Category: আইন-আদলাত

  • গ্রেপ্তার ব্যারিস্টার সুমন; ৫ দিনের রিমান্ডে

    গ্রেপ্তার ব্যারিস্টার সুমন; ৫ দিনের রিমান্ডে

    যুবদল নেতা ও মিরপুরের বাঙালিয়ানা ভোজের সহকারি বাবুর্চি হৃদয় মিয়াকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মিরপুর মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এই আদেশ দেন।

    এদিন সকাল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হালিম ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। পরে শুনানি শেষে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

    এর আগে সোমবার (২১ অক্টোবর) রাত দেড়টার দিকে মিরপুর-৬ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়া গ্রেপ্তারে আগে সোমবার রাত ১টা ২১ মিনিটে তিনি পুলিশের সঙ্গে যাচ্ছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তাসহ স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘আমি পুলিশের সাথে যাচ্ছি। দেখা হবে আদালতে। দোয়া করবেন সবাই’।

    আর ভিডিও বার্তায় ব্যারিস্টার সুমন বলেন, প্রথমেই জানাতে চাই আমি দেশেই রয়েছি। ঢাকা শহরেই আছি। ৫ আগস্টের পর আমি কোথাও যায়নি। শুধুমাত্র নিরাপত্তার কারণে আমি আত্মগোপনে ছিলাম। ৫ আগস্টের পর অনেকেই আমাকে বলেছেন যে তুমি বিদেশে চলে যাও। কিন্তু আমি যাইনি। আমার কাছে মনে হয়েছে যে আমি কোনো দিন দুর্নীতি করিনি। ঢাকা শহরে আমার কোনো প্লট ও ফ্লাট নেই। একটি গাড়ি ছাড়া আমার নামে আর কোন সম্পদ নেই। তারপরও কেন আমি দেশ ছেড়ে যাব।

    তিনি আরও বলেন, আমার নামে যদি কোনো মামলা হয়ে থাকে তাহলে তা আইনের মাধ্যমে মোকাবিলা করব। যেহেতু আমি আইনজীবী, আইনের প্রতি আমার বিশ্বাস রয়েছে।

    ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমার সুযোগ ছিল অনেক সম্পদ করার। কিন্তু আমার পুরো টাকাটা আমি আমার এলাকার উন্নয়নে কাজে লাগিয়েছি। একটা গাড়ি ছাড়া আমার নামে আর কোন সম্পদ নেই। যে কেউ সে বিষয়ে তদন্ত করতে পারে।

    তিনি আরও বলেন, সংস্কারের সময় আমি এমন এমন মানুষের নামে মামলা করেছিলাম যাদের নামে এখনও মামলা চলমান আছে। ক্ষমতাধর সেসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সবার প্রথমে আমিই কাজ করেছিলাম। এগুলো আমি সবই করেছি দেশের জন্যে।

    প্রসঙ্গত, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে পরাজিত করে হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৫ আগস্ট গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান তিনি।

  • নির্বাচন নিয়ে যা বললেন ড. আসিফ নজরুল

    নির্বাচন নিয়ে যা বললেন ড. আসিফ নজরুল

    জাতীয় নির্বাচনের সময় সরকারের প্রধান উপদেষ্টার (ড. মুহাম্মদ ইউনূসের) নেতৃত্বে ঠিক হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা একমাত্র নির্বাচন ঘোষণার এখতিয়ার রাখেন।

    শনিবার (১৯ অক্টোবর) নির্বাচন নিয়ে এক ব্যাখ্যায় নিজের ফেসবুক পোস্টে এ কথা জানান আইন উপদেষ্টা।

    আসিফ নজরুল লিখেছেন, সম্প্রতি একটি টিভি আলোচনায় আমি বলেছি নির্বাচন হয়ত আগামী বছরের মধ্যে সম্ভব হতে পারে, তবে এক্ষেত্রে অনেকগুলো ফ্যাক্টর রয়েছে। সেখানে এসব ফ্যাক্টর পুরোপুরি ব্যাখ্যা করার সুযোগ পাইনি। কিন্তু আমাদের সরকারের কথা থেকে সবাই বুঝবেন যে নির্বাচনের জন্য সংস্কার ও রাজনৈতিক সমঝোতার কথা বলা হয়। এগুলোই সেই ফ্যাক্টর।

    আইন উপদেষ্টা বলেন, সংস্কারের কথা আমিও অনুষ্ঠানে বলেছি। আরও কিছু ফ্যাক্টর আমি অনুষ্ঠানটিতে ব্যাখ্যা করেছি, যেমন: সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠন, ভোটার তালিকা প্রণয়ন ইত্যাদি। এসব ফ্যাক্টর ঠিক থাকলে নির্বাচন হয়ত হতে পারে আগামী বছর। বলেছি এটাও আমার প্রাথমিক অনুমান।

    এই শর্তভিত্তিক ধারণা ও অনুমানকে কিছু গণমাধ্যম নির্বাচনের ঘোষণা হিসেবে দেখাচ্ছেন। বিনয়ের সঙ্গে বলছি, এটা সঠিক নয়।

    আসিফ নজরুল বলেন, নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পলিসি ডিসিশন। এর সময় সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ঠিক হবে। তিনিই একমাত্র এটা ঘোষণার এখতিয়ার রাখেন।

  • সাতক্ষীরার সাবেক এমপি ও এসপিসহ ৬০ জনের নামে মামলা

    ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে ষড়যন্ত্র করে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার উত্তর কুলিয়া গ্রামের মারুফ হোসেনসহ দুই জনকে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হেফাজতে নিয়ে নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যার ঘটনায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ রুহুল হক, সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, সাতক্ষীরা র‌্যাব ক্যাম্পের মেজর আহম্মেদ হোসেন, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রেজাউল হক ও দেবহাটা বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার গোলজারসহ ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত মারুফ হোসেনের ভাই মোকফুর রহমান বাদি হয়ে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।

    আদালতের বিচারক চাঁদ মোঃ আব্দুল আলীম আল রাজী নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারন) আইন ২০১৩ এর ৫(৫) ধারা অনুযায়ী ডিআইজি খুলনাকে একই আইনের ২(৩), ২(৪),২(৫), ২(৭), ৭(১), ৮(১), ১৩(১), ১৪(১) ধারা মতে উল্লেখিত আইনে বর্ণিত ধারার আলোকে তিনি নিজে অথবা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পদমর্যাদার নীচে না এমন কোন পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে অভিযোগের তদন্ত করে আগামি ২৭ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন।

    মামলার অপর আসামীদের মধ্যে রয়েছেন, দেবহাটা থানার তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারক চন্দ্র বিশ্বাস, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান, কুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুল হক, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক পারুলিয়ার মনিরুজ্জামান মনি, সখীপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন রতন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফাসহ ৬০ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ৫০ জনকে আসামী করা হয়েছে।

    মামলার বিবরণে জানা যায়, দেবহাটা উপজেলার উত্তর কুলিয়া গ্রামের আশরাফুল আলমের ছেলে মারুফ হোসেনের সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ নেতা ও তৎকালিন কুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুল হকের বিরোধ ছিল। সাবেক সাংসদ ডাঃ রুহুল হকের সুপারিশে ও পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীরের নির্দেশে ৬ থেকে ৩৩ নং আসামী ও ৪৬ থেকে ৬০ নং আসামীরা ২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি বিকেল চারটার দিকে আসামী গ্রাম পুলিশ মঞ্জুরুল ইসলামের কাছ থেকে ভিকটিম মারুফের অবস্থান নিশ্চিত করে নেয়। তারা উপজেলার গোবরাখালি গ্রামের শ্বশুর হাশেম গাজীর বাড়ি ঘেরাও করলে মারুফ পালাতে যেয়ে বালিথা গ্রামের কার্তিক সরকারের বাড়ির খাটের তলায় ঢুকে পড়ে।

    আসামিরা সেখান থেকে তাকে বের করে মারপিট করতে করতে পুলিশ পিকআপে করে দেবহাটা থানার দিকে নিয়ে যায়। পরদিন সকাল ১০টার দিকে কুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আসাদৃুল হকের কাছে যায় মারুফের স্বজনরা। ওই দিন সন্ধ্যায় চৌকিদার মঞ্জুর চেয়ারম্যান আসাদুল হকের কথামতো মারুফের শ্বশুর বাড়ি থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে আসে। ভিকটিমকে ছাড়াতে ওই দিন দুপুর দুটোর দিকে চেয়ারম্যানের বাড়িতে যায় মারুফের স্বজনরা। একান্তে কয়েকজন আসামী আলোচনা করার সময়একটি অঙ্গ হানি হলেও জীবনে বাঁচিয়ে রেখে তাকে মুক্তির আবেদন জানান স্বজনরা। চেয়ারম্যান পাঁচ লাখ টাকা দাবি করলেও এক লাখ টাকা দিয়ে মুক্তির পর বাকী টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তারা।

    একপর্যায়ে গ্রাম পুলিশ মঞ্জুরের কথামত স্বজনরা বাড়ি চলে আসে। ২৬ জানুয়ারি ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নারিকেলী গ্রামের জিয়ার বাড়ির নিকটবর্তী রাস্তার উপর মারুফ ও অপর একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে পিকআপ থেকে নামিয়ে গুলি করে পুলিশ। পরে তাদেরকে রক্তাক্ত অবস্থায় পিকআপে তুলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। খবর পেয়ে ওই দিন দুপুরে মারুফসহ দুইজনের লাশ সদর হাসপাতালে দেখতে যান স্বজনরা।

    পরে সদর হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে মারুফের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থনে মারুফের লাশ দাফন করা হয়।

    মারুফকে হত্যার বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে পুলিশ রাতেই দেবহাটা থানায় ভিকটিমসহ ৫০/৬০জনকে আসামী শ্রেণীভুক্ত করে অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা দায়ের করে। অভিযোগপত্র শেষে মামলা দুটি বর্তমানে এসটিসি ১৮৭/১৭, ১৮৮/১৭ জজ কোর্টে বিচারাধীন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পেশকার টিটু মল্লিক।

  • সাবেক সহকারি পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামানসহ ৪৪ জনের নামে মামলা

    সাবেক সহকারি পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামানসহ ৪৪ জনের নামে মামলা

    ২০১৩ সালে সাতক্ষীরার সিটি কলেজ মোড়ে মিছিলে গুলিতে নিহত বিএনপি কর্মী মাহামুদুল হাসান
    সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর ও সাবেক সহকারি পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামানসহ ৪৪ জনের নামে মামলা

    নিজস্ব প্রতিনিধি ২০১৩ সালের ২৮ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা
    সদর উপজেলার সিটি কলেজ এলাকায় মিছিলে চালানো গুলিতে
    বিএনপি কর্মী মাহামুদুল হাসান নিহত হওয়ার ঘটনায় আদালতে
    মামলা দায়ের করা হয়েছে। সদর উপজেলার বালিয়াডাঙা গ্রামের
    আব্দুর রাজ্জাক বাদি হয়ে তৎকালিন পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল
    কবীর ও সদর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার কাজী
    মনিরুজ্জামানসহ ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করে সোমবার সাতক্ষীরার
    জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।
    বিচারক নয়ন বড়াল মামলাটি তদন্ত করে এফআইআর হিসেবে গণ্য
    করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত
    কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
    মামলার অন্যতম আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালিন
    ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক ও জেলা আওয়ামী লীগের
    সহসভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহম্মেদ।
    মামলার বিবরণে জানা যায়, জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন
    সাঈদীর ফাঁসির রায়কে ঘিরে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি
    বিকেল চারটার দিকে কদমতলা মোড় থেকে কয়েক হাজার মানুষের
    মিছিল সাতক্ষীরা সিটি কলেজ মোড়ের দিকে যেতে থাকে। এ
    সময় ৪ থেকে ১৬ নং আসামীরা হাতে আগ্নেয়অস্ত্র, রাম দা,
    লাঠি, কুড়াল ও হকি স্টিক নিয়ে মিছিলে হামলা ও গুলি চালায়।
    পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, সদর সার্কেলের সহকারি
    পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত
    কর্মকর্তা এমদাদুল হক ও আওয়ামী লীগের খুনী নেতা কর্মীরা
    মিছিলের উপর নির্বিচারে গুলি করিতে থাকে। একপর্যায়ে বাদির
    ছেলে ছাত্রদল কর্মী মাহামুৃদুল হাসানের বুকে গুলি লেগে পিঠ

    দিয়ে বের হয়ে যায়। সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ার কিছুক্ষণ পর মারা
    গেলে তাকে ভ্যানে করে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন সুরতহাল
    প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্ত ছাড়াই বালিয়াডাঙা সরকারি প্রাথমিক
    বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাযা শেষে মাহামুদুল হাসানের লাশ
    পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
    ওই সময়কার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে আসামীদের বিরুদ্ধে
    মামলা করা সম্ভব না হওয়ায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তণ
    হওয়ায় মামলার বিলম্বের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
    সাতক্ষীরা জজ কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাড. আব্দুস সামাদ
    জানান, তিন পুলিশ কর্মকর্তা, জেলা আওয়ামী লীগের
    সহসভাপতি আবু আহম্মেদসহ ৪৪ জনের নামে আদালতে মামলা
    দায়ের করা হয়েছে। বিচারক এফআইআর হিসেবে গণ্য করার জন্য
    সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।#

  • নলতা ইউনিয়ন আওয়ামীগের সভাপতিসহ ৩১ জনের নামে মামলা

    কালিগঞ্জে বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট শেষে গাড়িসহ বিভিন্ন জিনিসপত্রে আগুনের ঘটনায়

    নলতা ইউনিয়ন আওয়ামীগের সভাপতিসহ ৩১ জনের নামে মামলা

    ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল
    সাড়ে চারটা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বাড়ির গেট বোমা মেরে
    উড়িয়ে দেওয়া, বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট, গাড়ি ও গাড়ির গ্যারেজ
    ভাংচুর শেষে প্রেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলা
    দায়ের করা হয়েছে। সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ইন্দ্রনগর গ্রামের
    আকবর আলীর ছেলে মাসুম বিল্লাহ বাদি হয়ে নলতা ইউনিয়ন
    আওয়ামী লীগের সভাপতি আনিছুজ্জামান খোকনসহ ৩১ জনের নাম
    উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৬০/৭০ জনের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা
    বিঘœকারি অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন তৎসহ বিষ্ফোরক দ্রব্য
    আইনে এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক নয়ন বড়াল তদন্ত করে
    প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে
    নির্দেশে দিয়েছেন।
    মামলার অন্যতম আসামীরা হলেন, নলতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের
    সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন পাড়সহ তার ছয় ভাই, নলতা
    মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোনায়েম পাড়, সাবেক
    চেয়ারম্যান আনছার আলী বিশ্বাস ও আজাহারুল ইসলাম পাড়।
    মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল
    সাড়ে চারটার দিকে সশস্ত্র আসামীরা বাদির বাড়িতে ঢুকে মহড়া
    দেয়। আসামী আনিছুজ্জামান খোকনের নেতৃত্বে আবুল
    হোসেন বাদির বাড়ির প্রবেশের মুখের গেট বোমা মেরে উড়িয়ে
    দেয়। সাত থেকে ১১ নং আসামীরা মোনায়েম মাষ্টারের বালতিতে
    থাকা বোমা প্রাচীরের বাইরে থেকে ভিতরে ছুঁড়ে রান্না ঘর ও
    গোয়ালঘর পুড়িয়ে দিয়ে উল্লাস করতে থাকে। আনছার আলী
    বিশ্বাস তার কাছে থাকা প্লাস্টিক বোতলের প্রেট্রোল দিয়ে ১০
    লাখ ২০ হাজার টাকার মাইক্রোবাস ও আবুল হোসেন সাত লাখ ২০
    হাজার টাকার প্রাইভেটকার জ্বালিয়ে দেয়। কয়েকজন আসামী
    বাদির একটি মাইক্রোঘর ও মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে। বাদি ও তার
    পরিবারের সদস্যরা ভয়ে পার্শ্ববর্তী বাঁশবাগানে আশ্রয় নেয়।

    আসামীরা বাদির বাড়ি থেকে ১০ লাখ টাকার মালামাল লুটসহ ২০
    লাখ টাকার মালামাল ভাংচুর করে ক্ষতি করে।
    দেশে সুশাসন না থাকায় ও আসামীরা স্বৈরাচারী সরকারের দোসর
    হওয়ায় বর্তমানে অনুকুল পরিবেশ পাওয়ায় মামলা করিতে বিলম্ব
    হলো।
    সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. হাফিজুর রহমান মামলা
    বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

  • পুলিশ সদস্যদের সতর্ক করল সদর দপ্তর

    পুলিশ সদস্যদের সতর্ক করল সদর দপ্তর

    পোস্টিংয়ের নামে প্রতারণা থেকে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। শনিবার (৩১ আগস্ট) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

    প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একটি চক্র পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন ইউনিটে পোস্টিংয়ের ভয় দেখিয়ে অর্থ দাবি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ধরনের প্রতারক চক্র থেকে সতর্ক থাকার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

    প্রতারক চক্র গ্রেপ্তারে পুলিশের বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

  • ফের উত্তপ্ত সুপ্রিম কোর্ট বার, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া-ভাঙচুর

    ফের উত্তপ্ত সুপ্রিম কোর্ট বার, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া-ভাঙচুর

    ন্যাশনাল ডেস্ক : সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ইস্যুতে আবারও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, হাতাহাতি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা সমিতির সম্পাদকের কক্ষের দরজা-জানালার কাচ ভাঙচুর করেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষের সামনে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা।

    আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের দাবি, বিএনপিপন্থী আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কুদ্দুস কাজলের নেতৃত্বে আইনজীবীরা সমিতির সম্পাদকের কক্ষের দরজা ও জানালার গ্লাস ভেঙে ফেলেন। এ সময় অনেকে আহত হন। 

    অন্যদিকে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের দাবি, তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ অতর্কিত হামলা করে। এতে তাদের অনেকে আহত হন। এজন্য তারা বৃহস্পতিবার ফের বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন।

    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা মুখোমুখি অবস্থান নেন ও বিক্ষোভ করেন। এ সময় বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের কাছাকাছি চলে আসেন। তখন দুপক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। একপর্যায়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে থেকে কয়েকজন সমিতির সম্পাদকের কক্ষের দরজা ও জানালার গ্লাস ভাঙচুর করেন। তখন সমিতির সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল তাঁর কক্ষে অবস্থান করছিলেন।

    একপর্যায়ে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এ সময় দুপক্ষের অনেকে আহত হন। বেলা সোয়া ১টা থেকে সোয়া ২টা পর্যন্ত আইনজীবীরা ধাক্কাধাক্কি এবং পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে বিএনপির আইনজীবীরা দ্বিতীয় তলা থেকে নেমে নিচতলায় চলে যান।

    সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল গণমাধ্যমকে বলেন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আইনজীবীরা চড়াও হয়ে আমাদের ওপর হামলা করেন। তারা গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করেন। আমরা সহনশীলতার পরিচয় দিলেও প্রতিদিন তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছেন। এতে নারী আইনজীবীসহ অনেকে আহত হয়েছেন। জড়িতদের বিরুদ্ধে যে যে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, তার সবই করব গণতান্ত্রিক পন্থায়। বিএনপির মাহবুব উদ্দিন খোকন ও রুহুল কুদ্দুস কাজলের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

    অন্যদিকে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, পুলিশ বাহিনী এবং আওয়ামী লীগের আইনজীবীদের যৌথ হামলায় কাইয়ুম নামের একজন আহত হয়েছেন।

    গত ১৫ ও ১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে এবং নতুন নির্বাচনের দাবিতে বেশ কিছু দিন থেকে বিক্ষোভ করে আসছে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরাও সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষের সামনে অবস্থান নিয়ে পাল্টা বিক্ষোভ করছেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ডিম ছোড়াছুড়ি এবং হামলা-মামলার ঘটনাও ঘটেছে।

  • গণশুনানি বিজ্ঞপ্তি

    সরকারি সেবা প্রাপ্তি সহজীকরণ বিষয়ে আগামী ১৪/০৫/২০২৩ খ্রি. তারিখ সকাল ৯.০০ ঘটিকায় সাতক্ষীরা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাননীয় কমিশনার (তদন্ত) জনাব মোঃ জহুরুল হক এঁর উপস্থিতিতে দুদক কর্তৃক গণশুনানি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা সদরে অবস্থিত যে কোনো সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত দপ্তর, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সেবা পেতে ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হলে গণশুনানিতে আপনার অভিযোগ তুলে ধরুন।

  • পাকিস্তান’ শব্দের উল্লেখ থাকা সব আইনের তালিকা চান হাইকোর্ট

    পাকিস্তান’ শব্দের উল্লেখ থাকা সব আইনের তালিকা চান হাইকোর্ট

    ন্যাশনাল ডেস্ক : দেশের প্রচলিত যেসব আইনে ‘পাকিস্তান’, ‘ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তান’ এবং ‘ইস্ট পাকিস্তান’ শব্দ রয়েছে, সেসব আইনের তালিকা প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এসব আইনের তালিকা তৈরি করতে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। ৬০ দিনের মধ্যে এই কমিটিকে তালিকা তৈরি করে হাইকোর্টে দাখিল করতে হবে।
    বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মুহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার জনস্বার্থে করা এক রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারিসহ এই আদেশ দেন।
    রুলে আইন অনুসারে দেশের প্রচলিত আইন থেকে ‘পাকিস্তান’, ‘ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তান’ এবং ‘ইস্ট পাকিস্তান’ শব্দ বাদ দিয়ে সংশোধন করতে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
    আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ও আইনজীবী কামরুল ইসলাম।
    শুনানি শেষে আইনজীবী কামরুল ইসলাম জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রচলিত (পাকিস্তান আমলের) আইনগুলো অ্যাডাপ্ট করা হয়। তখন ১৯৭৩ সালের ‘বাংলাদেশ লজ (রিভিশন ও ডিক্লারেশন) অ্যাক্ট’-এ ‘পাকিস্তান’, ‘ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তান’ এবং ‘ইস্ট পাকিস্তান’ শব্দগুলো বাদ দিতে বলা হয়। কিছু আইনে তা বাদ দেওয়া হয়। তবে এখনও অনেক আইনে শব্দগুলো রয়ে যায়। যেমন: দ্যা ক্যাটল (প্রিভেনশন অব ট্রেসপাস) অর্ডিন্যান্স, ১৯৫৯, দ্যা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি অর্ডিন্যান্স, ১৯৬১; দ্যা অ্যাগ্রিকালচার ইউনিভার্সিটি অর্ডিন্যান্স, ১৯৬১; দ্যা অ্যাগ্রিকালচারাল পেস্টস অর্ডিন্যান্স, ১৯৬২; দ্যা ইনডিসেন্ট অ্যাডভার্টাইজমেন্টস প্রভিহিশন অ্যাক্ট, ১৯৬২; দ্যা সেন্সরশিপ অব ফিল্মস অ্যাক্ট, ১৯৬৩; দ্যা পাইলটেজ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এবং দ্যা গর্ভনমেন্ট লোকাল অথরিটি ল্যান্ডস অ্যান্ড বিল্ডিংস (রিকভারি অব পজেশন) অর্ডিন্যান্স, ১৯৭০ উল্লেখযোগ্য।
    এসব আইনে ‘পাকিস্তান’ শব্দ থাকা ১৯৭৩ সালের আইনের লঙ্ঘন বিধায় আইনজীবী মো. রবিউল আলম সম্প্রতি জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন।

  • আজ থেকে সাতক্ষীরায় প্রথম দফায় আম ভাঙা শুরু হলো

    আজ থেকে সাতক্ষীরায় প্রথম দফায় আম ভাঙা শুরু হলো

    সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় সরকারিভাবে পাকা আম ভাঙা শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা পৌরসভার কুকরালি গ্রামের ব্যবসায়ি মোকছেদ আলীর বাগানে এর উদ্ধোধন করা হয়।
    উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফতেমা তুজ জোহরা। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মঈনুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন, কৃষি কর্মকর্তা প্লাবনী সরকার, প্রথম আলোর স্টাফ রিপোর্টার কণ্যাণ ব্যাণার্জী প্রমুখ।
    প্রধান অতিথি বলেন, সাতক্ষীরার আম সুস্বাদু হওয়ায় দেশের গ-ি পেরিয়ে বিদেশে যাচ্ছে। যদি হিমসাগর আম আগে পাকে তাহলে আলোচনা সাপেক্ষে ভাঙার সরকারি তারিখ এগিয়ে আনা হবে।২০০ মেট্রিক টন আম বিদেশে পাঠানোর জন্য আদেশ পাওয়া গেছে। এ খবরের পর আরো আম বিদেশে যাবে। আমরা চাই সারা বাংলাদেশে এ আম পৌঁছে দিতে ও কৃষকের যাতে ক্ষতি না হয়।
    সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় চার হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। আম বাগান রয়েছে ৫ হাজার ২৯৯টি। আম চাষীর সংখ্যা ১৩ হাজার ১০০ জন। সাতক্ষীরার আম পঞ্জিকা অনুযায়ি আজ শুক্রবার (৫মে) প্রথম দফায় গোবিন্দ ভোগ, গোপাল ভোগ, সরাই খাস, গোলাপ খাসসহ স্থানীয় জাতের আম পাড়া শুরু করা হয়েছে। হিমসাগরের জন্য ১০ মে, ল্যাংড়ার জন্য ১৮ মে , আ¤্রপালি ২৮ মে দিন ধার্য করা হয়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে ২২৫ কোটি টাকার আম বিক্রি করা যাবে।
    আমচাষী কুকরালির গোলাম মোস্তফা, মোকছেদ আলী, বাগান মালিক লিয়াকত হোসেনসহ কয়েকজন জানান, সাতক্ষীরার বেলে দোঁয়াশ মাটি ও জলবায়ু আম চাষের উপযোগী। এখানকার আম সুস্বাদু। ২০১৪ সাল থেকে ফ্রান্স ও ইটালীসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আম রপ্তানি হচ্ছে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। আবহওয়ার কারণে এবার কালিগঞ্জ, দেবহাটার আম আগে থেকে পাকা শুরু করে। কিন্তু কৃষি বিভাগ প্রথম দফায় আম ভাঙার দিন ১২ মে ঘোষণা করে। পরে পরিস্থিতি অনুযায়ি আম পাড়ার চারটি দিন এগিয়ে আনা হয়েছে। তাপদাহ ও ঝড়বৃষ্টিতে আমের সামান্য ক্ষতি হয়েছে। বর্তমানে গোবিন্দ ভোগ ও গোপাল ভোগ মণ প্রতি ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে এ দাম ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা না হলে চাষী ও ব্যবসায়িদের ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে। এ পর্যন্ত রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে পাকানো ৭০ হাজার মণ অপরিপক্ক আম ভ্রাম্যমান আদালতে নষ্ট করেছে জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া হিমসাগর আম ভাঙার তারিখ ২৫ মে থেকে এগিয়ে না আনলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তবে এবারও হিমসাগর ও ল্যাংড়া আম বিদেশে যাবে।
    সাতক্ষীরার আম রপ্তানিকারক সংস্থা উত্তরণ এর সলিডেরেট শাখার কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নবম বারের মত হিমসাগর ও ন্যাংড়া আম এবার ১৬ অথবা ১৭ মে এর পর বিদেশে পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হবে। বর্তমানে ৫০ মেট্রিক টণ আম পাঠানোর চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
    সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন জানান, গোবিন্দভোগ আম পাড়ার মাধ্যমে উদ্বোধন করা হলো। আমরা চাই সাতক্ষীরার আম দেশ ও দেশের বাইরে পৌঁছে যাক।

  • সাতক্ষীরা আলোচিত শপিং ভ্যালী কোম্পানির বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ

    সাতক্ষীরা আলোচিত শপিং ভ্যালী কোম্পানির বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ

    স্টাফ রিপোর্টার:সাতক্ষীরার শপিং ভ্যালী ফুড প্রোডাক্ট কোম্পানির মালিক ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে দুদকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে এলাকাবাসী। চলতি মাসের ৩ এপ্রিল  প্রমাণপত্র সহ লিখিত অভিযোগ পাঠানো হয়েছে দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ নিকটে।
    অভিযোগকারীদের ভাষ্য মতে, অভিযুক্ত সবুজ হোসেন একজন সৌদি প্রবাসী। তার বিরুদ্ধে হুন্ডি ব্যবসা ও স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তার অবৈধ পন্থায় উপার্জনকৃত কালো টাকাকে বৈধ করার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় নামে মাত্র ব্যবসায়িক প্রতিষ্টান করছে। তার ধারাবাহিকতায় সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার তালা সদর ইউনিয়নের আটারই গ্রামে শপিং ভ্যালী ফুড প্রোডাক্ট নামের একটি প্রতিষ্টান গড়ে তুলেছে। শপিং ভ্যালী ফুড প্রোডাক্ট কোম্পানির নামে রয়েছে চা ব্যবসা, ঘি ব্যবসা, ও শপিং ভ্যালি নামে সেমাই কারখানা। মূলত এই সকল ব্যবসা লোক দেখানো মাত্র। সাতক্ষীরা তালা সদরের আটারই গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান মোড়লের ছেলে ইমরান হোসেন রিপন নামে এক ব্যক্তি ৬৭ লাখ টাকা নিয়ে প্রথমে ঘের ব্যবসা করে। ঘের ব্যবসায় প্রায় ৩০ লাখ টাকার বেশি লোকসান হয়। এত টাকা লোকশান হওয়ার পরেও কোন মাথা ব্যাথা নেই প্রবাসী ওই যুবকের নতুন ব্যবসার ফন্দি আঁকেন তিনি। 
     ২০২৩ সালে শুরু দিকে শপিং ভ্যালি লাচ্ছা সেমাই নামে একটি সেমাই কারখানা করেছে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যায়ে। বিনিয়োগের সমস্ত অর্থ আসে মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব থেকে। সৌদি প্রবাসী সবুজের সাতক্ষীরার তালা এলাকায় কয়েকজন ব্যক্তির সাথে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। মোবাইল ফোনে পরিচয় হওয়ার সুত্র ধরে প্রবাসী সবুজ ফোনের মাধ্যমে সমস্ত টাকা এখানে পাঠান। তার পাঠানো টাকা বাংলাদেশ সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে দেশে প্রবেশ করে থাকে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় কয়েক কোটি টাকা এখানে বিনিয়োগ করলেও প্রবাসী এই যুবক কখন তার চেহরা দেখায় না। এমন কি এখানে যারা ব্যবসা পরিচালনা করেন তারা কেউ কখনো সবুজের চেহরা দেখিনি। এখানে  সমস্ত ব্যবসা পরিচালনা করেন জহর আলী সরদার নামে এক ব্যক্তি।
    প্রবাসী লোকের সাথে পরিচয় হওয়ার পরে রাতারাতি পরিবর্তন ঘটেছে জহর আলী সরদারের। প্রবাসী শ্রমিকের বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার পরে প্রবাসী সবুজকে পর্দার আড়ালে নিয়ে সবুজের আপন বোন জেসমিন আক্তার লিপিকে প্রকাশ্যে এনে মালিক বানিয়েছে। জেসমিন আক্তার লিপি পেশায় গৃহিণী। এগৃহিণী হয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকা কোথায় পেলো এই প্রশ্ন ওই এলাকার জনসাধরণের। সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য উপাত্ত ও প্রমাণ সহ দুদকের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েছে এলাকাবাসী।
    এদিকে, দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ জানান, অভিযোগটি যাচায়বাছায় করে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা, অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের পৃথক দুটি মামলায়  হাবিবসহ চারজনের যাবজ্জীবন, ৪৪ জনের সাত বছর করে সশ্রম কারাদন্ড

    শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা, অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের পৃথক দুটি মামলায় হাবিবসহ চারজনের যাবজ্জীবন, ৪৪ জনের সাত বছর করে সশ্রম কারাদন্ড

    বিশেষ প্রতিবেদক : কলারোয়ায় তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের পৃথক দুটি মামলায় জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ চারজনের যাবজ্জীবন সশ্রমকারাদন্ড ও বাকী ৪৪ জনের সাত বছর করে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। দুটি মামলার একই রায় পৃথক পৃথকভাবে চলবে। সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মন্ডল মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টায় এক জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। তবে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আব্দুল কাদের বাচ্চু ও রিপনসহ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ৪৮ জনের মধ্যে ১৩ জন পলাতক রয়েছেন।
    বহুল আলোচিত এ মামলার রায় উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে ৩৪জন আসামীকে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল -৩ এর কাঠগোড়ায় হাজির করানো হয়। এ ছাড়া জামিনে থাকা অ্যাড. আব্দুস সাত্তার ব্যতীত অ্যাড. আব্দুস সামাদ, ইয়াছিন, কামরুল ও আখলাকুর রহমান শেলী আদালতে হাজিরা দেননি। সব মিলিয়ে এ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ১৩ জন পলাতক রয়েছে।
    মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিব (৪৫), উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আশরাফ হোসেন (৪৫), উপজেলার যুবদলের সভাপতি আব্দুল কাদের বাচ্চু (৪২), পৌর যুবদলের সাধারন সম্পাদক আরিফুর রহমান রনজু (৪০), উপজেলা মৎস্য দলের সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম(৪৬), সাবেক ছাত্রদলের সভাপতি রিপন (৩৫), বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক (৪৮), উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ তামিম আজাদ মেরিন (৪৫), উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল রকিব মোল্যা (৪৩), কলারোয়া পৌর সভার মেয়র বিএনপি নেতা গাজী আক্তারুল ইসলাম (৩৮), বিএনপি নেতা মফিজুল ইসলাম(৪৪), পৌর ছাত্র দলের সভাপতি আব্দুল মজিদ (৩০), বিএনপি নেতা অ্যাড. আব্দুস সামাদ (৫২), বিএনপি নেতা হাসান আলী (৪৫), উপজেলা কৃষকদলের সাধারন সম্পাদক ইয়াছিন আলী (৫৫), বিএনপি নেতা ময়না (৩৮), বিএনপি নেতা শিক্ষক আব্দুস সাত্তার (৫০), সাবেক উপজেলা ছাত্র দালের সভাপতি খালেদ মজ্ঞুর রোমেল (৪২), বিএনপি নেতা কলেজ শিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন সেন্টু (৫০), যুবনেতা মাজাহারুল ইসলাম (৪৫), বিএনপি নেতা আব্দুল মালেক (৩৮), বিএনপি নেতা আব্দুর রব (৪৬), উপজেলা কেরালকাতা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক জহুরুল ইসলাম (৪৩), যুগীখালী ই্উপি চেয়ারম্যান উপজেলা বিএপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক রবিউল ইসলাম (৫০), পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রসুল (৪৮), সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতা অ্যাড. আব্দুস সাত্তার (৫২), যুবদল নেতা রিংকু (৩২), যুবদল নেতা আব্দুস সামাদ (৪৮), বিএনপি নেতা আলাউদ্দীন (৩৪), যুবদল নেতা আলতাফ হোসেন (৩৮), উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি তৌফিকুর রহমান সনজু (৩৩), ছাত্র দলের সহ সভাপতি নাজমুল হোসেন (৩০), বিএনপি নেতা সাহাবুদ্দিন (৪৯), বিএনপি নেতা সাহেব আলী (৪৮), বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম (৫৫), যুবনেতা টাইগার খোকন (৩৮), যুব নেতা ট্রলি সহিদুল (৪২), বিএনপি নেতা কনক (৩৮), পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ কামরুল হোসেন (৫০), যুবদল নেতা মনিরুল ইসলাম (৩০), যুবদল নেতা ইয়াছিন আলী (৩৫), পৌর বিএনপির সহ সভাপতি আখলাকুর রহমান শেলী (৩২), বিএনপি নেতা শাহিনুর রহমান (৫২), বিএনপি নেতা বিদার মোড়ল (৪০), যুবদল নেতা সোহাগ হোসেন (২৮), বিএনপি সমর্থক মাহাফুজার রহমান মোল্যা (৩৮), জামায়াত কর্মী গফ্ফার গাজী (৪০),
    তবে এ মামলার ৫০ জন চার্জশীটভুক্ত আসামীর মধ্যে মাহাফুজুর রহমান সাবু ও জাভিদ রায়হান লাকি কারাগারে থাকাকালিন মারা গেছেন। নাজমুল হোসেন, মোঃ আলাউদ্দিন, আব্দুল কাদের বাচ্চু, রিপন, মফিজুল ইসলাম, খালেদ মঞ্জুর,রোমেল, মাজাহারুল ইসলাম, আব্দুল মালেক, রবিউল ইসলাম, অ্যাড, আব্দুস সামাদ, ইয়াছিন আলী, কামরুল ইসলাম ও শেলী পলাতক রয়েছেন।

    সকাল সোয়া ১০টায় বিচারক বিশ্বনাথ মন্ডল রায় পড়ে শোনান। রায়ে বলা হয় অস্ত্র আইনের এফ ধারায় বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, রঞ্জু ও পলাতক আসামী আব্দুল কাদের বাচ্চু, রিপন প্রত্যেককে জাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হলো। অপর ৪৪জন আসামীর প্রত্যেককে সাত বছর করে কারাদন্ড দেওয়া হলো। এ ছাড়া বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের তিন ধারায় বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, রঞ্জু ও পলাতক আসামী আব্দুল কাদের বাচ্চু, রিপন প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দণ্ডিত করা হলো। অপর ৪৪জন আসামীর প্রত্যেককে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হলো।
    রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড, মোহাম্মদ হোসেন, অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু, অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. সৈয়দ জিয়াউর রহমান প্রমুখ।
    আসামীপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাড. আব্দুল মজিদ (২), অ্যাড. মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাড. শাহানারা বকুল প্রমুখ।
    এ রায়ে খুশী বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ।
    তবে আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. শাহানার বকুল বলেন, এ রায়ে তারা খুশী নন। পূর্ণাঙ্গ রায়ের কাগজ হাতে পেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
    তবে রায় শোনার পর আসামীপক্ষের স্বজনরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখানোর সময় পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল ইসলাম চন্দন, মন্টুসহ চারজনকে আটক করে। তবে পুলিশ এ বিষয়ে কোন কথা বলতে চায়নি।

    মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সকাল ১০টার দিকে তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলদী গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে যশোরে ফিরে যাওয়ার পথে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে রাস্তার উপর জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও তৎকালিন সাংসদ হাবিবুল ইসলামের হাবিব ও বিএনপি নেতা রঞ্জুর নির্দেশে বিএনপি ও যুবদলের নেতা কর্মীরা দলীয় অফিসের সামনে একটি যাত্রীবাহি বাস(সাতক্ষীরা-জ-০৪-০০২৯) রাস্তার উপর আড় করে দিয়ে তার গাড়ি বহরে হামলা চালান। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, সাংবাদিকসহ ১০ জনকে মারপিট করা হয়।
    এ ঘটনায় কলারোয়া থানা মামলা না নেওয়ায় ২ সেপ্টেম্বর কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমাণ্ডার মোসলেমউদ্দিন বাদি হয়ে ২৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭০/৭৫ জনের নামে আদালতে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনা সঠিক নয় বলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। আদালত মামলা খারিজ করে দিলে বাদি জজ কোর্টে রিভিশন করেন। সেখানেও খারিজ হয়ে যায়। হাইকোর্ট ২০১৩ সালে ওই মামলা আমলে নেওয়ার নির্দেশ দেন। ২০১৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে এসে পৌঁছায়। ২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর শুনানী শেষ অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। ওই দিনই মামলাটি থানায় রেকর্ড হওয়ার পর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) শফিকুর রহমানকে তদন্তকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে সাড়ে ছয় মাস পর ২০১৬ সালের ৪ মে তিনি আদালতে ৫০ জনের নামে তিনটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরমধ্যে সিআরপি ১৫১/১৫ নং মামলায় ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি চার্জশীটভুক্ত ৫০জনকে চার থেকে ১০ বছর মেয়াদে সাজা দেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ হুমায়ুন কবীর।
    অপরদিকে সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল -৩ এ মামলার অপর দুটি অংশে অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের এসটিসি ২০৭/১৫, ২০৮/১৫ এর মামলায় ১৫ জন সাক্ষী দেন। স্বাক্ষী চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষে অবস্থানকারি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনিরকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফের সদর থ্নাার সাধারণ ডায়েরীর তদন্তে বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ১০জনের বিরুদ্ধে নন জিআর মামলা দায়ের করা হয়। যাহা আজো চলমান।
    ১২ এপ্রিল যুক্তিতর্ক শেষে আজ মঙ্গলবার সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মণ্ডল রায় এর জন্য দিন ধার্য করেন। এ দুটি মামলায় সম্প্রতি ইচ্চ আদালত থেকে অ্যাড. আব্দুস সাত্তার, অ্যাড. আব্দুস সামাদ, কামরুল ইসলাম, ইয়াছিন ও শেলী জামিনে মুক্তি পান। আজ অ্যাড. আব্দুস সাত্তার ব্যতীত বাকী চারজন আদালতে হাজিরা দেননি। ফলে সাজাপ্রাপ্ত ৪৮ জনের মধ্যে ১৩ জন পলাতক রয়েছে।
    আদালতের রায় ঘোষণার সময় জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক সংসদ একেএম ফজলুল হক, সাধারণ সম্পাক নজরুল ইসলাম, সহসভাপ৫তি সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাক আহম্মেদ রবিসহ অনেকেই উপস্থিত ছেলেন।#

  • ভেজাল কসমেটিকস বিক্রি করলে কঠোর ব্যবস্থা : ভোক্তা অধিকার মহাপরিচালক

    ভেজাল কসমেটিকস বিক্রি করলে কঠোর ব্যবস্থা : ভোক্তা অধিকার মহাপরিচালক

    অনলাইন ডেস্ক : কোন ভেজাল কসমেটিকস পণ্য উৎপাদন ও বিক্রি করলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের হুশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান।
    তিনি বলেন,‘ঈদকে সামনে রেখে বাজারে ভেজাল কসমেটিকস পাওয়া যাচ্ছে। এটা কোনভাবেই বিক্রি করতে দেওয়া হবে না।’ এ লক্ষ্যে আগামী রোববার থেকে বাজারে ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে তিনি জানান। 
    বুধবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে কসমেটিকস পণ্য আমদানিকারক, বাজারজাতকারি ও ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
    এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, সকল কসমেটিকস প্যাকেটজাত পণ্য। কিন্তু অনেকক্ষেত্রে মোড়কজাতকরণ বিধিমালা অনুসরণ করা হচ্ছে না। অন্যদিকে, বিদেশি কসমেটিকসের ক্ষেত্রে অনেক সময় আমদানিকারকের তথ্য থাকে না এবং আমদানিকারক খুরচা মূল্য (এমআরপি) প্রদান করেন না। অথচ সেটি উল্লেখ থাকা বাধ্যতামূলক। তিনি  আরও বলেন, আবার অনেক কসমেটিকস পণ্যে বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়, যা ভোক্তার ত্বকের ক্ষতি করছে। এই ধরনের কার্যকলাপের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীগণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে তিনি জানান।
    মহাপরিচালক জানান, ভেজাল কসমেটিকস পণ্য বিক্রির মাধ্যমে ভোক্তারা যেন প্রতারিত না হয়, সেজন্য আগামী রোববার থেকে কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে। কোন মার্কেটে নকল পণ্য ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট মার্কেটকে এর জন্য দায়ী করা হবে এবং বাজার সমিতির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
    তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ভেজাল কসমেটিকস পণ্য বিক্রি বন্ধে সুপারশপগুলো বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। 
    সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ীরা বৈধভাবে এবং সকল আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনার অঙ্গীকার করেন।
     

  • অধ্যক্ষ এড. এস এম হায়দারের সাথে ল স্টুডেন্টস ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের মতবিনিময়

    অধ্যক্ষ এড. এস এম হায়দারের সাথে ল স্টুডেন্টস ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের মতবিনিময়

    প্রেস বিজ্ঞপ্তি : ল স্টুডেন্টস ফোরামের প্রধান উপদেষ্টার সাথে ল স্টুডেন্টস ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
    ১ এপ্রিল শনিবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ও ল কলেজের অধ্যক্ষ এড. এস এম হায়দার এর নিজস্ব বাসভবনে এ মতবিনিময় করেন ল স্টুডেন্টস ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আলী। এসময় উপস্থিত ছিলেন, ল স্টুডেন্টস ফোরামের অন্যতম উপদেষ্টা এড. মুনির উদ্দীন, সভাপতি সালাউদ্দিন রানা, সহ-সভাপতি সদানন্দ সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বপ্না খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিলা সানজিদা অহিদ, অর্থ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির প্রমুখ। মতবিনিময়কালে প্রধান উপদেষ্টা এড. এস এম হায়দার বলেন, তোমরা কলেজের উন্নয়নে কাজ করবে। কলেজের উন্নয়নের স্বার্থে সকলে এক সাথে কাজ করতে পারলে কলেজের গতিশীলতা ফিরে আসবে। সাথে সাথে সংগঠনের মুখ উজ¦ল হবে।

  • জামিনের শর্ত ভঙ্গ করে এলাকায় নাশকতার পরিকল্পনা : যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি আকবর মাওলানা ছেলেসহ গ্রেপ্তার

    জামিনের শর্ত ভঙ্গ করে এলাকায় নাশকতার পরিকল্পনা : যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি আকবর মাওলানা ছেলেসহ গ্রেপ্তার

    নিজস্ব প্রতিনিধি : জামিনের শর্ত ভঙ্গ করে এলাকায় এসে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ইন্দ্রনগর গ্রামের আকবর মাওলানা ও তার ছেলে মহিবুল্লাহকে আবারো গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাদেরকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
    গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মাওলানা শেখ আকবর আলী(৭৫) কালিগঞ্জের নলতা ইউনিয়নের ইন্দ্রনগর গ্রামের শেখ জবেদ আলীর ছেলে। তার ছেলের নাম মহিবুল্লাহ শেখ (৪৬)।
    নলতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন জানান, কালিগঞ্জের ইন্দ্রনগরের শেখ জবেদ আলীর ছেলে শেখ আকবর আলী দীর্ঘদিন ইন্দ্রনগর -হুসাইনাবাদ ছিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ছিলেন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বপালনকালে তার বিরুদ্ধে চরম অনিয়ম ও দূণীতির অভিযোগ ওঠে। মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার অভিযোগে নিজেরই আত্মীয় দেবহাটার জগন্নাথপুরের রহমতুল্লাহ মোড়লকে ১৯৭১ সালের ২৫ সেপ্টেস্বর (৭ আশ্বিন , মঙ্গলবার) নলতা হাটে গুলি করেন আকবর মাওলানা। পরদিন সকালে তিনি মারা যান। কালিগঞ্জের ঈশ্বরদি গ্রামের আটা বিক্রেতা মাদার গাজীকে গুলি করে হত্য, পূর্ব নলতার খোকন মোড়লের বাবা আব্দুর রহমান ওরফে মেদু মোড়লকে গুলি করে তার হাত পঙ্গু করে দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে আকবর মাওলানা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
    ১৯৭১ সালের ৬ মে দুপুর ১২টার দিকে ইন্দ্রনগর মাদ্রাসার রাজাকার ক্যাম্প থেকে আকবর মাওলানার নেতৃত্বে জগন্নাথপুর ঘোষপাড়ায় নরেন্দ্রনাথ ঘোষকে গুলি করে লাশ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর তারা মাধব ঘোষ, শরৎ চন্দ্র ঘোষ, গোপীনাথ ঘোষ, হেমনাথ ঘোষ ও পাশের বাড়িতে বেড়াতে আসা বৈকারীর ওয়াজেদ আলী বিশ্বাস ওরফে সাবু মাষ্টারকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করেন আকবর আলী ও তার সহযোগীরা। লাশ ফেলে দেওয়া হয় পুকুরে। নরেন্দ্রনাথ ঘোষের অন্ত্বঃস্বত্বা স্ত্রী বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে বাধা দেওয়ায় তাকেও নির্যাতন করা হয়।
    আবুল হোসেন আরো জানান, ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলে আকবর মাওলানা আত্মগোপন করেন। এ সময় তিনি তার বেতন যথারীতি তুলেছেন। ২০১৩ সালে জামায়াত- বিএনপি’র সরকার বিরোধী নাশকতা চালানোর সময় আকবর মাওলানা আবারো প্রকাশ্যে আসেন। নাশকতা, হত্যা ও সরকারি বিরোধী কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগে আকবর মাওলানার বিরুদ্ধে ইন্দ্রনগরের সাংবাদিক আহাদ হোসেন বাদি হয়ে ১৭/১৪(কালিঃ), একই এলাকার আব্দুস সবুর বাদি হয়ে ১৮/১৪ ও সিরাজুল ইসলাম বাদি হয়ে ১৯/১৪ মামলা করে। এ ছাড়া আকবর মাওলানার বিরুদ্ধে হত্যা, নাশকতাসহ কালিগঞ্জ, সাতক্ষীরা সদর ও দেবহাটা থানায় কমপক্ষে ৫০টি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি আকবর মাওলানা ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরেন। এর পর শুক্রবার সকালে জামায়াত নেতা আব্দুল্লার মালিকানাধীন নলতা হাটখোলার শাহী বস্ত্রালয়ে বসে জামায়াতের নেতা কর্মীদের সঙ্গে বিশেষ আলোচনা শেষে ইন্দ্রনগর হুসাইনাবাদ জামে মসজিদে নামাজ আদায় করেন। বাদ আছর ইন্দ্রনগর মাঠের মসজিদে যান। সেখানেও বিশেষ আলোচনা সারেন তার সতীর্থদের সাথে। তিনি বিভিন্ন হাটে ও বাজারে যেয়ে জামাতের দলীয় কার্যক্রম মজবুত করছেন।
    দেবহাটা উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত রহমতুল্লাহ মোড়লের ছেলে গোলাম মোস্তফা জানান, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর (বাংলা ৭ আশ্বিন মঙ্গলবার) বিকেল চারটার দিকে তাকে সঙ্গে নিয়ে তার বাবা রহমতুল্লাহ মোড়ল নলতা হাটে যান। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা আনছারুল মাহমুদ নলতা হাটে সাতক্ষীরা – কালিগঞ্জ সড়কে চলমান একটি বাসে পাকিস্থানি সেনা সন্দেহে গ্রেনেড ছোঁড়েন। এতে কেউ হতাহত না হলেও আকবর মাওলানা ও আব্দুল হামিদ খানসহ কয়েকজন বিকেল ৫টার দিকে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে একত্রিত হয়ে নলতা হাট আক্রমণ করে। এ সময় কালিগঞ্জ উপজেলার ঈশ্বরদি গ্রামের আটা বিক্রেতা মাদার গাজীকে মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার অভিযোগে গুলি করে হত্যা করেন শেখ আকবর আলী । সেখান থেকে খাটিয়ায় করে বাবার লাশ বাড়িতে আনেন তিনি। সুবিধাজনক পরিবেশ না পাওয়ায় দীর্ঘ ৩৮ বছর যন্ত্রণা সহ্য করে তিনি ২০০৯ সালে শেখ আকবর আলীর বিরুদ্ধে মামলা (জিআর -৯২/২০০৯ কালিঃ) দায়ের করেন। যাহা বর্তমানে আইসিটি(বিডি)০৭/১৯। ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর থেকে তদন্ত শুরু হয়ে ২০২১ সালের ২৪ অক্টোবর শেষ হয়। ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর যুদ্ধাপরাধী মামলায় (০৭/১৯) কলারোয়ার জামাতার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার হন। ওই মামলার অপর আসামী ২০২২ সালের ৩১ মার্চ পূর্ব নলতা গ্রামের আব্দুল হামিদ খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
    গোলাম মোস্তফা আরো বলেন, আকবর আলীর বিরুদ্ধে মামলা করায় দেবহাটা উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার আব্দুল গণি খুশী হলেও পরবর্তীতে আকবর মাওলানার মেয়ের সঙ্গে আব্দুল গণির ছোট ছেলে কাইয়ুমের সঙ্গে বিয়ে হওয়ায় তিনি মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাকে চাপ দিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে কৌশলে সাতক্ষীরা কোর্টে ডেকে নিয়ে মামলা প্রত্যাহারের জন্য এফিডেফিটে সাক্ষর করতে বলায় তিনি পালিয়ে চলে আসেন। এ কারণে আব্দুল গণির সঙ্গে হাসনাবাদে মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিংএ গেলেও তার কাগজপত্র আর আলোর মুখ দেখতে দেননি আব্দুল গণি।
    এদিকে সাতক্ষীরা আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর কলারোয়া উপজেলার ব্রজবক্স গ্রামের জামাতার বাড়ি থেকে শেখ আকবর আলীকে গ্রেপ্তার করে আইনপ্রয়োগকারি সংস্থার সদস্যরা। জেলখানায়(হাজতী ৭৫৫/২১) স্পন্ডিলাইটিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০২০ সালের ২৭ জুলাই থেকে ওই বছরের ২২ আগষ্ট সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার কাগজপত্র দেখিয়ে ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর শেখ আকবর আলীর যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্রুনালে জামিন আবেদন করেন(০১/২২) আইনজীবী অ্যাড. মুজাহিদুল ইসলাম। চলতি বছরের ২৪ মার্চ জামিন শুনানীকালে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ব্যারিষ্টার রিজিয়া সুলতানা বেগম তার জামিনের বিরোধিতা করেন। অবশেষে আকবর আলীর শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে বিচারপতি মোঃ শাহীনুর ইসলাম, বিচারপতি মোঃ আবু আহম্মেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল ইসলাম তাকে জামিন দেন। জামিনদার হিসেবে ভাইপো ঢাকা মীরপুরের মোঃ কাঞ্চনের বাসায় থেকে অন্যত্র যাওয়া চলবে না, আসামী বা তাদের আত্মীয় স্বজন ইলেকট্রনিকস মিডিয়া বা প্রিন্ট মিডিয়ার সামনে কথা বলতে পারবে না, বাদি বা কোন সাক্ষীকে প্রভাবিত করতে পারবে না, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জামিনদারের সাথে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে হওয়া সহ জামিনে পাঁচটি শর্ত আরোপ করা হয়।
    সূত্রটি আরো জানায়, ২০১৩ সালের ২৭ অক্টোবর সকালে তারালী ব্রীজের পাশে রাস্তার উপর গুড়ি ফেলে ও নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে কালিগঞ্জের জাফরপুরের আনছার আলীর ছেলে আলমগীর হোসেন বাদি হয়ে আকবর আলী ও তার ছেলে মামুন বিল্লাহসহ ২৯জনের নাম উল্লেখ করে ওই দিনই থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে জিআর-২৯৯/১৩ মামলা করেন। বাবা ও ছেলেসহ ৩২ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিলের পর যাহা বর্তমানে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালতে বিচিারাধীন (এসটিসি-৬২/১৫)। ১৬ নভেম্বর জামিন পান আকবর আলী। ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ গঠণের দিন অন্য মামলায় জেলে থাকায় সময়ের আবেদন জানালে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ২০২১ সালের ১০ এপ্রিল অ্যাড. আশরাফুজ্জামান ও অ্যাড. মিজানুর রহমান পিন্টুর জামিন আবেদন শুনানীকালে বিরোধিতা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু। ওই দিন বিকেলে আকবর আলীর চিকিৎসার কাগজপত্র ও যুদ্ধাপরাধ মামলার জামিনের কাগজপত্র যাঁচাই করার পর তাকে ধার্য দিন ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ হাজার টাকা বণ্ডে অন্তবর্তীকালিন জামিন দেন বিচারক বিশ্বনাথ মণ্ডল। ইন্দ্রনগর গ্রামের এশারত আলী শেখের ছেলে ইউনুস শেখ জামিনদার হিসেবে সাক্ষর করেন।
    অপরদিকে ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কালিগঞ্জ থানার জিআর- ৩৩০/১৩ ও টিআর-৪৮০/১৫ নং বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় জামিন পান শেখ আকবর আলী। ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল ওই মামলায় পিডব্লিউ লাগানো হয়। ১০ এপ্রিল তা প্রত্যাহারের পরদিন জেল থেকে মুক্তি পান আকবর আলী।
    কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন রহমান জানান, যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী আকবর মাওলানা ও তার ছেলে মহিবুল্লাহকে গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর দক্ষিশণ শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাশে উপপরিদর্শক আশিষ কুমারের দায়েরকৃত ১৪ নং নাশকতার প্রস্তুতির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মোর্শেদ তাদেরকে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেন।

  • ট্রাম্প অভিযুক্তকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’, ‘নির্বাচনে হস্তক্ষেপ’ বলে নিন্দা করেছেন

    ট্রাম্প অভিযুক্তকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’, ‘নির্বাচনে হস্তক্ষেপ’ বলে নিন্দা করেছেন

    স্পোর্টস ডেস্ক: সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার একজন পর্ণ তারকাকে গোপনে অর্থ প্রদানের অভিযোগে অভিযুক্ত করার সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছেন। এই জন্য তিনি প্রসিকিউটর এবং তার রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
    তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং নির্বাচনী ট্রাম্প আরো বলেন, ‘এমনকি আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার আগেই উগ্র বাম ডেমোক্র্যাটরা এই দেশের কঠোর পরিশ্রমী পুরুষ ও মহিলাদের শত্রু এবং তারা একটি ‘উইচ-হান্টে’ লিপ্ত হয়েছে।’ 
    অভিযোগের খবর প্রকাশের কয়েক মিনিটের মধ্যে প্রকাশিত একটি পাঁচ অনুচ্ছেদের বিবৃতিতে  ট্রাম্প বলেন, আমি ২০২৪ সালের নির্বাচনে হোয়াইট হাউসে ফিরে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম।
    তিুিন বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা ‘ট্রাম্পকে পাওয়ার’ চেষ্টা করার আবেশে মিথ্যা বলেছে, প্রতারণা করেছে এবং চুরি করেছে, কিন্তু এখন তারা অকল্পনীয় কাজ করেছে । সম্পূর্ণ নির্দোষ ব্যক্তিকে নির্বাচনী হস্তক্ষেপের একটি কাজে অভিযুক্ত করেছে।’
    ‘একজন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আমাদের বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্রোপচার করা, যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রেসিডেন্ট হতে পারেন এবং এখন পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদে শীর্ষস্থানীয় রিপাবলিকান প্রার্থীর বিরুদ্ধে আগে কখনো এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি।
    ‘আমি বিশ্বাস করি যে এই ‘উইচ-হান্ট’ জো বাইডেনের উপর ব্যাপকভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবে,’ তিনি বেেলন।
    ট্রাম্প গত সপ্তাহান্তে তার প্রথম ২০২৪ সালের নির্বাচনী প্রচার সমাবেশ করেছিলেন এবং বলেছিলেন ‘আমরা জো বাইডেনকে পরাজিত করব, এবং আমরা এই কুটিল ডেমোক্র্যাটদের প্রত্যেককে অফিস থেকে বের করে দেব।’
    তার দ্বিতীয় পুত্র এরিকের ফোসকা স্যালভো যোগদান
    ‘এটি তৃতীয় বিশ্বের প্রসিকিউটরিয়াল অসদাচরণ’, এরিক টুইট করেছেন। ’এটি একটি প্রচারাভিযানের বছরে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার সুপরিকল্পিত ষডযন্ত্র।

  • তালায় অবৈধ সেমাই কারখানায় র‌্যাবের অভিযান

    তালায় অবৈধ সেমাই কারখানায় র‌্যাবের অভিযান


    সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: র‌্যাব-৬ সাতক্ষীরা কোম্পানির উদ্যোগে তালা উপজেলা সদরে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। 
    বুধবার বেলা ১১টায় র‌্যাব-৬ সাতক্ষীরার কোম্পানি কমান্ডার মেজর জে.এম. গালিবের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি চৌকস অভিযানিক দল তালা সদরের আটারই গ্রামে শপিং ভ্যালি লাচ্ছা সেমাই ফ্যাক্টরিতে অভিযান চালিয়ে ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আদায় ও ফ্যাক্টরির কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
    অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও এনডিসি বাপ্পি দত্ত রনি। অভিযানে বিএসটিআই’র পরিদর্শক রেজানুর রহমান সরকার, ও র‌্যাব-৬ সাতক্ষীরার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
    র‌্যাব-৬ সাতক্ষীরার কোম্পানি কমান্ডার মেজর জে.এম. গালিব বলেন, কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি। আজ জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শপিং ভ্যালি লাচ্ছা সেমাই ফ্যাক্টরিতে অভিযান চালিয়ে ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আদায় করা হয়েছে। জরিমানা দেয়া প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, বিএসটিআই লাইসেন্স না থাকার শর্তেও সেমাইয়ের প্যাকেটের গায়ে বিএসটিআই লগো ও ভূয়া নিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করার অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে। 
    এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও এনডিসি বাপ্পি দত্ত রনি জানান, কয়েকটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্যালি লাচ্ছা সেমাই ফ্যাক্টরিতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া বিএসটিআইয়ের নিবন্ধনের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন না করা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

  • তালায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী মোস্তফা বিশ্বাসকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার নির্দেশ

    তালায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী মোস্তফা বিশ্বাসকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার নির্দেশ


    রঘুনাথ খাঁ, ঃ যৌতুকের দাবিতকৃত টাকা ও সোনার গহননা না পেয়ে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্বামী মোস্তফা বিশ্বাসকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার দুপুর দেড়টায় সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এমজি আযম এক জনাকীর্ণ আদালতে এ আদেশ দেন।
    ফাঁসির দন্ডাদেশপ্রাপ্ত মোস্তফা বিশ্বাস(৪২) সাতক্ষীরার তালা উপজেলার চাঁদকাটি গ্রামের আমজাদ বিশ্বাসের ছেলে।
    মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০০৮ সালে তালা উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের আব্দুস সবুরের মেয়ে শিউলি খাতুনের সঙ্গে একই উপজেলার চাঁদকাটি গ্রামের আমজাদ বিশ্বাসের ছেলে মোস্তফা বিশ্বাসের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মোস্তফা বিশ্বাসকে যৌতুক হিসেবে ২০ হাজার টাকার মালামাল দেওয়া হয়। বিয়ের কয়েক মাস যেতে না যেতেই মোস্তফা ও তার বাবা আমজাদ বিশ্বাস বাপের বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা ও তিন ভরি সোনার গহনা আনার জন্য শিউলিকে চাপ সৃষ্টি করে। শিউলি বিষয়টি তার বাবাকে জানায়। বাপের বাড়ি থেকে টাকা ও সোনার গহনা আনতে না পারায় শিউলিকে নির্যাতন করতো স্বামী ও শ্বশুর। একপর্যায়ে শিউলি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বাড়িতে নিয়ে যান আব্দুস সবুর।
    মামলার বিবরনে আরো জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৬ জুলাই ভোরে মোস্তফা তার বাবা আমজাদ বিশ্বাসকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে যায়। এরপরপরই আব্দুস সবুর জামাতা, বেহাই ও মেয়েকে বাড়িতে রেখে বিনেরপোতায় একজনের কাছে টাকা আনতে যান। ওই দিন সকাল ৮টার দিকে ভাই আব্দুল গফুর মোবাইল ফোনে আব্দুস সবুরকে জানান যে, শিউলিকে ঘরের মধ্যে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর দরজায় শিকল তুলে দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় মোস্তফাকে আটক করেছে স্থানীয়রা। পুলিশ মোস্তফাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। তবে ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে শিউলিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় আব্দুস সবুর বাদি হয়ে জামাতা মোস্তফা বিশ্বাস ও বেহাই আমজাদ বিশ্বাসের নাম উল্লেখ করে ২০০৯ সালের ৪ আগষ্ট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ সালের সংশোধিত ২০০৩ এর ১১(ক)/৩০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। ৫৪ ধারায় কারাগারে থাকা মোস্তফা বিশ্বাসকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা তালা থানার উপপরিদর্শক লুৎফর রহমান ২০০৯ সালের ১৬ অক্টোবর এজাহারভুক্ত বাবা ও ছেলের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
    মামলার নথি ও ১০ জন সাক্ষীর জেলা এবং জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে আসামী মোস্তফা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে স্ত্রী শিউলি খাতুনকে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক এমজি আযম তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আমজাদ বিশ্বাসকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
    রায় প্রদানকালে আসামী মোস্তফা বিশ্বাস ও তার বাবা আমজাদ বিশ্বাস কাঠগোড়ায় হাজির ছিলেন। তবে আদালতের রায় ঘোষণার পর আসামী মোস্তফা বিশ্বাস চিৎকার করে বলেন যে, তিনি ন্যয় বিচার পাননি। একইভাবে ন্যয় বিচার পেতে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা বলেন মোস্তফা বিশ্বাসের চাচী হাসিনা বেগম ও বোন আসমা খাতুন।

    আসামীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাড. বশির আহম্মেদ।
    রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড. এসএম জহুরুল হায়দার বাবু।