আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনি উপজেলার কুল্যা টু দরগাহপুর (বাঁকা) সড়কের কয়েকটি স্থানের অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। যানবাহন চলাচলের সময় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। আশাশুনি উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর একটি হল কুল্যা টু দরগাহপুর (বাঁকা) সড়ক। সড়কটির কয়েকটি স্থানের বর্তমান অবস্থা খুবই নাজুক। উপজেলার কুল্যা, কাদাকাটি, দরগাহপুর, বড়দল, আনুলিয়া, খাজরা ও প্রতাপনগর ইউনিয়নের মানুষের জেলা ও উপজেলা সদরের সাথে সড়ক পথে যোগাযোগের রাস্তা এটি। এছাড়া খুলনার পাইকগাছা, কয়রা ও সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মানুষও চলাচল করে এ সড়ক দিয়ে। ফলে সড়কটি বর্তমানে খুবই ব্যস্ত ও প্রয়োজনীয় সড়কে রূপ নিয়েছে। সড়কটি চওড়ার সংকীর্ণতার ফলে যানবাহন ওভার টেকিং এর সময় সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। একটি বাস, ট্রাক বা মাইক্রো সড়কে ঢুকলে অন্য যানবাহন ওভার টেকিং খুবই সময় সাপেক্ষ ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকে। তাছাড়া সড়কে চওড়া সংকীর্ণতার কারনে দু’টি যানবাহনের ক্রসিং ও ওভার টেকিং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকে। এদিকে সড়কের অনেক স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক স্থানে রাস্তার উপরের অংশ উঠে গিয়ে ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কুল্যা থেকে দরগাহপুর পর্যন্ত সড়কটির কুল্যা রাইচ মিল সংলগ্ন এলাকায়, বাহাদুরপুর ‘স’ মিল ও পরিষদ সংলগ্ন এলাকায়, কচুয়া শিশুতলা এলাকায়, কাদাকাটি বাজারের শেষ অংশ হতে কাদাকাটি ফুটবল মাঠ সংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত, হলদেপোতা থেকে শ্রীধরপুর মোড়ের কিছু অংশ এবং দরগাহপুর এলাকায় সড়কের বিভিন্ন অংশে পিচ পাথর উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এর ভিতরে কাদাকাটি বাজারের শেষ অংশ হতে কাদাকাটি ফুটবল মাঠ সংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত পিচ পাথর উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে প্রতি নিয়ত যানবাহন আটক যাচ্ছে, বা দুর্ঘটনা কবলিত হচ্ছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তা দিয়ে বাস, ট্রাক, মাইক্রো, মাহিন্দ্র, ইজিবাইক, নসিমন, মটরসাইকেল, মটরভ্যানসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে থাকে। এ রাস্তাটির সাথে এলাকার মানুষের জীবন জীবিকা ও উন্নয়ন যেমন জড়িত, তেমনি দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিও জড়িত। এসব ইউনিয়নের একটি বৃহৎ এলাকা জুড়ে রপ্তাণীযোগ্য বাগদা, গলদা চিংড়ী সহ বিভিন্ন প্রজাতির সাদা মাছ ( রুই, কাতলা, পারশে, ভেটকী ইত্যাদি) উৎপাদিত হয়ে থাকে। প্রতিদিন কুল্যা-দরগাহপুর সড়ক দিয়ে পরিবহন যোগে উৎপাদিত এ মাছ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে পরিবহন ও বিদেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। এ রাস্তাটি ব্যবহার করে প্রতি বছর মোটা অংকের রাজস্ব আয় সহ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়ে থাকে। এমতাবস্থায় সড়কটির গুরুত্ব বিবেচনা করে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার পূর্বক এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল।
Category: পরিবেশ/প্রতিবেশ
-

কুল্যা টু দরগাহপুর সড়কের বেহাল দশা : সংস্কার জরুরী
-

দুই দশকে বেড়েছে দেশের পাঁচ শহরের তাপমাত্রা : সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ঢাকায়, কম রাজশাহীতে
জেসমিন মলি
নগরায়ণের ফলে গত দুই দশকে দেশের বড় পাঁচ শহরে তাপমাত্রা বেড়েছে। রাজধানী ঢাকা ছাড়া তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া অন্য চারটি শহরের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট। সাম্প্রতিক এক গবেষণার তথ্য বলছে, গ্রামাঞ্চলের তুলনায় ঢাকায় ২ দশমিক ৭৪ ডিগ্রি, চট্টগ্রামে ১ দশমিক ৯২, খুলনায় ১ দশমিক ২৭, সিলেটে ১ দশমিক ১০ ও রাজশাহীতে শূন্য দশমিক ৭৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়েছে। আবার ঢাকায় যেসব স্থানে উচ্চ ঘনবসতি রয়েছে সেখানকার তাপমাত্রা বাড়ার হার ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
‘সারফেস আরবান হিট আইল্যান্ড ইনটেনসিটি ইন ফাইভ মেজর সিটিজ অব বাংলাদেশ: প্যাটার্নস, ড্রাইভার অ্যান্ড ট্রেন্ডস’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেশের বড় শহরগুলোতে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার এমন তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার ছয়জন গবেষক।
গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, গত দুই দশকে ঢাকার তাপমাত্রা বেড়েছে সবচেয়ে বেশি আর তুলনামূলক কম বেড়েছে রাজশাহীর তাপমাত্রা। জনজীবনে তাপমাত্রা বাড়ার বিরূপ প্রভাব এরই মধ্যে দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। তাপমাত্রার এ ভিন্নতায় দেখা দিচ্ছে রোগবালাইয়ের প্রকোপ। এক সময় ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ না থাকলেও এখন তা নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে গবেষক দলের একজন অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব আর্থ অ্যান্ড প্লানেটারি সায়েন্সেস বিভাগের আশরাফ দেওয়ান বণিক বার্তাকে জানান, ২০০০ থেকে শুরু করে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়ের অর্থাৎ দুই দশকের স্যাটেলাইটের তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষণাকর্মটি করা হয়েছে। গবেষণায় যে পাঁচ শহরের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে, তার সবগুলোতেই তাপমাত্রা গ্রামের তুলনায় বেড়েছে। তাপমাত্রা বাড়ার কারণ হিসেবে এ গবেষক জানান, গত দুই দশকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার নগরায়ণের ফলে কংক্রিটের বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরির পরিমাণও কয়েক গুণ বেড়েছে। ফলে এসব শহরের তাপমাত্রা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নগরায়ণের ফলে শহরে ক্রমাগত কৃষিজমির পরিমাণ কমছে। একই সঙ্গে কমছে সবুজ আচ্ছাদিত জায়গাও। অধিক জনসংখ্যার চাপে নির্মাণ করতে হচ্ছে বহুতল ভবনসহ নানা অবকাঠামো। এসব অবকাঠামো নির্মাণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে যেসব আনুষঙ্গিক উপাদান ব্যবহার করা হয়, তা তাপ অসংবেদনশীল। ফলে অধিকাংশ অবকাঠামো দিনের বেলা উত্তপ্ত থাকে, আবার রাতে যে হারে ঠাণ্ডা হওয়ার কথা তা না হয়ে তাপ ধরে রাখে। এ উদ্বৃত্ত তাপই আশপাশের পরিবেশের সঙ্গে মিশে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে।
ঢাকাসহ অন্য চারটি শহরে ভূমি ব্যবহারের যথাযথ নীতিমালা না মেনে গড়ে উঠেছে বহুতল আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন। বিক্ষিপ্তভাবে গড়ে ওঠা অবকাঠামোর অধিকাংশই অপরিকল্পিত। ঢাকা শহরে দিন দিন কমছে গাছপালা ও খোলা জায়গার পরিমাণ। একই অবস্থা অন্য চার শহরেরও।
ঢাকা শহরের উন্নয়নে কার্যকর কোনো নীতিমালা না থাকায় যেখানে-সেখানে গড়ে ওঠা এ অবকাঠামোর ফলে ভূমির যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। ১৯৫৯ সালে মাস্টারপ্ল্যানের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে এ শহর। নিয়ন্ত্রণে শৈথিল্যের কারণে এ শহরের অবকাঠামো উন্নয়নে সে প্ল্যানও অনুসরণ করা হয়নি। ওই সময়ের তুলনায় এখন জনসংখ্যা বেড়েছে ৩০ গুণ। সে অনুযায়ী মাস্টারপ্ল্যান আধুনিকায়ন করা হয়নি, যার প্রভাব পড়েছে উন্নয়নে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের নগরায়ণ ও জনসংখ্যার তুলনায় ঢাকা, চট্টগ্রাম বা খুলনার বার্ষিক বৃদ্ধির হার গড়ে ২০০ শতাংশেরও বেশি বলে বিভিন্ন গবেষণায় তুলে ধরা হয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জনজীবনে অস্বস্তির সঙ্গে নিয়ে আসছে নানা ধরনের রোগবালাইও। ২০০০ সালের আগে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ না থাকলেও এখন তা নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডেঙ্গু বিস্তারের কারণ হিসেবে উষ্ণায়নের পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে স্থপতি মাহফুজুল হক জগলুল বলেন, আমাদের শহরগুলোতে জনঘনত্ব তুলনামূলক বেশি। ফলে জনসংখ্যার চাপ সামলাতে প্রয়োজনেই আমাদের বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ করতে হয়। চাইলেই এসব অবকাঠামো নির্মাণে যে ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা হয়, তা বদলে ফেলা সম্ভব নয়। আবার ক্রমাগত তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে, সেটিও দুশ্চিন্তার বিষয়। এ কারণে উষ্ণায়ন কমাতে নগরায়ণ করতে হবে পরিকল্পনা অনুযায়ী। একই সঙ্গে বাড়াতে হবে সবুজে আচ্ছাদিত জায়গার পরিমাণ। নির্মাণের বিধিবিধান মেনে স্থপতিরা অবকাঠামোর ডিজাইন করে দেন, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। দেখা যায়, যে পরিমাণ জায়গা ছাড়ার কথা ছিল বা যতটুকু সবুজ জায়গা রাখার কথা ছিল তা করা হয়নি। সেজন্য তদারকি বাড়াতে হবে, যাতে নির্মাণে নিয়মকানুন যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হয়। (সুত্র : বণিক বার্তা, ১৭ এপ্রিল)
-

ফুকুশিমার দূষিত পানি সমুদ্রে ছাড়বে জাপান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জাপান সরকার ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে নির্গত ১০ লাখ টনের বেশি দূষিত পানি সমুদ্রে ছাড়াতে চলেছে। মঙ্গলবার দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এই ঘোষণায় জাপানের প্রতিবেশী কয়েকটি দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এখবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, আগে থেকেই এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এসেছিল জাপানের মৎস্যজীবীরা। কিন্তু এসব বিরোধিতা উপেক্ষা করে পারমাণবিক চুল্লি থেকে নির্গত পানি সমুদ্রে ছাড়ার কথা ঘোষণা করলো কর্তৃপক্স। পরমাণু কেন্দ্রে এই পানি চুল্লিকে ঠান্ডা রাখতে ব্যবহৃত হয়। ব্যবহারের পর তা নিরাপদে সংগ্রহ করে রাখা হয় পরমাণু কেন্দ্রের মধ্যেই। পরমাণু চুল্লির এই পানি দীর্ঘদিন সমুদ্রে ছাড়া হয়নি। আবার এই প্রক্রিয়া শেষ করতে কয়েক দশক লেগে যাবে।
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে জাপানের ঘরে-বাইরে। তবে জাপান সরকার সবাইকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই বর্জ্য পানি থেকে সব রকম তেজস্ক্রিয় উপাদান সরানো হয়েছে। এই পানিতে কারও কোনও ক্ষতি হবে না।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছে, গোটা বিশ্বে যেভাবে পরমাণু কেন্দ্রের পানি সমুদ্রে ছাড়া হয়, এটাও সেই প্রক্রিয়া। জাপানের এই প্রক্রিয়াকে ইতোমধ্যে ছাড়পত্র দিয়েছে আইএইএ।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা জানান, এটি একটি ‘অনিবার্য প্রক্রিয়া’। পানি ছাড়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ রূপে নিরাপদ প্রমাণ হওয়ায় এবং সম্ভাব্য সব রকম ক্ষতি রোধ করা যাবে এটা নিশ্চিত করার পরই তা শুরু করা হবে। -
সুন্দরবনের মধু সংগ্রহের পিছনে প্রাণের ঝুঁকি
মোঃ আলফাত হাসান
জঙ্গল থেকে মধু সংগ্রহ মোটেও সহজ কাজ নয়। সুন্দরবনে তো জীবন হাতে করে মধু আহরণে যেতে হয়। যে কোনো মুহূর্তে নরখাদক বাঘের কবলে পরার সম্ভাবনা থাকে। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার বাংলার গর্ব – কিন্তু সুন্দরবনের মধু সংগ্রাহকের সবথেকে বড়ো বিপদও বটে। নানা ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও বাঘের আক্রমণে জীবন দিতে হয়
রেজাউল ইসলাম একজন প্রাক্তন মৌওয়ালি। এখন তাঁর গ্রামের কয়েকজন মৌওয়াল ও অন্যান্য সদস্যদের মধু সংগ্রহে সাহায্য করেন। তিনি জানান, জঙ্গল থেকে মধু আনতে গিয়ে জীবন দিতে হয় অনেকর। জীবনের ঝুঁকি নিতে হয় নানা রকমের বিশেষ করে যারা সরকারি অনুমতিপত্র ছাড়াই মধু সংগ্রহে যান, তারাই বাঘের শিকার হন বেশি। সরকারের অনুপতিপত্র একবার পাওয়া গেলে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সহজেই নবীকরণ করা যায়। গত কয়েক বছরে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ অঞ্চলে কিছু মধুমক্ষীশালা গড়ে উঠেছে। মৌমাছির চাষ করে সেখানে মধু উৎপাদন করা হয়। তা সত্ত্বেও বলা যায়, আমাদের কাছে যে অপরিশোধিত মধু এসে পৌঁছয়, তার পিছনে লুকিয়ে আছে যথেষ্ট ঝুঁকি, পরিশ্রম ও সাহস।
অপরিশোধিত মধুর খাদ্যগুণ প্রচুর। পাস্তুরীকৃত মধুর থেকে এটি আলাদা। অপরিশোধিত মধু সরাসরি মৌচাক থেকে সংগ্রহ করা হয়। তাতে থাকে মৌমাছির পরাগ, যা খুবই উপকারী। এছাড়া মৌমাছির আঠা এবং বেশ কিছু অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। অনেকেই প্রচার করে যে বিশুদ্ধ মধুতে অনাক্রম্যতা বাড়ে। সেই প্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়াই ভালো। বহু লোকই জানেন না যে অপরিশোধিত মধুর উপকারিতা অনেক।
অপরিশোধিত মধুকে ছাঁকা হয় না। মধুকে পরিশোধন করলে অনেক উপাদান বেরিয়ে যায়। পাস্তুরীকরণের ফলে ইস্ট কোষের মৃত্যু ঘটে। স্বাদে পরিবর্তন আসে। মধু অনেকদিন টেকসই হয়, রং হয় বাদামি ঘেঁষা সোনালি। কিন্তু মধুর অনেক খাদ্যগুণই তাতে নষ্ট হয়ে যায়। অপরিশোধিত মধু সরাসরি মৌচাক থেকে সংগ্রহ করা হয়। তাতে থাকে মৌমাছির পরাগ, যা খুবই উপকারী। এছাড়া মৌমাছির আঠা এবং বেশ কিছু অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর।
মধু যখন প্রকৃতির মধ্যে থাকে, তার ভিতর কিছু জীবাণুনাশক এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। ক্ষতস্থান নিরাময় করতে, দীর্ঘদিনের সর্দিকাশি সারাতে, প্রদাহের উপশম ঘটাতে সেগুলি কাজে লাগে। অপরিশোধিত মধু অনেক খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ। যেমন নিয়াসিন, রিবোফ্লাভিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, পটাসিয়াম, ফসফরাস এবং দস্তা।
এক টেবিলচামচ অর্থাৎ ২১ গ্রাম অপরিশোধিত মধুতে ৬৪ ক্যালোরি এবং ১৬ গ্রাম শর্করা থাকে। সেই শর্করার অর্ধেকের বেশি যদিও ফলশর্করা, যা সবার উপকারী নয়। ফলশর্করা বাদ দিলে চিনির থেকে মধু বেশি উপকারী। কোনো গবেষকের মতে মধু ডায়বেটিস থেকে রক্ষা করে, এবং কিছু ধরনের মধু কোলেস্টেরল লেভেলের উন্নতিতে সাহায্য করে।
-

দেবহাটায় ইছামতীর ঝুঁকিপূর্ন বেড়িবাঁধ পরিদর্শন
দেবহাটা প্রতিনিধি: দেবহাটার উপজেলার ভাঁতশালায় সীমান্ত নদী ইছামতীর বেড়িবাঁধে আবারো ফাঁটল দেখা দিয়েছি। রবিবার সকালে ভাঁতশালার গাজীপাড়া এলাকায় ইছামতী নদীর ওই বেড়িবাঁধে বড় ধরনের ফাঁটল দেখতে পান স্থানীয়রা। এতে করে অতিদ্রুত ঝুঁকিপূর্ন বেড়িবাঁধটি সংষ্কার না হলে জোয়ারের চাপে বেড়িবাঁধ ভেঙে আশপাশের এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভাঁতশালার গাজীপাড়া এলাকায় সীমান্ত নদী ইছামতি ব্যাপক খর¯্রােতা ও নদীর তলদেশ অনেকটাই গভীর হওয়ায় মাঝেমধ্যেই সেখানকার সীমান্ত বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। গেল কয়েক মাস আগেও বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে সেখানে বালুর বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়। সম্প্রতি আবারো পূর্বের ভাঙন কবলিত বেড়িবাঁধের আনুমানিক পঞ্চাশ গজ দূরে নতুন করে বড় ধরনের ভাঙন দেখা দেয়। পরবর্তীতে তারা বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে জানান। এদিকে খবর পেয়ে রবিবার দুপুরে ঝুঁকিপূর্ন ও ভাঙন কবলিত বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেন দেবহাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুজিবর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছলিমা আক্তার, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জিএম স্পর্শ, দেবহাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান শাওন, দেবহাটা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বকর গাজী, সিনিয়র মৎস্য অফিসার বদরুজ্জামান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা। পরিদর্শনকালে ভাঙন কবলিত ঝুঁকিপূর্ন বেড়িবাঁধটি দ্রুত মেরামতের জন্য সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্ধর্ত্তন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করেন নির্বাহী অফিসার তাছলিমা আক্তার।
-
কালিগঞ্জের বসন্তপুর রিভার ড্রাইভ ইকো পার্কের কমিটি গঠন ও নৌবন্দর চালু করতে প্রধান মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন
কালিগঞ্জ (শহর) প্রতিনিধি ঃ
কালিগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর রিভার ড্রাইভ ইকো পার্কের কমিটি গঠন করে অনুমোদন দিয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস,এম, মোস্তফা কামাল, বসন্তপুর রিভার ড্রাইভ ইকো পার্কের উপদেষ্ঠা হিসাবে আছেন সাতক্ষীরা ৩ আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক ও সাতক্ষীরা ৪ আসনের সংসদ সদস্য এস,এম জগলুল হায়দার, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস,এম মোস্তফা কামাল কে সভাপতি ও কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেল কে সদস্য সচিব করে ১৪ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটির মধ্যে সদস্যরা হলেন কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী, কালিগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভুমি) নাজিমবুল আলম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, উপজেলা ফরেস্টার সামাজিক বন বিভাগ, তারালী ইউপি চেয়ারম্যান, মথুরেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান, সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক প্রেস ক্লাব, অধ্যাপক গাজী আজিজুর রহমান। এদিকে জেলা প্রশাসক এস,এম, মোস্তফা কামাল বসন্তপুর রিভার ড্রাইভ ইকো পার্কের উন্নয়নের জন্য এক লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করেছেন। এছাড়া মথুরেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য বৃন্দ ইউনিয়ন পরিষদের কোটা হতে ৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা এবং কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য বৃন্দ পার্কের উন্নয়নে ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোজাম্মেল হক রাসেল ফেসবুক ম্যাসেজের মাধ্যমে আরও জানান পার্কটির উন্নয়নের জন্য ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে ট্যুরিজম বোডে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে এবং পার্কের একটি মাস্টার ডিজাউন প্লান্ট প্রনয়ন করা হয়েছে। আগামীতে মাস্টার ডিজাইন অনুযায়ী পার্কের উন্নয়ন কাজ করা হবে। এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরও জানান বসন্তপুর নৌবন্দর চালুর কার্যক্রম বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস,এম,মোস্তফা কামাল বসন্তপুর নৌবন্দর চালুর বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর সাহানুগ্রহ বিবেচনার জন্য বসন্তপুর নৌবন্দর পুনরায় চালুর প্রস্তাব প্রেরণ করা হলে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী তা বিবেচনা করেছেন এবং সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজন পরীক্ষা নিরীক্ষা পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য ৮ই ফেব্রুয়ারী ২০২০ কালিগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে শিল্পীদের ও সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে বসন্তপুর রাজা প্রতাপাদিত্যের স্মৃতি ভুমিতে বনভোজনের সময় বসন্তপুরের এই দৃশ্যনন্দন জায়গাটি পার্ক ও বিনোদনের প্রস্তাব নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) সহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে দৃষ্টি গোচরে আনেন শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক সুকুমার দাশ বাচ্চু। বসন্তপুর ইকো রিভার পার্ক নির্মানের অর্থ বরাদ্দ ও সাথে সাথে বসন্তপুর নৌবন্দর চালুর বিষয়টি জানার পর কালিগঞ্জ উপজেলাবাসী যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। -

সুন্দরবনের করমজলে কুমিরের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস
মশাল ডেস্ক: সুন্দরবনের একমাত্র বন্যপ্রাণি প্রজননকেন্দ্র করমজলের কুমির পিলপিলের ৪৪টি ডিমে মাত্র ৪টি ছানা ফুটেছে। গতকাল শনিবার সকালে নতুন ইনকিউবেটরে রাখা ১১টি ডিম থেকে মাত্র চারটি বাচ্চা জন্ম নেয়। ৪৪টি ডিম থেকে মাত্র ৪টি কুমির ছানা ফোটায় হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রাণিদের রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত বনকর্মীরা। তবে প্রাণি সম্বদ বিশেষজ্ঞরা বলছেন বয়স বৃদ্ধি হওয়ার কারণে করমজলের মা কুমির দুটির ফার্টিলিটি (বাচ্চা উৎপাদনের ক্ষমতা) অনেক কমে গেছে।
এর আগে এবছরের ১২ জুন দুপুরে প্রজনন কেন্দ্রের পুকুর পাড়ে নিজের বাসায় ৪৪টি ডিম দেয় পিলপিল। ডিমগুলোর মধ্যে ২১টি ডিম পিলপিলের নিজে বাসায়, ১২টি পুরোতন ইনকিউবেটরে এবং ১১টি নতুন ইনকিউবেটরে রেখে বাচ্চা ফোটানোর চেষ্টা করেন বনকর্মীরা। এর মধ্যে নতুন ইনকিউবেটরে রাখা ১১টি ডিমের মধ্যে ৪টি ডিমে বাচ্চা ফুটেছে।
এছাড়াও এবছরের ২৯ মে অন্য কুমির জুলিয়েট ৫২টি ডিম দিয়েছিল। সেগুলোর মধ্যে ১৪টি ডিম জুলিয়েটের জুলেয়েটের বাসায়, ২৬টি পুরোতন ইনকিউবেটরে এবং ১২টি নতুন ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছিল। কিন্তু জুলেয়েটের ৫২টি ডিমে কোন বাচ্চা ফোটেনি বলে জানিয়েছেন সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির ।
আজাদ কবির বলেন করমজল দেশের একমাত্র সরকারি কুমির প্রজনন কেন্দ্র। এখান প্রজননের জন্য দুটি মা কুমির রয়েছে। আমরা খুব যত্নের সাথে এই কুমিরের প্রজননের চেষ্টা করি। কুমির ডিম পাড়ার পর থেকে বাচ্চা ফোটানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। কিন্তু জুলেয়েট এবং পিলপিল দুটি কুমিরেরই অনেক বয়স হয়েছে। যার ফলে তাদের ডিমে ফার্টিলিটি হার খুবই কম। তিনি আরও বলেন, এখানে বর্তমানে পুরোনো যে ইনকিউবেটর রয়েছে সেগুলো অনেক সেকেলে। নতুন যে ইনকিউবেটরটি তৈরি করা হয়েছে তার ধারণ ক্ষমতা মাত্র ২৪টি। এ ধরনের আরও দুএকটি ইনকিউবেটর তৈরি করা গেলে সফলতা আসলেও আসতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।
বাগেরহাট জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. লুৎফর রহমান বলেন, কুমির খুবই সেন্সিটিভ প্রাণি। এর ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে অনেককিছু মানতে হয়। আর মা কুমির পূর্ণ বয়স্ক হওয়ার পর থেকে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে তাদের বাচ্চা উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন বলেন, কুমির গুলোর বয়স হওয়ার কারণে ফারটিলিটি কমে গেছে।আমরা চেষ্টা করছি মা কুমির দুটোকে পরিবর্তণ করে নতুন করে মা কুমির আনার। করমজলই বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি কুমির প্রজনন কেন্দ্র। ২০০০ সালে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের শুরু হলে এখানে কুমির প্রথ, ডিম দেয় ২০০৫ সালে। এখন পর্যন্ত করমজলে বিভিন্ন সময় ২৯২টি কুমিরের ছানা জন্ম নিয়েছে। যার মধ্যে ১৯৫টি ছানা এখনও প্রজনন কেন্দ্রে রয়েছে। ৯৭টি কুমিরের ছানা সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী ও খালে অবমুক্ত করা হয়েছে।
-

সাতক্ষীরার শহরের বিভিন্ন এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী নাগরিক কমিটির
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সভায় সাতক্ষীরা পৌরসভার বদ্দিপুর, কাটিয়া মাঠপাড়া, রসুলপুর ও ইটাগাছা পশ্চিমপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানানো হয়েছে। সভায় বলা হয়, প্রতিবছরই এসব এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় এবং তা ক্রমেই বিভিন্ন এলাকায় বিস্তৃত হচ্ছে। এবছর পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এইসব এলাকায় অনেকের ঘরের মধ্যেই দীর্ঘদিন পানি রয়েছে। মানুষের রান্না-খাওয়া, পয়ঃনিষ্কাশন, স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। রাস্তা-ঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। এমনকি বদ্দিপুর এলাকায় মৃত মানুষের দাফন-কাফনেরও কোন জায়গা নেই।
জেলা নাগরিক কমিটির সভায় আরো বলা হয়, পরিস্থিতির নিরসনে অন্য বছর পৌরসভা, জেলা প্রশাসনসহ কর্তৃপক্ষের কিছু উদ্যোগ পরিলক্ষিত হলেও এবার তাও অনুপুস্থিত। ফলে মানুষের দুর্ভোগ দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
সভায় সাতক্ষীরা পৌরসভার জলাবদ্ধ এলাকার পানি নিষ্কাশনে যেখানে যে ধরণের বাধা রয়েছে তা অপসারণ ও পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে যেসমস্থ মাছের ঘের গড়ে উঠেছে সেগুলো উচ্ছেদ, তাৎক্ষণিক পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকায় বদ্দিপুর, কাটিয়া মাঠপাড়া, রসুলপুর, মাগুরা বৌবাজারসহ অন্যান্য এলাকায় স্যালো মেশিন দিয়ে পানি সেচের ব্যবস্থা করার দাবী জানানো হয়।
সভায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নদীর বেড়িবাঁধ ভাঙন ও জলাবদ্ধতা কবলিত উপকূলীয় এলাকা রক্ষার জন্য পৃথক বোর্ড গঠনসহ জেলা নাগরিক কমিটির ২১ দফা দাবী আদায়ে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের দপ্তরের সামনে অবস্থানসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মরকলিপি পেশের কর্মসূচির তারিখ পরিবর্তন করে ১৫ সেপ্টেম্বর পূর্ণনির্ধারণ করা হয় এবং গণস্বাক্ষরসহ উক্ত কর্মসূচি সফল করার জন্য সর্বস্তরেরর মানুষের প্রতি আহবান জানানো হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন, প্রফেসর আব্দুল হামিদ, সুধাংশু শেখর সরকার, অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, মাধব চন্দ্র দত্ত, আনোয়ার জাহিদ তপন, ওবায়দুস সুলতান বাবলু, জিএম মনিরুজ্জামান, অপারেশ পাল, শেখ সিদ্দিকুর রহমান, কমরেড আবুল হোসেন, মুনসুর রহমান, কওসার আলী, আব্দুস সামাদ, আলী নুর খান বাবলু, সুরেশ পান্ডে, আসাদুজ্জামান লাভলু, অধ্যাপক তপন কুমার শীল, মোশারফ হোসেন, মো. মনিরুজ্জামান, মো. আব্দুর রশিদ. লুৎফর রহমান, মো. হোসেন আলী, আলমগীর হোসেন মনু, রবিউল ইসলাম, এড. আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। -

বেড়িবাঁধ ভাঙন ও জলাবদ্ধতায় লন্ডভন্ড উপকূলের মানুষকে রক্ষার দাবীতে সাতক্ষীরা পাওবো’র সামনে অবস্থায় ও স্মারকলিপি পেশ
নিজস্ব প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় আম্পান পরবর্তী সাম্প্রতিক আমাবশ্যার জোয়ারের পানির প্রবল চাপে বেড়িবাঁধ ভাঙন এবং জলাবদ্ধতায় লন্ডভন্ড সাতক্ষীরাসহ উপকূলের মানুষকে রক্ষার দাবীতে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে অবস্থায় ও স্মারকলিপি পেশ করেছে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি। ২৬ আগস্ট বুধবার বেলা ১টায় উক্ত স্মারকলিপি পেশ করা হয়। এর পূর্বে বেলা ১১টা থেকে বৃষ্টির মধ্যে জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক মো. আনিসুর রহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অবস্থান কর্মসূচির বক্তারা বলেন, পানিতে ডুবে রয়েছে সাতক্ষীরার অধিকাংশ এলাকা। লাখ লাখ মানুষ পানির উপর ভাসছে। ফসলের ক্ষেত, মাছের ঘের, শাকসজ্বিসহ সবধরণের কৃষি খামার সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বহু এলাকায় মানুষের রান্না-বান্না করারও জায়গা নেই। মৃত মানুষের দাফন ও সৎকার করতে এক এলাকা থেকে অপর এলাকায় ছুটে বেড়াতে হচ্ছে। পয়ঃনিষ্কাশন, স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, পানি এখন শুরু উপজেলা ইউনিয়ন গ্রামে নয়, সাতক্ষীরা জেলা শহরে অবস্থিত সাতক্ষীরা পুলিশ লাইন্স, বিজিবি ক্যাম্প, টেক্সটাইল মিলস, সদর উপজেলা পরিষদ, জেলা কালেকটারেটও পানিতে ভাসছে। শহরের মানুষও পানির মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান এর পরপরই মাননীয় পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও সচিবসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনেকেই এই এলাকা পরিদর্শন করেন। এলাকায় নদীর পানি প্রবেশ বন্ধ করা, দ্রুত বাঁধ নির্মাণসহ সবধরণের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়। স্থানীয় জনসাধারণ স্বেচ্ছাশ্রমে নিজেরা অর্থ দিয়ে বাঁশ, বস্তা, পেরেক কিনে সাতক্ষীরা জেলার বড়ধরণের তিনটি পয়েন্ট ছাড়া আর সকল স্থানে রিংবাঁধ নির্মাণ করে নদীর পানি প্রবেশ বন্ধ করে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাঁধ বাঁধার সাথে যুক্ত মানুষদের সহায়তা করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ১০০০ মেট্রিক টন চাল প্রদান করা হয়। কোন কোন স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকেও বাঁশ, বস্তা, পেরেক নিয়ে সহায়তা করা হয় বলে আমরা জেনেছি। কিন্তু স্বেচ্ছাশ্রমে যেনতেনভাবে পানি বন্ধের পর বাঁধগুলো আরও মজবুত করতে আর কোন তৎপরতা দেখা যায়নি। ভেঙে যাওয়া এসব বাঁধের অনেকস্থানে পূর্ব থেকেই ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছিল। অনেকস্থানে ভাঙার পর ডিপিএম এর মাধ্যমে ইমার্জেন্সি কাজ করার জন্য নতুন করে ঠিকাদারও নিয়োগ করা হয়। কিন্তু ইমার্জেন্সি কাজের ও পূর্ব নির্ধারিত অধিকাংশ ঠিকাদার এলাকার কোন কাজ করেননি। এরফলে সাম্প্রতিক অমাবশ্যায় জোয়ারের পানির প্রবল চাপে পূর্বের ভেঙে যাওয়া বাঁধগুলো নতুন করে ভেঙে গিয়ে এলাকায় এক দুর্বিসহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বক্তারা এই পরিস্থিতির জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করার দাবী জানান এবং সাতক্ষীরাসহ উপকূলের মানুষকে বাঁচানোর আহবান জানান।
এসময় বক্তব্য রাখছেন, অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, প্রফেসর আব্দুল হামিদ, সুধাংশু শেখর সরকার, এড. শেখ আজাদ হোসেন বেলাল, ওবায়দুস সুলতান বাবলু, প্রভাষক ইদ্রিশ আলী, মাধব চন্দ্র দত্ত, এড, মনির উদ্দিন, এড. আল মাহামুদ পলাশ, অপারেশ পাল, শেখ সিদ্দিকুর রহমান, তপন কুমার শীল, সুরেশ পান্ডে, কমরেড আবুল হোসেন, মুনসুর রহমান, কায়সারুজ্জামান হিমেল, কওসার আলী, আব্দুস সামাদ, মমিন হাওলাদার, আলী নুর খান বাবলু, এড. আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। অবস্থান কর্মসূচি থেকে আগামী ১ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা পৌরসভায় অবস্থান কর্মসূচি ও স্মরকলিপি পেশ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর গণস্বাক্ষর কর্মসূচি সফল করার আহবান জানানো হয়। অবস্থান শেষে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ ও ২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর মাধ্যমে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বরাবর সাতক্ষীরাসহ উপকূলবাসীর বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বিভিন্ন দাবী দাওয়া সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করা হয়। -

স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে মাছখোলা বাজারে মানববন্ধন
‘‘অপরিকল্পিত মৎস্য ঘের বন্ধ কর, জলাবদ্ধতা নিরসন কর,’ বেতনা নদী পুন:খনন কর, জনমানুষকে রক্ষা কর’’-এই শ্লোগানকে সামনে রেখে মাছখোলাবাসীর আয়োজনের ও মাছখোলা ক্লাবের সভাপতি আলাউদ্দিনের উদ্যোগে স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫.০৮.২০২০) বিকালে মাছখোলা বাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ব্রক্ষ্মরাজপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মেন্বার মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে ও সাপ্তাহিক সূর্যের আলো পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মুনসুর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক মো: আনিসুর রহিম। তিনি বলেন, আমার বয়স যখন ২৬ বছর তখন মাছখোলা বাজারে এসেছিলাম। সেসময় এলাকার মানুষের মধ্যে একটি ইউনিটি ছিল। কিন্তু আজকের এই মানববন্ধনে আসার সময় সড়কে, বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়ির উঠানের হাঁটু পানি দেখে বিস্মিত হয়ে গেলাম। যা এখানে না আসলে উপলব্ধি করা সম্ভব হতো না। বিষয়গুলো দেখে মনে হলো এলাকার মানুষের মধ্যে আগের মতো এখন আর কোন ইউনিটি নেই। তিনি আরও বলেন, বেতনা নদী ও পানি নিষ্কাশনের পথ দখল করে অপরিকল্পিত মাছের ঘের করার কারণে মৌসুমী বৃষ্টিপাতের ফলে মাছখোলায় বছরের পর বছর স্থায়ী জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। যা জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় এমপি ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা জানেন। কিন্তু এখানে কেউ আসেন না। তাদের পাশে কেউ দাঁড়ায় না। সেজন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য ও জনমানুষকে ঐ ব্যক্তিদয়দের দাওয়াত করে এখানে আনার কথা বক্তব্যে ব্যক্ত করেন তিনি। আনিসুর রহিম বলেন, সরকারের বরাদ্দকৃত টাকার প্রকল্পগুলোর কাজ বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব আপনার আমার সকলের। কিন্তু জনসচেতনতার অভাবে আমাদের জেলার অধিকাংশ মানুষ সেটি করেন না। তাই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের কাজ স্বচ্ছতার সাথে না করে দায়সারাগোসের করেন। ফলে জেলার জনমানুষ দিনের পর দিন হয়রানির স্বীকার হয়। সেজন্য সকলকে সচেতন হয়ে কাজ বুঝে নেওয়ার আহবান জানান তিনি। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার উপদেষ্ঠা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, অপরিকল্পিত পরিকল্পনার জন্য জেলার কোটি কোটি টাকার উন্নয়নক প্রকল্প স্থবির হয়ে পড়েছে। কয়েক বছর আগে বেতনা নদী খননের জন্য প্রায় ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ এসেছিল। কিন্তু ঐ বরাদ্দকৃত টাকার ৩০% খনন কাজেও ব্যয় হয়নি। অথচ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রায় ৪ কোটি টাকা উত্তোলন করেছিল। আমরা স্বচ্ছতার সাথে তাদের কাজটি করতে বললেও তারা করেননি। তিনি আরও বলেন, আমরা ঘেরমালিকদের বিরুদ্ধে নয়, যারা কোটি টাকা আয়ের জন্য হাজার হাজার মানুষকে পানিবন্দি করে রাখছে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলছি। তাদের জন্য এলাকার শত শত পরিবারের নারী, শিশু ও বয়স্করা পড়েছেন সীমাহীন দুর্ভোগে। এছাড়াও অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জেলা বাসদের সংগঠক অ্যাড. বেলাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ উদীচীশিল্পী গোষ্ঠী সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান, গণফোরাম কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য আলী নুর খান বাবুল, ব্রক্ষ্মরাজপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ব্রক্ষ্মরাজপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার শহিদুল ইসলাম। এসময় মাছখোলা ক্লাবের সভাপতি আলাউদ্দিন, সনজিৎ বিশ্বাস, সুশীল দাশ, ওলিদ, রশিদ, তোফাজ্জেল, আহম্মদ, মফিজুল, নুরুল আমিন, মিন্টু, লাল্টু, সাগর, কাওছার আলীসহ এলাকার সর্বস্তরের মানুষ, বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। -

তালায় পাঠক ফোরামের উদ্যোগে বৃক্ষরোপন
তালা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা তালাস্থ মুক্তিযোদ্ধা আঃ আব্দুস সালাম গণ-গ্রন্থাগার ও পাঠক ফোরামের উদ্যোগে এবং বেসরকারি সংস্থা উত্তরণের সহযোগিতায় রবিবার বিকালে উপজেলার আগোলঝাড়া গ্রামের প্রতœতাত্ত্বিক স্থান ঝুঁড়িঝাঁড়া মাঠ ও গংগারামপুর সাইক্লোন শেল্টার কাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে আম, কাঠাঁল, লেবুসহ বিভিন্ন প্রজাতীর গাছের চারা রোপণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উত্তরণের মোঃ রেজওয়ান উল্লাহ, শিক্ষক রাশেদ বিশ্বাস, পাঠক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি ফিরোজ আহমেদ, সদস্য রুহুল আমিন, তরিকুল ইসলাম ও গ্রন্থাগার কর্মকর্তা মোঃ আফজাল হোসেন প্রমুখ। পাঠক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জানান, তালা উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ বৃক্ষের চারা রোপণ করা হবে। -
সাতক্ষীরা উপকূল থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত হবে সুপার ড্রাইভওয়ে
মশাল ডেস্ক : দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বেড়িবাঁধ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এ কারণে ঝুঁকিতে আছে উপকূলীয় ২৫ জেলার প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ। সেই ঝুঁকি মোকাবেলায় নতুন মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। বাঁধ টেকসই করতে নকশায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আর বাঁধ নির্মাণের পর রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও নেওয়া হবে নতুন পরিকল্পনা। এজন্য কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত সুপার ড্রাইভওয়ে নির্মাণ করা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রায় ১৭ হাজার কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলের পাঁচ হাজার ৭৫৭ কিলোমিটার বাঁধের পুরোটাই ঝুঁকিপূর্ণ। ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার পর গত ডিসেম্বরে উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। এরপর ২০ মে আঘাত হানে আম্ফান। এসব দুর্যোগ খুলনার কয়রা-পাইকগাছা ও দাকোপ, সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি এবং বাগেরহাটের মোংলাসহ অন্যান্য উপজেলা ল-ভ- করে দেয়। প্রায় ১৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। উপকূলের মানুষ শুরু থেকেই বলে আসছে, তাদের ত্রাণের প্রয়োজন নেই; দরকার টেকসই বাঁধ।
মেগা প্রকল্প সম্পর্কে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে উপকূলীয় এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে আট হাজার কোটি টাকার চারটি প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে খুলনার ১৪ নম্বর পোল্ডারে ৯৫৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, ৩১ নম্বর পোল্ডারে এক হাজার ২০১ কোটি ১২ লাখ টাকা, সাতক্ষীরার ৫ নম্বর পোল্ডারে তিন হাজার ৬৭৪ কোটি তিন লাখ এবং ১৫ নম্বর পোল্ডারে ৯৯৭ কোটি ৭৮ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এসব প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। শেষ হবে দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে।’
উপমন্ত্রী জানান, ওই চারটি প্রকল্পের বাইরে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণে আরো কয়েকটি প্রকল্প প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া বাঁধ সুরক্ষায় কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত সুপার ড্রাইভওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। শুধু বেড়িবাঁধ নয়, পুরো উপকূলের উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে হাওর উন্নয়ন বোর্ডের মতো উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠনের বিষয়টি বিবেচনাধীন।
সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য পলাশ আহসান বলেন, বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জরুরি তহবিল গঠন এবং বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে। ওয়াপদা বাঁধের ১০০ মিটারের মধ্যে চিংড়ি বা কাঁকড়ার ঘের তৈরিতে সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা দ্রুত কার্যকর করতে হবে। নিয়মিত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে উপকূলের নদ-নদীর পানির প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে হবে। -

চলনবিলে পাখি রক্ষায় পরিবেশ কর্মীদের প্রচারণা
ন্যশনাল ডেস্ক: চলনবিলের জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও পাখি শিকার বন্ধে প্রচারণা শুরু করেছেন স্থানীয় পরিবেশ কর্মীরা। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার নাটোরের সিংড়া উপজেলার কলম এলাকায় এই প্রচারণা চালানো হয়। এসময় কলম ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণে বিভিন্ন ফলজ ও ওষুধি বৃক্ষরোপন এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করেন পরিবেশ কর্মীরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- কলম ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল কবীর, উপাধ্যক্ষ আবুল হোসেন, চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি আখতারুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, কলম প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সভাপতি হারুন অর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, মনোয়ার সুলতান প্রমুখ।
চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় চলনবিলের পাখি শিকার বন্ধ ও বিল পারের মানুষদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন বাজারে লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
-

সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকাকে দুর্যোগ প্রবন এলাকা হিসেবে ঘোষণার দাবীতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি প্রদান

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : ঘুর্নিঝড় আম্পান দুর্গত এলাকাকে দুর্যোগ প্রবণ
এলাকা ঘোষনা, উপকূলীয় এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মান, ঝড়-জলোচ্ছাস,
নদীর বেড়িবাঁধ ভাঙন, লবনাক্ততা ও জলাবদ্ধতায় বিপন্ন উপকূলীয় এলাকার মানুষকে
রক্ষার দাবীতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে
জেলা নাগরিক কমিটি। সোমবার বেলা ১১ টায় সাতক্ষীরা কালেকটরেট চত্বরে
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে উক্ত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক আনিসুর রহিমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে
বক্তব্য রাখেন, অধ্যাপক আবু আহমেদ, প্রফেসর আব্দুল হামিদ, মমতাজ আহমেদ বাপী,
এড. শেখ আজাদ হোসেন বেলাল, সুধাংশু শেখর সরকার, আবুল হোসেন, আব্দুল
বারী, এম কামরুজ্জামান, এড. খগেন্দ্র নাথ ঘোষ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ঝড়-জলোচ্ছাস ছাড়াও দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকার মানুষ নদীর বাঁধ
ভেঙে প্লাবিত হওয়া, লবণাক্ততা বৃদ্ধি এবং জলাবদ্ধতা সমস্যার সাথে প্রতিনিয়ত
যুদ্ধ করে চলেছে। এক সময় অন্য জেলা থেকে লোক না এলে এ এলাকার ধান কাটা
হতো না সেই এলাকার লাখ লাখ মানুষ এখন কাজের সন্ধানে দেশের বিভিন্ন এলাকায়
যেতে বাধ্য হচ্ছে। সরকারের নানামুখি উদ্যোগ নেয়ার সত্বেও এই এলাকায় দারিদ্র
পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি হচ্ছে না। শিক্ষাসহ অন্যান্য সূচকেও এই এলাকা
পিছিয়েই থাকছে কেবলমাত্র প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে।
মানববন্ধন থেকে সাতক্ষীরাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকাকে দুর্যোগ
প্রবন এলাকা হিসেবে ঘোষণা, এলাকার উন্নয়নে পৃথক অথরিটি গঠন এবং
সেই অথরিটিকে পর্যাপ্ত বরাদ্দসহ বিভিন্ন দাবী-দাওয়া পেশ করা হয় এবং বিভিন্ন
দাবী সম্বলিত একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর
প্রদান করা হয়। -

তালায় সেভ ওয়াল্ড লাইফের বন্য পাখি উদ্ধার,প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান
প্রেস বিজ্ঞপ্তী:
সাতক্ষীরা জেলায় তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের হাজরাকাটি গ্রাম হতে এক বন্য অসুস্থ বাজ পাখি উদ্ধার করেছেন সেভ ওয়াল্ড লাইফের সদস্যরা।পাখিটিকে উদ্ধার করে উপজেলা প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
জানাযায়,উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের হাজরাকাটি নামক গ্রামে গভীর রাতে স্থানীয় এলাকাবাসী পরিতাক্ত অবস্থায় বাজ পাখিটিকে দেখতে পায়।পরে সেভ ওয়াল্ড লাইফ সহ-সভাপতি জহর হাসান সাগরের মুঠোফোন যোগাযোগ করা হয়।
জহর হাসান সাগর জানান,আমাকে রাত্র আনুমানিক ১টার দিকে মুঠোফোনে জানানো হয় একটি বাজ পাখি অসুস্থ্য অবস্থায় পরিতাক্ত স্থানে আছে। আমি স্থানীয় আওয়ামীলীগ আফজাল হোসেন সহ সেভ ওয়াল্ড লাইফের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে পাখিটিকে উদ্ধার করা হয় ।পরবর্ত্তিতে সকালে তালা উপজেলা প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সেভ ওয়াল্ড লাইফের সাধারণ সম্পাদক মো: বায়োজিদ মাওলানার বাসাতে রাখা হয়েছে। বাজ পাখিটি সুস্থ্য হলে পরিবেশের মাঝে উন্মক্ত করা হবে।
প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সজ্ঞয় বিশ্বাস জানান,সকাল আনুমানিক ১১টার দিকে সেভ ওয়াল্ড লাইফের সভাপতি মো: ইমরান হোসেন,সি:সহ-সভাপতি এসএম হাসান আলী বাচ্চু,সহ-সভাপতি জহর হাসান সাগর,শেখ ইমরান হোসেন,সাধারণ সম্পাদক বায়োজিদ মাওলানা, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগ হোসেন, কার্যকারী সদস্য বি এম বাবলুর রহমান,গোপীনাথ শীল,মো:আবদুল্লা,আক্তার হোসেন,সাধারণ সদস্য আব্দুল্লা আল-মামুন উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যলয়ে নিয়ে আসে।আমি পাখিটার পা ও গলায় আঘাত প্রাপ্ত হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেছি এবং পাখিটিকে কিছুদিন বিশ্রামে রাখতে বলেছি। -

উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধসহ বিভিন্ন দাবীতে জেলা নাগরিক কমিটির মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ
উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধসহ বিভিন্ন দাবীতে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি মানববন্ধন ও সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা কালেকটরেট চত্বরে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন শেষে উক্ত স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
মানববন্ধনের বক্তারা বলেন, বিশ্বব্যাপি করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে সম্প্রতি সাতক্ষীরাসহ বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় আম্পান আঘাত হানে। সরকারসহ স্থানীয় প্রশাসনের নানামূখি উদ্যোগের কারণে ঝড়ে ব্যাপক জীবনহানীর ঘটনা এড়ানো গেলেও সহায়-সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফলে ভাঙন এলাকার হাজার হাজার মানুষের সহায় সম্পদ এখনো পানির মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছে। সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ তাদের দিন অতিবাহিত করছে।
এমন দুর্বিসহ পরিস্থিতির মধ্যে গত ২ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ এর নির্বাহী কমিটি একনেকের বৈঠকে সাতক্ষীরা শহর ও সংলগ্ন এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে ৪৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সাতক্ষীরা জেলার পোল্ডার ১, ২, ৬-৮ এবং ৬-৮ (এক্সটেনশন) এর নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এরআগে এই এলাকার জলাবদ্ধতা সমস্যা নিয়ে সিজিআইএস নামক একটি প্রতিষ্ঠান সরেজমিনে সমীক্ষা চালায় এবং জনসাধারণের মতামত গ্রহণ করে। একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পে সেই সমীক্ষা ও জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটলে এই প্রকল্পের মাধ্যমে সাতক্ষীরা শহরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান হবে বলে বক্তারা উল্লেখ করেন। বক্তারা এ জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ঠ সকলকে ধন্যবাদ জানান।
বক্তারা আরো বলেন, উক্ত প্রকল্পটি অনুমোদনের পর একনেকের সভা শেষে মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে সাতক্ষীরার বেড়িবাঁধ ভেঙে সমুদ্রের লবণাক্ত জোয়ারের পানি কৃষি এলাকায় ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির প্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে এই প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে বক্তারা আরো বলেন, সাতক্ষীরা জলাবদ্ধতা সমস্যা দীর্ঘদিনের। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আম্পানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেটি এই প্রকল্পের এলাকায় নয়। বাঁধ ভেঙে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরার আওতাধীন শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনি, আটুলিয়া, শ্রীউলা, প্রতাপনগর, খাজরাসহ সংলগ্ন এলাকা। ফলে বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে স্পষ্ট করা না হলে আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত সহানুভূতি থেকে তারা বঞ্চিত হবে।
বক্তারা আরো বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ মে প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় আয়লার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের ২৩ জুলাই সাতক্ষীরার শ্যামনগরে আসেন। তিনি দুর্গত মানুষের প্রতি সহমর্মিতা জানান। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার ঘোষণা দেন। তিনি বাঁধ কেটে, পাইপ ঢুকিয়ে এলাকার লোনা পানি তোলা বন্ধ করারও নির্দেশ দেন। কিন্তু দীর্ঘ ১১ বছরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে ঘূর্ণিঝড় আম্পান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে অনেক কম গতিতে বাংলাদেশে আঘাত হানলেও বেড়িবাঁধের ক্ষতি ভারতের চেয়ে বাংলাদেশেই বেশি হয়েছে।
সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে বক্তারা সাতক্ষীরা জেলার উন্নয়নে ২১ দফার বাস্তবায়নসহ জরুরি ভিত্তিতে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবী জানান।
এসব দাবীর মধ্যে রয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী, মজবুত ও টেকসই বেড়িবাঁধ পুন:নির্মাণ করতে হবে। বাঁধের নদীর সাইটে পর্যাপ্ত জায়গা রাখতে হবে এবং সেখানে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। লোকালয় সাইটেও বেড়িবাঁধকে ঘেরের বাঁধ হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং বেড়িবাঁধ ও ঘেরের বাঁেধর মধ্যবর্তি স্থানে বৃক্ষরোপন করতে হবে। যেসব স্থানে বারবার বাঁধ ভাঙছে সেইসব স্থান চিহ্নিত করে সেখানে ব্লকের মাধ্যমে কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। বাঁধ নির্মাণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব জমি না থাকলে ক্ষতিপূরণ দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। বাঁধের নিচে ১০০ ফুট, উপরে ৩০ ফুট এবং উচ্চতা ৩০ ফুট করতে হবে। বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জরুরী তহবিল গঠন ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে। বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পে সবধরণের দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, উপকূলীয় সকল মানুষের খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে। অন্যান্য প্রাণিকূলের জন্য মিষ্টি পানির আধার গড়ে তুলতে হবে। দুর্যোগ প্রবণ এলাকাগুলোতে পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্রসহ মাটির কেল্লা তৈরী করতে হবে। এ বছর বর্ষা মৌসুমে সাতক্ষীরা শহরসহ পাশ্ববর্তী এলাকায় যাতে জলাবদ্ধতার সৃষ্ঠি না হয় সেজন্য এক্ষুণি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি-ঘর নির্মাণে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই সরকারী সহায়তা প্রদান করতে হবে।
বক্তারা চিংড়িসহ অন্যান্য ফসল ও আমসহ মৌসুমি ফলের ক্ষয়ক্ষতির শিকার চাষিদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করার দাবী জানান। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান দ্রুত সংস্কার করার দাবী জানান। করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া জেলার লাখ লাখ মানুষের মাঝে ইতোমধ্যে সরকারীভাবে যে ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত রেশন কার্ডের মাধ্যমে নিয়মিত পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরণ করার দাবী জানান। করোনা পরিস্থিতিতে সাতক্ষীরার সরকারী হাসপাতালে অন্যান্য রোগের চিকিৎসা কার্যক্রম আরো জোরদার করা এবং সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব স্থাপন করার দাবী জানান।
মানববন্ধন থেকে আগামী ১৫ জুন বেলা ১১টায় মানববন্ধনসহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া জেলা প্রশাসকের নিকট বিভিন্ন দাবী-দাওয়া সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করা হয়। জেলা প্রশাসকের অনুপুস্থিতিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ বদিউজ্জামান স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক মোঃ আনিসুর রহিম। সংহতি প্রকাশ ও বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হামিদ, এড. শেখ আজাদ হোসেন বেলাল, মধাব চন্দ্র দত্ত, অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, আনোয়ার জাহিদ তপন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদর উপজেলা কমান্ডার মোঃ হাসানুর ইসলাম, সিপিবি নেতা কমরেড আবুল হোসেন, জাসদের পাপিয়া আহমেদ, বাংলাদেশ জাসদের প্রভাষক ইদ্রিশ আলী, বাসদের নিত্যানন্দ সরকার, জেএসডির সুধাংশু শেখর সরকার, ওয়ার্কার্স পাটির মকবুল হোসেন, বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি এড. আল মাহামুদ পলাশ, সাধারণ সম্পাদক এড. প্রবীর মুখার্জি, অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুনসুর রহমান, সাংবাদিক রঘুনাথ খা, উত্তরণের এড. মনির উদ্দিন, লিডার্সের মোহন কুমার মন্ডল, পানি কমিটির মনিরুজ্জামান জোয়াদ্দার, চুপড়িয়া মহিলা সমিতির মরিয়ম মান্নান, উদীচীর সিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ কারিগরি কলেজ শিক্ষক সমিতি জেলা শাখার সভাপতি তপন কুমার শীল প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন, কমিটির সদস্য সচিব এড. আবুল কালাম আজাদ ও যুগ্ম সদস্য সচিব আলী নুর খান বাবলু। প্রেস বিজ্ঞপ্তি




