শ্যামনগর প্রতিনিধি ঃ গতকাল পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ এলাকার কালিন্দি নদী সংলগ্ন বকচরা নামক স্থানে অভিযান চালিয়ে একটি দেশি তৈরী পাইপগান আট রাউ- ১২ বোর বন্দুকের গুলি ও একটি নৌকা উদ্ধার করেছে শ্যামনগর উপজেলার কৈখালি বি জি বি রিভারাইন কোম্পানির সদস্যরা। কৈখালি আর বি জি কোম্পানি কমা-ার নায়েক সুবেদার খান মফিদুল ইসলাম জানান যে, নিজস্ব গোয়েন্দা মারফত সংবাদ পেয়ে সিও লেফটেন্যাণ্ট কমা-ার এম মিল্টন কবির এর নির্দেশে গত ২৩ নভেম্বর রাত ১১ টার দিকে কালিন্দি নদী সংলগ্ন বকচরা নামক স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় আর বি জি সদস্যদের উপস্থিতি টেরপেয়ে নৌকায় অবস্থানরতরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় । পরিতক্ত অবস্থায় একটি দেশি তৈরী পাইপগান ৮ রাউ- ১২ বোর বন্দুকের গুলি ও একটি নৌকা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত অস্ত্র গুলি শ্যামনগর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি উপজেলার নিলডুমুর বি জি বি রিভারাইন কমা-ার, লেফটেন্যাণ্ট কমা-ার এম, মিল্টন কবির নিশ্চিত করেছেন।
Category: শ্যামনগর
-
শ্যামনগরে অস্ত্র গুলি ও নৌকা উদ্ধার
-
সড়ক দূর্ঘটনায় মাদ্রাসা ছাত্রের করুন মৃত্যু
শ্যামনগর প্রতিনিধি : শ্যামনগরে সড়ক দূর্ঘটনায় মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণির (দাখিল) ছাত্র ইলিয়াস হোসেন (১৬) এর করুন মৃত্যু হয়েছে। সে শ্যামনগর উপজেলা সদরের নকিপুর গ্রামের শেখ নজরুল ইসলাম (ষ্ট্যাম্প বিক্রেতা) এর বড় ছেলে।
গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় ইলিয়াস ও তার ছোট ভাই ইউছুফ মোটর সাইকেল যোগে কালিগঞ্জ যাওয়ার পথে খানপুর ইটভাটা সংলগ্ন প্রধান সড়কের উপরে চলন্ত অবস্থায় পিছন থেকে আসা গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি একটি পিকআপ ধাক্কা দেয়। এসময় দুইভাইই মোটর সাইকেল থেকে ছিটকে রাস্তার উপরে পড়ে যায়। এ সময় দ্রুত পিকআপ চলে যাওয়ার সময় ইলিয়াসকে চাপা দিয়ে চলে যায়। পিকআপ এর চাকায় পিষ্টে ইলিয়াস এর মাথা ফেঁটে যায় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ছোট ভাই ইউছুফকে গুরুতর আহত অবস্থায় পথচারীরা শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে লাশ থানায় নিয়ে যায় এবং জাহাজ ঘাটা গ্রামের রাস্তার পাস থেকে পরিতক্ত অবস্থায় উক্ত পিকআপ জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়। পিকআপ চালক জাহাজঘাটা গ্রামের ভিতরের রাস্তায় পিকআপ রেখে পালিয়ে যায়। পিকআপের বডিতে লেখা আছে মেসার্স গাজী ট্রেডার্স, নওয়াবেঁকী, জরুরী গ্যাস সরবরাহ। পিকআপ নং- যশোর-ন-১১-০৬২৮। মোবাইল নং- ০১৭৫৩-৬০০৬৯০। বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল কালাম জানান শ্যামনগর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। -

জলবায়ু পরিষদের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত
শ্যামনগর ব্যুরো: সিএসআরএল, প্রকাশ, ব্রিটিশ কাউন্সিল-এর সহযোগিতায় শ্যামনগরে উপজেলা জলবায়ু পরিষদের বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে শনিবার শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জলবায়ু পরিষদের সভাপতি সাবেক উপাধ্যক্ষ নাজিম উদ্দীন। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার।
মানবজীবনে দুর্যোগ অবধারিত, প্রায়শই একে প্রতিরোধ করা যায় না। তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা’ এর মাধ্যমে এর ক্ষতি, প্রাণহানী ও সম্পদের ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়। জলবায়ু পরিষদ, জলবায়ু ঝুকি মোকাবিলায় ইতিমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে গৃহীত কর্মসূচী গুলোতে এবং বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সংযুক্ত করার দাবি তুলে ধরে উর্ধ্বতন সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তব্য রাখেন উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জলবায়ু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দৈনিক দক্ষিণের মশাল সম্পাদক অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী।
জীবনযাত্রার স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারোভিযান-পত্র পাঠ করেন অধ্যাপিকা শাহানা হামিদ। বক্তব্য রাখেন জলবায়ু পরিষদের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা শেখ হারুণ-অর রশিদ, শ্যামনগর প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি এস কে সিরাজ, সাধারন সম্পাদক জাহিদ সুমন, এসময় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক এম কামরুজ্জামান সহ সকল সাংবাদিকগণ ও জলবায়ু পরিষদের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
-
শ্যামনগরে পূজামণ্ডপের সামনে বোমা বিস্ফোরণ
নিজস্ব প্রতিনিধি: শ্যামনগরে পূজামণ্ডপের সামনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে চারটি তাজা হাত বোমা উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, রাতে সবাই কাজ শেষ করে বাড়ি গেলে বাজার জনশূন্য হয়ে পড়ে। এমন সময় হঠাৎ বিকট আওয়াজে একটি বোমা বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনতে পান। তাৎক্ষণিক এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা চারটি তাজা বোমা ফেলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে চারটি বোমা উদ্ধার করে।

এদিকে, খবর পেয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য স.ম জগলুল হায়দার ও শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসেন এবং পুলিশ পরিদর্শক আনিছুর রহমান মোল্লা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ সময় সংসদ সদস্য স ম জগলুল হায়দার এ ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন। তিনি উপস্থিত জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। অপরাধীদের ধরতে পুলিশ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। সাধরণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে এ বোমা বিষ্ফোরণ ঘটানো হতে পারে।’
এবিষয়ে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস হোসেন বলেন, যত দ্রুত সম্ভব দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ কাজ শুরু করে দিয়েছে।’
-
কাশিমাড়ীতে ওয়ার্ড যুবলীগের আলোচনা সভা
বি.এম জালাল: শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড যুবলীগের কার্যলায় উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সোমবার বিকালে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ৬নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি এস এম জাহিদুর রহমান। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কাশিমাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি স.ম রেজাউল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মহসিন পাড়, সহ-সভাপতি মুজিবর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান, ৬নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী, ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভপতি ইফতেখার হোসেন প্রমুখ।
-

আদিবাসী কোটা সংরক্ষণের দাবিতে শ্যামনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
শ্যামনগর ব্যুরো: সরকারি চাকরিতে এবং উচ্চ শিক্ষায় আদিবাসী কোটা সংরক্ষণের দাবিতে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা জেলা আদিবাসী ছাত্র পরিষদ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
জেলা আদিবাসী ছাত্র পরিষদ শ্যামনগর উপজেলা শাখার সভানেত্রী বাহামনি মুন্ডার নেতৃত্বে আদিবাসী কোটা সংরক্ষণের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি উপজেলা সদরের প্রধান-প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি চাকরি ও উচ্চ শিক্ষায় আদিবাসীদের ৫% কোটা বহাল রাখার দাবিতে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সুন্দরবন আদিবাসী মুন্ডা সংস্থা (সামস) এর নির্বাহী পরিচালক কৃষ্ণপদ মুন্ডা, সভাপতি গোপাল চন্দ্র মুন্ডা, সহ-সভাপতি রাম প্রসাদ মুন্ডা, আদিবাসী ছাত্র পরিষদ সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভানেত্রী বাহমনি মুন্ডা, সাধারণ সম্পাদিকা মিনতী মুন্ডা ও ছাত্র পরিষদের সদস্য উৎপল মুন্ডা প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘পৃথিবীর বহু দেশেই আদিবাসীদের জন্য শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে কোটা সংরক্ষিত আছে। তাছাড়া বাংলাদেশের মহান সংবিধানের ২৮ (৪) ও ২৯ (৩) (ক) অনুচ্ছেদে নারী ও শিশুদের পাশাপাশি আদিবাসীদের মতো অনুগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গহণের কথা বলা হয়েছে। তাই আদিবাসীদের ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা একটি সাংবিধানিক অধিকার। আমরা আশা করছি বর্তমান সরকার আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ করবেন।’
এসব কর্মসূচিতে মুন্ডা সম্প্রদায়ের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
-

সাতক্ষীরায় আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত
নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে র্যালি, আলোচনাসভা ও আদিবাসী সংস্কৃতির প্রদর্শন অনুষ্ঠিত হয়।বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) সকালে ‘আদিবাসী জাতিসমূহের দেশান্তর, প্রতিরোধে সংগ্রাম’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সুন্দরবন এলাকার আদিবাসী মুন্ডাদের সংস্থা (সামস) এর আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালির উদ্বোধন ও স্মারকলিপি গ্রহণ করেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার মাহমুদুর রহমান।র্যালিটি শহরের প্রধান-প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালি শেষে শহরের অদূরে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ঋশিল্পীর কনফারেন্স রুমে এক আলোচনা সভা ও আদিবাসী সংস্কৃতিক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মুন্ডা সংস্থার সভাপতি গোপাল চন্দ্র মুন্ডা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা-০১ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আদিবাসীরা সমাজের একটি অংশ। তাই জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠিদের এগিয়ে নিয়ে সমাজের মূল স্রােতধারায় ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।’বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন, সাবেক শিক্ষা অফিসার কিশোরী মোহন, সুন্দরবন আদিবাসী মুন্ডা সংস্থা (সামস) এর নির্বাহী পরিচালক কৃষ্ণপদ মুন্ডা প্রমুখ।আদিবাসীদের বর্তমান অবস্থা ও মানাবধিকার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় আদিবাসী ছাত্র পরিষদের সভানেত্রী মিনতি মুন্ডা। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন রাম প্রসাদ মুন্ডা।এদিকে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে শ্যামনগর উপজেলা পরিষদে মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী। -

আজ বিশ্ব বাঘ দিবস : দু’দশকে বনদস্যুদের শিকার হয়েছে সুন্দরবনের বিপুল সংখ্যক বাঘ
নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এদিনে ঘটা করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হলেও নানা সংকটে গত দু’যুগে বনদস্যু ও চোরা শিকারীদের শিকার হয়েছে সুন্দরবনের রেকর্ড পরিমাণ রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বন উজাড়, আন্তর্জাতিক বাজারে বাঘের চাহিদা এর অন্যতম কারণ।
বিভিন্ন সময় উদ্ধার হওয়া বাঘের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, বাঘের শাবক সর্বোপরি বাঘ শুমারী তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ১৬ বছরে ৫৭ টি বাঘ হত্যার তথ্য থাকলেও বাস্তবে এর সংখ্যা অনেক বেশী বলে জানিয়েছেন বনজীবিরা।
বিভিন্ন সময়ে নানা গবেষণা, ব্যক্তি বা সংস্থা বাঘ হ্রাসের কারণ হিসেবে নানা মন্তব্য করলেও বনজীবি ও সুন্দরবন বিশেষজ্ঞরা আশংক্সক্ষাজনকহারে বাঘ হত্যার জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বনবিভাগসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দূর্বলতাকেই দায়ী করছেন। সর্বশেষ ২০১৫ সালে ‘ক্যামেরা ট্র্যাপ’ পদ্ধতিতে গণনা শেষে দেখা যায়, সুন্দরবনে বাঘ রয়েছে মাত্র ১০৬টি। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফের শরু হওয়া বাঘ শুমারীর মাঠ পর্যায়ের কাজ শেষ হয় মে মাসে। তবে এখনো প্রকাশিত হয়নি শুমারীর প্রতিবেদন। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে পালিত হচ্ছে বিশ্ব বাঘ দিবস।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে থাইল্যন্ডের হুয়ানে অনুষ্ঠিত হয় টাইগার রেঞ্জ দেশ সমূহের ‘এশিয়া মিনিষ্ট্রয়াল কনফারেন্স’। সম্মেলনে বাঘ সংরক্ষণে ৯দফা পরিকল্পনাসহ সিদ্ধান্ত হয় যে, প্রতি বছর ২৯ জুলাই পালিত হবে বিশ্ব বাঘ দিবস। তখন থেকেই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করা।
জানা যায়, বিগত ২০১৫ সালে মাত্র ১০ মাসের ব্যবধানে সবোর্চ্চ ৯ টি বাঘের চামড়া উদ্ধার হয়। এর মধ্যে কয়রার গোলখালী থেকে অক্টোবর মাসে একসাথে ৩ টি বাঘের চামড়া উদ্ধার হওয়ায় বনবিভাগের ভূমিকা নিয়ে রীতিমত প্রশ্ন দেখা দেয়। ঐ বছরের ৮ আগস্ট ৬৯ পিচ বাঘের হাড়সহ কয়রার এনায়েত হোসেন ও বাবু হোসেন নামে দু’চোরা শিকারীকে খুলনার লঞ্চ ঘাট এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের রমজাননগরের টেংরাখালী গ্রামের চোরা শিকারীদের দ্বারা পাচারকৃত ৪ টি বাঘের শাবক উদ্ধার হয় ঢাকার শ্যামলী থেকে।
২০১৫ সালের ২৬ জুলাইয়ের ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতির শুমারী অনুযায়ী সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে মোট ১০৬ টি বাঘের অস্তিত্ব থাকলেও এর আগে ‘পাগ মার্ক’ পদ্ধতির শুমারী অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৫০ টি। শুমারী অনুযায়ী মাত্র ৫ বছরের ব্যবধানে সুন্দরবন থেকে বাঘ কমেছে ৩৪৪টি। ২০০৪ সালের এক গবেষনায় সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি। এর মধ্যে পুরুষ ১২১টি, স্ত্রী ২৯৮টি এবং বাচ্চা ২১টি। সব মিলিয়ে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় কয়েক বার বাঘ শুমারী হলেও বাঘের প্রকৃত সংখ্যা কত তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।২০১৫ সালের ৬ জুলাই প্রকাশিত বাঘের ঘনত্ব শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয় অবৈধ শিকার, খাদ্যের অভাব ও প্রকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবনে বাঘের অস্তিত্ব কমেছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বনদস্যুসহ চোরা শিকারীদের বাঘ শিকার, সুন্দরবনের ভেতরের নদী সমূহে নৌচলাচল ও বনের পাশে শিল্প অবকাঠামো নির্মাণ বাঘের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০১৬ সালে আমেরিকার দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি অর্থায়নে ‘বাঘ প্রকল্পে’ ক্যামেরার সাহায্যে গণনার জন্য খুলনা বিভাগীয় বণ্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এ প্রকল্পকে জনবল ও ৭০টি ডিজিটাল ক্যামেরা সরবরাহ করে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ফের বাঘ প্রকল্প ক্যামেরা ট্রাপিং এর মাধ্যমে গণনার কাজ শুরু করে এবং মে মাসে এর কাজ সম্পন্ন করে। এখনো তার ফলাফল পাওয়া যায় নি। তবে বাঘের সংখ্যা বাড়বে না কমতে পারে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য না করলেও সুন্দরবনের ৩টি অভয়ারণ্য এলাকায় গাছের সাথে ক্যামেরা বেঁধে এর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
বন সংরক্ষক কার্যালয়ের প্রধান সহকারী মন্দিরা বলেন, সর্বশেষ প্রতিবেদন প্রকাশের আগে এখন পর্যন্ত সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১০৬টি। খুলনা সার্কেলের উপ-বন সংরক্ষক মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, বাঘ গনণার প্রতিবেদন প্রকাশিত না হলে কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে আগের চেয়ে এখন অধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে গণনা কার্যক্রম হচ্ছে। বাঘ প্রকল্পের গবেষনা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল¬াহ আল মোজাহিদ বলেন, প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। বাঘের প্রতিবেদন প্রকাশ করবে সরকার। তবে বাঘের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করেন এ গবেষক।
পশ্চিম বন বিভাগীয় কর্মকর্তা মোঃ বশিরুল-আল-মামুন বলেন, বাঘ শুমারী একটা কঠিন কাজ। আধুনিক পদ্ধতি গনণা হচ্ছে। প্রতিবেদন প্রকাশ না হলে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের সূত্র জানায়, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের লোকালয়ে ঢুকে পড়ে গণ পিটুনি, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডরের জলোচ্ছ্বাসে, বার্ধক্যজণিত কারণে এবং চোরা শিকারীদের হাতে মোট ১৭ টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার মারা পড়েছে। এর মধ্যে বন সংলগ্ন মোংলা ও শরণখোলা উপজেলার লোকালয়ে ঢুকে পড়লে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা, স্বাভাবিক মৃত্যু হয় ৪ টি ও সিডরের জলোচ্ছ্বাসে ১ টি বাঘ মারা যায়। আর ৮ টি নিহত হয় চোরা শিকারীদের হাতে। একই সময়ে ১ নারী সহ মোট ২৬ জন বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারায়। এদের মধ্যে ময়না নামের মোংলার জয়মনি এলাকার বৃদ্ধা গ্রাামবাসী ছাড়া সবাই বনজীবি।
সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের বিভাগীয কর্মকর্তা বশিরুল আল মামুন জানান, গত দু’দশকে পশ্চিম বন বিভাগে ১৫ টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিহত হয়। এর মধ্যে লোকালয়ে ঢুকে গণপিটুনির শিকারে নিহত হয় ৮ টি। এছাড়া ২০০১ থেকে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারী পর্যন্ত প্রায় দু’দশকে সেখানে ২৩৪ জন নারী-পুরুষ বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশই বনজীবি ও সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে চিংড়ি রেণু আহরণকারী।
সুন্দরবনের বণ্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা(ডিএফও) মোঃ মদিনুল আহসান বলেন, সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণে সরকার ‘বাংলাদেশ টাইগার এ্যকশন প্ল্যান ২০০৯-১৭’ বাস্তবায়ন করছে। এর অংশ হিসেবে বাঘ রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টি, বাঘের আক্রমণ থেকে বন সংলগ্ন লোকালয়ের জানমাল এবং মানুষের হাত থেকে লোকালয়ে চলে আসা বাঘ রক্ষায় ৮৯ টি টাইগার রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গত ১০ বছরে মানুষের হাতে ৯ টি বাঘ মারা পড়েছে। লোকালয়ে ঢুকে পড়া বাঘ রক্ষায় ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআর) কাজ করছে। বাঘ অচেতনে তাদের ৬ টি বন্দুক রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে সুন্দরবনের রেকর্ড সংখ্যক বাঘ হ্রাসের জন্য অন্যান্য কারণের সাথে বনজীবিরা জোর দিয়ে যোগ করেছেন বনদস্যুদের কথা। দীর্ঘ দিন সুন্দরবনের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থেকে তারা জীবিকা নির্বাহ করছেন। কাছ থেকে দেখেছেন অনেক কিছু। তারা বলছেন, প্রায় দু’যুগ ধরে সুন্দরবনে নিয়ন্ত্রণ করছেন প্রায় ২ ডজন বনদস্যু বাহিনী। একই বনে বাঘের সাথে বসবাস দস্যুদেরও। সুন্দরবন অভ্যন্তরে অবাধ বিচরণ ও রাত্রি যাপনে বাঘের সাথে দেখা হলেই দস্যুরা তাদের হত্যা করে। এর সাথে তারা আন্তর্জাতিক বাজারে সুন্দরবনের বাঘের চাহিদার বিষয়টিকে যোগ করে এতে বনদস্যুদের দস্যুতা বৃত্তির পাশাপাশি অধিক মুনাফা লাভে বাঘ হত্যার বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন। অভিযোগ রয়েছে, বাঘ বিলুপ্তির জন্য দায়ী চোরা শিকারীদের গ্রেফতার ও মামলায় র্যাবসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপরতা দেখালেও বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের তেমন কোন সফলতা নেই।এব্যাপারে শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়ার ষাটোর্দ্ধ আনসার আলী, বনজীবি রাহুল, মান্নান, কওছার, রাশেদুল, আঃ করিম, খালেক গাজী, বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের দাতিনাখালি গ্রামের আমিনুর, নওশাদ, সাত্তার, মুন্সীগঞ্জের দাউদ সানা, মন্তেজ, রাজ্জাক, মুনছুর, রমজাননগর গফুর, সিদ্দিক, জবেদ আলী, সফেদ আলীসহ শতাধিক বনজীবিরা জানান, সুন্দরবন থেকে বাঘ হ্রাসের কারণ হিসেবে গবেষক থেকে শুরু করে বনবিভাগ বা দেশী-বিদেশী সংস্থা যাই বলুক বাঘ হত্যার জন্য বনদস্যুরাই সবচেয়ে বেশী দায়ী।
জানা গেছে, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড সীমান্তে আন্তর্জতিক বাজারে গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল এ সুন্দরবনের বাঘের চামড়া থেকে শুরু করে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের চড়া মূল্য থাকায় মূলত সুন্দরবনে বনদস্যুরা বাঘ হত্যায় মেতে উঠে। সুন্দরবন বনদস্যুদের এক সময়ের অভয়ারণ্য থাকায় ঐসময়ে ব্যাপক সংখ্যক বাঘ শিকার হয় তাদের হাতে। বর্তমানে সরকার সুন্দরবন রক্ষায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে তা বাঘ রক্ষায় ঠিক কি ধরণের প্রভাব ফেলছে তা নির্ভর করবে চলতি ক্যামেরা ট্রাপিংয়ে বাঘ শুমারীতে বাঘের প্রকৃত সংখ্যার উপর। তবে আশার কথা, বাঘ সংরক্ষণে মনিটরিং, টহল ব্যবস্থা জোরদার এবং বনরক্ষীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। কতগুলো বাঘ হত্যা করা হয়েছে বা কতটি মামলা হয়েছে এ ব্যাপারে কোন সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও জনববল সংকটের বিষয়টি স্পষ্ট হয় বন কর্মকর্তাদের বক্তব্যে। সর্বশেষ এমন পরিস্থিতিতে আজ ২৯ জুলাই পালিত হচ্ছে বিশ্ব বাঘ দিবস। -
জেলায় ৮ জামায়াত নেতা-কর্মীসহ গ্রেফতার ৬৮
মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৮ জামায়াত নেতা-কর্মী এবং ৪ মাদক মামলার আসামিসহ বিভিন্ন মামলার ৬৮ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে শনিবার (২৮ জুলাই) সকাল পর্যন্ত জেলার আটটি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ অভিযান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২০পিস ইয়াবা, ৪৯০ বোতল ফেনসিডিল, ১০০ গ্রাম গাঁজা এবং একটি মোটরসাইকেল।
অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ৬ জামায়াতকর্মীসহ ১৬ জন, কলারোয়া থানা থেকে ২০পিস ইয়াবা এবং ১০০ গ্রাম গাঁজাসহ ৮ জন, তালা থানা থেকে ২ জন, কালিগঞ্জ থানা থেকে ৪৯০ বোতল ফেনসিডিলসহ ৯ জন, শ্যামনগর থানা থেকে উপজেলা জামায়াতের সভাপতি মাওলানা ফারুক হোসাইনসহ ১৫ জন, আশাশুনি থানা থেকে ২ জন, দেবহাটা থানা থেকে ২ জন এবং পাটকেলঘাটা থানা থেকে ১ জামায়াতকর্মীসহ ২ জনকে আটক করা হয়।আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান জানান, জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন মামলার ৬৮ আসামিকে আটক করা হয়েছে।
-
জেলায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৭ জামায়াত-শিবিরকর্মীসহ আটক ৭২
মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয় ৭ জামায়াত-শিবিরকর্মীসহ ৭২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলার আট থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।গত মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে (২৫ জুলাই) সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২০ পিস ইয়াবা, ১০০ গ্রাম গাঁজা এবং বেশ কিছু জিহাদী বই।অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ২০পিস ইয়াবা, বেশ কিছু জিহাদী বই ও প্রচারপত্রসহ ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে যার মধ্যে ৪ জন জামায়াত-শিবিরকর্মী। কলারোয়া থানা থেকে ১০০গ্রাম গাঁজাসহ আটক করা হয়েছে ৭ জনকে। ৪ জামায়াত-শিবিরকর্মীসহ মোট ৮ জনকে আটক করা হয়েছে তালা থানা থেকে। এ থানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৬টি জিহাদী বই। এছাড়াও কালিগঞ্জ থানা থেকে ৯ জন, শ্যামনগর থানা থেকে ১১ জন, আশাশুনি থানা থেকে ১ জামায়াতকর্মীসহ ৮ জন, দেবহাটা থানা থেকে ৩জন এবং পাটকেলঘাটা থানা থেকে ২ জনকে আটক করা হয়েছে।আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত জেলার সবকটি থানায় অভিযান চালিয়ে বেশকিছু জিহাদী বই ও প্রচারপত্র সহ ৭ জামায়াত-শিবিরকর্মীসহ মোট ৭২ জনকে আটক করা হয়েছে। -
জেলায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৭ জামায়াতকর্মীসহ আটক-৬১
মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৭ জামায়াতকর্মী এবং ২ জন মাদক মামলার আসামীসহ ৬১জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (২১ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে রবিবার (২২ জুলাই) সকাল পর্যন্ত জেলার আটটি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ অভিযান থেকে বেশ কিছু মাদকদ্রব্যও উদ্ধার করা হয়েছে।
অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ৬ জামায়াতকর্মীসহ ২৩ জন, কলারোয়া থানা থেকে ১০০ গ্রাম গাজাসহ ৯ জন, তালা থানা থেকে ৫ জন, কালিগঞ্জ থানা থেকে ৪ জন, শ্যামনগর থানা থেকে ৮ জন, আশাশুনি থেকে ১ জামায়াতকর্মী এবং ১০০ গ্রাম গাজাসহ ৭ জন, দেবহাটা থানা থেকে ২ জন এবং পাটকেলঘাটা থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান জানান, শনিবার সন্ধ্যা থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন মামলার আসামীসহ মোট ৬১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
-

শিশু পাচারের অভিযোগে নারীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড
মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরায় প্রথম শ্রেণিতে পড়–য়া এক কন্যা শিশুকে পাচারের অভিযোগে এক নারীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দিয়েছে আদালত। বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত নারী আসামী হলেন, শ্যামনগর উপাজেলার পরানপুর গ্রামের নূর ইসলামের মেয়ে মোছাঃ আফরোজা ও ওরফে তাছলিমা খাতুন। বর্তমানে তারা কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর গ্রামে বসবাস করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, পাচারের শিকার শিশু কন্যাটি শ্যামনগর উপাজেলার ৮৬নং পরানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রণিতে পড়তো। ২০০৩ সালের ৬ মার্চ সকাল ৮টার দিকে বাড়ি থেকে স্কুলে যায় সে। স্কুল শেষে সে আর বাড়ি ফেরেনি। সহপাঠি ময়না ও টুম্পার মাধ্যমে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারে যে স্কুল শেষে তাকে খালা পরিচয়ে এক নারী মাঠ থেকে ডেকে নিয়ে যায়।জানতে পেরে ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আব্দুল করিম বিভিন্ন মসজিদে মাইকিং করে শিশুটির সন্ধান নেয়ার চেষ্টা করেন। রাত ১০টার দিকে স্থানীয় বৈশখালি গ্রামের লোকজন পাচারকারী আফরোজাকে আটক করলেও তার সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। এ সময় উদ্ধার করা হয় ওই শিশুটিকে। এ ঘটনায় উদ্ধার হওয়া ওই শিশুর দাদা বারী সরদার বাদি হয়ে পাচারকারী আফরোজা খাতুন, রতনপুর গ্রামের বাবু, বাবলু ও আবু হান্নানের নাম উল্লেখ করে পরদিন শ্যামনগর থানায় একটি পাচারের মামলা দায়ের করেন।
২০০৩ সালের ৩০ জুন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক ফয়সাল জামান এজাহারভুক্ত আসামিদের নামে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
১০জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও মামলার নথি পর্যালোচনা শেষে বুধবার আসামি আফরোজা খাতুনের বিরুদ্ধে পাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করেন। একই সাথে অপরাধ প্রমানিত না হওয়ায় এ মামলার অপর তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। তবে, এ রায়ের সময় পাচারকারী আসামি আফরোজা পলাতক ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দার বাবু।
-

সাতক্ষীরায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে জামায়াতকর্মীসহ গ্রেফতার ৬০
মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয়ে জামায়াতকর্মী ও মাদক মামলার আসামীসহ ৬০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত জেলার ৮ থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।অভিযানে ২২ পিস ইয়াবা, ১৪০ বোতল ফেন্সিডিল, ৪০২ গ্রাম গাজা এবং ১৯ বোতল মদ উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন অভিযোগে আটককৃতদের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ১৮ জন, কলারোয়া থানা থেকে ৬ জন, তালা থানা থেকে ৪ জন, কালিগঞ্জ থানা থেকে ১০ জন, শ্যামনগর থানা থেকে ১৮ জন, আশাশুনি থানা থেকে ৮ জন, দেবহাটা থানা থেকে ২ জন ও পাটকেলঘাটা থানা থেকে ১ জামায়াতকর্মীসহ ৪ জনকে আটক করা হয়।সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান তাদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটকদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে। -

জেলাব্যাপি পুলিশের বিশেষ অভিযানে ২ জামায়াতকর্মীসহ গ্রেফতার ৫৫
মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয়ে ২ জামায়াতকর্মী ও ৮মাদক মামলার আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত জেলার ৮ থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
অভিযানে ২২ বোতল ফেন্সিডিল ও ১১০ গ্রাম গাজা উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন অভিযোগে আটককৃতদের বিরুদ্ধে ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা জামায়াতের ১ সুরা সদস্যসহ ১৭ জন, কলারোয়া থানা থেকে ৭ জন, তালা থানার ইসলামকাটি ইউনিয়ন জামায়াতের রোকনসহ ৪ জন, কালিগঞ্জ থানা থেকে ৭ জন, শ্যামনগর থানা থেকে ১১ জন, আশাশুনি থানা থেকে ৫ জন, দেবহাটা থানা থেকে ১ জন ও পাটকেলঘাটা থানা থেকে ৩ জনকে আটক করা হয়।
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান তাদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটকদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।
-
শ্যামনগরে বজ্রপাতে নিহত পরিবারের মধ্যে ২০ হাজার টাকার চেক বিতরণ
শ্যামনগর প্রতিনিধি: সোমবার বিকালে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে গত ৮ জুন উপজেলার কৈখালী গ্রামে বজ্রপাতে নিহত পরিবারের মধ্যে ২০ হাজার টাকার চেক বিতরণ করা হয়। চেক বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজজামান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো. সেলিম খাঁন, সাংবাদিক রনজিৎ বর্মন প্রমুখ। -
শ্যামনগরে শ্রেণি কক্ষ সংস্কার ও টিফিন কর্মসূচির চেক বিতরণ
শ্যামনগর প্রতিনিধি: সোমবার বিকালে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ভাব-বাংলাদেশের আয়োজনে তপোবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষ সংস্কার ও শওকতনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টিফিন কর্মসূচির জন্য মোট ২ লক্ষ ২১হাজার ৭শত সাইত্রিশ টাকার চেক বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে তপোবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষ সংস্কার বাবদ ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৮শত টাকা ও শওকতনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টিফিন কর্মসূচির জন্য ৪৮ হাজার ৯শত সাইত্রিশ টাকা।
চেক বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজজামান। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম রফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম মহসীন উল মুলক, উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবিএম নাজমুল হক,উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ওয়াসিম উদ্দিন, আজহারুল ইসলাম, সোহাগ হোসেন, তপন কুমার দেবনাথ, মির্জা মিজানুর আলম, সোহাগ আলম, ভাব-বাংলাদেশের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার এম এ অলিম খাঁন, তপোবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাম রঞ্জন বিশ^াস, শওকতনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার বাউলিয়া, জোয়ারের নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রহমান আকাশ প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক রনজিৎ বর্মন। -

পর্যটন শিল্প ও বাণিজ্যে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে সাতক্ষীরার মুন্সীগঞ্জ

কলাগাছি ট্যুরিজম সেন্টার মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি)/রাকিবুল হাসান: সাতক্ষীরা জেলার ব্যাবসা-বাণিজ্য এবং পর্যটন স্থান হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে দেশের বৃহত্তম উপজেলা শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ।
মুন্সীগঞ্জের উপজেলা সদর শ্যামনগর হলেও শিল্প-বানিজ্যে দেশী-বিদেশী পর্যাটকদের স্থায়ী-অস্থায়ী আগমনের কারণে শ্যামনগর উপজেলা শহরকে টেক্কা দিয়ে মুন্সীগঞ্জ এখন শুধু শ্যামনগর নয় সমগ্র সাতক্ষীরা তথা বাংলাদেশের নাম করা স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে শুরু করেছে। সুন্দরবনের গাঁ ঘেষা এ উপকূলীয় অঞ্চলটিতে গড়ে উঠেছে সরকারি-বেসরকারী কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র। এর মধ্য উপজেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত স্বপ্নের আকাশ নীলা, বরসা ট্যুরিজম সেন্টার, বন বিভাগের নিয়ন্ত্রিত কলাগাছি ট্যুরিজম সেন্টার ইতিমধ্যে ভ্রমণ পিঁপাসুদের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছে।
একসময়ের অবহেলিত এ অঞ্চলটি এখন সাতক্ষীরার পর্যটন শিল্প এবং অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম। মাত্র দুই যুগের ব্যাবধানে পাল্টে গেছে এ মুন্সীগঞ্জের দৃশ্যপট। ১৯৯৫ সালের দিকে মুন্সীগঞ্জ বাজারে ছিল হাতে গোনা কয়একটি খড় পাতার ছাউনির দোকান ঘর। প্রতি বৃহস্পতিবাওে এখনে বসত সাপ্তাহিক হাট। কিন্তু এখন এখানে প্রতিদিন হাট বসে, পাওয়া যায় নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল। ১৯৯৫ সালে মুন্সীগঞ্জের অধিকাংশ সড়ক ছিল মাটির। বর্ষা মৌসুমে পায়ে হেটে এবং নৌকাযোগে যেতে হতো নীলডুমুর (বুড়িগোয়ালিনি) গাবুরা ও খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে। শুষ্ক মৌসুমে চলাচলের যানবহন ছিল বাইসাইকেলের পিছনে টিউব এর গদি বসিয়ে তৈরি হেলিকপ্টার।
চুনা, খোল পেটুয়া ও চাঁদনী মুখার পূর্বে কপোতক্ষ নদ পেরিয়ে যাওয়ার জন্য ছিল না নদী পারাপারের পাঁকা ঘাট ও ট্রলার। নদীর চরে কাপড় গুটিয়ে নৌকায় চড়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে পারাপার হয়ে জীবনযাপন করছে এই এলাকার মানুষ।সেসময় এ অঞ্চলে দেখা মিলতনা পর্যাটকদের। এ অঞ্চলের ৯৫ ভাগ মানুষ ছিল হত দরিদ্র। অধিকাংশ মানুষ ছিল সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল। সুন্দরবনের বাঘ-কুমিরদের সাথে লড়াই করেই তাদের জীবন চলত।

বিশ্বনন্দিত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের কাঁকড়ার ফার্ম। কিন্তু মাত্র দু’যুগের ব্যাবধানে এখনকার মুন্সীগঞ্জ এবং ১৯৯৫ এর মুন্সীগঞ্জের মধ্য আকাশ-পাতাল পার্থক্য। এখন মুন্সীগঞ্জের চর্তুপাশের কয়েক কিলোমিটারের মধ্য তিল পরিমাণ জায়গা ফাঁকা নেই। গড়ে উঠেছে বিভিন্ন পর্যাটন কেন্দ্র ও শিল্প কল-কারখানা।
এখানে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যাবহার করে কাকড়া চাষের ফার্ম। এখান থেকে প্রচুর পরিমাণ কাকড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করা হয়। এখানেই গড়ে উঠেছে বিশ্বনন্দিত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের কাঁকড়ার ফার্ম।
রয়েছে চিংড়ি চাষের ঘের ও চিংড়ি পোনা উৎপাদনের বিশ্বমানের হ্যাচারী।
মুন্সীগঞ্জকে কেন্দ্র কওে গড়ে উঠেছে অগ্রনী ব্যাংক, ট্রাষ্ট ব্যংক, গ্রামীন ব্যাংকসহ একাধিক ব্যাংক। শতাধিক বিমাসহ ছোট বড় দেশী-বিদেশী এনজিও।
কাঁকড়ার ফার্ম। এখানকার নিরাপত্তা ব্যাবস্থাও সন্তোষজনক। রয়েছে র্যাব-৬ এর ক্যাম্প, রয়েছে বিজিবি ১৭ কোম্পানির হেড কোয়ার্টার (নীলডুমুর)। মুন্সীগঞ্জ বাজারে রয়েছে বিজিবির ক্যাম্প। এছাড়াও নীলডুমুরে রয়েছে নৌ-পুলিশ ফাড়ি। যা এখন নৌ-থানা হিসেবে পরিচিত। এবং বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জ অফিস ও বুড়িগোয়ালিনি ষ্টেশন কর্মকর্তার কার্যালয় সহ মুন্সীগঞ্জ বন টহল ফাড়ি।
মুন্সীগঞ্জে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের রাত্রীযাপনের জন্যও রয়েছে সুন্দর ব্যাবস্থা। ভিআইপি গেস্টরুম বা শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত হোটেল আছে মুন্সীগঞ্জ সুশীলন টাইগার পয়েন্ট, বরসা রির্সোস সেন্টার ও আকাশ নীলায়।
জেলায় বা উপজেলায় কোন ভিআইপির’র পদার্পণ হলেই তারা বেড়াতে যান মুন্সীগঞ্জে সুন্দরবন ভ্রমনের জন্য। মুন্সীগঞ্জে চলতি বছরের প্রথম থেকেই দেশী-বিদেশীসহ ভিআইপিদের আগমন ঘটেছে উল্লেখ্যযোগ্য। বাংলাদেশ সরকারের একাধিক সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে.এম নুরুল হুদা এবং সর্বশেষ গত ৩১ শে মার্চ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সুশীলন টাইগার পয়েন্টে রাত্র যাপন করে ১লা এপ্রিল আকাশনীলা, কলাগাছিসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখেন।
এখন নিয়মিত দেশী-বিদেশী পর্যাটকদের পদাচারণায় মূখর দেশের সর্ববৃহৎ উপজেলার মুন্সিগঞ্জ এলাকা। হাজার হাজার পর্যটক ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণী-পেশার আগমন ঘটছে মুন্সীগঞ্জ ও নীলডুমুরে। প্রতিদিন দেশী বিদেশী ভ্রমণার্থীরা উপচে পড়া ভিড় জমাচ্ছে শ্যামনগর উপজেলার প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত মুন্সীগঞ্জের আকাশ নীলা, কলাগাছি ও বেসরকারী সংস্থা বরষা ট্যুরিজম সেন্টারে। সুন্দরবনের ভিতরে প্রবেশ করে সন্দরবন দেখার জন্য সরকারিভাবে কোন লঞ্চ বা ট্রলার না থাকলেও বেসরকারী সংস্থা বরষার রয়েছে ছোট বড় কয়েকটি লঞ্চ। তবে আকাশ নীলা সুন্দরবনের গাঁ ঘেষে চুনা নদীর চর ভরাট করা যাইগায় নির্মিত হওয়ায় এখানের আকর্ষণ আবার পর্যটকদের ভিতর অন্যরকম।
এ বিষয়ে প্রভাষক ড. এনামুল হক বলেন, সুন্দরবনের গাঁ ঘেষা অঞ্চলে বসে সুন্দরবনের দৃশ্য দেখতে খুব ভাল লাগে। এবং এখানে ভাস্কার্য নির্মিত সুন্দরবনের বাঘ হরিণ কুমিরসহ নানা প্রজাতির বন্যপ্রণী পর্যাটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণ।
সাতক্ষীরা-৪ আসনের সদস্য এসএম জগলুল হায়দার বলেন, মুন্সীগঞ্জের নাম আজ আর শুধুমাত্র শ্যামনগর ও সাতক্ষীরার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। এ মুন্সীগঞ্জ একদিন জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। -

ধরা-ছোয়ার বাইরে সুন্দরবনের দস্যুদের অস্ত্র সরবরাহককারী গডফাদাররা
নিজস্ব প্রতিনিধি: একটা সময় বনদস্যু বাহিনীর হাতে সম্পূর্ণ জিম্মি হয়ে পড়েছিল সুন্দরবনের পেশাজীবীরা। সরকারের আন্তরিকতায় বনদস্যুদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দেয়ায় ধীরে-ধীরে দস্যু মুক্ত হচ্ছে গোটা সুন্দরবন অঞ্চল।সম্প্রতি সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে সুন্দরবনের শীর্ষ ২৬টি দস্যু বাহিনী। এই প্রক্রিয়ায় সুন্দরবনে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল পরমিাণ গোলাবারুদ উদ্ধার হলেও অস্ত্র যোগানদাতা গডফাদাররা গ্রেফতার না হওয়ায় পুরোপুরিভাবে বন্ধ হচ্ছে না সুন্দরবনের দস্যুতা। এসব গডফাদাররাই আবারো নতুন নতুন বাহিনী তৈরি করে সুন্দরবনে অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। ফলে নতুন করে সুন্দরবনের পেশাজীবী জেলে, বাওয়ালী, মৌয়ালীরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।সুন্দরবনের সংশ্লিষ্ট জেলে, বাওয়ালীরা জানায়, সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের (সাতক্ষীরা রেঞ্জ) বনজীবীরা বর্তমানে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত ছোটভাই বাহিনীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এই বাহিনী পরিচালনা করছে শ্যামনগর উপজেলার কালিঞ্চি এলাকার মাজেদ ভাঙ্গির ছেলে জাকির ভাঙ্গি।এই ছোটভাই বাহিনীর বর্তমান সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৫ জন। তাদের কাছে ডাবল ও সিঙ্গেল ব্যারেল বন্দুক, টুটুবোর রাইফলেসহ প্রায় ১৫টি অস্ত্র রয়েছে।সুন্দরবনের জেলে বাওয়ালীরা বলছেন, এসব বাহিনীর কেউ সরকারে কাছে আত্মসমর্পণ করলে বা সুন্দরবনে মাঝেমধ্যে প্রশাসনের বিশেষ অভিযানে দস্যুদের দুই-একজন গ্রেফেতার বা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলওে দস্যুদের অস্ত্র যোগানদাতা গডফাদাররা সব সময় থেকে যায় ধরা-ছােঁয়ার বাইরে। যে কারণে সরকার চাইলেও সুন্দরবন থেকে দস্যুতা একেবারেই নির্মূল হচ্ছে না।র্যাব, পুলিশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব গডফাদারদের তথ্য, এদের মধ্যে কেউ কেউ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হলেও আইনের ফাঁক-ফোকরে জামিনে মুক্ত হয়ে এলাকায় ফিরে আসে।সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন লাগোয়া মুন্সিগঞ্জ, গাবুরা ও রমজাননগর ইউনিয়নের কিছু প্রভাবশালী ব্যাবসায়ীর বিরুদ্ধে বনদস্যুদের নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র যোগান দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বহু আগে থেকেই। স্থানীয় জেলে বাওয়ালীরা জানায়, কিছু দিন আগে আত্মসমর্পণ করা বনদস্যু আলিফ ও মজনু বাহিনীর অন্যতম গডফাদার ছিল মুন্সিগঞ্জের সিরাজুল, বকুল মেম্বর, কালিঞ্চি এলাকার জামু ও রমজাননগর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য লাল্টু। এদর মধ্য সিরাজুল ও জামু আলিফ বাহিনীর সাথ র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। কিন্তু লাল্টু মেম্বর গত বছর র্যাবের কাছে গ্রেফতার হওয়ার পর জামিনে মুক্তি পায়। মুন্সিগঞ্জের বকুল মম্বরকেও একবার আটক করছিল র্যাব। বর্তমানে সে ঐ এলাকায় র্যাবের সোর্স পরিচয়ে নানা অপকর্ম করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক স্থনীয় এক বনজীবী অভিযোগ করে জানান, অস্ত্র ব্যাবসায়ী রমজাননগর ইউনিয়নর টেংরাখালি গ্রামের লাল্টু মেম্বর র্যাবের হাতে আটক হয়ছিল এরপর জামিনে ফিরে আসে। কিছুদিন আগে সে সুন্দরবনে ছোটভাই বাহিনীর কাছে ৪টি অস্ত্র সরবরাহ করছে। সেই অস্ত্রের টাকা নিয়ে ছোটভাই বাহিনীর সাথে তার দন্দ্ব চলছে। ভেটখালি বাজারে লাল্টু মেম্বর ও ছোটভাই বাহীনির প্রধান জাকিরের ভাই ইউনুসের মধ্যে এই টাকা নিয়ে হাতাহাতিও হয়েছে। জেলে বাওয়ালীদর এসব অভিযাগের প্রমাণও মিলেছে অনুসন্ধানে।লাল্টু মেম্বরের অস্ত্র ব্যাবসার বিষয়টি জানার পর যোগাযোগ করা হয় বর্তমানে সুন্দরবনে থাকা বনদস্যু ছোটভাই বাহিনীর প্রধান জাকিরের সাথে। জাকির বলেন, কিছুদিন আগে লাল্টু মম্বরের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে চারটি অস্ত্র ও একশত পিছ গুলি কিনেছি। সে নিজে সুদরবনে এসে আমাকে অস্ত্র দিয়ে গেছে। সম্প্রতি একটি ব্র্যাশ (অস্ত্র) ও কিছু গুলি কেনার জন্য ১০লাখ টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু সে অস্ত্র না দিয়ে তালবাহানা করায় আমি টাকা ফেরত চাইলে সে আমাকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার ভয় দেখাচ্ছে। এ নিয়ে আমার ভাইয়ের সাথে তার হাতাহাতিও হয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে লাল্টু মেম্বর বলেন, আমি এলাকার একজন জনপ্রতিনিধি। সুন্দরবনের মূল অস্ত্র ব্যবসায়ীরা আমাকে ফাঁসানোর জন্যই র্যাবের কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিল। র্যাব আমাকে আটক করেছিল। বর্তমানে আমি জামিনে বাড়িতে আছি। ছোটভাই বাহিনীর প্রধান জাকিরের সাথে নৌকার টাকা নিয়ে পূর্বের একটি লেনদেন আছে। এটি জাকির দস্যুতা করতে যাওয়ার আগের ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে শ্যামনগর থানাতে বসাবসি হয়েছিল। তার অভিযোগ মিথ্যা আমি কোন অস্ত্রের ব্যাবসা করি না। প্রতিপক্ষরা আমাকে ফাঁসাতেই তাকে দিয়ে এসব অভিযোগ করাচ্ছে। অভিযোগের বিষয়ে মুন্সিগঞ্জের সাবেক ইউপি সদস্য বকুল বলেন, আমি সুন্দরবনে কোন ব্যাবসা করি না। বনদস্যুদের সাথেও আমার কোন সম্পর্ক নেই। প্রশাসনের সাথে আমার সু-সম্পর্ক থাকায় অনেকে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করে। এলাকার কোন জেলে বাওয়ালী বিপদে পড়লে আমি তাদের সগযোগিতা করি। এমনকি প্রশাসনের কেউ সুন্দরবনে অভিযান চালালেও তারা আমার সহযোগিতা নেয়। তবে সুন্দরবন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরের পর বছর ধরে সুন্দরবনে নিজেদের ব্যবসা ও অধিনস্থ জেলে বাওয়ালীদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতেই দস্যু বাহিনী গঠন ও অস্ত্র সরবারহ করে লোকালয়ের ব্যবসায়ী গডফাদাররা। বনদস্যুদের মধ্যে কেউ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার বা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলে আবারো নতুন নতুন বাহিনী তৈরি করছে মূলত তারাই। বিভিন্ন সময় এসব অস্ত্র ব্যাবসায়ি গডফাদাররা পুলিশ, র্যাব ও কোস্টর্গাডরে হাতে গ্রেফতার হলেও আইনের ফাঁক ফোকরে বেরিয়ে এসে আবারো তাদের কার্যক্রম চলমান রাখে। ফলে সরকারের সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সুন্দরবনের দস্যুতা একেবারেই বন্ধ হচ্ছে না।

