দেশের বাইরে যাচ্ছে সাতক্ষীরার আম


মে ১৯ ২০১৮

Spread the love

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার আম আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।

জেলায় চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন আমের বাজারজাতকরণের জন্য।


গত ৪ বছর যাবৎ সাতক্ষীরার আম রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপে। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও ইউরোপে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে সাতক্ষীরার আম। আজ শনিবার সকালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসীন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আম রপ্তানি কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা প্রক্রিয়াগত কোনো জটিলতা তৈরি না হলে শনিবার থেকেই রপ্তানি শুরু হবে সাতক্ষীরার আম। যা যাবে ইতালি, সুইডেন, ডেনমার্ক, জার্মানি, ফ্রান্সসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

সাতক্ষীরার মাটি ও আবহাওয়া আম চাষের অনুকূল হওয়ায় অন্যান্য অঞ্চলে উৎপাদিত আমের চেয়ে সাতক্ষীরার আম বেশি সুস্বাদু। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরায় সাতটি উপজেলায় চলতি বছরে প্রাায় চার হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১১৯৫ হেক্টর জমিতে, কলারোয়া উপজেলায় ৬০২ হেক্টর, তালা উপজেলায় ৭০৫ হেক্টর, দেবহাটা উপজেলায় ৩৬৮ হেক্টর, কালিগঞ্জ উপজেলায় ৮০৫ হেক্টর, আশাশুনি উপজেলায় ১২৫ হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে।

এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদরে আমের বাগন রয়েছে ১৫৩০টি, কলারোয়ায় ১৩১০টি, তালায় ১৪৫০টি, দেবহাটায় ৪৭৫টি, কালিগঞ্জে ১৪২টি, আশাশুনিতে ১৯০টি ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৫০টি আমের বাগান রয়েছে।

এ জেলায় গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, ক্ষিরসরাইসহ নানা জাতের আম বাগান রয়েছে। আমের পরিচর্যার জন্য নানামুখী কর্মযজ্ঞে মেতে উঠেছে জেলার শত শত মৌসুমী শ্রমিক। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মৌসুমে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও সাতক্ষীরা জেলা থেকে প্রায় ১ হাজার মেট্রিক টন আম বিদেশে রফতানি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত বছর যার পরিমাণ ছিল ৭’শ মেট্রিক টন।

কলারোয়া উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মনিরুল ইসলাম জানান, গত বছর কলারোয়া উপজেলা থেকে ৪০ মেট্রিকটন আম বিদেশে রপ্তানী হয়েছিল। যা অন্যান্য উপজেলার চেয়ে বেশী। এবার এ উপজেলা থেকে ৮০ মেট্রিকটন আম বিদেশে রপ্তানী করা হবে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কলারোয় উপজেলায় আমের সবচেয়ে বড় পাইকারী বাজার বাউড়ি বেলতলা ও সিংগা বাজার।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, কলারোয়ার সিংগা আমবাজারে নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম বাজারজাত করণের লক্ষ্যে আমের পাইকারী বাজার বসেছে। এই বাজারের আমে কোন রাসায়নিক মেশানো হয় না।

উপজেলার সিংড়া বাজার আম ব্যবমসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও কেরালকাতা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ জানান, এখানকার পাইকারী বাজার থেকে আম কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর জন্য ইতিমধ্যে ব্যবসায়ীরা এখানে অবস্থান করছেন। তিনি আরো জানান, চাপাইনবাবগঞ্জের কানসাট, রাজশাহী, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের আম ব্যবসায়ীরা বর্তমানে এখানে অবস্থান করছেন। এখানকার আম ইউরোপেও রপ্তানি হচ্ছে।

কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপন জানান, কলারোয়া উপজেলায় এবার আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এই আমে যাতে কোন রাসায়নিক পদার্থ মেশানো হয় না হয় সেজন্য আম চাষীদের নিয়ে ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক দফায় হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো জানান, আম ব্যবসায়ী ও আম চাষিদের আরও বেশি প্রশিক্ষণ ও ব্যাংক ঋণের সুবিধা দিলে তারা আরও ভালোভাবে আম চাষ ও আমের ব্যবসার প্রসার বাড়িয়ে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচারক কৃষিবিদ কাজী আব্দুল মান্নান জানান, গত চার বছর ধরে এ জেলার আম ইউরোপে রপ্তানি হচ্ছে। চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা জেলায় ৪ হাজার ১’শ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় এক হাজার মেট্রিকটন আম এবারও ইউরোপের বাজারে রপ্তানী হবে।

শ্যামনগর

যশোর

আশাশুনি


জলবায়ু পরিবর্তন