নিজস্ব প্রতিনিধি: সুপার সাইক্লোন আম্পানের আঘাতে উড়ে গেছে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ডিবি গার্লস হাইস্কুলের একটি দুটি কক্ষের টিনের চাল। নতুন ভবণ নির্মাণের কারণে এ দুটি কক্ষেই বসতো শিক্ষার্থীরা সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের অর্থায়নে ভবণটি নির্মাণাধীন। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আম্পান ভবণটির টিনের চালে আঘাত হানে ২০ মে রাতে। সেই আঘাতে টিনের চাল তো উড়েছে, সেই সাথে ভেঙেছে চেয়ার, টেবিল ও বেঞ্চ। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ রয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. এমাদুল ইসলাম দুলু জানান, নতুন ভবণ নির্মাণাধীন। টিনের চাল দিয়ে দুটি কক্ষে ক্লাস নেওয়া হতো। ঝড়ে সেই কক্ষ দুটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে টিন ও আসবাবপত্র মিলে প্রায় লক্ষাধীক টাকার ক্ষতি হয়েছে।ক্ষতিগ্রস্থ ভবণটির সংস্কারে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Category: দুযোগ
-

শাঁখরা কোমরপুরে দেড় কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ পরিদর্শণ করলেন এমপি রবি
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ প্রাকৃতিক দুর্যোগ সুপার সাইক্লোন আম্পান’র তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ সাতক্ষীরা সদরের ভোমরা ইউনিয়নের শাঁখরা কোমরপুরে প্রায় দেড় কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং পার্বত্য চট্টগ্যাম বিষয়ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। মঙ্গলবার (২৬ মে) ঈদুল ফিতর’র পরের দিন সকালে ভোমরা ইউনিয়নের শাঁখরা কোমরপুরে প্রায় দেড় কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ পায়ে হেটে পরিদর্শণ করেন এবং ঐ এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতের আশ^াস দেন এবং ঐ এলাকার মানুষের সাথে কথা বলেন।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহিদুল ইসলাম, জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মকসুমুল হাকিম, পৌর আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউর বিন সেলিমসহ দলীয় ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। -

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে সাতক্ষীরায় ৮০ হাজার ঘরবাড়ির ক্ষতি, মৎস্য, প্রানীসম্পদ ও কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি
স্টাফ রিপোটার ঃ ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তান্ডবে সাতক্ষীরায় ২২ হাজার ৭১৫টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও প্রায় ৬১ হাজার ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া কৃষিবিভাগের যে ক্ষতি হয়েছে তাতে টাকার পরিমান ১৩৭ কোটি ৬১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। মৎস্য বিভাগের ক্ষতি হয়েছে ১৭৬ কোটি ৩ লাখ টাকা। প্রানী সম্পদের ৭৭ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এদিকে, ৮১ কিলোমিটার রাস্তা ও ৫৭.৫০ কিলোমিটার বেড়িবাধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া দেড় শতাধিক বিদ্যুতের খুটি উপড়ে পড়েছে। গাছপালা ভেঙে পড়েছে অসংখ্য।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল জানান, জেলায় ৪ হাজার ৩৩২ হেক্টর জমির ফসলি জমি সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে। আর আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৮ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমি। এনিয়ে কৃষিতে মোট ক্ষতি হয়েছে ১৩৭ কোটি ৬১ লাখ ৩০ হাজার টাকার।
ভেসে গেছে ১৩ হাজার ৪৯৭ হেক্টর জমির চিংড়ি ঘের ও ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির মৎস্য খামার। যার ক্ষতির পরিমান ১৭৬ কোটি ৩ লাখ টাকা।
এছাড়া ৯১টি খামার ও ৬৪০টি গবাদি পশু ও ৮৬টি হাস মুরগির খামারসহ মোট ৭৭ লাখ টাকা ৬৭ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে, উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার ২৩ টি পয়েন্টে নদীর বেঁড়িবাধ ভেঙে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮১ কিলোমিটার রাস্তা ও ৫৭.৫০ কিলোমিটার বেঁড়িবাধ। এছাড়া, জেলায় ২২ হাজার ৭১৫টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও প্রায় ৬১ হাজার ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে।## -
ঘুর্নিঝড় আমফাণে ক্ষয় ক্ষতির চিত্র
ক্রঃনং জেলার নাম উপজেলার নাম আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা আশ্রয় গ্রহনকারীর সংখ্যা ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সংখ্যা ক্ষতিগ্রস্থ প্রাণী সম্পদ ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্য সম্পদ মৃত আহত নিখোজ গরু মহিষ ছাগল ভেড়া অন্যান্য চিংড়ি ঘের মাছের খামার অন্যান্য ০১ ০২ ০৩ ০৪ ০৫ ০৬ ০৭ ০৮ ০৯ ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ০১ সাতক্ষীরা আশাশুনি ২০৫ ৬০,০০০ — — — — — — — — ৮৬৯৮ — — ০২ দেবহাটা ১৪৭ ১৭,৫০০ — — — ১০ — ০৫ — — ১০০০ — — ০৩ কলারোয়া ২৮৩ ২১,৩১৪ — — — — — — — — — — — ০৪ কালিগঞ্জ ৩৩৭ ৬০,৩০০ — ০৫ — — — — — — — — — ০৫ সাতক্ষীরা সদর ৩৯১ ৩৩,২৫০ ০২ ০১ — ১০ — ৪৫ ২২ ৭০০ — — — ০৬ শ্যামনগর ৩৬৮ ১,৫৪,৮০০ — — — ৬০০ ৫০ ৯০০ ৩৫০ — ৩০০০ ১৫০০ ৫০০ ০৭ তালা ১৭৬ ২৩,১০০ — ১০ — ১৮ — ৩০ — — — — — মোট- ১৯০৭ ৩,৭০,২৬৪ ০২ ১৬ — ৬৩৮ ৫০ ৯৮০ ৩৭২ ৭০০ ১২৬৯৮ ১৫০০ ৫০০ ক্ষতিগ্রস্থ কৃষি সম্পদ ক্ষতিগ্রস্থ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা ঘাট (কিঃমিঃ) ক্ষতিগ্রস্থ যানবাহন মন্তব্য ফসল সবজি বীজতলা সম্পূর্ণ আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ নৌকা ডুবি ট্রলার ডুবি ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ — — — ৭,৮৫০ ১৫,৬০০ ৩০.০০ ২৪.০০ — — — ৮০ — ৯০০ ৩,৫৬০ — ২.০০ — — — — — ৬০০০ ১,২০০০ — — — — — — — ৩০২৪ ৯,৭৮০ ৮.০০ ৩.০০ — — — — — ১২৪ ৭,৬৯৩ — — — — ২৭৫ ১৬০ — ৪৩৩২ ১১,১৯০ ৩৫.০০ ২৬.৫ — — ৬০৪ ৩০০১২ — ২৮৫ ১,০৯৩ ৮.০০ — — — ৮৭৯ ৩০২৫২ — ২২,৫১৫ ৬০,৯১৬ ৮১.০০ ৫৭.৫০ — — -

ঘূর্ণিঝড় আম্পানে লন্ডভন্ড গোটা সাতক্ষীরা ॥ গাছ চাপায় মহিলার মৃত্যু, ২০ টিরও বেশী পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি
স্টাফ রিপোটার : ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে গোটা সাতক্ষীরা। উপকুলীয় চারটি উপজেলার কমপক্ষে ২০ টিরও বেশী পয়েন্টে বেড়িবাধ ভেঙে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। পানিতে ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি। বিধ্বস্ত হয়েছে সহস্্রাধিক কাঁচা ঘর বাড়ি। অসংখ্য গাছপালা উপড়ে অনেক রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সাতক্ষীরার ব্রান্ড খ্যাত আমের। এদিকে, শহরের কামাননগরে গাছ চাপা পড়ে করিমন নেছা নামের এক নারী মারা গেছে।
সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মাপুকুর, গবুরা ও আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়নের কয়েকটি স্পটে কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া নদীর ভেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পদ্মপুকুর ইউনিয়নের চাউলখোলা এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২০০ ফুটের মত এলাকা ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। এছাড়া কামালকাটি ও চন্ডিপুর এলাকায় পানি ওভার ফ্লো হয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এছাড়া গাবুরা ইউনিয়নের জেলেখানি ও নাপিতখালী এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। এছাড়া আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়নের সুভদ্রকাটি, কুড়িকাউনিয়া, চাকলা, হিজলা, দিঘলাররাইট, কোলা ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকছে বলে নিশ্চিত করেছেন আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলিফ রেজা। সেগুলি মেরামতের চেষ্টা চলছে।
সাতক্ষীরা জেলার প্রায় সব এলাকায় কমবেশী গাছপালা ভেঙে পড়েছে। কিছু কিছু এলাকায় গাছ পড়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুতের তারের ওপর গাছ পড়ায় এবং খুটি উপড়ে পড়ায় জেলায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট পরিসেবা। অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ী ও টিনের চাল উড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, ঘন্টায় ১০০-১২০ কিলোমিটার গতিবেগে বিকেল ৪টার পর থেকে সুন্দরবন উপকুলে আম্পান আছড়ে পড়ে। এরপর সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত ১৪৮ কিলোমিটার গতিবেগে পশ্চিম দিকে ঝড়ো হাওয়াটি জেলা শহরের ওপর আঘাত হানে।
এদিকে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম আবুজর গিফারী জানান, আম্পনের কারনে নদীর পানি ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়ে নদীর প্রবল জোয়ারে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের দাঁতনেখালি, দূর্গাবাটি, পদ্মপুকুর ও গাবুরার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ভেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। কয়েকটি স্থানে ওভারফ্লো হয়ে বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকে বিস্তির্ণ এলাকা প্লাবিত করে। কাঁচা ও টিনের ঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাছ-গাছালি উপড়ে রাস্তা-ঘাট ও বাড়ী ঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে ১৪৫টি সাইক্লোন সেল্টার ও ১ হাজার ৭০০ টি স্কুল কলেজসহ আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ লাখ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। জেলায় ১২ হাজার সেচ্ছাসেবকের পাশাপাশি ১০৩ জনের মেডিকেল টিম স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত রয়েছে।
মরিচ্চাপসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি ২ থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ও গাবুরা, মুন্সিগঞ্জ ও আশাশুনি উপজেলার দয়ারঘাট, হাজরাকাটি, কুড়িকাউনিয়া, মনিপুরি ও বিছট এলাকার ভেড়িবাঁধে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল জানান, ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা সংশ্লিষ্ট বিভাগকে সাথে নিয়ে তালিকা তৈরির কাজ করছে। তাদের কাছ থেকে তালিকা পেলে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির চিত্র জানা যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাধগুলো জরুরী সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জানান জেলা প্রশাসক। -
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু
স্টাফ রিপোটার: সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বজ্রপাতে ফজলুর রহমান (৩৩) নামের এক কৃষকের মুত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার যুগিখালী ইউনিয়নের ছোটরাজনগর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম দফাদারের ছেলে।
যুগিখালী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম জানান, ছোটরাজনগর গ্রামের কৃষক ফজলুর রহমান তার ছেলেকে নিয়ে রাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে মসজিদে তারাবী নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে বাড়ির পাশে একটি নারিকেলগাছে বজ্রপাত ঘটে। এতে কৃষক ফজলু গুরুতর আহত হয়ে রাতেই মারা যান। এদিকে, তার শিশুপুত্র এতে মারাত্মক আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়ে। তার অবস্থা এখন আশংকামুক্ত।
চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম আরো জানান, দুপুরে নামাজ শেষে তাকে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন কার্য সম্পন্ন করা হবে।
এদিকে, তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। -

প্রেরণা নারী উন্নয়ন সংগঠন ও আমার কুঠির মহিলা সংস্থার যৌথ আয়োজনে দুর্যোগ মোকাবেলায় নারীদের ভুমিকা শীর্ষক উপজেলা ভিত্তিক কনসালটেশন সভা অনুষ্ঠিত
কালিগজ্ঞ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোজাম্মেল হক রাসেল বলেন, নারীর ভাগ্য উন্নয়নে সবার আগে নারীকে স্বাবলম্বী হতে হবে। কোনো না কিছু করতে হবে, মাসিক ইনকাম্ থাকতে হবে তাহলে পরিবার ও সমাজে সে নারী সন্মানিত হতে পারবে। দুর্যোগ মোকাবেলায় আগের তুলনায় বর্তমানে মানুষ অনেক সচেতন হয়েছে। সে কারণেই বিগত ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে এ এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কম হয়েছে।
গতকাল বুধবার কালিগঞ্জে দুর্যোগ মোকাবেলায় নারীদের ভুমিকা শীর্ষক উপজেলা ভিত্তিক কনসালটেশন সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোজাম্মেল হক রাসেল আরো বলেন, দুর্যোগ কালিন সময়ে নারীরা সবচেয়ে ঝুকিতে থবকেন। কেননা পরিবারের শিশু, বৃদ্ধ ও সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব নারীর উপরে পড়ে।
সকাল টায় উপজেলা অফিসার্স ক্লাবে প্রেরণা নারী উন্নয়ন সংগঠন ও আমার কুঠির মহিলা সংস্থার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত কনসালটেশন সভায় সভায় সভাপতিত্ব করেন আমার কুঠির নারী উন্নয়ন সংস্থার সম্পাদিকা মাহাফুজা খাতুন খুকু। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কালিগঞ্জ । সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার নিজস্ব প্রতিনিধি কল্যাণ ব্যানার্জি, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দিপালী রানী ঘোষ, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শারমীন আক্তার, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম, কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি শেখ সাইফুল বারী সফু, সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাশ বাচ্চু, সাংগঠনিক সম্পাদিক হাফিজুর রহমান শিমুল, দৈনিক দৃষ্টিপাত কালিগঞ্জ ব্যুরো প্রধান আশেক মেহেদী, দৈনিক দৃষ্টিপাত সাংবাদিক মাসুদ পারভেজ, উপজেলা লেডিস ক্লাবের সম্পাদিকা ইলাদেবী মল্লিক, শিক্ষিকা কনিকা রানী সরকার, উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা হোসনেয়ারা খানম, প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন প্রেরণার নারী উন্নয়ন সংগঠনের পরিচালক শম্পা গোষ্মমী। দাতা সংস্থা খ্রিষ্টান এইড বাংলাদেশ এবং ইউ এন ওমেন এর সহযোগিতায় এ সভাটি হয়।
-

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে জেলাবাসীর প্রাণের কোন ক্ষতি না হলেও মালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে
সম্প্রতি উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় বুলবুল পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির বিষয় নিয়ে জেলা সংবাদপত্র পরিষদের সাথে জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় জেলা প্রশাসকের অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে জেলাবাসীর প্রাণের কোন ক্ষতি না হলেও মালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উড়ে গেছে বাসগৃহের ছাউনি, ভেঙে পড়েছে কাঁচা ঘর বাড়ি, উপড়ে পড়ছে হাজার হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা। ভেসে গেছে মৎস্য ঘের। এখানে শেষ নয়, ধান শাক-সবজি রবি শস্য, পানের বরজের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসক আরো বলেন, ব্যাপক প্রচার প্রচারণার কারণে মানুষ সতর্ক ছিল। এই জন্য প্রাণের কোন ক্ষতি হয়নি। জেলার সার্বিক উন্নয়নের বিষয় নিয়ে তিনি সম্পাদকদের সাথে খোলামেলা আলোচনায় বলেন, অতি শীঘ্রই জেলার সকল ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানানো হবে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহযোগিতা প্রদান করা হবে। কেউ অনিয়ম করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসময় তিনি সম্পাদকদের বিভিন্ন মতামত গ্রহণ করেন।
এদিকে সভায় সম্পাদকদের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব বাস্তবতার চেয়ে কম দেখানো হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। সম্পাদকরা বলেন, মৎস্য বিভাগ জেলায় ১০ কোটি ৩৬ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির কথা বলেছে। কৃষি বিভাগ বলেছে ৩৩ কোটি ১০ লাখ ৯০ হাজার টাকা। কিন্তু বাস্তবে অর্থের হিসাবে ক্ষতির পরিমান উক্ত হিসাবের চেয়ে ১০০ গুন বেশি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য সম্পাদকরা অনুরোধ জানান। এসময় জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, এটা প্রাথমিক হিসাব। ইতোমধ্যে ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ হিসাব আমাদের হাতে এসেছে। প্রাথমিকভাবে হিসাব করে আমরা ৪৭ হাজারের কথা বলেছিলাম। কিন্তু বাড়ি বাড়ি যেয়ে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পাওয়া গেছে ৫৪ হাজারের বেশি।
সভায় আগামীকাল ১৬ নভেম্বর সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে অনুষ্ঠিত বই মেলা সুন্দর ও সার্থক করতে প্রচার কার্যক্রম আরো বেগবান এবং সকলকে বই ক্রয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে জাকজমকপূর্ণ আয়োজনে মেলা সম্পন্ন করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা সংবাদপত্র পরিষদের আহবায়ক দৈনিক দৃষ্টিপাত সম্পাদক জিএম নূর ইসলাম, দৈনিক পত্রদুত উপদেষ্টা সম্পাদক এড. আবুল কালাম আজাদ, দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা সম্পাদক মো. মহসিন হোসেন বাবলু, দৈনিক কালের চিত্র সহ-সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম খোকন, সাপ্তাহিক সূর্যের আলো সম্পাদক আব্দুল ওয়ারেশ খান, সাপ্তাহিক মুক্তস্বাধীন পত্রিকার সম্পাদক আবুল কালাম, দৈনিক কাফেলার রফিকুল ইসলাম রফিক। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. বদিউজ্জামান, সাতক্ষীরা পাবলিক লাইব্রেরীর সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রাসেল, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সদস্য সচিব শেখ মোশফিকুর রহমান মিল্টন। -

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডবে সাতক্ষীরায় ৪৭ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডবে সাতক্ষীরার ৪৭ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩০ হাজার ঘরবাড়ি।
এছাড়াও ৫ হাজার ১৭টি মৎস্য ঘের এবং ১৫ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন সম্পূর্ণ ও ১০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ধান আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুই হাজার হেক্টর জমির সবজি, পান, সরিষা ও কুলসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনবার্সন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, সাতক্ষীরার উপকূলবর্তী শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালীনি, মুন্সিগঞ্জ, রমজাননগর ও কাশিমাড়িসহ আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, আনুলিয়া, খাজরা ও শ্রীউলা এলাকাসহ অন্যান্য উপজেলার অধিকাংশ কাচা ঘর নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এসব এলাকার মৎস্য ঘের ও ফসলের ক্ষেত। উপড়ে পড়েছে হাজার হাজার গাছগাছালি। এতে রাস্তায় গাছ পড়ে অনেক এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তার ছিড়ে ও খুটি উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে এলাকাগুলো।
এদিকে, শ্যামনগর উপজেলার ভেটখালী ইউনিয়নের তারাণীপুরে দেওয়াল চাপা পড়ে ভ্যান চালক পলাশ ও তার স্ত্রী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া শনিবার রাত ৯টার দিকে শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের চকবারা গ্রামের আবুল কালাম (৬০) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, ‘ভারতে পশ্চিমবঙ্গের উপকূল হয়ে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল রোববার ভোর ৫টা থেকে ৮১ কিলোমিটার বেগে সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হানে।
শনিবার রাত থেকে আজ (রোববার) সকাল ৯টা পর্যন্ত সাতক্ষীরায় ১৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।’
গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, তার ইউনিয়নের চার হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। অধিকাংশ গাছ উপড়ে পড়েছে। তবে, মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে নিরাপদে আছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে উপকূলীয় এলাকার অধিকাংশ কাচা ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে। এই অঞ্চলের অধিকাংশ মাছের ঘের ও ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। গাছপালা পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করছে।
জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে সাতক্ষীরা জেলার ৪৭ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে কাজ চলছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার কাছ শুরু হয়েছে। -

চলছে বুলবুলের তান্ডব, নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী
বিদেশ খবর: স্থলেভাগে ঢুকে পড়েই তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছে বুলবুল, এমনটাই জানা গিয়েছে। ঝোড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টির দাপটে লন্ডভণ্ড বকখালি, সাগরদ্বীপ, কাকদ্বীপ এলাকা। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মতোই দাপট বেড়েছে ঝড়ের। যদিও কলকাতা শহরে কিছুটা কম দাপট রয়েছে বুলবুলের। তবে আগামী এক দু ঘন্টার মধ্যে বাড়তে পারে ঝড়ের গতিবেগ। অন্যদিকে, নবান্নের কন্ট্রোল রুম থেকে পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা থেকে বহু মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে, তৈরি হয়েছে অস্থায়ী ক্যাম্প, এমনটাই খবর নবান্ন সূত্রে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী।
-
দুবলার চর এলাকায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাত
সুন্দরবনের দুবলার চর এলাকায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের অগ্রবর্তী অংশ আঘাত হানতে শুরু করেছে। দুবলার মাঝেরচর থেকে জেলেরা মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন, শনিবার (৯ নভেম্বর) ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝড়োবাতাস বয়ে যাচ্ছে। দুবলা ফিশার মেন গ্রুপের হিসাব রক্ষক ফরিদ আহমেদ জানান, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর দুপুরে সিডর এভাবেই প্রথমে আঘাত হানে।
দুবলা ফিশার মেন গ্রুপের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ আলোরকোল থেকে মোবাইল ফোনে জানান, শনিবার ভোর থেকে অফিসকিল্লা, মাঝেরচর, আলোরকোল, মরণেরচর প্রভৃতি এলাকার অস্থায়ী জেলে ঘরে অবস্থানরত জেলেদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ কাজে র্যাব, কোস্টগার্ড, বনবিভাগ ও সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকরা এবং জেলেদের তরুণ সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। এ এলাকার পাঁচটি সাইক্লোন শেল্টার এবং শত শত ট্রলার ও জেলে নৌকায় ছয় হাজারেরও বেশি মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
আলোরকোল, মেহেরআলীর খাল, ভেদাখালীর খাল ইত্যাদি খালে এ জেলেরা আশ্রয় নিয়েছে। জেলে পল্লীগুলোর বাসিন্দাদের অনেকটা জোর করে নিরাপদে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে দেওয়া হয়েছে শুকনা খাবার, চাল ভাজা, চিড়া ও খাবার পানি।
-
দুর্যোগ মোকাবিলায় সাতক্ষীরায় সেনাবাহিনী মোতায়েন
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবিলায় সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। শনিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবিলায় ও দুর্যোগ পরবর্তী সব প্রকার সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সব পদাতিক ডিভিশন। ইতোমধ্যে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় সেনা মোতায়েন সম্পন্ন হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, প্রবল বেগে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ শনিবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরায় আঘাত হানতে পারে। এ সময় কমপক্ষে ১০০ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে। সর্বোচ্চ গতিবেগ ১২০ কিলোমিটার বা তার বেশি থাকতে পারে।
-

সাতক্ষীরাসহ ৭ জেলা অতিধুঁকিপূর্ণ, বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে সাতক্ষীরাসহ উপকূলবর্তী ৭টি জেলা অতি ঝুঁকির মধ্যে আছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। অতিঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলো হলো- সাতক্ষীরা, খুলনা, বরগুনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও ভোলা।
শুক্রবার বিকেলে সচিবালয়ে প্রস্তুতি সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী আরো জানান, আগামীকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত্রির মধ্যে এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। এটির কারণে ৫ থেকে ৭ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রভাবে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। তবে কক্সবাজারে ৪ নম্বর সংকেত অব্যাহত রয়েছে।
শুক্রবার (০৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদফতর এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবিলায় সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট ২২টি মন্ত্রলণালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। -

সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি: খুলে দেওয়া হয়েছে ২৭০ আশ্রয় কেন্দ্র, ছুটি বাতিল
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন। দুর্যোগের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ও মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় জেলার ২৭০টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ১২শ স্কুল-কলেজ বিকল্প আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রয়েছে। ছুটি বাতিল করা হয়েছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। দুর্যোগকালীন জরুরী সাড়াদানের জন্য প্রত্যেক উপজেলায় খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরী সভায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সভায় জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের শনিবার (৯ নভেম্বর) বেলা ১১টার মধ্যে উপকূলীয় এলাকার মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে আনার নির্দেশ দেন। একই সাথে প্রত্যেক ইউনিয়নে মেডিকেল টিম প্রস্তুতকরণ, পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও খাওয়ার পানি মজুদ রাখা, দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর জন্য ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একই সাথে উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাধ নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সভায় জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জেলায় ১১০ মেট্রিক টন চাউল ও ৪২ হাজার টাকা মজুদ ছিল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় সরকার পর্যাপ্ত বরাদ্দ প্রেরণ করেছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক ও তিনজন এসিডির মাধ্যমে ৭টি উপজেলার দুর্যোগ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিয়েছেন। আমরা সকলে মিলে চেষ্টা করলে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি সর্ব নিbgmস্তরে রাখা সম্ভব।সভায় জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক হুসাইন শওকত, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. বদিউজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এমএম মাহমুদুর রহমান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, তালা উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার, শ্যামনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান সাইদ, আশাশুনি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অসীম চক্রবর্তী, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী, সাবেক সাধারণ সম্পাক এম কামরুজ্জামান, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার রায়সহ প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্বাস্থ্য বিভাগ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস এবং অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
-

ক্ষতি গ্রস্তদের দ্রুত পূর্নবাসন ও টেকসই বেঁড়িবাধ নির্মান করা হবে : ——সাতক্ষীরায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী এনামুল হক শামীম ও ত্রান প্রতিমন্ত্রী ডা. এনাম
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ঃ আমরা ত্রান চাইনা, বেঁড়িবাধ চাই, দূর্গত অঞ্চল পরিদর্শন কালে সাধারন মানুষের কাছ থেকে এমনই দাবী শুনেছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী এ.কে.এম এনামুল হক শামীম।
দূর্গম এলাকা সাতক্ষীরার শ্যানগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন ঘূর্ণিঝড় ফনীর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত জনপদ পরিদর্শন শেষে সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সাথে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বেঁড়িবাধ সংস্কারের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাঁধগুলো প্রশস্ত ও উচু এবং টেকসই করা হবে। মন্ত্রী আগামী তিন দিনের মধ্যে উপকুলের ১২ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত বেঁড়িবাধ সংষ্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, যেভাবে ঘূর্ণিঝড় ফনীর গতিবেগ ছিল সেভাবে আমাদের দেশে আঘাত আনার আগেই তা দূর্বল হয়ে পড়ে। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এ সময় বলেন, সাতক্ষীরা ও খুলনার ঘূর্ণিঝড় ফনীর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করেছি। তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতির বিবরন চোখে পড়েনি। তবে, কালবৈশাখী ঝড়েও আমাদের দেশে কম বেশি ক্ষয় ক্ষতি হয়। মন্ত্রী এ সময়, ফনীর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর নির্মানে টিন ও নগদটাকা প্রদানসহ সাতক্ষীরা জেলায় আরো ১০০টি সাইক্লোন সেন্টার নির্মান ও বেঁিড়বাধ সংস্কারের আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার যোগে দুই মন্ত্রী খুলনা ও সাতক্ষীরার উপকুলীয় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজে এ সব কথা বলেন ।
এরপর তারা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ক্ষতিগ্রস্ত দুই শতাধিক পরিবারের মাঝে ত্রান বিতরন করেন। এ সময় তাদের সাথে ছিলেন, সদর এমপি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম, জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল, জেলা আওয়ালীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ,সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু প্রমুখ। মন্ত্রীদ্বয় এ সময় প্রতিটি পরিবারের মাঝে ৩০ কেজি করে চাউল বিতরন করেন।
এ সময় তারা ঘূর্নিঝড় ফনীর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষ ও বেঁড়িবাধসহ উপকুলীয় এলাকার বিভিন্ন সমস্যার খোঁজ খবর নেন -
মানুষ চায় বাঁধ’ ত্রাণ বিতরনকালে প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী ‘সাতক্ষীরায় ফণীতে ক্ষতি সামান্যতম’
‘
নিজস্ব প্রতিনিধি।‘ মানুষ ত্রাণ চায় না, চায় বাঁধ। তারা চায় দুর্যোগে সাইক্লোন শেল্টার’ একথা উল্লেখ করে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেন ‘সাতক্ষীরার শ্যামনগরের ৫৫৩ কিলোমিটার বাঁধ আরও উঁচু এবং টেকসই করার কাজ শুরু করা হবে। আগামি ৫০ বছর ধরে যাতে বাঁধ নিয়ে এ অঞ্চলের মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে থাকতে না হয় সেই কাজই করা হবে বলে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন বর্ষা মওসুম আসার আগেই কাজ শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পানি সম্পদ উপমন্ত্রী রোববার বিকালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ফণীতে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরনকালে এ কথা বলেন। ‘সাতক্ষীরায় সামান্যতম ক্ষতি করেছে ফণী’ জানিয়ে তিনি আরও বলেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় জেলা প্রশাসন এবং সর্বোপরি সবাই একযোগে কাজ করায় ক্ষয় ক্ষতি মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের কারণে আমরা অনেক আগেই ফণীর গতি প্রকৃতি বুঝতে পারায় আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় বাংলাদেশ নিরাপদ ছিল।
এনামুল হক শামীম আরও বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সদস্যদের সেবা দিচ্ছেন। ‘দেশের ১৬ কোটি মানুষ আমরা খেতে পারলে রোহিঙ্গারাও খেয়ে পরে বাঁচতে পারবে’ প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য উদ্ধৃত করে তিনি বলেন শেখ হাসিনা মায়েদের জন্য বয়স্কভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা , বিধবাভাতা,মুক্তিযোদ্ধাভাতাসহ নানা ভাতা দিয়ে জনগনকে সম্মানিত করেছেন। ‘তিনি বলেছেন মা সম্মানিত হলে জাতি সম্মানিত হবে’ এ কারণে মেয়েরা এখন সেনা পুলিশ বিজিবি বিচার বিভাগ এমনকি পাইলট হিসাবেও চাকুরি করার সুযোগ পাচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন সাতক্ষীরায় আরও কমপক্ষে একশ’ টি সাইক্লোন শেল্টার নির্মান করা হবে। ঘূর্ণিঝড় ফণী সাতক্ষীরায় খুব বেশি ক্ষতি করতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন খুলনা কয়রা শ্যামনগর ও সাতক্ষীরায় দরকার বেড়িবাঁধ নির্মান ও সংস্কার এবং সাইক্লোন শেল্টার। তিনি বলেন ৪০০ কিলোমিটার ব্যাসের ফণী সুপার সাইক্লোনের রুপ নিয়েছিল এবং তা এই শক্তি নিয়ে বাংলাদেশকে আঘাত করলে আমরা সীমাহীন ক্ষতির শিকার হতাম। তিনি বলেন আমাদের সবার প্রচেষ্টার কারণে সেই আঘাত তেমন ক্ষতি করতে পারেনি। তিনি বলেন আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা এনেছে , আওয়ামী লীগ জনগনের দল, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশ ভালো থাকে। তিনি আরও বলেন শেখ হাসিনার জন্য বাংলাদেশ ধন্য।
এর আগে অনুঠানে আরত বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহেমেদ রবি, জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল প্রমূখ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব মো.শফিউল আলম, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয়ের সচিব মো. মহসীন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সেক্রেটারি যথাক্রমে মুনসুর আহমেদ ও এসএম নজরুল ইসলাম পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান , উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবু প্রমূখ। ক্ষতিগ্রস্থ ২০০ পরিবারে ৩০ কেজি করে চাল, একটি লুঙ্গি ও একটি শাড়ি দেওয়া হয়।
এর আগে দুই মন্ত্রী শ্যামনগরে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ পরিদর্শন করে সাতক্ষীরা সার্কিট হ্উাসে দুর্যোগকালে সিপিপি সদস্যদের সাথে মত বিনিময় করেন। -

সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে প্রায় ৬’শ কাঁচা ঘর-বাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত, ২ হাজার হেক্টর ফসলি জমির ক্ষতি, হুমকির মুখে ৫ কিলোমিটার বেঁড়িবাধ এক বৃদ্ধার মৃত্যু, আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ,
নিজস ¦ প্রতিনিধি ঃ ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সাতক্ষীরার উপকুলীয় অঞ্চলের প্রায় ৬’শ কাঁচা ঘর-বাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া জেলায় ২ হাজার হেক্টর ফসলি জমি এবং শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার প্রায় ৫ কিলোমিটার বেঁড়িবাধের আংশিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন।
এদিকে, শ্যামগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের গাইনবাড়ি আশ্রয় কেন্দ্রে আয়না মতি বিবি (৯২) নামের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই গ্রামের মৃত কওছার আলীর স্ত্রী। রাতে তিনি আশ্রয় কেন্দ্রে উঠার পর অসুস্থ অবস্থায় মারা যান।
অপরদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর কুড়িকাউনিয়া ও প্রতাপনগর এবং দেবহাটা উপজেলার খানজিয়া নামক স্থানে ইছামতী নদীর বেঁড়িবাধে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিয়েছে। এদিকে, শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ও পদ্মপুকুরের কয়েকটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে বেঁড়িবাধ ভাঙনের আতংকে রয়েছে উপকুলীয় এলাকাবাসী। তবে, অনেক স্থানে বেঁড়িবাধ সংস্কারের কাজ চলছে বলে জানা গেছে।
উপকুলীয় উপজেলা শ্যামনগরসহ কিছু কিছু এলাকায় বেলা বাড়ার সাথে সাথে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে মানূষ নিজ গৃহে ফিরতে শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। সেখানে আবহাওয়া এখন অনেকটা শান্ত রয়েছে। তবে সেখানকার আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে রাতে সুপেয় পানি ও শুকনা খাবারের অভাব দেখা দেয় বলে অনেকেই অভিযোগ করেন।
জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে উপকুলীয় অঞ্চলের প্রায় ৬’শ কাঁচা ঘর-বাড়ি আংশিক বিদ্ধস্ত হয়েছে। এছাড়া জেলায় ২ হাজার হেক্টর ফসলি জমির এবং শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার ৫ কিলোমিটার বেঁড়িবাধের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরো জানান, দূর্যোগ কবলিত মানুষের মাঝে ইতিমধ্যে ২৭’শ প্যাকেট শুকনা খাবার, ৩১৬ মেট্রিক টন চাল, ১১ লক্ষ ৯২ হাজার ৫০০ টাকা, ১১৭ বান টিন, গৃণ নির্মাণে ৩ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা ও ৪০ পিস শাড়ি বিতরন করা হয়েছে। এছাড়া জেলায় ১৬০ টি আশ্রয় কেন্দ্রে এখনও দুর্যোগ কবলিত মানুষ অবস্থান করছেন।
