Category: রাজনীতি

  • ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত সাতক্ষীরার শ্যামনগরের ৪টি ইউনিয়নের ১৫’শ পরিবারের মাঝে বিএনপির খাবার বিতরন

    স্টাফ রিপোটার ঃ ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত সাতক্ষীরার শ্যামনগরের ৪টি ইউনিয়নের হতদরিদ্র এক হাজার ৫’ শ পরিবারের মাঝে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আলহাজ¦ রাকিবুল ইসলাম বকুলের পক্ষ থেকে রান্না করা খাবার বিতরন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার শ্রীফলকাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উক্ত খাবার বিতরনের উদ্বোধন করেন, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহবায়ক এ্যাড. সৈয়দ ইফতেখার আলী।
    উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ভুরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জি.এম লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে উক্ত খাদ্য বিতরন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম, যুগ্ম-আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, জেলা যুবদল সভাপতি আবু জাহিদ ডাবলু, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সাইফুল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি সোহেল আহমেদ মানিক, জেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান মুকুল, স্বেচ্ছাসেবক দল সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম, গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মাসুদুল আলম, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এড. সোলায়মান কবীর, সদস্য আশেক ইলাহি মুন্না, যুবনেতা হাসান শাহারিয়ার রিপন,সিটি কলেজ সাধারন সম্পাদক সোহেল রানা প্রমুখ।
    সাবেক ছাত্র নেতা বোরহান উদ্দীন সেতুর সার্বিক সহযোগিতায় এ সময় উপজেলার ইশ^রীপুর, গাবুরা, বুড়িগোয়ালিনী ও কাশিমাড়ি ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত হতদরিদ্র এক হাজার ৫’শ পরিবারের মাঝে উক্ত খাবার বিতরন করা হয়।
    বক্তারা এ সময় বলেন, বিএনপি রাজনীতি করে জনগণের কল্যানের জন্য। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে করোনা ও ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে সহযোগিতা করে যাচ্ছে দলীয় নেতা-কর্মীরা। আগামীতেও এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে তারা আরো জানান।

  • পীর সাহেব চরমোনাইয়ের পক্ষ থেকে আম্পান ক্ষতিগ্রস্তদের নগদ টাকা প্রদান

    প্রেস বিজ্ঞপ্তি: আজ মঙ্গলবার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর আলহাজ্ব হজরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদরেজাউল করীম,পীর সাহেব চরমোনাই এর পক্ষ থেকে আম্পান ক্ষতিগ্রস্ত সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মানুষের মাঝে নগদঅর্থ প্রদান করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নায়েবে আমীর অধ ̈ক্ষ হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়ালসাহেব, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যপক আশরাফ আলী আকন, কেন্দ্রীয় যুগ্মসাধারন সম্পাদক অধ অধ্যপক আব্দুল করীম শাহিন, ইসলামীযুব আন্দোলনকেন্দ্রীয় সাংগাঠনিক সম্পাদক খুলনা বিভাগ ডাঃ কাজী মো: ওয়েজকুরণী।প্রধান অতিথি তার বক্তবে ̈বলেন- সাতক্ষীরাতে মজবুত, টেকশই ও স্থায়ী বাঁধের বিকল্প নেই। সাতক্ষীরা জেলাকে বন্যা মুক্ত রাখতে সরকারকে দ্রুত বাঁধ নির্মাণের আহবান জানান। বিশেষ অতিথি হিসাবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি সাতক্ষীরা জেলা ছদর (সভাপতি) আলহাজ্ব শেখ আব্দুর রাজ্জাক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি মুহাদ্দিস মোস্তফা শামছুজ্জামান, সেক্রেটারী মো: ছারোয়ার আলম, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক তোছাদ্দেক হোসেন খোকা, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি মহিউদ্দীন আল ফারুক, ইসলামী যুব আন্দোলন সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি মো: মুবাশশীরুল ইসলাম তকী,ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি মো: কবিরুল ইসলাম, মাওঃ আব্দুল হান্নান, মাওঃ আবু বক্কর সিদ্দিক, হাফেজ মোখলেছুর রহমান, মো: মনিরুল ইসলাম সহ শ ̈ামনগর উপজেলার নেতৃবৃন্দ। ইসলামী আন্দোনল বাংলাদেশ সাতক্ষীরা জেলা শাখার পক্ষ থেকে ঘূর্ণীঝড় আম্পানে দুর্গত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত জনগনের পাশে দাড়ানোর জন্য সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়েছে। সেই সাথে সরকারকে দুর্গত মানুষের জন্য জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থথা গ্রহনের দাবি জানানো হয়েছে।

  • সাতক্ষীরায় জেলা বিএনপি’র জরুরি সভা

    সাতক্ষীরায় জেলা বিএনপি’র জরুরি সভা


    প্রেস বিজ্ঞপ্তি: ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তার বিষয়ে জেলা বিএনপির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা শহরের কামালনগরে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক এড. সৈয়দ ইফতেখার আলী।
    সদস্য সচিব আব্দুল আলীম চেয়ারম্যানের সঞ্চালনায় সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়কদের নিয়ে জরুরি আলোচনা অনুষ্ঠিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারে খাদ্য সহায়তা দেয়া এবং এই খাদ্য সহায়তায় অর্থ বরাদ্দের জন্য বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
    উক্ত সভায় অন্যন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক যথাক্রমে হাবিবুর রহমান হাবিব, অধ্যাপক মোদাচ্ছেরুল হক হুদা, আশাশুনি উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস, শ্যামনগর উপজেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান কবির, জেলা বিএনপির সদস্য আশেক এলাহী মুন্না, আশাশুনি উপজেলা বিএনপি নেতা মশিউল হুদা তুহিন।

  • জাসদের ঈদ শুভেচ্ছা

    জাসদের ঈদ শুভেচ্ছা

    জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ শনিবার এক বিবৃতিতে দেশের মুসলমান সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশের মুসলমান সম্প্রদায়ের সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তারা বলেন, চলমান বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংকটের মধ্যে এবার বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলমানদের জন্য রমযান ও ঈদ এসেছে। তাই এবারের রমযান ও ঈদ অন্য রকম রমযান ও ঈদ। রমযান মাসে দিনের বেলা পানাহার থেকে বিরত থাকাসহ সংযমের প্রকৃত চেতনায় মুসলমানরা এবার রমযান পালন করেছেন। আর রমযানের সংযমের কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এবারের ঈদও সংযমের ঈদ। এবারের ঈদ আনন্দের ঈদ নয়, শপিং-কেনাকাটা-নতুন পোশাক পড়া- ভূরিভোজন-রসনাবিলাসের ঈদ না। এবার ঈদ আনন্দের খরচ বাঁচিয়ে করোনা সংকটে বিপর্যস্ত কর্মহীন-আয়হীন-নিরুপায়-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মধ্যেই ঈদের আনন্দ। এবারের রমযান ও ঈদ বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলমানদের জন্য সংযম ও আনন্দ প্রকাশের এই নতুন ধারা শিক্ষনীয় হয়ে থাকবে। জাসদ নেতৃদ্বয় ঈদে দেশের মুসলমান সম্প্রদায়সহ সকল মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সুস্থতা, নিরাপত্তা ও কল্যাণ কামনা করেন।

  • ঘূর্নিঝড় আম্পানের তান্ডবে নিহত সাতক্ষীরার দুই পরিবারে বিএনপির অর্থ সহায়তা

    ঘূর্নিঝড় আম্পানের তান্ডবে নিহত সাতক্ষীরার দুই পরিবারে বিএনপির অর্থ সহায়তা

    স্টাফ রিপোটার ঃ সুপার সাইক্লোন আম্পানের তান্ডবে গাছের ডাল পড়ে নিহত সাতক্ষীরার বাঁকাল গ্রামের শামসুর রহমান ও কামাননগরের করিমন নেসার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।
    শনিবার সকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেওয়া এই নগদ টাকা তুলে দেন জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ ইফতেখার আলি ও সদস্য সচিব ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল আলিম। এ সময় দলের যুগ্ম আহবায়ক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রউফ, হাবিবুর রহমান হবি, মোদাচ্ছেরুল হক হুদাসহ বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
    তারা এ সময় বলেন, মানুষের সুখে দুঃখে বিএনপি সব সময়ই জনগনের পাশে থাকবে।

  • ঢালাওভাবে শপিংমল দোকানপাট খুলে জনসমাগমের সুযোগ দেয়া আত্মঘাতী। এবারের ঈদ আনন্দের ঈদ না: জাসদ

    ঢালাওভাবে শপিংমল দোকানপাট খুলে জনসমাগমের সুযোগ দেয়া আত্মঘাতী। এবারের ঈদ আনন্দের ঈদ না: জাসদ


    জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ মঙ্গলবার ৫ মে ২০২০ এক বিবৃতিতে বলেছেন, করোনা সংক্রমণ বিস্তার রোধে সরকার সক্রামক রোগ প্রতিরোধ নির্মূল আইন ২০১৮ জারি করে সমগ্র দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। সরকারী ছুটি ঘোষণা করেছে ও দফায় দফায় ছুটি বৃদ্ধি করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, ঘরে থাকা, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হবার জন্য কঠোর নির্দেশ জারি করেছে। গণপরিবহন বন্ধ রেখেছে। ঔষধ-খাদ্যপণ্য-নিত্যপণ্যের দোকান ছাড়া সকল দোকানপাট, শপিংমল, হাটবাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত বন্ধ রেখেছে। মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়, জুম্মার জামাত-তারাবির জামাত-ঈদের জামাতসহ অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়ে জনসমাগম বন্ধ রেখেছে। মৃত ব্যক্তির জানাজা-দাফন-দাহ-শেষকৃত্যে আপনজনসহ জনসমাগম বন্ধ রেখেছে। অঞ্চলভিত্তিতে লকডাউন করেছে। একই নগর-শহর-জেলা-উপজেলার এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চলাচল-যাতায়ত বন্ধ রেখেছে। ঢাকার বাইরে থেকে ঢাকায় প্রবেশ ও ঢাকা থেকে ঢাকার বাইরে যাওয়া বন্ধ রেখেছে। এসব সরকারী নির্দেশ কার্যকর করতে প্রশাসন মাঠে কাজ করছে। পুলিশ সাথে সেনাবাহিনী বাহিনী রাস্তায় টহল দিচ্ছে। সরকারের এতো বাস্তব, যৌক্তিক ও কঠোর পদক্ষেপের পরও আইইডিসিআর আশংকা করছে মে মাসে সংক্রামিত ব্যক্তির সংখ্যা ৫০ হাজার অতিক্রম করবে।

    জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, এরকম পরিস্থিতিতে ঢালাওভাবে শপিং মল, দোকানপাট খুলে দিয়ে জনসমাগমের সুযোগ দেয়া হবে আত্মঘাতী। তারা ঈদ শপিংয়ের জন্য ১০ মে থেকে ঢালাওভাবে শপিং মল, দোকানপাট খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য সরকারের প্রতি সনির্বন্ধ আহবান জানান।

    জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, এবারের ঈদ আনন্দের ঈদ না, শপিংয়ের ঈদ না। জাসদ নেতৃদ্বয় এই সংকটেও যাদের শপিংয়ের সামর্থ্য আছে তাদেরকে শপিংয়ের অর্থ দিয়ে শপিং না করে কর্মহীন আয়হীন নিরূপায় অসহায় মানুষের পাশে খাদ্য সাহায্য নিয়ে দাঁড়ানোর আহবান জানান। তারা বলেন, কর্মহীন আয়হীন নিরূপায় অসহায় মানুষরা ঈদের দিন দুই বেলা পেটভরে খেতে পারলে সেটাই হবে এবারের ঈদের সব চেয়ে আনন্দ।

  • মহামারীর মধ্যে এবি পার্টি কেন: উদ্বেগ ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির

    দেশ যখন করোনাভাইরাস মহামারীর বিরুদ্ধে লড়ছে তখন জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের একাংশ নতুন দলের আত্মপ্রকাশ করে মানুষকে ‘প্রতারিত করছে’ বলে মনে করছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

    তাদের এ ধরনের তৎপরতার ওপর কঠোর নজরদারির আহ্বান জানিয়েছে নির্মূল কমিটি।

    রোববার শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে  আয়োজিত এক অনলাইন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়।

    ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসবিরোধী যুদ্ধ চলাকালে জামায়াতে ইসলামীর একাংশের নতুন দলের আত্মপ্রকাশের ঘটনায় গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি নেতারা।”

    নির্মূল কমিটির কেন্দ্র এবং দেশে ও বিদেশের ৪৫টি শাখার নেতারা এ সম্মেলনে অংশ নেন।

    সংগঠনের সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে দুই পর্বে স্কাইপেতে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের চিকিৎসা সহায়ক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব।

    দ্বিতীয় পর্বের প্রধান বক্তা ছিলেন চিকিৎসা সহায়ক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া।

    সম্মেলনে আলোচনার মূল বিষয় ছিল ‘করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় নির্মূল কমিটির চলমান কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ কর্মসূচি’।

    সম্মেলনে নির্মূল কমিটির কেন্দ্র ও জেলা/উপজেলা পর্যায়ের নেতা ছাড়াও বহির্বিশ্বের শাখাগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সুইডেন, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, তুরস্ক, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড ও ভারতীয় শাখার নেতারা অংশ নেন।

    শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর ‘সংস্কারপন্থিরা’ ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি’ (এবি পার্টি) নামের নতুন দল গঠনের ঘোষণা দেন। তারা বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার’ বাস্তবায়ন করতে চান।

  • শহীদ জননী জাহানারা ইমামের জন্মদিন আজ

    শহীদ জননী জাহানারা ইমামের জন্মদিন আজ

    একাত্তরের ঘাতক দালাল বিরোধী আন্দোলনের নেত্রী শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। শুধু তাই নয়, তিনি একজন গুণী কথাসাহিত্যিক এবং শিক্ষাবিদ। তার বিখ্যাত গ্রন্থ একাত্তরের দিনগুলি। একাত্তরে তার জ্যেষ্ঠ পুত্র শফি ইমাম রুমী দেশের মুক্তিসংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন এবং কয়েকটি সফল গেরিলা অপারেশনের পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। পরবর্তীতে নির্মমভাবে শহীদ হন। বিজয় লাভের পর রুমীর বন্ধুরা রুমীর মা জাহানারা ইমামকে সকল মুক্তিযোদ্ধার মা হিসেবে বরণ করে নেন। রুমীর শহীদ হওয়ার সূত্রেই তিনি শহীদ জননীর মযার্দায় ভূষিত হন।   আজ ৩ মে অনন্য এই মহীয়সীর জন্মদিন। ১৯২৯ সালের এই দিনে বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে তাঁর জন্ম। ত্রিশ ও চল্লিশ দশকের রক্ষণশীল বাঙালি মুসলমান পরিবার বলতে যা বোঝায়, সে রকম একটি পরিবারেই তিনি জন্মে ছিলেন। জাহানারা ইমামের ডাক নাম ছিল জুড়ু।   তাঁর বাবা সৈয়দ আবদুল আলী ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট আর মা সৈয়দা হামিদা বেগম ছিলেন সুগৃহিনী।   ১৯৪২ সালে জাহানারা ইমাম মাট্রিক পাস করেন। ১৯৪৪ সালে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে আইএ পাস করে ১৯৪৫ সালে ভর্তি হন কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ণ কলেজে। লেডি ব্রেবোর্ন কলেজ (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে বিএ পাস করেন ১৯৪৭ সালে। ১৯৬০ সালে বিএড ডিগ্রি অর্জন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৬৪ সালে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে ১৯৬৫ সালে বাংলায় এমএ পাস করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।   শিক্ষক হিসাবে তাঁর কর্মময় জীবনের প্রথম সময় কাটে ময়মনসিংহ শহরে। সেখানে বিদ্যাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসাবে ১৯৪৮ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত তিনি কর্মরত ছিলেন। এরপর তিনি ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (১৯৫২-১৯৬০), বুলবুল একাডেমি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক (১৯৬২-১৯৬৬)এবং ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রভাষক (১৯৬৬-১৯৬৮) হিসাবে তাঁর কর্মজীবন অতিবাহিত হয়। তিনি কিছুদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটেও খন্ডকালীন শিক্ষক হিসাবে কাজ করেন।   একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে জাহানারা ইমামের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শফি ইমাম রুমী শহীদ হন। এছাড়া যুদ্ধের সময় তাঁর স্বামী, মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী, দেশপ্রেমিক শরীফ ইমামও ইন্তেকাল করেন। আশির দশকের শুরুতে, ১৯৮২ সালে তিনি মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। প্রতি বছর একবার যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে তাঁকে চিকিৎসা নিতে হতো।   ১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর গোলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলের আমীর ঘোষণা করলে বাংলাদেশে জনবিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। বিক্ষোভের অংশ হিসাবে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ১০১ সদস্যবিশিষ্ট একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হয় জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে। তিনি হন এর আহ্বায়ক। এর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী প্রতিরোধ মঞ্চ, ১৪টি ছাত্র সংগঠন, প্রধান প্রধান রাজনৈতিক জোট, শ্রমিক-কৃষক-নারী এবং সাংস্কৃতিক জোটসহ ৭০টি সংগঠনের সমন্বয়ে পরবর্তীতে ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২ ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি’ গঠিত হয়। সর্বসম্মতিক্রমে এর আহ্বায়ক নির্বাচিত হন জাহানারা ইমাম।   এ সময় খুব দ্রুত শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকলে ২ এপ্রিল ১৯৯৪ সালে চিকিৎসার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান ডেট্টয়েট হাসপাতালের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন জাহানারা ইমাম। ১৯৯৪ সালের ৬ জুন বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় মিশিগানের ডেট্টয়েট নগরীর সাইনাই হাসপাতালে ৬৫ বছর বয়সে জাহানারা ইমাম শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

    একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি প্রতিষ্ঠা

    ১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর গোলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলের আমীর ঘোষণা করলে বাংলাদেশে জনবিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। বিক্ষোভের অংশ হিসাবে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ১০১ সদস্যবিশিষ্ট একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হয় জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে। তিনি হন এর আহ্বায়ক। এর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী প্রতিরোধ মঞ্চ, ১৪টি ছাত্র সংগঠন, প্রধান প্রধান রাজনৈতিক জোট, শ্রমিক-কৃষক-নারী এবং সাংস্কৃতিক জোটসহ ৭০টি সংগঠনের সমন্বয়ে পরবর্তীতে ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২ ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি’ গঠিত হয়।

    সর্বসম্মতিক্রমে এর আহ্বায়ক নির্বাচিত হন জাহানারা ইমাম। এই কমিটি ১৯৯২ সালে ২৬ মার্চ গণ-আদালত-এর মাধ্যমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একাত্তরের নরঘাতক গোলাম আযমের ঐতিহাসিক বিচার অনুষ্ঠান করে। গণআদালাতে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে দশটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপিত হয়। ১২ জন বিচারক সমন্বয়ে গঠিত গণআদালতের চেয়ারম্যান জাহানারা ইমাম গোলাম আযমের ১০টি অপরাধ মৃত্যুদন্ডযোগ্য বলে ঘোষণা করেন।

    গণআদালতের রায় প্রতিষ্ঠা

    জাহানারা ইমাম গণআদালতের রায় কার্যকর করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। এই গণআদালতের সদস্য ছিলেনঃ এডভোকেট গাজিউল হক, ডঃ আহমদ শরীফ, মাজহারুল ইসলাম, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, সুফিয়া কামাল, কবীর চৌধুরী, কলিম শরাফী, শওকত ওসমান, লেঃ কর্ণেল (অবঃ) কাজী নুরুজ্জামান, লেঃ কর্ণেল (অবঃ) আবু ওসমান চৌধুরী এবং ব্যারিস্টার শওকত আলী খান

    গণআদালত অনুষ্ঠিত হবার পর সরকার ২৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ জাহানারা ইমামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে অ-জামিনযোগ্য মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে হাইকোর্ট ২৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর লাখো জনতার পদযাত্রার মাধ্যমে জাহানারা ইমাম ১২ এপ্রিল ১৯৯২ সালে গণআদালতের রায় কার্যকর করার দাবিসংবলিত স্মারকলিপি নিয়ে জাতীয় সংসদের স্পীকার, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার কাছে পেশ করেন। ১০০ জন সাংসদ গণআদালতের রায়ের পক্ষে সমর্থন ঘোষণা করেন।

    জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় দেশব্যাপি গণস্বাক্ষর, গণসমাবেশ, মানববন্ধন, সংসদ যাত্রা, অবস্থান ধর্মঘট, মহাসমাবেশ ইত্যাদি কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে আন্দোলন আরো বেগবান হয়। সরকার ৩০ জুন ১৯৯২ সালে সংসদে ৪ দফা চুক্তি করে। ২৮ মার্চ ১৯৯৩ সালে নির্মূল কমিটির সমাবেশে পুলিশ বাহিনী হামলা চালায় । পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হন জাহানারা ইমাম, এবং তাকে পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

    দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এমনকি বিদেশেও গঠিত হয় নির্মূল কমিটি এবং শুরু হয় ব্যাপক আন্দোলন। পত্র-পত্রিকায় সংবাদ শিরোনাম হয়ে উঠলে আন্তর্জাতিক মহলেও ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করেন জাহানারা ইমাম। গোলাম আযমসহ একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবির আন্দোলনকে সমর্থন দেয় ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। আন্দোলন ব্যাপকতা লাভ করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে।

    ২৬ মার্চ ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা দিবসে গণআদালত বার্ষিকীতে জাহানারা ইমামের নেত্রত্বে গণতদন্ত কমিটি ঘোষিত হয় এবং আরো আটজন যুদ্ধাপরাধীর নাম ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন, আব্বাস আলী খান, মতিউর রহমান নিজামী, মোঃ কামরুজ্জামান, আবদুল আলীম, দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, মওলানা আবদুল মান্নান, আনোয়ার জাহিদ এবং আব্দুল কাদের মোল্লা

    ২৬ মার্চ ১৯৯৪ সালে স্বাধীনতা দিবসে গণআদালতের ২য় বার্ষিকীতে গণতদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান কবি বেগম সুফিয়া কামাল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে রাজপথের বিশাল জনসমাবেশে জাহানারা ইমামের হাতে জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের রিপোর্ট হস্তান্তর করেন। গণতদন্ত কমিশনের সদস্যরা হচ্ছেনঃ শওকত ওসমান, কে এম সোবহান, সালাহ উদ্দিন ইউসুফ, অনুপম সেন, দেবেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য, খান সারওয়ার মুরশিদ, শামসুর রাহমান, শফিক আহমেদ, আবদুল খালেক এবং সদরুদ্দিন। এই সমাবেশে আরো আটজন যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে তদন্ত অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয়া হয়।

  • জাসদ: হাসপাতালের পর হাসপাতাল থেকে রোগি ফিরিয়ে দেয়ার ঘটনায় দায়িদের কঠোর শাস্তি দাবি

    জাসদ: হাসপাতালের পর হাসপাতাল থেকে রোগি ফিরিয়ে দেয়ার ঘটনায় দায়িদের কঠোর শাস্তি দাবি

    জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ ৩ মে ২০২০ রবিবার এক বিবৃতিতে কোভিড টেস্টের রিপোর্ট রোগির সাথে না থাকায় সরকারি ও প্রাইভেট মালিকানা নির্বিশেষে হাসপাতালের পর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা না দিয়ে ফিরিয়ে দেয়া, রাস্তায় অজানা গন্তব্যে ঠেলে দেয়া, এম্বুলেন্সে হাসপাতালের পর হাসপাতাল ঘুরে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুরমুখে ঠেলে দেয়ার ঘটনায় গভীর উদ্ধেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

    জাসদ নেতৃদ্বয় যে সকল হাসপাতাল রোগিদের চিকিৎসা না দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছে সেই সকল হাসপাতালগুলোর কর্তৃপক্ষ ও মালিকদের কঠোর শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।

    জাসদ নেতৃদ্বয় অভিযোগ করে বলেন, কোভিড হাসপাতালগুলো কোভিড টেস্টের পজিটিভ রিপোর্ট ছাড়া কোভিডের লক্ষ্মণ ও উপসর্গ আছে এমন রোগিদেরও ফিরিয়ে দিচ্ছে আর নন-কোভিড হাসপাতালগুলো কোভিড টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া সাধারণ রোগি এবং কোভিডের লক্ষ্মণ ও উপসর্গ আছে এমন রোগিদের ফিরিয়ে দিচ্ছে। তারা বলেন, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা টেস্টের উপর সবচাইতে বেশি গুরুত্ব আরোপ করেই চলেছে, সেখানে দেশে সাধারণ রোগিরাই টেস্টের অভাবে হাসপাতালে সাধারণ চিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।

    জাসদ নেতৃদ্বয় চিকিৎসাসেবা খাতের এই অমানবিক দশা এবং অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতা অবিলম্বে দূর করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন। তারা কোনো অজুহাতেই যেন আর একজন রোগিকেও কোনো হাসপাতাল থেকে রাস্তায় অজানা গন্তব্যে ঠেলে দেয়ার অমানবিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য সরকারকে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান ও দায়িত্বশীল সমন্বিত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

  • স্বাস্থ্যখাতের দূর্নীতি নিয়ে জাসদের ক্ষোভ ও মাস্কের মান নিয়ে প্রশ্নতোলা মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা   গ্রহণের দাবী

    স্বাস্থ্যখাতের দূর্নীতি নিয়ে জাসদের ক্ষোভ ও মাস্কের মান নিয়ে প্রশ্নতোলা মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী

    জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ বৃহস্পতিবার ৩০ এপ্রিল এক বিবৃতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক সরবারহকৃত এন-৯৫ মাস্কের নামে মানহীন নকল মাস্কের মান নিয়ে প্রশ্নতোলা মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ করোনাকালেও স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক জরুরি কেনাকাটায় ভয়ানক দূর্নীতির ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিজেদের দূর্নীতি ও লুটপাটের দায় আড়াল করতে এবং তাদের অপরাধের নিশানা ও চিন্থ মুছে ফেলতে চিকিৎসকদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে, চাপের মধ্যে রাখছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সরবারহকৃত নকল ও মানহীন মাস্ক, পিপিই, গ্লাভসসহ অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রীর কারণেই করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রথমসারির যোদ্ধা চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার মারাত্মক পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, করোনাকালেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেনাকাটায় দূর্নীতি-লুটপাট চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা ও পরিকল্পিতভাবে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ার জঘন্য অপরাধের সমতুল্য। জাসদ নেতৃদ্বয় মাস্কের মান নিয়ে প্রশ্নতোলা মুগদা জেনারেল হাসপাতালের ঐ পরিচালকের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা অবিলম্বে প্রত্যাহার করে তিনিসহ সমগ্র চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেনাকাটার সাথে যুক্ত ভয়ংকর দূর্নীতিবাজ-লুটেরা কর্মকর্তাদের অবিলম্বে অপসারণ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।

  • মহান মে দিবস উপলক্ষে জাসদের বিবৃতি

    মহান মে দিবস উপলক্ষে জাসদের বিবৃতি

    মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি মহান মে দিবস উপলক্ষে এক বিবৃতিতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণী তথা শ্রমজীবী, কর্মজীবী, মেহনতি মানুষের প্রতি সংগ্রামী শুভেচ্ছে জানিয়েছেন। তারা বলেন, সারা পৃথিবীর মত বাংলাদেশের সকল মানুষ এক ভয়ংকর করোনা মহামারীকাল অতিবাহিত করছে। এই বৈশ্বিক মহামারী সংকটে সবচাইতে বেশি সংকট, দুঃখ, কষ্ট, দুর্দশা, বিপর্যয়, অসহায়, নিরুপায় অবস্থার মধ্যে পতিত হয়েছে শ্রমিক-কর্মচারী-শ্রমজীবী-কর্মজীবী-মেহনতি মানুষ। তারা করোনা সংক্রমনের ঝুঁকির সাথে আয় সংকট, খাদ্য সংকট ও চাকুরিহীনতার ঝুঁকির মধ্যে অমানবিক জীবনযাপন করছে। জাসদ নেতৃদ্বয়, এই করোনা সংকটকালে সরকারী-বেসরকারী-ব্যক্তি মালিকানা নির্বিশেষে প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানি সকল কল-কারখান-প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ও কর্মচারী যেন অনাহারে না থেকে, চাকুরিচ্যুৎ না হয়, পাওনা বেতন থেকে বঞ্চিত না হয় এবং লকডাউনকালে তাদের খাদ্যত্রান সহায়তা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।

  • আজীবন সংগ্রামীমানুষ আয়ুব হোসেন চলে গেলেন না ফেরার দেশে

    আইযুব হোসেন চলে গেলেন না ফেলার দেশে। আজীবন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো গড়ার লডাইয়ে যুক্ত থাকা মানুষটি জন্ম গ্রহণ করেন ১৯৫৮ সালের ১ অক্টোবর। জন্মস্থান পশ্চিমবাংলার বশিরহাটের সংগ্রামপুরের বিরামপুর গ্রামে। কুশখালিতে নানার বাড়ী থেকে লেখা পড়াকরেন। স্বাধীনতার পর সাতক্ষীরা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন। এ সময় জাসদ ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত হন। কলেজে অবস্থায় ১৯৭৫ সালে পুলিশে হাতে গ্রেফতার হন। গ্রেফতারের সময় মারাত্মক ভাবে পুলিশের নির্যাতনের শিকার হন। একটানা সাড়ে তিন বছরের মত জেল খেটে ৭৮ সালের শেষ দিকে কারাগার থেকে মুক্তি পান। তাঁর গ্রেফতারের খবরে তার পিতামাতা এক সম্পাহের মধ্যে মৃত্যু বরণ করেন।
    ১৯৭৯ সালে সাতক্ষীরা কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সাধারন সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন। এবং বছর সহ-সভাপতি(ভিপি) নির্বাচিত হন। তিনি দীর্ঘদিন জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ত্যাগি এ রাজনৈতিক নেতা ১২ জুলাই ১৯৮৫ আলেয়া খাতুনের সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের তিন সন্তান দুই মেয়ে ও একপুত্র। বড় মেয়ে শারমিন শান্তা ¯œাতক শেষ করেন। মজে পুত্র আলী আম্বীয়া চঞ্চল শিক্ষা নবীশ আইনজীবী আর ছোট মেয়ে জেসমিন স্বম্পা ঢাকা মেডিকেলে সিনিয়র নার্স হিসেবে কর্মরত।
    আজীবন লড়াকু মানুষ প্রচন্ড দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে চলেছেন। কিন্তু কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেনি।

    সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি, জাসদের ত্যাগী নেতা, সামরিক শাসন, সামপ্রদায়িক শক্তি বিরোধী লড়াইয়ের যোদ্ধা – আজীবন সমাজতান্ত্রিক চেতনার ধারক আইয়ুব হোসন মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে দীর্ঘদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ২৯ এপ্রিল বিকালে মৃত্যুবরণ করেন।

  • ১লা মে ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে মহান “মে দিবস”

    ১লা মে ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে মহান “মে দিবস”

    কর্মঘন্টাকে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার সঙ্গে জড়িত আছে মে দিবসের জন্ম কাহিনী। মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই এই আন্দোলনের সূচনা। গোড়ার দিকে যদিও মুজুরী বাড়ানোর দাবীতেই আন্দোলন শুরু হয়। ১৮০৬ সালে ফিলাডেলফিয়ায় জুতা শ্রমিকরা যখন ধর্মঘট করে তখন তাদের কর্মঘন্ট ছিল প্রতিদিন প্রায় ২০ ঘন্টা। ১৮২০ থেকে ১৮৪০ সাল পর্যন্ত কর্মঘন্টা কমাবার জন্য অসংখ্য ধর্মঘট হয়। ১৮২৭ সালে দৈনিক ১০ ঘন্টা কাজের নিয়ম চালু করার দাবীতে মেকানিকদের উদ্যোগে ফিলাডেলফিয়ায় গঠিত হয় বিশ্বের প্রথম ট্রেড ইউনিয়ন। ১৮৬৪ সালে লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত হয় শ্রমজীবী মানুষের প্রথম আন্তর্জাতিক সংগঠন ফাস্ট ইন্টারন্যাশনাল। ১৮৬৬ সালে বাল্ডিমোরে ৬০টি ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা মিলিত হয়ে প্রতিষ্ঠা করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম শ্রমিক ফেডারেশন “ন্যাশনাল লেবার ইউনিয়ন” যা সে বছরই দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজের প্রস্তাবটি গ্রহণ করে। একই বছর ফাস্ট ইন্টার‌্যাশনাল এর জেনেভা কংগ্রেসে ঐ প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। ১৮৮৪ সালে ৮ ঘন্টা কাজের দাবীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয় আন্দোলন। যার সঙ্গে মে দিবসের জন্ম সরাসরি জড়িত। ১৮৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত আমেরিকান ফেডারেশন অব লেবার ১লা মে তারিখ থেকে দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজের প্রস্তাবটি গ্রহণ করে আন্দোলন গড়ে তোলে। সে বছর ৮ ঘন্টা কাজের দাবীতে সকল শ্রমিক ধর্মঘট করে নিজ নিজ কারখানা থেকে বের হয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। ধর্মঘটের কেন্দ্র ছিল শিকাগো। ১৮৮৬ সালের ১লা মে তারিখে শিকাগোতে শ্রমিকদের এক বিশাল সমাবেশ হয়। আন্দোলনের ডাকে সকল শ্রমিক কাজ বন্ধ করে রাস্তায় নেমে আসে। শ্রমিক আন্দোলন ইতিহাসে এর আগে শ্রেণি সংহতি প্রকাশের এত বলিষ্ট প্রকাশ আর দেখা যায় নি। সেদিন ৮ ঘন্টা আন্দোলনের চূড়ান্ত রুপ ধারণ করে।

    ৩রা মে শিকাগোর ম্যাককর্মিক ফসল কাটার কারখানায় ধর্মঘটি শ্রমিকদের সমাবেশের উপর পুলিশের গুলিতে নিহত হন ৪ জন শ্রমিক। পরদিন হে মার্কেটে এর প্রতিবাদে সমাবেশস্থলে অজ্ঞাতনামা কারো বোমার আঘাতে এক পুলিশ সার্জেন্টের মৃত্যু হয়। এরপর লড়াই-সংগ্রামে আরো ৪ জন শ্রমিক আর ৭ জন পুলিশের মৃত্যুতে উন্মাদ হয়ে ওঠে পুলিশ বাহিনী। নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হে মার্কেট চত্ত্বর রক্তে রঞ্জিত করে। এরপর প্রহসনের বিচারে ফাঁসির মঞ্চে নির্বিচারে প্রাণ দেয় সংগ্রামী শ্রমিক নেতারা। মে দিবসের আন্দোলনে প্রধান শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ছিলেন আলবার্ট পারসনস্, স্যামুয়েল ফিয়েল্ড, অগাষ্ট স্পাইস, এডলফ ফিশার, মাইকেল শোব, জর্জ এঞ্জেল ও লুুইস লিংগে অন্যতম।
    মে দিবস আন্তর্জাতিক শ্রমিক শ্রেণির পবিত্র দিবস হিসাবে উন্নীত করার পেছনে আমেরিকার ফেডারেশন অব লেবার এর রয়েছে অনন্য অবদান। ১৮৮৮ সালের ১লা মে তারিখ-কে ফেডারেশন ৮ ঘন্টা কাজের আন্দোলনের পুনুরুজ্জীবন দিবস হিসাবে বেছে নেয়। লন্ডন থেকে ফাষ্ট ইন্টারন্যাশনাল সদর দপ্তর নিউইয়র্কে স্থানান্তরিত হবার পর পরিবর্তিত হয়ে এর নাম হয় সেকেন্ড ইন্ট্রারন্যাশনাল, যার প্রথম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয় প্যারিসে। ঐ কংগ্রেসেই ১লা মে তারিখকে বিশেষ দিবস হিসাবে উদযাপনের জন্য চিহ্নিত করা হয়, যা প্রতি বছরই শ্রমজীবী মানুষের একটি মহান দিবস হিসাবে সারা বিশ্বে পালিত হয়ে আসছে।

    ভারতবর্ষ ও বাংলাদেশে মে দিবস ঃ
    আমেরিকার শিকাগো শহরের শহীদ শ্রমিকদের অনুপ্রেরনায় ভারতবর্ষেও দাবী আদায়ের লক্ষ্যে ধর্মঘট আন্দোলন গড়ে ওঠে। ১৯২০ সালের দিকে রেল, চা বাগান ও ষ্টিমার শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ও সংহতি বৃটিশদের কাঁপিয়ে তোলে। পরবর্তীকালে সুতাকল সহ বিভিন্ন কলকারখানায় শ্রমিকদের দাবী আদায়ের জন্য সংগঠিত হতে থাকে, ঐ সময় গড়ে ওঠা ট্রেড ইউনিয়ন সমূহ মে দিবস পালনের প্রচেষ্টা চালায়। কিন্তু ঐ সময় অধিকাংশ স্থানে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়ায় গোপনে গোপনে মে দিবস পালিত হয়।

    ১৯২৩ সালে এই উপমহাদেশে প্রথম মে দিবসের অনুষ্ঠান পালন করা হয় মাদ্রাজে। এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা সিঙ্গারাভেলু চেট্টিয়া। তৎকালীন বাংলার শিল্প কেন্দ্র কলকাতায় সর্বপ্রথম মহান মে দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হয় ১৯২৭ সালে। একই সময় তৎকালীন পূর্ব বাংলা অর্থাৎ বাংলাদেশে মে দিবস পালিত হয়। ১৯৩৮ সালে নারায়নগঞ্জে মে দিবস পালনের খবর পাওয়া যায়। দাবী আদায়ের জন্য পরবর্তীতে কোন কোন বছর মে দিবসে ধর্মঘট পালিত হয়। মে দিবসে ছুটি দেওয়ার দাবী উত্থাপিত হয় সর্বত্র। পুরো পাকিস্তান আমলে ঐক্যবদ্ধ ও পৃথক পৃথক ভাবে প্রতিবছর উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে মে দিবস পালিত হয়।

    স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১লা মে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমান জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। তিনি ১লা মে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করা সহ রাষ্ট্রপতি আদেশে ২৭(ক) ধারা মতে সকল শিল্প কল-কারখানা, ব্যাংক, বীমা, বৈদেশিক বাণিজ্যের সিংহভাগ রাষ্ট্রয়াত্ব ঘোষণা করেন। শ্রমিক-কর্মচারীদের কারখানার লভ্যাংশ দেওয়া সহ শ্রমিকদের বাসস্থান, চিকিৎসা সেবা, প্রতিটি কারখানায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ঘোষণা করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে ১৫ আগষ্ট দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কুচক্রী মহলের দ্বারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্ব-পরিবারে নিহত হলে শ্রমিক কর্মচারীদের বঞ্চনা শুরু হতে থাকে। ১৯৭৬ সালে সামরিক শাসনের আমলে তৎকালীন উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক শ্রমিক জনসভায় ভাষণ দেন এবং তিনি বলেন “ আমরা সবাই শ্রমিক” কিন্তু তার পর থেকে সামরিক শাসকদ্বয় জিয়াউর রহমান ও হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ শিল্প-কলকারখানা ব্যক্তি মালিকানায় দেওয়া সহ হোল্ডিং কোম্পানী গঠন করে রাষ্ট্রয়াত্ব কারখানা সমূহ ব্যক্তিমালিকানায় দেওয়া শুরু করেন।

    মানুষের দ্বারা মানুষের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের সংগ্রামী সংহতিকে ক্ষুধা, দারিদ্র ও অপমানের হাত থেকে খেটে খাওয়া মানুষের মুক্তি সংগ্রাম কে সামনে রেখে সারা বিশ্বের শ্রমিকরা মহান মে দিবস উদযাপন করে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলনে বিপুল শক্তির প্রথম সর্বাত্মক শক্তির সফল প্রতিক মহান মে দিবস। তাই একই সাথে শ্রমজীবী জনগণের ঐক্য, সংহতি সংগ্রাম ও বিজয়ের প্রতীক হিসাবেই তাৎপর্য ও মহিমাপূর্ণ।

    মে দিবসে শ্রমিকরা চেয়েছিল নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা যাতে সে বিশ্রামের পর্যাপ্ত সময় পায় এবং মর্যাদাকর মানবিক জীবন যাপন করতে পারে। ১৩৫ বছর পরেও শ্রমজীবী মানুষের এখন প্রধান দাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা।

    অনেকেই মে দিবসের ছুটি পালন করছেন অথবা তাঁকে আনুষ্ঠানিকতায় বেঁধে তৃপ্তি পাচ্ছেন। তারা হয়তো মে দিবসের তারিখটার খবর রাখেন কিন্তু চেতনার খবর-টা রাখেন না। শ্রমজীবী মানুষ কখনো কখনো কিছুক্ষনের জন্য দাঁড়িয়ে যেতে পারে, কিন্তু সে দাঁড়ানো কোনদিন স্থায়ী হয় না। চাকা ঘোরানো যাদের কাজ তারা দাঁড়ালে ইতিহাস দাঁড়িয়ে যাবে, মহান মে দিবস সে কথাই বলে।

    স্বাধীনতার সংগ্রাম সহ অন্যান্য আন্দোলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমাদের দেশের শ্রমিকরা প্রমান করেছেন ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে পারে না। আইন করে বা নানা কূট কৌশলের মাধ্যমে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনকে স্তব্ধ করা যায় না, ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন তার নিজস্ব গতিতে চলে।

    স্বাধীনতার পর সাতক্ষীরা মহাকুমা শহরে রিক্সা ভ্যান শ্রমিক ও নৌকার মাঝিদের মধ্যে সংগঠন করার জন্য মীর এশরাক আলী ইস্যু মিয়া, নূরুল ইসলাম, ববিন, সৈয়দ মাহমুদ পাপা সহ অন্যান্যরা কাজ করেন। ১৯৮১ সালে মহাকুমার প্রথম মটর শ্রমিক ইউনিয়ন, রেজি নং-খুলনা-৫৫০ নামীয় সংগঠিত ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনটি কলারোয়াতে গড়ে ওঠে। ১৯৮৪ সালে সাতক্ষীরা জেলা ঘোষণা হলে ট্রেড ইউনিয়নটি সাতক্ষীরা বাস টার্মিনালে স্থানান্তর করা হয়। জেলার ২য় ট্রেড ইউনিয়ন ১২ জুন ১৯৮৪ তারিখে সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস্ এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন, সাতক্ষীরা, রেজিঃ নং খুলনা-৬১২, যার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান-উজ-জামান ও সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলাউদ্দীন সানা। ১৯৮৬ সালে ৩য় ট্রেড ইউনিয়ন সাতক্ষীরা পৌরসভায় জেলা রিক্সা ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন, যার রেজিঃ নং খুলনা-৬৮৪। পরবর্তীতে একে একে জেলা ব্যাপী আজ পর্যন্ত প্রায় ৬০টির উর্দ্ধে ব্যাসিক ট্রেড ইউনিয়ন রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত আছে। তারপর সাতক্ষীরা-তে কিছু জাতীয় ইউনিয়নের শাখা আছে। সর্বপরি জাতীয় ফেডারেশনের অন্তর্ভূক্ত জাতীয় শ্রমিকলীগ, জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন, জাতীয় শ্রমিক পার্টি, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন উল্লেখযোগ্য।

    জাতীয়ভাবে ১১টি শ্রমিক ও কর্মচারী সংগঠন নিয়ে ১৯৮৩ সালে গড়ে ওঠে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ “স্কপ”।

    শ্রমিকের নিরাপত্তার প্রশ্নটি আজ একটি জাতীয় ইস্যু। স্পেকট্রাম ভবন ধসে পড়া থেকে শুরু করে বসুন্ধরায় সংগঠটিত অগ্নিকান্ড, যাত্রাবাড়ীর প্লাস্টিক কারখানা ও পোস্তগোলায় ডায়িং ফ্যাক্টরীতে দুর্ঘটনা, সাভারের রানা প্লাজায় দুর্ঘটনায় এটাই প্রতীয়মান হয় যে, গ্রাম থেকে ঢাকা-চট্টগ্রামে কাজ করতে আসা শ্রমিক কফিনের সারি হয়ে ফিরে যাচ্ছে গ্রামে। অনেকে আবার নিজ গ্রামের মাটিও পাচ্ছে না। বেওয়ারিশ পরিচয় নিয়ে তাদের স্থান হচ্ছে পৌর কর্পোরেশনের গণকবরে। একটি সুস্থ সমাজ এই ব্যবস্থা ধারণ করতে পারে না। এ অবস্থার নিরসন হওয়া প্রয়োজন।

    দেশে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা ৫ কোটির উর্দ্ধে। শ্রম বাজারের দ্রুত পরিবর্তন এদের ছড়িয়ে দিচ্ছে বিচিত্র সব পেশায়, বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে। ২৫ বছর আগের মত কতিপয় নির্দিষ্ট কর্মক্ষেত্রে শ্রমজীবী মানুষের বিচরণ সীমিত নেই। কিন্তু দেশের শ্রম আইন এখনো সীমিত শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য। তাও যারা বাস্তবায়ন করবে তাদের আছে অনেক দুর্বলতা। আইন আছে শ্রমিক হয়তো জানে, কিন্তু জানে না আইন না মানলে তারা কি করতে পারে? তাদের মধ্যে এই সচেতনতার আলো ছড়িয়ে দিতে হবে। এই হোক এবারের মে দিবসের অঙ্গীকার।

    তথ্য সূত্র : বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলস্ বুলেটিন
    শেখ হারুন-উর-রশিদ
    সাবেক সাধারণ সম্পাদক
    সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস্ (সিবিএ), সাতক্ষীরা।
    ০১৭১০-৮৪৯৩৫৩

  • কৃষকদের উৎপাদিত ধানের লাভ জনক মূল্য নিশ্চিত, রেশনিং ব্যবস্থা চালু ও সুদমুক্ত ঋণদানসহ বিভিন্ন দাবীতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন

    কৃষকদের উৎপাদিত ধানের লাভ জনক মূল্য নিশ্চিত, রেশনিং ব্যবস্থা চালু ও সুদমুক্ত ঋণদানসহ বিভিন্ন দাবীতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন

    স্টাফ রিপোটার ঃ কৃষি বাঁচাও, কৃষক বাঁচাও, দেশ বাঁচাও এই শ্লোগানকে সামনে রেখে কৃষকদের উৎপাদিত ধানের লাভ জনক মূল্য নিশ্চিত, খেতমজুরদের সারা বছরের কাজ, রেশনিং ব্যবস্থা চালু, কৃষক ও বর্গাচাষীদের সুদমুক্ত ঋণদানসহ বিভিন্ন দাবীতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে। জাতীয় কৃষক সমিতি ও বাংলাদেশ ক্ষেত মজুন ইউনিয়ন সাতক্ষীরার ব্যানারে সোমবার বেলা ১১ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শহরের ওয়ার্কাস পার্টির ছাদের উপর উক্ত মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয।
    মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা-১ (তালা+কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি কমরেড এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ।
    মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, জাতীয় কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক উপাধ্যক্ষ মহিবুল্লাহ মোড়ল, জেলা ওয়ার্কাস পার্টির সম্পাদক এড. ফাহিমুল হক কিসলু, জাতীয় কৃষক সমিতির সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি অধ্যাপক সাবীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ ময়নুল হাসান, বাংলাদেশ খেতমজুর ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি অজিত কুমার রাজবংশী, সাধারণ সম্পাদক নির্মল সরকার, বিভিন্ন ইউনিয়ন ও উপজেলার নেতৃবৃন্দ।
    বক্তারা এ সময় বর্তমান বোরো মৌসুমে কৃষকদের উৎপাদিত ধানের লাভজনক মূল্য নিশ্চিত, কৃষি ও কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত, খেতমজুরদের সারাবছরের কাজ, রেশনিং ব্যবস্থা চালু, কৃষক ও বর্গাচাষীদের সুদমুক্ত ঋণ, ১২০০ টাকা ধানের মূল্য নির্ধারণ, উৎপাদিত ৫০% ধান কৃষক ও বর্গাচাষীর নিকট থেকে ক্রয়ের জোর দাবী জানান।

  • বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৬৮ তম জন্মদিন আজ ২৬ এপ্রিল

    বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৬৮ তম জন্মদিন আজ ২৬ এপ্রিল

    ঢাকা : শুধু ভাষা আন্দোলনের অগ্নিগর্ভ থেকে নয়, অল-ইন্ডিয়া ছাত্র ফেডারেশন, পূর্ব পাকিস্তান যুব লীগ, খাপড়াওয়ার্ড ও ভাষাসংগ্রামের অগ্নিগর্ভ থেকেই পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের জন্ম। অর্থাৎ আজকের বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। আজ ছাত্র ইউনিয়নের ৬৮তম জন্মদিন।

    ‘বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন’ একটি স্বাধীন ছাত্র গণসংগঠনের নাম। ছাত্র ইউনিয়ন ছাত্রদের এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা ছাত্রস্বার্থ রক্ষা ও ছাত্রদের অধিকার আদায়কে অগ্রাধিকার দেয়। সকল শিক্ষার্থীর জন্য বৈষম্যহীন বিজ্ঞানভিত্তিক গণমুখী ও একই ধারার শিক্ষানীতি বাস-বায়নের জন্যে সে লড়ছে অবিরাম। ছাত্র ইউনিয়ন মনে করে যে শিক্ষা জীবনের সমস্যা সমাধান ও শিক্ষার্থীর স্বার্থ-অধিকার সুপ্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন সমাজ থেকে শোষণ-বৈষম্যের অবসান ঘটানো এবং তা নিশ্চিত করার জন্য সমাজতন্ত্রই সর্বোৎকৃষ্ট অর্থনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থা।

    ছাত্র ইউনিয়ন কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন বা সহযোগী সংগঠন নয়। ছাত্র ইউনিয়ন ব্যতীত অধিকাংশ ছাত্র সংগঠন কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন বা সহযোগী সংগঠন। সহযোগী সংগঠনের চরিত্রও এখন অঙ্গ সংগঠনের মতো। এরা সকলেই এদের নিজ নিজ রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ও নেতানেত্রীদের নির্দেশের গণ্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। এরা ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে ভাবনাকে কখনোই প্রাধান্য দেয় না। উল্টো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এরা সন্ত্রাস, লুটপাট, ভর্তি বাণিজ্য, টেণ্ডারবাজী, দখলদারিত্ব, খুন, ধর্ষণসহ নানাবিদ অপকর্ম করে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করে। এরা বিপুল অর্থ ব্যয় করে তথাকথিত ‘ক্যাডার বাহিনী’ লালন করে আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বড় বড় মিছিল বের করে ওমুক নেতা ওমুক নেত্রী জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ বলে শ্লোগান দেয় এবং হাতে তালি দেয়।

    ৫২’র মহান ভাষা আন্দোলনের সঠিক নেতৃত্ব দেয়ার মতো কোন ছাত্র সংগঠন সেসময় দেশে ছিল না। মুসলিম ছাত্রলীগ নামের যে সংগঠনটি তখন ছিল, সেটা ছিল নামে ও প্রবনতায় সাম্প্রদায়িক এবং বহুলাংশে আপোসকামী। তারা ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিল। ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব তাই স্বাভাবিক ভাবেই চলে এসেছিল সচেতন ও প্রগতিবাদী ছাত্রদের হাতে। এই আন্দোলন শুধু ছাত্র সমাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, দেশের আপামর জনতার মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। সালাম, বরকত, রফিক, শফিক ও জব্বারের তাঁজা রক্তের বিনিময়ে আমরা পে্যেছিলাম আমাদের প্রাণপ্রিয় বর্ণমালার মর্যাদা ও রক্তঝড়া ২১ ফেব্রুয়ারী ‘শহীদ দিবস’।

    ভাষা সংগ্রামের সফল উত্তরণের পরে ভাষা সৈনিকরা উপলব্ধি করেছিলেন, রক্তেগড়া ঐতিহাসিক এই সংগ্রামকে যথাযোগ্য পরিণতিতে এগিয়ে নিতে হলে প্রয়োজন অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী প্রগতিবাদী রাজনৈতিক চৈতন্যে উদ্বুদ্ধ একটি গণ ছাত্র সংগঠন। তাই ভাষা সংগ্রামের সামনের কাতারের প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনায় উজ্জীবিত প্রধান ছাত্র নেতৃবৃন্দ, যারা অনেকেই ছিলেন দেশভাগ পূর্ব ছাত্র ফেডারেশনের উত্তরসূরী, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-জেন্ডার রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থিকে প্রগতিশীল কর্মসূচীর ভিত্তিতে একতাবদ্ধ করতে পারে এমন একটি ছাত্র সংগঠন গড়ে তোলার জন্য সিদ্ধান- গ্রহণ করেন।

    ১৯৫২ সালের ২৬ এপ্রিল ঐক্য, শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতি- এ চার মূলনীতিকে ভিত্তি করে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয়। জন্মলগ্নে এই প্রতিষ্ঠানের যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন কাজী আনোয়ারুল আজিম ও সৈয়দ আবদুস সাত্তার। এরপর ১৯৫২ সালের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত প্রথম সম্মেলনে মোহাম্মদ সুলতান সভাপতি এবং মোহাম্মদ ইলিয়াস সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এই সম্মেলনেই সংগঠনের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা শিক্ষা জীবনে একজন ছাত্রের মৌলিক কাজ হচ্ছে তার ছাত্রত্ব অর্থবহ ও পরিপূর্ণ করা। ছাত্রত্ব হলো- শিক্ষার মাধ্যমে নিজেকে একজন প্রকৃত মানুষ হিসেবে তৈরী করা। যেন মানুষটি তার সমগ্র জীবনে সৎ, দেশপ্রেমিক, মানবিক গুনাবলীর অধিকারী, প্রগতিশীল, আদর্শবান, যুক্তিনিষ্ঠ ও বিজ্ঞানমনস্কতার পরিচয় বহন করার সক্ষমতা অর্জন করে। কোনো সংকীর্ণতা, সীমাবদ্ধতা যেন তাকে স্পর্শ করতে না পারে। সময়ের কাজ যেন সময়ে করতে শেখে। বুঝে শুনে কাজ করার সক্ষমতা অর্জন করে। যুক্তি ও বিজ্ঞানমনস্কতার নিরিখে পথ চলতে সক্ষম হয়।

    ছাত্র জীবনে একজন ছাত্রের মৌলিক কাজ হলো শিক্ষা অর্জন করা। শিক্ষা ও জ্ঞানের মাধ্যমে সমাজ, মানুষ, পৃথিবী, রাজনীতি, বিজ্ঞান, দর্শন, অর্থনীতি সংস্কৃতিসহ নানা বিষয়ে সম্যক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করা। শুধু জ্ঞান অর্জন করলেই হবে না, প্রয়োগের মাধ্যমে এ অর্জিত জ্ঞানের সাথে সমাজ, দেশ, দেশবাসী ও বিশ্ব সভ্যতা-বিশ্ব মানবতার যোগসূত্র তৈরী করতে হবে।

    একজন ছাত্রকে অবশ্যই অন্যান্য ছাত্রদের সাথে যুক্ত হয়েই তার প্রকৃত শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ প্রতিষ্ঠা ও অধিকার আদায় করতে হবে। এজন্য সকলের মধ্যে সচেতনতা এবং একতা গড়ে তোলা অপরিহার্য। কিন’ সেই সাথে নিজেকে উপযুক্তভাবে জ্ঞানসমৃদ্ধ ও সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। অন্যকে যুক্তিবান ও বিজ্ঞানমনস্ক করতে হলে প্রথমে নিজেকে যুক্তিবান ও বিজ্ঞানমনস্ক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সমাজটাকে পরিবর্তন করতে চাইলে নিজেকেও পরিবর্তন করতে হবে। বিপ্লব করতে চাইলে নিজেকেও বিপ্লবী হিসেবে তৈরী করতে হবে। আমি বা আমরা যা-ই করতে চাই না কেন তার জন্য মানুষের কাছে যেতে হবে। তাদেরকে বুঝাতে হবে এবং তাদেও কাছ থেকে শিখতেও হবে। কিন’ নিজে না বুঝলে অন্যকে সে কি বুঝাবে।

    ছাত্র ইউনিয়ন করার ক্ষেত্রে এই কাজগুলো যথার্থভাবে মেনে চলতে হয়। এই ধারায় উদ্বুদ্ধ একজন ছাত্রই কেবল ছাত্র ইউনিয়ন করার যোগ্যতা রাখে। ছাত্র ইউনিয়ন নিছক খাতায় নাম লেখানো মার্কার সংগঠন নয়। এই সংগঠন করতে হলে প্রথমত তাকে তার ছাত্রত্ব রক্ষা করতে হয়। তারপর সংগঠন সম্পর্কে বুঝতে হয়, জানতে হয়। ক্রমাগত সচেতনতা বাড়াতে হয়। শুধু তত্ত্ব চর্চা নয়, বাস-ব প্রয়োগ, সত্যিকার আন্দোলন সংগ্রাম, ছাত্র সমাজ ও জনগণের মাঝে প্রত্যক্ষ কাজ ইত্যাদির মাধ্যমে উন্নত জীবন দর্শন ও সামাজিক কর্মযজ্ঞের নিবেদিত প্রাণ কর্মী হয়ে ওঠার নিরন-ও প্রয়াস চালাতে হয়। প্রচলিত শিক্ষা কাঠামোর সীমাবদ্ধ জ্ঞান অর্জন করলেই যেমন জ্ঞান অর্জন করা যায় না তেমনি শুধু মাত্র ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দিলে বা নাম লেখালেই প্রকৃত অর্থে ছাত্র ইউনিয়ন করা হয়না।

    বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ক্ষমতার অপব্যবহারের রাজনীতি অথবা কোন রাজনৈতিক দল বা তাদের উপদলের লেজুড়বৃত্তি করে না। কিন্তু বাস্তব জীবনের কঠোর অভিজ্ঞতায় ছাত্রসমাজ দেখতে পায় যে, তারা যে গণতান্ত্রিক, অসামপ্রদায়িক, প্রগতিশীল, অবারিত ও সমৃদ্ধশালী শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষা জীবন চায়, তার পথে পদে পদে অন-রায় সৃষ্টি করে রাখছে দেশের প্রচলিত সাম্রাজ্যবাদ নির্ভর লুটপাটতন্ত্রের অর্থনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থা। আর সেই প্রতিক্রিয়াশীল আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থাকে লালন-পালন করে চলেছে দেশের বর্তমান শাসক-শোষক শ্রেণী।

    সাম্প্রদায়িকতা, স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা, মুক্তবাজারের নামে লুটপাটতন্ত্র, বিশ্বায়নের নামে সাম্রাজ্যবাদী শোষণ-আগ্রাসন ইত্যাদির ফলে ছাত্রসমাজের প্রত্যাশা ও সুন্দর স্বপ্নগুলো প্রতিনিয়ত নানাভাবে বিনষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা এই শিক্ষাই দিচ্ছে যে, প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার আমূল রূপান-র ও বর্তমান শাসক-শোষক শ্রেণীকে পরাভূত না করতে পারলে ছাত্র সমাজ তার বহু আকাঙ্খিত শিক্ষা জীবন নিশ্চিত করতে পারবে না।

    অন্যদিকে, দেশবাসীর অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ছাত্র সমাজ জাতীয় সমস্যাবলী থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন রাখতে পারে না। ছাত্র সমাজ সমগ্র জনগণেরই একটি সচেতন অংশ; তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক অধিকার, অসামপ্রদায়িকতা, সমাজ ও অর্থনীতির প্রগতিশীল বিকাশ, সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বায়নের আগ্রাসী আধিপত্য থেকে মুক্তি, বৈষম্য ও শোষণের অবসান, প্রকৃতি ও পরিবেশের বিপর্যয় রোধ, বিশ্ব শান্তি- জাতীয় মুক্তির স্বপক্ষে আন্তর্জাতিক সংহতি- এসব কোনো বিষয়ই ছাত্র সমাজের বিবেচনা বর্হিভূত বিষয় হতে পারে না।

    অনেকের মধ্যে এরকম ভুল ধারণা হতে পারে যে ছাত্ররা শুধু লেখাপড়া করবে। দেশ দুনিয়া নিয়ে ভাবার কোন প্রয়োজন তাদেও নেই, কেননা এগুলো তাদেও শিক্ষা জীবনের সাথে জড়িত নয়। কিন’ এরকম ধারণা সঠিক নয়। একটা ছোট উদাহরণ দেয়া যাক। ধরা যাক, পাটকল বন্ধ হয়ে গেছে। তাই এর প্রতিবাদ করা এবং প্রতিবাদে প্রয়োজনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট করা ছাত্র হিসেবে অসি-ত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই যুক্তিসংগত হয়ে ওঠে। যেসব ছাত্রের পরিবার পাটকলের উপর নির্ভরশীল তাদের শিক্ষাজীবন তখন এর ফলে হুমকীর মধ্যে পড়ে। এভাবেই অর্থনীতি-রাজনীতিসহ জাতীয় আন-র্জাতিক ঘটনাবলী অবিচ্ছেদ্য ভাবে ছাত্রসমাজের সামগ্রীক স্বার্থ ও মননে জায়গা করে নেয়।

    এজন্যই আপনাকে আমাকে ও সমগ্র ছাত্র সমাজকে জাতীয়-আন-র্জাতিক নানা মৌলিক ও ছোট-বড় বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়াটা স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। এটা ‘দলবাজি’ বা রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি নয়। ছাত্র সমাজের কোন ধরণের রাজনীতি করা উচিৎ সেটাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা অনেক রকম রাজনীতি দেখতে পাই। লুটপাটের রাজনীতি, খুন-ধর্ষণের রাজনীতি, অস্ত্রবাজী-টেণ্ডারবাজী-চাঁদাবাজীর রাজনীতি, নেতা-নেত্রীর নামে স্লোগানের রাজনীতি, ধর্মান্ধ-মৌলবাদী রাজনীতি ইত্যাদি। ছাত্র ইউনিয়ন রাজনীতির নামে চলতি হাওয়ার এই অপরাজনীতির সাথে মোটেই সমপৃক্ত নয়। এসবকে সে ঘৃণা করে, প্রত্যাখ্যান করে।

    আরেক ধরণের রাজনীতি হলো আদর্শ, দেশপ্রেম, ত্যাগের রাজনীতি। ছাত্র ইউনিয়ন সেই রাজনীতির সাথে যুক্ত- যেখানে বৃহত্তর ছাত্র সমাজের মৌলিক স্বার্থের পাশাপাশি এদেশের গরীব দুঃখী-মেহনতী মানুষের সার্বিক অধিকার ও মুক্তির পথনির্দেশ রয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় ছাত্র ইউনিয়ন যেমন অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানভিত্তিক, বৈষম্যহীন, গণমূখী ও একই ধারার শিক্ষানীতির বাস-বায়ন চায় তেমনি জাতীয় রাজনীতি ও অর্থনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থায় শোষণ-বৈষম্যহীন সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে। ইতিহাসের অভিজ্ঞতা হল ঐক্যবদ্ধ সচেতন লড়াই-সংগ্রাম ছাড়া কোনো অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। এ লড়াই সমগ্র ছাত্র সমাজের, আপনার আমার সকলের। সুন্দর সমাজের জন্য, মানুষ-মানবতা-মনুষ্যত্বের জন্য ও সাম্যের পৃথিবী গড়ার জন্য। এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব-কর্তব্য এড়ানো কোনো সচেতন-যুক্তিবাদী ছাত্র-ছাত্রীর, কোন মানুষের কাজ নয়।  (নিউজজি২৪.কম)

  • বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা রিপন রায়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ায় জাসদ সভাপতি ও সেক্রেটারীর বিবৃতি

    বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা রিপন রায়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ায় জাসদ সভাপতি ও সেক্রেটারীর বিবৃতি

    ছাত্রলীগ নেতা, কারমাইকেল কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষে মেধাবী ছাত্র রিপন রায়ের(২৪) অকাল মৃত্যুতে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপির শোকঃ

    বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রংপুর সরকারি কারমাইকেল কলেজ কমিটির সদস্য রিপন রায় আজ ২৬এপ্রিল ২০২০ রবিবার সকাল ৬টা ৩০মিনিটের সময় ৬ঃ৩০ মিনিটে রংপুর-সৈয়দপুর সড়কের পাগলা পীরে মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় রংপুরে যাওয়ার পথে ট্রাকে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছেন। বউকে নিয়ে রিপন এ সময় অন্যান্য যাত্রীদের সাথে অটোতে ছিলেন। রিপনের বউয়ের অবস্থাও আশংকাজনক।
    রিপন রায় মাস্টার্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শেষ বর্ষের মেধাবী ছাত্র ছিলেন।
    নীলফামারি জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার গারাগ্রাম মাগুড়া গ্রামে রিপন রায়ের বাড়ী । থাকতেন রংপুর শহরে।
    শোক

    জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ ২৬এপ্রিল ২০২০ রবিবার এক বিবৃতিতে , বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রংপুর সরকারী কারমাইকেল কলেজে কমিটির সদস্য রিপন রায়ের মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক ও অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। নেতৃদ্বয়, তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-স্বজন-সহযোদ্ধাদের আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন। তারা বলেন, আমরা একজন সম্ভবনাময় ভবিষ্যৎ ছাত্রনেতা ও মেধাবী রাজনৈতিক কর্মী হারালাম।