মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৭ জামায়াতকর্মী এবং ৯ মাদক মামলার আসামীসহ ৬৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার সন্ধ্যা হতে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত জেলার আটটি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ২০, কলারোয়া থানা থেকে ৭, তালা থানা থেকে ৩, কালিগঞ্জ থানা থেকে ৮, শ্যামনগর থানা থেকে ১১, আশাশুনি থানা থেকে ৯, দেবহাটা থানা থেকে ৩ এবং পাটকেলঘাটা থানা থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
এ অভিযান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১১ পিস ইয়াবা, ১০৫ গ্রাম গাজা, ৫টি মহিষ এবং ১টি মিনি ট্রাক। আটককৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান জানান, জেলার ৮টি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।
Category: সাতক্ষীরা
-
সাতক্ষীরায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৭ জামায়াতকর্মীসহ আটক-৬৪
-

স্ত্রীকে পতিতালয়ে বিক্রির দায়ে স্বামীসহ দুইজনের যাবজ্জীবন
মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরায় স্ত্রীকে ভারতে পাচার করে পতিতালয়ে বিক্রির দায়ে স্বামীসহ দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- ও অর্থদ- দিয়েছে আদালত। তবে, এ মামলার অপর তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার এ রায় ঘোষণা করেন।সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়নের বালুইগাছা গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে তঞ্জুরুল ইসলাম বাবু ও আমের আলী সরদারের ছেলে শওকত হোসেন।মামলার বিবরণে জানা যায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়নের বালুইগাছা গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে তঞ্জুরুল ইসলাম বাবু তার স্ত্রীকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক লাখ টাকার বিনিময়ে ২০০৫ সালের ২৫ আগস্ট স্থানীয় শওকত হোসেন, মক্ষ্মী রানী সুন্দরী ওরফে ময়না, আব্দুল গফুর ও সাগর মাতব্বরের সহযোগিতায় ভারতের একটি পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়। পরে সে পালিয়ে দেশে ফিরে আসে। এ ঘটনায় তার খালু আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামের মৃত মোহাম্মদ গাজীর ছেলে আতিয়ার রহমান গাজী বাদী হয়ে থানায় উল্লিখিত পাঁচজনের নামে মামলা দায়ের করেন।বুধবার এ মামলায় ছয়জন স্বাক্ষীরা সাক্ষ্য গ্রহণ ও নথি পর্যালোচনা করে তঞ্জুরুল ইসলাম বাবু ও শওকত হোসেনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাদের দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদ-ের আদেশ দেন। তবে, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট জহুরুল হায়দার বাবু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ রায়ের সময় আসামিরা পলাতক ছিলো। -
প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তির মাধ্যমে জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে পরিণত করতে হবে-জেলা প্রশাসক
মোঃ মুশফিকুর রহমান রিজভি: ‘পরিকল্পিত পরিবার সুরক্ষিত মানবাধিকার’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সাতক্ষীরায় বিশ্ব জনসংখ্যা পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার সকালে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের আয়োজনে সাতক্ষীরা শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক হতে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালি শেষে সদর উপজেলা মিলনায়তনে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের উপর বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ডা. রওশন আরা জামান।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ আজ দূর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধ হয়েছে পরিকল্পিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের ফলে। জনসংখ্যা এখন অভিশাপ নয়। প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তির মাধ্যমে জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে পরিণত করতে হবে’।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তহমিনা খাতুন, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. জি.এম মুজিবুর রহমান (সিসি) প্রমুখ।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মেডিকেল অফিসার (এম.সি.এইচ.এফ.পি) ডা. মো. আমিনুল ইসলাম, মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. লিপিকা বিশ^াস, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ের পরিসংখ্যান সহকারি মো. ফারুক হোসেন, সুর্যের হাসি ক্লিনিক’র ম্যানেজার মফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
মাল্টি মিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে দিবসের মূল প্রতিপাদ্য উপাস্থাপন করেন সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার মো. নকিবুল হাসান। কর্ম-দক্ষতা ও সেবাদানে বিশেষ অবদানের জন্য মাঠ কর্মীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করা হয়। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মো. জিল্লুর রহমান। -

পর্যটন শিল্প ও বাণিজ্যে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে সাতক্ষীরার মুন্সীগঞ্জ

কলাগাছি ট্যুরিজম সেন্টার মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি)/রাকিবুল হাসান: সাতক্ষীরা জেলার ব্যাবসা-বাণিজ্য এবং পর্যটন স্থান হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে দেশের বৃহত্তম উপজেলা শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ।
মুন্সীগঞ্জের উপজেলা সদর শ্যামনগর হলেও শিল্প-বানিজ্যে দেশী-বিদেশী পর্যাটকদের স্থায়ী-অস্থায়ী আগমনের কারণে শ্যামনগর উপজেলা শহরকে টেক্কা দিয়ে মুন্সীগঞ্জ এখন শুধু শ্যামনগর নয় সমগ্র সাতক্ষীরা তথা বাংলাদেশের নাম করা স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে শুরু করেছে। সুন্দরবনের গাঁ ঘেষা এ উপকূলীয় অঞ্চলটিতে গড়ে উঠেছে সরকারি-বেসরকারী কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র। এর মধ্য উপজেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত স্বপ্নের আকাশ নীলা, বরসা ট্যুরিজম সেন্টার, বন বিভাগের নিয়ন্ত্রিত কলাগাছি ট্যুরিজম সেন্টার ইতিমধ্যে ভ্রমণ পিঁপাসুদের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছে।
একসময়ের অবহেলিত এ অঞ্চলটি এখন সাতক্ষীরার পর্যটন শিল্প এবং অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম। মাত্র দুই যুগের ব্যাবধানে পাল্টে গেছে এ মুন্সীগঞ্জের দৃশ্যপট। ১৯৯৫ সালের দিকে মুন্সীগঞ্জ বাজারে ছিল হাতে গোনা কয়একটি খড় পাতার ছাউনির দোকান ঘর। প্রতি বৃহস্পতিবাওে এখনে বসত সাপ্তাহিক হাট। কিন্তু এখন এখানে প্রতিদিন হাট বসে, পাওয়া যায় নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল। ১৯৯৫ সালে মুন্সীগঞ্জের অধিকাংশ সড়ক ছিল মাটির। বর্ষা মৌসুমে পায়ে হেটে এবং নৌকাযোগে যেতে হতো নীলডুমুর (বুড়িগোয়ালিনি) গাবুরা ও খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে। শুষ্ক মৌসুমে চলাচলের যানবহন ছিল বাইসাইকেলের পিছনে টিউব এর গদি বসিয়ে তৈরি হেলিকপ্টার।
চুনা, খোল পেটুয়া ও চাঁদনী মুখার পূর্বে কপোতক্ষ নদ পেরিয়ে যাওয়ার জন্য ছিল না নদী পারাপারের পাঁকা ঘাট ও ট্রলার। নদীর চরে কাপড় গুটিয়ে নৌকায় চড়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে পারাপার হয়ে জীবনযাপন করছে এই এলাকার মানুষ।সেসময় এ অঞ্চলে দেখা মিলতনা পর্যাটকদের। এ অঞ্চলের ৯৫ ভাগ মানুষ ছিল হত দরিদ্র। অধিকাংশ মানুষ ছিল সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল। সুন্দরবনের বাঘ-কুমিরদের সাথে লড়াই করেই তাদের জীবন চলত।

বিশ্বনন্দিত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের কাঁকড়ার ফার্ম। কিন্তু মাত্র দু’যুগের ব্যাবধানে এখনকার মুন্সীগঞ্জ এবং ১৯৯৫ এর মুন্সীগঞ্জের মধ্য আকাশ-পাতাল পার্থক্য। এখন মুন্সীগঞ্জের চর্তুপাশের কয়েক কিলোমিটারের মধ্য তিল পরিমাণ জায়গা ফাঁকা নেই। গড়ে উঠেছে বিভিন্ন পর্যাটন কেন্দ্র ও শিল্প কল-কারখানা।
এখানে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যাবহার করে কাকড়া চাষের ফার্ম। এখান থেকে প্রচুর পরিমাণ কাকড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করা হয়। এখানেই গড়ে উঠেছে বিশ্বনন্দিত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের কাঁকড়ার ফার্ম।
রয়েছে চিংড়ি চাষের ঘের ও চিংড়ি পোনা উৎপাদনের বিশ্বমানের হ্যাচারী।
মুন্সীগঞ্জকে কেন্দ্র কওে গড়ে উঠেছে অগ্রনী ব্যাংক, ট্রাষ্ট ব্যংক, গ্রামীন ব্যাংকসহ একাধিক ব্যাংক। শতাধিক বিমাসহ ছোট বড় দেশী-বিদেশী এনজিও।
কাঁকড়ার ফার্ম। এখানকার নিরাপত্তা ব্যাবস্থাও সন্তোষজনক। রয়েছে র্যাব-৬ এর ক্যাম্প, রয়েছে বিজিবি ১৭ কোম্পানির হেড কোয়ার্টার (নীলডুমুর)। মুন্সীগঞ্জ বাজারে রয়েছে বিজিবির ক্যাম্প। এছাড়াও নীলডুমুরে রয়েছে নৌ-পুলিশ ফাড়ি। যা এখন নৌ-থানা হিসেবে পরিচিত। এবং বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জ অফিস ও বুড়িগোয়ালিনি ষ্টেশন কর্মকর্তার কার্যালয় সহ মুন্সীগঞ্জ বন টহল ফাড়ি।
মুন্সীগঞ্জে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের রাত্রীযাপনের জন্যও রয়েছে সুন্দর ব্যাবস্থা। ভিআইপি গেস্টরুম বা শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত হোটেল আছে মুন্সীগঞ্জ সুশীলন টাইগার পয়েন্ট, বরসা রির্সোস সেন্টার ও আকাশ নীলায়।
জেলায় বা উপজেলায় কোন ভিআইপির’র পদার্পণ হলেই তারা বেড়াতে যান মুন্সীগঞ্জে সুন্দরবন ভ্রমনের জন্য। মুন্সীগঞ্জে চলতি বছরের প্রথম থেকেই দেশী-বিদেশীসহ ভিআইপিদের আগমন ঘটেছে উল্লেখ্যযোগ্য। বাংলাদেশ সরকারের একাধিক সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে.এম নুরুল হুদা এবং সর্বশেষ গত ৩১ শে মার্চ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সুশীলন টাইগার পয়েন্টে রাত্র যাপন করে ১লা এপ্রিল আকাশনীলা, কলাগাছিসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখেন।
এখন নিয়মিত দেশী-বিদেশী পর্যাটকদের পদাচারণায় মূখর দেশের সর্ববৃহৎ উপজেলার মুন্সিগঞ্জ এলাকা। হাজার হাজার পর্যটক ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণী-পেশার আগমন ঘটছে মুন্সীগঞ্জ ও নীলডুমুরে। প্রতিদিন দেশী বিদেশী ভ্রমণার্থীরা উপচে পড়া ভিড় জমাচ্ছে শ্যামনগর উপজেলার প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত মুন্সীগঞ্জের আকাশ নীলা, কলাগাছি ও বেসরকারী সংস্থা বরষা ট্যুরিজম সেন্টারে। সুন্দরবনের ভিতরে প্রবেশ করে সন্দরবন দেখার জন্য সরকারিভাবে কোন লঞ্চ বা ট্রলার না থাকলেও বেসরকারী সংস্থা বরষার রয়েছে ছোট বড় কয়েকটি লঞ্চ। তবে আকাশ নীলা সুন্দরবনের গাঁ ঘেষে চুনা নদীর চর ভরাট করা যাইগায় নির্মিত হওয়ায় এখানের আকর্ষণ আবার পর্যটকদের ভিতর অন্যরকম।
এ বিষয়ে প্রভাষক ড. এনামুল হক বলেন, সুন্দরবনের গাঁ ঘেষা অঞ্চলে বসে সুন্দরবনের দৃশ্য দেখতে খুব ভাল লাগে। এবং এখানে ভাস্কার্য নির্মিত সুন্দরবনের বাঘ হরিণ কুমিরসহ নানা প্রজাতির বন্যপ্রণী পর্যাটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণ।
সাতক্ষীরা-৪ আসনের সদস্য এসএম জগলুল হায়দার বলেন, মুন্সীগঞ্জের নাম আজ আর শুধুমাত্র শ্যামনগর ও সাতক্ষীরার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। এ মুন্সীগঞ্জ একদিন জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। -

জেলায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ১১ মাদক মামলার আসামীসহ আটক-৭২
মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি) : সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয়ে ১১ মাদক মামলার আসামী এবং ২ জামায়াত কর্মীসহ ৭২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা হতে বুধবার সকাল পর্যন্ত জেলার সবকটি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ২৯, কলারোয়া থানা থেকে ৭, তালা থানা থেকে ৩, কালিগঞ্জ থানা থেকে ১৮, শ্যামনগর থানা থেকে ৫, আশাশুনি থানা থেকে ৫, দেবহাটা থানা থেকে ২ এবং পাটকেলঘাটা থানা থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।উদ্ধার করা হয়েছে ১৫০ পিস ইয়াবা, ৪ বোতল ফেন্সিডিল, ৩৫০ গ্রাম গাজা, দুটি গরু, একটি মোটরসাইকেল এবং ২৫ প্যাক চা পাতা। আটককৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান জানান, জেলার ৮টি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে। -

যোগ্যনেতৃত্বের অভাবে মাঝিবিহীন নৌকার মতো ভাসমান অবস্থায় ভোমরা স্থল বন্দর
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: বিদায়ী অর্থবছরে রাজস্ব আহরণে হোঁচট খেয়েছিল ভোমরা শুল্ক স্টেশন। সরকারের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি এ শুল্ক স্টেশনটি। সংশ্লিষ্টদের মতে কাস্টমস্ প্রশাসন, সীমান্তরক্ষী বিজিবি আর সিএন্ডএফ কর্মকর্তাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে থমকে গেছে আমদানী বানিজ্য।সীমান্ত প্রশাসনের অহেতুক হয়রাণী সময়ক্ষেপণ এবং বাড়তি নজরদারীতে ভোমরা বন্দরটি পড়েছে মুখ থুবড়ে। আমদানীকারক ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহিত হয়ে ভোমরা বন্দর থেকে পিছুটান নিয়েছে। অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা পিছুটান নেওয়ায় আমদানী বানিজ্য এখন বিপর্যয়ের মুখে।
ভোমরা স্থল বন্দর ভোমরা স্থল বন্দরের রাজস্ব আহরণের গতি দেখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮০৭ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ কওে দেয়। কিন্তু সে অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পুরণ করতে পারেনি এ রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বেঁধে দেওয়া লক্ষমাত্রা ৮০৭ কোটি টাকা হলেও শুল্ক স্টেশনটি আহরণ করেছে ৭৯৫ কোটি টাকা। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে প্রায় ১২ কোটি টাকা।রাজস্ব ঘাটতির এ দুঃসময়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ভোমরা স্থল বন্দরে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১০৮৪.৩৯ কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ১২ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা রাজস্ব আহরণ করেছে। ভোমরা কাস্টমস্ কর্তৃপক্ষ জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভোমরা স্থল বন্দরে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১০৮৪ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিলেও রাজস্ব ঘাটতির আশংকা রয়েছে। কেননা প্রতিদিন প্রায় ৩ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হলেই তবে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পুরণ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। কিন্তু জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে আদায় হয়েছে মাত্র ১২ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা।এ বন্দরের অধিকাংশ সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ দিনের পর দিন আমদানী বানিজ্য কমে যেয়ে ভোমরা বন্দরটি প্রাণহীন হয়ে পড়ছে। বহুমুখী চাপে আমদানী-রপ্তানী বানিজ্যে পড়ছে ভাটা। এক শ্রেণীর সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীরা ব্যক্তি স্বার্থ উদ্ধার করতে এখন মরিয়া। কাস্টমস্ প্রশাসনের সঙ্গে সিএন্ডএফ কর্মকর্তাদের নেই কোনো সমন্বয়। ক্ষমতার দাপট আর কুক্ষিত নেতৃত্বের প্রভাব খাটিয়ে চলছে আমদানী বানিজ্য। এছাড়া কাস্টমস্ প্রশাসনের সঙ্গে যে ব্যবসায়ীর সম্পর্ক আর যোগাযোগ ভালো সেই ব্যবসায়ী লুঠছে ফায়দা। মধ্যম সারির ব্যবসায়ীরা পড়ছে বিপাকে।অভিযোগে জানা যায়, বিজিবি, কাস্টমস্ প্রশাসন এবং সিএন্ডএফ কর্মকর্তাদের মধ্যে সমন্বিত মনোভাব এবং একে অপরের প্রতি সহযোগিতার সুফল না থাকায় নষ্ট হচ্ছে ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতিহিংসার দাবানলে পুড়ছে প্রগতিশীল বন্দরটির রাজস্ব খাত। এমন দূরাবস্থা দীর্ঘদিন চললে অচিরেই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপণীত হবে এ বন্দরটি। এছাড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে বৈষম্য ও বিভেদ থাকায় আমদানী বানিজ্য পরিচালনায় আসে ব্যাপক বাঁধা।সব মিলিয়ে সীমাহীন নৈরাজ্যের মধ্যে অবস্থান করছে ভোমরা বন্দরটি। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ভোমরা স্থল বন্দরটি দক্ষ ও যোগ্যনেতৃত্বের অভাবে মাঝিবিহীন নৌকার মতো ভাসমান অবস্থায় বিরাজ করছে। -

চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র ইমন হত্যা মামলায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র ইমন হত্যা মামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইননুনাগ ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক শাস্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন নিহত ইমনের বাবা শেখ ইকবাল হাসান লিটন।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি অফিসার সাইফুল ইসলামের প্রশংসা করে বলেন, এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাগেরহাটের সিআইডি ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম সঠিকভাবে তদন্ত করেছেন। তিনি সম্প্রতি এ মামলার বাদী আমার আপন ভাই শেখ আলমগীর হাসান আলমকে দীর্ঘ তদন্ত শেষে ইমন হত্যা মামলার মুলপরিকল্পনাকারী হিসাবে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠান। এ ঘটনার পর আমার আপন বড় ভাই জাহাঙ্গীর হাসান খোকন আমাকে ঘরের বাইরে থেকে তালা বন্ধ করে রাখে এবং পরে আমার স্ত্রীকে ও আমাকে ভুল বুঝিয়ে আদালতে নিয়ে ৪ টি ননজুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে সই করে নেয়। এর প্রতিবাদে আমি থানায় একটি জিডি করি। যার নং-২৯, তারিখ-০১.০৭.১৮।সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, আলম গ্রেফতারের দীর্ঘ ১২ দিন পর রোববার দুপুরের আলমের স্ত্রী তানিয়া সুলতানা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আমার ভাইকে একজন দায়িত্ববান লোক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। অথচ ইমন হত্যার এজাহার থেকে শুরু করে মামলা পরিচালনা পর্যন্ত কোন দায়িত্ব আমি তাকে দেয়নি। বরং এটাই সত্য যে আমি, আমার স্ত্রী এবং ছোট ছেলে রিমন কাউকে না জানিয়ে আমার ভাই আলম গত ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি নিজে বাদি হয়ে সুলতানপুরের শেখ বখতিয়ার রহমান বিপ্লব, শেখ মোস্তাফিজুর রহমান মুরাদ ও রাজা মোল্লা রনির বিরুদ্ধ থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। অথচ ইমন হত্যার বিষয়টি যে প্রথমে আমাাদের বাড়িতে খবর দেয় সেই আব্দুর রশিদ ওরফে মুচি রশিদ আদৌ আমার ছেলেকে চিনতোনা। সে একজন বাইরের লোক। তার বাড়ি সদর উপজেলার ধুলিহর গ্রামে।তিনি বলেন, ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি আমার ছেলে ইমন তার চাচা আলমগীর হাসান আলমের কাছে গিয়ে ফিরে আসেনি। পরদিন ইমনের লাশ আমতলা মৎস্য ঘেরে পাওয়া যায়।তিনি আরো বলেন, আমার ছেলে ইমনের সাথে আমার ভাই আলমের পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে ওই সময় বিরোধ তৈরী হয়। এ বিরোধের জেরেই আমার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে তিনি ছেলে ইমন হত্যাকা-ে জড়িতদের বিচার ও ফাঁসি দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে তার সাথে আরো উপস্থিত ছিলেন, শেখ বখতিয়ার রহমান বিপ্লব, শেখ মোস্তাফিজুর রহমান মুরাদ ও রাজা মোল্লা রনি। -

সাতক্ষীরায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে আটক-৪৭
নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা জেলাব্যাপী বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৯ মাদক মামলার আসামি ও ১ জামায়াত কর্মীসহ ৪৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
রবিবার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত জেলার আটটি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। উদ্ধার করা হয়েছে ইয়াবাসহ বেশ কিছু মাদক দ্রব্য। এসময় বিভিন্ন অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ৫ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আটককৃত আসামিদের মধ্যে সাতক্ষীরা সদর থানার ১৪ জন, কলারোয়া থানার ৮ জন, তালা থানার ৩ জন, কালিগঞ্জ থানার ৬ জন, শ্যামনগর থানার ৬ জন, আশাশুনি থানার ৭ জন, দেবহাটা থানার ১ জন ও পাটকেলঘাটা থানার ২ জন।
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান তাদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে। -

সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের দোবেকী এলাকা থেকে ৩ টি হরিণ ও ৩টি অস্ত্রসহ ২ চোরাশিকারী আটক
নিজস্ব প্রতিনিধি: সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের দোবেকী এলাকা থেকে ৩টি হরিণ, ৩টি একনালা বন্দুক ও একটি নৌকাসহ দুই চোরাশিকারীকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার ভোর রাতে সুন্দরবনের চুনকুড়ি নদী সংলগ্ন দোবেকী নামকস্থান থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
আটক চোরাশিকারীরা হলেন, শ্যামনগর উপজেলার কদমতলা গ্রামের ইমান গাজীর ছেলে মঞ্জু গাজী ও পাতাখালি গ্রামের আমজাদ গাজীর ছেলে মহিবুল্লাহ গাজী।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আব্দুল মান্নান জানান, সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের গহীনে বনদস্যু জাকির বাহিনীর সদস্যরা ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চুনকুড়ি নদী সংলগ্ন দোবেকী নামকস্থান পুলিশের একটি টহল দল সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় সেখান থেকে ৩টি জবাই করা হরিণ, ৩টি একনালা বন্দুক ও একটি নৌকাসহ দুই চোরাশিকারীকে আটক করা হয়।
তিনি আরো জানান, আটক দুই ব্যক্তির নামে শ্যামনগর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। -

ধরা-ছোয়ার বাইরে সুন্দরবনের দস্যুদের অস্ত্র সরবরাহককারী গডফাদাররা
নিজস্ব প্রতিনিধি: একটা সময় বনদস্যু বাহিনীর হাতে সম্পূর্ণ জিম্মি হয়ে পড়েছিল সুন্দরবনের পেশাজীবীরা। সরকারের আন্তরিকতায় বনদস্যুদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দেয়ায় ধীরে-ধীরে দস্যু মুক্ত হচ্ছে গোটা সুন্দরবন অঞ্চল।সম্প্রতি সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে সুন্দরবনের শীর্ষ ২৬টি দস্যু বাহিনী। এই প্রক্রিয়ায় সুন্দরবনে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল পরমিাণ গোলাবারুদ উদ্ধার হলেও অস্ত্র যোগানদাতা গডফাদাররা গ্রেফতার না হওয়ায় পুরোপুরিভাবে বন্ধ হচ্ছে না সুন্দরবনের দস্যুতা। এসব গডফাদাররাই আবারো নতুন নতুন বাহিনী তৈরি করে সুন্দরবনে অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। ফলে নতুন করে সুন্দরবনের পেশাজীবী জেলে, বাওয়ালী, মৌয়ালীরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।সুন্দরবনের সংশ্লিষ্ট জেলে, বাওয়ালীরা জানায়, সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের (সাতক্ষীরা রেঞ্জ) বনজীবীরা বর্তমানে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত ছোটভাই বাহিনীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এই বাহিনী পরিচালনা করছে শ্যামনগর উপজেলার কালিঞ্চি এলাকার মাজেদ ভাঙ্গির ছেলে জাকির ভাঙ্গি।এই ছোটভাই বাহিনীর বর্তমান সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৫ জন। তাদের কাছে ডাবল ও সিঙ্গেল ব্যারেল বন্দুক, টুটুবোর রাইফলেসহ প্রায় ১৫টি অস্ত্র রয়েছে।সুন্দরবনের জেলে বাওয়ালীরা বলছেন, এসব বাহিনীর কেউ সরকারে কাছে আত্মসমর্পণ করলে বা সুন্দরবনে মাঝেমধ্যে প্রশাসনের বিশেষ অভিযানে দস্যুদের দুই-একজন গ্রেফেতার বা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলওে দস্যুদের অস্ত্র যোগানদাতা গডফাদাররা সব সময় থেকে যায় ধরা-ছােঁয়ার বাইরে। যে কারণে সরকার চাইলেও সুন্দরবন থেকে দস্যুতা একেবারেই নির্মূল হচ্ছে না।র্যাব, পুলিশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব গডফাদারদের তথ্য, এদের মধ্যে কেউ কেউ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হলেও আইনের ফাঁক-ফোকরে জামিনে মুক্ত হয়ে এলাকায় ফিরে আসে।সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন লাগোয়া মুন্সিগঞ্জ, গাবুরা ও রমজাননগর ইউনিয়নের কিছু প্রভাবশালী ব্যাবসায়ীর বিরুদ্ধে বনদস্যুদের নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র যোগান দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বহু আগে থেকেই। স্থানীয় জেলে বাওয়ালীরা জানায়, কিছু দিন আগে আত্মসমর্পণ করা বনদস্যু আলিফ ও মজনু বাহিনীর অন্যতম গডফাদার ছিল মুন্সিগঞ্জের সিরাজুল, বকুল মেম্বর, কালিঞ্চি এলাকার জামু ও রমজাননগর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য লাল্টু। এদর মধ্য সিরাজুল ও জামু আলিফ বাহিনীর সাথ র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। কিন্তু লাল্টু মেম্বর গত বছর র্যাবের কাছে গ্রেফতার হওয়ার পর জামিনে মুক্তি পায়। মুন্সিগঞ্জের বকুল মম্বরকেও একবার আটক করছিল র্যাব। বর্তমানে সে ঐ এলাকায় র্যাবের সোর্স পরিচয়ে নানা অপকর্ম করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক স্থনীয় এক বনজীবী অভিযোগ করে জানান, অস্ত্র ব্যাবসায়ী রমজাননগর ইউনিয়নর টেংরাখালি গ্রামের লাল্টু মেম্বর র্যাবের হাতে আটক হয়ছিল এরপর জামিনে ফিরে আসে। কিছুদিন আগে সে সুন্দরবনে ছোটভাই বাহিনীর কাছে ৪টি অস্ত্র সরবরাহ করছে। সেই অস্ত্রের টাকা নিয়ে ছোটভাই বাহিনীর সাথে তার দন্দ্ব চলছে। ভেটখালি বাজারে লাল্টু মেম্বর ও ছোটভাই বাহীনির প্রধান জাকিরের ভাই ইউনুসের মধ্যে এই টাকা নিয়ে হাতাহাতিও হয়েছে। জেলে বাওয়ালীদর এসব অভিযাগের প্রমাণও মিলেছে অনুসন্ধানে।লাল্টু মেম্বরের অস্ত্র ব্যাবসার বিষয়টি জানার পর যোগাযোগ করা হয় বর্তমানে সুন্দরবনে থাকা বনদস্যু ছোটভাই বাহিনীর প্রধান জাকিরের সাথে। জাকির বলেন, কিছুদিন আগে লাল্টু মম্বরের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে চারটি অস্ত্র ও একশত পিছ গুলি কিনেছি। সে নিজে সুদরবনে এসে আমাকে অস্ত্র দিয়ে গেছে। সম্প্রতি একটি ব্র্যাশ (অস্ত্র) ও কিছু গুলি কেনার জন্য ১০লাখ টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু সে অস্ত্র না দিয়ে তালবাহানা করায় আমি টাকা ফেরত চাইলে সে আমাকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার ভয় দেখাচ্ছে। এ নিয়ে আমার ভাইয়ের সাথে তার হাতাহাতিও হয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে লাল্টু মেম্বর বলেন, আমি এলাকার একজন জনপ্রতিনিধি। সুন্দরবনের মূল অস্ত্র ব্যবসায়ীরা আমাকে ফাঁসানোর জন্যই র্যাবের কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিল। র্যাব আমাকে আটক করেছিল। বর্তমানে আমি জামিনে বাড়িতে আছি। ছোটভাই বাহিনীর প্রধান জাকিরের সাথে নৌকার টাকা নিয়ে পূর্বের একটি লেনদেন আছে। এটি জাকির দস্যুতা করতে যাওয়ার আগের ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে শ্যামনগর থানাতে বসাবসি হয়েছিল। তার অভিযোগ মিথ্যা আমি কোন অস্ত্রের ব্যাবসা করি না। প্রতিপক্ষরা আমাকে ফাঁসাতেই তাকে দিয়ে এসব অভিযোগ করাচ্ছে। অভিযোগের বিষয়ে মুন্সিগঞ্জের সাবেক ইউপি সদস্য বকুল বলেন, আমি সুন্দরবনে কোন ব্যাবসা করি না। বনদস্যুদের সাথেও আমার কোন সম্পর্ক নেই। প্রশাসনের সাথে আমার সু-সম্পর্ক থাকায় অনেকে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করে। এলাকার কোন জেলে বাওয়ালী বিপদে পড়লে আমি তাদের সগযোগিতা করি। এমনকি প্রশাসনের কেউ সুন্দরবনে অভিযান চালালেও তারা আমার সহযোগিতা নেয়। তবে সুন্দরবন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরের পর বছর ধরে সুন্দরবনে নিজেদের ব্যবসা ও অধিনস্থ জেলে বাওয়ালীদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতেই দস্যু বাহিনী গঠন ও অস্ত্র সরবারহ করে লোকালয়ের ব্যবসায়ী গডফাদাররা। বনদস্যুদের মধ্যে কেউ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার বা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলে আবারো নতুন নতুন বাহিনী তৈরি করছে মূলত তারাই। বিভিন্ন সময় এসব অস্ত্র ব্যাবসায়ি গডফাদাররা পুলিশ, র্যাব ও কোস্টর্গাডরে হাতে গ্রেফতার হলেও আইনের ফাঁক ফোকরে বেরিয়ে এসে আবারো তাদের কার্যক্রম চলমান রাখে। ফলে সরকারের সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সুন্দরবনের দস্যুতা একেবারেই বন্ধ হচ্ছে না। -

খরস্রোতা বেতনা এখন শীর্ণকায় খাল!
নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘বেতনা বাঁচলে সাতক্ষীরা বাঁচবে’ এই স্লোগান ধারণ করে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন পালিত হয়েছে। শনিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন ‘সাতক্ষীরা বেতনা বাঁচাও আন্দোলন ও সাতক্ষীরা নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ’।মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বেতনা নদী দখল হয়ে যাচ্ছে। এর চরে গড়ে উঠছে বাড়ি-ঘর দোকান-পাট ও বাজার-ঘাট। এক কালের খরস্রোতা বেতনা এখন এক শীর্ণকায় খালে পরিণত হয়েছে। বেতনায় এখন আর নৌকা চলে না, বেতনায় জোয়ারভাটা খেলে না। এখন পায়ে হেটে বেতনা পার হওয়া যায়। এর দুই তীর দখল করে প্রভাবশালীরা গড়ে তুলেছেন ইটভাটা। বেতনায় আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে চিংড়ি চাষেও মেতে উঠেছেন প্রভাবশালীরা।মানববন্ধনে অভিযাগ করে বক্তারা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড সব ধরণের সুবিধা নিয়ে দখলদারদের সহায়তা দিচ্ছে। ফলে বেতনা দিনেদিনে অকার্যকর হয়ে পড়ছে। ঝাউডাঙ্গা থেকে সুপারিঘাটা পর্যন্ত নদী জরুরি ভিত্তিত খনন প্রয়োজন দাবি করে তারা বলেন, ২০১৫ সালে বেতনা খননের নামে লুটপাট করা হয়েছে। এতে বেতনা তীরের মানুষের এতোটুকু উপকার হয়নি।তারা আরও বলেন ‘আমরা বেতনাকে দখলমুক্ত দেখতে চাই। বেতনা খনন চাই।’মানববন্ধনে বক্তব্য রাখন দৈনিক দক্ষিণের মশাল সম্পাদক অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহি , এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, এ্যাড. ওসমান গনি, এ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু, ওবায়েদুস সুলতান বাবলু, অধ্যক্ষ সুভাষ সরকার, স্বপন কুমার শীল, কল্যাণ ব্যানার্জি, আলি নুর খান বাবুল, আবদার রহমান প্রমূখ।তারা বেতনা রক্ষায় সরকারের দষ্টি আকর্ষণ করে আরও বলেন, বেতনা সংলগ্ন ১২ টি বিলের পানি এই নদী দিয়েই প্রবাহিত হয়। বেতনার উপর তিনটি স্লুইস গেটের সবক’টি অকেজো হয়ে পড়েছে।- তারা অবিলম্বে বেতনা খনন এবং বেতনা দখলমূক্ত করার দাবি জানান।
-

না ফেরার দেশে বরেণ্য অভিনেত্রী সাতক্ষীরার রানী সরকার
নিজস্ব প্রতিনিধি: চলচ্চিত্রের বরেণ্য অভিনেত্রী সাতক্ষীরার রানী সরকার আর নেই। শনিবার ভোররাত চারটার দিকে রাজধানীর ইডেন মাল্টি কেয়ার হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান গণমাধ্যমকে বলেন, চলচ্চিত্র জগৎ একজন গুনি অভিনেত্রীকে হারালো। তার শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়।
তিনি আরও জানান, রানী সরকারকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দুপুরে তাঁর মরদেহ রাজধানীর তেজগাঁওয়ে চ্যানেল আই কার্যালয়ে নেওয়া হবে। এরপর রানী সরকারের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে এফডিসিতে। এফিডিসিতে নামাজের জানাজা শেষে রানী সরকারকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
রানী সরকার সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার সোনাতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আসল নাম মোসাম্মৎ আমিরুন নেসা খানম। সোনাতলা গ্রামের ইউপি স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। এরপর তিনি খুলনা করোনেশন গার্লস স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করেন।
রানী সরকারের অভিনয়জীবন শুরু করেন ১৯৫৮ সালে। শুরুতেই মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন। নাটকের নাম ‘বঙ্গের বর্গী’। ওই বছর তাঁর চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় এ জে কারদার পরিচালিত ‘দূর হ্যায় সুখ কা গাঁও’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। এরপর ১৯৬২ সালে বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার এহতেশামুর রহমান পরিচালিত উর্দু চলচ্চিত্র ‘চান্দা’তে অভিনয় করেন। সেই ছায়াছবির পর থেকে তাঁর নতুন নাম হয় রানী সরকার। ‘চান্দা’ চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর উর্দু ছবি ‘তালাশ’ ও বাংলা ছায়াছবি ‘নতুন সুর’-এ কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে অভিনয় করেন। এই ছবি দুটি বেশ জনপ্রিয় হয়। গত শতকের ষাট, সত্তর ও আশির দশকে চলচ্চিত্রে তিনি বেশি অভিনয় করেন।
২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে ২০ লাখ টাকা অর্থ সহায়তা দেন। একই বছর বাংলা চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয় তাঁকে।
-
সাতক্ষীরায় কর্মশালায় জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার গ্রাম আদালত কম খরচে স্বল্পসময়ে ন্যায় বিচার পাওয়ার জনপ্রিয় মাধ্যম
নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা জেলা জেলা ও দায়রা জজ মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব নয়, নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে বিচার কাজ পরিচালনা করাই বিচারকের কাজ। বিচার করার ক্ষমতা মহান আল্লাহ প্রদত্ত উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন নিজের বিবেক বিবেচনা ও প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে বিচার কাজ পরিচালনা করতে হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন গ্রাম আদালত এখনকার সময়ে স্বল্প খরচে স্বল্প সময়ে ন্যায্য বিচার পাবার উপযুক্ত মঞ্চ। বাংলাদেশ গ্রাম আদালত দিনের পর দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। উল্লেখ করে তিনি বলেন তৃণমূল পর্যায়ের এই আদালতে দরিদ্র মানুষ বিশেষ করে নারী এবং বিভিন্ন পেশার পিছিয়ে পড়া সাধারন মানুষ স্বল্পতম সময়ে খুব কম খরচে বিচার লাভ করছেন। এই বিচার ব্যবস্থাকে আরও বেগবান করতে আরও কাজ করতে হবে।
বুধবার বিকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘জেন্ডার ও গ্রাম আদালত বিষয়ক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সচেতনতামূলক এক কর্মশালার সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন জেলা ও দায়রা জজ মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদার। তিনি আরও বলেন গ্রাম আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতকে প্রভাবিত করা সহজ নয়। কারণ বাদি বিবাদি এবং বিচার সংশ্লিষ্ট সকলেই স্থানীয় এবং একজন আরেকজনের সাথে পরিচিত। ফলে কোনো ভুয়া তথ্য সেখানে প্রভাব ফেলতে পারে না। ছোটখাট অপরাধের বিচার করে দেশের বিচার আদালতের ভার কমানোর আহবান জানিয়ে তিনি বলেন সকলকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। যিনি বিচার করবেন তিনি যেনো আইন সম্পর্কে সচেতন থাকেন এমন মন্তব্য করে জেলা ও দায়রা জজ বলেন গ্রাম আদালতের বিচারক যদি কোনো দলের হয়েও থাকেন তবু তার কর্তব্য বিচারক হিসাবে দল নিরপেক্ষ থাকা। কোনো পক্ষ কোনো ভাবেই যেনো রাজনৈতিক কারণে বিচার বৈষম্যের শিকার না হন সে বিষয়ের দিকে নজর রাখতে হবে। তিনি বলেন এভাবে গ্রাম আদালতের বিচারকগন যদি সাধারনের আস্থা অর্জন করতে পারেন তাহলে মানুষ যেমন ন্যায় বিচার পাবে, তেমনি গ্রাম আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা আরও প্রতিষ্ঠিত হবে। জেলা ও দায়রা জজ আরও বলেন সংবাদকর্মীদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। তারা মানুষের কথা তুলে ধরেন। তবে তাদেরকে আইন সম্পর্কে ভাল ধারনা থাকতে হবে। যে কেউ কিছু একটা বলে দিল আর সেটা লিখে দিলাম এমনটি যাতে না হয় সেজন্য তাকে আইন জানতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি সাতক্ষীরা দুই একটি ঘটনা তুলে ধরে সিনিয়র সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন প্রয়োজনে ‘সংবাদ ও আইন’ শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করা যেতে পারে। তিনি কর্মশালায় অংশগ্রহনকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আরও বলেন গ্রাম আদালত যতো বেশি শক্তিশালী হবে ততই স্থানীয় বিরোধ মীমাংসা করে শান্তির পথ প্রশস্ত হবে।
স্থানীয় সরকার উপ পরিচালক শাহ আবদুল সাদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ। জেন্ডার স্পেশালিস্ট কামরুননেসা নাসরিনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন সহকারি পুলিশ সুপার ( হেড কোয়র্টার) মো. হুমায়ুন কবির, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সম্পাদক আবদুল বারী, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তারাময়ী মুখার্জী, সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট এড. গোলাম মোস্তফা, সচেতন নাগরিক সমাজের তৈয়ব হাসান বাবু, ঈশ্বরীপুর ইউপি চেয়ারম্যান এড. আবদুস শোকর আলি, কাশিমাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ডা. এসএম আবদুর রউফ, জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মফিদুল হক লিটু, রতনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম, মহিলা পরিষদ সম্পাদক জোসনা দত্ত, বিভিন্ন ইউনিয়নের সংরক্ষিক মহিলা আসনের নারী সদস্য ও সাধারন সদস্য, ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের সাতক্ষীরা অফিস প্রধান শরিফুল ইসলাম প্রমূখ।
বিশেষ অতিথি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন বলেন গ্রাম আদালতকে নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা করতে হবে। এই আদালতের রায় বাস্তবায়ন করতে হবে। কোনো ভুল তথ্য দিয়ে গ্রাম আদালতের এখতিয়ারভূক্ত মামলা উচ্চ আদালতে পাঠানোর প্রবণতা রোধ করতে হবে। তিনি বলেন আমাদের সমাজে কিছ দুষ্টু প্রকৃতির মানুষ রয়েছেন যারা প্রভাব সৃষ্টি করে গ্রাম আদালতকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে থাকেন। ফলে সহজে যে বিচার পাওয়া সম্ভব ছিল তার পথ জটিল করে ফেলে তারা। এদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন গ্রাম আদালতকেও প্রমান করতে হবে যে মানুষ ন্যায় বিচার পেয়েছে।
বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার বলেন যেসব বিষয় গ্রাম আদালতের এখতিয়ারভূক্ত পুলিশ সে মামলা গ্রহন করে না। তিনি বলেন অনেকেই নানাভাবে চেষ্টা করে থাকেন এমন সব মামলা রেকর্ড করতে , কিন্তু পুলিশ খুবই সচেতন। পুলিশ বরং গ্রাম আদালতকে সাহায্য করবে। তিনি বলেন পুলিশ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত করে । তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে আদালত ব্যবস্থা নেয়। তিনি বলেন পুলিশ সব সময়ই গ্রাম আদালত সিস্টেমকে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। এতে পুলিশের ওপর থেকে ভার অনেকটাই কমে যায়। এতে বাদি ও বিবাদী উভয়েই শান্তি লাভ করে। তিনি আরও বলেন বর্তমান পুলিশ সুপার মো. সাজ্জাদুর রহমানের নির্দেশ অনুযায়ী ছোটখাট বিষয়ের মামলার জট কমে এসেছে। সদর থানায় এখন মাসে গড় পড়া ৯৭ টি মামলা হথো উল্লেখ করে তিনি বলেন এখন তা ৫৪ /৫৫ টিতে চলে এসেছে। তবে এর মধ্যে মাদক বিষয়ক মামলা বেশি। বিশেষ অতিথি প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ বলেন সংবাদকর্মীরা গ্রাম আদালতের সুফল পত্রপত্রিকায় তুলে ধরছেন। এতে বিচারপ্রার্থীরা উৎসাহিত হচ্ছেন। তিনি বলেন গ্রাম আদালতের প্রতিনিধিরা প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে গণমাধ্যমকে জানালে তা আরও প্রচার লাভ করতে পারে।এর আগে সকালের অধিবেশনে কর্মশালায় বলা হয় দেশের ২৭টি জেলায় ১২৮টি উপজেলার ১০৮০ টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্প দ্বিতীয় পর্যায় এখন বেশ সক্রিয় অবস্থায়। গত জুলাই থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এসব আদালতে ৩২ হাজার ২৬৪টি মামলা এসেছে। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ২০ হাজার ৫৬০টি। অন্য মামলাগুলি চলমান রয়েছে জানিয়ে এতে বলা হয় মামলার রায় বাস্তবায়ন হয়েছে ১৭ হাজার ৪০৫টি। এর মধ্য দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থরা ১৭ কোটি ৬ লাখ টাকারও বেশি ক্ষতিপূরন লাভ করেছেন বলে পরামর্শ সভায় উল্লেখ করা হয়। এতে আরও জানানো হয় মামলার আবেদনকারীদের মধ্যে ১০ হাজার ৫৮৫ জন নারী রয়েছেন। তারা বিচার লাভ করেছেন। নানাভাবে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ৪৩ লাখ ৫৬ হাজারেরও বেশী মানুষকে সচেতন করা হয়েছে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।
কর্মশালায় আরও বলা হয়, সাতক্ষীরা জেলার তালা, আশাশুনি, শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ উপজেলার ৪৭টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের এই প্রকল্প চালু হয়েছে। সেখানে ১৬২৭টি মামলার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ১২৪১টি। এতে আবেদনকারী নারীর সংখ্যা ছিল ৩৩৯ জন। এসব পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হয়, সাধারন মানুষকে সহজেই গ্রাম আদালত খুব স্বল্পতম সময়ে সুবিধা দিতে পারে। একে আরও কার্যকর করতে হলে সবাইকে আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে। অভিযোগের প্রেক্ষাপটে আদালতের কাঠামো গঠিত হয় উল্লেখ করে বলা হয়, সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে বিচারের রায় নিষ্পত্তি হয়। সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না করতে পারলে তা বাতিল হয়ে যায়। ন্যায়বিচার, শান্তিশৃংখলা রক্ষা এবং বিরোধ নিষ্পত্তিতে গ্রাম আদালত আরও ভূমিকা রাখতে পারে বলেও র্ সভায় জানানো হয়।
কর্মশালার সভাপতি স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক শাহ আব্দুল সাদী বাংলাদেশের গ্রাম আদালতের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন স্বচ্ছতার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির গুরুত্বপূর্ন মাধ্যম গ্রাম আদালত। এই মাধ্যমকে শক্তিশালী করতে গনমাধ্যমেরও ভূমিকা রয়েছে বলে জানানো হয়। গ্রাম আদালত পরিচালনায় বিভিন্ন সমস্যা ও তার সমাধান নিয়েও কথা বলেন তিনি। সমাজে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক তথ্য দিয়ে মামলা জটিল করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার প্রবনতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে যেমন বাদী বিবাদী দুই পক্ষের ব্যয় বৃদ্ধি পায় তেমনি তা নিষ্পত্তি করতেও বহু ভোগান্তির পাশাপাশি অনেক সময় লাগে। এজন্য গ্রাম আদালতকে আরও বেগবান করতে পারলে তৃণমূল পর্যায়ে শান্তিশৃংখলা রক্ষা সহজ হয়। বিশ্বের বেশী আইনের দেশের তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে আইন না মানার এক ধরনের সংস্কৃতি রয়েছে। আইনকে কেবলমাত্র কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ রাখার প্রবণতা তেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলে জানান তিনি। বিচারকদের সব ধরনের প্রভাবমুক্ত থেকে বিচার করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে আদালত সমূহে মামলার জট যেমন কমবে তেমনি গ্রামে শান্তির সুবাতাস বইবে। উন্মুক্ত আলোচনায় আরও অংশগ্রহন করেন তাদের বক্তব্যে উঠে আসে বিচারের নোটীশ গ্রহন না করা, প্রভাবশালীদের বিচারের আওতায় আনার অন্তরায়, সম্পদের মূল্য বৈষম্য, বিচারকদের ভোটের রাজনিিত , বিচারকদের নির্বাচন রাজনীতি, বিচারকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, বিচারে নিরপেক্ষতা বজায়ে অন্তরায়সহ নানা বিষয়। এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনাও হয় কর্মশালায়। -

সাতক্ষীরায় দুদক মহাপরিচালক মাহমুদ হাসান , দুর্নীতি দমন কমিশন এখন নখ দন্তহীন নয় কঠিন ও নির্মম প্রতিষ্ঠান
নিজ্স্ব প্রতিনিধি। ‘আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান’ কথাটি যথার্থ নয় উল্লেখ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক মাহমুদ হাসান বলেন, আবেগ তাড়িত হলে আইনের সঠিক প্রয়োগ সম্ভব হয় না। আইন দ্বারা সব অপরাধ দুর করাও সম্ভব নয়। বরং নিজের ভেতর থেকে দুর্নীতি বিরোধী চেতনাকে জাগ্রত করতে হবে।
মাহমুদ হাসান বুধবার সকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সর্বস্তরের মানুষের সাথে মত বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
‘গ্রেট ওয়ার্ক স্টার্টস ফ্রম স্মল ওয়ার্ক’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন শিশুদের ছোটবেলা থেকে সততার শিক্ষা দিতে হবে। তাদেরকে নিয়মিতভাবে উপদেশমূলক বাক্য যেমন ‘সদা সত্য কথা বলিবে, শিক্ষক বাবা মা ও বড়দের শ্রদ্ধা করিবে’ ইত্যাদি শিখাতে হবে। দেশের সর্বত্র স্কুলগুলিতে সততা স্টোর গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন এতে প্রতিদিন শিশু শিক্ষার্থীরা সততার চর্চা করতে পারবে। মানিকগঞ্জ জেলার ১৮৩ টি স্কুলের ১৬২ টিতে সততা স্টোর চালু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন স্কুলে প্রতিষ্ঠিত এসব বিপনীতে কোনো বিক্রেতা থাকে না। শিশুরা নির্ধারিত মূল্যে পণ্য ক্রয় করে তার বিপরীতে টাকা যথাস্থানে রেখে দেয়। দুদক মহাপরিচালক আরও বলেন দেশের দুর্নীতি কমলে জিডিপি বাড়বে ২.৫% । তাই দুর্নীতি প্রতিরোধে সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করতে হবে। তবেই সম্ভব হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠন। দুদক এখন নখ দন্তহীন নয় জানিয়ে তিনি বলেন দুদক এখন এক কঠিন নির্মম ও নিষ্ঠুর প্রতিষ্ঠান। ঘুষের দেশ নয় বাংলাদেশকে একটি মর্যাদার দেশে উন্নীত করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন জাপানের উন্নতি হয়েছে সততা ও কর্মনিষ্ঠার কারণে । জাপানিরা কাজ পাগল জাতি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন তাদের সততার কারণে জাপানের পন্য প্রোডাকশন কোয়ালিটি অতি উচ্চমানের। দুর্নীতি দমন কমিশন এসিসি বা এন্টি করাপশন কমিশনকে একই সঙ্গে অ্যাকশন, কমিটমেন্ট ও কারেজ হিসাবে আখ্যায়িত করে দুদক মহাপরিচালক বলেন, এর বাস্তবায়নে দরকার কোলাবরেশন ও কো অপারেশন।’
সঠিকভাবে না জেনে, না বুঝে এবং প্রমান না পেয়ে কাউকে দোষী বলা যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘একজন অপরাধীকে যদি ভাল ভাষা দিয়ে বলা যায় যে আপনি ভালো মানুষ তাহলে তার মধ্যে এক ধরনের উৎসাহব্যঞ্জক শক্তির উদগীরন হতে পারে । মানুষ কেনো দুর্নীতিবাজ হয়ে ওঠে সে বিষয়ে তথ্য তালাশ করতে হবে । সে সব জায়গাতে যদি কঠোর নজরদারি চালানো হয় তাহলে দুর্নীতির প্রসার কমে যাবে।’ তিনি সকল অফিস আদালতকে এবং নিজ নিজ কর্মস্থলকে দুর্নীতিমুক্ত ঘোষনা করে এগিয়ে যাবার আহবান জানান।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মুনসুর আহমেদ, সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমান, প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সহকারি পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির, তালা উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদক প্রফেসর মোজাম্মেল হোসেন, জেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন, জেলা প্রথিমিক শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আমিন, জেলা রেজিস্ট্রার প্রমূখ। মুনুসর আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিভাগ দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছে। তাদের দুর্নীতি রোধে আরও কঠোর হতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও সাতক্ষীরা মেডকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি তুলে ধরেন।’
মত বিনিময় সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘সমাজের সকল স্তরে দুর্নীতিকে না বলতে হবে। দুর্নীতি আমাদের সমাজকে কুরে কুরে খাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন শিশু বয়স থেকে আমাদের সন্তানদের দুর্নীতি বিরোধী করে তুলতে হবে। তাদেরকে সৎ পথে পরিচালিত করতে বাবা মাকে বেশি ভূমিকা পালন করতে হবে।’ -

আওয়ামী তরুণ লীগ সাতক্ষীরা জেলা শাখার ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনা : শাহীন সভাপতি- কাজী জিললুর রহমান সম্পাদক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ^াসী বাংলাদেশ আওয়ামী তরুণ লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জহিরুল ইসলাম বাবলু ও সাধারণ সম্পাদক জি এম শফিউল্যা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে মো: শাহানুর ইসলাম শাহীনকে সভাপতি ও কাজী জিললুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে (আহবায়ক কমিটি বিলুপ্তির পর) আওয়ামী তরুণ লীগ সাতক্ষীরা জেলা শাখার ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে। আগামী ৩ বছরের জন্য এই কমিটি ঘোষনা করা হয়। গত ২৫ জুন ২০১৮ তারিখে কেন্দ্রীয় কমিটির উপরোক্ত নেতৃবৃন্দ স্বাক্ষর পূর্বক এই কমিটির অনুমোদন দেন।
আওয়ামী তরুণ লীগ সাতক্ষীরা জেলা শাখার এই কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে সিনিয়র সহ-সভাপতি অনিক মাহমুদ বাবলু, সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম, গোবিন্দ বাবু, হাবিবুর রহমান, মাজহারুল ইসলাম, ডা. শরিফুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, মিলন রায়, শাহজালাল। এছাড়াও যুগ্ম সম্পাদক বিদ্যুত বিশ^াস, মো: রিপন ও হালিম হোসেন। সাংগাঠনিক সম্পাদক এস এম নাসির উদ্দীন, জীবন ও আবুল হাসেম। প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আসাদুজ্জামান টুকু, সহ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কওছার আলী, দপ্তর মনিরুল ইসলাম, সহ-দপ্তর আব্দুস সালাম। অর্থ সম্পাদক আলী হোসেনসহ অন্যান্য। এছাড়াও কমিটির কার্যকরী সদস্য পদে রয়েছেন ৪০ জন। -

আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা ইমন হত্যা মামলার বাদি গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিনিধি: আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল হাসান ইমন হত্যা মামলায় দীর্ঘ দেড় বছর পর এ মামলার বাদিকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
মঙ্গলবার সকালে মামলার বাদি নিহতের আপন চাচা আলমগীর হাসান আলমকে শহরের সুলতানপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর দুপুরে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাকে কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাগেরহাট সিআইডি পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম জানান, ইমন হত্যার দেড় বছর পর এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতার সত্যতা পাওয়ায় মামলার বাদি নিহতের চাচা আলমগীর হাসান আলমকে সকালে গ্রেফতার করা হয়। এরপর দুপুরে তাকে সাতক্ষীরার আমলী আদালত-১ এর বিচারক রাজীব কুমার রায়ের আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়।
সিআইডি সাতক্ষীরার সহকারী পুলিশ সুপার আমিনুর রহমান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে নিহতের চাচা বাদি আলমগীর হাসান আলম জড়িত থাকার সত্যতা পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতের মাধ্যমে কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি দিবাগত রাতে ইমনকে তার বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে হত্যার পর লাশ সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়নের আমতলা গ্রামের ইকবাল বিশ্বাসের মাছের ঘেরে ফেলে রাখা হয়।
পরদিন সকালে পুলিশ ইমনের লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের পরপরই ইমনের আপন চাচা আলমগীর হাসান আলমের ইঙ্গিতে পুলিশ আমতলা থেকে স্বাস্থ্যকর্মী ইখতিয়ার হোসেন বিপ্লব, সুলতানপুর থেকে কলেজ ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান মুরাদ ও রেজাউল ইসলাম ওরফে রনি মোল্যাকে গ্রেফতার করে। পরে নিহতের চাচা আলমগীর হোসেন আলম বাদি হয়ে কারো নাম উল্লেখ না করে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
-

পৌরসভার সম্পত্তি জাল দলিল করে দখল : পৌর হস্তক্ষেপে তালাবদ্ধ
শহর প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা পৌরসভার হস্তক্ষেপে অবৈধ দখলীয় দোকান ফারুক ইলেকট্রিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় শহরের পাকাপোলস্থ ফারুক ইলেকট্রিকে গিয়ে সদর থানা পুলিশের উপস্থিতিতে পৌরসভার কাউন্সিলর শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন কালু, শফিকুল আলম বাবু, শেখ আব্দুস সেলিম ও মহিলা কাউন্সিলর ফারহা দীবা খান সাথীর নির্দেশে দোকানটি বন্ধ করে তালাবদ্ধ করা হয়।
এ ব্যাপারে পাশ্ববর্তী দোকান জালাল ইলেকট্রিকের মালিক মো. শাহাজালাল জানান, ১৪৪৯৯ দাগে পৌরসভার ২৭ ফুট জায়গা জাল দলিল করে ২০০৭ সাল থেকে ভোগ-দখল করে আসছে ফারুক ইলেকট্রিকের মালিক ফারুক।
সে সময় বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকায় স্থানীয় জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীর প্রভাব দেখিয়ে পৌরসভা থেকে আমার ডিসিআরকৃত জায়গাসহ পৌরসভার ২৭ ফুট জায়গা জবর দখল কওে নেয় ফারুক।
জাল দলিলের মাধ্যমে নিজ দখলে রাখতে পৌরসভার সম্পত্তিকে অস্বীকার করে পৌরসভাকে বিবাদী করে একটি মামলা করে।
সে মামলায় আদালতে বৈধ কাগজ পত্র দেখাতে না পারায় সে মামলায় হেরে যায় ফারুক এবং মামলাটি সেফকাষ্টোডি হয়েছে। আজ ২৭ জুন বুধবার পৌরসভার মাসিক মিটিং এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে।
