Warning: Attempt to read property "post_content" on null in /home/dakshinermashalc/public_html/wp-content/plugins/pj-news-ticker/pj-news-ticker.php on line 202
সাতক্ষীরা Archives - Page 116 of 119 - Daily Dakshinermashal

Category: সাতক্ষীরা

  • জেলা প্রশাসকের সাথে জেলা সংবাদ পত্র পরিষদ নেতৃবৃন্দের মতবিনিময়

    জেলা প্রশাসকের সাথে জেলা সংবাদ পত্র পরিষদ নেতৃবৃন্দের মতবিনিময়

    নিজস্ব প্রতিনিধি: জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেনের সাথে মতবিনিময় করেছেন জেলা সংবাদ পত্র পরিষদের নেতৃবৃন্দ। গত মঙ্গলবার বিকালে জেলা প্রশাসকের অফিস কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলা প্রশাসক সংবাদ পত্র পরিষদের নবাগত নেতৃবৃন্দকে স্বাগত জানান এবং প্রেস এন্ড পাবলিকেশন এ্যাক্ট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন। মতবিনিময়কালে স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকবৃন্দ জেলা প্রশাসককে স্থানীয় পত্রিকার সুষম বন্টন, স্যাটেলাইটের অবৈধ বিজ্ঞাপন প্রচারসহ বিভিন্ন বিষয়ে অবহিত করেন। জেলা প্রশাসক বিষয়গুলি গুরুত্বসহকারে শোনেন এবং এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আশ্বাস প্রদান করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সংবাদ পত্র পরিষদের আহবায়ক ও দৈনিক দৃষ্টিপাত সম্পাদক জিএম নূর ইসলাম, দৈনিক কালের চিত্র সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, দৈনিক পত্রদূতের উপদেষ্টা সম্পাদক এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, দৈনিক দক্ষিণের মশাল সম্পাদক অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা সম্পাদক মহসিন হোসেন বাবলু, দৈনিক সাতনদী সম্পাদক হাবিবুর রহমান, সাপ্তাহিক সূর্যের আলো সম্পাদক আব্দুল ওয়ারেস খান চৌধুরী, সাপ্তাহিক মুক্ত স্বাধীন সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

  • নিলেখালিতে ৩দিনব্যাপি মহাশশ্মান কালী পূজা

    নিলেখালিতে ৩দিনব্যাপি মহাশশ্মান কালী পূজা

    নিজস্ব প্রতিনিধি: সদর উপজেলার আগরদাঁড়ী ইউনিয়নের নিলেখালী, নাজনেখালী, খানপুর সার্বজনীন মহাশশ্মান মন্দিরে ৩দিনব্যাপি মহাশশ্মান কালী পূজার আয়োজন করা হয়েছে। পূজা উপলক্ষ্যে আগামী ১৩এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১৫এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

    পূজার প্রথম দিন ১৩এপ্রিল সন্ধ্যায় ভগবত অনুষ্ঠান, দ্বিতীয় দিন সকালে মহামায়ার প্রসাদ বিতরণ, শেষ দিন ১৫এপ্রিল সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং রাতে প্রতিমা বিসর্জ্জনের মাধম্যে শেষ হবে ৩দিনব্যাপি এ মহাশশ্মান কালী পূজা।

    নিলেখালী, নাজনেখালী, খানপুর গ্রামবাসী ও যুব কমিটি আয়োজিত এসকল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলাম।

    বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আসাদুজ্জামান বাবু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব এস.এম শওকাত হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজান আলী, নিলেখালী, নাজনেখালী, খানপুর সার্বজনীন মহাশশ্মান মন্দির কমিটির সভাপতি বাবু দিপঙ্কর সরকার, সাধারণ সম্পাদক বাবু প্রভাস বিশ্বাস, আগরদাঁড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মজনুর রহমান, আগরদাঁড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান, আগরদাঁড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার আচার্য, শিবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত হোসেন, শিবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হোসনে, ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেন, ইউপি সদস্য ইব্রাহিম খলিল, ইউপি সদস্য আজহারুল ইসলাম প্রমুখ।

  • পুলিশের অভিযানে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীসহ আটক-৬৮

    নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় পুলিশের সন্ত্রাস, নাশকতা ও মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে বিএনপি-জামায়াতের দুই নেতা-কর্মীসহ ৬৮ জন আটক করা হয়েছে।
    গত বোরবার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সকাল পযর্ন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কিছু মাদকদ্রব্য। পরে বিভিন্ন অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
    আটককৃতদের মধ্যে, সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ২০ জন, কলারোয়া থানা থেকে ৬ জন, তালা থানা ৬ জন, কালিগঞ্জ থানা ১১ জন, শ্যামনগর থানা ১০ জন, আশাশুনি থানা ৭ জন, দেবহাটা থানা ৪ জন ও পাটকেলঘাটা থানা থেকে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
    সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান তাদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।

  • বধ্যভূমি সংরক্ষণের দাবীতে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান

    নিজস্ব প্রতিনিধি: একাত্তরের বধ্যভূমি সংরক্ষণের দাবীতে জেলা প্রশাসকের বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিট কমান্ড। সোমবার বিকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেনের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। বর্তমান সরকর একাত্তরের বধ্যভূমি/গণকবর চিহ্নিত করে সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী সংরক্ষণ ও স্মৃতি সৌধ/স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ১৯৭১ সালে সাতক্ষীরা শহরের সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে পাক হানাদার বাহিনী স্কুলে আশ্রয় নেয়া ভারতগামী শরনার্থীদের উপর অতর্কিত হামলা করে শত শত নারী পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধদের নৃশংসভাবে হত্যা করে। তাছাড়া অসংখ্য মানুষ এই হত্যাযজ্ঞে আহত হয়। পরবর্তীতে উদ্যোগের অভাবে উক্ত বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়নি। শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার যশোর সংলগ্ন সাতক্ষীরার অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র ঝাউডাঙ্গা বাজার ৭১ এর এপ্রিলের শেষে খুলনা অঞ্চল থেকে প্রাণভয়ে পালানো কয়েক শত শনণার্থী পরিবার ভারতে যাওয়ার পথে ঝাউডাঙ্গায় পৌছালে পাক-বাহিনী অতর্কিতভাবে নির্বিচারে গুলি করে শতাধিক নারী-পুরুষ হত্যা করে এবং অসংখ্য মানুষ আহত হয়। গণ হত্যা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। তাই এ মুহুর্তে দু’টি বর্ধ্যভুমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা প্রয়োজন। উল্লেখ্য সাতক্ষীরাবাসী গতকয়েক বছর ধরে এবং এ বছরে উক্ত বর্ধ্যভুমিতে নানাবিধ কর্মসুচি ও গণহত্যা দিবস পালন করেছে। ৭১ এর বর্ধ্যভুমি সংরক্ষণের দাবীতে জেলা প্রশাসকের বরাবর স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আহমেদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা কমান্ডার মোশারফ হোসেন মশু, ডেপুটি কমান্ডার আবুবক্কর সিদ্দিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ সরকার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব লায়লা পারভীন সেঁজুতি, সদস্য আব্দুর রহিম ও সদর উপজেলার সদস্য আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ।

  • লাবসা ইউপি চেয়ারম্যান কতৃক অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ

    নিজস্ব প্রতিবেদক: লাবসা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কতৃক প্রকল্পের কাজ না করে অর্ধকোটি টাকা পকেটস্থ করার পরও কোন ব্যাবস্থা না হওয়ায় জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
    জানা যায়, লাবসা ইউপি চেয়ারম্যান নাশকতা মামলার আসামি আব্দুল আলিম ও ইউপি সচিব আব্দুর রাজ্জাক ইউনিয়নের আওতাধীন বিনেরপোতা হাট ইজারা বাবদ ৩৭ লক্ষ ২৮ হাজার ৭২৩ টাকা এবং হাটবাজারের জন্য বরাদ্ধ হওয়ায় ১২ লক্ষ ১৫ হাজার ৮৮৮ টাকা পরিকল্পিতভাবে আত্মসাৎ করে নেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ অর্থ ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক বিধি বিধান অনুযায়ী ব্যয় করার কথা থাকলেও নিয়মের কোন তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন ভূয়া প্রকল্প দখিয়ে, একই কাজ বার বার দেখিয়ে, ভূয়া রেজুলেশন করে গত ১৩ জুন ২৩২৪০৭৪ নং চেকের মাধ্যমে ৩৭ লক্ষ ২৮ হাজার ৭২৩ টাকা উত্তোলন করেন। এঘটনায় দুর্নীতিবাজ ইউপি চেয়ারম্যান আলিমের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও জেলা প্রশাসকসহ উর্দ্ধতন মহলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু আজ অবধী অজানা কারণে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
    অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক আব্দুল লতিফ খান তদন্ত করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে যান এবং এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন।
    ইউপি চেয়ারম্যানের লুটপাটের ঘটনায় প্যানেল চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া বাবু বাদি হয়ে সাতক্ষীরা সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার পিটিশন- ১/২০১৮, স্মারক নং- ২৩৭৭, তাং-১৮মার্চ২০১৮। উক্ত আদালত মামলাটির তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দুর্নীতিদন দমন কমিশনকে নির্দেশ দেন।

  • প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বোরো ধানে বাম্পার ফলনের আশা

    নিজম্ব প্রতিনিধি: জেলার বিভিন্ন স্থানে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে মাঝে মাঝে বৈরী আবহাওয়া দেখে শঙ্কিত হয়ে পড়ছেন কৃষকেরা। সুষ্ঠুভাবে ধান ঘরে তুলতে পারবে, কি না জলপনা কল্পনার অন্ত নেই। জেলার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে ভিন্ন ভিন্ন সময় বোরো রোপন করা হয়। ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন স্থানে ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষকের মনে যথই শঙ্কা থাকুক না কেন মৃদু মনানন্দও কাজ করছে। কৃষক-কৃষাণীরা ব্যাস্থ হয়ে পড়েছে ধান উত্তোলনে। কৃষকদের সাথে সাথে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কামারাও। সদরের পরানদাহ কামার পাড়া ঘুরে দেখা গেছে কাঁচি তৈরীতে খুবই ব্যাস্ত সময় পার করছে কামাররা। অধিকাংশ কৃষক ধান কাটার জন্য যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। সদরের পরানদাহ বাজারের নিতাই কামার দিনে ৫০ টি করে কাঁচি তৈরী করেও ক্রেতা চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। ধান মাড়াই মেশিন তৈরীতেও ব্যস্ত কারিগররা। কারো মেরামত করোর নতুন তৈরী করে হিমশিম খাচ্ছে শ্রমিকরা। আবাদের হাটস্থ হাজী আব্দুল গফ্ফরের লেদে গিয়ে দেখা গেছে শ্রমিকরা ধান মাড়াই মেশিনে তৈরীতে খুবই ব্যস্ত তিনি। এখান থেকে প্রতি মৌসুমি ৫০Ñ৬০ টি ধান মাড়াই মেশিন তৈরী হয়।
    জেলায় ৭৬৩৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। রোপন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় কোন অসুবিধায় পড়েনি। কয়েকটি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে ফসলে সবুজ আর সোনালী রংয়ের সমারহ। কৃষক ব্যস্ত শেষ মূহুর্তের পরিচর্যায়। গত বছর ৭৪৪৩০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছিল ৩০৮৭৪২ মেট্রিক টন ধান। চলতি বছরে আবাদ বেশী হয়েছে। কৃষি অফিস বলছে, সুষ্ঠ ভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারলে ৭৩০৪২০ মেট্রিকটন উৎপাদন আশা করছি। সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় বেশী বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। সদরে ২৩৯২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। লোনা পানির প্রভাবে এবারও শ্যামনগরে অর্থাৎ ২১০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের আওতায় আনা হয়েছে। সদর উপজেলার বাখারঘোজ গ্রামের মনিরুল ইসলাম জানান, এ বছর কোন প্রকৃতিক দুর্যোগ না হলে বিঘা প্রতি ২৮ – ৩০ মণ ধান আশা করছি। সবার মুখে মুখে এখন বোরো ধানের ফলন ভাল হওয়ার গল্প। তবে শঙ্ক একটি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান জানান, এবার এখানো পর্যন্ত জেলায় বোরো ধানের ফলন ভাল লক্ষ্য করছি। আকাশের মাঝে মেঘের ঘনঘাটা দেখে একটু চিন্তিত। সুষ্ঠ ভাবে কৃষকের ঘরে ধান উঠলে আমাদের লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা করছেন তিনি।
    সদর উপজেরার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, এখনো পর্যন্ত ফলন ভাল আশা করছি। তবে এবার ধানে বিক্রয় বাজার যদি ভাল না থাকে তবে কৃষক অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যাবে।
    উপজেলার টেংরাভবানীপুর গ্রামের লিয়াকত হোসেন জানান, এই মৌসুমে ধান কাটা, বাঁধা শ্রমিক ব্যাপক সংকট দেখা দেয়। যদিও পাওয়া যায় তবে শ্রমিক মুজুরী বাজার ছাড়া অনেক বেশী। ধানের দাম ভাল পাওয়া গেলে খরচ পুশিয়ে লাভের আশা করা যায়।
    কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ফসলের ফলন ভাল হলে কৃষক খুশি হয়। কিন্তু কিছু আসাধু ব্যবসায়ীর করনে নায্য মূল্য থেকে কৃষক বরাবরই বঞ্চিত হয়। প্রশাসনের কোন হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা যায় না। কৃষকদের একটি দেশের প্রাণ বলা হয়। তাদের অধিক কষ্টের উৎপাদিত ফসলের নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত যাতে না হয় সে দিকে নজর রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান করছে কৃষকেরা

  • ক্ষুদে বিজ্ঞানীরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানী

    শহর প্রতিনিধি: জেলায় তিন দিনব্যাপি জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ, বিজ্ঞান মেলা এবং জাতীয় বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের উদ্বোধন করা হয়েছে। ‘মেধাই সম্পদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিই ভবিষ্যৎ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার বিকালে সাতক্ষীরা পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় বিজ্ঞান প্রযুক্তি যাদুঘরের তত্বাবধানে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা অফিস এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান মনষ্ক পাঠদানের মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে। শুধু পুথিগত শিক্ষা নয় বিশে^র বিভিন্ন দেশের সাথে তাল মিলিয়ে তাদের নতুন উদ্ভাবন ও সৃষ্টি সম্পর্কে জানতে হবে। আজকের এই ক্ষুদে বিজ্ঞানীরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানী তৈরী হবে।’
    জেলা শিক্ষা অফিসার এস.এম আব্দুল্লাহ আল-মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এনডিসি মোশারেফ হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিজ্ঞান সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রধান শিক্ষক সুকৃতি কুমার রায়, সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিসেস মনোয়ারা খাতুন প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন সহকারি জেলা শিক্ষা অফিসার অলোক কুমার তরফদার, নবজীবন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ শেখ রফিকুল ইসলাম, সাতক্ষীরা পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজের পরিচালক কামাল উদ্দিন ফারুকী প্রিন্স প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে তিনদিনব্যাপি ৩৯ তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ, বিজ্ঞান মেলা এবং জাতীয় বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড-২০১৮ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ। জেলা পর্যায়ে তিন দিনব্যাপি এ মেলায় ৪৪টি স্টল স্থান পেয়েছে। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাতক্ষীরা পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মীর রাফিউল ইসলাম।
    জেলা আইনজীবী
    জেলা আইনজীবী সমিতির নব-নির্বাচিত কমিটির অভিষেক
    নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির ২০১৮-১৯ সালের নব-নির্বাচিত কমিটির অভিষেক ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির ২নং ভবনে অভিষেক ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সদ্য বিদায়ী সভাপতি এ্যাড. শাহ আলম। সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. ওসমান গণির পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, নব নির্বাচিত সভাপতি এ্যাড. আবুল হোসেন-২, সহ-সভাপতি এ্যাড. গোলাম মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ান উল্লাহ সবুজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. জিয়াউল হক জিয়া, অর্থ সম্পাদক এ্যাড. জাহিরুল হক, ক্রীড়া সম্পাদক স ম মমতাজুর রহমান মামুন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ফেরদৌস লতা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বক্তারা নব নির্বাচিতদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, নব-নির্বাচিত কমিটি আইনজীবীদের অধিকার ও সম্মান রক্ষায় সচেষ্ট থাকবে। আদালতে বিচার চাইতে এসে কেউ যের প্রতারিত না হয় বিষয়ে সজাগ থাকার জন্য নব নির্বাচিত কমিটির নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।

  • জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস পালিত

    জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস পালিত

    সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে ৬ষ্ঠ জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এনডিসি) মোশারেফ হোসাইন। এসময় তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সাহসী পদক্ষেপে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের মডেল হতে চলেছে। ঠিক তেমনি ঘুরে দাঁড়িয়েছে চলচ্চিত্র অঙ্গনও। চলচ্চিত্র অঙ্গনের সকলের চ্যালেঞ্জ ছিলো আধুনিক প্রযুক্তি রপ্ত করা, ডিজিটাল পদ্ধতিতে সিনেমা নির্মাণ ও প্রদর্শন করা। বর্তমান সরকার তা করেছে।’
    জেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্য সচিব মোশফিকুর রহমান মিল্টনের সভাপতিত্বে চলচ্ছিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক কর্মী মঈনুল ইসলাম মঈন, আব্দুর রহমান, আশরাফুল ইসলামসহ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মীবৃন্দ।

  • কালিগঞ্জে দুই মটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত-২

    কালিগঞ্জে দুই মটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত-২

    কালিগঞ্জ প্রতিনিধি: কালিগঞ্জে দুটি মটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন।
    মঙ্গলবার সকালে কালিগঞ্জ-শ্যামনগর মহাসড়কের পিরোজপুর কাটাখালি নামকস্থানে এ দূর্ঘটনাটি ঘটে।
    দূর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, কালিগঞ্জ উপজেলার সোনাতলা গ্রামের আজগর আলির ছেলে নুর হোসেন(৩২) ও একই উপজেলার নীজদেবপুর গ্রামের মফিজউদ্দিনের ছেলে আব্দুল মান্নান সরদার(৫০)। আহতরা হলেন, তুহিন ও শান্ত নামের দুই মটর সাইকেল আরোহী।
    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নুর হোসেন বাড়ি থেকে বের হয়ে মটর সাইকেলযোগে সাতক্ষীরা শহর অভিমুখে আসছিলেন। পথিমধ্যে কালিগঞ্জ উপজেলার কাটাখালি নামকস্থানে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুত গামী আরেকটি মটরসাইকেলে তাদের মুখেমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নুর হোসেন ও মান্নান নিহত হন। এসময় আহত হন মটর সাইকেল আরোহী তুহিন ও শান্ত।
    সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সার্কেলের (এএসপি) ইমরান মেহেদী সিদ্দিকি জানান, মটর সাইকেল সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন। লাশ উদ্ধার করে কালিগঞ্জ থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছে। তিনি আরো জানান, আহতরা একই স্থানে চিকিৎসাধীন আছেন।

  • কাকডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবির গুলিতে আহত নজরুলের মৃত্যু

    শহর প্রতিনিধি: কাকডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবির গুলিতে আহত নজরুল ইসলাম একদিন পর মারা গেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খুলনার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
    কলারোয়ার কেড়াগাছি ইউপি চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন হাবিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তার বাড়ির লোকজন লাশ আনতে খুলনা গেছে। নিহত নজরুল ইসলাম(৩৫) তার ইউনিয়নের কাকডাঙ্গা গ্রামের আবদুর রকিবের ছেলে। সোমবার ভোরে বিজিবির গুলিতে আহত হন তিনি। পরে তাকে গোপনে খুলনায় নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।
    বিজিবির ৩৩ ব্যাটালিয়নের কাকডাঙ্গা বিওপি কমান্ডার সুবেদার সামসুল আলম জানান, সোমবার ভোরে ১০/১২ জনের একদল চোরাচালানি ভারতীয় শাড়ি নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছিল। বিজিবির টহল দলের সদস্যরা তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা বিজিবির ওপর পাল্টা আক্রমণ করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। এ সময় বিজিবি সদস্যরা এক রাউন্ড গুলি ছুড়ে তাদের প্রতিহত করে। তিনি বলেন, চোরাচালানিরা দুই গাঁইট ভারতীয় শাড়ি ফেলে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে রক্তের চিহ্ন ছিল বলে জানান তিনি। তবে কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন কিনা তা জানা যায়নি।

  • সাতক্ষীরা-৩ আসনে ভোটের চ্যালেঞ্জে তিন হেভিওয়েট প্রার্থী

    সাতক্ষীরা-৩ আসনে ভোটের চ্যালেঞ্জে তিন হেভিওয়েট প্রার্থী

    নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সুন্দরবন ঘেঁষা সাতক্ষীরা-৩ আসনে অন্যান্য দলে তেমন কোনো শক্তিশালী প্রার্থী নেই, তবে আওয়ামী লীগে দুজন ও বিএনপিতে একজন হেভিওয়েট প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পেতে কাজ করছেন। এরা হলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. রুহুল হক এমপি, নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি খুলনার উপাচার্য ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও এনাম মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (কার্ডিওলোজি) ডা. শহিদুল আলম। এই হেভিওয়েট তিন প্রার্থী ছাড়াও আওয়ামীলীগে বেশ কয়েকজন নতুন মুখের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে মাঠে তাদের অবস্থান নেই।

    একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-৩ আসনে (সম্প্রতি আশাশুনি-দেবাহাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত) বইতে শুরু করেছে ভোটের হাওয়া। এখনই জোরালোভাবে মাঠে না নামলেও নানাভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এই আসনের হেভিওয়েট নেতারা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির টিকিটে সম্ভব্য মনোনায়ন প্রত্যাশী কারা, প্রধানত তাদের নিয়েই মাঠপর্যায়ে চলছে জোর আলোচনা। নির্বাচন আরো ঘনিয়ে এলে বেড়ে যাবে এসব নেতার ব্যস্ততা ও প্রচার-প্রচারণা।

    জানা যায়, বারবার ভেঙ্গেছে আসনটি। সর্বশেষ ২০০৮ এর নির্বাচনে নতুন সীমানা নির্ধারণ অনুযায়ী আসনটি পুন:গঠিত হয়েছে। যুক্ত হয়েছে আশাশুনি উপজেলা ১১ টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলার ৫ টি এবং কালিগঞ্জ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন। তিন উপজেলার মোট ২০ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হলেও (বর্তমানে আশাশুনি-দেবহাটা নিয়ে পুন:গঠিত) সাতক্ষীরা ৩ আসন। এর আগে কেবলমাত্র আশাশুনি উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিল সাতক্ষীরা-৩। এ আসনে পর পর দুই বার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন দেশের প্রখ্যাত শৈল্য চিকিৎসক ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক।

    তিনি ২০০৮ সালে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে ৫ বছর সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে তার প্রচেষ্টায় সাতক্ষীরার বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে। বিশেষ করে তার প্রচেষ্টায় স্থাপিত হয়েছে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ। বেশ সুনামও কুড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তিনি তাঁর অর্জত সুনাম ধরে রাখতে পারছেন না বলে মনে করেন এলকার অনেকেই। গত ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি পুন:রায় এমপি নির্বাচিত হলেও মন্ত্রীত্ব পাননি। তবে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও ইউসুফ আব্দুল্লাহ’র নাম প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে। এবং তৃণমূলের নেতা-কর্মীদেরা আস্থা অর্জনের পাশাপাশি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়েও তার অবস্থান অনেকটা শক্ত।

    এদিকে ডা. শহিদুল আলম বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ব্যাপক চিকিৎসা সেবা দিয়ে সাধারণের মনোযোগ কেড়েছেন। এ কারণে সাতক্ষীরা-৩ আসনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তিনি আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হবেন বলে আশাবাদী। তিনি বলেন, বিভিন্ন হয়রানির কারণে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা মাঠে দাঁড়াতে পারছেন না। গত ঈদের সময় তার ঈদের শুভেচ্ছা পোস্টার পর্যন্ত ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এসবের মধ্য দিয়েই তিনি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, সাতক্ষীরাবাসী তার চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হয়নি, সামর্থ্য অনুযায়ী সেবা দেওয়ায় তার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। দল মনে করে, ওই আসনে তার কোনো বিকল্প নেই। তাই আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে অবশ্যই তিনি দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। নানান সংকটের মধ্য দিয়েও স্থানীয় নেতাকর্মীদের পাশে থেকে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি এমপি হতে পারলে নদী ভাঙন রোধ, কমিউনিটি ক্লিনিকে ছোট অপারেশনের ব্যবস্থা করা, ভোমরা স্থল বন্দরের আধুনিকায়ন ও সুন্দরবন অঞ্চলে অর্থনৈতিক অঞ্চর স্থাপন, উপজেলার সাব-সেন্টারগুলোকে পূণাঙ্গ হাসপাতালে রুপান্তর করা, বেড়িবাঁধ সংস্কার, সুন্দরবন পর্যন্ত চার লেনের মহাসড়ক নির্মাণ, ঢাকা থেকে সরাসরি সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেলযোগাযোগ স্থাপন, ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প স্থাপন, মেরিন ফরেস্ট এন্ড রিসার্স ইউনিভার্সিটি, আবাসিক সাতক্ষীরা বিশ^বিদ্যালয়সহ অবহেলিত আসনে জনগণের সঙ্গে থেকে উন্নয়নমূলক ও জনকল্যাণমূলক কাজ করবেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগে হেভিওয়েট দুজনের বাইরে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন সাবেক এমপি ডা. মোখলেছুর রহমান।

    নির্বাচনকে সামনে রেখে এ আসনে স্থানীয় নেতারা মাঠপর্যায়ে গিয়ে দলকে পুনর্বিন্যাস, বিগত দিনের ভুল বোঝাবুঝির অবসান এবং আন্তরিক হওয়ার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ডা. রুহুল হক এমপি, নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য খুলনার উপাচার্য ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও এনাম মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (কার্ডিওলোজি) ডা. শহিদুল আলম ও জনসংযোগ ও কর্মিসভা করছেন।
    অপরদিকে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা বলেন, বর্তমান এমপি ডা. রুহুল হক সাতক্ষীরায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এখন তার অনেক বয়স হয়েছে। সেজন্য নতুন প্রার্থী হিসাবে দেবাহাটা ও আশাশুনি অঞ্চলে আওয়ামী লীগ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ইউসুফ আব্দুল্লাহ’র আকাশচুম্বি যে জনপ্রিয়তা রয়েছে তাতে তাকে সাতক্ষীরা-০৩ নিবাচর্নী আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দিলে তার বিজয়ী হওয়া সুনিশ্চিত। তাই দেবাহাটা ও আশাশুনি অঞ্চলে আওয়ামী লীগের তৃণমূল ও সাধারণ মানুষ ইউসুফ আব্দুল্লাহকে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-০৩ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর দৃর্ষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

    তৃণমূল নেতা-কর্মীরা আরও বলেন, এখানে আওয়ামী লীগের কিছু রিজার্ভ ভোট রয়েছে। কিন্তু প্রার্থী নির্বাচনে দল সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে আসনটি হাতছাড়া হওয়ারও আশঙ্কা করছেন তারা। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে মরিয়া বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও এনাম মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (কার্ডিওলোজি) ডা. শহিদুল আলম। তিনি দেড় যুগ ধরে আশাশুনি-দেবাহাটা-কালিগঞ্জ নিয়ে গঠিত নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। পাড়া-মহল্লা ও গ্রামাঞ্চলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। খোঁজখবর নিচ্ছেন।

    এদিকে বর্তমান এমপি ব্যস্ত থাকায় তিনি ঘন ঘন এলাকায় গণসংযোগ করতে পারছেন না। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বলছেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য আমরা আবেদন করব। কিন্তু নেত্রী (শেখ হাসিনা) যা বলবেন তার ওপর আমাদের কোনো কথা নেই। নেত্রী যাকেই মনোনয়ন দেবেন, তার জন্য নির্বাচনে কাজ করতে ঝাঁপিয়ে পড়ব।’

    ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক বলেন, আমি পর পর দুই বার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর চারদলীয় সরকারের চেয়ে এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়ে দেশের জন্য এমডিজি পুরস্কারসহ বেশ কিছু ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার বয়ে এনেছি। দেশের স্বাস্থ্য সেবা সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো সক্রিয় করেছি। আজ মানুষ তার সুফল পাচ্ছে। আগামীতে এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। দলের হাইকমান্ড দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে আমার ইতিবাচক এসব কর্মকান্ডই বিবেচনা করে আমাকে মনোনয়ন দেন জনগণই আমাকে নির্বাচিত করবেন। তিনি আরও বলেন, নতুন কাউকে মনোনয়ন দিলে নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছি। তবে সাবেক এমপি ডা. মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘দলের জন্য এখনও কাজ করে যাচ্ছি। দল মনে করলে নির্বাচনে অংশ নেব। নৌকার বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখব।’

    ড. আবু ইউসুফ মো: আব্দুল্ল¬াহ বলেন, সাতক্ষীরার মাটিতেই তার জম্ম। লেখাপড়ার কারণে সাতক্ষীরার বাইরেও থাকতে হয়েছে। এখন সুযোগ হয়েছে এলাকার ফিরে মানুষের জন্য কিছু করার। এলাকার মানুষের পাশে থেকে তরুণ প্রজন্ম, গ্রাম্য-অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, দারিদ্র বিমোচন, শিক্ষাকে গ্রামমূখী করা, শিক্ষার ডিজিটাইলেশন করা এবং সততা ও পরিশ্রমের ভিতরেই নতুন প্রজন্মকে উদ্ভাসিত করা, উদ্বেলিত করা ও অনুপ্রাণিত করা জরুরী বলেও মনে করেন। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড মনে করলে আমাকে মনোনয়ন দিবেন। মনোনয়ন পেলে আমি জনগণের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে সাতক্ষীরার প্রধান সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করবো। এছাড়াও জনকল্যাণসহ সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন তিনি।

  • সাতক্ষীরার ১২০ কিলোমিটার সীমান্ত জুড়ে পাচার হয়ে আসছে ভারতীয় ফেনসিডিল

    ভোমরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার ১২০ কিলোমিটার সীমান্ত জুড়ে স্থলপথ ও নদীপথ সীমান্তের বিভিন্ন চোরাই পয়েন্ট দিয়ে ফেনসিডিলের বড় চালান ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে। বাংলাদেশে ঢুকে পড়া ফেনসিডিলের চালান গুলো সড়ক পথে বাধাহীন ভাবে নির্বিঘেœ সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে।

    প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ভারত থেকে পাচার হয়ে আসা মাদকের চালানগুলো চোরাকারবারীরা বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের মাধ্যমে সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌছে দিচ্ছে। মাদকের ছোট চালানগুলো চেকপোষ্ট বা প্রশাসনের তল্লাসিতে মাঝে মধ্যে ধরা পড়লেও বড় আকারের চালানগুলো অধরা রয়ে যায়। এসব বড় চালান যানবাহনে মালিক, চালক ও পাচারকারী সমন্বিত চুক্তিতে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌছে যায়।

    এবং শেষ পর্যন্ত সেসব চালান ধরা ছোয়ার বাইরে চলে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমান্ত শহর সাতক্ষীরা সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী যানবাহনগুলোর মধ্যে বেশ কিছু যানবাহন ফেনসিডিল পাচারে সরাসরিভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব যানবাহন ও পরিবহন ব্যবসার আড়ালে মালিকের জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বড় অংকের অর্থ চুক্তির মাধ্যমে ফেনসিডিলের বড় চালান বহন করে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে মাদক পাচারে চালকরা গাড়ীতে বিশেষ যোগান করে রাখে অথবা প্রয়োজনে গাড়ী কোন একটি যন্ত্রাংশ খুলে সেখানে ফেনসিডিল ভর্তি করে পুনরায় ওয়েল্ডিং করে দিয়ে বুঝে নেওয়ার কোন চিহ্ন না রেখেই নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছে ফেনসিডিলের পাইকারী ক্রেতাদের হাতে হস্তান্তর করে।

    এসব যানবাহনে এমন কৌশলে ফেনসিডিল বহন করা হয় যা প্রশাসনের ধরাছোঁয়ার বাইরে। সড়ক পথে ফেনসিডিল পরিবহনের ক্ষেত্রে ঢাকায় যাতায়াতকারী পাইভেটকার, মাইক্রো গাড়ী স্থল বন্দরের পণ্যবাহী ট্রাকেই সবচেয়ে বেশী ফেনসিডিল পাচার হয় বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়। অনেক সচেতন ব্যক্তি এখন সাতক্ষীরা-ঢাকা যাতায়াতে বিশেষ করে প্রাইভেটকার বা মাইক্রো ভাড়া করতে খুবই দ্বিধায় পড়ে যান।

    কেননা এসব যানবাহনের কোন কোন চালক সাতক্ষীরা-ঢাকার উদ্দেশ্যে গাড়ী ভাড়া হলেই সঙ্গে সঙ্গে তাদের মধ্যে চুক্তিবদ্ধ মাদক ব্যবসীদের কাছে গিয়ে ফেনসিডিল ভরে নিয়ে ভাড়ার লোকদের নিয়ে যাত্রা করে।

    সেক্ষেত্রে কখনো মাদকের চালান আটক হলে নিরাপরপাধ যাত্রীদের মাদক পাচার অভিযোগের ফেঁসে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এদিকে সীমান্তের একাধিক গোপন সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরার দেবহাটা থানার অন্তর্গত শাঁখরা কোমরপুর সীমান্ত নদী পথ দিয়ে ভারত থেকে পাচার হয়ে আসছে মাদকের বড় চালান।

    সীমান্ত নদী ইছামতীতে নৌকাযোগে হাজার হাজার ফেনসিডিলের কার্টুন নির্বিঘেœ পাচার হয়ে আসছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদকের অবাধ চোরাচালান। সাতক্ষীরার চিহ্নিত শীর্ষ চোরচালানিরা এই সীমান্ত নদীপথ ব্যবহার করছে।

  • জেলায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু

    জেলায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু

    ডেস্ক রিপোর্ট: জেলার এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে শুরু হলে বেশ কিছু জায়গায় অনুপস্থিতির ঘটনা ঘটেছে। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সারাদেশের ন্যায় সাতক্ষীরায় আজ সোমবার সকাল ১০ টা থেকে শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমনা পরীক্ষা। পরীক্ষা চলবে দুপুর ১ টা পর্যন্ত। জেলায় এবার ৩৮ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ১৯ হাজার ৬১৭জন পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহন করেছে। এদিকে, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসমুক্ত, ফাঁসের গুজবমুক্ত এবং সুষ্ঠ ও সম্পূর্ন নকলমুক্ত করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করেছে জেলা প্রশাসন। তবে, প্রশপত্র ফাঁস ও নকল আতঙ্কে উদ্বিগ্ন অভিভাবক মহল।
    এবার শুধুমাত্র সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৮ টি কেন্দ্রে ৫ হাজার ৬১৫ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহন করছে। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সরকারী কলেজ কেন্দ্রে ১ হাজার ৮৩জন, সরকারী মহিলা কলেজে ১ হাজার ৭৬২ জন, সিটি কলেজে ৮০৩ জন, দিবা-নৈশ কলেজে ৩৫০জন, ভালুকা চাঁদপুর কলেজে ২৬৬ জন, আলিয়া মাদ্রাসায় ৩৮৬ জন, পিএন স্কুল এন্ড কলেজে ৮৬২ জন ও সরকারী টেকনিক্যাল কলেজে ১০৩ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহন করছে।
    সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন জানান, নকল ও প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধে যা যা করা দরকার সব করা হযেছে। পরীক্ষার নীতিমালা অনুযায়ী পরীক্ষা না নিলে কেন্দ্র বাতিলের সুপারিশ করা হবে। তিনি আরো জানান, বিষয় ভিত্তিক কোন শিক্ষক যাতে পরীক্ষার কক্ষ পরিদর্শন করতে না পারে তার জন্য সকল কেন্দ্র সচিবকে জানানো হয়েছে।
    দেবহাটা প্রতিনিধি জানান: দেবহাটায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে শুরু হওয়া ১ম দিনের পরীক্ষা নকলমুক্ত, সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় শুরু বেলা ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রথম দিনের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৭৬১ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ৫ জন। এর মধ্যে দেবহাটার সখিপুর খানবাহাদুর আহছান উল্লা কলেজ কেন্দ্রে ১৯১জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে একজন অনুপস্থিত ছিল। হাজী কেয়ামউদ্দীন মেমোরিয়াল মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ৪৩২জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২জন অনুস্থিত ছিল। দেবহাটা কলেজ কারিগরি (ভোকাশনাল) কেন্দ্রে ১৩৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ২জন। প্রথম দিনের পরীক্ষা নকলমুক্ত ও সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজ-আল-আসাদ, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হাই রকেট প্রতিটা কেন্দ্রে যেয়ে তদারকি করেন। পরিদর্শন কালে নির্বাহী কর্মকর্তা হল সুপার, সহকারী হল সুপার, পরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পরীক্ষাগুলো সুন্দর ও সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেন।
    কলারোয়া প্রতিনিধি জানান: কলারোয়ায় সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশ এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আজ ২ এপ্রিল সোমবার পরীক্ষার প্রথমদিনে অনুপস্থিত ছিলো ৩২জন পরীক্ষার্থী।এইচএসসি, এইচএসসি (বিএম) ও আলিম পরীক্ষায় কলারোয়া সরকারি কলেজ, বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ, শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রি কলেজ ও আলিয়া মাদরাসা কেন্দ্রে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত ও অনিয়মিত মিলে মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ৩০২৮ জন। এর মধ্যে প্রথম দিনে নিয়মিত পরীক্ষার্থী ছিলো ২৯৪৮জন। অংশ নেয় ২৯১৬ জন পরীক্ষার্থী। উপজেলার মোট ১১টি কলেজ থেকে অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো এইচএসসিতে ১৬জন ও এইচএসসি (বিএম)-এ ১৬ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে বিএম শাখায় সকাল সেশনে দ্বাদশ শ্রেণীর ও বিকেল সেশনে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন কেন্দ্রে সূত্রে জানা গেছে- কলারোয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে নিয়মিত ও অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর মোট সংখ্যা ৪৮৮জন। তাদের মধ্যে ৮০জন অনিয়মিত পরীক্ষার্থী। ফলে প্রথম দিনের নিয়মিত পরীক্ষার্থী ছিলো ৪০৮জন।বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ৮৩০জন। অনুপস্থিত ছিলো ১১জন।শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রি কলেজ কেদ্রে মোট এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলো ২৯২জন। অনুপস্থিত ছিলো ৫জন। আর বিএম পরীক্ষায় সকাল সেশেনে (দ্বাদশ শ্রেণি) পরীক্ষার্থী ছিলো ৪৯৭জন। অনুপস্থিত ছিলো ৬জন। সেখানে বিকালে সেশেনে বিএম পরীক্ষায় (একাদশ শ্রেণি) মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ৪৭০জন।আলিয়া মাদরাসা কেন্দ্রে বিএম পরীক্ষার সকাল সেশনে (দ্বাদশ শ্রেণি) মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ২২৪জন। অনুপস্থিত ছিলো ১জন। বিকেল সেশনে বিএম পরীক্ষায় (একাদশ শ্রেণী) মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ২২৭জন। অনুপস্থিত ছিলো ৯জন।এদিকে, পরীক্ষা শুরু ত্রিশ (৩০) মিনিট পূর্বে পরীক্ষার্থীরা স্ব স্ব কেন্দ্রে প্রবেশ করে। উপজেলার সব কেন্দ্রে নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা কেন্দ্রে বিভিন্ন কক্ষ পরিদর্শন করে সার্বিক পরিবেশে সন্তোষ প্রকাশ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মনিরা পারভীন। আইন-শৃংখলা বাহিনী, কক্ষ পরিদর্শকসহ পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা সকলে ছিলো অত্যন্ত সতর্কতায়। দরগাহপুর প্রতিনিধি জানান: দেশের সকল স্থানের ন্যায় দরগাহপুর কলেজিয়েট বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুটি ভেনুতে গত কাল সোমবার শান্তিপূর্ণ ভাবে এইচ এস সি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যে সকল কলেজ পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করছেন তারা হলেন বড়দল আফতাব উদ্দীন স্কুল এন্ড কলেজ হতে ১৭৭ জন, শালিখা কলেজ হতে ১৮৬ জন ও দরগাহপুর কলেজিয়েট বিদ্যালয় হতে ৪৭২ জন। সর্বমোট-৮৩৫ জন ছাত্র-ছাত্রী অত্র কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করছে। তার মধ্য হতে অনুপস্থিত-৪ জন। পরীক্ষায় হল সুপারের দায়িত্ব পালন করছেন মোহাম্মদ আলী, ভেনু হল সুপার মাহবুবার রহমান ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গৌরপদ মন্ডল। পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির দায়িত্বে আছেন সহকারী অধ্যাপক বিশ্বজিৎ রায়, প্রভাষক শাহাবুদ্দীন মোড়ল, সুশান্ত কুমার বিশ্বাস, রবিউল ইসলাম ও মনিরুজ্জামান। পরীক্ষা চলাকালীন সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাফফারা তাসনীন, বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট দেওয়ান আকরামুল হক, যশোর শিক্ষা বোর্ডের ভিজিলেন্স অফিসার বিজন কুমার মিত্র, ইউ এন ও প্রতিনিধি ভেটেনারী সার্জেন ডাঃ মিজানুর রহমান ও পল্লী দারিদ্র বিমোচন কর্মকর্তা এ বি এম ফিরোজ আহম্মেদ পরীক্ষা চলাকালীন সময় পরিদর্শন ও দায়িত্ব পালন করছেন। অত্র কেন্দ্রে শান্তি-শৃঙ্খলা ও নকল মুক্ত ভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

  • সামান্য বাতাসেই নেই হয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ!

    সামান্য বাতাসেই নেই হয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ!

    মো. মুশফিকুর রহমান রিজভি: একটু বৃষ্টি শুরু হলে কিংবা একটু জোরে বাতাস হলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ থাকে বিদ্যুৎ সংযোগ। পৌরসভায় মাঝে মাঝে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা দেখা গেলেও ইউনিয়নের অবস্থা আরো বেগতিক। একবার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হলেই ১০-১২ ঘণ্টা আর বিদ্যুতের দেখা মেলে না।

    গত ১ এপ্রিল সন্ধ্যার পর আকাশ একটু মেঘাচ্ছন্ন সাথে একটু জোরে বাতাস হতেই বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সংযোগ। জেলার পৌরসভার আওতাভুক্ত এলাকায় রাতে কয়েকবার বিদ্যুৎ লুকোচুরি খেলা করলেও স্থায়ীভাবে থাকেনি বেশিক্ষণ।

    অন্যদিকে ইউনিয়নগুলোতে সন্ধ্যার পরেই বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সংযোগ। পরে সারা রাত আর দেখা মেলেনি বিদ্যুতের। বিদ্যুতের দেখা মিলেছে পরদিন (২ এপ্রিল) সকাল ৯ টার পর।

    এব্যাপারে বিদ্যুৎ অফিস সংশ্লিষ্টদের মত, প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে বিভিন্ন স্থানে লাইনের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছিল। সেগুলো মেরামত করে সংযোগ পুনরায় চালু করতে গিয়ে দেখা দিয়েছে এ বিদ্যুৎ বিভ্রাট। প্রাকৃতিক দূর্যোগ ব্যাতিত অন্য সময়ে নিয়মিত লোডশেডিং এর ব্যাপারে জানতে চাইলে তাদের মন্তব্য, এখন আর আগের মত বেশি লোডশেডিং হয় না। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ একটু কম থাকার কারণে এরূপ লোডশেডিং হয়।

    কিন্তু জনসাধারণের বক্তব্য ভিন্ন, তারা বলছেন, গ্রীষ্মকাল আসতে না আসতেই শুরু হয়ে গেছে লোডশেডিং। বিদুতের এমন লুকোচুরি খেলায় চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জেলাবাসীকে। গত ১ এপ্রিলের এরূপ বিদ্যুৎ বিভ্রাটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে এইচ.এস.সি ও সমমানের পরীক্ষার্থীরা। গতকাল থেকে শুরু হয়েছে এইচ.এস.সি ও সমমানের পরীক্ষা। প্রথম পরীক্ষার আগের দিন এরূপ বিদ্যুৎ বিভ্রাটে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে তাদের পরীক্ষা প্রস্তুতি।

    এব্যাপারে এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থী নাজরাণ হোসেন রকি বলেন, সারা রাত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় কাক্সিক্ষত পরীক্ষা প্রস্তুতি নিতে ব্যর্থ হয়েছি। আরেক পরীক্ষার্থী তাজিম হাসান শাওন বলেন, চার্জার লাইটে পরীক্ষা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম কিন্তু চার্জার লাইটের চার্জ ২-৩ ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। সন্ধ্যা থেকেই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে পরীক্ষা প্রস্তুতি সন্তোষজনক হয়নি।

    বিদুতের এমন লুকোচুরিতে শুধু শিক্ষার্থীরাই নয় সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রেস ব্যবসায়ী, কলকারখানা, বেকারীসহ সকলপ্রকার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ও সর্বস্তরের জনসাধারণ। এমন লোডশেডিং এর কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা খাদ্যদ্রব্য।

    এব্যাপারে কদমতলা বাজারের ব্যাবসায়ী আশরাফুজ্জামান বলেন, সামান্য মেঘ-বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে এটা এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে আমাদের ব্যাবসায়ীদের জেনারেটরের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, বর্তমান সরকার দেশের উন্নয়নকে তরান্বিত করছে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভ্রাট সরকারের সকল উন্নয়নকে ম্লান করে দিচ্ছে।

    এব্যাপারে সাতক্ষীরা বিদ্যুৎ সরবারাহ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানের কাছে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, গত ১ এপ্রিল প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ সাময়িক বন্ধ ছিল। প্রাকৃতিক দূর্যোগ না থাকলেও প্রতিনিয়ত সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সন্ধ্যার পর বিদ্যুতের চাহিদা বেশি থাকে। বিদ্যুৎ সরবরাহের চেয়ে চাহিদা বেশি থাকার কারণে সৃষ্টি হয় এরূপ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের।

    রাতভর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার ব্যাপারে কালিগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার তুষার কান্তি মন্ডলের সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ ছিল। প্রাকৃতিক দূর্যোগ ব্যাতিত অন্য সময়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন আর আগের মতো লোডশেডিং থাকেনা। পিক আওয়ারে সামান্য লোডশেডিং থাকে।

    গত ১ এপ্রিল রাতের বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য আবহাওয়াকে দায়ী করছেন ঝাউডাঙ্গা বিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জিয়াউর রহমান। তার মতো পাটকেলঘাটা বিদ্যুৎ অফিসের জেনারেল ম্যানেজারও প্রাকৃতিক দূর্যোগকে দায়ী করছেন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য। নিয়মিত লোডশেডিং এর ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বলেন, লোডশেডিং এখন আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। এ লোডশেডিং এর পেছনে বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি দায়ী কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ একটু তো কম আছেই। তবে এখন বিদ্যুৎ বিভ্রাট অনেক কমে গেছে।

  • বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে স্থানীয় সরকার পরিষদকে সম্পৃক্ত করতে হবে

    বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে স্থানীয় সরকার পরিষদকে সম্পৃক্ত করতে হবে

    শহর প্রতিনিধি: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঝুঁকির মুখে থাকা সাতক্ষীরার উপকূলীয় বাঁধ দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছে জলবায়ু পরিষদ। একই সাথে বাঁধের সাবেক নকশা পরিবর্তন করে আর এল ৪ দশমিক ২০ এর স্থলে ৫ দশমিক ২৭ করারও দাবি জানিয়েছে পরিষদ। তারা বলেন, বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে স্থানীয় সরকার বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদকেও সম্পৃক্ত করতে হবে।
    গত সোমবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি তুলে ধরেন পরিষদ কর্মকর্তারা। তারা বলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় উপকূলীয় বাঁধের দৈর্ঘ্য ১৩৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ৩০ কিলোমিটার। ২০০৯ সালের আইলার আঘাতে বারবার ক্ষতিগ্রস্থ এসব বাঁধ যে কোনো মুহুর্তে ভেঙ্গে গিয়ে প্লাবিত করতে পারে বিস্তীর্ন জনপদ। তারা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে সাতক্ষীরা অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড় প্রায়ই আঘাত করে। এসব দূর্যোগে সাগর হয়ে ওঠে উত্তাল। জোয়ারের পানি বেড়ে প্রবল ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। ফলে প্রধান রক্ষাকবচ উপকূলীয় বাঁধ নাজুক অবস্থায় থাকায় সম্পদ ও জীবন রক্ষা কঠিন হয়ে পড়ে।
    সংবাদ সম্মেলনে পরিষদ কর্মকর্তারা আরও জানান, উপকূলীয় বাঁধের ৫ নম্বর পোল্ডারের আওতায় ঘোলা, বিড়ালাক্ষি, কুপট, পূর্বদূর্গাবাটী, ভামিয়া, নীলডুমুর, দাঁতিনাখালি, কালিকাপুর, হরিনগর, সিংহরতলী, চুনকুড়ি, জ্যোতিন্দ্রনগর, পারশেখালি, টেংরাখালী ও কৈখালি গ্রাম মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এছাড়া ১৫ নম্বর পোল্ডারের আওতায় ডুমুরিয়া, চকবারা, জেলেখালি, লেবুবুনিয়া, পারশেমারি, নাপিতখালি, চাদনীমুখা, গাবুরা গ্রাম এর বাঁধ যেকোন সময় ভেঙে যেতে পারে। একই অবস্থায় রয়েছে পদ্মপুকুর ইউনিয়নের সবগুলি গ্রাম। সেখানকার বাঁধ মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা।
    কর্মকর্তারা বলেন, দুর্যোগকালে ক্ষতিগ্রস্থ জনগণ প্রথমেই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বরদের সহযোগিতা চায়। কিন্তু তাদের হাতে যথেষ্ট অর্থ না থাকায় সমস্যার সমাধান করতে হিমশিম খেতে হয়। এমন অবস্থায় উপকূলীয় বাঁধের রক্ষনাবেক্ষনকারী পানি উন্নয়ন বোর্ড ‘বরাদ্দ নেই’ এই অজুহাত দিয়ে বাঁধ নির্মাণ থেকে বিরত থাকে। ফলে জনগনের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। এমন অবস্থায় স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ নির্মান সংস্কারের সাথে যুক্ত করা গেলে জনগনের ভোগান্তির লাঘব হতে পারে। এসব বিষয় সামনে রেখে তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের হাতে বাঁধ নির্মান সংস্কারের বরাদ্দ দেওয়ারও দাবি জানান। আপদকালীন এবং স্থায়ী ভিত্তিতে বাঁধ নির্মাণ সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে ইউনিয়ন পরিষদকে যুক্ত করার দাবি জানিয়ে জলবায়ু পরিষদ কর্মকর্তারা জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। এতে তারা উল্লেখ করেন, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ দ্রুত নির্মাণ সংস্কার, এর সাথে ইউনিয়ন পরিষদকের সম্পৃক্ত করা এবং বাঁধের পূর্বতন নকশা পরিবর্তন করে তা ৫ দশমিক ২৭ মিটারে উন্নীত করা। মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন আবু আহমেদ, সুভাষ চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, শেখ আব্দুল ওয়াজেদ কচি, মমতাজ আহমেদ বাপী, এম কামরুজ্জামান, রুহুল কুদ্দুস, গোলাম সরোয়ার প্রমুখ।
    সংবাদ সমে¥লনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জলবায়ু পরিষদ সভাপতি সাবেক উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জলবায়ু পরিষদ সদস্য সচিব অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, জলবায়ু পরিষদ সদস্য জাসদ শ্যামনগর উপজেলা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শেখ হারুন অর রশীদ, জলবায়ু পরিষদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার নূরুল ইসলাম, জাতীয় মহিলা সংস্থার শ্যামনগর উপজেলা সভাপতি ও জলবায়ু পরিষদ সদস্য শাহানা হামিদ প্রমুখ।

  • সুপেয় পানির তীব্র সংকটে সাতক্ষীরা

    সুপেয় পানির তীব্র সংকটে সাতক্ষীরা

    আসাদুজ্জামান সরদার: আইলার পর থেকেই জেলার উপকূলীয় এলাকায় শুরু হয় সুপেয় পানির তীব্র সংকট। এবারও শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, আনুলিয়া এবং কালিগঞ্জের কিছু এলাকায় চলছে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার। এনজিওদের দেওয়া বিশুদ্ধ পানির ফিল্টারগুলো অকেজো হয়ে পড়ায় পানি সংগ্রহ দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সুপেয় পানির অভাবে এসব এলাকায় বাড়ছে বিবিধ রোগ। নোনা পানির কারণে ফসল হচ্ছে না। মরে যাচ্ছে গাছপালা। ফলে এলাকার মানুষ জীবিকার তাগিদে চলে যাচ্ছেন অন্যত্র। লবণাক্ত পানির জন্য নারীদের অকাল গর্ভপাত ঘটছে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।
    এলাকাবাসী বলছেন, লবণ পানির প্রভাবে চর্মরোগ, কলেরা, ডায়রিয়া, আমাশয়সহ পানিবাহিত রোগ বাড়ছে। ক্ষেতে ফসল ফলে না। গো-খাদ্যের চরম সংকট চলছে। চিংড়ি চাষেও দেখা দিয়েছে মন্দা।
    সূত্রমতে, লবণাক্ত পানির জন্য নারীদের অকাল গর্ভপাত ঘটছে। জাতীয়ভাবে দেশে জন্মের হার ১.৫৯% হলেও এই এলাকার জন্মের হার ১% এর নিচে। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান এ তথ্য জানান।
    গাবুরা এলাকার সিরাজ হোসেন বলেন, ‘সুন্দরবন সংলগ্ন গাবুরা ও পদ্মপুকুরের মানুষ নদীতে মাছ ধরে এবং বনে কাঠ কেটে সংসার চালাতো। নোনা পানির কারণে গাছপালা জন্মায় না। জমিতে ধান-পাট হয় না। ফলে মানুষ বেকার হয়ে পড়ছেন।’
    পদ্মপুকুর ইউনিয়নের আয়েজবিল্লাহ শিমুল বলেন, ‘আইলার আট বছর পরও এলাকায় সুপেয় পানির সংকট কাটেনি। রেশনিংয়ের মাধ্যমে কিছু মানুষ খাবার পানি পেলেও চাহিদার তুলনায় তা অনেক কম। পুকুরের পানিই একমাত্র ভরসা। অনেক দূরে স্থাপিত ফিল্টারগুলোতেও (পিএসএফ) অসম্ভব ভিড়। এক কলস পানি আনতেই একবেলা কেটে যায়।’
    পদ্মপুকুর ইউনিয়নের আবুল কালাম ঢালী জানান, ‘ভালো পানি সব জায়গায় মেলে না। কিছু কিছু যায়গায় ভালো পানি আবার কিছু কিছু যায়গায় লোনা পানি। তবে লোনা পানির ভাগ বেশি। বেশির ভাগ মানুষ দুর থেকে পানি নিয়ে এসে থাকে।’
    ইউপি সদস্য আবুল কাশেম গাজী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আইলা হওয়ার পর থেকে পানি সংকট লেগেইে আছে। সুপেয় পানি সব জাগায় পাওয়া যায় না। আর এ ইউনিয়নের সকল যায়গায় তো লোনা পানি। কিছু কিছু যায়গায় নলকূপের পানি মিষ্টি। কিন্ত সেগুলো সিমিত। ইউনিয়নের বেশির ভাগ যায়গা লোনা পানির ঘের করে রেখেছে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা। ইউনিয়নে লোনা পানি ঢুকানো বন্ধ না হলে সুপেয় পানি তো দুরের কথা মানুষ যে সব পুকুর থেকে বর্তমানে পানি খাচ্ছে, সেগুলোও লোনা পানির কারণে লোনা হয়ে যাবে। আর ফসলতো এক প্রকার হয়না বললেই চলে।’
    গাবুরা ইউনিয়নের চাঁদনিমুখা গ্রামের আসাদুল হক বলেন, ‘চিংড়ি চাষের কারণে জমিতে কোনও ফসল ফলে না। জমিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন ফলজ গাছ মারা যাচ্ছে। জমিতে ধান, পাট, শাকসবজি চাষ না হওয়ায় সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে না। মাঠে ঘাস না জন্মানোয় গবাদিপশু পালন বন্ধ হয়ে গেছে। এলাকায় কাজ না থাকায় বউ-ছেলে-মেয়ে সংসার ফেলে শত শত মানুষ গ্রাম ছেড়েছেন।’ একই গ্রামের আবু হাসান বলেন, ‘লবণ পানির কারণে চর্মরোগ লেগেই থাকে। এখানে গোসলের পানিরও সমস্যা। প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে পুকুরের পানি পান করতে হয়। চাকরিজীবীরা তাদের উপার্জনের বড় একটা অংশ বোতলজাত পানি কিনতে ব্যয় করেন।’
    শ্যামনগর ও কয়রা এলাকার জলবায়ু পরিষদের সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী বলেন, ‘পুকুর সংস্কার এবং ফিল্টার (পিএসএফ) মেরামতের অভাবে এই এলাকায় পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। লবণ পানির কারণে এই অঞ্চলের মানুষের কর্মক্ষতা কমে যাচ্ছে। নারীদের গর্ভপাতের মতো ঘটনা ঘটছে। গত ১০ বছরে এই এলাকায় জনসংখ্যা খুব বেশি বাড়েনি। কাজের সন্ধানে পুরুষরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। ফলে বেড়েছে নারীর সংখ্যা।’
    গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, ‘পানির কারণে এলাকায় কাজ নেই। ফলে কাজের সন্ধানে পুরুষরা এলাকা ছাড়ছেন। অভাবের কারণে লবণ পানিতে কাজ করায় অনেক নারীর অকালে গর্ভপাত হচ্ছে।’ শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. মালিহা খানম বলেন, ‘বেশিরভাগ নারী চুলকানি, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, গায়ে ব্যাথা, বিভিন্ন মেয়েলি সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে আসেন। লবণ পানির কারণেই যে নারীদের গর্ভপাত হচ্ছে এটি গবেষণা ছাড়া বলা সম্ভব না। তবে সম্প্রতি এই এলাকার নারীদের গর্ভপাত বেশি হচ্ছে। ’
    সাতক্ষীরার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম জানান, উপকূলীয় এলাকার মানুষের সুপেয় পানির সুবিধা নিশ্চিত করতে ৩০টি পুকুর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
    শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘সুপেয় পানির সংকট নিরসনে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ ও পানির বড় ট্যাংকের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে তারা বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে পারে। পুকুর কেটে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের জলবায়ু ট্রাস্টের একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এটির মাধ্যমে বৃষ্টির পানি ধরে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও কাজ করছে।’
    তিনি বলেন, ‘আইলার পর কয়েক বছর পানি সংকটসহ বিভিন্ন কারণে অনেক মানুষ এলাকা ছেড়েছেন। বর্তমানে আর কেউ এলাকা ছাড়ছেন না। তবে এ এলাকায় কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ করা গেলে যেসব মানুষ এলাকা ছেড়ে গেছেন, তারা আবারও ফিরে আসবেন। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’ লবণ পানিতে কাজ করার কারণে নারীদের গর্ভপাত হচ্ছে, এমন কোনও বিষয় তার জানা নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
    প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ মে সোমবার দুপুরের দিকে আইলার আঘাতে উপকূলীয় বিস্তীর্ণ এলাকা ল-ভ- হয়ে যায়। প্রাণ হারান ১০৯ জন মানুষ। তার মধ্যে কেবল গাবুরা ও পদ্মপুকুর, মুন্সিগঞ্জ ও আশাশুনির প্রতাপনগরে মারা যায় ৭৩ জন নারী, পুরুষ ও শিশু।

    সুপেয় পানির তীব্র সংকটে সাতক্ষীরা
    আসাদুজ্জামান সরদার: আইলার পর থেকেই জেলার উপকূলীয় এলাকায় শুরু হয় সুপেয় পানির তীব্র সংকট। এবারও শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, আনুলিয়া এবং কালিগঞ্জের কিছু এলাকায় চলছে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার। এনজিওদের দেওয়া বিশুদ্ধ পানির ফিল্টারগুলো অকেজো হয়ে পড়ায় পানি সংগ্রহ দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সুপেয় পানির অভাবে এসব এলাকায় বাড়ছে বিবিধ রোগ। নোনা পানির কারণে ফসল হচ্ছে না। মরে যাচ্ছে গাছপালা। ফলে এলাকার মানুষ জীবিকার তাগিদে চলে যাচ্ছেন অন্যত্র। লবণাক্ত পানির জন্য নারীদের অকাল গর্ভপাত ঘটছে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।
    এলাকাবাসী বলছেন, লবণ পানির প্রভাবে চর্মরোগ, কলেরা, ডায়রিয়া, আমাশয়সহ পানিবাহিত রোগ বাড়ছে। ক্ষেতে ফসল ফলে না। গো-খাদ্যের চরম সংকট চলছে। চিংড়ি চাষেও দেখা দিয়েছে মন্দা।
    সূত্রমতে, লবণাক্ত পানির জন্য নারীদের অকাল গর্ভপাত ঘটছে। জাতীয়ভাবে দেশে জন্মের হার ১.৫৯% হলেও এই এলাকার জন্মের হার ১% এর নিচে। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান এ তথ্য জানান।
    গাবুরা এলাকার সিরাজ হোসেন বলেন, ‘সুন্দরবন সংলগ্ন গাবুরা ও পদ্মপুকুরের মানুষ নদীতে মাছ ধরে এবং বনে কাঠ কেটে সংসার চালাতো। নোনা পানির কারণে গাছপালা জন্মায় না। জমিতে ধান-পাট হয় না। ফলে মানুষ বেকার হয়ে পড়ছেন।’
    পদ্মপুকুর ইউনিয়নের আয়েজবিল্লাহ শিমুল বলেন, ‘আইলার আট বছর পরও এলাকায় সুপেয় পানির সংকট কাটেনি। রেশনিংয়ের মাধ্যমে কিছু মানুষ খাবার পানি পেলেও চাহিদার তুলনায় তা অনেক কম। পুকুরের পানিই একমাত্র ভরসা। অনেক দূরে স্থাপিত ফিল্টারগুলোতেও (পিএসএফ) অসম্ভব ভিড়। এক কলস পানি আনতেই একবেলা কেটে যায়।’
    পদ্মপুকুর ইউনিয়নের আবুল কালাম ঢালী জানান, ‘ভালো পানি সব জায়গায় মেলে না। কিছু কিছু যায়গায় ভালো পানি আবার কিছু কিছু যায়গায় লোনা পানি। তবে লোনা পানির ভাগ বেশি। বেশির ভাগ মানুষ দুর থেকে পানি নিয়ে এসে থাকে।’
    ইউপি সদস্য আবুল কাশেম গাজী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আইলা হওয়ার পর থেকে পানি সংকট লেগেইে আছে। সুপেয় পানি সব জাগায় পাওয়া যায় না। আর এ ইউনিয়নের সকল যায়গায় তো লোনা পানি। কিছু কিছু যায়গায় নলকূপের পানি মিষ্টি। কিন্ত সেগুলো সিমিত। ইউনিয়নের বেশির ভাগ যায়গা লোনা পানির ঘের করে রেখেছে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা। ইউনিয়নে লোনা পানি ঢুকানো বন্ধ না হলে সুপেয় পানি তো দুরের কথা মানুষ যে সব পুকুর থেকে বর্তমানে পানি খাচ্ছে, সেগুলোও লোনা পানির কারণে লোনা হয়ে যাবে। আর ফসলতো এক প্রকার হয়না বললেই চলে।’
    গাবুরা ইউনিয়নের চাঁদনিমুখা গ্রামের আসাদুল হক বলেন, ‘চিংড়ি চাষের কারণে জমিতে কোনও ফসল ফলে না। জমিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন ফলজ গাছ মারা যাচ্ছে। জমিতে ধান, পাট, শাকসবজি চাষ না হওয়ায় সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে না। মাঠে ঘাস না জন্মানোয় গবাদিপশু পালন বন্ধ হয়ে গেছে। এলাকায় কাজ না থাকায় বউ-ছেলে-মেয়ে সংসার ফেলে শত শত মানুষ গ্রাম ছেড়েছেন।’ একই গ্রামের আবু হাসান বলেন, ‘লবণ পানির কারণে চর্মরোগ লেগেই থাকে। এখানে গোসলের পানিরও সমস্যা। প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে পুকুরের পানি পান করতে হয়। চাকরিজীবীরা তাদের উপার্জনের বড় একটা অংশ বোতলজাত পানি কিনতে ব্যয় করেন।’
    শ্যামনগর ও কয়রা এলাকার জলবায়ু পরিষদের সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী বলেন, ‘পুকুর সংস্কার এবং ফিল্টার (পিএসএফ) মেরামতের অভাবে এই এলাকায় পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। লবণ পানির কারণে এই অঞ্চলের মানুষের কর্মক্ষতা কমে যাচ্ছে। নারীদের গর্ভপাতের মতো ঘটনা ঘটছে। গত ১০ বছরে এই এলাকায় জনসংখ্যা খুব বেশি বাড়েনি। কাজের সন্ধানে পুরুষরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। ফলে বেড়েছে নারীর সংখ্যা।’
    গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, ‘পানির কারণে এলাকায় কাজ নেই। ফলে কাজের সন্ধানে পুরুষরা এলাকা ছাড়ছেন। অভাবের কারণে লবণ পানিতে কাজ করায় অনেক নারীর অকালে গর্ভপাত হচ্ছে।’ শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. মালিহা খানম বলেন, ‘বেশিরভাগ নারী চুলকানি, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, গায়ে ব্যাথা, বিভিন্ন মেয়েলি সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে আসেন। লবণ পানির কারণেই যে নারীদের গর্ভপাত হচ্ছে এটি গবেষণা ছাড়া বলা সম্ভব না। তবে সম্প্রতি এই এলাকার নারীদের গর্ভপাত বেশি হচ্ছে। ’
    সাতক্ষীরার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম জানান, উপকূলীয় এলাকার মানুষের সুপেয় পানির সুবিধা নিশ্চিত করতে ৩০টি পুকুর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
    শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘সুপেয় পানির সংকট নিরসনে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ ও পানির বড় ট্যাংকের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে তারা বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে পারে। পুকুর কেটে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের জলবায়ু ট্রাস্টের একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এটির মাধ্যমে বৃষ্টির পানি ধরে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও কাজ করছে।’
    তিনি বলেন, ‘আইলার পর কয়েক বছর পানি সংকটসহ বিভিন্ন কারণে অনেক মানুষ এলাকা ছেড়েছেন। বর্তমানে আর কেউ এলাকা ছাড়ছেন না। তবে এ এলাকায় কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ করা গেলে যেসব মানুষ এলাকা ছেড়ে গেছেন, তারা আবারও ফিরে আসবেন। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’ লবণ পানিতে কাজ করার কারণে নারীদের গর্ভপাত হচ্ছে, এমন কোনও বিষয় তার জানা নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
    প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ মে সোমবার দুপুরের দিকে আইলার আঘাতে উপকূলীয় বিস্তীর্ণ এলাকা ল-ভ- হয়ে যায়। প্রাণ হারান ১০৯ জন মানুষ। তার মধ্যে কেবল গাবুরা ও পদ্মপুকুর, মুন্সিগঞ্জ ও আশাশুনির প্রতাপনগরে মারা যায় ৭৩ জন নারী, পুরুষ ও শিশু।

  • উন্নত চুলা ও জ্বালানী মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ

    উন্নত চুলা ও জ্বালানী মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ

    শহর প্রতিনিধি: “উন্নত চুলা উন্নত জীবন” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৩দিনব্যাপি উন্নত চুলা ও জ্বালানী মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    বৃহস্পতিবার বিকালে সাতক্ষীরা শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে জেলা প্রশাসন ও ভূমিষ্ঠ এর যৌথ আয়োজনে এবং হাউজ হোল্ড এনার্জি প্লাটফর্ম প্রোগ্রাম ইন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এ মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়।

    জেলা প্রশাসক মো. ইফতেখার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদ্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সংসদ সদস্য এ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, বিদ্যুৎ ও খাণিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সালিমা জাহান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবু, জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর রশিদ ও জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মকসুমুল হাকিম প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে মেলা উপলক্ষে চিত্রাংকন, অভিনয়, পুঁথিপাঠ ও লোক-সংগীত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

    তিন দিনব্যাপি উন্নত চুলা ও জ্বালানী মেলা উপলক্ষে স্টলে বিভিন্ন উন্নত চুলা ও জ্বালানী সম্পর্কে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার বিষয়ে মেলার দর্শণার্থীদেরকে সচেতনতার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রদর্শণী দেখানো হয়। এতে সরকারি ও বেসরকারি জ¦ালানী সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এসময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

  • ২৩ বছরেও সংস্কার করা হয়নি হাইকেয়ার ‘বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী’ স্কুল

    ২৩ বছরেও সংস্কার করা হয়নি হাইকেয়ার ‘বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী’ স্কুল

    বিশেষ প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা পৌরসভা সংলগ্ন দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ঠ ব্যতিক্রমধর্মী সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হাইকেয়ার (বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়। নানা জটিলতায় গত ২৩ বছরেও সরকারিকরণ হয়নি এ প্রতিষ্ঠানটি। এটি ঢাকা হাইকেয়ার স্কুলের একটি অঙ্গ-সংগঠন।
    সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ‘নির্বাক শিশুকে সবাক করার উদ্দেশ্য’ এবং ‘বধির অর্থ মূক নয়, উপযুক্ত সহায়তা পেলে সেও কথা বলবে’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সাতক্ষীরা হাইকেয়ার স্কুল। এখানে মূক ও বধির শিশুদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষান্তে শ্রবণ যন্ত্রের (ঐবধৎরহম গধপযরহব) সাহায্যে কথা শুনতে ও বলতে শেখানো হয়। এটি সরকারি/বেসরকারি দাতা সংস্থা অথবা দানশীল ব্যক্তির আর্থিক অনুদানের উপর নির্ভরশীল একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব আয়ের কোনো উৎস নেই।
    সাতক্ষীরা হাইকেয়ার স্কুল থেকে প্রতি বছর দু’ থেকে তিনজন মূক ও বধির শিশু প্রায় স্বাভাবিক কথা বলতে শিখে সাধারণ স্কুলে ভর্তি হয়। এ স্কুলের ছাত্রী ঊদিষা সরকার বর্তমানে ঢাকার হোম ইকোনোমিক্স কলেজের ছাত্রী। স্কুলের অপর একজন ছাত্রী তপা সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের সম্মান চুড়ান্ত বছরের ছাত্রী। স্কুলটিতে বর্তমানে ২৫ জন শিক্ষার্থী আছে, যাদের অধিকাংশই আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। স্কুলে প্রধান শিক্ষকসহ তিন জন শিক্ষক ও একজন অফিস সহায়ক কর্মরত। শিক্ষকদের প্রত্যেকেই মূক ও বধিরদের শিক্ষাদান বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণে অভিজ্ঞ। সরকারিকরণ না হওয়ায় ওইসব শিক্ষক কর্মচারিদের দিন চলে কোন রকমে।
    একতলা বিশিষ্ঠ ভবনে ঢোকার পথটি সংকীর্ণ হওয়ায় প্রতিবন্ধী শিশুদের যাতায়াতের জন্যে বিপজ্জনক। বিদ্যালয়ের চারিপাশে সর্বদা বিরাজ করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। নিজস্ব আয়ের কোনো উৎস না থাকায় স্কুলটি দারুন অর্থ-সঙ্কটের মধ্য দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
    প্রধান শিক্ষক হাসনা বানু জানান, ইতোমধ্যে বর্তমান সরকারের প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে গৃহীত পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বিদ্যলিয়টি প্রাথমিক বা সমমানের পর্যায়ে জাতীয়করণের জন্যে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করা হলেও আজও কোন সফলতা আসেনি। পদাধিকারবলে এ বিদ্যালয় পরিচলনা কমিটির সভাপতি থাকেন জেলা প্রশাসক। তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ে কিছু উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গৃহীত হয়েছে। জেলা পরিষদ এবং পৌরকর্তৃপক্ষের সহায়তার কারণে এখনো বিদ্যালয়টির কার্যক্রম থেমে যায়নি।
    বৃহষ্পতিবার বিকেলে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বিদ্যালয়টির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি জেলা প্রশাসক ইফতেখার হোসেনের সঙ্গে।