Blog

  • সাতক্ষীরায় অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটাতে পারে বাসক পাতা

    সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: বাড়িতে-বাড়িতে ঘেরা বেড়া দেওয়ার কাজে বেশ জনপ্রিয় বাসক গাছ। গ্রাম জুড়ে এর ছড়াছড়ি। এক ধরনের বিকট দুর্গন্ধের জন্য এর পাতায় গবাদি পশু মুখ দেয় না। ফলে সহজেই জমি ও বাড়ি ঘেরার কাজ চলে। ঔষধি গুনসম্পন্ন এই বাসক পাতা এখন ঘুরিয়ে দিচ্ছে গ্রামীন মানুষের ভাগ্যের চাকা ।

    বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে বাসক পাতার কদর রয়েছে বেশ। সর্দি কাশি সারাতে সবুজ বাসক পাতা রস করে খেলে উপকার পাওয়া যায় এ বিশ্বাস রয়েছে এখনও । কিন্তু এই পাতা যে মানুষের অর্থনৈতিক চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারে তা ছিল ধারনার বাইরে।দেশের বিভিন্ন স্থানে চাষ হচ্ছে বাসক উদ্ভিদের। ভারতেও বাসক উদ্ভিদের ব্যাপক চাষ রয়েছে। সাতক্ষীরাতে এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে ঔষধিগুণ সম্পন্ন বাসক। ধারণা করা হচ্ছে অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটাতে পারে এ বাসক।

    সাতক্ষীরার ফিংড়ি গ্রামের হাফিজুর রহমান জানান আগে মনে করতাম আবর্জনা। এখন তা সংগ্রহ করে বিক্রি করছি। এতে লাভ হচ্ছে বেশ। একই গ্রামের আমিরুন বেগম জানান তিনি প্রতি কেজি কাঁচা পাতা ৫ টাকা কেজি দরে কিনে শুকিয়ে বিক্রি করছেন ৩৫ টাকায়। সাতক্ষীরায় উৎপাদিত এসব বাসক পাতা এখন ওষুধ কোস্পানিগুলি কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এর ঔষধিগুন এতো বেশি যে এই পাতা দিয়ে তৈরি হচ্ছে কাশির সিরাপ। বাসক পাতার নির্যাস, রস বা সিরাপ শ্লেষ্মা তরল করে নির্গমে সুবিধা করে বলে সর্দি, কাশি এবং শ্বাসনালীর প্রদাহ নিরাময়ে বেশ উপকারী। আয়ুর্বেদ চিকিৎসাও বাসক পাতার ব্যবহার রয়েছে। 

    জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরার মাটি বাসক চাষের জন্য উপযোগী। তাই এ অঞ্চলে বাসক উদ্ভিদ জন্মায় প্রচুর পরিমাণে। ঘেরা বেড়ায় ব্যবহার করা এই উদ্ভিদের পাতা ছিড়লে গাছ মরে যায় না। আবারও নতুন নতুন পাতা গজায়। সারা বছর চলে নতুন পাতা গজানো। ডাল কেটে মাটিতে পুতে দিলে হয়ে ওঠে নতুন গাছ। আর্দ্র ও সমতল ভূমিতে এই উদ্ভিদ জন্মায়। বিকট গন্ধের কারণে এতে ছত্রাক জন্মায়না। এমনকি পোকা মাকড়ও ধরে না। এই পাতা দিয়ে ফল মুড়ে রাখলে তা ভাল থাকে।

    বাসক পাতা সংগ্রহকারী দলের নেতা বিউটি বেগম বলেন, ‘আমরা কাঁচা পাতা রস করে খাই। আগে এর কোনো অর্থনৈতিক গুরুত্ব দিতাম না। এখন সংগ্রহ করে বিক্রি করছি।’তিনি বলেন, ‘বাড়ির বেড়ার গায়ে থাকে। গাছ বাড়েও বেশ। এখন তা তুলে এনে শুকিয়ে বিক্রি করছি। এতে আমরা লাভবান হচ্ছি। বাসক লাগাতে পৃথক জমির দরকার নেই।’ফিংড়ি গ্রামের সাবিনা খাতুন, ‘বীনা দাস, জোহরা খাতুন, অপর্না দাস, রোহেলা খাতুন, আনোয়ারা বেগম , রেবেকা সুলতানা, নাসিমা খাতুন, নাজমা বেগম, হাফিজুল ইমলাম, আমিনা খাতুন জানান বাসক পাতা সংগ্রহ করে তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে নিচ্ছেন।

    সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ি ইউনিয়নের কাঁচাপাকা রাস্তার ছয় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে বিপুল পরিমান বাসক উদ্ভিদ। এখানকার কমপক্ষে দশ হাজার বাসক গাছ ব্যবহৃত হচ্ছে জমির চারধারে কিংবা বাড়ির ঘেরা বেড়ায়। প্রতি বছর একশ’ টন সবুজ পাতা সংগ্রহ হচ্ছে এসব গাছ থেকে। বছরে  এ থেকে পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ২৬ টন শুকনো পাতা। দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায়ও বানিজ্যিকভাবে বাসক উদ্ভিদের চাষ শুরু হয়েছে।

    পানিউন্নয়ন বোর্ড প্রতিনিধি মো. শামীম আলম জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প ব্লু গোল্ডের আওতায় ২৮৫ জন নারী ফিংড়ি ইউনিয়নে বাসক পাতা সংগ্রহ করছেন। তাদের সংগৃহীত পাতা কিনে নিচ্ছে কয়েকটি ওষুধ কোম্পানি।
    তিনি বলেন, ‘বাসক পাতা যেমন আনতে পারে অর্থনৈতিক বিপ্লব, তেমনি বিজ্ঞান সম্মত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই পাতা দেশের ওষুধ শিল্পে গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখতে পারছে।’

    স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এর প্রতিনিধি মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ‘আমরা শুকনো বাসক পাতা কিনে নিচ্ছি। জার্মান প্রযুক্তির মাধ্যমে বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতিতে বাসক পাতা কাশির সিরাপ তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। দিন দিন এর চাহিদাও বাড়ছে।’সাতক্ষীরার গ্রামে এরই মধ্যে বেশ সাড়া পড়ে গেছে বাসক পাতা নিয়ে। গ্রামবাসী নিজ-নিজ বাড়ির চারপাশে বাসক গাছ লাগাচ্ছেন। গ্রামের দরিদ্র নারীরা প্রতিদিনই সংগ্রহ করছেন শত শত বাসক পাতা। পরিচ্ছন্নভাবে রোদে শুকিয়ে তা বিক্রি করছেন ওষুধ কোম্পানির কাছে। এতে তারা অর্থনৈতিক সুবিধা লাভ করছেন। 

    ফিংড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. সামছুর রহমান জানান এ এলাকায় প্রচুর বাসক গাছ জন্মায়। প্রতি বছর ওষুধ কোম্পানিগুলি তা কিনে নিয়ে যায়। এতে আমার এলাকার সাধারণ মানুষ আর্থিক উপকার পাচ্ছেন। 

    সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. নাসরিন আক্তার বলেন, ‘বাসক এর বৈজ্ঞানিক নাম আঢাটোডা বাসিকা (Adhatoda Vasica)  ঔষধিগুন সম্পন্ন একটি উদ্ভিদ। এর পাতা ও ফলে এক ধরনের দুর্গন্ধ আছে। যে কারণে তা ব্যবহার করলে ছত্রাক রোধ করা যায়। তাছাড়া এর ঔষধিগুন খুব বেশি। এসব গুনের কারণে বাসক বানিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বাংলাদেশেও। ভারতের তামিলনাড়–তে বাসকের চাষ ব্যাপক রয়েছে।’
    তিনি বলেন, ‘বাসক উদ্ভিদের জন্ম ও বৃদ্ধিতে সাতক্ষীরার মাটি অনুকূল। বেশি বেশি করে বাসক গাছ লাগালে এর পাতা দেশের ওষুধ শিল্পে অবদান রাখা ছাড়াও গ্রামীন অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারে।’

  • কথ্যকবিতা

    আলম সিদ্দিকী

    ক.
    মধ্যাহ্ন বিরতী শেষে পুনারায় যাযাবর হবে
    ঘাসফড়িং ডানা, মধ্যাহ্ন বিরতীর আয়োজন
    দশ কাঁধে স্নান সেরে রূপবতী পৃথিবীর টানে
    নাগরিক বেশভুসা। মধ্যাহ্ন দিন :

    আগন্তুক সূর্যের গায়ে শেরোয়ানি নাগরদোলা।

    খ.
    কামরাঙ্গার ডাল ভেঙ্গে সোনার হরিণ ধরলে
    সুনির্ধারিত মধ্যদিন খসে পড়ে কৈশোর পুকুর পাড়ে।

    পুকুরে শুয়ে শুয়ে ইতিবৃত্তে টান দেয় মাছরাঙ্গার
    রক্তচোখ, দেয়াল ভূষণে তার আসে যায় না
    ঢেউ গোনা নিয়তী হলে তলদেশে নিশ্চিত বাস করে
    সোনার মোহর; অতএব কামরাঙ্গার ডাল ভাঙ্গলে
    পৌষ মাসে কার সর্বনাশ আপাতত ভাবছি না।

    গ.
    প্রথম প্রথম রতেœর কারবারে রক্তে খেলতো
    সিন্দাবাদের ভুত, মাঝ দরিয়ায় সুজন মাঝি
    ডাকাত হয়ে চলে গেল নরক কেনা হাটে।

    পাটাতন গলা তরঙ্গ এলে সহযাত্রীর মুখ দেখতে
    ভালো লাগে ; দ্বিতীয় জীবনের আশা নেই
    বৃথা ঘাটের খোঁজে যায় না মন
    অবসাদের বজ্রা ভাসে।

    ঘ.
    উচ্ছুন্নের পথে স্বর্গে যেতে
    সারাকাল কাটাকুটি খেলা পরীক্ষার খাতায়
    কেটে কেটে শিল্প হতে রক্তের নদীতে ডুব সাঁতারে
    নজর কাড়ে বিনিদ্র অশ্বমেদ। হাটুরে সময় নিজ থেকে
    হাট বিছানো বন্ধ রাখে.. এরকম হরতাল বেলা
    যে পড়শি আরশিনগরে সাজতে বসে
    তার স্মৃতি আড়াল দিয়ে নরকবাসী হতে ইচ্ছে করে।

  • কথা ছিলো

    আরশি গাইন

    কথা ছিলো ফিরে আসবো

    বৃষ্টির শব্দের মতো আওয়াজ তুলে
    নদী আর পাহাড়ের কাব্য লিখবো
    কথা ছিলো
    তোমার ভালোবাসার রোদ্দুরে শুকিয়ে নেবো
    ভিজে যাওয়া আমার বাড়িঘর
    কথা তো থাকেই
    একদিন আকাশের হাত ধরে
    নীল ছড়াতে ছড়াতে ধূসর জীবনে ফোটানোর কথা ছিলো নীলপদ্ম ঠিকানাহীন ভাবনার ছুটি দেয়া সময়কে ঝেড়ে ফেলে আর একবার রঙ
    ছিটাবো ইচ্ছে মতো

    ছিঁড়ে যাওয়া ঘুড়ির মতো দুজনের ছেঁড়া পথ আবার মিলবে
    বেলা শেষে

    কথা ছিলো
    ভেঙে যাওয়া বুকের উঠোনে
    চাষ করবো সোনালি রোদ্দুর
    অজানা গন্তব্য থেকে হেঁটে আসবে আমাদের অনাগত আগামী
    সূর্যের সাথে মিছিল করবো
    একটি সমুদ্র আর নিষ্কলঙ্ক আকাশের দাবিতে

    কথা তো থাকেই
    কিন্তু কোন্ কথা থাকে
    ধেয়ে আসা সুনামির সাথে
    নাচতে নাচতে যেসব কথারা
    হারিয়েছে ঘরে ফেরার পথ
    যার পায়ের নিচে বয়ে গেছে বিস্তৃর্ণ হাহাকার
    তার কথা তো আর থাকে না

  • কাছে চাই

    অনন্যা অনু

    একদিন শুধু একদিন তুমি জানতে চেয়ো কেমন আছি
    তোমার মাথার উপর এতোএতো মেঘ
    দুষ্ট রূপক মেঘেরা কেটে গেলে,
    বজ্রপাতের আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেলে
    একদিন জিজ্ঞেস করো কেমন আছি।
    জানি, চাঁদের পাড়ায় ভীষণ যুদ্ধ
    জোছনারা সব নিরুদ্দেশ,
    কথা না বলে দূর দিগন্তে বয়ে যায় উনপঞ্চাশ বায়ু
    ভেঙে ভেঙে পড়ে নদীর অহংকার
    হারিয়ে যায় বিশুদ্ধতা!
    এমন সময়ে নিজেকে নিজের সান্নিধ্য নিবিড় বোঝা যায়,
    এমন দুঃসময়ে তুমি একলা হলে
    একদিন জিজ্ঞেস করো আমি কেমন আছি।
    অজ¯্র পক্ষপাত ঘিরে আছে তোমার চারপাশ,
    দ্বিমুখো দৃষ্টিগুলো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে তোমার অগোচরে বুঝি;
    তোমার ছয়টি ইন্দ্রিয় জেগে থাকে শুধু তোমার সাথে
    আঁধারের মধ্যমণি নীরবতা শুধু তোমার ডাকে সাড়া দেয়
    তোমাকে দশদিক থেকে ঘিরে ধরে ছয় রিপু,
    মাতাল নৃত্যে উল্লাস করে।
    জাগতিক ঈশ্বরের লালসার অসংখ্য কৃত্রিম বাহু থেকে মুক্তি পেতে
    আমাকে একবার তুমি আপন ভেবো সেদিন,
    শুধু একটিবারের জন্য বলো ‘তোমাকে একটু কাছে চাই’।

  • উচিত ছিল

    পদ্মনাভ অধিকারী

    কেউ বলছে,বাপ মরেছে
    কেউ বলছে,ভাতার।
    সেই জোয়ারে আম জনতা
    কাটছে মরণ সাঁতার।
    সাঁতার কাটে গরিব-দুখি
    কাটছে সাঁতার বোকা,
    নেতা কাটেন হাওয়ায় সাঁতার
    সব হারা খায় ধোঁকা!
    সাঁতার কেটে নেতা হোতা
    নিচ্ছে তুলে ফুল,
    ধোঁকা খেয়ে বোকার হদ্দ
    ছিঁড়ছে মাথার চুল।
    সাঁতার কেটে টাকার পাহাড়
    করছে ওরা লুট,
    হারা ধন ভাবে, ভুল করেছি
    উচিত ছিল শুট।

  • ডাক

    নয়ন আহমেদ

    ডাক দিয়েছে ভোর;আলো কুড়োতে যাবো।
    ডাক দিয়েছে রোদ;শুশ্রুষা বহন করতে যাবো।
    ডাক দিয়েছে প্রদীপ্ত সূর্য;অন্ধকার পরাজিত করতে বের হবো।
    ডাক দিয়েছে সবুজ পাতা;শান্তি ছড়িয়ে দিতে ছুটে যাবো।
    আমি এখনই একটা অপরিহার্য পৃথিবীর পা-ুলিপি প্রস্তুত করতে বের হবো।

    ডাক দিয়েছে ধানখেত।
    ডাক দিয়েছে নদী।
    ডাক দিয়েছে গোলাপ।
    ডাক দিয়েছে রজনীগন্ধা।
    আমি সমস্ত উচ্ছ্বাসের হৃৎপি- ভেদ করে ভালোবাসা ছড়াবো।

    সাক্ষী প্রসারিত রোদ,
    সাক্ষী বহমান নদী,
    সাক্ষী গ্রীবা উঁচু করা প্রেম,
    সাক্ষী উজ্জ্বল পার্থিবতা,
    আমি মানুষের আশা ও আশ্বাসকে হৃদয়-জমিনে রোপন করতে যাবো।

    যে আশায় জেগে ওঠে, আমি তাকে ভালোবাসি।
    যে কল্যাণ কামনা করে, আমি তাকে প্রীতি নিবেদন করি।
    যে কাঁধে বহন করে মানবতা, আমি তার স্তব করি।
    কেননা, সত্য তাকে প্রেমের লাল চাঁদরে আবৃত করেছে।
    সে সৈনিক হয়েছে;
    সে জীবন বহন করতে প্রতিজ্ঞা করেছে।
    সে সূর্যের সমান বয়সী হয়েছে।

    ডাক দিয়েছে পোড়া রুটির মতো একটা পৃথিবী।
    ডাক দিয়েছে একটা হাহাকার।
    ডাক দিয়েছে একটা বিপন্ন বিনয়।
    আমি আকাক্সক্ষার প্রতীক হবো।

    মানুষের কাছে ছুটে যাবো এখনই।

    আমি সূর্যের সমবয়সী।

  • রাফিয়া

    রাফিয়া

    গাজী আবদুর রহিম

    রাসেদ, রাফিয়াকে কল করে বলল, “তুমি আমাকে এই ভাবে ধোকা দিলে কেন? রাফিয়া, তুমি আমার সাথে এভাবে প্রেমের অভিনয় না করলেও পারতা?”
    রাফিয়া নরম গলায় জবাব দিল,”কিভাবে ধোকা দিলাম তোমাকে?কেন তুমি কি অন্য কোন ভাবে ধোকা পেতে চেয়েছিলে নাকি?”
    রাসেদ কন্ঠস্বর একটু নামিয়ে বলল, “তুমি আমাকে বলো নাই কেন, তুমি বিবাহিত? তোমার একটা মেয়েও আছে নাকি শুনলাম। কি যেন নাম? তুলনা না ভুলনা কি একটা হবে। ’

    রাফিয়া একটু রেগে গিয়ে বলল, “কে বলল, এসব বানোয়াট কথা? সব মিথ্যা”।
    রাসেদ বলল, “কে আর বলবে?তোমার আম্মু। অন্য কেউ বললে ত বিশ্বাস করতাম না”।
    রাফিয়া হিঁ হিঁ হিঁ করে হেঁসে দিয়ে বলল, “তুমি জানো না আমার আম্মুর ব্রেনের সমস্যা আছে?”
    রাসেদ বলল, “কই তুমি আগে বলো নাই তো। ঐ দিন না বললে, আমার আম্মু গুনবতী। আর কি কি যেন বলেছিলে, তেমন মনে নাই। আসলে সকালে ঠান্ডা ভাত খাইতো সেজন্য সব কথা তেমন মনে থাকে না। “

    রাফিয়া মুখ বেকিয়ে হেঁসে বলল, “তুমি যানও না,পাগলকে সামনা-সামনি পাগল বললে, পাগল রেগে গিয়ে উল্টা পাল্টা কাজ করে বসেন?”
    রাসেদ নিজেকে বোকা বানিয়ে বলল, “হ্যাঁ জানি। “
    রাফিয়া রেগে গিয়ে কলটা কেটে দিল। অপর পাশ থেকে রাসেদ তখনও হ্যালো হ্যালো বলতে থাকে।

    আজ শুক্রবার। কলেজ বন্ধ থাকায় রাসেদ, একটা নীল রঙের পাঞ্জাবী পরে রাফিয়াদের বাসার উদ্দেশ্যে বের হল। সে একটা সিএনজি ভাড়া করে রাফিয়াদের গেটের সামনে নামল। সিএনজি চালককে ভাড়া না দিয়ে চলে যাচ্ছিল রাসেদ। সিএনজি চালক রাসেদকে উদ্দেশ্য করে বলল, “ভাই, ভারার টাহা না দিয়া চৈলা যান ক্যান। “

    রাসেদ পুরোনো একটা বিশ টাকার নোট সিএনজি চালককে দিয়ে বলেন, “ভাড়ার টাকা দিছি কিনা খেয়াল ছিল না, ভাই।”
    রাসেদ ধীরে ধীরে হেঁটে রাফিয়াদের ডাইনিং এর দরজার সামনে গিয়ে ভেতরে দেখতে লাগল। সে এবার যেটা দেখল, সেটা দেখার জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। সে দেখল, তুলনা নামের সাড়ে তিন বছরের মেয়েটা আম্মু ডাকায়, রাফিয়া তাকে তুমুল বকাঝকা করছে। এ অবস্থায় রাফিয়ার আম্মু এসে রাফিয়াকে বলল, ‘তোর গর্ভে জন্ম নিল, আর তুই কিনা ওকে আম্মু ডাকার অপরাধে বকছিস। তুই আসলে কি যে নিষ্ঠুর। তুই মা নামের কলঙ্ক।’
    এসব কান্ড রাসেদ ডাইনিং এর বাইরে দাঁড়িয়ে দেখে, তার কলেজের হলে চলে আসল।

    রুমমেট রুমে না থাকায় রাসেদ একাকী ভাবতে লাগল। আমি অন্য যেদিন রাফিয়াদের বাসায় যাই, সেদিন বাচ্চাটা রাফিয়াকে আপি বলে ডাকে। আজ আমার অনুপস্থিতিতে আম্মু বলে ডাকল। রাফিয়া কি আমার থেকে টাকা নেওয়ার জন্য ভেলকি বাজি করছে। নাকি ওর পরিবারের সবাই পাগল। ধ্যাৎ এমন ভাবা ঠিক নয়। আমিও ত ভুল শুনতে পারি। নাকি ইদানিং রাত জেগে জেগে আমার ব্রেনের সমস্যা হয়েছে।

    সন্ধ্যাবেলা রাফিয়া রাশেদের কাছে কল দিল। রাসেদ দ্বিতীয়বারে কলটা রিসিভ করল। রাফিয়া অপরাধীর সুরে বলল, “আমাকে ক্ষমা করে দিও। আসলে তুলনা আমার মেয়ে। আমার স্বামী এলএলএম পাশ করেও কোন কাজ পায় না। তাই আমি নিজের পড়ার খরচ নেওয়ার জন্য তোমার সাথে প্রেমের অভিনয় করেছি। তৌফিক বলেছে ও কোথায় নাকি শীঘ্র সহকারী আইনজীবি পদে নিয়োগ পাবে। তারপর তোমার সব টাকা আমি শোধ করে দিব। “

    রাসেদ বলল, “শোন পাগলীর কথা। তুমি বিপাকে পড়ে আমার থেকে টাকা নিয়েছ। ওই টাকা আমাকে শোধ দিতে হবে না। “
    এরপর রাফিয়ার কান্নার শব্দ শোনা গেল। তারপর কলটা কেটে গেল।
    পরদিন সকালবেলা রাসেদ তার পরিচিত শহর ছেড়ে বহুদূরে চলে যাবার জন্য বের হল। সে তার মোবাইলের ব্যাকপার্ট খুলে সিম দুটো বের করে একটা নদীতে ফেলে দিল। সে চায় না, তার সাথে রাফিয়ার আর কোন দিন দেখা হোক কিংবা কথা হোক। তবে রাসেদ মন থেকে কামনা করে, রাফিয়া তার স্বামীকে নিয়ে সুখে থাকুক। সে রাফিয়াকে ভুলে থাকতে চায়। কারণ সে রাফিয়াকে ভেবে নেশাগ্রস্থ হতে চায় না। সেজন্য সে প্রকৃতির মুক্ত আবহাওয়ার স্বাদ নিতে হাঁটতে থাকল নদীর পাড় দিয়ে।

  • আমি কারোর ছিলাম না

    স ম তুহিন

    যদি কখনো কোনো আলোচনায় আপনাকে ডাকে কমল কুমার মজুমদারের বিষয়ে কিছু বলার জন্যে, তখন কী করবেন ? প্রথম দিকে বলতে দিলে হালকা একটু কেশে ভূমিকা করবেন। যদি পরের দিকে বলতে বলে তখনও একটু কেশে সামনে থাকা মানুষগুলোর দিকে তাঁকিয়ে, তাদের মনোভাব বুঝে বলবেন, ‘শুভেচ্ছা, সবাইকে। ভূমিকা ছাড়াই শুরু করছি, কেননা কিছু ইম্পটেন্ট কথা বলবো বলে স্থির করেছি, যদিও সময়ের অভাব। তাই অল্প সময় নিয়ে কথাগুলো শেষ করে দিচ্ছি। আসলে কমলকুমার মজুমদার ছিলেন ‘কাল্টফিগার’। ‘…লেখালেখির প্রথম পর্বের কয়েকটি লেখার কথা না ধরলে, বলা যায়, কমলকুমার মজুমদার ১৯৫৭-৫৮ সাল থেকে নিয়মিত লেখা শুরু করেন। বিখ্যাত গল্প ‘তাহাদের কথা’ বা ‘মতিলাল পাদরী’ লিখে ঐ পর্ব শুরু। অবশেষে ১৯৫৯ সালে লেখেন তাঁর নজর কাড়া ধ্রুপদী উপন্যাস ‘অন্তর্জলী যাত্রা’Ñ খ্যাতি ও নিন্দা সমান্তরালভাবে এসময় থেকেই তাঁর দিকে প্রবলভাবে আসতে থাকে। তিনি হ’য়ে ওঠেন সবচেয়ে বিতর্কিত এবং অন্যদ্বীপের একাকী লেখক। তিনি নিন্দা-স্তুতিকে সমানভাবে গ্রহণ করে বাকী জীবনটুকু স্বল্প হ’লেও মূলত লেখাতেই নিজেকে সমর্পিত করেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে তাঁর লেখালেখির জীবন মোটামুটি কুড়িটি বছর। ‘মূলত’ বলতে হচ্ছে একারণে, যে, এসময়েতেও লেখালেখির পাশাপাশি নাটক প্রযোজনা করেছেন, ছবি এঁকেছেন, উড্কাট্-এ ব্যস্ত রেখেছেন নিজেকে, বই-এর অলংকরণ বা প্রচ্ছদও করেছেন। অবশ্য এসব ছাড়াও তাঁর অন্যান্য কার্যকলাপগুলি যেমন চলচ্চিত্র নির্মাণ, ডকুমেন্টরীর চিত্রনাট্য প্রস্তুত, শিল্পসমালোচক রূপে বিখ্যাত সাপ্তাহিকে যুক্ত হওয়া, ছবি-ছড়ার বই সংকলন ও সম্পাদনা এসব বিচিত্র কিন্তু সৃষ্টিশীল কাজের মাধ্যমে অনেক আগেই তিনি অর্জন করেছেন ‘কাল্টফিগার’-এর শিরোপা। ’ একটু থেমে সামনের দু’একজনের দিকে তাঁকিয়ে আবার বলবেন, ‘ভাবলে অবাক হ’তে হয় পুরোপুরি নাগরিক জীবন যাপন করে এই লেখক তাঁর সাহিত্যে বরাবর প্রান্তিক মানুষের কথা, তাদের জীবনের আলেখ্য শুনিয়েছেন তাঁর স্বল্পসংখ্যক পাঠককে নবতম ভাষায়, নতুনতম আখ্যানরীতিতে গড়পড়তা পাঠককুলকে ক্রমাগত অগ্রাহ্য করে, বাণিজ্যিক সাহিত্যের গড্ডালিকায় আদৌ গা না ভাসিয়ে। কিছুটা বেপরোয়া হয়েও। ’১
    এবার একটুখানি থেমে যাবেন আর ভাবখানা এমন করবেন একদমে অনেক বলেছি। একটু শ্বাস নিয়ে আবার যথারীতি চন্দ্রবিন্দু যোগ করে একটু ভাব এনে বলতে থাকবেন ‘…এঁর বই গোয়েন্দা লাগিয়ে সংগ্রহ করতে হয়। অনেক সাহিত্যের বড় গবেষকও এঁর নাম শোনেননি। … সদ্য তরুণ কবি ও লেখকেরা এঁর অন্ধ-ভক্ত। ইনি ইংরেজের অধীনে স্কুল-কলেজে পড়তে অস্বীকার করেছিলেন। ইংরেজি ভাষা না লিখে লিখেছেন সংস্কৃত ও ফরাসী। ইনি ইচ্ছে করে এমনই এক দূর্বোধ্য ভাষায় এঁর কাহিনীগুলি লেখেন যে সাধারণ পাঠকের পক্ষে তাতে দাঁত ফোটানো অসম্ভব। দূর্বোধ্যতায় ইনি জেমস জয়েসকেও ছাড়িয়ে গেছেন। কিন্তু যতœ করে যারা এঁর রচনা কিছুটাও পড়েছে তারাও স্তম্ভিত হয়ে স্বীকার করেছে যে এরকম রসবোধ ও বৈদগ্ধ্যের সম্মিলন খুব কমই দেখা যায় যে-কোনো সাহিত্যে। কিন্তু কমলকুমার মজুমদার চান না তাঁর লেখা দুশো তিনশো জনের বেশি পাঠক পড়ুক ! এরকম অদ্ভুত লেখক আর কোথাও আছে কিনা জানি না। ’২

    এ পর্যন্ত বলে একটু তাকিয়ে বুঝে নেবেন সামনের মানব-মানবীরা বিরক্ত কী না। বিরক্ত না হলেও আর এগোবেন না। বলবেন, সবশেষে আমি কমল মজুমদারের নিয়ে একটা কৌতুক, না ঠিক তাঁর কৌতুক নয় তাঁরই ঘটানো একটা মজার ঘটনা বলে শেষ করবো। বোন শানু লাহিড়ী লিখেছেন, “… একদিন বাস থেকে নেমে কী হাসি ! বাড়ির সামনেই বাস থামতÑ দাদা নামার সময় বলছে, ‘আস্তে আস্তে, একদম আস্তে, লেডিস হ্যায়। ’ দাদা নামার সঙ্গে সঙ্গে কন্ডাক্টর জিজ্ঞেস করল কই আপনার লেডিস ? দাদা বুকে হাত দিয়ে বলল, দিল মে। কন্ডাক্টর খুব হেসেছে, দাদাতো বটেই। ” কমল মজুমদারের নিজের ভাবনা ছিল এমন, ‘পৃথিবীতে আমার কেউ ছিল না বললে ভুল করা হবে, বলব, আমি কারোর ছিলাম না। ’
    ‘আকাশ ভোলা পাখির কি কেউ থাকে ! তার গান কি সবাই বোঝে !’ আমিও কি কিছু পেরেছি বোঝাতে ? অনেক বেশি ভালো থাকবেন সবাই।

    পাদটিকা : সুন্দর বক্তব্যের পর যখন বেরিয়ে এলেন বাইরে ঠিক সে সময় সুন্দর ছেলেটা জানতে চাচ্ছে ‘বলার সময় আপনি যে কাল্টফিগার বলেছিলেন ওটা কী Cult হবে, সেটার মানে কী ? কী বিপদ! বলবেন, জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী স্যারের সম্পাদিত ফিফ্ট রিপ্রিন্ট জানুয়ারি দুই হাজার বারো’র-Bangla Academy English-Bangla Dictionary’র ১৮২ পাতাটা দেখলে বিস্তারিত পাবে।

    ১. সম্পাদকের কথা: প্রতিবিম্ব : কমলকুমার মজুমদার শতবর্ষ স্মরণ সংখ্যা, দ্বিতীয় পর্যায়, বৈশাখ ১৮২১, সম্পাদনা: প্রশান্ত মাজী, কলকাতা। পাতা: ৫।
    ২. শহর কেন্দ্রিক: সাহিত্যের কোনও শর্ত নেই: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, দে’জ, কলকাতা: এপ্রিল ২০১১। পাতা: ১০৩।

  • সাতক্ষীরায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে আটক-৫৬

    মো. মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয়ে ১ জমায়াতকর্মী এবং ৩ মাদক মামলার আসামিসহ ৫৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গত রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।

    নিয়মিত চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে পরিচালিত এ অভিযান থেকে বেশকিছু মাদকদ্রব্য আটক করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

    এ অভিযান থেকে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ৫১ পিস ইয়াবাসহ ১৫ জন, কলারোয়া থেকে ২১ পিস ইয়াবাসহ ৮ জন, তালা থানা থেকে ৫ জন, কালিগঞ্জ থানা থেকে ৫ জন, শ্যামনগর থানা থেকে ১ জামায়াতকর্মীসহ ৯ জন, আশাশুনি থানা থেকে ৭ জন, দেবহাটা থানা থেকে ৩ জন এবং পাটকেলঘাটা থানা থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

    আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান জানান, নাশকতা, সন্ত্রাস এবং মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান নিয়মিত রয়েছে। সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে।

  • আদিবাসী কোটা সংরক্ষণের দাবিতে শ্যামনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও  সমাবেশ

    আদিবাসী কোটা সংরক্ষণের দাবিতে শ্যামনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

    শ্যামনগর ব্যুরো: সরকারি চাকরিতে এবং উচ্চ শিক্ষায় আদিবাসী কোটা সংরক্ষণের দাবিতে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা জেলা আদিবাসী ছাত্র পরিষদ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

    জেলা আদিবাসী ছাত্র পরিষদ শ্যামনগর উপজেলা শাখার সভানেত্রী বাহামনি মুন্ডার নেতৃত্বে আদিবাসী কোটা সংরক্ষণের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি উপজেলা সদরের প্রধান-প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়।

    বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি চাকরি ও উচ্চ শিক্ষায় আদিবাসীদের ৫% কোটা বহাল রাখার দাবিতে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সুন্দরবন আদিবাসী মুন্ডা সংস্থা (সামস) এর নির্বাহী পরিচালক কৃষ্ণপদ মুন্ডা, সভাপতি গোপাল চন্দ্র মুন্ডা, সহ-সভাপতি রাম প্রসাদ মুন্ডা, আদিবাসী ছাত্র পরিষদ সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভানেত্রী বাহমনি মুন্ডা, সাধারণ সম্পাদিকা মিনতী মুন্ডা ও ছাত্র পরিষদের সদস্য উৎপল মুন্ডা প্রমুখ।

    সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘পৃথিবীর বহু দেশেই আদিবাসীদের জন্য শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে কোটা সংরক্ষিত আছে। তাছাড়া বাংলাদেশের মহান সংবিধানের ২৮ (৪) ও ২৯ (৩) (ক) অনুচ্ছেদে নারী ও শিশুদের পাশাপাশি আদিবাসীদের মতো অনুগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গহণের কথা বলা হয়েছে। তাই আদিবাসীদের ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা একটি সাংবিধানিক অধিকার। আমরা আশা করছি বর্তমান সরকার আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ করবেন।’

    এসব কর্মসূচিতে মুন্ডা সম্প্রদায়ের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

  • বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবিতে মানববন্ধন

    মশাল ডেস্ক:  তৃতীয় ধাপে জাতীয়করণ বঞ্চিত সকল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন পালন করেছে শিক্ষকরা।

    মানববন্ধনরত শিক্ষকরা-দক্ষিণের মশাল

    সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখা এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

    মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বাংলদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি আ.জা.ম, নাসির উদ্দিন। বক্তব্য রাখেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনোরঞ্জন কুমার দাশ, শিক্ষক এম মুনছুর আলী, নজরুল ইসলাম, সাগরিকা দাশ, সাবিনা ইয়াসমিন প্রমুখ।

    মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ২৬ হাজার ১৯৩ টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর সকল শর্ত পূরণ করার পরও প্রায় ৪ হাজার ১৫৯ টি বেসরকারি বিদ্যালয় জাতীয়করণের আওতায় আনা হয়নি। অতিদ্রুত এসব বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ করা হোক।

    গত ৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষকদের উপর হামলার সুষ্ঠু তদন্ত করে এর যথাযথ বিচার করতে হবে। হামলার সথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এবং গ্রেফতারকৃত ৫ জন শিক্ষক নেতাকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।

  • জেলায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে আটক-৫৬

    সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা জেলাব্যাপী বিশেষ অভিযান চালিয়ে পাঁচ মাদক মামলার আসামি ও বিএনপি-জামায়াতের পাঁচ নেতা-কর্মীসহ ৫৬ জনকে আটক করা হয়েছে পুলিশ। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে ফেন্সিডিল ও ইয়াবাসহ বেশ কিছু মাদক দ্রব্য।

    বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত জেলার আটটি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে এসময় ৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
    এ অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ১৫ জন, কলারোয়া থানা থেকে ৭ জন, তালা থানার ৫ জন, কালিগঞ্জ থানার ৭ জন, শ্যামনগর থানার ৯ জন, আশাশুনি থানার ৭ জন, দেবহাটা থানার ২ জন ও পাটকেলঘাটা থানা থেকে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান তাদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।

  • বকচরা মাদ্রাসার ৯ শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ

    বকচরা মাদ্রাসার ৯ শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ

    সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা সদরের বকচরা মাদ্রাসার নয়জন শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি মাদ্রাসায় তারা গোপন মিটিং করছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বকচরা আহমাদিয়া দাখিল মাদ্রাসা হতে তাদের আটক করা হয়।সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মহিদুল ইসলাম জানান, জামায়াত সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন শিক্ষক বকচরা আহমাদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় চাকুরি করেন। তারা বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাসার একটি কক্ষে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন। এ সময় তাদের আটক করা হয়।আটককৃতদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে জামায়াতের দুই নেতার নাম জানা গেছে। এরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর পশ্চিম জামায়াতের সেক্রেটারি মওলানা শাহাদাত হোসেন ও  আগরদাঁড়ি ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মওলানা আবদুস সামাদ। আটককৃত অন্য শিক্ষকরা হলেন সহকারী শিক্ষক গোলাম সরোয়ার, হাফিজুর রহমান, আবুল খায়ের, মোজাম্মেল হক, মোজাফফর হোসেন, আজম ফারুক ও আবদুল হামিদ। তারা সবাই ওই মাদ্রাসার শিক্ষক। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।মাদ্রাসার সুপার মো. রমজান আলি জানান, তিনি গত ১ এপ্রিল ওই মাদ্রাসায় যোগদান করেছেন। যাদের আটক করা হয়েছে তাদের কেউ জামায়াত করেন কিনা তা তিনি নিশ্চিত নন। তিনি জানান আটকের সময় সবাই ক্লাসরুমে ক্লাস নিচ্ছিলেন। তবে এ ঘটনার সময় তিনি ছুটিতে ছিলেন।পুলিশ পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম আরও জানান, যাচাই বাছাই শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়াই কেনা যাবে সিম

      মোবাইল সিম

    নতুন মোবাইল সিম কিনতে লাগবে না জাতীয় পরিচয়পত্র

    গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা জোরদার করতে চালু হয়েছে ই-নিবন্ধন। এখন থেকে নতুন মোবাইল সিম কিনতে বা নিবন্ধন করতে কোনও ফরম পূরণ করতে হবে না কিংবা লাগবে না জাতীয় পরিচয়পত্র।

    সম্প্রতি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এ প্রসঙ্গে একটি নির্দেশনা দেশের সব মোবাইলফোন অপারেটরগুলোকে পাঠিয়েছে। চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে অপারেটরগুলো নতুন নিয়মে সিম বিক্রি ও নিবন্ধন করছে।

    গ্রামীণফোন সূত্রে জানা গেছে, গ্রাহকদের জন্য ই-নিবন্ধন বা ইলেকট্রনিক রেজিস্ট্রেশন সেবা নিয়ে এসেছে গ্রামীণফোন। অপরদিকে অপারেটরটি দেশে ইলেকট্রনিক ও কাগজবিহীন সিম রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা চালু করেছে বলে বাংলালিংক সূত্রে জানা গেছে।

    জানা গেছে, ই-নিবন্ধন একটি কাগজবিহীন সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া যেখানে গ্রাহকদের নতুন সিম কেনার জন্য ছবি কিংবা কোনও আইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স) দিতে হবে না।

    নতুন সিম বিক্রির ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে ই-নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় এখন থেকে গ্রাহক সিম বিক্রেতাকে শুধু তার নাম, আইডি নম্বর, জন্ম তারিখ, বর্তমান ঠিকানা ও আঙুলের ছাপ দেওয়ার মাধ্যমেই নতুন সিম কিনতে পারবেন। এছাড়া, গ্রাহককে গ্রাহক আবেদন পত্রও (এসএএফ) পূরণ করতে হবে না।

    সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াই গ্রাহক সম্পন্ন করতে পারবেন বিনা খরচে। তবে নতুন সংযোগের দাম কিংবা প্রাসঙ্গিক সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য হবে। ধীরে ধীরে এ প্রক্রিয়া মালিকানা হস্তান্তরসহ (গ্রাহক ও করপোরেট), দ্বৈত দাবি, মৃত্যুর মামলা নিষ্পত্তি, এমএনপি ও ঠিকানা পরিবর্তন প্রভৃতি ক্ষেত্রেও কার্যকর হবে।

  • জেলার ৩৯ ব্যবসায়ীর ব্যাংক একাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেন

    নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার ৩৯ জন ব্যবসায়ীর ব্যাংক একাউন্ট তদন্ত করতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গত সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরাতে পৌছে তালিকাভূক্ত ৩৯ ব্যবসায়ীর ব্যাংক হিসাব নাম্বার তদন্ত শুরু করছেন।

    যাদের ব্যাংক একাউন্ট তদন্ত হচ্ছে তাদের ব্যাংকিং লেনদেন অস্বাভাবিক এবং সন্দেহজনক বলে একটি বিশ্বাসযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। তিন সদস্যের ওই তদন্ত টিমে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক গাজী মনিরুদ্দীন, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক সালেহ উদ্দীন এবং অর্থমন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. এম ডি বাশিরুল আলম।

    এই তদন্ত টিম প্রথম দিনে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড সাতক্ষীরা শাখায় তদন্ত করেন। ৩৯ জনের তালিকার মধ্যে কমপক্ষে ১০ জন ব্যবসায়ীর ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড সাতক্ষীরা শাখায়। বাকীদের অন্যান্য ব্যাংকে একাউন্ট রয়েছে। দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার তারা ন্যাশনাল এবং সিটি ব্যাংকে অনুসন্ধান চালিয়েছেন।
    তাদের একাউন্টে কি ধরনের লেনদেন হয়েছে। এসব টাকা কোথা থেকে একাউন্টে জমা হয়েছে। কি পরিমাণ টাকা লেনদেন হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। খুঁজা হচ্ছে তাদের লেনদেনের প্রকৃত উৎস। তালিকাভূক্তদের বিরুদ্ধে ভারতে হুন্ডির টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে।

    তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, যে ৩৯ জনের ব্যাংক একাউন্ট তদন্ত শুরু হয়েছে তাদের অনেকেই রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। কোটি-কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। অতি অল্প দিনেই বিলাশবহুল গাড়ি ও বাড়ির মালিক হয়েছেন। এদের অনেকেই বর্তমানে বৈধ ব্যবসার নামে কোটি কোটি টাকার হুন্ডি, চোরাচালানী, স্বর্ণ পাচার, মাদকসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছেন। সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা অবৈধ এসব টাকার উৎস খুঁজতে এদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে বলে জানাগেছে।

    বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন ব্যাংকে পাঠানো তালিকাভূক্ত ৩৯ ব্যবসায়ীর মধ্যে অনেকেরই রয়েছে জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় জুয়েলার্সের দোকান। যারা জুয়েলারী ব্যবসার আড়ালে হুন্ডি ও স্বর্ণ চোরাচালানী ব্যবসায় জড়িত। এছাড়া রয়েছে ভোমরার একাধিক সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী, কয়েক জন গরু ব্যবসায়ী, কয়েকজন বর্তমান ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান, একজন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও একজন জেলা পরিষদ সদস্য। এদের মধ্যে কেউ-কেউ রয়েছেন হুন্ডি, অস্ত্র, মাদক,স্বর্ণসহ বিভিন্ন চোরাচালানীর সাথে জড়িত।

    যেসব ব্যবসায়ীর ব্যাংক একাউন্ট তদন্ত শুরু হয়েছে তারা হলেন, সাতক্ষীরা জেলা শহরের খান মার্কেটের অংকন জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী গৌর দত্ত, অমিত জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী জয়দেব দত্ত, তালার কুমিরার আদিত্য মজুমদার, ব্রাদার্স জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী আশুতোষ দে, আলিপুরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ, জনপ্রিয় জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী সুমন কর্মকার ও বাবু কর্মকার, শ্যামনগরের নকীপুরের বিশ্বজিৎ মন্ডল, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম মোর্শেদ, শ্রী জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী দীন বন্ধু মিত্র, ঝাউডাঙ্গার এম ভি জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী মুকুন্দ ভারতী, ঝাউডাঙ্গার সাগর জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী রবিন্দ্র নাথ দে, আশাশুনির নিউ দে জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী দেব কুমার দে, কলারোয়ার সন্ধ্যা জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী হরেন্দ্র নাথ রায়, আধুনিক জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী গোপাল চন্দ্র দে, তালার দীপা জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী গনেশ চন্দ্র শীল, তালার নিউ জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী বাসুদেব দত্ত, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারী এলাকার মো. রাশেদুল ইসলাম, পদ্মশাখরা এলাকার মো. লিয়াকত হোসেন, একই উপজেলার ঘোনার মো. হাবিবুর রহমান, কলারোয়ার বলিয়ানপুরের জালালউদ্দিন গাজী, কলারোয়ার চন্দ্রনপুরের গরু ব্যবসায়ী নাসির, একই উপজেলার কাকডাঙ্গার গরু ব্যবসায়ী ইয়ার আলী মেম্বর, ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোশিয়েশনের সভাপতি কাজী নওশাদ দেলোয়ার রাজু, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ সদস্য আল ফেরদৌস আলফা, বৈকারীর ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান অসলে, ভোমরার ইউপি চেয়ারম্যান ইসরাইল গাজী, কলারোয়ার সোনাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা জেলা শহরের রয়েল স্যানেটারীর স্বত্ত্বাধিকারী মো. নজরুল ইসলাম, ভোমরার এ.এস ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী আজিজুল ইসলাম, বাঁকালের ফিরোজ ইন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী ফিরোজ হোসেন, বাঁকালের কে হাসান ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী খালিদ কামাল, ভোমরার মামা-ভাগ্নে ভান্ডারের স্বত্ত্বাধিকারী আজহারুল ইসলাম, মেসার্স কাজী ইন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী কাজী নওশাদ দেলোয়ার রাজু, মেসার্স সুলতান ইন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী ইসরাইল গাজী, মেসার্স সাব্বির ইন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী শাহানুর ইসলাম শাহিন, মেসার্স নাজিম ইন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী গোলাম ফারুক বাবু (দেবহাটার পারুলিয়ার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ), মেসার্স রিজু এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী আবু মুসা এবং মেসার্স রোহিত ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী রাম প্রসাদ প্রমুখ।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাংক ব্যবস্থাপক জানান, গত সপ্তাহে ৩৯ জনের এই তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন ব্যাংকে পাঠানো হয়। এসব ব্যসায়ীদের ব্যাংক লেনদেন (ব্যাংক একাউন্ট ওপেন থেকে আজ পর্যন্ত ) অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক বলে সূত্র জানায়।

    এসব ব্যবসায়ীদের ব্যাংকের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, যে কোন সময় বাংলাদেশের ব্যাংকের তদন্ত টিম সরেজমিন এসে তালিকাভূক্তদের ব্যাংক একাউন্ট তদন্ত করবেন। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত টিম সাতক্ষীরা পৌছে গেছে। তদন্ত টিম সোমবার সকাল থেকে তদন্ত কাজ শুরু করেছেন। তবে তদন্তকারী ওই টিমের সদস্যদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

    গত সপ্তাহে ৩৯ জন ব্যবসায়ীর এই তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন ব্যাংকে পাঠানোর পর ব্যাংক গুলোতে তোলপাড় শুরু হয়।

    সাতক্ষীরা ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজার (অপারেশন) ছবিউল ইসলাম খাঁন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার ইসলামী ব্যাংকে গিয়েছিলেন। তারা তাদের তালিকা অনুযায়ী ইসলামী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখার যারা গ্রাহক রয়েছেন তাদের হিসাব সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য ও খোঁজ খবর নিয়েছেন।
    প্রসঙ্গত, সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের বরাত দিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে হুন্ডির টাকা পাচারকারীদের একটি তালিকা প্রকাশিত হয়। ওই তালিকায় সাতক্ষীরার ৩৯ জন ব্যবসায়ীর নাম দেয়া হয়েছিল।

  • হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেফতারের ২০ ঘন্টা পর মুক্তি!

    নিজস্ব প্রতিনিধি: ১৭ বছর আগে চাঞ্চল্যকর একটি হত্যা মামলার পলাতক আসামি পুলিশের হাতে ধরা পড়েও হাত ফসকে বেরিয়ে গেলো। পুলিশ বলেছে ‘তাকে ভুল করে ধরা হয়েছিল । তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা পাওয়া যায়নি’ । এই দোহাই দিয়ে সদর থানা থেকে জামালউদ্দিন নামের ওই আসামিকে ছেড়ে দেওয়া হয় আজ মঙ্গলবার ।

    সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাড. জিল্লুর রহমান জানান ২০০১ সালের ৪ নভেম্বর রাতে তার সহোদর ভাই মাহবুবার রহমানকে সন্ত্রাসীরা তলুইগাছার খড় বিলের ঘেরের মধ্যে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরে তার মরদেহ পানিতে চুবিয়ে রাখে। এ ঘটনায় তিনি নিজে বাদি হয়ে সাতক্ষীরা থানায় একটি মামলা করেন ( সেশন কেস ৭৪/২০০৪ ও জিআর কেস ৫৪৯/২০০১)। এ মামলার আসামি কলারোয়া উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের পাচু গাজির ছেলে মো. জামালসহ ১১ জন ।

    তাদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন , পাঁচজন জেল খেটে জামিনে রয়েছেন এবং চারজন পলাতক । জামালউদ্দিন পলাতকদের একজন। জামাল ঘটনার পর থেকে কখনও ভারতে , কখনও অন্য কোনো এলাকায় পালিয়ে থাকতো। সম্প্রতি সে তার দ্বিতীয় বাড়ি সদর উপজেলার তলুইগাছায় এলে পুলিশ খবর পেয়ে গত সোমবার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেফতার করে। তিনি অভিযোগ করে বলেন প্রায় ২০ ঘন্টা থানা হাজতে আটক থাকার পর মঙ্গলবার দুপুরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তার অভিযোগ এ ব্যাপারে অনেক টাকার লেনদেন হয়েছে। আর এই লেনদেন করেছেন বাঁশদহা ইউপি সদস্য আবদুস সামাদ ও কুখ্যাত চোরাচালানি বিপুল।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা থানার এসআই জিয়ারুল ইসলাম জানান ‘ জামালউদ্দিনকে আমরা ভুল তথ্যের ভিত্তিতে ধরেছিলাম। পরে থানায় সার্চিং দিয়ে তার নামে কোনো মামলা পাওয়া যায়নি। এজন্য তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে’।
    তবে মামলার বাদি অ্যাড. জিল্লুর রহমান জানান তিনি মামলার যাবতীয় কাগজপত্র পুলিশের কাছে দিয়েছেন। এমনকি একজনের ১৬৪ ধারার জবানবন্দীর কপিও রয়েছে পুলিশের কাছে। তারপরও তাকে ছেড়ে দেওয়া দুঃখজনক। বিষয়টি তিনি আদালতের বিচারকের দৃষ্টিতে আনবেন বলে জানান।

    গ্রামবাসী জানান জামালউদ্দিন কয়েকটি খুন , ডাকাতি, ছিনতাই চোরাচালান মামলার নাসামি। তার সন্ত্রাসী দাপটে আমরা টিকতে পারছি না। সে ছাড়া পেয়ে এখন আরও কি ঘটায় সেটাই দেখার বিষয়।

  • কালিগঞ্জে অস্ত্রসহ ডাকাত আটক

    মশাল ডেস্ক: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলায় অস্ত্র ও গুলিসহ এক ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (০৪ সেপ্টেম্বর) কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের তেঘরিয়া গ্রামের তার নিজ বাড়ি থেকে তাকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়।

    গ্রেফতারকৃত ডাকাতের নাম আব্দুল মাজেদ তরফদার (৫২)। সে কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের তেঘরিয়া গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে।

    গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামে অভিযান চালায়। এ সময় মাজেদ তরফদারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার বসত ঘরের বারান্দার চালের মধ্যে লুকিয়ে রাখা একটি পাইপগান, একটি ইয়ারগান ও তিন রাউন্ড গুলিসহ তাকে আটক করা হয়।
    তিনি আরো জানান, আটক মাজেদ তরফদার উদ্ধাকৃত অস্ত্র গুলো ডাকাতি কাজে ব্যবহার করে বলে জানা গেছে।

  • তালায় সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাবসায়ী নিহত

    তালায় সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাবসায়ী নিহত

    তালা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় পিক-আপ ও ইঞ্জিন ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক মাছ ব্যাবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত মাছ ব্যাবসায়ীর নাম অরুন কুমার দেবনাথ (৪৫)।

    মঙ্গলবার দুপুরে তালা উপজেলার জাতপুর নামক স্থানে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ সময় আহত হয়েছেন পার্থ বিহারী নামে আরো একজন।

    নিহত মাছ ব্যবসায়ী অরুণ কুমার দেবনাথ খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলা সদরের অনিল কুমার দেবনাথের ছেলে।

    তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তালা বাজার থেকে মাছ ব্যাবসায়ী অরুন দেবনাথ ইঞ্জিভ্যান যোগে চুকনগরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে জাতপুর নামক স্থানে পিক-আপ ও ইঞ্জিল ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই নিহত হন অরুন। এ সময় আহত হয়েছে আরো একজন। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেছে।