Category: মানবাধিকার

  • বাল্যবিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি: ইউনিসেফ

    বাল্যবিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি: ইউনিসেফ

    ন্যাশনাল ডেস্ক : বাংলাদেশে ৫১ শতাংশ তরুণীর বিয়ে হয় তাদের শৈশবে। দেশে বাল্যবিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ও বিশ্বের মধ্যে অষ্টম। বাংলাদেশে ৩ কোটি ৪৫ লাখ নারীর বিয়ে হয় তাদের বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগে। ১ কোটি ৩ লাখ নারীর বিয়ে হয় তাদের বয়স ১৫ বছর হওয়ার আগে।  আজ বুধবার বাল্যবিয়ে নিয়ে ইউনিসেফের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।  এতে বলা হয়, বাল্যবিয়ে নির্মূলের ক্ষেত্রে ধীরগতি সবচেয়ে বেশি সাব-সাহারান আফ্রিকায়। ওই অঞ্চলে বাল্যবিয়ের অবসানে ২০০ বছরেরও বেশি সময় লাগবে। গত এক দশকে বাল্যবিয়ে ধারাবাহিকভাবে কমা সত্ত্বেও সংঘাত, জলবায়ুজনিত অভিঘাত ও কোভিড-১৯ এর বিরূপ প্রভাবসহ একাধিক সংকট এক্ষেত্রে কষ্টার্জিত অর্জনগুলো নস্যাৎ করে দেওয়ার হুমকি তৈরি করেছে। বৈশ্বিক বহুবিধ সংকটে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কঠিন লড়াইয়ের মুখে।বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, শিশুদের বিয়ে দেওয়া উচিত নয়। অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশে শিশুবধূর সংখ্যা বিস্ময়কর। লাখ লাখ মেয়ের শৈশব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে এবং তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। মেয়েরা যেন স্কুলে যেতে পারে তা নিশ্চিত করতে ও তারা যেন পরিপূর্ণভাবে নিজের মধ্যে থাকা সম্ভাবনা অনুযায়ী বেড়ে উঠতে পারে সে সুযোগ দিতে আমাদের জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ দরকার।তিনি বলেন, যেসব মেয়ের শৈশবে বিয়ে হয়ে যায়, তাদের তাৎক্ষণিক ও জীবনভর এর পরিণতি ভোগ করতে হয়। তাদের স্কুলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভাবনা খুবই কম থাকে ও তারা অল্প বয়সে গর্ভধারণের বাড়তি ঝুঁকির সম্মুখীন হয়, ফলস্বরূপ যা শিশু এবং মাতৃস্বাস্থ্যের জটিলতা ও মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়। বাল্যবিয়ের এই প্রচলন মেয়েদের পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব থেকেও বিচ্ছিন্ন করতে পারে এবং তাদের নিজেদের কমিউনিটিতে অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত রাখতে পারে, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ও সার্বিক কল্যাণের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

    ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করা মেয়েদের ‘বাল্যবিয়ে’ হওয়ার ঝুঁকি বৈশ্বিক গড়ের প্রায় দ্বিগুণ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়, কোভিড-১৯ এর চলমান প্রভাবসমূহের কারণে বিগত এক দশকে বাল্যবিয়ের অবসান ঘটাতে মূল্যবান অর্জনগুলোও হুমকির সম্মুখীন বা এমনকি তা আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, মহামারিটি ইতোমধ্যে বাল্যবিয়ে প্রতিহতের সংখ্যা ২০২০ সাল থেকে এক-চতুর্থাংশ কমিয়ে দিয়েছে।

    ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, বিশ্ব একের পর সংকটে জর্জরিত, যা ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের আশা ও স্বপ্নকে চুরমার করে দিচ্ছে, বিশেষ করে মেয়েদের যাদের বিয়ের কনে হিসেবে নয় বরং শিক্ষার্থী হিসেবে থাকা উচিত। স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সংকট, ক্রমবর্ধমান সশস্ত্র সংঘাত এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব পরিবারগুলোকে বাল্যবিয়ের মতো মিথ্যা ধারণার আশ্রয় নিতে বাধ্য করছে।বিশ্লেষণে অন্তর্ভুক্ত সর্বশেষ বৈশ্বিক হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী আজ জীবিত প্রায় ৬৪ কোটি মেয়ে ও নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের ছোটবেলায়, অথবা বলা যায়, প্রতি বছর ১ কোটি ২০ লাখ মেয়ের বিয়ে হয় তাদের ছোটবেলায়। পাঁচ বছর আগে এ বিষয়ে সর্বশেষ হিসাব প্রকাশের পর এ পর্যন্ত শৈশবে বিয়ে হয়ে যাওয়া তরুণীর সংখ্যা ২১ শতাংশ থেকে ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে এই অগ্রগতি সত্ত্বেও ২০৩০ সালের মধ্যে বাল্যবিয়ের অবসান করার যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা পূরণের জন্য বিশ্বব্যাপী ওই কমার গতি ২০ গুণ দ্রুততর করতে হবে। 

    ক্যাথরিন রাসেল বলেন, আমরা প্রমাণ করেছি যে বাল্যবিয়ের অবসানে অগ্রগতি সম্ভব। তবে এর জন্য বাল্যবিয়ের ঝুঁকিতে থাকা মেয়ে ও পরিবারগুলোর জোরালো সমর্থন প্রয়োজন। মেয়েদের স্কুলে টিকিয়ে রাখার বিষয়ে এবং তাদের অর্থনৈতিক সুযোগ নিশ্চিত করার দিকে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে।

  • সাতক্ষীরায় অর্পিত সম্পত্তি অধিকার সুরক্ষায় মানববন্ধন,গণস্বাক্ষর কর্মসূচি ও প্রধানমনমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান

    সাতক্ষীরায় অর্পিত সম্পত্তি অধিকার সুরক্ষায় মানববন্ধন,গণস্বাক্ষর কর্মসূচি ও প্রধানমনমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান

    প্রেস বিজ্ঞপ্তি: সাতক্ষীরায় অর্পিত সম্পত্তির অধিকার সুরক্ষায় মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর কর্মসূচি ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। স্বদেশ’র আয়োজনে ও এএলআরডি-ঢাকা’র সহযোগিতায়(২৩ মে) সোমবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা জেলা সদরের বাটকেখালি ঋষিপাড়র মোড়ে মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শেষে সাতক্ষীরা কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক সমাজের পক্ষে স্মারকলিপি প্রদান করেন নেতৃবৃন্দ।

    সারাদেশে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রেসাম্য, সমতা, সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিতকরতে ধর্মীয় স্বাধীনতা, সংখ্যালঘু দে নিরাপদে ধর্মীয় চর্চা, ভূমি আইনস রংরক্ষণ, সকল নাগরিকের সমান মর্যাদাসহ সকল ক্ষেত্রে সমান অধিকার বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক সমাজের পক্ষে মাববন্ধন, গণস্বাক্ষর ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দলিত নেতা গৌরপদ পাল, মারিয়া, সুন্দরী, সাধন দাশ, শংকর দাশ, অঞ্জনা বৈরাগী, অনিমা দাশ, মাধবী দাশ, আরবআলী, শাবানআলী, মায়াদাশ, অন্তি দাশপ্রমুখ।

    মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ সংখ্যালঘু ও নাগরিক জীবনে বিরাজিত বহুমুখী সংকট উত্তরণে ২০০৮ ও তার পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে আপনার নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগেরনির্বাচনীইশতেহারেবিবৃত অঙ্গীকারের আলোকে স্মারকলিপির দাবির প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেনএবং সকল পর্যায়ে বৈষম্য বিলোপ এবং ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের বাড়ি ঘরে হামলা ও জখম, জমিজমা, দেবোত্তর সম্পত্তি ও জবর দখলের অপচেষ্টা, ধর্ম অবমাননার মিথ্যা গুজব ছড়ানো বন্ধ, নিরীহ জনগণকে হয়রানি ও তাদের উপাসনালয়ে হামলার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান।

  • শিশু নিশিকে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান

    শিশু নিশিকে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান


    কালিগঞ্জ (শহর) প্রতিনিধি :
    কালিগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে দেড় বছরের শিশু লামিয়া রহমান নিশিকে চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে। ২মার্চ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে লামিয়ার দাদু ইমাম হোসেন এর কাছে চেক প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন, নলতা ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান পাড়, ধলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান গাজী শওকাত হোসেন, কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি শেখ সাইফুল বারী সফু, সাধারন সম্পাদক সুকুমার দাশ বাচ্চু প্রমুখ। শিশু লামিয়া রহমান নিশি কালিগঞ্জ উপজেলার নিজদেবপুর গ্রামের জিল্লুর রহমান এর কন্যা। বর্তমান সে ব্যাঙ্গলরে হাডের চিকিৎসাধিন রয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে শিশু লামিয়ার চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকার চেক পাওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে সন্তোষ প্রকাশ করেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, লামিয়া ছাড়াও আরো ৬জনকে চিকিৎসার জন্য অর্থ প্রকাশ করা হবে।

  • সাতক্ষীরায় নিউজ নেটওয়ার্কের দ্বিতীয় ব্যাচের ৩দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা উদ্বোধন

    সাতক্ষীরায় নিউজ নেটওয়ার্কের দ্বিতীয় ব্যাচের ৩দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা উদ্বোধন

    সাতক্ষীরায় ‘মানবাধিকার সুরক্ষাকারীদের এ্যাডভোকেসি, লবিং ও নিগোশিয়েশন’ শীর্ষক দ্বিতীয় ব্যাচের
    ৩ দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়েছে।
    ১০ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরার তুফান কনভেনশন সেন্টার (লেকভিউ) সম্মেলন কক্ষে নিউজ নেটওয়ার্ক এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছে।
    দ্বিতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করেন দৈনিক ইত্তেফাকের যশোরস্থ স্টাফ রিপোর্টার, নিউজ নেটওয়ার্কের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী ফরাজি আহমেদ সাঈদ বুলবুল।
    সভাপতিত্ব করেন নিউজ নেটওয়ার্ক সাতক্ষীরা জেলা ককাসের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এম কামরুজ্জামান। দ্বিতীয় ব্যাচে প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন উন্নয়ন ও মানবাধিকারকর্মী বেনজীর আহমেদ। সহযোগিতায় ছিলেন নিউজ নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা মুসলিমা আক্তার মৌ।
    ১২ দিন ব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা ৭ ডিসেম্বর শুরু হয়। কর্মশালাটি পৃথক ৪টি ব্যাচে ভাগ করা হয়েছে। ৩ দিন ব্যাপী প্রতিটি ব্যাচে ২৯ জন করে ( ১২দিনে, সর্বমোট ১১৬জন ) প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করবে।
    প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয়-আঞ্চলিক-জাতীয় পত্রিকা ও টেলিভিশনের সাংবাদিক, শিক্ষক, আইনজীবী, উন্নয়নকর্মী, ইমাম, পুরোহিত, সমাজকর্মী ও মানবাধিকারকর্মী।
    ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে নিউজ নেটওয়ার্কের “সাপোটিং হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস ওয়ার্কিং ফর উমেনস অ্যান্ড গার্লস রাইটস ইন বাংলাদেশ” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সাতক্ষীরাতে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

  • সাতক্ষীরায় নিউজ নেটওয়ার্কের ১২ দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু

    সাতক্ষীরায় নিউজ নেটওয়ার্কের ১২ দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু

    সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: সাতক্ষীরায় ‘বাংলাদেশে নারী ও মেয়েদের অধিকার সুরক্ষাকারীদের সহায়তা প্রদান’ শীর্ষক ১২ দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়েছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরার তুফান কনভেনশন সেন্টার (লেকভিউ) সম্মেলন কক্ষে নিউজ নেটওয়ার্ক এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছে। ১২ দিন ব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা পৃথক ৪টি সেশনে ভাগ করা হয়েছে। ৩দিন ব্যাপী প্রতিটি সেশনে ২৫ জন করে (১২দিনে, সর্বমোট ১০০ জন) প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করবেন।
    প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয়-আঞ্চলিক-জাতীয় পত্রিকা ও টেলিভিশনের সাংবাদিক, শিক্ষক, আইনজীবী, উন্নয়নকর্মী, ইমাম, পুরোহিত, সমাজকর্মী ও মানবাধিকারকর্মী।
    প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করেন দৈনিক ইত্তেফাকের যশোরস্থ স্টাফ রিপোর্টার, নিউজ নেটওয়ার্কের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী ফরাজি আহমেদ সাঈদ বুলবুল। সভাপতিত্ব করেন নিউজ নেটওয়ার্ক সাতক্ষীরা জেলা ককাসের সভাপতি অধ্যাপক আনিসুর রহিম। প্রথম সেশনে প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন বিশিষ্ট মানবাধিকার সংগঠক এড.তাহমিদ আকাশ।
    প্রশিক্ষণ কর্মশালার জেলা সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এটিএন বাংলার নিজিস্ব প্রতিনিধি, নিউজ নেটওয়ার্ক সাতক্ষীরা জেলা ককাসের সাধারণ সম্পাদক এম কামরুজ্জামান, নিউজ নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা মুসলিমা আক্তার মৌ।
    প্রসঙ্গত,ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে নিউজ নেটওয়ার্কের “সাপোটিং হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস ওয়ার্কিং ফর উমেনস অ্যান্ড গার্লস রাইটস ইন বাংলাদেশ” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সাতক্ষীরাতে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। নিউজ নেটওয়ার্ক তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিশেষ করে নারী ও বালিকাদের মানবাধিকার রক্ষায় স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক, ধর্মীয় নেতা, উন্নয়নকর্মী ও সিভিল সোসাইটির নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে বিভিন্ন সময়ে মতবিনিময় সভা, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করবে।

  • পাটকল বন্ধ ও শ্রমিককে সেচ্ছা অবসরে পাঠানোর ঘোষণায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম এর উদ্বেগ

    পাটকল বন্ধ ও শ্রমিককে সেচ্ছা অবসরে পাঠানোর ঘোষণায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম এর উদ্বেগ

    সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: রাষ্ট্রায়াত্ত ২৫ টি পাটকল বন্ধ ও ২৪,৮৮৬ জন শ্রমিককে সেচ্ছা অবসরে পাঠানোর ঘোষণায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম এর উদ্বেগ

    করোনাকালীন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রায়াত্ত ২৫ টি পাটকল বন্ধ ও কর্মরত ২৪,৮৮৬ জন শ্রমিককে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক এর মাধ্যমে অবসর প্রদানের ঘোষণায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম-এসএনএফ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। দীর্ঘ দিন যাবত এসব পাটকলে কর্মরত শ্রমিকরা পাটকল আধুনিকায়ন করার জন্য দাবী তুলে আসলেও কর্তৃপক্ষ পাটকলের আধুনিকায়ন করতে সক্ষম হয়নি। উপরন্তু এই করোনাকালীন সময়ে পাটকল বন্ধ করে শ্রমিকদের অবসরে পাঠানোর ঘোষণা অত্যন্ত মর্মান্তিক।

    বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, বছরের পর বছর ধরে লোকসান গোনায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর প্রায় ২৫ হাজার স্থায়ী শ্রমিককে স্বেচ্ছা অবসরে (গোল্ডেন হ্যান্ডশেক) পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি)। তবে বিষয়টি সহজভাবে নিচ্ছেন না পাটকল শ্রমিকেরা। গোল্ডেন হ্যান্ডশেক এর মাধ্যমে অবসরে পাঠানোর সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শ্রমিকরা এক হয়ে রাষ্ট্রায়াত্ত পাটকল রক্ষা শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে আন্দোলনে নেমেছেন। ইতোমধ্যে পাটকল শ্রমিকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। অন্যদিকে, এই কর্মসূচির পরই সরকারের শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সাথে পাটকল শ্রমিক নেতাদের বৈঠক কোন ফলাফল ছাড়াই শেষ হওয়ার পর শ্রমিকরা আমরণ অনশন করার ঘোষণা দিয়েছেন।

    প্রকাশিত সংবাদে আরো জানা যায় যে, বিজেএমসির অধীন ২৬টি পাটকলের মধ্যে বর্তমানে চালু আছে ২৫টি। এর মধ্যে ২২টি পাটকল ও ৩টি ননজুট কারখানা। ঢাকা অঞ্চলে ৭টি, চট্টগ্রামে ১০টি ও খুলনা অঞ্চলে ৯টি পাটকল রয়েছে। পাটকলগুলোতে বর্তমানে স্থায়ী শ্রমিক আছেন ২৪ হাজার ৮৮৬ জন। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত বদলি ও দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ২৬ হাজার। তবে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের আওতায় থাকবেন কেবল স্থায়ী শ্রমিকেরা।

    শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পাট শিল্পের ভবিষ্যৎ ও এ শিল্পের সাথে স¤পৃক্ত সকল শ্রমিকের জীবিকার নিরাপত্তা বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। দ্রুততার সাথে যথাযথ গবেষণা, অনুসন্ধান ও উন্নয়ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের পাট শিল্পকে টিকিয়ে রাখার এবং পাটকল শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম।

    শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের পক্ষে:

    ড. হামিদা হোসেন
    আহ্বায়ক
    শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম

  • লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যার নেপথ্যে ৪ ট্রাভেল এজেন্সি

    লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যার নেপথ্যে ৪ ট্রাভেল এজেন্সি

    ন্যাশনাল ডেক্স:

    লিবিয়ায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার ২৬ বাংলাদেশি। এছাড়া আরও ১১ জনকে গুলিবিদ্ধ করে আহত করা হয়েছে। এই ঘটনার পেছনে রয়েছে দেশের চারটি ট্রাভেল এজেন্সি ও অর্ধশতাধিক দালাল চক্র।

    পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অনুসন্ধান চালিয়ে এসব তথ্য উদঘাটন করেন। এর ভিত্তিতে চার ট্রাভেল এজেন্সি ও ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে সিআইডি।

    সিআইডির এক সূত্রে জানা যায়, অর্গানাইজড ক্রাইমের হিউম্যান ট্রাফিকিং অ্যান্ড ভাইস স্কোয়াডের উপপুলিশ পরিদর্শক এএইচএম রাশেদ ফজল বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলাটি করেছেন। মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে করা মামলাটিতে চারটি ট্রাভেল এজেন্সিসহ ৩৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৩০-৩৫ জনকে।

    মামলার এজাহারের ভাষ্য মতে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের মে মাসের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে আসামিরা হতাহতরাসহ আরও অনেককে ইউরোপ পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় অবৈধভাবে পাচার করেন। এর মধ্যে ২৬ জনকে লিবিয়ায় হত্যা করা হয়েছে, পাশাপাশি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও ১১ বাংলাদেশি। 

    এই ঘটনার পেছনে রাজধানীর নাভীরা লিমিটেড এবং ফ্লাইওভার ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস নামের দুটি প্রতিষ্ঠান জড়িত রয়েছে বলে সিআইডির তদন্তে উঠে আসে। এই দুই প্রতিষ্ঠানের মালিক শেখ মো. মাহবুবুর রহমান ও শেখ সাহিদুর রহমান গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার মুকুন্দপুরের মৃত আব্দুল মোতালেব শেখের ছেলে। এ দুটি ট্রাভেল এজেন্সি ছাড়াও পুরানা পল্টনের স্কাই ভিউ ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস ও বাংলামোটরের লালন নামের আরেকটি ট্রাভেল এজেন্সির নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। 

    সিআইডির হিউম্যান ট্রাফিকিং অ্যান্ড ভাইস স্কোয়াডের অনুসন্ধান বলছে, ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর মালিকসহ অন্য আসামিরা প্রলোভন দেখিয়ে টাকার বিনিময়ে প্রতারণামূলকভাবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রুট ব্যবহার করে ভুক্তভোগীদের পাচার করেছে। কিন্তু সেখানে পাঠিয়ে তাদেরকে কম বেতনে কঠিন শ্রমের কাজে নিয়োজিত করা হতো।

    এই মামলার এজাহারে উল্লেখিত আসামিদের নাম : তানজিদ, বাচ্চু মিলিটারি, নাজমুল, জোবর আলী, জাফর, স্বপন, মিন্টু মিয়া, হেলাল মিয়া, কামাল উদ্দিন ওরফে হাজী কামাল, আলী হোসেন, সাদ্দাম, কামাল হোসেন, রাশিদা বেগম, নুর হোসেন শেখ, ইমাম হোসেন শেখ, আকবর হোসেন শেখ, বুলু বেগম, জুলহাস সরদার, আমির শেখ, দিনা বেগম, নজরুল মোল্লা, শাহদাত হোসেন, জাহিদুল শেখ, জাকির মাতুব্বর, আমির হোসেন, লিয়াকত শেখ, আ. রব মোড়ল, কুদ্দুস বয়াতী, নাসির, সজীব মিয়া, রেজাউল বয়াতী, শেখ মো. মাহবুবুর রহমান, শেখ সাহিদুর রহমান, হাজী শহীদ মিয়া, মো. খবি উদ্দিন ও মুন্নি আক্তার রূপসী।

    অর্গানাইজড ক্রাইমের হিউম্যান ট্রাফিকিং অ্যান্ড ভাইস স্কোয়াডের উপ পুলিশ পরিদর্শক এএইচএম রাশেদ ফজল জানান, গত এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ভুক্তভোগীদের লিবিয়ার বিভিন্ন স্থানে আটকে রাখে। মে মাসের মাঝামাঝি তাদের নিয়ে যাওয়া হয় ত্রিপোলি থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণের শহর মিজদায়। সেখানে আসামিরা লিবীয় সহযোগীদের মাধ্যমে তাদের ওপর নির্যাতন চালাতে থাকে। সেসব ছবি দেশে স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। 

    মুক্তিপণের টাকা নিয়ে আসিমেদের সঙ্গে দরকষাকষির মধ্যে এক সুদানি স্থানীয় মানবপাচারকারীকে হত্যা করে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ নিহত মানবপাচারকারীর স্থানীয় সহযোগীরা গত ২৮ মে আসামিদের সহায়তায় হতভাগ্য পাচারকৃতদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এ সময় তাদের গুলিতে জুয়েল, মানিক, আসাদুল, আয়নাল মোল্লা, জুয়েল-২, মনির, মনির-২, সজীব, ফিরোজ, শামীম, আরফান, রহিম, রাজন, শাকিল, আকাশ, সোহাগ, মো. আলী, সুজন. কামরুল, রকিবুল, লাল চন্দ ও জাকির হোসেনসহ মোট ২৬ বাংলাদেশী নিহত হন। এছাড়া গুরুতর আহত হন আরও ১১ জন। 

  • প্রতাপনগরে জোর পূর্বক জমি দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ

    প্রতাপনগরে জোর পূর্বক জমি দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ

    ডেস্ক রিপোর্ট: করোনা ভাইরাসের কারণে শহরে আটকা পড়া আশাশুনির চাকলা গ্রামের আনোয়ার ঢালীর গ্রামের বাড়ির জমি জোর পূর্বক দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।
    অভিযোগ, একই উপজেলার দীঘলাআইট গ্রামের আকবার জোয়াদ্দার করোনা ভাইরাসের কারণে যখন সবকিছু স্থবির, ঠিক সেই মুহূর্তে আনোয়ার ঢালীর গ্রামের বাড়ির জমি জোর পূর্বক দখল করে ঘর নির্মাণ করছেন।
    সূত্র জানায়, আশাশুনি উপজেলার চাকলা গ্রামের মজিবর হোসেনের ছেলে আনোয়ার ঢালী ২০১৬ সালে তেলিখালী মৌজায় জেল নং ১৫৮, এস এ খতিয়ান নং ২১১, সাবেক এস এ দাগ নং ২১৪, হাল দাগ নং ৭২৯ ও সাবেক এস এ ২১৩ দাগের ২ বিঘা জমি ক্রয় করেন।
    আনোয়ার ঢালীর ৬৪ শতক জমির মধ্যে ৩২ শতক জমি দখলে থাকলেও অপর ৩২ শতক জমি নিয়ে দীঘলাআইট গ্রামের অহেদ জোয়াদ্দারের ছেলে আকবার জোয়াদ্দারের সাথে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছে।
    আনোয়ার ঢালী জানান, গ্রামের শালিসে কোর্টের রায় না পাওয়া পর্যন্ত দুইপক্ষকে জমিতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলেও সেই রায় না মেনে ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।
    সরেজমিনে দেখা যায়, অমিমাংসিত জমিতে জোর করে বাড়ি নির্মাণের কাজ করছেন আকবার জোয়াদ্দার। একই সাথে গ্রামের বাড়িতে থাকা আনোয়ার ঢালীর সন্তানদের হুমকি দিচ্ছে আকবার জোয়াদ্দার।
    এ প্রসঙ্গে সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ মোড়ল বলেন, স্থানীয়দের করা বিচারসহ চেয়ারম্যানের নির্দেশ অমান্য করে ঘর নির্মাণ চালিয়ে যাচ্ছে আকবার জোয়াদ্দার। সে কাউকে মানছে না।
    প্রতাপনগর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউ পি সদস্য আসলাম গাজী বলেন, আনোয়ারের পরিবার গ্রামে না থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শালিসের বিচার অমান্য করে আকবার ঘর নির্মাণ করছে। আকবার কারো কথা না শুনে জমির প্রকৃত মালিক না হয়েও জবর দখল করে ঘর নির্মাণ করছে।

  • মানবাধিকারের সংস্কৃতি নেই বলে বিচারহীনতা বেড়েছে: সুলতানা কামাল

    সাবেক তত্তা¡বধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এড. সুলতানা কামাল বলেছেন, স্বাধীনতা যুদ্ধ করে ৯ মাসে বিজয় অর্জন করেছি। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে মানবিক মর্যাদার কথাটি পরিস্কারভাবে বলা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানকে বলা হয় পৃথিবীর অন্যতম ভালো সংবিধান। সেটা বলা হয়, এ কারণে এখানে মানুষের মৈলিক অধিকার, মানববাধিকারসহ সব কিছু স্পষ্টভাবে লিখে দেওয়া হয়েছে। এখন বলা হচ্ছে, এসডিজিতে কেউ পিছিয়ে থাকবে না। কিন্তু সংবিধানে সেটা অনেক আগেই বলা হয়েছে। বাংলাদেশের কোন পরিচয়ের মানুষ কোনভাবে পিছিয়ে থাকবে না। সেটা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ছিলো। রাষ্ট্রের যে অন্যতম উপাদান জনগণ। আমরা সেটা ভুলতে বসেছি। শুধু যে রাষ্ট্রের পরিচালনার দায়িত্ব আছে, তারা না আমরাও নিজেরাও ভুলে গেছি যে আমরা রাষ্ট্রের অন্যতম উপাদান। একটি ভুখন্ড দিয়ে রাষ্ট্র হতে পারে না। আমরা আত্মবিস্মৃত হয়ে গেছি। আত্মবিস্মৃতি হওয়ার বিভিন্ন অর্থ আছে। যদি এটা করে থাকি তাহলে আমরা একুশের চেতনার সাথে বিশ^াস রাখতে পারিনি। আমরা একুশের চেতনা বলতে আমরা কি বলেছিলাম, আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলতে চাই। আমার পরিচয়টা আমি ধরে রাখতে চাই। আমার পরিচয়ের উপর আক্রমণ, আমি হতে দেব না। নিজেকে রক্ষা করার বিরাট একটি আকুতি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি শুরু করলাম ভাষা আন্দোলন। সেটি শুধু নিজের জন্য করলাম না, সবার জন্য করলাম। সে কারণে সেটা আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেলো। এর পরে বিভিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি।
    সোমবার বিকেলে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের স. ম আলাউদ্দিন মিলনায়তনে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন সাতক্ষীরা জেলা শাখার আহবায়ক এড. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্ব করেন।
    সুলতানা কামাল আরও বলেন, যে শহরের মানুষ কারো মৃত্যুতে বিচলিত হয় না, সে শহরে মানুষ বাস করতে পারে না। আমরা যদি সেটাকে সেভাবে দেখার চেষ্টা করি, যে দেশে মানববাধিকার লঙ্ঘন হতে থাকে এবং বিনা বিচারে মানুষ মারা যাচ্ছে, সে দেশে কিভাবে মানুষ বাস করে। মানুষকে বসবাস করতে হলে সেই পরিস্থিতি বলবার চেষ্টা করতে হবে। বর্তমানে আমরা এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতির মধ্যে ঢুকে গেছি, রাজনীতির মধ্যে যদি সংস্কৃতি না থাকে এবং সংস্কৃতির মধ্যে যদি রাজনীতি না থাকে তাহলে মনস্য জীবন যাপনের জন্য যে পরিস্থিতি প্রয়োজন হয় সেটা তৈরী করতে পারিনি। যারা রাজনীতি করে সরকারে যায় তারা মানুষের হয়ে জনগণের হয়ে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পায়। আমার যে সংস্কৃতিতে বাস করি, সেটা হয়ে গেছে এখও সামন্ত সংস্কৃতি। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি আমরা এখনও যেতেই পারিনি। আমরা গণতন্ত্রের কথা বলেছি, মুক্তিযুদ্ধ করেছি। সমস্ত পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়েছে বাংলাদেশের দিকে। কিন্তু জনগণের মানববাধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারিনি।
    সুলতানা কামাল আরও বলেন, একটি এলাকায় ১০টি দরিদ্র পরিবার আছে, সেখানে দুটি কার্ড এসেছে। সেখানে কাকে সেই কার্ড দুটি দেব। সেখানে দুর্নীতি, স্বজনপ্রতি করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। বিপদে পড়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি বলে বেড়াচ্ছি, আমার দেশের জন্য এতো উন্নতি করেছি এবং এটি যেন সরকারের অনুগ্রহ। সরকার আমাকে অনুগ্রহ করে দিয়েছে। আমরা যা কিছু পাই, মনে করি- আমি যে পেয়েছি এটাই অনেক। যতটুকু আমরা পেয়েছি সেটাই অনেক। এটা নিয়ে সন্তষ্ট থাকি।
    অন্য একজন কেন পায়নি সেটা বলতে গেলে যদি আমারটা নিয়ে যায়- সে কারণে আমরা কিছু বলতে যাই না। আমাদের আত্ম-মর্যাদা ঘাটতি পেয়েছে। আমরা যেখানে পাকিস্তানের মতো প্রতাব সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে নিরস্ত্র জনতা যুদ্ধ করে দেশটাকে স্বাধীন করলাম। সেই মানুষগুলি আজকে নিজে কিছু পেয়ে চুপ থাকছে এবং অন্যের অধিকারের কথা বলছে না। কথা বলার অধিকার হারিয়ে ফেলেছি। যারা কথা বলছি না, তারাও কী বিপদের বাইরে আছি? চুপ করে থাকলেও তাদের স্বার্থে ঘা লাগলে আমাকে এসে ধরবে। চুপ করে থাকলেও দিনে দিনে আমরা শুন্য হয়ে যাবো।
    এড. সুলতানা কামাল আরো বলেন, ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে যদি কয়েক লক্ষ মানুষ দুর্বৃত্তপনা করে সব কিছু নিয়ে নেয় তারপরও আমরা ‘নেই’ হয়ে যাবো। এখন বাঁশের চেয়ে কুঞ্চি শক্ত হয়ে গেছে। এখন বিমান বন্দরে প্লেন নামতে পারেনা। সেখানে কেউ গেলে সবাই ঘিরে ধরে। আমাদের দেশে কোন অনুষ্ঠান হলে সেখানে চেয়ারে লেখা লাগে-এমপি ছাড়া কেউ বসবেন না। আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির পরিচয় কোথায় যাচ্ছে। এই একটা জাতি নারীদের ফতোয়া দিয়ে পিটিয়ে মারে, শিশুদের পিটিয়ে মারে, কেউ কিছু বলে না-দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে এবং ভিডিও করে ভাইরাল করে। আন্তর্জাতিক ফোরামে যাওয়ার পর আমাদের শুনতে হয়। তোমাদের দেশে অনেকে উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু এসব দিকগুলোতে তোমরা কতটা পিছিয়ে আছো। মানববাধিকারের সংস্কৃতি নেই বলে বিচারহীনতা বেড়েছে। বিচারহীনতা হচ্ছে বলে দিনের পর দিন মানববাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় বেড়ে যাচ্ছে। এটি বিষাক্ত চক্রের মতো। এটি বন্ধ করতে পারছি না। সেজন্য আমাদের সকলের একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতিটা এমন হয়ে গেছে, মানববাধিকারের কথা বললেই তারা ভাবে তাদের বিপক্ষে কথা বলছে। মানববাধিকারের সাথে যারা সরাসরি জড়িত বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে একটি বৈরী প্রতিক্রিয়া এবং বৈরী প্রতিক্রয়ার প্রতিফলনে আমাদের সম্পর্কের মধ্যে চলে আসে। সেই জায়গায় আমাদের অবশ্যই পরিস্কার করতে হবে। মানববাধিকার এমন একটি বিষয়ে সাংবিধানিকভাবে রক্ষা করতে বাধ্য। মানববাধিকার এগিয়ে নেওয়া যাওয়াটা তার সাংবিধানিক এবং নৈতিক দায়িত্ব। এটি যদি তারা না করে, সেটা তাদের ব্যর্থতা। সেই জায়গায় আমাদের শক্ত হতে হবে।
    বাংলাদেশে মানবাধিকারের লঙ্ঘনের প্যাটার্ন একেবারে এটাই দাঁড়িয়েছে। আমার কাছে অনেকগুলি আবেদন এসেছে। এতগুলো বিষয়ে আমার একারে পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। সেটা সমাধান করতে হবে সবাইকে। এক সাথে দাঁড়াতে হবে। সেজন্য মানববাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন যাত্রা শুরু করেছে।
    সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা বলেন, মানবাধিকার যে ভাঙুক সেটা রাষ্ট্রকে ধরতে হবে। কাউকে ধরে নিয়ে যদি গুম করে সেটা যদি রাষ্ট্রীয় বাহিনী বা রাষ্ট্রীয় বহিভূত বাহিনী যদি করে সেটাও দোষণীয়। রাষ্ট্রীয় বর্হিভূত বাহিনী করে তবে সেটা তদন্ত করে সেই ঘটনার সুরাহা করা সাংবিধানিকভাবে দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যারা গেছে তাদের বলতে চাই-আমরা আপনাদের হাত ধরে দায়িত্ব দেয়নি। আপনারা আমাদের কাছে হাত জোড় করে বলেছেন-আমাদের সেবা করার সুযোগ দিন। আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। সৎ ভাবে, স্বচ্ছভাবে সেবা করেন। আমাদের আস্থা দিয়েছি। আনুগত্ব দিয়েছি। আপনার যে আইন কানুন দিয়েছেন সেটা মেনে চলছি, এই কারণেই আপনাদের উপর এই দায়িত্ব অর্পণ করেছি। এটা আমার নিজের কথা নয়। বন্ধবন্ধু তার নিজের অসমাপ্ত আত্মজীবনীতি লিখেছেন। বন্ধবন্ধুর কন্যাকে তার পিতার কথাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। বঙ্গবন্ধু আরও লিখেছেন, যারা স্বৈরাচার, তারা এমন ভাব করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ যেন জনগণের নয়, বিশেষ গোষ্টির। এই বিষয়টি তাকে মনে করিয়ে দিতে চাই। তিনি (প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা) নিজেই বইটি পড়েছেন। এখনও পড়েন। চোখের পানি দিয়ে পড়েন। হৃদয়ের আকুতি দিয়ে পড়েন। আমরাও পড়ছি। সেটা আপনাকে মনে করিয়ে দিতে চাই। আপনি স্বচ্ছ ও জবাব দিহিতাভাবে দেশ পরিচালনা করেন। আপনার পিতার নির্দেশ অনুযায়ী দেশ চালাতে চান। তাহলে বিষয়টির প্রতি মনযোগি হবেন। যদি সেটা না হয়। দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন না হলে আপনার দ্বার দুষ্টের পালন ও শীষ্টের দমন হয় আপনি কিন্তু মহা বিপদে পড়বেন। সেই বিপদ থেকে আপনাকে কেউ উদ্ধার করতে পারবে না। কাজেই বিষয়টি আমাদের নিজেদেরই বার বার বলতে হবে মনে করতে এবং মনে করিয়ে দিতে হবে। মনে করার এবং মনে কিরয়ে দেওয়ার জন্য মানববাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন যাত্রা শুরু করেছে। আমরা এক সাথে এই কাজটি করতে পারবো। আমরা এতোগুলো মানুষ যখন কাজ করেছি তখন কোথাও না কোথাও আমাদের একটি শক্তি দাঁড় করাতে পারবো। আমাদের হাতে সেই ক্ষমতা আছে। আমাদের অন্তরে যদি সেই শক্তি থাকে, প্রতিজ্ঞা থাকে, আমরা সে কাজ অবশ্যই পারবো।
    সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উত্তরণ পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু আহমেদ, প্রফেসর আব্দুল হামিদ, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আনিসুর রহিম, সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড.এস এম হায়দার, সিনিয়র আইনজীবী এড. আবুল হোসেন, সাবেক পিপি এড. ওসমান গনি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী, সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জী, এম. কামরুজ্জামান, রঘুনাথ খাঁ, সমাজ সেবক আবুল কালাম বাবলা, নারী নেত্রী জোসনা দত্ত, ফরিদা আক্তার বানু, জেলা পরিষদ সদস্য এড. শাহনেওয়াজ পারভীন মিলি, এড. আজাদ হোসেন বেলাল, এড. আল মাহমুদ পলাশ, এড. কাজী আব্দুল হামিদ, রাজনৈতিক আলি নুর খান বাবুল, কাজেম আলী, প্রভাষক ইদ্রিস আলী প্রমুখ।

  • যশোরে বিএইচআরডিএফএর কেন্দ্রীয় সম্মেলন : সাক্ষী সুরক্ষা ও মানবাধিকার কর্মীদের সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি

    যশোরে বিএইচআরডিএফএর কেন্দ্রীয় সম্মেলন : সাক্ষী সুরক্ষা ও মানবাধিকার কর্মীদের সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি

    বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স ফোরামের (বিএইচআরডিএফ) কেন্দ্রীয় সম্মেলন আজ (সোমবার) যশোরের সিটি প্লাজা কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে সাক্ষী সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং মানবাধিকার কর্মীদের সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি জানানো হয়। একইসাথে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর মায়ানমারের নির্যাতনের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করার জন্য গাম্বিয়াকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।
    সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোসফেকা রাজ্জাক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিউজ নেটওয়ার্ক-এর সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুজ্জামান, উদয়ঙ্কুর সেবা সংস্থা (ইউএসএস) এর নির্বাহী পরিচালক আলাউদ্দিন আলী, নিউজ নেটওয়ার্কের প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট রেজাউল করিম, বিএইচআরডিএফ-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মিলন রহমান, রংপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম দুলু, অ্যাড. এ.এ.এম মুনীর চৌধুরী, সাংবাদিক মাহবুবুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন, সাবেক অধ্যক্ষ সারওয়ার মানিক, অ্যাড, আনজুমান আরা শাপলা, নিশিকান্ত রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনিসুর রহিম, নূর বখত, আশেক-ই- এলাহী, সাংবাদিক এম কামরুজ্জামান ও ইন্দ্রজিৎ রায়সহ ৭টি জেলার প্রতিনিধিরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন প্রতিদিনের কথাার ভারপ্রপ্ত সম্পাদক ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল।
    নিউজ নেটওয়ার্ক ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে ও উদয়ঙ্কুর সেবা সংস্থা (ইউএসএস) এর সাথে যৌথভাবে ‘বাংলাদেশে নারী ও মেয়েদের অধিকার সুরক্ষাকারীদের সহায়তা প্রদান’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স ফোরামের মাধ্যমে মানবাধিকার সুরক্ষাকারীদের সহায়তা প্রদান করছে।