1. faysal.ce@gmail.com : dakshinermashal :
  2. abuhasan670934@gmail.com : Hasan :
  3. sakalctc.bd@gmail.com : Nityananda Sarkar : Nityananda Sarkar
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:০৪ পূর্বাহ্ন
২ মাঘ, ১৪৩১
Latest Posts
📰কলারোয়া সীমান্তে ৫ বাংলাদেশীকে আটক📰তালায় পানি সরবরাহের খাল জোর পূর্বক দখল ও বাড়ি নির্মাণ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির অভিযোগ 📰তালায় বন্ধ ক্লিনিক খুলতে দৌড়ঝাঁপ শুরু! 📰তালায় কেক কেটে কালের কণ্ঠ’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন 📰গুনাকরকাটি কামিল মাদ্রাসার প্রাক্তন ছাত্র এসোসিয়েশনের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান📰আশাশুনিতে বিনা চাষ ও চাষকৃত জমিতে সরিষা আবাদ, দিগন্তজুড়ে হলুদ ফুলে সুশোভিত📰সাতক্ষীরার দেবহাটায় ৩টি বিদেশি পিস্তলসহ আসাদুল গাজী নামের এক ব্যক্তি আটক📰আশাশুনিতে মৎস‍্য ঘেরের বাসা ও নেট পাটা ভাংচুর করে লক্ষাদিক টাকার ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ 📰আয়নাঘর শুধু ক্যান্টনমেন্টেই ছিল না, ইউনিভার্সিটিতেও ছিল: উপদেষ্টা সাখাওয়াত📰দফায় দফায় যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারাই আমানতের খেয়ানত করেছে : জামায়া‌তের আমির

সুপেয় পানির তীব্র সংকটে সাতক্ষীরা

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : শুক্রবার, ৩০ মার্চ, ২০১৮
  • ৪৬৭ সংবাদটি পড়া হয়েছে

আসাদুজ্জামান সরদার: আইলার পর থেকেই জেলার উপকূলীয় এলাকায় শুরু হয় সুপেয় পানির তীব্র সংকট। এবারও শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, আনুলিয়া এবং কালিগঞ্জের কিছু এলাকায় চলছে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার। এনজিওদের দেওয়া বিশুদ্ধ পানির ফিল্টারগুলো অকেজো হয়ে পড়ায় পানি সংগ্রহ দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সুপেয় পানির অভাবে এসব এলাকায় বাড়ছে বিবিধ রোগ। নোনা পানির কারণে ফসল হচ্ছে না। মরে যাচ্ছে গাছপালা। ফলে এলাকার মানুষ জীবিকার তাগিদে চলে যাচ্ছেন অন্যত্র। লবণাক্ত পানির জন্য নারীদের অকাল গর্ভপাত ঘটছে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী বলছেন, লবণ পানির প্রভাবে চর্মরোগ, কলেরা, ডায়রিয়া, আমাশয়সহ পানিবাহিত রোগ বাড়ছে। ক্ষেতে ফসল ফলে না। গো-খাদ্যের চরম সংকট চলছে। চিংড়ি চাষেও দেখা দিয়েছে মন্দা।
সূত্রমতে, লবণাক্ত পানির জন্য নারীদের অকাল গর্ভপাত ঘটছে। জাতীয়ভাবে দেশে জন্মের হার ১.৫৯% হলেও এই এলাকার জন্মের হার ১% এর নিচে। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান এ তথ্য জানান।
গাবুরা এলাকার সিরাজ হোসেন বলেন, ‘সুন্দরবন সংলগ্ন গাবুরা ও পদ্মপুকুরের মানুষ নদীতে মাছ ধরে এবং বনে কাঠ কেটে সংসার চালাতো। নোনা পানির কারণে গাছপালা জন্মায় না। জমিতে ধান-পাট হয় না। ফলে মানুষ বেকার হয়ে পড়ছেন।’
পদ্মপুকুর ইউনিয়নের আয়েজবিল্লাহ শিমুল বলেন, ‘আইলার আট বছর পরও এলাকায় সুপেয় পানির সংকট কাটেনি। রেশনিংয়ের মাধ্যমে কিছু মানুষ খাবার পানি পেলেও চাহিদার তুলনায় তা অনেক কম। পুকুরের পানিই একমাত্র ভরসা। অনেক দূরে স্থাপিত ফিল্টারগুলোতেও (পিএসএফ) অসম্ভব ভিড়। এক কলস পানি আনতেই একবেলা কেটে যায়।’
পদ্মপুকুর ইউনিয়নের আবুল কালাম ঢালী জানান, ‘ভালো পানি সব জায়গায় মেলে না। কিছু কিছু যায়গায় ভালো পানি আবার কিছু কিছু যায়গায় লোনা পানি। তবে লোনা পানির ভাগ বেশি। বেশির ভাগ মানুষ দুর থেকে পানি নিয়ে এসে থাকে।’
ইউপি সদস্য আবুল কাশেম গাজী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আইলা হওয়ার পর থেকে পানি সংকট লেগেইে আছে। সুপেয় পানি সব জাগায় পাওয়া যায় না। আর এ ইউনিয়নের সকল যায়গায় তো লোনা পানি। কিছু কিছু যায়গায় নলকূপের পানি মিষ্টি। কিন্ত সেগুলো সিমিত। ইউনিয়নের বেশির ভাগ যায়গা লোনা পানির ঘের করে রেখেছে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা। ইউনিয়নে লোনা পানি ঢুকানো বন্ধ না হলে সুপেয় পানি তো দুরের কথা মানুষ যে সব পুকুর থেকে বর্তমানে পানি খাচ্ছে, সেগুলোও লোনা পানির কারণে লোনা হয়ে যাবে। আর ফসলতো এক প্রকার হয়না বললেই চলে।’
গাবুরা ইউনিয়নের চাঁদনিমুখা গ্রামের আসাদুল হক বলেন, ‘চিংড়ি চাষের কারণে জমিতে কোনও ফসল ফলে না। জমিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন ফলজ গাছ মারা যাচ্ছে। জমিতে ধান, পাট, শাকসবজি চাষ না হওয়ায় সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে না। মাঠে ঘাস না জন্মানোয় গবাদিপশু পালন বন্ধ হয়ে গেছে। এলাকায় কাজ না থাকায় বউ-ছেলে-মেয়ে সংসার ফেলে শত শত মানুষ গ্রাম ছেড়েছেন।’ একই গ্রামের আবু হাসান বলেন, ‘লবণ পানির কারণে চর্মরোগ লেগেই থাকে। এখানে গোসলের পানিরও সমস্যা। প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে পুকুরের পানি পান করতে হয়। চাকরিজীবীরা তাদের উপার্জনের বড় একটা অংশ বোতলজাত পানি কিনতে ব্যয় করেন।’
শ্যামনগর ও কয়রা এলাকার জলবায়ু পরিষদের সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী বলেন, ‘পুকুর সংস্কার এবং ফিল্টার (পিএসএফ) মেরামতের অভাবে এই এলাকায় পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। লবণ পানির কারণে এই অঞ্চলের মানুষের কর্মক্ষতা কমে যাচ্ছে। নারীদের গর্ভপাতের মতো ঘটনা ঘটছে। গত ১০ বছরে এই এলাকায় জনসংখ্যা খুব বেশি বাড়েনি। কাজের সন্ধানে পুরুষরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। ফলে বেড়েছে নারীর সংখ্যা।’
গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, ‘পানির কারণে এলাকায় কাজ নেই। ফলে কাজের সন্ধানে পুরুষরা এলাকা ছাড়ছেন। অভাবের কারণে লবণ পানিতে কাজ করায় অনেক নারীর অকালে গর্ভপাত হচ্ছে।’ শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. মালিহা খানম বলেন, ‘বেশিরভাগ নারী চুলকানি, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, গায়ে ব্যাথা, বিভিন্ন মেয়েলি সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে আসেন। লবণ পানির কারণেই যে নারীদের গর্ভপাত হচ্ছে এটি গবেষণা ছাড়া বলা সম্ভব না। তবে সম্প্রতি এই এলাকার নারীদের গর্ভপাত বেশি হচ্ছে। ’
সাতক্ষীরার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম জানান, উপকূলীয় এলাকার মানুষের সুপেয় পানির সুবিধা নিশ্চিত করতে ৩০টি পুকুর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘সুপেয় পানির সংকট নিরসনে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ ও পানির বড় ট্যাংকের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে তারা বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে পারে। পুকুর কেটে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের জলবায়ু ট্রাস্টের একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এটির মাধ্যমে বৃষ্টির পানি ধরে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘আইলার পর কয়েক বছর পানি সংকটসহ বিভিন্ন কারণে অনেক মানুষ এলাকা ছেড়েছেন। বর্তমানে আর কেউ এলাকা ছাড়ছেন না। তবে এ এলাকায় কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ করা গেলে যেসব মানুষ এলাকা ছেড়ে গেছেন, তারা আবারও ফিরে আসবেন। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’ লবণ পানিতে কাজ করার কারণে নারীদের গর্ভপাত হচ্ছে, এমন কোনও বিষয় তার জানা নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ মে সোমবার দুপুরের দিকে আইলার আঘাতে উপকূলীয় বিস্তীর্ণ এলাকা ল-ভ- হয়ে যায়। প্রাণ হারান ১০৯ জন মানুষ। তার মধ্যে কেবল গাবুরা ও পদ্মপুকুর, মুন্সিগঞ্জ ও আশাশুনির প্রতাপনগরে মারা যায় ৭৩ জন নারী, পুরুষ ও শিশু।

সুপেয় পানির তীব্র সংকটে সাতক্ষীরা
আসাদুজ্জামান সরদার: আইলার পর থেকেই জেলার উপকূলীয় এলাকায় শুরু হয় সুপেয় পানির তীব্র সংকট। এবারও শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, আনুলিয়া এবং কালিগঞ্জের কিছু এলাকায় চলছে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার। এনজিওদের দেওয়া বিশুদ্ধ পানির ফিল্টারগুলো অকেজো হয়ে পড়ায় পানি সংগ্রহ দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সুপেয় পানির অভাবে এসব এলাকায় বাড়ছে বিবিধ রোগ। নোনা পানির কারণে ফসল হচ্ছে না। মরে যাচ্ছে গাছপালা। ফলে এলাকার মানুষ জীবিকার তাগিদে চলে যাচ্ছেন অন্যত্র। লবণাক্ত পানির জন্য নারীদের অকাল গর্ভপাত ঘটছে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী বলছেন, লবণ পানির প্রভাবে চর্মরোগ, কলেরা, ডায়রিয়া, আমাশয়সহ পানিবাহিত রোগ বাড়ছে। ক্ষেতে ফসল ফলে না। গো-খাদ্যের চরম সংকট চলছে। চিংড়ি চাষেও দেখা দিয়েছে মন্দা।
সূত্রমতে, লবণাক্ত পানির জন্য নারীদের অকাল গর্ভপাত ঘটছে। জাতীয়ভাবে দেশে জন্মের হার ১.৫৯% হলেও এই এলাকার জন্মের হার ১% এর নিচে। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান এ তথ্য জানান।
গাবুরা এলাকার সিরাজ হোসেন বলেন, ‘সুন্দরবন সংলগ্ন গাবুরা ও পদ্মপুকুরের মানুষ নদীতে মাছ ধরে এবং বনে কাঠ কেটে সংসার চালাতো। নোনা পানির কারণে গাছপালা জন্মায় না। জমিতে ধান-পাট হয় না। ফলে মানুষ বেকার হয়ে পড়ছেন।’
পদ্মপুকুর ইউনিয়নের আয়েজবিল্লাহ শিমুল বলেন, ‘আইলার আট বছর পরও এলাকায় সুপেয় পানির সংকট কাটেনি। রেশনিংয়ের মাধ্যমে কিছু মানুষ খাবার পানি পেলেও চাহিদার তুলনায় তা অনেক কম। পুকুরের পানিই একমাত্র ভরসা। অনেক দূরে স্থাপিত ফিল্টারগুলোতেও (পিএসএফ) অসম্ভব ভিড়। এক কলস পানি আনতেই একবেলা কেটে যায়।’
পদ্মপুকুর ইউনিয়নের আবুল কালাম ঢালী জানান, ‘ভালো পানি সব জায়গায় মেলে না। কিছু কিছু যায়গায় ভালো পানি আবার কিছু কিছু যায়গায় লোনা পানি। তবে লোনা পানির ভাগ বেশি। বেশির ভাগ মানুষ দুর থেকে পানি নিয়ে এসে থাকে।’
ইউপি সদস্য আবুল কাশেম গাজী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আইলা হওয়ার পর থেকে পানি সংকট লেগেইে আছে। সুপেয় পানি সব জাগায় পাওয়া যায় না। আর এ ইউনিয়নের সকল যায়গায় তো লোনা পানি। কিছু কিছু যায়গায় নলকূপের পানি মিষ্টি। কিন্ত সেগুলো সিমিত। ইউনিয়নের বেশির ভাগ যায়গা লোনা পানির ঘের করে রেখেছে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা। ইউনিয়নে লোনা পানি ঢুকানো বন্ধ না হলে সুপেয় পানি তো দুরের কথা মানুষ যে সব পুকুর থেকে বর্তমানে পানি খাচ্ছে, সেগুলোও লোনা পানির কারণে লোনা হয়ে যাবে। আর ফসলতো এক প্রকার হয়না বললেই চলে।’
গাবুরা ইউনিয়নের চাঁদনিমুখা গ্রামের আসাদুল হক বলেন, ‘চিংড়ি চাষের কারণে জমিতে কোনও ফসল ফলে না। জমিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন ফলজ গাছ মারা যাচ্ছে। জমিতে ধান, পাট, শাকসবজি চাষ না হওয়ায় সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে না। মাঠে ঘাস না জন্মানোয় গবাদিপশু পালন বন্ধ হয়ে গেছে। এলাকায় কাজ না থাকায় বউ-ছেলে-মেয়ে সংসার ফেলে শত শত মানুষ গ্রাম ছেড়েছেন।’ একই গ্রামের আবু হাসান বলেন, ‘লবণ পানির কারণে চর্মরোগ লেগেই থাকে। এখানে গোসলের পানিরও সমস্যা। প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে পুকুরের পানি পান করতে হয়। চাকরিজীবীরা তাদের উপার্জনের বড় একটা অংশ বোতলজাত পানি কিনতে ব্যয় করেন।’
শ্যামনগর ও কয়রা এলাকার জলবায়ু পরিষদের সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী বলেন, ‘পুকুর সংস্কার এবং ফিল্টার (পিএসএফ) মেরামতের অভাবে এই এলাকায় পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। লবণ পানির কারণে এই অঞ্চলের মানুষের কর্মক্ষতা কমে যাচ্ছে। নারীদের গর্ভপাতের মতো ঘটনা ঘটছে। গত ১০ বছরে এই এলাকায় জনসংখ্যা খুব বেশি বাড়েনি। কাজের সন্ধানে পুরুষরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। ফলে বেড়েছে নারীর সংখ্যা।’
গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, ‘পানির কারণে এলাকায় কাজ নেই। ফলে কাজের সন্ধানে পুরুষরা এলাকা ছাড়ছেন। অভাবের কারণে লবণ পানিতে কাজ করায় অনেক নারীর অকালে গর্ভপাত হচ্ছে।’ শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. মালিহা খানম বলেন, ‘বেশিরভাগ নারী চুলকানি, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, গায়ে ব্যাথা, বিভিন্ন মেয়েলি সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে আসেন। লবণ পানির কারণেই যে নারীদের গর্ভপাত হচ্ছে এটি গবেষণা ছাড়া বলা সম্ভব না। তবে সম্প্রতি এই এলাকার নারীদের গর্ভপাত বেশি হচ্ছে। ’
সাতক্ষীরার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম জানান, উপকূলীয় এলাকার মানুষের সুপেয় পানির সুবিধা নিশ্চিত করতে ৩০টি পুকুর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘সুপেয় পানির সংকট নিরসনে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ ও পানির বড় ট্যাংকের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে তারা বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে পারে। পুকুর কেটে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের জলবায়ু ট্রাস্টের একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এটির মাধ্যমে বৃষ্টির পানি ধরে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘আইলার পর কয়েক বছর পানি সংকটসহ বিভিন্ন কারণে অনেক মানুষ এলাকা ছেড়েছেন। বর্তমানে আর কেউ এলাকা ছাড়ছেন না। তবে এ এলাকায় কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ করা গেলে যেসব মানুষ এলাকা ছেড়ে গেছেন, তারা আবারও ফিরে আসবেন। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’ লবণ পানিতে কাজ করার কারণে নারীদের গর্ভপাত হচ্ছে, এমন কোনও বিষয় তার জানা নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ মে সোমবার দুপুরের দিকে আইলার আঘাতে উপকূলীয় বিস্তীর্ণ এলাকা ল-ভ- হয়ে যায়। প্রাণ হারান ১০৯ জন মানুষ। তার মধ্যে কেবল গাবুরা ও পদ্মপুকুর, মুন্সিগঞ্জ ও আশাশুনির প্রতাপনগরে মারা যায় ৭৩ জন নারী, পুরুষ ও শিশু।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :
© All rights reserved © 2024
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd