Category: জাতীয়

  • রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি স্থগিত: উপাচার্য

    রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি স্থগিত: উপাচার্য

    চলমান পরিস্থিতিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি আপাতত স্থগিত থাকবে বলে মৌখিক ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাব্বির সাত্তার।

    বুধবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে তিনি এমন ঘোষণা দেন।

    এর আগে দুপুর ১২টা থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় হল প্রশাসনের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানান তারা। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একদল প্রতিনিধি উপাচার্যের সঙ্গে উন্মুক্ত আলোচনায় বসেন। এসময় চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত রাবি ক্যাম্পাসে আপাতত ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাব্বির সাত্তার।

    উপাচার্য বলেন, ‌‘বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে মুক্তচিন্তার জায়গা। এখানে রাজনীতি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে ছাত্রদের দাবির বিষয়ে আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো। এছাড়া সরকার থেকে দেশের স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা এসেছে। আমরা শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে হল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছি। হল ত্যাগের নির্দেশনা বাতিল করতে হলে ইউজিসির সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

    তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা যারা আছেন তাদের অনুমতিতেই বলছি, শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চলমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে আপাতত ছাত্ররাজনীতি স্থগিত করছি। প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এটি জানিয়ে দেওয়া হবে।’

  • বৃহস্পতিবার সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা

    বৃহস্পতিবার সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা

    চলমান কোটা আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের হত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে ঢাবি প্রশাসনের নির্দেশে পুলিশের নির্বিচারে হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

    বুধবার রাত পৌনে ৮টায় সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ তার ফেসবুক পোস্টে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

    ঘোষণা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার হাসপাতাল ও জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এছাড়া রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোনো যানবাহন চলবে না বলেও জানানো হয়।

    ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব, সোয়াটের ন্যক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে আগামীকাল (১৮ জুলাই) সারা দেশে ‘কমপ্লিট  শাটডাউন’ ঘোষণা করছি।

    দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে কর্মসূচি সফল করতে আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, শুধু হাসপাতাল ও জরুরি সেবা ব্যতীত কোনো প্রতিষ্ঠানের দরজা খুলবে না, অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত সড়কে কোনো গাড়ি চলবে না। সারাদেশের প্রতিটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাচ্ছি, আগামীকালের কর্মসূচি সফল করুন।

  • আমার বিশ্বাস শিক্ষার্থীরা আদালতে ন্যায়বিচারই পাবে

    আমার বিশ্বাস শিক্ষার্থীরা আদালতে ন্যায়বিচারই পাবে

    সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলা সংকট আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস আমাদের ছাত্রসমাজ উচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচারই পাবে, তাদের হতাশ হতে হবে না

    বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছে। আপিল আদালতে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। আদালত শিক্ষার্থীদের কোনো বক্তব্য থাকলে তা শোনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। এই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সুযোগ রয়েছে।

    শেখ হাসিনা বলেন, এই আইন প্রক্রিয়া সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় আন্দোলনে নেমে দুষ্কৃতকারীদের সংঘাতের সুযোগ করে দেবেন না। সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার জন্য আমি সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। আমার বিশ্বাস আমাদের ছাত্র সমাজ উচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচারই পাবে, তাদের হতাশ হতে হবে না।

    আন্দোলনের প্রেক্ষাপট সরকারে পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে ছাত্র সমাজের আন্দোলনে পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিল করে একটা পরিপত্র জারি করে। পরবর্তীকালে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে কোটা বহাল রাখার পক্ষে উচ্চ আদালত ২০১৮ সালের জারি করা সরকারের পরিপত্র বাতিল করে দেয়।

    ‘সরকারের পক্ষ থেকে পরিপত্র বহাল রাখার জন্য সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করা হয় এবং মহামান্য আদালত শুনানির দিন ধার্য করে। এ সময় আবার ছাত্ররা কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলনের শুরু থেকেই সরকার যথেষ্ট ধৈর্য ও সহনশীলতা প্রদর্শন করেছে। বরং আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পুলিশ সহযোগিতা করে। মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যখন আন্দোলনকারীরা স্মারকলিপি প্রদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করে, সে ক্ষেত্রে তাদের সুযোগ করে দেওয়া হয় এবং নিরাপত্তারও ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

    শেখ হাসিনা বলেন, দুঃখের বিষয় হলো এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী তাদের উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করবার জন্য বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে। যেহেতু বিষয়টি উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়েছে তাই সবাইকে ধৈর্য ধরতে আহ্বান জানাচ্ছি।

    তিনি বলেন, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো কিছু মহল এই আন্দোলনের সুযোগটা নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করবার সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। এর ফলে এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে যে সকল ঘটনা ঘটেছে তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল। আপনজন হারাবার বেদনা যে কতটা কষ্টের তা আমার থেকে আর কে বেশি জানে?

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই। যে সব ঘটনা ঘটেছে তা কখনই কাম্য ছিল না। চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীরা বহুতল ভবনের ছাদ থেকে ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে নির্মমভাবে নিচে ছুড়ে ফেলে অনেক ছাত্রদের হাত পায়ের রগ কেটে দেয়। তাদের ওপর লাঠিপেটা এবং ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে, একজন মৃত্যুবরণ করেছে, অনেকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ঢাকা, রংপুর এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবন ও ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক হলে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর করা হয়।

    সরকারপ্রধান বলেন, সাধারণ পথচারী, দোকানিদের আক্রমণ, এমনকি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে বাধা প্রদান করা হয়। মেয়েদের হলে ছাত্রীদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে এবং লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। আবাসিক হলে প্রভোস্টদের হুমকি দেওয়া ও আক্রমণ করা হয়েছে। শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয়ে তাদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে।

    শেখ হাসিনা বলেন, আমি বিশ্বাস করি যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িত তাদের সঙ্গে এই সব সন্ত্রাসীদের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং সন্ত্রাসীরা এদের মধ্যে ঢুকে সংঘাত ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। যারা হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হয়েছে তাদের পরিবারের জন্য জীবন–জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে যে সহযোগিতা দরকার তা আমি করব।

    তিনি আরও বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি, যারা হত্যাকাণ্ড, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে এরা যেই হোক না কেন, তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি আরও ঘোষণা করছি, হত্যাকাণ্ডসহ যেসব অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, সুষ্ঠু বিচারের ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে সেসব বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে। কাদের উসকানিতে সংঘর্ষের সূত্রপাত হলো, কারা কোন উদ্দেশ্যে দেশকে একটি অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিল, তা তদন্ত করে বের করা হবে।

    শেখ হাসিনা বলেন, আমি আন্দোলনরত কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এই সন্ত্রাসীরা যেকোনো সময়ে সংঘাতের পরিবেশ তৈরি করে তাদের ক্ষতিসাধন করতে পারে। তাই শিক্ষার্থীদের পিতা-মাতা, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের প্রতি আমার আবেদন থাকবে, তারা যেন তাদের সন্তানদের নিরাপত্তার বিষয়ে সজাগ থাকেন। একই সঙ্গে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষভাবে নজর রাখেন।

  • অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল: প্রধানমন্ত্রী

    অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল: প্রধানমন্ত্রী

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিছু মহল কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। এর ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ঘটনা ঘটেছে, তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল।

    বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুঃখের বিষয় হলো এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী তাদের উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করবার জন্য বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে। যেহেতু বিষয়টি উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়েছে তাই সবাইকে ধৈর্য ধরতে আহ্বান জানাচ্ছি।

    অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো কিছু মহল এই আন্দোলনের সুযোগটা নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করবার সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। এর ফলে, এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে যে সকল ঘটনা ঘটেছে তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল। আপনজন হারাবার বেদনা যে কতটা কষ্টের তা আমার থেকে আর কে বেশি জানে?

    যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই। যে সব ঘটনা ঘটেছে তা কখনই কাম্য ছিল না। চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীরা বহুতল ভবনের ছাদ থেকে ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে নির্মমভাবে নিচে ছুড়ে ফেলে অনেক ছাত্রদের হাত পায়ের রগ কেটে দেয়। তাদের ওপর লাঠিপেটা এবং ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে, একজন মৃত্যুবরণ করেছে, অনেকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ঢাকা, রংপুর এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবন ও ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক হলে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর করা হয়।

    সাধারণ পথচারী, দোকানিদের আক্রমণ, এমনকি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে বাধা প্রদান করা হয়। মেয়েদের হলে ছাত্রীদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে এবং লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। আবাসিক হলে প্রভোস্টদের হুমকি দেওয়া ও আক্রমণ করা হয়েছে। শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয়ে তাদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে।

    আমি বিশ্বাস করি যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িত তাদের সঙ্গে এই সব সন্ত্রাসীদের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং সন্ত্রাসীরা এদের মধ্যে ঢুকে সংঘাত ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

  • শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ফ্যাবিবামোর সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত

    শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ফ্যাবিবামোর সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত

    সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলার প্রতিবাদে ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার উদ্যোগে ১৬ জুলাই ’২৪ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় পল্টন মোড়ে সমাবেশ ও শেষে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
    ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও নয়া গণতান্ত্রিক গণমোর্চার সভাপতি জাফর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন কেন্দ্রীয় পাঠচক্র ফোরামের সদস্য বেলাল চৌধুরী, গণমুক্তি ইউনিয়নের আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন আহমেদ নাসু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের সভাপতি মাসুদ খান।
    সমাবেশে বাম মোর্চার নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের যৌক্তিক দাবিতে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করে আসছেন। সরকার সে দাবিতে কর্ণপাত না করে আদালতের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে সময়ক্ষেপণ করছে। অন্যদিকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনের ফ্যাসিবাদী পথ অনুসরণ করছে। তারই অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন কলেজসহ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়েছে। সন্ত্রাসীদের হামলায় শত শত ছাত্র-ছাত্রী মারাত্মক আহত হয়েছেন। আমরা এ ন্যাক্কারজনক হামলা ও সরকারি দমননীতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসাথে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করছি।’
    কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি সমথর্ন ও সংহতি জানিয়ে বাম মোর্চার নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘কোটাব্যবস্থা সংস্কারের জন্যে সরকারকেই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এ লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে একটি কমিশন গঠন করে সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের মতামত গ্রহণ করতে হবে। মতামতের ভিত্তিতে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্যে যৌক্তিক পর্যায়ে কোটা সংরক্ষণ করে বিদ্যমান কোটাব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে।’
    নেতৃবৃন্দ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যে দেশের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

  • ঢাবিতে প্রভোস্ট কমিটির বৈঠক, যা জানালেন উপাচার্য

    ঢাবিতে প্রভোস্ট কমিটির বৈঠক, যা জানালেন উপাচার্য

    কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপাচার্যের বাসভবনে জরুরি বৈঠক করেছেন প্রভোস্ট কমিটি।

    সোমবার (১৫ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে এই বৈঠক শুরু হয় চলে ২ ঘণ্টাব্যাপী।

    বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ আবদুর রহিম।

    ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের হলের প্রাধ্যক্ষরা রাতভর হলে অবস্থান করবেন। মিটিংয়ে আমাদের আরও কিছু বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেগুলো সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

    এর আগে বিকেলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলাকালীন সময় হামলা চালান ঢাবি ছাত্রলীগসহ সংগঠনটির মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেধে যায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে।

    এ সময় ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়ে ঢামেকে চিকিৎসা নিতে যায় অন্তত ১৫০ জন সাধারণ শিক্ষার্থী। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও ফের সংঘর্ষ শুরু হয় পৌনে ৭টার দিকে।

    কোটাবিরোধী সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে ঢাবি, ঢামেকসহ আশপাশের এলাকায়।

  • ‘আমার বাসার পিয়নও ৪০০ কোটি টাকার মালিক, হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না’

    ‘আমার বাসার পিয়নও ৪০০ কোটি টাকার মালিক, হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না’

    দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের নানা ধরনের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা এখন দুর্নীতিবাজদের ধরতে পারছি বলেই সবাই জানতে পারছে। আমার বাসায় কাজ করে গেছে, সেই পিয়নও ৪০০ কোটি টাকার মালিক। সে হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। এটাই বাস্তব কথা।’

    প্রধানমন্ত্রী রোববার (১৪ জুলাই) তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। তার সদ্যসমাপ্ত চীন সফর নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি যখন জানলাম সঙ্গে সঙ্গে তাকে (পিয়ন) বাসা থেকে বের করে দিয়েছি। তার কার্ডটার্ড (পরিচয়পত্র) সব বাজেয়াপ্ত করে নিয়েছি। ধরার পড়ার পরই এখন সবাই জানতে পেরেছে।

    সাম্প্রতিক সময়ে একটি বাহিনীর প্রধান ও সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি জনসম্মুখে আসার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এটা শুধু আমাদের দেশ বলেই কথা না। সারা বিশ্বে যে দেশটাই অর্থনৈতিকভাবে উন্নতির দিকে যায়, সেখানে কিছু লোক অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। তাদের হাতে কিছু টাকা চলে যায়। তারা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে এসব দুর্নীতির জন্য।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহ করা আর ফাইল চুরি এক কথা নয়। একজন সাংবাদিক ফাইল চুরি করল আর স্বনামধন্য একটি দেশ তাকে পুরস্কার দিয়ে দিল। ফাইল চুরি করে সে এখন হিরোইন হয়ে গেলো। আমরা এ ধরনের অপরাধীদের ধরি আর তারা হিরো হয়ে যায়। আর আমরা তো জিরো আছিই।

  • দাবি বাস্তবায়ন হয়নি, শিক্ষকদের আন্দোলন চলবে

    দাবি বাস্তবায়ন হয়নি, শিক্ষকদের আন্দোলন চলবে

    ঘোষিত তিন দফা দাবি পূরণ না হওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। অর্থাৎ, দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি অব্যাহত থাকছে।
    সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিম বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে চলমান কর্মবিরতির ১৩ দিনের মাথায় গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক হয় শিক্ষক নেতাদের। সে আলোচনা ‘ফলপ্রসূ’ হয়েছে বলে উল্লেখ করেছিলেন শিক্ষক নেতারা।
    এ বিষয়ে রবিবার অনলাইনে (জুমে) ফেডারেশনের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, গতকাল সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে শিক্ষক প্রতিনিধিদের একটি বৈঠক হয়েছে আপনারা জানেন। আলোচনা শুরু হওয়ায় আমরা খুশি হয়েছি। তবে আমাদের দাবিগুলো এখনও মানা হয়নি। আমরা আজ শিক্ষকদের সঙ্গে গতকালের বৈঠকের আলোচ্য বিষয়গুলো তুলে ধরেছি। এরপর সবার সঙ্গে আলোচনা করেই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
    তবে সরকার দ্রুত শিক্ষকদের দাবি মেনে নিবেন বলেও তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। অন্যান্য দিনের মতো আজও বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের মূল ফটকে অবস্থান নিয়েছিলেন শিক্ষকেরা।
    গতকাল শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি ছিল জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির আওতায় সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সবাই যুক্ত হবেন ২০২৫ সালের ১ জুলাই। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে পেনশনে যোগদানের বিষয়ে তথ্য ছিল, সেটা সঠিক নয়।
    তাঁদের তিনটা দাবির মধ্যে এটাও একটা দাবি। সবার মতো তাঁরাও ২০২৫ সালের ১ জুলাইয়ে যোগ দেবেন, এটা নিশ্চিত করা হয়েছে।

  • কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর হামলা

    কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর হামলা

    ইবি প্রতিনিধি————–

    কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর হামলা

    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ক্যাম্পাসের বটতলা চত্বর থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।

    বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা বুকে কালো ব্যাচ ধারণ করেন।

    শুক্রবার (১১জুলাই) বিকেল সাড়ে চারটায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ক্যাম্পাসের বটতলা চত্বর থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় বিভিন্ন ক্যাম্পাসের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পুলিশি বাঁধা ও হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।।

    এ সময় ‘ভাইয়ের বুকে বুলেট কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘হামলা দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘ভুয়া প্রশাসন, ভুয়া ভুয়া’, ‘এক দফা, এক দাবি’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

    শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষার্থীদের হামলা-মামলা দিয়ে আটকে রাখা যায় না। শিক্ষার্থীরা একবার ক্ষিপ্ত হলে কী হতে পারে তা সবাই জানে। আমরা খিচুরির প্যাকেট, সিঙ্গারা ও সেভেন-আপ দিয়ে সংগ্রামে আনিনি। সবাই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই সাড়া দিয়েছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ভাইদের রক্ত ঝড়িয়েছে। পুলিশ দিয়ে আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। হামলার পরে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আরো বেড়েছে। আমরা সাহায্য চাইতে আসিনি। অধিকার আদায় করতে এসেছি।

    তারা আরও বলেন, আমাদের মাথায় জাতীয় পতাকা, বুকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। আমাদের দাবি একটাই, আমরা যুক্তিসঙ্গত কোটা সংস্কার চাই। আমাদের দাবি সরকারের কাছে, নির্বাহী বিভাগের কাছে। যতদিন দাবি মানা হবে না ততদিন রাজপথ ছাড়বো না। আপনারা যারা জনদুর্ভোগের কথা বলছেন, বিভিন্ন ট্যাগ দিচ্ছেন। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, এই জনদুর্ভোগের দায় সরকারের।

    তারা বলেন, কোটা বৈষম্যের কারণে কারণে অনেকেই দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। দেশ একে একে মেধাশূন্য হচ্ছে। মেধাশূন্য রাষ্ট কখনো শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে না।

  • মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিল ১৫০ বিজিপির সদস্য

    মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিল ১৫০ বিজিপির সদস্য

    মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘাত তীব্র হয়ে ওঠায় নতুন করে সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) প্রায় দেড় শতাধিক সদস্য টেকনাফে আশ্রয় নিয়েছেন। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদী ও সীমান্তে কঠোর অবস্থানে আছে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি। তারপরও সীমান্তের বিভিন্ন দুর্গম পয়েন্ট দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিজিপির সদস্যরা সীমান্ত অতিক্রম করে এই দেশে এসেছেন বলে জানা গেছে।

    বুধবার ও বৃহস্পতিবার টেকনাফের সাবরাং, নাজিরপাড়া, শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত দিয়ে বিজিপির সদস্যরা পালিয়ে আসেন। সীমান্ত অতিক্রমের পর অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে তাঁরা বিজিবি ও কোস্টগার্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এই দুটি বাহিনীর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বিজিপির সদস্যদের পালিয়ে আশ্রয় নেওয়ার বিষয়ে কোনো ধরনের কথা বলতে রাজি হননি। তবে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যদের টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কের দমদমিয়া এলাকার একটি বহুতল ভবনে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

    এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে কয়েক দফায় নাফ নদী অতিক্রম করে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর (বিজিপি) দেড় শতাধিক সদস্য বাংলাদেশে (টেকনাফে) আশ্রয় নিয়েছেন বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন তিনি। এ নিয়ে বিজিবি ও কোস্টগার্ড বাহিনীর পক্ষ থেকে তাঁকে বিস্তারিত জানানো হয়নি।

    সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, টানা চার মাসের বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সংঘাত চলছে। ইতিমধ্যে রাখাইন রাজ্যে বুচিডং-রাচিডং টাউনশিপসহ বিজিপি ও সেনাবাহিনীর ২০টির বেশি সীমান্ত চৌকি ও ব্যারাক দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। গত কয়েক দিন ধরে রাজ্যের প্রধান শহর মংডু টাউনশিপ দখলে মরিয়া হয়ে ওঠে আরাকান আর্মি।

    এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই তীব্রতর হয়েছে। মংডু টাউনশিপের আশপাশের কয়েকটি গ্রাম থেকে ৫০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিপি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন। টেকনাফ, উখিয়া ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

    বিজিবি ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মে পর্যন্ত কয়েক দফায় টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেন বিজিপি ও সেনাবাহিনীর ৭৫২ সদস্য। এর মধ্যে প্রথম দফায় ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩৩০ বিজিপি ও সেনাসদস্য, দ্বিতীয় দফায় গত ২৫ এপ্রিল ২৮৮ বিজিপি ও সেনাসদস্য এবং তৃতীয় দফায় গত ৯ জুন ১৩৪ বিজিপি ও সেনাসদস্যকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।

    সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, আজ দিবাগত রাত তিনটা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপে থেমে থেমে গোলাগুলি ও বিকট শব্দের বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান টেকনাফ সীমান্তের মানুষ।
    পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, বিস্ফোরণের শব্দে টেকনাফ পৌরসভা, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ ও হ্নীলা এলাকার ঘরবাড়ি কেঁপে উঠছে। আতঙ্কে সময় পার করছেন সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ।

    সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, নাফ নদীর একপাশে টেকনাফ, বিপরীত দিকে মংডু টাউনশিপ। মাঝখানে চার কিলোমিটার প্রস্থের নাফ নদী দুই দেশকে বিভক্ত করে রেখেছে। ওপারে মংডু টাউনশিপের আশপাশের গ্রাম পেরাংপুরু, কাদিরবিল, হারিপাড়া, মংনিপাড়া, নলবইন্ন্যা, সুদাপাড়া, সিকদারপাড়া, নুরুল্লাপাড়া, হাস্যুরাতা ও ফাতংছা এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা বেশি ঘটছে। গ্রামগুলোয় কী ঘটছে, তা এপার থেকে প্রত্যক্ষ করা যায়।

    সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, যেসব গ্রামে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে, সেসব রোহিঙ্গা–অধ্যুষিত এলাকা। মর্টার শেল ও গ্রেনেড বোমার বিস্ফোরণে রোহিঙ্গা বসতি পুড়ে যাচ্ছে। এসব গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা খোলা জায়গায় আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। অনেকে নাফ নদী অতিক্রম করে টেকনাফ পালিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিজিবি ও কোস্টগার্ড বাহিনী টহল জোরদার করেছে।

  • আগস্টের প্রথম সপ্তাহে নিষ্পত্তি হবে কোটা সংস্কার মামলা: ওবায়দুল কাদের

    আগস্টের প্রথম সপ্তাহে নিষ্পত্তি হবে কোটা সংস্কার মামলা: ওবায়দুল কাদের

    আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে সর্বোচ্চ আদালতে চূড়ান্ত শুনানির মাধ্যমে নিষ্পত্তি হবে কোটা সংস্কার মামলা। এ পর্যন্ত মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে এমন কর্মসূচি বন্ধ করে আদালতের নির্দেশ মেনে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

    বুধবার দুপুরে রাজধানী ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আদালত (আপিল বিভাগ) কোটা সংস্কার নিয়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন। শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ ক্লাসে ফিরে যাওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের নির্দেশনা দিয়েছেন। সেতুমন্ত্রী বলেন, আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আদালত বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নেবেন এমন আশা প্রকাশ করেন তিনি।

    বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের পেনশন নিয়ে আন্দোলনের প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শিক্ষকদের ব্যাপারটাতেও যোগাযোগ আছে। অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হবে।’

    এ সময় প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলে জানান সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ঢাকায়, তিনি কিছুটা অসুস্থ। এছাড়া চীনে প্রধানমন্ত্রীর সকল প্রোগ্রাম শেষ হওয়ায় তিনি বেইজিংয়ে রাত্রীযাপন না করে ঢাকার পথে রওনা দেবেন।

    সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।

  • রিজার্ভ আবার কমে ২০.৪৭ বিলিয়ন ডলার

    রিজার্ভ আবার কমে ২০.৪৭ বিলিয়ন ডলার

    বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার কমে ২০ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আইএমএফসহ বিভিন্ন উৎস থেকে বড় অঙ্কের ঋণ পাওয়ার পর গত সপ্তাহে যা ছিল ২১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। একই সঙ্গে নিট রিজার্ভ ১৬ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন থেকে নেমেছে ১৫ দশমিক ৪৫ বিলিয়নে।

    বুধবার এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) ১ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ এ পর্যায়ে নামলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র সাইফুল ইসলাম সমকালকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

    আকু হলো- আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিস্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে প্রতি দু্ই মাস পর বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানের মধ্যে দায় পরিশোধ হয়। একটি সময় শ্রীলঙ্কা আকুতে থাকলেও অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে নিজ থেকেই তারা বেরিয়ে গেছে। এর আগে গত মে মাসে আকুতে ১ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নেমেছিল ১৮ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। আর গত জানুয়ারিতে আকুর দায় বাবদ ১২৭ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নামে ২০ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার।

    দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্টে। তবে করোনা পরবর্তী অর্থনীতিতে বাড়তি চাহিদা এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি, বিদেশি ঋণ ও বিনিয়োগ কমে যাওয়া এবং আগের দায় পরিশোধ বেড়েছে। গত ৩ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৩৩ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। সব মিলিয়ে ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ কমছে।

    গত ২৭ জুন আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। আইডিবি, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে পাওয়া গেছে আরও ৯০ কোটি ডলার। আবার জুনে ব্যাংকিং চ্যানেলে মোট ২৫৪ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। সব মিলিয়ে রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছিল।

  • বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘বাংলা ব্লকেড’

    বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘বাংলা ব্লকেড’

    বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘বাংলা ব্লকেড’

    সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

    বুধবার সন্ধ্যায় শাহবাগে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ঢাবি শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ।

    তিনি বলেন, ‘বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে দেশের আনাচে-কানাচে বাংলা ব্লকেড অব্যাহত রাখবে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ব্লকেড পালিত হবে।’

    গত ৭ জুলাই থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে এই অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। প্রথম দুদিন অর্ধদিবস অবরোধ চলার পর মঙ্গলবার বিরতি দেওয়া হয়।

    কোটা সংস্কার দাবিতে চলমান কর্মসূচির আওতায় আজ তৃতীয় দিনের মতো পালিত হয় বাংলা ব্লকেড। আজ সকাল ১০টা থেকে ব্লকেড পালন করেন আন্দোলনকারীরা। এর আগে গত রোববার বিকেলে ৩টা এবং সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে ৫-৬ ঘণ্টা করে বাংলা ব্লকেড পালন করা হয়।

    আসিফ মাহমুদ বলেন, ২০১৮ সালে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা কোটাহীন মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র অর্জন করেছি। কিন্তু গত ৫ জুন আমাদের সেই পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। তারপর থেকে আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পেতে আমরা আন্দোলন করছি। আমাদের কর্মসূচিকে অনেকে জনদুর্ভোগের কারণ বলে উল্লেখ করেছে। কিন্তু আমাদের এই আন্দোলন সবার অধিকার আদায়ের আন্দোলন।

    কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে আসিফ বলেন, আগামীকাল বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালিত হবে। সারা দেশে সড়ক ও রেলপথে আমাদের শিক্ষার্থীরা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হবেন এবং সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এসে শাহবাগ ব্লক করবেন।

    প্রসঙ্গত, আজ আপিল বিভাগ সরকারি চাকরিতে কোটা বহালে হাইকোর্টের রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন।

  • শিক্ষক সমিতির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ওবায়দুল কাদের

    শিক্ষক সমিতির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ওবায়দুল কাদের

    সার্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।আজ বুধবার বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ওবায়দুল কাদের আমাদের সঙ্গে বৈঠকের কথা বলেছেন। আগামীকাল সকালে বৈঠক হবে। তবে এখনও সময় জানানো হয়নি। আন্দোলন চলমান থাকবে কিনা জানতে চাইলে এ শিক্ষক নেতা বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। এদিকে আজ তৃতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৩৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে মূল ফটকে শিক্ষক সমিতির নেতারা দুপুর ১২টা থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন।

  • সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই

    সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই

    সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই উল্লেখ করে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হেসেন বলেছেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হলে বিভিন্ন পদে বিপরীতে চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। ফলে নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে ৩০ বছরের কম বয়সী প্রার্থীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হতে পারে।

    বুধবার সংসদের বৈঠকে প্রশ্নোত্তরে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পিরোজপুর-৩ আসনের শামীম শাহনেওয়াজের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হলে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

    একই প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশনজট নেই। আগে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের সেশনজট থাকলেও বর্তমানে উল্লেখযোগ্য কোনো সেশনজট নেই বললেই চলে। শিক্ষার্থীরা ১৬ বছরে এসএসসিসহ ২৩/২৪ বছরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে থাকে। চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর হওয়ার ফলে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পরও তারা চাকরিতে আবেদনের জন্য কমপক্ষে ৬ থেকে ৭ বছর সময় পেয়ে থাকে। এছাড়া ৩০ বছর বয়সমীমার মধ্যে একজন প্রার্থী আবেদন করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ২/১ বছর লেগে যায়। ফলে চাকরিতে যোগদানের জন্য ন্যূনতম বয়স ৩০ বছর থেকে ৩৫ বছর করার যে দাবি করা হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে তার কাছাকাছি পর্যায়ে উপনীত হয়।

    পাবলিক সার্ভিস কমিশনের রিপোর্টের প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় বিভিন্ন স্তরে উত্তীর্ণ প্রার্থীগণের বয়স ও জেন্ডারভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী কম বয়সী (২৩-২৫) সুপারিশকৃত প্রার্থীর সংখ্যা সব থেকে বেশি (৩৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ) এবং বেশি বয়সী (২৯ এর ঊর্ধ্বে) সুপারিশকৃত প্রার্থীর সংখ্যা সব থেকে কম ১ দশমিক ৭১ শতাংশ)।

    তিনি জানান, চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ বছর থেকে ৫৯ বছরে উন্নীত হওয়ায় বর্তমানে শূণ্যপদের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই কমে গেছে। এ প্রেক্ষাপটে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হলে বিভিন্ন পদে বিপরীতে চাকরি প্রার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। এসব শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।

    স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক জানান, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার ১১৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৭৮টি নদী তীর প্রতিরক্ষা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১৫টি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ৬৩টি প্রকল্প চলমান রয়েছে।

  • দেশে জ্বালানি সুবিচারের দাবিতে ক্যাবের নাগরিক সংলাপ প্রতিকারের আহবান বিশিষ্টজনের

    দেশে জ্বালানি সুবিচারের দাবিতে ক্যাবের নাগরিক সংলাপ প্রতিকারের আহবান বিশিষ্টজনের

    ন্যাশনাল ডেস্ক : বাংদেশের বর্তমান জ্বালানি কাঠামোর দুর্বলতা তুলে ধরে তা সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

    রোববার (৩০ জুন) রাজধানীর সিরডাপ’র এ টি এম শামসুল হক অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক নাগরিক সংলাপে এ আহবান জানান  তারা।

    ‘ক্যাব প্রস্তাবিত বাংলাদেশ জ্বালানি রুপান্তর নীতি ও কর্মপরিকল্পনা’ শীর্ষক এ সংলাপের আয়োজন করে ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা জাতীয় সংগঠন কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

    লিখিত বক্তব্যে ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ আইন ২০১০ দ্বারা জ্বালানি খাত উন্নয়নে প্রতিযোগিতাবিহীন বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করা এবং বিইআরসি আইন ২০০৩ এর ৩৪ ধারা পরিবর্তন দ্বারা গণশুনানি রোধ করে মূল্যহার নির্ধারণের ক্ষমতা সরকার নিজের হাতে নেওয়ায় সরবরাহ ব্যয় ও মূল্যহার উভয়ই অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ন্যূনতম ব্যয়ে জ্বালানি সরবরাহ ও ন্যায্য মূল্যহারে ভোক্তার জ্বালানি প্রাপ্যতা বিপন্ন এবং ভোক্তা জ্বালানি অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।  এই পরিস্থিতি জনগণকে চরম জ্বালানি দারিদ্র্যের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে

    তিনি আরও বলেন, সরকারের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণের কারণে জ্বালানি খাতে দুর্নীতির সবচেয়ে বড় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। জ্বালানি সরবরাহ চেইনের পুরোটাই এককভাবে নিজের হাতে থাকায় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি হয়ে উঠেছে অপ্রতিরোধ্য দুর্নীতির পরিচালক। আবার সরকারের দুর্নীতির অংশীদার হিসেবে যখন ব্যক্তি মালিকানাখাত এগিয়ে আসে সেখানেও কার্যত কোন প্রতিযোগীতার মাধ্যমে তার অংশগ্রহণ হয় না, হয় লেনদেন ও আতাতের মাধ্যমে। ফলে একচেটিয়াবাদের কোনো পরিবর্তন ঘটে না। বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রাইভেট সেক্টর ইনফ্রাস্ট্রাকচার নেটওয়ার্কের একাধিক গবেষণা ও সমীক্ষায় এই সত্যিটি উঠে এসেছে।

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, একসময় বলতাম (বিএনপি আমলে) – খাম্বা তৈরি হয়েছে কিন্তু বিদ্যুৎ নাই। আর এখন বলি, (আওয়ামী লীগ সরকার আমলে) বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র আছে, কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি নেই। অর্থাৎ বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্যের নামে বিল দিতে হয়।  যেমন বাংলাদেশের সামিটসহ অনেক প্রতিষ্ঠানই এ সুবিধা নিচ্ছে। যদিও এইভাবে সামিট এখন সিঙ্গাপুরের (আন্তর্জাতিক) প্রতিষ্ঠান হয়ে গেছে।

    তিনি আরও বলেন, সমস্ত কিছু প্রতিযোগীতামূলক হওয়া দরকার। কিন্তু বিদ্যুৎ খাতে এই জবাবদিহিতা নিশ্চিত হচ্ছে না। ফলে, জ্বালানি খাতে বড় অনিয়ম চলছে। এবিষয়ে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্তা নেয়া দরকার।

    এসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট- এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন,  পরিবেশ রক্ষা তথা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের জ্বালানি রুপান্তর করা অতি প্রয়োজনীয়। আর এ ক্ষেত্রে কয়লার ব্যবহার থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। কয়লাসহ জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বেড়িয়ে এসে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নের দিকে ঝুকিতে হবে।  এ ক্ষেত্রে সোলার সিস্টেম প্লানিং কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা বাড়াতে হবে। কিন্তু সেইভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গবেষণা বাড়ানো হচ্ছে না।

    তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তির জন্যে আমাদের পশ্চিমা বিশ্বের দিকে তাকিয়ে থাকা যাবে না। আমাদের দেশে প্রচুর মেধাবী শিক্ষার্থী রয়েছে, তাদেরকে জ্বালানি রুপান্তরে ব্যবহার করতে হবে। আমাদের অবশ্যই ডার্টি এনার্জি (জীবাশ্ম জ্বালানি) থেকে বেড়িয়ে ক্লিন এনার্জির (নবায়নযোগ্য জ্বালানি) দিকে যেতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।  এই নাগরিক আন্দোলনকে প্রতিটি অঞ্চলে ছড়িয়ে দিতে হবে। তবেই, বাংলাদেশে জ্বালানি সুবিচার হবে।

    বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা’র সহসভাপতি  স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, আমরা অপরিকল্পিত ভাবে ভবন নির্মান করছি। ফলে, পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে…..। আমাদের কতোটুকু দরকার, আর কতোটুকু তৈরি করবো, সেই বিষয়ে পরিকল্পনা থাকা দরকার। কিন্তু সেই বিষয়ে অসামঞ্জস্যতা থাকার কারণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে।

    তিনি আরও বলেন, একজন বাংলাদেশ থেকে (সামিট গ্রুপ) অর্থ নিয়ে সিঙ্গাপুরের অর্থের পাহার গড়ছে। আর আমরা জ্বালানির অবিচারে ভূগছি। (বিইআরসি) কমিশনকে অবজ্ঞা করে, ইচ্ছে মতো জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

    এসময় তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আপনি ইলেক্ট্রনিক কাজের জন্যে তাঁর কিনতে যাবেন, দোকানদারকে বলবেন বিআরবির তার দেন। সে বলবে, ১১শ টাকা দামের, ২৪শ টাকা দামের তাঁর চান, নাকি ৩৬শ টাকারটা চান। অর্থাৎ একই কাজের জন্যে কতো ধরনে তার রয়েছে। কিন্তু যখন এটা থেকে আগুনের সূত্রপত হবে বা বড় দুর্ঘটনা ঘটবে, তখন টনক নড়বে কতৃপক্ষের, আর চলবে নানান তালবাহানা। কিন্তু এতো জনগুরুত্বপূর্ণ কাজে কেন অবহেলা থাকবে? আপনার সন্তানের কথা ভেবে, ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা ভেবে এ বিষয়গুলোতে প্রদক্ষেপ নিতে হবে।

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দীন খান ক্যাবের উদ্ধৃতি তুলে ধরে বলেন, স্রেডার ( সরকারের নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কতৃপক্ষ) আস্থাভাজনদেরর তারা নিয়োগ দেয়। যার কারণে স্রেডার কার্যক্রম নিয়ে কেও অভিযোগ করছে না।  কিন্তু স্রেডার রিনেইবল এনার্জি (নবায়নযোগ্য জ্বালানি) উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা দেখা যাচ্ছে  না। কারণ স্রেডার মতো এতো ছোট্ট পরিসরে এতো বড় একটা ক্ষেত্রে কাজ করা সম্ভব নয়। তাই, এক্ষেত্রে তাদের জেলা পর্যায়েও শাখা দরকার। অর্থাৎ তাদের কার্যক্রম আরও বড় পরিসরে গড়ে তোলা দরকার।

    ক্যাবের আইন উপদেষ্টা ব্যরিস্টার জোতির্ময় বরুয়া বলেন,  শুধু ক্যাবের এই সংলাপের মাধ্যমে যে এই জ্বালানি রুপান্তর নীতি কার্যকর হয়ে যাবে, তা কিন্তু নয়। এক্ষেত্র আমাদের অনেক আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেতে হবে। তবে, আমাদের একটা আশার কথা হলো- বিগত দিনে ক্যাবের পক্ষ থেকে যে মামলা করেছি। তাতে সফলতা পেয়েছি। অর্থাৎ আদালতকে আমরা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি যে- আমরা জনগণের স্বার্থে কাজ করছি। তাই, আমরা এই আন্দোলনেরও সফলতা পাবো। এক্ষেত্রে সকলের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

    তিনি আরও বলেন, পেট্রোলিয়ামের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুললাম যে,  সরকার যে জ্বালানির মূল্য নির্ধারন করছে সেটা অন্যায়। এটার ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র বিইআরসির হাতে। তাই, সরকার আইন অমান্য করছে।  তাই, সরকার নির্বাহী আদেশে বিইআরসির শক্তিকে খর্ব করে, জ্বালানির  মূল্য নির্ধারনের ক্ষমতা নিলো নিজদের হাতে (মন্ত্রণালয়ের হাতে)। যার ফলে, ভোক্তা তথা নাগরিক তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হলো। কারণ আমাদের অধিকারের কথা বিইআরসির গণশুনানির মাধ্যমে তুলে ধরতে  পারতাম। অথচ, সারাবিশ্বেই ভোক্তার জ্বালানি অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলছে।

    এসময় তিনি বলেন, দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ আইন কিভাবে জ্বালানি খাতকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, কিভাবে জ্বালানি অধিকারকে পঙ্গু করে দিচ্ছে, তা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এই আইন বাতিল করার বিষয়ে সরকারের কোন প্রদক্ষেপ দেখছি না। আমার জ্বালানি অধিকার মানে হচ্ছে- প্রাপ্যমূল্যে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি পাওয়ার অধিকার। এর মানে এই নয়- আমাকে একটা দাম ধরিয়ে দিয়েই, বিদ্যুৎ-জ্বালানি দেয়া। তাই, আমরা (ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণে) এই বিষয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাবো। তবে, সরকারের সদিচ্ছা না থাকলে ক্যাবের একার  চেষ্টায় সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সরকারের আইনি পরিবর্তন আনতে হবে। আর এক্ষেত্রে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

    বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. এজাজ আহম্মেদ বলেন, ক্যাবের এই জ্বালানি রুপান্তর নীতি বই থেকে যা বুঝলাম বাংলাদেশের জ্বালানি খাত  কাঁদায় পড়ে গেছে। কিন্তু এই কাঁদা থেকে জ্বালানি খাত তুলে ধরতে হলে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কিন্তু সেই ক্ষেত্রেতো অর্থের যোগান দিতে পারছে না সরকার। কারণ সরকারের অর্থ নেই। তাহলে তুলে আনবে কেমনে?

    তিনি আরও বলেন, আমাদের গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পড়ে আছে। কিন্তু গ্যাস না থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না।  যার কারণে তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন করছে। কিন্তু আমি গ্যাস ভিত্তিক বন্ধ রেখে তেল চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদনের পক্ষে না। কারণ এতে, (পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি) উৎপাদন খরচ বেশি।

    সময়ে তিনি বলেন, বিশ্বের কোন দেশে ৫ শতাংশের বেশি তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নেই। অথচ বাংলাদেশে ৩৬ শতাংশ (৪০ শতাশ) তেল চালিত। যার কারণে বিদ্যুত উৎপাদন খরচ বাড়ছে। কারণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি তেলের দাম। আমরা বারবার বলছি- তেলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বেড়িয়ে আসুন। কিন্তু সরকার কোন প্রদক্ষেপ নিচ্ছে না। এখানে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সদিচ্ছা নেই।

    এসময় ক্যাব প্রস্তাবিত জ্বালানি রুপান্তর নীতির প্রস্তাবনায় কিছু সংস্কার এনে সরকারের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে উপস্থাপনের আহবান জানান তিনি। এবং এবিষয়েও ব্যাখা দেন ক্যাব কতৃপক্ষ।

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অনারারি অধ্যাপক ড. বদরূল ইমাম বলেন, বাংলাদেশের মতো দেশে গ্যাসের আধিক্য আছে। কিন্তু সরকার বিজ্ঞজনদের পরামর্শ নিচ্ছে না। আমরা দেশীয় উৎপাদন না বাড়িয়ে, সরকার খনন পরিক্ষায় না গিয়ে সহজ পন্থা অবলম্বন করে আমদানির দিকে ঝুঁকলো। ফলে, আমদানি নির্ভর এই নির্ভরশীলতার কারণে দেশের জ্বালানি সংকট তৈরি হয়েছে। তাই, আমার মতে, সরকার এবিষয়ে এখনো বিবেচনায় নিলে, জ্বালানি সংকট সমাধান করা সম্ভব।

    তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী যারা গ্যাস ফিল্ড নিয়ে কাজ করছে তারা এখানো বাংলাদেশকে একটি প্রাইম এড়িয়া হিসেবে বিবেচনা করছে। কিন্তু আমরা সেই বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি না……।  এই যে একটি ভূল নীতি, এই নীতি সম্পর্কে বোঝার মতো কোন কর্মকর্তা হয়তো নেই, অথবা আমরা বোঝাতে সক্ষম হচ্ছি না।

    এসময় তিনি বলেন,  বাংলাদেশের গ্যাস সেক্টরে বড় একটি অবমূল্যায়ন হয়েছে। এ ক্ষেতে সরকার এখনো আমদানি নির্ভর এলএনজির দিকে না এগিয়ে দেশীয় উৎপাদন বাড়ালে, দেশের জ্বালানি সংকট সমাধান করা সম্ভব হবে।

    এরপর মুক্ত আলোচনায় অতিথি ও গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম।

    সভাপতির বক্তব্যে ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, জ্বালানির সুবিচার না হলে জনগণের অধিকার সংরক্ষিত হবে না। তাই, জ্বালানি নিরাপত্তার জন্যে সহজে ও ন্যায্যমূল্যে ভোক্তা যাতে বিদ্যুত-জ্বালানি পায়, সেটাই আমাদের দাবি।

    তিনি আরও বলেন, জনগণ সরকারের জন্য কাজ করে। আমরাও জনগণের কথা বলি। তাই, আমাদের উদ্দেশ্য এক। আমরা একের অন্যের প্রতিদ্বন্দি নই। তবে, সরকারের কিছু কাজকে আমরা অন্যায্য মনে করি। তাই আমাদের এই প্রতিবাদ।  যেমন, সরকার কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের মেয়াদ আবার ৫ বছর বাড়িয়েছে। কিন্তু এটা কোন ভাবেই কাম্য নয়। সরকার নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। কিন্তু আমরা চাই বিইআরসির মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করা হোক। তাই, আমাদের দাবিকে যাতে সরকার বিবেচনায় নেন, সেটাই আমাদের আহবান।

  • বিশ্বে বাসযোগ্য শহরের তালিকায় নিচের দিক থেকে ষষ্ঠ ঢাকা

    বিশ্বে বাসযোগ্য শহরের তালিকায় নিচের দিক থেকে ষষ্ঠ ঢাকা

    ছবি- সংগৃহীত

    বিশ্বে বাসযোগ্য ১৭৩টি শহরের মধ্যে ঢাকা ১৬৮তম, যা তালিকায় নিচের দিক থেকে ষষ্ঠ স্থানে। গত বছর ঢাকার অবস্থান ছিল ১৬৬তম। এ বছর দুই ধাপ পিছিয়েছে ঢাকা। তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা। আর সবার শেষে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক।

    আজ বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের ইকোনমিস্ট গ্রুপের গ্লোবাল লিভেবিলিটি ইনডেক্স ২০২৪ বাসযোগ্যতার দিক থেকে শহরগুলোর এই র‍্যংকিং প্রকাশ করেছে।

    তালিকায় সবচেয়ে বাসযোগ্য শীর্ষ পাঁচ শহর যথাক্রমে ভিয়েনা, কোপেনহেগেন, জুরিখ, মেলবোর্ন ও ক্যালগেরি।

    তালিকায় নিচ থেকে শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো ত্রিপলি, আলজিয়ার্স, লাগোস ও করাচী।

    বাসযোগ্যতার তালিকা তৈরির সময় পাঁচটি মাপকাঠিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আছে স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি, পরিবেশ শিক্ষা ও অবকাঠামো।
    ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৭৩টি শহরের গড় স্কোর ছিল ১০০ এর মধ্যে ৭৬ দশমিক ১, যা গতবছরের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। তবে, ভূরাজনৈতিক সংঘাত, গণঅসন্তোষ ও আবাসন সংকট অনেক শহরেই প্রকট ছিল বলে প্রতিবেদনে উঠে আসে।

  • ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু : কাদের

    ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু : কাদের

    আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিদেশে আমাদের প্রভু নেই, আপনাদের প্রভু আছে। বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে। ভারত আমাদের ৭১-এর পরীক্ষিত বন্ধু।

    শুক্রবার (২৮ জুন) সকালে সংসদ ভবনের সামনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আয়োজিত সাইকেল র‍্যালি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

    কাদের বলেন, ভারত বিরোধিতার নামে আজকে যারা আন্দোলনের ইস্যু খোঁজার চেষ্টা করছে তারা আবারও ভুল পথে যাচ্ছে।

    বায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিচ্ছে না। আওয়ামী লীগের বছরব্যাপী কর্মসূচি আগেই ঘোষিত হয়েছে। কেন্দ্রের পর মহানগর এবং আওয়ামী লীগের সব সহযোগী সংগঠন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠানমালা আয়োজন করবে।

    ওবায়দুল কাদের বলেন, পিতার হাতে স্বাধীনতা, কন্যার হাতে মুক্তি। বিদেশে আমাদের প্রভু নেই, আপনাদের প্রভু আছে। বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে। ভারত আমাদের ৭১-এর পরীক্ষিত বন্ধু। বঙ্গবন্ধু কন্যা যা করে বাংলাদেশের স্বার্থে করে। স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে তিনি কোনো বন্ধুত্বে আবদ্ধ হন না।

    র‍্যালিতে মেয়র আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।