ডেস্ক রিপোর্ট: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আবদুল্লাহ আল হারুন বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হাড়ের বিভিন্ন অংশে এক্স-রে করা হয়েছে। আগামীকাল রিপোর্ট পাওয়া যাবে। রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানানো যাবে। তবে আপাতত দৃষ্টিতে মনে হয়েছে তিনি ভালো আছেন।
শনিবার দুপুরে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা ওই হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
(বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য তাকে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে আসার পর তাকে কেবিনে রাখা হয়। তারপর তিনি হেঁটেই এক্স-রে রুমে আসেন।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার ইচ্ছা অনুযায়ী তার ব্যক্তিগত চারজন চিকিৎসকের উপস্থিতিতে হাড়ের বিভিন্ন অংশে এক্স-রে করা হয়েছে। তারা হলেন- ডা. মামুন, ডা. এফ এম সিদ্দিকী, ডা. ওয়াহিদুর রহমান ও ডা. শুভ।
আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা জন্য যে চার সদস্যের মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছিল তাদের পরামর্শ অনুযায়ী এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। আগামীকালই এই রিপোর্ট পাওয়া যাবে। রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানানো যাবে।
তিনি বলেন, আগামীকাল আমরা এই রিপোর্ট কারা কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেব। তারা আবার মেডিকেল বোর্ডকে পাঠাবে। তবে আপাতত দৃষ্টিতে মনে হয়েছে তিনি সুস্থ আছেন।
পরিচালক বলেন, আমরা হুইল চেয়ার প্রস্তুত রেখেছিলাম। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া নিজেই বলেছেন, আমি হেঁটে যেতে পারবো, হুইল চেয়ারের প্রয়োজন নেই।
এর আগে বেলা ১১টা ৩৩ মিনিটের দিকে কারাগার থেকে খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে আনা হয়। এরপর তাকে কেবিন ব্লকের ৫১২ নম্বর কেবিনে রাখা হয়।
সেখান থেকে কেবিন ব্লকের প্যাথলজি বিভাগে পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়ার রক্ত নেয়া হয়। এরপর দুপুর পৌনে একটার দিকে তাকে শারীরিক পরীক্ষা করতে রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগে নেয়া হয়। এখানে এক্স-রে ও অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে কারাগারে নেয়া হয়।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৫ বছর কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। ওইদিনই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। ইতোমধ্যে বিচারিক আদালতের রায় বাতিল এবং জামিন চেয়ে খালেদা জিয়া হাইকোর্ট আপিল করেছেন।
বিভিন্ন সময়ে বিএনপি নেতারা দাবি করেছেন, খালেদা জিয়া নির্জন কারাগারে বন্দি অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এজন্য তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা সেবা দেয়ার অনুমতিও চেয়েছেন তারা। কিন্তু, এখনঅব্দি সে অনুমতি মেলেনি।
এরই মধ্যে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসায় একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. শামসুজ্জামান।
বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- ডা. মনসুর হাবীব (নিউরোলজি), টিটু মিয়া (মেডিসিন) ও সোহেলী রহমান (ফিজিক্যাল মেডিসিন)।
এই মেডিকেল বোর্ড গত সপ্তাহে কারাগারে বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে এসে জানিয়েছিল, তার অসুস্থতা গুরুতর নয়।
কিন্তু, গতকাল শুক্রবার বিকেলে কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘ম্যাডামের স্বাস্থ্য খুব একটা ভালো নয়। তার আর্থরাইটিসের সমস্যা বেশ বেড়ে গেছে। হাঁটতেও কষ্ট হয়। যেটাকে কিছুটা স্নায়ুবিক সমস্যা বলা হয়, সেটাও দেখা দিয়েছে। সত্যিকার অর্থেই তিনি কিছুটা স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়েছেন।’
এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের কারাগারে যাওয়ার অনুমতিও দাবি করেন।