শ্যামনগর মুন্সীগঞ্জে বে-সরকারি সংস্থা খ্রীষ্টিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (সিসিডিবি) ১১ জুন মঙ্গলবার সকাল এগারটায় আড়পাঙ্গাশিয়া প্রিয়নাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি স্কুল দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা কমিটি এবং ২১ সদস্য বিশিষ্ট ছাত্র ছাত্রীদের সমন্বয়য়ে একটি সেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়।
খ্রীষ্টিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (সিসিডিবি), ডিজাস্টার রেজিলয়েন্ট এডুকেশন এন্ড কমিউনিটিজ প্রকল্পের এর সহযোগিতায় এবং দাতা সংস্থা গ্লোবাল মিনিস্ট্রিজ এর অর্থায়নে সভাপতি হিসেবে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন আড়পাঙ্গাশিয়া প্রিয়নাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি অসিম কুমার জোয়ারদার, উপস্থিত ছিলেন অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৌমিত্র জোয়ারদার এবং অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকা বৃন্দ। আরও উপস্থিত ছিলেন উক্ত প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক এস এম মনোয়ার হোসেন, মনিটরিং এন্ড ইভালুয়েশন ম্যানেজার(স্টেপ এন্ড বিল্ডিইন প্রকল্প) মোঃ রোবায়েদ করিম, ফিল্ড সুপারভাইজার এবং ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অফিসার আবুল হাশেম মিয়া, ও অন্যান্য মাঠ সংগঠক প্রমূখ।
সভাপতি বলেন, “সিসিডিবি কোন নতুন নাম নয়, দীর্ঘদিন যাবত এই অঞ্চলে দুর্যোগ ঝুঁকিপুর্ণ মানুষের জীবন মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। আজকের এই স্কুল ভিত্তিক দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য যে কমিটি গঠন করা হল তা ভবিষ্যতে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমে আসবে বলে আমার বিশ্বাস। আমি এই উদ্যোগের সাথে আছি এবং শুভকামনা জানাচ্ছি”
ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে গঠিত সেচ্ছাসেবক দলের সদস্যরা তাদের নিজ দায়িক্ত সতস্ফুর্তভাবে গ্রহন করেন এবং তা পালন করবে বলে অঙ্গিকার করেন।




ঝড়ে কম বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার প্রায় দুইলাখ ২১ হাজার ১৭৬ জন মানুষ। পানি বন্দী হয়ে পড়েছে জেলে পল্লীর শতাধিক পরিবার। একই সাথে শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ উপজেলাতে অসংখ্য গাছপালার ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালী আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে শওকাত মোড়ল নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে নদ-নদীগুলোতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পায়। স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ থেকে ৭ ফুট বেশি উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুটি বিভাগের আওতাধীন ৬৮০ কিলোমিটার বেঁড়িবাধ রয়েছে। যা ষাটের দশকে নির্মিত। এর মধ্যে উপকুলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনির ১০টি পয়েন্টে ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে। যার মধ্যে উক্ত দুই উপজেলায় দুই কিলোমিটার বেড়িবাধ অতিঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব ঝুকিপূর্ণ বেঁড়িবাধের কয়েকটি পয়েন্টের উপচে পড়া পানিতে ভেসে গেছে ২০০ হেক্টর জমির মৎস্য ঘের ও ৬০৬ হেক্টর ফসলি জমি। এছাড়া কয়েক’শ পরিবার পানি বন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তবে,পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ঝুকিপূর্ণ বেঁড়িবাঁধ গুলোতে জিও ব্যাগ ও বালি দিয়ে উপচে পড়া পানির প্রবাহ ঠেকাতে সক্ষম হয়েছেন। তবে ঘুর্ণিঝড় আতঙ্কে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা অনেকেই অভিযোগ করেছেন যে, ২৬ ও ২৭ মে তাদের কাছে সামান্য শুকনো খাবার পর্যন্ত পৌঁছায়নি।
জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রন কক্ষের তথ্য মতে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে সাতক্ষীরার ৪৩ টি ইউনিয়নে কম বেশি ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে উপকুলীয় উপজেলা আশাশুনি ও শ্যামনগরে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে। আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ১১৯২টি ঘরবাড়ি ও সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ২৭৬টি ঘরবাড়ি। এছাড়া ৬০৬ হেক্টর ফসলি জমির ও ২০০ হেক্টর জমির মাছের ক্ষতি হয়েছে।










