স্টাফ রিপোটার ঃ সাতক্ষীরায় বিদেশ ফেরত মোট ৩ হাজার ৫৩৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ছাড় পত্র দেয়া হয়েছে আরো ৩ হাজার ২২৫ জনকে। এছাড়া মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের আসোলেশনে রয়েছে ৩ জন এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে আরো ২১ জন।
এদিকে, সাতক্ষীরা জেলা থেকে মোট ১৯৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ২৮ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট ইতিমধ্যে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পৌঁছেছে। ২৮ টি রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে। বাকীদের রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি।
Category: করোনা ভাইরাস
-
বিদেশ ফেরত মোট ৩ হাজার ৫৩৬ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে, ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে আরো ৩ হাজার ২২৫ জনকে
-

সাতক্ষীরায় নারায়নগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিনই আসছে শত শত ইটভাটা শ্রমিক : আতংকে সাধারন জনগন, জেলার প্রবেশদ্বারে বসানো হয়েছে চেকপোষ্ট
স্টাফরিপোটার ঃ সাতক্ষীরায় করোনা পরিস্থিততি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার প্রতিটি প্রবেশদ্বারে বসানো হয়েছে আইন শৃংখলা বাহিনীর চেকপোষ্ট। কিন্তু এই চেকপোষ্ট উপেক্ষা করে রাতের আধারে ট্রাক যোগে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, মাদারীপুর, শরিয়তপুর,বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিনই শত শত ইটভাটা শ্রমিক ঢুকছে এ জেলায়। জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে গত এক সপ্তাহে প্রায় ১০ হাজারের মত ইটভাটা শ্রমিক তাদের নিজ বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগর, কালিগঞ্জ ও আশাশুনিসহ বিভিন্ন উপজেলায় প্রবেশ করেছে। এর ফলে সাধারন মানুষের মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে। আজ বুধবার ভোরেও সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ট্রাকযোগে প্রবেশ করেছে দুই শতাধিক ইটভাটা শ্রমিক।
যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যারা ঢাকা, নারায়নগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাতক্ষীরায় আসছেন তাদের স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হচ্ছে।
সম্প্রতি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহ থেকে প্রায় শতাধিক ইটভাটা শ্রমিক নিয়ে আসা তিনটি ট্রাক চালককে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন দেবহাট উপজেলা প্রশাসন। -
সাতক্ষীরায় বিদেশ ফেরত আরো ১০ জনসহ মোট ৩ হাজার ৫০২ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে, জেলার মোট ১৭০ জনের নমুনা সংগ্রহ
স্টাফ রিপোটার ঃ সাতক্ষীরায় বিদেশ ফেরত আরো নতুন ১০ জনসহ মোট ৩ হাজার ৫০২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ছাড় পত্র দেয়া হয়েছে আরো ২ হাজার ৪১ জনকে। এছাড়া মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের আসোলেশনে রয়েছে ৩ জন।
এদিকে, সাতক্ষীরা জেলা থেকে মোট ১৭০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট ইতিমধ্যে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পৌঁছেছে। ১৬ টি রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে। বাকীদের রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। -

সাতক্ষীরাতে জেলার বাইরের জেলা থেকে আসা মানুষদের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতকরন
প্রেস নোট:সাতক্ষীরা জেলার প্রতিটি উপজেলায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং সহকারী কমিশনারদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং আনসারের সমন্বয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতকরন ও অভিযান আরো জোরদার করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলাতে বাইরের জেলা থেকে আসা মানুষের মধ্যে ১৩৫৮ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এবং ৪৭৩৪ জনকে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১৬ জন, শ্যামনগর উপজেলায় ৩৫০ জন, কালীগঞ্জ উপজেলায় ৯৫২ জন এবং আশশুনি উপজেলায় ৪০ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।
সীমান্তে চেক পোস্ট বসানো হয়েছে।যে সকল মানুষ লক ডাউন উপেক্ষা করে বিভিন্ন জেলা থেকে সাতক্ষীরা জেলা সীমান্তে আসছে তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া অমানবিক । যারা ফিরে আসছেন তাদের প্রাতিষ্ঠানিক এবং হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৩৫৮ জনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। -

অসহায় মানুষদের মাঝে টাটকা শাক সবজি বিতরণ করলেন সুলতানপুর কাঁচা বাজার সমিতির মেম্বার আব্দুর রহিম বাবু
নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার সুলতানপুর কাঁচা বাজার সমিতির মেম্বার ও সুলতানপুর বাদশাহ ফয়সাল জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রহিম বাবু’র পক্ষ থেকে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে গৃহবন্দী নিম্নবিত্ত-দরিদ্র মানুষদের মাঝে টাটকা শাক সবজি বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার (১৩ এপ্রিল) বিকালে সাতক্ষীরা পৌরসভার ০৪ নং ওয়ার্ডের সুলতানপুর মল্লিক বাড়ির মাঠে খেটে খাওয়া নিন্মবিত্ত পরিবারের মাঝে ্এ শাক সবজি বিতরণ করা হয়।
সুলতানপুর কাঁচা বাজার সমিতির মেম্বার ও সুলতানপুর বাদশাহ ফয়সাল জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রহিম বাবু’র পক্ষ থেকে প্রাণঘাতি নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে নিম্নবিত্ত মানুষ যারা কর্মহীন ও গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে সেইসব ৩শ ৫০টি পরিবারকে মিষ্টি কুমড়া, টমেটো, লাল বিটকপি ও কাঁচা ঝাল বিতরণ করা হয়। শাক সবজি বিতরনের শুরুতে সুলতানপুর মল্লিক বাড়ির মাঠে উপস্থিত কিছু পরিবারের সদস্যদের হাতে এইসব সবজি তুলে দেওয়া হয়। সরকারি নির্দেশনা মেনে করোনার সংক্রমণ ঝুঁকি রোধে জনসমাগম না করে অল্পসংখ্যক পরিবারকে কার্ড দিয়ে হাজির করা হয়। এরপর তালিকা অনুযায়ী সবার বাড়িতে টাটকা শাক সবজি পৌছে দেওয়া হয়। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে কয়েক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে সাধারণ মানুষের উপার্জনের সকল পথ। এ দূঃসময়ে টাটকা শাক সবজি পেয়ে অসহায় মানুষ সুলতানপুর কাঁচা বাজার সমিতির মেম্বার ও সুলতানপুর বাদশাহ ফয়সাল জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রহিম বাবু’র জন্য মন খুলে দোয়া করতে করতে বাড়িতে ফিরে যান। এসময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা পৌরসভার ০৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী ফিরোজ হাসান, সুলতানপুর বাদশাহ ফয়সাল জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি মীর হাবিবুর রহমান বিটু ও সীমান্ত কলেজের শিক্ষক শাহাজান সরদার সহ এলাকার স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। -

জেলা প্রশাসকের করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চলমান কার্যক্রমের বিষয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি
প্রেস নোট
আজ ১২ এপ্রিল সাতক্ষীরা জেলার প্রতিটি উপজেলায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং সহকারী কমিশনারদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং আনসারের সমন্বয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতকরন ও অভ্যিান আরো জোরদার করা হয়েছে।
গত ২-৩ দিনে নারায়নগঞ্জ, মাদারিপুর এবং শরিয়তপুর থেকে সেখানে ঘোষিত লক ডাউনের মধ্যেও ৩ হাজারের মত মানুষ সাতক্ষীরা জেলাতে এসেছে। এদের মধ্যে ৭৮৪ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এবং ২০৫০ জনকে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং আনসার ব্যাটালিয়নের সমন্বয়ে টহল জোরদার করা হয়েছে। সীমান্তে চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। যে সকল মানুষ লক ডাউন ব উপেক্ষা করে বিভিন্ন জেলা থেকে সাতক্ষীরা জেলা সীমান্তে আসছে তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া অমানবিক। যারা ফিরে আসছেন তাদের প্রাতিষ্ঠানিক এবং হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
এরপরও সরকারি আদেশ, নির্দেশ, উপেক্ষা করে মানুষ ঘর হতে বেরিয়ে আসছে। এর ফলে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। ঘরে থাকতে হবে। অন্যকে সচেতন করতে হবে। ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। ফিরে আসা সকল মানুষের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতের পাশাপাশি তাদের সাথে মানবিক আচরণ করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
এছাড়া, তথ্য অধিদপ্তরের একটিসহ মোট ৩টি সচেতনতামূলক মাইকিং প্রতিনিয়ত করা হচ্ছে এবং শতভাগ হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান ছাড়া অন্যসব দোকান বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এ জেলাকে করোনা ঝুঁকি মুক্ত রাখতে জেলার সাথে পার্শ্ববর্তী জেলার সকল সীমান্ত এবং আন্ত: উপজেলা সীমান্ত জরুরী সেবা ব্যতীত (যেমনঃ রোগীবাহী গাড়ী, ঔষধ পণ্যবাহী গাড়ী ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মালামালবাহী গাড়ী) সকল প্রকার যানবাহন ও জনচলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে। অমান্যকারীর বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
গত ৬ এপ্রিল,২০২০ তারিখে ভারত থেকে থেকে আসার জন্য ১৩ জনকে সাতক্ষীরা যুব ভবনে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসক সার্বক্ষণিক তাদের খোজখবর নিচ্ছেন। জেলা প্রশাসন থেকে তাদের খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করা হচ্ছে। তারা সকলেই সুস্থ আছেন।
সাতক্ষীরা থেকে করোনা টেস্টের জন্য এ পর্যন্ত ১৪৩ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছে। ৯ জনের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। আশার কথা হলো সবাই করোনা নেগেটিভ।
করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শেণি-পেশার মানুষ যারা ওয়ার্ড-ইউনিয়ন পর্যায়ে তালিকাভুক্ত হতে সংকোচবোধ করছে কিন্তু খাদ্য সংকট আছেন তাদের নাম, ঠিকানা এবং মোবাইল নাম্বারসহ এসএমএস এর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক নিজে তাদের সাথে যোগাযোগ করছেন। রাতে গোপনে তাদের বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী পৌছে দেওয়া হচ্ছে। “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার” শিরোনামে ঘরে ঘরে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ মোটরসাইকেল দল। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে প্রাপ্ত ২৩ মধ্যবিত্ত পরিবারকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া, আমতলা, মধুমালার ডাংগী, ব্রহ্মরাজপুর, ও কুখরালি বলফিল্ড এলাকার এ সকল পরিবারকে উপহার পৌঁছে দেয়া হয়। ইতিপূর্বে জেলা প্রশাসকের নম্বরে এসএমএস থেকে প্রাপ্ত ২৭৫টি পরিবারের মাঝে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিটি উপজেলায় ইউনিয়ন ভিত্তিক দুস্থ ও সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের বাহিরে থাকা গরীব মানুষের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌছে দেয়া হচ্ছে। ত্রাণসামগ্রী বিতরণের ক্ষেত্রে নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় থেকে পাওয়া মোট বরাদ্দ থেকে ইতোমধ্যে উপজেলা, পৌরসভার অনুকূলে ৬০০ টন চাল এবং ২০ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌরসভার মেয়রগণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাধ্যমে তালিকা প্রস্তুত করে এই ত্রাণ সহায়তা কর্মহীন হয়ে পড়া দুস্থ অসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে উপজেলা ও পৌরসভার ৪২,৫০০ পরিবারের মাঝে সরকারি ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলায় হিজড়া জনগোষ্ঠীর ৭০ জন সদস্যের সমাজ কল্যাণ তহবিল হতে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। সকল সরকারি ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে সকলকে ব্যাগের গায়ে “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার” কতাটি লিখে দেয়া হচ্ছে।সাতক্ষীরা জেলায় বরাদ্দকৃত ত্রাণ সহায়তা উপজেলা ও পৌরসভাওয়ারী বন্টন করে দেয়া হয়েছে। সাতক্ষিরা সদর উপজেলায় ৯১ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৪,৬৩,৫০০/- টাকা, কলারোয়া উপজেলায় ৬৭ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৩,৩০,০০০/- টাকা, তালা উপজেলায় ৭৩ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৩,৫৪,০০০/- টাকা, আশাশুনি উপজেলায় ৭২ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৩,৮৪,০০০/- টাকা, দেবহাটা উপজেলায় ৪৯ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২,৫৭,০০০/- টাকা, কালিগঞ্জ উপজেলায় ৭১ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৩,৬১,৫০০/- টাকা, শ্যামনগর উপজেলায় ৮১ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৪,১৫,০০০/- টাকা, সাতক্ষীরা পৌরসভা ৭০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৩,৭৭,০০০/- টাকা এবং কলারোয়া পৌরসভা ২৬ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১,০৮,০০০/- টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
মসজিদে নামাজ ও জামায়াতের বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা সর্বসাধারণের মধ্যে প্রচারের জন্য উপপরিচালক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, সাতক্ষীরাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচারনা চালাচ্ছে।
জেলা প্রশাসক জেলার জনপ্রতিনিধি মাননীয় সংসদ সদস্যবর্গের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে জেলার পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে আলোচনা এবং পরামর্শ গ্রহণ করে করোনা মোকাবেলায় সর্বাত্মক কর্মসূচী বাস্তবাযন করে চলেছেন। এছাড়া, জেলা সদরের সিনিয়র সিটিজেনদের সাথে নিয়মিত ফোনে খোঁজ নিচ্ছেন এবং তাদেরকে ঘরের বাইরে না যেতে বিশেষ অনুরোধ করছেন।
সরকারি ত্রাণের তালিকা এবং বিতরণে অনিয়ম স্বজনপ্রীতি ও দূর্ণীতি হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং দুর্নীতি দমন আইনে মামলা করা হবে। এছাড়া, দোকান খুলে দেয়ার কথা বলে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী দোকানদারদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঘরে থাকুন, বার বার সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন, নিরাপদে থাকুন। আপনি ঘরে থাকলে ভালো থাকবে আপনার পরিবার, ভালো থাকবে জাতি, ভালো থাকবে দেশ।
জনস্বার্থে সকল কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
-
বিদেশ ফেরত ৯৮ জনসহ মোট ৩ হাজার ৪৭৯ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে, ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে আরো ১ হাজার ৪৪৬ জনকে, জেলার মোট ১৪১ জনের নমুনা সংগ্রহ
নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরায় বিদেশ ফেরত আরো নতুন ৯৮ জনসহ মোট ৩ হাজার ৪৭৯ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ছাড় পত্র দেয়া হয়েছে আরো ১ হাজার ৪৪৬ জনকে। এছাড়া মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের আসোলেশনে রয়েছে ৩ জন।
এদিকে, সাতক্ষীরা জেলা থেকে মোট ১৪১ জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ৯ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট ইতিমধ্যে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পৌঁছেছে। ৯ টি রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে। বাকীদের রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। -

জেলার জন্য অতিরিক্ত ত্রাণ বরাদ্ধ চাওয়া হল ভিডিও কনফারেন্সে
মাহফিজুল ইসলাম আককাজ ঃ বর্তমান করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ পরিস্থিতি নিয়ে খুলনা ও বরিশাল বিভাগীয় জেলা সমূহের সাথে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ১০টায় ভিডিও কনফারেন্স শুরু হয়। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বাংলাদেশ সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দু”টি বিভাগের জেলা ওয়ারী ৬নং সিরিয়ালে সাতক্ষীরা জেলার করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন, জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আহমেদ।
সাতক্ষীরা জেলার ২২ লক্ষ মানুষের জন্য ত্রাণ বেশি বরাদ্ধের দাবী জানানো হয়, চিংড়ি প্রধান জেলার চিংড়ি রপ্তানী সমস্য ও জেলা দুগ্ধ খামারীদের দুধ বিত্রয় সমস্যা ভিডিও কনফারেন্সে তুলে ধরা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সদর ০২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, তালা-কলারোয়া ০১ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর লে. কর্ণেল মো. ফারহান মনির, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবু, পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. কাজী হাবিবুর রহমান, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের তত্বাবধায়ক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগ সাতক্ষীরা’র উপপরিচালক হুসাইন শওকত, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. বদিউজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এম এম মাহমুদুর রহমান প্রমুখ। -
সাতক্ষীরায় বিদেশ ফেরত ৯৫ জনসহ মোট ৩,৩৮১ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে, ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে আরো ১,৩৫০ জনকে, মোট নমুনা সংগ্রহ ১২০ জনের
সাতক্ষীরায় বিদেশ ফেরত আরো নতুন ৯৫ জনসহ মোট ৩ হাজার ৩৮১ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ছাড় পত্র দেয়া হয়েছে আরো ১ হাজার ৩৫০ জনকে। এছাড়া আসোলেশনে রয়েছে ৫ জন। এর মাধ্যে সাতক্ষীরা কারাগার আাইসোলেশনে ৩ জন ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে রয়েছে দুই জন।
এদিকে, সাতক্ষীরা জেলা থেকে মোট ১২০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ৯ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট ইতিমধ্যে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পৌঁছেছে। ৯ টি রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে। বাকীদের রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। -
ওদের জরিমানা নয়, কোয়ারেন্টাইন মানতে বাধ্য করাতে হবে ॥ এম কামরুজ্জামান ॥
করোনার ভয়াল তান্ডবে পৃথিবী এখন মৃত্যুর অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করছে। পৃথিবীজুড়ে কান্না আর লাশের মিছিল ! লাশ রাখার জায়গা নেই। এমন মর্মান্তিক মৃত্যু যেনো প্রিয়জনের মৃত্যুতে কান্নারও সুযোগ নেই। সন্তানের কাছে মা যায় না। সন্তান যায় না মার কাছে। দাফনে এতো আত্মীয় বন্ধু পরিচিতজন কেউ নাই ! অপরিচতরাই শেষ বিদায় দিচ্ছেন। ভয়ে বাকরুদ্ধ শোকস্তব্ধ গোটা পৃথিবী।
বাংলাদেশও আতঙ্কের বাইরে নয়। শক্তিশালী ভাইরাস করোনা আস্তে আস্তে বাংলাদেশকেও গ্রাস করতে শুরু করেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। মৃত্যু থেমে নেই। করোনা থেকে বাঁচতে চারিদিকে যখন একের পর এক ঘোষিত, অঘোষিত লকডাউন তখনও খেটেখাওয়া অনেক মানুষ তার প্রিয়জনদের সান্নিধ্য পেতে নিজের কর্মস্থল ছেড়ে ছুটে চলেছে। কোন ভাবেই তাদেরকে থামানো যাচ্ছে না। অবিরাম ছুটে চলা ।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মোস্তফা কামাল গত ৮ এপ্রিল এক বিজ্ঞপ্তিতে করোনা আক্রান্ত জেলা থেকে যাতে কোন মানুষ সাতক্ষীরাতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য জেলার সমস্ত প্রবেশপথ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। পণ্যবাহী ট্রাক,জরুরী মালামাল সরবরাহ ছাড়া সবই বন্ধ। এ আদেশ জারির পর ওই দিনই সাতক্ষীরা-যশোর, সাতক্ষীরা-খুলনা সড়কসহ জেলার সকল প্রবেশমুখে বসানো হয়েছে পুলিশের পাহারা। কিন্তু আইন প্রয়োকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে গত ৩/৪ দিন ধরে ঢাকা, নারায়গঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন করোনা আক্রান্ত জেলা থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষ সাতক্ষীরাতে প্রবেশ করছে। কেউ ট্রাকেই উপর ড্রামের ভিতর লুকিয়ে, কেউ ট্রাকে পণ্য সেজে, কেউবা এ্যামম্বুলেন্সের ভিতর রোগি সেজে ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে বাড়িতে ফিরছেন। বাড়িতে পৌছানোর আগেই পথিমধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে শত শত মানুষ আটকও পড়ছে।
গত বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার সখিপুরে দুই ট্রাক ভর্তি ৭৬ জন , শুক্রবার ৫টি ট্রাক ও ১টি বাস ভর্তি প্রায় দু’শ ঘরমুখো মানুষকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। আজ শনিবার সকালে খবর এলো দেবহাটায় আরও ২ ট্রাক ভর্তি মানুষকে স্থানীয় জনতা আটক করে প্রশাসনের কাছে দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে এদের বেশির ভাগ মানুষের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি, শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। দরিদ্র ও অসহায় এসব মানুষগুলো কাজের সন্ধানে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়েছিল। করোনার কারণে তারা কর্মহীন হয়ে স্ত্রী, ছেলে-মেয়ের কাছে ফিরছে।
কথা হয় এদের কয়েক জনের সাথে । তারা জানালো- এলাকাতে কাজ নেই। তাই প্রতিবছর নভেম্বর মাসে আইলা দুর্গত শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ থেকে লক্ষাধিক মানুষ ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলাতে ইটের ভাটায় তারা কাজ করতে যায়। সেখানে টানা ৫/৬ মাস কাজ করার পর এপ্রিল মাসের শেষের দিকে অথাবা মে মাসের প্রথম দিকে আবার গ্রামে ফিরে আসে। ঈদুল ফিতরের আগেই তারা বাড়েিত ফিরে স্ত্রী, সন্তানসহ স্বজনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। কিন্তু এবার করোনার থাবা তাদের সেই আনন্দ ম্লান করে দিয়েছে। করোনার কারণে সব কাজ বন্ধ। মালিকরা তাদের ঠিকমত বেতন বা মজুরির টাকা পরিশোধ করেনি। হাতে-গাটি যা ছিল তাই নিয়েই তারা স্ত্রী, সন্তানদের কাছে ফিরছে। পরিবহন বন্ধ, যে যেভাবে পারছে সেভাবেই গ্রামে ছুটে চলেছে। তাদের এই যাত্রা অমানবিক হলেও তারা চায় পরিবার পরিজনের কাছে ফিরতে।
কাজের সন্ধানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া মানুষগুলো এই মুহুর্তে এলাকায় ফিরে আসাটা রীতিমতো আতঙ্কের। করোনা ঝুকি বাড়াচ্ছে এতে কোন সন্দেহ নেই। খরবটি আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের, উৎকণ্ঠার। কিন্তু মানবিকও বটে। তারা কোথায় যাবে। স্ত্রী সন্তানেরা গ্রামে। কর্মস্থলে থেকেও কর্মহীন, খাদ্য সংকট। পরিবার পরিজন গ্রামে অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। গণপরিবহন বন্ধ তাতে কি ! যেভাবেই হোক তাদের ফিরে আসা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।
জীবন ও জীবিকার তাড়নায় ফিরে আসা এই মানুষগুলোকে নিয়ে ফেসবুকে নানা কথাবার্তা, মন্তব্য চোখে পড়ছে। কেউ বলছেন তাদেরকে জরিমানা করা হোক। কেউ বলছেন আইনের আওতায় আনা হোক। আবার কেউ কেউ বলছেন এদেরকে সাতক্ষীরার প্রবেশদ্বারে আটকিয়ে রাখা হোক। আবার কেউ বলছেন দরিদ্র এই মানুষগুলোকে আটকিয়ে রাখাটা অমানবিক হবে। নানা জনের নানা মন্তব্য, নানা কথা। কিন্তু এদের জরিমানা বা শাস্তির দেয়ার আগে তাদের মানবিক বিষয়টিও ভেবে দেখা দরকার। কর্মহীন মানুষগুলো কোথায় যাবে ?
জরিমানা বা শাস্তি দেয়া বড় কথা নয়, এই মুহুর্তে প্রয়োজন তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন বা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন শতভাগ নিশ্চিত করা। যারা গ্রামে ফিরছে তারা হোম কোয়ারেন্টাইন একেবারেই মানছে না। প্রতিদিনই এ ধরনের খবর আসছে পত্রিকা অফিস গুলোতে। কোয়ারেন্টাইন মানার ক্ষেত্রে শুধু প্রশাসন নয়, আশপাশের মানুষ গুলোকেও সচেতন হতে হবে। যারা এখনো বাইরের জেলা থেকে সাতক্ষীরাকে প্রবেশ করছে তাদের বাড়িতে বাড়িতে লাল পতাকা উড়িয়ে দিতে হবে। যারা কোয়ারেন্টাইন মানছে না তাদেরকে মানাতে বাধ্য করাতে হবে। এটা শুধু প্রশাসনের উপর নির্ভর করে থাকলে চলবে না।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন , পুলিশ প্রশাসন তাদের সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছে মানুষজনকে ঘরে ফিরাতে। কিন্তু প্রশাসনের লোক চলে আসার পর আবারও যা-তাই অবস্থা। আমাদেরকে আর ঘুমিয়ে থাকলে চলবে না, কে কি মনে করল্লো তা দেখার সময় নেই। হাতে সময় একেবারেই কম। এখুনি প্রতিটি গ্রাম-মহাল্লার মানুষকে দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি এলাকার জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ইমাম,পরোহিত, এলাকার সচেতন মহাল ও যুব সমাজকে দায়িত্ববান হতে হবে।
নোভেল-১৯ করোনাভাইরাস একটি শক্তিশালী সংক্রমন ব্যাধী। মানুষকে ঘরের ভিতর রাখাই এ রোগের একমাত্র প্রতিষেধক। বিশ্ব গবেষকরা করোনো নামের এই মরণ ভাইরাসের ওষুধ এখনো তৈরী করতে পারেনি। বিধায় আমাদের স্ব স্ব অবস্থান থেকে করোনা প্রতিরোধে এখুনি ঝাপিয়ে পড়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই।
আজ পর্যন্ত যারা বিদেশ বা সাতক্ষীরা জেলার বাইরে থেকে এলাকায় প্রবেশ করেছে বা করছে তাদের দিকে কঠোর নজরদারি শুরু করুন। আসুন আমরা সাবই মিলে তাদের বাড়িতে লাল পতাকা উড়িয়ে দিয়ে ঘরের ভিতর রাখা নিশ্চিত করি।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক জনাব এস এম মোস্তফা কামাল ও পুলিশ সুপার জনাব মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে সবিনয় বলতে চাই, করেনা আক্রান্ত জেলা থেকে এখনো যারা প্রবেশ করছে তাদেরকে ১৪ দিনের আগে বাড়িতে ফিরতে দেয়াটা ঠিক হবে না। তাদের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিক করুন। কোন কারনে সেটা সম্ভব না হলে হোম কোয়ারেন্টাইন শতভাগ নিশ্চিত করতেই হবে। আর এলকাবাসীর কাছে কড়জোড়ে মিনতি, আদেশ অমান্যকারীদের ব্যাপারে কঠোর হন, প্রশাসনকে তথ্য দিন, করোনা রুখতে সহযোগিতা করুন। -
জেলায় বিদেশ ফেরত আরো নতুন ৮১ জনসহ মোট ৩ হাজার ২৮৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে : আসোলেশনে রয়েছে ৫ জন
সাতক্ষীরায় বিদেশ ফেরত আরো নতুন ৮১ জনসহ মোট ৩ হাজার ২৮৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ছাড় পত্র দেয়া হয়েছে আরো ১ হাজার ২৬৫ জনকে। এছাড়া আসোলেশনে রয়েছে ৫ জন। এর মাধ্যে সাতক্ষীরা কারাগার আাইসোলেশনে ৩ জন ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে রয়েছে দুই জন।
এদিকে, সাতক্ষীরা জেলা থেকে মোট ১১৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ৮ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট ইতিমধ্যে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পৌঁছেছে। ৮ টি রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে। বাকীদের রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি।
-
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের । নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৯৪ জন
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের । নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৯৪ জন। ফলে দেশে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের দিক দিয়ে একদিনে এ সংখ্যাটি সর্বোচ্চ।এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যু হলো ২৭ জনের। আর মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪২৪ জনে।
Home » করোনায় দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৬ জনের মৃত্যু জাতীয়ফিচার
করোনায় দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৬ জনের মৃত্যু
এপ্রি ১০, ২০২০ 0 মন্তব্য 183 ভিউ 102 Shares
Share
Tweet
Share
Share
অনলাইন ডেস্ক:
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৯৪ জন।
এতে দেশে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের দিক দিয়ে একদিনে এ সংখ্যাটি সর্বোচ্চ।এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যু হলো ২৭ জনের। আর মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪২৪ জনে।
শুক্রবার বেলা আড়াইটার পর অনলাইনে লাইভ ব্রিফিংয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ১৮৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
ফ্লোরা আরও জানান, নতুন করে যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৬৯ জন ও নারী ২৫ জন। এছাড়া নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার ৩৭ জন ও নারায়ণগঞ্জের ১৬ জন। বাকিরা অন্য জেলার।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার করোনায় একজনের মৃত্যু ও ১১২ জনের আক্রান্ত হওয়ার কথা জানায় আইইডিসিআর।
প্রসঙ্গত দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত (কোভিড-১৯) প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এক মাসের মধ্যে রোগীর সংখ্যা ৪০০ ছাড়াল।
-
কভিড-১৯ মোকাবিলায় আর্থিক বিষয়াবলিকভিড-১৯ মোকাবিলায় আর্থিক বিষয়াবলি-হাসান মেহেদী, জিয়াউল হক মুক্তা ও নুরুল আলম মাসুদ
কভিড-১৯ রোগে বিপর্যস্ত পৃথিবী। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী স্বাস্থ্য খাতে বার্ষিক মাথাপিছু আট লাখ ৩৯ হাজার টাকা বরাদ্দকারী যুক্তরাষ্ট্র, তিন লাখ ৩৬ হাজার টাকা বরাদ্দকারী যুক্তরাজ্য আর দুই লাখ ৩৩ হাজার টাকা বরাদ্দকারী ইতালিতে সংক্রমণের হার ও মৃত্যুর সংখ্যা দেখলেই পরিস্থিতির ভয়াবহতা বোঝা যায়। আর ইতোমধ্যে বাতিল হয়ে গেছে শক্তিশালী দেশগুলোর জোট জি-২০-এর সম্মেলন, জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন, অলিম্পিক গেমস ও বিশ্ব পরিবেশ সংরক্ষণ সম্মেলনসহ বহু আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সভা। বিশ্বের বেশিরভাগ সীমান্ত বন্ধ এবং দুই-তৃতীয়াংশ শহর হয় অবরুদ্ধ অথবা চলাচল সীমিত করা হয়েছে। পর্যাপ্ত খাদ্য, ওষুধ ও সুরক্ষা সরঞ্জাম দিতে গিয়ে উন্নত দেশগুলোই হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নকামী দেশগুলোর কথা ভাবাই যায় না। একটাই আশার কথা, সরকারি হিসাব অনুসারে আমাদের দেশে রোগটি একটু দেরিতে ছড়াচ্ছে। এই অতিরিক্ত সময়টুকু ব্যবহার করতে পারি কিনা, তার ওপরই নির্ভর করছে এই মহামারি আমাদের জন্য কতটা ভয়াবহ হবে।
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাব, স্বাস্থ্য সংশ্নিষ্ট অবকাঠামোর ঘাটতি ও বায়ুদূষণ আমাদের বড় পরীক্ষার সামনে ফেলতে পারে। এ ছাড়া কৃষিসহ অনানুষ্ঠানিক খাতে ব্যাপক জনগোষ্ঠী যারা খাদ্যের জন্য নিরন্তর লড়াই করে, তাদের স্বাস্থ্যসেবা ও খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার প্রস্তুতি না থাকলে পুরো জাতির সামনে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে। সামনের মাসগুলোয় ব্যাপক খাদ্যসংকট দেখা দিতে পারে বলে জাতিসংঘ ও বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা সতর্ক করেছে। নিকট ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা বিবেচনায় নিয়ে ইতোমধ্যে খাদ্য রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে অনেক দেশ। শুধু খাদ্য নয়, বরং শিল্পপণ্যের আমদানি-রপ্তানিও কমে যাচ্ছে। এরই মধ্যে গত তিন মাসে তিন লাখেরও বেশি প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছেন এবং নতুন শ্রমিক অভিবাসনও বন্ধ হয়ে গেছে; এ বছর মার্চ মাসে রেমিট্যান্স কমেছে ১৭ কোটি ডলার।
কিন্তু আস্থা রাখার মতো আছে অনেক কিছু। আমাদের আছে প্রধানমন্ত্রীর নেতেৃত্বে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যন্ত বিন্যস্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি, যা দুর্যোগ মোকাবিলায় পৃথিবীর সব থেকে শক্তিশালী নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। সারাদেশের কমিটিগুলোয় প্রায় দেড় লাখ দায়িত্বশীল ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি জড়িত। প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আপৎকালীন আশ্রয়কেন্দ্র আছে। এগুলোয় হাজারেরও বেশি রোগীকে আশ্রয় দেওয়া যায়। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখায় বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সুনাম আছে; অভ্যন্তরীণ দুর্যোগ মোকাবিলায়ও তাদের প্রাতিষ্ঠানিক অভিজ্ঞতা বিপুল। দেশের ৮১ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ রয়েছে, যা ভেন্টিলেটর ও জীবনরক্ষাকারী যন্ত্রপাতি চালাতে সাহায্য করবে। প্রতিটি ইউনিয়নে কমপক্ষে দু’জন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মী আছেন, যারা সামান্য প্রশিক্ষণেই দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর ভূমিকা নিতে পারবেন। উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছাড়াও আছে বড় আকারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যেখানে ইউনিয়ন থেকে আসা গুরুতর রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।
এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোতে নিবন্ধিত প্রায় তিন হাজার প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সারাদেশে ১০ হাজারেরও বেশি বেসরকারি সংগঠন রয়েছে- যাদের কর্মীদলে আছেন ১০ লক্ষাধিক পেশাগত কর্মী। চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা অপ্রতুল হলেও আমাদের আছে প্রায় দেড় কোটি শিক্ষিত তরুণ, যারা সামান্য প্রশিক্ষণ পেলে স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়ক হিসেবে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারেন। ইতোমধ্যে স্থানীয় এনজিও ও স্বেচ্ছাসেবীরা যতটুকু সামর্থ্য আছে তাই নিয়ে শ্রমজীবী সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও কিছু জাতীয়তাবাদী সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সহমর্মিতা দেখা যাচ্ছে। চীন ও কিউবা অনেক দেশে স্বাস্থ্যকর্মী ও জরুরি উপকরণ দিয়ে সাহায্য করেছে। বাংলাদেশও নিজের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও কভিড-১৯ মোকাবিলায় চীনকে আপৎকালীন সহায়তা করা ছাড়াও সার্ক তহবিলে ১৫ লাখ ডলার দিয়েছে। কভিড-১৯ চিকিৎসায় ব্যবহূত ভেন্টিলেটরের সূত্র উন্মুক্ত করে দিয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠান মেডট্রনিক। রোগ উপশমে কোনো অগ্রগতি হলে চিকিৎসকরা সারা দুনিয়াকে জানিয়ে দিচ্ছেন। টিকা আবিস্কারের প্রক্রিয়ার তথ্য উন্মুক্ত হওয়ায় টিকা উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারছেন সব দেশের বিজ্ঞানী।
কিন্তু কার্যকর উদ্যোগ নিতে রাষ্ট্রের প্রয়োজন জরুরি অর্থ। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নকামী দেশে যেখানে বাজেট ঘাটতি মেটাতে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা ঋণ নিতে হচ্ছে, সেখানে অতিরিক্ত অর্থ সংস্থান সত্যিই কঠিন। চলমান অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে মোট বরাদ্দ করা হয়েছে ২৫ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা; মাথাপিছু মাত্র এক হাজার ৫৬০ টাকা। অন্যান্য উপখাত ও প্রকল্পগুলো যোগ করলে এ ক্ষেত্রে মাথাপিছু বরাদ্দ দাঁড়ায় দুই হাজার ৯৫০ টাকা; যা ভারতে ৫ হাজার ৭৫৬ টাকা ও শ্রীলংকায় ১৩ হাজার ১৩ টাকা। শ্রীলংকার কথা বাদ দিই; এ সময়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সমান বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হলেও আমাদের স্বাস্থ্য খাতে অতিরিক্ত ৬৯ হাজার কোটি টাকা দরকার।
এ বছর খাদ্য খাতে বরাদ্দ রয়েছে চার হাজার ৫০৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বরাদ্দ রয়েছে ৯ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাত যুক্ত করলে মাথাপিছু ব্যয় দাঁড়ায় ৮৮৮ টাকা। ভারতে এই বরাদ্দের পরিমাণ তিন হাজার ৬২০ টাকা। দুর্যোগকালে দারিদ্র্যসীমার নিচের তিন কোটি ৪০ লাখ মানুষের জন্য ভারতের সমান বরাদ্দটুকু নিশ্চিত করতে হলেও এই খাতে আরও ১৪ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা প্রয়োজন।
এ বছর খাদ্য আমদানি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রেখে কৃষি খাত থেকেই খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় কিনা, সেটাও বিবেচনায় রাখতে হবে। কৃষি খাত দেশের সব থেকে বড় শ্রম খাতও বটে। এ খাতে বিনিয়োগের অর্থ চূড়ান্ত বিচারে স্থানীয় অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালু রাখতে ভূমিকা পালন করে। এ বছর কৃষি খাতে বরাদ্দ ১৪ হাজার কোটি টাকা মাত্র। প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ কৃষকের জন্য মাথাপিছু বার্ষিক বরাদ্দ মাত্র সাত হাজার ৮০৫ টাকা। বাজারের ধাক্কা সামলে কৃষক-পরিবারগুলোকে আউশ চাষে প্রণোদনা দেওয়ার জন্য সেচ, বীজ ও সারের জন্য সরাসরি ভর্তুকি দেওয়া দরকার। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কৃষক যে নতুন ফসল ঘরে তুলবে তার জন্য এখনই জরুরিভাবে ফসলের নূ্যনতম লাভজনক মূল্য ঘোষণার পাশাপাশি সরকারি ক্রয় কর্মসূচি ঘোষণা করতে হবে। সামগ্রিকভাবে কভিড-১৯ দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য অতিরিক্ত প্রায় এক লাখ কোটি টাকা দরকার।
এরই মধ্যে কভিড-১৯-এর সম্ভাব্য অভিঘাত মোকাবিলায় গত ১৬ মার্চ বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ৮৫০ কোটি টাকা (১০ কোটি ডলার) অনুদানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কাছে প্রস্তাব পেশ করে। গত ৩ এপ্রিল বিশ্বব্যাংক সাড়ম্বরে প্রচার করল, তারা বাংলাদেশকে ১০০ মিলিয়ন ডলার দিয়ে সাহায্য করছে। এ বিবৃতি ডাহা মিথ্যে। বিশ্বব্যাংকের এই সাহায্য কোনো অনুদান নয় বরং তাদের ঋণ ব্যবসার অংশ। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) থেকে সাধারণত বার্ষিক ০.৫ থেকে ১.৫ শতাংশ হারে ঋণ পাওয়া যায়। অথচ বিশ্বব্যাংক থেকে নেওয়া ৩০ বছর মেয়াদি দুর্যোগকালীন এই ঋণের সুদের হার ২ শতাংশ, যা সাধারণ ঋণের সর্বোচ্চ সুদের চেয়েও ০.৫ শতাংশ বেশি। এদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশকে তিন লাখ ডলার অনুদান অনুমোদন করেছে, যা দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩৫০টি পিপিই (পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট) কেনা যায়। এডিবি প্রদত্ত ঋণের পরিশোধযোগ্য সুদের হিসাব করলে এটি গরু মেরে জুতো দানের শামিল।
এডিবি, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফসহ বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক সংস্থাগুলোর কাছে বাংলাদেশের বর্তমান বৈদেশিক দেনার পরিমাণ প্রায় তিন লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা (৩৮.৪৮ বিলিয়ন ডলার), এ অর্থবছরে যার কিস্তি পরিশোধ করতে হবে ৫২ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। বিশ্বব্যাপী এই মহাদুর্যোগের সময় বৈদেশিক দেনার কিস্তি স্থগিত করে বিপুল আর্থিক ঘাটতি আংশিক জোগাড় করা সম্ভব। কোনো এক অসাবধান মুহূর্তে সেই পথও দেখিয়ে দিয়েছে স্বয়ং বিশ্বব্যাংক; পৃথিবীর শীর্ষ ২০টি ধনী দেশের (জি-২০) অনলাইন শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ এক যৌথ বিবৃতিতে গরিব দেশগুলোর ঋণের সুদ স্থগিত করার জন্য ধনী দেশগুলোর কাছে আহ্বান জানায়।
কভিড-১৯-এর ধাক্কায় বাংলাদেশের মতো অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য ঋণের কিস্তি শোধ করা কঠিন হবে বলে আশঙ্কা করেছে শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংগঠন ওইসিডি। জুবিলি ডেট মুভমেন্টের পক্ষ থেকেও বহুজাতিক, আঞ্চলিক ও দ্বিপাক্ষিক সংস্থাগুলোর কাছে ঋণের কিস্তি স্থগিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। আফ্রিকার অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকেও একই দাবি করা হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এ দাবিতে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একত্র হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে জাতীয় দুর্যোগ আইন কার্যকর করে ব্রাজিল অন্তত আগামী ছয় মাস কোনো বৈদেশিক দেনা শোধ করার সামর্থ্য নেই বলে ঘোষণা করেছে।
বৈদেশিক ঋণের সাড়ে ৫২ হাজার কোটি টাকার পাশাপাশি বাতিল করা উচিত জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর সক্ষমতা চার্জ (ক্যাপাসিটি চার্জ), যা এ বছরের বাজেট অনুযায়ী প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই ভাড়াভিত্তিক ও স্বাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো এই অর্থ নিয়ে যায়। বাংলাদেশের বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে সক্ষমতা আছে, তাতে এসব বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও বছরব্যাপী সরবরাহে ঘাটতি হবে না। ইতোমধ্যে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মেয়াদ ও কার্যক্ষমতা দুটোই ফুরিয়ে গেছে। দেশীয় সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর উচিত অন্তত আগামী ছয় মাস সব ব্যক্তিগত ঋণের সুদ ও কিস্তি স্থগিত করা। ইতোমধ্যে ইতালি, কানাডা, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলো এ ধরনের ঋণ পরিশোধ স্থগিত করেছে। বাংলাদেশের এনজিওগুলো মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরও) নির্দেশনায় ঋণ গ্রহীতাদের কাছ থেকে কিস্তি আদায় স্থগিত করেছে; এসব প্রতিষ্ঠান যেসব সূত্র থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তাদেরও উচিত দুর্যোগকালীন সময়ের সুদ ও কিস্তি মওকুফ করা।
বৈদেশিক ঋণ ও সক্ষমতা চার্জের সর্বমোট ৬৪ হাজার কোটি টাকা দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা, জরুরি খাদ্য সরবরাহ ও কৃষি খাতে সহায়তা করতে হবে। তার আগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের ২২ ধারা অনুযায়ী দেশে অতি দ্রুত ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করতে হবে, যা একই আইনের ৩২ ধারা অনুযায়ী সরকারকে বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহের অধিকার প্রদান করবে। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলোর সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা সংশ্নিষ্ট প্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে গঠিত কমিটিগুলো অবিলম্বে সক্রিয় করা প্রয়োজন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী, চিকিৎসক ও সব যন্ত্রপাতিসহ বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো দুর্যোগকালীন অধিগ্রহণ করে দক্ষতা ও কর্মক্ষমতা বিবেচনায় প্রাতিষ্ঠানিক বিচ্ছিন্নকরণ (আইসোলেশন), সঙ্গনিরোধ (কোয়ারেন্টাইন) বা পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ) হিসেবে ঘোষণা করা দরকার। ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, স্পেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক ছাড়াও বেসরকারি হোটেলও অধিগ্রহণ করেছে। কভিড-১৯-এর দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠার পর ন্যায্য ক্ষতিপূরণসহ সেগুলো মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কভিড-১৯ আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের আনতে হবে বড় আকারের বীমার আওতায়, যা তাদের আর্থিক নিরাপত্তা ও প্রণোদনা দেবে।
দেশের ইউনিয়ন ও উপজেলায়, এমনকি জেলা, বিভাগ ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে প্রস্তুতির জন্য দরকার ব্যাপক পরিমাণে সুরক্ষা সরঞ্জাম ও জীবনরক্ষাকারী যন্ত্রপাতি, যে ক্ষেত্রে চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোয় ঘাটতি আছে। সুরক্ষা সরঞ্জাম ও ভেন্টিলেটরের নির্মাণসূত্র উন্মুক্ত হওয়ায় যে কোনো বাংলাদেশি কোম্পানি এগুলো তৈরি করতে পারবে। ইতোমধ্যে বেসরকারি কোম্পানি ওয়ালটন ভেন্টিলেটর উৎপাদন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানিকে জরুরি ভিত্তিতে ভেন্টিলেটরসহ অন্যান্য সামগ্রী তৈরির কার্যাদেশ দেওয়া প্রয়োজন এবং এ ক্ষেত্রে যুদ্ধকালীন নিয়মানুবর্তিতা দেখানোর নির্দেশ দিতে হবে। অ্যাম্বুলেন্সের মানের কথা ভুলে গিয়ে দেশের ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে সম্ভাব্য জরুরি পরিবহন ব্যবস্থা, ব্যবহারযোগ্য অবকাঠামো, স্বেচ্ছাসেবীদের চিহ্নিত, তালিকা করা ও সংশ্লিষ্টদের ২-৩ ঘণ্টা মেয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার, যাতে জরুরি সময়ে সবাই মিলে ভূমিকা পালন করা যায়।
আশা করছি, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ব্যাপক আকারে ছড়াবে না কিন্তু আমরা অন্যান্য দেশের সবচেয়ে ভালো উদাহরণগুলো ব্যবহার করে খারাপ পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকব। তাহলেই দুর্যোগের পাশাপাশি মহামারি মোকাবিলায়ও বাংলাদেশ পৃথিবীতে উদাহরণ হয়ে থাকবে। এ জন্য বাংলাদেশে কভিড-১৯ সংক্রমণকে ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করে রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল ও সারাদেশে জেলা-উপজেলা-ইউনিয়নের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সক্রিয়করণের বিকল্প নেই।
হাসান মেহেদী, সদস্য সচিব, বাংলাদেশ বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোট
জিয়াউল হক মুক্তা, সাধারণ সম্পাদক, গ্রামীণ জীবনযাত্রার স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান (সিএসআরএল)
নুরুল আলম মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক, খাদ্যনিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি)সুত্র : সমকাল
-
তালায় করোনা সন্দেহে দুইজনের নমুনা সংগ্রহ
তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি ।।
সাতক্ষীরা তালায় এই প্রথম করোনা সন্দেহে দুই জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এই দুইজনই তালা উপজেলার খলিষখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা।
জানা গেছে, খলিষখালী গ্রামে জনৈক সহকারী ডাক্তার(৪২)ও জনৈকা বৃদ্ধ মহিলা(৮৫) বেশ কয়েক দিন যাবৎ জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। এ নিয়ে এলাকার জনমনে নানা প্রশ্ন ও গুজব ছড়িয়ে পড়লে তারা নিজ উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ফোনে করে জানান।
মঙ্গলবার (৭এপ্রিল)সকালে তালা উপজেলা স্বস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা খলিষখালী তাদের বাড়ীতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন।
নমুনা সংগ্রহ করে করোনা ভাইরাসের জীবানূ আছে কিনা তা পরিক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তারে পাঠানো হয়েছে বলে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।
তালা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: রাজীব সরদার জানান,খবর পেয়ে মেডিকেল টিম নিয়ে নমুনা সংগ্রহের জন্য আমার তাদের বাড়ীতে গিয়েছিলাম। কভিড-১৯ এর নমুনা সংগ্রহ করে টেষ্ট করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তারে পাঠিয়েছি। তিনি বলেন, তারা দু’জনই এখন হোম কোয়ারন্টিনে আছেন। এ সময় তিনি সকলে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়া স্বাস্থ্য কর্মীরা সবসময় আপনাদের পাশে আছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে খলিষখালী ইউপি চেয়ারম্যান সাংবাদিক মোজাফফর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,বিষয়টা আমি শুনেছি। আমি সাতক্ষীরা সিভিল সার্জানের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি। তবে এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এসময় তিনি আতঙ্কিত না হয়ে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য ইউনিয়নবাসীকে অনুরোধ করেছেন । -
সাতক্ষীরায় বিদেশ ফেরত আরো ৬০ জনসহ মোট ৩ হাজার ১১১ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে, ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে আরো ১ হাজার ১১২ জনকে
নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরায় বিদেশ ফেরত আরো নতুন ৬০ জনকে কোয়ারেন্টাইনের আওতায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৬ জন হোম ও ১৩ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে এবং এক জন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আইসোলেশনে। এনিয়ে, এ পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ১১১ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এছাড়া ছাড় পত্র দেয়া হয়েছে আরো ১ হাজার ১১২ জনকে। এদিকে, সাতক্ষীরা থেকে ২৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় আইইডিসিআরের কাছে পাঠানো হয়েছে।
-
সাতক্ষীরায় বিদেশ ফেরত আরো ৫৪ জনসহ মোট ৩ হাজার ৩২ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে, ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ১ হাজার ৩০ জনকে, আইসোলেশনে এক ভোমরা ইমিগ্রেশন দিয়ে অবশেষে পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতায়াত বন্ধ
নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরায় বিদেশ ফেরত আরো নতুন ৫৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় আনা হয়েছে। এনিয়ে, এ পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ৩২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এছাড়া ছাড় পত্র দেয়া হয়েছে আরো ১ হাজার ৩০ জনকে। এদিকে, সদর উপজেলার শিয়ালডাঙ্গা গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে মালয়েশিয়া ফেরত কামরুজ্জামান (২৬) নামের এক যুবক দুপুরে জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি হয়েছেন। তার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে, সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন দিয়ে অবশেষে আজ সোমবার সকাল থেকে সকল প্রকার পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতায়াত বন্ধ করা হয়েছে। এতে সাতক্ষীরার সাধারন মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও করোনা আতংক কমবে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের অধিনাক লেঃ কর্ণেল গোলাম মহিউদ্দীন খন্দকার জানান, ভোমরা ইমিগ্রেশন দিয়ে আপাতত আজ থেকে সকল প্রকার পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতায়াত বন্ধ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে। তবে, যারা ভারতে গিয়ে আটকে আছেন তারা শুধুমাত্র বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করতে পারবেন বলে এই বিজিবি কর্মকর্তা আরো জানান। তিনি আরো জানান, কেউ যাতে অবৈধ পথেও ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য সীমান্ত এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারী করা হয়েছে। -

সাতক্ষীরায় করোনা পজিটিভ রোগীদের চিকিৎসা ডক্টরস ডরমেটরিতে, সন্দেহভাজনদের চিকিৎসা মেডিকেলের ৬তলায়
করোনা পজিটিভ রোগীদের ডক্টরস ডরমেটরিতে আলাদাভাবে চিকিৎসা দেয়া হবে। এছাড়া করোনা সন্দেহভাজন রোগীদের আইসোলেশনের জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের ৬তলা ব্যবহৃত হবে। আইসিইউ ইউনিট পরিচালনার জন্য ডাক্তার, নার্স এবং স্টাফদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
রোববার সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে করোনো ভাইরাস প্রতিরোধে অনুষ্ঠিত এক জরুরী সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সভায় জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রফিকুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম ও এবং অন্যান্য ডাক্তারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। -
সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় বিদেশ ফেরত আরো ৬৩ জনসহ মোট ২ হাজার ৯৯৭ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে, ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ৯১৬ জনকে
নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় বিদেশ ফেরত আরো নতুন ৬৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় আনা হয়েছে। এনিয়ে, এ পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৯৯৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এছাড়া ছাড় পত্র দেয়া হয়েছে আরো ৯১৬ জনকে।
এদিকে, ভোমরা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন দিয়ে প্রতিদিনই ভারত থেকে ঢুকছে শত শত বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী। গতকাল শনিবারও ৪৫ জন বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী দেশে ঢুকেছেন। যার বেশীর ভাগই বাড়ি সাতক্ষীরায়। সমগ্র দেশ জুড়ে যখন চলছে অঘোষিত লক ডাউন ঠিক তখনই ভোমরা ইমিগ্রেশন দিয়ে ঢুকছে শত শত বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী। এতে সাধারন মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও আতঙ্ক বাড়ছে। তবে, ভারতে লক ডাউনের কারনে ভারতীয়রা বাংলাদেশ থেকে তাদের নিজ দেশে ফিরতে পারছেননা বলে জানিয়েছেন ইমিগ্রেশন ওসি বিশ্বজিত সরকার। তবে, ভোমরাস্থল বন্দরসহ সীমান্ত এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারী করেছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীরা।