Category: ছাত্র রাজনীতি

  • ছাত্ররাজনীতিকে ‘না’ বললো খু‌বির সহস্রাধিক নবীন শিক্ষার্থী

    ছাত্ররাজনীতিকে ‘না’ বললো খু‌বির সহস্রাধিক নবীন শিক্ষার্থী

    সন্ত্রাস ও ছাত্ররাজনীতিকে না বলে শপথ নিলো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তিকৃত সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। সোমবার (১৪ জুলাই) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে ৫ দিনব্যাপী ওরিয়েন্টেশনের শেষ দিনে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে শপথ বাক্য পাঠ করান উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান।

    শপথে বিশ্ববিদ্যালয়কে মাদক ও র‌্যাগিংমুক্ত রাখার বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর আগে চার দিনে আরও আট শতাধিক নবীন শিক্ষার্থীকে শপথ পড়ানো হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে নবাগত শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুনভাবে মুদ্রিত স্টুডেন্ট হ্যান্ডবুক বিতরণ করা হয়।

    নবীন শিক্ষার্থীদের ‘উইক অব ওয়েলকাম’ শীর্ষক ৫ দিনব্যাপী একাডেমিক ওরিয়েন্টেশনের শেষ দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান। তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ছাত্ররাজনীতিমুক্ত, সেশনজটবিহীন ও একাডেমিকভাবে শৃঙ্খলিত পরিবেশ। এখানকার একাডেমিক ক্যালেন্ডার নির্ধারিত সময়েই শিক্ষাক্রম শেষ করতে সহায়তা করে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ।

    তিনি আরও বলেন, শিক্ষা ও গবেষণার পাশাপাশি সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমেও আমরা সমান গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এর ফলে শিক্ষার্থীরা নিজেদের বহুমাত্রিকভাবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। তিনি শিক্ষাজীবনের অর্জনগুলোকে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজে লাগাতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।

    উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. নূরুন্নবী, ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. নূর আলম, বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. আশরাফুল আলম।

    আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. মো. সালাউদ্দীন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. এস এম তৌহিদুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপ-রেজিস্ট্রার মো. নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনসমূহের প্রধানবৃন্দ এবং নবাগত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

    উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর রিসোর্স পারসন হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ‘কপিং এন্ড থ্রাইভিং ইন হায়ার এডুকেশন এনভায়রনমেন্ট’ শীর্ষক একটি টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপন করেন। এ ছাড়াও আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. মো. ওয়াসিউল ইসলাম, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত, আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. শেখ আলমগীর হোসেন, সেন্টার ফর প্রিভেনশন অব সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট এর চেয়ারম্যান প্রফেসর মোছাঃ তাছলিমা খাতুন এবং খানজাহান আলী হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. খসরুল আলম রিসোর্স পারসন হিসেবে টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপন করেন।

    ওরিয়েন্টেশনের শেষ দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, পরিসংখ্যান, ব্যবসায় প্রশাসন এবং হিউম্যান রিসোর্স এন্ড ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিনের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

  • গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জুলাই জুড়ে অনুষ্ঠান

    গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জুলাই জুড়ে অনুষ্ঠান

    ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ৩৬ দিনব্যাপী ‘জুলাই স্মৃতি উদযাপন অনুষ্ঠানমালা’ আয়োজন করা হবে। মঙ্গলবার (২৪ জুন) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় তা জানানো হয়েছে।

    ৩৬ দিনব্যাপী জুলাই স্মৃতি উদযাপনে যেসব অনুষ্ঠানের আয়োজন হবে সেগুলো হলো—

    ১ জুলাই : মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা ও গির্জাসহ অন্যান্য উপসানালয়ে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও প্রার্থনা। জুলাই ক্যালেন্ডার প্রদান (অনলাইন-অফলাইন)। জুলাই হত্যাযজ্ঞের খুনিদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি সূচনা, চলবে ১ আগস্ট পর্যন্ত। জুলাই শহীদ স্মরণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবৃত্তি চালু।

    ৫ জুলাই : বিভিন্ন সময় অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম-নির্যাতন প্রচারে দেশব্যাপী পোস্টারিং কর্মসূচি চালু।

    ৭ জুলাই : julyforever.org নামে ওয়েবসাইট চালু।

    ১৫ জুলাই : ‘আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া’ শিরোনামে ১৫ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। জুলাই স্মৃতিচারণ। ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী এবং জুলাইয়ের গান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলইডি ওয়াল ইনস্টলেশন। প্রজেকশন ম্যাপিং। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী।

    ১৯ জুলাই : ‘কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙ্গা’ ১৯ জুলাইয়ের ভিডিও, নরসিংদী, সাভার, ঢাকাসহ সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে জুলাইয়ের তথ্যচিত্র প্রদর্শন। গণহত্যা ও ছাত্রজনতার প্রতিরোধ দিবস

    ২৪ জুলাই : শিশু শহীদদের স্মরণে ‘কী করেছে তোমার বাবা’ শিরোনামে ২৪ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। শিশু শহীদদের স্মরণে দেশব্যাপী কর্মসূচি। দেশব্যাপী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ‘২৪ এর রঙে গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্গন’ প্রতিযোগিতা। নারায়ণগঞ্জের শিশু শহীদ রিয়া গোপের স্মরণে অনুষ্ঠান। শিশু শহীদদের স্মরণে অনুষ্ঠান, জুলাইয়ের তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও গান। শিশু একাডেমিতে জুলাইয়ের শিশু শহীদদেরকে থিম করে একটি আইকনিক ভাস্কর্য স্থাপন। শিশুদের জন্য জুলাই আন্দোলনকে উপজীব্য করে গ্রাফিক নভেল প্রকাশ।

    ৩০ জুলাই : ‘চল চল চল’ ৩০ জুলাইয়ের ভিডিও শেয়ার। অনলাইনে জুলাই স্মরণ। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রাখা সাংবাদিকদের নিয়ে অনুষ্ঠান।

  • সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ছাত্রলীগের আলোচনা সভা

    সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ছাত্রলীগের আলোচনা সভা

    সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ৪৩ তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে বুধবার (১৭ মে) আলোচনা সভা করেছে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগ। 
    বুধবার বিকালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ও পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তৌহিদ হাসানের সঞ্চালনায়এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। 
    সভায় প্রধান অতিথি’র বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ নজরুল ইসলাম, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আব্দুর রশিদ, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কাজী হাসিম উদ্দিন হিমেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী শাহেদ পারভেজ ইমন। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রনেতা খায়রুল্লাহ আরাফাত, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখার সহ-সভাপতি অবিনাশ কুৃমার, সিটি কলেজ ছাত্রনেতা তৌকির আহমেদ, সরকারি কলেজ ছাত্রনেতা রিপন,আশিক,সাকিল,মির্জা ইব্রাহিম,অর্পি,পৌর ১নং ওয়ার্ডের সভাপতি কাজী মুনতাসীর আহমেদ সাধারণ সম্পাদক মিথুন ৩নং ওয়ার্ডের সভাপতি সামিউর রহমান সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল ইসলাম ৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি কামাল সাধারণ সম্পাদক শামিম ৭নং ওয়ার্ডের সভাপতি নাইচ সাধারণ সম্পাদক সুজন ৯নং ওয়ার্ডের আহবায়ক মেহেদি মু ক্তিযোদ্ধা হল ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হোসেন সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান টেকনিক্যাল কলেজের সভাপতি শাফিন সাধারণ সম্পাদক নুর সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
    সভায় বক্তারা বলেন, গত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। শুধু বাংলাদেশই নয়, বৈশ্বিক নানা সংকট নিয়ে কথা বলা এবং মতামত দেওয়ার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরেও শেখ হাসিনার পরিচিতি বাড়ছে।

  • সাতক্ষীরায় ছাত্রদলের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

    সাতক্ষীরায় ছাত্রদলের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

    প্রেসবিজ্ঞপ্তি : দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে কটুক্তি করায় এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ এর সংগ্রামী সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ’র উপর পুলিশ কতৃক হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
    সোমবার (২৩শে মে) বিকালে কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শেখ শরিফুজ্জামান সজীব ও মমতাজুল ইসলাম চন্দনের নেতৃত্বে শহরের আমতলা মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়ক প্রদক্ষিন করে তালতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে এসে মিলিত হয়।
    সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় এ সময় সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

  • সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও ইফতার মাহফিল

    সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও ইফতার মাহফিল


    সংবাদ বিজ্ঞপ্তি : সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সাতক্ষীরার ঝাউডাঙ্গা দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলের আয়োজনে শুক্রবার (২২এপ্রিল) এই দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় ।
    ইফতার মাহফিলে সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মনজুরুল আলম বাপ্পির সভাপতিত্বে ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ন সম্পাদক আফরহিম সিদ্দিক কমল এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিখি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শেখ শরিফুজ্জমান সজিব, সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল ইসলাম চন্দন, সদর থানা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক সাবেক ভিপি রফিকুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আবু রায়হান, যুগ্ন সম্পাদক খালিদ হাসান সুমন, কলারোয়া উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক শেখ শাহাজালাল আহম্মেদ সাজু , দপ্তর সম্পদক জাহাঙ্গীর আলম পলাশ, পৌর যুগ্ন আহবায়ক আবু রায়হান , ইউনিয়ন বিএনপি নেতা জামাল নাসের ডিউক, আলতাপ হোসেন , সরকারী কলেজের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক আসিফ মাহমুদ রিপন, পলিটেকনিকের আহবায়ক মিজান রহমান ,সেচ্ছা সেবক দল নেতা শিবলু ,কামরুল ইসলাম ,যুবদল নেতা শাহাজামাল বাবলু ,কামরুল ইসলাম , সদর উপজেলা ছাত্রদলের তরিকুল তালুকদার প্রমূখ। সুজন প্রমুখ অসুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন ।
    দোয়া অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন হাইস্কুল মসজিদের ইমাম হাফেজ আবু মুছা।

  • বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্র লীগের নানা কর্মসূচি 

    বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্র লীগের নানা কর্মসূচি 

    : ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্র লীগ নানা কর্মসূচি পালন করেছে। 
    এ উপলক্ষে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগ আজ বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) সকাল ৭ টায় সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে। পরে সকাল ১১ টায় সাতক্ষীরা শহরের খুলনারোড মোড়স্থ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ। বাদ যোহর শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক জামে মসজিদে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সকল সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল ও বিকাল ৪ টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ১ম থেকে ১০ম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের মাঝে “বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা” শীর্ষক চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা আয়োজন করে।
    কর্মসূচির শুরু থেকে উপস্থিত ছিলেন  উপস্থিত সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম আশিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সুমন হোসেন, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি হাসানুজ্জামান নিশান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ তৌহিদ হাসান, সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ তানভির হোসাইন জুয়েলসহ জেলা সদর পৌর এবং কলেজ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। 
    জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন হোসেন জানান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কর্মসূচির অংশ হিসেবে কর্মসূচি গুলো পালন করা হয়েছে। 

  • মোহাম্মদ নাসিম: রাজনীতিতে পাঁচ দশকের বেশি পথচলা

    মোহাম্মদ নাসিম: রাজনীতিতে পাঁচ দশকের বেশি পথচলা

    ন্যাশনাল ডেক্স : সিরাজগঞ্জ-১ আসন (কাজীপুর ও সদর উপজেলার একাংশ) থেকে তিনি পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের হুইপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময় স্বরাষ্ট্র, ডাক ও টেলিযোগাযোগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং সর্বশেষ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

    সর্বশেষ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম কমিটির সদস্য মোহাম্মদ নাসিম দলের মুখপাত্র হিসাবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন।

    রাজনীতির সঙ্গে মোহাম্মদ নাসিম সম্পৃক্ত হন ষাটের দশকে। শুরুর দিকে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হলেও পরবর্তীতে ছাত্রলীগ করতে শুরু করেন। পাবনার এডওয়ার্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাশের পর ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

    মোহাম্মদ নাসিমের জন্ম হয়েছিল ১৯৪৮ সালের দোসরা এপ্রিল, সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলায়। তার পিতা ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশে সরকারের মন্ত্রী, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী।Image caption জনসভায় ভাষণ দানরত মো. নাসিম।

    উনিশশো পঁচাত্তর সালে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারের হত্যাকাণ্ড ও জেলখানায় আরো তিন জাতীয় নেতার সঙ্গে তাঁর পিতা এম মনসুর আলী হত্যাকাণ্ডের পরে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পুরোপুরি সম্পৃক্ত হয়ে ওঠেন।

    পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের পর মোহাম্মদ নাসিমকেও গ্রেপ্তার করা হয়। সেইসময় দীর্ঘদিন তাকে কারাগারে থাকতে হয়েছে।

    ওই হত্যাকাণ্ডের শিকার আরেকজন নেতা এ এইচ এম কামরুজ্জামানের ছেলে, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘’১৯৭৫ সালের পর তাকে বেশ একটা দুঃসময় পার করতে হয়। আমাদের সবাইকেই সেটা করতে হয়েছে। ৭৮ সালের দিক থেকেই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পুরোপুরি জড়িয়ে পড়েন। নেত্রী আসার পর (আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ থেকে দেশে আসার পর) তিনি সবসময় নেত্রীর সঙ্গেই থেকেছেন।‘’

    ‘’একাত্তর সালে মুক্তিসংগ্রামের সময় কলকাতায় আমরা এক বাড়িতে থাকতাম। জাতীয় চার নেতার পরিবারের মধ্যে আমরা তাকে আমাদের বড় ভাইয়ের মতো মনে করতাম। তিনিও সেভাবেই আমাদের খোঁজখবর রাখতেন। তাকে দেখেছি, যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশেও শক্ত মন নিয়ে দাঁড়াতে পারতেন, কর্মীদের চাঙ্গা করে তুলতে পারবেন। পরবর্তীতে প্রশাসক হিসাবেও তাকে সফল দেখতে পেয়েছি।‘ছবির কপিরাইট Facebook Image caption প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে মো. নাসিম।

    ‘’তিনি অনেক সময় গর্ব করেই বলতেন,আমি কোন বেঈমানের সন্তান নই, আমি বঙ্গবন্ধুর পরীক্ষিত আদর্শের সৈনিক, তার সন্তান।‘’ বলছেন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

    উনিশশো একাশি সালে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে মোহাম্মদ নাসিম যুব সম্পাদক হন। তখন থেকেই কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে আসেন মোহাম্মদ নাসিম। পরবর্তীতে ১৯৮৭ তিনি আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হন।

    তার আগের বছর, ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সিরাজগঞ্জ থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মোহাম্মদ নাসিম।

    আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘’মোহাম্মদ নাসিম রাজনীতির ক্ষেত্রে সারাজীবন সংগ্রামী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ষাটের দশক থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি একটা রাজনীতিক পরিবারের বেড়ে উঠেছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাকে সাজা পর্যন্ত দিয়েছে। কিন্তু প্রতিটা আন্দোলন সংগ্রামে তিনি সম্মুখ সারিতে ছিলেন। বাংলাদেশের প্রতিটা সংগ্রামের সাথে তিনি সামনের কাতারে ছিলেন।‘’

    আওয়ামী লীগের ‘৯২ ও ‘৯৭ সালের জাতীয় সম্মেলনে তাকে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। ২০১২ সালে কাউন্সিলে তাকে প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত করা হয়।ছবির কপিরাইট Facebook

    উনিশশো ছিয়ানব্বই, ২০০১, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে তিনি সিরাজগঞ্জ থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একসময় তিনি জাতীয় সংসদের হুইপ হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

    রাজনীতিতে তাদের পরিবারের ভূমিকা নিয়ে ‘সংসদে তিন প্রজন্ম’ নামের একটি বইয়ের সম্পাদনাও করেছেন মোহাম্মদ নাসিম। সেখানে ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, তার সন্তান মোহাম্মদ নাসিম এবং তার ছেলে তানভীর শাকিল জয়ের ভূমিকা নিয়ে বইটি লেখা হয়েছে। তিনি তিন সন্তানের জনক।

    তাঁর নির্বাচনী এলাকা কাজীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘’তার পিতাকে যেমন এলাকার লোক দরকারের সময় পেতো, তেমনি তাকেও আমাদের যেকোনো দরকারে সবসময় কাছে পেয়েছি। প্রতিমাসে কয়েকবার তিনি এলাকায় আসতেন। তিনি বিদেশে থাকলেও আমাদের ফোন করে এলাকার খোঁজখবর নিতেন। দলমত নির্বিশেষে এখানকার সবাই জানে, তার মতো নেতা পাওয়া যায় না।‘’

    ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর স্বরাষ্ট্র, গৃহায়ন ও গণপূর্ত, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী করা হয়।

    রাজনীতির বিভিন্ন পর্যায়ে মোহাম্মদ নাসিমকে অনেকবার কারাবন্দী হতে হয়েছে। প্রথম তাকে কারাগারে যেতে হয় ১৯৬৬ সালে, যখন তিনি এইচএসসি পড়ছিলেন। সেই সময় পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে ভুট্টা খাওয়ানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে পিতা এম মনসুর আলীর সঙ্গে কারাগারে যেতে হয় মোহাম্মদ নাসিমকেও। একবছর পরে তিনি ছাড়া পান।

    ১৯৭৫ সালে সপরিবারে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ডের পরে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল মোহাম্মদ নাসিমকে। ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অভিযানে আরো অনেক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

    সেই সময় অবৈধভাবে এক কোটি ২৬ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন ও ২০ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় বিশেষ জজ আদালত ২০০৭ সালে মোহাম্মদ নাসিমকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়। তবে ২০১০ সালে উচ্চ আদালত ওই সাজা ও মামলা বাতিল করে দেন।

    কিন্তু মামলায় সাজা হওয়ার কারণে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি মোহাম্মদ নাসিম। সেই আসনে তার ছেলে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন। মামলা ও সাজা উচ্চ আদালতে বাতিল হয়ে যাওয়ার পরে ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মোহাম্মদ নাসিম। এরপর তাকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করা হয়, ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকেন।

    ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মন্ত্রী না হলেও তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দলের মুখপাত্র হিসাবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

  • বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৬৮ তম জন্মদিন আজ ২৬ এপ্রিল

    বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৬৮ তম জন্মদিন আজ ২৬ এপ্রিল

    ঢাকা : শুধু ভাষা আন্দোলনের অগ্নিগর্ভ থেকে নয়, অল-ইন্ডিয়া ছাত্র ফেডারেশন, পূর্ব পাকিস্তান যুব লীগ, খাপড়াওয়ার্ড ও ভাষাসংগ্রামের অগ্নিগর্ভ থেকেই পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের জন্ম। অর্থাৎ আজকের বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। আজ ছাত্র ইউনিয়নের ৬৮তম জন্মদিন।

    ‘বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন’ একটি স্বাধীন ছাত্র গণসংগঠনের নাম। ছাত্র ইউনিয়ন ছাত্রদের এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা ছাত্রস্বার্থ রক্ষা ও ছাত্রদের অধিকার আদায়কে অগ্রাধিকার দেয়। সকল শিক্ষার্থীর জন্য বৈষম্যহীন বিজ্ঞানভিত্তিক গণমুখী ও একই ধারার শিক্ষানীতি বাস-বায়নের জন্যে সে লড়ছে অবিরাম। ছাত্র ইউনিয়ন মনে করে যে শিক্ষা জীবনের সমস্যা সমাধান ও শিক্ষার্থীর স্বার্থ-অধিকার সুপ্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন সমাজ থেকে শোষণ-বৈষম্যের অবসান ঘটানো এবং তা নিশ্চিত করার জন্য সমাজতন্ত্রই সর্বোৎকৃষ্ট অর্থনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থা।

    ছাত্র ইউনিয়ন কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন বা সহযোগী সংগঠন নয়। ছাত্র ইউনিয়ন ব্যতীত অধিকাংশ ছাত্র সংগঠন কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন বা সহযোগী সংগঠন। সহযোগী সংগঠনের চরিত্রও এখন অঙ্গ সংগঠনের মতো। এরা সকলেই এদের নিজ নিজ রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ও নেতানেত্রীদের নির্দেশের গণ্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। এরা ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে ভাবনাকে কখনোই প্রাধান্য দেয় না। উল্টো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এরা সন্ত্রাস, লুটপাট, ভর্তি বাণিজ্য, টেণ্ডারবাজী, দখলদারিত্ব, খুন, ধর্ষণসহ নানাবিদ অপকর্ম করে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করে। এরা বিপুল অর্থ ব্যয় করে তথাকথিত ‘ক্যাডার বাহিনী’ লালন করে আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বড় বড় মিছিল বের করে ওমুক নেতা ওমুক নেত্রী জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ বলে শ্লোগান দেয় এবং হাতে তালি দেয়।

    ৫২’র মহান ভাষা আন্দোলনের সঠিক নেতৃত্ব দেয়ার মতো কোন ছাত্র সংগঠন সেসময় দেশে ছিল না। মুসলিম ছাত্রলীগ নামের যে সংগঠনটি তখন ছিল, সেটা ছিল নামে ও প্রবনতায় সাম্প্রদায়িক এবং বহুলাংশে আপোসকামী। তারা ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিল। ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব তাই স্বাভাবিক ভাবেই চলে এসেছিল সচেতন ও প্রগতিবাদী ছাত্রদের হাতে। এই আন্দোলন শুধু ছাত্র সমাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, দেশের আপামর জনতার মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। সালাম, বরকত, রফিক, শফিক ও জব্বারের তাঁজা রক্তের বিনিময়ে আমরা পে্যেছিলাম আমাদের প্রাণপ্রিয় বর্ণমালার মর্যাদা ও রক্তঝড়া ২১ ফেব্রুয়ারী ‘শহীদ দিবস’।

    ভাষা সংগ্রামের সফল উত্তরণের পরে ভাষা সৈনিকরা উপলব্ধি করেছিলেন, রক্তেগড়া ঐতিহাসিক এই সংগ্রামকে যথাযোগ্য পরিণতিতে এগিয়ে নিতে হলে প্রয়োজন অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী প্রগতিবাদী রাজনৈতিক চৈতন্যে উদ্বুদ্ধ একটি গণ ছাত্র সংগঠন। তাই ভাষা সংগ্রামের সামনের কাতারের প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনায় উজ্জীবিত প্রধান ছাত্র নেতৃবৃন্দ, যারা অনেকেই ছিলেন দেশভাগ পূর্ব ছাত্র ফেডারেশনের উত্তরসূরী, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-জেন্ডার রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থিকে প্রগতিশীল কর্মসূচীর ভিত্তিতে একতাবদ্ধ করতে পারে এমন একটি ছাত্র সংগঠন গড়ে তোলার জন্য সিদ্ধান- গ্রহণ করেন।

    ১৯৫২ সালের ২৬ এপ্রিল ঐক্য, শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতি- এ চার মূলনীতিকে ভিত্তি করে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয়। জন্মলগ্নে এই প্রতিষ্ঠানের যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন কাজী আনোয়ারুল আজিম ও সৈয়দ আবদুস সাত্তার। এরপর ১৯৫২ সালের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত প্রথম সম্মেলনে মোহাম্মদ সুলতান সভাপতি এবং মোহাম্মদ ইলিয়াস সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এই সম্মেলনেই সংগঠনের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা শিক্ষা জীবনে একজন ছাত্রের মৌলিক কাজ হচ্ছে তার ছাত্রত্ব অর্থবহ ও পরিপূর্ণ করা। ছাত্রত্ব হলো- শিক্ষার মাধ্যমে নিজেকে একজন প্রকৃত মানুষ হিসেবে তৈরী করা। যেন মানুষটি তার সমগ্র জীবনে সৎ, দেশপ্রেমিক, মানবিক গুনাবলীর অধিকারী, প্রগতিশীল, আদর্শবান, যুক্তিনিষ্ঠ ও বিজ্ঞানমনস্কতার পরিচয় বহন করার সক্ষমতা অর্জন করে। কোনো সংকীর্ণতা, সীমাবদ্ধতা যেন তাকে স্পর্শ করতে না পারে। সময়ের কাজ যেন সময়ে করতে শেখে। বুঝে শুনে কাজ করার সক্ষমতা অর্জন করে। যুক্তি ও বিজ্ঞানমনস্কতার নিরিখে পথ চলতে সক্ষম হয়।

    ছাত্র জীবনে একজন ছাত্রের মৌলিক কাজ হলো শিক্ষা অর্জন করা। শিক্ষা ও জ্ঞানের মাধ্যমে সমাজ, মানুষ, পৃথিবী, রাজনীতি, বিজ্ঞান, দর্শন, অর্থনীতি সংস্কৃতিসহ নানা বিষয়ে সম্যক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করা। শুধু জ্ঞান অর্জন করলেই হবে না, প্রয়োগের মাধ্যমে এ অর্জিত জ্ঞানের সাথে সমাজ, দেশ, দেশবাসী ও বিশ্ব সভ্যতা-বিশ্ব মানবতার যোগসূত্র তৈরী করতে হবে।

    একজন ছাত্রকে অবশ্যই অন্যান্য ছাত্রদের সাথে যুক্ত হয়েই তার প্রকৃত শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ প্রতিষ্ঠা ও অধিকার আদায় করতে হবে। এজন্য সকলের মধ্যে সচেতনতা এবং একতা গড়ে তোলা অপরিহার্য। কিন’ সেই সাথে নিজেকে উপযুক্তভাবে জ্ঞানসমৃদ্ধ ও সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। অন্যকে যুক্তিবান ও বিজ্ঞানমনস্ক করতে হলে প্রথমে নিজেকে যুক্তিবান ও বিজ্ঞানমনস্ক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সমাজটাকে পরিবর্তন করতে চাইলে নিজেকেও পরিবর্তন করতে হবে। বিপ্লব করতে চাইলে নিজেকেও বিপ্লবী হিসেবে তৈরী করতে হবে। আমি বা আমরা যা-ই করতে চাই না কেন তার জন্য মানুষের কাছে যেতে হবে। তাদেরকে বুঝাতে হবে এবং তাদেও কাছ থেকে শিখতেও হবে। কিন’ নিজে না বুঝলে অন্যকে সে কি বুঝাবে।

    ছাত্র ইউনিয়ন করার ক্ষেত্রে এই কাজগুলো যথার্থভাবে মেনে চলতে হয়। এই ধারায় উদ্বুদ্ধ একজন ছাত্রই কেবল ছাত্র ইউনিয়ন করার যোগ্যতা রাখে। ছাত্র ইউনিয়ন নিছক খাতায় নাম লেখানো মার্কার সংগঠন নয়। এই সংগঠন করতে হলে প্রথমত তাকে তার ছাত্রত্ব রক্ষা করতে হয়। তারপর সংগঠন সম্পর্কে বুঝতে হয়, জানতে হয়। ক্রমাগত সচেতনতা বাড়াতে হয়। শুধু তত্ত্ব চর্চা নয়, বাস-ব প্রয়োগ, সত্যিকার আন্দোলন সংগ্রাম, ছাত্র সমাজ ও জনগণের মাঝে প্রত্যক্ষ কাজ ইত্যাদির মাধ্যমে উন্নত জীবন দর্শন ও সামাজিক কর্মযজ্ঞের নিবেদিত প্রাণ কর্মী হয়ে ওঠার নিরন-ও প্রয়াস চালাতে হয়। প্রচলিত শিক্ষা কাঠামোর সীমাবদ্ধ জ্ঞান অর্জন করলেই যেমন জ্ঞান অর্জন করা যায় না তেমনি শুধু মাত্র ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দিলে বা নাম লেখালেই প্রকৃত অর্থে ছাত্র ইউনিয়ন করা হয়না।

    বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ক্ষমতার অপব্যবহারের রাজনীতি অথবা কোন রাজনৈতিক দল বা তাদের উপদলের লেজুড়বৃত্তি করে না। কিন্তু বাস্তব জীবনের কঠোর অভিজ্ঞতায় ছাত্রসমাজ দেখতে পায় যে, তারা যে গণতান্ত্রিক, অসামপ্রদায়িক, প্রগতিশীল, অবারিত ও সমৃদ্ধশালী শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষা জীবন চায়, তার পথে পদে পদে অন-রায় সৃষ্টি করে রাখছে দেশের প্রচলিত সাম্রাজ্যবাদ নির্ভর লুটপাটতন্ত্রের অর্থনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থা। আর সেই প্রতিক্রিয়াশীল আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থাকে লালন-পালন করে চলেছে দেশের বর্তমান শাসক-শোষক শ্রেণী।

    সাম্প্রদায়িকতা, স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা, মুক্তবাজারের নামে লুটপাটতন্ত্র, বিশ্বায়নের নামে সাম্রাজ্যবাদী শোষণ-আগ্রাসন ইত্যাদির ফলে ছাত্রসমাজের প্রত্যাশা ও সুন্দর স্বপ্নগুলো প্রতিনিয়ত নানাভাবে বিনষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা এই শিক্ষাই দিচ্ছে যে, প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার আমূল রূপান-র ও বর্তমান শাসক-শোষক শ্রেণীকে পরাভূত না করতে পারলে ছাত্র সমাজ তার বহু আকাঙ্খিত শিক্ষা জীবন নিশ্চিত করতে পারবে না।

    অন্যদিকে, দেশবাসীর অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ছাত্র সমাজ জাতীয় সমস্যাবলী থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন রাখতে পারে না। ছাত্র সমাজ সমগ্র জনগণেরই একটি সচেতন অংশ; তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক অধিকার, অসামপ্রদায়িকতা, সমাজ ও অর্থনীতির প্রগতিশীল বিকাশ, সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বায়নের আগ্রাসী আধিপত্য থেকে মুক্তি, বৈষম্য ও শোষণের অবসান, প্রকৃতি ও পরিবেশের বিপর্যয় রোধ, বিশ্ব শান্তি- জাতীয় মুক্তির স্বপক্ষে আন্তর্জাতিক সংহতি- এসব কোনো বিষয়ই ছাত্র সমাজের বিবেচনা বর্হিভূত বিষয় হতে পারে না।

    অনেকের মধ্যে এরকম ভুল ধারণা হতে পারে যে ছাত্ররা শুধু লেখাপড়া করবে। দেশ দুনিয়া নিয়ে ভাবার কোন প্রয়োজন তাদেও নেই, কেননা এগুলো তাদেও শিক্ষা জীবনের সাথে জড়িত নয়। কিন’ এরকম ধারণা সঠিক নয়। একটা ছোট উদাহরণ দেয়া যাক। ধরা যাক, পাটকল বন্ধ হয়ে গেছে। তাই এর প্রতিবাদ করা এবং প্রতিবাদে প্রয়োজনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট করা ছাত্র হিসেবে অসি-ত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই যুক্তিসংগত হয়ে ওঠে। যেসব ছাত্রের পরিবার পাটকলের উপর নির্ভরশীল তাদের শিক্ষাজীবন তখন এর ফলে হুমকীর মধ্যে পড়ে। এভাবেই অর্থনীতি-রাজনীতিসহ জাতীয় আন-র্জাতিক ঘটনাবলী অবিচ্ছেদ্য ভাবে ছাত্রসমাজের সামগ্রীক স্বার্থ ও মননে জায়গা করে নেয়।

    এজন্যই আপনাকে আমাকে ও সমগ্র ছাত্র সমাজকে জাতীয়-আন-র্জাতিক নানা মৌলিক ও ছোট-বড় বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়াটা স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। এটা ‘দলবাজি’ বা রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি নয়। ছাত্র সমাজের কোন ধরণের রাজনীতি করা উচিৎ সেটাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা অনেক রকম রাজনীতি দেখতে পাই। লুটপাটের রাজনীতি, খুন-ধর্ষণের রাজনীতি, অস্ত্রবাজী-টেণ্ডারবাজী-চাঁদাবাজীর রাজনীতি, নেতা-নেত্রীর নামে স্লোগানের রাজনীতি, ধর্মান্ধ-মৌলবাদী রাজনীতি ইত্যাদি। ছাত্র ইউনিয়ন রাজনীতির নামে চলতি হাওয়ার এই অপরাজনীতির সাথে মোটেই সমপৃক্ত নয়। এসবকে সে ঘৃণা করে, প্রত্যাখ্যান করে।

    আরেক ধরণের রাজনীতি হলো আদর্শ, দেশপ্রেম, ত্যাগের রাজনীতি। ছাত্র ইউনিয়ন সেই রাজনীতির সাথে যুক্ত- যেখানে বৃহত্তর ছাত্র সমাজের মৌলিক স্বার্থের পাশাপাশি এদেশের গরীব দুঃখী-মেহনতী মানুষের সার্বিক অধিকার ও মুক্তির পথনির্দেশ রয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় ছাত্র ইউনিয়ন যেমন অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানভিত্তিক, বৈষম্যহীন, গণমূখী ও একই ধারার শিক্ষানীতির বাস-বায়ন চায় তেমনি জাতীয় রাজনীতি ও অর্থনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থায় শোষণ-বৈষম্যহীন সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে। ইতিহাসের অভিজ্ঞতা হল ঐক্যবদ্ধ সচেতন লড়াই-সংগ্রাম ছাড়া কোনো অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। এ লড়াই সমগ্র ছাত্র সমাজের, আপনার আমার সকলের। সুন্দর সমাজের জন্য, মানুষ-মানবতা-মনুষ্যত্বের জন্য ও সাম্যের পৃথিবী গড়ার জন্য। এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব-কর্তব্য এড়ানো কোনো সচেতন-যুক্তিবাদী ছাত্র-ছাত্রীর, কোন মানুষের কাজ নয়।  (নিউজজি২৪.কম)

  • ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর এর উপর হামলার নিন্দা জানিয়ে সাবেক ডাকসু ভিপি জনাব আ স ম আবদুর রব এক বিবৃতি

    বিবৃতিতে জনাব রব বলেন, ভিন্ন মতকে নিধন করার সরকারী কৌশলের অংশ হিসেবে নুরুল হক নুর ও তার সঙ্গীয়দের উপর এ হামলা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। শক্তি প্রয়োগ করে-নিপীড়ণ নির্যাতন চালিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার স্তব্ধ করার পরিণতি রাষ্ট্রকে গভীর সংকটে নিপতিত করবে। বিবৃতিতে জনাব রব হামলায় নুর সহ আহতদের সু চিকিৎসা এবং হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করেন।

  • ডাকসু ভিপির উপর বর্বরোচিত হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ ………………..বাংলাদেশ ছাত্রলীগ

    বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের আহবায়ক তৌফিক উজ জামান পীরাচা ও যুগ্ম আহবায়ক জাসেম আলম এক যৌথ বিবৃতিতে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর এর উপর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ নামধারী সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলার নিন্দা জ্ঞাপন করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, আজ দুপুর আনুমানিক ১.০০ টা দিকে ডাকসু’র ভিপি কার্যালয়ে প্রবেশ করে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর ও তার সহকর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা করে অফিস ভাংচুর সহ কয়েকজনকে মারাত্মক জখম করে। ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর এর উপর কখনও ছাত্রলীগ নামে কখনও মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের নামে বার বার হামলা-স্বাধীন ছাত্র আন্দোলনকে নিশ্চিহ্ন করার হীন মানসে একই চক্র দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে। আমরা এ সকল হামলাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করছি।

    নেতৃবৃন্দ  এই হামলার বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। একই সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সারাদেশ জুড়ে চলমান ভয়-ভীতি প্রদর্শনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি