Warning: Attempt to read property "post_content" on null in /home/dakshinermashalc/public_html/wp-content/plugins/pj-news-ticker/pj-news-ticker.php on line 202
বিশেষ সংবাদ Archives - Page 67 of 74 - Daily Dakshinermashal

Category: বিশেষ সংবাদ

  • অপাঠ্য লেখার কারণে বিশ্বে বছরে ৭ হাজার রোগীর মৃত্যু

    অপাঠ্য লেখার কারণে বিশ্বে বছরে ৭ হাজার রোগীর মৃত্যু

    বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া : দেশ থেকে আসার পর ভেবেছিলাম দেশ নিয়ে আরো কটি লেখা লিখবো। দুটি বিষয় নিয়ে লেখার পর ইউরোপ-আমেরিকায় এত কিছু ঘটে চলেছে যে লেখার বিষয় গেছে পাল্টে। ভাবছি এবার লিখবো ’হাতের লেখা’ নিয়ে। ভাবছেন এটা একটা লেখার বিষয় হলো নাকি। আমরা তো সবাই জানি কারো হাতের লেখা সুন্দর হয়, কারো মোটামুটি, পড়ার মত, কারো পড়ার অনুপযোগী, কারো একেবারে বাজে। আমার হাতের লেখার দশা এমনই যে কখনো-সখনো নিজে নিজের লেখাই উদ্ধার করতে পারিনে। হাতের লেখা কেমন সেটা কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। গুরুত্বপূর্ণ যা তা হচ্ছে পড়ার উপযোগী কিনা। বিশেষ করে কোন কোন পেশা আছে যেখানে হাতের লেখার উপর নির্ভর করে মানুষের বাঁচা-মরা। ভাবছেন মশকরা করছি? মোটেই নয়। সে কথায় একটু পরে আসছি।

    এখন তো হাতের লেখার চল প্রায় উঠে গেছে বললেই চলে। শৈশবে হাতের লেখা সুন্দর করার জন্যে, মনে পড়ে, একই বাক্যকে দশ বার করে এক পৃষ্ঠায় লিখতাম। বানান ভুল করলে এই ধরনের শাস্তির প্রচলন ছিল আমাদের সময়ে। তাতে বানান যেমন একদিকে শুদ্ধ হতো, তেমনি হাতের লেখাও সুন্দর হতে সহায়কের ভূমিকা পালন করতো। আমাদের দেশে স্কুলগুলোতে এখন তেমন ’সিস্টেমের’ চল আছে কিনা জানা নেই। প্রেমের চিঠির (প্রেম পত্র) ভাষা যেন সুন্দর হয়, হাতের লেখা যেন প্রেমিকের মন কাড়ে সেই জন্যে আমাদের সময় যারা প্রেম করতো, আমার বিশ্বাস সবার এই প্রচেষ্টা থাকতো, অচেতনভাবে হলেও। চিঠির ভেতর কয়েকটি গোলাপ ফুলের পাঁপড়ি, কিংবা একটু সুগন্ধি ছড়িয়ে দেয়া, দুটি ঠোঁটের লাল লিপিস্টিকের ছাপ কিংবা তীর বিদ্ধ হার্ট কত কী ছিল। কেবল প্রেমের চিঠির কারণে কবিতা, উপন্যাস ঘাঁটাঘাঁটি করতে দেখেছি অনেককে। দেখেছি তাদের সেখান থেকে ধার করা লাইন নিজের বলে চালিয়ে দিত। ভাষা জানুক আর না জানুক, প্রেমিক বা প্রেমিকাকে লেখা চিঠি সুন্দর হতে হবে, হতে হবে কাব্যে ভরা। এই প্রেমের চিঠি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় কত না দুষ্টমি করেছি। এখন মনে পড়লে হাসি পায়। আমার এক কাকা ছিলেন, দূর সম্পর্কীয়। বয়সে আমার চাইতে বছর কয়েক বড়, কিন্তু শারীরিক গঠনে ছোট। তার ছিল না টাকা পয়সার অভাব, অভাব যা ছিল তা হলো লেখাপড়া। কলমের ধার একেবারে ছিলনা বললেই চলে। তার সব ভাইয়েরা ব্যবসা করেন তখন, বাড়ীর আর্থিক অবস্থাও অতি সচ্ছল। ওই কাকা প্রেম করতো স্কুল পড়ুয়া তার প্রতিবেশী এক মেয়ের সাথে। মেয়েটি আমার চেনা। দেখতে চোখে পড়ার মত। সবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। দুপুর নাগাদ বাসায় ফিরতাম। বাবার ছিল সরকারী বড় বাসা। বাসায় ঢুকেই বা দিকে আমার ছোট্ট কামরা। ছিল বাইরের দিকে কাঠের জানালা। জানালা খুলেই নেট। রেলওয়ে স্টেশনের টিকেট কাউন্টারের মত ছিল একটি খোপ, তাতে হাত ঢুকিয়ে দেয়া যেত। জানালার দিকে থাকতো মাথা। দুপুরে ইউনিভার্সিটি থেকে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে বিশ্রাম নেব, এমন সময় এসে হাজির হতো আমার সেই প্রেমিক কাকা। এসেই বলতো, বাজি (বাবাজি) চল। সে কখন আসবে সে আগেভাগে বলে রাখতো, উদ্দেশ্যও। তারপর দুজন রিক্সা নিয়ে সোজা নিউ মার্কেট। দোতলায় উঠে ’ডায়মন্ড’ রেস্তোরাঁ। সব সময় ভীড় লেগেই থাকতো এই রেস্টুরেন্টে। ঢুকেই হাতের বাদিকে সারিবদ্ধ কয়েকটি কেবিন। পর্দা টাঙানো। স্কুল-কলেজ থেকে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আসা ছেলে-মেয়েরা সাধারণত: সেখানে বসতো, যতক্ষণ সম্ভব গল্প গুজব করতো, নিবিড় হয়ে পাশাপাশি বসে, কিংবা মুখোমুখি। আমি আর কাকা ঢুকে পড়তাম তেমনি একটি খালি কেবিনে। ওয়েটার কাছে এলে কাকা কখনো কাটলেট, কখনো চপ অর্ডার দিতেন চায়ের সাথে। খাবার আসার সাথে সাথে কাকা পর্দা টেনে দিতেন। পকেট থেকে বের করতেন কাগজ আর কলম। বলে, লেখ। আমি খেতে খেতে লিখে যাই তার প্রেমের চিঠি। মাঝে মাঝে সে বলে তার মনের কথা আর আমাকে মনে করিয়ে দেয় বারবার, ’একটু গুছিয়ে, সুন্দর করে লিখে দিও, বাবাজি’। প্রায়শ: এমন হতো, অর্ধেক পাতা লিখে চুপ করে আছি, কলম এগুচ্ছে না। কৌতূহলী কাকা প্রশ্ন করে, কী হলো? লিখছো না কেন? ’সামনে টেবিলের উপর খালি প্লেট দেখিয়ে বলি, কাটলেট-চা দুটোই তো শেষ। সেই কারণে কলম এগুচ্ছে না। উচ্চারণ করা যায়না এমন ধরনের একটা গালি দিয়ে ওয়েটারকে ডাকতো। এভাবে যে তার কত চপ আর কাটলেট খেয়েছি তার কোন ইয়াত্তা নেই। এখন ভাবি তেমনটি করা বোধকরি ঠিক হয়নি।

    সে দিনও নেই, সেই প্রেম পত্রও নেই। এখন তো আর প্রেম পত্র লেখা হয় না। এখন পাঠানো হয় খুদে বার্তা; স্কাইপ, ফেইসবুক, হোয়াটস্যাপ এখন দখল করে নিয়েছে হাতের লেখা চিঠির স্থান। এখনকার ছেলেমেয়েদের যদি বলা হয়, ‘পেন ফ্রেন্ডশিপ’, আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি, বেশীর ভাগই অবাক তাকিয়ে থাকবে, যেন উদ্ভট কিছু একটা বলা হচ্ছে। এখন লেখালেখি যা হয়, তা কম্পিউটারের মাধ্যমে। এই যে লিখছি বছরের পর বছর এই ‘কলামে’, লিখি ল্যাপটপে। ফলে হাতের লেখার চর্চা উঠেছে একেবারে শিকেয়। ফলাফল হাতের লেখার শ্রী, যা কোনো কালেই ছিলনা, তার বারোটা বেজে গেছে। আমারটা তাও কষ্ট করে হলেও উদ্ধার করা যায়। কিন্তু আমার চেনা জানা দশ বার জন ডাক্তারের (বাংলাদেশী) হাতের লেখা আমি কেন, মরণের ওপার থেকে নেমে এসে আমার বাবাও উদ্ধার করতে সক্ষম হবেন না সে আমি কোন দ্বিধা ছাড়াই বলতে পারি। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার যে অশিক্ষিত ছেলেটি বা কর্মচারীটি ওষুধের দোকানে চাকরী করে, সে ডাক্তারের ওই হিজিবিজি আঁচড় পড়তে পারে। অন্তত: আপাত:দৃষ্টিতে তাই মনে হয়। প্রশ্ন – সে কি সব আদৌ ঠিকঠাক পড়তে পারে? পারে না। গেল বছর সেপ্টেম্বরে আমেরিকার ইনস্টিটিউট অব মেডিসিন (আই ও এম) চালিত এক জরীপে দেখা যায়, ফি বছর কেবল আমেরিকায় ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনে অপাঠ্যযোগ্য হাতের লেখার কারণে প্রায় ১৫ লক্ষ রোগী অসুস্থ হন। ওই জরীপে আরো জানা যায় গোটা বিশ্বে প্রেসক্রিপশন বুঝতে না পেরে ভুল ঔষধ খেয়ে মারা যান ৭ হাজার মানুষ। ভাবা যায় ? নাকি এটি কোনভাবে গ্রহণ ও ক্ষমা করা যায়? বাংলাদেশে এই নিয়ে কোন জরীপ হয়েছে বলে আমার জানা নেই। হলে এই সংখ্যা যে আকাশ ছোঁয়া হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। কেননা দেশের আনাচে-কানাচে, শহরে, রাজধানীর হাজার হাজার ঔষুধের দোকানে যে সমস্ত বিক্রেতা আছে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু থাকতে পারে তা আমাদের সবার জানা। সমস্যা হলো, শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেই যে ডাক্তারের হাতের লেখা প্রেসক্রিপশন পড়তে পারবে তার নিশ্চয়তা কি? আমি তো পারিনে। বাংলাদেশের ডাক্তারদের হাতের লেখার এমনই দুর্দশা যে হাইকোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। গেল মাসে হাইকোর্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এ বলে আদেশ দিয়েছে যে মন্ত্রণালয় যেন ৩০ দিনের মধ্যে সহজে পড়া যায় এমন করে লেখার জন্যে ডাক্তারদের নির্দেশ জারী করে। ত্রিশ দিন পার হয়ে গেছে। জানিনে মন্ত্রণালয় এই ব্যাপারে হাই কোর্টের দেয়া নির্দেশ পালন করেছে কিনা। ডাক্তারের হাতের লেখা নিয়ে মার্কিন লেখক, সাংবাদিক আর্ল উইলসনের (১৯০৭-১৯৮৭) একটি প্রচলিত কথা এখানে উল্লেখ না করে পারছিনা। তিনি বলেছিলেন, “ডাক্তারের হাতের লেখা প্রেসক্রিপশন আপনি হয়তো পড়তে নাও পারেন, কিন্তু লক্ষ্য করবেন তিনি যে বিল লিখেন তা কিন্তু সুন্দর করে টাইপ করা।’’

    হল্যান্ডে অনেক আগ থেকে ডাক্তারদের হাতের লেখা প্রেসক্রিপশন নিষেধ করা হয়েছে। এখানে ডাক্তাররা প্রেসক্রিপশন লিখেন কম্পিউটারে। আমাদের দেশে সব ডাক্তারের কম্পিউটার সম্পর্কে জ্ঞান আছে কিনা সেটাও দেখার বিষয়। দেখার বিষয় সব ডাক্তার, বিশেষ করে গ্রামে-গঞ্জের ডাক্তারদের পক্ষে তা সম্ভব কিনা। ডিজিটাল বাংলাদেশ বলছি বটে কিন্তু এখনো অনেক জরুরী ক্ষেত্রে এর প্রয়োগ হচ্ছে না। চিকিৎসার স্বার্থে ডাক্তারদের হাতের লেখা স্পষ্ট করে লেখা যেন বাধ্যতামূলক করা হয় তার ব্যবস্থা নেয়া যে খুব জরুরী হাইকোর্টের নির্দেশ তাই বলে দেয়। কি জানি তারা (ডাক্তাররা) আবার বেজার হন কিনা? বেজার হলে আমার ঘর থেকেই শুরু হবে। কেননা ঘরেই রয়েছে ডাক্তার, বড়দা। হাইকোর্টের নির্দেশ যদি তাদের ’ইগোতে’ লাগে তাহলে তারা আন্দোলনও করতে পারেন, চিকিৎসা ব্যবস্থার বারোটা বাজিয়ে দিতে পারেন। প্রয়াত নাট্যকার ও লেখক হুমায়ুন আহমেদ তার এক নাটকের মূল চরিত্র, ডাক্তারকে (আফজাল হোসেন) একটু বোকা কিছিমের দেখিয়েছিলেন। ডাক্তারদের গায়ে লাগলো, তারা মিছিল বের করলেন এর প্রতিবাদে। কদিন আগে দেখলাম ডাক্তাররা প্রতিবাদ করেছেন পাঠ্য বইয়ে ডাক্তারদের ’অর্থ লিঞ্ঝু’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে। হাতের আঙ্গুল সব সমান নয় যেমন, তেমনি সব ডাক্তারকে ঐভাবে চিত্রায়িত করা হয়তো সঠিক হয়নি। কিন্তু কথাটা কি একেবারে উড়িয়ে দেবার মত? দেশের কজন ডাক্তার বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন মানবতার সেবাই তাদের লক্ষ্য। এই প্রসঙ্গে সেদিন এক প্রবাসী বাংলাদেশী বললেন, ’ কথায় আছে থানার ধারে কাছে কানা যায় না। কিন্তু অবস্থা এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে ডাক্তারের কাছে মরাও যায় না।’ ব্যাখ্যা করতে বললে তিনি বলেন, ’ নেহায়েৎ অপারগ না হলে ডাক্তারের কাছে কেউ যেতে চায় না। কারণ সে জানে ডাক্তারের কাছে গেলে তাকে ’চেঁছে’ দেয়া হবে, অর্থাৎ প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে এই টেস্ট, ওই টেস্ট, ফী ইত্যাদি করতে করতে তাকে অনেকটা মেরে ফেলার মত।

    হাইকোর্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন ডাক্তারদের হাতের লেখা উন্নত করার জন্যে। আবেদন জানাবো, ডাক্তারদের (কিছু ব্যতিক্রম বাদে) রোগীর সাথে ভালো আচরণ কিভাবে করতে তার উপর ’কোর্স’ চালু করতে। ইউরোপে ডাক্তারের ব্যবহারে রোগীর অসুখ অর্ধেক ভালো হয়ে যায়। বাংলাদেশে এর ঠিক উল্টো। এ আমার দু -দিকের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে। হল্যান্ডের কথা বলি- ডাক্তারের সাথে এপয়েন্টমেন্ট করলেন তার সহকারীকে ফোন করে. নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট সময় আপনি গেলেন তার চেম্বারে। অপেক্ষা করছেন বসার কামরায়। নির্দিষ্ট সময়ে ডাক্তার তার কামরা থেকে বেরিয়ে রোগীর নাম ধরে ডাক দিলেন। রোগী এগিয়ে গিয়ে হাত মেলালেন। সহাস্যে ডাক্তার রোগীকে নিয়ে তার কামরায় গেলেন। রোগীর সমস্যা শুনে ডাক্তার তার কী সমস্যা, কী করতে হবে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেবেন। প্রয়োজনে সামনে কম্পিউটারের স্ক্রীনে দেখিয়ে দেবেন। আর আমাদের দেশে? কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া, ডাক্তার রোগীর সমস্ত সমস্যা শোনার আগেই কাকের ঠ্যাং বকের ঠ্যাং জাতীয় হাতের লেখায় এক ফর্দ ঔষুধ লিখে দিয়ে বলবেন, অমুক ক্লিনিক থেকে এটা-ওটার টেস্ট করিয়ে আনবেন, তারপর আবার আসবেন। কিছু যদি জিজ্ঞেস করতে যান, ডাক্তার এমন একটা ভাব করবে যেন আপনি প্রশ্ন করে মহাভারত অশুদ্ধ করে ফেলেছেন। এই অভিজ্ঞতা আমার নিজের, অসুস্থ মা এবং বাবার সাথে হাসপাতাল আর প্রাইভেট ক্লিনিকে ডাক্তারের (প্রফেসর) সাথে দেখা করতে গিয়ে। এই নিয়ে লিখতে গেলে কম করে হলেও কয়েক দফায় লিখতে হবে। সে সম্ভব না। তাই আর কথা না বাড়িয়ে কেবল এটাই ডাক্তারদের বলবো, ’অর্থ কামান, কোন সমস্যা নয়। এই অর্থ কামানোর জন্যে আমার মত অনেকের ইউরোপ আসা। কিন্তু রোগীরা আপনাদের কাছ থেকে একটু সহানুভূতিসম্পন্ন ব্যবহার আশা করেন। পেশাটিকে একটু মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও দেখুন। চিকিৎসা মহৎ পেশা। মানুষ খুব অসহায় হয়ে আপনাদের কাছে যান। তাদের ভালোবাসুন, পেশার মহত্বকে আরো মহৎ করে তুলুন। মানুষ তো মানুষের জন্যেই, তাই নয় কি?

    (সংগৃহীত)

  • ইসবগুলের ভুসির কার্যকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম

    ইসবগুলের ভুসির কার্যকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম

    এসবিনিউজ ডেস্ক : ঘুমানোর আগে আমরা অনেকে ইসবগুলের ভুসি খেয়ে থাকি। ইসুবগুলের ভুসি রাতের খাবারের পরে অনেকক্ষণ ভিজিয়ে না রেখে পানি দিয়ে গুলিয়ে সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে ফেলতে হবে।

    ইসবগুলের ভুসির কার্যকারিতা জেনে নেয়া যাক:

    ১. পেটের প্রায় সব ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ইসবগুল হতে পারে এক উত্তম দাওয়াই। পেট ঠাণ্ডা রাখতে ইসবগুল ভুসির ভূমিকা অনন্য।

    ২. তাছাড়া পেট ব্যথা দূর করতে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন। এর মিউসিলেজিনাস ভূমিকার কারণে আলসারজনিত পেট ব্যথা কম মনে হয়।

    ৩.ইসবগুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যামিনো এসিড রয়েছে। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। এক গ্লাস পানিতে চিনি বা গুড় মিশিয়ে খালি পেটে এ ভুসি খান। প্রতিদিন দুই থেকে তিন চা চামচ ইসবগুল ভুসি এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে দুই থেকে চারবার খেতে পারেন, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় সমাধান পাবেন।

    ৪.আঁশসমৃদ্ধ খাবার ইসবগুল। নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। আমাশয় কিংবা অর্শ রোগ থেকে দূরে থাকতে পারবেন। দ্রুত ফল পেতে দইয়ের সঙ্গে ইসবগুল মিশিয়ে খেতে পারেন।

    ৫.হজমের সমস্যায় ভুগছেন? এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন।

    ৬.কোলেস্টেরল ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ওজন কমাতে চাইলে ইসবগুলের ভুসি খেয়ে যান। পাশাপাশি টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য এটা এক দারুণ পথ্য।

    ৭.ডায়রিয়া উপশমে বেশ উপকারে আসে ইসবগুল ভুসি। এজন্য ৭-২০ গ্রাম ভুসি দিনে দুবার খাওয়া যেতে পারে।

    ৮.পাইলস রোগীদের জন্য সুখবর। এ রোগে আক্রান্ত হলে প্রতিদিন তিন থেকে চারবার ইসবগুলের ভুসির শরবত খেয়ে যান।

    ৯.নির্দিষ্ট মাত্রায় ইসবগুল খেলে তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা ভালো।

     

     

  • আবিস্কার হল বিশ্বের প্রথম ছোট পেসমেকার

    আবিস্কার হল বিশ্বের প্রথম ছোট পেসমেকার

    এসবিএন : বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রাকৃতির পেসমেকার আবিষ্কার করলো বিজ্ঞানীরা। এই পেসমেকার দেখতে ছোট আকৃতির ট্যাবলেটের মত। এতে মোস্ট অ্যাডভান্সড পেসিং টেকনোলজি ব্যবহৃত হয়েছে। পেসমেকার হচ্ছে এমন এক ধরণের ডিভাইস যেটি অনিয়মতান্ত্রিক হৃৎস্পন্দনকে নিয়ন্ত্রন করে। হৃদস্পন্দনের ছন্দময়তা বজায় রাখে।

    পেসমেকার দু’ধরনের। একটি হচ্ছে হৃৎপিন্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশরুপি সাইনো অ্যাট্রিয়াল নোড। যা প্রাকৃতিক পেসমেকার নামে পরিচিত। অন্যটি হরচ্ছ যান্ত্রিক পেসমেকার। এটি অসুস্থ প্রাকৃতিক পেসমেকারকে নজরদারির মধ্যে রাখে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছে, তারা ক্ষুদ্রাকৃতির এই পেসমেকারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক রোগীর শরীরে স্থাপন করতে পেরেছে। এই পেসমেকারটিকে বলা হচ্ছে টিপিএস। ডিভাইসটি সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন(এফডিএ) এর কাছ থেকে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেছে।

     

  • সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে কুয়েতে প্রতিবাদ সভা

    সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে কুয়েতে প্রতিবাদ সভা

    এসবিনিউজ ডেস্ক : সম্প্রতি বাংলাদেশে সাংবাদিক নির্যাতন, দুর্বৃত্তের হাতে খুন বেড়েই চলেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার ও রিমান্ডের নামে সাংবাদিক নির্যাতন এর সঠিক বিচার না হলে আগামীতে দেশে অপরাধের প্রবণতা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন প্রবাসী সাংবাদিকরা। কুয়েতে বাংলাদেশি বিভিন্ন প্রিন্ট ও টেলিভিশন সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ রিপোর্টার্স ইউনিটি কুয়েত এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।

    বাংলাদেশ রিপোর্টার্স ইউনিটি কুয়েত এর সভাপতি মঈন উদ্দিন সরকার সুমন এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ এহছানুল হক খোকন এর সঞ্চালনায় কুয়েত সিটির রাজধানী হোটেলে ৯ ফেব্র“য়ারি রাতে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

    বক্তারা সাংবাদিক শিমুল হত্যা, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাভার প্রতিনিধি নাজমুল হুদাকে মিথ্যা মামলায় নির্যাতন, বিশিষ্ট সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, এটিএন নিউজের দুই সাংবাদিককে পুলিশ কর্তৃক নির্যাতন কে ন্যাক্কারজনক ঘটনা বলে আখ্যা দিয়েছেন। সাগর-রুনিসহ সকল নিহত সাংবাদিকদের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

    উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক মোহাম্মদ ইয়াকুব, আবু সাদেক রিপন, মাহমুদুর রহমান, আবদুল হাই ভূইয়া, শাহী এমরান সিকদার, সংগঠক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী চৌধুরী, মোহাম্মদ মুসা, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কুয়েত সভাপতি আনিসুল হক সুমন, কবি মোহাম্মদ আনিসুর রহমান মিলান প্রমুখ।

     

     

  • রাজনীতিতে আসছেন সুরঞ্জিতপুত্র সৌমেন সেনগুপ্ত

    রাজনীতিতে আসছেন সুরঞ্জিতপুত্র সৌমেন সেনগুপ্ত

    এসবিনিউজ ডেস্ক : প্রত্যাশিতভাবেই রাজনীতিতে আসছেন সদ্য প্রয়াত প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ছেলে সৌমেন সেনগুপ্ত। তার বাবার মৃত্যুর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি রাজনীতিতে আসার বিষয়ে এই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বাবার নির্বাচনী এলাকায় উপ-নির্বাচনে অংশ নেয়ার ইচ্ছা রয়েছে তার। তবে এক্ষেত্রে সবকিছু নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার ওপর। তিনি বলেন, রাজনীতি করার আগ্রহ রয়েছে আমার। তবে সেটা নির্ভর করছেন আমাদের অবিভাবক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর। তিনি যদি নির্দেশ দেন তাহলে আমি রাজনীতি করবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাবার (সুরঞ্জিত সেন) পরেই আমাদের অভিভাবক। বাবা যেহেতু এখন আর নেই তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের বাইরে গিয়ে কোনো কিছু করবো না।

    প্রসঙ্গত গত ৫ ফেব্রুয়ারি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মারা গেছেন। জাতীয় সংসদের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, সুপরিচিত এই রাজনীতিবিদের জন্ম ১৯৪৫ সালে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায়। রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এমন কী মুক্তিযুদ্ধের আগে ১৯৭০-এর নির্বাচনে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি থেকে মাত্র ২৫ বছর বয়সে নির্বাচিত হয়েছিলেন এই রাজনীতিবিদ। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে তিনি যোগ দেন আওয়ামী লীগে।

    সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জ-২ আসন থেকে উপনির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা জানতে চাইলে সৌমেন সেনগুপ্ত বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর নির্ভর করছে। তিনি যদি আমাকে মনোনয়ন ও নির্দেশ দেন তাহলে আমি নির্বাচনে অংশ নেবো। প্রধানমন্ত্রী যদি না চান তাহলে অংশ নেবো না। কারণ প্রধানমন্ত্রী আমাদের অভিভাবক। তার নির্দেশের বাইরে আমি এবং আমাদের পরিবার কিছু করবে না।

    রাজনীতিতে না এলে বাবা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে চান সৌমেন সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, বাবার নামে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মহিলা কলেজ ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট নামে একটি কলেজ রয়েছে। বর্তমানে এই কলেজটির দায়িত্ব আমি নিয়েছি। এই কলেজের সার্বিক উন্নয়ন করাই হবে আমার কাজ। এর বাইরে কিছু রাস্তা, ব্রিজসহ বেশ কিছু উন্নয়ন মূলক কাজ বাবা অসমাপ্ত রেখে গেছেন। এগুলো আমি শেষ করতে চাই। বাবা জীবনভর মানুষের উপকার করে গেছেন। এলাকার মানুষের উন্নয়নে কাজ করেছেন। আমি চেষ্টা করব বাবার শেষ কাজটুকু করে যেতে।

    সৌমেন সেনগুপ্ত পেশায় একজন ব্যবসায়ী হলেও রাজনীতি সম্পর্কে রয়েছে স্বচ্ছ ধারণা। ব্যবসায় থেকে রাজনীতিতে আসাটা চ্যালেঞ্জ কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিটি কাজেই চ্যালেঞ্জ আছে। সেটা ব্যবসা কিংবা রাজনীতি সব ক্ষেত্রেই। তবে রাজনীতি করলে সরাসরি মানুষের কাছে যাওয়া যায়। মানুষের সেবা করার সুযোগ একটু বেশি থাকে। তাই রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের সেবা করতে চাই বাবার মতো।

    সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের একমাত্র সন্তান সৌমেন সেনগুপ্ত কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি ও লেভেল পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন ঢাকার মোহাম্মদপুরের গ্রীন হেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে। এ লেভেল সম্পন্ন করেছেন ধানমন্ডির গ্রীনজ্যাম ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে। কম্পিউটার সায়েন্সে সম্মান কোর্স সম্পন্ন করেন ঢাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে। মাস্টার্স করেন কানাডার ডেল হাউস ইউনিভার্সিটি থেকে। তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।

     

     

  • সমালোচকদের ‘ক্ষমা প্রার্থনা’ এখন পাওনা: জয়

    সমালোচকদের ‘ক্ষমা প্রার্থনা’ এখন পাওনা: জয়

    এসবিনিউজ ডেস্ক : বিশ্ব ব্যাংক অভিযোগ তোলার পর পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশের যারা দুর্নীতির কথা বলে গলা চড়িয়েছিল, তাদের এখন সরকারের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের মামলা নাকচ করে কানাডার আদালতের রায় দেয়ার পর নিজের ফেসবুক পেজে জয় এই মত প্রকাশ করেন।

    প্রসঙ্গত, গতকাল শুক্রবার পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতি চেষ্টার অভিযোগ এনে কানাডার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএমসি লাভালিনের তিন কর্মকর্তাকে খালাস দিয়ে দেশটির আদালতের দেয়া রায় প্রকাশ হয়েছে। এই রায়ে বিচারক ইয়ান নরডেইমার বিশ্বব্যাংকের তোলা অভিযোগকে ‘অনুমানভিত্তিক, গাল-গল্প ও গুজবের বেশি কিছু নয়’ বলেছেন। তিনি বলেন, ‘ওই গুজব বা অনুমানকে সমর্থন করে এমন ঘটনা সংশ্লিষ্ট কোনো প্রমাণ হাজির করা হয়নি বা তার তদন্ত হয়নি। যে তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে তা শোনা কথা’।

    নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জয় লিখেছেন, ‘এই মিথ্যা তৈরি করেছে বিশ্ব ব্যাংক। পুরো উপাখ্যান চলাকালে আমি তাদের এই সব প্রমাণাদি দেখেছি। এতে সুনির্দিষ্ট-বিস্তারিত কিছু নেই, যা সুস্পষ্টভাবেই বানানো। রয়েছে কেবল একটি বেনামী সূত্র, যা এমনকি কানাডার আদালতের কাছেও প্রকাশ করা হয়নি। সুতরাং তারা অভিযোগ দায়ের করেছে, কিন্তু দাবির পক্ষে প্রমাণ দিতে অস্বীকার করেছে।’

    ফেসবুকে দেওয়া ওই স্ট্যাটাসে জয় লিখেছেন, ‘আমার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সুনামহানি করতে বিশ্ব ব্যাংক এই ষড়যন্ত্র করেছে।’

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে আসছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্ব ব্যাংাকের অভিযোগ তোলা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ এবং এতে বাংলাদেশিরাও জড়িত ছিলেন। সম্প্রতি তিনি সংসদে বলেন, হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংেকের অর্থায়ন আটকেছিলেন নোবেলজয়ী বাংলাদেশি মুহাম্মদ ইউনূস এবং এতে বাংলাদেশের এক সম্পাদকেরও ভূমিকা ছিল।

    বিশ্ব ব্যাংক বলার পর পদ্মা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে শোরগোল ওঠে বাংলাদেশেও; তখন সরকারের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন অনেকে।

    সেসব সমালোচকদের উদ্দেশে জয় তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘এটা লজ্জাজনক যে, আমাদের সুশীল সমাজের একটা অংশ দ্রুত আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে ও বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষে অবস্থান নেন। তারা বেশ কয়েকজন পরিশ্রমী, সম্মানিত যোগ্য মানুষের গায়ে কালিমা লেপন করেছেন যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তারা দেশপ্রেমিক নয়।’

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ সরকার এবং ‘সম্মান ক্ষন্ন হওয়া’ ব্যাক্তিদের কাছে ওই সমালোচকদের ‘ক্ষমা প্রার্থনা’ এখন পাওনা বলে মন্তব্য করেছেন জয়। বাংলাদেশের কাছেও তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিৎ বলে স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন তিনি।

    মায়ের মতো জয়ও অভিযোগ করেন, দেশের সবচেয়ে বড় সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতি চেষ্টার অভিযোগ তোলার পেছনে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. মুহম্মদ ইউনুসের হাত ছিল। এ বিষয়ে তিনি লেখেন, এই অভিযোগ উঠার পর তাকেও যুক্তরাষ্ট্রে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। ইউনুসের অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সরকারকে শায়েস্তা করতে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বাতিল করতে বিশ্ব ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

    ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও কর ফাঁকির অভিযোগও এনে জয় বলেন, ‘আপনারা কি জানেন, ইউনুস, তার পরিবার, বন্ধুরা বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে লাভজনক টেলিযোগাযোগ কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ারের মালিক। একটি বেসরকারি ট্রাস্ট্রের মাধ্যমে তারা এটার মালিক হয়েছে, কেবল তারাই এর সুবিধাভোগী। গ্রামীণ ব্যাংকের একটি মাল্টি মিলিয়ন ডলারের লোন থেকে এই শেয়ারের টাকা দেওয়া হয়েছে, যা অবৈধ। দাতাদের অর্থে দরিদ্রদের ক্ষুদ্র ঋণ দিতে খরচ করে গ্রামীণ ব্যাংক। এখান থেকে ব্যক্তিগত ব্যবসার জন্য ঋণ করা যায় না।’

     

  • গোপালগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধার বাড়ী ভাংচুর

    গোপালগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধার বাড়ী ভাংচুর

    গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা হাসমত আলী শেখের বাড়ী-ঘর ভাংচুর করাসহ কমপক্ষে ১৩টি শিরিষ গাছ, আম গাছ, পেয়ারা গাছ, মেহগনি গাছ ও নারকেল গাছ কেটে নিয়েছে প্রতিবেশী ইলু শেখ, হেলাল শেখ ও তাদের সঙ্গী হাসান মোল্যাসহ তাদের সাঙ্গো পাঙ্গোরা।

    শুক্রবার সকালে মুক্তিযোদ্ধা হাসমত আলী শেখ জানিয়েছেন তাকে প্রায়ই ওই সকল ব্যাক্তিরা বিভিন্ন উপায়ে হয়রানী ও নির্যাতন করে। সম্প্রতি তিনি ঢাকায় অবস্থান কালে তার বাড়ী এসে দুটি ঘর ভেঙ্গে ফেলে। ১৩টি গাছ কেটে নিয়ে গেছে। তারা তার জায়গার মধ্যে বেড়া দিয়ে প্রায় ২ কাঠা জায়গা জোর পুর্বক দখল করে নিয়েছে। হামলাকারীরা ভাংচুরের সময় ঘরে রাখা উল্লেখযোগ্য পরিমান নগদ টাকা নিয়ে গেছে বলেও জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ মুক্তিযোদ্ধা।

    এ ঘটনার পর তার স্ত্রী থানায় গিয়ে অভিযোগ করলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল সরেজমিন তদন্ত করে করে গেছে কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।

    বর্তমানে হামলাকারী চক্রটি বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং প্রাণনাশেরও হুমকি দিচ্ছে বলে জানায় হাসমত আলী শেখ।

     

  • গোপালগঞ্জের বশেমুরবিপ্রবি’র ক্যাফেটারিয়া এখন ছাত্রী হল

    গোপালগঞ্জের বশেমুরবিপ্রবি’র ক্যাফেটারিয়া এখন ছাত্রী হল

    গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ করে বেশ কয়েক মাস যাবত ছাত্রী হল হিসাবে চালানো হচ্ছে। এতে করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েছে। তারা বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে বাড়তি মূল্যে খাবার ক্রয় করে খাচ্ছে বলে জানিয়েছে।

    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারজানা নামের একজন ছাত্রী জানিয়েছেন ছাত্রী হলটিতে থাকতে পেরে সুবিধা হলেও নিজেদের খাবার বাবদ বাড়তি অর্থ দিতে হচ্ছে। ছাত্রী হলটিতে পুরুষ প্রভোষ্ট মো: নুরুন্নবী কর্তৃক মেয়েদের প্রাইভেসী নষ্ট বা পীড়নের অভিযোগ থাকলেও সেখানকার নিবাসীরা তা  সরাসরি স্বীকার করেনি। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেছে যে ছাত্রী হলে মহিলা প্রভোষ্ট দেয়া উচিৎ।

    এ ব্যাপারে ছাত্রী হলটির প্রভোষ্টকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন দায়িত্ব পালন করতে কমফোর্ট্যাবল ফিল করেন। ছাত্রী হলটির ব্যাপারে কারো নাক না গলানোর পরামর্শও তিনি দেন।

     

  • গোপালগঞ্জে ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ

    গোপালগঞ্জে ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ

    গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তিন বখাটের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে (১৬) বিবস্ত্র করে ভিডিওচিত্র ধারণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর ওই ছাত্রী কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে কোটালীপাড়া থানায় মামলা করেছেন। আসামিরা হলেন সম্রাট মণ্ডল (২৩), সজল বিশ্বাস (২২) ও মিঠু বসু (২০)।

    মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই ছাত্রী গত রবিবার রাতে ঘরের বাইরে বের হলে আসামিরা তাকে ধরে বাড়ির পাশে নিয়ে যান। এরপর আসামিরা তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিওচিত্র ধারণ করে। পরের দিন সোমবার সকালে ওই ছাত্রী বাড়িতে থাকা কীটনাশক পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে প্রথমে কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই ছাত্রী চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিল। ইতিমধ্যে সে বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা দিয়েছে। এরপর আর পরীক্ষা দিতে পারেনি।

    ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, স্থানীয় বখাটে সম্রাট কিছুদিন ধরে তাঁর মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এতে সাড়া না দেওয়ায় দুই সহযোগীকে নিয়ে ওই বখাটে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

    কোটালীপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্রীকে দেখে এসেছি। তার বাবা তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

  • পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পায়নি আদালত

    পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পায়নি আদালত

    এসবিনিউজ ডেস্ক : পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের কোনো প্রমাণ পায়নি কানাডার আদালত। তাই এই মামলার ৩ আসামিকে খালাস দিয়েছে আদালত। কানাডার পত্রিকা দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

    অন্টারিও সুপ্রিমকোর্টের বিচারক ইয়ান নরডেইমার শুক্রবার এই আদেশ দেন। এই আদেশের ফলে এসএনসি-লাভালিনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট (জ্বালানি ও অবকাঠামো) কেভিন ওয়ালেস, প্রতিষ্ঠানটির আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান ব্যবসায়ী জুলফিকার ভূঁইয়া এই মামলা থেকে খালাস পেলেন।

    পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ তদারকির ৫ কোটি ডলারের কাজ পেতে এসএনসি-লাভালিনের কর্মীরা ২০১০ ও ২০১১ সালে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ যোগাড়ে ফোনে আড়ি পাতা তথ্য (ওয়্যার ট্যাপস) ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে ২০১১ সালে ৩টি আবেদন করে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি)।

    অন্টারিও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ইয়ান নরডেইমার আদেশে বলেন, ওই ৩ আবেদনের বিষয়ে তার ব্যাপক প্রশ্ন রয়েছে। এগুলোতে যেসব তথ্য দেয়া হয়েছে সেগুলো ‘অনুমানভিত্তিক, গাল-গল্প ও গুজবের বেশি কিছু নয়’ বলে মূল্যায়ন তার।

    দুর্নীতির এই অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েন শেষে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল হয়ে যায়। পরে নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে হাত দেয় বাংলাদেশ সরকার।

    দুর্নীতির ওই ষড়যন্ত্রে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পদত্যাগে বাধ্য হন সেই সময়ের যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন। অভিযোগ ছিল সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর বিরুদ্ধেও। তবে তাদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে দুদকের পক্ষ থেকে সে সময় জানানো হয়।

    বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে ২০১০ সালে নিজেরা তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ সম্পর্কে নিজেদের তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশকে (আরসিএমপি) অনুরোধ জানায়। ওই অনুরোধে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে কানাডায় এসএনসি লাভালিনের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে রমেশ শাহ ও সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

    ২০১২ সালে টরোন্টোর আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে এসএনসি-লাভালিনে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস ও ব্যবসায়ী জুলফিকার ভূঁইয়াকেও এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।

    সে সময় রমেশ শাহের কাছ থেকে কানাডীয় পুলিশের জব্দ করা একটি ডায়েরি নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়, যাতে ‘বাংলাদেশের কাকে কতো শতাংশ ঘুষ দেয়া হবে’ তার সাংকেতিক বিবরণ ছিল বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়।

    এদিকে বিশ্ব ব্যাংকের চাপে ‘ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে দুদক ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর বনানী থানায় একটি মামলা করলেও ২২ মাস পর তদন্তকারীরা বলেন, অভিযোগের কোনো প্রমাণ তারা তদন্তে পাননি।

    দুদক চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ায় ২০১৪ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশে পদ্মা দুর্নীতি মামলার অবসান ঘটে, তখনকার সেতু সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ ৭ আসামির সবাইকে অব্যাহতি দেয় আদালত।

     

  • নারীর ক্ষমতায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন : স্পিকার

    নারীর ক্ষমতায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন : স্পিকার

    এসবিনিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ও সিপিএ চেয়ারপার্সন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, সংসদের উপনেতা ও বিরোধী দলীয় নেতা সকলেই নারী। নারীর ক্ষমতায়ন ও সর্বস্তরে নারীদের সমঅধিকার অর্জন নিশ্চিতকল্পে প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা, যার মাধ্যমে কার্যকর ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে নারী উন্নয়ন ও নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব।

    তিনি শুক্রবার ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের অমরাবতীতে মায়ের’স এমআইটি স্কুল অব গভর্ণমেন্ট, পুনে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এসোসিশেন (সিপিএ) ও ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ)-এর সহযোগিতায় অন্ধ্র প্রদেশের লেজিসলেটিভ এসেম্বলি ও অন্ধ্র প্রদেশ সরকারের আয়োজনে তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল উইমেনস পার্লামেন্ট (এনডব্লিউপি) এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।

    সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ আবশ্যক উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, রাজনীতিসহ সকল ক্ষেত্রে নারীকে নেতৃত্বদানের সুযোগ করে দিতে হবে। তিনি বলেন, সুযোগ ও সক্ষমতা অর্জন এই দুয়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপিত হলে ব্যাপক অর্থে সামাজিক পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অনেকগুলোই অর্জন করেছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু ও জেন্ডার বৈষম্য নিরসনসহ অনেক ক্ষেত্রেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি, নারীদের জন্য বিভিন্ন প্রকার ভাতা ব্যবস্থাসহ নানাবিধ পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত নারীর উন্নয়ন হয়েছে।

    স্পিকার বলেন, তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে বিশ্বায়নের এ যুগে পুরাতন ধ্যান-ধারণা থেকে মুক্ত হয়ে সমৃদ্ধ আগামী বিনির্মাণে সকল ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা একান্ত আবশ্যক। কারন সমাজের অর্ধেক জনশক্তিকে পেছনে রেখে অর্থনৈতিক মুক্তি ও উন্নত সমাজের স্বপ্ন দেখা সম্ভব নয়।

    সিপিএ চেয়ারপার্সন বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের আলোকে নারী পুরুষের সমতা ও নারীর জন্য সমসুযোগ সৃষ্টির ব্যাপারে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

    আরবান ডেভেলপমেন্ট মন্ত্রী এম ভেঙ্কাইয়ানাইডু সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। এছাড়া নোবেল বিজয়ী আধ্যাত্মিক গুরু এইচ, এইচ দালাই লামা গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

    অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে অন্ধ্র প্রদেশ লেজিসলেটিভ এসেম্বলির স্পিকার ড. কোদেলা শিভা প্রসাদ রাও অন্ধ্র প্রদেশের মূখ্যমন্ত্রী নারা চন্দ্রবাবু নাইডু এবং রাহুল ভি. কারাদ বক্তৃতা করেন।

    প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ভারতের আরবান ডেভেলপমেন্ট মন্ত্রী এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, এই প্রথমবারের মত ভারতে ন্যাশনাল উইমেনস পার্লামেন্টের মত একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে যা নারী জাগরণ ও নারীর ক্ষমতায়নে এক নতুন দিগন্তের শুভ সূচনা করেছে। বর্তমান বিশ্বে নারীরা রাজনীতি, ব্যবসা, বাণিজ্য, শিল্প সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত সরকার নারীর ক্ষমতায়নে নানা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

    এর আগে সকালে অন্ধ্র প্রদেশের মূখ্যমন্ত্রী নারা চন্দ্রবাবু নাইডু হোটেলে স্পিকারের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসময় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তারা নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে আরও অধিক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

     

     

  • ৬৮৭ রানে ইনিংস ঘোষণা ভারতের

    ৬৮৭ রানে ইনিংস ঘোষণা ভারতের

    এসবিনিউজ ডেস্ক : অবশেষে ৬৮৭ রানে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে ভারত।  ৬ উইকেটে ৬৮৭ রান করে ভারত। রেকর্ডময় এই ম্যাচে অধিনায়ক বিরাট কোহলির ডাবল সেঞ্চুরির পাশাপাশি মুরালি বিজয় ও ঋৃদ্ধিমান সাহা সেঞ্চুরি করেন। বাংলাদেশের বোলারদের হয়ে ৩টি উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। আর ২টি উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

    এদিকে আগের দিনের ৩ উইকেটে ৩৫৬ রান নিয়ে তৃতীয়দিন শুরু করে ভারত।  আগের দিনের ১১১ রান নিয়ে মাঠে নামেন বিরাট কোহলি। আর ৪৫ রান নিয়ে শুরু করেন রাহানে। দ্বিতীয় দিনে আরও ১০০ রান যোগ করেন এই জুটি। অবশেষে এই জুটি ভাঙ্গেন তাইজুল। ৮৫ রানে তিনি ফেরান রাহানেকে। আর দলীয় ৪৯৫ রানের মাথায় কোহলিকে ফেরান সেই তাইজুলই। তবে আউট হওয়ার আগে বিরাট খেলেন ২৪ টি চারের সাহায্যে ২০৪ রানের ইনিংস।

    তাদের বিদায়ের পরে ক্রিজে আসেন ঋৃদ্ধিমান সাহা। তিনিও আদায় করেন সেঞ্চুরি। আর তার সাথে ৬০ রানের ইনিংস খেলেন রবিন্দ্র জাদেজা। অপরাজিত থাকেন দুজনই।

     

     

  • বই লেখার গল্প

    বই লেখার গল্প

    ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল : আমাদের বই মেলাটি নিঃসন্দেহে একটি অসাধারণ ব্যাপার। পৃথিবীর অন্যান্য বই মেলায় শুধু বই বেচাকেনা হয়। একুশের বই মেলা দেখলে মনে হয় এখানে বই বেচাকেনাটি বুঝি মূল লক্ষ্য নয়। মূল লক্ষ্য হচ্ছে উৎসব। বই মেলার কোনো একটা কোনায় গালে হাত দিয়ে বসে মেলায় আসা মানুষগুলোকে দেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার করে দেওয়া যায়।

    বই মেলায় কত রকম স্টল, আর তার ভেতর কত রকম বই! যারা বইগুলো নেড়েচেড়ে দেখেন তারা হয়তো কখনও কল্পনাও করতে পারেন না যে, এর প্রত্যেকটা বইয়ের পিছনে লেখকের একটা গল্প আছে। এখন বই ছাপানো খুব সোজা হয়ে গেছে, যে কেউ চাইলেই গ্রন্থকার হতে পারে। যখন বিষয়টি এত সোজা ছিল না তখনও আমাদের পরিবারে গ্রন্থকারের জন্ম হয়েছে। তাই আমরা খুব ভালো করে জানি একটা বইয়ের পেছনে কত রকম গল্প থাকতে পারে।

    আমার পরিবারের প্রথম গ্রন্থকার ছিলেন আমার বাবা। সেই ছোট থেকে দেখে আসছি, সময় পেলেই উবু হয়ে লিখছেন। নানা রকম পত্রপত্রিকায় সেই লেখা ছাপা হত। পুলিশে চাকরি করতেন। আমার ধারণা যারা পুলিশে চাকরি করে তারা হয়তো মানবচরিত্রের বিচিত্র উদাহরণগুলো সবচেয়ে বেশি দেখার সুযোগ পায়। তাই আমার বাবার লেখা অনেকগুলো গল্প ছিল এই পুলিশজীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে। আমার বাবা যখন বগুড়া ছিলেন তখন তাঁর ইচ্ছে হল যে, তাঁর লেখা গল্পগুলো নিয়ে একটা বই বের করবেন।

    আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে একটা বই ছাপানো ছিল রীতিমতো একটা চ্যালেঞ্জ। বাবার পরিচিত একজন প্রেস মালিক ছিলেন। তিনি আগ্রহ নিয়ে বই ছাপানোর ব্যবস্থা করলেন। বাসার কাছে পরিচিত একজন শিল্পী বইয়ের কভার করে দিলেন। বাবা পুলিশে চাকরি করেন। সময়টা পাকিস্তানি আমল। তাই নিজের নামে বই ছাপানো যাবে না। একটা ছদ্মনামে বই ছাপানো হল। একদিন বাঁধাই হয়ে বই বাসায় এল। তখন আমাদের কী উত্তেজনা!

    তারপর কত ঝড়-ঝাপটার ভেতর দিয়ে গিয়েছি। পরিবার কত বার কত ভাবে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে! তারপরেও কীভাবে কীভাবে জানি বাবার লেখা বইয়ের দুটি কপি রক্ষা পেয়েছে। একটির বেশিরভাগ উই খেয়ে ফেলেছে; অন্যটা মলাটবিহীন অবস্থায় অক্ষত আছে। আমরা সময় পেলে মফস্বলের একটা প্রেসে ভাঙ্গা টাইপে নিউজপ্রিন্টে ছাপানো সেই বইটা সস্নেহে নেড়েচেড়ে দেখি।

    মজার ব্যাপার হচ্ছে, মাঝে মাঝেই নামিদামি প্রকাশকেরা আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন। তারা আমার বাবার বইটা পুনঃমুদ্রণ করতে চান। আমরা কখনও দেইনি। তার কারণ, প্রকাশকেরা আসলে বইটি আমার বাবার বই হিসেবে ছাপতে চান না, হুমায়ূন আহমেদের বাবার বই হিসেবে ছাপতে চান।

    আমার বাবা তাঁর প্রকাশিত বইটি প্রথমবার হাতে নিয়ে কী রকম আনন্দ পেয়েছিলেন, সেটি এখন আর আমরা কোনোদিন জানতে পারব না। কিন্তু আমার মায়ের অভিজ্ঞতাটুকু আমি জানি। আমার মা খুব বেশি লেখাপড়ার সুযোগ পাননি। কিন্তু অসম্ভব বই পড়ার নেশা ছিল। আমার বাবার উৎসাহে এক দুই বার ছোটখাট গল্পও লিখেছিলেন। কিন্তু তাঁর প্রথম সত্যিকারের লেখাটি লিখেছিলেন আমেরিকাতে বসে। আমি তখন আমেরিকা থাকি। আমার মা বেড়াতে এসেছেন। নাতি-নাতনির সাথে সময় কাটানো ছাড়া অন্য কোনো কাজ নেই। আমি তাঁকে কম্পিউটারে বাংলা টাইপ করা শিখিয়ে দিয়েছি। তখনও বাংলায় কম্পিউটারে টাইপ করার প্রচলন হয়নি। তাই আমার মায়ের কম্পিউটারে বাংলা লেখা দেখে দেশে সবাই রীতিমতো বেকুব হয়ে গেল।

    তখন একদিন আমার স্ত্রী আমার মাকে বলল তাঁর বিস্ময়কর জীবনের ঘটনাগুলো লিখে রাখতে। আমার মা তখন সত্যি সত্যি লিখতে শুরু করলেন। আমি সেগুলো কম্পিউটারে টাইপ করে দিতাম। দেশে ফিরে আসার সময় আমি আমার মায়ের কাছে পাণ্ডুলিপিটি দিয়ে দিলাম, ইচ্ছে করলে কোনো প্রকাশককে যেন দিতে পারেন। সেই পাণ্ডুলিপি কখনও কোনো প্রকাশককে দেওয়া হয়নি, বই হিসেবেও প্রকাশ হয়নি।

    তারপর বহুকাল কেটে গেছে। আমি দেশে ফিরে এসেছি এবং কয়েক বছর পর হঠাৎ করে আমার মায়ের লেখা সেই পাণ্ডুলিপিটির কথা মনে পড়ল। আমি সেটার খোঁজ করতে লাগলাম এবং শেষ পর্যন্ত সেটা খুঁজে পাওয়া গেল। উইপোকা বেশ খানিকটা খেয়ে ফেলেছে, কিন্তু তারপরেও সেটা পড়া যাচ্ছে। আমি সময় প্রকাশনীর ফরিদ আহমেদের সাথে যোগাযোগ করলাম। তিনি খুব আগ্রহ নিয়ে বইটি ছাপতে রাজি হলেন।

    বইয়ের ছাপার কাজ যখন শেষের দিকে, বইটি বাঁধাই হওয়ার অপেক্ষা, তখন হঠাৎ আমার মায়ের কাছ থেকে আমি একটা ফোন পেলাম। মা খুব অসুস্থ। ভালো করে কথা বলতে পারেন না। ফোন করে আমাকে বললেন, “বাবা, তোকে একটা কথা বলার জন্যে ফোন করেছি।”

    আমি জিজ্ঞেস করলাম, “কী কথা?”

    মা বললেন, “বাবা, যদি কখনও ভুল করে তোদের মনে কোনো কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে আমাকে মাপ করে দিস।”

    আমি ভয়ানক চমকে উঠলাম। ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “আপনি এসব কথা বলছেন কেন?”

    আমার মা প্রশ্নের উত্তর দিলেন না, আমার থেকে বিদায় নিয়ে ফোন রেখে দিলেন।

    আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। মানুষ মৃত্যুর আগে এই ভাষায় কথা বলে। তাহলে কি আমার মা বুঝতে পেরেছেন তিনি আর বেঁচে থাকবেন না?

    আমি খানিকক্ষণ হতবুদ্ধি হয়ে বসে রইলাম। তারপর সময় প্রকাশনীর ফরিদ আহমেদকে ফোন করে জিজ্ঞেস করলাম, “আমার মায়ের বইটি এখন কোন পর্যায়ে?”

    তিনি বললেন, “ছাপাছাপির কাজ শেষ, বই বাঁধাইয়ের প্রস্তুতি চলছে।”

    আমি বললাম, “যেভাবেই হোক এই মূহূর্তে দুটো বই বাঁধাই করে আমার মায়ের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। খুবই জরুরি।”

    ফরিদ আহমেদ আমার অনুরোধটি খুবই গুরুত্ব দিয়ে নিলেন এবং সাথে সাথে প্রথম দুটি বই বাঁধাই করে রীতিমতো ছুটতে ছুটতে আমার মায়ের কাছে গিয়ে দুটি বই তাঁর হাতে তুলে দিলেন। আমার ‘মৃত্যুপথযাত্রী’ মা বই দুটি হাতে নিলেন এবং পুরোপুরি সুস্থ হলে গেলেন।

    এই ঘটনাটি নিয়ে আমরা সবাই আমার মাকে অসংখ্যবার হাসি-তামাশা করেছি। আমার মা সেই হাসি-তামাশা মেনে নিয়েছেন। না মেনে উপায় কী? একজন নূতন লেখকের প্রথম প্রকাশিত বইয়ের প্রথম কপিটি হাতে নেওয়ার যে তীব্র আনন্দ সেটি সেই লেখক ছাড়া পৃথিবীর আর কেউ অনুভব করতে পারবে না।

    আমাদের পরিবারের সত্যিকারের প্রথম গ্রন্থকার ছিল আমার অগ্রজ হুমায়ূন আহমেদ। বাংলাদেশের কত মানুষ তাঁর কতঁ লেখা কত বার পড়েছে। কিন্তু আমি রীতিমতো অহংকার করে বলতে পারি, তাঁর প্রথম লেখাটি সবার আগে পড়েছিলাম আমি। হুমায়ূন আহমেদ তখন মহসিন হলে থাকে, আমি থাকি সূর্যসেন হলে (পরে আমি ফজলুল হক চলে গিয়েছিলাম)।

    যাই হোক, একদিন ভোরবেলা হুমায়ূন আহমেদ আমার হলে এসে আমার কাছে খবর পাঠাল, আমি নিচে নেমে এলাম। সে আমাকে হাতে লেখা কিছু কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বলল, “কাল রাতে আমি এটা লিখে শেষ করেছি। পড়ে দেখ।”

    আমি কাগজগুলো নিয়ে ছয় তলায় নিজের রুমে গেলাম। ছোট একটি উপন্যাস। কিছুক্ষণের মাঝে পড়া শেষ হয়ে গেল এবং আমি অনেকক্ষণ হতভম্ব হয়ে বসে রইলাম। উপন্যাসটির নাম ‘নন্দিত নরকে’ এবং সেটি পড়ে আমি বুঝতে পারলাম, আমাদের পরিবারে একজন অসাধারণ সাহিত্যিকের জন্ম হয়েছে।

    আমার ধারণা সত্যি প্রমাণিত হল। আহমেদ ছফা হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসটি বই হিসেবে প্রকাশ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন। সেটি ছিল হুমায়ূন আহমেদের প্রথম বই এবং দেখতে দেখতে সে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় একজন লেখক হিসেবে পরিচিত হয়ে গেল।

    আমার ধারণা বেশিরভাগ মানুষ জানে না হুমায়ূন আহমেদের প্রথম বই ‘নন্দিত নরকে’ এর প্রচ্ছদটি একেঁছিলাম আমি এবং ভাস্কর শামীম সিকদার।

    এবারে আমি আমার নিজের বইয়ের গল্পগুলোর কথা বলতে পারি। সবাই তো তার প্রকাশিত বইয়ের গল্প বলে আমি অপ্রকাশিত বইগুলোর গল্প বলি।

    আমি প্রথমবার গ্রন্থকার হওয়ার চেষ্টা করেছিলাম যখন আমি ঢাকা কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়ি। একটা কিশোর উপন্যাস লেখা শেষ করে কী করব বুঝতে না পেরে সেটা একটা খামে ভরে একজন ‘লেখক-প্রকাশক’এর কাছে পাঠিয়ে দিলাম। তাঁর পরিচয় দিলে সবাই চিনবে, তাই সেটা আর বলছি না। আমার পাণ্ডুলিপির প্যাকেট পাওয়ার প্রায় সাথে সাথে তিনি আমাকে চিঠি লিখলেন। চিঠিতে তিনি লিখলেন, আমার উপন্যাসটি তাঁর পছন্দ হয়েছে, তবে আমি যদি কাগজের দামটি দিই তাহলে তিনি বই হিসেবে প্রকাশ করবেন। কাগজের দাম কত সেটাও তিনি লিখে দিলেন, তিনশত টাকা।

    টাকার পরিমাণ এখন খুব বেশি মনে না হলেও তখন আমার কাছে সেটা অনেক। কাজেই সেই টাকা দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।

    আমার সেই কিশোর উপন্যাসটি আর বই হিসেবে প্রকাশিত হল না। তবে সেটি নিয়ে আমার খুব দুঃখ ছিল না। কারণ সেই ‘লেখক-প্রকাশক’ চিঠিতে আমাকে একটা ভবিষ্যদ্বাণী লিখে পাঠিয়েছিলেন। বলেছিলেন, “আপনি বড় হলে একজন সত্যিকারের শিশুসাহিত্যিক হতে পারবেন।”

    তাঁর সেই ভবিষ্যদ্বাণীতেই আমি খুব খুশি হয়েছিলাম। চিঠিটা বুকপকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়াই এবং বন্ধুবান্ধবদের দেখাই। তারা হিংসার দৃষ্টিতে ভবিষ্যতের শিশুসাহিত্যিকের দিকে তাকিয়ে থাকে।

    মজার ব্যাপার হল, বেশ কয়েক বছর পর কীভাবে কীভাবে জানি আমার বাবা জানতে পারলেন যে, তিনশ টাকা কাগজের দাম দিলেই আমার একটা বই বের হয়ে যেত। আমার বাবা খুব অবাক হয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আমি সেটা কোনো দিন তাঁকে বলিনি কেন। তাহলে বাবা আমাকে সেই টাকা দিতেন।

    আমি কোনো সদুত্তর দিতে পারিনি, কিন্তু উত্তরটা আসলে খুব সহজ। যত ছোটই হই না কেন, তবুও তো আমি লেখক। লেখক কেন নিজের টাকা দিয়ে বই ছাপাবে?

    আমার দ্বিতীয় যে পাণ্ডুলিপিটা কোনো দিন বই হিসেবে তার চেহারা দেখাতে পারেনি, সেটা আমি লিখেছিলাম যখন আমি ইউনিভার্সিটিতে পড়ি। সেটি কী নিয়ে লিখেছিলাম এত দিন পরে আমার আর মনে নেই। আমার ভাইবোনের কোনো একজন সেই পাণ্ডুলিপিটার একটুখানি পড়ে সেটা নিয়ে কোনো একটা মন্তব্য করল। মন্তব্যটা আমার পছন্দ হল না। তাই আমি একটা ম্যাচ, একটা মোমবাতি এবং উপন্যাসের পাণ্ডুলিপিটা নিয়ে ছাদে গেলাম। মোমবাতিটি জ্বালিয়ে উপন্যাসের একটা একটা পৃষ্ঠা মোমবাতির শিখায় ধরতে লাগলাম এবং সেটা দাউ দাউ করে জ্বলতে লাগল।

    যতদূর মনে পড়ে আমার সাথে ছোট আরও একজন ছিল এবং আগুন দিয়ে একটা উপন্যাস জ্বালিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে তার উৎসাহের সীমা ছিল না।

    তৃতীয় যে বইটি প্রকাশিত হতে পারেনি সেটি খুবই সাম্প্রতিক ঘটনা। বাংলা একাডেমিতে হে ফেস্টিভ্যালে আমন্ত্রণ পেয়ে গিয়েছি। সেখানে একজন ভারতীয় মানুষের সাথে দেখা। তিনি আমাকে খুঁজে বের করে বললেন, আমার কিছু বই ইংরেজিতে অনুবাদ করে কোনো একটা বড় প্রকাশনী থেকে বিদেশি পাঠকের জন্যে প্রকাশ চান। আমি আনন্দের সাথে রাজি হলাম। ভদ্রলোক আমার কাছে কোনো একটা বইয়ের নাম জানতে চাইলেন। আমি তাকে মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা আমার কিশোর উপন্যাস ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ এর নাম বললাম।

    কিছুদিনের ভেতরেই সেই বিখ্যাত প্রকাশনী থেকে একজন আমার সাথে যোগাযোগ করলেন। অনুবাদটি তারা গ্রহণ করলেন এবং চুক্তিপত্র হিসেবে ছোট ছোট টাইপে লেখা কাগজপত্র পাঠাতে শুরু করলেন। আন্তর্জাতিক মানের বড় প্রকাশনী থেকে বই বের করতে হলে কত রকম কাগজপত্র প্রস্তুত করতে হয় তখন সেটা আমি জানতে পারলাম।

    যখন আমরা চুক্তির একেবারে শেষ মূহূর্তে পৌছেছি তখন সেই বিখ্যাত আন্তর্জাতিক প্রকাশনীর একজন কর্মকর্তা আমাকে ই-মেইল পাঠালেন। তিনি লিখলেন, তারা বইটির দুটি পরিবর্তন করতে চান। ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ নামটি খুব সাদামাটা, তারা এর পরিবর্তে আরও জমকালো একটা নাম দিতে চান। এছাড়াও ‘রাশেদ’ নামটি খুব প্রচলিত নাম নয়। তারা সেই নামটির পরিবর্তন করে ‘রশীদ’ করে দিতে চান।

    খুবই স্বাভাবিকভাবেই আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া হল সেই আন্তর্জাতিক প্রকাশনীর বড় কর্মকর্তাকে কিলিয়ে ভর্তা করে দিই! সেটি বাস্তবজীবনে করা সম্ভব নয়। তাই আমি পাল্টা ই-মেইলে তাদের সাথে আমার চুক্তি বাতিল করে দিয়ে বললাম, “আপনাদের আমার বই প্রকাশ করতে হবে না। আমার দেশের ছেলেমেয়েরা এই বইটি পড়লেই আমি খুশি।”

    শুধু এইটুকু লিখেই অবশ্যি আমি তাদের ছেড়ে দিইনি, একজন লেখককে কী বলা যায় এবং কী বলা যায় না তার উপরে অনেক লম্বা লম্বা উপদেশ দিয়েছিলাম।

    আমার ই-মেইল পেয়ে তারা নড়েচড়ে বসে ক্ষমা চেয়ে আমার কাছে আরও লম্বা ই-মেইল পাঠিয়ে বইটি ছাপানোর জন্যে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করার জন্যে অনেক ঝুলোঝুলি করেছিল। আমি আর রাজি হইনি।

    আন্তর্জাতিক প্রকাশনী থেকে বিদেশি ভাষায় অনুবাদ হয়ে আমার বই বিদেশি পাঠকের কাছে পৌঁছাতে হবে কে বলেছে? আমাদের দেশের একটা ছেলে বা মেয়ে আমার লেখা একটা বই পড়লেই আমি খুশি।

    একজন মানুষ তার একটি জীবনে এর থেকে বেশি আর কী চাইতে পারে? (সংগৃহীত)

    লেখক: অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

  • উদ্ভাবনী পণ্যে কোটি টাকার ‘সিড মানি’: পলক

    উদ্ভাবনী পণ্যে কোটি টাকার ‘সিড মানি’: পলক

    এসবিনিউজ ডেস্ক : তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নির্বাচিত উদ্ভাবনী কৌশল ও পণ্যের জন্য সরকার এক কোটি টাকা পর্যন্ত ‘সিড মানি’ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

    শুক্রবার ‘ন্যাশনাল হ্যাকাথন ফর উইমেন ২০১৭’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। দেশে প্রথমবারের মত নারীদের জন্য আয়োজিত এ হ্যাকাথন চলছে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারস মিলনায়তনে। ৩৬ ঘণ্টার এ প্রতিযোগিতায় ৫০০ নারী নয়টি আলাদা বিষয়ে উদ্ভাবন ও সক্ষমতার পরীক্ষা দেবেন।

    হ্যাকাথনের উদ্বোধন করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ‘ইনোভেটিভ আইডিয়া ও প্রোডাক্ট’ বিশ্বের দরবারে হাজির করার লক্ষ্যে সরকার কাজ শুরু করেছে।

    “ইনোভেশন ডিজাইন অ্যান্ড এন্টারপ্রেনারশিপ একাডেমির কাজ শুরু করেছি। আমরা ২০২১ সাল নাগাদ এক হাজার ইনোভেটিভ আইডিয়া বা প্রোডাক্ট বাংলাদেশ থেকে বিশ্বকে উপহার দিতে চাই।”

    এর মধ্যে ২০০টি আগামী দুই বছরের মধ্যে বাছাই করা হবে বলে জানান তিনি।

    “নির্বাচিত প্রতিটি প্রোডাক্টকে সিড মানি হিসেবে প্রথম চার মাসে এক কোটি টাকা পর্যন্ত দিতে পরিকল্পনা বা নীতিমালার খসড়া তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে নীতিমালাটি পাঠানোর পর অনুমোদন হলেই এ কার্যক্রম শুরু হবে।”

    পলক তার বক্তৃতায় প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে নারীদের নেতৃত্ব দেওয়ারও আহ্বান জানান।

    “আগামী দুই বছরে দুই লাখ নারীকে প্রযুক্তি শিক্ষায় বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার টার্গেট নিয়েছি। ইতোমধ্যে সাতটি বাসের মাধ্যমে সারাদেশে ‘টেকসই নারী উন্নয়নে আইসিটি’ এই স্লোগান সামনে নিয়ে বেসিক আইটি ট্রেনিং শুরু করেছি।”

    এছাড়া লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রকল্পের আওতায় দেশে ইতোমধ্যে  ৫০ হাজার ফ্রি ল্যান্সার তৈরি হয়েছে, যাদের মধ্যে ২০ হাজার নারী বলে প্রতিমন্ত্রী জানান।

    অন্যাদের মধ্যো বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি মোস্তফা জব্বার, সাবেক সভাপতি শামীম আহসান, মাইক্রোসফট বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

     

     

  • আছে দুঃখ আছে মৃত্যু তবু আনন্দ জাগে

    আছে দুঃখ আছে মৃত্যু তবু আনন্দ জাগে

    ॥অজয় দাশগুপ্ত॥

    ১. বাংলাদেশের রাজনীতি বড় জটিল। সে যাকে কেউটে হিসেবে জন্মাতে দেখে তাকেই দেখে বিষহীন হয়ে মরতে। শুধু সংখ্যাগুরু না হিন্দুদের বেলায়ও নিতাই, গৌতম, সুনীল গুপ্ত বা গয়েশ্বরের কমতি নেই। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সেদিক থেকে আদর্শে অটুট ছিলেন। যৌবনে বাম এমনকি তেহাত্তরের সংসদে একা লড়লেও পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। না দিলে লীগের কি হতো জানি না, তবে আজ তিনি যে আবহে, যে প্রচারে বিদায় নিলেন সেটা হতো না। কারণ বামরা এখন লেজে জীবন বাঁচা সাপের মতো। সুরঞ্জিত বাবু প্রতিকূল সমাজ ও রাজনীতিতেও জিতে বেরিয়ে আসতেন। এরশাদের আমলে পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক উস্কানির সময় আমি দুজন নেতাকে সিলেট সার্কিট হাউসে দেখেছিলাম। টানটান উত্তেজনার ভিতর প্রয়াত আবদুস সামাদ আজাদ তার কথা বলে চলে যাবার পর সুরঞ্জিত বাবু তখনকার যুবকদের তার কথার যাদুতে এক করে সামাল দিয়েছিলেন। পাঠিয়েছিলেন দুর্ঘটনা রোধ করতে।

    সমালোচনা করা যেতেই পারে। ধোয়া তুলসীপাতা ছিলেনও না। কিন্তু আজকের নেতাদের শেখার মতো অনেক গুণ ছিল তার। সংবিধান ভেজে খাওয়া তিনি ছাড়া মওদুদ-সাকা চৌধুরীদের সামাল দেওয়ার লোক ছিল না লীগে। তার মৃত্যুতে শেখ হাসিনার পাশাপাশি খালেদা জিয়ার বিবৃতিও পড়ে দেখার মতো। ফখরুল সাহেব তো এও বলেছেন, তিনি ছিলেন সৎ মানুষ। তারপরও একদল মানুষ কোনোদিন মানেনি মানবেও না। দিশেহারা পঁচাত্তর পরবর্তী রাজনীতিতে যাদের কথা ও কাজে ভরসা পেতাম তিনি তাদের একজন। তুখোড় বক্তা, সুরসিক, কৌতুকপ্রবণ, ঝানু সাংসদের জীবনও ছিল আগাগোড়া বর্ণাঢ্য। ভালো-মন্দ, মান-অপমান মিলিয়ে এক মুখরিত জীবনের অধিকারী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ব্যক্তিগত স্মৃতি বা অন্য আলাপ হবে পরে কোনো এক সময়। যে কথাটা বলা প্রয়োজন এই মানুষটিকে যেভাবেই দেখা হোক না কেন তিনি ছিলেন ভোটে অপরাজেয়।

    কথায় কথায় সাম্প্রদায়িকতা আর সংখ্যালঘু বিদ্বেষের সমাজে তিনি তার আসনে জিতে আসতেন বারবার। কেবল রিগিং টাকা বা জোর করে অতবার জেতা যায় না। তার চরম দুশমনরাও সে অভিযোগ তুলতে পারেননি। এলাকায় এই জনপ্রিয়তাও দেশের রাজনীতিতে তার অবদানের শুরু যৌবনে। শেষদিন অবধি তা ধরে রেখেছিলেন। বাম দল দিয়ে শুরু ন্যাপ গণতন্ত্রী একতা হয়ে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগে কত ধরনের নেতা, কত জাতীয় মানুষ জায়গা করা এত সহজ কিছু না। তারপরও তার তেমন কোনো অসুবিধা হয়নি। যেটুকু হয়েছিল মন্ত্রীত্বে। এখনো পরিষ্কার নয়, কি কারণে সেই টাকার থলি কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। যদি তার সচিব দায়ী, যদি তিনি তা জানতেনও আজ এসব কথা না তোলাই ভালো। তারপরও কিছু মানুষের নোংরা প্রতিক্রিয়ায় এটা বোঝা যায় পচে গেছে মেধা। পচে যাওয়া সমাজে চোর, ডাকাত, বাটপারের মিছিলে কে কার দিকে আঙুল তোলে? সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বদলে যাওয়া বাংলাদেশে তার সম্প্রদায়ের কথা বলতে গিয়ে অপমানিত হবেন এটা অস্বাভাবিক না। তাদের আমলের রাজনীতিও এখন অচল। তবু সংসদ সংবিধান বা তুখোড় ভাষণের কথা উঠলেই তাকে মনে পড়বে। সাদাকালোয় মেশানো রঙিন নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আপনাকে গুডবাই।

    ২. সামাজিক মাধ্যমের বিশাল প্রভাব এখন আমাদের জীবনে। কেউ এর বাইরে নেই। বড় ছোট মহিলা পুরুষ সবাই যার যার মত করে এই মিডিয়ার সাথে যুক্ত। এর দিগন্ত এতই বড় সাত সমুদ্র সাত সাগর সাত মহাদেশ সব তার হাতের মুঠোয়। আমি বলি ফেইসবুক ঘুমায়না। বাংলাদেশের মানুষজন যখন ঘুমমগ্ন আমরা তখন তার ভেতর দিয়ে দুনিয়া দেখা শুরু করি। আবার আমরা যখন ঘুমাই আমেরিকার মানুষজন জেগে ওঠে ফেইসবুক আনন্দে। এই মাধ্যমেই তাঁর সাথে আমার পরিচয়। কখন যেন জর্জবুশ ও টনি ব্লেয়ারকে নিয়ে একটা ছড়া লিখেছিলাম কেমন করে তা যেন তাঁর চোখে পড়েছিল। সেই থেকে যোগাযোগ। জানিনা কেন জীবনের এইপ্রান্তে এসে আমি খুঁজে পেয়েছি মনের মানুষজন। এত মানুষের ভালোবাসা ও সমর্থন আমার মত সাধারণ মানুষের জন্য এক বিশাল পাওনা। তিনি আমাকে সহজেই আপন করে নিয়েছিলেন। কেন জানি তাঁর ধারণা ছিল আমি কোন বিখ্যাতজন। যত বুঝিয়েছি তা আসলে ঠিকনা তিনি মানতেননা। পরে ধীরে ধীরে দেখলাম আমার অনেক ঘনিষ্ঠ বন্ধুও তাঁকে ভালো জানে। সাংবাদিক বন্ধু ফারুক ইকবাল, অনুজ লেখক সাংবাদিক রাশেদ রউফ সঙ্গীত শিল্পী শাহরিয়ার খালেদও ছিলেন তাঁর পরিচিত কাছেরজন। মাঝে মাঝে তাঁর বাড়িতে গানের আসর বসাতেন। আমেরিকা থেকে উড়ে গিয়ে চাটগাঁর বাড়িতে এই আয়োজনে শরীক হতেন নামকরা মানুষজন। বলে রেখেছিলেন কখনো যদি আমরা একসাথে চট্টগ্রামে থাকি দেখা হবেই। ফোনে ও কথা হয়েছিল। বলেছিলেন কেউ একজন কিছুতেই আমাকে তাঁর চেয়ে বড় কবি মানতে রাজী হচ্ছিলেন না। খুব মজা পেয়েছিলেন সে ঘটনায়। আমি যত বলি ছেড়ে দিন তিনি তত শিশুর মতো বিষয়টিকে নেড়ে চেড়ে দেখতে চাইতেন। কখনো দেখা হলে সে কবির নাম বলার ও কথা ছিল। আজ আর এসব কিছুই কিছু না।

    ব্যক্তিজীবনে সন্তান হারানোর বেদনা নিয়ে বেঁচে থাকা জেসমিন খান আজ কেবলই অতীত। সদ্য প্রয়াত লেখিকা ফাহমিদা আমিনের শোকসভায় ভাষণ দেয়ার পর নিজেও চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তার ক’দিন আগেই বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত রাশেদ রউফকে আপ্যায়ন করেছিলেন চট্রগ্রাম ক্লাবে। সেছবি দেখে আমি ঠাট্টা করে লিখেছিলেম, চিটাগাং ক্লাবে আসবো? তাঁর উত্তর ও দিয়েছিলেন স্বভাব সুলভ দুষ্টুমিতে। সেদিন কি ভেবেছিলাম সেই হবে আমাদের শেষ আলাপ। এমন করে যাওয়াটা ভীতির আপা। এমন যাওয়া বেদনার। আপনি কথা রাখেননি। আমি দেখা না হবার বেদনা নিয়ে আপনাকে স্মরণ করছি জেসমিন খান। যেখানে আছেন ভালো থাকুন।

    ৩. জীবন যেকোন বেদনা ও মৃত্যুর চেয়ে বড়। সে সতত নদীর মত প্রবহমান। তার বাঁকে বাঁকে যেমন দুঃখ শোক তেমনি আছে আনন্দের ঢেউ। নাহলে মানুষ কবেই পাগল হয়ে যেতো। এই কদিন আগে এক আনন্দ সংবাদে পুলকিত হয়েছি। বাংলা একাডেমি পুরস্কার আমাদের দেশের সাহিত্য শিল্পে বড় ধরনের এক পুরস্কার। এর প্রতীকী মূল্য অসামান্য। চাটগাঁ প্রতিভার সূতিকাগার এর পরতে পরতে মেধা থাকার পরও আমরা ঢাকার চোখে মফস্বল। এই মফস্বল বাণিজ্যিক রাজধানী এর দেয়া টাকায় দেশের উন্নয়নের গাড়ী চলে তরতরিয়ে তবু আজ অবধি আমরা কোন রাষ্ট্রপতি স্পীকার বা প্রধানমন্ত্রী পাইনি। দেশের শিল্পসাহিত্যে চট্টগ্রামের বিশাল ও ব্যাপক অবদানের পর ও পিছিয়ে আছি আমরা। বলাবাহুল্য উভয়দিকে দোষ ত্র“টি আছে বৈকি। এই শহরের লেখক শিল্পীরাও হাত পা গুটিয়ে নিজেদের সীমানায় থাকতে ভালোবাসেন। কেউ ঢাকা গেলে একদিন পর ফেরার জন্য মুখিয়ে থাকেন। স্বয়ংসম্পূর্ণ এই শহর কোনদিকে পিছিয়ে নেই বলেই হয়তো এর মানুষেরা শহর ছাড়তে পারেন না। তারপরও এই খানে থেকেই কেউ কেউ দেশ মাতিয়ে তোলেন। গেলবার আবুল মোমেন যৌথভাবে এই পুরস্কার পাওয়ায় যতটা সান্ত্বনা পুরস্কার মনে হয়েছিল এবার রাশেদ রউফের পাওয়া পুরস্কারটা যেন ততোধিক আনন্দ আর গর্বের। রাশেদের হয়ে ওঠা দেখেছি আমি। বিগত কয়েকবছর তাকে এভাবে এগুতে দেখে আমি বলে রেখেছিলেম তুমি পাবেই। কারণ সে শুধু লেখে না। লেখায়ও। তার হাত ধরে আজ যত লেখক লেখিকা মাঠে আছেন অগ্রজেরা কেউ তা করতে পারেননি। রাশেদের অসীম সাংগঠনিক মেধা আর লেখালেখির ধারাবাহিকতা চট্টগ্রামকে আজ এমন এক জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে যার ভেতর দিয়ে অতীতের দুঃখ ভুলে সামনে যাবার প্রেরণা দেখতে পাই। রাশেদ রউফ চট্টগ্রামকেই এগিয়ে রাখলো অনেক ধাপ। এই বয়সে এমন অর্জন ভালোবাসার পাশাপাশি শ্রদ্ধারও বটে।

    লেখক: প্রাবন্ধিক, কবি ও কলাম লেখক

    (সংগৃহীত)

  • ‘পাটে যুগান্তকারী সাফল্য এসেছে’

    ‘পাটে যুগান্তকারী সাফল্য এসেছে’

    এসবিনিউজ ডেস্ক : কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সোনালী আঁশ খ্যাত পাটের তিনটি জিনোম কোড বাংলাদেশের হয়েছে। জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় এ তথ্য জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘পাটের গবেষণায় উৎসাহিত করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। এর ফলে পাটে এসেছে যুগান্তকারী সাফল্য। পাটের জীবন রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। আমেরিকায় অবস্থিত এনসিবিআই (ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন) কর্তৃক তিনটি জিনোমের কোড নম্বর পেয়েছে। ’

    বাংলাদেশি বিজ্ঞানীদের ওই গবেষণার ফলাফল গত ৩০ জানুয়ারি বিশ্বখ্যাত জার্নাল ন্যাচার প্লান্টে প্রকাশিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন মতিয়া চৌধুরী।

    বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সহায়তায় ২০১০ সালে তরুণ একদল বিজ্ঞানীকে নিয়ে তোষা পাটের জিন নকশা উন্মোচন করেন বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলম। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজীব বিজ্ঞানের অধ্যাপক মাকসুদুলের নেতৃত্বে পরে ম্যাক্রোফমিনা ফাসিওলিনা নামের এক ছত্রাকের জিন-নকশা উন্মোচন করেন, যা পাটসহ প্রায় ৫০০ উদ্ভিদের স্বাভাবিক বিকাশে বাধা দেয়।

    ২০১৩ সালের ১৮ অগস্ট মাকসুদুলকে পাশে নিয়েই বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের আরেকটি বড় সাফল্যের খবর জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেটি ছিল- দেশি পাটের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচনের খবর।

    জিনোম হলো প্রাণি বা উদ্ভিদের জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের বিন্যাস বা নকশা। এই নকশার ওপরই নির্ভর করবে ওই প্রাণি বা উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য। গবেষণাগারে এই জিনবিন্যাস অদল-বদল করে উন্নত জাতের পাট উদ্ভাবন সম্ভব। এ কারণে সহজ ভাষায় পাটের জিনোম সিকোয়েন্সকে পাটের জীবন রহস্য বলা হচ্ছে।

    বিজ্ঞানীরা মনে করেন, পাটের জিন-নকশা উন্মোচনের ফলে বাংলাদেশের আবহাওয়া ও প্রয়োজন অনুযায়ী পাটের নতুন জাত উদ্ভাবনের পাশাপাশি পাটের গুণগত মান ও উৎপাদন বিপুল পরিমাণে বাড়ানো সম্ভব। আর নতুন জাত উদ্ভাবন করা হলে পাট পঁচাতে কম সময় লাগবে, আঁশ দিয়ে জৈব জ্বালানি ও ওষুধ তৈরি করা সম্ভব হবে।

     

  • স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রবাসীরা অংশ নিতে পারবেন

    স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রবাসীরা অংশ নিতে পারবেন

    এসবিনিউজ ডেস্ক : আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা স্থানীয় সরকার পদে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। তারা রাজনৈতিক সংগঠন করারও সুযোগ পাবেন। তবে সংসদ সদস্য ও রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারকসহ প্রজাতন্ত্রের কোনো কাজে তারা নিয়োগ লাভ করতে পারবেন না।

    রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা বলেন। মন্ত্রী জানান, নাগরিকত্ব আইনের খসড়ায় বিভিন্ন বিষয়ে ইতিমধ্যে কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রস্তাবিত নাগরিত্ব আইন-২০১৬ নিয়ে এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে প্রবাসীদের সংগঠন সেন্টার ফর ননরেসিডেন্ট বাংলাদেশিজ। আলোচনায় প্রবাসী ও বিশেষজ্ঞরা প্রস্তাবিত আইনের বিভিন্ন দুর্বল দিক তুলে ধরেন।

    সেন্টার ফর ননরেসিডেন্ট বাংলাদেশিজের চেয়ারপারসন এম এস সেকিল চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনায় অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, ড. শাহ্দীন মালিক, অধ্যাপক সি আর আবরার, অ্যাডভোকেট আবেদ রেজা, ব্যারিস্টার তানিম হোসেন শাওন, প্রবাসী আল মামুন সরকার প্রমুখ অংশ নেন। মূল প্রবন্ধে এস এম সেকিল চৌধুরী বলেন, ‘পিতা-মাতার অপরাধে সন্তানের নাগরিকত্ব বারিত হওয়া সাধারণ মানবিকতার পরিপন্থী। এ ছাড়া সংবিধান ও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের অনুস্বাক্ষরকৃত আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। এর ফলে মানুষের স্টেটলেস হওয়ার অবকাশ থাকে। সুতরাং আইনের ৫(৩) ধারাটি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাচ্ছি।

    ’ তিনি বলেন, ‘দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণকারী প্রবাসীদের সংবিধান স্বীকৃত সুযোগসমূহ অবারিত রেখে আইন প্রণয়নের আহ্বান জনাচ্ছি। এতে তারা বিভিন্ন দেশে অবস্থান ও অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের কল্যাণে অবদান রাখতে পারবে। ’ আলোচনায় বক্তারা বলেন, মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত নাগরিকত্ব আইনে প্রবাসী নাগরিকদের স্থানীয় সরকার পদে নির্বাচন এবং রাজনৈতিক সংগঠন করার বিষয়ে সীমাবদ্ধতা রাখা হয়েছে। এর জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, ভেটিংয়ের সময় আইন মন্ত্রণালয় এ বিষয়টি তুলে দিয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি ধারা নিয়ে আপত্তি ওঠায় তা সংশোধন এবং কিছু ধারা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

    আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব আইন নাগরিক ও প্রবাসীবান্ধব হবে। আমরা এমন কোনো আইন করব না, যা জনবান্ধব হবে না। আমরা যাদের (প্রবাসী) ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল, তাদের ক্ষতি হোক এমন আইন করিনি। ’ তিনি বলেন, ‘আইনে এমন কোনো ধারা রাখা হবে না, যাতে প্রবাসীরা ‘রাষ্ট্রহীন’ হয়ে পড়েন। যে দেশের নাগরিকই হোক, সম্পত্তির ওপর প্রবাসীদের অধিকার থাকবে। এ আইনে আমরা নাগরিকের কোনো অধিকার খর্ব করিনি। সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট সব দেশেই আছে, আমাদেরও প্রয়োজন। তবে এমন আইন করা হবে না, যা নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করে।

  • ২ মার্চ খুলনা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু

    ২ মার্চ খুলনা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু

    স্টাফ রিপোর্টার : খুলনায় ২ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে ১৬তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। মহানগরীর সার্কিট হাউজ ময়দানে খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের আয়োজনে এই মেলা চলবে মাসব্যাপী। মেলা পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে মেসার্স চামেলী ট্রেডার্স।

    বৃহস্পতিবার মেলার মাঠ প্রস্তুতের কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মুন্সী মাহবুব আলম সোহাগ, উপ-দপ্তর সম্পাদক হাফেজ মো. শামীম, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক মনিরুজ্জামান সাগর, মেলার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি মেসার্স চামেলী ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী  মো. রাসেল মিয়া প্রমুখ।

    মেলার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি চামেলী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. রাসেল মিয়া বলেন, মেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১৮০টি স্টল ও ১৬টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। প্রবেশ মূল্য রাখা হয়েছে ১৫ টাকা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে।

    তিনি আরও বলেন, মেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে এবার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। এজন্য মেলার ভেতরে এবং বাইরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। এছাড়া ৪ কোণে বসানো হবে ৪টি নিরাপত্তা চৌকি। পুলিশ-র‌্যাব ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবকরা মেলার নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করবেন।

    মেলার স্টল বরাদ্দ চলছে জানিয়ে মো. রাসেল মিয়া বলেন, পাকিস্তান, চীন, জাপান, ইরান এরইমধ্যে মেলার স্টল বরাদ্দ নিয়েছে। আগ্রহীদের অচিরেই যোগাযোগের (০১৭১৩-৭৩৮৮৮৪) জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। মেলায় দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে সুদৃশ্য ডিজিটাল ফোয়ারা এবং শিশুদের বিভিন্ন আইটেমের খেলনা থাকবে।

    তিনি বলেন, এবার মেলায় বিশেষ আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে মাদার কেয়ার। পুরুষের পাশাপাশি নারীদের জন্যও নামাজের জায়গা থাকবে মেলায়।