছুদূও এগিয়ে গিয়ে একটা ঝোঁপের আড়ালে তিনি ওৎ পেতে থাকলেন।
মা হরিণ তাঁর বাচ্চাদের খাওয়ানোর ফাঁকে নানা উপদেশ দিচ্ছিল। সইে সঙ্গে বনের পশুদের সম্পর্কেও একটা ধারণাও।
ক্স এই বনে অনেক হিং¯্র প্রাণি রয়েছে। ওরা যখন তখন তোমাদের খেয়ে ফেলতে চাইবে। কিন্তু তোমাদের সব সময় সজাগ থাকতে হবে। নিজেদের রক্ষা করে চলতে হবে। যখন ঘাস খাবে কিংবা বিশ্রাম নেবে তখনো চোখ-কান খোলা রাখবে। এমনকি পেটের মধ্যে ভুটভাট শব্দ হলেও লাফিয়ে উঠবে। তবে এই বনের রাজা বাঘ। তাকে ভয় না পেলেও চলবে। কারণ সে বোকা। চেহারটা ভয়ংকর হলেও বুদ্ধিটা তাঁর ভেড়ার মতোই। এই বনে কেউ তাকে ভয় পায় না। তোমরাও পাবে না।

রাজা মশাই আড়ালে দাঁড়েয়ে হরিণ মায়ের সব কথাগুলো শুনে ফেললেন। তাঁর খুব অপমান বোধ হল। শিকারের ইচ্ছাটাই মরে গেল। তিনি ফরতে যাবেন এমন সময় দেখতে পেলেন- মাথার উপর একটা গাছের ডালে দুইটা বানর ভিষণ ঝগড়া করছে। ক্যাচ কুচ করে চিৎকার করছে। ভেংচি কাটছে। রাজা মশাই বিরক্ত হলেন। বললেন- এ্যাই, তোমরা ঝগড়া করছ কেন? দেখছ না নিচে রাজা দাঁড়িয়ে আছে।
বানর বলল- মাফ করবেন মাহারাজ। আপনাকে দেখে আমরা ভেবেছিলাম বনবিড়াল। আর আমার বউ ভেবেছিলো হুলো। সেটা নিয়েই আমাদের মধ্যে তর্কটা চলছিল।
রাজা বললেন- মূর্খ কোথাকার। তোমরা ঝগড়া বন্ধ কর। আমি ক্ষুধার্ত।
মহারাজ, যদি কিছু মনে না করনে আমি কি আপনাকে কলা খাওয়াতে পারি? গাছপাকা সবরি কলা। ভারী মিষ্টি।
ক্স চুপ কর হতভাগা। বনের রাজা খাবে কলা? সে কি কলা খায়?
মনের দুঃখে রাজা নিজের ডেরার দিকে ফিরতে শুরু করলেন। হাঁটতে হাঁটতে সন্ধ্যা ঘণিয়ে এলো। তিনি ভাবলেন- বনের পশুরা যখন তাকে রাজার মর্যাদা দিতে চায় না তখন এই বনে না থাকাই ভালো। তিনি ঠিক করলেন অন্যত্র চলে যাবেন। হঠাৎ তিনি পেঁচার ডাক শুনতে পেলেন। সে হাঁপাতে হাঁপাতে রাজার সামনে এসে উপস্থিত হলো।
রাজা মশাই! রাজা মশাই!
কি সংবাদ বলো।
বনের একদল মানুষ ঢুকেছে। তাঁরা অন্ধকারে মশাল জ্বেলে কি যেন করছে।
কোথায় তাঁরা? নিশ্চই কোন মতলবে এসেছে।
ঐতো দক্ষিণের জঙ্গলে। নদীপাড়ে।
চলো, দেখে আসি।
রাজা দ্রুত বেগে পথ চলতে শুরু করলেন। বনের কাছাকাছি চলে আসতেই চোখে আলো এসে পড়লো। তিনি একটা ঝোঁপের আড়ালে লুকিয়ে দেখতে পেলেন- দশ-বারো জন লোক। কালো পোশাক পরা। হাতে ভারী বন্দুক। সঙ্গে প্রকান্ড একটা লোহার খাঁচা আর একটা জাল। রাজা মশাই ভয় পেয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে তিনি দৌড়ে পালালেন।
পরদিন সকালবেলা। রাজামশাই ঘুম থেকে জেগে আড়মোড়া ভাঙছেন। এমন সময় খরগোশ এলো হাঁপাতে হাঁপাতে। বলল-
মহারাজ! সর্বনাশ হয়েছে। শিগগিরি চলুন আমার সাথে।
কেন কি হয়েছে?
বনের মধ্যে একদল মানুষ এসেছে। তাদের হাতে বন্দুক। তাঁরা হাতিমামাকে একটা লোহার খাঁচায় আটকে রেখেছে। অজগর আর গ-ারকে একটা জালে আটকে রেখেছে। ওরা ভিষণ কান্নাকাটি করছে।
বাঘরাজা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলেন। তিনি ভাবলেন- কেউ তাকে দাম দিক আর নাই দিক, সে তো বনের রাজা। প্রজাদেও বিপদে এগিয়ে যাওয়াই তাঁর কর্তব্য।

তিনি ছুটে চললেন দক্ষিণের বনে। সেখানে গিয়ে দেখলেন- সবাই খুব কষ্ট পাচ্ছে। কান্নাকাটি করছে। হাতি চিৎকার দিয়ে খাঁচা ভাঙার চেষ্টা করছে। গ-ার আর অজগর শক্ত জালের মধ্যে মরার মতো শুয়ে আছে।
প্রজাদের বিপদ দেখে রাজা আর সইতে পারলেন না। তাঁর বুকটা হু হু করে উঠলো। ওদের বাঁচাতে তিনি মরিয়া হয়ে উঠলেন। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রচন্ড হুংকার দিয়ে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়লেন মানুষগুলোর উপর। একটা মানুষ খুব দ্রুত বন্দুক তাক কওে গুলি ছুঁড়তে যাবে, এমন সময় গাছ থেকে বানর লাফিয়ে পড়লো। ছোঁ মেরে বন্দুক নিয়ে পালালো। মানুষদল বাঘের আক্রমণে নদীতে লাফিয়ে পড়ে পালালো।

আটকে থাকা সব পশুদের মুক্ত করা হলো। খাঁচা খুলে বের করে আনা হলো হাতিকে। ইঁদুর এসে জাল কেটে গ-ার আর অজগরকে বের করে আনলো। বনের সবাই বাঘরাজার সাহস দেখে বিষ্মিত হয়ে গেল।

এতদিন তাঁরা রাজাকে শুধু অপমানই করেছে। কখনো তাকে রাজা বলে মান্য করেনি। এজন্য সবাই লজ্জিত হলো। তাঁরা বুঝতে পারলো তাদের মহারাজ মহৎ। তিনি দূর্বলের উপর দয়া করেন আর সবল শত্রুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। পশুরা সবাই রাজার কাছে ক্ষমা চাইলো। বলল- মহারাজ, আমদের ক্ষমা করুন। আজ থেকে আর কখনো আপনাকে অমান্য করব না। আপনার হুকুমেই চলবে বনের পশুরা।

মহারাজ গম্ভীর স্বরে বললেন- ঠিক আছে। যাও তোমাদের ক্ষমা করা হলো।
সবাই তখন চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো- জয় মহারাজের জয়! জয় বাঘবাহাদুরের জয়।
বাঘও তখন রাজার সম্মান ফিরে পেয়ে খুশিতে ডগমগ করতে লাগলেন।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :
© All rights reserved © 2024
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd