Blog

  • নারায়নগঞ্জ জেলা ফুটবল দলকে ২-০ গোলে পরাজিত করেছে সাতক্ষীরা জেলা ফুটবল দল

    নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রাণ মিল্ক জাতীয় স্কুল ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ-২০১৭-১৮ এর বিভাগীয় পর্যায়ের চূড়ান্ত পর্বের খেলায় ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন নারায়নগঞ্জ জেলা ফুটবল দলকে ২-০ গোলে পরাজিত করেছে সাতক্ষীরা জেলা ফুটবল দল। শনিবার ঢাকা কমলাপুর স্টেডিয়ামে মুখো মুখি হয় সাতক্ষীরা জেলা দল বনাম নারায়নগঞ্জ জেলা ফুটবল দল। খেলার প্রথমােের্ধর খেলা গোল শুণ্য শেষ হয়।

    দ্বিতঅয়ার্ধের খেলার প্রথমে সাতক্ষীরা জেলা দলের ১০ নং জার্সি পরিহীত খেলোয়াড় আলামিন ১টি গোল করে দলকে এগিয়ে নেয়। পরে দ্বিতীয়ার্ধের খেলার শেষের দিকে সাতক্ষীরা জেলা দলের ১১ নং জার্সি পরিহীত খেলোয়াড় ইউছুফ আলী দ্বিতীয় গোল করে। সেই সুবাধে সাতক্ষীরা জেলা দল ২-০ গোলে ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন নারায়নগঞ্জ জেলা দলকে পরাজিত করে। সাতক্ষীরা জেলা দলের ১০ নং জার্সি পরিহীত খেলোয়াড় আলামিন ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছে।

    এর আগের খেলায় সাতক্ষীরা জেলা দল নীলফামারী জেলা দলের সাথে গোল শুণ্য ড্র করে। আজ রবিবার ০৩ জুন ঢাকা কমলাপুর স্টেডিয়ামে সিলেট জেলা দলের মুখো মুখি হবে সাতক্ষীরা জেলা দল।

    সাতক্ষীরা জেলার পক্ষে জি-ফুল বাড়ি দরগা শরিফ আলিম মাদ্রাসার ছাত্ররা ভালো খেলা উপহার দিয়ে ক্রীড়াঙ্গণে জেলার সাফল্য ও সুনাম ধরে রাখায় জেলা ফুটবল দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সাতক্ষীরা-০২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার মো. সাজ্জাদুর রহমান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম আনিছুর রহমান, জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম খান ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির খান বাপ্পি।

  • জেলায় মাদক বিরোধী ৯ মাদক ব্যবসায়ীসহ ৪৫ জনকে আটক

    সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: জেলাব্যাপী পুলিশের মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে ৯ মাদক ব্যবসায়ীসহ ৪৫ জনকে আটক করা হয়েছে।
    শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সকাল পযর্ন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে একটি ওয়ানশুটার গান, এক রাউন্ড গুলি ও বেশ কিছু মাদক দ্রব্য।
    আটককৃতদের মধ্যে, সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ১০ জন, কলারোয়া থানা থেকে ৭ জন, তালা থানা ৫ জন, কালিগঞ্জ থানা ৫ জন, শ্যামনগর থানা ৭ জন, আশাশুনি থানা ৬ জন, দেবহাটা থানা ১ জন ও পাটকেলঘাটা থানা থেকে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
    সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান তাদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।

  • ‘প্রতিবন্ধিরা সমাজের বোঝা নয়- জেলা প্রশাসক

    নিজস্ব প্রতিনিধি: ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি ও অটিষ্টিক শিক্ষার্থীদের মাঝে পোশাক সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে সুইড খাতিমুনেচ্ছা হানিফ লস্কার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মাঝে উক্ত পোশাক সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
    পোষাক বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধিরা সমাজের বোঝা নয়। তাদের সঠিক গড়ে তোলা আমাদের সকলের দায়িত্ব। সঠিক ভাবে গড়ে তুলতে পারলে তারা সম্পদে পরিণত হবে।’
    অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট্য সমাজসেবক আলহাজ্ব ডা. আবুল কালাম বাবলা, এ্যাডভোকেট শহিদুল্লাহ, উপজেলা সমাজ সেবার প্রফেশনাল কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, অধ্যক্ষ এমদাদুল হক প্রমুখ।
    উক্ত অনুষ্ঠান থেকে ৯৩ জন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি ও অটিষ্টিক শিক্ষার্থীদের মঝে ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে নতুন পোশাক বিতরণ করা হয় ।

  • শ্যামনগরের ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতালের অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন

    সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: শ্যামনগর উপজেলার ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতালের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে উপজেলার সোয়ালিয়া গ্রামে হাসপাতালটির সামনে এ মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
    জমি দাতা পরিবার ও শ্যামনগরবাসীর আয়োজনে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জমিদাতা আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ, মোকছেদ আলী গাজী, আব্দুর রউফ, আব্দুর রাজ্জাক ও আব্দুর রহিম প্রমুখ। মানববন্ধনে সোয়ালিয়া, দেবীপুর, যাদবপুর ও গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন ।
    মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে জমিদাতাদের অবমূল্যায়ন করেছে। ট্রেনিং সেন্টারের নাম মরহুম শহিদুজ্জামান সৈকত এর নামে নামকরণ করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। জমিদাতা পরিবারসহ স্থানীয় জনবল না নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা মামলার ভয় ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। ফ্রেন্ডশীপ প্রজেক্ট অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান ও ঠিকাদার ইঞ্জিনিয়ার এহসানুল হক রতন জমিদাতাদের বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে জনবল নিয়োগের জন্য অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা এসব দুর্নীতির তীব্র প্রতিবাদ জানায়। তবে, এ ব্যাপারে ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন।

  • লক্ষ্মীদাঁড়ী সীমান্তে জনতার হাতে ২ ইয়াবা ব্যবসায়ী আটক

    ভোমরা প্রতিনিধি: বহুলোচিত মাদক পাচার ও ব্যবসার নিরাপদ অভয়ারণ্য লক্ষ্মীদাঁড়ী সীমান্ত। সীমান্ত ঘেঁষা এই লক্ষ্মীদাঁড়ী গ্রামে ভদ্রতার ছদ্মবেশে থাকা দু’জন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। ধৃত দু’জন মাদক ব্যবসায়ীকে তাৎক্ষণিকভাবে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছেন তারা। আটক ইয়াবা ব্যবসায়ীরা হলেন লক্ষ্মীদাঁড়ী গ্রামের গোলাম মোল্লার পুত্র আতিকুল মোল্লা(৩৫) এবং একই গ্রামের আজিজুল মোল্লার পুত্র জাকির হোসেন মোল্লা(৩০)।
    পুলিশ জানায়, পূর্বে ইয়াবা ব্যবসায়ী আতিকুল মোল্লার বিরুদ্ধে একটি মাদক ব্যবসার মামলা এবং জাকির হোসেন মোল্লার বিরুদ্ধে দুইটি মাদক ব্যবসার মামলা রয়েছে। জানা গেছে, জনতার হাতে আটক এই দু’জন ইয়াবা ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন যাবৎ কলারোয়া উপজেলার কুখ্যাত ইয়াবা ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলামের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। ধৃত দু’জন ইয়াবা ব্যবসায়ী ভোমরা বন্দর এলাকায় ইয়াবাসহ ফেনসিডিল ব্যবসার গোপন আস্তানা গড়ে তুলেছে। এখান থেকে উঠতি বয়সের যুবক ও বিভিন্ন পেশায় জড়িত লোকজন ইয়াবা ও ফেনসিডিল ক্রয় করে সেবন করে আসছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইয়াবা ব্যবসায়ী তরিকুলকে ধরার জন্যে সদর থানা পুলিশ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সড়কের পাশে ওৎ পেতে বসে থাকে। গত বুধবার সন্ধ্যায় তরিকুল মটরসাইকেল যোগে দুই শত পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট তার পরিহিত প্যান্টের পকেটে ভরে কলারোয়ার ব্রজবক্স থেকে ভোমরায় আসার পথে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের সামনে পৌছালে পুলিশ তাকে থামিয়ে দেহ তল্লাশি চালায়। তল্লাশিকালে পুলিশ তার প্যান্টের পকেট থেকে দুই’শ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করার পর তাকে আটক করে। ঘটনাস্থলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তরিকুল জানায়, সে লক্ষ্মীদাঁড়ী গ্রামের আতিকুর মোল্লা ও জাকির মোল্লার সঙ্গে ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে। ধৃত তরিকুলের স্বীকারোক্তিতে জনতার সহাতায় পুলিশ এই দু’জন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটক করতে সক্ষম হয়।
    ঝাউডাঙ্গায় অসহায়

  • ঝাউডাঙ্গায় অসহায় ও পঙ্গু ব্যক্তিদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান

    নিজস্ব প্রতিনিধি: সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রামে আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়ন ও সাফল্য নিয়ে অসহায় গরীব ও পঙ্গু মানুষদের আর্থিক নগদ সহায়তা প্রদান করা হয়। শনিবার দুপুরে ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. রমজান আলীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে আর্থিক সহায়তা ও পঙ্গু ব্যক্তিদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপি। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মকসুমুল হাকিম, ঝাউডাঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ মো. খলিলুর রহমান, জেলা পরিষদের সদস্য ওবায়দুর রহমান লাল্টু, ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অমরেন্দু নাথ ঘোষ, প্রভাষক আশরাফুজ্জামান বাবলু, বাঁশদহা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাস্টার মফিজুর রহমান, যুবলীগ নেতা সোহরাব হোসেন সাজু ও পলাশ মাস্টার প্রমুখ। এসময় ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রামে ২০ জন অসহায় গরীব মানুষকে ৫ হাজার টাকা করে ১ লক্ষ টাকা ও ৩ জন পঙ্গু মানুষকে হুইল চেয়ার ক্রয়ের জন্য ১০ হাজার টাকা করে ৩০ হাজার টাকাসহ মোট ২৩ জন অসহায় গরীব ও পঙ্গু মানুষের মাঝে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা আর্থিক নগদ সহায়তা প্রদান করেন। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দৈনিক মানব জমিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ইয়ারব হো

  • সাতক্ষীরায় ৩৪ নারীসহ আটক ৮১

    নিজস্ব প্রতিনিধি: নাশকতার লক্ষ্যে গোপন বৈঠককালে ৩৪ জন নারীসহ ৩৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার সকাল ১১টার দিকে টার দিকে দেবহাটা উপজেলার সখিপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে ব্যবসায়ি মহিউদ্দিন মিস্ত্রির বাড়ি থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
    জানান, সাব রেজিস্ট্রিসর সামনে মোহর আলী মিস্ত্রীর ছেলে কম্পিউটার ও ফটোস্টাটের ব্যবসায়ি মহিউদ্দিন মিস্ত্রীর বাড়িতে মহিলা জামায়াতের নারী কর্মীরা গোপন বৈঠক করছে খবর পেয়ে শনিবার সকাল ১১টার দিকে সেখানে পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় উত্তর সখীপুর গ্রামের মোহর আলী মিস্ত্রীর ছেলে বাড়ির মালিক মহিউদ্দিন মিস্ত্রি (৫৫), তার স্ত্রী জেবুন্নেসা(৪৫), সখীপুর ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালামের স্ত্রী আকলিমা খাতুন (৬২), একই গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী হাফিজা খাতুন(৩২) বাবুর আলীর স্ত্রী জোহরা খাতুন(৬৫), ছাকাত আলীর স্ত্রী মানু বিবি(৬০), রফিকুল ইসলামের স্ত্রী শাহেদা খানম(৪২), ও রবিউল মিস্ত্রীর স্ত্রী তাসলিমা খাতুন(২২) কে আটক করে।
    এদিকে সখীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৯নং ওয়ার্ডেরে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম (কাঁকড়া) এর স্ত্রী আকলিমা খাতুন জানান, প্রতি বছর তারা রমজান মাসে একবার ছালাতুর তছবীর নামাজ পড়ে থাকেন। এ জন্য তারা পার্শ্ববর্তী নারীদের দাওয়াত দিয়ে একত্রিত করেন। এরই অংশ হিসেবে শনিবার সকাল ১০টায় তারা দাওয়াতী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মহিউদ্দিন মিস্ত্রীর বাড়িতে সমবেত হন। এ সময় পুলিশ ৩৬জন মহিলা ও দু’জন পুরুষকে জামায়াতের নেতা কর্মী হিসেবে আটক করেন। যদিও বয়সের ভারের কারণে দু’ বৃদ্ধাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আটককৃতরা আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থক।
    দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী কামাল হোসেন জানান, ৩৪জন নারী ও দু’জন পুরুষকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দেবহাটা সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে আসার পরপরই বিস্তারিত জানানো হবে। দেবহাটা সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার ইয়াছিন আলী শনিবার বিকেলে সাংবাদিকদের জানান, তিনি ঢাকায় ট্রেনিংএ রয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত জেলার সাতটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ শহর জামায়াতের আমির নাসিরউদ্দিনসহ ৪৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

  • সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি দৈনিক কাফেলা সম্পাদক আবদুল মোতালেব মৃত্যুবার্ষিকীতে বিশেষ মোনাজাত ও ইফতার মাহফিল

    নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশ জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে ইফতার মাহফিল।
    শনিবার প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে সাতক্ষীরার প্রয়াত সাংবাদিক নেতা বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি দৈনিক কাফেলা সম্পাদক আবদুল মোতালেব এর ১৬ তম মৃত্যু বার্ষিকীতে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এর আগে সকালে রসুলপুরে প্রয়াত আবদুল মোতালেবের কবর জিয়ারত করে দোয়া করেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ।
    প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে শরিক হন সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সাতক্ষীরা ৪ আসনের সংসদ সদস্য এসএম জগলুল হায়দার, সংরক্ষি মহিলা আসনের এমপি রিফাত আমিন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন, পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. আফতাবউজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সাংসদ মুনসুর আহমেদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো: নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মেরিনা আক্তার, সাবেক সাংসদ ডা. মোকলেছুর রহমান, ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ অধিনায়ক মেজর ফজলে হোসেন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি, সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ আহমেদ প্রমুখ সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন পেশজীবি, জনপ্রতিনিধি এবং সাতক্ষীরার দৈনিক পত্রিকাগুলির সম্পাদক, প্রেসক্লাবের বর্তমান ও সাবেক কমিটির নেতৃবৃন্দ ও প্রেসক্লাবের সর্বস্তরের সাংবাদিক। এতে মোনাজাত পরিচালনা করেন মওলানা কামরুল ইসলাম।

  • ২০১৭-১৮ অথবছরে লক্ষ্যমাত্রা ৮৮১ কোটি টাকা ॥ আদায় ৭৬১ কোটি টাকা ভোমরা স্থল বন্দরে ১০০ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি

    দেলোয়ার হোসেন, ভোমরা ঃ বহুমূখী প্রশাসনিক জটিলতার জালে জড়িয়ে পড়েছে ভোমরা স্থল বন্দর। নানামুখী চাপ, অহেতুক নজরদারী ও সময়ক্ষেপন ব্যবসায়ীদেরকে অতিষ্ট করে তুলেছে। পণ্য আমদানীতে নেই তিল পরিমান ছাড়। বিশেষ করে পঁচনশীল পণ্যের উপর কোন প্রকার ছাড় না দেওয়ায় আমদানীকারক ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহিত হয়ে বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। দেশের বিত্তবান আমদানীকারকরা ন্যুনতম সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় তারা আমদানী বানিজ্য করতে অনিহা প্রকাশ করছে। এদিকে ব্যবসায়ীদের আমদানী বানিজ্য প্রসারের স্বার্থে এবং রাজস্ব অর্জনের লক্ষ্যে কাস্টমস্ প্রশাসন নিয়ম মাফিক কিঞ্চিত পরিমান ছাড় দিলেও অন্য প্রশাসন ছাড় দিতে নারাজ। ফলে অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ভোমরা বন্দর দিয়ে আমদানী বানিজ্য করতে অনীহা। সরকার ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ভোমরা বন্দর থেকে ৮৮১ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করলেও চলতি অথবছরের মে মাস পর্যন্ত ৭৬১ কোটি ১৯ লক্ষ ৩৭ হাজার ৪৩২ টাকা রাজস্ব অর্জন করেছে। এখনও ১২১ কোটি টাকা রাজস্ব অর্জনে ঘাটতি রয়েছে। এ ব্যাপারে ভোমরা শুল্ক স্টেশনে রাজস্ব কর্মকর্তা লস্কর বকতিয়ার রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের আর মাত্র এক মাস (জুন) বাকি। তবে যেভাবে রাজস্ব আহরণের কার্যক্রম চলছে তাতে করে লক্ষ্যমাত্রা পুরুণ না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি জানান, আইনী জটিলতা সহ নানাবিধ সমস্যার কারনে এ বন্দরে আমদানী-রপ্তানী হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে ভারত থেকে দু’শ থেকে আড়াই’শ পণ্যবাহী ট্রাক প্রতিদিন ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করছে। যার অধিকাংশ আমদানী পণ্য ডিউটি মুক্ত। ফলে অধিক রাজস্ব আহরিত পণ্য আমদানী কমে যাওয়ায় সরকারে বেঁধে দেওয়া রাজস্ব লক্ষ্যেমাত্রা পুরণ না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে ভোমরা বন্দরে অবকাঠামো উন্নয়ন হলেও এ বন্দরের বিপরিতে ঘোজাডাঙ্গা স্থল বন্দরে অবকাঠামো উন্নয়নে ছোঁয়া লাগেনি। সেখানে সরকারী ভাবে গড়ে উঠেনি কোন গাড়ী পার্কিং টার্মিনাল এবং আমদানী-রপ্তানী পণ্য রক্ষণশীল ওয়্যারহাউজ। ঘোজাডাঙ্গা স্থল বন্দরে সিএন্ডএফ এজেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের দু’জন প্রভাবশালীর কর্মকর্তার দু’টি মালিকানাধীন পার্কিং ইয়ার্ড ছাড়া অন্যকোন অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি। এদুটি পার্কিং ইয়ার্ডে ভারতীয় আমদানী পণ্যবাহী ট্রাক গুলো ঢুকিয়ে ইচ্ছাধীন ভাবে বাংলাদেশের ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। অধিক মুনাফা লাভের আশায় পার্কিং ইয়ার্ডের মালিকরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। ব্যক্তি মালিকাধীন পার্কিং ইয়ার্ডের মালিকরা যোগসাজস করে পণ্যবাহী ট্রাকগুলো তাদের পার্কিং ইয়ার্ডে ঢুকিয়ে ডিটেন ফ্রি আদায় করছে। ফলে প্রতিদিন যেখানে ৪০০ থেকে ৫০০ পণ্যবাহী ট্রাক ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করার কথা সেখানে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ ট্রাক প্রবেশ করছে। একারনে আমদানী বানিজ্য মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। একদিকে আমদানী কমে যাচ্ছে অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ভোমরা বন্দরের একাধিক সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমদানী বানিজ্য হুমকির মুখে পড়বে এবং রাজস্ব আহরণ ব্যাক ভাবে হ্রাস পবে।

  • বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম পাখি হামিং বার্ড

    ইংরেজী Humming অর্থ গুনগুন করা। ছোট এ পাখি যখন প্রচন্ড গতিতে পাখা নাড়ে তখন গুনগুন শব্দ হয়, এজন্য এ পাখিকে হামিং বার্ড বলা হয়। এদের স্বভাবে রয়েছে নানা বৈশিষ্ট্য। পৃথিবীর সবথেকে ছোট প্রজাতির হমিং বার্ড পাওয়া যায় কিউবায়। দুই গ্রামের কম ওজন এবং আড়াই ইঞ্চির কম লম্বাকৃতির এই পাখির ডিমের আকৃতি মটরের দানার মত। সবচেয়ে বড় প্রজাতির হামিং বার্ডকে জায়ান্ট হামিং বার্ড বলা হয়, যারা লম্বায় মাত্র আট ইঞ্চি এবং ওজনে ১৮ থেকে ২০ গ্রাম হয়ে থাকে।
    এদের পুরুষ ও স্ত্রী প্রজাতির মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। পুরুষ পাখির লোম সবুজ রংয়ের হয় এবং পাখার উপরের দিক নীল বর্নের আর নিচের দিকটা ধূসর সাদা বর্ণের হয়। অপরদিকে স্ত্রী পাখির গায়ের রং নীলচে সবুজ হয় এবং লেজে সাদা ফোটা দাগ থাকে। হামিং বার্ডের দুইটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হল এরা একটানা বহুদিন না খেয়ে থাকতে পারে এবং এরা কোথাও না থেমে হাজার মাইল পাড়ি দিতে পারে। এর রহস্য হিসেবে বিজ্ঞানীরা জানান, হামিং বার্ড সেকেন্ডে ১২ থেকে ৯০ বার পাখা ঝাপ্টাতে পারে। অন্যান্য পাখিরা ডানা মেলে শুধুমাত্র সামনের দিকে উড়তে পারে। কিন্তু হামিং বার্ড সামনে পিছনে, ডানে বামে, উপরে নিচে সব দিকে উড়ে যেতে পারে। এদের এরুপ উড়ার রহস্য লুকিয়ে আছে এর ডানার গঠন, কাঁধের জোর এবং অতি শক্তিশালী পেশীর মাঝে। এরা এত দ্রুত উড়তে পারলেও অন্যান্য পাখির মত এরা হাঁটতে পারে না এবং বেশি সময় দাড়িয়েও থাকতে পারে না।
    খাবার দাবারের বেলাতেও এই পাখি বেশ বিলাসী। এদের প্রধান খাদ্য মধু। হামিং বার্ডদিনে প্রায় ১৫০০ ফুল থেকে মধু আহরন করে। মধু খাওয়ার সময় এরা ফুল থেকে নিজের দূরত্ব বজায় রাখে এবং শূন্যে ভাসমান অবস্থায় মধু সংগ্রহ করে। লাল রংয়ের ফুলই এদের পছন্দনীয়। কিছু পাখি পোকা মাকড়ও খাবার হিসেবে গ্রহন করে।
    এরা সাধারনত গাছের ডালে বাসা বেঁধে থাকে। বাসা তৈরির জন্য শুকনো ঘাস, লতাপাতা, গাছের বাকল, ছত্রাক, মাকড়সার জাল, শেওলা ব্যবহার করে থাকে। তবে বাসা বাঁধার জন্য স্ত্রী পাখিরাই কাজ করে, পুরুষ পাখিদের এ ব্যপারে কোন মাথাব্যাথা নেই। এদের বাসা আকারে কাপের মত হয়। একটি স্ত্রী হামিং বার্ড প্রতিবারে ২ টি ডিম পাড়ে । দুই থেকে তিন সপ্তাহ পরে ডিম থেকে ছোট হামিং বার্ড বের হয় যা প্রাপ্ত বয়স্ক হতে ছয় থেকে সাত দিন সময় নেয়। এদের গড় আয়ু তিন থেকে পাঁচ বছর।

  • জুলফিকার শাহাদাৎ এর কবিতা

    অথৈ নদে রোহিঙ্গারা

    এই যে পাহাড়, আকাশ-মাটি কিংবা নদীর জল
    কার নিয়মে, কার হুকুমে চলছে অবিরল
    নেই কোথাও দেয়াল কারো কিংবা কোনো ভাগ
    পাইনা খুঁজে তাদের মাঝে রাগ বা অনুরাগ।

    কে দিয়েছে এই মহা-ধন, কার কাছে আজ ঋণী
    তাঁর পরিচয়, বিচার দিনের মহান মালিক যিনি।
    তাঁর কাছে নেই উঁচু-নিচু কিংবা জাতের ভেদ
    তাঁর কাছে নেই ধনী গরীব ভিন্ন পরিচ্ছেদ।

    তাঁর পৃথিবী ভাগ করে আজ আমরা রাজা-রানী
    কারো জন্য সুখ খুঁজে দিই, কাউকে পেরেশানি
    কেউ ভরা পেট, কেউ হা-ভাতে কেমন নীতিমালা!
    দুঃশাসনের এই জগতে বাড়ছে শুধুই জ্বালা।

    এই পৃথিবী সবার জন্য, সবার সমান ভাগ
    দেয়াল দিয়ে কোন কাপুরুষ দেখাচ্ছে দেমাগ!
    তাঁর যৌবন আর কতোকাল? ফিরতে হবে ঘরে
    অথৈ নদে রোহিঙ্গারা মৃত্যু লড়াই করে।

  • এসো পরিচিত হই সুকুমার রায় এর সাথে

    সুকুমার রায় (১৮৮৭-১৯২৩) একজন বাঙালি শিশু সাহিত্যিক। তিনি ছিলেন জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর সন্তান এবং তাঁর পুত্র খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়। তাঁর লেখা কবিতার বই আবোল তাবোল, গল্প হযবরল, গল্প সংকলন পাগলা দাশু, এবং নাটক চলচিত্তচঞ্চরী বিশ্বসাহিত্যে সর্বযুগের সেরা “ননসেন্স” ধরণের ব্যঙ্গাত্মক শিশুসাহিত্যের অন্যতম বলে মনে করা হয়, কেবল অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড (অষরপব রহ ডড়হফবৎষধহফ) ইত্যাদি কয়েকটি মুষ্টিমেয় ক্লাসিক-ই যাদের সমকক্ষ। মৃত্যুর এতো বছর পরও তিনি বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিকদের একজন।
    সুকুমার কলকাতা থেকে ১৯০৬ সালে রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় বি.এসসি. করার পর মুদ্রণবিদ্যায় উচ্চতর শিক্ষার জন্য ১৯১১-তে বিলেতে যান। সেখানে তিনি আলোকচিত্র ও মুদ্রণ প্রযুক্তির ওপর পড়াশোনা করেন এবং কালক্রমে তিনি ভারতের অগ্রগামী আলোকচিত্রী ও লিথোগ্রাফার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯১৩ তে সুকুমার কলকাতাতে ফিরে আসেন। উপেন্দ্রকিশোর ঠিক সেই সময়েই শুরু করেছিলেন ছোটদের মাসিক পত্রিকা ‘সন্দেশ’। সুকুমার ফিরে তাতে লিখতে শুরু করেন। উপেন্দ্রকিশোর জীবিত থাকতে সুকুমার লেখার সংখ্যা কম থাকলেও উপেন্দ্রকিশোরের মৃত্যুর পর সন্দেশ পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব সুকুমার নিজের কাঁধে তুলে নেন। শুরু হয় বাংলা শিশুসাহিত্যের এক নতুন অধ্যায়। পিতার মৃত্যুর পর আট বছর ধরে তিনি সন্দেশ ও পারিবারিক ছাপাখানা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন।
    সুকুমার রায়ের স্বল্পস্থায়ী জীবনে তাঁর প্রতিভার শ্রেষ্ঠ বিকাশ লক্ষ্য করা যায়। সন্দেশের সম্পাদক থাকাকালীন সময়ে তার লেখা ছড়া, গল্প ও প্রবন্ধ আজও বাংলা শিশুসাহিত্যে মাইলফলক হয়ে আছে। তার বহুমুখী প্রতিভার অনন্য প্রকাশ তার অসাধারণ ননসেন্স ছড়াগুলিতে। তাঁর প্রথম ও একমাত্র ননসেন্স ছড়ার বই আবোল-তাবোল শুধু বাংলা সাহিত্যে নয়, বরং বিশ্বসাহিত্যের অঙ্গনে নিজস্ব জায়গার দাবিদার।
    পরবর্তীতে ইংল্যান্ড থেকে ফেরার পর মানডে ক্লাব নামে একই ধরণের আরেকটি ক্লাব খুলেছিলেন তিনি। সুকুমার রায় কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মাত্র সাঁইত্রিশ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

  • বনের রাজা

    বনের রাজা

    আহমেদ সাব্বির

    বনের রাজা বাঘ। বাঘের যেমন রাশভারী মেজাজ, তেমনি গট্ মট্ চলন। তাঁর ছায়াটি দেখলে বনের পশুদের পিলে চমকে যায়। গুটিসুটি মেরে গর্তে লুকায়। পাখিরা ফুড়–ৎ করে উড়ে পালায়। রাজামশাই একবার গর্জন করলে গোটা বন ঠক্ ঠক্ কওে কাঁপতে থাকে। আর তাঁর আদেশ অমান্য করলে নিশ্চিত মৃত্যু।

    কিন্তু এক বনে বাস করতা এক বাঘ। বিশাল দেহ তাঁর। দেখতে ভয়ংকর। গায়ে হলুদ-ডোরা দাগ। সে ছিল বনের রাজা। কিন্তু রাজা হলে কি হবে? কেউ তাকে কানাকড়ি দাম দিত না। ভয় পাওয়াতো দূরের কথা, বনের হরিণ, শেয়াল, বানর, ময়ূও, গ-ার, কুমির, খরগোশ, হাতি সবই ছিল। কিন্তু ওরা কেউ বাঘকে রাজা বলে মানতো না। এজন্য বাঘের দুঃখের সীমা ছিল না। কী বিশাল দেহ তাঁর। পাকা শিকারীর মতো গোঁফ। গায়ে অসূরের মতো শক্তি। কিন্তু কোন মর্যাদা নেই তাঁর। সবাই তাকে উপহাস করতো।

    একদিন ভোর বেলা। ঘুম থেকে জেগে বেশ জোরেশোরে একটা গর্জন করলেন রাজামশাই। অমনি ছুটে এলো গ-ার। রেগেমেগে বলল- এ্যাই! সাত সকালে অত জোরে চিৎকার করলি কেন? আমার কাঁচা ঘুমটা ভেঙে গেল।
    রাজা মশাই বললেন- আমি তো বনের রাজা। আমি তো গর্জন করবই। গর্জন করাই তো আমার স্বভাব।
    ক্স এ্যা.., খুব রাজাগিরি শিখেছিস না? গায়ে মানে না আপনি মোড়ল। ফের যদি কোনদিন চিৎকার করেছিস তো চড় দিয়ে দাঁত ফেলে দেব।
    গ-ারের কথা শুনে মহারাজ মনে মনে খুব দুঃখ পেলেন। সেদিন খুব খিদেও পেয়েছিল তাঁর। হাই তুলতে তুলতে তিনি ভাবলেন- অনেক দিন মাংস খাওয়া হয় না। আজ একটা হরিণ শিকার করলে মন্দ হয় না। অন্তত দু’তিন দিন ধরে খাওয়া যাবে। তিনি হাঁটতে হাঁটতে গভীর বনের দিকে চলে এলেন। হরিণ কোথায় পাওয়া যায় খুঁজতে লাগলেন। পথিমধ্যে দেখা হলো শিয়ালের সঙ্গে। সে ছিল ভিষণ চালাক। রাজাকে দেখে মাথা নিচু করে সালাম জানালো। বলর-
    ক্স জয় হোক মহারাজের। তা পায়ে হেঁটে কোথায় চলেছেন হুজুর?
    ক্স একটু হাঁটতে বের হলাম আর কি।
    ক্স তা আমাকে খবর দিলেন না কেন? হাতি পাঠিয়ে দিতাম। ওর পিঠে চড়েই ভ্রমণে বের হতেন।
    শিয়ালের কথা শুনে রাজামশাই আল্লদে গদ গদ হয়ে গেলেন। বললেন- সকাল থেকে শরীরটা ম্যাজ ম্যাজ করছিল। ভাবলাম একটু হাওয়া খেয়ে আসি। তা তোমার খবর কি? পাঠশালা কেমন চলছে?
    চলছে কোন রকমে আর কি?
    কোন অসুবিধা হলে আমাকে জানাবে কিন্তু।
    মহারাজ মহানুভব। আপনার মতো দয়ালু রাজা থাকতে আমাদের আর অসুবিধা কোথায়? কী মাহান! কী উদার! অন্যরা কেবল বুঝলো না।
    বাঘরাজা বললেন- আচ্ছা এখানে হরিণ পাওয়া যাবে কোথায় বলতে পার? ক’দিন ধরে হরিণের মাংস খেতে ইচ্ছে করছে। শিয়াল বলল- খুব পারি মহারাজ। তবে একটু দূরে। উত্তরের জঙ্গলে। আমার ডেরার কাছেই। আপনি চাইলে আমি পথ দেখিয়ে নিয়ে যেতে পারি। কিন্তু…….।
    কিন্তু কি?
    না মানে, আমার পায়ে বাতের ব্যথাটা বেশ বেড়েছে। গত রাত থেকে টনটন করছিল। হনুমানজির কাছথেকে তেলপড়া আনতেই এদিনে এসেছিলাম। বেয়াদবি মাফ করবেন হুজুর। অতটা পথ হেঁটে যেতে আমার খুব পেরেশানি হবে।
    মহারাজ বললেন- তা তো ঠিকই। তুমি বরং এক কাজ করো। আমার পিঠেই চড়ে বসো। আমিই তোমাকে নিয়ে যাচ্ছি।
    দুষ্টু শিয়াল বাঘের পিঠে চড়ে আমোদ করতে করতে নিজের ডেরার দিকে রওনা হলো। পথে দেখা হলো হাতির সঙ্গে। শিয়ালের কা- দেখে হাতি হেসে ফেলল। শিয়াল বলল- মহারাজের শরীরটা জমে গিয়েছিল। আমি একটু ব্যায়াম করাচ্ছি আরকি। ঠিক বলি নি মহারাজ? মহারা বললেন- হুমমম।

    বাঘরাজা হাঁটতে হাঁটতে উত্তরের জঙ্গলে এসে পড়লেন। একটু দূরে একটা হরিণকে তাঁর বাচ্চাদের নিয়ে চরাতে দেখা গেল। শিয়াল বাঘের পিঠ থেকে লাফিয়ে নিচে নামলো। বলল- মহারাজ আপনি এখন যত খুশি হরিণ শিকার করুন। আপনাকে আর বিরক্ত করা সমিচীন হবে না। আমি বরং যাই। বলেই সে সুড়ুৎ করে একটা গর্তে ঢুকে পড়লো।
    রাজামশাই হরিণ দেখে খুব খুশি হলেন। কিছুদূও এগিয়ে গিয়ে একটা ঝোঁপের আড়ালে তিনি ওৎ পেতে থাকলেন।
    মা হরিণ তাঁর বাচ্চাদের খাওয়ানোর ফাঁকে নানা উপদেশ দিচ্ছিল। সইে সঙ্গে বনের পশুদের সম্পর্কেও একটা ধারণাও।
    ক্স এই বনে অনেক হিং¯্র প্রাণি রয়েছে। ওরা যখন তখন তোমাদের খেয়ে ফেলতে চাইবে। কিন্তু তোমাদের সব সময় সজাগ থাকতে হবে। নিজেদের রক্ষা করে চলতে হবে। যখন ঘাস খাবে কিংবা বিশ্রাম নেবে তখনো চোখ-কান খোলা রাখবে। এমনকি পেটের মধ্যে ভুটভাট শব্দ হলেও লাফিয়ে উঠবে। তবে এই বনের রাজা বাঘ। তাকে ভয় না পেলেও চলবে। কারণ সে বোকা। চেহারটা ভয়ংকর হলেও বুদ্ধিটা তাঁর ভেড়ার মতোই। এই বনে কেউ তাকে ভয় পায় না। তোমরাও পাবে না।

    রাজা মশাই আড়ালে দাঁড়েয়ে হরিণ মায়ের সব কথাগুলো শুনে ফেললেন। তাঁর খুব অপমান বোধ হল। শিকারের ইচ্ছাটাই মরে গেল। তিনি ফরতে যাবেন এমন সময় দেখতে পেলেন- মাথার উপর একটা গাছের ডালে দুইটা বানর ভিষণ ঝগড়া করছে। ক্যাচ কুচ করে চিৎকার করছে। ভেংচি কাটছে। রাজা মশাই বিরক্ত হলেন। বললেন- এ্যাই, তোমরা ঝগড়া করছ কেন? দেখছ না নিচে রাজা দাঁড়িয়ে আছে।
    বানর বলল- মাফ করবেন মাহারাজ। আপনাকে দেখে আমরা ভেবেছিলাম বনবিড়াল। আর আমার বউ ভেবেছিলো হুলো। সেটা নিয়েই আমাদের মধ্যে তর্কটা চলছিল।
    রাজা বললেন- মূর্খ কোথাকার। তোমরা ঝগড়া বন্ধ কর। আমি ক্ষুধার্ত।
    মহারাজ, যদি কিছু মনে না করনে আমি কি আপনাকে কলা খাওয়াতে পারি? গাছপাকা সবরি কলা। ভারী মিষ্টি।
    ক্স চুপ কর হতভাগা। বনের রাজা খাবে কলা? সে কি কলা খায়?
    মনের দুঃখে রাজা নিজের ডেরার দিকে ফিরতে শুরু করলেন। হাঁটতে হাঁটতে সন্ধ্যা ঘণিয়ে এলো। তিনি ভাবলেন- বনের পশুরা যখন তাকে রাজার মর্যাদা দিতে চায় না তখন এই বনে না থাকাই ভালো। তিনি ঠিক করলেন অন্যত্র চলে যাবেন। হঠাৎ তিনি পেঁচার ডাক শুনতে পেলেন। সে হাঁপাতে হাঁপাতে রাজার সামনে এসে উপস্থিত হলো।
    রাজা মশাই! রাজা মশাই!
    কি সংবাদ বলো।
    বনের একদল মানুষ ঢুকেছে। তাঁরা অন্ধকারে মশাল জ্বেলে কি যেন করছে।
    কোথায় তাঁরা? নিশ্চই কোন মতলবে এসেছে।
    ঐতো দক্ষিণের জঙ্গলে। নদীপাড়ে।
    চলো, দেখে আসি।
    রাজা দ্রুত বেগে পথ চলতে শুরু করলেন। বনের কাছাকাছি চলে আসতেই চোখে আলো এসে পড়লো। তিনি একটা ঝোঁপের আড়ালে লুকিয়ে দেখতে পেলেন- দশ-বারো জন লোক। কালো পোশাক পরা। হাতে ভারী বন্দুক। সঙ্গে প্রকান্ড একটা লোহার খাঁচা আর একটা জাল। রাজা মশাই ভয় পেয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে তিনি দৌড়ে পালালেন।
    পরদিন সকালবেলা। রাজামশাই ঘুম থেকে জেগে আড়মোড়া ভাঙছেন। এমন সময় খরগোশ এলো হাঁপাতে হাঁপাতে। বলল-
    মহারাজ! সর্বনাশ হয়েছে। শিগগিরি চলুন আমার সাথে।
    কেন কি হয়েছে?
    বনের মধ্যে একদল মানুষ এসেছে। তাদের হাতে বন্দুক। তাঁরা হাতিমামাকে একটা লোহার খাঁচায় আটকে রেখেছে। অজগর আর গ-ারকে একটা জালে আটকে রেখেছে। ওরা ভিষণ কান্নাকাটি করছে।
    বাঘরাজা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলেন। তিনি ভাবলেন- কেউ তাকে দাম দিক আর নাই দিক, সে তো বনের রাজা। প্রজাদেও বিপদে এগিয়ে যাওয়াই তাঁর কর্তব্য।

    তিনি ছুটে চললেন দক্ষিণের বনে। সেখানে গিয়ে দেখলেন- সবাই খুব কষ্ট পাচ্ছে। কান্নাকাটি করছে। হাতি চিৎকার দিয়ে খাঁচা ভাঙার চেষ্টা করছে। গ-ার আর অজগর শক্ত জালের মধ্যে মরার মতো শুয়ে আছে।
    প্রজাদের বিপদ দেখে রাজা আর সইতে পারলেন না। তাঁর বুকটা হু হু করে উঠলো। ওদের বাঁচাতে তিনি মরিয়া হয়ে উঠলেন। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রচন্ড হুংকার দিয়ে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়লেন মানুষগুলোর উপর। একটা মানুষ খুব দ্রুত বন্দুক তাক কওে গুলি ছুঁড়তে যাবে, এমন সময় গাছ থেকে বানর লাফিয়ে পড়লো। ছোঁ মেরে বন্দুক নিয়ে পালালো। মানুষদল বাঘের আক্রমণে নদীতে লাফিয়ে পড়ে পালালো।

    আটকে থাকা সব পশুদের মুক্ত করা হলো। খাঁচা খুলে বের করে আনা হলো হাতিকে। ইঁদুর এসে জাল কেটে গ-ার আর অজগরকে বের করে আনলো। বনের সবাই বাঘরাজার সাহস দেখে বিষ্মিত হয়ে গেল।

    এতদিন তাঁরা রাজাকে শুধু অপমানই করেছে। কখনো তাকে রাজা বলে মান্য করেনি। এজন্য সবাই লজ্জিত হলো। তাঁরা বুঝতে পারলো তাদের মহারাজ মহৎ। তিনি দূর্বলের উপর দয়া করেন আর সবল শত্রুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। পশুরা সবাই রাজার কাছে ক্ষমা চাইলো। বলল- মহারাজ, আমদের ক্ষমা করুন। আজ থেকে আর কখনো আপনাকে অমান্য করব না। আপনার হুকুমেই চলবে বনের পশুরা।

    মহারাজ গম্ভীর স্বরে বললেন- ঠিক আছে। যাও তোমাদের ক্ষমা করা হলো।
    সবাই তখন চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো- জয় মহারাজের জয়! জয় বাঘবাহাদুরের জয়।
    বাঘও তখন রাজার সম্মান ফিরে পেয়ে খুশিতে ডগমগ করতে লাগলেন।

  • পিলপের গ্যাস

    পিলপের গ্যাস

    স ফি য়া র র হ মা ন

    ভাদ্র মাসে নারকেল গাছের মাথা পরিস্কার করতে হয়,তাতে নারকেলের ফলন বেশি হয়। এই কাজে যারা পারদর্শি তাদের আগে না চাইতে পাওয়া যেত,যুগ বদলেছে এখন ডেকেও পাওয়া যায় না। কুরবান গাজীর তিনটে নারকেল গাছ। ভাদ্রমাস পার হতে গেল অথচ গাছ পরিস্কার করা হল না। চিন্তিত মনে নারকেল গাছের গুড়ায় ঘুরাঘুরি করে। স্ত্রী আসমা বেগম এদৃশ্য দেখে ব্যাঙ্গাত্বক গলায় বলে, মদ্দ মানুষ হয়ে জম্মায় চাও। গাছে উঠে যাও, নিজে নিজে ছাফ কর।’
    তুমি-আমি আজ থেকে চব্বিশ বছর আগে এই দিনে পৃথিবীতে জোড় মানিক হয়ে পথ চলার চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করেছিলাম। সুখে-দুখে পথ চলেছি পৃথিবীর পথে।
    কুরবান গাজী ফিক করে হেসে বলল, ‘কতাডা ঠিক কইছাও বউ, পারা উচিৎ ছিল কিন্তু গাছের মাথার দিক তাকালি যে মাথা ঘোরে। হুড়–ম করে পড়লি কী তুমার সুখ হবেনে?’
    ‘এমনি-এমনি কলাম, তুমি বাঁচে থাক কুদার বাপ।’
    কুরবান গাজী ভোর বেলা ঘরের দরজা খুলতেই আশ্চার্য হল। উঠানে দাঁড়িয়ে আছে রোহিতা গ্রামের মফেজ মোড়ল। নারকেল গাছের মাথার দিকে তাকিয়ে কী যেন দেখছে। কুরবান গাজীর ডাকে মফেজ মোড়ল সম্বিত ফিরে পেল। নারকেল গাছ সুন্দর করে পরিস্কার করায় এই এলাকায় তার জুড়ি নেই। এ যেন না চাইতেই এক কাঁধি।
    কুরবান গাজী গাছ পরিস্কারের দর নিয়ে দর কষাকষি শুরু করেছিল কিন্তু মফেজ মোড়লের মুখের দিকে তাকিয়ে থেমে গেল। দরাদরি করলেই অনাকাঙ্খিত ধন ফসকে যেতে পারে। মফেজ মোড়ল আগে লুঙ্গি গুটিয়ে কাছা মেরে গাছে উঠতো এখন ছেলের বাদ দেওয়া থ্রি কোর্য়াটার প্যান্ট পরে গাছে চড়ে। গাছে উঠার আগে বড় একটা পান সময় নিয়ে গুন্ডি খয়ের তামাক জর্দ্দা পানের যাবতীয় মসলা সাজিয়ে মুখে ভরে দেয়। এ নিয়ে কেউ কোন কথা বললে মফেজ মোড়ল এক গাল হেসে বলে,‘সুদ খাব না, ঘুস খাব না, খাব একটা পান,তা মকসায়ে মজা করে না খালি হয়।’
    আল্লাহ রসূলের নাম নিয়ে এক দলা থুথু হাতের তালুতে নিয়ে দুই তালু ঘসে মফেজ মোড়ল নারকেল গাছে উঠলো। আকাশ মেঘলা কিন্তু বৃষ্টি হচ্ছে না। হঠাৎ বেশ জোরে মেঘ ডাকলো,পর পর আরও দুইটা ডাক দিল। মফেজ মোড়ল বিদ্যুৎ বেগে সড়াৎ করে গাছ থেকে নেমে এল। কুরবান গাজীর বারান্দায় বসে হাঁফাতে লাগল। এর মধ্যে আশপাশের আরও কয়েকজন জড়ো হল। কুরবান গাজীর বাপ নেয়ামত গাজী অ্যাজমার রোগী সে একদমে কিছুক্ষণ কেশে নিয়ে বলল, ‘বাবারে একটু ম্যাগ না ডাকতি এত ভয় পাও? আমরা যখন মাঠে কাজ করতাম,কত ঝড়-বৃষ্টি এই পিটির উপর দিয়ে চলে গেছে। ভয় কারে কয় জানতাম না। বাপ মার নাবি ছাবালরা অল্পে ভয় পায়। বাবাজি কী তোমার মার প্যাট পুচা(সর্বশেষ) ছাবাল (ছেলে) ?’
    উপস্থিত সবাই জোরে হেসে উঠলো, ছোটরা কিছু না বুঝেই হাসতে থাকে।
    মফেজ মোড়লের একটা গুণ আছে, যেভাবেই হোক দুনিয়ার সব প্রশ্নের উত্তর সে দিতে পারে। সব শুনে মুরব্বির উপর রাগ হল কিন্তু প্রকাশ করতে পারল না। বিজ্ঞের মত দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে বলল, ‘শোন বাবাজি তোমাদের সেই যুগ এখন আর নেই। বৃটিশ আমলে সরকার রাস্তায় রাস্তায় পিলপে (সীমানা পিলার) পুতে ছিল। তারমধ্যে গ্যাস (ম্যাগনেট) ছিল। এখন দেশে শোর (শুয়োর) কুমে গেলিও চোর বাড়ে গেছে। পিলপে সব তুলে নিয়ে ভারতে বিক্রি করেছে, পিলপের গ্যাস বারুই গেছে। এই গ্যাস আগে বাজ(বজ্রপাত) পড়া থামাতো, এখন থামানোর কিছু নেই। ঝমাঝম মাথায় পড়ে, দেখতিছাও না মানুষ মরে বেছাপ্পর হয়ে যাচ্ছে। আমার কী গাছে বসে মততি কচ্চাও।’
    পিলপের গ্যাসের এই গল্প এক কান হতে সাত কান হয়ে গেল। ধীরে ধীরে মফেজ মোড়লের গ্রামেও ছড়িয়ে পড়লো। সেই থেকে মফেজ মোড়লের নাম রুপান্তরিত হয়ে- হয়ে গেল পিলপের গ্যাস। মফেজ মোড়ল এখন পথে-ঘাটে বের হলে বিশেষ করে শিশু কিশোররা দূর থেকে বলে, ‘ঐ যে পিলপের গ্যাস যায়’ বলেই ঝোঁপ ঝাড়ের আড়ালে লুকিয়ে পড়ে।

  • নয়ন আহমেদ এর কবিতা

    নয়ন আহমেদ এর কবিতা

    উচ্চতা

    একদা মৈনাক পাহাড়ে রেখে এসেছি উচ্চতা।
    মাপকাঠি,পরিমাপ
    দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের পরিচয়;
    সমাহিত করে এসেছি এখানে-
    চুল্লির নৈকট্যে;
    গাহর্স্থ্য উত্তাপে।
    ভেবেছিলাম,উচ্চতাকে কখনো ভালোবাসবো না।
    উচ্চ হতে হতে একা হতে হয়।
    বিচ্ছিন্ন হতে হতে নিঃস্ব হতে হয়।
    ও পাহাড়, আমি এই চুল্লির পাশে হাঁটু মুড়ে বসে থাকলাম।
    প্রিয় হেস্তিয়া রাঁধছে অনিবার্য ব্যঞ্জন।
    আমি আর কোথাও যাবো না।

     

     

    প্রচারক

    বহুদিন প্রচার করেছি আর্তনাদ।
    অসুখী ছিলাম;
    কারখানা বানিয়েছিলাম।
    একটা কমলালেবুর পাশে শুশ্রƒষার কানাকানি স্থাপন করি নি।
    বড় মূর্খ ছিলাম!
    বহুদিন প্রচার করেছি হাহাকার।
    অসুস্থ ছিলাম।
    সন্দেহের দোকান খুলেছিলাম।
    একটা সূর্যের পাশে ঘরবাড়ির নিত্য সম্পর্ক বিস্তৃত করিনি।
    বড় অদক্ষ ছিলাম!

    আনন্দের নিজস্ব রঙ

    বাড়তে দিয়েছি আনন্দ;
    তোমরা ধান বুনে যেভাবে অপেক্ষা করো।
    হ্রস্ব করেছি বিষাদ;
    তোমরা শোক মুছে যেভাবে কবরস্তান থেকে ঘরে ফেরো।
    মূলত,এভাবে তোমরা জীবনের দিকে ফেরো।
    প্রত্যেকেই বিকিরণ করে এই নিজস্ব রঙ।
    কারণ, তারা পূর্ণ হতে চায়।
    রঙ প্রকাশ করে ভোর।
    রঙ প্রকাশ করে ইট,সুরকি।
    রঙ প্রকাশ করে রান্নার হাঁড়িপাতিল।
    রঙের উৎসব করে হেস্তিয়ার উনুন।
    তার মনোযোগ দ্বিধাহীন প্রচার করেছি।
    এই রঙের ভেতর ডুব দেওয়া লোকদের আমি পছন্দ করি।

  • জীবন যেখানে যেমন

    জীবন যেখানে যেমন

     

    ড. শা হ না জ পা র ভী ন

    মনিকা লিউনিস্কী যখন নিউইয়র্কে ক্লিনটনের সময় ঝড় তুলেছিল তখন মনিকা জেসিকা কাজের স্বার্থে তার নিক নেম জেসিকাকে ফিরিয়ে আনে। ও এখনও আঁচ করে মনিকার মতোই জেসিকা নামটাও তাকে আপাদমস্তক সন্দিহান সমীক্ষায় নিয়ে আসে। একই প্রশ্ন তাকে রিপিট করা হয়
    হটস ইওর নেম?
    জেসি
    কাম ফ্রম?
    বাংলাদেশ
    ইউ বাংলাদেশী?
    ইয়েস
    বাট!
    ও বুঝতো না। কেন ওকে ডানকিনেও একই প্রশ্ন করা হয়েছিল দ্বিতীয়বার। পিজাসপে তৃতীয়বার।
    অবশ্য সে একটা বিষয় খেয়াল করেছে যে সে যেখানেই যাক না কেন, যে রেস্টুরেন্ট বা মার্কেটিং কোম্পানিতে যাক চাকরি তার প্রথম চান্সেই হয়ে যায়। দ্বিতীয় ইন্টারভিউ লাগে না। মনিকা (জেসিকা) এসেছে উনিশ শ আটানব্বইয়ে। স্বামী মো. মনজুরুল ইসলামের সিটিজেনশিপ ভিসায়। সেই থেকে সে আছে এদেশে। কিন্ত এর আগে তাকে কাজ করতে হয় নি। পায়ের ওপর পা দিয়ে আয়েশ করে খেয়েছেন।
    সে এমনিতেই একটু নিরিবিলি। আরাম পিয়াসী। একটু অন্তর্মুখী। কাউকে ঘাটায় না। ঘাটতেও চায় না। দুটো সাদাভাত। কাচা ঝাল, পিয়াজ, খাঁটি সরিষার তেল দিয়ে যে কোন ভর্তা আর ছোট মাছ চচ্চড়ি হলেই সে খুশি। তার কোন পিৎজা, সান্ডউচে মন নেই। তবে যে কোন জুস এর ব্যাপারে তার সব সময় একটু বাড়তি আকর্ষণ এবং কখনওই খানদানি বোরহানীতে না নেই।
    তাকে সুন্দরী বলা যায়। বরং নিঃসেন্দহে। সুন্দরীদের যে কয়টি প্রচলিত শর্ত আছে সবগুলিতেই তার প্লাস মার্ক। শুধুমাত্র উচ্চতায় টেনেটুনে পাশ। তা না হলে তার গোল্ডেন প্লাস কেউ ঠেকাতে পারত না। তবে এ নিয়ে তার আফসোস নেই। নেই কোন খারাপ লাগা কিংবা মন খারাপের সাতকাহন। কারণ জেসিকা মিয়া বাড়ির মো. বজলুর রহমানের দ্বিতীয় পুত্রবধু। প্রথম পুত্রবধু শিরিনা আক্তার পলির থেকেও সে একটু মাথাতোলা। তাই আর শ্বশুর, শ্বাশুড়ি, ননদ, দেবরদের এই বিষয়টা নতুন করে মাথায় ঢোকে নি। তাই সারাজীবনের এই আক্ষেপ মুহূর্তেই মিলিয়েছে শতভাগ।
    তার খাড়া নাক, পটল চেরা ভাসা ভাসা দুটি গভীর চোখ, চিলের ডানার মতো উড়ন্ত ভুরু, উত্থিত চিবুকসহ তার টনটনে ব্যক্তিত্ব সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করবার জন্য যথেষ্ট। তাছাড়া তার রয়েছে দুধে আলতার ধবধবে ফর্সা রং। এতকিছু সত্বেও পিতবর্ণের ঘোলাটে চোখের মনি তাকে সন্দেহের মধ্যে আনে সহজেই। সে কি খাঁটি বাঙালি? নাকি টোটেম, ট্যাবু, দ্রাবিড়, না মোঙ্গলীয় কোন উপজাতি থেকে তার জিন এসেছে? সে যাই হোক।
    সব মিলিয়ে সে হ্যাপি।
    তার বাবা ছিলেন থানা ইঞ্জিনিয়র। সেই সুবাদে বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় থানায় তার বসবাস। ছোট বেলা থেকেই সে সকলের কাছে বাড়তি মনোযোগ পেতে অভ্যস্ত। তো বাংলাদেশের অসংখ্য থানায়-থানায় মনোযোগ পেতে-পেতে আজ নিউইয়র্কের ব্রুকলিনেও সে সমান্তরাল ভাবে আকর্ষিত।
    দীর্ঘদিন সে আমেরিকার স্থায়ী নাগরিক হলেও বাইরে সে খুব একটা কাজে যায় নি। তবে এবার কাজ করতে হবে। মেয়েটা এবার ভার্সিটিতে যাবে। ও পড়তো স্টাইফেসেন্ট হাইস্কুলে। ওখানকার এ প্লাস গ্রেডের ছাত্রী। এবার যাচ্ছে স্টোনিব্রোক ইউনিভার্সিটি। ছেলেটি ব্রোন্সসায়েন্স হাইস্কুলের ছাত্র ছিল। ঔ পড়ছে স্টোনিব্রোক এ। নিউইয়র্কের কেন্দ্র লং আইল্যান্ড এর এক নিরিবিলি পরিবেশে গড়ে উঠেছে শহরের দ্বিতীয় শ্রেণীর এ ভার্সিটিতে। অবশ্য হাভার্ট ভার্সিটি, কলম্বিয়া ভার্সিটিতে চান্স হয় নি বলে জেসিকার মোটেও মন খারাপ হয় নি। ব্রুকলিন থেকে টানা দুঘণ্টার ড্রাইভ শেষে উইকএন্ডে যখন ছেলেটি বাসায় আসে তখন সে অন্য গর্বে হেসে ওঠে। ছেলে জাকির ম্যাকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়লেও মেয়েটির ইচ্ছা মেডিক্যাল স্টাটাস। তারজন্য প্রয়োজন প্রচুর ডলার। এখানে উচ্চ শিক্ষা বাংলাদেশের মতো সকলের নাগালের মধ্যে থাকে না। এখন তো বাংলাদেশের গ্রাম গঞ্জ মফস্বলের কলেজগুলিতে অনার্স পড়ার সুযোগ আছে। কিন্ত এদেশে তা নয়। এখানে উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রচুর খরচ লাগে।
    যেটি মধ্যবিত্ত সমাজে একজনের আয়ে সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়েই জেসিকা কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। অবশ্য এটাও সঠিক যে টাকা থাকলেই ওর বাবা মেয়ের পেছনে খরচ করতে চাইতো না। মেয়ে বড় হয়েছে। তাকে হোস্টেলে পাঠানো যাবে না। এটাই তার একান্ত ইচ্ছে। মেয়েদের নিয়ে তার অযাচিত সন্দেহের বাতিক রয়েছে। এতদিন সে সন্দেহের মধ্যে রাখতো জেসিকাকে। এখন তার সাথে যোগ হয়েছে মেয়ে তাহান। হাত খরচ চাইলেই উল্টাপাল্টা কথা–
    বয়ফ্রেন্ড নিয়ে লাঞ্চ করেছো?
    এত টাকা লাগে কেন?
    তুমি জানো আমি ডায়াবেটিকস। বাট এভরিডে আমি কিভাবে ব্রেকফাস্ট করি?
    অনলি ওয়ান ডলারের একটি ক্রোসেন ব্রেড এবং এক ডলারের একটি কফি। দুপুর না খেয়েই কেটে যায় আমার। রাতে জাস্ট একটা জাইরো।
    আমার মেয়ে হয়ে তোমার এত ফুটানি কোথা থেকে আসে?
    মেয়ে একদম চুপ।
    মুহূর্তকাল অপেক্ষা করেই ফেটে পড়ে।
    আর ইউ নো হট আর ইউ সেয়িং? হাউ ননসেন্স?
    ভাইয়াকে তুমি প্রতিদিন আমার ডাবল ডলার দাও। তখন? তখন তো
    নট এনি কোশ্চেন? হোয়াট হ্যাপেন্ড?
    তোমার একটি ডলারও আমি নিতে চাই না। আমি লোন নিব।
    সরকার বসে আছে ডলার নিয়ে। আমি আর্ন করে পেমেন্ট করব। ব্যস,
    ইটস মাই লাস্ট ডিসিশন।
    এই সব ঘটনার পর থেকেই জেসিকা তার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে বাধ্য হয়েছে।
    কাজ শুরু করেছে।
    পাপাইয়াচে কাজ করতে যেয়ে সে প্রতিদিন নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হচ্ছে।
    নিজের চুল নিজে ছিড়ছে। কেন সে পড়াশোনাটা শেষ করে নাই?
    ওর বান্ধবী শিউলি। যাকে সে কোনওদিন গোনার মধ্যে রাখে নাই! অথচ সেই কিনা এখন এ গ্রেড টিচার। ছোটবেলায় জিয়ল মাছের মতো প্যাতপেতে ছিল। হাবলু। অথচ পড়াশোনার জোরে আজ সে হাইহিলে ঝড় তুলে স্কুল কাঁপিয়ে বেড়ায়। স্টুডেন্টস তার ভয়ে যখন-তখন ড্রেস নষ্ট করে ফেলে। সেই জিয়লের প্যাতপেতে শিউলি আজ পার্লারের কল্যাণে ঐশ্বরিয়ার গ্লোর কাছে কম্পিটিশনে নাম লেখাতে পারে?
    কেন? শুধু ঐ পড়াশোনার জোরেই তো? নাকি? তার কল্যাণেই তো আজ পোষ্ট পেয়েছে। আর পোষ্টটির কারণেই তো হাই সোসাইটিতে বর্তমান তালিকায় নাম লেখাতে
    পেরেছে। আর সবকিছু মিলে পেয়েছে গ্লোরিয়াস মুভমেন্ট।
    আর লায়লা। তারও একই অবস্থা। কালো ছিল বলে সময়মত বিয়ে হলো না। ঠিকই পড়াশোনা শেষ করে বিসিএস করলো প্রশাসনে। বিয়ে করেছে কলিগকে। ব্যস। অথচ ও বলতো শুধু নাকের জায়গায় নাক আর চোখের কাছে চোখ থাকলেই হলো। তারপর ঘসে মেজে সুন্দরী হওয়া তো চোখের পলকের ব্যাপার। সত্যি তাই। লায়লা যেন বসরার ফুটন্ত গোলাপ। এই সাত সমুদ্র তের নদী দূরে থেকেও জেসিকা ফেসবুকের কল্যাণে প্রতিদিন তার ফুটন্ত গোলাপীয় ছবি আর স্ট্যাটাস দেখতে দেখতে অস্থির। আর আমেরিকা বসে এই শুন্য দশকে ডিজিটাল সময়ে তার মেধাবী মেয়েকে টাকার অভাবে উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করাবে এমন গাধা সে কোনওকালে ছিল না। বিশেষ করে যেখানে শ্রম দিলেই ঘন্টা মেপে আয় করা সম্ভব। তাহলে আর ঘরে বসে পায়ের ওপর পা দিয়ে বসে থেকে ফেসবুক ঘেটে ঘেটে সময় নষ্ট কেন?
    জেসিকা এই বয়সে এসে বিষয়টি বুঝতে পারে। এতো আর বাংলাদেশ নয় যে ইচ্ছে থাকা সত্বেও যে কোনও বয়সে, যে কোনও শিক্ষায় ঘন্টা মেপে কাজ পাওয়া যায়? এর নাম আমেরিকা। সারা বিশ্বকে যারা শাসন করে ইচ্ছেমতো। সে আরও বুঝতে পারে যেসব মেয়েরা সুন্দরী তাদের অল্প বয়সে বিয়ে হয় মাঝারি স্ট্যাটাস এর ছেলেদের সাথে। আর যেসব মেয়েরা সুন্দরী না হওয়ার কারণে পড়াশোনা শেষ করতে পারে পরবর্তীতে তাদেরই ভাল বিয়ে হয় চোখ বন্ধ করে। না হলে নিতান্তই নিজের কলিগ তো থাকেই!
    আর জেসিকা! পড়াশোনাটা শেষ করতে পারেনি বলেই আজ এতো বিড়ম্বনার শিকার। পড়াশোনা শেষ করতে পারেনি তার এই অতি মাত্রায় সুন্দরের কারণে। সেই ছোট বেলা থেকেই সবাই ওর মাথা চিবিয়েছে। আর একটু বড় হতেই শুরু হলো বিয়ের প্রস্তাব। যাকে মানায় সেও পাঠায় আবার যাকে মোটেও মানায় না সেও আসে!
    এভাবেই এসএসসি দেবার পর পরই তার বিয়ে হয়ে যায় একই এলাকার মনজুরুল এর সাথে। মনজুরুলের তখন দেবার মতো আলাদা কি পরিচয় ছিল? পরিচয় ছিল তার ভাইয়ের। তার বাবার। ও ছিল ঐ ফ্যামিলির ফ্যাশন সচেতন স্মার্ট যুবক সর্বস্ব। দেখতে তেমন সুদর্শন বলা যাবে না। তবে সায়ন্তনী জুতা ছাড়া তার চলতো না। ওয়ান ম্যান সো পারফিউম তাকে জানান দিতো সব সময়ে সে আছে। আর ছিল এক দঙ্গল বন্ধু সমাজ। ব্যস, বড় আপা পটে গেল! এখনও সময়-অসময়
    বলে জেসিকা। কি চাইছিলে তোমরা? সত্যিকারের বলো তো? আসলে তোমরা চাইছিলে সারাজীবন আমি তোমাদের হাতে পায়ের নিচে থাকি? সুন্দরী ছিলাম বলে সারাজীবন সমাজ তোমাদের চেয়ে আমাকে বেশি মনোযোগ দিয়েছিল তার প্রতিদান এইভাবে নিতে চাইছিলে?
    আবার নিজেই নিজের সাথে হাহা করে, হাহাকার করে। কি পাগল আমি? এই কি সম্ভব? কখনও সম্ভব ? কোনও দিন সম্ভব? নিজের মায়ের পেটের বোন। হাতে করে মানুষ করেছে। তাই কি সম্ভব?
    বলার জন্য বলা! মন যে কি বলে? সে বোঝে না কিছুই। আসলে ঐ সময়টা মনজুরুলের ফ্যামিলি ছিল কামারখালীতে সবদিক থেকে এগিয়ে। প্রাইভেট কার, বাস, ট্রাক, কনস্ট্রাকশন ফার্ম কজনের ছিল। ও রকম একটা ভরা ফ্যামিলি রেখেই ওরা চলে এলো স্বপ্নের আমেরিকায়। কিন্ত এখানে ইচ্ছে করলেও পায়ের ওপর পা দিয়ে বসে খাওয়া যায় না। বেলা বারোটায় ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাস করতে করতে আর্দালি, চাপরাসি সাথে নিয়ে বাজারের সবচেয়ে বড় আড় মাছটা কেনা যায় না। এখানে ঘন্টা হিসাবে কাজ করতে হয়। ইচ্ছে করলেই কাজে যেয়ে আয়েশ করে বসে থাকা যায় না। এই হচ্ছে এদেশ আর ওদেশের পার্থক্য।
    কিন্ত জেসিকা অনেকটাই এদেশের মতো। খাওয়া দাওয়া। চলা ফেরা। পোশাক পরিচ্ছেদে। লাইফ স্টাইলে এদেশীয়। চেহারার মধ্যে মঙ্গোলীয় একটা স্লাইড আগে থেকেই আছে। সব মিলিয়ে ও যেখানেই কাজে যায় ওকে নিয়ে একটা গসিপ চলে। ও কি সত্যিকারের বাঙালি নাকি ফেক বাঙালি! ও সময়-অসময়ে এসব ভাবতে বসে। পেছন থেকে তাড়া লাগায় মালিক কাম ম্যানেজার। এতো কি ভাবো? গার্বেজ করো। হাত লাগাও। জেসিকা নড়ে-চড়ে বসে। হকচকিয়ে উঠে দাঁড়ায়।
    ঘড়িতে তখন অনেকটা অকারণ সময় পেরিয়েছে।

  • কৃষ্ণনগরে জমি নিয়ে গন্ডোগোল

    নিজস্ব প্রতিনিধি: কালিগঞ্জ থানার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ রঘুনাথপুর গ্রামের আইয়ুব আলী সরদারের পুত্র আবুল বাশার ও একই গ্রামের সিদ্দিকুল ইসলামের মধ্যে ০.৩২ শতক জমি নিয়ে চরম বিরোধ। পৈত্রিক সূত্রে ঐ জমির মালিক ছিলেন আইয়ুব আলী সরদার। সেই সূত্রের জের ধরে সিদ্দিকুল ইসলাম, আইয়ুব আলী সরদারের নিকট হতে ০.৩২ শতক জমি খরিদ করে ভোগ দখল করতে থাকে। কিন্তু হঠাৎ আইয়ুব আলী সরদারের পুত্র আবুল বাশার ঐ জমির প্রকৃত মালিক তার পিতা সম্পূর্ণ নয় বলে অভিযোগ তোলেন এবং তার ফুফু ঐ জমির অংশীদারিত্ব বিধায় সিদ্দিকুল ইসলামের খরিদকৃত ০.৩২ শতক জমিতে বাঁধা প্রদান করেন এবং এক পর্যায়ে আবুল বাশার প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় সিদ্দিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন এবং বিভিন্ন সালিশের মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করে দিলেও কিছুদিন না যেতেই আবার উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা যায়। শেষ পর্যায়ে বৃহস্পতিবার আনুমানিক দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী আরো জানান, উক্ত ঘটনায় উভয় পক্ষের লোকজন আহত হয়েছে বলে জানা যায়। তাছাড়া সিদ্দিকুল ইসলামের একটি ঘর পোড়ানোর অভিযোগও পাওয়া গেছে। এখন এলাকাবাসী প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি আসলে ঐ জমির প্রকৃত দাবিদারকে কাগজপত্র দেখে যাতে তার নায্য অধিকার পেতে পারে এবং দীর্ঘদিনের বিরোধ যাতে সমাধান হয় সেজন্য এলাকাবাসী প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

  • কাফেলার সম্পাদক আব্দুল মোতালেবের ১৬ তম মৃত্যু বার্ষিকী: সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের কর্মসূচি

    আজ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক কাফেলার সম্পাদক মরহুম আব্দুল মোতালেবের ১৬ তম মৃত্যু বার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুরস্থ মরহুমের কবর জিয়ারত ও ইফতারপূর্ব সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের হলরুমে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত কর্মসূচীতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সকল সদস্যকে যথা সময়ে অংশ নেওয়ার জন্য সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধরণ সম্পাদক মো: আব্দুল বারী অনুরোধ জানিয়েছেন।