করোনাভাইরাসরে প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে অসহায় ও দুস্থ মানুষরে জীবকিা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদরে সাহার্য্যথে এগয়িে এসছেে বাংলাদশে কোস্টগার্ড। বাংলাদশেকোস্টর্গাড এর মহাপরচিাল করয়িার এডমরিাল এম আশরাফুল হক, এনইউপ,ি এনসসি,ি এএফডব্লউিস,ি পএিসসি গত ০৫ এপ্রলি ২০২০ প্রধানমন্ত্রীর র্কাযালয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচবি ড. আহমদ কায়কাউস এরনকিট করোনা ভাইরাস প্রতরিোধ র্কাযক্রমরে সহায়তায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণও কল্যাণ তহবলিে বাংলাদশে কোস্টর্গাডরে র্সবস্তররে সদস্যদরে একদনিরে মূলবতেনরে সমপরমিান র্অথরে চকে হস্তান্তর করনে। উক্ত অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শখে হাসনিা গনভবন হতে ভডিওি কনফারন্সে এর মাধ্যমে অংশ গ্রহণ করনে। এসময় মহাপরচিালক করোনা ভাইরাস এর বস্তিার রোধে বাংলাদশে কোস্টর্গাড কতৃক গৃহীত পদক্ষপে সমুহ অবহতি করনে এবং ভবষ্যিতে সরকাররে নর্দিশেনা অনুযায়ী যকেোন পরস্থিতিি মোকাবলিা রজন্য বাহনিীর প্রতটিি সদস্য প্রস্তুত রয়ছেে বলে জানান। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী করোনা ভাইরাসরে পরস্থিতিি মোকাবলিায় জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণও কল্যাণ তহবলিে একদনিরে বতেনরে সমপরমিান র্অথপ্রদানরে জন্য বাংলাদশে কোস্টর্গাডরে সকল সদস্যদরেকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদশে কোস্টর্গাড র্কতৃক প্রায় ২৫০০ পরবািরকে দুস্থ, র্কমহীন মানুষরে মাঝে খাদ্য সামগ্রী বতিরণ করা হয় এবং উপকূলীয় অঞ্চলরে মানুষরে মাঝে কোস্টর্গাডরে এই সাহায্য চলমান থাকব।
Category: জাতীয়
-
পিছিয়ে যাচ্ছে প্রাথমিকের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা
করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা স্থগিত হতে যাচ্ছে। আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিলের মধ্যে প্রাথমিকের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এ পরীক্ষা পেছানো হবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) থেকে জানা গেছে।
ডিপিইয়ের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ মঙ্গলবার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিকের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা স্থগিত করা হতে পারে। যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাচ্ছে না সেখানে পরীক্ষা নেয়ার কথা চিন্তা করা যায় না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে সাময়িক পরীক্ষা পেছানো হতে পারে, এতে শিক্ষার্থীদের তেমন ক্ষতি হবে না বলেও জানান তিনি।
মহাপরিচালক বলেন, বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমরা টিভি ও অনলাইন পোর্টালে শ্রেণি কার্যক্রম সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করেছি। এখন শিক্ষকদের একসঙ্গে করার সুযোগ না থাকায় বিষয়ভিত্তিক গ্রুপ করে দিয়ে তাদের নির্দেশনা দিয়েছি। টিভি বা অনলাইন পোর্টালে ক্লাস দেখে শিক্ষার্থীদের বাড়ির কাজ করতে হবে। স্কুল খোলার পর তা সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কাছে জমা দিতে হবে। বাড়ির কাজের ওপর প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়নের অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে।
এদিকে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত স্কুল-কলেজ-মাদরাসা ও ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ভাইরাসের সংক্রমণ না কমলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে। আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিলের মধ্যে প্রাথমিকের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও তা পেছানো হচ্ছে।
দীর্ঘ বন্ধের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যও ক্লাস লেকচার ভিডিও রেকডিং করে সংসদ টিভিতে প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া শ্রেণি কার্যক্রমের এসব ভিডিও সারাবছর শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখতে আলাদা অনলাইন পোর্টাল তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। ‘আমার ঘরে আমার ক্লাস’ শিরোনামে ২৯ মার্চ থেকে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ক্লাস সংসদ টিভিতে সম্প্রচার শুরু হয়েছে।
বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সময় ভিডিও কনফারেন্স সিস্টেম যেমন, গুগল ক্লাসরুম, জুম, হ্যাংআউট, স্কাইপের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে লাইভ ক্লাসরুমের মাধ্যমে পাঠদান পরিচালনা করতে প্রাথমিকের শিক্ষা কর্মকর্তাদের সম্প্রতি পাঠানো এক চিঠিতে নির্দেশনা দিয়েছে ডিপিই। সুত্র : শিক্ষা বার্তা
-

করোনার জন্য প্রস্তুতি
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
বেশ কিছুদিন ধরেই আমরা করোনাভাইরাসের কথা বলে আসছিলাম। আমি বিষয়টাকে কতটুকু গুরুত্ব দেব বুঝতে পারছিলাম না। সাংবাদিকরা এক-দুবার আমাকে করোনাভাইরাস নিয়ে কী করা উচিত, সেটা জিজ্ঞেস করেছেন, আমি যথেষ্ট বিনয় সহকারে বলেছি, আমি এ বিষয়ের বিশেষজ্ঞ নই, কিছু একটা বলে ফেলা উচিত হবে না। জনস্বাস্থ্য নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা কী বলেন সেটাই আমাদের শোনা উচিত।
এ রকম সময়ে আমার কাছে একটা গ্রাফ এসে পৌঁছেছে। এটা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যার একটা প্লট। বিভিন্ন দেশের তথ্য দেওয়া আছে এবং আমি অবাক হয়ে দেখলাম, সব দেশের রোগী বেড়ে যাওয়ার হার হুবহু এক। শুধু তা-ই নয়, ইতালির সঙ্গে তুলনা করে দেখানো হয়েছে, পৃথিবীর কোন দেশ ইতালি থেকে কত দিন পিছিয়ে আছে এবং সেই দেশগুলোর অবস্থা কত দিনের ভেতর ইতালির মতো ভয়াবহ হয়ে যাবে। আমি একটু বিস্ময় নিয়ে আবিষ্কার করেছি, সত্যি সত্যি তা-ই ঘটতে শুরু করেছে। একটুখানি চিন্তা করার পর বুঝতে পেরেছি, আসলেই তো এটাই ঘটার কথা। করোনাভাইরাসটি অসম্ভব ছোঁয়াচে এবং তথ্য অনুযায়ী আনুমানিক গড়ে ছয় দিনের ভেতর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে। এভাবে বেড়ে যাওয়ার হারটার নাম ‘এক্সপোনেনশিয়াল’—বাংলায় ‘জ্যামিতিক হার’। বিজ্ঞান করতে গিয়ে এই গাণিতিক প্রক্রিয়াটি আমাকে অসংখ্যবার ব্যবহার করতে হয়েছে; কিন্তু মজার ব্যাপার, সব সময়ই এটা ব্যবহার করা হয়েছে কমে আসার জন্য। যখনই গাণিতিক সমাধানে এভাবে বেড়ে যাওয়ার সমাধান এসেছে, আমরা যুক্তি দিয়েছি, এটি বাস্তব সমাধান নয় এবং সেই সমাধানটিকে আক্ষরিক অর্থে ছুড়ে ফেলে দিয়েছি। এই প্রথমবার আমি বাস্তবজীবনে একটা উদাহরণ দেখতে পাচ্ছি, যেটা ছুড়ে ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না এবং আমাদের মেনে নিতে হচ্ছে।
এক্সপোনেনশিয়াল কিংবা জ্যামিতিক হারে বেড়ে যাওয়া একটি খুবই বিপজ্জনক বিষয়। প্রথমে যখন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হয়, তখন আলাদা বা বিচ্ছিন্নভাবে এক-দুটি রোগী পাওয়া যায়। তাদের যদি ঠিকভাবে কোয়ারেন্টিন করে সারিয়ে তুলে নেওয়া যায়, তাহলে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে। একবার যদি কোনোভাবে এটা এক্সপোনেনশিয়াল বা জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে, তখন সেটা থামানোর কোনো উপায় নেই। শুধু চীন সেটা করতে পেরেছে, ইউরোপের কোনো দেশ পারেনি। সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, হংকং—এই দেশগুলো খুবই বুদ্ধিমানের মতো সময়মতো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে করোনাভাইরাসকে জ্যামিতিক হারে বাড়তে দেয়নি। সারা পৃথিবীতে এখন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন দায়িত্বহীন দেশ হিসেবে পরিচিত হয়েছে। আমরা এখন আমাদের চোখের সামনে এ দুটি দেশকে সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত না নেওয়ার ফল ভোগ করতে দেখব।
করোনাভাইরাস এখন আর একটি নির্দিষ্ট দেশের সমস্যা নয়। এখন এটি সারা পৃথিবীর সমস্যা। সব দেশের করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই তথ্যভাণ্ডারে জমা হচ্ছে এবং সবাই সেটা দেখতে পাচ্ছে। তবে একজন সত্যি সত্যি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে কি না সেটা জানতে হলে একটা জটিল ও খরচসাপেক্ষ পরীক্ষা করতে হয়। (সত্য-মিথ্যা জানি না, খবরের কাগজে দেখেছি, আমাদের দেশে এ পরীক্ষা করার উপযোগী কীট নাকি রয়েছে মাত্র হাজারখানেক) কাজেই এই দেশে এখন খুব ব্যাপকভাবে পরীক্ষা করা সম্ভব বলে মনে হয় না। তাই এ দেশের জন্য আমরা যে সংখ্যাটি দেখছি, তার বাইরেও করোনাভাইরাস আক্রান্ত কেউ আছে কি না সেটা নিয়েও একটু দুর্ভাবনা থেকে যায়। এ দুর্ভাবনাটা বিশেষ করে শুরু হয়েছে, যখন আমরা দেখতে পাচ্ছি করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকা রোগী হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাচ্ছে কিংবা বিদেশ থেকে আসা যাত্রীরা বিক্ষোভ করে কোয়ারেন্টিন কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। এই অবিবেচক মানুষ এবং তাদের আত্মীয়-স্বজনরা দেশের কোনো একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিস্ফোরকের মতো করোনাভাইরাসের রোগী জমা করে যাচ্ছেন কি না সেটি কে বলবে? এ ধরনের ঘটনা ঘটেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন স্টেটে। যখন সবাই ধরে নিয়েছে, সেখানে মাত্র অল্প কয়েকজন করোনা আক্রান্ত রোগী, তখন আসলে সেখানে কয়েক হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বসে আছে। হঠাৎ করে অনেক মানুষ মারা যেতে শুরু করেছে।
আমি এ বিষয়ের বিশেষজ্ঞ নই, তবে গণিত, বিজ্ঞান বা পরিসংখ্যান দিয়ে দেখানো সংখ্যা বিশ্লেষণ করতে পারি এবং সেটাই করার চেষ্টা করছি। গত কয়েক দিন এ বিষয়টি নিয়ে লেখাপড়া করে মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছি যে ‘আমাদের কিছুই হবে না, সব কিছু নিয়ন্ত্রণের মাঝে আছে এবং সব কিছু নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে’—এটা ধরে নেওয়া মোটেও ঠিক নয়। আমাদের দেশ গরম এবং এখানে জলীয়বাষ্প বেশি, তাই এই দেশে করোনাভাইরাস টিকতে পারে না, সেটা ভেবে নিশ্চিন্তে থাকাও মনে হয় ঠিক হবে না। কারণ মালয়েশিয়ার তাপমাত্রা ও জলীয়বাষ্পের পরিমাণ আমাদের দেশের মতোই; কিন্তু সেখানেও করোনাভাইরাস ছড়িয়ে যাচ্ছে। কাজেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে, সময়মতো সাহসী ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে-মেয়েরা হাল ছেড়ে দিয়ে হতাশ হয়ে বসে নেই, তারা সাহায্যের হাত এগিয়ে দিয়েছে, নিজেরা ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজার’ তৈরি করছে, সেটা চমৎকার একটা ব্যাপার। একজন মানুষ বিদেশ থেকে এসে কোয়ারেন্টিনে সময় না কাটিয়ে বাড়িতে চলে এসেছে, সে জন্য প্রামের মানুষ তার বাড়ি ঘেরাও করে ফেলেছে, সেটাও একটা ভালো লক্ষণ। বোঝা যাচ্ছে, মানুষ এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিগুলোও সময়মতো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের অসংখ্য অনুষ্ঠান কোনো রকম ভাবাবেগ ছাড়াই মুহূর্তের মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে—সেটি অনেক বড় দায়িত্বশীল একটি ঘটনা। এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সব রোগী বিদেশ থেকে আসছে, তাই সব ফ্লাইটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু এই পৃথিবীতেই অনেক দেশ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে, তাই চাইলে আমরাও নিশ্চয়ই পারব। একটা ঘূর্ণিঝড়ে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ তছনছ হয়ে যায়; কিন্তু আমরা ঠিকই সেটা সামলে উঠে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে যাই। তবে ‘আমরা কিছুই করব না, নিজে নিজেই সব কিছু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে’—সেটা কেউ যেন বিশ্বাস না করে। সামনের কয়েকটি সপ্তাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়, এই সময়ে জাতি হিসেবে আমরা কতটুকু দায়িত্বশীল তার একটা প্রমাণ আমরা পেয়ে যাব।
সারা পৃথিবী যখন একটা বিপদের সম্মুখীন, তখন আমরা নিরাপদে থাকব—সেটা কেউ আশা করে না। তবে এ ভাইরাসে শতকরা ৮০ জনের উপসর্গ হয় খুবই সামান্য। বিশেষ করে অল্প বয়সী শিশুদের বিশেষ কোনো সমস্যা হয়েছে বলে শোনা যায়নি। কাজেই আতঙ্কের কোনো বিষয় নেই; তবে অবশ্যই সতর্কতার ও প্রস্তুতির বিষয় আছে। প্রস্তুতিটির কথা সবাই জানে, সেটি হচ্ছে—সামাজিকভাবে নিজেকে পুরোপুরি আলাদা করে ফেলা।
আমরা জানি, ইউরোপের দেশগুলোতে করোনাভাইরাস ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার একজন গবেষকের লেখার একটি অংশ এ রকম—
‘করোনাভাইরাস তোমার দিকে এগিয়ে আসছে। এটি ছুটে আসছে এক্সপোনেনশিয়াল গতিতে। প্রথমে ধীরে ধীরে, তারপর হঠাৎ করে। এটি আর মাত্র কয়েক দিনের ব্যাপার কিংবা বড়জোর কয়েক সপ্তাহের। যখন এটি আসবে, তখন তোমার হাসপাতাল, ক্লিনিক থমকে যাবে। তোমার দেশের মানুষের তখন চিকিৎসা হবে হাসপাতালের মেঝেতে, করিডরে। অতি পরিশ্রমে ক্লান্ত এবং বিধ্বস্ত হয়ে যাবে ডাক্তার-নার্স। অনেকে মারা যাবে। তাঁদের তখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য অক্সিজেন দেবে আর কাকে মারা যেতে দেবে। এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের একটি মাত্র উপায়, সেটা হচ্ছে আজকেই নিজেদের সামাজিকভাবে আলাদা করে ফেলা। আগামীকাল থেকে নয়। আজকেই।
তার অর্থ হচ্ছে, যত বেশি মানুষকে সম্ভব ঘরের ভেতর রাখা। এখন থেকেই!’
আমরা অবশ্যই চাই, আমাদের অবস্থা যেন ইউরোপের মতো না হয়। আমরা চাই সবাই দায়িত্বশীল হয়ে যেন এই বিপর্যয় ঠিকভাবে কাটিয়ে উঠতে পারি।
লেখক : কথাসাহিত্যিক। অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
সুত্র: দেশ-বিদেশ
-

বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে ঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি। এর পরই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন তাঁরা।
এর আগে আজ সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কমপ্লেক্স মাঠের হেলিপ্যাডে অবতরণ করে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি। আর সকাল ১০টা ১৬ মিনিটে পৌঁছান রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করার পর ১০টা ৪৫ মিনিটে সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তাঁরা।
-
জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাদ্য এবং কৃষিও বদলাবে
কৃষিবিদ মো. হামিদুর রহমান*

বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হচ্ছে কৃষি, যা এ দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান প্রায় ১৫.৯৬% এবং ৪৭.৫% শ্রম শক্তি এ খাতে নিয়োজিত। এ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তাসহ জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা এখনও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর নির্ভরশীল। বিবিএস ২০১৪-১৫ এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি ১০ লাখ এবং প্রতি বছর ২০ লাখ লোক জনসংখ্যায় যোগ হচ্ছে। ২০৪৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১.৩৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়ে হবে প্রায় ২২.৫ কোটি। এ বাড়তি জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা জোরদারকরণ আবশ্যক। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে সামগ্রিকভাবে বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের কৃষি তথা সার্বিক জীবনযাত্রার ওপর। ভৌগোলিক অবস্থান, জনসংখ্যার আধিক্য, আর্থসামাজিক অবস্থার কারণে জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে বিপদাপন্ন দেশ হিসেবে বিবেচিত। জলবায়ু পরিবর্তন এমন একটি বিষয়, যা সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে প্রভাবিত করতে পারে। পৃথিবী সৃষ্টির আদিকাল থেকে পরিবর্তিত হচ্ছে জলবায়ু। এর প্রভাব পড়ছে পরিবেশ ও মানুষের ওপর। পরিবেশ, মানুষ ও জলবায়ু অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে আন্তঃসম্পর্কযুক্ত। আমাদের কৃষির সাথেও পরিবেশ, আবহাওয়া ও জলবায়ুর সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কৃষিক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি। প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণে জলবায়ু পরিবর্তিত হচ্ছে। ফলে পরিবর্তিত পরিবেশে বদলে যাচ্ছে এ দেশের খাদ্য ও কৃষি ব্যবস্থা। কৃষিতে সূর্যের আলো, তাপমাত্রা, বাতাসের আর্দ্রতার মৌসুমভিত্তিক পরিবর্তনের সাথে সাথে ফসলের ধরন, জাত, চাষ পদ্ধতি ও উৎপাদনশীলতা নির্ধারিত হয়ে থাকে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাতের সময় ও পরিমাণে তারতম্য ঘটছে এবং এর প্রভাব পড়ছে ফসলের উৎপাদনশীলতার ওপর। এ কারণে দেশে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং হুমকির মুখে পড়ছে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা। পরিবর্তনশীল জলবায়ুতে এ দেশের জনগোষ্ঠীর পুষ্টিকর খাবার ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার জন্মলগ্ন ১৯৪৫ সাল থেকে প্রতি বছরের ১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবস পালিত হচ্ছে। এ বছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাদ্য এবং কৃষিও বদলাবে। প্রতিপাদ্যটি নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা- প্রাকৃতিক কারণ ও মনুষ্য সৃষ্ট কারণ। প্রাকৃতিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে- সূর্যের শক্তি উৎপাদনে হ্রাস-বৃদ্ধি, মহাসাগরের উত্তাপ শক্তির পরিবর্তন, সমুদ্রশ্রুতের পরিবর্তন, মহাদেশসমূহের স্থান পরিবর্তন, আগ্নেয়গিরির দূষণ, এলনিনো ও লানিনা এর প্রভাব ইত্যাদি। মনুষ্য সৃষ্ট কারণ- শিল্প বিপ্লবের পর উনিশ শতকের সূচনালগ্ন থেকে জীবাশ্ম জ্বালানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন, কলকারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া, বন উজার, জৈবিক পচন, কৃষিক্ষেত্রে সার ও কীটনাশকের অযাচিত ব্যবহারসহ বহুবিধ কারণে বায়ুম-লে বিভিন্ন প্রকার গ্যাস বিশেষ করে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস-অক্সাইড, সিএফসি গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় সূর্য থেকে আগত তাপ রশ্মিকে পুনরায় মহাকাশে প্রতিফলিত হওয়ার পথে বাধার সৃষ্টি করে, ফলে পৃথিবী ক্রমাগত উষ্ণ হচ্ছে। আইপিসিসির সমীক্ষা অনুযায়ী বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ তাপমাত্রা বৃদ্ধি।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বড় হুমকি জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর বিরূপ প্রভাব। এর প্রভাবে ভূম-লের জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন ও এর গতি প্রকৃতিতে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে, আবহাওয়ার ধরন এবং ঋতু বৈচিত্র্য পাল্টে যাচ্ছে। বায়ুমণ্ডল এবং সমুদ্রের উষ্ণায়ন, বিশ্ব পানিচক্র, তুষারপাত, বরফগলা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ুজনিত দুর্যোগগুলোকে মানবসৃষ্ট প্রভাব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইন্টার গভার্মেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (আইপিসিসি) তথ্যানুযায়ী জলবায়ুর পরিবর্তনে ভূপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা দুই-ই বাড়বে এবং অসম বৃষ্টিপাত হবে। আইপিসিসির ৫ম সমীক্ষা অনুযায়ী, বিশ্ব গড় তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির ফলে ফসল উৎপাদন, পানির প্রাপ্যতা, জীববৈচিত্র্য, তাপপ্রবাহ, অতিবৃষ্টি, উপকূলীয় জলোচ্ছ্বাস, বরফগলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ইত্যাদি প্রভাব পড়বে। বিশ্ব গড় তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির ফলে বিভিন্ন প্রজাতির বিলুপ্তিতে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক খাদ্য নিরাপত্তা বিঘিœত হবে। ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা একবিংশ শতাব্দীর শেষে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করবে ও বিশ্ব পানিচক্রে অসমতা পরিলক্ষিত হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি
বাংলাদেশের উত্তরে হিমালয় ও দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর থাকার কারণে ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ সব সময়ই বিপদাপন্ন। বাংলাদেশের কৃষি মূলত আবহাওয়া ও জলবায়ুর ওপর নির্ভরশীল। প্রকৃতি নির্ভর হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির মাত্রাও কৃষি খাতে সবচেয়ে বেশি। ইউএনডিপি বাংলাদেশকে বিশ্বের এক নম্বর গ্রীষ্মম-লীয় সাইক্লোনপ্রবণ এবং ষষ্ঠতম বন্যাপ্রবণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অসম বৃষ্টিপাত, বন্যা, ভূমিক্ষয়, জলাবদ্ধতা, শুষ্ক মৌসুমে অনাবৃষ্টি, খরা, টর্নেডো, সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাসের প্রাদুর্ভাব ও মাত্রা বৃদ্ধি, উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা বৃদ্ধি, শীত মৌসুমে হঠাৎ শৈত্যপ্রবাহ, ঘন কুয়াশা, আকস্মিক বন্যা ইত্যাদি এ দেশের কৃষি ব্যবস্থাকে ক্রমাগত বিপর্যস্ত করে তুলছে, যা মানবকল্যাণ ও জনগোষ্ঠীর টেকসই জীবনযাত্রা এবং খাদ্য নিরাপত্তা ও স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিরূপ পরিস্থিতির সাথে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থার সামঞ্জস্য বিধান করে জলবায়ু পরিবর্র্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে কৃষিকে মুক্ত রাখা বা ঝুঁকি কমানো, দুর্যোগমুক্ত সময়ে শস্য বহুমুখীকরণ ও ফসলের নিবিড়তা বাড়িয়ে দুর্যোগের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া বিশেষভাবে বিবেচ্য। এ রকম অবস্থায় দেশের খাদ্য ও কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হলে প্রয়োজন বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য, উপাত্ত এবং তা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন উপযোগী কলাকৌশল ও সার্বিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন।
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিত ও ক্ষয়ক্ষতি
বিগত ১০০ বছরে এ দেশের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৮টি প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়, ৫০ বছরে হয়েছে ৫৩টি বন্যা, তার মধ্যে ৬টি ছিল মহাপ্লাবন। ১৫৩ বছরে হয়েছে ২০টি বড় ধরনের ভূমিকম্প। ১৯৬০ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত এ দেশে ছোট ও বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও কালবৈশাখীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬৭টি, তার মধ্যে ১৫টি ছিল ভয়াবহ। এতে সম্পদের ক্ষতি হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা (বিএমডি, ২০০৭)। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্র্রস্ত হয় কৃষি খাতই। বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালের বন্যায় ৩২৫.৯ মিলিয়ন ডলার, ২০০৪ সালের বন্যায় আউশ ও আমন ফসলের ৪৩৫.৮৯ মিলিয়ন ডলারের খাদ্যশস্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং ১৯৮৮ সালে বন্যায় খাদ্যশস্যের ক্ষতি হয়েছিল প্রায় ২৫ লাখ টন। নভেম্বর ২০০৭ এর ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’ তার গতিপথে উপকূলের ১৮৬,৮৮৩ হেক্টর ফসলি জমি সম্পূর্ণভাবে ৪৯৮,৬৪৫ হেক্টর আংশিকভাবে ক্ষতিগ্র্রস্ত হয়েছে এবং আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ হয়েছে ৩ বিলিয়ন ডলার (বিএমডি, ২০০৭)। শৈত্যপ্রবাহের ব্যাপ্তিকালের জন্য মানুষের জীবন ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে খরার কারণে বিগত ৫০ বছরে ২০ বার দেশ খরার ঝুঁকিতে আক্রান্ত হয়েছে এবং তীব্রতাভেদে আমনসহ অন্যান্য ফসল ২০-৬০% ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত খরার কারণে প্রায় ২১.৮ লাখ টন ধান নষ্ট হয়েছে।
কৃষির ওপর মাটিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধির ক্ষতিকর প্রভাব
উপকূলীয় অঞ্চল এবং দূরবর্তী দ্বীপসমূহের ১.৪ মিলিয়ন হেক্টর এলাকায় লোনাপানি প্রবেশ করার ফলে উন্মুক্ত জলাশয় ও ভূগর্ভস্থ পানি লবণাক্ত হয়ে পড়েছে। প্রায় ১০.৫৬ লাখ হেক্টর চাষযোগ্য জমি লবণাক্ততার বিভিন্ন মাত্রায় ক্ষতিগ্র্রস্ত হয় (মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, ২০০৯)। লবণাক্ততার কারণে এসব অঞ্চলের বিশাল পরিমাণ আবাদি জমি পতিত থাকে। শুষ্ক মৌসুমে নিয়মিত সামুদ্রিক জোয়ারের সাথে ভূ-ভাগের অনেক গভীর মিঠাপানি অঞ্চলে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে নদীর পানিকে আউশ ধান ও অন্যান্য আগাম খরিফ ফসলে সেচের কাজে ব্যবহারের অনুপোযোগী করে তুলছে।
কৃষির ওপর উষ্ণতা বৃদ্ধি, উষ্ণ ও শৈত্যপ্রবাহের ক্ষতিকর প্রভাব
আশংকা করা হয় যে, বাংলাদেশে ২০৩০ সাল নাগাদ গড় তাপমাত্রা ১.০ ডিগ্রি, ২০৫০ সালে ১.৪ ডিগ্রি এবং ২১০০ সালে ২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যেতে পারে। সম্প্রতি দেশে উষ্ণ ও শৈত্যপ্রবাহের মাত্রা বেড়েছে। বাংলাদেশে ক্রমান্বয়ে শীতকালের ব্যাপ্তি ও শীতের তীব্রতা দুই-ই কমে আসছে। বেশির ভাগ রবি ফসলেরই স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়ে ফলনের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ ছাড়া শীত মৌসুমে উষ্ণ প্রবাহ দেখা দিলে বেশি সংবেদনশীল ফসল যেমন গমের ফলন খুব কমে যায় এবং উৎপাদন অলাভজনক হয়। ধানের ক্ষেত্রে ফুল ফোটা বা পরাগায়নের সময় তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার ওপরে গেলে চিটার সংখ্যা বেড়ে গিয়ে শিষে ধানের সংখ্যা কমে যেতে পারে, যা ধানের ফলনকে কমিয়ে দেবে। ধানের কাইচ থোড় আসার পরপরই রাতের তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দিনের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে এবং এ অবস্থা ৪/৫ দিন অব্যাহত থাকলে ধান আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে চিটা হওয়ার আশংকা থাকে। ধানের প্রজনন পর্যায়ে বাতাসের গড় তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে ধানগাছের জন্য খুবই অসহনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় এবং ধানে অতিরিক্ত চিটা হয়। শৈত্যপ্রবাহের সাথে দীর্ঘ সময় কুয়াশাচ্ছন্ন থাকলে অনেক ফসল বিশেষ করে গমের পরাগায়ন (পলিনেশন) ও গর্ভধারণ (ফার্টিলাইজেশন) না হওয়ায় আংশিক বা সম্পূর্ণ ফসল চিটা হয়ে যায় এবং পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়ে যায়, প্রজাতি বৈচিত্র্য কমতে পারে এবং প্রজননে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। উষ্ণতা বাড়ার ফলে গাছের প্রস্বেদনের হার বেড়ে যায় এবং অতিরিক্ত সেচ প্রদানের ফলে সেচের পানির অভাব হয়। শৈত্যপ্রবাহের ফলে আমের মুকুল নষ্ট হয় ও নারিকেলের ফলধারণ ব্যাহত হয়।
জমির উর্বরতা হ্রাস
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষিক্ষেত্রে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা, জলাবদ্ধতাসহ কৃষি পরিবেশের পরিবর্তনের কারণে জমির উর্বরতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফলে ফসলের উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে। যদিও পলির পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে কোথাও কোথাও ভূমির ব্যবহার উপযোগিতা বৃদ্ধি পায় কিন্তু ক্ষয়ক্ষতির তুলনায় এ লাভ অপ্রতুল।
কৃষির ওপর ঘূর্ণিঝড়/সাইক্লোন ও জলোচ্ছ্বাসের ক্ষতিকর প্রভাব
সামুদ্রিক ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের প্রভাবে মুহূর্তের মধ্যেই আক্রান্ত এলাকার ফসল, বৃক্ষরাজি, পশুপাখি, জীবজন্তু, ঘরবাড়ি ও মানুষসহ সবই ধ্বংস হয়ে যায়। প্রলয়ঙ্করী সাইক্লোন ‘সিডর’ এর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
কৃষির ওপর নদীভাঙন ও ভূমি ক্ষয়ের ক্ষতিকর প্রভাব
নদীভাঙনের ফলে প্রচুর উৎপাদনশীল জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়। প্রতি বছরই নদীর কূল ভেঙে অনেক কৃষি জমি, বসতি স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। কৃষি জমি কমে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং নদীর দুই-কূলবর্তী অসংখ্য মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব ভাসমান মানুষে পরিণত হচ্ছে। পাহাড়ি এলাকায় অতিবর্ষণের সময় উঁচু এলাকার উপরিভাগের উর্বর মাটি ধুয়ে ক্ষয়ে যায়, কখনও কখনও ভূমি ধস হয়। ফলে এসব এলাকার মাটি ক্রমান্বয়ে উর্বরতা শক্তি হারিয়ে ধীরে ধীরে ফসল উৎপাদনের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্য
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মরুকরণসহ অন্যান্য কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে। ফলে বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণিকুলের বিলুপ্তি ঘটছে।
ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা
বাংলাদেশ সরকার ন্যাশনাল এডাপটেশন প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন ২০০৫, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান ২০০৯, এর ধারাবাহিকতায় নিজস্ব তহবিলে ‘বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন করা হয়েছে। জলবায়ু অভিযোজন কার্যক্রমে বৈদেশিক সহায়তা প্রাপ্তির জন্য ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ রেজিলিয়েন্ট ফান্ড’ গঠন করা হয়েছে। এর আলোকে কৃষিক্ষেত্রে দুর্যোগ ও জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাসে পরিবর্তিত জলবায়ুতে খাপ খাওয়ানোর উপযোগী কলাকৌশলের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে, যার ফলে জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ শক্তিশালী হবে। এ লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষি ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যার ফলে দুর্যোগপ্রবণ স্থানীয় জনগোষ্ঠী ভালোভাবে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে এবং ঝুঁকি মোকাবিলায় অধিকতর সক্ষম হয়ে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০১৬ উপলক্ষে প্রকাশিত ‘কৃষিকথা’ প্রকাশনাটি খাদ্য ও কৃষি উৎপাদনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষি ও কৃষকের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশের নীতি ও পরিকল্পনা
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একটি সমন্বিত উদ্যোগ এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা, সুশীল সমাজ ও ব্যবসায় খাতের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ জলবায়ু পরিবর্তনের বিভিন্ন প্রভাব এবং সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্যের মধ্যেকার সম্পর্ক অনুধাবনের জন্য একটি নীতি গবেষণা ও বিশ্লেষণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ সমীক্ষার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হচ্ছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য হ্রাসের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা দিতে পরিকল্পনা ও নকশা প্রণয়নে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুগুলোকে সম্পৃক্ত করা। বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় একটি সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে ‘জলবায়ু পরিবর্তন সেল’ গঠন করেছে। জলবায়ু পরিবর্তন সেলের কাছে বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনে অভিযোজনের লক্ষ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুগুলোকে মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষমতা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
কৃষি ক্ষেত্রে করণীয়
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রমাণিত ভালো অভিযোজন কলাকৌশলসমূহ মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করে জনগণের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন ও টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব। কিছু ভালো প্রমাণিত অভিযোজন কৌশল উল্লেখ করা হলো-
● খরা এলাকায় সম্পূরক সেচের জন্য মিনিপুকুর ও পাতকুয়া (ডাগ ওয়েল) খনন করে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ;
● বোরো ধানে শুকনা বীজতলা তৈরির মাধ্যমে সুস্থ ও কোল্ড ইনজুরিমুক্ত চারা তৈরি;
● বন্যা, আকস্মিক বন্যা, খরা ও লবণাক্ততা থেকে রক্ষা পেতে স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন ধান/ফসলের চাষ;
● খরা এলাকায় স্বল্প পানির চাহিদা সম্পন্ন ফসলের (গম, মুগ, মাসকলাই, ছোলা, মসুর ইত্যাদি) চাষ;
● মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় কম্পোস্ট, খামারজাত সার, ভার্মিকম্পোস্ট ইত্যাদির ব্যবহার;
● ফেরোমেন ট্রাপের মাধ্যমে শাকসবজির চাষ;
● পানি সাশ্রয়ের জন্য এডব্লিউডি পদ্ধতিতে ধানক্ষেতে সেচ প্রদান;
● কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে ‘জলবায়ু পরিবর্তন সেল/দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সেল’ গঠন করার জন্য সরকারের নীতি ও পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা যাতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি হ্রাসে সব স্তরের সংশ্লিষ্টদের (কৃষক, অফিসিয়াল, নীতিনির্ধারক প্রভৃতি) এ বিষয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা;
● কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে আপদকালীন ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত তহবিল/দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা তহবিল’ গঠন করার জন্য সরকারের নীতি ও পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা;
● এলাকাভিত্তিক উচ্চমূল্য ফসলের (High Value Crops) আবাদ সম্প্রসারণ ও উপযোগী শস্যবিন্যাস অনুসরণ করা;
● জোয়ার-ভাটা এলাকায় বিশেষ করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সর্জান ও ভাসমান পদ্ধতিতে পদ্ধতিতে সবজি ও ফল চাষ, ঘেরের পাড়ে সবজি চাষ করা;
● চরাঞ্চলে, উপকূলীয় এলাকায় তরমুজ, বাঙ্গি, খিরা, বাদাম, ফেলন, সূর্যমুখী, ভুট্টা ইত্যাদি চাষ;
● মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় ভার্মিকম্পোস্ট, কম্পোস্ট, জৈবসার, সবুজ সারের উৎপাদন ও ব্যবহার; ভূ-উপরিস্থ পানির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা;
● দুর্যোগের পূর্বাভাসে আগাম সতর্ক বার্তা প্রদান;
● দুর্যোগপ্রবণ এলাকা উপযোগী ফসল উৎপাদন পঞ্জিকা তৈরি, বিতরণ ও অনুসরণের ব্যবস্থা করা;
● সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা;
● জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষি উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে দেশব্যাপী স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা/প্রকল্প গ্রহণ করা প্রয়োজন;
● দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে এলাকা উপযোগী কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের মাঝে ভর্তুকির মাধ্যমে বিতরণ করা;
● কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে একটি সেন্ট্রাল নলেজ হাব তৈরি করা যেখানে অ্যাডাবটেশন ও মিটিগেশনের কৌশলসমূহ এবং আবহাওয়া ও জলবায়ু সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষিত থাকবে।কৃষিবিদ মো. হামিদুর রহমান*
*মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫ -

যুদ্ধাপরাধী কায়সারের মৃত্যুদণ্ড আপিল বিভাগে বহাল
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার জন্য আপিলটি আপিল বিভাগের দৈনন্দিন কার্য তালিকার ১ নম্বর ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
গত ৩ ডিসেম্বর আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়। তখন রায়ের জন্য ১৪ জানুয়ারি দিন ধার্য করে দেওয়া হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কায়সারকে ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। ঐ সাজা বাতিল চেয়ে আপিল বিভাগে আপিল করেন তিনি।
-

নয় জেলায় “মানবতার কল্যাণ ফাউন্ডেশন” এর জন্মোৎসব
সমাজের অসহায়,অসুস্থ এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যানে সাতক্ষীরার কৃতি সন্তান, নাট্যনির্মাতা গঠন করেন একটি অরাজনৈতিক সমাজসেবা মূলক সংগঠন “মানবতার কল্যাণ ফাউন্ডেশন”। গতকাল ছিল সংগঠনটির ১ম বর্ষ পূর্তি। কেন্দ্রীয় কমিটি সহ সারা বাংলাদেশে ৩টি বিভাগীয় শাখা, ৯টি জেলা শাখা ও ১৩টি উপজেলা শাখায় সংগঠনের সদস্যরা কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন। গতকাল ঢাকায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ফাউন্ডেশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি জনাব হাবিবুর রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) সংগঠনের উপদেষ্টা জনাব সেলিম রেজা, অতিরিক্ত সচিব, ডেসকোর পরিচালক, সংগঠনের উপদেষ্টা জনাব সাইফুল ইসলাম, রমনা জোনের ডিসি জনাব সাজ্জাদুর রহমান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জি.এম সৈকত, অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অভিনেত্রী অপ্সরা সুহি, সার্বিক তত্বাবধায়নে কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক,নাট্যকার ওসমান গনি বাবলা ও ঢাকা বিভাগীয় কমিটির সভাপতি বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান রিপন। অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষন ছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেত্রী খালেদা আক্তার কল্পনা, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেত্রী রেহানা জলি, টিভি অভিনেতা আব্দুল আজিজ, কন্ঠশিল্পি ইত্যাদি খ্যাত গায়ক আকবর, কন্ঠশিল্পি পলি সায়ন্তনী, নাট্য পরিচালক ও অভিনেতা আকাশ রঞ্জন, অভিনেত্রী আজরা জেবিন তুলি,অভিনেত্রী শ্রুতি খান, অভিনেত্রী সেজুতি ইসলাম সহ অসংখ্য শিল্পী এবং ফাউন্ডেশনের নেত্রীবৃন্দরা। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, আমি শুরু থেকে আছি এবং সবসময় ভালো কাজের সাথে যুক্ত থেকে মানবতার কল্যান ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অসহায় মানুষের কল্যানে কাজ করে যাবো। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সহ বিশেষ অতিথি বৃন্দরা মানবতার কল্যানে কাজ করার জন্য সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা জি.এম সৈকতের পাশে থেকে সংগঠনকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অন্যান্য জেলার মত সাতক্ষীরা জেলা শাখা,তালা সদর ও আশাশুনি উপজেলা,কুলিয়া ও নওয়াপাড়া ইউনিয়নে ফাউন্ডেশনের জন্মদিন পালন করা হয়।
-

চমক দিয়েই শেষ হলো ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
চমক দিয়েই শেষ হলো ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত সোয়া ৯টা নাগাদ ৮১ সদস্যের এ পূর্ণাঙ্গ কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন দলের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তবে ৮১ সদস্যের কমিটিতে একটি সাংগঠনিক সম্পাদক, তিনটি সদস্যপদসহ আরও কয়েকটি সম্পাদকীয় পদ বাকি রেখে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।
নতুন কমিটির সদস্যরা আগামী ৩ জানুয়ারি টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে কাজ শুরু করবেন বলে জানা গেছে।
• নব ঘোষিত কমিটিতে রয়েছেন যারা
১. সাংগঠনিক- আফজাল হোসেন
২. সাংগঠনিক- সফিউল আলম চৌধুরী নাদের, এবারই প্রথম দলে পদ পেয়েছেন।
• যেসব সম্পাদক পদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে
► অর্থ বিষয়ক সম্পাদক বেগম ওয়াসিকা আশা খান এবারই প্রথম দলে জায়গা পান।
► তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহামুদ, প্রথম বারের মত পদ পান।
► শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, পূর্বের কমিটিতে একই পদে ছিলেন।
► উপ-দপ্তর প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, পূর্বে একই পদে ছিলেন।
► উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, সদস্য বিদায়ী ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
• আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হলেন যারাসদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ড. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, খ ম জাহাঙ্গীর, নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, বদর উদ্দিন কামরান, দীপঙ্কর তালুকদার, অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, আক্তার জাহান (রাজশাহী), ডা. মুশফিক (হবিগঞ্জ), অ্যাডভোকেট রিয়াজুল কবির কাওছার, মেরিনা জামান কবিতা, পারভিন জামান কল্পনা, হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, অ্যাডভোকেট সফুরা খাতুন (লালমনিরহাট) অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, আনোয়ার হোসেন, আনিসুর রহমান, শাহাবুদ্দিন ফরাজী, ইকবাল হোসেন অপু, গোলাম রব্বানী চিনু, মারুফা আক্তার পপি, উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা।
নতুন সদস্য হলেন হোসনেয়ারা লুৎফা ডালিয়া, সফুরা খাতুন, সানজিদা খানুম, আনিসুর রহমান, শাহাবুউদ্দিন ফরাজি, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, খ ম জাহাঙ্গীর, ,আমীরুল আলম মিলন, আক্তার জাহান, ডা. মুশফিক, গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে ৯ম বারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি এবং দ্বিতীয় মেয়াদে ওবায়দুল কাদেরকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
-

পানি উৎপাদনে অর্ধেক কোম্পানিই ভুয়া
সারা দেশের পানি বোতলজাত কোম্পানির অর্ধেকই নিম্নমানের বলে উঠে এসেছে। দেশের সব অঞ্চলের মোট ৮১টি খাবার পানি উৎপাদনকারী কারখানা পরিদর্শন করে এর মধ্যে মাত্র ৪১টি কোম্পানি সুপেয় পানি উৎপাদনে সক্ষম বলে প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। বাকি ৪০টির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ষষ্ঠ বৈঠকে উত্থাপিত এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
মিনারেল বা ড্রিংকিং পানি বোতলজাত বা উৎপাদনকারী কারখানাগুলো সঠিকভাবে বিশুদ্ধ পানি উৎপাদন ও বাজারজাত করছে কিনা, তা সরেজমিন পরিদর্শন করে কমিটিকে প্রতিবেদন দেওয়ার সুপারিশ করেছিল কমিটি।
এরই ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন উত্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ড্রিংকিং ওয়াটার উৎপাদনে সক্ষম ৪১টি প্রতিষ্ঠানই বিএসটিআইয়ের লাইসেন্সপ্রাপ্ত।
অবশিষ্টের মধ্যে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের সক্ষমতা নেই। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে উৎপাদনের যন্ত্রপাতি থাকলেও তারা যথাযথভাবে পরিশোধন না করে জারে ভর্তি করে অবৈধভাবে পানি বিক্রি বা বিতরণ করে থাকে। এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে বিএসটিআই নানা ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শিল্প মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তৃতীয় বৈঠকে চতুর্থ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএসটিআই কর্তৃক সার্ভিলেন্স টিম গঠন করা হয়। মোবাইল কোর্ট বা সার্ভিলেন্স টিম পরিচালনার সংখ্যা ৪৩টি। অবৈধ প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে ৩৬টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আর চারটি অবৈধ কারখানা যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়া অনেকগুলো কারখানার লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সাবেক শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে ড্রিংকিং ওয়াটার উৎপাদনকারী কারখানার পরিদর্শন সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন উত্থাপন করা হয়।
দেখা যাচ্ছে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই ভুয়া। তাই বিএসটিআইয়ের লাইসেন্সবিহীন ড্রিংকিং ওয়াটার উৎপাদনকারী অবৈধ কারখানাগুলো অবিলম্বে বন্ধের সুপারিশ করে কমিটি।
বৈঠকে আরও অংশগ্রহণ করেন- কমিটির সদস্য এ কে এম ফজলুল হক, মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান, কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ, পারভীন হক প্রমুখ।
-

স্কুল শিক্ষকের ব্যায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে সাফল্য
রাহাত রাজা সাতক্ষীরা :
মাছ চাষের নতুন একটি প্রযুক্তি বায়োফ্লক । অল্প জয়গায় অধিক মাছ চাষে এই প্রযুক্তি বর্তমানে বেশ সাড়া ফেলেছে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু হয়েছে। অনেক মাছ চাষি এই প্রযুক্তিতে মাছ চাষ করে সফলতাও পাচ্ছেন। তেমনি এক সফল মাছ চাষি চট্টগ্রামের টাইগারপাস বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মোজাম্মেল হক ।
তিনি বায়োফ্লক পদ্ধতিতে ট্যাংকিতে মাছ চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। বছরের শুরুতে ঘরের ভিতর ৩০০ লিটারের ছোট ট্যাংকে কই ও তেলাপিয়া মাছ দিয়ে মাছ চাষ শুরুকরেন এ থেকে শাফল্য পেয়ে বাণিজিক্যভাবে উৎপাদন শুরু করেছেন তিনি।
অনলাইন এবং ভারত থেকে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের প্রয়োজনীয় সব প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি বানিজ্যিকভাবে দেশি মাছের চাষ শুরু করেন। তার সফলতা দেখে অনেক বেকার যুবক বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
মোজাম্মেল হক জানান আমি যখন শুরু করেছি আমার সামনে কোন মডেল ছিলো না যেটা দেখে আমি শুরু করবো বাংলাদেশে বায়োফ্লক এর মালামাল পাওয়া যায়না । যে কারনে ইউটিউব দেখে দেখে নিজেই তৈরি করেছেন বায়োফ্লোক প্রোজেক্ট। বিজ্ঞানভিত্তিক এই মাছচাষে সব কিছুই নিয়ন্ত্রিত তাই সময় ও কম দেয়া লাগে।
অক্টবরের শেষের দিকে বড় পরিশরে ১০ হাজার লিটার পানি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ৬ টি ট্যাংক প্রস্তুত করে তেলাপিয়া, কই, শিং, পাবদা মাছের চাষ শুরু করেন তিনি।
বায়োফ্লোকে শিং, কৈ, তেলাপিয়া, মাগুর, পাবদা ও ট্যাংরা মাছের পোনা ছাড়া যায়। পোনা ছেড়ে বাজারজাত করা পর্যন্ত সময় লাগে সাড়ে ৩ থেকে ৪ মাস। প্রথম চালানে ৬০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করেন মোজাম্মেল হক । যাতে লাভ হবে অর্ধেক।
আগামীতে ট্যাংক বাড়িয়ে কৈ, তেলাপিয়া, পাবদা, মাগুর, ট্যাংরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ চাষ করবেন তিনি।
তিনি আরও বলেন এ পদ্ধতিতে মাছের খাবার কম লাগে। অসুখ না হওয়ায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় না। তবে শুরুর দিকে সবাইকে কই মাছ চাষের পরামর্শ দেন কারন কই মাছে লাভ কম হলেও মাছ চাষ টি সহজে শিখেনেয়া যায়।বায়োফ্লোক প্রযুক্তি মাছ চাষের একটি টেকসই এবং পরিবেশগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ পদ্ধতি৷ যা পানির গুনমান এবং ক্ষতিকারক রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু নিয়ন্ত্রণ করে৷ জলীয় খামার ব্যবস্থার জন্য মাইক্রোবায়াল প্রোটিন খাদ্য হিসেবে সরবরাহ করে। বায়োফ্লোক প্রযুক্তি মূলত বর্জ্য পুষ্টির পুর্নব্যবহারযোগ্য নীতি৷ বিশেষ করে, নাইট্রোজেন, মাইক্রোবায়াল জৈব বস্তুপুঞ্জের মধ্যে খাবারের খরচ কমাতে এবং মাছের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ‘বায়োফ্লক’ প্রযুক্তি যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করে। এক কথায় বলতে গেলে বায়োফ্লক হল উপকারি ব্যাকটেরিয়া, অণুজীব ও শৈবালের সমম্বয়ে তৈরি হওয়া পাতলা আবরণ, যা পানিকে ফিল্টার করে অ্যামোনিয়া নামক মাছের বিষ দূরীভূত করে।
ইন্দোনেশিয়ার এই প্রযুক্তির মাছ চাষে জেলা ও উপজেলার মৎস কর্মকর্তার অনভিগ্যতাই এখন বড় সমস্যা ব্যায়োফ্লক মাছ চাষীদের। কারন ছোট খাটো কোন সমস্যা হলে সমাধান দিতে পারছেনা মৎসকর্মকর্তারা। -
জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় তরুণ প্রজন্মকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে গবেষণায় মনোনিবেশ করতে হবে
মানিকগঞ্জ থেকে নজরুল ইসলাম,মাসুদুর রহমান ও রাশেদা আক্তার
প্রাকৃতিক বিপর্যয়,মুনুষ্যসৃষ্ট নানা উন্নয়ন দুর্যোগ,রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার পাশাপাশি বিশ্ব আজ জলবায়ু পরিবর্তনের মতো আরেক যন্ত্রণার মুখোমুখি। বাংলাদেশসহ প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে ভরপুর ও কৃষিনির্ভর দেশগুলো এই পরিবর্তনের জন্য দায়ী না হলেও এর ভোগান্তিটা পোহাতে হচ্ছে আমাদেরকেই। নানামুখী বিপর্যয় আর অস্থিরতা সামলে আমাদের গ্রামীণ সমাজে এই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় লড়াই করে চলছেন। আজকের তরুণ যুব সমাজ কোনভাবেই এই বৈশ্বিক ঘটনা থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন ও আলাদা করে রাখতে পারে না। যদিও ঐতিহাসিকভাবে দেশের সকল সাফল্য ও স্বপ্নজয়ী আখ্যানের জন্ম হয়েছে যুব সমাজের হাত ধরেই।
জ্বালানি সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুকি মোকবেলায় তরুণ প্রজন্মকে সাথে নিয়ে মানিকগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সামাজিক সমস্যা মোকবেরায় অগ্রগামী ছাত্র-যুবক নিয়ে গঠিত ছাত্র-যুব টিমের মাধ্যমে ইতেমধ্যে বৃক্ষরোপষ,খেঁজুর বীজ রোপণ, তালবীজ রোপণসহ পরিবেশ সুরক্ষায় নানামুখী কর্মসূচি হয়েছে। নেতৃত্ব তৈরি করার লক্ষ্যে সকল সংগঠনের নেতৃত্ব পর্যায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে ইয়ুথ গ্রীন ক্লাব করার প্রত্যয় নিয়ে গত ২০ নভেম্বর কালিগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত বেউথা বাগান বাড়িতে দু’দিনব্যপী যুব জলবায়ু ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রথমদিনে যুব জলবায়ু কমিটির সভাপতি মো. রমজান আলীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উদ্বোধনী বক্তব্যে ভাষা সংগ্রামী মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা মিরান উদ্দিন মাস্টার বলেন, “ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন দেখেছি, ব্রিটিশদের তাড়িয়ে দেশ ভাগ হওয়ার পরও আমরা মুক্তি পাইনি। মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠা করার জন্য আন্দোলন করতে হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “প্রাণ-প্রকৃতি প্রতিবেশ মানুষের দ্বারা ধ্বংস হলে আগামী প্রজন্ম এই ধরাতে বাস করতে পারবে না। তাই আমাদের প্রয়োজনে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ভূমিকা রাখতে হবে।”
এছাড়া আলোচনায় বক্তারা জানান, ইতিমধ্যে সারা দুনিয়াতেই জীবাশ্ম জ্বালানির মজুদ ফুরিয়ে আসছে, জ্বালানিবিহীন পৃথিবী অচল। তাই জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় তরুণ প্রজন্মকে বিকল্প জ্বালানি তথা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে গবেষণায় মনোনিবেশ করার লক্ষ্যে শিক্ষার সকল স্তরে উচ্চতর ধারণাপত্র থাকতে হবে। বিশেষত কারিগরি প্রতিষ্ঠানসমূহে সোলার হোম, বায়োগ্যাস, বায়োপ্লান্ট, সৌর চুল্লি,সেচ পাম্প, উন্নত চুলাসহ বির্ভিন্ন বিষয়ে নতুন ট্রেড চালু করেতে হবে। জ¦ালানি সংকট ও জলাবয়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় তরুণরা সামাজিক দায়বন্ধতার আলোকে সেচ্ছায় কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বারসিক এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারি বিমল রায়। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও আন্দোলনের জেলা সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. আজাহারুল ইসলাম আরজু, রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদের জেলা সভাপতি অধ্যাপক আবুল ইসলাম শিকদার, প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মানিকগঞ্জ কার্যালয়ের উপ পরিচালক দিলিপ কুমার দেবনাথ, পরিবেশ অধিদপ্তর জেলা শাখার সহকারি পরিচালক মো. সাইদ আনোয়ার, রাষ্ট্রীয় পদক প্রাপ্ত কৃষক মো. শরিফ আলী, স্যাক এর সভাপতি এ্যাড. দিপক কুমার ঘোষ, প্রকৃতি প্রেমী কবি ডা. আবুল হাসান,উদীচী জেলা সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মামুন, প্রথম আলো জেলা প্রতিনিধি আব্দুল মোমিন, মানিকগঞ্জ কৃষি উন্নয়ন কমিটির সভাপতি করম আলী মাস্টার, প্রথম আলো বন্ধু সভার সভাপতি মাহববুল আলম রাসেল, বারসিক সহযোগী গবেষক মো. নজরুল ইসলাম, যুব জলবায়ু কমিটির সদস্য সচিব হাফসা আমমেদ, ইশা খান, হৃদয় মাহমুদ,আব্দুল করিম প্রমুখ। -

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ওবায়দুল কাদের পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন
শনিবার দুপুর ১টার দিকে ২১তম জাতীয় সম্মেলনের শেখ হাসিনার নাম প্রস্তাব করেন অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু। সমর্থন করেন পীযুষ ভট্টাচার্য। দুইজনেই আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়ে যায়। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ওবায়দুল কাদেরর নাম প্রস্তাব করেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। সমর্থন করেন আব্দুর রহমান। কণ্ঠভোটে পাস হয়।
এর আগে আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে এ ঘোষণা দেন তিনি।
আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সারাদেশ থেকে দলের সাড়ে সাত হাজার কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে শুরু হয় এ অধিবেশন।
সূচনা বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মানুষের আস্থা বিশ্বাস যাতে অর্জন করা যায় সে লক্ষ্যে দলের নেতাকর্মীদের কাজ করার নির্দেশ দেন।
শেখ হাসিনা বাঙালি মুক্তির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে আওয়ামী লীগের ভূমিকার কথা তুলে ধরে বলেন, এ দলের নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে, এগিয়ে নিতে হবে অনেক দূর। তাই সংগঠনকে শক্তিশালী করার নির্দেশ দেন তিনি।
তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণই তার রাজনীতি। দলকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার পাশাপাশি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে কাজ করতে হবে। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গনে নির্মিত প্যান্ডেলে কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
-
দেশের উত্তরাঞ্চলসহ সারাদেশে শীতের দাপট চলছে।গত ২৪ ঘণ্টায় ফরিদপুরে ১০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়
শনিবার সকালে আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে এ কারণে বলা যেতে পারে মৃদু শৈত্য প্রবাহ আর নেই। আগামীকাল অবস্থার কিছুটা উন্নতি হতে পারে। তবে শীতের তীব্রতা অব্যাহত থাকতে পারে।
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বুধবার রাত থেকে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। হিমেল বাতাসের সঙ্গে যোগ হয়েছে কুয়াশার দাপটও। বৃহস্পতিবার থেকে সারা দিন একবারও সূর্যের দেখা মিলছে না। শীত এবং কুয়াশার কারণে জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিনভর চারপাশ ঢেকে থাকছে কুয়াশায়। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে আসছে না।
শীতের প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারেও। কুয়াশায় যানবাহন চলাচলে অসুবিধা হওয়ায় রাজধানীর বাজারের তরিতরকারি ও শাকসবজিসহ প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাজার আবারো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।
ইত্তেফাক/এমআরএম
-

সাতক্ষীরায় দেশ রূপান্তর পত্রিকার বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে পত্রিকার মঙ্গল কামনা
সাতক্ষীরায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জাতীয় দৈনিক দেশ রুপান্তর পত্রিকার বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ কেক কাটেন। বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার সকালে র্যালি বের হয়। কাটা হয় কেক। অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের শহীদ স ম আলাউদ্দিন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ, অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহী, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ভয়েজ অব সাতক্ষীরার সম্পাদক এম কামরুজ্জামান, জেলা শিল্পকলা একাডেমি’র সদস্য সচিব শেখ মোসফিকুর রহমান মিল্টন, সাবেক সহ সভাপতি কালিদাস রায়, বণিক বার্তার প্রতিনিধি গোলাম সরোয়ার, খোলা কাগজের প্রতিনিধি চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের রিপোর্টার আমিনা বিলকিস ময়না, বাংলা নিউজের প্রতিনিধি ও দ্যা এডিটরস’র প্রধান নির্বাহী শেখ তানজির আহমেদ নাহিদ, চ্যানেল নাইন ও দৈনিক খবরের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি কৃষ্ণ ব্যানার্জি, প্রভাষক হেদায়েতুল ইসলাম, সাতক্ষীরা টু ডে’র রিপোর্টার মীর শাহরিয়ার অপু, প্রাণকেন্দ্র’র শেখ আবু সালেক চাঁদ কালাচান কবি, আসাদুজ্জামান, মনিরুল ইসলাম মিলন মিম, রুহুল আমিন ময়না, পল্লব মজুমদার, সিকান্দার আবু জাফর রায়হান, আক্তারুল ইসলাম, সাজেদা বেগম পরাগ, পারভেজ ইমাম, প্রান্তদেব ভট্টাচার্য, ফারিয়া সুলতানা যুথি, অগ্রঃ (বিসর্গ), নাবিহা করিম, আলোকিত সাতক্ষীরার সম্পাদক সরদার আবু সাঈদ, আলোকচিত্রী নাজমুল হোসাইন, রেজাউল ইসলামসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন তনিমা ঢালী, সুজিত কুমার পাল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দেশ রূপান্তরের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন।
অনুষ্ঠানে দেশ রূপান্তর পত্রিকার সম্পাদক প্রথিতযশা সাংবাদিক অমিত হাবিবের জন্য শুভ কামনা জানান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যাক্তিবর্গ। -
ছাত্রলীগের ২১ কেন্দ্রীয় নেতাকে অব্যাহতি ও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে ১১ জন কেন্দ্রীয় নেতার পদ
ছাত্রলীগের ২১ কেন্দ্রীয় নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে ১১ জন কেন্দ্রীয় নেতার পদ।
এ সকল নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২১ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে আর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জনের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে বলে প্রকাশ
অব্যাহতি পাওয়া ২১ জন হলেন- তানজিল ভূঁইয়া তানভির (সহ-সভাপতি), আরেফিন সিদ্দিক সুজন (সহ-সভাপতি), আতিকুর রহমান খান (সহ-সভাপতি), বরকত হোসেন হাওলাদার (সহ-সভাপতি), শাহরিয়ার কবির বিদ্যুৎ (সহ-সভাপতি), সাদিক খান (সহ-সভাপতি), সোহানী হাসান তিথী (সহ-সভাপতি), মুনমুন নাহার বৈশাখী (সহ-সভাপতি), আবু সাঈদ (সহ-সভাপতি), রুহুল আমিন (সহ-সভাপতি), রাকিব উদ্দিন (সহ-সভাপতি), সোহেল রানা (সহ-সভাপতি), ইসমাইল হোসেন তপু (সহ-সভাপতি), আহসান হাবীব (দপ্তর সম্পাদক), তাজ উদ্দীন (ধর্ম সম্পাদক) মমিন শাহরিয়ার (উপ-দপ্তর সম্পাদক), মাহমুদ আব্দুল্লাহ বিন মুন্সী (উপ-দপ্তর সম্পাদক), বি এম লিপি আক্তার (উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক), আফরিন লাবনী (উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক), সামিয়া সরকার (সহ-সম্পাদক) ও রনি চৌধুরী (সহ-সম্পাদক)।নিজ আবেদনের পরিপ্রক্ষিতে যে ১১ জনের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে তারা হলেন- এসএম তৌফিকুল হাসান সাগর (সহ-সভাপতি), আমিনুল ইসলাম বুলবুল (সহ-সভাপতি), বি এম শাহরিয়ার হাসান (সহ-সভাপতি), হাফিজুর রহমান (সহ-সভাপতি), এস এম হাসান আতিক (সহ-সভাপতি), শাহারিয়ার ফেরদৌস (স্বাস্থ্য সম্পাদক), রাতুল শিকদার (উপ-স্বাস্থ্য সম্পাদক), শাফিউল সাজিব (উপ-স্বাস্থ্য সম্পাদক) সিজাদ আরেফিন শাওন (উপ-প্রচার সম্পাদক), রুশী চৌধুরী (উপ-পাঠাগার সম্পাদক) ও আঞ্জুমানারার অনু (সহ-সম্পাদক)।
গত বছরের ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে সংগঠনের আংশিক কমিটি ঘোষিত হয়। এক পর গত ১৩ মে ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পরপরই এতে পদ না পেয়ে এক পর্যায়ে বিতর্কিতদের বাদ দেওয়াসহ চার দফা দাবিতে কয়েক দফায় অবস্থান কর্মসূচি ও অনশন করেন পদবঞ্চিতরা।
-

আওয়ামী লীগের কাউন্সিল : নেতৃত্বে আলোচনায় জয়-পুতুল
আগামী ২০-২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের ২১তম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ঘিরে দলে নেতৃত্ব পরিবর্তনের ইস্যুতে নানা আলোচনা হচ্ছে। দলে নতুন কে আসছেন, কে বাদ পড়ছেন এ নিয়ে নানা গুঞ্জন ডালপালা ছড়াচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুই সন্তান প্রযুক্তিবিদ সজীব ওয়াজেদ জয় ও অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামও আলোচনায় উঠে এসেছে। তারা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে আসতে পারেন।
আসন্ন কাউন্সিলে তারা দুজন না এলেও অন্তত একজন নেতৃত্বে এসে চমক সৃষ্টি করবেন বলে দলের একাধিক সিনিয়র নেতা মনে করলেও জয় এবং পুতুল নিজ থেকে এমন আগ্রহের কথা দলের কোনো মহলে এখনো জানাননি। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাও এ বিষয়ে কোনো কিছু বলেননি।
তবে আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনার উত্তরসুরি হিসেবে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামই বহুল আলোচিত। এর আগে, দলের সর্বশেষ ২০তম জাতীয় সম্মেলনে তখনকার সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যে সম্মেলনস্থলে উপস্থিত সজীব ওয়াজেদ জয়কে ইঙ্গিত করে প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মের নেতা, আগামী দিনের ভবিষ্যৎ আজ আপনাদের সামনে উপস্থিত।’ সৈয়দ আশরাফের মতো দলের সব নেতাই একই মনোভাব পোষণ করেন। তাদের মতে, বঙ্গবন্ধুর তৃতীয় প্রজন্ম কাউকে না কাউকে দলের নেতৃত্বে প্রয়োজন। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল সবখানেই এই আওয়াজ রয়েছে। তবে মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় হতে অনাগ্রহের ইঙ্গিত জয় আগে থেকেই দিয়ে আসছেন, যদিও শেখ হাসিনার সন্তান ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে পরোক্ষভাবে দল ও সরকারের জন্য পরামর্শক হিসেবে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
মাঠের রাজনীতিতে জয়ের সক্রিয়তা দৃশ্যমান না হলেও গত ১৭ নভেম্বর রংপুর পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে নতুন কমিটিতে এক নম্বর সদস্য হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হন তিনি। পরে ২৬ নভেম্বর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল শেষে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির এক নম্বর সদস্যও করা হয় জয়কে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বেশিরভাগই চান বঙ্গবন্ধুর এই দুই উত্তরসূরি দলের নেতৃত্বে আসুক। তারা বলছেন, জয় ও পুতুল দলের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হলে দলের নেতৃত্ব আরও সংগঠিত হবে। এর সুফল ভোগ করবে আওয়ামী লীগই।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই ঢাকায় পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান জয়ের জন্ম হয়।১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতক চক্রের হাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার সময় মা শেখ হাসিনা এবং খালা শেখ রেহানার সঙ্গে লন্ডনে থাকায় বেঁচে যান জয়। পরে মায়ের সঙ্গে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় মেলে তার। শৈশব ও কৈশোর কাটে ভারতেই। পড়াশোনা করেন ভারতের নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজ ও তামিলনাড়ুর পালানি হিলেসর কোডাইকানাল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে। এর পর বেঙ্গালুরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স, পদার্থ এবং গণিতে ব্যাচেলর অব সায়েন্স ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি টেক্সাস ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আরেকটি ব্যাচেলর ডিগ্রি অব সায়েন্স অর্জন করেন। সব শেষে তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর করেন। ২০০৭ সালে জয় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম কর্তৃক ‘গ্লোবাল লিডার অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার বিষয়টি নিয়ে আসেন জয়ই। পর্দার অন্তরালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে থেকে গোটা দেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লব ঘটান এই তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। ২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর জয়কে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে অবৈতনিক উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়।
সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক এবং ২০০২ সালে ক্লিনিক্যাল মনস্তত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৪ সালে স্কুল মনস্তত্বে বিশেষজ্ঞ ডিগ্রি অর্জন করেন। ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময় তিনি বাংলাদেশের নারীদের উন্নয়নের ওপর গবেষণা করেন। এ বিষয়ে তার গবেষণাকর্ম ফ্লোরিডার একাডেমি অব সায়েন্স কর্তৃক শ্রেষ্ঠ সায়েন্টিফিক উপস্থাপনা হিসেবে স্বীকৃত হয়।
তিনি ২০০৮ সাল থেকে শিশুদের অটিজম এবং স্নায়বিক জটিলতাসংক্রান্ত বিষয়ের ওপর কাজ করছেন। স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্ব সংস্থা কর্তৃক ২০১৪ সালে ডব্লিউএইচও অ্যাক্সিলেন্স পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৩ সাল থেকে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থায় মানসিক স্বাস্থ্যের বিশেষজ্ঞ পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন। বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সৃষ্টিশীল নারী নেতৃত্বের একশজনের তালিকায়ও স্থান করে নিয়েছেন তিনি।
সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বাংলাদেশে অটিজমবিষয়ক জাতীয় কমিটির চেয়ারপারসন। সেই সঙ্গে তার পরিচালিত ‘সূচনা ফাউন্ডেশন’ বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন ও সচেতনতা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। তার উদ্যোগেই ২০১১ সালে ঢাকায় প্রথমবারের মতো অটিজমের মতো অবহেলিত একটি বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ভারতের কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী অংশ নেন।
তার অক্লান্ত চেষ্টায় বাংলাদেশে ‘নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিজ্যাবিলিটি ট্রাস্ট অ্যাক্ট ২০১৩’ পাস করা হয়। সেই সঙ্গে তার দেওয়া পরামর্শের ভিত্তিতেই জাতিসংঘ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কার্যাবলীতে অটিজমের বিষয়টি তিনিই সংযুক্ত করেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে অটিজম বিষয়ে ‘শুভেচ্ছা দূত’ হিসেবেও কাজ করছেন তিনি। আওয়ামী লীগের গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) একজন ট্রাস্টিও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
-

শিশু মৃত্যুহার হ্রাসে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করেছে
শিশু মৃত্যুহার হ্রাসে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশে বিগত বিশ বছরে শিশু মৃত্যুর হার ৬৩ শতাংশ কমিয়েছে। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশই ২০০০ সাল থেকে শিশু মৃত্যু হ্রাসে যথেষ্ট উন্নতি করেছে, যার প্রথম দিকের দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ। শূন্য থেকে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যকে এরইমধ্যে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) স্বীকৃতি দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রাম পর্যায়ে স্বাস্থ্য পরিসেবার উন্নয়নের ফলেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। এমনকি শিশু মৃত্যুহার হ্রাসে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। মা ও শিশু মৃত্যুহার হ্রাসে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের টার্গেট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ ‘বার্ষিক গ্লোবাল চাইল্ড হুড রিপোর্ট ২০১৯’ শীর্ষক প্রতিবেদনে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালে গত দুই দশকে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা অনেক হ্রাস পেয়েছে। চারটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি অর্জন করেছে, যেখানে ভুটানের শিশু মৃত্যুর হার কমেছে ৬০ শতাংশ, নেপালে ৫৯ শতাংশ এবং ভারতের ৫৭ শতাংশ। আর বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর হার কমিয়েছে ৬৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সরকার মাতৃ ও শিশু মৃত্যুরোধে সকল সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছে। আর এই কারণেই দেশে মাতৃ ও শিশুমৃত্যু উভয়ই কমেছে। ২০১৭ সালে গর্ভকালীন মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি লাখে ১৭৬ জন থাকলেও বর্তমানে তা ১৭২ জন। এছাড়া ২০১৫ সালে প্রতি হাজার নবজাতকের মধ্যে মৃত্যুহার ২০ জন থাকলেও বর্তমানে তা হ্রাস পেয়ে ১৮ দশমিক ৪ ভাগে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আমাদের ২০৩০ সালের মধ্যে প্রিম্যাচুউরড এ শিশু মৃত্যুহারের লক্ষ্যমাত্রা ১২ দেয়া আছে। স্বাস্থ্যসেবা খাতের সবাই সঠিকভাবে সঠিক কাজটি করলে এই অপরিণত শিশু মৃত্যুহারের লক্ষ্যমাত্রা আগামী ২ বছরেই অর্জন করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে দেশের সব সরকারি হাসপাতালেই গর্ভবতী মায়েদের জন্য ২৪ ঘন্টা ডেলিভারি সুবিধাও রাখা হবে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত ২৪ বছরে দেশে শিশু মৃত্যুহার ৭৩ শতাংশ কমেছে। এসডিজি অনুযায়ী, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে শূন্য থেকে এক মাস বয়সী শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ১২ জনে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বর্তমানে এই সংখ্যা ২৮ জন। তবে শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ৩৮ জন। এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২০৩৫ সালের মধ্যে জীবিত জন্মানো শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ২০ জনে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, প্রতি হাজারে শূন্য থেকে এক মাস বয়সী ২৮ শিশু মারা যাচ্ছে। অন্যদিকে এক থেকে চার বছর বয়সী শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজারে মাত্র ১০ জন। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য শূন্য থেকে এক মাস বয়সী শিশু মৃত্যুহার হাজারে ১২ জন এবং এক থেকে চার বছর বয়সী শিশু মৃত্যুহার হাজারে ২৫ জনে নামিয়ে আনতে হবে। এক থেকে চার বছর বয়সী শিশু মৃত্যুহারে বাংলাদেশ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এখনই এগিয়ে রয়েছে। তবে, শূন্য থেকে এক মাস বয়সী শিশু মৃত্যুহার হাজারে ১৪ জন কমাতে হবে। সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের পরিচালক (মা ও শিশু) ডা. মোহাম্মদ শরীফ বলেন, শূন্য থেকে এক মাস বয়সী শিশুর মৃত্যুঝুঁকি বেশি। যদিও পাঁচ বছরের নিচে পর্যন্ত ঝুঁকি থেকে যায়। কারণ জন্ম-পরবর্তী শ্বাসকষ্ট, কম ওজন, জন্মগত জটিলতা, সেপটিসেমিয়া, নিউমোনিয়া ও এনকেফেলাইটিস পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর প্রধান কারণ। এছাড়া অপুষ্টির কারণেও মৃত্যু হয়। এই মৃত্যু প্রতিরোধে সার্বিক ব্যবস্থাপনার মান বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন, ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণ, ভিটামিন ‘এ’ সম্পূরক ওষুধের সফল ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। এসব কারণে শিশু মৃত্যু হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা থাকলে আগামী ২০৩০ সালের আগেই শিশু মৃত্যুহার কমানো সম্ভব হবে। -বাসস





