Site icon Daily Dakshinermashal

পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পায়নি আদালত

Spread the love

এসবিনিউজ ডেস্ক : পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের কোনো প্রমাণ পায়নি কানাডার আদালত। তাই এই মামলার ৩ আসামিকে খালাস দিয়েছে আদালত। কানাডার পত্রিকা দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অন্টারিও সুপ্রিমকোর্টের বিচারক ইয়ান নরডেইমার শুক্রবার এই আদেশ দেন। এই আদেশের ফলে এসএনসি-লাভালিনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট (জ্বালানি ও অবকাঠামো) কেভিন ওয়ালেস, প্রতিষ্ঠানটির আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান ব্যবসায়ী জুলফিকার ভূঁইয়া এই মামলা থেকে খালাস পেলেন।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ তদারকির ৫ কোটি ডলারের কাজ পেতে এসএনসি-লাভালিনের কর্মীরা ২০১০ ও ২০১১ সালে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ যোগাড়ে ফোনে আড়ি পাতা তথ্য (ওয়্যার ট্যাপস) ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে ২০১১ সালে ৩টি আবেদন করে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি)।

অন্টারিও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ইয়ান নরডেইমার আদেশে বলেন, ওই ৩ আবেদনের বিষয়ে তার ব্যাপক প্রশ্ন রয়েছে। এগুলোতে যেসব তথ্য দেয়া হয়েছে সেগুলো ‘অনুমানভিত্তিক, গাল-গল্প ও গুজবের বেশি কিছু নয়’ বলে মূল্যায়ন তার।

দুর্নীতির এই অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েন শেষে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল হয়ে যায়। পরে নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে হাত দেয় বাংলাদেশ সরকার।

দুর্নীতির ওই ষড়যন্ত্রে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পদত্যাগে বাধ্য হন সেই সময়ের যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন। অভিযোগ ছিল সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর বিরুদ্ধেও। তবে তাদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে দুদকের পক্ষ থেকে সে সময় জানানো হয়।

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে ২০১০ সালে নিজেরা তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ সম্পর্কে নিজেদের তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশকে (আরসিএমপি) অনুরোধ জানায়। ওই অনুরোধে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে কানাডায় এসএনসি লাভালিনের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে রমেশ শাহ ও সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

২০১২ সালে টরোন্টোর আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে এসএনসি-লাভালিনে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস ও ব্যবসায়ী জুলফিকার ভূঁইয়াকেও এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।

সে সময় রমেশ শাহের কাছ থেকে কানাডীয় পুলিশের জব্দ করা একটি ডায়েরি নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়, যাতে ‘বাংলাদেশের কাকে কতো শতাংশ ঘুষ দেয়া হবে’ তার সাংকেতিক বিবরণ ছিল বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়।

এদিকে বিশ্ব ব্যাংকের চাপে ‘ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে দুদক ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর বনানী থানায় একটি মামলা করলেও ২২ মাস পর তদন্তকারীরা বলেন, অভিযোগের কোনো প্রমাণ তারা তদন্তে পাননি।

দুদক চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ায় ২০১৪ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশে পদ্মা দুর্নীতি মামলার অবসান ঘটে, তখনকার সেতু সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ ৭ আসামির সবাইকে অব্যাহতি দেয় আদালত।

 

Exit mobile version