নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে দ্বিতীয় দিনের মত পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। গতকাল দুই দিনে এ বন্দর দিয়ে ১৬৭ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হয়েছি। তবে যাদের আমদানি অনুমতিপত্র রয়েছে, কেবল তারাই পেঁয়াজ আমদানি করতে পারছেন বলে জানা গেছে।
ভোমরা স্থলবন্দরের তথ্য কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম জানান, রবিবার এ বন্দর দিয়ে ৮৮ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানী হয়েছিল। আর সোমবার এ বন্দর দিয়ে আরো ৭৯ ট্রাক পেয়াজ আমদানি হয়েছে। এদিকে প্রতি টন পেয়াজের মুল্য ৩শ’ ৫ মার্কিন ডলার বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
আমদানিকৃত পশ্চিমবঙ্গের পেঁয়াজ ২৭/২৮ টাকা এবং মহারাস্ট্রের পেয়াজ ৩৫/৩৬ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হয়েছে। অপরদিকে, সাতক্ষীরার বড়বাজারে দেশি পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা থেকে ৪৫ টাকা পর্যন্ত।
উল্লেখ্য ঃ গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার আভ্যন্তরিন সংকটের কারনে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর দীর্ঘ সাড়ে ৫ মাস বন্ধ থাকার পর রবিবার থেকে আবারও পেঁয়াজ আমাদানী শুরু হয়েছে।
Category: বিশেষ সংবাদ
-

সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে গত দুই দিনে ১৬৭ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে
-

জাসদ : বাউল শিল্পী শরিয়ত বয়াতীকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়ার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ এক বিবৃতিতে টাঙ্গাইলের বাউল শিল্পী শরিয়ত বয়াতীকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়ার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন। তাঁরা অবিলম্বে শরিয়ত বয়াতীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন। জাসদ নেতৃদ্বয় আউল-বাউল-মারফতি-মুর্শিদী-কবি-জারি-সারি-ভাটিয়ালি-গম্ভিরা গান, যাত্রা-পালাসহ দেশজ লোকজ সংষ্কৃতি, বাঙালিয়ানা এবং মুক্তবুদ্ধি-যুক্তি-জ্ঞানের ঘোরতর শত্রু মৌলবাদী-জঙ্গিবাদীদের সাথে হাত মিলিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের বিভিন্ন স্থানে শরিয়ত বয়াতীর মত বাউল শিল্পীদের গ্রেফতার-নির্যাতনের ক্ষমাহীণ অপরাধের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা জঙ্গিবাদী-মৌলবাদীদের সাথে আঁতাতকারী প্রশাসন ও পুলিশের এধরনের কর্মকর্তাদের অপসারণ করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জনান। -
ভেমরায় স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি : পাঁচ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ১৩১ কোটি টাকা
বিশেষ প্রতিবেদক: চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে রাজস্ব আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩১ কোটি টাকা কম হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবকাঠামো সংকটের পাশাপাশি সব ধরনের পণ্য আমদানির সুযোগ না থাকার কারণে এ রাজস্ব ঘাটতি। তবে ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার বিষয়ে আশাবাদী কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
১৯৯৬ সালের ১৫ এপ্রিল ১৬টি পণ্য নিয়ে এলসি স্টেশন হিসেবে যাত্রা করে ভোমরা স্থলবন্দর। ২০১৩ সালে ওয়্যার হাউজ নির্মাণের পর এটি পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরের মর্যাদা লাভ করে। কলকাতা থেকে ভোমরার দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমিটার হওয়ায় সম্ভাবনাময় হয়ে ওঠে এ বন্দর। তবে অবকাঠামোসহ নানা কারণে রাজস্ব ঘাটতিতে পড়েছে বন্দরটি।
ভোমরা স্থলবন্দরে কাস্টমস রাজস্ব শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রাজস্ব আদায় লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৪৫ কোটি ১ লাখ টাকা। এর মধ্যে জুলাইয়ে ৭২ কোটি ৪ লাখ, আগস্টে ৯২ কোটি ৮৮ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৬৭ কোটি ৭১ লাখ, অক্টোবরে ৯১ কোটি ৯৫ লাখ ও নভেম্বরে ১২০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর বিপরীতে গত পাঁচ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩১৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে জুলাইয়ে ৪৮ কোটি ৯ লাখ, আগস্টে ৫৪ কোটি ৫৮ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৬৮ কোটি ৭ লাখ, অক্টোবরে ৫৭ কোটি ৪১ লাখ ও নভেম্বরে ৮৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। ফলে গত পাঁচ মাসে রাজস্ব ঘাটতি থেকে গেছে ১৩১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। ঘাটতি হয়েছে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায়ও। গত অর্থবছর একই সময়ে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ ছিল ৩৯০ কোটি ১১ লাখ টাকা। অর্থাৎ গত অর্থবছরের তুলনায়ও রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ ৭৬ কোটি ১১ লাখ টাকা।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিনেও এ বন্দরের অবকাঠামো সমস্যার সমাধান হয়নি। একদিকে যানজট, অন্যদিকে ওয়্যার হাউজে স্থান সংকটের কারণে ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের। এসবের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে রাজস্ব আহরণে। তাদের মতে, সব ধরনের পণ্য আমদানির সুযোগ না থাকা রাজস্ব ঘাটতির অন্যতম কারণ।
ভোমরা স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, গত বর্ষা মৌসুমের কারণে বন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্যে কিছুটা মন্দা ভাব ছিল। ফলে রাজস্ব আহরণে ঘাটতি পড়ে। তার পরও ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য আমদানির সুযোগ দিলে ঘাটতি পূরণ সম্ভব। কিন্তু ভোমরা স্থলবন্দর ব্যবহার করে পণ্য আমদানিতে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এসবের অন্যতম হচ্ছে, পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হওয়ার পরও সব ধরনের পণ্য আমদানির অনুমোদন নেই।
ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের বিভাগীয় সহকারী কমিশনার মো. রেজাউল করিম রাজস্ব ঘাটতির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, যেকোনো বন্দরে রাজস্ব আহরণ কমবেশি হয় মূলত পণ্য আমদানি-রফতানির ওপর নির্ভর করে। গত পাঁচ মাসে ১৩১ কোটি টাকার ঘাটতি পড়েছে। তার পরও আমি আশাবাদী, সামনের সাত মাসে এ ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা যাবে।
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে (জুলাই-জুন) ভোমরা স্থলবন্দর থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৮৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের তুলনায় ১৫৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বেশি।
তবে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হওয়া সত্ত্বেও সব ধরনের পণ্য আমদানির সুযোগ না থাকা ও অবকাঠামো সংকটের কারণে ভোমরা স্থলবন্দর ব্যবহারে ব্যবসায়ীদের আগ্রহে ভাটা পড়ছে। পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর ঘোষণার পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও পণ্য আমদানিতে রয়েছে নানা সীমাবদ্ধতা।
এর পরও সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আহরণ হয়। এর আগের অর্থবছর এ স্থলবন্দর থেকে রাজস্ব আহরণ হয় ৭৭৪ কোটি ৬৩ লাখ ৮ হাজার ২৯৮ টাকা। যেখানে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৩০ কোটি ৯৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। তবে এর পরের বছর লক্ষ্যপূরণ হয়নি। -
দেবহাটায় টিসিবি’র ৩০ বস্তা পেঁয়াজ পাচারকালে উদ্ধার, ডিলারকে শোকজ
বিশেষ প্রতিবেদক: দেবহাটায় ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র ৩৫ টাকা মুল্যের সরকারী পেঁয়াজ জণসাধারনের মাঝে সুষ্ঠভাবে বিক্রি না করে অতিমুল্যে অন্যত্র বাজারে বিক্রির জন্য পাচারকালে ৩০ বস্তা পেঁয়াজ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত টিসিবি’র দুর্নীতিবাজ ডিলার সুভাষ ঘোষ ওরফে বাবলুকে শোকজ করা হয়েছে। বুধবার দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন লিখিত ভাবে পেঁয়াজ পাচারের সাথে জড়িত টিসিবি’র ডিলার বাবলুকে শোকজ করেন। পাশাপাশি সুভাষ ঘোষ ওরফে বাবলুর নামে থাকা টিসিবি’র লাইসেন্স বাতিল সহ পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের নির্দেশে বৃহষ্পতিবার পৃথক দুটি তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রেরন করেছেন ইউএনও। এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে সখিপুরের ঈদগাহ বাজারের গোডাউন থেকে ভ্যান ভর্তি টিসিবির পেঁয়াজ পাচারকালে সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ ফারুক হোসেন রতনের তৎপরতায় দলীয় নেতাকর্মীরা গাজীরহাট বাজার থেকে পাচারকৃত ৩০ বস্তা পেঁয়াজ উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে উদ্ধারকৃত ৩০ বস্তা টিসিবি’র পেঁয়াজ সখিপুর বাজারে সরকার নির্ধারিত ৩৫ টাকা কেজি দরে জণসাধারনের মাঝে বিক্রির নির্দেশ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন। সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ ফারুক হোসেন রতন জানান, ২০০৯ সালে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপির সুপারিশে দেবহাটা উপজেলার জন্য টিসিবি’র লাইসেন্স সহ ডিলারশিপের অনুমতি করিয়ে নেয় দেবহাটার মাঘরী গ্রামের কার্তিক চন্দ্র ঘোষের ছেলে সুভাষ ঘোষ ওরফে বাবলু। ডিলারশিপ পাওয়ার পর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তার। দেশের মানুষের কল্যানের জন্য সরকারের ব্যাপক অর্থ ভর্তুকি দিয়ে সরবরাহকৃত কম মুল্যের টিসিবি’র চিনি, তেল, ডাল, ছোলা, সেমাই, চিড়ে সহ বিভিন্ন মালামাল জণসাধারনের মাঝে সুষ্ঠভাবে বিক্রি না করে বিগত ১০ বছর ধরে এসব মালামাল উচ্চ মুল্যে বাইরের বিভিন্ন বাজারে পাচার করে এসেছে ডিলার বাবলু। শুধু তাই নয় দেশের অণ্যান্য স্থানের মতো দেবহাটা উপজেলাতেও যে প্রতিবছর টিসিবি’র বিভিন্ন মালামাল পৌছায় গত ১০ বছরে তা জানতে পারেনি সাধারণ মানুষ। এমনকি টিসিবি থেকে জনগনের জন্য কমমুল্যে কি কি সরবরাহ হতো কিংবা মালামাল গুলো কখন বাবলুর গোডাউনে আসতো এবং কখন সেসব মালামাল গোডাউন থেকে পাচার হয়ে যেত তাও জানতো না কেউ। মুলত টিসিবি’র লাইসেন্সের বদৌলতে সরকারের ভর্তুকি দেয়া মালামাল জণসাধারনের নাম করে কম দামে নিয়ে এসে সেগুলো উপজেলার অভ্যন্তরীন ও আশপাশের বাজারে পাচার পরবর্তী গত দশ বছর ধরে উচ্চ মুল্যে বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ডিলার বাবলু। আর টিসিবির এসব মালামাল পাচারের জন্য বাবলু গড়ে তুলেছে কয়েকজনের একটি সক্রিয় সিন্ডিকেট। এদের মধ্যে বাবলুর ভাই সাবেক ইউপি সদস্য স্বপন সহ রয়েছে কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাও। একসময়ে নুন আনতে পান্তা ফুরাতো যার, সেই বাবলু টিসিবি’র লাইসেন্সের বদৌলতে ১০ বছরে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী পেঁয়াজের বাজারের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সরকারীভাবে সাতক্ষীরাতে ৩৫-৪৫ টাকা কেজি দরে টিসিবি’র পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়। তাৎক্ষনিক ভাবে দেবহাটাতেও টিসিবি’র পেঁয়াজ বিক্রির জন্য দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন অনুসন্ধান করে ডিলার বাবলুকে আবিষ্কার করেন। সেই থেকে মাস খানেক হলো টিসিবি’র ডিলার হিসেবে বাবলুকে চিনতে শুরু করেছে উপজেলার মানুষ। উপজেলাতে বিক্রির জন্য এরমধ্যে দু’বারে ১৩ টন টিসিবি’র পেঁয়াজ নিয়ে এসেছে বাবলু। প্রশাসনের চোখ ফাকি দিতে ইউএনও বা সংশ্লিষ্ট কাউকে না জানিয়ে সোমবার রাতে ডিও ছাড়াই সাতক্ষীরা থেকে আরো ৭টন টিসিবি’র পেঁয়াজ নিয়ে আসে সে। ওই রাতেই পাচারের জন্য গাজীরহাট বাজারের এক আওয়ামী লীগ নেতার টিসিবি’র গোডাউনের নাম করে ২৩ বস্তা পেঁয়াজ সরিয়ে ফেলে ডিলার বাবলু। মুলত সে টিসিবি’র যাবতীয় মালামালের সিংহভাগ দেবহাটার মাঘরী গ্রামের মৃত মোবারক হালদারের ছেলে দাউদের নিয়ন্ত্রনাধীন নলতার একটি ব্যাক্তি মালিকানাধীন গোডাউনে পাচার করতো। মঙ্গলবার দুপুরে আবারো টিসিবি’র অবশিষ্ট পেঁয়াজ থেকে ৩০ বস্তা পেঁয়াজ গাজীরহাট বাজারের ওই আওয়ামী লীগ নেতার গোডাউনে পাঠানোর নাম করে ডিলার বাবলু নলতায় দাউদের নিয়ন্ত্রনাধীন গোডাউনে পাচার করার সময় পেঁয়াজ গুলো উদ্ধার করা হয়। পরে সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন রতনের জিজ্ঞাসাবাদে টিসিবি’র পেঁয়াজ পাচারের বিষয়টির সত্যতা প্রমানিত হয়। -

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ।। পথভোলা সম্ভু সরকার তার মা ও বোনের কাছে ফিরতে চায় ?
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সম্ভু সরকার (৩৫) নামে এক পথ ভোলা যুবক ভারতে তার মায়ের কাছে ফিরতে চায়। সে ভারতের নদিয়া জেলার কমলাপুর এলাকার মৃত রজ্জশ^র সরকারের ছেলে। তার মায়ের নাম অলোকা ও বোনের নাম মহামায়া। সে গত ২০০০ সালে পথ ভুলে ভারত থেকে ঘুরতে ঘুরতে বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া ্উপজেলার পৌর বাজারে চলে আসে। বাজারের বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে ঘুরতে ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে কলারোয়া বাজারের সরকারী কলেজ মোড়ের রণি হোটেলে সে খাদ্য খেতে আসে। টাকা নেই পয়সা নেই সে কিভাবে খাদ্য খাবে। ওই দোকানের মালিকের কাছে খাদ্য চাওয়াতে সে তার নাম ও ঠিকা জানতে চায়। পরে সে সব খুলে বললে ওই হোটেলের মালিক তাকে তার দোকানের কাজ দেন। আর সেই থেকে সে ওই দোকানের কার্মচারী হিসাবে কাজ করে যাচ্ছেন। অসহায় সম্ভুর সাথে শুক্রবার সকালে দেখা হয় কলারোয়া বাজারের বিশ^াস মার্কেটে। সে হাউ মাউ করে কেঁদে বলে ভাই আমি আমার দেশের বাড়ীতে যেতে চাই। মা ও বোনকে একবার দেখতে চাই আমাকে একটু সাহায্য করবেন। আমি তখন তাকে বলি আমি একজন সাংবাদিক আমি কিভাবে তোমাকে সাহায্য করবো। তোমার তো পাঁসপোর্ট করতে হবে। কিন্তু তুমি তো বাংলাদেশে অবৈধ ভাবে আছো। পাঁসপোর্টও হবেনা। তবে পত্র পত্রিকার মাধ্যমে সরকারের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারি। যদি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ হয় তাহলে হয়তো তুমি তোমার দেশে মা ও বোনের কাছে ফিরতে পারো। সে এই কথা শুনে খুশি হয়ে আমাকে তাড়া তাড়ী তাই করতে বললো। আমি ডেইলি অবজারভার পত্রিকার কলারোয়া প্রতিবেদক হিসাবে বিভিন্ন এনজিও সাংস্থা ও সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সু-দৃষ্টি কামনা করছি। যাতে অসহায় সম্ভু সরকার আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে তার মা ও বোনের কাছে ফিরতে পারেন এটাই প্রত্যশা করছি। -

সুইডেনে মানবতার কল্যাণে কাজ করছেন দেবহাটার শাহনাজ খান
দেবহাটা প্রতিবেদক: সুইডেনে বসবাসরত অসহায় প্রবীণ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য মানবতার কল্যাণে ২০ কাজ করছেন দেবহাটার কৃতি সন্তান শাহনাজ খান। তিনি সাতক্ষীরার ভাষা সৈনিক মরহুম লুৎফর রহমান সরদারের মেয়ে ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার একমাত্র জীবিত সাক্ষী নুরুল ইসলাম খানের ছেলেবধু। তিনি বর্তমানে সুইডেনের রাজধানী ষ্টকহোমে সুইডিস সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে অসহায় প্রবীণ ও প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে পরিচালিত ইউনিটের সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সম্প্রতি সুইডেনের একাধিক সংবাদমাধ্যমে মানবতার কল্যানে কর্মরত শাহনাজ খানের কর্মকান্ড নিয়ে ইতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়েছে, গোটা সুইডেনে অসহায় প্রবীণ ও প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কার্যক্রম পরিচালিত প্রায় ৪৪ হাজার গ্রুপ রয়েছে।
যার মধ্যে কেবলমাত্র সুইডেনের রাজধানী ষ্টকহোমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে প্রায় ১ হাজার গ্রুপ। সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে ষ্টকহোমের প্রায় ১ হাজার গ্রুপের পরিচালিত কার্যক্রম নিয়ন্ত্রন করছেন শাহনাজ খান। প্রবীণ ও প্রতিবন্ধীদের কল্যানে কাজ করা বেশ কঠিন হলেও, বিশ বছর ধরে শাহনাজ খান মানবতার কল্যাণে কাজ যাচ্ছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে সেখানকার গণমাধ্যম গুলোতে। শুধু সুইডেন নয়, নিজের এলাকা দেবহটাতেও আত্ম মানবতার কল্যাণে নিবেদিত রয়েছেন শাহনাজ খান। এলাকার উন্নয়নে প্রতিষ্ঠা করেছেন মিড নাইট সান নামের একটি সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান। শাহনাজ খান প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হলেও তার অনুপস্থিতে এবং সুইডেন থেকে দেয়া সহায়তা মানুষের মাঝে পৌছে দেন বড়ভাই জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি আবু রাহান তিতু। সুইডেনে থেকেও প্রতিবছর নিজের অর্থে এলাকার মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার খরচ যুগিয়ে ডাক্তার তৈরী করছেন শাহনাজ খান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যামামলার একমাত্র জীবিত সাক্ষী নুরুল ইসলাম খানের ছেলে নাজিবুল ইসলাম খানের সাথে ১৯৮৭ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন শাহনাজ খান। ১৯৮৮ সালে সুইডেন গিয়ে যোগদেন সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডে। সেখানে ২০ বছর ধরে আত্মমানবতার কল্যাণে কাজ করে চলেছেন তিনি। বর্তমানে শাহনাজ খানের স্বামী নাজিবুল ইসলাম খান সুইডেনের সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী এবং দুই ছেলে উপল খান ও নাবিদ খান সেখানকার স্বনামধন্য চিকিৎসক হিসেবে মানব সেবায় কাজ করছেন। -
ভারতে পালিত হলো সাঁওতালি ভাষা দিবস
বিশেষ সংবাদ: ভারতে গতকাল পালিত হয়েছে সাঁওতালি ভাষা দিবস। ২০০৩ সালে এই দিনে সাঁওতালি ভাষাকে ভারতের সংবিধানের অষ্টম তপশীলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেই থেকে সাঁওতালি ভাষা দিবস হিসেবে ভারতের সাঁওতালরা দিবসটিকে প্রতিবছর উদযাপন করে আসছে।
ভারতে ১২৭ কোটি মানুষের দেশে প্রায় ১ কোটি মানুষ সাঁওতালি ভাষায় কথা বলেন। জনসংখ্যার হিসাবে সাঁওতালি ভাষার অবস্থান ১৩তম আর সারাবিশ্বে ৯৪তম। ভারত ছাড়াও বাংলাদেশ, নেপাল ও ভূটানে সাঁওতালদের বসবাস। এছাড়াও বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সাঁওতালরা জীবিকার তাগিদে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করছে।
সাঁওতালি ভাষা বিশ্ব দরবারে আস্তে আস্তে পরিচিতি লাভ করতে শুরু করেছে। বিশেষত ১৯২৫ সালে সাঁওতাল পন্ডিত রঘুনাথ মুরমু সাঁওতালি ভাষা লেখার জন্য অলচিকি লিপি তৈরি করার পরে সাঁওতালি ভাষার প্রচার প্রসার বাড়তে থাকে। বর্তমানে সাঁওতালি ভাষায় প্রচুর সাহিত্য শিল্প কর্ম গড়ে উঠছে। নতুন নতুন লেখকরাও নিজস্ব ভাষায় আগের চাইতে অনেক বেশি লিখতে উৎসাহি হচ্ছে। ভারতে অন্যান্য ভাষার পাশাপাশি সাঁওতালি ভাষার জন্যও প্রতিবছর সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
সাঁওতালি ভাষাকে বিশ্ব দরবারে আরো বেশি পরিচিত করেছে এই ভাষার উইকিপিডিয়া সংষ্করণ (sat.wikipedia.org) যেটি ২০১৮ সালের ২রা আগস্ট উন্মুক্ত হয়।
ভারতে প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত সাঁওতালি ভাষায় পাঠদান চালু হলেও অনেক জায়গায় পর্যাপ্ত পরিকাঠামো, বাজেট ইত্যাদির অভাবে সঠিকভাবে সাঁওতালি ভাষায় শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
-
সাদিক-আকাশ সিন্ডিকেটে একাধিক সাংবাদিক ও ক্যামেরাম্যান: জালে জড়িয়েছে শতাধিক ব্যক্তি
প্রতারণার জাল ফেলে বিভিন্ন পেশার মানুষকে বাগে এনে নারীর সাথে মেলামেশার নগ্ন ছবির ভিডিও ধারণ চক্রের সাথে সাতক্ষীরার বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিক ও তাদের ক্যামেরাম্যানদের নাম আসতে শুরু করেছে। আর এই চক্রের শিকারে পরিণত হয়েছে, প্রভাবশালী রাজনীতিক, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাসহ ধর্ণাঢ্য ব্যক্তিরা। আর একবার যার ভিডিও ধারণ করা হয়েছে, তাকে জিম্মি করে ‘গোনে গোনে’ টাকা আদায়, সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে কাজ আদায়সহ প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। অনেকে এই অনৈতিক কাজের বিষয়ে পূর্ব থেকে কমবেশী অবগত থাকলেও এই চক্রের সাথে থাকা সাংবাদিক সিন্ডিকেটের কারণে মুখ খুলতে পারেনি। এমনকি সাংবাদিকরাও মুখ খুলতে পারেনি রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে উঠা সাংবাদিকদের পাল্টা গ্রুপের চরিত্রহননমূলক তৎপরতার কারণে।
গত ১৫ ডিসেম্বর উক্ত চক্রের এক সদস্য জয়যাত্রা টেলিভিশনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আকাশ রহমানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। উক্ত আকাশ রহমান সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য এ্যাম্বাসেডর এ্যাম্বাসেডর ছিল আমার এমপি ডটকম এর । তার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। দুটি মামলারই বাদী দুইজন জনপ্রতিনিধি। মামলার এজাহারে অপর আসামীদের বিস্তারিত পরিচয় দেওয়া না হলেও তাদের ২ জন সাংবাদিক বলে জানা গেছে। আর এদের সিন্ডিকেট প্রধান জেলা ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদকুর রহমান সাদিক। এই সিন্ডিকেটের উপরে আরো উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও থাকতে পারেন বলে শহরে কানাঘুষা শুরু হয়েছে। সাতক্ষীরা থানায় দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আকাশ আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে এবং তার সিন্ডিকেটের আরো একাধিক সদস্যের নাম প্রকাশ করেছে। তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে পুলিশ বিস্তারিত কিছু জানাননি।
এদিকে সাতক্ষীরা থানায় দায়ের করা ২৮ নং মামলার এজাহারে (সামাজিক কারণে বাদীর নাম গোপন রাখা হলো) ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, উক্ত আসামীরা বাদীর নিকট বিভিন্ন সময়ে চাঁদা দাবী করে আসছিল। কিন্তু বাদী প্রাথমিক পর্যায়ে চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে বিভিন্ন কায়দায় তাকে ব্লাকমেইলের চেষ্টা করতে থাকে। একপর্যায়ে একজন অপরিচিত মহিলা বিভিন্ন মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন করে প্রেমের অভিনয় করতে থাকে। সে জানায় তার কাছে বাদীর বেশকিছু অশ্লিল ভিডিও রেকর্ড রয়েছে। বাদী তাকে ২০ লাখ টাকা না দিলে উক্ত অশ্লিল ভিডিও ফেসবুকসহ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে আসামীদের টাকা না দিলে তারা বাদীর ছবি ব্যবহার করে অশ্লিল ভিডিও তৈরী করে। তখন বাদী তার সামাজিক মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টার সময় চায়না বাংলার সামনে আসামীদের ৫ লাখ টাকা প্রদান করে। আসামীরা বাদীর সামনে উক্ত ভিডিও মুছে ফেললেও পরে আবার জানায় তাদের কাছে ঐ ভিডিও এর কপি রয়েছে। বাকী ১৫ লাখ টাকা না দিলে উক্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকে এবং কারণে অকারণে বাদীকে হয়রানী করতে থাকে।
বাদী তার এজাহারে আরো উল্লেখ করেছেন, উক্ত আসামীরা জেলার শিল্পপতি, চেয়ারম্যান, সরকারী কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে বিভিন্ন সময়ে সুকৌশলে ব্লাকমেইল করে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
আকাশ ও সাদিক ছাড়াও এই মামলার অন্যান্য আসামীরা হলো তুহিন, সাংবাদিক মনি ও সোহরাব হোসেন। এদের মধ্যে তুহিন ও সাংবাদিক মনির পিতার নাম ও ঠিকানা অজ্ঞাত দেখানো হয়েছে। -

শিশু মৃত্যুহার হ্রাসে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করেছে
শিশু মৃত্যুহার হ্রাসে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশে বিগত বিশ বছরে শিশু মৃত্যুর হার ৬৩ শতাংশ কমিয়েছে। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশই ২০০০ সাল থেকে শিশু মৃত্যু হ্রাসে যথেষ্ট উন্নতি করেছে, যার প্রথম দিকের দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ। শূন্য থেকে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যকে এরইমধ্যে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) স্বীকৃতি দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রাম পর্যায়ে স্বাস্থ্য পরিসেবার উন্নয়নের ফলেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। এমনকি শিশু মৃত্যুহার হ্রাসে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। মা ও শিশু মৃত্যুহার হ্রাসে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের টার্গেট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ ‘বার্ষিক গ্লোবাল চাইল্ড হুড রিপোর্ট ২০১৯’ শীর্ষক প্রতিবেদনে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালে গত দুই দশকে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা অনেক হ্রাস পেয়েছে। চারটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি অর্জন করেছে, যেখানে ভুটানের শিশু মৃত্যুর হার কমেছে ৬০ শতাংশ, নেপালে ৫৯ শতাংশ এবং ভারতের ৫৭ শতাংশ। আর বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর হার কমিয়েছে ৬৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সরকার মাতৃ ও শিশু মৃত্যুরোধে সকল সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছে। আর এই কারণেই দেশে মাতৃ ও শিশুমৃত্যু উভয়ই কমেছে। ২০১৭ সালে গর্ভকালীন মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি লাখে ১৭৬ জন থাকলেও বর্তমানে তা ১৭২ জন। এছাড়া ২০১৫ সালে প্রতি হাজার নবজাতকের মধ্যে মৃত্যুহার ২০ জন থাকলেও বর্তমানে তা হ্রাস পেয়ে ১৮ দশমিক ৪ ভাগে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আমাদের ২০৩০ সালের মধ্যে প্রিম্যাচুউরড এ শিশু মৃত্যুহারের লক্ষ্যমাত্রা ১২ দেয়া আছে। স্বাস্থ্যসেবা খাতের সবাই সঠিকভাবে সঠিক কাজটি করলে এই অপরিণত শিশু মৃত্যুহারের লক্ষ্যমাত্রা আগামী ২ বছরেই অর্জন করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে দেশের সব সরকারি হাসপাতালেই গর্ভবতী মায়েদের জন্য ২৪ ঘন্টা ডেলিভারি সুবিধাও রাখা হবে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত ২৪ বছরে দেশে শিশু মৃত্যুহার ৭৩ শতাংশ কমেছে। এসডিজি অনুযায়ী, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে শূন্য থেকে এক মাস বয়সী শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ১২ জনে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বর্তমানে এই সংখ্যা ২৮ জন। তবে শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ৩৮ জন। এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২০৩৫ সালের মধ্যে জীবিত জন্মানো শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ২০ জনে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, প্রতি হাজারে শূন্য থেকে এক মাস বয়সী ২৮ শিশু মারা যাচ্ছে। অন্যদিকে এক থেকে চার বছর বয়সী শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজারে মাত্র ১০ জন। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য শূন্য থেকে এক মাস বয়সী শিশু মৃত্যুহার হাজারে ১২ জন এবং এক থেকে চার বছর বয়সী শিশু মৃত্যুহার হাজারে ২৫ জনে নামিয়ে আনতে হবে। এক থেকে চার বছর বয়সী শিশু মৃত্যুহারে বাংলাদেশ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এখনই এগিয়ে রয়েছে। তবে, শূন্য থেকে এক মাস বয়সী শিশু মৃত্যুহার হাজারে ১৪ জন কমাতে হবে। সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের পরিচালক (মা ও শিশু) ডা. মোহাম্মদ শরীফ বলেন, শূন্য থেকে এক মাস বয়সী শিশুর মৃত্যুঝুঁকি বেশি। যদিও পাঁচ বছরের নিচে পর্যন্ত ঝুঁকি থেকে যায়। কারণ জন্ম-পরবর্তী শ্বাসকষ্ট, কম ওজন, জন্মগত জটিলতা, সেপটিসেমিয়া, নিউমোনিয়া ও এনকেফেলাইটিস পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর প্রধান কারণ। এছাড়া অপুষ্টির কারণেও মৃত্যু হয়। এই মৃত্যু প্রতিরোধে সার্বিক ব্যবস্থাপনার মান বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন, ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণ, ভিটামিন ‘এ’ সম্পূরক ওষুধের সফল ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। এসব কারণে শিশু মৃত্যু হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা থাকলে আগামী ২০৩০ সালের আগেই শিশু মৃত্যুহার কমানো সম্ভব হবে। -বাসস
-
মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শত শত কোটি টাকা লোপাট; দুদকের চিঠি
সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ওষুধ, সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বড় ধরনের চক্রান্তে জড়িয়ে পড়েছে। তারা সিন্ডিকেট করে জনসাধারণের জন্য করা সরকারের বাজেটের ৭০-৮০ ভাগই হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের দুর্নীতির কারণে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
দুদক গত ১২ ডিসেম্বর কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালোতালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করে স্বাস্থ্য খাতের নৈরাজ্য ও দীনতা তুলে ধরেছে সরকারের কাছে। সেখানে যারা স্বাস্থ্য বিভাগের কাজ হাতিয়ে নিয়ে প্রতিষ্ঠান তথা সেবা প্রার্থীদের ক্ষতি করেছে তারা যেন আর কোনো টেন্ডারে অংশ নিতে না পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে না পারলে দেশের মানুষ প্রতিনিয়ত সুফল থেকে বঞ্চিত হবে উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, স্বাস্থ্য সেবা বিঘ্নিত করতে যারা দুর্নীতি করছে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। এই খাতে সংস্কার করতে সব পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এরই মধ্যে অনেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুদকের জালে চলে এসেছে। অনেকের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। কেউ ছাড় পাবে না। অন্তত ১২টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য ও তালিকা তুলে ধরে দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের এমএসআর, ভারি মেশিনারিজ ও অন্যান্য সামগ্রী ক্রয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও যন্ত্রপাতি কেনায় জড়িয়ে পড়ছে। তারা কয়েকগুণ বেশি দামে এমএসআর, ভারি যন্ত্রপাতি ও সেবা ইত্যাদি ক্রয় করেছে।
এমনকি মালামাল সরবরাহ করা না হলেও বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে অসাধু ঠিকাদাররা সিন্ডিকেট করে টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে থাকে। সিন্ডিকেটের কারণে প্রতিযোগিতামূলক দর না পাওয়ায় প্রচলিত বাজার মূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে সরবরাহ করা সামগ্রীর বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে।
একইভাবে বেশি দামে ক্রয় করা হয় নিুমানের ও কম দামের সামগ্রী। এর ফলে বিপুল অঙ্কের সরকারি অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, কয়েক বছরের ধারাবাহিক অভিযোগের পর দুদক থেকে পরিচালিত অনুসন্ধানে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির নানা রূপ বেরিয়ে আসে। দুদকের করা মামলায়ও ওই সব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে দুর্নীতি হচ্ছে জানিয়ে বলা হয়েছে, এটি রাষ্ট্রের সঙ্গে বড় ধরনের প্রতারণা ও চক্রান্ত। এসব প্রতিরোধসহ সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে ক্রয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনা এবং দুর্নীতি বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে চিঠিতে।
চিঠিতে যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালোতালিকাভুক্ত করে ভবিষ্যতে কার্যাদেশ না দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলো হল- রংপুরের মেসার্স ম্যানিলা মেডিসিন, এমএইচ ফার্মা, মেসার্স অভি ড্রাগস, মেসার্স আলবিরা ফার্মেসি, এসএম ট্রেডার্স, সেগুনবাগিচার বেঙ্গল সায়েন্টেফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোং, রংপুরের মেসার্স এসকে ট্রেডার্স, গোপালগঞ্জের মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স অনিক ট্রেডার্স, পুরানা পল্টনের মেসার্স মার্কেন্টাইল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল, ক্যান্টনমেন্টের আলবিটেকের রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল।
এদের মধ্যে একাধিক প্রতিষ্ঠান শত শত কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতি করছে। সূত্র জানায়, এক অর্থবছরেই কয়েকটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জন্য অন্তত ২৯১ কোটি টাকার কেনাকাটায় ২০০ কোটি টাকাই লোপাট হয়েছে। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসে ১৭ কোটি টাকার কাজের মধ্যে ১৬ কোটি ৬১ লক্ষ টাকাই লোপাট হয়।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জন্য অন্তত ৩ হাজার কোটি টাকার কেনাকাটা হয়েছে, যার সিংহভাগই হয়েছে দুর্নীতি। দুদক ২০১৪ সাল থেকে এ বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ বছরের কেনাকাটা, টেন্ডার ও যন্ত্রপাতি সরবরাহের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে।
অনুসন্ধানে গত ৫ বছরে কী পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে তার অঙ্ক বের করা হচ্ছে। এর পেছনে যারা জড়িত সবার দুর্নীতির বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে কত ভাগ দুর্নীতিবাজদের, কতভাগ ঠিকাদার ও মধ্যস্বত্বভোগী ও রাজনৈতিক নেতাদের পকেটে গেছে সে হিসাবও বের করছে দুদক। এসব প্রতিষ্ঠানে যন্ত্রপাতি সরবরাহের কাজে যেসব ঠিকাদার জড়িত ছিলেন তাদের সবার বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে দুদক টিম।
সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী আবজালের স্ত্রী রুবিনার নামে করা রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ও রূপা ফ্যাশনস লিমিটেড আছে দুর্নীতির শীর্ষে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের কয়েকজন পরিচালকসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা আবজালকে সামনে রেখে লুটপাটের মহোৎসব শুরু করে।
শুধু কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের জন্য কেনাকাটা ও ভুয়া যন্ত্রপাতি সরবরাহের নামে আবজাল সিন্ডিকেট ৪৮ কোটি টাকার কাজে ৩৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা লুটে নেয়। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জন্য ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪৩ কোটি টাকার কেনাকাটা হয়েছে। যার আশি ভাগই দুর্নীতি হয়েছে বলে ধারণা করছে দুদক। এভাবে অপরাপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে সিন্ডিকেট করে দুর্নীতির বাজার বসায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।
সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন বিভাগের সাবেক পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর আবদুর রশীদের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট দুর্নীতি শুরু করে। তারা কয়েকটি টেন্ডার থেকে আবজালের স্ত্রীর প্রতিষ্ঠান রূপা ফ্যাশনস ও রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ব্যাংক হিসাবে ৩২১ কোটি টাকা ঢোকানোর ব্যবস্থা করে।
সেই টাকা থেকে সিন্ডিকেটের সদস্যরা তাদের কমিশন বুঝে নেয় বলে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স অনিক ট্রেডার্স ও আহমেদ এন্টারপ্রাইজ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জন্য অপ্রয়োজনীয় এবং প্রাক্কলন ছাড়া উচ্চমূল্যে পর্দা ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ের মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টা চালায়।
রংপুরের হাজীপাড়া ধাপের বাসিন্দা মনজুর আহমেদের মেসার্স ম্যানিলা মেডিসিন অ্যান্ড এসকে ট্রেডার্স, মো. মন্টুর মেসার্স এসএম ট্রেডার্স, মোসাদ্দেক হোসেনের এমএইচ ফার্মা, জয়নাল আবেদীনের মেসার্স অভি ড্রাগস ও আলমগীর হোসেনের মেসার্স আলবিরা ফার্মেসি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রতারণা করে একটি টেন্ডার থেকেই সরকারের ৯ কোটি ৫৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে। ৩৭/২ পুরানা পল্টনের আবদুস সাত্তার সরকারের মেসার্স মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ও ৫/বি তোপখানা রোডের আসাদুর রহমানের ইউনিভার্সেল ট্রেড কর্পোরেশন ও একই ঠিকানায় করা জাহেদ উদ্দিন সরকারের মেসার্স বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোং এক কাজেই ৬ কোটি ৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে।
মেসার্স বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কো. রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কেনাকাটায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই কয়েকটি প্রতিষ্ঠানই মাত্র এক ডজন কাজে ৫৬১ কোটি টাকার দুর্নীতি করে। অপরাপর যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একইভাবে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে তাদের তালিকা করা হচ্ছে। ধাপে ধাপে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
-
আজ শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে মোমবাতি প্রজ্জ্বলিত হবে
নিজস্ব প্রতিনিধিঁ: আজ শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের পক্ষ হতে সন্ধ্যায়মোমবাতি প্রজ্জলন করা হবে। কর্মসূচিতে সকলের অংশ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
-

সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধতা নিরসন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধতা নিরসন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেতনা-মরিচ্চাপ রিভার বেসিন পানি কমিটির আয়োজনে ও বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা উত্তরণের সহযোগিতায় মঙ্গলবার দুপুরে শহরের পলাশপোল দৈনিক দক্ষিণের মশাল সংলাপ কেন্দ্রে উক্ত কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা জাসদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রিয়াজের সভাপতিত্বে ও অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহীর সঞ্চালনায় দুই দিনের এই কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ। কর্মশালায় আরো বক্তব্য রাখেন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যনার্জি, নাগরিক কমিটির আহবায়ক আনিসুর রহিম, কেন্দ্রীয় ভূমি কমিটির সভাপতি আবুল কামাল আজাদ, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক এম.কামরুজ্জামান, উত্তরন প্রতিনিধি হাসেম আলি ফকির প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বেতনা-মরিচ্চাপ জলাবদ্ধতা নিরসন করতে হলে স্থায়ী সমাধান খুঁজতে হবে। তা না হলে জলাবদ্ধা দূর করা সম্ভব নয়। শুধুমাত্র নদী-খাল খনন করলে জলাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব হবে না। জলাবদ্ধতা নিরসন করতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করে প্রকল্প হাতে নিতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে প্রকল্প পরিকল্পনা করার আগে জলাবদ্ধ এলাকায় বসবাসকারী ভুক্তভোগী, বিভিন্ন স্টেক হোল্ডার, ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণ, গণমাধ্যম, এ বিষয়ে যারা বিশদ অভিজ্ঞতা রাখেন, যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতা নিয়ে কাজ করছেন তাদের সাথে বসে মতামত নিয়ে সরকারভাবে দীর্ঘমেয়াদ পরিকল্পনা গ্রহণ করলে জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধান গ্রহণ করা সম্ভব হবে।
বক্তারা আরো বলেন, স্থানীয় সকল নদ-নদী, খাল ও জলাশয়ে প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে হলে জেলার পশ্চিমে বয়ে যাওয়া সীমান্ত নদী ইছামতির সাথে যেসব নদী ও খালের সংযোগ রয়েছে সেগুলোর পুনরায় সরাসরি সংযোগ সৃষ্টি করতে হবে। তাহলে নদীগুলোতে জোয়ার-ভাটা সৃষ্টি হবে। কর্মশালায় পাওয়ার পয়েন্টে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন উত্তরণের দিলিপ সাহা। -
নীল নদে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে আফ্রিকার বৃহত্তম ড্যাম
নীল নদে বৃহত্তম ড্যাম নির্মাণ করছে ইথিওপিয়া। আফ্রিকার দ্রুত সমৃদ্ধিশালী দেশটির ড্যামটি এ নদের জলের ওপর নির্ভরশীল দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে। বিশেষত এ ড্যামের ফলে মিসর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর এএফপি।
মিসর ছাড়া সুদানও এ ড্যামের ফলে সংকটে পড়বে বলে অভিযোগ জানিয়েছে দেশটি। এ ড্যাম কী কী রকমের সংকট তৈরি করতে পারে তা নিয়ে কায়রোয় গত সোমবার দুদিনের আলোচনায় বসেছে সুদানসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিবেশী দেশগুলো।
৬ হাজার ৬৯৫ কিলোমিটার (৪ হাজার ১৬০ মাইল) দৈর্ঘ্য নিয়ে নীল বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘতম নদ। ওই অঞ্চলের শুষ্ক দেশগুলোর জলের প্রধান উৎস এ নদ। চাষাবাদ ছাড়া জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যও প্রতিবেশী দেশগুলো এ নদের ওপর বড় রকমভাবে নির্ভরশীল।
এ নদের নিষ্কাশন অববাহিকা ৩০ লাখ বর্গকিলোমিটার (১১ লাখ ৬০ বর্গমাইল)। ওই অঞ্চলের বুরুন্ডি, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, মিসর, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, রুয়ান্ডা, দক্ষিণ সুদান, সুদান, তানজানিয়া ও উগান্ডা—এ ১০টি দেশের দাবি রয়েছে নীল নদের জলে।
নীলের প্রধান দুটি উপনদী মিসর হয়ে উত্তর দিকে বয়ে যাওয়া ও ভূমধ্য সাগরে পড়ার আগে সুদানের রাজধানী খার্তুমে মিলিত হয়েছে। এ উপনদী দুটি স্বেত নীল (হোয়াইট নীল) ও আকাশি নীল (ব্লু নীল) নামে পরিচিত। প্রসঙ্গত, নীল নদ হয়ে বছরে প্রায় ৮ হাজার ৪০০ কিউবিক মিটার পানি প্রবাহিত হয়।
এদিকে ২০১১ সালে ‘গ্র্যান্ড রেনেসাঁ ড্যাম’ নামে নীল নদে আফ্রিকার বৃহত্তম ড্যাম নির্মাণ শুরু করে ইথিওপিয়া। দেশটির সুদান সীমান্ত থেকে এ ড্যামের দৈর্ঘ্য দাঁড়াবে প্রায় ৩০ কিলোমিটার। এ ড্যাম নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৪২০ কোটি ডলার (৩৭০ কোটি ইউরো)। আগামী বছরের শেষ নাগাদ এ প্রকল্প থেকে প্রাথমিক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে প্রকল্পটির পুরো কার্যক্রম শুরু হবে ২০২২ সালে।
উল্লেখ্য, ওই অঞ্চলের শুষ্ক দেশগুলোর মধ্যে মিসর অন্যতম। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ১০ কোটি। দেশটির বিদ্যুৎ উৎপাদন, চাষাবাদসহ প্রয়োজনীয় জলের প্রায় ৯০ শতাংশ আসে নীল নদ থেকে।
এ নদের ওপর দেশটির আইনি অধিকার রয়েছে বলে দাবি করে আসছে কায়রো। ১৯২৯ সালের চুক্তি অনুযায়ী দেশটি নীলের জলের বড় হিস্যা পায়। এছাড়া এ নদে কোনো প্রকল্প নির্মাণে ভেটো দেয়ার অধিকার রয়েছে মিসরের। অন্যদিকে ১৯৫৯ সালের আরেক চুক্তিতে কায়রো ও খার্তুম নীলের জলের যথাক্রমে ৬৬ ও ২২ শতাংশ হিস্যা পাবে স্থির হয়।
এদিকে মিসর ও সুদানকে বাদ দিয়ে ২০১০ সালে নীল নদ অববাহিকার অন্য আটটি দেশ ‘কো-অপারেটিভ ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। নীলে কায়রো ও খার্তুমের বড় ধরনের অধিকার থাকা সত্ত্বেও উভয় দেশকে বাদ দিয়ে ওই চুক্তি অনুযায়ী ২০১১ সালে সেখানে ড্যাম নির্মাণ শুরু করে ইথিওপিয়া।
নিজেদের প্রয়োজনীয় জলসংস্থানের পথে এ ড্যাম বাধা তৈরি করতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে কায়রো। এ নদের জলে কায়রোসহ পূর্ব আফ্রিকার উল্লিখিত দেশগুলোর অধিকার থাকায় একটি সমঝোতায় না পৌঁছলে তা বড় সংকট তৈরি করতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ‘আন্তর্জাতিক সংকট গ্রুপের’ চলতি বছরের মার্চের প্রতিবেদনে।
এদিকে আগামী তিন বছরের মধ্যে ড্যামটির পুরো কার্যক্রম শুরু করতে চায় ইথিওপিয়া। অন্যদিকে ড্যামটির সম্পূর্ণ কার্যক্রম ১৫ বছরের আগে শুরু না করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে মিসর।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অঞ্চলটির জলবিরোধ নিষ্পত্তির জন্য মধ্যস্থতাকারীর প্রস্তাব করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে আগামী বছরের ১৫ জানুয়ারি নাগাদ নীল নদের জল সমস্যা সমাধান করতে চায় মিসর, ইথিওপিয়া ও সুদান।
-

সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আট দিনব্যাপী বই মেলা শুরু হচ্ছে আগামীকাল
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখতে ঘোষিত মুজিব বর্ষ পালন ও সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আট দিনব্যাপী বই মেলা শুরু হচ্ছে আগামীকাল ১৬ নভেম্বর।
জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের উদ্যোগে ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন আয়োজিত এই মেলায় বাংলা একাডেমী, চলচিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরসহ ৩২টি খ্যাতনামা প্রকাশনীর ৬৮ স্টলে বই বিক্রি করা হবে। বই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে অংশ নেবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক উপচার্য আ.আ.ম.স আরেফিন সিদ্দিক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বই মেলা উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস বিফ্রিংয়ে এবং বিকালে স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকদের সাথে মতবিনিময়কালে সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল এসব তথ্য জানিয়েছেন। এতে আরও বলা হয়, প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে মেলা চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়া ১৮-২২ নভেম্বর পর্যন্ত ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও সাংস্কৃতিক প্রতিভা বিকশিত করার লক্ষ্যে চিত্রাংকন, সংগীত, আবৃত্তি, নৃত্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। এছাড়াও মানুষকে বই পড়া ও বই কেনায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য কমপক্ষে ২০০ টাকার বই ক্রয়কারীদের জন্য থাকবে র্যাফেল ড্র এর কুপন। এই র্যাফেল ড্র-তে ভাগ্যবান ১০ জনের জন্য থাকবে ১০টি আকর্ষণীয় পুরস্কার।
মেলায় ঢাকা থেকে বই নিয়ে আসছে, পুথিনিলয়, পাঞ্জেরী, গ্রন্থ কুঠির, অন্যপ্রকাশ, রোদেলা, বিজ্ঞান একাডেমী, কলি প্রকাশনী, ইমামীয়া চিশতিয়া পাবলিসার, অনিন্দ্য প্রকাশ, চিরন্তন প্রকাশ, শব্দশৈলী, সৃজনী, আদর্শ, নওরোজ কিতাবিস্তান, অয়ন প্রকাশন, তা¤্রলিপি, দি রয়েল পাবলিশার্স, কথা প্রকাশ, আহমদ পাবলিশিং হাউস, কাকলী প্রকাশনী, প্রথমা প্রকাশন, র্যামন পাবলিশার্স, আলোঘর প্রকাশনা, সাঁকোবাড়ি প্রকাশন, বিশ্বসাহিত্য ভবন, সময় প্রকাশন, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, অনুপম প্রকাশনীর মত জাতীয় পর্যায়ের নামকরা বিভিন্ন প্রকাশনী।
প্রেস বিফ্রিংকালে আরো উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক হুসাইন শওকত, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বদিউজ্জামান, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সভাপতি আবু আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী, সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রাসেল প্রমুখ। -
বাংলাদেশ উপকূলে আসতে মধ্যরাতও লেগে যেতে পারে
আগে ধারণা করা হচ্ছিল, শনিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। তবে বিকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এটি বাংলাদেশ উপকূলে আসতে মধ্যরাতও লেগে যেতে পারে।
আগে ধারণা করা হচ্ছিল, বাংলাদেশে আঘাত হানার সময় এর কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠবে;এখন বলা হচ্ছে, ঝড়ো হাওয়া বইতে পারে ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে।
বিকাল ৩টায় ঘূর্ণিঝড়টি মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৭৫কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ও কক্সবাজার থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, বিকাল ৫টায় ঝড়টি যখন উপকূলের সাগর দ্বীপে থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে ছিল, তখন এর কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২৪-১৩০ কিলোমিটার। এটি এগোচ্ছিল ঘণ্টায় ৮ কিলোমিটার গতিতে।
-
৩২৮ তম পৌরসভা হিসেবে শ্যামনগর পৌরসভার গেজেট প্রকাশ
দেশে আরেকটি পৌসভার সংখ্যার বাড়ল। সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার ৩২টি এলাকা নিয়ে শ্যামনগর পৌরসভা করে গেজেট প্রকাশ করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।


নতুনটি নিয়ে বর্তমানে দেশে পৌরসভার সংখ্যা ৩২৮টি।
সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর শাখার উপ-সচিব ফারজানা মান্নান স্বাক্ষরিত গেজেটে বলা হয়- শ্যামনগর পৌরসভা গঠনের লক্ষ্যে শ্যামননগর, ভূরুলিয় ও ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ৩২টি মৌজাকে শহর এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হলো।
৩২টি মৌজার মধ্যে শ্যামনগর ইউনিয়নের বাদঘাটা, কুলখালী, গোপালপুর, মাহমুদপুর, ইসমাইলপুর, খাড়গাদানা, নকিপুর মাজাট, হায়বাতপুর, শ্যামনগর, চন্ডিপুর, দাদপুর, পাটনীপুকুর, ফুলবাড়ী, দেবীপুর, কাশিপুর, শিবপুর, সোয়ালিয়া, চিংড়িখালি, কল্যাণপুর ও যাদবপুর; ভুরুলিয়া ইউনিয়নের ইচ্ছাকুড়, কাচড়াহাটী, নন্দিগ্রাম, সোনমুগারী, ভুরুলিয়া, দেউলদিয়া, বল্লভপুর, ব্রহ্মশাসন, কুলটুকারী, বিষ্ণুপুর, হাটছালা, মটবাড়ী গৌরীপুর এবং ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের গুমানতলী মৌজাকে শহর এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
গত এপ্রিলে এসব এলাকাকে শহর এলাকা ঘোষণার লক্ষ্যে কারো আপত্তি থাকলে তা জানাতে এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল মন্ত্রণালয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো আপত্তি না থাকায় চূড়ান্তভাবে শহর এলাকা ঘোষণা হয়।
-
চাঞ্চল্যকর ঘটনা. একা ১৭ দিন গভীর জঙ্গলে,কোনও চিত্রনাট্য নয় একবারে সত্যি ঘটনা .

ঘন-গভীর জঙ্গলে টানা সতেরো দিন পার করতে হয়েছে। সেখানে খাবার বলতে বনের লতাপাতা ছাড়া আর কিছুই ছিল না। আর তেষ্টা মেটাতে ছিল নদীর পানি। গভীর অরণ্যে একা আর নিঃসঙ্গ হয়েই বেঁচে থাকার লড়াই চালাতে হয়েছে।
কোনও ফিল্মের চিত্রনাট্য নয় এটা। উপন্যাসের পটভূমিকাও নয়। দু’সপ্তাহেরও বেশি আগে হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে হাইকিংয়ে বেরিয়ে আর ফেরেননি মার্কিন নাগরিক অ্যামান্ডা এলার। গভীর জঙ্গলে দীর্ঘ তল্লাশির পর শুক্রবার খোঁজ মিলল ওই তরুণীর। জীবিত কিন্তু একেবারেই বিধ্বস্ত। অ্যামান্ডাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
৮ মে হাইকিংয়ে বেড়িয়েছিলেন অ্যামান্ডা। তারপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি তার। অ্যামান্ডার খোঁজে বেরিয়েছিল একাধিক উদ্ধারকারী দল। হেলিকপ্টারে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। অনেকে ভয় পেয়েছিলেন, নিশ্চয় হয়তো তাকে অপহরণ করা হয়েছে।
জঙ্গলের মাঝখানে পাওয়া গিয়েছিল অ্যামান্ডার গাড়ি। আর সেটাই আশা জুগিয়েছে। অ্যামান্ডার খোঁজে ফেসবুকে একটি পেজ তৈরি করা হয়েছিল। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ নানা আশঙ্কা দানা বাঁধতে থাকে সেখানে। অপহরণের কথা বারবার উঠতে থাকে।
কিন্তু ওই তরুণীকে যারা চেনেন, বিশেষ করে অ্যামান্ডার মা হাল ছাড়তে নারাজ ছিলেন। তার মেয়ে বেঁচে আছে, এমন বিশ্বাসই ছিল আম্যান্ডার মা জুলিয়া এলার। তিনি বলেন, আমি জানতাম, ও ঠিক বেঁচে আছে। কখনও আশা ছাড়িনি। এক এক সময় ভয় লেগেছে, কিন্তু নিজের মনকে শক্ত রেখেছি।
৩৫ বছর বয়সি অ্যামান্ডা যোগব্যায়ামের শিক্ষিকা, ফিজিক্যাল থেরাপিস্ট। সেই সঙ্গে স্কুবা ডাইভিং, হাইকিং করেন। তার শারীরিক ও মানসিক জোর নিয়ে ভরসা ছিল সকলের। উদ্ধারকারী দলের অন্যতম জেভিয়ার ক্যান্টেলপ বলেন, ফিটনেস তো আছেই, সেই সঙ্গে স্থানীয় অরণ্যের লতাপাতা নিয়ে তার অগাধ জ্ঞান রয়েছে। যেমন, কোনটা খাওয়া যায় আর কোনটা বিষাক্ত। জানতাম ও লড়াইটা চালিয়ে যেতে পারবে।
বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশির পরে মাউই দ্বীপের মাকাওয়াও সংরক্ষিত অরণ্যে হেলিকপ্টার নিয়ে খোঁজ শুরু করেন জেভিয়াররা। তন্নতন্ন করে খোঁজার পরে শুক্রবার হঠাত্ই অ্যামান্ডা দেখতে পান তারা। দু’টি জলপ্রপাতের মাঝে একটি জায়গায় খালি পায়ে হাঁটছেন অ্যামান্ডা। আর কপ্টারের দিকে তাকিয়ে পাগলের মতো হাত নেড়ে যাচ্ছেন।
জেভিয়ার বলেন, সবাই এক সঙ্গে হইহই করে উঠি। ওই তো হাত নাড়ছে অ্যামান্ডা। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না তখনও। বিশ্বাসটাই যে ক্রমশ ফিকে হয়ে যাচ্ছিল। হেলিকপ্টার থেকে একটি বাস্কেট নামিয়ে দেওয়া হয় নিচে। তাতেই চড়ে বসেন অ্যামান্ডা। ফেসবুকে ছড়িয়েছে আম্যান্ডাকে উদ্ধারের সেই ফুটেজও।
জুলিয়া জানান, মেয়ের একটি পা ভেঙেছে। এছাড়া আরও কিছু ছোটখাট আঘাতও রয়েছে। মনের উপর দিয়েও ঝড়ঝাপটা গেছে। দু’সপ্তাহ শুধুমাত্র বুনো লতাপাতা আর নদীর পানি খেয়ে বেঁচে থাকা। ১৫ পাউন্ড ওজন কমে গেছে তার। জুলিয়া বলেন, আনন্দে চোখে পানি চলে এসেছিল। ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ। ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরেছে।
