Category: দুযোগ

  • কপোতাক্ষ নদের ভেঙ্গে যাওয়া রিং বাঁধ স্বেচ্ছাশ্রমে আটকানো হয়েছে 

    কপোতাক্ষ নদের ভেঙ্গে যাওয়া রিং বাঁধ স্বেচ্ছাশ্রমে আটকানো হয়েছে 

    আশাশুনি প্রতিনিধি:

    আশাশুনি উপজেলার দরগাহপুর ইউনিয়নের সুবিদখালী স্লুইস গেইট সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদের পাড়ে ভেঙে যাওয়া রিং বাঁধ স্বেচ্ছাশ্রমে আটকানো হয়েছে। বুধবার এলাকার মানুষ দীর্ঘ পরিশ্রমে বাঁধ আটকাতে সক্ষম হন।

    স্থানীয় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক এবং শ্রমিক বুধবার রাত ৮টার দিকে বাঁধ আটকানোর কাজ শুরু করেন। রাত দুইটা পর্যন্ত জোয়ার হওয়ার আগ পর্যন্ত একটানা কাজ করে ভাঙ্গনের ৭০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার ভাটা শুরু হওয়ার পর সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত পুনরায় কাজ করা হয় এবং বাঁধের শতভাগ কাজ সম্পন্ন করা হয়। এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে।

    বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আশাশুনি উপজেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা লে. মোঃ রাবীব বাঁধ পরিদর্শন করেন এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করেন। বাঁধ তৈরি হওয়ায় এলাকাবাসী আনন্দ প্রকাশ করেছেন। বাঁধ তৈরিতে রামনগর, দক্ষিণ দরগাহপুর গ্রামের জনগণ অগ্রণী ভূমিকা পালন

    করে।

  • ১৬ বছর পরও আইলার ক্ষত মুছে যায়নি উপকূলের মানুষের জীবন থেকে

    ১৬ বছর পরও আইলার ক্ষত মুছে যায়নি উপকূলের মানুষের জীবন থেকে

    ২০০৯ সালের ২৫ মে—এই দিনটি বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জীবনে এক বিভীষিকাময় স্মৃতি হয়ে আছে। ঘূর্ণিঝড় আইলা নামক প্রলয়ংকরী দুর্যোগ সেদিন আছড়ে পড়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার উপর। ভয়াবহ এই ঘূর্ণিঝড় প্রাণ কেড়ে নেয় শত শত মানুষের, লাখ লাখ মানুষকে করে গৃহহীন, এবং চিরস্থায়ী ক্ষত তৈরি করে প্রকৃতি ও জনজীবনে।

    আইলার আঘাত ও তাণ্ডব

    ঘূর্ণিঝড় আইলার গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১২০ কিলোমিটার। এই দুর্যোগে ৩৩৯ জন মানুষ প্রাণ হারান, আহত ও নিখোঁজ হন আরও হাজারো। প্রায় ২৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হন, যাদের অনেকেই বছরের পর বছর ধরে মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হন। সুন্দরবনের একটি বড় অংশও প্লাবিত হয়, যার প্রভাব পড়ে বনজ সম্পদ ও জীববৈচিত্র্যের উপর।

    বাঁধ ভাঙন ও লবণাক্ত দুর্ভোগ

    ঘূর্ণিঝড়ের মূল ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয় বাঁধ ভেঙে। খুলনার কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ, সাতক্ষীরার আশাশুনি ও শ্যামনগরসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ২৭টির বেশি স্থানে বাঁধ ভেঙে পড়ে। এর ফলে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি প্লাবিত করে কৃষিজমি, ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তা-ঘাট, মৎস্যঘের ও খামার। লবণাক্ততার এই করাল ছায়া দীর্ঘ তিন থেকে পাঁচ বছর ধরে কৃষিতে বিপর্যয় নামিয়ে আনে।

    মানবিক বিপর্যয় ও সুপেয় পানির সংকট

    ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে উপকূলবাসীর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় সুপেয় পানির সংকট। তলিয়ে যাওয়া টিউবওয়েল, লবণাক্ত পুকুর এবং ভেসে যাওয়া রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেমের কারণে পানযোগ্য জলের জন্য তাদের হাঁটতে হয়েছে কিলোমিটার পর কিলোমিটার। অনেক পরিবার আজও টেকসই ও নিরাপদ আশ্রয়ের বাইরে বসবাস করছে।

    আজও দুঃসহ স্মৃতি

    আইলার ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও, ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের মানুষের জীবন পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। এখনও অনেক পরিবার অস্থায়ী কুঁড়েঘরে বসবাস করে, প্রতি বর্ষায় বাঁধ ভেঙে নতুন করে দুর্ভোগে পড়ে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও টেকসই বাঁধ নির্মাণ, পুনর্বাসন ও জীবিকা নির্বাহের সমস্যা পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি।

    পরিবেশ ও সুন্দরবনের ক্ষতি

    সুন্দরবন, বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, এই ঘূর্ণিঝড়ের অন্যতম শিকার। বনাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে গাছপালা ধ্বংস হয়, পশুপাখির আবাসস্থল বিপন্ন হয়। এর ফলে বনজ সম্পদে যেমন ঘাটতি দেখা দেয়, তেমনি জীববৈচিত্র্যেও স্থায়ী প্রভাব পড়ে।

  • দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের বৈষম্য নিরসনে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি

    দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের বৈষম্য নিরসনে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি

    জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের বৈষম্য নিরসন ও
    কাঙ্খিত উন্নয়নে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ আন্দোলন ও নাগরিক সমাজের
    প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, ওই অঞ্চলের সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে স্থানীয় জনগণের
    জীবনযাত্রার মান আরো নাজুক হবে। যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
    আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন তারা। উন্নয়ন সংস্থা ‘লিডার্স’
    এবং ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন সুন্দরবন ও
    উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র। মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন লিডার্সের নির্বাহী
    পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল। আলোচনায় অংশ নেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’র সদস্য সচিব শরীফ
    জামিল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রসুল, শেরে বাংলা কৃষি
    বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী, নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ
    সম্পাদক আশীষ কুমার দে, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ ও কল্যাণ
    সম্পাদক তানভীর আহমেদ, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সংগঠক সাকিলা পারভীন, লিডার্সের
    অ্যাডভোকেসি অফিসার তমালিকা মল্লিক প্রমূখ।
    সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ কবলিত দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের (খুলনা-সাতক্ষীরা-বাগেরহাট) বিদম্যমান সমস্যা
    সমাধানে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। প্রস্তাবনায় মোহন
    কুমার মণ্ডল বলেন, ওই এলাকার সামগ্রিক ও টেকসই উন্নয়নে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে দক্ষিণ-
    পশ্চিম উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে। স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। ওই এলাকার
    প্রতিটি বাড়ীকে দুর্যোগ সহনশীল করে গড়ে তুলতে হবে। সুপেয় পানির স্থায়ী সমাধানে বৃষ্টির পানির
    সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। নদী ও জলাশয়কে অবৈধ দখলমুক্ত করতে হবে। সুন্দরবন সুরক্ষায়
    কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। জলবায়ু তহবিলের অর্থ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওই এলাকায় বরাদ্ধ দিতে হবে
    এবং তা ব্যবহারে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
    আলোচনায় অংশ নিয়ে ধরার সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে অঞ্চল দেশের
    দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল। এ অঞ্চল প্রকৃতিগত ভাবে একটি ঐশ্বর্যপুর্ণ এবং ভু রাজনৈতিক ভাবে
    গুরুত্বপূর্ণ। তাই উপকূল ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় মানুষের অভিজ্ঞতা ও বিজ্ঞানকে কাজে লাগাতে হবে। বৈষম্য
    নিরসনের পাশাপাশি অনাচার বন্ধ করতে হবে। অন্যত্থায় আমাদেরকে ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখী হতে হবে।
    বাংলাদেশের পাশাপাশি সমগ্র দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ভয়াবহ ক্ষতির সন্মূখীন হবে।
    উপকূলের উন্নয়নে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রসুল বলেন,
    এই অঞ্চলটি দীর্ঘ অবহেলার শিকার। জলবায়ু পরিবর্তন, নদীভাঙন, লবণাক্ততার বৃদ্ধি এবং পরিকল্পিত
    অবকাঠামোর অভাবে মারাত্মক সংকটে আছে সেখানকার জনগণ। তাই উপকূলের উন্নয়নে একটি দীর্ঘমেয়াদি
    কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিবে বলে আশা
    প্রকাশ করেন তিনি।
    অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, দুর্যোগের পূর্বাভাস দেওয়ার পর থেকে সাগরে না যাওয়া জেলেদের
    জীবন-জীবিকার বিষয়ে ভাবতে হবে। এনার্জির নামে উপকূলের নদীগুলোকে ধ্বংস করায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত
    ইলিশের উপর নির্ভরশীল জেলেরা। তাছাড়া নদীর ছোট নৌকা দিয়ে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের জাহাজ চলাচলের
    কারণে মাছ ধরাই অনেকাংশে বন্ধ হয়েছে। ফলে ওই নদীর জেলেরা মালিক থেকে সাগরের মাছ ধরা জাহাজের
    শ্রমিকে পরিণত হচ্ছে। এ সকল সংকট নিরসনে সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

  • ঘূর্ণিঝড় ডানা আতঙ্কে উপকূলবাসী

    ঘূর্ণিঝড় ডানা আতঙ্কে উপকূলবাসী

    গত ২৬ মে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে বয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। রেমালসহ পূর্ববর্তী একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি উপকূলীয় এলাকার মানুষ। রেমাল আঘাতের পাঁচ মাস না যেতেই ফের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ডানা। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে উৎকণ্ঠা বাড়ছে উপকূলীয় এলাকার মানুষের মধ্যে।

    তাদের আশঙ্কা ঘূঁর্ণিঝড় ডানা আঘাত হানলে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে আবারও এলাকা প্লাবিত হবে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে নদ-নদীর জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভেঙে যেতে পারে দূর্বল বেড়িবাঁধ। এজন্য উপকূলের বিভিন্ন এলাকার জরজীর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে চিন্তিত সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলা মানুষ।

    সিডর-আইলার মতো পাকৃতিক দূর্যোগে সর্বশান্ত হওয়া এ অঞ্চলের মানুষ বহু কষ্টে ঘুরে দাড়ানোর পর আবারও কোন এক প্রাকৃতিক দূর্যোগে ঝুকিপূর্ণ এসব বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বাড়িঘর সহ বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেত লবনপানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পাড়েছে। এখনই ঝুঁকিপূর্ণ এসব বেড়িবাঁধ সংষ্কার করা না হলে মানুষ আবারো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

    খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলার উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার উপকূলীয় এলাকার কৈখালী, গাবুরা, সোরা, লেবুবুনিয়া, নাপিতখালী, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, রমজাননগরসহ বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

    একইভাবে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাউনিয়া, হরিষখালী, চাকলা, বিছট, দয়ারঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবন্থায় রয়েছে। বেশ কিছুদিন আগে কপোতাক্ষ নদের পানি কুড়িকাউনিয়া ও খোলপেটুয়া নদীর পানি হরিষখালী ও বিছট এলাকায় বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবশে করায় এসব নদ-নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারি জনসাধারণের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ঘূর্ণিঝড় ডানা আঘাত হানার শঙ্কায় ফের চিন্তিত হয়ে পড়েছে শ্যামনগর ও আশাশুনির ভাঙন কবলিত এসব এলাকার মানুষ।

    শ্যামনগর উপজেলার সাবেক প্রকৌশলী আফজাল হোসেন বলেন, উপকূলের মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি টেঁকসই বেড়িবাঁধ। এলাকাবাসীর জোরালো দাবি সত্ত্বেও এখনো টেঁকসই বাঁধ নির্মাণ করা হয়নি। যার কারণে দুর্যোগ আসলেই আতঙ্কে বুক কাঁপে উপকূলবাসীর।

    শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুর এলাকার নাসির উদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান, ইয়াস ও রেমালের পর জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কাজ করেছে। তবে কিছু এলাকায় কাজ না করায় ফের ঘূর্ণিঝড় ডানার কারণে আতঙ্ক বেড়ে গেছে সেসব এলাকার মানুষের।

    গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল আলম বলেন, চারপাশে কপোতাক্ষ নদ ও খোলপেটুয়া নদী দ্বারা বেষ্টিত তার ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের গাবুরা, নাপিতখালী, জেলেখালী, তিন নম্বর পোল্ডারসহ বিভিন্ন এলাকায় উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। সাগরে নিম্নচাপের প্রভাব হলে কপোতাক্ষ নদ ও খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। জোয়ারের সময় বাঁধের কানায় কানায় পানি ওঠে। ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধের অবস্থা খুবই নাজুক ও ঝুঁকিপূর্ণ। তবে এখানে কপোতাক্ষ নদের তীরে বেড়িবাঁধে মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। যেটা শেষ হলে ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হবে। তবে এখনও পর্যন্ত মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় ফের ঘূর্ণিঝড় আতঙ্কে তার ইউনিয়নের মানুষ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে। তিনি দ্রুত গাবুরা ইউনিয়নের ঝুকিপূর্ণ এলাকা গুলো অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে মগা প্রকল্পের আওতায় এনে কাজ শুরু করার দাবি জানান।

    সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দু’টি বিভাগের আওতাধীন জেলায় ৬৮৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে ৯টি পয়েন্টের সাড়ে ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

    সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দীন জানান, তার বিভাগের আওতাধীন ৩৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি পয়েন্টে আড়াই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। আপদকালিন কাজের আওতায় ঝুঁকিপূর্ণ এসব বেড়িবাঁধের মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া গোটা গাবুরা ইউনিয়নে প্রায় ২৯ কিলোমিটার উপকুল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য মেগা প্রকল্পের আওতায় ৪৮টি প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছে। প্রায় অর্ধেক প্যাকেজের কাজ চলমান থাকলেও হরিশখালী ও দৃষ্টিনন্দনের ২৬ নং প্যাকেজের কাজ করার জন্য অদ্যবধি কোন ঠিকাদার পাওয়া যায়নি।

    তিনি আরো বলেন, আপাতত নদী ভাঙ্গনের তেম কোন সমস্যা না থাকলেও অতিরিক্ত জোয়ারের পানি যেন ছাপিয়ে বাঁধের ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য একাধিক টিম কাজ করছে। আর যেসব জায়গাতে বেড়িবাঁধের অবস্থা নাজুক সেখানেও সংস্কারের কাজ চলছে। এছাড়াও আমরা পর্যাপ্ত জিও ব্যাগ, জিও ফিল্টার, জি পলেস্টার মজুদ করে রেখেছি। যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে তৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

    সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মনিরুল ইসলাম জানান, তার বিভাগের আওতাধীন প্রায় সাতক্ষীরা জেলায় ৩০৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি পোল্ডারের ৩টি পয়েন্টে ২ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। সট টেন্ডারের মাধ্যমে জরুরী ভিত্তিতে এসব ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া আগাম প্রস্তুতি হিসাবে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যাক জিও ব্যাগ, ফিল্টার ও জি পলেস্টার মজুদ রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের আগাত বার্তা পাওয়ার পর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের উপর নজর রাখা হয়েছে। আমাদের লোকজন তাদেও স্ব স্ব এলাকায় কাজ করছেন। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় তারা প্রস্তুত রযেছেন।

    প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় সিডর, এরপর ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আইলা, ২০১৩ সালের ১৬ মে মহাসেন, ২০১৫ সালের ৩০ জুলাই কোমেন, ২০১৬ সালের ২১ মে রোয়ানু, ২০১৭ সালের ৩০ মে মোরা, ২০১৯ সালের ৩ মে ফণী, ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর বুলবুল, ২০২০ সালের ২০ মে আম্পান, ২০২১ সালে ২৬ মে ইয়াস, ২০২২ সালের ১২ মে অশনি এবং ২০২৩ সালের ১৪ মে ‘মোখা’ আঘাত হানে।

    সর্বশেষ সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। এটি ২০২৪ সালের ২৬ মে সন্ধ্যা থেকে ২৭ মে সকাল নাগাদ স্থলভাগ অতিক্রম করে। এ সময় বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় খুলনার কয়রা, সাতক্ষীরার আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন। যার ক্ষত শুকায়নি এখনো।

  • বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ৫৯

    বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ৫৯ফাইল ছবি

    বন্যায় এক দিনে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত বন্যায় ১১ জেলায় মোট ৫৯ জন মারা গেছেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

    এতে বলা হয়, বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৫৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪১ জন, নারী ছয়জন ও শিশু ১২ জন‌। এদের মধ্যে কুমিল্লায় ১৪ জন, ফেনীতে ২৩ জন, চট্টগ্রামে ৬ জন, খাগড়াছড়িতে একজন, নোয়াখালীতে ৯ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন, কক্সবাজারে তিনজন ও মৌলভীবাজারে একজন। এছাড়া মৌলভীবাজারে একজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। শুক্রবার মোট মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা ছিল ৫৪ জন।

    চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, সিলেট, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি স্বাভাবিক। মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এছাড়া কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলেও জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।

    বর্তমানে মোট ৬ লাখ ৯৬ হাজার ৯৯৫টি পরিবার পানিবন্দি। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৫৪ লাখ ৫৭ হাজার ৭০২ জন।

    পানিবন্দি বা ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দিতে মোট ৩ হাজার ৯২৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩০৫ জন লোক এবং ৩৬ হাজার ১৩৯টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

    ১১ জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে মোট ৫১৯টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

    বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সরকারি-বেসরকারিসহ সব পর্যায় থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সংগ্রহ করা মোট এক লাখ ৪০ হাজার ৯০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, কাপড় ও পানি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মাধ্যমে বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে।

    সার্বিকভাবে দেশের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে লোকজন নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরছে। বন্যাদুর্গত জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

  • ঘূর্নিঝড় রেমালের প্রভাব: সাতক্ষীরার ১৪৬৮ টি বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত, ৮০৬ হেক্টর জমির ফসল ও মাছের ক্ষতি, প্রায় ২লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত

    ঘূর্ণিঝড়ের প্রবল তান্ডব থেকে এবারও উপকূল রক্ষায় ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে সাতক্ষীরাকে বাঁচালো সুন্দরবন। বড় ধরনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেলেও আতঙ্ক কাটেনি উপকূলীয় জনপদের মানুষের মধ্যে। তবে, রেমালের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধ উপচে উপকুলীয় উপজেলা আশাশুনি ও শ্যামনগরে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে। জেলায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে এক হাজার ৪৬৮ টি কাঁচা ঘরবাড়ি। এর মধ্যে আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ১১৯২টি ও সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ২৭৬টি ঘরবাড়ি। এছাড়া জেলায় ৬০৬ হেক্টর জমির ফসলের ও ২০০ হেক্টর জমির মাছের ক্ষতি হয়েছে।

    ঝড়ে কম বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার প্রায় দুইলাখ ২১ হাজার ১৭৬ জন মানুষ। পানি বন্দী হয়ে পড়েছে জেলে পল্লীর শতাধিক পরিবার। একই সাথে শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ উপজেলাতে অসংখ্য গাছপালার ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালী আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে শওকাত মোড়ল নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
    এদিকে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে নদ-নদীগুলোতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পায়। স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ থেকে ৭ ফুট বেশি উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুটি বিভাগের আওতাধীন ৬৮০ কিলোমিটার বেঁড়িবাধ রয়েছে। যা ষাটের দশকে নির্মিত। এর মধ্যে উপকুলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনির ১০টি পয়েন্টে ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে। যার মধ্যে উক্ত দুই উপজেলায় দুই কিলোমিটার বেড়িবাধ অতিঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব ঝুকিপূর্ণ বেঁড়িবাধের কয়েকটি পয়েন্টের উপচে পড়া পানিতে ভেসে গেছে ২০০ হেক্টর জমির মৎস্য ঘের ও ৬০৬ হেক্টর ফসলি জমি। এছাড়া কয়েক’শ পরিবার পানি বন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তবে,পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ঝুকিপূর্ণ বেঁড়িবাঁধ গুলোতে জিও ব্যাগ ও বালি দিয়ে উপচে পড়া পানির প্রবাহ ঠেকাতে সক্ষম হয়েছেন। তবে ঘুর্ণিঝড় আতঙ্কে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা অনেকেই অভিযোগ করেছেন যে, ২৬ ও ২৭ মে তাদের কাছে সামান্য শুকনো খাবার পর্যন্ত পৌঁছায়নি।
    জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রন কক্ষের তথ্য মতে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে সাতক্ষীরার ৪৩ টি ইউনিয়নে কম বেশি ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে উপকুলীয় উপজেলা আশাশুনি ও শ্যামনগরে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে। আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ১১৯২টি ঘরবাড়ি ও সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ২৭৬টি ঘরবাড়ি। এছাড়া ৬০৬ হেক্টর ফসলি জমির ও ২০০ হেক্টর জমির মাছের ক্ষতি হয়েছে।
    সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব টানা দুই দিন ধরে চলেছে। বিভিন্ন উপজেলায় মানুষের জানমালসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রন কক্ষ থেকে ক্ষয় ক্ষতির একটি সম্ভাব্য তালিকা দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল ক্ষতির তালিকা নিরুপণ করে সহযোগিতা করা হবে।

  • ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবেলায় সাতক্ষীরায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা

    ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’
    মোকাবেলায় সাতক্ষীরায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
    কমিটির সভা করেছে জেলা প্রশাসন।
    বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় জেলা প্রশাসক
    হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট জেলা ও
    উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রস্তুতি সভায়
    যোগ দেন।
    সভা শেষে হুমায়ুন কবির বলেন,‘‘ ঘূর্ণিঝড়
    ‘রেমাল ’ মোকাবেলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি
    নেওয়া শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট সব
    পর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্টেশন ত্যাগ না করতে
    নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ’’
    জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়
    সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল ’
    মোকাবেলায় ১৬৯টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ ৮৮৭টি
    শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবহার উপযোগী করা হচ্ছে ।
    এছাড়া ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা
    হয়েছে জরুরী কাজে অংশগ্রহণের জন্য। জরুরী
    ত্রাণ কার্যে ব্যবহারের জন্য রয়েছে ৫ লাখ ২৫
    হাজার টাকা।

  • দূর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলের উন্নয়নে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি

    দূর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলের উন্নয়নে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি

     

    শ্যামনগর প্রতিনিধি : জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলের উন্নয়নে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে একের পর এক দূর্যোগ আঘাত হানছে। ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকার টেকসই বেড়িবাধ নির্মাণ, পানি সংকট নিরসন ও বনায়নসহ অন্যান্য প্রকল্প নিলেও বাজেটের অভাবে যথাযথ ভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এ কারণে উপকূলের উন্নয়নে আগামী বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া জরুরি।

    আজ শনিবার ‘ঘূর্ণিঝড় আম্ফান থেকে মোখা : কেমন আছে উপকূল?’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তারা এ সব কথা বলেন। প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তিন বর্ষপূর্তি উপলক্ষে উন্নয়ন সংস্থা ওয়াটারকিপারস-বাংলাদেশ, লিডার্স, সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস), ফেইথ ইন একশন, সচেতন সংস্থা এবং সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র-এর সঞ্চালনায় সভায় মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল। আলোচনায় অংশ নেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী, ওয়াল্ড কনসার্নের কান্ট্রি ডিরেক্টর গ্লোরিয়াস গ্রাগরি দাস, এসকেএস ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক জোসেফ হালদার, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, স্কাস চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা, স্বদেশ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, সাতক্ষীরার নাগরিক নেতা আবুল কালাম আজাদ, ফেইথ ইন একশনের জ্যাকব টিটো, কোষ্টাল ভয়েসের কৌশিক দে বাপি, শিশু অধিকার ফোরামের সাফিয়া সামি, সচেতন সংস্থার রিয়াদ হোসেন, উন্নয়নকর্মী মো. আফতাবুজ্জামান, পরিবেশ কর্মী এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব, অধ্যক্ষ জিএম আমিনুল ইসলাম প্রমূখ।

    সংলাপে বক্তারা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকাকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়ে বলেন, করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতার মধ্যে সুপার সাইক্লোন আম্ফান উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। এরপর টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তার বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়নি। বরং এরপর ইয়াস ও মোখার মতো একাধিক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে। ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শতাধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই চলতি ঝড়ো মৌসুমে চরম ঝুঁকির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে ওই অঞ্চলের জনগণ। এই ঝুঁকি মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান তারা।

    সংলাপে উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে পৃথক বোর্ড গঠনের আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, ভৌগলিক অবস্থান, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ, ভঙ্গুর অবকাঠামো, দারিদ্রতা, দীর্ঘমেয়াদী লবনাক্ততা, সংকটাপন্ন কৃষি, প্রভৃতির কারণে উপকূলীয় এলাকার মধ্যে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। ওই এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতেই উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এই সংকট মোকাবেলায় দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলকে দূর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে ঝুঁকিতে থাকা বেড়িবাঁধগুলো দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। উপকূলীয় জনগণের নিরাপদ খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

    উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২০ মে সুপার সাইক্লোন আম্ফান দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানে। এতে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত ও জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এক বছর পার হলেও সেই ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারেনি দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের মানুষ।

  • অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে ‘মোখা’

    অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে ‘মোখা’

    অনলাইন ডেস্ক : দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে।
    আজ সকাল সাড়ে ৮টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
    আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড়টি আজ ভোর ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।
    অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
    চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
    উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে এবং সেইসাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

  • বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’

    বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’

    ডেস্ক রিপোর্ট: দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব ও মিয়ানমারের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে। আগামী ১১ই মে উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রম করবে এবং এর গতি তীব্র হতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ।ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের (আইএমডি)-এর তরফে বলা হয়েছে, আগামীকাল বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্বে ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হতে পারে। পরদিন এর প্রভাবে সেখানে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। আগামী ৮ই মে এটি আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপের রূপ নিয়ে সেখানে অবস্থান করতে পারে।আইএমডি জানায়, এটি আরও শক্তিশালী হয়ে প্রবল সামুদ্রিক ঝড়ের পরিণত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। তখন ঘূর্ণিঝড়টি একটু উত্তর দিকে সরে গিয়ে মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করবে।’ আগামী ৭ই মে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার পর ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি ও গতিপথ সুনির্দিষ্ট করে যাবে।বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া এ বছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মোখা’। কফির জন্য খ্যাত ইয়েমেনের ‘মোখা’ বন্দরের নামে ঘূর্ণিঝড়টির নামকরণ করা হয়েছে।

  • আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোচা’

    আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোচা’

    আগামী ১১ মে-র মধ্যে বঙ্গোপসাগরে এই ঘর্নিঝড় সৃষ্টি হতে পারে এবং ১১ থেকে ১৫ মে-র মধ্যে তা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হলে এর নাম হবে ‘মোচা’। নামটি দিয়েছে ইয়েমেন।
    ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন মডেলের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে, আগামী ১১ মে মধ্যরাতের পর থেকে ১৩ মে’র মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি মিয়ানমারের রাখাইন ও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানতে পারে। বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানলে বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ থাকতে পারে ১৫০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার। ঝড়টি ভারতের ওড়িশা রাজ্যের উপকূলে আঘাত হানার আশঙ্কাও রয়েছে।
    গত বছরের মে মাসে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় অশনি। প্রাথমিকভাবে এটি অন্ধ্র-ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হলেও পরে গতিপথ পরিবর্তন করে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল অতিক্রম করে এই ঘূর্ণিঝড়।
    চলতি মাসে এই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি ছাড়াও এ মাসে ফের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়াতে পারে। এই মাসে রংপুর ও সিলেট অঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী আকস্মিক বন্যারও সৃষ্টি হতে পারে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
    বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দিতে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি এ পূর্বাভাস দিয়েছে। মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকার ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রে ও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কমিটির নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অধিদপ্তরের পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।
    বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান জানান, এ মাসে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। মে মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। বঙ্গোপসাগরে নতুন করে কোনো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে এর নাম হবে ‘মোচা’।
    তিনি বলেন, ‘পূর্বাভাস মডেলগুলোর তথ্য অনুযায়ী আগামী ৯ মে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। সেটি ১১ মে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তবে এটির গতিপথ কী হবে তা এখনই সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এটি চট্টগ্রাম ও মিয়ানমারের উপকূল দিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে।’
    এ মাসে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে সামান্য বেশি থাকতে পারে জানিয়ে আজিজুর রহমান বলেন, এ মাসে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে (খুলনা) একটি তীব্র তাপপ্রবাহ (তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) এবং দেশের অন্যত্র ১ থেকে ২টি মৃদু (তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি (তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরণের তাপ প্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
    গত মাসে (এপ্রিল) সারাদেশে তাপপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়েছিল। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়ে তাপপ্রবাহ তীব্র আকার ধারণ করে। এতে জনজীবন চরম দুর্বিসহ হয়ে ওঠে।
    আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আরও জানান, এ মাসে দেশে ১ থেকে ৩ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি বা তীব্র কালবৈশাখী ঝড় এবং ৩ থেকে ৫ দিন বজ্র ও শিলা বৃষ্টিসহ হালকা বা মাঝারি ধরনের কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে।
    মে মাসে দেশের প্রধান নদ-নদীগুলোতে স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে। তবে উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের প্রেক্ষিতে দেশের উত্তরাঞ্চল (রংপুর বিভাগ) ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে (সিলেট অঞ্চল) স্বল্প মেয়াদী আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলেও জানান বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান।
    কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল (পলাশ) বলেন, আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে ৮ থেকে ৯ মের মধ্যে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে আন্দামান ও নিকোবার দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়ে ১০ মের মধ্যে গভীর নিম্নচাপ ও ১১ মে পুর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করছে।
    ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ নিয়ে আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস তুলে ধরে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি ১৪ মে মধ্যরাতের পরে থেকে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে সরাসরি স্থল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা নির্দেশ করছে। আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল গ্লোবাল ফোরকাস্ট সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে, স্থলভাগে আঘাত করার সময় ঘূর্ণিঝড়টির খুবই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসাবে স্থল ভাগে আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে।

  • ৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া, অতি ভারী বৃষ্টি! ছুটির মন্দারমণি-দিঘায় কাঁটা নিম্নচাপ!

    ৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া, অতি ভারী বৃষ্টি! ছুটির মন্দারমণি-দিঘায় কাঁটা নিম্নচাপ!

    অনলাইন ডেস্ক: রবিবার অত্যন্ত ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে পশ্চিম এবং পূর্ব মেদিনীপুরে। দিঘা-মন্দারমণির সৈকতেও জারি হয়েছে সতর্কতা।শনি-রবি-স্বাধীনতা দিবস— মোটামুটি এই হিসেব কষে সপ্তাহান্তে দিঘা-মন্দারমণি পাড়ি দিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু বাংলার উপকূলে গত ২৪ ঘণ্টায় পাকাপাকি জায়গা নেওয়া নিম্নচাপে সেই ছুটির তাল কাটল। হাওয়া অফিস জানিয়ে দিয়েছে, রবিবার রাত পর্যন্ত অতি ভারী বৃষ্টি চলবে উপকূলবর্তী দিঘা-মন্দারমণি-সহ গোটা পূর্ব মেদিনীপুরে। তার পরের দিন, অর্থাৎ ছুটির শেষ পর্বেও দুর্যোগ মুক্ত হবে না উপকূল। সোমবার ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে উপকূলবর্তী এলাকায়। সঙ্গে চলতে পারে বৃষ্টিও। পর্যটকদের বিপন্মুক্ত রাখতে তাই ছুটির সৈকতে রাশ টানার কথা জানিয়েছে হাওয়া অফিস। ফলে উপকূলে ছুটি কাটানোর বাসনা ঘরবন্দি হয়েই কেটে যাবে ভ্রমণার্থীদের।

    রবিবার ছুটির দিনের সকাল থেকেই কালো মেঘে ঢেকেছিল আকাশ। তার পর দক্ষিণবঙ্গ এবং উপকূল এলাকাগুলিতে দফায় দফায় চলেছে বৃষ্টিও। হাওয়া অফিস জানিয়ে দিয়েছে, সোমবার, স্বাধীনতা দিবসের দিনেও এই বৃষ্টি থেকে স্বস্তির কোনও আশা নেই। কারণ বাংলার উপকূলে গত ২৪ ঘণ্টায় যে নিম্নচাপ ঘনিয়েছে, তা অবস্থান করছে দিঘা থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। যার রবিবার সন্ধের দিকেই দিঘার ধার ঘেঁষে পশ্চিমবঙ্গের স্থলভাগে প্রবেশ করার কথা।

    তবে সৈকত সতর্কতা শুধু দিঘা-মন্দারমণিতেই নয়, সাগরেও জারি করা হয়েছে। নিম্নচাপ সংক্রান্ত সতর্কতা বার্তায় হাওয়া অফিস জানিয়েছে, রবি এবং সোমবার দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলাতেই মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া দু’দিনই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলাতে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।

  • মণিপুরে ভূমিধসে ৭ মৃত্যু, নিখোঁজ ৪৫

    মণিপুরে ভূমিধসে ৭ মৃত্যু, নিখোঁজ ৪৫

    ভারতের মণিপুরে প্রবল বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসের কারণে অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৩ জন এবং নিখোঁজ এখনও ৪৫ জনের মতো। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মণিপুরের নোনি জেলার মহকুমা কর্মকর্তা সলোমন.এল ফিমেট।বুধবার দিবাগত মধ্যরাতের দিকে নোনি জেলার মাখুয়াম এলাকায় টুপুল ইয়ার্ড রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন ক্যাম্পের কাছে এই ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এতে নিহতদের পরিচয় এখনও জানা না গেলেও নিহতরা স্থানীয় নির্মাণকর্মী ও সেনা সদস্য বলে অনুমান করা হচ্ছে।  গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণের কারণেই এই ভূমিধসের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে ইম্পফলের কাছে নতুন রেল প্রকল্প জিরিবামের দিকে যেতে টুপুল রেলস্টেশন ভবনটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেল লাইন এবং নির্মাণ কাজে যুক্ত শ্রমিকদের একটি ক্যাম্পও। ভূমিধসের কারণে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে স্থানীয় ইজেই নদীর গতিপথ, এর ফলে সেখানে একটি বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এবং তা থেকে আশপাশের নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
    দুর্ঘটনার পরই মণিপুর রাজ্য সরকার উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে ভারতের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ), রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ), রাজ্য সরকার ও রেলের কর্মীরা। ধসের নিচে চাপা পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যদিও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকাজ। 

  • জলবায়ু পরিবর্তনে দুর্যোগতাড়িত মানুষের সংকট : নগরজীবনেও দারিদ্র্যের থাবা

    জলবায়ু পরিবর্তনে দুর্যোগতাড়িত মানুষের সংকট : নগরজীবনেও দারিদ্র্যের থাবা


    নিজস্ব সংবাদ দাতা: জলাবায়ু পরিবর্তনের মুখে বারবার দুর্যোগতাড়িত হয়ে শ্যামনগরের পদ্মপুকুরের আলিমুদ্দিন ও তার পরিবার এখন বাস্তুহারা হয়ে বস্তিবাসীর খাতায় নাম লিখিয়েছে। পৈত্রিক এক চিলতে জমি আর ছোট্ট একটি ঘর নিয়ে পাঁচটি মুখের খাবার যোগাতে আলিমুদ্দিনকে সুন্দরবনের গহীন জঙ্গলে মাছ কাঁকড়া ধরতে যেতে হতো। কিন্তু ভয়াবহ আইলা তার বেঁচে থাকার সব স্বপ্নকে ধূলিস্যাত করে নিয়েছে সব সম্পদ। শুধু আলিমুদ্দিন নয়, এমন দুর্যোগের মুখে প্রাণ ও সম্পদ হারিয়ে উদ্বাস্তু হওয়া গাবুরার দরিদ্র মানুষগুলো তাদের কর্মসংস্থান হারিয়ে বেঁচে থাকার জন্য তল্পিতল্পা নিয়ে সাতক্ষীরা ও খুলনা শহরে বস্তিতে আস্তানা গেড়েছে। এখন তাদের সামনে কোন স্বপ্ন নেই। শুধু দিন এনে দিন খাওয়ার প্রতিযোগিতা চলছে তাদের। এই চিত্র সাতক্ষীরার বস্তিবাসীদের। যাদের সামান্য হলেও সম্পদ ছিল, কাজ ছিল। এখন তারা স্বর্বস্ব হারা। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দেশের দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলীয় এলাকার জীবন জীবিকা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। বৈশি^ক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে দক্ষিণের বড় অংশ বারবার জলোচ্ছ্বাসের মুখে পড়ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে উপকূলীয় এই অঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাবার আশংকা মাথায় নিয়ে এ অঞ্চলের মানুষ নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে এরই মধ্যে হয় দেশান্তরী হয়েছেন না হয় দেশের অন্য কোনো এলাকায় যেয়ে জীবন রক্ষার সংগ্রামে নেমেছেন। একইভাবে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ ২০০৭ এর ভয়াল সিডরের দাপটে সাগরগর্ভে তলিয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তন, ঘন ঘন দুর্যোগ ঝুঁকি, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস ও দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার দেশের দক্ষিণ পশ্চিমের ধনী গরিব সব মানুষ। তবে ধনী মানুষ অর্থের জোরে বিকল্প খুঁজে নিতে পারলেও দরিদ্র শ্রেণির মানুষ পড়ছে মহাসংকটে। এই সংকট উপকূল থেকে গ্রাম, গ্রাম থেকে নগরে সম্প্রসারিত হচ্ছে। এদের বড় অংশই হয়ে উঠছে বস্তির মানুষ। তারা হারাচ্ছেন তাদের পেশা। নতুন পেশা খুঁজে পাওয়াও তাদের জন্য দুষ্কর হয়ে পড়ছে। লেখাপড়া জানা শিক্ষিত ছেলেরাও এখন শহরে রিকশার হ্যান্ডেল ধরেছে কিংবা দৈনিক ভাড়ার চুক্তিতে ইজিবাইক চালিয়ে জীবনধারণের চেষ্টা করছে।
    নগর জনপদের বস্তিবাসী মানুষ সবচেয়ে বড় সংকটে পড়ে যে কোনো দুর্যোগ আঘাত হানলে। এমন আঘাত ১৯৮৮ থেকে ২০২১ পর্যন্ত কমপক্ষে ১৫টি। গত ১২ জুন ২০২২ তারিখে দৈনিক যুগান্তরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জরিপের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার কয়েকটি এলাকার বস্তিবাসী ৭২ শতাংশ তরুণী ও কিশোরীরা তাদের গোসল ও বাথরুম নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। বিশেষ করে পিরিয়ডকালীন তারা আরও সংকটে পড়ে। সব বয়সের নারী পুরুষের মুখোমুখি হয়ে তাদের সংকট আরও বেড়ে যায়। এজন্য প্রকৃতির কাজ সারতে তাদের রাত পর্যন্ত অনেককেই অপেক্ষা করতে হয়। এসব তরুণী ও কিশোরীরা অভিযোগ করে বলেন, খোলামেলা এবং আচ্ছাদন না থাকায় পাশ^বর্তী সুউচ্চ ভবনগুলি থেকে ছেলেরা মোবাইলে তাদের ভিডিও ধারণ করে এবং অনেক সময় ইন্টারনেটে ছেড়ে দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে। এমন বিব্রতকর অবস্থা থেকে তারা কোনভাবে মুক্তি পাচ্ছেন না। সাতক্ষীরা জেলার হালনাগাদ জনগোষ্ঠী ২৫ লাখ পেরিয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা পৌর এলাকার জনগোষ্ঠী দুই লাখ ছাড়িয়ে গেছে। ৩১.১০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই পৌরসভায় বস্তি আছে ৪৭ টি। এর মধ্যে ১৫টি সরকারি ও কিছু ক্লাস্টার বস্তি রয়েছে। বিবিএস এর ২০১৪ সালের পরিসংখ্যান বলছে, সাতক্ষীরা পৌর এলাকায় ৩৩ হাজার খানা রয়েছে। এর মধ্যে বস্তিবাসীর সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। বস্তিবাসীদের খানার সংখ্যা কমবেশী ৮ হাজার। তারা সবাই বিভিন্ন সময় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নিজ নিজ এলাকা থেকে তাড়িত হয়ে এখানে সরকারি অথবা ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে বসতি গড়েছেন।

  • আশাশুনি উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে ডিআরআরও কর্মকর্তার মতবিনিময়

    আশাশুনি উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে ডিআরআরও কর্মকর্তার মতবিনিময়

    বি এম আলাউদ্দীন, আশাশুনি প্রতিনিধি:

    আশাশুনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মোস্তাকিম এর সাথে সাতক্ষীরা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল বাসেত মতবিনিময় করেছেন। বুধবার দুপুরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় দূর্যোগকালীন সময়ে উপজেলার উপকারভোগীদের নিকট সরকারের সুফল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আলোচনা করা হয়। আলোচনাকালে উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাকিম বলেন, আশাশুনি উপজেলা একটি দুর্যোগ প্রবণ এলাকা। নদী ভাঙ্গন, জলোচ্ছ্বাস এবং যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে আশাশুনি উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে। এই দুর্যোগকালীন সময়ে সরকারের গৃহীত কার্যক্রম আরো বেশি করে যাহাতে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ পেতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ বাচ্চুসহ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

  • আশাশুনির কেয়ারগাতি বেড়ীবাঁধের জরাজীর্ণ অবস্থা


    বিএম আলাউদ্দীন: আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের কেয়ারগাতিতে পাউবো’র বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে ও জরাজীর্ণ হয়ে এলাকাকে বারবার প্লাবিত করা ও ঝুঁকিতে রাখা এলাকাবাসীকে দুশ্চিন্তামুক্ত করার কোন উদ্যোগ হয়নি। ফলে বাঁধের কোন কাজ না হওয়ায় চরম ভাবে হতাশ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। জানাগেছে, কেয়ারগাতী খেয়াঘাট সংলগ্ন ওয়াপদা বাঁধ ভাঙ্গন প্রক্রিয়া চলছে বছরের পর বছর ধরে। বছরে বিভিন্ন সময় বাঁধ উপচে ও ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হয়ে থাকে। এলাকার মানুষ নির্ঘুম দিন-রাত যাপন ও মহা বিপদ মাথায় নিয়ে বসবাস করে আসছে। আম্পান ও সবশেষ ইয়াশ এর তান্ডব ও প্রভাবে বাঁধটি উপচে ও ভেঙ্গে লোকালয় প্লাবিত হয়। এলাকার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বাঁধ সাময়িক ভাবে রক্ষা করলেও তা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বাঁধ এতটা ছোট ও জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়েছে যে, যে কোন তিথিতে বাঁধ উপচে বা ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হতে পারে। এলাকাবাসীর পক্ষ হতে বারবার উর্দ্ধতন কর্তপক্ষের কাছে নিবেদন করলেও কোন ফল হয়নি। পত্রপত্রিকায় অসংখ্যবার রিপোর্ট হলেও অজ্ঞাত কারনে স্থায়ীভাবে রক্ষার কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। বিষয়টি জরুরী ভাবে বিবেচনায় নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

  • উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে ্উপকুলের মানুষের নির্ঘুম রাত

    উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে ্উপকুলের মানুষের নির্ঘুম রাত

    মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ছাপিয়ে আবারো বিস্তীর্ণ প্রতাপনগর অঞ্চল প্লাবিত হতে হয়েছে। জোয়ারের পানি বেড়িবাঁধ ছাপিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। বেড়িবাঁধ রক্ষায় স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেছে উপকূলীয় এলাকার মানুষেরা। ঘুর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলবাসী। উপকূলীর মানুষেরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে নির্ঘুম রাত্রি যাপন করছে।

  • ১২ ঘণ্টা তাণ্ডব চালাতে পারে  ইয়াস

    ১২ ঘণ্টা তাণ্ডব চালাতে পারে ইয়াস

    মশাল ডেস্ক:

    ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ তাণ্ডব চালাতে পারে টানা ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা। এ সময় বাতাসের গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৮০-২০০ কিলোমিটার। রোববার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস।

    তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়টি মূলত ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা ও বিহার উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে। দেশের খুলনা উপকূলেও আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে ঝড়টির।

    বুধবার (২৬ মে) বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানা শুরু করবে উল্লেখ করে এ কে এম রুহুল কুদ্দুস জানান, সুন্দরবনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।

    তিনি আরো জানান, আঘাতের কেন্দ্রস্থলে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতি হতে পারে ‘ইয়াস’র। তবে টানা ঝড় বয়ে যাওয়ার সময় গতি গড়ে ১৮০ কিলোমিটার থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

    আবহাওয়া অফিসের সবশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি রোববার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরো ঘণীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপ এবং পরে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

    আবহওয়া অধিদফতর থেকে বলা হয়েছে, নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কি.মি. যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।