Category: রাজনৈতিক দল

  • কলকাতায় গোপন কার্যালয় খুলেছে আ’লীগ

    কলকাতায় গোপন কার্যালয় খুলেছে আ’লীগ

    বিবিসি বাংলার অনুসন্ধান

    কলকাতা লাগোয়া উপনগরীটাতে শয়ে শয়ে বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স, রাত-দিন লাখ লাখ মানুষের ভিড় সেখানে। ব্যস্ত এই এলাকায় একটি বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সে এমন কয়েকজন যাতায়াত করছেন, যাদের কয়েক মাস আগেও সেখানে দেখা যেত না। ওই বাণিজ্যিক পরিসরে যাতায়াত করেন, এমন বেশিরভাগই চেনেন না এই নবাগতদের, চেনার কথাও নয়।

    তবে এদের অনেকেই মাত্র এক বছর আগেও বাংলাদেশের সবথেকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। তারা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলির শীর্ষ এবং মধ্যম স্তরের নেতা।

    তারা যে বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সটিতে যাতায়াত করছেন কয়েক মাস ধরে, সেখানেই ‘দলীয় দফতর’ খুলেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।  এই ‘পার্টি অফিস’টি নতুন।

    এর আগে, ২০২৪ সালের পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পরের কয়েক মাসে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে যারা ভারতে অবস্থান করছেন, তারা নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো বৈঠক বা দলীয় দফতরের কাজকর্ম চালাতেন নিজেদের বাসাবাড়িতেই

    বড় বৈঠকগুলি অবশ্য করতে হত কোনো রেস্তরা বা ব্যাঙ্কয়েট হল ভাড়া করে। সেকারণেই একটা নির্দিষ্ট ‘পার্টি অফিস’এর দরকার ছিল বলে জানাচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

    কীরকম সেই ‘পার্টি অফিস’?

    বাণিজ্যিক পরিসরটির পেছনের দিকের ভবনটির আট তলায় লিফট দিয়ে উঠে বাঁদিকে গেলেই সার দিয়ে বাণিজ্যিক সংস্থার দফতর। করিডোরের দুদিকে হাল্কা বাদামী রঙের একের পর এক দরজা। তারমধ্যেই একটিতে আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস। শুধু বাইরে কেন, পাঁচশো বা ছয়শো স্কোয়ার ফুটের ঘরটিতে উঁকি মারলেও কেউ বুঝতে পারবেন না যে এই ঘরটির সঙ্গে কোনোভাবে আওয়ামী লীগ জড়িত আছে।

    কোনো সাইন বোর্ড, শেখ হাসিনা অথবা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের কোনো ছবি কোথাও নেই ঘরটির বাইরে বা ভেতরে।

    “বঙ্গবন্ধু বা নেত্রীর কোনো ছবি, সাইনবোর্ড কোনো কিছুই আমরা রাখি নি খুবই সচেতন ভাবে। আমরা চাইনি যে এই ঘরটার পরিচিতি প্রকাশ করতে। এমনকি একটা দলীয় দফতরে যেসব ফাইল ইত্যাদি থাকে, সেসবও এখানে রাখা হয় না। নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ, বৈঠক ইত্যাদির জন্য একটা ঘর দরকার ছিল, এটা পাওয়া গেছে। এটাকে আমরা পার্টি অফিসই বলি, কিন্তু আদতে এটা একটা বাণিজ্যিক অফিস। আগে যে সংস্থা কাজ করত এখানে, তাদেরই ছেড়ে যাওয়া চেয়ার, টেবিল এসবই আমরা ব্যবহার করি,” বলছিলেন একজন আওয়ামী লীগ নেতা।

    তিনিই জানালেন, ৩০-৩৫ জনের বৈঠক এই দফতরেই হয়ে যায়, কিন্তু একটু চাপাচাপি করে বসতে হয়। ছোটখাটো বৈঠক বিভিন্ন নেতাদের বাসাবাড়িতে এখনও হয়। তবে বড় বৈঠকগুলি, যেখানে শ দুয়েক নেতা-কর্মী হাজির হওয়ার কথা, সেরকম বৈঠকের জন্য কোনো ব্যাঙ্কয়েট হল বা কোনো রেস্তরাঁর একটি অংশ ভাড়া নিয়ে নেওয়া হয়।

    কারা যাতায়াত করেন ‘পার্টি অফিসে’?

    গত বছরের পাঁচই অগাস্টের পর বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলির অনেক শীর্ষ নেতা এবং প্রাক্তন মন্ত্রীই কলকাতা বা তার আশপাশের অঞ্চলে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছেন।

    এর বাইরে বিভিন্ন পেশাজীবী, সরকারি কর্মচারী, পুলিশ কর্মকর্তা এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাও চলে এসেছেন ভারতে। মাস ছয়েক আগে আওয়ামী লীগের সূত্রগুলি জানিয়েছিল যে অন্তত ৭০ জন সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জেলার সভাপতি-সম্পাদক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, মেয়র সহ শীর্ষ নেতৃত্বের প্রায় দুশো জন কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে থাকছেন।

    এদের কেউ সপরিবারে থাকেন, আবার কোথাও একসঙ্গে কয়েকজন মিলেও একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন। কারও পরিবার মাঝে মাঝে বাংলাদেশ থেকে এসেও কিছুদিন কাটিয়ে যান।

    “এখন যে সংখ্যাটা খুব বেশী বেড়েছে তা নয়। বর্তমানে দ্বাদশ সংসদের ৮০ জনের মতো সংসদ সদস্য এবং তারও আগে সংসদ সদস্য ছিলেন, এমন ১০-১২ জন নেতা আছেন এখানে। আবার এমনও কয়েকজন এসেছেন যারা কলকাতায় এসে আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা অন্যান্য দেশে চলে গেছেন,” বলছিলেন এক আওয়ামী লীগ নেতা।

    সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতারাও থাকেন কলকাতার আশেপাশেই।

    কলকাতা বা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আওয়ামী লীগের যে শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বাস করছেন, তাদের প্রায় সবাই ‘পার্টি অফিসে’ যাতায়াত করে থাকেন।

    “তবে অফিস খোলার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। যেরকম প্রয়োজন, সেরকমই আসেন নেতারা। আবার রোজই যে সবাই আসেন, তাও নয়। আসলে প্রয়োজনীয়তা ছিল একটা নির্দিষ্ট জায়গা গড়ে তোলা, সে জন্যই এই পার্টি অফিস,” জানাচ্ছিলেন ওই নেতা।

    আওয়ামী লীগের এই নতুন পার্টি দফতরের ব্যাপারে ওই বাণিজ্যিক পরিসরে যাতায়াত করা সাধারণ মানুষ যে কিছু জানবেন না, সেটাই স্বাভাবিক।

    দলেরও কোন স্তরের নেতা-কর্মীরা এই দফতরের ব্যাপারে কতটা জানেন, সেটা জানা যায় নি।

    কিন্তু এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে ভারতীয় গোয়েন্দারা এই দফতরের ব্যাপারে জানেন এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের শীর্ষ স্তরের অনুমোদন ছাড়া এই দলীয় দফতর থেকে আওয়ামী লীগের কাজকর্ম চলতে পারত না।

    যেভাবে দল চলছে এক বছর ধরে

    গত একবছরের কিছুটা কম সময় ধরে ভারত থেকেই আওয়ামী লীগ পরিচালিত হচ্ছে। দলটির নেত্রী শেখ হাসিনা দিল্লির কাছাকাছি কোথাও থাকেন, আর বড় অংশ থাকেন কলকাতা সংলগ্ন অঞ্চলে।

    তবে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্র লীগের সভাপতি সাদ্দাম হুসেইন বলছিলেন, “এই ধারণাটা ঠিক নয় যে ভারত থেকে দল চলছে। মূল দল বা সহযোগী সংগঠনগুলোর কতজন নেতা-ই বা ভারত অথবা অন্যান্য দেশে রয়েছেন? বেশিরভাগ তো এখনও বাংলাদেশেই আছেন।”

    কিন্তু দলের নেত্রী শেখ হাসিনা এবং শীর্ষ নেতৃত্বের একটা বড় অংশ ভারতে আছেন বলে সেখান থেকেই যে রাজনৈতিক দিশা-নির্দেশ দেওয়া বা দলীয় অবস্থান চূড়ান্ত হবে, সেটাই স্বাভাবিক।

    তবুও দু সপ্তাহ আগে পর্যন্তও শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সরাসরি দেখা হয় নি দল-নেত্রীর।

    গত ৩১শে জুলাই শীর্ষ নেতৃত্বের কয়েকজনকে দিল্লিতে এক বৈঠকে ডেকেছিলেন শেখ হাসিনা।

    আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা ওই বৈঠকের বিষয়টি বিবিসি বাংলার কাছে নিশ্চিত করেছিলেন, তবে বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, কোথায় বৈঠক হয়েছে, সে ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি ওই নেতারা।

    দলের নেত্রীর সঙ্গে ওই বৈঠকটি ছাড়া এবং নিজেদের মধ্যে সশরীরে দেখা সাক্ষাৎ এবং বৈঠক ছাড়া দলটির বাকি সব কাজই চলে ভার্চুয়াল মাধ্যমে।

    বিভিন্ন স্তরের নেতা কর্মীদের জন্য আলাদা হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ, টেলিগ্রাম গ্রুপ ইত্যাদি গড়া হয়েছে। এছাড়া নিয়মিতই লাইভ অনুষ্ঠান করে থাকে দলটি। এরকম লাইভ অনুষ্ঠানে মাঝে মাঝেই যোগ দেন শেখ হাসিনা নিজেও।

    সেসব আলোচনাগুলিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা যেমন হয়, তেমনই আবার মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মী – যারা বাংলাদেশেই থেকে গেছেন, তাদের নির্দেশনাও দেওয়া হয়ে থাকে।

    প্রাক্তন সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ বলছিলেন, “তথ্য প্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের ফলে আমরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে পারছি, তাদের মতামত জানতে পারছি, কী করণীয় সে ব্যাপারে নির্দেশনা দিতে পারছি।

    “এই ভার্চুয়াল মাধ্যমে বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে তরুণ প্রজন্মের। কোনো একটা ব্যবস্থা বদলানোতে এই তরুণ প্রজন্মের বড় ভূমিকা থাকে। আমরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাদের কাছেই পৌঁছানোর চেষ্টা করছি,” বলছিলেন মি. দেবনাথ।

    ‘কর্মীরা দেশে মার খাচ্ছেন, নেতারা কেন ভারতে?’

    সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে মাঝে মাঝেই এই প্রশ্ন ওঠে যে আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা যখন দেশে মার খাচ্ছেন, গ্রেফতার হয়ে জেলে যাচ্ছেন, তখন শীর্ষ নেতৃত্বের একটা বড় অংশ কেন ভারতে পালিয়ে আছেন।

    “এই প্রশ্ন ওঠা যে খুব অযৌক্তিক তা নয়। কিন্তু বাস্তবতা হল, ১৯৭১ এ যদি তখনকার নেতৃত্ব ভারতে চলে এসে প্রবাসী সরকার গঠন না করতেন, তাহলে কী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা করা সম্ভব হত? আমি ৭১-এর সঙ্গে তুলনা করছি না বর্তমান সময়ের, কিন্তু এরকম উদাহরণ আমাদের দেশেও রয়েছে, অন্যান্য দেশেও আছে যে বিদেশ থেকে দল পরিচালনা করে, শক্তি সঞ্চয় করে দেশে ফিরে ক্ষমতা দখল করেছেন নেতারা। পাকিস্তানে নওয়াজ শরিফ বা বেনজির ভুট্টো বলুন বা আমাদের দেশের তারেক রহমান। সবাই তো বিদেশ থেকেই দল পরিচালনা করেছেন বা এখনও করছেন,” বলছিলেন প্রাক্তন সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ।

    তার প্রশ্ন, “দেশে থাকলে হয় জেলে থাকতে হত, মেরেও ফেলতে পারত। কিন্তু তাহলে আমাদের যে রাজনৈতিক কাজকর্ম – বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরা, দলকে আবারও সংগঠিত করা – সেগুলো কি আমরা করতে পারতাম?”

    নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র লীগের সভাপতিও ভারতে

    বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র লীগের সভাপতি সাদ্দাম হুসেইন ভারতে অবস্থান করছেন গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে।

    তিনি বলছিলেন, “গত একবছর ধরে ক্যাম্পাসটা খুব মিস করি। দেশে থাকলেও যে গত এক বছরে ক্যাম্পাসে যেতে পারতাম তা নয়।

    “হাজার হাজার ছাত্রলীগের কর্মী-সমর্থক তারা তো দেশে থেকেও ক্যাম্পাসে যেতে পারছেন না একবছর ধরে। তাদের ক্লাস করতে দেওয়া হয় না, তারা পরীক্ষা দিতে পারেন না, পাশ করলেও সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে না। এদের সবার শিক্ষাক্রমটাই শেষ করে দেওয়া হয়েছে,” বলছিলেন মি. হোসেইন।

    “এটা যে শুধু ছাত্রলীগের কর্মীদের সঙ্গে করা হচ্ছে তা নয়। আওয়ামী লীগ করেন বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এমন পরিবারের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গেও এই একই ঘটনা হচ্ছে। শুধু যে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে হচ্ছে, তাও নয়। এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারে নি বহু ছাত্রছাত্রী – শুধুমাত্র তারা আওয়ামী লীগ ঘরানার পরিবারের সন্তান বলে,” বলছিলেন সাদ্দাম হোসেইন।

    অর্থায়ন কী ভাবে হচ্ছে?

    ভার্চুয়াল মাধ্যমে দলীয় প্রচার প্রচারণার জন্য খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় না ঠিকই, কিন্তু খরচ তো আছে।

    আবার যেসব নেতা কর্মীরা ভারতে অবস্থান করছেন, তাদের ব্যক্তিগত খরচও চালাতে হয়। কীভাবে সেসবের জন্য অর্থের সংস্থান হচ্ছে?

    আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বিবিসিকে বলেছেন, দেশে,বিদেশে থাকা শুভাকাঙ্খীরাই তাদের খরচ চালাচ্ছেন।

    দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদেরের কথায়, “সাংগঠনিক ভাবে অগাস্টের পরে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে, সেই অন্ধকার অতিক্রম করা কঠিন কাজ। যেসব নেতা-কর্মী দেশে বা বিদেশে আছেন, তারাই এই দু:সময়ে এগিয়ে আসছেন, অর্থ সাহায্য করছেন। কর্মীরা এখানে কষ্ট করেই আছেন, তবে মনোবলই আমাদের সম্বল।”

    আরেক নেতা নাম উল্লেখ না করার শর্তে বলছিলেন, দেশ থেকে তার পরিবার-পরিজন এবং সহকর্মীরা প্রয়োজন মতো অর্থ পাঠিয়ে দেন।

    “তবে এই একবছরে আমাদের জীবনযাত্রায় অনেক পরিবর্তন আনতে হয়েছে,” বলছিলেন পঙ্কজ দেবনাথ।

    তার কথায়, “আমরা যে এখানে মানবেতর জীবন যাপন করছি, বা ৭১-এর যুদ্ধের সময়ের মতো শরণার্থী শিবিরে থাকছি তা নয়। কিন্তু আমাদের মধ্যে যাদের মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত জীবনযাত্রা ছিল, সে সবই পরিবর্তন করতে হয়েছে। যারা ঢাকায় হয়তো গাড়ি ছাড়া চলতেন না, তাদের এখন কলকাতার গণ-পরিবহন ব্যবহার করতে হচ্ছে।

    “যেমন আমি একটি ফ্ল্যাটে আরও তিনজনের সঙ্গে থাকি। বাসে, ট্রেনে বা মেট্রো রেলে যাতায়াত করি। আবার সহকর্মীদের মোটরসাইকেল বা বাইকেও চেপে ঘোরাঘুরি করি। যদি কয়েকজন মিলে একসঙ্গে কোথাও যেতে হয়, তখন হয়তো ট্যাক্সিতে উঠলাম। ভাড়াটা ভাগাভাগি করে নিলে গায়ে লাগে না। আসলে সঞ্চিত অর্থে যতটা স্বল্প খরচে চলা যায়,” বলছিলেন মি. দেবনাথ।

    কিন্তু কতদিন থাকবেন তারা দেশ ছেড়ে?

    ওবায়েদুল কাদের বলছেন, “দিনক্ষণ ঠিক করে ওভাবে তো রাজনৈতিক লড়াই হয় না, আবার লড়াই ছাড়া উপায়ও নেই।”

     

    সৌজন্য : বিবিসি বাংলা

  • এনসিপি ইনসাফের ভিত্তিতে দুর্নীতি ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়তে চায়

    এনসিপি ইনসাফের ভিত্তিতে দুর্নীতি ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়তে চায়

     সাতক্ষীরায় জাতীয় নাগরিক পার্টির পথসভা

    আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংগঠনিক তৎপরতা জোরদার করতে সাতক্ষীরায় পদযাত্রা ও পথসভায় অংশ নিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। শনিবার দুপুট  সাড়ে ১২টার দিকে তালা উপজেলার কুমিরা ফুটবল মাঠে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ পৌঁছালে স্থানীয় নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে তাদের ফুলেল সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এসময় এলাকাজুড়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ।
    দলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহসহ কেন্দ্রীয় পর্যায়ের প্রায় এক ডজন নেতা এ সফরে অংশ নেন।
    কুমিরায় সংক্ষিপ্ত পথসভা শেষে তারা শহরের দিকে রওনা হন। দুপুর দেড়টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের খুলনা রোড মোড়ে শহীদ আসিফ চত্বরে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, রোদ বৃষ্টি ঝড় উপেক্ষা করে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির নেতৃবৃন্দ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সনদ চেয়েছি, বিচার চেয়েছি এবং নতুন সংবিধান চেয়েছি।
    কিন্তু সকল জনদাবির বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে একটি পক্ষ। তারা পুরাতন বন্দোবস্ত ধরে রাখতে চায়, তারা পুরাতন রাজনীতি টিকিয়ে রাখতে চায়, তারা চাঁদাবাজ এবং সন্ত্রাসকে টিকিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু আমরা বলেছি, গণঅভ্যুত্থানের পরে, এত মানুষের জীবন দানের পরে, তারা যদি মনে করে, তারা আগের পুরাতন রাজনীতি করবে, তাহলে তা এত সহজ হবে না। গণঅভ্যুত্থানের শক্তি এখনও মাঠে আছে। এখনো তাদের গর্জন রয়েছে।
    তারা ভেবেছিল— দুই তিনটা আসন দেখিয়ে, ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারার লোভ দেখিয়ে, তারা গণঅভ্যুত্থানের শক্তিকে কিনে নিবে। কিন্তু যারা বিপ্লবের শক্তি, যারা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে, তাদেরকে কিনে নেওয়ার সাধ্য কোন রাজনৈতিক দলের হয়নি। বলা হয়েছে —দরজা নাকি খোলা আছে, আমরা বলেছি, ৫ ই আগস্ট দরজা আমরা খুলে দিয়েছিলাম। ৫ই আগস্ট আমরা বলেছিলাম —আসুন জাতীয় সরকার গঠন করি, দেশটাকে পুনর্গঠন করি, সকল বিভাজন সবকিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে, বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তুলি। কিন্তু তারা আমাদের সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।
    তারা বলেছিল তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। আবার বলেছিল ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারা ছাড়া দেশ সংস্কারে তাদের কোন সমর্থন পাওয়া যায়নি। আমরা বলেছিলাম —আমরা দেশের ভিতরে শত্রু তৈরি করতে চাই না। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ পুনর্গঠন করতে চাই। আমরা এখনো বলছি —নির্বাচনী ভাগ-বাটোয়ারা নয়, দেশ সংস্কারে আমাদের দরজা এখনো খোলা আছে। যদি এবার দরজা বন্ধ হয়, জনগণ আপনাদেরকে আর ক্ষমা করবে না।প্রিয় সাতক্ষীরাবাসি, আপনারা উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দা। যারা ঘূর্ণিঝড় প্রতিকূলতার মধ্যেও, আপনারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সত্বেও, এই দেশকে উপকূলে পাহারা দিয়ে যাচ্ছেন। সাতক্ষীরার শিক্ষার অব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যের অভাবে ব্যবস্থাপনা, যাতায়াতের অব্যবস্থাপনার কথা আমরা জানি।
    সাতক্ষীরাবাসি এখনো রেললাইনের সুযোগ পায় না। ৫৪ বছর হয়ে গেছে এখনো রেল সংযোগ সাতক্ষীরায় এসে পৌঁছায়নি। আমরা কি সাতক্ষীরায় রেললাইন চাই? আমরা কি সাতক্ষীরার উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা চাই? আমরা কি সাতক্ষীরায় উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চাই? জনতার উদ্দেশ্যে এমন প্রশ্ন রেখে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের জলবায়ু রক্ষা করতে হবে, আমাদের সুন্দরবন ও উপকূল রক্ষা করতে হবে। জলবায়ু নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি কাজ করবে। সাতক্ষীরার মাটি ও মানুষকে রক্ষা করার জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টি কাজ করবে।
    আপনারা জাতীয় নাগরিক পার্টির সাথে থাকবেন—আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, চাঁদাবাজদের ভয় পাওয়ার কোন কারণ নাই। যে দেশের ছাত্র- মেহনতি জনতা ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে দিল্লি পাঠাতে পারে, সে দেশের ছাত্র-জনতা কোন চাঁদাবাজকে ভয় পাবে না। ছাত্র জনতা ও নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, নতুন করে প্রস্তুতি নিন।
    আমাদেরকে বৈষম্য ও দুর্নীতি বিরোধী ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র গড়তে হবে। সেকারণে আমাদের শহীদেরা রক্ত দিয়েছিল, সাতক্ষীরার মানুষ রক্ত দিয়েছিল তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
    সভায় এনসিপির সাংগঠনিক সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়নি। আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর পূর্ব পর্যন্ত আমাদের এ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
    জাতীয় নাগরিক পার্টির সাতক্ষীরা জেলার সমম্বয়ক কামরুজ্জামান বুলুর সভাপতিত্বে পথসভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মেজবাহ কামাল ও চিকিংসক তাসনীম জারা। এছাড়া মঞ্চে স্লোগান দেন দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
    পথসভার আগে শহীদ আসিফ চত্বর এলাকায় জুলাই-বিপ্লবে আহত ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন নেতৃবৃন্দ। পরে একটি পদযাত্রা শহীদ আসিফ চত্বর থেকে বের হয়ে নিউমার্কেট মোড়ে শেষ হয়। এরপর নিউমার্কেট এলাকায় আল বারাকা হোটেলের দ্বিতীয় তলায় জেলা কার্যালয় উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
    এতে শত শত নেতাকর্মী অংশ নেন, যাদের অনেকেই ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও দলীয় পতাকা বহন করছিলেন।
    পদযাত্রা ও জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষ থেকে আগেই কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংস্কার করা হয়।# সাতক্ষীরা প্রতিনিধি। তাং-১২.০৭.২৫ ছবি আছে।
  • জুলাই সনদ ঘোষণার আগে  নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নয়: নাহিদ ইসলাম

    জুলাই সনদ ঘোষণার আগে  নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নয়: নাহিদ ইসলাম

    জুলাই সনদ কার্যকর হওয়ার আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা ঠিক হবে না- এ কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, জুলাই সনদ ঘোষণার আগে যদি নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হয়, তাহলে সংস্কারপ্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। সোমবার বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা শেষে বেরিয়ে এ কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।

    জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ বলেন, ‘আমরা আহ্বান জানিয়েছি, ১৬ বছর আমরা অপেক্ষা করেছি, এরপর ১০ মাস অপেক্ষা করেছি, আরও দুই মাস অপেক্ষা করতে চাই এবং সরকারকে সময় দিতে চাই সব রাজনৈতিক দল মিলে। দুই মাসের মধ্যে আমাদের জুলাই সনদ, যেখানে জনগণ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ শাসনের রূপরেখা, শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা দেখতে পারবে। সেই জুলাই সনদ হওয়ার পরে সরকার যাতে নির্বাচনে তারিখ ঘোষণা করে, সে আহ্বান আমরা জানিয়েছি। জুলাই সনদ হওয়ার পরে আমরা আমাদের দলীয় মন্তব্য জানাব যে আমরা কখন নির্বাচন চাচ্ছি।’

    নির্বাচন কমিশন এখন যে প্রক্রিয়ায় চলছে, তার ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না বলে উল্লেখ করেছেন নাহিদ ইসলাম। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমাদের একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার। নির্বাচন–সংক্রান্ত ও নির্বাচন কমিশন–সংক্রান্ত যে আইনগুলো রয়েছে, সেগুলো সংস্কার করে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছি।’

    জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে তিনটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বলে জানান নাহিদ ইসলাম। বিষয়গুলো হলো, ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সরকার যে জুলাই সনদ ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা বলেছিল, সেটির অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন এবং ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে যাতে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করা হয়, সে আহ্বান জানিয়েছেন।

    ‘কারণ, আমরা এর আগেও দেখেছিলাম, জানুয়ারি মাসে একটা ডেট দেওয়া হয়েছিল, আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আরেকটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এবার যাতে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ না হয়। জুলাই মাসের মধ্যে সবার সাক্ষ্য নিয়ে জুলাই সনদ যাতে কার্যকর করা হয়, সে বিষয়ে দাবি জানিয়েছি,’ বলেন তিনি।

    প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজকের বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস; জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ; গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।

  • সাতক্ষীরায় দু:স্থদের খাবার বিতরণে শহীদ জিয়ার শাহাদাত বার্ষিকী পালন

    সাতক্ষীরায় দু:স্থদের খাবার বিতরণে শহীদ জিয়ার শাহাদাত বার্ষিকী পালন

    শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম) এর ৪৪তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির উদ্যোগে দুস্থদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার (৩০ মে) দুপুর ১২ টায় সাতক্ষীরা শহরের নিউ মার্কেট চত্ত্বরে এই খাবার বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

    সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহবায়ক এইচ এম রহমাতুল্লাহ পলাশের সভাপতিত্বে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জেলা সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু, যুগ্ম আহবায়ক মো. আবুল হাসান হাদী, যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি প্রমুখ। এ সময় বিএনপি’র বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

    খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির আহবায়ক এইচ এম রহমাতুল্লাহ পলাশ বলেন, কৃষি ও শিল্পে বিপ্লব, খাল খনন ও বৃক্ষরোপণ, শিক্ষা ও প্রশাসন সংস্কার, আইনের শাসন ও বাকস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা, সরকারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক ও সাংবিধানিক সংস্কারে গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন প্রতিটি ক্ষেত্রে শহীদ জিয়া রেখে গেছেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত, এক অমোচনীয় চিহ্ন। মাত্র চার বছরে তিনি বাংলাদেশকে এগিয়ে দিয়েছিলেন চার দশকের চেয়েও বেশি যা আজও ইতিহাসের উজ্জ্বলতম অধ্যায় হয়ে আছে।

    এদিকে জেলা শ্রমিক দলের আয়োজনে শহরের সঙ্গীতা মোড়ে দুপুরে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। সাতক্ষীরা জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুস সামাদের সভাপতিত্বে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি শেখ মিলন হোসেন, মো. ইব্রাহিম খলিল টুটুল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মিয়ারাজ আলী, দপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান, সদর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি শেখ মামুনুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনিরুল ইসলাম মনি, পৌর শ্রমিক দলের আহবায়ক রেজাউল ইসলাম রেজা, যুগ্ম আহবায়ক মো. শাহাদাত হোসেন, জেলা ইমরত শ্রমিক দলের সভাপতি তফুর আলী, জাতীয়তাবাদী ট্রাক, ট্রাক্টর কাভার্ডভ্যান, ট্রাংকলরী শ্রমিকদল ভি.আই.পি সাতক্ষীরা শাখার সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম গাজীসহ জেলা, উপজেলা ও পৌর শ্রমিক দলের নেতৃবৃন্দ।

  • সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজ মোড়ে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ

    সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজ মোড়ে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ

    সাতক্ষীরা প্রতিনিধি  :  জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার (৩০ মে) বিকাল ৩টায় সাতক্ষীরা পৌর ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে সার্কিট হাউজ মোড়ে এই খাবার বিতরণ করা হয়। সাতক্ষীরা পৌরসভার ৯নং ওর্ডের সভাপতি প্রার্থী ইলিয়াস হোসেন বকুলের সভাপতিত্বে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা পৌর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন রাজু।এ সময় দুইশত অসহায় দুস্থদের মাঝে এই খাবার বিতরণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা তাঁতী দলের সাবেক যুগ্ন-আহবায়ক আব্দুল আজিজ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম,সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি সামাদ আলী, শ্রমিক দলের নেতা রেজাউল ইসলাম রেজা, নাসির খান, আজিবারসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

  • গুম হওয়া সাতক্ষীরার  বিএনপি নেতা আবু সেলিমকে ফিরিয়ে দিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ 

    গুম হওয়া সাতক্ষীরার  বিএনপি নেতা আবু সেলিমকে ফিরিয়ে দিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ 

    সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
    আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম হওয়া সাতক্ষীরা আলিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আলহাজ্ব আব্দুর রউফের একমাত্র পুত্র সদর উপজেলা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও আলিপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সেলিমকে ফিরিয়ে দিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ  অনুষ্ঠিত  হয়েছে।
    সাতক্ষীরা সদর উপজেলা যুবদলের আয়োজনে বৃহস্পতিবার(২৯ মে) বিকালে শহরের ইটাগাছা হাটের মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে  খুলনা রোডস্থ মোড়  শহীদ আসিফ চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়।
    জেলা যুবদলের সাবেক সমন্বয়ক  আইনুল ইসলাম নান্টা’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন  সাবেক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ তারিকুর হাসান, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, জেলা বিএনপির সদস্য প্রভাষক আতাউর রহমান,জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুর রউফ,  আলিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম, আলিপুর ইউনিয়নের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাদিউজ্জামান বাদশা,জেলা যুবদলের নেতা আলিমুজ্জামান আলীম ও ফরিদ হোসেন, শ্রমিক নেতা রেজাউল ইসলাম রেজা,প্রভাষক শহিদুল ইসলাম, আবু  সেলিম, শিক্ষক শাহিনুর রহমান, আবু  সেলিমের বড় ছেলে সামির সোয়েদ রাদমীম ও ছোট ছেলে আব্দুল্লাহ সিয়াম জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু রায়হান প্রমুখ উপস্থিত।
    বক্তারা বলেন, বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে হাসিনা সরকার আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে গুম করেছে। আজও তাদের খুঁজেও পাওয়া যায়নি। তাদের জন্য পরিবারের লোকজন অপেক্ষায় রয়েছে। ২০১১ সালের ২৯ শে মে এই দিনে ঢাকা থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে সাতক্ষীরার যুবদল নেতা আবু সেলিমকে  তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ ১৪ বছর পেরিয়ে ১৫ বছরের পদার্পণ হচ্ছে তার কোন সন্ধান মেলেনি। সাতক্ষীরার আবুল সেলিম গুমের পিছনে সাতক্ষীরা আওয়ামী লীগ নেতা শওকত হোসেন জড়িত আছে, তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ড  নিলে আবু সেলিমকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে বলে বক্তারা জানান ।
     শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আয়নাঘর থেকে গুম হওয়া কয়েকজন ফিরে এসেছে। আমরা সাতক্ষীরার যুবদলের নেতা আবু সেলিমসহ বাকিদেরও ফেরত চাই।
    সমগ্র সমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা কৃষকদলের সাবেক আহবায়ক আহসানুল কাদির স্বপন।
  • জামায়াতকে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ থেকে মুক্ত ঘোষণা কানাডার ট্রাইব্যুনালের

    জামায়াতকে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ থেকে মুক্ত ঘোষণা কানাডার ট্রাইব্যুনালের

    বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন নয় এবং তারা কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয় বলে জানিয়েছে কানাডার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ড (আইআরবি)। এই রায় ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রোটেকশন অ্যাক্ট (আইআরপিএ) এর ধারা ৩৪(১)(এফ)-এর আওতায় কানাডার সরকারের করা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

    এ সিদ্ধান্তটি আসে ২ বছর ধরে চলা আইনি লড়াইয়ের পর, যা ২০২২ সালে কানাডার বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সির (সিবিএসএ) একটি প্রতিবেদনের পর শুরু হয়েছিল। সিবিএসএ অভিযোগ করেছিল- জনৈক রহমান নামে এক ব্যক্তি জামায়াতে ইসলামীর সদস্য (রোকন) হওয়ার কারণে কানাডায় প্রবেশের অনুপযুক্ত। কারণ সিবিএসএর মতে জামায়াত সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত। তবে, ট্রাইব্যুনাল আজকের রায়ে এ অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দিয়েছেন।

    এ রায়ের গুরুত্ব খুব বেশি। আইআরবির এ সিদ্ধান্তটি শুধু উক্ত রহমানের জন্যই নয়, বরং জামায়াতে ইসলামীর সুনামের জন্যও এক গুরুত্বপূর্ণ ও নজিরবিহীন রায় বলে বিবেচিত হচ্ছে। ট্রাইব্যুনাল দুটি পূর্ণাঙ্গ দিবস এবং অতিরিক্ত আরও আড়াই দিন শুনানি পরিচালনা করে। কয়েক হাজার পৃষ্ঠার নথিও এ সময় পর্যালোচনা করা হয়।

    এছাড়া, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসবাদ ও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়, যাদের সবাই জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে সাক্ষ্য দেন।

    ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়

    সন্ত্রাসবাদের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই: রায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে যে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই।

    বিশ্বখ্যাত বিশেষজ্ঞদের সাক্ষ্য গ্রহণ: তিনজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গবেষক এই মামলা চলাকালে সন্ত্রাসবাদ, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক আন্দোলন, ও ইসলামী সংগঠনগুলোর বিষয়ে শপথ নিয়ে সাক্ষ্য দেন, যা বিশ্বাসযোগ্য, নিরপেক্ষ এবং ধারাবাহিক বলে প্রমাণিত হয়।

    রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে: ট্রাইব্যুনাল তার পর্যবেক্ষনে জানিয়েছে যে, জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগের শিকার হয়ে আসছে, বিশেষ করে রাজনৈতিকভাবে যারা ভিন্ন আদর্শ লালন করেন তারা জামায়াতের বিষয়ে বহু বছর ধরেই প্রোপাগান্ডা চালিয়ে আসছেন।

    ২০২৪ সালের আগস্টের বাংলাদেশে অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ইতিবাচক ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে।

    আইনের শাসনের প্রতি প্রতিশ্রুতি: এই রায় কানাডার ন্যায়বিচার, সততা ও সুবিচারের প্রতি প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেছে এবং উল্লেখ করেছে যে কোনো সংগঠনকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক চাপ বা বিদেশি সরকারের বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে সন্ত্রাসী ঘোষণা করা যায় না।

    জামায়াতে ইসলামীর জন্য আইনি বিজয়

    মামলায় জামায়াতে ইসলামীকে সফলভাবে প্রতিনিধিত্ব করেন ওডব্লিউএস ল-এর ব্যারিস্টার ওয়াশিম আহমেদ। এই রায় সম্পর্কে তিনি বলেন,“এই রায় জামায়াতে ইসলামী আইনি মর্যাদা পাওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় বিজয়। এটি স্পষ্ট বার্তা দেয় যে অভিযোগগুলোর ভিত্তি হতে হবে বাস্তব প্রমাণ এবং নিরপেক্ষ মূল্যায়নের ওপর, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নয়।”

    গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনালের দেওয়া লিখিত সিদ্ধান্তে রহমানকে সম্পূর্ণরূপে নির্দোষ ঘোষণা করা হয় এবং সিবিএসএর সমস্ত অভিযোগ খারিজ করা হয়। এ রায় ভবিষ্যতে অনুরূপ মামলাগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির স্থাপন করবে। কারণ অনেক সময়ই দেখা যায়, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের মিথ্যা অভিযোগ এনে তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে।

  • সাতক্ষীরায় জামায়াতের ৭ উপজেলা আমীরগণের শপথ

    সাতক্ষীরায় জামায়াতের ৭ উপজেলা আমীরগণের শপথ

    সাতক্ষীরা সংবাদদাতা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা জেলা শাখার উদ্যোগে ২০২৫ ও ২০২৬ সেশনের জন্য নির্বাচিত উপজেলা আমীরগণের শপথ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। ৯ ডিসেম্বর সোমবার বিকাল ৫ টায় সাতক্ষীরা আল—আমিন ট্রাস্টের কাজী শামসুর রহমান মিলনায়তনে সাতক্ষীরা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুলের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী মাওলানা আজিজুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও সাতক্ষীরা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল নির্বাচিত উপজেলা আমীরগণের শপথ বাক্য পাঠ করান। এসময় জামায়াতের কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও সাতক্ষীরা জামায়াতের সাবেক আমীর মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, ফরিদপুর জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা বদরুদ্দিন, সাতক্ষীরা জামায়াতের নায়েবে আমীর শেখ নুরুল হুদা, ডা.মাহমুদুল হক, সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক ওমর ফারুক, অধ্যাপক ওবায়দুল্লাহ, শহর ছাত্রশিবিরের সভাপতি আল মামুন, জেলা সভাপতি ইমামুল ইসলাম সহ কর্মপররিষদ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
    ২০২৫ ও ২০২৬ সেশনের জন্য উপজেলা আমীর হিসাবে যারা শপথ গ্রহন করেন তারা হলেন.. ১) মাওলানা মফিদুল্লাহ—( তালা উপজেলা), ২) মাওলানা কামরুজ্জামান (কলারোয়া উপজেলা), ৩) মোঃ জাহিদুল ইসলাম—(সাতক্ষীরা শহর), ৪) তারিকুজ্জামান তুষার—(আশাশুনি উপজেলা), ৫) মাওলানা অলিউল ইসলাম—(দেবহাটা উপজেলা), ৬) মাওলানা আব্দুল ওহাব—( কালিগঞ্জ উপজেলা) এবং ৭) মাওঃ আব্দুর রহমান—( শ্যামনগর উপজেলা)

    প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, দায়িত্ব আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে, এই দায়িত্ব আমানত হিসাবে গ্রহন করে ঈমানদারীর সাথে পালন করা আমাদের কর্তব্য। দেশ,জাতি সৎ ও যোগ্য মানুষ খুঁজে বেড়াচ্ছে। জামায়াত সেই মানুষ তৈরীর কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের গণপ্রত্যাশা পুরনে ঐতিহাসিক ভুমিকা পালন করতে হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

  • শনিবার সাতক্ষীরায় আসছেন জামায়াতের আমীর

    শনিবার সাতক্ষীরায় আসছেন জামায়াতের আমীর

    বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান শনিবার (৩০ নভেম্বর) সাতক্ষীরায় আসছেন। বেলা দুইটায় সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

    জামায়াতের আমীরের আগমন উপলক্ষ্যে শুক্রবার দুপুরের পর সাতক্ষীরার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সম্মেলনস্থল সার্বিক পরিবেশ পরিদর্শন করেছেন দলটির নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মুহা. ইজ্জতউল্লাহ। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমীর শহিদুল ইসলাম মুকুল, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা আজিজুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক ওবায়দুল্লাহ, ওমর ফারুক, শহর শিবিরের সভাপতি আল মামুন, সুরা সদস্য নজরুল ইসলাম, শহর সহকারী সেক্রেটারী হাবিবুর রহমান প্রমুখ।

    অধ্যক্ষ মুহা. ইজ্জতউল্লাহ মাঠ পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের বলেন, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী ও ফ্যাসীবাদী শক্তির পতন ঘটানোর মাধ্যমে দেশে নতুন করে সূর্যোদয় ঘটেছে। আমরা এই ঐতিহাসিক বিজয়কে ধরে রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। দেশে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বৈরাচার সৃষ্ট সব জঞ্জালমুক্ত করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সম্মেলনে লক্ষাধিক জামায়াত নেতাকর্মীর সমাবেশ ঘটবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। জামায়াতে আমীরের সমাবেশ সফল করতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

  • বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. মো. মোসলেম’র সুস্থ্যতা কামনা

    বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. মো. মোসলেম’র সুস্থ্যতা কামনা

    সাতক্ষীরা জেলা জেএসডি সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. মো. মোসলেম’র সুস্থ্যতা কামনা

    বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি, সাতক্ষীরা জেলা ফুটবল ফেডারেশন এর সদস্য, সাতক্ষীরা জেলা সাংস্কৃতিক পরিষদ এর সাবেক কোষাধ্যক্ষ, সাতক্ষীরা ফ্রেন্ডস্ ড্রামেটিক ক্লাব এবং সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতি’র সদস্য বিশিষ্ট নাগরিক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. মো. মোসলেম শারীরিক অসুস্থ্য হয়ে সাতক্ষীরা চায়না-বাংলা (সিবি) হসপিটালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁর আশু সুস্থ্যতা কামনা করে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাতক্ষীর জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাতক্ষীর জেলা কমিটির আহবায়ক এটিএম রইফ উদ্দিন সরদার ও সদস্য সচিব ডা. মো. মুনসুর রহমান এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। বিবৃতিদাতারা হলেন- বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাতক্ষীর জেলা কমিটি’র সদস্য মনিন্দ্র নাথ ম-ল, মো. বায়েজীদ হাসান, ডা. মো. নুর উদ্দীন, মো. আলাউদ্দিন, আহাজ উদ্দিন সুমন, মধুসুদন বিশ্বাস, ডা. সুদয় কুমার ম-ল প্রমূখ।

  • একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উদ্যেগে মতবিনিমিয় সভা অনৃুষ্ঠিত

    একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উদ্যেগে মতবিনিমিয় সভা অনৃুষ্ঠিত

    সংবাদ বিজ্ঞপ্তি : গত ১৭ জানুয়ারী সাতক্ষীরাতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উদ্যেগে সাতক্ষীরার একমাত্র যুদ্ধাপরাধ মামলার ঘোষিত রায় কার্যকর, যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়ে অভিযুক্ত পরিবার সমুহকে চিহ্নিত করে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায় থেকে বিমুক্ত করা, ২০১৩-১৪ সালে সংঘটিত সকল নাসকতা ঘটনার তদন্ত, দায়েরকৃত সকল মামলা কে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা বিশেষ করে রায়হান হত্যা ও মামুন হত্যার সকল চার্জসিটভুক্ত আসামীদের দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরু করা , কালিগজ্ঞের ফতেপুর ও চাকদার ঘটনার সকল চার্জসিট ভুক্ত আসামিদের দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরু ও সকলকে গ্রেফতার এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের নামে সকল সড়ক ও প্রতিষ্ঠানের নামকরণ বাতিলে দাবীতে এক মতবিনিমিয় সভা ম্যানগ্রোভ সভাঘরে অনৃুষ্ঠিত হয়।

    উপস্থিত জনগনের একাংশ


    নির্মূল কমিটি সাতক্ষীরার আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহীর সভাপতিত্বে ও সঞলনায় আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সুভাষ সরকার, শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ, সিনিয়র সিটিজেন ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সুশান্ত ঘোষ, সাবেক পিপি ওসমান গনি, দৈনিক প্রথম আলোর স্টাফ রিপোটার কল্যান ব্যানার্জি, নাগরিক নেতা এড. আযাদ হোসেন বেলাল, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সাতক্ষীরার জেলা সমাপদক শেখ হারুণ-অর-রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আকতার, বাসদ নেতা নিত্যানন্দ সরকার, অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, ডেইলি সাতক্ষীরার সম্পাদক হাফিজুর রহমান মাসুম প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সনাক সভাপতি পবিত্র মোহন দাশ, উদীচীর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আবু আফসান রোজ বাবু, দ্য এডিটস এর সম্পাদক তানজির আহমেদ, শিক্ষক নেতা মো. মহিউদ্দীন আহমেদ জেলা সাংস্কৃতিক পরিষদের সাবেক সাধারন সম্পাদক হেনরী সরদার, জাসদ জেলা সাধারন সম্পাদক মো. জাকির হোসেন লস্কর, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সম্পাদক শেখ মোসফেকুর রহমান মিলটন, বঙ্গবন্ধু সাংস্কুতিক জোটের সাধারন সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ সাধু, কবি সাহজাহান সিরাজ, কবি স ম তুহিন, কবি মনময় মনির, কবি রুবেল আহমেদ, গীতিকার মোকাম আলী খান, নদী বন ও পরিবেশ বাচাও আন্দোলন কামিটির সম্পাদক মফিজুর রহমান ও প্রগতির শেখ রেজাউল করিম প্রমুখ।

  • যেভাবে সাজানো হয়েছে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের কর্মসূচি

    আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন আগামীকাল শনিবার। ইতোমধ্যে সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এবারের সম্মেলনে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় তুলে ধরা হবে। এই বিষয়টি সামনে রেখেই সম্মেলনের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়’।

    সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ মঞ্চে আসার পর আধঘণ্টা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে। এরপর শোক প্রস্তাব উত্থাপন করবেন দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ওবায়দুল কাদের। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক শেখ ফজলুল করিম সেলিম। সভাপতি শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হবে। এবারের জাতীয় সম্মেলনে সারাদেশ থেকে প্রায় ৭ হাজার কাউন্সিলর এবং লক্ষাধিক নেতাকর্মী অংশ নেবেন।

    পরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শুরু হবে কাউন্সিল অধিবেশন। এই অধিবেশনে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। দলের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে।

    রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনের মূল মঞ্চের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক পর্বের জন্য তৈরি হচ্ছে আলাদা মঞ্চ। মূলমঞ্চে চার সারিতে চেয়ার সাজানো হবে। প্রথম সারিতে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বসবেন। দ্বিতীয়টিতে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সিনিয়র নেতা ও সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, বাকি দু’টিতে বসবেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। মোট ১২০টি চেয়ার রাখা হবে।

    আওয়ামী লীগের মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটির সদস্য সচিব ও দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, পদ্মা সেতুর ওপরে নৌকার আদলে তৈরি ৮০ ফুট বনাম ৪৪ ফুট মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। মূল মঞ্চের উচ্চতা হবে ৭ ফুট। মূলমঞ্চে চার ভাগে চেয়ার সাজানো হবে। এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণ এলিডি মনিটর থাকবে, যেখানে সম্মেলনের কার্যক্রম দেখা যাবে।

    বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে কিছুটা কৃচ্ছ্রতা সাধনের লক্ষ্যে সম্মেলনে সাদামাটা আয়োজনের জন্য এ বছর বিদেশিদের দাওয়াত করা হচ্ছে না। তবে, সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ১৪ দল, জাতীয় পার্টিসহ নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে দাওয়াত করা হয়েছে।

    ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের বেশির ভাগই দু’দিনব্যাপী হয়েছে। এবার তা এক দিনে নামিয়ে আনা হয়েছে খরচ কমাতে। ২০১৯ সালে সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০ ও ২১ ডিসেম্বর। সর্বশেষ সম্মেলনের বাজেট ছিল ৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এবারের সম্মেলনের জন্য বাজেট ৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা অনুমোদন করেছে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি। সূত্র: বাসস/সমকাল

  • ঠান্ডা মাথার খুনি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি

    ঠান্ডা মাথার খুনি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি


    সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: সাতক্ষীরায় ‘মহান সিপাহী জনতার অভ্যুত্থান দিবস’ পালন করছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ। সোমবার (০৭ নভেম্বর) বিকাল ০৪টায় শহরের ম্যানগ্রোভ সভা ঘরে দিবসটি উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

    আলোচনা সভায় সাতক্ষীরা জেলা জাসদের সভাপতি শেখ ওবায়েদুস সুলতান বাবলুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন রীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রিয়াজ। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন লস্কর শেলী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শেখ জাকির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আমির হোসেন খান চৌধুরী, তালা উপজেলা জাসদের সভাপতি বীর বিশ^াস আবুল কাশেম, দেবহাটা উপজেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওহাব, আশাশুনি উপজেলা জাসদের সদস্য সচিব সাহিদুল ইসলাম রুবেল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস.এম আবদুল আলীম প্রমুখ।

    আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ক্ষমতালিপ্সু উচ্চাভিলাসী সামরিক অফিসারদের দ্বারা ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার, অবৈধ ক্ষমতা দখল ও সংবিধান লংঘন, বঙ্গবন্ধু ও চার জাতীয় নেতা হত্যাসহ হত্যা-ক্যু ষড়যন্ত্রের রাজনীতি এবং উপনিবেশিক রাষ্ট্রকাঠামোর অবসানের লক্ষ্যে সংগঠিত ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর শহীদ কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তমের নেতৃত্বে ঐতিহাসিক সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনা ও মহান শহীদ বিপ্লবী কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তমের শিক্ষাকে ধারণ করে জাসদ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রকাঠামো অবসান করে সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে সুশাসন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অবিচল রয়েছে।

    এসময় বক্তারা ঠান্ডা মাথার খুনি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করেন।

  • জিএম কাদেরের চেয়ার কেউ রক্ষা করতে পারবে না: রাঙ্গা

    জিএম কাদেরের চেয়ার কেউ রক্ষা করতে পারবে না: রাঙ্গা

    ন্যাশনাল ডেস্ক: আসন্ন অধিবেশনে জাতীয় সংসদে জি এম কাদেরের উপনেতার আসনটি সরে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা। তিনি বলেন, ‘পার্টি অফিস থেকে জিএম কাদেরকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে। তার চেয়ার কেউ রক্ষা করতে পারবে না।’

    রবিবার (২৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে জাতীয় পার্টি (রওশনপন্থি) আয়োজিত উপজেলা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

    মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘আসন্ন অধিবেশনে সংসদে জিএম কাদেরের উপনেতার আসনটি সরে যাবে। বেগম রওশন এরশাদের চেয়ারের পাশে তিনি আর বসতে পারবেন না। রওশন এরশাদের পাশের চেয়ারে বসবেন অন্য কেউ। সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। জিএম কাদেরের চেয়ার কেউ রক্ষা করতে পারবে না।’

    তিনি বলেন, ‘আগামী ২৬ নভেম্বর জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বের পরিবর্তন হবে। সেখান থেকে বিদায় নেবে জিএম কাদের। জিএম কাদেরের সঙ্গে তিন জন এমপি ছাড়া আর কেউ নেই। আগামী ২৬ নভেম্বর রওশন এরশাদের ডাকা জাতীয় কাউন্সিলের আগেই এমপিরা কোন দিকে, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। তাই এ বিষয় নিয়ে সংশয় থাকবেন না। সময় মতো আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছে যাবো। বনানী ও কাকরাইল অফিস আমাদের হবে। জিএম কাদেরকে ওখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।’

    বিরোধী দলের এই চিফ হুইপ বলেন, ‘জাতীয় পার্টির অবৈধ চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদের আছেন। তিনি জাতীয় পার্টির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে মনোনয়ন বাণিজ্য করছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছ থেকে ৫ কোটি করে টাকা নিচ্ছেন। আবার বিএনপির জোটে যাবেন, সে জন্য তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবেন, সেখান থেকেও টাকা নিচ্ছেন। দুই নৌকায় পা রেখে রাজনীতি হয় না। জিএম কাদের তা-ই করছেন। আমি প্রশ্ন করতে চাই, জিএম কাদের সাহেব, আপনার কত টাকা প্রয়োজন? সরকারের মন্ত্রী থাকা অবস্থায় অনেক সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। টাকাগুলো কী করেছেন?’

    মসিউর রহমান রাঙ্গা আরও বলেন, ‘জিএম কাদের কখনও রাজনীতিবিদ ছিলেন না। তিনি ছিলেন পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের একজন কর্মচারী। সেখান থেকে তিনি রাজনীতিতে এসেছেন। পেট্রোলিয়াম করপোরেশন থেকে দুর্নীতির দায়ে তার চাকরি চলে যায়। অথচ তিনি নিজেকে ক্লিন ইমেজ হিসেবে দাবি করেন। নামের পেছনে জনবন্ধু লেখেন, তার নির্বাচনি এলাকায় জনশত্রু হিসেবে পরিচিত।’

    আলোচনা সভায় কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, ‘জিএম কাদেরের চারপাশে রয়েছে চাটুকারের দল। তারা জাতীয় পার্টিকে বাণিজ্যের প্ল্যাটফর্ম বানিয়েছেন। এই কালো থাবা থেকে জাতীয় পার্টিকে মুক্ত করতে হবে। জাপার দলীয় গঠনতন্ত্রে যেসব কালোধারা রয়েছে, তা সংশোধন করা হবে আগামী জাতীয় কাউন্সিলে। দল থেকে যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের দলে ফিরিয়ে আনা হবে।’

    সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা বলেন, ‘রওশন এরশাদ দল সংস্কার করার জন্য জাতীয় কাউন্সিল ডেকেছেন। আর জিএম কাদের জাতীয় পার্টিকে তার পিতৃ সম্পত্তি পেয়েছে বলে মনে করেন। আসলে এটি তার পিতৃ সম্পত্তি নয়। এটি এরশাদের সম্পত্তি। ভাইয়ের সম্পত্তি কখনও ভাই পায় না। এরশাদ সাহেবের সম্পত্তি পাবেন তার স্ত্রী রওশন এরশাদ।’

    এসএম আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন— অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, এম এ গোফরান, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ইকবাল হোসেনসহ অনেকে।

  • ‘রাজনীতির বিষফোঁড়া’ বিএনপির হাতে গণতন্ত্র নিরাপদ নয়: কাদের

    ‘রাজনীতির বিষফোঁড়া’ বিএনপির হাতে গণতন্ত্র নিরাপদ নয়: কাদের

    ন্যাশনাল ডেস্ক: দেশের রাজনীতির জন্য বিএনপি বিষফোঁড়া বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিনে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
    ওবায়দুল কাদের বলেন, ৭৫ সালের খুনিদের দোসর বিএনপি। দেশের রাজনীতির জন্য বিষফোঁড়া দলটির কাছে দেশের গণতন্ত্র ও আইন ব্যবস্থা নিরাপদ নয়। শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, যারা শেখ রাসেল ও ১৫ আগস্টের হত্যকাণ্ডে জড়িত ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।
    ওবায়দুল কাদের বলেন, এই হত্যাকাণ্ড ক্ষমার অযোগ্য। যারা ইনডেমনিটি দিয়েছিল তাদের উত্তরাধিকার বহন করছে বিএনপি। তার আগে শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষে তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো।
    বনানী কবরস্থানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
    এ সময় ১৫ আগস্ট নিহত সব শহীদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানায় আওয়ামী লীগ। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ নীরবতা পালনও ফাতেহা পাঠ করেন নেতাকর্মীরা।
    ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন শেখ রাসেল।
    ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মতো শিশু রাসেলও রক্ষা পাননি ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ঘাতকেরা নির্মমভাবে তাকেও হত্যা করেছিল। তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
    শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ছোট্ট ভাইয়ের কবর জিয়ারত করতে সকালে বনানী কবরস্থানে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানাও। তারা ভাইয়ের কবরে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে দেন।

  • ওয়ান ইলেভেনের পুনরাবৃত্তি আর কখনও হবে না: কাদের

    ওয়ান ইলেভেনের পুনরাবৃত্তি আর কখনও হবে না: কাদের

    ন্যাশনাল ডেস্ক: অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় বিএনপি আরেকটি ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টির দুঃস্বপ্ন দেখছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশে ওয়ান ইলেভেনের পুনরাবৃত্তি আর কখনও হবে না। কয়েকটি সমাবেশ করেই সরকার পড়ে যাবে এমনটি যারা ভাবেন, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

    তিনি আজ সোমবার (১৭ অক্টোবর) তার বাসভবনে ব্রিফিংকালে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ জলের স্রোতে ভেসে আসা কোনও দল নয়। এদেশের মাটি ও মানুষের অনেক গভীরে প্রোথিত আওয়ামী লীগের শেকড়।

    আওয়ামী লীগ ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাসী

    তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে উচ্চ আদালত, এটি আওয়ামী লীগ সরকারের কোনও সিদ্ধান্ত নয়– বিএনপি মহাসচিবকে একথা আবারও মনে করি দিয়ে কাদের আরও বলেন, ২০৪১ সাল পর্যন্ত কে ক্ষমতায় থাকবে, কে থাকবে না তা একমাত্র আল্লাহ এবং দেশের জনগণ জানেন। আওয়ামী লীগ ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাসী, জনগণের আস্থার প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

    দেশের মানুষ চাইলে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করবে, না চাইলে করবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সৎ সাহস শেখ হাসিনার আছে। ক্ষমতা চিরস্থায়ী কোনও বিষয় নয়। জনগণের কল্যাণে কাজ করলে জনগণ কখনও কাউকে বিমুখ করে না। আর সেজন্য আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকে জনমানুষের রাজনীতি করে আসছে।

    তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, ষড়যন্ত্র, হত্যা, আগুন সন্ত্রাসের রাজনীতি করে বিএনপি।

    বিএনপি একটি অকৃতজ্ঞ দল

    বিএনপিকে একটি অকৃতজ্ঞ দল হিসেবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাদের নেত্রীকে নির্বাহী আদেশে মুক্ত করে বাসায় থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু সেই মানবিকতা ও কৃতজ্ঞতাবোধও তাদের নেই। বিএনপি বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা করে এমন দাবি করে কাদের বলেন, সরকার যে কাজই করুক বিচার-বিবেচনা না করে বিএনপি অন্ধ সমালোচনা শুরু করে।

    আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবারও বলেন, দুনিয়ার কোথাও যা নেই তা নিয়ে কেন বিএনপি অহেতুক বিতর্কের সৃষ্টি করে। সংবিধান অনুযায়ী পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হবে। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো জনগণের জন্য রাজনীতি করলে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে।

    সবার আগে মির্জা ফখরুলের পদত্যাগ করা উচিত

    বিএনপি নেতাদের কথায় কথায় সবার পদত্যাগ দাবি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলা প্রসঙ্গে তিনি বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে বলেন, যাদের দলের অভ্যন্তরেই গণতন্ত্র নেই তারা দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে কীভাবে ?

    ওবায়দুল কাদের বলেন, যদি পদত্যাগ করতেই হয় তাহলে আন্দোলন ও নির্বাচনে টানা ব্যর্থতার জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরেরই সবার আগে পদত্যাগ করা উচিত। বিএনপি মহাসচিব বিনা সম্মেলনে কয় বছর ধরে দলের মহাসচিব পদে জেগে বসে আছেন? বিএনপির সম্মেলন কবে হয়েছে ফখরুল সাহেবের হয়তো তাও জানা নেই।

    ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ করা উচিত– মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগে বাস্তবতা অনুধাবন করতে শিখুন। দেশে আমার মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কত মেগা প্রকল্প হয়েছে এবং এদেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। একথা দেশের মানুষ ভালো করেই জানে। কিন্তু বিএনপি জেনেও না জানান ভান করছে।

    সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, আমি বিআরটি প্রকল্পের বাস্তবতা তুলে ধরেছি। সত্যকে স্বীকার করার সৎ সাহস আমাদের আছে। মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে আমি বা আমরা বসে নেই। দ্রুত কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হচ্ছে।

  • জাসদ কেন লালন দিবস পালন করছে?- জিয়াউল হক মুক্তা

    জাসদ কেন লালন দিবস পালন করছে?- জিয়াউল হক মুক্তা

    জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল – জাসদ তার প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর উদযাপনের অংশ হিসেবে এবছর ১৭ অক্টোবর দেশব্যাপি লালন দিবস পালনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ কর্মসূচি দলের অভ্যন্তরে ব্যাপক আগ্রহের জন্ম দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সঙ্গীতানুষ্ঠান আয়োজিত হচ্ছে। লালনের বাণির ব্যাপক প্রচারের জন্য কেন্দ্রীয় উদ্যোগে পক্ষকালব্যাপি অনলাইন ক্যাম্পেইন পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু যারা জাসদকে মোটে সহ্য করতে পারে না, তারা এতে হায় হায় করে ওঠলো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও চায়ের আড্ডায় তাদের জাসদ প্রেম উথলে ওঠলো। তারা আফসোস করতে লাগলো, জাসদ শেষ; জাসদ মার্কসবাদ থেকে এক দৌড়ে চলে গেছে লালনবাদে; জ্ঞানের ভাব দেখিয়ে একে কেউ কেউ বলেছে বস্তুবাদ ছেড়ে জাসদের ভাববাদি যাত্রা শুরু। বলা বাহুল্য, এসব লোক না বোঝে মার্কস, না বোঝে লালন, না বোঝে জাসদ; এদের না আছে বাংলাদেশের চলমান রাজনীতি নিয়ে কোন বোঝাপড়া; সর্বোপরি না আছে সাধারণ কাণ্ডজ্ঞান। সাধারণ কাণ্ডজ্ঞানের বিষয়টিতে তাকানো যাক। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণভাবে সাহিত্য ও সঙ্গীতসমেত নন্দন-সংস্কৃতি চর্চা করেনা। তবে সরকারিভাবে রবীন্দ্র-নজরুলজয়ন্তি উদযাপন করা হয়ে থাকে এখনও। লালনের আখড়াতেও সরকারি আয়োজনে অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। দেশে একসময় ব্যাপকভাবে রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত স্মরণে বিবিধ সংগঠন-প্রতিষ্ঠান অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করতো। বাঙালি সংস্কৃতি এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের কৃতি ব্যক্তিত্বদের স্মরণ করার মধ্যে কোন সমস্যা বা আপত্তি থাকা উচিত নয়। এক্ষেত্রে রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত মার্কসবাদি না লালনবাদি অথবা বস্তুবাদি না ভাববাদি সেটা বিবেচ্য নয়। প্রসঙ্গত মনে রাখা দরকার, দেশ-বিদেশের রাজনীতি-শিল্প-সাহিত্যের অনেক কৃতি ব্যক্তিত্বকে জাসদ বা জাসদের মতো দলগুলো স্মরণ করে, এবং এসব ব্যক্তিত্বের খুব অল্প সংখ্যকই মার্কসবাদ বা মার্কসিয় দর্শন দ্বান্দ্বিক ও ঐতিহাসিক বস্তুবাদ চর্চা করেন। সুতরাং জাসদের লালন-চর্চা একটি সাধারণ ব্যাপার— এটা নিয়ে যারা ব্যঙ্গোক্তি করছে তারা নিজেদের কাণ্ডজ্ঞানহীনতা প্রদর্শন করে হাসি ও করুণার পাত্র হচ্ছে। এবারে আসা যাক বাংলাদেশের চলমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটে লালন দিবস পালনের বিষয়ে। বাংলাদেশে এখন একটি যুদ্ধ-পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এক পক্ষে আছে জাসদ ও আওয়ামী লীগসমেত মুক্তিযুদ্ধের ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো। অন্য পক্ষে আছে মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা-ধর্ষণ-অগ্নিকাণ্ড-লুটপাটে নিয়োজিত অপশক্তি জামাত ও জামাতের প্রধান রাজনৈতিক-আদর্শিক মিত্র বিএনপি; আদর্শিকভাবে এদের সাথে আরো আছে হেফাজত-হিজবুতের মতো জঙ্গিরা। মধ্যপন্থার নামে যারা দূরে আছে, তারা ধিরে ধিরে তাদের স্বরূপ প্রকাশ করছে ও বিএনপি জোটের পক্ষের রাজনীতি চর্চা করছে। বাংলাদেশের চলমান রাজনীতিতে দক্ষিণপন্থি জঙ্গিরা সর্বশেষ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনে বাধা দিয়েছে। এর আগে তারা বাধা দিয়েছে বাউল-ভাস্কর্য স্থাপনে। ভাস্কর্য স্থাপনে বাধা দিয়ে তারা কেবল সৃজনশীল শিল্পকর্মের বিরোধিতা করেনি, তারা জাতির ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি-জীবনবোধ-জাতীয়তাবাদকে পরাভূত করতে চেয়েছে। জাসদ একদম শুরু থেকে এ বিষয়ে আওয়ামী দোদুল্যমানতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এদেরকে শক্তভাবে মোকাবেলার প্রশাসনিক পদক্ষেপ দাবি করেছে এবং সভা-সমাবেশ-বক্তব্য-বিবৃতির মাধ্যমে এদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অবস্থান বজায় রেখেছে। মনে রাখতে হবে, জাসদের অপরিমেয় পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে ২০০১ সাল পরবর্তীতে ১৪ দল গঠিত হয়েছে দক্ষিণপন্থি রাজনৈতিক বিপদ মোকাবেলা করতে। দক্ষিণপন্থার বিপদ মোকাবেলার বিষয়টিকে জাসদ কেবল রাজনৈতিকভাবে দেখছে না; দেখছে আরো ব্যাপক বিস্তৃতিতে। জঙ্গি দক্ষিণপন্থার একটি সাংস্কৃতিক পশ্চাদভূমি রয়েছে, আর তা হচ্ছে সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা। সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতার ভূমিতে পাল্টে যাচ্ছে মানুষের ভাষা-পোশাক-চালচলন-জীবনযাপন, তার আশ্রয়ে রোপিত হচ্ছে ধর্মান্ধতা ও ধমী‍র্য় অসহিষ্ণুতার বীজ, আর তাই জন্ম দিচ্ছে রাজনৈতিক ইসলাম ও জঙ্গিবাদ। জাসদ সেজন্য সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি সাংস্কৃতিক সংগ্রামের উপর জোরারোপ করছে বেশ কয়েক বছর ধরে। জাসদের জাতীয় ও কেন্দ্রীয় কমিটির অনেকগুলো সভার সিদ্ধান্তে তা প্রতিপলিত। দীর্ঘমেয়াদি সাংস্কৃতিক সংগ্রামের অংশ হিসেবে জাসদ বাঙালির স্মরণীয় বরণীয় ব্যক্তিত্ব ও তাঁদের শিক্ষা প্রচারের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। তার অংশ হিসেবে লালন দিবস পালন অযৌক্তিক কিছু নয়। ব্যাপক বিস্তৃত সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতার আগ্রাসন জাসদের মিত্র আওয়ামী লীগকেও গিলে ফেলছে প্রায়। জামাতের সাথে মিলেমিশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও যখন গ্রামে গ্রামে বাউলদের আখড়া ভেঙে দেয়, তাঁদের উপর হামলা করে, তাঁদের চুল-দাঁড়ি-গোঁফ কেটে দেয়, মসজিদে জোর করে ধরে নিয়ে গান না গাইতে তওবা করায়— জাসদ তখন প্রতিবাদ জানায়। জাসদ প্রতিবাদ জানায় বক্তব্য বিবৃতি দিয়ে, রাজপথে মিছিল করে, সংসদে আলোচনা করে ও প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করে। শরিয়ত বাউল ও রীতা বাউল পুলিশী হয়রানির শিকার হলে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপির কাছে প্রশ্নোত্তর পর্বে জবাবদিহিতা চান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বাউলদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন; যদিও ধর্মানুভূতিতে আঘাত বিষয়ে তার বক্তব্য ছিল অস্বচ্ছ ও অগ্রহণযোগ্য— তার বক্তব্য থেকে মনে হয়নি একজন প্রধানমন্ত্রী কথা বলছেন; মনে হচ্ছিল কথা বলছিলেন সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতায় আক্রান্ত একজন সাধারণ মুসলিম নাগরিক; তার বক্তব্যে বাউলদের সম্পর্কে চরম অজ্ঞতা প্রকাশিত হয়েছে। আজও জামাত ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি যখন গ্রামে-গঞ্জে বাউলদের গান গাইতে বাধা দেয়, জাসদ নেতাকর্মীগণ তখন সশরীরে উপস্থিত থেকে বাউলদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। সুতরাং জাসদ এক দৌড়ে লালন বা বাউলদের কাছে চলে গেছে তা বলা যাবে না। জাসদ ঐতিহাসিকভাবে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বাউল ও লালন অনুসারিদের সাথে আছে। এখন আসা যাক মার্কস ও লালন প্রসঙ্গে। মার্কসের জন্ম ১৮১৮ সালে, মৃত্যু ১৮৮৩ সালে। লালনের জন্ম ১৭৭৪ সালে, মৃত্যু ১৮৯০ সালে। ১৮১৮ সালে মার্কসের জন্মের আগে এবং ১৭৯৮ সালে লালনের গুরু সিরাজ সাঁইয়ের মৃত্যুর আগে লালন খেরকা পান। খেরকা পাওয়ার ঘটনাটি হলো একটি রাইটস অব প্যাসেজ বা উত্তরণের আচার— যখন থেকে বাউলগণ জাগতিক সকল চাওয়া-পাওয়ার উর্ধে উঠে মৃতপ্রায় জীবনযাপন করেন এবং কেবল ভিক্ষা করে জীবন পরিচালনা করেন। বাউল হিসেবে পরিপূর্ণ তাত্ত্বিক জ্ঞান অর্জন ও গোপন জীবনাচারের মাধ্যমে নিজেকে ব্যবহারিক জীবনে যোগ্য প্রমাণ করতে পারলেই কেবল একজন বাউল খেরকা পান। এসব তথ্যের মাধ্যমে এখানে বলার চেষ্টা হচ্ছে যে মার্কসেরও আগে লালন সাম্যের তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেন, অনুশীলন বা প্রাক্সিসকে গুরুদ্ব দেন। উপরন্তু এখানে মনে রাখতেই হবে যে, সারা দুনিয়ার অ্যাকাডেমিক বা বিদ্যায়তনিক পরিমণ্ডলে মার্কসবাদের প্রধান সমালোচনা যেখানে অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণবাদ বা কেবলমাত্র অর্থনীতিকে শ্রেণি ধারণা ও রাজনীতির প্রধানতম নিয়ামক ভাবা নিয়ে, সেখানে লালন ভেদ-বিভেদ-অসমতা-বৈষম্য-সহিংসতার অর্থনৈতিক ও অ-অর্থনৈতিক উভয় মাত্রার উপর জোর দিয়েছেন। এখানে পশ্চাত্য ও প্রাচ্যের পার্থক্য স্পষ্ট। পাশ্চাত্য সমাজে অর্থনৈতিক শ্রেণি যতোটা গুরুত্ব পেয়েছে, প্রাচ্যের সমাজে অর্থনৈতিক ভেদ-বিভেদ-অসমতা-বৈষম্য-সহিংসতার পাশাপাশি জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-গোষ্ঠিগত ভেদ-বিভেদ-অসমতা-বৈষম্য-সহিংসতাও গুরুত্ব পাওয়ার দাবি রাখে। প্রাচ্যে শ্রেণি বিভক্ত সমাজের মার্কসিয় বিশ্লেষণের সাথে সাথে অবশ্যই লালনের বিশ্লেষণও মানতে ও ব্যবহার করতে হবে। অতীতে যা করা হয়নি, তা এখন করতে হবে। সবশেষে তথাকথিত জ্ঞানগর্ভ বিষয়টিতে আসা যাক— বস্তুবাদ ও ভাববাদ বিষয়ে। এটা দর্শনের সবচেয়ে মৌলিক প্রশ্ন। বস্তু আগে, নাকি ভাব/চেতনা আগে— এ প্রশ্নের জবাব দিয়ে জগতের সকল দর্শনকে দুটো ভাগে ভাগ করা হয়। যারা মনে করেন চেতনা/ভাব আগে, তারা ভাববাদি। আর যারা মনে করেন, বস্তুজগত থেকে চেতনা/ভাবজগতের উদ্ভব, তারা বস্তুবাদি। মার্কস হেগেলের দ্বন্দ্ববাদকে গ্রহণ করেছেন নিজের বস্তুবাদ দিয়ে পরিমার্জন করে— তিনি দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের তাত্ত্বিক জনক। লালন নিজেও বস্তুবাদি; তিনি কোনো ধরনের অতিপ্রাকৃতিকতায় বিশ্বাস করতেন না। একজন যুক্তিশীল মানুষ হিসেবে লালন তাঁর সমস্ত চিন্তার কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছেন মানুষকে। মানুষের আরাধনা তাঁর কাছে প্রধান। ঈশ্বর বলতে তিনি কোন অতিপ্রাকৃতিক সত্তায় বিশ্বাস করেননি; মানুষ দেহের আকারের মধ্যে তিনি ঈশ্বর পেয়েছেন— ঈশ্বর অতিপ্রাকৃতিক বা স্বতন্ত্র কোনো সত্তা নয়। ঈশ্বরের মাধ্যমে নয়, বরং মানুষের মধ্যে ঈশ্বর জন্মেছেন। আর মানুষের জন্মকেও তিনি মাত্র একবারের জন্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ দেখতে পেয়েছেন— পুনর্জন্ম বা পুনরুত্থান তিনি নাকচ করেন। আত্মার প্রসঙ্গ টেনে এনেও কেউ কেউ লালনকে ভাববাদি বলতে পারেন। কিন্তু আত্মা লালনের কাছে কোন অতিপ্রাকৃত সত্তা নয়, বাইরের সত্তা নয়, দেহে আত্মার বাস। হ্যাঁ, লালন ঈশ্বর ধারণার ব্যবহার করেছেন, কিন্তু তা পরম অর্থে, যে পরমের বসবাস মানুষের দেহে। তার মানে, মানুষই পরম। এসব বানানো কথা নয়, লালনের অনেক অনেক গানে এগুলো সহজ-সরল ও রূপক-সাংকেতিক উভয় ভাষায় বর্ণিত রয়েছে। লালন ভাববাদি না বস্তুবাদি সে বিষয়ে সংশয় বা বিভ্রান্তি বা অজ্ঞতা দূর করতে তাঁর অনেক প্রাসঙ্গিক গানের মধ্য থেকে একটির কয়েক লাইন ব্যবহার করা যায়: তুমি, আপনি আল্লাহ ডাকো আল্লাহ বলে, আল্লাহ কে বোঝে তোমার অপর লীলে। লালনের দর্শন চিন্তা নিয়ে আরো অনেক আলোচনার রয়েছে, কিন্তু তা বর্তমান রচনার শিরোনামের বিষয়গত পরিধির মধ্যে না আনাই ভালো। লালন হচ্ছেন বাঙালি জাতির মহত্তম সৃজনশীল প্রতিভা ও প্রধানতম দার্শনিক। বাঙালির সংস্কৃতি, জীবনবোধ ও জাতীয়তাবোধ গঠন ও পরিশীলনে তাঁর অবদান সর্বাধিক। কিন্তু এভাবে তাঁর অবদান কখনো আলোচিত হয়নি। সেসব পরে আলোচনা করা যাবে। তবে আপাতত এখানে দুটো বিষয় বলে রাখা জরুরি। প্রথমত, সংখ্যালঘু শহুরে ও তথাকথিত শিক্ষিত নাগরিক সমাজের বাইরে তিনি অবস্থান করতেন। এ নাগরিক মানস মনে করে যে তারা বেশি জানে ও বোঝে। লালন গ্রামের লোক, আর গ্রামে থেকেও এবং তিরোধানের পরেও, তিনি বৃহত্তর জনগোষ্ঠির মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়— এভাবে তারা লালনকে মূল্যায়ন করে ও সার্টিফিকেট দিতে চায়। লালনকে বোঝার বৌদ্ধিক সক্ষমতা তাদের নেই। কিন্তু লালন নিজের পরিচয়েরই যখন কোন তোয়াক্কা করেন না, সেখানে এদের সার্টিফিকেটে তাঁর কী আসে যায়! দ্বিতীয়ত, বাংলার বাউলদের ও লালনকে নিয়ে যারা কাজ করেছে, তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তাঁকে মূল্যায়নের ও তাঁর পরিচয় দেয়ার চেষ্টা করেছে। বাউলদের ও লালনকে নিয়ে প্রকাশিত প্রায় সকল প্রচলিত বইই ভুল। এটাও বানানো কথা নয়। বাংলার বাউলদের মধ্যে প্রাজ্ঞজনগণ একমাত্র শক্তিনাথ ঝা রচিত বইগুলোকে গুরুত্ব দেন; অন্য সমস্ত রচনাকে তারা নাকচ করেন ভুল হিসেবে। বাউলগণ নিজেরা যেভাবে নিজেদের বোঝেন, সেটাই তো তাঁদের পরিচয়; অন্যরা কিভাবে তাঁদের পরিচয় নির্মাণ করলো তা তো বিবেচ্যই হতে পারে না। উপরের দুটো বক্তব্যের সাথে প্রাসঙ্গিক একটি বক্তব্য দিয়ে এ রচনা শেষ করা যায়। রাজনৈতিক ইসলামের ও জঙ্গিবাদের অনুসারীরা বাউলদের ও লালনকে ভালো বুঝতে পারে। এজন্যই তারা বাম-সমাজতন্ত্রি-কমিউনিস্ট ও এমনকি নাস্তিকদের চেয়েও বেশি ঘৃণা করে বাউলদের, লালনকে। এখান থেকেও যারা বোঝেনা বাউলগণ বা লালন আসলে কে, বাঙালি ও বাঙালি প্রগতিশীলদের কেন উচিত তাদের স্মরণ ও বরণ করার, তারা মূলত উপরে বর্ণিত ওই দুই শ্রেণির একটির প্রতিনিত্বি করেন। এদের জন্যই লালন বলেন: এসব দেখি কানার হাটবাজার। * জিয়াউল হক মুক্তা: জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। জাসদের মুখপত্র লড়াই-এর সম্পাদক।

  • ডেডলাইন ১০ ডিসেম্বর: কী ঘোষণা দেবে বিএনপি?

    ডেডলাইন ১০ ডিসেম্বর: কী ঘোষণা দেবে বিএনপি?

    ন্যাশনাল ডেস্ক: আগামী ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে বিভাগীয় সমাবেশের মধ্য দিয়ে দেশের সব সাংগঠনিক বিভাগে মহাসমাবেশ শুরু করবে বিএনপি। এই পর্বের কর্মসূচি শেষ হবে আগামী ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় ঢাকায় মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে। এই সমাবেশেই পরবর্তী আন্দোলন-সংগ্রামের কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি।

    বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সূত্রগুলো জানিয়েছে, ১০ ডিসেম্বর থেকেই মূল পর্বে যাত্রা করবে বিএনপি। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় থাকা যুগপৎ কর্মসূচি শুরু করার প্রচেষ্টা থাকবে। তবে যদি অন্যান্য দলের সেরকম প্রস্তুতি না থাকে, সেক্ষেত্রে এককভাবেই রাজপথে ধারাবাহিক থাকবে বিএনপি।

    দলের স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য ও বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির আসন্ন আন্দোলনের রূপরেখা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেছে। ১ অক্টোবর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সভায় দলের ১০ সাংগঠনিক বিভাগের নেতারা দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে আন্দোলনের ধরন ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত পরামর্শ দিয়েছেন।

    বিএনপির ১০ বিভাগের নেতারা অনুষ্ঠিত সভায় দাবি আদায়ের জন্য কঠোর কর্মসূচি চেয়েছেন। সেক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে কঠোর হওয়ার প্রস্তাব করেছেন তারা। পাশাপাশি ইস্যু হিসেবে জনসম্পৃক্ত বিষয়গুলো প্রাধান্য দেওয়ার জন্য শীর্ষ নেতৃত্বকে পরামর্শ দেন বিভাগের নেতারা।

    বৈঠকে অংশ নেওয়া নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, প্রস্তাবিত কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—অবরোধ, লংমার্চ, জেলা থেকে জেলায় রোড মার্চ, ঢাকা থেকে বিভাগীয় শহরে রোড মার্চ, ৬৮ হাজার গ্রামে একই দিন গণমিছিল।

    নেতাদের প্রস্তাবে আরও রয়েছে, ১০ ডিসেম্বর থেকে লাগাতার কর্মসূচি প্রদান এবং ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবি।

    ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, কুমিল্লার নেতারা প্রশাসন ও পুলিশকে চাপের মধ্যে রাখার প্রস্তাব করেছেন। কোনও কোনও নেতার পরামর্শ—আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ‘আইনবিরোধী’ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে কেন্দ্রীয় নেতারা যেন সব সমাবেশে তাদের অনুরোধ জানান। তবে সমাবেশে অংশগ্রহণে বাধা পেলে নেতাকর্মীদের প্রতিরোধ করার অনুমতি দেওয়ার জন্যও প্রস্তাব করেছেন বিএনপির তৃণমূল নেতারা। প্রয়োজনে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে’ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যুক্ত বলেও প্রচারের প্রস্তাব রয়েছে কোনও কোনও নেতার।

    কর্মসূচির মধ্যে নির্বাচন কমিশন ও সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি রাখার প্রস্তাবও এসেছে জোরালোভাবে।

    বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, ১০ ডিসেম্বর বিগত দেড় বছরের ধারাবাহিক কর্মসূচি পালনের একটি পর্ব সম্পন্ন হবে। ফলে ১০ ডিসেম্বর নতুন রাজনৈতিক কর্মসূচি আসা স্বাভাবিক।

    বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিভাগীয় নেতাদের মতবিনিময়ে অংশ নিয়েছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন। তিনি বলেন, ‘আমরা ইউনিয়ন-উপজেলা-জেলা পর্যায়ে সমাবেশের পর দলের বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ ডেকেছি। ১২ অক্টোবর শুরু হয়ে ১০ ডিসেম্বরের মধ্য দিয়ে আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম একটি পরিণতির দিকে যাবে।’

    ‘যেহেতু ঢাকায় মহাসমাবেশ হবে ১০ ডিসেম্বর, সে কারণে এটিকে আমরা টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে দেখছি। আমরা সাধারণ মানুষের ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছি। ১০ ডিসেম্বরের পর দেশে সরকারের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। এই টার্নিং পয়েন্টের কারণেই ১০ ডিসেম্বর গুরুত্বপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেন সাখাওয়াত হাসান জীবন।

    বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ের প্রভাবশালী সূত্র জানিয়েছে, ১০ ডিসেম্বর নতুন কর্মসূচি আসবে। সেক্ষেত্রে চলমান যে যুগপৎ আন্দোলনের প্রক্রিয়া চলছে, তার বাস্তবায়ন দেখা যেতে পারে। এই সমাবেশ থেকে বিক্ষোভ, মিছিল, পথসভা, বিভাগে-বিভাগে সমাবেশের কর্মসূচি আসতে পারে।

    বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় সমাবেশের মধ্য দিয়ে পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচির সূচনা হবে মাত্র। ইতোমধ্যে দলের নেতা আমানউল্লাহ আমান ১০ ডিসেম্বরের পর খালেদা জিয়ার নির্দেশে দেশ চলবে বলে বক্তব্য দিয়েছেন। তার এই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলেও আলোচনা শুরু হয়েছে। বিএনপির মহাসচিব বলেছেন, আমানের বক্তব্যে সরকার ভয় পেয়েছে।

    দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু মনে করেন, বিএনপি জনগণের সংকটের সমাধান ও নাগরিক ইস্যুতে ধারাবাহিক আন্দোলনে রয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ। এই সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি আসতে পারে বা বিরতি দিয়ে আবার শুরু হতে পারে।

    শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘নতুন কর্মসূচি কী আসবে—তা এখনই বলা যাচ্ছে না। আমাদের দলের স্থায়ী কমিটি এ বিষয়ে বৈঠক করবে। তারা আলোচনার মাধ্যমে কর্মসূচি নির্ধারণ করবে। তবে এটা বলা যায়, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি আসবে; যদি সরকার কর্মসূচিকে ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে না দেয়।’

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘১০ ডিসেম্বরে কী কর্মসূচি আসবে—এটা আমাদের পলিসির বিষয়। দল যখন কর্মসূচি ঠিক করবে, তখন জানানো হবে।’