হাঁস পালনে দিনবদল


ফেব্রুয়ারি ৯ ২০১৭

Spread the love

এসবিনিউজ ডেস্ক : অভাবের সংসার । দিনমজুর স্বামী আবুল হোসেন কোনদিন কাজ না পেলে ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনাহারেই থাকতে হয়েছে সেইদিন। স্বামী একা সংসার চালাতে হিমশিম খায় । হঠাৎ হাঁস পালনের ভাবনা তাকে দিন বদলের স্বপ্ন দেখায়। অভাবী স্বামীর সংসারে হাল ধরে বড়াইগ্রামের নগর ইউনিয়নের মহানন্দাগাছা গ্রামের জাহানারা বেগম। বিনা প্রশিক্ষণে একটা হাঁস কিনেই তার হাস পালন শুরু। তারপর বিভিন্ন এনজিওতে ঋণের আশায় ধর্ণা দেন। কিন্তু এনজিওর সদস্য হয়ে সাতদিন অন্তর অন্তর সঞ্চয় জমা দেওয়ার শর্তে ঋণ নিতে পারেননি তিনি।

অবশেষে ২০০৭ সালের দিকে ব্র্যাক সামাজিক ক্ষমতায়ন মহানন্দাগাছা পল্লী সমাজের পরামর্শে এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করে ৩০০ হাঁসের বাচ্চা কিনে পালন করতে থাকেন। প্রথমে ৫০ টি বাচ্চা মারা যায়। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি জাহানারা বেগমকে। গল্পের সেই সোনার হাঁসের মতোই জাহানারা বেগমের পালিত হাঁস ভাগ্য বদলে দিলো। সে হাঁস পালন করেই তিন বিঘে জমি ইজারা নিয়েছে। মেয়ে রাজিয়া খাতুন কে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য পড়ালেখা করাচ্ছেন। বর্তমানে মেয়ে বড়াইগ্রামের রয়না ডিগ্রি কলেছে ডিগ্রি ১ম বর্ষের ছাত্রী ও তার ছেলে ঢাকায় গার্মেন্টস এ চাকুরীরত আছেন।

বর্তমানে সাড়ে তিনশ হাঁস নিয়ে জাহানারা বেগম স্বামী আবুলের সাথে একই গ্রামের জিয়াউর রহমানের পুকুর পাহারাদার হিসেবে কাজ করে ও ঐ পুকুরেই হাঁস পালন করে। পুকুর মালিক পারিশ্রমিক হিসেবে পুকুর পাড়ে ৬০০ টি কলাগাছ দিয়েছেন। সে এ বছর ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ ২০১৬ সালের বড়াইগ্রামে অর্থনৈতিকভাবে সফল নারী হিসেবে জয়িতা হয়েছে। জাহানারা বেগম জানান, হাঁস পালন করে সে প্রতিবছর খরচ বাদে দেড় লক্ষ টাকা বাৎসরিক উপার্জন করে। তবে এনজিওর চড়াসুদে ঋণ গ্রহনের কারনে লাভের অঙ্ক কম হচ্ছে ।

সরকারি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ পেলে সে হাঁস পালনের পাশাপাশি গরুর খামার করতে চায়। এদিকে জাহানারার এই অভাবনীয় সফলতা দেখে অনেকেই এই হাঁস পালনে আগ্রহী হয়ে হাস পালন শুরু করেছেন। সরকারি প্রশিক্ষণ ও সুবিধা পেলে এই এলাকার কমপক্ষে অর্ধশতাধিক নারী হাঁস পালনে আগ্রহী বলে জানান।

 

 

শ্যামনগর

যশোর

আশাশুনি


জলবায়ু পরিবর্তন