Category: মতামত

  • অবৈধ ইটভাটার ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে জীবন ও পরিবেশ

    অবৈধ ইটভাটার ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে জীবন ও পরিবেশ

    সাতক্ষীরা জেলার প্রাণ-প্রকৃতি ও মানুষের স্বাস্থ্যকে গ্রাস করছে বেআইনিভাবে পরিচালিত অসংখ্য ইটভাটা। আইন এবং উচ্চ আদালতের স্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও প্রভাবশালী ইটভাটা মালিকেরা অবাধে ইট পোড়ানোর জন্য কাঠ, তুষকাঠ এবং টায়ার পোড়ানোর মতো পরিবেশবিধ্বংসী জ্বালানি ব্যবহার করছেন। এই সব ইটভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া বাতাসকে বিষাক্ত করে তুলছে, যা একদিকে গাছপালা ধ্বংস করছে, অন্যদিকে এলাকাবাসীর ফুসফুসে ঢুকছে ক্যান্সার ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকি।


    সাতক্ষীরা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ‘সাতক্ষীরায় মোট ৯৬টি ইটভাটার মধ্যে ৮৩টি ঝিকঝাক পদ্ধতির এবং ১৩টি সনাতনী পদ্ধতির ভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ৬৭টি ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। ছাড়পত্রবিহীন এসব অবৈধ ইটভাটার কোনো সরকারি লাইসেন্সও নেই। শুধু উচ্চ আদালতে একটি রিটের মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বছরের পর বছর এসব ইটভাটা অবৈধভাবে পরিচালনা করছেন ভাটামালিকরা।’
    সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের নুনগোলা এলাকায় মেসার্স এমআরএস ব্রিকস নামে একটি ইটভাটা বেতনা নদীর চর দখল করে গড়ে উঠেছে। এই ভাটায় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের তোয়াক্কা না করে নির্বিচারে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। ভাটার চারপাশে স্তুপ আকারে জ্বালানি কাঠের মজুত দেখা গেছে এবং প্রবেশমুখে তুষকাঠও সাজানো রয়েছে। জনবসতি এলাকায় অবস্থিত এই ভাটায় কাঠ ও তুষকাঠ পোড়ানোর ফলে যে কালো ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে, তা বায়ু দূষণ করে স্থানীয়দের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। এছাড়া, সাতক্ষীরা সদরের গাভা ফিংড়ী এলাকার রাহাত ব্রিকসসহ বিনেরপোতা এলাকার হাবিব ব্রিকস, এসবিএফ ব্রিকস, সাদিয়া ব্রিকস, বিবি ব্রিকস, এসএলবি ব্রিকস, হাওয়ালখালির রাকিন ব্রিকস, ভাদড়া মোড়ের কেএন ব্রিকসসহ আরও অনেক ইটভাটায় কয়লার সঙ্গে কাঠ ও তুষকাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। আশাশুনি উপজেলার হাজী ব্রিকস, গুণাকরকাটির রুমানা ব্রিকস, সরদার ব্রিকস, কালিগঞ্জ উপজেলার একতা ব্রিকস, উজিরপুরের টিআরবি ব্রিকস, বাজারগ্রামের শেখ ব্রিকস, ময়না ব্রিকস, চন্ডিপুরের এস বি-১৭ ব্রিকস, শ্যামনগরের এবিআর ব্রিকস, সোনারমোড়ের এইচ.বি ব্রিকস ও আশা ব্রিকস, খানপুরের গাজী ব্রিকসসহ জেলার শতাধিক ভাটায় এই অনিয়ন্ত্রিত জ্বালানি ব্যবহারের ফলে আশপাশের মানুষের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইটভাটাগুলোর আশেপাশে থাকা গাছপালা যেন ধোঁয়ার চাদরে ঢাকা পড়ে গেছে। কৃষকের ফসল, ফলের বাগান, এমনকি বাড়ির উঠানের সবুজ ঘাসও এই বিষাক্ত কালির আঘাতে দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। অথচ এই গাছগুলোই ছিল সাতক্ষীরার মাটি, পানি, বাতাসের বিশুদ্ধতার প্রতীক।
    ইটভাটা মালিকেরা যুক্তি দেন, কয়লার দাম বেড়ে গেছে, তাই কাঠের মিশ্রণ ছাড়া ইট পোড়ানো সম্ভব নয়। কিন্তু এই যুক্তি এলাকার শিশু ও বৃদ্ধদের বিষাক্ত বাতাসে শ্বাসকষ্টের পেছনের কারণ হতে পারে না। এদের কেউ কেউ তো সারা জীবনেও শহরের বিশুদ্ধ বাতাসের স্বাদ পাননি, অথচ বিষাক্ত ধোঁয়ায় তাদের ফুসফুসের শুদ্ধতা দিন দিন হারাচ্ছে।
    বিষয়টি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে যখন দেখা যাচ্ছে, সাতক্ষীরা জেলার প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারছে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ নিলেও, ইটভাটা মালিকরা একরকমের আইন অবজ্ঞা করে অবৈধভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বহুবার এসব ইটভাটা বন্ধের দাবিতে আওয়াজ তুলেছে, কিন্তু আদালতের রিটের বাধার কারণে তাদের চেষ্টাও বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।
    অথচ, প্রাকৃতিক পরিবেশের ক্ষতি শুধুমাত্র গাছপালা বা প্রাণীদের ওপরই পড়ে না, এই প্রভাব পরোক্ষভাবে মানুষের জীবনেও আঘাত হানে। যেসব ইটভাটা থেকে বায়ুতে নির্গত হচ্ছে ক্ষতিকারক রাসায়নিক ধোঁয়া, তা শুধু এলাকার জল, মাটি বা উদ্ভিদের ক্ষতি করছে না—ক্ষতি করছে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবনযাত্রা, তাদের সুস্থতা। এই অবস্থা চলতে থাকলে হয়তো একদিন সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী প্রকৃতি ধোঁয়ার কুয়াশায় হারিয়ে যাবে।
    সাতক্ষীরায় এমন অনিয়ন্ত্রিত ইটভাটা ব্যবস্থার অবসান ঘটাতে হলে, প্রয়োজন কঠোর পদক্ষেপ। প্রশাসনের উচিত স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের গুরুত্ব বিবেচনা করে অবিলম্বে এসব ইটভাটা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। তদুপরি, ইটভাটাগুলোকে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারে বাধ্য করতে পারলে আমাদের ফসলি জমি, খাল-বিল ও মানুষের জীবন আবারো নিরাপদ হয়ে উঠবে। আমাদের জন্য এখন সময় এসেছে দায়িত্বশীল হওয়ার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে একটি সম্মিলিত সচেতনতা এবং দায়িত্বশীলতা ছাড়া সাতক্ষীরার ধোঁয়ার চাদর থেকে মুক্তি সম্ভব নয়। তাহলে, হয়তো আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য আবার একটি সবুজ সাতক্ষীরার স্বপ্ন দেখতে পারবে -যেখানে প্রতিটি নি:শ্বাস হবে মুক্ত, বিশুদ্ধ এবং জীবনমুখী।

  • অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশা

    অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশা

    গণমাধ্যমে একটি লেখা চোখে পড়ল, ‘বাংলাদেশ এমন একটি দেশ, যা বারবার স্বাধীন হয়, এটি ভবিষ্যতে আবারও স্বাধীন হবে’। কথাটিতে
    প্রথমে কৌতুক খুঁজে পেলেও একটু পরেই কৌতুকের আড়ালে এক শিরশিরে ভয়াবহতা আঘাত করলো মস্তিষ্কের গভীরে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে
    আবারও এমন কোনো স্বৈরাচারী শাসক বা রাজতন্ত্রীয় পরিবারতান্ত্রিক শাসক বা চামচা-দালালতান্ত্রিক শাসক বাংলাদেশের ক্ষমতার
    মসনদে জেঁকে বসবে এবং এই রকম মরণকামড় দিয়ে ছাত্রজনতার রক্ত খাবে। স্বাধীন দেশে ভিনদেশী শত্রুশক্তির মতো নাগরিকদের উপর
    গণহত্যা চালাবে। তখন আবার ছাত্র-জনতাকে তার কবল থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য ‘এক দফা’ স্বাধীনতার ডাক দিতে হবে। রক্তগঙ্গায় ভেসে
    যাবে সহস্র লাশ।
    বাংলাদেশে ৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। তারপর, কোনো একদিন একটি ‘অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ’
    নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তারপর বলাবাহুল্য, বাংলাদেশের মানুষ — আবেগী, হুজুগে, ধর্মপ্রবণ, ধর্মান্ধ, মূর্খ, বিশেষ করে সাম্প্রতিক
    পরিস্থিতিতে হাসিনা-বিদ্বেষী গণভোটারেরা হয়তো গণস্রোতে, গত ১৮ বছর ধরে অভুক্ত কোনো ইসলামিক ‘চেতনা’ বা পরিবারতান্ত্রিক
    ‘চেতনা’কে  নির্বাচিত করবে। তারপর? তারপর কী হবে?
    তারপর কি রাষ্ট্রের কেন্দ্র থেকে প্রান্ত পর্যন্ত আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে? লেজুড়বৃত্তিক শিক্ষক-ছাত্ররাজনীতির অবসান হবে?
    সর্বগ্রাসী লুটপাট, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি বন্ধ হবে? রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় স্বজনতোষী পুঁজিবাদ কায়েম, টাকা পাচার, ঋণের নামে
    ব্যাংক সাবাড়, ঋণখেলাপি ধারা বন্ধ হবে? ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় কোষাগার লুণ্ঠন বন্ধ হবে? প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানে
    অমুকপন্থী-তমুকপন্থীর অসুস্থ দলবাজি কি বন্ধ হবে? পেশাজীবীদের মধ্যে চামচামি-দালালির দলবাজি সংগঠন কি বন্ধ হবে? দেশের নাগরিক-
    জনতার সবর্স্তরে এবং সরকারি পেশাজীবীদের স্তরে স্তরে সরকারি দল কর্তৃক ‘আদর্শের সৈনিক’ তথা দালাল ও গুণ্ডাবাহিনী পোষা এবং
    তাদের হাতে অস্ত্র সরবরাহ করা কি বন্ধ হবে? রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করা কি বন্ধ হবে? পুলিশ ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে
    জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানো কি বন্ধ হবে? দেশের সর্বস্তরে সর্বক্ষেত্রে চামচামি-দালালি, তেলবাজি ও ‘ব্যক্তি-পূজা’র সংস্কৃতি কি বন্ধ
    হবে? ‘মহান নেতা’র নামে ‘আদর্শের-সৈনিক’দের অসহ্য বিরক্তিকর ঘেউঘেউ ও জুলুম-নির্যাতন কি বন্ধ হবে? দেশের সব নাগরিক দলমত
    নির্বিশেষে সর্ব অবস্থায় নির্ভয়ে কি মুখ খুলতে পারবে? ন্যায্য দাবি নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে পারবে? আক্ষেপ-বিক্ষোভ প্রকাশ করতে পারবে?
    চামচামি-দালালিবিহীন স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও জনমুখী শক্তিশালী সংবাদমাধ্যম-গণমাধ্যম কি প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে? রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও
    সরকার কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘন কি বন্ধ হবে? সরকারি নিয়ন্ত্রণে ফ্যাসিবাদী চক্রান্তে র‌্যাব-ডিজিএফআই ধরনের বিভিন্ন স্পেশাল
    বাহিনী ব্যবহার করে ‘আয়না-ঘর’ টাইপে ভিন্নমতের বা অপছন্দের লোককে ধরে নিয়ে গোপনে অজ্ঞাত স্থানে নৃশংসভাবে গুম-খুন-হত্যা কি
    বন্ধ হবে? রাজনৈতিক বিবেচনায় ও ক্ষমতার মদদে ব্যবসায়িক-মজুতদারি, সিন্ডিকেট-কারসাজি, দলীয় লোকদের বহুস্তরী চাঁদাবাজি, চুরি-
    ডাকাতির-অভয়ারণ্য নির্মূল হয়ে ন্যায় ও আইনি ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠিত হবে? অর্থনীতিতে ও বাজার-ব্যবস্থায় নৈরাজ্য, অস্থিরতা ও
    ভারসাম্যহীনতা কি বন্ধ হবে?
    দেড় যুগ ধরে বঞ্চিত-উপোসী কাউকে দেশের ক্ষমতায় নির্বাচিত করে, রাজতন্ত্রের আদলে রাজনৈতিক-পরিবারতন্ত্র পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করে
    বাংলাদেশের মানুষের উপরের চাওয়াগুলো পূরণ হওয়া সম্ভব নয় বলেই আমরা মনে করি। আমরা একচ্ছত্র কর্তৃত্বের পরিবারতন্ত্রের বিলোপ

    চাই। আমরা বাংলাদেশের সাধারণ জনতা — স্বৈরতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র, ব্যক্তি-পূজা-তন্ত্র, ইয়েস-স্যার-তন্ত্র, চামচামি-দালালি-তন্ত্র,
    তেল-তন্ত্র, তথাকথিত-আদর্শ-তন্ত্র — এসবের বিকল্প চাই। এবং সেকারণেই, ‘দ্রুত রাজনৈতিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর’
    বাংলাদেশের সংকট-সমস্যা সমাধান করবে না বরং আরও ঘনীভূত করবে। যারা দ্রুত ‘নির্বাচিত’ রাজনৈতিক সরকার চাচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য খুব
    সাধু নয়। তাছাড়া তথাকথিত ‘গণতন্ত্র’ বাংলাদেশের মানুষের জন্য কতখানি কল্যাণ ও সুফল বয়ে এনেছে তা তো আমরা দেখেছি। বাংলাদেশে
    রাজনৈতিক সরকার মানেই দেশব্যাপী চামচার চাঁদাবাজি, দালালের দখলবাজি, ‘আদর্শের সৈনিক’দের লুটপাট। এদেশে রাজনীতি দখলবাজিকে
    চালায় নাকি দখলবাজি রাজনীতিকে চালায় — তা এক দুর্জ্ঞেয় রহস্য। সেই রহস্য মোচনের সময় আজ এসেছে বলে মনে হয়।
    বাংলাদেশের মানুষ যেন এক শকুনের নখর থেকে আরেক শকুনের নখরে বিদ্ধ হতে না পারে, এক গর্ত থেকে উঠে আরেক গর্তে পড়ে না যায়। এক
    গণতন্ত্রবেশী-স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্ত হয়ে আরেক গণতন্ত্রবেশী-স্বৈরাচারের হাতে না পড়ে। বাংলাদেশের মানুষের হাড় জ্বলে গেছে।
    বাংলাদেশের মানুষ এখন সম্পূর্ণ নতুন নেতৃত্ব চায়, ভালো বিকল্প চায়। তারা পুরনোকে আর নতুন করে আঁকড়ে ধরতে চায় না। চোরকে খেদিয়ে
    নতুন করে কোনো ডাকাতকে আমন্ত্রণ জানানো ঠিক হবে না। তাছাড়া, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময়ের বাংলাদেশ-বিরোধীরা কেউ বাংলাদেশের
    পরিচালনায় আসুক; ধর্মীয় মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীরা আমার দেশ কব্জায় নিয়ে সকল কিছু জিম্মি করুক; সচেতন, প্রগতিশীল ও
    অসাম্প্রদায়িক ছাত্রসমাজ তা কোনোদিন-ই চাইবে না।
    বাংলাদেশের সবর্স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে চামচামি-দালালির লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র-শিক্ষক-রাজনীতি আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে।
    শিক্ষকেরা তাদের আসল কাজ বাদ দিয়ে লাল-নীল-সাদা রাজনীতিতে আর যেন রঙিন হয়ে না উঠতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ক্যাম্পাস ও
    আবাসিক হলগুলো আর যেন ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের খোঁয়াড়ে পরিণত না হয়, নির্যাতন-কেন্দ্রে পরিণত না হয়। প্রয়োজনে
    শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত ছাত্রসংসদ থাকতে পারবে। তবে, ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন’ যেন জেগে থাকে
    অতন্দ্র প্রহরী হয়ে।
    দেশের সর্বস্তরের গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারগুলো রাজনৈতিক দলের দালাল ও তেলবাজ আর যেন দখল না করে। রাষ্ট্রের সর্বস্তরের পেশাজীবীদের
    মধ্যে রাজনৈতিক দলের লেজ-ভিত্তিক চামচামি-দালালির রাজনৈতিক সংগঠন আইন করে বন্ধ করতে হবে। জনপ্রশাসন, পুলিশপ্রশাসন ও
    আদালত যেন সরকারদলীয় চামচামি-দালালি বাদ দিয়ে স্বাধীনভাবে জনগণের জন্য কাজ করতে পারে। রাষ্ট্রের আদালত বা কোর্ট যেন আর
    কোনোদিন কারও কথিত ‘পেটিকোটে’ পরিণত না হয়।
    পদ্মাসেতু-মেট্রোরেল-টানেল-স্যাটেলাইট টাইপের ‘উন্নয়ন’ হওয়া যেমন জরুরি তার চেয়েও অধিক জরুরি বাজারব্যবস্থা স্থিতিশীল হওয়া। যাতে
    সাধারণ মানুষ খেয়ে-পরে বাঁচতে পারে। সীমাহীন দুর্নীতি-লুটপাট বন্ধ হলে সেটি অসম্ভব নয় বলে আমরা মনে করি। মনে রাখতে হবে, বাজারে
    তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে পারাই উন্নয়নের বড় এবং গ্রহণযোগ্য নির্দেশক। সক্ষমতার চেয়ে বেশি কিছু করতে গেলেই
    অর্থনীতি ও বাজারব্যবস্থায় ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। ১০০ টাকা আয় করা ব্যক্তি ১০০০ টাকার ভঙ্গি দেখাতে গেলে তার সংসারে
    ভারসাম্যহীনতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে এটিই বাস্তব — একটি রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও তাই।
    কোনো কথিত মহান নেতার তথাকথিত ‘আদর্শের সৈনিক’ দেশ জুড়ে আর যেন কিলবিল না করে। আমরা যেমন ‘রাজাকার-মুক্তিযোদ্ধা’ বিতর্ক
    নির্ভর রাজনীতির বিলোপ চাই, তেমনি স্বাধীনতার ‘জনক-ঘোষক’ বিতর্ক নির্ভর রাজনীতি থেকে বের হতে চাই। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায়
    রাজনৈতিক দলের চামচা-দালালেরা চর দখলের মতো দখলদারিতে ন্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই দখলদারি ও চাঁদাবাজির রাজনৈতিক সংস্কৃতির
    পরিবর্তন চাই আমরা। কিছুকিছু ক্ষেত্রে, কথিত বিভিন্ন ‘ইসলামী’ দলের বা দীর্ঘমেয়াদে ‘অভুক্ত’ বিশেষ চেতনাবাজ দলের লোকদের ভাবভঙ্গি
    ও গতিবিধি দেখে মনে হচ্ছে, তাঁরা যেন ইতোমধ্যে ক্ষমতায় বসে গেছেন। তাছাড়া, অচিন দেশের ‘রাজপুত্র’কে নিয়ে যেভাবে স্লোগান শুরু হয়েছে
    তাতে মনে হচ্ছে ‘রাজপুত্র’ তাঁদের ‘রাজতান্ত্রিক পরিবারতন্ত্রের’ সিংহাসনে বসেই গেছেন। আর, সত্যিই বসে গেলে কী হতে পারে তা নিয়ে
    আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। ‘ইসলামী’ দলের লোকজনের উত্তেজনা-উচ্ছ্বাস ও নানান কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে রাতারাতি ‘ইসলাম কায়েম’
    হয়ে গেছে, বে-ইসলামীর কোনো স্থান নেই এখানে।
    নতুন কেনো গণতন্ত্রবেশী স্বৈরাচার, কর্তৃত্ববাদী, দুর্নীতিবাজ, লুটপাটকারী লক্ষ লক্ষ শহীদের রক্তে অর্জিত এই বাংলার মসনদে জেঁকে
    বসুক, তা বাংলার ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ আর চায় না। তাই বাংলাদেশে কোনো রাজতান্ত্রিক ‘পরিবারতন্ত্র’ অথবা দীর্ঘমেয়াদে অভুক্ত
    ‘খাইখাইতন্ত্র’ পুনরায় কায়েম হতে দেওয়া যাবে না। তাছাড়া, ধর্মীয় মৌলবাদী ধর্মবাদী সাম্প্রদায়িক সরকারব্যবস্থার বিরুদ্ধেও দাঁড়াতে হবে
    এদেশের ছাত্রসমাজ ও সর্বস্তরের জনতাকে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এবং জুলাই-২৪ এর নতুন মুক্তির চেতনায় বাংলাদেশ একটি
    স্বৈরাচারবিরোধী, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ কল্যাণরাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক।
    বাংলাদেশ বাঙালি-অবাঙালি, ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠী-বৃহৎনৃগোষ্ঠী, হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান, ইহুদি-নাসারা, জৈন-শিখ, মুচি-মেথর, চামার-
    চণ্ডাল, পৌত্তলিক-নিরাকারবাদী, নিরীশ্বরবাদী-বহুঈশ্বরবাদী, আস্তিক-নাস্তিক নির্বিশেষে যেন সবার হয়। তাই যদি করা সম্ভব না হয়,
    তাহলে বাংলাদেশের জুলাই-গণহত্যার অজস্র লাশ ও অজস্র আহত-পঙ্গু মানুষের প্রতি চরম অন্যায় করা হবে। হতাশায় নিমজ্জিত হবে
    স্বৈরাচারবিরোধী, ফ্যাসিবাদবিরোধী, বৈষম্যবিরোধী, নিপীড়নবিরোধী, দাসত্ববিরোধী, মুক্তিকামী এই অসহায় জাতি। শিক্ষার্থী ও খেটে খাওয়া
    সাধারণ জনতার এত লাশ, এত রক্তপাত, এত আত্মত্যাগ সব অর্থহীন হয়ে যাবে।
    বাংলাদেশের গতি আর যাতে বিপথে না যায়, সে-ব্যাপারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনকে ও সাধারণ জনতাকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে এবং
    সম্মিলিতভাবে দেশ সংস্কারের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। স্বাধীন দেশে নিজের টাকায় কেনা গুলি বুকে নিয়ে আবু সাঈদেরা, মীর মুগ্ধরা মরল
    তাদের ন্যায্য অধিকার দাবি করে। সকল হত্যার যেন বিচার হয়, খুনীরা যেন শাস্তি পায়।

    অন্তর্বর্তীকালীন সরকার-প্রধানের প্রতি দাবি থাকবে — রাষ্ট্রের আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগ সহ সার্বিক রাজনীতি এবং সার্বিকভাবে
    গোটা দেশটার আমূল সংস্কার যেন করা হয়। শাসনব্যবস্থার গোটা কাঠামো ও সিস্টেমের পরিবর্তন করে এবং সমস্তপ্রকারের জঞ্জাল সাফ
    করে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, জবাবদিহিমূলক, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার উপযোগী রাষ্ট্রকাঠামো ও পরিবেশ যেন সৃষ্টি হয়।
    তাতে যতদিন সময় লাগুক বাংলার ছাত্র-জনতা আপনাদের সাথে আছে।
    মোস্তফা আবু রায়হান
    কবি ও সংস্কৃতিকর্মী
    kabyakanan2000@gmail.com
    ঠিকানা :
    কাব্যকানন (একটি সাহিত্য-শিল্প চর্চা কেন্দ্র)
    শ্যামনগর, সাতক্ষীরা
    ফোন : ০১৯২১ ৫৬৭ ৩৫৯

  • সাতক্ষীরা: সংবাদপত্রের উন্মেষ ও সাংবাদিকতা

    সাতক্ষীরা: সংবাদপত্রের উন্মেষ ও সাংবাদিকতা

    দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের একটি সমৃদ্ধশালী জেলা সাতক্ষীরা। এই সাতক্ষীরা ১৯৮৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে অন্যতম জেলা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। (পূর্বে ১৮৫২ সালে প্রথমে সাতক্ষীরাকে নদীয়া জেলার সাথে, ১৮৬১ সালে যশোর জেলার অধীনে, ১৮৬৩ সালে চব্বিশ পরগনার সাথে অধীনস্থ আর ১৮৮২ সালে খুলনার সাথে সংযুক্ত হয়।) পরে এখানে অনেক কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ’৯০ দশকে যোগ্য ও শিক্ষিত সাংবাদিক তৈরির সৃজনশীল উদ্যোগ, পাশাপাশি জেলা থেকে সংবাদপত্র প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তখনই ’৬০ দশকের প্রখ্যাত সমাজসেবক তৎকালীন অবজারভারের স্থানীয় প্রতিনিধি আব্দুল মোতালেব সম্পাদিত ‘সাপ্তাহিক কাফেলা’ ১৯৯২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘দৈনিক কাফেলা’ পত্রিকায় রুপান্তরিত হয়, এ পেশায় কর্মরতদের আর্থিক ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে জেলা পর্যায়ে পেশাগত সাংবাদিক তৈরির পথ সুগম করে। এতোদাঞ্চলে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার বিকাশ লাভ করে। বিভিন্ন সংগ্রাম ও জাতীয়বাদী আন্দোলনে দৈনিক কাফেলার ভূমিকা অন্যান্য। এবং নানা পথপরিক্রমায় পরিবর্তিত পরিস্থিতির আলোকে সময়ের চাহিদা পুরণে পত্রিকাটি মহীরুহ বটবৃক্ষে পরিণত হয়। হাল আমলের নতুন উদ্ভাবন কম্পিউটার প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট সাংবাদিকতা পত্রিকাটির ভিন্নমাত্রা প্রকাশ করে। তৎপরে জেলা থেকে বিভিন্ন নামে সংবাদপত্র প্রকাশ আমাদের চোখে পড়ে। ১৯৯৩ সালে তৎকালীন জাসদ নেতা আবু কাজী সম্পাদিত সাপ্তাহিক সহযাত্রী (প্রকাশনা বন্ধ), ১৯৯৪ সালের ২৩ জানুয়ারি তৎকালীন জেলা জাসদের সাধরণ সম্পাদক স. ম আলাউদ্দিন সম্পাদিত দৈনিক পত্রদূত ও ১৯৯৫ সালে তৎকালীন সিপিবি’র জেলা সভাপতি আনিসুর রহিম সম্পাদিত দৈনিক সাতক্ষীরা চিত্র (প্রকাশনা বন্ধ) পত্রিকা প্রকাশিত হয়। শুধুমাত্র খবর জানার জন্য সীমাবদ্ধ থাকেনি এর ব্যবহার, এই পত্রিকার সংবাদপত্রগুলো হয়ে উঠেছিল মেধা-মনন বিকাশের সিঁড়ি এবং জনগণের অধিকার আদায়ের মুখপাত্র।

    বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ অর্থাৎ ২০০১ সালের ১০ অক্টোবর আব্দুল হামিদ সম্পাদিত দৈনিক দৃষ্টিপাত নামে পত্রিকা বাজারে আসার আগে প্রচারের ভিন্ন কৈৗশল বেছে নেয়। এমনকি কর্মীরা প্রায় শহর-গ্রামের মানুষের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়। প্রকাশের শুরু থেকেই ঝকঝকে ছাপা ও বর্ণাট্য ছবি পাঠক মহলে সমাদৃত। পরবর্তীতে আব্দুল হামিদ এর তদস্থলে এই পত্রিকার প্রকাশক জিএম নুর ইসলাম সম্পাদকের দায়িত্ব পালনরত। এছাড়াও গণমানুষের মুখপত্র হিসেবে জম্ম নেওয়া দৈনিক দৃষ্টিপাতের দীর্ঘ পথপরিক্রমায় বারবার প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছে, মহলে বিশেষের রক্তচক্ষুর হিংসাতœক ছোবল পাঠক প্রিয় দৈনিক দৃষ্টিপাতকে ছোবল মারতে চেয়েছে। কর্কটময় বন্ধুর পথ মুহুর মূহুর প্রিয় প্রকাশনাকে গতিরোধ করার অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। কিন্তু না দৈনিক দৃষ্টিপাতকে কেবল পাঠকরাই জীবন্ত রেখেছে। দৃষ্টিপাতকে পথহারা গতিহীন, অপরিনামদর্শী, আদর্শচ্যুতি বা মহলের বিশেষের কাছে যেমন আত্মসমর্পন করতে দেইনি অনুরুপ আদর্শচ্যুতি ঘটেনি। প্রিয় পাঠক দৃষ্টিপাতকে বরাবরই সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলার দুর্বার দুরন্ত ইচ্ছাশক্তিকে লালন করা হাজার হাজার পাঠকের সিঁড়ি। ২০০২ সালে সাখাওয়াত হোসেন সম্পাদিত সাপ্তাহিক সাতক্ষীরা ডাইজেস্ট (প্রকাশনা বন্ধ) পত্রিকা প্রকাশিত হয়। ২০০৩ সালে নজরুল ইসলামের সম্পাদনায় দৈনিক যুগের বার্তা পত্রিকা প্রকাশিত হয়। বর্তমানে পত্রিকাটি সম্পাদনা করছেন ক্যাডেট কলেজের তৎকালীন ছাত্র আবু নাসের মো. আবু সাঈদ। তৎকালীন জাপা নেতা মহাসীন হোসেন বাবলু সম্পাদিত সাপ্তাহিক আজকের সাতক্ষীরা প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে ২০০৪ সালের ২১ জুন পত্রিকাটি দৈনিকে রুপান্তরিত হয়। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদার মালিকানায় দৈনিক আলোর পরশ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। উক্ত পত্রিকাটির প্রকাশনা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এই পত্রিকাটি জামায়াত ইসলামীর জেলার মুখপাত্র হিসেবেও সুপরিচিত। তদপরে ২০০৯ সালে আব্দুল খালেক সম্পাদিত সাপ্তাহিক মুক্তসাধীন পত্রিকা প্রকাশিত হয়। এরপূর্বে কালিগঞ্জ কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ তমিজ উদ্দীন সম্পাদিত সাপ্তাহিক মুক্ত আলাপ প্রকাশিত হয়।

    বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগে নতুনত্ব, আধুনিকতা ও যুগোপযোগী ধারা জেলা সংবাদপত্রের পরিবর্তন ঘটেছে ব্যাপকভাবে। এমনকি পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে পত্রিকাগুলো ছিল কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি বা দলের মুখপাত্র। তবে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি বেঁচে ছিলেন না, পত্রিকা ছিলো না। সেই সময়ে মানুষের নির্যাতনের কথা ভেবে জেলা আওয়ামী লীগের প্রাক্তন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু আহমেদ একটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ করার মনস্থির করলেন। এবং ২০১২ সালের ১৭ জুন তার সম্পাদিত দৈনিক কালের চিত্র পত্রিকা প্রকাশিত হয়। উক্ত পত্রিকা প্রকাশের পর থেকে নির্যাতিত ভুক্তভোগী মানুষের মুখপত্র হিসেবে সুপরিচিত লাভ করে। ২০১৫ সালে হাবিবুর রহমান সম্পাদিত দৈনিক সাতনদী পত্রিকা প্রকাশ হয়। উক্ত পত্রিকাটি দুর্নীতি ও অনিয়মের মুখপাত্র হিসেবে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য। এছাড়াও ২০১৫ সালে ‘মানবতার পক্ষে, গণমানুষের দৈনিক’ স্লোগান নিয়ে জেলা জাসদের সহ-সভাপতি আশেক-ই-এলাহীর সম্পাদনায় দৈনিক দক্ষিণের মশাল পত্রিকা প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটি সব সময় প্রতিনিধিদের গুরুত্ব সহকারে মূল্যায়ন করেছে। তবে আর্থিক সংকটের কারণে পত্রিকাটি অনিয়মিত প্রকাশিত হয়। ২০১৬ সালে প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতা ও সাতক্ষীরা সরকারী কলেজের প্রাক্তন জিএস মকসুমুল হাকিম সম্পাদিত সাপ্তাহিক ইচ্ছে নদী পত্রিকা প্রকাশিত হয়। ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল ভাসানী অনুসারী পরিষদের জেলা আহবায়ক আব্দুল ওয়ারেশ খান চৌধুরী সম্পাদিত সাপ্তাহিক সূর্যের আলো পত্রিকা প্রকাশিত হয়।

    জেলায় নতুন নতুন পত্রিকার উদ্ভব ঘটেছে। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদেও চাহিদা বেড়েছে। ঠিক এমনই একটি চিন্তধারা থেকে ২০১৮ সালে ২২ ফেব্রুয়ারী এক ঝাঁক তরুণ সাংবাদিকদের নিয়ে ৪৫তম পরীক্ষামূলক সংস্করণ শেষে ৩০ জুলাই পাঠকের হাতে পৈাঁছেছে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা একেএম আনিসুর রহমান সম্পাদিত ‘দৈনিক সুপ্রভাত সাতক্ষীরা’। ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর জিএম মোশারফ হোসেন সম্পাদিত হৃদয় বার্তা পত্রিকা সরকারী অনুমোদনপ্রাপ্ত হয়, তবে ২০২২ সালের আগষ্ট মাসে প্রথম প্রকাশিত হয়। ২০২২ সালে ৫ সেপ্টেম্বর প্রাক্তন ছাত্রমৈত্রী নেতা তারেকুজ্জামান খান সম্পাদিত দৈনিক সাতক্ষীরার সকাল নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। একই বছরে যুক্তরাজ্যের জর্জিয়া প্রবাসী এক ব্যক্তির মালিকানায় দৈনিক সাতঘরিয়া নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। তবে বর্তমানে পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও ২০২৩ সালের ০১ জানুয়ারি মোঃ শাহ আলম সম্পাদিত দৈনিক সাতক্ষীরার সংবাদ প্রকাশিত হয়। ২০২৪ সালে যুবলীগ নেতা রিমু সম্পাদিত সাপ্তাহিক বর্তমান সাতক্ষীরা, সাধনা কাশ্যপী সম্পাদিত দৈনিক প্রথম লহরী ও কালিগঞ্জের মো. কবির নেওয়াজ সম্পাদিত সশঢ়ৎড়ঃরফরহ.পড়স নামের একটি অনলাইন পত্রিকার সরকারি লাইন্সেসপ্রাপ্ত। এসব দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোতে অনেক সাংবাদিক কাজ করছেন। তবে জেলার বহু সন্তান স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে সাংবাদিকতায় বিভাগোত্তর যুগে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন, পাকিস্তান আন্দোলন, স্বদেশী আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধ এবং ১৯৪৭ থেকে স্বাধীনতার পূর্বে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তনাধ্যে ঠাকুরদাস মুখোপাধ্যায়, মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী, ময়েজউদ্দিন হামিদী, আব্দুল ওহাব সিদ্দিকী, সিকান্দর আবু জাফর, খন্দকার আবু তালেব, সুনীল ব্যার্নাজি অন্যতম।

    সাংবাদিকতার পেশাগত দক্ষতা ও মেধার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জেলায় অসংখ্য দিকপাল। যাঁদের অনন্য অবদানের কথা মানুষ আজো শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। যারা তাদের কর্মযজ্ঞের দ্বারা নিজে আলোকিত হয়েছেন, গণমাধ্যমকেও করেছেন সমৃদ্ধ। এমনকি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালে জেলার সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তাদের অনেকেই প্রয়াত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশই পেশাদার সাংবাদিক ছিলেন না। কেউ আইনজীবী, কেউ শিক্ষক আবার কেউ বা অন্য কোনো পেশার সাথে খন্ডকালীন সাংবাদিকতা করেছেন। তারা খন্ডকালীন সময়ে যা করেছে তা আজো তরুণদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে। শেখ গহর আলী, অধ্যাপক তবিবুর রহমান, অ্যাড. এম এম হাসান আওরঙ্গি, অ্যাড. নুরুল ইসলাম, অ্যাড. মুনসুর আহমেদ, শেখ আব্দুস সোবহান, কুদরত-ই-খোদা, সরদার আনিসুর রহমান, গোলাম রহমান, অ্যাড. অরুণ ব্যানার্জি, আমজাদ হোসেন, শেখ আব্দুস সাত্তার, নাজমুল আলম মল্লিক, সৈয়দ রিয়াজ, সুভাষ চৌধুরী, মোহাম্মদ তোহা খান, আনিস সিদ্দিকী, আল-কামাল আব্দুল ওহাব, এসএম হাফিজুর রহমান সেই তালিকারই অংশ। সম্পাদকের তালিকায় রয়েছেন তোয়াব খান, আব্দুল মোতালেব, মুফতি আব্দুর রহিম (কচি), অধ্যক্ষ তমিজ উদ্দিন, মহাসীন হোসেন বাবলু, বীর মুক্তিযোদ্ধ আব্দুল খালেক, আলী আহমেদ, আব্দুল মাজেদ, হাসান আব্দুল খালেক, একেএম আনিসুর রহমান। প্রয়াত সাংবাদিকের তালিকায় মোঃ রেজাউল করিম (ধূলিহর), আহসান (সুলতানপুর), আনোয়ারুল ইসলাম (মাটিয়াডাংগা)। খন্ডকালীন এসব সাংবাদিক ও সম্পাদকরা শুধু সাংবাদিকতাই করেননি, তারা কেউ রাজনীতি করেছেন, আবার কেউ বা সমাজসেবা, সামাজিক বা নাগরিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। কেউ পাল্টাতে চেয়েছিলেন এই সমাজটাকে। আবার কেউ বা স্থানীয় সমস্যা সম্ভাবনা নিয়ে জেলার সামগ্রিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন। প্রয়াত ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের তালিকায় আমিনা বেগম। ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের তালিকায় লুৎফুন্নেছা বেগম, লায়লা পারভীন সেঁজুতি, জান্নাতুল ফেরদৌস, মাসুমা ইয়াসমিন, হাফিজুর রহমান মাসুম, শেখ তৌহিদুর রহমান, আবুল হোসেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে সম্পাদক না হয়েও সম্পাদকের তালিকায় জিএম নুর ইসলাম, আবু নাসের মো. আবু সাঈদ, ডাঃ এটিএম রফিক উজ্জ্বল, মোঃ আবুল কালাম, লুৎফুন্নেছা বেগম, আমেনা বেগম।

    সাংবাদিকতার প্রথম আনুগত্য নাগরিকজনের প্রতি। সাংবাদিকতার সার কথা হচ্ছে সুশৃঙ্খল যাছাই। যেমন যৌনতা, সন্ত্রাস, সহিংসতা ও বীভৎসতার উৎকট বা নগ্ন প্রকাশ নয়, মৃতের প্রতি সম্মান, লাশের ছবি না ছাপা, খারাপ ভাষা পরিহার, নিজের অবস্থান পরিষ্কার রাখা, ঘটনা বলবেন না-দেখাবেন, এটাই প্রকৃত সাংবাদিকতা। অন্যান্য পেশার মতো সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও কতক গুণ বা যোগ্যতা থাকা দরকার। সাংবাদিকতা বিষয়ে প্রথম বিভাগের অনার্স পাস করেও অনেকে পরিপূর্ণ সাংবাদিক হতে পারেন না। আবার অনেকে সাংবাদিকতার ডিগ্রি না নিয়েও বড় মাপের সাংবাদিক হতে পেরেছেন। সাংবাদিক জন্ম নেয় না, তৈরি হয়। সাংবাদিক হবার জন্য কিছু গুণ থাকতে হয়। সাংবাদিক হতে হলে সংবাদের গন্ধ শোঁকার নাক থাকতে হবে। অবলোকনের চোখ থাকতে হবে। বোঝার জন্য মন থাকতে হবে।

    বস্তুনিষ্ট সাংবাদিকদের মানুষ সমাদর করে, সম্মান করে। সাংবাদিকদের লেখায় সমাজের লাভের পাশাপাশি ক্ষতিরও কারণ হতে পারে। উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ প্রকাশ করা মোটেও সমীচীন নয়। এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে পাঠকরা সাংবাদিকদের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন। পাঠকরা সাংবাদিকদের মতো গুছিয়ে লিখতে পারেন না বলেই সংবাদপত্রের দিকে হাত বাড়ায়। অন্যথায় মুখ ঘুরিয়ে নিতেন। একজন সাংবাদিকের সাংবিধানিক অধিকার, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, মানহানি, অশ্লীলতা, জননিরাপত্তা, ধর্মবিশ্বাস-বিষয়গুলো অবশ্যই মাথায় রাখতে হয়। উপরিউক্ত শব্দগুলো অনুধাবন করে জেলার পাশাপাশি দেশের সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন আবেদ খান, একেএম শহীদুল্লাহ, সাহেদ আলম, ফা¹ুনি হামিদ, আবু আহমেদ, আবুল কালাম আজাদ, কল্যাণ ব্যানার্জি, আবু সালেক, মিজানুর রহমান, আব্দুল ওয়াজেদ কচি, এম কামরুজ্জামান, মমতাজ আহমেদ বাপী, রামকৃষ্ চক্রবর্তী, আব্দুল বারী, মনিরুল ইসলাম মিনি, রুহুল কুদ্দুস, মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল, কালিদাস কর্মকার, পলাশ আহসান, তুহিন সানজিদ, নিখিল চন্দ্র ভদ্র, শেখ আব্দুল আলিম, জাহাঙ্গীর আলম, মতিয়ার রহমান মধু, আব্দুল জলিল, গোলাম সরোয়ার, কাজী শওকত হোসেন ময়না, আব্দুস সোবহান, মোজাফ্ফার রহমান, মনিরুল ইসলাম মনি, অ্যাড. খায়রুল বদিউজ্জামান, অসীম বরণ চক্রবর্তী, এম জিল্লুর রহমান, সেলিম রেজা মুকুল, রঘুনাথ খাঁ, মো. আসাদুজ্জামান, অ্যাড. দিলীপ কুমার দেব, শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন, কাজী নাসির উদ্দিন, শহিদুল হক রাজু, বরুণ ব্যানার্জি, শামীম পারভেজ, আবুল কাশেম, মোশারফ হোসেন (আব্বাস), শেখ ফরিদ আহমেদ ময়না, হাফিজুর রহমান মাসুম, আব্দুল গফুর সরদার, ফারুক মাহবুবুর রহমান, এম শাহীন গোলদার, শহিদুল ইসলাম, ফারুক রহমান, জহুরুল কবীর, শেখ মাসুদ হোসেন, জামাল উদ্দিন মামুন, এবিএম মোস্তাফিজুর রহমান, মো. রবিউল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, মো. আব্দুস সামাদ, কেএম আনিসুর রহমান, মোহাম্মাদ আলী সুজন, আবু তালেব মোল্লা, মুহা. জিল্লুর রহমান, কামরুল হাসান, ইব্রাহিম খলিল, ডিএম কামরুল ইসলাম, সৈয়দ রফিকুল ইসলাম শাওন, আমিরুজ্জামান বাবু, শহিদুল ইসলাম, আহসানুর রহমান রাজীব, ইয়ারব হোসেন, আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, শেখ আমিনুর রশিদ সুজন, মোঃ রবিউল ইসলাম, ম. জামান, এসএম রেজাউল ইসলাম, কৃষ্হ মোহন ব্যানার্জি, আলতাফ হোসেন, শেখ তানজির আহমেদ, এসএম মাহিদার রহমান, আমিনা বিলকিস ময়না, শাকিলা ইসলাম জুঁই, মোঃ ঈদুজ্জামান ইদ্রিস, মেহেদী আলী সুজয়, আসাদুজ্জামান সরদার, মশিউর রহমান ফিরোজ, এসকে কামরুল হাসান, এসএম আকরামুল ইসলাম, মোঃ হাফিজুর রহমান, নাজমুল হক, মোঃ বেলাল হোসাইন, আব্দুর রহমান, জোবায়ের মোস্তাফিজ, শাহরিয়ার হোসেন, মো: মুনসুর রহমান, খন্দকার আনিসুর রহমান, জাহিদ হোসাইন, গোপাল চন্দ্র, আব্দুল্লাহ আল মামুন, গাজী হাবিব, মুশফিকুর রহমান রিজভী, মোঃ মনিরুজ্জামান তুহিন, হাসান গফুর, মাহফিজুল ইসলাম আক্কাজ, আহাদুর রহমান জনি,মাজহারুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম, মোঃ জাহিদুর রহমান পলাশ, শেখ কামরুল ইসলাম, এসএম আবুল কালাম আজাদ, মোতাহার নেওয়াজ (মিনাল), আবুল কালাম আজাদ, বোরহান উদ্দিন, মোঃ মনিরুজ্জামান, মীর মোস্তাফা আলী, আলী মুক্তাদা হৃদয়, এসএম বিপ্লব হোসেন, নাজমুল শাহাদাৎ জাকির, গাজী ফরহাদ, ফারহাদ হোসেন, হোসেন আলী, মেহেদী হাসান, মোঃ কামাল উদ্দিন সরদার, মোঃ আইয়ুব হোসেন রানা, মীর আবু বক্কর, সাবিনা ইয়াসমিন পলি, মোঃ শহিদুল ইসলাম শহিদ, মোঃ আঃ মতিন, মোঃ ফয়জুল হক বাবু, শেখ হাবিবুর রহমান হবি, এসএম বাচ্চু, মোঃ মাসুদ আলী, জাহিদ হাসান, মাসুদুজ্জামান সুমন, মোঃ আব্দুল আলিম, তাজমিনুর রহমান টুটুল, রাহাত রাজা, রফিকুল ইসলাম রানা, মোঃ রুবেল হোসেন, রুবেল হোসেন, জাকির হোসেন মিঠু, ফিরোজ হোসেন, মোঃ আক্তারুল ইসলাম, অসীম কুমার বিশ্বাস, মো. নিয়াজ ওয়াহিদ, মো. আলতাফ হোসেন, মো. আশিক সরদার, শেখ জাহাঙ্গীর আলম, মো. আবু বক্কর সিদ্দিক, মো. বায়েজীদ হাসান, মিলন কুমার বিশ্বাস, শেখ আনিসুজ্জামান রেজা, মো. মোমিনুর রহমান, আশিকুজ্জামান খান, মো: জাহিদ হোসাইন, এটিএম রেজাউল হক, আজাহারুল ইসলাম সাদী, আহাজউদ্দিন সুমন, মাহিম আনজু মোত্তকি, কামরুজ্জামান, শেখ রিজাউল ইসলাম, শেখ ফারুক হোসেন, মো. হাবিবুল্লাহ, মো. আরাফাত আলী, খান নাজমুল হোসেন, ইছাক আলী, মিজানুর রহমান মো: সেলিম হোসেন, মো: মারুফ আহম্মেদ খান (শামীম), ইব্রাহিম খলিল, মুরশিদ, আজিজুর রহমান, সোহারাফ হোসেন, নাহিদ হাসান লিটু, আজাদ হোসেন টুটুল, মো. আরিফ হোসেন, মো. ইদ্রিস আলী, মো. আবুল কালাম, শামীম আক্তার মিরাণ মুকুল, আল ইমরান, হাসানুর রহমান হাসান, তৌফিকুজ্জামান লিটু, শাহনেওয়াজ মাহমুদ রনি, রমজান আলী, শফিকুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, কাজী ফকরুল ইসলাম রিপন, জিএম মনিরুল ইসলাম, আবু সাঈদ, রশিদুল আলম, আবুল হোসেন, আতিয়ার রহমান, হাবিবুল্লাহ বাহার, আমিরুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান লিটন, সাইফুল আজম খান মামুন, মুজাহিদ, শেখ ফারুক, রুহুল আমিন, লাল্টু হোসেন, সেলিম হায়দার, আবু রায়হান, শাহাজাহান আলী, রাজু রায়হান, ফাহাদ হোসেন, ইমানুর রহমান, সুজাউল হক, জিএম সোহরাব হোসেন, নুর মোহাম্মদ পাড়, মীর মামুন হাসান, হাসান ইকবাল মামুন, আব্দুল মোমিন, গাজী সুলতান আহমেদ, আশরাফুজ্জামান মুকুল, খায়রুল আলম সবুজ, মনিরুল ইসলাম, খায়রুল ইসলাম, নুর আহমেদ পাড়, নাজমুল আলম মুন্না, মো: বাবুল আখতার, ইমরান হোসেন মিঠু, মোস্তাফিজুর রহমান, মোঃ আব্দুস সালাম, গাজী মোক্তার হোসেন, মো. মনিরুজ্জামান মনি, মো. শাহজাহান আলম, মো. রবিউল ইসলাম, মো. মামুন হোসেন, মো. শিমুল হোসেন বাবু, নজরুল ইসলাম, মো. আজহারুল ইসলাম, নব কুমার দে, শেখ মনিরুজ্জামান, সঞ্জয় কুমার দাশ, জাহাঙ্গীর হোসেন।

    বিভিন্ন সময়ে পত্রিকা পরিষদের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন আশরাফুল ইসলাম খোকন, মো. নজরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, রফিকুল ইসলাম রফিক, খালিদ হাসান, জিএম আদম শফিউল্লাহ, শেখ আসাদুর রহমান, রবিউল ইসলাম, শেখ ফরিদ হোসেন মৃত্তিকা এলাহী, জগন্নাথ রায়, শেখ আসাদুর রহমান, আল ফেরদৌস আলফা, আব্দুল হাকিম, জাকির হোসেন লস্কর শেলী, আব্দুল মোকাদ্দেস খান চৌধুরী (মিন্টু চৌধুরী), ওয়ায়েশ খান চৌধুরী, এসএম মাকসুদ খান, মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, শেখ ওবায়েদুস সুলতান বাবলু, মোঃ আমিরুজ্জামান বাবু, সাইদুর রহমান, ফিরোজ কবীর, মোঃ নজরুল ইসলাম, কামরুজ্জামান রাসেল। ইতিপূর্বে সাংবাদিকতা করেছেন পবিত্র মোহন দাশ, তৈয়েব হাসান সামছুজ্জামান, শেখ বেলাল হোসেন, অ্যাড. এবিএম সেলিম, রেজাউল ইসলাম, নাসির, শোভন প্রমূখ। এছাড়াও উপজেলার পাশাপাশি সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেনঃ

    আশাশুনি-জিএম মুজিবুর রহমান, জিএম আল ফারুক, এসএম আহসান হাবিব, সোহরাব হোসেন, আব্দুস সামাদ বাচ্চু, আলী নেওয়াজ, আব্দুল আলিম, সমীর রায়, এসকে হাসান, এমএম সাহেব আলী, রাবিদ মাহমুদ চঞ্চল, আনিছুর রহমান বাবলা, শেখ বাদশা, মাসুম বাবুল, মইনুল ইসলাম, জ¦লেমিন হোসেন, শেখ আরাফাত হোসেন, এমএস মুকুল শিকারী, শেখ আসাদুজ্জামান মুকুল, ইলিয়াস হোসেন, রনদা প্রসাদ মন্ডল, লিংকন, আকাশ হোসেন, গোলাম মোস্তফা, বাবুল হাসনাইন, সোহরাব হোসেন, নুর আলম, ফায়জুল কবির, হাবিবুল্লাহ বিলালী, জগদীশ চন্দ্র সানা, আঃ আলীম, সচ্চিদানন্দদে সদয়, আবুল হাসান, মোঃ শরিফুজ্জামান মুকুল, মোঃ আকাশ হোসেন, এমএম নুর আলম, এম হাবিবুল্লাহ বিলালী, হাসান ইকবাল মামুন, শেখ আশিকুর রহমান।

    শ্যামনগর-জিএম আকবর কবীর, এসএম মোস্তাফা কামাল, জাহিদ সুমন, আব্দুর রহমান বাবু, তপন কুমার বিশ^াস, শেখ সোহরাব হোসেন, মেহেদী হাসান মারুফ, জিএম আব্দুল কাদের, সামিউল আজম মনির, আব্রাহাম লিংকন, সুলতান শাহজাহান, সিরাজ, আল ইমরান প্রমূখ। সামিউল ইমাম আজম মনির, এসএম মোস্তফা কামাল, আলমগীর সিদ্দিকী, মনিরুজ্জামান মুকুল, জিএম কামরুজ্জামান, আছাদুজ্জামান লিটন, জাহিদ সুমন, তপন কুমার বিশ্বাস, আব্দুল কাদের, মেহেদী হাসান মারুফ।

    কলারোয়া-দীপক শেঠ, একেএম আনিছুর রহমান, মোশারফ হোসেন, এসএম জাকির হোসেন, আরিফুল হক চৌধুরী, পলাশ মোর্তাজা হাসান, এসএম ফারুক হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, এমএ কালাম, আনোয়ার হোসেন, সাইফুল ইসলাম, আব্দুর রহমান, আরিফ মাহমুদ, আতাউর রহমান, এমএ সাজেদ, সুজাউল হক, সরদার জিল্লুর রহমান, দীপক শেঠ, শেখ জুলফিকারুজ্জামান জিল্লু, রাশেদুল হাসান কামরুল, আসাদুজ্জামান আসাদ, হাসান মাসুদ পলাশ, আবু রায়হান মিকাইল, মনিরুল ইসলাম মনি, অহিদুজ্জামান খোকা, শফিকুর রহমান, হাবিবুর রহমান সোহাগ, দেবাশীষ চক্রবর্তী, শেখ রাজু রায়হান, জুলফিকার আলি, আনোয়ার হোসেন, তাওফিকুর রহমান সঞ্জু, সাইফুল্লাহ আজাদ, কাজী সিরাজুর রহমান, মনিরুল ইসলাম মনি, দেলোয়ার হোসেন, হাবিবুর রহমান সোহাগ, খায়রুল আলম কাজল সরদার, ফারুক হোসেন রাজ, ইমদাদুল ইসলাম, হোসেন আলী, তরিকুল ইসলাম, আরিফুর রহমান, মিলন দত্ত, মিলটন, পিয়ারে আশেকে রসুল সুমন, নির্বাহী সদস্য আক্তারুজ্জামান, শফিকুর রহমান, অহিদুজ্জামান, মো: মোস্তাক আহমেদ, এম.এ আজিজ, মো: শামছুর রহমান লাল্টু, মোজাফ্ফর হোসেন পলাশ, মুহাঃ আসাদুজ্জামান ফারুকী, মোঃ মোস্তফা হোসেন, তাজউদ্দীন আহমদ রিপন, মো: রেজওয়ান উল্লাহ ও মোর্তজা হাসান মুন্না, মোশারফ হোসেন, মুজাহিদুল ইসলাম, জিএম জিয়া, এমএ কাসেম, মোস্তফা হোসেন বাবলু, গোলাম রসুল।

    তালা-এসএম নজরুল, এসএম জাহাঙ্গীর হাসান, এমএ মান্নান, সৈয়দ জুনায়েদ আকবর, এস,এম হাসান আলী বাচ্চু, খান নাজমুল হুসাইন, শেখ আব্দুস সালাম, বিএম বাবলুর রহমান, এসএম জহর হাসান সাগর, মোঃ আব্দুল মজিদ, কাজী ইমদাদুল বারী জীবন, মোঃ লিটন হুসাইন, মোঃ আবজাল হোসেন, মোঃ বাহারুল ইসলাম মোড়ল, কাজী এনামুল হক বিপ্লব, শেখ ফয়সাল হোসেন, মোঃ আল- মাহবুব হুসাইন, মোঃ মেহেদী হাসান স্বাক্ষর, মোঃ সাইদুর রহমান আকাশ,মো: তপু শেখ, শ্রী পার্থ প্রতীপ মন্ডল, শেখ জলিল আহমেদ, এম এ হাকিম, গাজী সুলতান আহম্মেদ, গাজী জাহিদুর রহমান, এম এ ফয়সাল, সেলিম হায়দার, রোকনুজ্জামান টিপু, শফিকুল ইসলাম শফি, জাহাঙ্গীর হোসেন, এস এম লিয়াকত হোনেস, সব্যসাচী মজুমদার বাপ্পী,অর্জুন বিশ্বাস, সেকেন্দার আবু জাফর বাবু, খলিলুর রহমান লিথু, নূর ইসলাম, ইলিয়াস হোসেন, প্রভাষক ইয়াছিন আলী, আসাদুজ্জামান রাজু, কাজী আরিফুল হক (ভুলু), খলিলুর রহমান,কামরুজ্জামান মিঠু, শিরিনা সুলতানা, আজমল হোসেন জুয়েল, তপন চক্রবর্তী, সুমন রায় গণেশ, মীর জাকির হোসেন, বি.এম. জুলফিকার রায়হান, ইন্দ্রজীৎ দাস বাপী, নারায়ন মজুমদার, মো. রফিকুল ইসলাম, এস.আর. আওয়াল, কে. এম. শাহিনুর রহমান, মো. মিজানুর রহমান, হাসান আলী বাচ্চু, শেখ সিদ্দিক, পিএম গোলাম মোস্তফা, মো. আপতাফ হোসেন, মো. হাফিজুর রহমান, এম.এ জাফর, মো. বাবলুর রহমান, মিজানুর রহমান, এসকে রায়হান, বিল্লাল হোসেন, সন্তোষ ঘোষ, রিয়াদ হোসেন, তাজমুল ইসলাম, সৈয়দ মারুফ, তাপস সরকার, কাজী লিয়াকত হোসেন, মুকুল হোসেন, তরিকুল ইসলাম, কুদ্দুস পাড়, শামিম খান, আছাদুজ্জামান, আব্দুল মতিন, শেখ জহুরুল হক, আব্দুল মোমিন, ইয়াছীন আলী সরদার, নজমুল হক খান, নাজমুল হক, শাহিন আলম, আব্দুল জলিল, আতাউর রহমান, খাইরুল আলম সবুজ, আলমগীর হোসেন, মনিরুজ্জামান মনি, মাগফুর রহমান জান্টু, এম এম জামান মনি, কুমার ইন্দ্রজিৎ সাধু, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, মুজিবুর রহমান। শেখ আঃ হাই, শেখ জাকির হোসেন, কামরুজ্জামান মোড়ল, বাবলা সরদার, শেখ শওকত হোসেন, জামাল উদ্দীন, বাবলু বিশ্বাস, খলিলুর রহমান, শেখ আশরাফ আলি, শেখ কামরুজ্জামান রিকু, শেখ শামিজুল ইসলাম, নাজমুল হুসাইন মাহী, শেখ সানজিদুল হক ইমন, জুয়েল হাসান, মোখলেছুর রহমান, ইব্রাহীম মোড়ল, হেলাল উদ্দীন, শেখ আল-আমিন সরদার, আবু সাঈদ, আলী রেজা, গোবিন্দ কুমার রায়, মোঃ ওসমান গণি, শেখ আল-আমিন, বিপ্লব কুমার আইচ, শেখ আল-আমিন, ইলিয়াজ হোসেন, হাবিবুর রহমান হাবিব, ইয়াছিন আলী, আবু হোসেন, শাহীন বিশ^াস।

    দেবহাটা- আব্দুল ওহাব, মাহমুদুল ইসলাম শাওন, খায়রুল ইসলাম, লিটু, অহিদুজ্জামান, আরকে বাপ্পা, রফিকুল ইসলাম, ওমর ফারুক মুকুল, আক্তার হোসেন ডাবলু, মেহেদী হাসান কাজল, আশরাফুল ইসলাম, আবির হোসেন লিয়ন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, তারেক মনোয়ার, বায়েজিত বোস্তামি উজ্বল, কবির হোসেন, সুমন পারভেজ বাবু, সুমন ঘোষ সুজন, লিটন ঘোষ বাপি, ফরহাদ হোসেন সবুজ, সন্যাসি কুমার ওভি, এমএ মামুন, এসএম নাসির উদ্দীন, মিজানুর রহমান, আব্দুর রব লিটু, রাজু আহম্মেদ, রুহুল আমিন, আব্দুস সালাম, আমিরুল ইসলাম, আছাদুল ইসলাম শহিদুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মহিউদ্দিন আহমেদ লাল্টু, রুহুল আমিন মোড়ল, আবু বক্কর সিদ্দিক, হিরণ কুমার মন্ডল, আবু হাসান, রিয়াজুল ইসলাম আলম, জাফর ইকবাল, মজনুর রহমান, কে.এম রেজাউল করিম, আশরাফুল ইসলাম বাদল।

    কালিগঞ্জ- শেখ সাইফুল বারী সফু, সুকুমার দাশ বাচ্চু, নিয়াজ কাওছার তুহিন, শেখ আনোয়ার হোসেন, এম হাফিজুর রহমান শিমুল, কাজী মুজাহিদুল ইসলাম তরুন, এস এম আহম্মাদ উল্যাহ বাচ্ছু, মীর জাহাঙ্গীর হোসেন, শেখ আবু হাবিব, কাজী মোফাফ্ফাখারুল ইসলাম নীলু, জিএম ছামছুর রহমান, শেখ লুৎফর রহমান, শেখ শামিম উর রহমান, মনিরুজ্জামান মহাসিন, জিএম আব্দুল বারী, কেরামত আলী, টিএম আব্দুল জব্বার, এসএম ফজলুর রহমান, গাজী জাহাঙ্গীর কবীর, মীরাবসু সরকার, শেখ আব্দুল করিম মামুন হাসান, হাফেজ আব্দুল গফুর, আমিনুর রহমান, মাষ্টার রফিকুল ইসলাম, অসিত কুমার অধিকারী, এসএম গোলাম ফারুক, জিএম গোলাম রব্বানী, শেখ মনিরুজ্জামান মনি, রবিউল ইসলাম, শেখ রবিউল ইসলাম, মো: ইমরান আলী, শেখ আব্দুল হামিদ, শেখ সাদেকুর রহমান, মাসুদ পারভেজ ক্যাপ্টেন, আহাদুজ্জামান আহাদ, শেখ মাহবুবুর রহমান সুমন, তরিকুল ইসলাম লাভলু, সনৎ কুমার গাইন, শফিকুল ইসলাম, মোখলেসুর রহমান মুকুল, শেখ ইকবাল আলম বাবলু, আহাদুজ্জামান আহাদ, শেখ সাদেকুর রহমান, এসএম গোলাম ফারুক, গাজী মিজানুর রহমান, জামাল উদ্দীন, শেখ মাহবুবর রহমান সুমন, সনৎ কুমার গাইন, আরাফাত আলী, শেখ মোদাচ্ছের হোসেন জান্টু, এসএম গোলাম ফারুক, সেলিম শাহারিয়ার, বাবলা আহমেদ, হাবিবুল্লাহ বাহার, জিএম ফজলুর রহমান, সাজেদুল হক সাজু, মো রফিকুল ইসলাম, জি.এম ফজলুর রহমান, আউয়াল হোসেন, মাসুদ পারভেজ, শফিকুল ইসলাম, বিএম জালালউদ্দীন, মিনুদ হাসান নয়ন, মো: রেজাউল করিম, শিমুল হোসেন। প্রয়াত-শেখ আব্দুল হামিদ (গোবিন্দপুর)।

    ১৯৯২ সালের পূর্ব পর্যন্ত দেশের তথা জেলার মানুষের তথ্য পাওয়ার উৎস ছিল হাতেগোনা কয়েকটি পত্রিকা, বিবিসি রেডিও ও ভয়েস অব আমেরিকোর বাংলা সংবাদ। ১৯৯০ সালে ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার বিরোধী গণঅভ্যুত্থানে সাবেক সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এর পতনের পর দেশের ন্যায় সাতক্ষীরা জেলায় নতুন ভাষা, তথ্য বিন্যাস ও অবয়ব নিয়ে দৈনিক কাফেলা প্রকাশিত হয় এক ঝাঁক তরুণ সাংবাদিকদের নিয়ে। এ পত্রিকাটির প্রথম ও শেষ পাতা ছিল প্রায় অভিন্ন। এই পত্রিকার শেষ পাতায় পত্রিকার নেমপ্লেট ছাপানো প্রবনতা লক্ষ করা যায়। কাগজটির নতুন বৈশিষ্ট্য ছিল যে সংবাদ যে পাতায় শুরু হয় সেই সংবাদ পরের পাতায় শেষ হতো। পত্রকাটির নিজস্ব সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয়-এর বাইরেও পাঠকদের থেকে কিংবা/লেখক গন্ডির বাইরে চিন্তাশীল পাঠকদের কলাম লেখক হিসেবে পরিচিতি করে তোলে। পরবর্তীতে প্রায় জেলার অধিকাংশ সংবাদপত্রই এ ধারাটি গ্রহণ করেন। এর প্রকাশ ভঙ্গিতে বৈচিত্র্য থাকলেও বিপনন ব্যবস্থা ছিল আগের দেশীয় সংবাদপত্রগুলোর মতোই। তবে একে একে স্থানীয় পত্রিকাগুলোর মধ্যে পাঠক ধরে রাখার তীব্র প্রতিযোগিতা পরিলক্ষিত হয়। বর্তমানে জেলা থেকে ১৪ টি দৈনিক, ৪ টি সাপ্তাহিক ও একটি অনলাইন পত্রিকা সরকারী লাইন্সেপ্রাপ্ত।

    তথ্যসূত্রঃ

    ১। ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, সাতক্ষীরা: সমাজ ও সংস্কৃতি, পৃ: ১৬৬, ¯্রােত, প্রকাশনায়-সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরী, প্রকাশকাল- নভেম্বর ২০১৯ খ্রিঃ।

    ২। সিরাজুল ইসলাম, সাতক্ষীরার সাহিত্য-সাময়িকী: শতবর্ষেও পথচলা (১৯০৭-২০১৭), পৃ: ৩৯, ঈক্ষণ, বর্ষ ৩২, সংখ্যা ২, শ্রবাণ ১৪২৬, জুলাই ২০১৯।

    ৩। সুবাসিত সুভাষ, সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরী স্মারকগ্রন্থ, পৃ-০৪, প্রকাশনায়-নাগরিক শোকসভা আয়োজক কমিটি, সাতক্ষীরা। প্রকাশকাল-২৬ নভেম্বর ২০২২।

    ৪। অন্যন্য আনিস, মোঃ আনিসুর রহিম স্মারকগ্রন্থ, পৃ-০৫, প্রকাশনায়-নাগরিক স্মরণসভা আয়োজক কমিটি, সাতক্ষীরা। প্রকাশকাল-২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।

    ৫। আবু হেনা আলম, সাতক্ষীরার ইতিহাস-ঐতিহ্য, পৃ: ৩৯৭-৪০৭, প্রকাশক-বেগম নাজমুন নাহার, প্রকাশকাল-ফেব্রুয়ারি ২০২০ খ্রিঃ।

    ৬। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ খ্রিঃ।

    ৭। স্বাক্ষর অস্পষ্ট, নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের চুড়ান্ত ভোটার তালিকা-২০২১, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ খ্রিঃ।

    ৮। স্বাক্ষর অস্পষ্ট, সভাপতি, আবু আহমেদ, সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের ২০২০-২১ সালের বার্ষিক নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা, তারিখ-২৮ ডিসেম্বর ২০১৯।

    ৯। ইন্টারনেট ও জেলা তথ্য বাতায়ন।

    লেখকঃ মোঃ মুনসুর রহমান, বার্তা সম্পাদক, সাপ্তাহিক সূর্যের আলো, সাতক্ষীরা। মোবাইল নম্বর-০১৭৫৪২৪১৩৮৮।

  • নর্থ ব্লকে স্বয়ংবর সভা

    নর্থ ব্লকে স্বয়ংবর সভা

    আমি যে এক সম্পূর্ণ অন্য দুনিয়ায় পা রেখেছি, খুব তাড়াতাড়িই টের পেলাম। আমার জন্য বরাদ্দ হয়েছিল একটি অ্যাম্বাসাডর গাড়ি।

     

    কৌশিক বসু

    নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠিত হল, এ বার সেই সরকার বিভিন্ন বিষয়ে নতুন নীতি রূপায়ণ করবে। অর্থ মন্ত্রকের নর্থ ব্লকে কী ভাবে নীতি রূপায়ণের কাজটি হয়, এবং আগামী কয়েক মাসে এই সরকারের থেকে কী কী আশা করা যেতে পারে, সে বিষয়ে অনেক কিছুই পড়ছি গত কয়েক দিন যাবৎ। পড়তে পড়তে মনে পড়ে যাচ্ছে নর্থ ব্লকে আমার শুরুর দিনগুলোর কথা— ভারত সরকারের হয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতার সূচনাপর্ব।

    আমার সৌভাগ্য যে, আমি চমৎকার সব মানুষের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। তাঁদের মধ্যে যেমন ছিলেন আমার দুই বস— প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়— তেমনই ছিলেন আমার অফিসের কর্মীরা, দফতর চালানোর কাজে প্রতিনিয়ত যাঁদের সহযোগিতা পেয়েছি। বলতে দ্বিধা নেই, খুবই ইতিবাচক পরিবেশ ছিল অর্থ মন্ত্রকে— বন্ধুত্বপূর্ণ কাজের পরিবেশ, সবাই সাহায্য করতে প্রস্তুত। কিন্তু আমার কাছে সে এক সম্পূর্ণ নতুন দুনিয়া। তার আগে অবধি আমি আজীবন শুধু অর্থনীতির গবেষণা করেছি, এবং ক্লাসে ছাত্রদের অর্থশাস্ত্র পড়িয়েছি, তা সে ভারতে হোক বা আমেরিকায়। সরকারি দুনিয়ায় এই প্রথম পা রাখলাম আমি।
    সে সময়ের কিছু মজার অভিজ্ঞতা পাঠকের সঙ্গে ভাগ করে নিতে ইচ্ছা করছে।

    আমি যে এক সম্পূর্ণ অন্য দুনিয়ায় পা রেখেছি, খুব তাড়াতাড়িই টের পেলাম। আমার জন্য বরাদ্দ হয়েছিল একটি অ্যাম্বাসাডর গাড়ি। অফিসে যাব বলে গাড়িতে উঠেছি— অভ্যাসবশে সিটবেল্ট লাগাতে গেলাম। আমার গাড়ির চালককে দেখে মনে হল, খুবই অস্বস্তিতে পড়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, পরে টের পেয়েছি যে, মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা নামক গেরামভারী পদের অধিকারীর গাড়ির সারথি বলে তাঁর বেশ গর্ববোধ ছিল। আমায় সিটবেল্ট পরতে দেখে শেষ অবধি নিজের আপত্তি আর চেপে রাখতে পারলেন না তিনি। আমার দিকে ঘুরে বললেন, “স্যর, আমি জানি আপনি আগে শিক্ষক ছিলেন; তবে এখন আপনি দেশের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। আর সিটবেল্ট পরার কোনও প্রয়োজন নেই!” বলা বাহুল্য, লোকটিকে আমার ভারী মনে ধরল! তবে, এটাও বুঝলাম যে, এক নতুন, অচেনা দুনিয়ায় পা দিয়েছি আমি।

    এখন আমি কর্নেল ইউনিভার্সিটিতে গেম থিয়োরি বা দ্বন্দ্ব তত্ত্বের যে কোর্সটি পড়াই, তার একটি অংশের নাম ‘বারগেনিং থিয়োরি’। এই তত্ত্বটির উদ্ভাবক ছিলেন আশ্চর্য প্রতিভাধর গণিতজ্ঞ জন ন্যাশ। আ বিউটিফুল মাইন্ড নামের ছবিটিতে রাসেল ক্রো অভিনয় করেছিলেন তাঁর ভূমিকায়, এটা বললে হয়তো ন্যাশকে মনে করতে সুবিধা হবে। মাত্র ২২ বছর বয়সে বারগেনিং বিষয়ে দু’টি ছোট পেপার লিখেছিলেন ন্যাশ। তার অল্প কিছু দিনের মধ্যেই তিনি আক্রান্ত হন স্কিৎজ়োফ্রেনিয়া রোগে, গবেষণার জগৎ থেকে হারিয়ে যান। কিন্তু, তাঁর ওই দু’টি ছোট গবেষণাপত্র ‘বারগেনিং থিয়োরি’-র ভিত গড়ে দিয়েছিল। গোটা দুনিয়ায় গেম থিয়োরির ক্লাসরুমে, এবং আমেরিকার আদালতকক্ষে, তার ব্যবহার চলছে।

    কিন্তু, বারগেনিং থিয়োরির সেরা বাস্তব উদাহরণটি আমি কোনও ক্লাসঘরে পাইনি, পেয়েছিলাম দিল্লির অর্থ মন্ত্রকে আমার অফিসের কর্মীদের থেকে। সে কথা বলি। মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার অফিসে আমার চিফ অব স্টাফ ছিলেন সোমনাথন নামে এক জন— খুবই নির্ভরযোগ্য মানুষ। এক দিন তিনি আমার অফিসে এলেন। তিনি দরজার কাছে দাঁড়িয়ে, এবং তাঁর ঘাড়ের উপর দিয়ে আর কয়েক জন উঁকি মারছে, এমন অবস্থায় সোমনাথন আমায় জানালেন, আমার মতো উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সরকার ৬০০০ টাকা অবধি দামের ব্রিফকেস কিনে দিয়ে থাকে। সেই মুহূর্তে আমার আদৌ একটা নতুন ব্রিফকেসের প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু সোমনাথন ও তাঁর ঘাড়ের উপর থেকে উঁকি মারা সহকর্মীদের হতাশ করতে মন চাইল না। বললাম, আমায় কয়েকটা স্যাম্প্‌ল দেখানোর ব্যবস্থা করা হোক।

    পর দিনই এক সর্দারজি হাজির আমার অফিসে। তাঁর হাতে ছ’টি ব্রিফকেস, তবে বলে না-দিলে সেগুলোর মধ্যে ফারাক খুঁজে পাওয়া কঠিন। আমার টেবিলের উপরে সেগুলো সাজিয়ে রাখা হল। মনে হচ্ছিল, স্বয়ংবর সভা চলছে— সামনে রাজপুত্রের দল, এক জনের গলায় আমি বরমাল্যটি পরিয়ে দিলেই হয়! সোমনাথন এলেন; তাঁর পিছন পিছন এলেন আমার পার্সোনাল সেক্রেটারি ও সহায়করা; তাঁদেরও পিছনে এলেন আমার পিয়নরা। এই শেষের দলটি এমনিতে লাজুক— কিন্তু এই মহাভারত-তুল্য ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করার লোভ তাঁরাও সামলাতে পারেননি বলে দেখা গেল।

    আমার উদ্দেশে মৃদুস্বরে উপদেশাবলি ভেসে আসতে আরম্ভ করল; বিভিন্ন ব্রিফকেসের দিকে ইতিউতি আঙুলও উঠল। আমার কোন ব্রিফকেসটা বাছা উচিত, সে বিষয়ে দফতরের বিভিন্ন স্তরের কর্মীরা আমায় সৎ পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু, ব্রিফকেস বাছার চেয়ে ঢের জরুরি কাজ পড়ে রয়েছে তখন। কাজেই, খুব একটা ভাবনাচিন্তা ছাড়াই একটা ব্রিফকেস বেছে নিলাম। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সম্মিলিত দীর্ঘশ্বাসের শব্দ শোনা গেল— আমায় জানানো হল, আমার জন্য বরাদ্দ যেখানে ৬০০০ টাকা, আমি সেখানে মাত্র ২৫০০ টাকা দামের ব্রিফকেস বেছেছি! আর কথা বাড়াব না ভেবে বললাম, যে দামেরই হোক, এটাই আমার সবচেয়ে বেশি পছন্দ হয়েছে। আমার সহায়কদের মধ্যে এক জন বললেন, “তা হলে স্যর, আপনি দুটো ব্রিফকেস নিন।” আমি নিশ্চিত নই, তবে এই ভদ্রলোক সম্ভবত অর্থনীতি নিয়ে লেখাপড়া করেছিলেন— অর্থনীতিবিদদের কাছেই সব সমস্যার এমন চটজলদি সমাধান থাকে! প্রস্তাবটি শুনে অন্যরা বেশ সপ্রশংস ভঙ্গিতে তাঁর দিকে তাকালেন।
    ভেবে দেখলাম, আমার সামনে দুটো রাস্তা রয়েছে— এক, আমার দফতরের কর্মীদের এই সব ব্রিলিয়ান্ট আইডিয়া উপেক্ষা করে তাঁদের ভাবাবেগে আঘাত দেওয়া; অথবা একটা নয়, দু’দুটো বেশ ‘বলতে নেই’-টাইপ খারাপ দেখতে ব্রিফকেসের মালিক হওয়া। দু’দিকের লাভ-ক্ষতি হিসাব কষে শেষ পর্যন্ত বললাম, “ঠিক আছে, দুটো ব্রিফকেসই নেব। কিন্তু, সরকার যে-হেতু ৬০০০ টাকা দেবে, আর দুটো ব্রিফকেসের দাম যে-হেতু ৬৭০০ টাকা পড়ছে, তাই বাকি ৭০০ টাকাটা আমার থেকে নিয়ে নিন।” আমার কথা শুনে দফতরের কর্মীরা স্তম্ভিত। তাঁরা সর্দারজিকে বললেন, “আপনি তো একটা ব্রিফকেস বেচবেন বলে এসেছিলেন। উনি দুটো নিচ্ছেন। ওই ৭০০ টাকাটা ডিসকাউন্ট দিন, মশাই।” সর্দারজি দাড়ি চুলকে একটু ভাবলেন, তার পর রাজি হয়ে গেলেন। এ ভাবেই আমি দুটো ব্রিফকেসের গর্বিত মালিক হলাম, যার মধ্যে একটাও আমি চাইনি।
    ( ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে নেওয়া)
  • কেন বধ্যভূমি চাই

    কেন বধ্যভূমি চাই

    হাজার বছরের ইতিহাসের পরিক্রমায় সমাজ সভ্যতার বিকাশে একটি জাতি আত্মমর্যাদা নিয়ে দাড়াতে আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকে। কৃষি ভিত্তিক সমাজ কাঠামোয় বাঙ্গালী জাতি বারবার ঘুরে দাড়াবার চেষ্টা করেছে।আদি পাল যুগ থেকে শুরু করে এই বাঙ্গালীজাতীর পরিচয়,পরিচিতি, পালবংশের দীর্ঘ চার শত বছর স্বশাসন,সভ্যতার বিকাশ,দাক্ষিনাত্যের সেনবংশের কাছে পরাজয়,দীর্ঘ দিনধরে বিদেশি দেরদ্বারাশাসিত হওয়া,ধাপে ধাপে শোষন বঞ্চনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, বিক্ষোভ, চল্লিশ সালের লাহোর প্রস্তাব,১৯৪৮ সালে রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবীতে আন্দোলন, ২৯৫২ সালে সালাম রফিক বরকতে আত্মাহুতি, ১৯৬৯ সালে গনঅভ্যুত্থান,১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ, সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন সব বাঙ্গালী জাতির আত্মপরিচয় আত্মমর্যাদার স্মৃতি চিহ্ন। পৃথিবীর বুকে মাথাউচু করে দাড়ানো জাতিই হলো বাঙালী জাতি।প্রজন্মেরপর প্রজন্ম বেঁচে থাকে ইতিহাস নিয়ে।ইতিহাসের সত্য মিথ্যা ভালোমন্দ নিয়ে সংস্কৃতি সভ্যতা গড়ে ওঠে।আজ আমরা কিদেখছি? নতুনপ্রজন্ম স্বাধীনতা,মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে খুব বেশী আগ্রহী নয়। যেমন করে আমরা বিদেশি দ্বারা শাসিত হয়ে অনেক কিছু ভুল জানি বা ভালো ভাবে জানি না,তেমনি বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাস ও আমরা ভালো ভাবে জানি না বা জানতে পারিনা।এটা এক করুন বাস্তবতা। বাংলাদেশ সৃষ্টির শত্রুমিত্র না জানলে বাঙ্গালি জাতীয়বাদী চেতনা, মুক্তি যুদ্ধের চেতনা, মূল্যবোধ চর্চার ক্ষেত্র তৈরী হবে কিভাবে? যে বাংলাদেশে ধনী গরীব বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন গতিশীল হওয়ার কথা,মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সেই শিক্ষা দেয়। কিন্তু পরিস্থিতি ভিন্ন তর। আজ সাতক্ষীরা জেলায় ৭৮ টি ইউনিয়নে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন শত শত স্থানে সাধারণ জনগণের উপর পাকহানাদার বাহিনী ওতাদের দোশরদের দ্বারা অমানুষিক নির্যাতন, হত্যা গুম অগ্নিসংযোগের স্মৃতি চিহ্ন রয়েছে। অত্যাচারের ক্ষতচিহ্ন রয়ে গেছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় নতুন প্রজন্মের কাছে ইতিহাসের এই ক্ষতচিহ্ন গুলো ভালোভাবে দরদদিয়ে উপস্থাপন করা হয়নি।কারণ এইজেলার অধিকাংশ সংসদীয় সিট গুলো প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সংসদ সদস্য দ্বারা পরিচালিত হয়নি বা হতে পারেনি। মুক্তি যুদ্ধের চেতনার পক্ষে প্রচার খুবই দুর্বল। এইদেশটি কোনভাবে চলবে? জাতি রাষ্ট্র! না ধর্ম রাষ্ট্র। যারা ধর্মরাষ্ট্র চায়,তারাতো স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ইতিহাস চর্চা হউক সেটা চাইবে না।কিন্ত যারামুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী তারা তো চেষ্টা করবেন,স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ঐতিহ্য নতুন প্রজন্ম যাতে জানতে পারে সে উদ্যোগ নেওয়া।”,সত্য যে বড়ই কঠিন, আমিকঠিনের ভালোবাসিলাম,সেকখনো করেনাবঞ্চনা” যারা শোষণ বঞ্চনার পক্ষে, তারা ইতিহাসের সত্য পাতাকে আড়াল করতে চায়,ছিঁড়ে ফেলতে চায়। কিন্তু পারেনা। একটি অবাক করার মত বিষয় হলো সাতক্ষীরা জেলার অন্যান্য উপজেলায় কমবেশী বধ্যভূমি, স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্তম্ভ স্থাপিত হলেও সাতক্ষীরা সদরউপজেলায় কোন বধ্যভূমি, স্বাধীনতার স্মৃতি স্তম্ভ গড়ে উঠেনি। এর কারণে র গভীরে প্রবেশ করলে দেখাযায় দেশ স্বাধীনের পর থেকে সংসদসদস্য ছিলেন কখনো জামাত নেতা কসাই খালেকমন্ডল,জামাত নেতা কাজীশামসুর রহমান, মুসলিম লীগেরর নেতা রাজিয়াফয়েজ।এমনকি মহাজোট সমর্থিতজাতীয়পার্টির এম এ জব্বার।এরা কেউই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সংসদ সদস্য ছিলেন না। সংগত কারণে এইসদর উপজেলায় মুক্তি যুদ্ধের স্মৃতি চিহ্ন বধ্যভূমি বা স্বাধীনতা,মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্তম্ভ গড়ে উঠেনি। সাতক্ষীরা জেলায় সরকারি হাইস্কুলের পিছনে দিনেষকর্মকারের বাড়ীতে আশ্রয় নেয়া প্রায়চারশ ‘ র মত নারীপুরুষকে পাক সেনারা নির্বিচারে গুলিকরে,বেয়নেটদিয়ে খুচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যাকরে। ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল এই হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়। সাতক্ষীরার স্বাধীনতা,মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, সামাজিক সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠনও সাংবাদিক বৃন্দ,মুক্তি যোদ্ধারা সম্মিলিত ভাবে ২০১৪ সাল থেকে এই দিনেষকর্মকারের বাড়ীতে সংঘটিত হত্যাযগ্ঞস্থলে বধ্যভূমি গড়ে তোলার দাবী জানাচ্ছে।জনগনের চাপে জেলাপ্রশাসক মাঝে মাঝে বলে থাকেন খুবশিঘ্রই সংঘটিত স্থলে বধ্যভূমি হবে।কিন্তু হচ্ছেনা। আরও অবাক ব্যাপার হলো এখন সদরের সংসদসদস্য একজন মুক্তি যোদ্ধা। দুইবার পরপর সাংসদ। তিনি ও যাতে এইবধ্যভুমি গড়ে ওঠার ব্যাপারে তৎপর হয়ে উঠেন,এলাকাবাসী জোর দাবী জানাচ্ছেন। এছাড়াও, বড়বাজার ডায়মন্ড হোটেল, বাঁকাল ব্রীজ,বাদামতলা,,ঘোনার মোড়,ঝাউডাংগা,বিনেরপোতাসহ চালতেতলাসহ অসংখ্যেয় জায়গায় এই হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছিল। এসকল জায়গায় যদি বধ্যভূমি গড়ে উঠে,তাহলে নতুন প্রজন্ম ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠবে। স্বাধীনতার শত্রু মিত্র চিনতে পারবে।বিদেশি দ্বারাশাসিত হলে যে ইতিহাস পড়ে তরুণপ্রজন্ম বড় হয়,সে ইতিহাস হয় কাপুরুষের ইতিহাস। আর প্রকৃত বাঙ্গালি জাতি তাদের নিজেদের মনোনীত প্রতিনিধি দ্বারা শাসিত হলে তরুণপ্রজন্ম হবে বিরের জাতি,সাহসী জাতি।তাই সর্বক্ষেত্রে বিদেশী প্রভাব মুক্ত শাসনও বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস পড়াও চর্চার কোন বিকল্প নেই। এখন কার প্রজন্ম যদি এইজাতির বিকাশের ইতিহাস সম্পর্কে জানে,তাহলে আত্মমর্যাদা বাড়বে। প্রখ্যাত কবি সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা আমার পরিচয়ে যেমন করে বাঙালির পরিচয় তুলেধরেছেন,তেমনি আমরা বধ্যভূমির মাধ্যমে, স্বাধীনতা,মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্তম্ভ গড়ে তোলার মাধ্যমে এই জাতির শত্রু মিত্রের ইতিহাস সম্পর্কে তরুণদের অবহিত করে আমরা হতে পারব জ্ঞান সমৃদ্ধ গর্বিত জাতি।বর্তমানে মহান সংসদে পঁচিশে মার্চকে গনহত্যাদিবস ঘোষণা করা হয়েছে,তাই এইজেলার যেখানে যেখানে হত্যা নির্যাতন সংঘটিত হয়েছিল, সেখানেই বধ্যভুমি গড়ে উঠা এখন সমায়ের দাবী। জেলায়বধ্যভুমি চাই,ইতিহাস সচেতনপ্রজন্ম চাই।জেলায় মুক্তি যুদ্ধের জাগরণচাই,অতিসত্বর বধ্যভূমি চাই।সাহসী প্রজন্মের জাগরণচাই,হত্যা গুমের হোতাদের চিনতে চাই,দ্রুত বধ্যভূমি স্থাপন চাই।বাদল বিনয়,দিনেশের মত সাহসী প্রজন্ম চাই,সাতক্ষীরায় বধ্যভূমি চাই। বঙ্গবন্ধুর মত সাহসী জাতি চাই,এইজেলায় স্মৃতি সৌধ চাই,বধ্যভূমি চাই। আসুন সাতক্ষীরা কে কলঙ্কমুক্ত করি,রাজাকারমুক্ত,দুর্নীতি মুক্ত হিসাবে গড়েতুলি।সকল প্রকারের চক্রান্ত ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আলোকিত সাতক্ষীরা গড়েতুলি।জয় আমাদের নিশ্চিত।

    অধ্যাপক ইদ্রিস আলী
    সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটি