Blog

  • এবার গ্রেপ্তার এসপি গোল্ডেন লাইনের মালিক

    ঢাকা ব্যুরো : গত ৩রা আগস্ট রাজধানীর মগবাজার ওয়্যারলেস গেটের কাছে মিনিবাসের ধাক্কায় নিহত হয়েছিলেন মোটরসাইকেল আরোহী সাইফুল। ‘এসপি গোল্ডেন লাইন’ পরিবহনের একটি মিনিবাসের ধাক্কায় তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পরদিন তার বাবা বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪ জনকে। বর্তমানে ২ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন বাস চালক। এবার গ্রেপ্তার করা হল এসপি গোল্ডেন লাইনের মালিক জুনায়েদ হোসেন লস্করক (৪৬)।
    গতকাল রাতে সাতক্ষীরা থেকে আটকের পর আজ বিকেলে রমনা থানায় হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমরানুল হাসান।

  • সাতক্ষীরায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৩ জামায়াতকর্মীসহ আটক ৫৬

    সাতক্ষীরায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৩ জামায়াতকর্মীসহ আটক ৫৬

    মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৩ জামায়াতকর্মীসহ ৫৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গত শনিবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে রবিবার (৬ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত জেলার ৮টি থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

    জেলাব্যাপি চালানো পুলিশের এই বিশেষ অভিযান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪৭ পিস ইয়াবা এবং ৫০ বোতল ফেন্সিডিল। অভিযান শেষে তিনটি মাদক মামলা দায়ের করা হয়েছে।

    পুলিশের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে পরিচালিত এ অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ১ জামায়াতকর্মীসহ ১৩ জন, কলারোয়া থানা থেকে ১ জামায়াতকর্মীসহ ৮ জন, তালা থানা থেকে ১ জামায়াতকর্মীসহ ৩ জন, কালিগঞ্জ থানা থেকে ৭জন, শ্যামনগর থানা থেকে ১২ জন, আশাশুনি থানা থেকে ৭ জন, দেবহাটা থানা থেকে ৪ জন এবং পাটকেলঘাটা থানা থেকে ২ জনকে আটক করা হয়েছে।

    আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান জানান, জেলা পুলিশের মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান থেকে মোট ৫৬ জনকে আটক করা হয়েছে।

  • তামিম সাকিব দৃড়তায় সমতায় ফিরল বাংলাদেশ

    ক্রীড়া ডেস্ক: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের ফিফটি বৃথা গেল না। তাদের দারুণ ব্যাটিংয়ের পর বল হাতেও দুরন্ত বাংলাদেশ। তাতে ফ্লোরিডায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১২ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে টিকে থাকল তারা। দুই ম্যাচ শেষে সিরিজে সমতা ১-১ এ। সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে সোমবার একই ভেন্যুতে মুখোমুখি হবে দুই দল।

    দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ৫ উইকেটে করে ১৭১ রান। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯ উইকেটে ১৫৯ রানে থামে।

    ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৭২ রানের লক্ষ্য দিয়ে শুরুটা দারুণ করে বাংলাদেশ। মোস্তাফিজুর রহমান তার প্রথম ২ ওভারে এভিন লুইস (১) ও আন্দ্রে রাসেলকে (১৭) সাজঘরে পাঠান। অথচ প্রথম দুই বল ওয়াইড দেন এই বাঁহাতি পেসার। ১.২ ওভারে লুইসকে এলবিডাব্লিউ করে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজ। নিজের দ্বিতীয় ওভারে রাসেলকে পেছনে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানান তিনি।

    ৬ চার ও ৪ ছয়ে সাজানো ছিল তামিমের ম্যাচসেরা ইনিংসবিপজ্জনক ব্যাটসম্যান মারলন স্যামুয়েলসকে ১০ রানে লিটন দাসের ক্যাচ বানান সাকিব। দিনেশ রামদিনকে দাঁড়াতে দেননি রুবেল হোসেন। মাত্র ৫ রানে ক্যারিবিয়ান উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানকে এলবিডাব্লিউ করেন তিনি।

    ৫৮ রানে প্রতিপক্ষের ৪ উইকেট নিয়ে স্বস্তিতে থাকা বাংলাদেশের মুখের হাসি কেড়ে নেন আন্দ্রে ফ্লেচার। রভম্যান পাওয়েলকে নিয়ে এই ওপেনার শক্ত জুটি গড়ার পথে ছিলেন। দুজনে ছিলেন আগ্রাসী। ৩৮ রানে আরিফুল হকের হাতে জীবন পান ফ্লেচার। অবশেষে ১৫তম ওভারে তাকে সাকিবের ক্যাচ বানান নাজমুল ইসলাম। ৩৮ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে ৪৩ রান করেন ফ্লেচার।

    তামিমের পর দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন সাকিবদুই ওভার পর কার্লোস ব্র্যাথওয়েট ১১ রানে সাকিবের শিকার হন লিটনের ক্যাচ হয়ে। তবুও পাওয়েলের ব্যাটে লড়াইয়ে টিকে ছিল ক্যারিবিয়ানরা। নিজের শেষ ওভারে এই বিপজ্জনক ব্যাটসম্যানকে মুশফিকের ক্যাচ বানান মোস্তাফিজুর রহমান। ১৮.৩ ওভারে পাওয়েল ৪৩ রানে আউট হন ৩৪ বলে ৩ চার ও ২ ছয় মেরে। এই ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি উইন্ডিজ।

    শেষ ওভারে দলটির প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। এই কঠিন মুহূর্তে বাংলাদেশকে জেতানোর দায়িত্ব পান নাজমুল। তার দারুণ ঘূর্ণিতে ওই ওভারে মাত্র ২ রান করে উইন্ডিজ। শুধু তাই নয়, নাজমুল নেন ২ উইকেট। তৃতীয় বলে অ্যাশলে নার্সকে (১৬) ক্যাচ বানান আরিফুলের। ২ রানে বোল্ড হন কিমো পল। তাতে টানা ৫ ম্যাচ হারার পর টি-টোয়েন্টিতে প্রথম জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ।

    শুরুতেই ২ উইকেট তুলে নিলেন মোস্তাফিজতিনটি করে উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার নাজমুল ও মোস্তাফিজ। দুজনের মধ্যে বেশ খরুচে ছিলেন মোস্তাফিজ, ৪ ওভারে ৫০ রান দেন তিনি। আর নাজমুলের ৪ ওভারে ক্যারিবিয়ানরা করেছে ২৮ রান। সাকিব পান ২ উইকেট। ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দেন অধিনায়ক।

    তার আগে বাংলাদেশের টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান যখন ব্যর্থ হন, তখন ক্রিজে দাঁড়িয়ে যান তামিম ও সাকিব। তাদের ৯০ রানের জুটি বড় স্কোরের ভিত গড়ে দেয়। ৪৪ বলে ইনিংস সেরা ৭৪ রান করে ম্যাচসেরা হন তামিম। সাকিব করেন ৬০ রান।

    ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন পল ও নার্স।

  • আন্দোলনে উস্কানির দায়ে ২৯ ব্যক্তি ও নিউজপোর্টালের বিরুদ্ধে মামলা

    ডেস্ক রিপোর্ট: নিরাপদ সড়ক দাবির চলমান আন্দোলনে উস্কানি দেয়ার অভিযোগে ২৯ ব্যক্তি ও নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর রমনা থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় এ মামলা করা হয়।

    ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

    তিনি জানান, ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ইয়াসিন মিয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

    রমনা থানার ওসি কাজী মাইনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা এ মামলায় (মামলা নং-১) অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোর মধ্যে জুম বাংলা নিউজ পোর্টাল, বিএনপি সমর্থক গোষ্ঠী কেন্দ্রীয় সংসদ, অ্যাক্সিডেন্ট নিউজ, বাংলামেইল৭১, বাঁশেরকেল্লা, ফাইট ফর সারভাইভার্স রাইট, ফাঁকিবাজ লিংক, আন্দোলন নিউজ এবং সনাক্ত করা ব্যক্তিদের আইডিগুলোর মধ্যে Ray han, Ariful islam Jihad, Habibur Rahman, Sabin Rahman Nomun, Saidul Apu, সাইদুল ইসলাম তহিদ, Gazi Abu Yousah, Nasif Wahid Faizal ও নুরুল হক রয়েছেন। এছাড়া কয়েকটি টুইটার ও ইউটিউব লিংকও রয়েছে বলে জানান রমনা থানার এই কর্মকর্তা।

    মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি ও নিউজ পোর্টালগুলো উস্কানিমূলক ছবি, ভিডিও ও লেখা পোস্ট করে ছাত্রদের আন্দোলন উসকে দিয়েছে। এজন্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ও ব্লগ ব্যবহার করা হয়েছে।

    উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। এর প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদে রাজপথে নেমে আসেন শিক্ষার্থীরা। তারা ৯ দফা দাবিতে প্রত্যেক দিন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং গাড়ি ও চালকের লাইসেন্স পরীক্ষা করছেন। এতে রাজধানী কার্যত অচল হয়ে পড়ে।

  • শিক্ষার্থী আটকের গুজব ‘ফেসবুকে তৈরি’ : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

    ঢাকা ব্যুরো : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে আজ ৪ জন ছাত্রীকে আটকে রাখা এবং একজন ছাত্রের চোখ উঠানো হয়েছে বলে ফেসবুকে যে প্রচারণা চালানো হয়েছে তা ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’

    একটি স্বার্থান্বেষী মহল এই গুজব ছড়িয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ বিকেলে গণমাধ্যমে বলেন, ‘এই প্রচারণা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এটি ফেসবুক তৈরিকৃত একটি প্রচারণা।’

    তিনি বলেন, এই গুজব ছড়ানোর ফলে একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী পুলিশ বাহিনী আন্দোলনরত শিক্ষার্থী এবং সাংবাদিকদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় এবং ওই কার্যালয়ের প্রতিটি কক্ষ তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখা হয় ‘কিন্তু কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়নি।’

    কামাল বলেন, ‘গত সপ্তাহে রাজধানীর রেডিসন হোটেলের সামনে একটি বাস দুর্ঘটনায় দুঃখজনকভাবে দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে শিক্ষার্থীদের বর্তমান আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য একটি স্বার্থান্বেষী মহল এই গুজব ছড়িয়েছে।’

    মন্ত্রী বলেন, এই গুজব ছড়ানোর পর শিক্ষার্থীদের একটি দল আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে হামলা চালায়। তিনি বলেন, স্বার্থান্বেষী মহল ফেসবুকে দু’টি ভুয়া ভিডিও প্রচার করেছিল।

  • আজ থেকে নাইট কোচও বন্ধের সিদ্ধান্ত মালিক সমিতির

    ঢাকা ব্যুরো : স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের কারণে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় আজ শনিবার থেকে নাইট কোচও চালানো বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। আজ শনিবার বিকেলে সমিতির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

    মালিক সমিতি জানায়, ‘সমিতি থেকে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়া হয়নি। তবে মালিকরা আলাদা আলাদাভাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা বলেছে, রাতের বেলাও বাস ছাড়বে না।’ আজ পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। তাই শ্রমিক ও মালিকদের মিলিত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আজ থেকে নাইট কোচ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

    এর আগে নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে শুক্রবার থেকেই দেশের বিভিন্ন রুটে দূরপাল্লার বাস বন্ধ করে দেন পরিবহন শ্রমিকরা। তবে অনেক জেলা থেকে শুক্রবার রাতে নাইট কোচ ছাড়া হচ্ছিল।

    এর মধ্যে নতুন সিদ্ধান্তের ফলে শনিবার রাত থেকে দূরপাল্লার আর কোনো গাড়ি চলবে না বলে জানা গেছে।

  • মোবাইল ফোনে ফোরজি ও থ্রিজি বন্ধ, চলবে টুজি

    ঢাকা ব্যুরো : মোবাইল ইন্টারনেটের ফোর-জি ও থ্রি-জি সেবা ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। তবে এসময়ে মোবাইলফোনে টু-জি ইন্টারনেট সেবা চলবে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) আজ শনিবার বিকাল সাড়ে ৪ টায় চারটি মোবাইল ফোন অপারেটরকে এ নির্দেশ দেয়। মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টা থেকে এটা কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এদিকে, আজ রাত ৮ টার দিকে চারটি মোবাইল ফোন অপারেটর তাদের ইন্টারনেট সেবার গতি নামিয়ে টু-জি’তে আনে। অনেকই বলেছেন, কোন কোন অপারেটরের সেবা একেরবারই বন্ধ হয়েছে। এদিকে, সন্ধ্যায় বিটিআরসির উর্দ্ধতন এক কর্মকর্তা ইত্তেফাককে বলেন, সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত বিটিআরসির সংশি­ষ্ট বিভাগকে অনেক নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ কারণে মোবাইল ইন্টারনেট পেতে সমস্যা হতে পারে, সেটা পুরোপুরি বন্ধের মতো না।
  • সাতক্ষীরায় সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষমেলার উদ্বোধন

    নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় সপ্তাহব্যাপি বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হয়েছে। শনিবার সকালে এ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধন উপলক্ষে জেলা অফিসার্স ক্লাব থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান-প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‌্যালি শেষে শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে আলোচনা সভায় অনুষ্ঠিত হয়।
    আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার মাহমুদুর রহমান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সপ্তাহব্যাপী এ বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বৃক্ষ নিধনের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি বৃষ্টিপাত কমসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আমাদের বেশি-বেশি বৃক্ষরোপন করতে হবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে হলে বৃক্ষরোপনের কোন বিকল্প নেই।’

    অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা অমিতা মন্ডল, জেলা কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম প্রমুখ।

    এবছর বৃক্ষমেলার প্রতিপাদ্য ‘সবুজে বাঁচি, সবুজ বাাঁচাই, নগর-প্রাণ-প্রকৃতি সাজাই’। এবারের এ বৃক্ষ মেলায় ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের শতাধিক ষ্টল স্থান পেয়েছে।

  • নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে পিছিয়ে নেই সাতক্ষীরা

    মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): নিরাপদ সড়কের দাবিতে সারাদেশের ন্যায় সাতক্ষীরায়ও মানববন্ধন পালিত হয়েছে। শনিবার সকালে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ দাবিতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

    নিরাপদ সড়কের দাবিতে সাতক্ষীরার বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে একটি দীর্ঘ র‌্যালি বের করে। র‌্যালিতে সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, সাতক্ষীরা সিটি কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করে।
    র‌্যালি শেষে তারা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সমনে অবস্থান নেয় এবং বিভিন্ন স্লোগানে এলাকা মুখরিত করে তোলে। শিক্ষার্থীরা নয় দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান।

    এ সময় শিক্ষার্থীরা মুহুর্মুহু স্লোগানে তারা বলতে থাকে ‘বেপোরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে’, ‘প্রত্যেক সড়ক দূর্ঘটনা প্রবণ এলাকায় স্পিড ব্রেকার দিকে হবে’, ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ করতে হবে’, ‘অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না’, শিক্ষার্থীদের গাড়িতে নিতে হবে, সারাদেশে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যাবস্থা করতে হবে।’

    পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মো. ইফতেখার হোসেন ও পুলিশ সুপার মো. সাজ্জাদুর রহমান।

    জেলা প্রশাসক ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘তোমাদের দাবি দাওয়া ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী মেনে নিয়েছেন। এছাড়া যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে তোমরা আমার সাথে দেখা করে বললে আমি তোমাদের দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপাওে সর্বাত্মক সহযোগীতা করব।

    পুলিশ সুপার বলেন, ‘সাতক্ষীরায় বিভিন্ন স্কুল কলেজের সামনে স্প্রিড ব্রেকার ও একজন করে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগের ব্যাবস্থা করতে ইতিমধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মানববন্ধনে তিনি ছাত্রছাত্রীদের পানি পান করান।

    জেলাপ্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের প্রতিশ্রুতির পর শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যান।

  • শ্যামনগরের চাঞ্চল্যকর ২২ হরিণ শিকার মামলা’র রীটের শুনানী দু’সপ্তাহের জন্য মুলতবী

    ঢাকা ব্যুরো : মহামান্য হাইকোর্ট শ্যামনগরের চাঞ্চল্যকর ২২ হরিণ শিকার মামলার রীটের শুনানী দু’সপ্তাহের জন্য মুলতবী করেছে ।সাতক্ষীরা’র পুলিশ সুপার কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি’র রিপোর্ট প্রাপ্তীর জন্য আদালত রীটটি দু’সপ্তাহের জন্য স্টান ওভার করেন। আজ এই মামলায় দায়েরকৃত রীটের উপর দ্বিতীয় দিনের শুনানী অনুষ্ঠিত হয়।এর আগে গত ৩১ জুলাই মঙ্গলবার রীটের উপর প্রথম শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। এই শিকারে অংশ নেয়া সাত পুলিশকে আসামী না করে এবং আইনের যথাযথ ধারা বাদ দিয়ে দুর্বল ভাষায় এজাহার দায়ের করায় ইতিমধ্যে এই মামলায় গ্রেফতারকৃত দুই আসামী জামিনে মুক্তি পেয়েছে।এর আগে পলাতক অভিযুক্ত আসামীরাও আগাম জামিন নিয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।এখন মামলাটির ফাইনাল রিপোর্ট প্রদানের নীলনক্সা বাস্তবায়নের কাজ চলছে বলে জানা গেছে।এ প্রেক্ষাপটে ঢাকা থেকে প্রকাশিত নয়াবার্তা’র সম্পাদক আবু বকর জনস্বার্থে বিচারপতি জে বি এম হাসান এবং বিচারপতি মো: খায়রুল আলমের যৌথ বেঞ্চে গত ২৫ জুলাই ৯৭৯১/২০১৮ নং রীটটি দায়ের করেন।আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন এ্যাডভোকেট শামসুল হক।রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী।

    এক তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে,পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল ২০১৬ সালের জুন মাসে সুন্দরবনে বাঘ হত্যা ও চোরাচালানে জড়িত ব্যক্তিদের ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন বাংলাদেশ সরকারের কাছে জমা দেয়।‘সুন্দরবনের বাঘ হত্যা’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী এলাকার ৩২ জন রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালী ব্যক্তি ওই বাঘ হত্যায় মদদ দেওয়া ও চোরাচালানে জড়িত। ইন্টারপোলের এই প্রতিবেদনের আলোকে ২০১৬ সালের ২৯ জুলাই জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় “বাঘ হত্যা ও চোরাচালানে রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা” শীর্ষক খবর প্রকাশিত হবার পর মহামান্য হাইকোর্ট একটি স্যুয়োমোটো রুল নং-৭/২০১৬ প্রদান করেন।মামলাটির শুনানী চলছে।পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলের ঐ ৩২ তালিকাভূক্ত বাঘ শিকারীর মধ্যে একজন হলেন, আলহাজ্ব আঃ সাত্তার মোড়ল। গত ৭ জুলাই ভোরে শ্যমনগরের স্থানীয় এক সাংবাদিকের নিকট খবর আসে যে শ্যামনগর থানার এসআই লিটন, এসআই হাবিব, দুই এএসআই মামুন ও ফজলুল করিম এবং কনস্টেবল আলমগীর কনস্টেবল সাইফুল্লাহ ও কনস্টেবল উত্তম কুমারের নিরাপত্তা প্রহরায়্ ইন্টারপোলের তালিকাভূক্ত বাঘ শিকারী আলহাজ্ব আঃ সাত্তার মোড়ল ৯জন শিকারি ও শিকার সহযোগিদের নিয়ে দুটি ট্রলার এবং ৬টি বন্দুক সহ রাতে বিশ্ব ঐতিহ্য সাতক্ষীরার শ্যামনগরের সংরক্ষিত পশ্চিম সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে।ঐ সাংবাদিক সারাদিন সংবাদ তথ্যের সত্যতা নির্নয় সহ ঘটনাটির পেছনে লেগে থাকেন।তিনি জাতীয় স্বার্থে এই শিকারি চক্রকে ধরিয়ে দেবার জন্য স্থানীয় র‌্যব কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেন।র‌্যাব অভিযানের প্রস্তুতি নিলেও কমান্ডিং অফিসার স্টেশনে না থাকায় ৭ জুলাই রাতের অপারেশন থেমে যায়।এর মধ্যে খবর আসে শিকারি চক্র ২২টি হরিণ শিকার করেছে।২টি তারা রান্না করে খেয়েছে। বাকি ২০টি হরিণের পেট ফেড়ে নাড়িভুড়ি বের করে আস্ত হরিণ বরফ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করেছে।৮ জুলাই ঐ সাংবাদিক যোগাযোগ করেন স্থানীয় কোস্টগার্ড কর্মকর্তাদের সাথে।তার কাছে থাকা সকল তথ্য তিনি কোস্টগার্ডকে জানান।কোস্টগার্ড রাতে অভিযানে সম্মত হয়।পূর্ব অভিঙ্গতার কারনে ঐ সাংবাদিক কোস্টগার্ডের উপর পুরোপুরি ভরসা না রেখে বনবিভাগের বুড়িগোয়ালীনি্ ও কদমতলা স্টেশন এবং চুনকুড়ি টহল ফাড়ির কর্মকর্তাদের পুরো তথ্য জানান।শেষে জানান খুলনার বিভাগীয় বনকর্মকর্তাকে।মজার ব্যাপার হলো কোস্টগার্ড এবং বনবিভাগের তিন স্টেশনের কর্মকর্তারা জানতেন না যে এই তথ্য অণ্য কেউ জানে।চারটি গ্রুপই নিজেদের শতভাগ সাফল্যের আশায় অতি গোপনীয়তার সাথে ৮ জুলাই দিবাগত রাতে অভিযান শুরু করেন।অভিযানে চার গ্রুপ মুখোমখি হবার পর জানতে পারেন তারা একই অভিযানে এসেছেন।এর পর তারা নিজেদের মধ্যে অভিযান কর্মপন্থা নির্ধারণ করে চার ভাগে বিভক্ত হয়ে অবস্থান নেন।মধ্য রাতে কাঙ্খিত শিকারিদের দুটি ট্রলার অভিযানকারীদের নজরে আসে।বন বিভাগ ও কোস্টগার্ড সদস্যরা বনের চুনকুড়ি নদী ও দোবেকির মধ্যবর্তী স্থানে শিকারি পুলিশ দলের মুখোমুখি হয়। তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করলে তারা দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।সুন্দর বনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক ঘটনা সম্পর্কে বলেন, আমরা তাদের কাছাকাছি পৌছে স্প্রীড বোর্ড তাদের ট্রলারে লাগিয়ে ঠেলে চরে তুলি। এসময় আটক ট্রলারে সাদা পোষাকে থাকা পুলিশ জানায় তারা হরিণ শিকারীর ট্রলার আটক করেছে। সে সময় পুলিশ বনকর্মকর্তা কর্মচারি এবং কোষ্ট গার্ডকে শিকারীর ট্রলারের পাশে যেতে দেননি।এসআ্ই লিটন হুমকি দেন যে, ”তাদের নৌকায় কেউ উঠলে তার বুক ঝাজরা করে দেবে”। অভিযানে অংশ নেয়া কৈখালী কোষ্ট গার্ডের পেডি অফিসার এক্ই ধরনের তথ্য জানিয়ে বলেন , পুলিশের পক্ষ থেকে ঐ ট্রলারে থাকা বর্তমান গ্রেফতারকৃত দু’জন বাদে বাকিরা পুলিশের সোর্স এবং এই অভিযানটি কোষ্ট গার্ড , পুলিশ ও বন বিভাগের যৌথ অভিযান দেখাতে বলা হয়। কোষ্ট গার্ডের এখতিয়ারাধীন এলাকায় পুলিশি অভিযানে কোষ্ট গার্ডকে আগে থেকে কোন তথ্য দেওয়া হয়েছিলো কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন , না আমোদেরকে আগে থেকে এ ধরনের কোন তথ্য দেওয়া হয়নি এমনকি ঐ সময় ট্রলার , অস্ত্র , হরিণ ও শিকারীসহ আমাদের ছবি নিতেও বাধা প্রদান করা হয়।তিনি বলেন,যেখানে পুলিশের পোশাক পরে বনে চাদাবাজী ও ডাকাতি হচ্ছে।সেখানে তাদের পালানোর প্রচেষ্টার প্রেক্ষাপটে আমরা যদি ”ফাযার ওপেন” করতাম তবে দুই বাহিনী’র মধ্যেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতো। এবিষয়ে গত ৯ জুলা্ই নয়াবার্তা’র অন লাইন সংষ্করনে পৃথক দু’টি খবর প্রকাশিত হয়। প্রথমটি’র শিরেোনাম ছিলো “শ্যামনগরে চাঞ্চল্যকর ২২টি হরিণ শিকারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে চলছে কোটি টাকার ছড়াছড়ি!”। আর দ্বিতীয়টি’র শিরেোনাম ছিলো “আন্তর্জাতিক মাফিয়া চক্র কর্তৃক শ্যামনগরে চাঞ্চল্যকর ২২ হরিণ শিকারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে চলছে কোটি টাকার ছড়াছড়ি!”। গত ১০ জুলাই”হরিণসহ অস্ত্র উদ্ধার ঘটনায় শ্যামনগর থানায় পৃথক দু’টি মামলা”এবং গত ১৮ জুলা্ই “প্রসঙ্গ ২২ হরিণ শিকার-ঘটনা একটি,প্রশ্ন একাধিক……” শিরনামে নয়াবার্তা’র অন লাইন সংষ্করনে আরো দু’টি খবর প্রকাশিত হয়।২০ জুলাই শ্যামনগরে ২২ হরিণ শিকার ঘটনায় আসামী বাদী হওয়ায় ঘটনা ভিন্ন পথে মোড় নিয়েছে শিরনামে নয়াবার্তা’র অন লাইন সংষ্করনে আরো একটি খবর প্রকাশিত হয়।এসব খবরে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।

    তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে,কোস্টগার্ড ও বনবিভাগ যৌথ অভিযান চালিয়ে কদমতলা ষ্টেশনের চুনকুড়ি নদীর সুবদি গুবদি এলাকা থেকে দুইটি ট্রলারসহ ১৭ জনকে আটক করে। এসময় তাদের নিকট থেকে শিকারকৃত ২০ টি হরিণ ও ছয়টি আগ্নেয়ান্ত্র উদ্ধার করা হয়।আটককৃতদের মধ্যে ছিলেন, চক্রের প্রধান জাপা নেতা আব্দুস সাত্তার, তার সহযোগি আনোয়ারুল ইসলাম, মহিবুল্লাহ, আলী হোসেন, মনজু, সামাদ, বিকাশ,আকজান, ইউসুফ, ও বাচ্চু।এছাড়াও ছিলেন, শ্যামনগর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মর্যাদার দুইজন এবং সহকারি উপ-পরিদর্শক মর্যাদার দুইজনসহ সাত পুলিশ সদস্য।এর পর শুরু হয় পুলিশের নাটক।পুলিশ দাবি করে শ্যামনগর থানার সাধারন ডায়েরী নং-২৮২,তারিখ ৬ জুলাই মুলে তারা সংরক্ষিত বনে অভিযানে গিয়েছিলো।অভিযানে তারা হরিণ শিকারি গ্রেফতার করেছে ।উল্লেখ্য শ্যামনগর থানার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তারা্ এই ধরনের সাধারন ডায়েরী করে সুন্দরবনে শিকারিদের সহায়তা করেন।ধরা পড়লে এই ডায়েরী তাদের আইনের রক্ষা কবচ হয়।

    সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,ঐ রাতে বোট, হরিণ বন্দুক ও পুলিশ সদস্যসহ সবাইকে নিয়ে যাওয়া হয় কোষ্ট গার্ডে’র দোবেকি’র ভাসমান স্টেশনে। সেখানে বন বিভাগ ও কোস্টগার্ডকে বোঝানো হয়, পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক এবং হরিণ ও বন্দুক জব্দ করেছে। পুলিশ সদস্যরা এ সময় হরিণ শিকারের অভিযোগ বেমালুম অস্বীকার করে জানান, তারা গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়েছেন মাত্র। দোবেকি ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা মোবারক আলি জানান, গভীর রাতে সবাইকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছিল। পরে তারা সবাই চলে গেছেন শ্যামনগর থানার উদ্দেশ্যে।

    এ বিষয়ে খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বসিরুল ইসলামের কাছে সোমবার টেলিফোন করা হলে তিনি জানান, ‘আমি খবর পেয়েছি দুটি শিকার করা হরিণ ও তিনটি বন্দুক জব্দ করেছে পুলিশ।’ তিনি আরও জানান, ‘পুলিশ বলছে তারা অভিযান চালাতে গিয়েছিল। তাদের কথা তো আর অবিশ্বাস করা যায় না।’ শ্যামনগর থানার ওসি সৈয়দ মান্নান আলি জানান, ‘সুন্দরবনের ঘটনাস্থল থেকে আমার থানার এসআই লিটন জানিয়েছেন রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মেঘনা নদীর মোহনায় একটি বোট দ্রুত গতিতে যেতে দেখে তিনি চ্যালেঞ্জ করেন। পরে ওই বোটে তল্লাশি চালিয়ে ৩টি শিকারকৃত হরিণ ও তিনটি একনলা বন্দুক পাওয়া যায়। এ সময় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যরা পালিয়ে যায়।’ ওসি আরও বলেন, এ বিষয়ে বন বিভাগ ও কোস্টগার্ডের সঙ্গে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। কারণ তারাও একই স্থানে অভিযান চালাতে গিয়েছিলেন। তবে ওসির কাছে জানতে চাওয়া হয় এসআই লিটন যে বোট নিয়ে কথিত অভিযান চালান সেটিতে ১৬ খণ্ড বরফ কেন ছিল এবং তারা তিনদিন আগে হরিণ শিকারি দলের সঙ্গে কেন বনে গেছেন এর কোনো সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি ওসি। তবে তিনি হরিণ শিকারে তার পুলিশ সদস্যদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

    এখানে উল্লেখ্য,গ্রেফতারকৃতদের থানায় আনার পর সাতক্ষীরা’র পুলিশ সুপার নিজেই শ্যামনগর থানায় ছুটে যান এবং সারাদিন শ্যামনগর থানায় অবস্থান করেন।৯ জুলাই সন্ধায় সাতক্ষীরা থেকে একটি গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা যায় যে এঘটনায় শ্যামনগর থানার সংশ্লিষ্ট ৭ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।খবরের সত্যতা যাচায়ের জন্য ঐদিন রাতে নয়াবার্তা’র পক্ষ থেকে প্রথমে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত মর্মকর্তা এবং পরে সাতক্ষীরা’র পুলিশ সুপারের সথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান,সংশ্লিষ্ট ৭ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়নি।অথচ পরবর্তীতে এসআ্ই লিটন মিয়াকে প্রত্যার করে খুলনা ডি্ইজি অফিসে সংযুক্ত করা হয়। আর ওসি সৈয়দ মান্নান আলিকে বদলি করা হয় দেবহাটা থানায়।আর গত ২২ জুলাই সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার স্বাক্ষরিত ৮৫ নং স্মারকের এক পত্রে এই অভিযানে অংশ নেয়া বন কর্মকর্তাদের ২৬ জুলাই পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে তলব করা হয়।বন বিভাগের বুড়িগোয়ালীনি’র স্টেশন কর্মকর্তা কবিরের নের্তৃত্বে কদম তোলার স্টেশন কর্মকর্তা নাসির, চুনকুড়ি টহল ফাড়ির ওসি মোস্তাফিজুর রহমান,দোবেকী টহল ফাড়ির ওসি মোবারক এবং মিড়গাঙ টহল ফাড়ির্ওসি মিজানুর রহমান পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে উপস্থিত হন।তারা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তারের সাথে বৈঠকে মিলিত হয়ে ঘটনা’র বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

    উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৯ এপ্রিল শ্যামনগর থানার পুলিশ কর্তৃক সুন্দরবনে শিকার করা হরিণের সাড়ে সাত মণ মাংস ভাগাভাগি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার পর শুরু হয় তোলপাড়। সে সময়ও শ্যামনগর থানার ওসি ছিলেন সৈয়দ মান্নান আলী। ওই সময় সাংবাদিকদের তথ্য দেবার অভিযোগ তুলে এসআই আরিফ সহ আটজন পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সে সময়ের হরিণ শিকারেও প্রত্যক্ষ সহায়তা দেন এসআই লিটন। কিন্তু তিনি বরখাস্ত থেকে কৌশলে রক্ষা পান।

    এখানে উল্লেখ্য,“গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮ক -এ রাষ্ট্র কর্তৃক জীববৈচিত্র,বন ও বন্যপ্রণী,সংরক্ষন্ ও নিরাপত্তা বিধানের বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।”এরই আলোকে ২০১২ সনের ৩০ নং আইন প্রনীত হয়।আইনটির শিরনাম হলো “বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন,২০১২। কোন ব্যক্তি’র অভয়ারণ্য সম্পর্কে বাধা নিষেধ প্রসঙ্গে এই আইনের ১৪ এর (ঙ) তে বলা হয়েছে,”প্রধান ওয়ার্ডেন বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার অনুমতি ব্যতিত কোন প্রকার আগ্নেয়াস্ত্রসহ প্রবেশ করিতে পারিবেন না।এই আইনের ৩৫ ধারায় ধারা ১৪ এর বিধান লংঘনের দন্ড উল্লেখ করা হয়েছে।বলা হয়েছে,”কোন ব্যক্তি ধারা ১৪ এ উল্লেখিত কোন নিষিদ্ধ কর্মকান্ড করিলে তিনি অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন্ ও উক্তরুপ অপরাধের জন্য জামিন অযোগ্য হইবেন এবং তিনি সর্বোচ্চ ২ (দুই) বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা ১ (এক) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড অথবা্ উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন এবং এ্কই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে সর্বোচ্চ ৫ (পাচ) বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ৪ (চার) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।

    অথচ পুলিশ “বন্যপ্রাণী (সংরক্ষন ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর ৩৭ (১) ও (২) এবং তৎসহ ১৮৭৮ অস্ত্র আইনের ১৯ (এ) জামিন যোগ্য ধারায় ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।এক পর্যায়ে রাতভর নানা দেন দরবারের পর ৯ জুলাই সকালে তিনটি হরিণ, তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও একটি ট্রলারসহ তিন জনকে আসামী করে অস্ত্র ও বন্য প্রাণী নিধন আইনে মামলা করা হয়। হরিণ শিকারের মামলায় আসামীরা হলো,পাতাখালি গ্রামের আমজাদ গাজীর ছেলে মহিবুল্লাহ, কদমতলা গ্রামের ঈমান আলী ও বন্দকাটি গ্রামের কুরবান আলী মোড়লের ছেলে বিশিষ্ট মাছ ব্যবসায়ী জাপা নেতা আলহাজ¦ আব্দুস সাত্তার মোড়ল।
    এদিকে ১০ জুলাই আটককৃত আগ্নেয়াস্ত্র তিনটি লাইসেন্সধারী বন্দুক হওয়ায় তিন বন্দুকধারী মালিকের নামেও মামলা হয়েছে। আসামীরা হলো, পাতাখালি গ্রামের আয়জদ্দী গাজীর ছেলে আব্দুল আজিজ,হরিনগর গ্রামের আব্দুস সাত্তার গাজীর ছেলে সালাউদ্দীন ও কালিগঞ্জ উপজেলার বন্দকাটি গ্রমের আব্দুর রশিদের ছেলে হাফিজুল। দুটি মামলার ৬ জন আসামীর মধ্যে ৪ জনকে পালাতক দেখানো হয়েছে। আর আসামী মুনজু ও মহিবুল্লাহকে আটক দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।এবিষয়ে কোষ্ট গার্ড এবং বন বিভাগের পক্ষ থেকে সঠিক আইনের ধারায় মামলা দায়ের না হওয়ায় জন মনে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

    “বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন,২০১২। এই আইনের ১৪ এর (ঙ) তে বলা হয়েছে,” কোন ব্যক্তি অভয়ারণ্যে প্রধান ওয়ার্ডেন বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার অনুমতি ব্যতিত কোন প্রকার আগ্নেয়াস্ত্রসহ প্রবেশ করিতে পারিবেন না।এই আইনের ৩৫ ধারায় ধারা ১৪ এর বিধান লংঘনের দন্ড উল্লেখ করা হয়েছে।বলা হয়েছে,”কোন ব্যক্তি ধারা ১৪ এ উল্লেখিত কোন নিষিদ্ধ কর্মকান্ড করিলে তিনি অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন্ ও উক্তরুপ অপরাধের জন্য জামিন অযোগ্য হইবেন এবং তিনি সর্বোচ্চ ২ (দুই) বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা ১ (এক) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড অথবা্ উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন এবং এ্কই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে সর্বোচ্চ ৫ (পাচ) বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ৪ (চার) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন। ইন্টারপোলের ৩২ তালিকাভূক্ত বাঘ শিকারীর মধ্যে একজন হলেন, আলহাজ্ব আঃ সাত্তার মোড়ল।এর আগে তার বিরুদ্ধে হরিণ শিকারের মামলা হলেও পুলিশ চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়।

    অথচ পুলিশ “বন্যপ্রাণী (সংরক্ষন ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর ৩৭ (১) ও (২) এবং তৎসহ ১৮৭৮ অস্ত্র আইনের ১৯ (এ) জামিন যোগ্য ধারায় ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। “বন্যপ্রাণী (সংরক্ষন ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর ধারা-৩৭। (১) কোন ব্যক্তি তফসলি ১ এ উল্লখিতি কোন চতিা বাঘ, লাম চতিা, উল্লুক, সাম্বার হরণি, কুমরি, ঘড়য়িাল, তমিি বা ডলফনি হত্যা করলিে তনিি অপরাধ করয়িাছনে বলয়িা গণ্য হইবনে এবং উক্তরূপ অপরাধরে জন্য তনিি র্সবোচ্চ ৩ (তনি) বৎসর র্পযন্ত কারাদন্ড অথবা র্সবোচ্চ ৩ (তনি) লক্ষ টাকা র্পযন্ত র্অথদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডতি হইবনে এবং একই অপরাধরে পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে র্সবোচ্চ ৫ (পাঁচ) বৎসর র্পযন্ত কারাদন্ড অথবা র্সবোচ্চ ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা র্অথদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডতি হইবনেঃ

    তবে শর্ত থাকে যে, চিতা বাঘ বা কুমির কর্তৃক কোন ব্যক্তি আক্রান্ত হইলে এবং উহার ফলে তাহার জীবনাশঙ্কার সৃষ্টি হইলে জীবন রর্ক্ষাথে উক্ত আক্রমণকারী চিতা বাঘ বা কুমিরকে হত্যার ক্ষেত্রে এই ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে নাঃ

    তবে আরো শর্ত থাকে যে, এ সংক্রান্ত বিষয়ে কোন মামলা দায়েরের প্রশ্ন দখো দিলে সংশ্লষ্টি স্টেশন র্কমর্কতা ওয়ার্ডন এর সহিত পরামর্শক্রমে মামলা দায়ের করতিে পারিবেন।

    (২) কোন ব্যক্তি তফসিল ১ এ উল্লেখিত কোন চিতা বাঘ, লাম চিতা, উল্লুক, সাম্বার হরিণ, কুমির, ঘড়িয়াল, তিমি বা ডলফিন এর ট্রফি বা অসর্ম্পূণ ট্রফি মাংস দেহের অংশ সংগ্রহ করিলে দখলে রাখিলে বা ক্রয় বিক্রয় করলিে বা পরিবহন করিলে তিনি অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি সর্বোচ্চ ২ (দুই) বৎসর র্পযন্ত কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ১ (এক) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডতি হইবনে এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে সর্বোচ্চ ৪ (চার) বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডতি হইবনে।

    রীটে ১/ “বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন,২০১২ এর ১৪(ঙ) ধারা লংঘন করে পুলিশ সহ শিকারীদল সংরক্ষিত বনে প্রবেশ করায় আইন অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আইনের সঠিক ধারায় মামলা দায়ের করার ডাইরেকশন চাওয়া হয়েছে।

    রীটে ২/ “বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন,২০১২ মোতাবেক বন্ কর্তৃপক্ষ মামলা করবে পুলিশ নয়। তাই পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করায় মামলা স্থগিত করন আদেশ প্রদানের আবেদন করা হয়েছে।

    রীটে ৩/ বিচার বিভাগীয় তদন্তের ডাইরেকশন চাওয়া হয়েছে।

  • শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরতে বললেন দিয়া ও করিমের বাবা মা

    ঢাকা ব্যুরো : বাসচাপায় নিহত দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর ঘাতদের বিচারসহ ৯ দফা দাবিতে আন্দোলনরত সহপাঠি শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যেতে অনুরোধ করেছেন দিয়া খানম মিম আর আবদুল করিমের বাবা-মা।

    বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের মাধ্যমে এই অনুরোধ জানান দিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর ফকির ও করিমের মা মহিমা বেগম।

    জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘সবার কাছে আমার অনুরোধ, যার যার সন্তান, আমরা অভিভাবকরা বুঝিয়ে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাই। আমরা একটা শক্ত বিচার পাব, আমরা আশা করি। এটা প্রধানমন্ত্রীর নিজের মুখের কথা।’

    মহিমা বেগম বলেন, ‘সবাই আমার সন্তানের জন্য রাস্তায় নেমেছ। সবই হয়ে গেছে। এখন তোমরা যে যার ঘরে উঠে যাও। তোমাদের সবার কাছে অনুরোধ, তোমরা ঘরে ফিরে যাও।’
    উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসের জন্য অপেক্ষার সময় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের নিচে চাপা পড়েন ঢাকার শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দিয়া ও করিম। ওই দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর থেকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। আজকেও শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি থাকলেও স্কুল, কলেজের ড্রেস পড়ে রাস্তায় নেমে এসেছে। শুরুর কয়েকদিনের মত ধ্বংসাত্নক কার্যক্রম পরিহার করে তারা রাস্তায় অবস্থান করছে।

    https://www.youtube.com/watch?v=bjLERjDpftI

  • শিক্ষার্থীদের ওপর ভর করছে বিএনপি : ওবায়দুল কাদের

    ঢাকা ব্যুরো : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির আন্দোলন করার মতো শক্তি, সাহস ও সক্ষমতা না থাকার জন্যই তারা কোটা আন্দোলনকারী ও ছাত্রদের আন্দোলনের ওপর ভর করছে।

    তিনি বলেন, তাদের (বিএনপি) এখন আর কোনো উপায় নেই। তাই তারা এখন কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করবে, ছাত্রদের আন্দোলনের ওপর ভর করবে। নিজেদের কিছু করার মতো শক্তি, সাহস ও সক্ষমতা তাদের নেই।

    আজ বৃহস্পতিবার সকালে সচিবালয়ের নিজ কক্ষে বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।

    আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের তীব্রতা কমে এসেছে। বিআরটিসি’র গাড়ি রাস্তায় চলছে। তারপরও রাস্তায় গাড়ি কম। পরিবহন মালিক ও নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। গাড়ির ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কায় তারা গাড়ি বের করছেন না।

    তিনি বলেন, এতে সাধারণ মানুষের সাফার (ভোগান্তি ) হচ্ছে। মানুষের যাতে ভোগান্তি না হয় সে ব্যাপারে মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে।

    শিক্ষার্থীদের দাবি সম্পর্কে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, তাদের সব দাবি প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনে রয়েছে। এ আইন হলে সড়ক দুর্ঘটনা যানজটের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। এ আইনে পথচারীদের জন্যও বিধান থাকবে।

    তিনি বলেন, আমি আশা করি, আইনটি জনস্বার্থে ক্যাবিনেটে অনুমোদিত হবে এবং তারপর তা সংসদেও পাশ হবে।

    আইনটির বাস্তবায়ন সম্পর্কে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রয়োগের জন্যই আইনটি প্রণয়ন করা হচ্ছে। প্রয়োগ না হলে আইন করে লাভ নেই।

    এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, আইন হলে বাস্তবায়ন করার লিগ্যাল বাইন্ডিং থাকে। আইনের দরকার রয়েছে। আইন সমস্যা সমাধানে শক্তি জোগায়।

    ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনা সম্পর্কে সেতুমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে আমাদের কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা মাঝে মাঝে আলোচনায় বসি। কারণ ইন্ডিয়ান লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় অনেকগুলো রোড প্রজেক্ট রয়েছে।

    তিনি বলেন, আমরা এলওসি’র আওতায় কুমিল্লার ময়নামতি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ও আখাউড়া এবং ভারতের আগরতলা পর্যন্ত ফোর লেন প্রকল্পের গ্রাউন্ড ব্রেকিং শুরু করতে যাচ্ছি। আগামী ২৯ আগস্ট থেকে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এ নিয়ে আমরা কথা বলেছি।

    সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় হাইকমিশনার সে দেশে আগামী ৭ এবং ৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য গ্লোবাল সামিটের একটি চিঠি আমাকে দিয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওই সামিটের উদ্বোধন করবেন।

    সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের আসাম রাজ্যে নাগরিকত্বের নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি সম্পর্কে হাইকমিশনার বলেছেন যে, বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। কাউকে এ মুহুর্তে ডিপোর্ট করা হবে না। বাসস

  • নৌমন্ত্রী শাজাহান খানকে লিগ্যাল নোটিশ

    ঢাকা ব্যুরো : নৌমন্ত্রী শাজাহান খান কোন ক্ষমতা বলে মন্ত্রীর পাশাপাশি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রয়েছেন তার কারণ ব্যাখ্যা করতে নোটিশ পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী।আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডাক ও রেজিস্ট্রিযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. একলাস উদ্দিন এ নোটিশ পাঠান বলে জানিয়েছেন তিনি।

    নোটিশে বলা হয়, শ্রমিক যদি কোনো সমস্যা বা অপরাধে জড়িত থাকে তবে ব্যবস্থা গ্রহণ করে শ্রমিক ইউনিয়ন ফেডারেশন। আপনি একজন মন্ত্রী হওয়ার পরও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব পালন করায় সাংবিধানিক এবং নৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ।

    নোটিশে সংবিধানের ১৪৮ ধারা মোতাবেক ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারিতে মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। তার পরেও কোন ক্ষমতা বলে একটি সাংবিধানিক পদে থেকেও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি হয়েছেন। একই সঙ্গে সাংবিধানিক পদে থাকা কেন বেআইনি ও নৈতিকতা বিরোধী হবে না তা এ নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

  • শিশুরা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে : মনিরুল ইসলাম

    ঢাকা ব্যুরো : ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, শিশুদের থেকে অনেক সময় শিক্ষা নিতে হয়। শিক্ষার্থীরা আমাদের চোখে আঙুল দেখিয়ে দিয়েছে কী করতে হবে। আমরা তাদের দাবি বাস্তবায়নে কাজ করছি। তাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করছি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেছেন।

    মনিরুল ইসলাম বলেন, নিহত পরিবারের প্রতি আমি সমবেদনা জানাই। আমরা তাদের সন্তান ফিরিয়ে দিতে পারব না, তবে সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার অনুরোধ, তারা যেন ঘরে ফিরে যায়। অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি আমি একই অনুরোধ জানাচ্ছি।

    মনিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইতোমধ্যে সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা বলেছেন। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ তৎপর রয়েছে। সড়কে যানবাহন কয়েকবার করে চেকিং করা হচ্ছে।

    অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেয়ার বিষয়ে সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনার পর পুলিশের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করা হয়েছে। বিআরটিএ ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করছে। তবে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে লাইসেন্স পরীক্ষার কারণে গাড়ির দীর্ঘ জটলা সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে মুমূর্ষু রোগী, হজযাত্রী, বিদেশগামীদের ভোগান্তি হচ্ছে। তাই তাদেরকে অনুরোধ করে বলব, আপনারা চলে যান।

    কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন প্রশাসন ও বিআরটিএ’র জন্য চপেটাঘাত কীনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, মাঝে মাঝে আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের থেকেও শিক্ষা নিতে হয়। তারা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে যেসব বিষয় দেখিয়ে দিয়েছে সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করবো।

    অতিরিক্ত কমিশার মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এখন পর্যন্ত কোনো অস্ত্র প্রয়োগ করিনি। লেথাল, সেমি-লেথাল বা নন-লেথাল অস্ত্র ব্যবহার করিনি। আমরা তাদের আন্দোলনকে মানবিক এবং সহানুভূতির সঙ্গে দেখছি।

    কোনো ধরনের উস্কানিতে কান না দিতে শিক্ষার্থীদের আহবান জানিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে এক পুলিশ সদস্যকে এক ছাত্রের গলা চেপে ধরতে দেখা গেছে। কিন্তু ছবিটি ২০১৩ সালের আর এ ঘটনায় এএসআই পলাশ চন্দ্র শাস্তির মুখোমুখি হয়েছিলেন। আরেকটি ছবিতে এক ছাত্রীকে পুলিশের লাঠিচার্জ করতে দেখা গেছে, সেই ছবিটিও ২০১২ সালের। এ থেকে প্রমানিত হয়, কেউ আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে ছাত্রদের উস্কানি দিচ্ছে। সে সব স্বার্থান্বেষীরা এ পর্যন্ত তিনশো গাড়ি ভাংচুর করেছে, যার মধ্যে পুলিশের ৫টি পিকআপ ভ্যানও রয়েছে। এ পর্যন্ত ৮টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। যারা উস্কানি দিয়ে এ ধরনের কাজ করছে, তাদেরকে চিহ্নিত করার কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।

    আন্দোলনরত শিশুদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ডিএমপি ও পুলিশ কথা দিচ্ছে- আপনাদের দাবি বাস্তবায়ন হবে। আপনারা কোনো কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। যারা এই সুযোগে ছাত্রদের বিভ্রান্ত করছে, তাদেরও শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।

    গত মঙ্গলবার শিশুদের ওপর লাঠিচার্জ করার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যদি কোনো পুলিশ সদস্য আইনের বাইরে গিয়ে কোনো কাজ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ আন্দোলনে শিশুদের কথা মাথায় রেখে পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করেনি। ছাত্রদের বিষয়টি পুলিশ মানবিকভাবেই দেখেছে।

    ছাত্রদের লাইসেন্স পরীক্ষার সময় অনেক পুলিশের গাড়িচালকের লাইসেন্স পাওয়া যায়নি, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশের সকল ড্রাইভারেরই লাইসেন্স রয়েছে। অনেক সময় সঙ্গে নিয়ে যান না কিংবা অনেক সময় এমটি (মোটর ট্রান্সপোর্ট) বিভাগে তাদের লাইসেন্স জমা রাখেন। তাই হয়তো অনেক ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে তারা লাইসেন্স দেখাতে পারেননি।

    পুলিশের এ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা আরো বলেন, সড়ক ব্যবস্থাপনায় আগে অনিয়ম ছিল। আমরা সেসব অনিয়ম অনেক দূর করেছি। উল্টোপথে চলা অনেক প্রভাবশালীর গাড়িও ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফুটপাতে গাড়ি চালানো বন্ধ করা হয়েছে। আমাদের আন্তরিকতা থাকা সত্তে¡ও নাগরিকদের অসেচতনতার কারণে পুরোপুরি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা বিলম্বিত হচ্ছে।

  • মিথ্যা সংবাদে বিভ্রান্ত হবেন না : প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

    ঢাকা ব্যুরো : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কিছু কুচক্রীমহল উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে যে মিথ্যা এবং বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করছে, তাতে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

    আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কিছু কুচক্রী মহল বিভিন্ন নিউজ পোর্টালের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে বিভিন্ন বিকৃত, মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করছে।

    বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা এইসব বানোয়াট সংবাদ দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। এইসব সংবাদের কোনো ভিত্তি নেই জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে এসব অপসংবাদে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়। বাসস

  • এদেশের বুকে আঠারো এসেছে নেমে…

     

     

    ‘আঠারো বছর বয়স কী দুঃসহ, স্পর্ধায় নেয় মাথা তোলবার ঝুঁকি, আঠারো বছর বয়সেই অহরহ, বিরাট দুঃসাহসেরা দেয় যে উঁকি’- বিদ্রোহের কবি, বিপ্লবের কবি, প্রতিবাদের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য তার এই বিখ্যাত কবিতার শেষে লিখেছিলেন ‘এদেশের বুকে আঠারো আসুক নেমে…’। হ্যাঁ, আঠারো নেমে এসেছে বাংলাদেশে। গত চার দিন ধরে দেশের রাজপথগুলো দখল করে নিয়েছে আঠারো বয়সীরা।

    তারা নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তা আটকে আন্দোলন করছে, আবার অ্যাম্বুল্যান্সকে পথ করে দিচ্ছে, পঙ্গু নারীকে রাস্তা পার করছে, অসুস্থ শিশু কোলে মাকে পাঠিয়ে দিচ্ছে হাসপাতালে! শুধু কি তাই? এই স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা লাইসেন্স না পেলে বাস আটকে দিচ্ছে। লাইসেন্স ছাড়া পুলিশের গাড়ি আটকাচ্ছে। এমনকী সরকারের একজন মন্ত্রীর গাড়ি উল্টোপথে যাওয়ায় আটকা পড়তে হয়েছে।

    এই কিশোররা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছে। সারি বেঁধে সুশৃঙ্খলভাবে রাস্তায় চলছে রিকশা। কোনো গাড়ি লাইসেন্স ছাড়া চলতে পারছে না। লাইসেন্স না পেলে অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে বাস ভাঙছে। আবার এই ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা নিজেরাই ভাঙা কাঁচ ঝাড়ু দিয়ে পরিস্কার করছে। এই ছেলে-মেয়েরাই বুকে সাঁটানো প্ল্যাকার্ডে লিখেছে, ‘৫জি স্পিডের ইন্টারনেট চাই না, ৫জি স্পিডের বিচার ব্যবস্থা চাই!’

    বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে রাজপথে নেমেছে তরুণরা। সর্বশেষ উদাহারণ হিসেবে শাহবাগ আন্দোলন থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলন। দুটি আন্দোলনই প্রাথমিক সফলতা পেলেও এক পর্যায়ে গিয়ে দিকভ্রান্ত হয়েছে। এবার নামল সুকান্তের আঠারো বয়সী কিশোররা। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম কিশোর আন্দোলন এটি! ওরা রাজপথে নেমে যা যা করে দেখাচ্ছে, তাতে বিস্ময়ে হতবাক হওয়া ছাড়া কিছু করার নেই!

    এত সৃজনশীল ওরা! এত নির্ভীক! এতটা মানবিক! এই আন্দোলনের কোনো নেতা নেই; কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের পৃষ্ঠপোষকতা নেই। আছে সাধারণ মানুষের সমর্থন আর ভালোবাসা। এদেশের ১৬ কোটি মানুষ চায় নিরাপদ সড়ক। সেই সড়ক নিরাপদ কীভাবে করা যায়, একেবারে হাতে কলমে সরকারকে দেখিয়ে দিয়েছে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা।

    বাস চাপায় ওদের দুই বন্ধুর মৃত্যুর পর একজন মন্ত্রী হেসেছেন। এরপর আবার ক্ষমাও চেয়েছেন। শিক্ষার্থীরা তার পদত্যাগ দাবি করছে। ওদের আন্দোলনে প্রতিদিন হেঁটে হেঁটে অফিসে আসা-যাওয়া করছেন কর্মজীবিরা। কিন্তু তাদের মাঝে কোনো ক্ষোভ নেই। এই ছেলে-মেয়েদের দাবি মেনে নিয়ে তাদের ঘরে ফেরত পাঠানো সরকারের দায়িত্ব। ওরা কোনো অন্যায় দাবি করেনি। ওদের দাবিতে শুধু সাধারণ মানুষ নয়; সরকারের ও উপকার হবে।

    এখন ওদের দাবি না মেনে হয়তো দমন করা হতে পারে। ইতিমধ্যেই পুলিশি আক্রমণ চালিয়ে এমন চেষ্টা হয়েছে। এতে সাময়িকভাবে তারা হয়তো রাস্তা ছাড়তে বাধ্য হবে। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েগুলো আর কতটাই বা পারবে পুলিশের মার খেতে? কিন্তু, অদূর ভবিষ্যতে এই রাজপথে আবারও আঠারো আসবে নেমে….।

    : কালের কণ্ঠ

  • চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আমার পদত্যাগের প্রশ্নই আসে না: শাজাহান খান

    চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আমার পদত্যাগের প্রশ্নই আসে না: শাজাহান খান

    ডেস্ক রিপোর্ট: চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান জানিয়েছেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমার পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি। তাদের কথায় কেন পদত্যাগ করব? অভিভাবক কিংবা শিক্ষার্থীরা তো আমার পদত্যাগ চায়নি। তাদের ৯ দফা দাবির কোথাও আমার পদত্যাগ করার কথা উল্লেখ নেই।’

    বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সচিবালয়ের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শাজাহান খান এসব কথা বলেন।

    তিনি বলেন, ‘বিএনপি তো প্রধানমন্ত্রীরও পদত্যাগ দাবি করে। ফলে চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আমার পদত্যাগের প্রশ্নই আসে না।’

    মন্ত্রী জানান, তারা সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছেন। তবে তিনি এও বলেন, ‘যারা সড়কে গাড়ি চালাতে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন, তারা রাস্তায় গাড়ি বের করছেন না। আমি গাড়ির মালিকদের এ বিষয়ে কিছু বলিনি।’

    এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা যদি আপনার পদত্যাগ চায়, তাহলে পদত্যাগ করবেন কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান নৌমন্ত্রী।

    উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বেপরোয়া বাস বিমানবন্দর সড়কের জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের গোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই দু’জন নিহত হন।

    নিহতরা হলেন- শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির আবদুল করিম এবং একাদশ শ্রেণির দিয়া খানম মিম।

    ঘটনার দিন রাতেই দিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর আলম ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন। বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে হত্যার অভিযোগ আনা হয় ওই মামলায়।

    দুর্ঘটনার দিন থেকেই শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করে আসছেন। এরই মধ্যে তারা ৯ দফা দাবি তুলে ধরেছেন।

  • এবার সাতক্ষীরায় ৪ বছরের শিশুকে পিষে মারলো যাত্রীবাহী বাস

    মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): এবার সাতক্ষীরায় ৪ বছরের শিশুকে চাকার তলায় পিষে মারলো যাত্রীবাহী বাস।  ।নিহত ঐ শিশুর নাম বুশরা আক্তার।  বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরা-যশোর মহাসড়কের মাধবকাটি বাজারে এ ঘটনা ঘটে।  এ ঘটনায় ঘাতক বাসটিকে আটক করলেও চালক বা বাসের কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
    নিহত শিশু বুশরা আক্তার সাতক্ষীরা সদরের ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের বলাডাঙ্গা গ্রামের আবুল কালামের মেয়ে।
    স্থানীয়রা জানান, চাচা সঙ্গে সাইকেলে মাধবকাটি বাজার থেকে বাড়ির দিকে যাচ্ছিল বুশরা আক্তার ।  এ সময় সাতক্ষীরা থেকে যশোরগামী একটি যাত্রীবাহী বাস পেছন থেকে তাদের ধাক্কা দেয়।  ধাক্কায় সাইকেলের পেছনে বসে থাকা বুশরা ছিটকে পড়ে।  এরপর বাসটি বুশরাকে চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।  ঘটনাস্থলেই মারা যায় বাচ্চাটি।
    কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মারুফ আহম্মেদ বলেন, সাতক্ষীরা সদর থানা এলাকা থেকে বাচ্চাটিকে চাপা দিয়ে বাসটি কলারোয়া থানা এলাকার একটি পাম্পে রেখে চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়।
    নিরাপদ সড়কের দাবিতে সারাদেশ যখন উত্তাল তখন সাতক্ষীরা-যশোর মহাসড়কে শিশু বুশরার মৃত্যু আরো একবার প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে কবে পাবো আমরা নিরাপদ সড়ক? কবে আমাদের সন্তানরা নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে চলতে পারবে সড়কে?