আজ ৯ ডিসেম্বর সোমবার বিকাল ৩ টায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লিডার্সের বাস্তবায়নে এবং জার্মান দাতা
সংস্থা ব্রেড ফর দ্যা ওয়ার্ল্ড এর আর্থিক সহযোগিতায় কাশিমাড়ি ইউনিয়ন জলবায়ু সহনশীল ফোরামের
আয়োজনে অর্ধবার্ষিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। লিডার্সের সিনিয়র ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর শম্পা বিশ্বাস
এর সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাশিমাড়ি ইউনিয়ন জলবায়ু সহনশীল
ফোরামের সভাপতি জনাব মোঃ সফিকুল বারী, এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সহ-
সভাপতি মোঃ বাদশা আজম, সহ সভাপতি জনাব সুফিয়া খাতুন, সম্পাদক জনাব মোঃ আবুল হোসেন সহ আরও
অনেকে।
সভায় পরবর্তী ছয় মাসের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন শীর্ষক কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয়। একই সাথে
স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ, মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান ও স্থানীয়
পর্যায়ে নেতৃবৃন্দের সাথে সম্পৃক্ততা বৃদ্ধিকরণ বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় উপস্থিত সকলে একমত পোষণ
করেন যে মানুষের জীবন জীবীকা নিশ্চিত করতে হলে জাতীয় পর্যায়ের নীতি-নির্ধারনী মহলের দৃষ্টি
আকর্ষণের কোন বিকল্প নেই।
প্রধান অতিথি বলেন- লিডার্স এর সহযোগীতায় এই এলাকাতে সার্বিক উন্নতিসহ কৃষি খাতে অনেক উন্নয়ন
ঘটেছে। এখানকার মানুষ স্বল্প খরচে ধানবীজ, সবজি বীজ ও জৈব সার পাওয়ার ফলে তাদের খাদ্যের দৈনিক
যোগান দেওয়ার পরও বাইরে বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তিত পরিবেশে কৃষিকে
শক্তিশালী করার জন্য যে অভিযোজন প্রক্রিয়া চর্চা করার পথ লিডার্স আমাদের দেখিয়েছেন তার ফলে
এলাকার মানুষ আর্থ -সামাজিকভাবে অনেক সমৃদ্ধ হয়েছে। এছাড়া সকল ধরনের দূর্যোগকালীন সময়ে লিডার্স
আমাদের পাশে থেকেছে। লিডার্সের মাধ্যমে অনেক মানুষ বিকল্প আয়ের মধ্য দিয়ে আজ স্বাবলম্বী। তিনি
সভায় উপস্থিত সকলকে লিডার্স এর উন্নয়নমূলক কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আহবান জানান।
Category: শ্যামনগর
-

শ্যামনগরের ইউনিয়ন জলবায়ু সহনশীল ফোরামের অর্ধবার্ষিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
-
শ্যামনগরে কৃষিতে ক্ষতিকর কীটনাশকের ব্যবহার হ্রাসকরণের দাবিতে মানববন্ধন
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার শ্যামনগরে কৃষিতে ক্ষতিকর কীটনাশক ও রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার হ্রাসকরণের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) শ্যামনগর প্রেসক্লাবের সামনে বিশ্ব কীটনাশক মুক্ত দিবস উপলক্ষে সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিম, সবুজ সংহতি, যুব স্বেচ্ছাসেবী সমন্বয় কমিটি ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক যৌথভাবে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, কৃষিতে রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার দিনদিন বেড়েই চলেছে। এ কারণে জীববৈচিত্র্য যেমন হুমকির মুখে, তেমনি জনস্বাস্থ্যও চরম ঝুঁকিতে পড়ছে। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে জৈব বালাইনাশকের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সচেতন হতে হবে। সরকারকেও বিষয়টি প্রচারে আনতে উদ্যোগী হতে হবে।
মানববন্ধনে সবুজ সংহতির আহ্বায়ক কুমুদ রঞ্জন গায়েনের সভাপতিত্বে ও যুব সংগঠক স.ম ওসমান গনী সোহাগের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিমের সদস্য সচিব মো. সাঈদুল ইসলাম, যুব স্বেচ্ছাসেবী সমন্বয় কমিটির সদস্য মো. শামীম হোসেন, সোনামুগারী কৃষক-জেলে কল্যাণ সমিতির সভাপতি কোহিনুর বিবি, কৃষক-গবেষক দলের সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান, সবুজ সংহতির যুগ্ম আহ্বায়ক পীযুষ বাউলিয়া পিন্টু, সাংবাদিক শেখ আফজালুর রহমান, বারসিক এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৪ সালে ভারতের মধ্যপ্রদেশের একটি পেস্টিসাইড কারখানায ভয়াবহ রাসায়নিক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়। যা ভোপাল ট্র্যাজেডি নামে পরিচিত। এতে ৫ লাখের বেশি মানুষ অত্যন্ত বিষাক্ত মিথাইল আইসো সায়ানেট গ্যাসের সংস্পর্শে আসেন এবং সরকারি হিসেবে ২ হাজার ২৫৯ জন মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। এরপর থেকে ৩ ডিসেম্বর বিশ্ব কীটনাশক মুক্ত দিবস পালিত হয়ে আসছে। দিবসটি পালনের মূল উদ্দেশ্য সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির মাত্রা কমিয়ে আনা। -

শ্যামনগরে লিডার্সের আয়োজনে আন্ত:স্কুল নারী ফুটবল প্রতিযোগিতা
বেসরকারি সংস্থা লিডার্সের আয়োজনে আন্ত:স্কুল নারী ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৬ নভেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার বিকাল ৩ টায় আড়পাংগাশিয়া প্রিয়নাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে
লিডার্সের আয়োজনে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও এ্যাম্বাসী অব সুইডেনের সহযোগিতায় কমিউনিটি
ভিত্তিক জলবায়ু সহনশীল ও নারীর ক্ষমতায়ন কর্মসূচী (ক্রিয়া) প্রকল্পের আওতায় এ ফুটবল খেলা
অনুষ্ঠিত হয়।
খেলায় লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) রনজিৎ কুমার বর্মনের সঞ্চালনায় বুড়িগোয়ালিনী
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত
থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন শ্যামনগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনী খাতুন, বিশেষ
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শ্যামনগর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শারিদ বিন শফিক,
শ্যামনগর থানার এস আই জনাব কামরুল ইসলাম আড়পাংগাশিয়া প্রিয়নাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের
প্রধান শিক্ষক জনাব সৌমিত্র জোয়ারদার, তপোবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক
জনাব মনোদীপ কুমার সরকার, সুন্দরবন প্রেসক্লাবের সভাপতি বেলাল হোসেন, প্রকল্প
সমন্বয়কারী সুব্রত অধিকারী ও প্রজেক্ট অফিসার সুলতা সাহা প্রমুখ।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনী খাতুন বলেন, পুরুষের পাশাপাশি নারীদের খেলাধুলায়
এগিয়ে আসতে হবে। দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে নারীদের। গ্রাম পর্যায় থেকেই
খেলোয়াড় তৈরি করে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ তৈরি করতে হবে।
খেলায় আড়পাংগাশিয়া প্রিয়নাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১/০ গোলে চ্যাম্পিয়ন হয় এবং তপোবন
মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় রানার্সআপ হয়। -

শ্যামনগরে শিশুশ্রম সংক্রান্ত আইন ও নীতিমালার যথাযথ বাস্তবায়ন বিষয়ক সভা
শিশুশ্রম সংক্রান্ত আইন ও নীতিমালার যথাযথ বাস্তবায়ন এবং করনীয় বিষয়ক সভা মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১১ টায় শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দাতা সংস্থা এডুকো’র আর্থিক সহায়তায় শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্পের আওতায় উত্তরণ এই সভার আয়োজন করে।উত্তরণের প্রকল্প সমন্বয়কারী মোঃ মনিরুজ্জামান জমাদ্দারের সভাপতিত্বে ও প্রজেক্ট ম্যানেজার নাজমা আক্তারের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনী খাতুন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, মহাপরিদর্শক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর,খুলনার মোঃ শাহিনুর রহমান ও জেলা শিশু একাডেমীর সহকারী শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ রিয়াজুল ইসলাম।
সভায় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তুষার মজুমদার, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা, মোঃ হুমায়ুন কবীর, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শারিদ বিন শফিক, সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহিন হোসেন,
সহকারী বন সংরক্ষন কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমান, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ইব্রাহিম মোল্যাসহ উপজেলা পর্যায়ের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।অনুষ্ঠানে এ্যাডভোকেট, সভাপতি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য, এনজিও প্রতিনিধি এবং কাশিমাড়ী, বুড়িগোয়ালিনি, মুন্সিগঞ্জ ও গাবুরা ব্রিজ স্কুলের শিশু, অভিভাবক, শিশু সুরক্ষা কমিটির সদস্য, শিক্ষক ও কর্মমালিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি বলেন, শিশুশ্রম নিরসনের জন্য সরকারের নানামূখী পদক্ষেপ রয়েছে। সরকার তার বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে জনগনের সকল ধরনের সেবা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা রেখেছে। জনগণকে সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং নিজের সেবা আদায় করে নিতে হবে। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আওতায় ১৬৩৫৭ টোল ফ্রি নাম্বারে কল দিয়ে শিশুশ্রমিকদের বিষয়ে তথ্য দিলে পরিদর্শন কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত হয়ে ফৌজদারি আইনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এছাড়া সভায় শিশুশ্রমের বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে সরকারের নির্ধারিত আইন ও নীতিমালার বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
পরে শ্যামনগর উপজেলায় ইটভাটাসহ সকল ধরনের ঝুঁকিপূর্ন কাজ থেকে শিশুদের বিরত রাখার দাবিতে সমমনা সংগঠন ও শিশুশ্রম প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
-

শ্যামনগরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় ব্যতিক্রম প্রদর্শনী
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: প্রতিটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর রয়েছে স্বতন্ত্র ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। কিন্তু প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে এসব বৈচিত্র্যময় ভাষা ও সংস্কৃতি।
উপকূলীয় অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোর ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষার তাগিদে সাতক্ষীরার শ্যামনগর অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ব্যতিক্রম প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী আশ্রয়ন প্রকল্পের ব্যারাকে স্থানীয় জনগোষ্ঠী, সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিম, সবুজ সংহতি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক যৌথভাবে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
প্রদর্শনীতে উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী, দাতিনাখালী ও তারানীপুরের মুন্ডা, কাহার, জেলে ও ঋষি সম্প্রদায়ের সাতটি স্টলে তাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐহিত্যের নানা নিদর্শন প্রদর্শন করেন।
প্রদর্শিত হয় মুন্ডাদের তীর-ধনুক, শিং, পালক, বল্লব, কুচ, বুজ, কড়ি, হাড়িয়া, খাদ্যাভাস, টোপর, পূজা ও বিবাহের উপকরণ, কাহার সম্প্রদায়ের পালকি, ঢোল, খঞ্জন, কাশি, বেহলা, একতারা, জেলেদের জাল, দড়ি, নৌকা, পোলো, খারা ও ঋষিদের জুতা সেলাইয়ের উপকরণ।
পাশাপাশি নিজ সংস্কৃতির গান ও নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে ঐতিহ্য রক্ষার দাবি জানান তারা।
অনুষ্ঠানে জেলে সুপদ মন্ডলের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী নজরুল ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ৪নং

ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ গাজী, বারসিক এর সহযোগী আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার, সহযোগী কর্মসূচি কর্মকর্তা মনিকা পাইক, অষ্টমী মালো, দলিত এর প্রোগ্রাম অফিসার রতিকান্ত মন্ডল, কৌশল্যা মুন্ডা, এসএসএসটির প্রকাশ মন্ডল, মাছুম বিল্লাহ প্রমুখ।
প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী আনন্দিনী মুন্ডা বলেন, অতীতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোর ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য গুরুত্ব পেত। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। অনেকেই পেশা বদল করছে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা খুবই প্রয়োজন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাজী নজরুল ইসলাম বলেন, নানা কারণে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। তাদের অধিকার সুরক্ষার জন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরী। বহুত্ববাদী সমাজ বিনির্মাণে তাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
-

‘উপকূলীয় নারীদের সফলতা ও জ্ঞানের কথা’ শীর্ষক অভিজ্ঞতা সভা
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ‘উপকূলীয় অঞ্চলের নারীদের সফলতা ও জ্ঞানের কথা’ শীর্ষক অভিজ্ঞতা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) উপজেলা কৃষি অফিসের হল রুমে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক ও সবুজ সংহতি এই সভার আয়োজন করে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ধুমঘাট শাপলা নারী উন্নয়ন সংগঠন এর সভানেত্রী ও জাতীয় কৃষিপদক প্রাপ্ত কৃষাণী অল্পনা রাণী মিস্ত্রি।
উপকূলীয় নারীদের নানা অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন পদ্মপুকুরের নাসরিন নাহার, গাবুরার জেসিমন বেগম, ঈশ্বরীপুরের মিতা রানী, শ্যামনগরের অষ্টমী মালো, মুন্সিগঞ্জের সরমা রাণী, বুড়িগোয়ালিনীর কনিকা রানী মন্ডল প্রমুখ।
এসময় তারা উপকূলীয় দুর্যোগকবলিত ও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের অগ্রগতির পথে বিরাজমান নানা সামাজিক প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে যেভাবে লোকায়ত জ্ঞানের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষি প্রাণবৈচিত্র্য ও প্রাণিসম্পদ রক্ষার মাধ্যমে নিজেদের পরিবারকে এগিয়ে নিয়েছেন, সফলতা অর্জন করেছেন, স্বীকৃতি পেয়েছেন তার গল্প তুলে ধরেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রনী খাতুন। আরো বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান, ভেটেরিনারি সার্জন ডা. সুব্রত কুমার বিশ্বাস, বারসিক এর সহযোগী আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার, সিডিও’র নির্বাহী পরিচালক গাজী ইমরান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের জেন্ডার প্রমোটর মো. মাছুম বিল্লাহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বারসিক এর সহযোগী কর্মসূচি কর্মকর্তা বরসা গাইন।
-

শ্যামনগরে অভিযোজন মেলা: ১৬০ ধরনের লোকায়ত জ্ঞান প্রদর্শন করলেন কৃষক-কৃষাণীরা
সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার শ্যামনগরে দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় লোকায়ত জ্ঞানের অভিযোজন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) উপজেলার ঈশ^রীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট (হাসার চক) গ্রামে পদ্ম কৃষক উন্নয়ন সংগঠন, দিঘির পাড় কৃষক উন্নয়ন সংগঠন, হাসার চক কৃষক উন্নয়ন সংগঠন, সবুজ সংহতি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র যৌথ উদ্যোগে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
মেলায় জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও নানা সংকট মোকাবেলা করে নিজেদের জীবন জীবিকা রক্ষা ও ফসল উৎপাদনে মেহগনি, নিম, গাঁদা ফুল, তামাক ও হুইল পাউডার দিয়ে জৈব বালাইনাশক তৈরি ও ব্যবহার, ফেরেমোন ফাঁদ ব্যবহার, ভার্মি ও গর্ত কম্পোস্টের তৈরি জৈব সার ব্যবহার, স্থানীয় মাছ সংরক্ষণ, হাজল পদ্ধতিতে ডিম ফুটানো, অচাষকৃত উদ্ভিদ সংরক্ষণ, বীজ সংরক্ষণ, দুর্যোগকালীন শুকনা খাবার সংরক্ষণ, ক্যারেট পদ্ধতিতে ফসল চাষ, বস্তা পদ্ধতিতে ফসল চাষ, বালতি পদ্ধতিতে ফসল চাষ, নষ্ট মাটির ফিল্টারে সবজী চাষ, প্লাস্টিক পুনঃব্যবহারের মাধ্যমে বোতলে সবজি চাষ, মাঁচা পদ্ধতিতে ফসল চাষ, মশাল, পরিবেশ বান্ধব চুলা, লবণ তৈরী, হামান দিস্তা, মেটে, খড়ের ঘর, মাছ ধরার আটল, ঝুড়ি পদ্ধতি শামুক, ঘুটের ছাই, মতিয়ার তামাক, গুল, গোচনা ডোল পদ্ধতি, ভিটা উঁচু করণ, ঢেকি, কাকতাড়–য়াসহ ১৬০ ধরনের লোকায়ত জ্ঞানের প্রয়োগ পদ্ধতি প্রদর্শন করা হয়।
এতে সর্বোচ্চ সংখ্যক অভিযোজন চর্চা পদ্ধতি প্রদর্শন করে প্রথম স্থান অর্জন করেন নমিতা মন্ডল, দ্বিতীয় হন কনিকা মন্ডল ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেন নীলিমা মন্ডল।
মেলায় স্থানীয় প্রবীণ কৃষক-কৃষাণীরা নতুন প্রজন্মের কাছে তাদের লোকায়ত জ্ঞান চর্চার নানা তথ্য তুলে ধরেন।
পরে সমাজ সেবক ও কৃষক সুকন্ঠ আউলিয়ার পরিচালনায় অভিযোজন মেলার গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সমাজ সেবক মিজানুর রহমান, হাসার চক পদ্ম কৃষক উন্নয়ন সংগঠনের সন্ধ্যা রানী মন্ডল, পশ্চিম জেলেখালী কৃষক সংগঠনের সভাপতি ভূধর চন্দ্র মন্ডল, শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় মন্ডল, জবা কৃষি নারী সংগঠনের সভাপতি লতা মন্ডল, যুব নারী উমা রানী মিস্ত্রি, হাসার চক কৃষক উন্নয়ন সংগঠনের হৃতিশ কুমার মন্ডল, বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার, বরষা গাইন, বাবলু জোয়ারদার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, দিন দিন শ্যামনগর উপকূলে লবণাক্ততা বাড়ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে লোকায়ত জ্ঞানের গুরুত্ব খুবই বেশি। এসব লোকায়ত জ্ঞান প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম চর্চা হয়ে আসছে। আমাদের কৃষি জমি কমছে। ফসলে পোকার আক্রমণ বাড়ছে। পোকার আক্রমণ ঠেকাতে ও বেশি ফসল উৎপাদনের জন্য অতি মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু জৈব বালাইনাশক দিয়েও পোকা দমন করা যায়। যা স্থানীয় বা লোকায়ত জ্ঞান। এজন্য ফসল রক্ষা, উৎপাদন বৃদ্ধি ও জনস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে লোকায়ত জ্ঞান চর্চা বৃদ্ধির বিকল্প নেই।
-

উপকূলের টেকসই উন্নয়ন ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে উপকূল দিবসে বিশেষ আলোচনা ও মানববন্ধন
১৩ই নভেম্বর ২০২৪ রোজ বুধবার উপকূল দিবস উপলক্ষে উপকূলীয় অঞ্চলের সুরক্ষা ও টেকসই
উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরতে সুন্দরবন প্রেসক্লাবে লিডার্সের আয়োজনে আয়োজিত হলো বিশেষ
আলোচনা সভা ও মানববন্ধন। অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল উপকূল এলাকার পরিবেশগত বিপর্যয়
রোধ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা, এবং স্থানীয় জনগণের টেকসই জীবনমান নিশ্চিত
করার জন্য সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লিডার্সের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমার বর্মন।
আলোচনা সভায় সভাপতি হিসেবে ছিলেন ফরেস্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আইয়ুব
আলী। আরো উপস্থিত ছিলেন লিডার্সের প্রোগ্রাম অফিসার এ বি এম জাকারিয়া, ইউপি সদস্য নিপা
চক্রবর্তী, সুন্দরবন প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ বেলাল হোসেন, অ্যাডভোকেসি অফিসার তমালিকা
মল্লিক সহ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বক্তারা উপকূল অঞ্চলের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন। বিশেষ
করে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, মাটি ক্ষয়, এবং পানির লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে
এই অঞ্চলে জীবন-জীবিকার ওপর যে প্রভাব পড়ছে, সে সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে জোর দেওয়া
হয়। বক্তারা বলেন, উপকূলীয় এলাকাগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ, এবং এ
সমস্যা সমাধানে টেকসই উন্নয়ন কৌশল প্রয়োগের কোনো বিকল্প নেই।
লিডার্সের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমার বর্মন বলেন, সঠিক পরিকল্পনা ও
কার্যকরী উদ্যোগের মাধ্যমে উপকূলীয় এলাকার সুরক্ষা সম্ভব। উপকূলবাসীর জীবনমান উন্নয়ন,
কৃষি ও মৎস্য খাতের টেকসই উন্নয়ন, এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষার জন্য আধুনিক
প্রযুক্তির ব্যবহার প্রয়োজন। তিনি উপকূলের সংকট নিরসনে উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠন করার
দাবি জানান।
আলোচনা সভার পাশাপাশি মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা উপকূলের মানুষের অধিকারের সুরক্ষা,
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ
নেওয়ার দাবি জানান। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, "উপকূলীয় এলাকার মানুষের টেকসই ভবিষ্যৎ
নিশ্চিত করতে আমাদের এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি সংস্থা,
স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।" -

১২ নভেম্বরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে উপকূল দিবস ঘোষণার দাবিতে শ্যামনগরে মানববন্ধন
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নিরাপদ খাদ্য প্রবাহ,
জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষায় উপকূলীয় এলাকার গুরুত্ব অনেক বেশি। কিন্তু সে
অনুযায়ী উপকূলকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। ১৯৭০ সালে ১২ নভেম্বরের প্রলয়ংকারী
ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১০ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। যা পৃথিবীর ইতিহাসে
সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে তালিকাভুক্ত। তাই এই দিনটিকে
উপকূল দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা করতে হবে। একই সাথে আলাদা
উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠন, উপকূলে উঁচু ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ
এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে।
oppo_2 মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) শ্যামনগর প্রেস ক্লাবের সামনে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন
সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিম, সবুজ সংহতি, উপজেলা যুব
স্বেচ্ছাসেবী সমন্বয় কমিটি ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক
আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব দাবি জানান।
বক্তারা আরো বলেন, উপকূলের মানুষের ন্যায্যতা নিশ্চিতে ১২ নভেম্বরকে উপকূল দিবস
হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে। কারণ দেশের তিনভাগের এক ভাগই উপকূল
বেষ্টিত। প্রত্যক দুর্যোগেই উপকূলের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন শ্যামনগর উপজেলা সবুজ সংহতির কুমুদ রঞ্জন, সুন্দরবন
স্টুডন্ট সলিডারিটি টিমের শ্যামনগর পৌরসভা শাখার সভাপতি গাজী আব্দুল্লাহ
আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক তৃপ্তি বিশ্বাস, বারসিক এর সহযোগী আঞ্চলিক
সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার, কোহিনুর ইসলাম, প্রতিমা চক্রবর্তী, বরসা
গাইন প্রমুখ। -

শ্যামনগরে লবণ সহিষ্ণু ধান বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ বিষয়ক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
আজ ১২ নভেম্বর ২০২৪ তারিখ রোজ মঙ্গলবার সাতক্ষীরার শ্যামনগরে লিডার্সের প্রধান
কার্যালয়ে দুই দিনব্যাপী লবণ সহিষ্ণু ধান বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ বিষয়ক প্রশিক্ষণের
উদ্বোধন করা হয়েছে। এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে লিডার্স ও গিভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন।
উপকূলীয় এলাকার কৃষকদের সহায়তা, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এই
প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য।
প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লিডার্সের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী
পরিচালক জনাব রনজিৎ কুমার বর্মন। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন বিএডিসি র উপপরিচালক মোঃ
রমিজুর রহমান, বিনার বৈজ্ঞানিক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মাজহারুল ইসলাম, লিডার্সের
প্রোগ্রাম ম্যানেজার এ বি এম জাকারিয়া, গিভ বাংলাদেশের প্রতিনিধিসহ আরো অনেকে। সভার
সভাপতি তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, “লবণ সহিষ্ণু ধান চাষ উপকূলীয় কৃষকদের জন্য নতুন
সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। এই উদ্যোগ তাদের জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি খাদ্য
নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
গিভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি বলেন, “লবণ সহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবন ও চাষের মাধ্যমে
কৃষকদের প্রাকৃতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা করা সম্ভব। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে
আমরা তাদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ও জ্ঞান প্রদান করতে পারছি, যা তাদের ফলন বাড়াতে
সহায়তা করবে।”
প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী কৃষকদের লবণ সহিষ্ণু ধানের বিভিন্ন জাত, চাষ পদ্ধতি, বীজ উৎপাদন
এবং সংরক্ষণের আধুনিক কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণের শেষে
অংশগ্রহণকারীদের ধানবীজ সংরক্ষণের পাত্র প্রদান করা হবে এবং দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতার
প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে।
এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উপকূলীয় কৃষকদের জন্য একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে কাজ করবে
বলে আয়োজকেরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। -

গাজী শাহ-আলম ও বিএনপি কে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য প্রকাশের বিরুদ্ধে কৈখালী ইউনিয়ন বিএনপির সাংবাদিক সম্মেলন।
শ্যামনগর:সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আজাদ খোকন,রবিবার শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী গাজী শাহ-আলম ও বিএনপি’র বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। সম্প্রতি অগ্রযাত্রা নামক ইউটিউব চ্যানেল এবং এবি লাইভ ফেইসবুক পেজে গাজী শাহ-আলম ও বিএনপি সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য সংবাদ প্রচার করা হয়, যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে বলে জানান তিনি।মাহবুব আজাদ খোকন অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম ও কৈখালী ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আবু খায়ের মল্লিক পরিকল্পিতভাবে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন।কৈখালী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খোকন আরও দাবি করেন, শেখ আব্দুর রহিম বিভিন্ন অপরাধের সাথে যুক্ত থাকলেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বিএনপির প্রার্থী শাহ-আলমের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ব্যবসায়ী পরেশ কুমার গায়েন ও নিমাই রপ্তান উল্লেখ করেন যে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের রাতে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনার মিথ্যা অভিযোগ এনে কৈখালী ইউনিয়নের বিএনপি সভাপতি আবু খায়ের মল্লিক ও চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম ইচ্ছাকৃতভাবে গাজী শাহ-আলমের সাথে এসব বিষয় জড়িয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেন।গাজী শাহ-আলম জানান, আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ও সাংবাদিক ছিলাম। মানব সেবার ব্রত নিয়ে কৈখালীতে ফিরে আসি এবং দুইবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনের কারণে সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হলেও আমার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্যই আমার বিরুদ্ধে এই ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।কৈখালী ইউনিয়ন বিএনপি এই মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রশাসনের কাছে হলুদ সাংবাদিকতা বন্ধ ও সংশ্লিষ্টদের দ্রুত গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছে। -

দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে দু’টি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মো. বদরুজ্জামান (৭০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত ও মীর জুবায়ের (১৯) নামে অপর এক যুবক আহত হয়েছে। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কালিগঞ্জ উপজেলাধীন কালিগঞ্জ-শ্যামনগর সড়কের খানপুর আনসারের ভাটা সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত বৃদ্ধ বদরুজ্জামান সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার রায়পুর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে। আহত মীর জুবায়ের একই উপজেলার মৌতলার ঝড়ুখামার গ্রামের নুরুল আলমের ছেলে। তিনি শ্যামনগরের নকিপুর বাজারের একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মীর জুবায়ের দোকান বন্ধ করে মটরসাইকেলে শ্যামনগরের নকিপুর বাজার থেকে মৌতলার ঝড়ুখামার গ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। প্রতিমধ্যে কালিগঞ্জ-শ্যামনগর সড়কের খানপুর আনসারের ভাটার সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে তার মটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় মোটরসাইকেলের আরোহীরা গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বৃদ্ধ বদরুজ্জামানকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া গুরুতর আহত মীর জুবায়েরকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শাকির হোসেন জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে বৃদ্ধ বদরুজ্জামানের মৃত্যু হয়। এছাড়া আরেকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনজনক হওয়ায় তাকে সাতক্ষীরা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
শ্যামনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফকির তাইজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
-

শ্যামনগরের বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একজন নিহত
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বাঁশ কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পোড়াকাটলা গ্রামে এঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম উদয় কুমার বৈদ্য (৫৫)। তিনি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পোড়াকাটলা গ্রামের মৃত হাজরা বৈদ্যের ছেলে।
বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান হাজী নজরুল ইসলাম জানান, উদয় কুমার বৈদ্য বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির পাশে একটি বাঁশঝাড়ে বাঁশ কাটতে যান। বাঁশ কাটার সময় অসাবধানবশতঃ রাস্তার উপরে বয়ে যাওয়া ১১ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তারে হাতের স্পর্শ ঘটলে বিদ্যুস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায় উদয় বৈদ্য।
শ্যামনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফকির তাইজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
-

সাতক্ষীরায় ২১ কেজি হরিণের মাংসসহ আটক ২
শ্যামনগর :
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ২১ কেজি হরিণের মাংসসহ দুই চোরা শিকারীকে আটক করেছে কোস্টগার্ড। রোববার (২০ অক্টোবর) শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের জেলিয়াখালি এলাকা থেকে এই হরিণের মাংস সহ তাদেরকে আটক করা হয়। এসময় তাদের ব্যবহৃত একটি মটরসাইকেলও জব্দ করে কোস্টগার্ড সদস্যরা।
আটক ব্যাক্তিরা হলেন, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা গ্রামের মাহমুদ মল্লিকের ছেলে মো. মশিউর রহমান শামিম (৪৭) ও একই এলাকার মৃত মো. ওয়াজেদ আলী গাজীর ছেলে মো. লুৎফর রহমান গাজী (৬০)।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার ভোর ৫টার দিকে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অধীনস্থ বিসিজি স্টেশন কয়রার একটি টহল দলের সদস্যরা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের জেলিয়াখালি এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় সেখান থেকে ২১ কেজি হরিণের মাংসসহ দুই চোরা শিকারী মশিউর রহমান শামিম ও লুৎফর রহমানকে আটক করা হয়। জব্দ করা হয় তাদের ব্যবহৃত একটি মটরসাইকেল।
জব্দকৃত হরিণের মাংস, তাদের ব্যবহারিত একটি মোটরসাইকেল ও আটককৃত হরিণ শিকারীদেরকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কাটেশ্বর বন টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার বিএন মো. মুনতাসির ইবনে মহসীন এক প্রেসবিজ্ঞপ্তি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, পেশাদার হরিণশিকারীরা রাতের বেলায় গোপনে সুন্দরবনে ঢুকে হরিণের যাতায়াতের পথে নাইলনের দড়ির ফাঁদ পেতে রাখে। চলাচলের সময় হরিণগুলো সেই ফাঁদে আটকে যায়। পরে বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব হরিণ লোকালয়ে এনে উচ্চ মূল্যে মাংস বিক্রি করা হয়।
-

শ্যামনগরে সেবাদানকারী প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভা
ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স এবং কোডেক এর আয়োজনে, অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ ও অষ্ট্রেলিয়ান এইড-এর সহায়তায় শ্যামনগরে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ১১টায় শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ হলরুমে আয়োজিত সভায় ব্লু-ইকোনমি এন্ড ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকারের স্ট্যান্ডিং কমিটিসমূহ শক্তিশালীকরণ এবং আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উপকূলীয় অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্থ নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠির প্রয়োজনীয় সেবাসমূহ প্রাপ্তিতে উপজেলা পর্যায়ের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সাথে উক্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।প্রকল্পটি উপকূলীয় এলাকার জনগোষ্ঠী-বিশেষ করে নারী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষমতা বৃদ্ধি, জেন্ডার ন্যায্যতা, বাস্তুতন্ত্র (ইকো-সিস্টেম) ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্ষয়-ক্ষতি পুনরুদ্ধারে সহায়তা এবং তাদের অধিকার বাস্তবায়নে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’র সাতক্ষীরা প্রকল্প অফিসের ইনচার্জ ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রশাসক ডা. সঞ্জীব দাশ।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাজমূল হুদা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তামো. জিয়াউর রহমান প্রমুখ।এছাড়া সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা, সমাজসেবা কর্মকর্তা, বন বিভাগের প্রতিনিধি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, মৎস্য বিভাগের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিনিধি, বিভিন্ন এনজিও কর্মকর্তা, প্রিণ্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিক, কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ ও যুব দলের প্রতিনিধিরা।উক্ত মতবিনিময় সভায় আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষয়-ক্ষতি, এর প্রভাব এবং উপকূলীয় এলাকার প্রন্তিক জনগোষ্ঠির জীবন ও জীবিকার জন্য প্রয়োজনীয় সেবাসমূহ কি কি রয়েছে এবং সহজে কমিউনিটির মানুষেরা সেই সেবাসমূহ সহজে পেতে পারে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনার মূল ফলাফল হিসেবে বলা যায়, উক্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং কমিউনিটির প্রতিনিধি ও নেতৃবৃন্দের মাধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরী হয়েছে। যা উপকূলীয় এলাকার প্রন্তিক জনগোষ্ঠির জীবন মান উন্নয়নে বিভিন্ন সেবা প্রাপ্তিতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।সভাটি সঞ্চালনা করেন, ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’র প্রজেক্ট ম্যানেজার মিরাজ উদ্দীন তালুকদার। -

শ্যামনগরে “খোটা শাক রান্না” প্রতিযোগিতা
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বিশ^ খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে অচাষকৃত শাকের রান্না
প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) শ্যামনগর পৌরসভার সোনামুগারী গ্রামে অচাষকৃত
উদ্ভিদবৈচিত্র্যের খাদ্যগুণ ও প্রাপ্তিস্থান সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানানো
এবং সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস
নলেজ (বারসিক) গ্রামীণ নারীদের অংশগ্রহণে এই রান্না প্রতিযোগিতার
আয়োজন করে।
সিক্সটিন ডেজ অব গ্লোবাল অ্যাকশন অন এগ্রোইকোলজি ২০২৪ এর অংশ
হিসেবে আয়োজিত এই রান্না প্রতিযোগিতায় ১২জন নারী বাড়ির আনাচে-
কানাচে, খাল-বিল ও জলাশয় থেকে সংগ্রহ করে কচুশাক, ঘোড়াসেঞ্চী,
মাঠিফোড়া, ডুমুর, বুনো আমড়া, থানকুনি, শাপলা, কলমি, কলার মোচা,
আদাবরুণ, তেলাকচু ও গিমে শাক রান্না করেন।
সোনামুগারী নারী সংগঠন, সবুজ সংহতি, যুব স্বেচ্ছাসেবক কমিটির
সহায়তায় গ্রামীণ এক উৎসবমূখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত এই রান্না
প্রতিযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল খাবার রান্না, স্বাদ গ্রহণ এবং শাকের
সাথে পরিচিতিকরণ।
অচাষকৃত শাক রান্না প্রতিযোগিতায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শ্যামনগর
প্রেসক্লাবের সভাপতি সামিউল মনির, ভুরুলিয়া ইউপি সদস্য মো: আব্দুল মজিদ,
শিক্ষক রনজিত বর্মন, উপসহাকারী কৃষি কর্মকর্তা জিএম আহসানউল্লাহ,
কৃষাণী কোহিনুর বেগম, উন্নয়ন কর্মী লীমা বালা, স্বেচ্ছাসেবক আব্দুল্লাহ,
শিক্ষার্থী বন্যা, বারসিকের সহযোগী আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার,
প্রতিমা চক্রবর্তী ও বিশ্বজিৎ মন্ডল প্রমুখ।
বক্তারা উপস্থিত দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, উপকূলীয় এলাকার মানুষকে প্রতিনিয়ত
প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকবেলা করে টিকে থাকতে হয়। একসময় শ্যামনগর
এলাকা উদ্ভিদবৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ ছিলো। জলবায়ু পরিবর্তন, লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও ঘন
ঘন দুর্যোগের কারণে তা কমতে শুরু করেছে। ভবিষ্যত প্রজন্মের খাদ্য নিরাপত্তা
নিশ্চিত করতে প্রাকৃতিক উৎস সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরী। -

শ্যামনগরে গ্রামীন নারী কৃষি মেলা উদযাপন
গ্রামীণ নারীর মর্যাদাপূর্ণ জীবন গড়ি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করি এই
প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে শ্যামনগরে লিডার্স এর আয়োজনে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও
এ্যাম্বাসি অফ সুইডেনের আর্থিক সহযোগিতায় গ্রামীন নারী কৃষি মেলা ২০২৪ উদযাপন করা
হয়েছে। বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের আড়পাঙ্গাশিয়া প্রিয়নাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৫ অক্টোবর
সকাল ১১ টায় গাবুরা ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের নারীদের নিয়ে এক বর্ণাঢ্য র্যালি আলোচনা
সভা ও গ্রামীণ কৃষি মেলার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
৯ নং বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের সুযোগ্য চেয়ারম্যান জনাব হাজী নজরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আড়পাঙ্গাশিয়া প্রিয়নাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক
জনাব সৌমিত্র জোয়ারদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা উন্নয়ন কর্মী সুমাইয়া
জান্নাত, অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক জনাব নিমাই চন্দ্র মন্ডল, সমাজসেবক জনাব দেবব্রত কুমার
মন্ডল, প্রকল্প সমন্বয়কারী জনাব সুব্রত অধিকারী, মিল অফিসার জনাব জয়দেব কুমার
জোদ্দার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রজেক্ট অফিসার সুলতা রানী সাহা l মেলায় গাবুরা ও
বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের নারীরা চারটি স্টলে তাদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করেন। এই
গ্রামীন নারী কৃষি মেলায় অংশগ্রহণ করে তারা খুবই খুশি। -

সাতক্ষীরায় ‘খোটা শাকের মেলা’
প্রান্তিক মানুষের পুষ্টির আধার হিসেবে বিবেচিত অচাষকৃত উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী ‘খোটা শাকের মেলা’।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম জেলেখালী গ্রামে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক) স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সহায়তায় এই মেলার আয়োজন করে।
সিক্সটিন ডেজ অব গ্লোবাল অ্যাকশন অন এগ্রোইকোলজি-২০২৪ ও বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবসকে সামনে রেখে আয়োজিত এই মেলায় ঝোপঝাড়, আনাচে-কানাচে, ডোবা-নালা ও খাল-বিলে প্রাকৃতিকভাবেই বেড়ে ওঠা থানকুনি, কলমি, হেলাঞ্চ, গাদোমনি, সেঞ্চি, বউনুটে, বুড়িপান, আমরুল, কাটানুটে, ঘুমশাক, নিশিন্দা, বিশার্লাকরনী, মনিরাজ, ধুতরা, ডুমুর, পেপুল, ঘেটকুল, লজ্জাবতী, শাপলা, কালোকচু, লাল কচু, জিবলী, সেচি, বাসক, অ্যালোভেরা, কলার মোচা, ষষ্টিবট, শীষ বট, কলার থোড়, শালুক, নাটা, দুধশাক, দুর্বা, তুলসিসহ দেড় শতাধিক অচাষকৃত উদ্ভিদ প্রদর্শন করেন গ্রামীণ নারীরা।

এসময় তারা প্রদর্শিত খোটা শাকের পুষ্টিগুণ, ব্যবহার, প্রাপ্তির মৌসুম, রান্নার কৌশল ও ঔষধি গুণাবলী তুলে ধরেন।
মেলায় উপস্থিত দর্শনার্থীদের উদ্দেশে অচাষকৃত উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে বক্তব্য রাখেন ইউপি মেম্বার দেবাশিষ মন্ডল ও নীপা চক্রবর্তী, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি মন্ডল, কৃষক ভুধর চন্দ্র মন্ডল, স্বেচ্ছাসেবক গৌতম সরদার, কিষানি পূর্ণিমা রানী, লতা রাবী, শিক্ষার্থী জবা, বারসিক কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ জোয়ারদার ও বিশ্বজিৎ মন্ডল।
এসময় তারা বলেন, প্রকৃতিতে কুড়িয়ে পাওয়া উদ্ভিদ বৈচিত্র্যে যেমন প্রচুর পুষ্টি রয়েছে, তেমনি রয়েছে ওষুধি গুণাগুণ। একইসঙ্গে তা বাঙালি সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, লবণাক্ততা, রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের অপব্যবহার, অবহেলা এবং উৎপত্তিস্থল ধ্বংসের কারণে প্রকৃতি থেকে প্রান্তিক মানুষের পুষ্টির আধার হিসেবে বিবেচিত এসব উদ্ভিদ বৈচিত্র্য বিলুপ্ত হচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে অচাষকৃত উদ্ভিদ বৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখা দরকার।
মেলায় প্রথম স্থান অধিকারী চম্পা মাঝি এককভাবে ১২৬ প্রকার উদ্ভিদ বৈচিত্র্য, দ্বিতীয় অনিতা গাতিদার ১২৫ প্রকার এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী ডলি নস্কর ১১০ প্রকার উদ্ভিদ বৈচিত্র্য প্রদর্শন করেন।