ঢাকা ব্যুরো : বাস চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় তাদের পরিবারকে কেন দুই কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি নিহত শিক্ষার্থী দিয়া আক্তার মিম ও আব্দুল করিমের পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে পাঁচ লাখ টাকা করে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একসপ্তাহের মধ্যে জাবালে নূর পরিবহনের মালিক ও বিআরটিএ কর্তৃপক্ষকে এই টাকা দিতে বলা হয়েছে। সোমবার (৩০ জুলাই) এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
রুলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, সড়ক পরিবহন সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, বিআরটিএর চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদেশে বাসচাপায় আহতদের চিকিৎসার সব ব্যয় বহন করতে জাবালে নূর পরিবহনের মালিক ও বিআরটিএ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ফরিদা ইয়াসমিন।
পরে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘বিদ্যমান যে ট্রাফিক আইন আছে, তা যথাযথভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের নিহত দুই শিক্ষার্থীর প্রত্যেক পরিবারকে ব্যাংক ইন্টারেস্টসহ দুই কোটি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।’ তিনি আরও বলেন, ‘আদালত দুই পরিবারের তাৎক্ষণিক চাহিদা মেটানোর জন্য জাবালে নূর পরিবহনকে এক সপ্তাহের মধ্যে ৫ লাখ টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আহত হয়ে যেসব শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে আছেন তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসা খরচ বহন করার জন্য ওই পরিবহনকে নির্দেশ দিয়েছেন।’
চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স কোন যোগ্যতার ভিত্তি দেওয়া হয় এবং সড়কে চলাচলকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিআরটিএ কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সে বিষয়েও একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বিআরটিএ-কে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য ১২ আগস্ট দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে বিআরটিএ-কে ওই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে। এছাড়া কুর্মিটোলার এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় জাবালে নূর পরিবহনের দায় নির্ধারণে তদন্ত প্রতিবেদন ২ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালকের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে পুলিশ ও বিআরটিএ-কে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে।
এর আগে সোমবার (৩০ জুলাই) সকালে ওই দুর্ঘটনা সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনা হলে আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজলকে অ্যাফিডেবিট করে রিট দায়ের করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদেরকে দুর্ঘটনায় আহতদের খোঁজ রাখতে নির্দেশ দেন। যার ফলে রুহুল কুদ্দুস কাজল নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চেয়ে সোমবার দুপুরে (৩০ জুলাই) রিট দায়ের করেন। সে রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুলসহ আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অদূরে বিমানবন্দর সড়কে (র্যাডিসন হোটেলের উল্টো দিকে) বাসচাপায় রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। বিমানবন্দর সড়কের বাম পাশে বাসের জন্য অপেক্ষা করার সময় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস তাদের চাপা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন দিয়া আক্তার মিম ও আব্দুল করিম।
আরও বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। পথচারীরা সঙ্গে সঙ্গে আহতদের নিকটস্থ কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে গুরুতর আহত কয়েকজনকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
Blog
-
হাইকোর্ট বাস চাপায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে
-
সাতক্ষীরা পৌরসভায় ৬০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা পৌরসভার ৬০ কোটি ২৩ লাখ ৮৪ হাজার ৫১৪ টাকার বাজেট ঘোষণা করেন হয়েছে। রোববার দুপুরে ‘চাই পৌর সেবার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে জন সম্মুখে সাতক্ষীরা পৌরসভার ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেন পৌর মেয়র আলহাজ্ব তাজকিন আহমেদ চিশতি।
সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সাতক্ষীরা রোববার দুপুরে পৌরসভা মিলনায়তনে এ বাজেট অধিবেশনের আয়োজন করে। বাজেট অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন পৌর মেয়র আলহাজ্ব তাজকিন আহমেদ চিশতি।
বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট্য শিক্ষাবিদ সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসার অব্দুল হামিদ, জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক আনিসুর রহিম, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ও ফিফা রেফারি তৈয়ব হাসান বাবু, সিনিয়র সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জি, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা ও পৌর কাউন্সিলর জোছনা আরা, পৌর কাউন্সিলর অনিমা রানী মন্ডল, শফিক-উদ-দৌলা সাগর, শেখ আব্দুস সেলিম, কাজী ফিরোজ হাসান, শাহিনুর রহমান শাহিন, শফিকুল আলম বাবু প্রমুখ।
-
জেলায় মাদক বিরোধী অভিযানে আটক-৫৭, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা জেলাব্যাপী পুলিশের মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে ১১ মাদক মামলার আসামি ও দুই জামায়াত নেতাসহ ৫৭ জনকে আটক করা হয়েছে।শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত জেলার আটটি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। উদ্ধার করা হয়েছে একটি শুটার গান, এক রাউন্ড গুলিসহ বেশ কিছু মাদক দ্রব্য। এসময় বিভিন্ন অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ৫ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।আটককৃতদের মধ্যে, সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ১৮ জন, কলারোয়া থানা থেকে ৯ জন, তালা থানা ৪ জন, কালিগঞ্জ থানা ৭ জন, শ্যামনগর থানা ৭ জন, আশাশুনি থানা ৬ জন, দেবহাটা থানা ৪ জন ও পাটকেলঘাটা থানা থেকে ২ জনকে আটক করা হয়েছে।সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান তাদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে। -

আজ বিশ্ব বাঘ দিবস : দু’দশকে বনদস্যুদের শিকার হয়েছে সুন্দরবনের বিপুল সংখ্যক বাঘ
নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এদিনে ঘটা করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হলেও নানা সংকটে গত দু’যুগে বনদস্যু ও চোরা শিকারীদের শিকার হয়েছে সুন্দরবনের রেকর্ড পরিমাণ রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বন উজাড়, আন্তর্জাতিক বাজারে বাঘের চাহিদা এর অন্যতম কারণ।
বিভিন্ন সময় উদ্ধার হওয়া বাঘের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, বাঘের শাবক সর্বোপরি বাঘ শুমারী তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ১৬ বছরে ৫৭ টি বাঘ হত্যার তথ্য থাকলেও বাস্তবে এর সংখ্যা অনেক বেশী বলে জানিয়েছেন বনজীবিরা।
বিভিন্ন সময়ে নানা গবেষণা, ব্যক্তি বা সংস্থা বাঘ হ্রাসের কারণ হিসেবে নানা মন্তব্য করলেও বনজীবি ও সুন্দরবন বিশেষজ্ঞরা আশংক্সক্ষাজনকহারে বাঘ হত্যার জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বনবিভাগসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দূর্বলতাকেই দায়ী করছেন। সর্বশেষ ২০১৫ সালে ‘ক্যামেরা ট্র্যাপ’ পদ্ধতিতে গণনা শেষে দেখা যায়, সুন্দরবনে বাঘ রয়েছে মাত্র ১০৬টি। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফের শরু হওয়া বাঘ শুমারীর মাঠ পর্যায়ের কাজ শেষ হয় মে মাসে। তবে এখনো প্রকাশিত হয়নি শুমারীর প্রতিবেদন। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে পালিত হচ্ছে বিশ্ব বাঘ দিবস।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে থাইল্যন্ডের হুয়ানে অনুষ্ঠিত হয় টাইগার রেঞ্জ দেশ সমূহের ‘এশিয়া মিনিষ্ট্রয়াল কনফারেন্স’। সম্মেলনে বাঘ সংরক্ষণে ৯দফা পরিকল্পনাসহ সিদ্ধান্ত হয় যে, প্রতি বছর ২৯ জুলাই পালিত হবে বিশ্ব বাঘ দিবস। তখন থেকেই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করা।
জানা যায়, বিগত ২০১৫ সালে মাত্র ১০ মাসের ব্যবধানে সবোর্চ্চ ৯ টি বাঘের চামড়া উদ্ধার হয়। এর মধ্যে কয়রার গোলখালী থেকে অক্টোবর মাসে একসাথে ৩ টি বাঘের চামড়া উদ্ধার হওয়ায় বনবিভাগের ভূমিকা নিয়ে রীতিমত প্রশ্ন দেখা দেয়। ঐ বছরের ৮ আগস্ট ৬৯ পিচ বাঘের হাড়সহ কয়রার এনায়েত হোসেন ও বাবু হোসেন নামে দু’চোরা শিকারীকে খুলনার লঞ্চ ঘাট এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের রমজাননগরের টেংরাখালী গ্রামের চোরা শিকারীদের দ্বারা পাচারকৃত ৪ টি বাঘের শাবক উদ্ধার হয় ঢাকার শ্যামলী থেকে।
২০১৫ সালের ২৬ জুলাইয়ের ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতির শুমারী অনুযায়ী সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে মোট ১০৬ টি বাঘের অস্তিত্ব থাকলেও এর আগে ‘পাগ মার্ক’ পদ্ধতির শুমারী অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৫০ টি। শুমারী অনুযায়ী মাত্র ৫ বছরের ব্যবধানে সুন্দরবন থেকে বাঘ কমেছে ৩৪৪টি। ২০০৪ সালের এক গবেষনায় সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি। এর মধ্যে পুরুষ ১২১টি, স্ত্রী ২৯৮টি এবং বাচ্চা ২১টি। সব মিলিয়ে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় কয়েক বার বাঘ শুমারী হলেও বাঘের প্রকৃত সংখ্যা কত তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।২০১৫ সালের ৬ জুলাই প্রকাশিত বাঘের ঘনত্ব শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয় অবৈধ শিকার, খাদ্যের অভাব ও প্রকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবনে বাঘের অস্তিত্ব কমেছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বনদস্যুসহ চোরা শিকারীদের বাঘ শিকার, সুন্দরবনের ভেতরের নদী সমূহে নৌচলাচল ও বনের পাশে শিল্প অবকাঠামো নির্মাণ বাঘের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০১৬ সালে আমেরিকার দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি অর্থায়নে ‘বাঘ প্রকল্পে’ ক্যামেরার সাহায্যে গণনার জন্য খুলনা বিভাগীয় বণ্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এ প্রকল্পকে জনবল ও ৭০টি ডিজিটাল ক্যামেরা সরবরাহ করে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ফের বাঘ প্রকল্প ক্যামেরা ট্রাপিং এর মাধ্যমে গণনার কাজ শুরু করে এবং মে মাসে এর কাজ সম্পন্ন করে। এখনো তার ফলাফল পাওয়া যায় নি। তবে বাঘের সংখ্যা বাড়বে না কমতে পারে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য না করলেও সুন্দরবনের ৩টি অভয়ারণ্য এলাকায় গাছের সাথে ক্যামেরা বেঁধে এর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
বন সংরক্ষক কার্যালয়ের প্রধান সহকারী মন্দিরা বলেন, সর্বশেষ প্রতিবেদন প্রকাশের আগে এখন পর্যন্ত সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১০৬টি। খুলনা সার্কেলের উপ-বন সংরক্ষক মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, বাঘ গনণার প্রতিবেদন প্রকাশিত না হলে কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে আগের চেয়ে এখন অধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে গণনা কার্যক্রম হচ্ছে। বাঘ প্রকল্পের গবেষনা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল¬াহ আল মোজাহিদ বলেন, প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। বাঘের প্রতিবেদন প্রকাশ করবে সরকার। তবে বাঘের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করেন এ গবেষক।
পশ্চিম বন বিভাগীয় কর্মকর্তা মোঃ বশিরুল-আল-মামুন বলেন, বাঘ শুমারী একটা কঠিন কাজ। আধুনিক পদ্ধতি গনণা হচ্ছে। প্রতিবেদন প্রকাশ না হলে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের সূত্র জানায়, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের লোকালয়ে ঢুকে পড়ে গণ পিটুনি, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডরের জলোচ্ছ্বাসে, বার্ধক্যজণিত কারণে এবং চোরা শিকারীদের হাতে মোট ১৭ টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার মারা পড়েছে। এর মধ্যে বন সংলগ্ন মোংলা ও শরণখোলা উপজেলার লোকালয়ে ঢুকে পড়লে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা, স্বাভাবিক মৃত্যু হয় ৪ টি ও সিডরের জলোচ্ছ্বাসে ১ টি বাঘ মারা যায়। আর ৮ টি নিহত হয় চোরা শিকারীদের হাতে। একই সময়ে ১ নারী সহ মোট ২৬ জন বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারায়। এদের মধ্যে ময়না নামের মোংলার জয়মনি এলাকার বৃদ্ধা গ্রাামবাসী ছাড়া সবাই বনজীবি।
সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের বিভাগীয কর্মকর্তা বশিরুল আল মামুন জানান, গত দু’দশকে পশ্চিম বন বিভাগে ১৫ টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিহত হয়। এর মধ্যে লোকালয়ে ঢুকে গণপিটুনির শিকারে নিহত হয় ৮ টি। এছাড়া ২০০১ থেকে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারী পর্যন্ত প্রায় দু’দশকে সেখানে ২৩৪ জন নারী-পুরুষ বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশই বনজীবি ও সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে চিংড়ি রেণু আহরণকারী।
সুন্দরবনের বণ্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা(ডিএফও) মোঃ মদিনুল আহসান বলেন, সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণে সরকার ‘বাংলাদেশ টাইগার এ্যকশন প্ল্যান ২০০৯-১৭’ বাস্তবায়ন করছে। এর অংশ হিসেবে বাঘ রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টি, বাঘের আক্রমণ থেকে বন সংলগ্ন লোকালয়ের জানমাল এবং মানুষের হাত থেকে লোকালয়ে চলে আসা বাঘ রক্ষায় ৮৯ টি টাইগার রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গত ১০ বছরে মানুষের হাতে ৯ টি বাঘ মারা পড়েছে। লোকালয়ে ঢুকে পড়া বাঘ রক্ষায় ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআর) কাজ করছে। বাঘ অচেতনে তাদের ৬ টি বন্দুক রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে সুন্দরবনের রেকর্ড সংখ্যক বাঘ হ্রাসের জন্য অন্যান্য কারণের সাথে বনজীবিরা জোর দিয়ে যোগ করেছেন বনদস্যুদের কথা। দীর্ঘ দিন সুন্দরবনের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থেকে তারা জীবিকা নির্বাহ করছেন। কাছ থেকে দেখেছেন অনেক কিছু। তারা বলছেন, প্রায় দু’যুগ ধরে সুন্দরবনে নিয়ন্ত্রণ করছেন প্রায় ২ ডজন বনদস্যু বাহিনী। একই বনে বাঘের সাথে বসবাস দস্যুদেরও। সুন্দরবন অভ্যন্তরে অবাধ বিচরণ ও রাত্রি যাপনে বাঘের সাথে দেখা হলেই দস্যুরা তাদের হত্যা করে। এর সাথে তারা আন্তর্জাতিক বাজারে সুন্দরবনের বাঘের চাহিদার বিষয়টিকে যোগ করে এতে বনদস্যুদের দস্যুতা বৃত্তির পাশাপাশি অধিক মুনাফা লাভে বাঘ হত্যার বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন। অভিযোগ রয়েছে, বাঘ বিলুপ্তির জন্য দায়ী চোরা শিকারীদের গ্রেফতার ও মামলায় র্যাবসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপরতা দেখালেও বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের তেমন কোন সফলতা নেই।এব্যাপারে শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়ার ষাটোর্দ্ধ আনসার আলী, বনজীবি রাহুল, মান্নান, কওছার, রাশেদুল, আঃ করিম, খালেক গাজী, বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের দাতিনাখালি গ্রামের আমিনুর, নওশাদ, সাত্তার, মুন্সীগঞ্জের দাউদ সানা, মন্তেজ, রাজ্জাক, মুনছুর, রমজাননগর গফুর, সিদ্দিক, জবেদ আলী, সফেদ আলীসহ শতাধিক বনজীবিরা জানান, সুন্দরবন থেকে বাঘ হ্রাসের কারণ হিসেবে গবেষক থেকে শুরু করে বনবিভাগ বা দেশী-বিদেশী সংস্থা যাই বলুক বাঘ হত্যার জন্য বনদস্যুরাই সবচেয়ে বেশী দায়ী।
জানা গেছে, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড সীমান্তে আন্তর্জতিক বাজারে গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল এ সুন্দরবনের বাঘের চামড়া থেকে শুরু করে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের চড়া মূল্য থাকায় মূলত সুন্দরবনে বনদস্যুরা বাঘ হত্যায় মেতে উঠে। সুন্দরবন বনদস্যুদের এক সময়ের অভয়ারণ্য থাকায় ঐসময়ে ব্যাপক সংখ্যক বাঘ শিকার হয় তাদের হাতে। বর্তমানে সরকার সুন্দরবন রক্ষায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে তা বাঘ রক্ষায় ঠিক কি ধরণের প্রভাব ফেলছে তা নির্ভর করবে চলতি ক্যামেরা ট্রাপিংয়ে বাঘ শুমারীতে বাঘের প্রকৃত সংখ্যার উপর। তবে আশার কথা, বাঘ সংরক্ষণে মনিটরিং, টহল ব্যবস্থা জোরদার এবং বনরক্ষীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। কতগুলো বাঘ হত্যা করা হয়েছে বা কতটি মামলা হয়েছে এ ব্যাপারে কোন সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও জনববল সংকটের বিষয়টি স্পষ্ট হয় বন কর্মকর্তাদের বক্তব্যে। সর্বশেষ এমন পরিস্থিতিতে আজ ২৯ জুলাই পালিত হচ্ছে বিশ্ব বাঘ দিবস। -

বাংলাদেশে মৎস্য উৎপাদনে শীর্ষে অবস্থান করছে সাতক্ষীরা
নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ মাছে দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৮ এর মূল্যায়ন, পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা মৎস্য অফিস।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও ভারপ্রপ্ত জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল হান্নান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম সরদার। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল হান্নান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মৎস্য উৎপাদনে শীর্ষে অবস্থান করছে সাতক্ষীরা। বর্তমানে যত্রতত্র অপরিকল্পিত ভাবে মৎস্য চাষ করা হচ্ছে। যেটা ঝুকিপূর্ণ ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে। সকলের স্বার্থে পরিকল্পিতভাবে মৎস্য চাষ করতে হবে। জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জনগোষ্ঠীর পুষ্টির চাহিদা পূরণ, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও দারিদ্র্য বিমোচনের সাতক্ষীরা জেলার গুরুত্ব অনেক বেশি।’তিনি আরো বলেন, ‘এ জেলায় বার্ষিক মৎস্য উৎপাদন হয় ১লক্ষ ৩১ হাজার ৫১৬ মেট্রিক টন। যার মধ্যে জনগণের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৮৯২২৩ মেট্রিক টন মাছ ও চিংড়ি বিদেশে রপ্তানি এবং অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ৪র্থ। চিংড়ি চাষে সাতক্ষীরা দেশের প্রথম স্থানে থাকলেও তা এখন নানাভাবে হুমকির মুখে পড়ছে। এক্ষেত্রে চিংড়ি পোনার ভাইরাস রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।’অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী ও বিশিষ্ট মৎস্য ব্যবসায়ী ডা. আবতাবুজ্জামান, বিশিষ্ট সমাজসেবক ডা. আবুল কালাম বাবলা, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ভারপ্রাপ্ত মো. নুরুল ইসলাম প্রমুখ।অন্যান্যদে মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা তথ্য অফিসার মোজাম্মেল হক, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (সদর) মো.রাশেদুল হক, সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান, বড় বাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আ.স.ম আব্দুর রব ও খুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সভাপতি মো. মোখলেছুর রহমান প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা। -

পোকার আক্রমনে দিশেহারা সাতক্ষীরার বেগুন চাষিরা
নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় বেগুনে ব্যাপক পোকার আক্রমন দেখা দিয়েছে। পোকার আক্রমনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে চাষিরা। হাজার হাজার টাকার কিটনাশক ব্যবহার করেও মিলছে না প্রতিকার। ফলে এই সবজটি চাষ কওে লোকসানে পড়েছেন জেলার অধিকাংশ কৃষক।চাষিদের অভিযোগ, জেলার বিভিন্ন এলাকার বেগুন ক্ষেত পোকার আক্রামনে নষ্ট হয়ে গেলেও কোনো কৃষি কর্মকর্তাকে মাঠে পাওয়া যায়না পরামর্শ দেয়ার জন্য। ফলে কৃষকরা না বুঝে নানা ধরনের কিটনাশক ব্যবহার করে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যাচ্ছেন। না বুঝে কিটনাশক ব্যাবহার করে যেমন মিলছে না কোন প্রতিকার তেমনি এসব কিটনাশক কিনতে খরচও হচ্ছে বেশ।সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘুটেরডাঙ্গী গ্রামের বেগুন চাষি জয়নুল আবেদিন জানান, ৩০ থেকে ৩৫ বছর যাবৎ অন্যান্য সবজি’র পাশাপাশি বেগুন চাষ করে আসছেন। চলতি ২০১৭-১৮ মৌসুমে তিনি ৩ বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। কিন্তু ইতিপূর্বে কখনো এতো পোকার আক্রমন দেখেননি তিনি।তিনি বলেন, ‘গাছে একেকটি বেগুন ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম ওজন হওয়ার পর থেকে পোকায় তা ছিদ্র করে ঝাঝরা করে দিচ্ছে। তাছাড়া ডোগাও কেটে দিচ্ছে পোকায়।’তিনি আরও বলেন, ‘পোকার আক্রমন থেকে রক্ষা পেতে ৩ বিঘা জমিতে ৯০ হাজার টাকার ওষুধ ব্যবহার করেও কোনো প্রতিকার পায়নি। এসব ওষুধের মধ্যে রয়েছে মিমপ্রেক্স কোম্পানীর মানিক, সুরেশ, সেতারা, পাইন, নীল এবং ওয়ান্ডার।’তিনি জানান, ৩ বিঘা জমির বেগুন চাষে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে দেড় লাখ টাকা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত বেচা-কেনা হয়েছে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। যে বেগুন বাজারে প্রতি মন ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি করেন পোকার কারণে তা মাত্র ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে চলতি মৌসুমে ৩ বিঘা জমির বেগুন চাষে প্রায় ১ লাখ টাকা লোকসান হবে বলে আশংক্সক্ষা করছেন তিনি।একই গ্রামের চাষি পিন্টু দাশ জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ২ বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। কিন্ত ক্ষেতের অধিকাংশ বেগুন হলদে রং হয়ে পচেঁ যাচ্ছে। বিভিন্ন প্রকার বালাইনাশক ব্যবহার করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।তিনি বলেন, ‘২ বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করতে এ পর্যন্ত প্রায় ৮৫ থেকে ৯০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। এরমধ্যে কিটনাশকেই খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। তার পরও কোনো প্রতিকার পায়নি।’এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলায় বেগুন চাষ হয়েছে ৯৫৫ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ২৮০ হেক্টর, কলারোয়ায় ১৮৫ হেক্টর, তালায় ১৪৫ হেক্টর, দেবহাটায় ৩০ হেক্টর, কালিগঞ্জে ২৫০ হেক্টর, আশাশুনিতে ৪৫ হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলাতে ২০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ করা হয়েছে।সূত্রটি আরো জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় মাকড়া, নয়ন কাজল, বারি-৩, বারি-৪, ঝুরি ও অন্যান্য স্থানীয় জাতের বেগুন চাষ করা হয়েছে।সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক কৃষিবিদ কাজী আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বেগুনের পোকা আসলে কিটনাশক বা অন্যান্য ওষুধ দিয়ে দমন হয় না। বেগুনের পোকা মারার একমাত্র উপায় হচ্ছে সেক্সফ্রোমন ফাঁদ। কৃষকরা বেগুন ক্ষেতে এই ফাঁদ বসালে দু‘একদিনের মধ্যে পোকা দমন হয়ে যায়। কিন্ত এই ফাঁদের প্রচলন সাতক্ষীরাতে এখনো সেই ভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। তাই কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে এই ফাঁদ ব্যবহারের জন্য।’ -
জেলায় ৮ জামায়াত নেতা-কর্মীসহ গ্রেফতার ৬৮
মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৮ জামায়াত নেতা-কর্মী এবং ৪ মাদক মামলার আসামিসহ বিভিন্ন মামলার ৬৮ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে শনিবার (২৮ জুলাই) সকাল পর্যন্ত জেলার আটটি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ অভিযান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২০পিস ইয়াবা, ৪৯০ বোতল ফেনসিডিল, ১০০ গ্রাম গাঁজা এবং একটি মোটরসাইকেল।
অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ৬ জামায়াতকর্মীসহ ১৬ জন, কলারোয়া থানা থেকে ২০পিস ইয়াবা এবং ১০০ গ্রাম গাঁজাসহ ৮ জন, তালা থানা থেকে ২ জন, কালিগঞ্জ থানা থেকে ৪৯০ বোতল ফেনসিডিলসহ ৯ জন, শ্যামনগর থানা থেকে উপজেলা জামায়াতের সভাপতি মাওলানা ফারুক হোসাইনসহ ১৫ জন, আশাশুনি থানা থেকে ২ জন, দেবহাটা থানা থেকে ২ জন এবং পাটকেলঘাটা থানা থেকে ১ জামায়াতকর্মীসহ ২ জনকে আটক করা হয়।আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান জানান, জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন মামলার ৬৮ আসামিকে আটক করা হয়েছে।
-
সিটি নির্বাচনে তীক্ষ্ণ নজর বিদেশিদের
ঢাকা ব্যুরো : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ তিন সিটির নির্বাচনে তীক্ষ্ণ নজর বিদেশিদের। সরেজমিনে এবার রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন তারা। এ জন্য ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে ১৮ জনের নামে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের কার্ড ইস্যুর জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সঙ্গে বৈঠক করবেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। বিগত দু’টি, আসন্ন তিন সিটি এবং আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।ইসি সূত্রে জানা গেছে, তিন সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য মার্কিন দূতাবাস থেকে আবেদন সংবলিত পাঁচজনের নামের তালিকা নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়। এর মধ্যে রাজশাহীতে সিটি তিনজন, বরিশাল ও সিলেট সিটিতে একজন করে প্রতিনিধি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানানো হয়েছে। দূতাবাসের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন থেকে পাঁচজনের পর্যবেক্ষণের অনুমোদন দেয়া হয়। একইভাবে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের (ডিআই) ৯জন প্রতিনিধি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। এর মধ্যে রাজশাহীতে ৪জন, সিলেটে ৩জন এবং বরিশালে ২জন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যাবেন। ইউএসএইড নামের আরেকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার ৪জন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। বিশেষ করে গত ২৬ জুন গাজীপুর ও গত ১৫ মে খুলনা নির্বাচনের চেয়ে বরং রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে বেশি দৃষ্টি রাখছে বিদেশিরা। এই তিন সিটির মধ্যে রাজশাহীর নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহ বেশি। এই সিটিতে বেশি পর্যবেক্ষণ পাঠানো হচ্ছে।
বিদেশিদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির যুগ্ম সচিব (জনসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামান আরজু ইত্তেফাককে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও দু’টি সংস্থার মোট ১৮জন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন বলে আবেদন করেছে। কমিশনও সংশ্লিষ্টদের আবেদন মঞ্জুর করেছে।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শুরু থেকেই সরব যুক্তরাষ্ট্র। গত ২৬ জুন অনুষ্ঠেয় গাজীপুর সিটি নির্বাচন পরিস্থিতি সরেজমিন দেখতে মার্কিন দূতাবাসের একাধিক টিম শহর ঘুরে বেড়িয়েছে। খুলনা ও সর্বশেষ অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত। জাতীয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে গাজীপুর ও খুলনার নির্বাচনের অনিয়ম তদন্ত করা এবং আসন্ন ৩ সিটির নির্বাচনকে বিতর্কমুক্ত করার তাগিদও দিয়েছিলেন তিনি। গত ১ জুলাই নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে খুলনা ও গাজীপুর নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া বার্নিকাটের উদ্বেগেরও জবাব দেন নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম। ওই দুই সিটিতে অনিয়মের ব্যাপারে তথ্য প্রমাণ দেয়ার জন্য মার্কিন রাষ্ট্রদূতের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে- যুক্তরাজ্যের তরফে দেশটির ঢাকাস্থ হাইকমিশনের রাজনৈতিক বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার নেতৃত্বে ইলেকশন অবজার্ভার টিম গঠন করা হয়েছে। তারা মাঠে যাচ্ছেন। বাকিরা ঢাকায় বসে প্রযুক্তি, মিডিয়া এবং নিজস্ব প্রতিনিধির মাধ্যমে ভোটের মাঠের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন। নির্বাচন পূর্ব পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে যুক্তরাজ্যের একটি টিম গত ২৪ জুলাই থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত বরিশালে থাকার কথা রয়েছে। এরপর ওই টিমটি সিলেট সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যাওয়ার কথা। এ ছাড়া শুরু থেকে স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন গভীর পর্যবেক্ষণে রেখেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। এ ছাড়াও জাপান, কানাডা, জার্মানির কূটনীতিকরাও নির্বাচন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানা গেছে।
-
প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী পরীক্ষা শুরু ১৮ নভেম্বর
ঢাকা ব্যুরো : প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা-২০১৮ শুরু হবে আগামী ১৮ নভেম্বর এবং তা শেষ হবে ২৬ নভেম্বর।প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আজ বুধবার ‘প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ২০১৮’-এর জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।সভায় সমাপনী পরীক্ষা শুরুর সময় পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরীক্ষা বেলা ১১টার পরিবর্তে সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয়ে শেষ হবে বেলা ১টায়। তবে, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিটের পরিবর্তে ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে।
এছাড়াও সরকারি ছুটি এবং খ্রিষ্টীয় ধর্মাবলম্বী সেভেন্থ-ডে অ্যাডভেন্টিস্ট সম্প্রদায়ভুক্ত পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সময়সূচিতে শনিবার পরীক্ষা রাখা হয়নি। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এসব কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, আগে এক উপজেলার খাতা অন্য উপজেলার শিক্ষক দ্বারা মূল্যায়ন করা হলেও এ বছর নিজ নিজ উপজেলায় পরীক্ষার্থীদের খাতা মূল্যায়ন করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সদস্য সচিব থাকবেন।কেন্দ্রীয়সহ বিভিন্ন পর্যায়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আসিফ-উজ-জামান, অতিরিক্ত সচিব ড. এ এফ এম মনজুর কাদির ও অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) হাসিবুল আলম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল, এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা, নেপের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. ইউসুফ আলী, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা পরীবিক্ষণ ইউনিটের মহাপরিচালক এ.কে.এম আনোয়ার হোসেন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. মাহামুদ-উল-হক সভায় উপস্থিত ছিলেন। বাসস
-
বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি: বিন্দুমাত্র ছাড় দিবে না ঢাবি শিক্ষক সমিতি
ঢাকা ব্যুরো : স্বাধীনতার ৪৭ বছরে দাঁড়িয়ে যখন জাতির জনককে আঘাত করা হয়, তখন এ দেশের প্রতি ইঞ্চি জায়গায় আঘাত করা হয়, দেশের মানুষের প্রতিটি ধমনীতে আঘাত করা হয়। বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ডুটা) বিন্দুমাত্র ছাড় দিবে না।বুধবার বেলা বারোটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন প্রাঙ্গণে এক মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (ডুটা) এ এস এম মাকসুদ কামাল এ সব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করার প্রতিবাদে শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এই মানববন্ধন হয়।
গত ১৯ জুলাই নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকবৃন্দের এক সংহতি সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আকমল হোসেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তি করে বক্তব্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। শিক্ষক সমিতি ওই শিক্ষকের বক্তব্যের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে মঙ্গলবার একটি বিবৃতি দেয়। বিবৃতিতে তারা অধ্যাপক আকমল হোসেনের বক্তব্যের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বান জানান। এর জবাবে অধ্যাপক আকমল হোসেন প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তার বক্তব্যের ব্যাখা দেন।
অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, আমরা আশঙ্কা করেছি কোটা আন্দোলন এ দেশের ছাত্রদের অধিকারের আন্দোলন নয়। কোটা আন্দোলন হলো নির্বাচনের বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমতা নেওয়া যায় তার আন্দোলন। এ আশঙ্কা আমরা সেদিন থেকে করেছিলাম। আর সেদিনকার হাততালি থেকে সে আশঙ্কা প্রমাণিত হলো।
তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনের ভেতর জামায়াত-বিএনপি ঢুকেছে। আয়োজকরা অধ্যাপক আকমলের বক্তব্যের পরে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া করেনি। অধ্যাপক আকমল হোসেন যে অপরাধে অপরাধী আয়োজকরাও একই অপরাধে অপরাধী। আয়োজকরা তাদের বসিয়ে রেখে হাত তালি দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এই হাততালি ছাত্র শিবির বিএনপি-ছাত্রদলের হাততালি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের প্রতি তিনি কটূক্তিকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, নিঃশর্ত ক্ষমা যদি চান এবং যদি বলেন ভবিষ্যতে আর এই ধরনের কথা বলবেন না তাহলে শিক্ষক সমিতি বিবেচনা করে দেখবে ভবিষ্যতে কোনো কর্মসূচি দিবে কিনা।
৩৭ বছর শিক্ষকতা জীবনে অধ্যাপক আকমল হোসেন কি পড়িয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সেটা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়ে মাকসুদ কামাল বলেন, অধ্যাপক আকমল ৩৭ বছর শ্রেণিকক্ষে পড়িয়েছেন। তিনি কি ৩৭ বছর এই বিষয়গুলো পড়িয়েছেন? মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে তিনি ৩৭ বছর শ্রেণিকক্ষে বিভ্রান্তকর তথ্য পড়িয়েছেন সেটিও খতিয়ে দেখার বিষয় আজকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলব ৩৭ বছর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে বাংলাদেশের ইতিহাস পড়াতে গিয়ে তিনি কি পড়িয়েছেন, সেখানে সিলেবাস কি আছে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় চীনপন্থী বুদ্ধিজীবীরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লাউঞ্জে বসে বসে মুক্তিযুদ্ধের সমালোচনা করছিল অভিযোগ করে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, বামপন্থী বুদ্ধিজীবীরা বলছিল, ভোটের বাক্সে লাথি মার বাংলাদেশ কায়েম কর। একটি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সৃষ্টি করার যে পথ বঙ্গবন্ধু উন্মোচন করতে চাচ্ছিলেন সেই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার প্রচেষ্টা তারা তখন করেছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় বলেছিল ‘মুক্তিযুদ্ধ হলো দুই কুকুরের কামড়া কামড়ি; সুতরাং আমরা এই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করব না।’ স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে তারা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ দাঁড়িয়ে বলে ‘তার পিতা কি মুক্তিযুদ্ধ করেছে?।’ এই অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি চুপ থাকতে পারে না। আমরা বিবৃতিতে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলেছি। সহকর্মীরা আইনের মাধ্যমে জিনিসটির সুরাহার কথা বলেছেন। আমরা বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি দিব আলোচনা করে।
অধ্যাপক মাকসদু কামাল বলেন, ২০০২ সালের ৮ জানুয়ারি মতিউর রহমান নিজামী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিল মুক্তিযুদ্ধ কোটা বাতিল হবে। ২০০৩ সালে দেলওয়ার হোসেন সাঈদি বলেছিল মুক্তিযুদ্ধ কোটা বাদ দিতে হবে। তারা যে বক্তব্য রেখেছে সেই বিষয় নিয়ে আমাদের বুদ্ধিদীপ্ত তরুণরা যখন মাঠে নেমেছে শিক্ষক সমিতি তখন যুগের চাহিদার কথা বিবেচনা করে সংহতি প্রকাশ করেছে। মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, কোটা আন্দোলনে যদি কোনো বাধা আসে প্রতিরোধ করতে হবে। যখন আজ লন্ডন থেকে কিভাবে কোটা আন্দোলনকে উসকে দিয়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা যায়। তখন কোটা আন্দোলন কোন দিকে সেটা বোঝার আমাদের অবকাশ নাই। তিনি ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনকে কেউ যেন কোনো উসকানিতে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা না করেন তার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই ক্যাম্পাস হলো এই জাতির বিবেক। এখানে দাঁড়িয়ে এমন কিছু হবে না যাতে আমাদের মস্তক অবনত হয়ে যায়।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশে এই সময়ে এই ধরনের বক্তব্য রাখার কেউ সাহস দেখায়, তাহলে আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এই অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে আমরা যাব না। আমাদের দেশ উন্নত হচ্ছে সেখানে যেন কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে, পিছিয়ে নিয়ে যেতে না পারে এবং বিভিন্নভাবে আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত না করতে পারে তার ব্যাপারে শিক্ষকমণ্ডলী সচেষ্ট থাকবে।
ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নিজামুল হক ভুইয়া, সমাজবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীন, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক আ জ ম শফিউল আলম ভুঁইয়া, সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিতা রেজওয়ানা রহমান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মু. আব্দুর রশীদ, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন প্রমুখ।
-
‘দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়তে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে হবে’
ঢাকা ব্যুরো : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তোরণের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবং ক্ষুধাও দারিদ্রমুক্ত দেশ প্রতিষ্ঠা করতে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন সফল পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্রাজুয়েশন লাভ করেছে, তার ধারবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন ‘এই ধারবাহিকতা বজায় রাখার জন্য এবং ক্ষুধাও দারিদ্র মুক্ত দেশ গড়তে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিক্ষিত জনগোষ্ঠী। এই শিক্ষিত জনগোষ্ঠী সৃষ্টি করাই আমাদের লক্ষ্য।’
আজ বুধবার দুপুরে তাঁর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণ পদক-২০১৭’ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ১ম স্থান অধিকারকারী ১৬৩ জন শিক্ষার্থীর মাঝে স্বর্ণপদক বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউজিসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন। ইউজিসি’র সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান প্রিয়া এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সজন ধর স্বর্নপদক প্রাপ্তদের পক্ষে নিজস্ব অনুভুতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য হিসেবে অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম এবং ড. সৌমিত্র শেখর তাঁদের রচিত ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য’ শীর্ষক গ্রন্থটিও প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক, পদস্থ সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ,জাতীয় অধ্যাপক বৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, শিক্ষক, গবেষক এবং পদক প্রাপ্ত মেধাবী শিক্ষার্থীবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
-
ফাইভ-জি চালুতে বিশ্বের প্রথম দিকেই থাকবে বাংলাদেশ: জয়
ঢাকা ব্যুরো : বাংলাদেশে পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক ফাইভ-জি এর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। বুধবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ফাইভ-জির যাত্রা শুরু করেন তিনি।সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ফাইভ-জি চালুর ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রথম শ্রেণির দেশগুলোর কাতারে থাকবে বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ সরকার আগামী মেয়াদে ক্ষমতায় এলে ফাইভ-জি এর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম থেকে বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রথম হবে বাংলাদেশ-এটি আমার স্বপ্ন। অন্ধকারকে পেছনে ফেলে আলোকে জয় করেছে বাংলাদেশ। সব জল্পনা কল্পনার পর অবশেষে দেশে পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক ফাইভ-জি আসছে।
ফাইভ-জি সেবার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, বিটিআরসির সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার, রবির এমডি ও সিইও মাহতাব উদ্দিন, হুয়াওয়ে বাংলাদেশের সিইও ঝ্যাং জেনজুন।
তবে ফাইভ-জি সেবা এখনই ভোক্তা পর্যায়ে ব্যবহার করা যাবে না। আজকের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফাইভ-জির পরীক্ষামূলক সংযোগ চালু হলো। এই সংযোগ শুধু ফাইভ-জি কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করতে পারবে।
-
জেলায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৭ জামায়াত-শিবিরকর্মীসহ আটক ৭২
মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয় ৭ জামায়াত-শিবিরকর্মীসহ ৭২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলার আট থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।গত মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে (২৫ জুলাই) সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২০ পিস ইয়াবা, ১০০ গ্রাম গাঁজা এবং বেশ কিছু জিহাদী বই।অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ২০পিস ইয়াবা, বেশ কিছু জিহাদী বই ও প্রচারপত্রসহ ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে যার মধ্যে ৪ জন জামায়াত-শিবিরকর্মী। কলারোয়া থানা থেকে ১০০গ্রাম গাঁজাসহ আটক করা হয়েছে ৭ জনকে। ৪ জামায়াত-শিবিরকর্মীসহ মোট ৮ জনকে আটক করা হয়েছে তালা থানা থেকে। এ থানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৬টি জিহাদী বই। এছাড়াও কালিগঞ্জ থানা থেকে ৯ জন, শ্যামনগর থানা থেকে ১১ জন, আশাশুনি থানা থেকে ১ জামায়াতকর্মীসহ ৮ জন, দেবহাটা থানা থেকে ৩জন এবং পাটকেলঘাটা থানা থেকে ২ জনকে আটক করা হয়েছে।আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত জেলার সবকটি থানায় অভিযান চালিয়ে বেশকিছু জিহাদী বই ও প্রচারপত্র সহ ৭ জামায়াত-শিবিরকর্মীসহ মোট ৭২ জনকে আটক করা হয়েছে। -
হাসপাতালে প্রকাশ্যে মূল্য তালিকা টানাতে হাইকোর্টের নির্দেশ
ঢাকা ব্যুরো : বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ল্যাবরেটরি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মূল্য তালিকা এবং ফি পাবলিক প্লেসে ১৫ দিনের মধ্যে আইন অনুসারে প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।আদেশে বলা হয়েছে, দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ অনুসারে নীতিমালা তৈরি এবং বাস্তবায়নের জন্য ৬০ দিনের মধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে হবে।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো.খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টে বেঞ্চ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন।
স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ড. বশির আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ। হিউম্যান রাইটস লইয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের পক্ষে কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলম এ রিট দায়ের করেন।
রুলে চলমান হাসপাতাল এবং ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স অনুমোদন, তাদের সেবার বিষয় তদারকি এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ অনুসারে নীতিমালা তৈরির কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, সব জেলা সদরের হাসপাতালে আইসিউ/সিসিইউ স্থাপনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
মাসুদ হাসান চৌধুরী বলেন, অর্ডিন্যান্স অনুসারে কেন বেসরকারি ক্লিনিক মনিটর করা হবে না, কেন নীতিমালা তৈরি করা হবে না, এই মর্মে বিবাদীদের প্রতি রুল জারি করেছেন আদালত। একই সঙ্গে এই রুলস তৈরির জন্য একটি কমিটি গঠন করতে বলেছেন। ৬০ দিনের মধ্যে সরকার এ কমিটি গঠন করবে নীতিমালা তৈরির জন্য।
এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ৭ অক্টোবর দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও র্যাবের মহাপরিচালককে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
-
ওসিই মাহমুদুর রহমানকে সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দেন : মির্জা ফখরুল
ঢাকা ব্যুরো : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পুলিশের সহায়তায় কুস্টিয়ার আদালত প্রাঙ্গণে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করে বলেছেন, মাহমুদুর রহমান হামলার কথা বুঝতে পেরে কোর্টে অবস্থান নেন। পরে কোর্টের ওসির কথায় তিনি আদালত থেকে বের হয়ে আসেন। কোর্টের ওসি জোর করে মাহমুদুর রহমানকে বের করে সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দেন।তিনি বলেন, মাহমুদুর রহমান হামলার পর সেখানে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগও পাননি। কিন্তু সরকারের উচিত ছিল তাকে পুলিশের সহযোগিতায় চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় আসার ব্যবস্থা করে দেয়া। সরকার সেটি করেনি। এ হামলার ঘটনায় ধিক্কার জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা দ্রুত হামলাকারীদের চিহ্নিত করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার দাবি জানাচ্ছি। হামলার মাধ্যমে আবারও প্রমাণ হলো দেশের প্রতিটি সেক্টর সরকার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। একমাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। না হলে শুধু মাহমুদুর রহমান নয়, কোনো নাগরিক আদালত বা কোথাও নিরাপদে থাকবে না।
আজ রবিবার সন্ধ্যায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল এসব কথা বলেন। এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু, ফজলুল হক মিলন, শ্যামা ওবায়েদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন এ্যানী, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ফখরুল বলেন, মাহমুদুর রহমান হামলার আশঙ্কা বুঝতে পারার পর তিনি আদালতের কাছে নিরাপত্তা চাইলে আদালত থানার ওসিকে ডাকেন। আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ মাহমুদুর রহমানকে নিরাপত্তা দিতে এগিয়ে আসেনি। এমনকি উচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা চাওয়ার পরও তাকে সহযোগিতা করা হয়নি। মাহমুদুর রহমান আদালতে যাওয়ার পর সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে এলাকা ঘিরে রাখে। মাহমুদুর রহমান কোর্টের ওসির কথায় আদালত থেকে বের হওয়ার পর চারদিক থেকে তার ওপর হামলা করা হয়। ফলে তার মাথা ও গালে আঘাত লাগে, তিনি রক্তাক্ত হন। একজন জনপ্রিয় সম্পাদকের ওপর এভাবে নৃশংস হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। একই সঙ্গে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রীর ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ায় মামলা হয়। ওই মামলায় জামিন পেতে কুষ্টিয়া আদালতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই মামলায় আদালত আজ তাকে জামিন দিয়েছেন।
-
শর্ত মেনে নয়, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে : ওবায়দুল কাদের
ঢাকা ব্যুরো : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোনো শর্ত মেনে আগামী নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। এ নিয়ে কারো সঙ্গে কোনো সংলাপের প্রয়োজন নেই। দেশে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে সংলাপ করতে হবে।রবিবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, অক্টোবরের যে কোনো সময়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে। সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলো নিয়েই এ সরকার গঠন হবে। অন্য কাউকে রাখার কোনো সুযোগ নেই।
বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে দলটির অভিযোগের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সভা-সমাবেশ করছে, আগামীতেও রাজনৈতিক দলগুলো সভা-সমাবেশ করবে। এ ব্যাপারে কেউ অনুমতি চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।
আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নানা ধরনের ‘চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র’ করছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘ইস্যু খুঁজেত গিয়ে কখনো কোটা আন্দোলন, কখনো লর্ড কারলাইলকে ভারতে এনে দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি ঘটানোর চেষ্টা- এরকম অনেক কিছু করা হয়েছে। এখনো চক্রান্তমূলক পরিকল্পনার ছক তৈরি করছে অনেকে বিদেশ থেকে…।’
-
দেশপ্রেমিক নেতৃত্বের ওপর আস্থাশীল হতে সেনাবাহিনীর প্রতি নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
ঢাকা ব্যুরো : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসারদের দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রেখে উন্নয়নের ধারবাহিকতা রক্ষায় যোগ্য, দক্ষ, কর্মক্ষম এবং দেশপ্রেমিক নেতৃত্বের ওপর আস্থাশীল হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।তিনি বলেন, একটি সুশৃঙ্খল এবং শক্তিশালী সেনাবাহিনী দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং সুসংহতকরণে গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। যারা সুশিক্ষিত, কর্মক্ষম, সচেতন, বুদ্ধিমান এবং সর্বোপরি গণতন্ত্রকে সুসংহত করার জন্য দৃঢ় প্রত্যয়ের অধিকারী এরূপ যোগ্য অফিসারদের কাছে নেতৃত্ব ন্যস্ত করতে হবে।
আজ রবিবার সকালে ঢাকা সেনানিবাসে ‘সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ ২০১৮’এ প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আদর্শগত ভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সামরিক বাহিনীর জন্য অত্যন্ত মৌলিক এবং মুখ্য বিষয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের সবসময় লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব ন্যস্ত হয় তাঁদেরই হাতে যাঁরা দেশপ্রেমিক ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী।’
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রতিরক্ষা সচিব আখতার হোসেন ভূইয়া, সশস্রবাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেলারেল মাহফুজুর রহমান এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল এবং মেজর জেনারেল পদ মর্যাদার সেনা কর্মকর্তাগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
-

এইচএসসি আলিপুর আদর্শ মহিলা কলেজের সাফল্য
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: সাতক্ষীরা সদরের আলিপুর আদর্শ মহিলা কলেজের এইচএসসি পরীক্ষা-২০১৮ এর সাফল্য। মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৩ জন। অনুপস্থিত ০১জন। পাশের সংখ্যা ১৮ জন। এর মধ্যে এ গ্রেড ৪ জন, এ মাইনাস ৫ জন, বি গ্রেড ৭ জন, সি গ্রেড পেয়েছে ২ জন। যশোর শিক্ষা বোর্ডের পাশের হার ৬৪.০৪% হলেও অত্র প্রতিষ্ঠানের পাশের হার ৭৮.২৬%। কলেজের এই সাফল্য অত্র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, সংশ্লিষ্ট সকল প্রভাষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ এবং এলাকাবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষ মোঃ মিজানুর রহমান।