ডেস্ক রিপোর্ট: সাতক্ষীরা শহরের নি¤œআয়ের মানুষের জন্য সুপেয় পানির অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (২১ মে) সকালে সাতক্ষীরার শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কের সামনে বেসরকারি সংস্থা বারসিক, শিক্ষা সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিম এবং সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি সম্মিলিতভাবে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরা পৌরসভা সরবরাহকৃত পানি পানের অযোগ্য। পৌরসভা সরবরাহকৃত পানি পান করলে পেটের পীড়া হচ্ছে। পানি ছাড়া যেখানে জীবন অচল, সেখানে সাতক্ষীরার শহরের নি¤œআয়ের মানুষকেও বাধ্য হয়ে পানি কিনে খেতে হচ্ছে। এখনই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে নি¤œআয়ের মানুষের জীবনে কষ্টের সীমা থাকবে না।
বক্তারা শহরের নি¤œআয়ের মানুষের জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিতের দাবি জানান।
এসময় সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক আজাদ হোসেন বেলালের সভাপতিত্ব বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, জাসদ নেতা ওবায়দুস সুলতান বাবলু, মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, সিনিয়র সাংবাদিক শরিফুল্লাহ কায়সার সুমন, উন্নয়ন কর্মী জিএম মনিরুজ্জামান, সাতক্ষীরা সাংবাদিক কেন্দ্রের সমন্বয়ক আহসান রাজীব, প্রকৃতি ও জীবন ক্লাবের মো. আব্দুস সামাদ, জেলা ভূমিহীন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুস সামাদ, মহিলা পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রুপা বসু, নারীনেত্রী জাহানারা পারভীন, পিপীলিকা কিশোরী সংগঠনের নেত্রী তামান্না পারভীন তমা, শিক্ষা সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের সংগঠক এসএম হাবিবুল হাসান, প্রথম আলো বন্ধুসভার সভাপতি কর্ণ বিশ্বাস কেডি, ভিবিডির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল, বারসিক কর্মকর্তা গাজী মাহিদা মিজান, যুব সংগঠক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
ডেস্ক রিপোর্ট: দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব ও মিয়ানমারের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে। আগামী ১১ই মে উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রম করবে এবং এর গতি তীব্র হতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ।ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের (আইএমডি)-এর তরফে বলা হয়েছে, আগামীকাল বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্বে ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হতে পারে। পরদিন এর প্রভাবে সেখানে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। আগামী ৮ই মে এটি আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপের রূপ নিয়ে সেখানে অবস্থান করতে পারে।আইএমডি জানায়, এটি আরও শক্তিশালী হয়ে প্রবল সামুদ্রিক ঝড়ের পরিণত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। তখন ঘূর্ণিঝড়টি একটু উত্তর দিকে সরে গিয়ে মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করবে।’ আগামী ৭ই মে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার পর ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি ও গতিপথ সুনির্দিষ্ট করে যাবে।বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া এ বছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মোখা’। কফির জন্য খ্যাত ইয়েমেনের ‘মোখা’ বন্দরের নামে ঘূর্ণিঝড়টির নামকরণ করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার লস অ্যান্ড ড্যামেজের ক্ষতিপূরণের দাবিতে সাতক্ষীরায় র্যালি ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সাতক্ষীরা নিউ মার্কেটের শহীদ স ম আলাউদ্দিন চত্বরে শিক্ষা সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিম এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক আনিসুর রহিমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও নাগরিক নেতা আবুল কালাম আজাদ, সাতক্ষীরা সাংবাদিক ঐক্যের সদস্য সচিব শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন, নাগরিক নেতা আলী নুর খান বাবুল, শ্রমিক নেতা রবিউল ইসলাম, বারসিক কর্মকর্তা গাজী মাহিদা মিজান, শিক্ষা সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের সংগঠক হাবিবুল হাসান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বৈশি^ক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানছে। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পাশাপাশি লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে উপকূলের মানুষ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। শহরে গিয়ে বস্তিতে বসবাস করছে। এই কারণে নগরে বস্তিবাসীর সংখ্যা বাড়ছে। উপকূল ছেড়ে শহরে চলে আসার পরও তারা খাদ্য সংকট, বাসস্থানের অভাব, বেকারত্ব, স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। সামগ্রিক অর্থে তাদের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে।
বক্তারা উপকূলীয় এলাকার জানমালের নিরাপত্তায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, সুপেয় পানির সংকট দূরীকরণ, নগরের জন্য সবুজ জলবায়ু তহবিল গঠন, নগরে নিরাপদ, টেকসই ভোগ ও উৎপাদন নিশ্চিত করা, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রভাব মোকাবেলায় জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। এর আগে সাতক্ষীরার শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক থেকে একটি র্যালি বের হয়। র্যালিটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিউ মার্কেটের শহীদ স ম আলাউদ্দিন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
মশাল ডেস্ক : জলবায়ু সম্মেলনের ঝড় উঠলো চায়ের কাপে। স্থানীয় প্রবীণদের অংশগ্রহণে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের একটি চায়ের দোকান পরিণত হলো একটুরো শারম-আল-শেখে।
মিশরের শারম-আল-শেখে এবারের ২৭তম জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৭) নিয়ে পৃথিবীর সর্ব স্তরের মানুষের মাঝে যে আগ্রহ, তা থেকে বাদ যায়নি চায়ের দোকানও।
চায়ে চুমুক দিয়ে মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু সম্মেলনের কথা কম বেশি শুনেছি। কিন্তু আমাদের দাবি আমরা আপনাদের কোন ফান্ড চাই না, আপনারা কার্বন নিঃসরণ কমান। আপনাদের ভোগ বিলাসী জীবন থেকে বের হয়ে আসেন। আমাদের বাঁচতে দিন। উপস্থিত সকলেই তার সাথে একমত প্রকাশ করে বলেন, কার্বন নিঃসরণ কমান।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিমের সমন্বয়ক এসএম রাইসুল ইসলামের সঞ্চালনায় চায়ের কাপে জলবায়ু সম্মেলন শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি সংস্থা বারসিকের কর্মকর্তা চম্পা রানী মল্লিক, রুবিনা পারভীন ও সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিমের সদস্যবৃন্দ।
সভায় বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আমরা চরম ভোগান্তিতে রয়েছি। এর জন্য দায়ী ধনী দেশগুলো। ধনী দেশগুলো যদি এখন থেকেই কার্বন নিঃসরণ হ্রাস না করে, তাহলে আমরা ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়বো। ভবিষ্যতে এমন পরিবর্তন চলতে থাকলে দেখা যাবে একটা সময় আমাদের অস্তিত্ব থাকবে না।
মশাল ডেস্ক: ঋতু শরৎকে বিদায় দিয়ে হেমন্তকে বরণ করেছে প্রকৃতি। বৈচিত্রপূর্ণ ছয়টি ঋতুর দেশ আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। এক একটি ঋতুর রয়েছে এক একটি বৈশিষ্ট্য। ঋতু বৈচিত্রে এখন রাতের শেষে কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমন বার্তা। আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে খেজুর রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা খেজুর গাছ কাটার কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
পুবালি বাতাসে অপরুপ সৌন্দর্যে সকলের মন মাতিয়ে তুলছে মিষ্টি খেজুর রসের ঘ্রাণ। কাক ডাকা ভোরে রস সংগ্রহ ও সন্ধ্যায় চলছে গাছ পরিচর্যার কার্যক্রম। এবার কিছুটা আগেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তিক জনপদের গ্রামে গ্রামে সকালের শিশিরের সাথে অনুভূত হচ্ছে মৃদু শীত। আর মাত্র কয়েক দিন পর রস সংগ্রহ করে রস থেকে লালি ও গুড় তৈরির পর্ব শুরু হয়ে চলবে প্রায় মাঘ মাস পর্যন্ত। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি প্রতিটি গ্রামে চোখে পড়ছে। খেজুর রস ও গুড়ের জন্য এক সময় খ্যাতি ছিল। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড়। কিছুদিন আগেও বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে, ক্ষেতের আইলে, ঝোপ-ঝাড়ের পাশে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ।
কোন পরিচর্যা ছাড়াই অনেকটা প্রাকৃৃতিক ভাবে বেড়ে উঠতো এসব খেজুর গাছ। প্রতিটি পরিবারের চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত রস দিয়ে তৈরি করা হতো সুস্বাদু খেজুরের গুড়। গ্রামীন জনপদে সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবে পুকুরের পাড়ে রাস্তার ধারে পরিবেশ বান্ধব খেজুর গাছ এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। ইট ভাটার রাহু গ্রাসে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণে যে পরিমাণ গাছ চোখে পড়ে তা নির্বিচারে নিধন করায় দিনদিন খেজুর গাছ কমছেই।
এখনও শীতকালে শহর থেকে মানুষ দলে দলে ছুটে আসে গ্রাম বাংলার খেজুর রস খেতে। এক সময় সন্ধ্যাকালীন সময়ে গ্রামীন পরিবেশটা খেজুর রসে মধুর হয়ে উঠতো। রস আহরণকারী গাছিদের প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যেত সে সময়ে। রস জ্বালিয়ে পাতলা ঝোলা, দানা গুড় ও পাটালী তৈরি করতেন। যার সাধ ও ঘ্রাণ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখন অবশ্যই সে কথা নতুন প্রজন্মের কাছে রূপকথা মনে হলেও বাস্তব। যত বেশি শীত পড়বে তত বেশি মিষ্টি রস দেবে খেজুর গাছ। এ গাছ ৮ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত রস দেয়। এটাই তার বৈশিষ্ট্য। শীতের পুরো মৌসুমে চলে রস, গুড়, পিঠা, পুলি ও পায়েস খাওয়ার পালা। এ ছাড়া খেজুরর পাতা দিয়ে আর্কষনীয় ও মজবুত পাটি তৈরী হয়। এমনকি জ্বালানি কাজেও ব্যাপক ব্যবহার। কিন্তু জয়বায়ু পরিবর্তন, কালের বির্বতনসহ বন বিভাগের নজরদারী না থাকায় বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ এখন বিলুপ্তির পথে।
তবে যে ভাবে খেজুর গাছ কাটা হচ্ছে অল্প দিনের মধ্যেই এই দেশে আর খেজুর গুড়ের ব্যবসা হবে না বলে মনে করেন গাছিরা। বর্তমান বাজারে আখের গুড় চিনি যে মূল্যে বেচাকেনা হচ্ছে তার চেয়ে মানসম্পন্ন খেজুরের গুড়ের দাম এবছর কিছুটা বেশি হবে এমনটাই আসা করছেন গাছিরা। শীত একটু বেশি পড়তে শুরু করলে আত্মীয়-স্বজন আনা নেয়া ও পিঠা-পুলির উৎসবে খেজুর গুড়ের দাম ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সে সময় আমাদের লাভ একটু বেশি হয়। যে পরিমাণে শ্রম দিতে হয় সে পরিমাণে আমরা লাভ করতে পারি না। তবুও পেশাগত কারণে চালিয়ে যাচ্ছি এই ব্যবসা। এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগ জানায়, বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটি শিল্প আর দক্ষতায় ভরা। ডাল কেটে গাছের শুভ্র বুক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য ও অপেক্ষার পালা। এ জন্য মৌসুমে আসার সাথে সাথে দক্ষ গাছিদের কদর বাড়ে।
এদিকে সচেতন মহল মনে করেন, খেজুর গাছ আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য তথা জীবনধারায় মিশে আছে। এই ঐতিহ্যকে যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করতে হবে।
মশাল ডেস্ক: কিশোরগঞ্জ তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা গ্রামের যুবক সফিউল আলম সজিব। মুরগী পালন আর মাছ চাষ করে মাসে আয় করেন ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা। চাকরির পেছনে না ছুটে তিনি আজ সফল খামারি। ২০১১ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে তিনমাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে ১০০ ব্রয়লার মুরগী নিয়ে মুরগীর খামার শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে রয়েছে ১০ হাজার লেয়ার মুরগী।
খামারের পাশাপাশি রয়েছে ১২ টি পুকুর। পুকুরে শিং, পাবদা, গুলসা ও পাঙাস মাছ চাষ করেন। রয়েছে একটি মাঝের হ্যাচারি ও গরুর খামার। সজীবের খামারে ২০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। তার খামারে কাজ করে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারের খরচও চালাতে পারছে।
তালজাঙ্গা গ্রামে সজীবই প্রথম মুরগীর খামার ও মাছ চাষ শুরু করেন। এখন তার সাফল্য দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক খামারি হিসেবে কাজ করছেন।
বেকার সমস্যা দূর করতে দেশের শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত বেকার যুবকদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। চাকরির পেছনে না ছুটে সফল আত্মকর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে বেকার যুবকদের প্রতি আহ্বান করেন তাড়াইল উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা, মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান খান।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তদের দিক নির্দেশনায় সফল খামারি সজীব এখন স্বপ্ন দেখছেন নিজের খামারকে বড় পরিসরে রূপ দিয়ে ৫০ হাজার লেয়ার মুরগী নিয়ে ৫০ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার। সরকারি সহযোগিতা পেলে তার এই স্বপ্ন পূরণ করা সহজ হবে বলে জানান শফিউল আলম সজীব।
ডেস্ক রিপোট: বন্যা কবলিত সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ কিছু এলাকায় দুর্যোগকালীন জরুরী টেলিযোগাযোগ সেবা স্থাপনে ব্যবহৃত হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল)-এর চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ শনিবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর বাংলানিউজের।
তিনি জানান, দুর্যোগকালীন জরুরী টেলিযোগাযোগ সেবায় এবারই প্রথম বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সেবা দিতে যাচ্ছে, যা এই স্যাটেলাইটের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। যদিও টেলিভিশন ও ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন সেবায় স্যাটেলাইট সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন, আমাদের টেলিকম অপারেটরগুলো তিনটি করে টোল ফ্রি নাম্বার চালু করেছে বানভাসি মানুষের জন্য। প্রয়োজনে কল করুন: গ্রামীণফোন- ০১৭৬৯১৭৭২৬৬, ০১৭৬৯১৭৭২৬৭, ০১৭৬৯১৭৭২৬৮ রবি-০১৮৫২৭৮৮০০০, ০১৮৫২৭৯৮৮০০, ০১৮৫২৮০৪৪৭৭ বাংলালিংক-০১৯৮৭৭৮১১৪৪, ০১৯৯৩৭৮১১৪৪, ০১৯৯৫৭৮১১৪৪ টেলিটক- ০১৫১৩৯১৮০৯৬, ০১৫১৩৯১৮০৯৭, ০১৫১৩৯১৮০৯৮।
বিএসসিএল জানায়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী ও সচিবের নির্দেশে ও সরাসরি তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড এরই মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ১২ সেট ভিস্যাট যন্ত্রপাতি দিয়েছে, যার মাধ্যমে জরুরী টেলিযোগাযোগ সেবা স্থাপন করা হবে।
এ ছাড়াও বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারের দফতরকেও আরও ২৩ সেট ভিস্যাট যন্ত্রপাতি দেয়ার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যার মাধ্যমে আরও ২৩টি বন্যা উপদ্রুত এলাকায় জরুরী টেলিযোগাযোগ সেবা স্থাপন করা হবে।
নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও আসন্ন বর্ষা মৌসুমে সম্ভাব্য জলাবদ্ধতা নিরসনের পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
বুধবার (১৮ মে) সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি ও বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক যৌথভাবে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত মানববন্ধন চলাকালে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক আনিসুর রহিমের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সদস্য সচিব আলী নুর খান বাবুলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, শিক্ষাবিদ প্রফেসর আব্দুল হামিদ, দৈনিক দক্ষিণের মশাল সম্পাদক অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, জেলা জাসদের সভাপতি ওবায়দুস সুলতান বাবলু, জেলা সিপিবির সভাপতি আবুল হোসেন, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ইদ্রিস আলী, মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, বারসিকের গাজী মাহিদা মিজান, শিক্ষা সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের সংগঠক হাবিবুল হাসান, আমরা সাতাশের আমিনুর রহমান কাজল, ভিডিবির তরিকুল ইসলাম, মানবাধিকার সংস্থার সদস্য তামান্না খাতুন, ভূমিহীন নেতা কওসার আলী, আব্দুস সামাদ, মফিজুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে সাতক্ষীরা জেলার নি¤œ অঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ফসলের ক্ষেত ডুবে যায়। বহু বাড়ি-ঘর জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এমনকি সাতক্ষীরা পৌরসভার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায়ও জলাবদ্ধতা ও জলমগ্ন অবস্থা বিরাজ করে। অনেকের ঘরের মধ্যে পানি ওঠে। জলাবদ্ধতায় মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠে। একইভাবে ষাটের দশকে নির্মিত সাতক্ষীরা উপকূল রক্ষা বাঁধের অধিকাংশ জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় উপকূলের মানুষও সবসময় অনিরাপদ জীবনযাপন করে। স্বাভাবিক সময়ে বেড়িবাঁধ নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যথা থাকে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলেই শুরু হয় তোড়জোড়। যা এবার ঘূর্ণিঝড় অশনির সময়ও দেখা গেছে। কিন্তু এখন আর সেই তোড়জোড় নেই।। বক্তারা উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও আসন্ন বর্ষা মৌসুমে সাতক্ষীরা পৌরসভাসহ সর্বত্র সম্ভাব্য জলাবদ্ধতা নিরসনের পূর্ব প্রস্তুতি দাবি জানান।
পরে একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
যত্রতত্র ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছাড়াই অনুমোদনহীন পাকা ঘর-বাড়ি নির্মাণ, অপরিকল্পিতভাবে কৃষি জমিতে স্থায়ীবাঁধ দিয়ে মৎস্য ঘের প্রস্তুত, জলাশয় ও পুকুরগুলো ভরাট করে ফেলা, নদনদী কৃষি জমি থেকে উঁচু হয়ে যাওয়ায় প্রতি বছর সাতক্ষীরা পৌরসভা ও সদর উপজেলার একটি বড় অংশ জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে। এক্ষেত্রে স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধির সদিচ্ছার অভাবও আছে। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই কিভাবে জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া যায় তা জানতে সাতক্ষীরা পৌরসভার দক্ষিণ কাটিয়া, লস্কর পাড়া, কাটিয়া মাঠ পাড়া, ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের শাল্যে, বেড়াডাঙ্গা, ঋষিপাড়া, মাছখোলা ও লাবসার তালতলা এলাকাবাসীর সাথে কথা বললে তারা আক্ষেপের সাথে এসব কথা জানান। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউপির বেড়াডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা ও ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. আশুতোষ বলেন, প্রতি বছর আমার এলাকায় প্রায় ৬ মাস জলাবদ্ধতা থাকে। যখন অতি বৃষ্টি হয় তখন আমরা আমাদের ঘর থেকে বের হতে পারি না। রাস্তাঘাট বাড়ির উঠানে জলাবদ্ধতায় পানি থৈথৈ করে। কোনটা রাস্তা আর কোনটা বাড়ি-ঘর কিছুই চেনা যায় না। সবই জলাবদ্ধতায় আবদ্ধ থাকে। তবে যদি স্থানীয় বেতনা নদী খনন করে জোয়ার-ভাটা সৃষ্টি করা যায়, তখন আর এই জলাবদ্ধতা থাকবে না বলে তিনি মনে করেন। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউপির শাল্যে গ্রামের বাসিন্দা, ১নং ওয়ার্ডের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান মো. নূরুল হুদা বলেন, যেখানে-সেখানে অপরিকল্পিতভাবে স্থায়ীবাঁধ দিয়ে মৎস্য ঘের করা, বৃষ্টি পানি তাৎক্ষণিকভাবে সরে না যাওয়া ও নদনদী কৃষি জমি থেকে উঁচু হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে বলে আমার ধারণা। তবে যদি সবার সদিচ্ছা থাকে তাহলে এই জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে আমরা মুক্তি পাব। সেজন্য কৃষি জমিতে বাঁধ দিয়ে মৎস্য ঘের না করার পক্ষে আমি। তাছাড়া বেতনা নদীর খনন কাজ শুরু হয়েছে। খনন শেষ হলে আবার আগের অবস্থায় আসবে বলে মনে করেন স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধি। সাতক্ষীরা পৌরসভার দক্ষিণ কাটিয়া এলাকার বাসিন্দা ও পৌর কাউন্সিলর মো. কায়ছারুজ্জামান হিমেল বলেন, অনুমোদনহীনভাবে যেখানে-সেখানে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছাড়া উঁচু উঁচু ঘরবাড়ি নির্মাণ করার কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয় জলাশয় ও পুকুরগুলো ভরাট করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করার কারণেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া কৃষি জমিতে স্থায়ীভাবে বাঁধ দিয়ে মৎস্য ঘের করার কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই পৌর এলাকার জলাশয় বা পুকুরগুলো ভরাট না করে খোলা রাখা ও যদি কৃষি জমিতে বাঁধ দিয়ে মৎস্য ঘের না করা হয় তাহলে এই জলাবদ্ধতা থেকে এলাকার বাসিন্দারা মুক্তি পাবে বলে আমার মনে হয়। সেজন্য স্থানীয়সহ সকল জনগণের ও জনপ্রতিনিধিদের সদিচ্ছার প্রয়োজন। (লেখাটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের জলাবদ্ধতা নিরসনে করণীয় বিষয়ক ক্যাম্পেইনের একটি অংশ) লেখক: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং সদস্য, শিক্ষা সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিম
স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে সম্ভাব্য জলাবদ্ধতা দূরীকরণে করণীয় বিষয়ক নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমাবার (২৮) বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে। সংলাপে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মো: আনিসুর রহিমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাসকিন আহমেদ চিশতী, সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম। সংলাপে ‘আসছে বর্ষা ও জলাবদ্ধতা : নিষ্কাশনের পূর্ব প্রস্তুতি জরুরী’ শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন প্রবীণ সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বারসিকের সহকারী কর্মসূচি কর্মকর্তা গাজী মাহিদা মিজান।
নাগরিক সমস্যাসমূহ তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন নাগরিক নেতা ও শিক্ষাবিদ প্রফেসর আব্দুল হামিদ, অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, জাসদ নেতা ওবায়দুস সুলতান বাবলু, বাসদ নেতা অ্যাড. শেখ আজাদ হোসেন বেলাল, বাংলাদেশ জাসদের নেতা অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, জাতীয় পার্টির নেতা আনোয়ার জাহিদ তপন, মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, উন্নয়ন কর্মী জি এম মনিরুজ্জামান ও অ্যাড. মুনীরউদ্দীন, সাংবাদিক আব্দুল ওয়ারেশ খান চৌধুরী, জলবায়ু কর্মী এস এম শাহিন আলম, জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত মাছখোলা গ্রামের বাসিন্দা আশুরা বেগম, রাজারবাগান এলাকার অণিমা দাসী, বদ্দিপুর কলোনীর জাহানারা বেগম, আশরাফ আলী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বছরের নয় মাস সাপ ব্যাঙের সাথে পানিতে থাকবো আর তিন মাস ভালো থাকবো এমনভাবে আমাদের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এই যন্ত্রণা থেকে আমরা রক্ষা পেতে চাই। আমরা জলাবদ্ধতামুক্ত জনপদ চাই।
জনভোগান্তির এই অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তারা আরও বলেন, বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই চিংড়ী চাষ এলাকাগুলো গুড়িয়ে দিয়ে যথাযথ নিষ্কাশন ব্যবস্থার মাধ্যমে পানি সরানো না গেলে সাতক্ষীরার মানুষ আবারও জলাবদ্ধতার কবলে পড়বে।
নাগরিক সংলাপে সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাসকিন আহমেদ চিশতী ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু প্রায় একই সুরে বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের বরাদ্দকৃত টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে। খননের নামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঠিকাদার নিয়োগ নয় বরং নিজেরাই পরোক্ষভাবে ঠিকাদারিত্ব করে পানি সরানোর নামে এসব খননকাজ থেকে লুটে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ সালে বেতনা খননের নামে যে লুটপাট চালানো হয়েছিল ঠিক একই ধারাবাহিকতা এখনও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সাতক্ষীরার প্রাণসায়ের খননের নামে বাস্তবতা বর্জিত প্রকল্প দিয়ে টাকা আত্মসাত এবং মরিচ্চাপ খননের নামেও একই কায়দায় সরকারি টাকা লুটপাটের মহোৎসব চলছে। আর এসব ব্যাপারে জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমাদের কোন বক্তব্য পানি উন্নয়ন বোর্ড গ্রহণ করছে না। এমনকি এসব কাজের ভেতর ও বাহির সম্পর্কেও জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করতে বাহানা করছেন।
সংলাপে অংশ নিয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, জলাবদ্ধতা দূর করতে ভদ্রলৌকিক সংলাপ করে লাভ হবে না বরং প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সংশ্লিষ্টদের ঘেরাও করে জবাবদিহিতা আদায় করতে হবে। সরকার সাতক্ষীরার দুটি নদী বেতনা ও মরিচ্চাপ এবং সংশ্লিষ্ট ৮২টি খাল খননের মহাপরিকল্পনা নিয়ে ৪৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। অথচ এই টাকা জনগণের কল্যানে ব্যবহৃত হতে পারছে না।
তারা আরও বলেন, সরকারের বরাদ্দ দেওয়া টাকা পাউবো কর্মকর্তারা নিজেদের আড়াল করে ঠিকাদারদের নামে কিনে নেয়। সেই কাজে নিয়োগ করা হয় সাব ঠিকাদার। আর সাব ঠিকাদাররা শ্রমিকদের সাথে চুক্তি করে সামান্য কিছু কাজ দেখিয়ে প্রকল্পের ইতি টেনে থাকেন। এভাবেই সরকারি টাকা কর্মকর্তারা পকেটে তুলে নেয়। আর মানুষ বারবারই জলাবদ্ধতায় ডুবতে থাকে। অনতিবিলম্বে প্রাণসায়ের খাল যথানিয়মে খনন করে বেতনার তিন চারটি অকেজো স্লুইসগেট গুড়িয়ে দিয়ে এবং চিংড়ী চাষের নামে দেওয়া ছোটবড় বাঁধ ভেঙে চুরে ও সাতক্ষীরা পৌর এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে সচল করে জনগণকে জলাবদ্ধতামুক্ত করা যাবে বলে নাগরিক কমিটির সদস্যরা জোরালো মন্তব্য করেন।
আর এই দাবি আদায়ে মাঠে নামার কথা উল্লেখ করে সাতক্ষীরা পৌরসভা, সদর উপজেলা পরিষদ, সকল ইউপি চেয়ারম্যান, সকল জনপ্রতিনিধি, পেশাজীবী সংগঠন, রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজকে এক প্ল্যাটফর্মে এসে কাজ করতে হবে।
ডেস্ক রিপোর্ট: তুজলপুর হবে ওষুধি গ্রাম। গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে ফলজ ও বনজ বৃক্ষের পাশাপাশি রোপণের জন্য গাছের পাঠশালার পক্ষ থেকে দেওয়া হবে ওষুধি গাছের চারা। এর মধ্যদিয়ে গ্রামের মানুষকে ভেষজ ওষুধ, জৈব সার ও কীটনাশক এবং অর্গানিক খাদ্য উৎপাদন ও গ্রহণের স্থায়িত্বশীল চর্চায় উদ্বুদ্ধ করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) বিকালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তুজলপুরে ‘গাছের পাঠশালা’ ও উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ-বারসিক আয়োজিত ‘বাড়িতে ওষুধি বৃক্ষ রাখার উপকারিতা’ বিষয়ক আলোচনা সভায় তুজলপুর গ্রামকে ওষুধি গ্রাম হিসেবে গড়ে তোলার এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
সভায় তুজলপুর কৃষক ক্লাবের সভাপতি, গাছের পাঠশালা’র পরিচালক ও বিলুপ্ত প্রায় উদ্ভিদ সংরক্ষণে জাতীয় পরিবেশ পদক প্রাপ্ত সংরক্ষক ইয়ারব হোসেনের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ সহিদুর রহমান।
আলোচনায় অংশ নেন স্থানীয় ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম, তুজলপুর কৃষক ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রহমান, বারসিকের সহকারী কর্মসূচি কর্মকর্তা গাজী মাহিদা মিজান, যুব সংগঠক জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয়রা।
এসময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বাড়িতে ওষুধি বৃক্ষ রাখার উপকারিতা ও গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, আমরা দিন দিন যে কোন রোগে এন্টি বায়োটিকসহ উচ্চ মাত্রার ওষুধের উপর নির্ভর হয়ে পড়ছি। একই সাথে ফসল উৎপাদনে রাসায়নিকের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ায় খাদ্যের গুণগন মান ও পুষ্টি কিছুই থাকছে না। সুন্দর স্বাভাবিক জীবনযাপনে ভেষজ ওষুধ, জৈব সার ও কীটনাশক এবং অর্গানিক খাদ্য উৎপাদন ও গ্রহণের স্থায়িত্বশীল চর্চা বাড়ানোর বিকল্প নেই।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ সহিদুর রহমান বলেন, বর্তমানে প্রত্যেক বাড়িকে পুষ্টির ভা-ার হিসেবে গড়ে তোলার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ওষুধি বৃক্ষও রাখতে হবে। ব্যবহার করতে হবে।
এসময় তিনি সমাজসেবা অধিদপ্তরের নানা সেবার কথা তুলে ধরে আরও বলেন, সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সব সেবা ডিজিটালাইজ করেছে। এসব সেবা পেতে কাউকে একটি টাকাও দেবেন না। অনলাইনে আবেদন করবেন, আবেদন বিবেচনা করে সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, তুজলপুর গ্রামকে ওষুধি গ্রাম হিসেবে গড়ে তুলতে বারসিকের সহযোগিতায় গাছের পাঠশালা ও বিলুপ্ত প্রায় উদ্ভিদ সংরক্ষণে জাতীয় পরিবেশ পদক প্রাপ্ত সংরক্ষক ইয়ারব হোসেনের পক্ষ থেকে প্রত্যেক বাড়িতে পর্যায়ক্রমে আটটি করে ওষুুধি বৃক্ষ পৌঁছে দেওয়া হবে। একই সাথে এসব বৃক্ষের গুণাগুন জানতে স্থানীয়দের ওরিয়েন্টেশন দেওয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বদলে বাঁধের তাৎক্ষণিক মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের স্থানীয় সরকারকে বেড়িবাঁধ বাজেট প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করারও সুপারিশ এমপি রবি’র
জহুরুল কবীর:
উপকূলীয় সুরক্ষার জন্য রাজস্ব থেকে জলবায়ু পরিববর্তন মোকাবেলায় সক্ষম বাঁধ নির্মাণের জন্য ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটে ১২-১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ, জনপ্রতিনিধি এবং নাগরিক সমাজ। গতকাল আয়োজিত একটি ভার্চুয়াল সেমিনারে বক্তাবৃন্দ বেড়িবাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ ত্বরান্বিত করতে স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষকে সম্পৃক্ত করার সুপারিশ করেন। ‘বাজেট ২০২১-২২: উপকূলীয় সুরক্ষা’ শীর্ষক এই সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে কোস্ট ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর সাসটেইনেবল রুরাল লাইভলিহুড (সিএসআরএল), সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি) এবং কোস্টাল লাইভলিহুড এন্ড এনভায়রনমেন্ট একশান নেটওয়ার্ক (ক্লিন)।
কোস্ট ফাউন্ডেশনের রেজাউল করিম চৌধুরী এবং সিএসআরএলের জিয়াউল হক মুক্তার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এবং বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি। সেমিনারে বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য অংশগ্রহণ করেন, তাঁরা হলেন নারায়ণ চন্দ্র এমপি (খুলনা-৫), বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোশতাক আহমেদ রবি এমপি, (সাতক্ষীরা-২), জনাব নুরুন্নবী চৌধুরী এমপি (ভোলা-৩), নাহিম রাজ্জাক এমপি (শরীয়তপুর -৩), আশেক উল্লাহ রফিক এমপি (কক্সবাজার -২), শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি (গাইবান্ধা -২), জাফর আলম এমপি (কক্সবাজার -২)। সেমিনারে আরও বক্তৃতা করেন পানি বিশেষজ্ঞ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. আইনুন নিশাত, সিপিআরডির মোঃ শামসুদ্দোহা এবং ক্লিন-খুলনার হাসান মেহেদী। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের সৈয়দ আমিনুল হক।
এছাড়া প্রগতি পরিচালক অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, দৈনিক দক্ষিণের মশালের বার্তাসম্পাদক জহুরুল কবীর প্রমুখ।
সৈয়দ আমিনুল হক উল্লেখ করেন, প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড় এবং অন্যান্য দুর্যোগ উপকূলীয় এলাকার জীবিকার কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং দরিদ্র লোকেরা সবচেয়ে ঝুঁকির থাকা উপকূলবর্তী অঞ্চলে বসবাস করায় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এরপরেও বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সরকার বাজেট বরাদ্দ গতানুতিক এবং সংকট মোকাবেলায় অপর্যাপ্ত। তিনি তিনটি সুনির্দিষ্ট দাবি উত্থাপন করেন: (১) বাঁধ নির্মাণের ন্যূনতম প্রয়োজনীয়তা হিসেবে সরকারকে প্রতি বছর কমপক্ষে ১২-১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে হবে, (২) তাৎক্ষণিক বাঁধ মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্থানীয় সরকারকে বাজেটসহ দায়িত্ব দিতে হবে এবং (৩) উপকূলীয় সুরক্ষা, বিশেষত প্রাকৃতিক সুরক্ষা, উপকূলীয় মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থান এবং নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য কারিগরি শিক্ষাকে একটি কার্যকরী বিকল্প হিসেবে গড়ে তুলতে এবং শহরের পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা আধুনীকায়নের কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি বলেন, যে একটি জাতীয় ঝুঁকি মূল্যায়ন প্রয়োজন, যা সরকারকে উপযুক্ত বাজেট বরাদ্দের দিক-নির্দেশনা দিতে পারে। বেড়িবাঁধ উন্নয়ন নীতিমালা তৈরির পাশাপাশি আমরা এই বিষয়ে একটি রোডম্যাপের জন্য কাজ করছি। এটি সত্য ডে, উপকূলীয় সুরক্ষা ব্যতীত উন্নত বাংলাদেশের কল্পনা করা অসম্ভব, তাই উপকূলের সমস্যাকে কোনও অঞ্চলের আলাদা কোনও সমস্যা হিসেবে বিবেচনা না করে এটিকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।
ডাঃ আইনুন নিশাত বলেন, বাজেট বরাদ্দ করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্টতা যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে, বাঁধ বিষয়ক পরিকল্পনায় এই পরিস্থিতি অনুপস্থিত। ‘ডেল্টা প্ল্যান’ এর আওতাধীন প্রকল্পগুলি পরবর্তী পঞ্চাশ বছরের দুর্যোগ পূর্বাভাসকে বিবেচনা না করেই গ্রহণ করেছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোশতাক আহমেদ রবি এমপি বলেন, উপকূলীয় সুরক্ষায় বিনিয়োগ করলে সেটা জাতীয় অর্থনীতিতে দ্বিগুণ ফেরত দিতে পারে। আমরা স্থায়ী সমাধানের দাবি জানাচ্ছি। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের বদলে বাঁধের তাৎক্ষণিক মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের স্থানীয় সরকারকে বেড়িবাঁধ বাজেট প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করারও সুপারিশ করেন। আশেক উল্লাহ রফিক এমপি বলেন, প্রযুক্তিগত দুর্বলতার কারণে আমরা জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস দিতে পারছি না। এ কারণেই কক্সবাজার জেলার কিছু অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রকল্পের নকশা প্রণয়নে বিলম্ব হওয়ায় ক্ষতি বেড়ে যাওয়ার একটি কারণ। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সময়োপযোগী এবং বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা নিতে হবে। সাংসদ নাহিম রাজ্জাক বলেন, উপকূলীয় বিপর্যয়ের প্রভাব হ্রাস করতে পানি ব্যবস্থাপনার ও পরিকল্পনার জন্য ব্যাপক আয়োজন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটিই সম্ভব আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সমন্বয় নিশ্চিত করার মাধ্যমে।
আমরা এই বিষয়ে নীতি প্রণয়ন জোরদার করতে উপকূলীয় সাংসদদের নিয়ে একটি ‘ককাস’ গঠন করতে পারি। সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন যে, বেড়িবাঁধ নির্মাণ কৌশল এবং পদ্ধতিকেসরকারের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। এটা করা সম্ভভ হলে এটি অগ্রাধিকার পাবে। এর জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় প্রয়োজন।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, উপকূলীয় সুরক্ষা ব্যবস্থার জন্য দীর্ঘমেয়াদী সমন্বিত এবং দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসের জন্য পরিবেশ বান্ধব নীতিমালা তৈরি করতে হবে। এই নীতিমালায় উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জন্য বিকল্প আয় তৈরিতে সক্ষম শিক্ষা বিস্তারকেও অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে।
দুর্যোগের প্রভাবের উপর ভিত্তি করে বাঁধগুলোর একটি মূল্যায়ন হতে হবে, এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে প্রতিবেশগত বিষয়গুলো বিবেচনা করেই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এনজিও, জনপ্রতিনিধি এবং সরকার- সকালের অংশ্রগহণের ভিত্তিতে একটি সুসংহত পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা প্রয়োজন।
উপকুলীয় জেলা সাতক্ষীরা। এশিয়ার বৃহত্তম সবুজ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন এই জেলায় অবস্থিত। এই উপকূলের গা ঘেঁষে বয়ে গেছে বঙ্গোপসাগর। শক্ষিাঙ্গণরে মহা পুরুষ খানবাহাদুর আহসান উল্লাহ এই শহরের গর্ব। তাছাড়া শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ জাতীয় অধ্যপক ডাঃ এম আর খান, ডাঃ রুহুল হক (সাবেক মন্ত্রী) (অর্থপেডিক্স), শৈল্য চিকিৎসক ডাঃ শ্যামাপদ পাল, ডাঃ আজিজার রহমান; বিশিষ্ট পরমানু বিজ্ঞানি ড. এম মতিয়ার রহমান; বিশ্ব বিখ্যাত বাঘ শিকারী পচাব্দী গাজী; প্রথম মুসলিম মহিলা কবি আজিজুননেছা খাতুন; বাঙালি লেখক/কবি মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী; বিশিষ্ট সাহিত্যিক সিকান্দার আবু জাফর; সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আবেদ খান; বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক আব্দুল মোতালেব; বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব অমর মিত্র (৩০ আগস্ট, ১৯৫১) ও আবুল কাশেম মিঠুন, পরীমনি; প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ও নীলুফার ইয়াসমীন; চিত্রনায়ক আমিন খান ও রানী সরকার; নাট্যশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, তারিক আনাম খান, আফজাল হোসেন, ফাল্গুনী হামিদ ও মৌসুমী হামিদ; বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী (একুশে পদকপ্রাপ্ত) সৈয়দ জাহাঙ্গীর; আব্দুল জলিল (ঈশিকা); ক্রিকেটার মুস্তাফিজুর রহমান ও সৌম্য সরকার; নারী ফুটবলার সাবিনা; রাজনীতিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা স ম আলাউদ্দীন (সদস্য, প্রাদেশিক পরিষদ-১৯৭০ ); এম মনসুর আলী (সাবেক মন্ত্রী), সৈয়দ কামাল বখত সাকি, সৈয়দ দীদার বখত; পশ্চিমবঙ্গ ভারতের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায়; সাবেক সেনা প্রধান ভারতের শঙ্কর রায় চৌধুরী প্রমুখ জ্ঞানী-গুণিজন এই জেলার অহঙ্কার। ভোমরা স্থল বন্দর, চিংড়ি ও কাকড়া শিল্প এই জেলার বৃহৎ রাজস্ব আয়ের উৎস। কপোতাক্ষ, ইছামতি (আদি যমুনা), কালিন্দী, কাকশিয়ালী, বেতনা(বেত্রাবতী), খোলপেটুয়া, গলঘেসিয়া, মরিচ্চাপ এই জেলার প্রধান প্রবহমান নদ-নদী সমুহ। এছাড়া প্রাণসায়র খাল জেলা শহরের প্রধান জল প্রবাহ।
জলবদ্ধতা, লোনা পানি, আন্তর্জাতিক সীমানা এই জেলার প্রধান সমস্যার উৎস। জেলার দক্ষিণ উপকূলীয় উপজেলার প্রায় অধিকাংশ ইউনিয়ন মিষ্টি পানির অভাবে বছরের বার মাস খাওয়ার পানি সঙ্কটে ভোগে। জেলার নদীগুলোয় চলমান প্রবাহ না থাকায় প্রতিনিয়ত পানির লবনাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া চিংড়ি চাষের জন্য ঘেরে লোনা পানি উঠানোয় বসতি এলাকাও লবনাক্ত হয়ে যাচ্ছে। ফলে খাওয়ার জন্য মিষ্টি পানির প্রচ- অভাবী এই উপকূল।
নদীগুলোয় চলমান প্রবাহ না থাকায় নদীর তলদেশ উচুঁ হয়ে যাচ্ছে। এতে করে নদীর পানি উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। বসতি এলাকা অপেক্ষা নদীর পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় নদীগুলো ওভারফ্লো হয়ে পানি বসতি এলাকায় প্রবেশ করায় বছারের প্রায় ১২মাস উপকূলের অধিকাংশ ইউনিয়ন পানির নিচে থাকে। ফলে পয়নিষ্কাশনের মারাত্মক অসুবিধায় ভোগে এলাকার মানুষ। গৃহপালিত পশুর জীবন যাপন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। কৃষি জমি পানির নিচে থাকায় এলাকায় কৃষি উৎপাদন একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বেকার হয়েছে খুলনা সাতক্ষীরা উপকূলীয় এলাকার প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। হাতে গোনা কিছু মানুষ জলে এবং জঙ্গলে কাজ করলেও তাতে পরিবারে স্বচ্ছতা ফেরে না। অভাবের তাড়ণায় পিতামাতা শিশু কিশোরদের লেখাপড়া বন্ধ করে জীবনের ঝুকি নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় শ্রমিকের কাজে পাঠাতে বাদ্য হচ্ছে। গত বছর শ্যামনগরের কয়েকটি পরিবারের একাধিক শিশু ঢাকা গাজীপুর ইট ভাটায় দাদন খাটতে যেয়ে প্রাণ হারায়। এছাড়া উপকূলীয় এলাকায় ভয়াবহ হারে হ্রাস পাচ্ছে শিক্ষার হার। কর্মহীনতা যার প্রধান কারণ। সাতক্ষীরা উপকূলের নিন্ম শ্রেনীর বড় একটা গোষ্টি সুন্দরবন নির্ভর হয়ে হরে পড়েছে। কাঠ ও গোলপাতা কাটা, মধু আহরণ, পশু শিকার, মাছ ধরা ইত্যাদি এদের প্রধান পেশা হয়ে উঠেছে। এতে করে প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে সুন্দরবন। জঙ্গলের ঘনত্ব হ্রাস পাওয়ায় জনপদে চলে আসছে বাঘ, হরিণসহ বনজ প্রাণী। যার জন্য বনজীবীরা বাঘের মুখে পড়ছে প্রতিনিয়ত। সাতক্ষীরা এমন একটা জেলা যেখানে সরকারি বে-সরকারি কোন কলকারকাখা নেই। আশির দশকে তৎকালিন বস্ত্রমন্ত্রী এম মুনছুর আলী একটি টেক্সটাই মিল (সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস) প্রতিষ্ঠা করলেও পরবর্তি সরকারের বাটপারেরা লুটপাট করে ধ্বংস করে দেয়। বর্তমানে এর (সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস) বিশাল জায়গা ছাড়া আর কিছু নেই। জেলার সামন্য একটা জনগোষ্টি ভোমরা স্থল বন্দরের সুবিধা ভোগ করে থাকেন। শিক্ষিত যুবসমাজের জন্য এই জেলায় কোন কর্মসংস্থান না থাকায় বৃহত্তর চাকরী প্রার্থি রাজধানি মুখি হয়ে ওঠে। সাতক্ষীরা ভারত সীমান্ত ঘেসা হওয়ায় উৎপাদন মুখি অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান মূল্য সংকটে পড়ে। রাজধানি ঢাকা থেকে কাচামাল এনে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করতে যে খরচ পড়ে দেখা গেছে পাশের রাষ্ট্র ভারতে তার দাম অনেক কম। আবার চায়না পণ্যের মূল্য আরো কম হওয়ায় ঢাকার মার্কেটেও স্থানীয় উৎপাদিত পণ্য বেঁচা যায় না। এরকম নানান সমস্যা ও জটিলাতার জেলা উপকূলীয় সাতক্ষীরা। শিক্ষা, কর্মসংস্থানসহ রাষ্ট্রীয় সব সুবিধা থেকে সাতক্ষীরা বঞ্চিত। বিভিন্ন নাগরিক সমাজের ব্যানারে সারা বছর আন্দোলন করলেও অদ্যবধি কোন জাতীয় বাজেটে দক্ষিণ উপকূলের জন্য বিশেষ কোন প্রকল্প গ্রহণ বা বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
এমতাবস্থায় সাতক্ষীরাবাসীর প্রধান দাবীসমুহ উপকুলীয় নদ-নদীসমুহে প্রবাহ বাড়াতে নদী খননসহ আন্তনদী সংযোগ সৃষ্টিতে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণপূর্বক বরাদ্ধ দিতে হবে। মাওয়া থেকে সুন্দরবন (লিঙ্ক মোংলা, ভোমরা ও বেনাপোল বন্দর) মহাসড়কের আওতায় হাইওয়ে সড়ক ও রেল লাইন নির্মান করতে হবে। পদ্মার এপারে খুলনায় আন্তর্জাতিক আমদানি নির্ভর মার্কেট তৈরি করতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানিকৃত পণ্য খুলনা থেকে দেশব্যাপী সরবরাহ করতে হবে। ভোমরা স্থল বন্দরকে পূর্ণাঙ্গতা দিয়ে রাষ্ট্রীয় সকল আমদানী এখান দিয়ে করতে হবে। জেলার সাত উপজেলায় সাতটি পৃথক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে সাতটি ২০ লাখ শ্রমিক নির্ভর ইকোনোমিক জোন তৈরি করতে হবে। ভারতের বিভিন কোম্পানীর ম্যানুফ্যক্সারিং কারখানা উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরাতে স্থাপন করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা প্রধান স্থপনা সুন্দরবনের শক্তি বৃদ্ধিতে বনের ঘনত্ব বাড়াতে হবে। বিশাল বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেষা সুন্দরবনের পরিধি দিনকিদিন সাগরে ভেঙে যাচ্ছে। বঙ্গপসাগরে সুন্দরবনের ভাঙন রোধে বিশেষ বাধ প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। এশিয়ার বৃহৎ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগরকে পর্যাটন নগর ঘোষণা করতে হবে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে বিশেষায়িত হাসপাতালে উন্নিত করতে হবে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী এমএলএসএস পদে প্রশাসনিক স্থায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
সংবাদদাতা: ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদ মানেই ভিন্নতা। ঈদের সেই আনন্দ উপভোগ করতে সব বয়সের আনন্দ পিপাসু মানুষের পদভারে মুখরিত সাতক্ষীরা মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্ট । করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভয় উপেক্ষা করে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঈদের দিন বিকেল থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থীদের ঢল নামে এই বিনোদন কেন্দ্রে । এছাড়াও শহরের বাইপাস এলাকার ছোট ছোট মিনি রেষ্টুরেন্ট ও কফি শপ গুলোতে ও মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। এদের মধ্যে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসা অধিকাংশরাই পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। প্রচ- ভিড় হলেও এইসব বিনোদন কেন্দ্রে শিশুদের নিয়ে আনন্দ ভ্রমণের যেন কমতি নেই দশনার্থীদের। ভেদাভেদ ভুলে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগিতেই ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। করোনা ভাইরাসের কারনে মাস্ক ছাড়া ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। তবে ভেতরে সামাজিক দূরত্ব না মেনে মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াচ্ছে অনেকেই পরিবার নিজে ঘুরতে আসা পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকায় মো. সরোবর হোসেন জানান, করোনার কারনে গত ২টা ঈদ আমি ঢাকায় পালন করেছি। এবার বাসায় আসলাম পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবো বলো। পরিবার নিয়ে একটু বেড়াতে এসেছি নিরিবিলি জায়গায়তে এখানে এসে খুব ভালো লাগছে । এখানে এসে দেখলাম মাস্ক ছাড়া কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দিছেনা। মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্টের জেনারেল ম্যানেজার মো. এমদাদুল হক জানান, করোনা ভাইরাসের কারনে ১ বছরে বেশি সময় বন্ধ ছিলো ঈদ উপলক্ষে ২ দিন খোলা হয়েছে। আবার বন্ধ রাখা হবে। এখানে আগে প্রায় ৮০ জন ষ্টাফ ছিলো। এখন ২০ জনের মতন রয়েছে। টিকেট কাউন্টার থেকে মাস্ক ছাড়া কাউকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে না।
আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনি থানা চত্বর ও বাজার সড়ক দিয়ে হেঁটে যেতে হাজারো পাখির কলকাকলি যেকোনো পথচারীর মনোযোগ কাড়বে। সূর্য ওঠার আগে থেকে শুরু হওয়া এই পাখির কিচিরমিচির সন্ধ্যায় আরো বেড়ে যায়। থানার আশপাশে দাঁড়িয়েই একটু উপরে তাকালেই চোখে পড়বে থানা চত্বরে ভিতর বেড়ে ওঠা অনেকগুলো মেহগনি গাছ ও তাল গাছ জুড়ে বসেছে হাজারো বক ও পানকৌড়ি পাখির মেলা। প্রথম দেখায় মনে হবে সাদা কাশফুল যেন ছড়িযে ছিটিয়ে আছে পুরো গাছটি জুড়ে। এ ছাড়া আশপাশের আরো কয়েকটি গাছের ডালে রয়েছে বক ও পানকৌড়ি পাখি যাহা খূবই দৃষ্টিনন্দন এবং যেটা দেখে মানুষের মাঝে মুগ্ধতা ছড়ায়। প্রতিবছর এই মৌসুম এলেই থানায় বসে বক ও পানকৌড়ি পাখির মেলা। কিন্তু এই বছর থানা পুলিশের সতর্ক নজরদারী আর তার ভালোবাসায় হাজার হাজার পাখি দীর্ঘ সময় ধরে থানা চত্ত্বরে অবস্থান করছে। কোনোভাবেই যেন পাখি শিকার করা না হয় সে ব্যাপারেও পুলিশ সদস্যবৃন্দ সবাই সজাগ। দেখা গেছে সারাদিন এই গাছগুলোতে শুধু পাখির ছানারাই অবস্থান করে। আর দিনের মাঝে মাঝে মা পাখিরা মাছ শিকার করে ঠোঁটে করে তার ছানাদের খাওয়াতে আসে। মূলত সন্ধ্যার সময় পাখিদের আনাগোনা বেড়ে যায়। তখন পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে আরো বেশি মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো থানা এলাকা। আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ গোলাম কবির জানান, আমি থানায় যোগদান করার পরে দেখেছি অল্প কিছু বক ও পানকৌড়ি থানা চত্বরের ভিতরে হেমগনিগাছে এসে বাসা বাঁধতে। এবং ডিম পেড়ে বাচ্চা ফুটিয়ে বাড়তে থাকে বক ও পানকৌড়ির সংখ্যা। এখন হাজারেরও বেশি পরিণত হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। তিনি আরো বলেন, মাঝেমধ্যে ছোট ছোট বাচ্চাগুলো গাছ থেকে নিচে পড়ে যায় তখন সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চাগুলোকে পুনরায় আবার গাছের বাসায় উঠিয়ে দেওয়া হয়। উপজেলার মানুষেরা যেমন নিজেই পাহারা দিয়ে রেখেছি ঠিক তেমন পাখিগুলোকেও নজরদারিতে রাখছি যেন তাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হয়।
রিয়াদ হোসেন: দীর্ঘ সাত মাস বৃষ্টির দেখা নেই। এর উপর তীব্র তাপদাহে পুকুর খালের পানি শুকিয়ে গেছে। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সাধারণ নলকূপে উঠছে না পানি। যার ফলে সাতক্ষীরার বিভিন্ন ঘাস, পাট ও ভুট্টা চাষে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ কৃষকরা। সাধারনত মৌসুমের চৈত্র মাসে পাট বোপন করা হয়। মাস পার হতেই বৈশাখে দেখা মেলে বৃষ্টির। তবে এবছর তার কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছেনা। এমনকি আকাশেও মেঘের কোন ঘনঘটা দেখা যাচ্ছে না। অনন্য বছর এই সময় পাট প্রায় এক হাতের মতো উঁচু হয়ে উঠে। তবে অনাবৃষ্টির কারনে এবার লক্ষমাত্রা অনেকটা হ্রাস পাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
সূর্য তখন পশ্চিম আকাশে কিছুটা হেলে পড়েছে। রোজা থেকে মাঠে কাজ করছেন তালা উপজেলার দ: শাহাজাতপুরের শেখ রেজাউন উল্লাহ তিতু (৫৮)। বাড়ির পাশে দেড়বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। বৃষ্টি না হওয়ায় বীজ বোপনের পর দু’বার সেচ দিয়েছেন চারা পাটে। ইতোমধ্যে পনেরো থেকে ষোলো জন শ্রমিক খাটিয়েছেন পাটের পরিচর্চায়। তবুও অন্যবারের মতো পাট গাছের সৌন্দর্য আসছে না বলে আক্ষেপ করেন তিনি। কৃষক তিতু জানান, বৈশাখ মাসের অর্ধেক। আকাশে মেঘের আনা গোনা নেই। যারা সেচ দিয়ে বীজ বপন করে ছিলেন প্রচ- তাপের কারণে কচি পাটগাছ শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। আগে সেচ দিয়ে কেবল ধান চাষ করা হতো। এখন পাটেও নিয়মিত সেচ দিতে হচ্ছে। সেচ না দিলে পাটের গাছ ঢলে পড়ছে। সেচ আর শ্রমিক মিলে খরচও বেড়ে গেছে। ফলে অনেকটা ক্ষতির আশংকা করছি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে জেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১১,৫০০ হেক্টর। তবে তারা বলছেন, অনাবৃষ্টির কারনে এই লক্ষমাত্রা কিছুটা কমবে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বলেন, অনেকে তীব্র রোদে পাটের জমিতে সেচ দিচ্ছেন। এতে ভাল হওয়ার বদলে ক্ষতিই বেশি হচ্ছে। সন্ধ্যার পর জমিতে সেচ দিতে হবে। তাপদাহে পাট গাছে পোকার উপদ্রব বেড়ে যাবে। ফলে পাটের কচি পাতা কুকড়ে যাবে। এ অবস্থায় কীটনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেন তিনি।
শ্যামনগর ব্যুরো: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শ্যামনগর সদরের বাদঘাটা এলকায় নোনা পানির ঘের করায় পাশের পুকুরে মাছ মরে সাবাড়। মরে যাচ্ছে গাছ গাছালী। উপজেলার বাদঘাটা গ্রামের নূরু গাজীর ছেলে সাজাহান গাজী জনবসতি এলকায় নোনা পানি তুলে মাছের ঘের করায় নিকটস্থ আজিজ মাষ্ঠার সহ বিভিন্ন পুকুরে মাছ মরে গেছে, তাতে ৫০ হাজার টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ হয়েছে। মৃত মাছের মধ্যে রয়েছে গলদা, রুই, কাতলা, পুটি। বিগত ২০২০ সালেও একই ভাবে নোনা পানি তুলে ঘের করার কারনে লক্ষা ধিক টাকার মাছ মরে যায় ক্ষতি হয় গাছ গাছালীর। এবার ও নোনা পানি তুলে ঘের করার প্রস্ততিনিলে আঃ আজিজ মাষ্ঠার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করেন । উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পানি তুলতে নিশেধ করেন এবং শুনানীর তারিখ দেন। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাজাহান গাজী নোনা পানি তুলে ঘের করায় নিকটস্থ আজিজ মাষ্ঠারের পুকুরের চাষ কৃত গলদা চিংড়ি, রুই, কাতলা, পুটি মাছ মরে আনুমানিক ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয় এছাড়া নোনা পানির কারনে এলকায় নারকেল , কদবেল. আম গাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ মরে যাচ্ছে। এছাড়া নিকটস্থ আতিয়ার রহমানের পুকুরের মাছ ও গাছ গাছালী মরে যাচ্ছে। এব্যাপারে ক্ষতি গ্রস্থরা আইনগত ব্যবস্থা দাবীতে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের নিকট অভিযোগ দিয়েছে।
মশাল ডেস্ক: আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরের পাউবোর বাঁধ ও চরের ভাঙ্গন রোধক ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারি বনোজ বৃক্ষ কর্তন করে বেড়ি বাঁধ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। প্রতাপনগর ইউনিয়নে হরিষখালির পূর্ব অংশে খোলপেটুয়া নদীর ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ চলছে। বাঁধের লিভার সাইটের চরের ভাঙ্গন রোধে কেওড়া গাছের চারা রোপন করা হয়েছিল। এসব কেওড়া গাছ চর ও বাঁধ ভাঙ্গন রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে আসছে। ঠিকাদার চর থেকে ১৫/২০ টি কেওড়া বৃক্ষ উপড়ে ফেলেছে। ভেকো মেশিনের সাহায্যে বেড়ি বাঁধ নির্মাণের সুবিধার্থে বনোজ গাছগুলো উপড়ে ফেলানো হয়েছে। এব্যাপারে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুধাংশু কুমার সরকার সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি আমি জানিনা। আপনাদের কাছ থেকেই শুনলাম। আর ওই গাছগুলো আমরাই লাগিয়েছিলাম, দেখি ব্যবস্থা নিচ্ছি। অন্যদিকে, ঠিকাদার ছোট আকারের একটি ভেকো মেশিন দিয়ে বাঁধের কাজ করাচ্ছেন। যার চেইন ছিঁড়ে যাওয়ায় গত দুই সপ্তাহ অকার্যকর অবস্থায় পড়েছিল। তাছাড়া বেড়িবাঁধের গা ঘেঁষে মাটি উত্তোলন করে বাঁধ নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। এলাকাবাসী নিষেধ করলেও কোন তোয়াক্কা করা হচ্ছেনা। বেড়ী বাঁধের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই এমন দূরবর্তী স্থান থেকে মাটি নিয়ে বাঁধ নির্মানের জন্য এলাকাবাসী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।