Category: ইরান-ইসরায়েল

  • ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা ‘আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’: রাশিয়া

    ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা ‘আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’: রাশিয়া

    ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া।

    রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা হামলা চালানোর এই দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত। যে যুক্তিই দেওয়া হোক না কেন—আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলোর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এই হামলা।’

    বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। চলমান পরিস্থিতিকে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পথে ফিরিয়ে নেওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে প্রচেষ্টা বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছি।’

    ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি আজ রোববার রাশিয়া যাচ্ছে। আগামীকাল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর বৈঠক করার কথা রয়েছে।

  • ইরানে মার্কিন হামলা নিয়ে মুখ খুললো সৌদি আরব

    ইরানে মার্কিন হামলা নিয়ে মুখ খুললো সৌদি আরব

    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলার ঘটনার পর ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। শনিবার (২২ জুন) সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স-এ প্রকাশিত বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।

    বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইরানের ওপর মার্কিন হামলা, বিশেষ করে পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার ঘটনাকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে সৌদি। এর আগে ১৩ জুনের বিবৃতিতেও সৌদি আরব ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছিল।’

    সৌদি সরকার পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সংযম দেখানো এবং উত্তেজনা প্রশমনের ওপর জোর দিয়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের জন্য একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে রিয়াদ।

    গত মে মাসেই সৌদি আরব ইরানকে ট্রাম্পের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করতে আহ্বান জানিয়েছিল।

  • ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আদ্যোপান্ত জানালো বিবিসি

    ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আদ্যোপান্ত জানালো বিবিসি

    সম্প্রতি ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের কথিত হামলা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিশদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিশ্বখ্যাত সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

    বিবিসির অনুসন্ধানভিত্তিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ইরানের নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে একটি সাইবার ও ড্রোন সমন্বিত হামলা চালানো হয়। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত ছিল, যদিও যুক্তরাষ্ট্র সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

    প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বিগত কয়েক দশক ধরেই পশ্চিমা দেশগুলোর নজরদারির কেন্দ্রে রয়েছে। এর আগে ২০১০ সালে স্টাক্সনেট নামক এক ভয়াবহ সাইবার ভাইরাসের মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমে বড় ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি করা হয়েছিল, যার পেছনেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হাত ছিল বলে ধারণা করা হয়।

    নতুন এ হামলায় পারমাণবিক কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দেয়, যার ফলে কিছু সময়ের জন্য কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হয়। বিবিসি জানায়, হামলাটি অত্যন্ত পরিকল্পিত এবং প্রযুক্তিগতভাবে উচ্চমানসম্পন্ন ছিল।

    বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চেয়েছে—ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়ে তারা কোনও ছাড় দেবে না।

    অন্যদিকে ইরান সরকারের পক্ষ থেকে হামলার অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার না করলেও, বিষয়টি ‘বৈদেশিক শত্রুদের ষড়যন্ত্র’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া জানাবে এবং জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

    বিবিসি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নতুনভাবে বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

    হামলার প্রকৃতি ও সময়

    ২২ জুন ২০২৫, রাত ২:৩০টা থেকে ৩:০০টার মধ্যে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বোমারু বিমান, ক্রুজ মিসাইল ও সাইবার হামলার মাধ্যমে ভয়াবহ আঘাত হানা হয়। বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, এই হামলার মূল টার্গেট ছিল:

    1. ফোর্ডো ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্ল্যান্ট (Fordow)

    2. নাতানজ এনরিচমেন্ট কমপ্লেক্স (Natanz)

    3. ইসফাহান নিউক্লিয়ার টেকনোলজি সেন্টার (Isfahan)

     ব্যবহৃত অস্ত্র ও প্রযুক্তি

    • B-2 স্টেলথ বোম্বার: যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি থেকে ৭টি বোমারু বিমান প্রায় ৩৭ ঘণ্টার উড়ানে সরাসরি ইরানে প্রবেশ করে।

    • GBU-57A/B “Massive Ordnance Penetrator” (MOP): ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের এই বাংকার-বাস্টার বোমা মূলত ভূগর্ভস্থ সুরক্ষিত স্থাপনাকে লক্ষ্য করে ব্যবহৃত হয়।

    • টমাহক ক্রুজ মিসাইল: সাবমেরিন থেকে ইসফাহান ও নাতানজের উদ্দেশ্যে ৩০টিরও বেশি মিসাইল উৎক্ষেপণ করা হয়।

    • সাইবার যুদ্ধ ও ড্রোন সমন্বয়: ইলেকট্রনিক বিভ্রান্তি ও তথ্য প্রতিরোধ ব্যবস্থাও এই হামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

     হামলায় ক্ষয়ক্ষতির চিত্র

    • ফোর্ডো: ইরানের পাহাড়ের নিচে স্থাপিত এই কেন্দ্র সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে প্রবেশপথ সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত এবং অভ্যন্তরীণ সরঞ্জাম অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

    • নাতানজ: এখানে মূলত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চলে। এই স্থাপনার উপরের অংশ এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে, ফলে কেন্দ্রটি আংশিকভাবে অচল।

    • ইসফাহান: তুলনামূলকভাবে ক্ষয়ক্ষতি কম হলেও গবেষণা বিভাগে অগ্নিকাণ্ডের প্রমাণ মিলেছে।

    আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

    যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, এই হামলা ছিল “সম্পূর্ণ সফল” এবং “ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে”।
    প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন,

    “আমরা যে শক্তি ও সংকল্প ধারণ করি, তা দেখাতে চেয়েছি। শান্তি চাই, কিন্তু দুর্বলতা নয়।”

    ইরানের প্রতিক্রিয়া:
    ইরান সরাসরি হামলার দায় অস্বীকার করলেও এটিকে “বিদেশি ষড়যন্ত্র” বলে আখ্যায়িত করেছে এবং জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডেকেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়,

    “যে বা যারা আমাদের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় হস্তক্ষেপ করছে, তাদের এর পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”

    জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে।

     বিশ্লেষণ: এই হামলার তাৎপর্য কী?

    বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র এই হামলার মাধ্যমে একাধারে ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে থামিয়ে দিতে চেয়েছে এবং অন্যদিকে চীন ও রাশিয়াকে বার্তা দিয়েছে যে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন উপস্থিতি এখনও শক্তিশালী।

    এই হামলা আগামী দিনে আন্তর্জাতিক রাজনীতি, তেল বাজার এবং সামরিক প্রস্তুতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

  • শান্তির দূত নয়, যুদ্ধের নেতা! :রাশিয়া

    শান্তির দূত নয়, যুদ্ধের নেতা! :রাশিয়া

    রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপ-চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করছে।

    যুক্তরাষ্ট্রের ইরানে হামলার পর নিজের টেলিগ্রামে তিনি লিখেছেন, “শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বলে যিনি ক্ষমতায় এসেছিলেন, সেই ট্রাম্পই এখন যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন একটি যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলেছেন।”

    মেদভেদেভ আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এখন এমন এক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে, যা ভবিষ্যতে স্থল যুদ্ধেও রূপ নিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের নোবেল শান্তি পুরস্কার জেতার আশা প্রায় শেষ।”

  • ইরানের ‘খাইবার শেকান’ ক্ষেপণাস্ত্র কতটা ভয়ংকর?

    ইরানের ‘খাইবার শেকান’ ক্ষেপণাস্ত্র কতটা ভয়ংকর?

    ইরান সম্প্রতি ইসরায়েলের ওপর যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, সেখানে তারা “খাইবার শেকান” নামের একটি শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। একে “খোররামশাহর-৪” নামেও ডাকা হয়।

    এটি একটি মাঝারি দূরত্বে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র, যা ইরানের সেনাবাহিনী (ইসলামি বিপ্লবী গার্ড) তৈরি করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ২০২২ সালে প্রকাশ করা হয়। ইরানের সব ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি ওজন বহন করতে পারে বলে ধারণা করা হয়।×

    এটি প্রায় ১,৪৫০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আঘাত করতে পারে। “খোররামশাহর-৪” নামটি এসেছে ইরানের একটি শহর “খোররামশাহর” থেকে, যেখানে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় ভয়াবহ যুদ্ধ হয়েছিল।

    এই ক্ষেপণাস্ত্র ইরানের সামরিক শক্তির একটি বড় উদাহরণ।

    সূত্র: আলজাজিরা