Download daily dakshiner mashal android app
link-1 :
https://drive.google.com/file/d/1S99xKMKMA1-ybax9T8IPeocYBGynsTA0/view?usp=drive_link
link-2 :
https://drive.google.com/file/d/1QCUveyb45BDVg2LXy01a_ZvwcPlHOODg/view?usp=drive_link




Download daily dakshiner mashal android app
link-1 :
https://drive.google.com/file/d/1S99xKMKMA1-ybax9T8IPeocYBGynsTA0/view?usp=drive_link
link-2 :
https://drive.google.com/file/d/1QCUveyb45BDVg2LXy01a_ZvwcPlHOODg/view?usp=drive_link




বয়স আটকাতে কে না চায়! নারী হোক বা পুরুষ; চেহারায় বয়সের ভাজ পড়বে, এ যেন এক দুঃস্বপ্নের চেয়ে কম কিছু নয়! সিনেমা, মডেলিং বা ফ্যাশন সম্পৃক্তরা এই ব্যাপারে বেশ অনেকটা সতর্ক। তাছাড়া যাদের অনেক টাকা আছে, তারা অনেক অ্যান্টিএজিং চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু সেসব কি আর সাধারণ ঘরের মানুষের দ্বারা সম্ভব? তাই বলে তো, কম বয়সেই মুখে কুঁচকানো চামড়া নিয়ে ঘোরা যায় না!
তবে, বুড়িয়ে যাওয়া কোনো দু-এক দিনের ঘটনা নয়। বেশ লম্বা সময়ের ব্যাপার। তাই এই প্রক্রিয়াকে বাধা দিতে চাইলে পদক্ষেপও বেশ আগে থেকেই নিতে হবে। শুধু বয়সের ছাপ পড়াই নয়, জীবনে সুস্বাস্থ্য রক্ষায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এমন কিছু অভ্যাস উল্লেখ করা হলো-
১. অসম্পূর্ণ ঘুম: শরীরের ঘাটতি এবং ক্লান্তি দূর করার স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া হলো ঘুম। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে মানসিক চাপজনিত হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যায়। এতে ত্বকের টান টান ভাব কমে যেতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, চেহারার পেশির টক্সিনের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতাও কমিয়ে দেয়। চামড়া ঝুলে যাওয়া, চোখের নিচে কালি পড়া, বলিরেখা সহ নানারকম সমস্যার সূত্রপাত হয়। দিনে অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর পরিকল্পনা রাখতে হবে।
২. নেশাদ্রব্য: অতিমাত্রায় নেশাজাত দ্রব্য, বিশেষ করে ধূমপান এবং অ্যালকোহলসমৃদ্ধ পানীয় সেবন ত্বকের ঝুলে পড়ার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে। কারণ, অ্যালকোহল সেবনে ত্বকের আর্দ্রতা কমে যেতে শুরু করে এবং কোলাজেন উৎপাদন হ্রাস করে। এছাড়া ধূমপানের কারণে ইলাস্টিন প্রোটিনের ক্ষতি হয়। এই কারণে ত্বকে বলিরেখা, সূক্ষ্মরেখা এবং ত্বকে নিস্তেজ বর্ণ সৃষ্টি হয়।
৩. পানিশূন্যতা: পর্যাপ্ত মাত্রায় পানি পান করা ত্বক সুন্দর রাখার পূর্বশর্ত। পানিশূন্যতা কেবল ত্বকের নয় অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্যেরও বুড়িয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী, যা অনেক রোগের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে দিনে অন্তত ৭ থেকে ৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
৪. ব্যায়ামের ঘাটতি: প্রতিদিন ব্যায়াম করলে শরীরে রক্ত চলাচল বেশ ভালোভাবে হয়। এতে ত্বকে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। ব্যায়ামের ঘাটতি দিন দিন ত্বকে বয়সের ছাপ ফেলে। এছাড়া ব্যায়ামের মাধ্যমে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ওজনবৃদ্ধির মতো অনেক রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়।
৫. সূর্যরশ্মি: অতিবেগুনি রশ্মি অর্থাৎ ইউভি রশ্মি ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা ধ্বংস করার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। প্রতিদিন দীর্ঘক্ষণ সূর্যের আলোতে থাকলে ত্বক জলদি বুড়িয়ে যায়। তাই প্রতিদিন বাইরে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
৬. মানসিক চাপ: অনেকে হয়তো জানেন না, বার্ধ্যেকের ক্ষেত্রে মানসিক চাপ একটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মানসিক অশান্তির কারণে ত্বকের কোষগুলো অকালে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং জীবনীশক্তি বজায় রাখতে ধ্যান, যোগ ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার ব্যাপারে মনোযোগী হন।
৭. অস্বাস্থ্যকর খাদ্য: আজেবাজে খাদ্যাভাস শুধু শরীরে পুষ্টি উপাদানের ঘাটতিই ঘটায় না, বরং শরীরে একগাদা বাজে জিনিসে পূর্ণ করে। যেমন অতিরিক্ত তেলজাতীয় খাবারে মুখে ব্রণ ও পিম্পল হয়। আবার চিনি এবং প্যাকেটজাত খাবারের কারণে শরীরে প্রদাহ হতে পারে। এসব কারণে কম বয়সেই বার্ধক্যজনিত লক্ষণ ফুটে ওঠে। তাই সুষম এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার রুটিন তৈরি এবং অনুসরণ করতে হবে।
এইসব অভ্য়াসের কারণে বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করে। অনেক বেশি অনিয়ম হলে খুব কম বয়সেই এইব লক্ষণ দেখা যেতে পারে। তাই সময় থাকতেই এইসব বদঅভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে হবে। নিজেকে সুন্দর রাখুন, সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
তথ্যসূত্র: নিউজ১৮/বার্তা২৪.কম

প্রতিনিধি: সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য লায়লা পারভীন সেঁজুতির অনুকূলে বরাদ্দকৃত টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও ঐচ্ছিক তহবিলের সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ৬০টি চেক বিতরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন ক্লাব, লাইব্রেরী, নাট্য সংগঠন, নারী সংগঠন, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, শ্মশান, ঈদগাহ, এতিমখানা, কবরাস্থান, অসুস্থ্য অসহায় ও দরিদ্র পরিবার, রাস্তা ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নে এ চেক বিতরণ করা হয়।
২৯ জুন শনিবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ ডিজিটাল কর্নারে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোয়াইব আহমাদ। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য লায়লা পারভীন সেঁজুতি। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম, সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ইয়ারুল হক।
উল্লেখ্য, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য লায়লা পারভীন সেঁজুতির অনুকূলে বরাদ্দকৃত টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও ঐচ্ছিক তহবিলের অর্থ সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনে বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পে বিতরণ করা হচ্ছে।

নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠিত হল, এ বার সেই সরকার বিভিন্ন বিষয়ে নতুন নীতি রূপায়ণ করবে। অর্থ মন্ত্রকের নর্থ ব্লকে কী ভাবে নীতি রূপায়ণের কাজটি হয়, এবং আগামী কয়েক মাসে এই সরকারের থেকে কী কী আশা করা যেতে পারে, সে বিষয়ে অনেক কিছুই পড়ছি গত কয়েক দিন যাবৎ। পড়তে পড়তে মনে পড়ে যাচ্ছে নর্থ ব্লকে আমার শুরুর দিনগুলোর কথা— ভারত সরকারের হয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতার সূচনাপর্ব।
আমি যে এক সম্পূর্ণ অন্য দুনিয়ায় পা রেখেছি, খুব তাড়াতাড়িই টের পেলাম। আমার জন্য বরাদ্দ হয়েছিল একটি অ্যাম্বাসাডর গাড়ি। অফিসে যাব বলে গাড়িতে উঠেছি— অভ্যাসবশে সিটবেল্ট লাগাতে গেলাম। আমার গাড়ির চালককে দেখে মনে হল, খুবই অস্বস্তিতে পড়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, পরে টের পেয়েছি যে, মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা নামক গেরামভারী পদের অধিকারীর গাড়ির সারথি বলে তাঁর বেশ গর্ববোধ ছিল। আমায় সিটবেল্ট পরতে দেখে শেষ অবধি নিজের আপত্তি আর চেপে রাখতে পারলেন না তিনি। আমার দিকে ঘুরে বললেন, “স্যর, আমি জানি আপনি আগে শিক্ষক ছিলেন; তবে এখন আপনি দেশের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। আর সিটবেল্ট পরার কোনও প্রয়োজন নেই!” বলা বাহুল্য, লোকটিকে আমার ভারী মনে ধরল! তবে, এটাও বুঝলাম যে, এক নতুন, অচেনা দুনিয়ায় পা দিয়েছি আমি।
এখন আমি কর্নেল ইউনিভার্সিটিতে গেম থিয়োরি বা দ্বন্দ্ব তত্ত্বের যে কোর্সটি পড়াই, তার একটি অংশের নাম ‘বারগেনিং থিয়োরি’। এই তত্ত্বটির উদ্ভাবক ছিলেন আশ্চর্য প্রতিভাধর গণিতজ্ঞ জন ন্যাশ। আ বিউটিফুল মাইন্ড নামের ছবিটিতে রাসেল ক্রো অভিনয় করেছিলেন তাঁর ভূমিকায়, এটা বললে হয়তো ন্যাশকে মনে করতে সুবিধা হবে। মাত্র ২২ বছর বয়সে বারগেনিং বিষয়ে দু’টি ছোট পেপার লিখেছিলেন ন্যাশ। তার অল্প কিছু দিনের মধ্যেই তিনি আক্রান্ত হন স্কিৎজ়োফ্রেনিয়া রোগে, গবেষণার জগৎ থেকে হারিয়ে যান। কিন্তু, তাঁর ওই দু’টি ছোট গবেষণাপত্র ‘বারগেনিং থিয়োরি’-র ভিত গড়ে দিয়েছিল। গোটা দুনিয়ায় গেম থিয়োরির ক্লাসরুমে, এবং আমেরিকার আদালতকক্ষে, তার ব্যবহার চলছে।
কিন্তু, বারগেনিং থিয়োরির সেরা বাস্তব উদাহরণটি আমি কোনও ক্লাসঘরে পাইনি, পেয়েছিলাম দিল্লির অর্থ মন্ত্রকে আমার অফিসের কর্মীদের থেকে। সে কথা বলি। মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার অফিসে আমার চিফ অব স্টাফ ছিলেন সোমনাথন নামে এক জন— খুবই নির্ভরযোগ্য মানুষ। এক দিন তিনি আমার অফিসে এলেন। তিনি দরজার কাছে দাঁড়িয়ে, এবং তাঁর ঘাড়ের উপর দিয়ে আর কয়েক জন উঁকি মারছে, এমন অবস্থায় সোমনাথন আমায় জানালেন, আমার মতো উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সরকার ৬০০০ টাকা অবধি দামের ব্রিফকেস কিনে দিয়ে থাকে। সেই মুহূর্তে আমার আদৌ একটা নতুন ব্রিফকেসের প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু সোমনাথন ও তাঁর ঘাড়ের উপর থেকে উঁকি মারা সহকর্মীদের হতাশ করতে মন চাইল না। বললাম, আমায় কয়েকটা স্যাম্প্ল দেখানোর ব্যবস্থা করা হোক।
পর দিনই এক সর্দারজি হাজির আমার অফিসে। তাঁর হাতে ছ’টি ব্রিফকেস, তবে বলে না-দিলে সেগুলোর মধ্যে ফারাক খুঁজে পাওয়া কঠিন। আমার টেবিলের উপরে সেগুলো সাজিয়ে রাখা হল। মনে হচ্ছিল, স্বয়ংবর সভা চলছে— সামনে রাজপুত্রের দল, এক জনের গলায় আমি বরমাল্যটি পরিয়ে দিলেই হয়! সোমনাথন এলেন; তাঁর পিছন পিছন এলেন আমার পার্সোনাল সেক্রেটারি ও সহায়করা; তাঁদেরও পিছনে এলেন আমার পিয়নরা। এই শেষের দলটি এমনিতে লাজুক— কিন্তু এই মহাভারত-তুল্য ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করার লোভ তাঁরাও সামলাতে পারেননি বলে দেখা গেল।

দৈনিক দক্ষিণের মশাল পরিবারের পক্ষ থেকে সকল শ্রেণির মানুষকে জানাই পহেলা বৈশাখ ও নববর্ষের শুভেচ্ছা ।


শ্যামনগর উপজেলায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়ন রত দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র ও ছাত্রীদের মধ্য থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে ৩০ জনকে নির্বাচিত করা হয়। নির্বাচিত ছাত্র-ছাত্রীদেও মধ্যে দুই পর্বে ৩০ জনকে বৃত্তি প্রদান করা হয়। প্রথম পর্বে ১৭ আগস্ট ২০২০ ১৫ জনাক মাথাপিছু ৬০০০ টাকা করে প্রদান করা হয়।দ্বিতীয় পর্বে ৩১ ডিসেম্বও ২০২০ বাকী ১৫ জনকে ৬০০০ টাকা করে প্রদান করা হয়।

মশাল ডেস্ক: ঋতু শরৎকে বিদায় দিয়ে হেমন্তকে বরণ করেছে প্রকৃতি। বৈচিত্রপূর্ণ ছয়টি ঋতুর দেশ আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। এক একটি ঋতুর রয়েছে এক একটি বৈশিষ্ট্য। ঋতু বৈচিত্রে এখন রাতের শেষে কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমন বার্তা। আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে খেজুর রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা খেজুর গাছ কাটার কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
পুবালি বাতাসে অপরুপ সৌন্দর্যে সকলের মন মাতিয়ে তুলছে মিষ্টি খেজুর রসের ঘ্রাণ। কাক ডাকা ভোরে রস সংগ্রহ ও সন্ধ্যায় চলছে গাছ পরিচর্যার কার্যক্রম। এবার কিছুটা আগেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তিক জনপদের গ্রামে গ্রামে সকালের শিশিরের সাথে অনুভূত হচ্ছে মৃদু শীত।
আর মাত্র কয়েক দিন পর রস সংগ্রহ করে রস থেকে লালি ও গুড় তৈরির পর্ব শুরু হয়ে চলবে প্রায় মাঘ মাস পর্যন্ত। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি প্রতিটি গ্রামে চোখে পড়ছে। খেজুর রস ও গুড়ের জন্য এক সময় খ্যাতি ছিল। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড়। কিছুদিন আগেও বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে, ক্ষেতের আইলে, ঝোপ-ঝাড়ের পাশে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ।
কোন পরিচর্যা ছাড়াই অনেকটা প্রাকৃৃতিক ভাবে বেড়ে উঠতো এসব খেজুর গাছ। প্রতিটি পরিবারের চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত রস দিয়ে তৈরি করা হতো সুস্বাদু খেজুরের গুড়। গ্রামীন জনপদে সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবে পুকুরের পাড়ে রাস্তার ধারে পরিবেশ বান্ধব খেজুর গাছ এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। ইট ভাটার রাহু গ্রাসে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণে যে পরিমাণ গাছ চোখে পড়ে তা নির্বিচারে নিধন করায় দিনদিন খেজুর গাছ কমছেই।
এখনও শীতকালে শহর থেকে মানুষ দলে দলে ছুটে আসে গ্রাম বাংলার খেজুর রস খেতে। এক সময় সন্ধ্যাকালীন সময়ে গ্রামীন পরিবেশটা খেজুর রসে মধুর হয়ে উঠতো। রস আহরণকারী গাছিদের প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যেত সে সময়ে। রস জ্বালিয়ে পাতলা ঝোলা, দানা গুড় ও পাটালী তৈরি করতেন।
যার সাধ ও ঘ্রাণ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখন অবশ্যই সে কথা নতুন প্রজন্মের কাছে রূপকথা মনে হলেও বাস্তব। যত বেশি শীত পড়বে তত বেশি মিষ্টি রস দেবে খেজুর গাছ। এ গাছ ৮ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত রস দেয়। এটাই তার বৈশিষ্ট্য। শীতের পুরো মৌসুমে চলে রস, গুড়, পিঠা, পুলি ও পায়েস খাওয়ার পালা। এ ছাড়া খেজুরর পাতা দিয়ে আর্কষনীয় ও মজবুত পাটি তৈরী হয়। এমনকি জ্বালানি কাজেও ব্যাপক ব্যবহার। কিন্তু জয়বায়ু পরিবর্তন, কালের বির্বতনসহ বন বিভাগের নজরদারী না থাকায় বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ এখন বিলুপ্তির পথে।
তবে যে ভাবে খেজুর গাছ কাটা হচ্ছে অল্প দিনের মধ্যেই এই দেশে আর খেজুর গুড়ের ব্যবসা হবে না বলে মনে করেন গাছিরা। বর্তমান বাজারে আখের গুড় চিনি যে মূল্যে বেচাকেনা হচ্ছে তার চেয়ে মানসম্পন্ন খেজুরের গুড়ের দাম এবছর কিছুটা বেশি হবে এমনটাই আসা করছেন গাছিরা। শীত একটু বেশি পড়তে শুরু করলে আত্মীয়-স্বজন আনা নেয়া ও পিঠা-পুলির উৎসবে খেজুর গুড়ের দাম ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সে সময় আমাদের লাভ একটু বেশি হয়। যে পরিমাণে শ্রম দিতে হয় সে পরিমাণে আমরা লাভ করতে পারি না। তবুও পেশাগত কারণে চালিয়ে যাচ্ছি এই ব্যবসা।
এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগ জানায়, বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটি শিল্প আর দক্ষতায় ভরা। ডাল কেটে গাছের শুভ্র বুক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য ও অপেক্ষার পালা। এ জন্য মৌসুমে আসার সাথে সাথে দক্ষ গাছিদের কদর বাড়ে।
এদিকে সচেতন মহল মনে করেন, খেজুর গাছ আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য তথা জীবনধারায় মিশে আছে। এই ঐতিহ্যকে যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করতে হবে।

মশাল ডেস্ক: কিশোরগঞ্জ তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা গ্রামের যুবক সফিউল আলম সজিব। মুরগী পালন আর মাছ চাষ করে মাসে আয় করেন ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা। চাকরির পেছনে না ছুটে তিনি আজ সফল খামারি। ২০১১ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে তিনমাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে ১০০ ব্রয়লার মুরগী নিয়ে মুরগীর খামার শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে রয়েছে ১০ হাজার লেয়ার মুরগী।
খামারের পাশাপাশি রয়েছে ১২ টি পুকুর। পুকুরে শিং, পাবদা, গুলসা ও পাঙাস মাছ চাষ করেন। রয়েছে একটি মাঝের হ্যাচারি ও গরুর খামার। সজীবের খামারে ২০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। তার খামারে কাজ করে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারের খরচও চালাতে পারছে।
তালজাঙ্গা গ্রামে সজীবই প্রথম মুরগীর খামার ও মাছ চাষ শুরু করেন। এখন তার সাফল্য দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক খামারি হিসেবে কাজ করছেন।
বেকার সমস্যা দূর করতে দেশের শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত বেকার যুবকদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। চাকরির পেছনে না ছুটে সফল আত্মকর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে বেকার যুবকদের প্রতি আহ্বান করেন তাড়াইল উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা, মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান খান।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তদের দিক নির্দেশনায় সফল খামারি সজীব এখন স্বপ্ন দেখছেন নিজের খামারকে বড় পরিসরে রূপ দিয়ে ৫০ হাজার লেয়ার মুরগী নিয়ে ৫০ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার। সরকারি সহযোগিতা পেলে তার এই স্বপ্ন পূরণ করা সহজ হবে বলে জানান শফিউল আলম সজীব।

নিত্য ব্যস্ততার রুটিনে ত্বকের যত্ন নিয়ে ভাবতে গেলে মনে হয় বিলাসিতা। কেবল প্রসাধনীর গুণেই নয়, যোগের কামালেও পেতে পারেন জেল্লাদার ত্বক।যৌবনের টানটান মসৃণ ত্বকের জেল্লা হারাতে থাকে ৪০ পেরোলেই। তার পর থেকেই ধীরে ধীরে বলিরেখা দেখা দিতে থাকে। ত্বক ঝুলে যায়। খসখসে হয়ে পড়ে। নিত্য ব্যস্ততার রুটিনে শরীরচর্চার জন্য সময় বার করা হয়ে ওঠে না। ত্বকের যত্ন নিয়ে ভাবতে গেলে মনে হয় বিলাসিতা। কিন্তু শরীরের দেখভাল করার পাশাপাশি ত্বকের পরিচর্যাও ভীষণ দরকার। অনেকেই খেয়াল করে ঘন ঘন জল খেয়ে ত্বক আর্দ্র রাখেন। কেউ আবার বেরোনোর সময়ে সানস্ক্রিন মেখে ত্বক রক্ষা করেন বাইরের ধুলোবালি বা অতিবেগুনি রশ্মি থেকে। তবে ত্বকের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু যোগাসনও উপকারী হতে পারে। জেনে নিন কোন যোগাসনে ত্বকের জেল্লা বাড়বে।
১) হলাসন: এই আসনটি রক্ত সঞ্চালনের হার বাড়ায়। এই আসন নিয়মিত করলে অনিদ্রার সমস্যা দূর হয়। ভাল ঘুম হলে ত্বকে ক্লান্তির ছাপ পড়ে না। ত্বক ভাল থাকে।
যোগাসনটি করার জন্য প্রথমে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। এ বার কোমরে ভর দিয়ে পা দু’টি আস্তে আস্তে উপরে তুলুন ৯০ ডিগ্রি কোণে। হাতের তালুতে চাপ দিয়ে পা দু’টিকে মাথার উপর দিয়ে পিছনের দিকে নিয়ে যান। এর পর পিঠটা ধীরে ধীরে মাটি থেকে এমন ভাবে তুলুন, যাতে পায়ের আঙুলগুলি মাটি স্পর্শ করে। বুকের কাছে নিয়ে আসুন থুতনি।
২) সর্বাঙ্গাসন: এই আসনটি করা খুব সহজ নয়। তবে এক বার অভ্যস্ত হয়ে পড়লে এই আসন শরীরের পাশাপাশি ত্বকও ভাল রাখতে সাহায়্য করে। এই আসন মুখে রক্ত চলাচল বাড়ায়। তাই চামড়া কুচকে যাওয়া, ব্রণর সমস্যা ঠেকিয়ে রাখতে এই আসনের উপর ভরসা করতে পারেন।হলাসনের মতো প্রথমে শুয়ে পড়ে তার পর পিঠের উপর ভর দিয়ে পেলভিস ও পা দু’টি সোজাসুজি তুলে দিন। এ বার কনুই থেকে হাত ভাঁজ করে পিঠটা ছেড়ে দিন তালুর উপর। খেয়াল করবেন যেন কাঁধ, টরসো, পেলভিস, পা এবং পায়ের পাতা একই সরলরেখায় থাকে। চেষ্টা করুন যেন আপনার থুতনি স্পর্শ করে বুক এবং দৃষ্টি স্থির থাকে পায়ের পাতার দিকে।

৩) ধনুরাসন: এই আসনটি নিয়মিত করতে পারলে মানসিক চাপ মুক্ত হওয়া যায়। উদ্বেগ কমে। পেটের উপর চাপ পরায় এই যোগ ব্যায়ামটি করলে হজমশক্তিও বাড়ে। পেট পরিষ্কার থাকলে ত্বকও ভাল থাকে।
উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। তার পর হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতা যতটা সম্ভব পিঠের উপর নিয়ে আসুন। এ বার হাত দু’টি পিছনে নিয়ে গিয়ে গোড়ালির উপর শক্ত করে চেপে ধরুন। চেষ্টা করুন পা দু’টি মাথার কাছাকাছি নিয়ে আসতে। এই ভঙ্গিতে মেঝে থেকে বুক পর্যন্ত হাঁটু ও উরু উঠে আসবে। পেট মেঝেতে রেখে উপরের দিকে তাকান। এই ভঙ্গিতে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড থাকুন। তার পর পূর্বের ভঙ্গিতে ফিরে যান। এই আসন বার তিনেক করতে পারেন।
নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার আহবানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা কমিটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার বিকালে সুশীলন কার্যালয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা কমিটি আলোচনা সভায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা কমিটি সাতক্ষীরার আহবায়ক অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সরকারি কলেজে সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ, সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদন কল্যাণ ব্যানার্জী, সিনিয়র সিটিজেন ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ডা. সুশান্ত ঘোষ, স্বদেশের পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার শীল, এজি চার্চ পাস্টর আলফ্রেড রায়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা কমিটি সাতক্ষীরার সদস্য সচিব আলী নুর খান বাবুল, জেলা ভূমিহীন সমিতির সভাপতি কাওসার আলী, সুশীলনের মনিরুজ্জামান, উন্নয়ন কর্মী শম্পা গোস্বামী, উদীচীর সিদ্দিকুর রহমান, ভূমিহীন নেতা আব্দুস সামাদ, সনাকের সভাপতি পবিত্র মোহন মল্লিক, নারী নেত্রী ফরিদা আক্তার বিউটি প্রমুখ। বক্তরা বলেন, সারাদেশে যেভাবে যেভাবে সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে এটি খুবই উদ্বেগের বিষয়। দূর্গাপূজাকে সামনে রেখে সাম্প্রদিকসম্প্রীতি রক্ষার লক্ষে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো। আমাদের জেলায় কোন অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। জেলাবাসীকে সজাগ থাকার পাশাপাশি সকল স্তরে সহাবস্থান ও ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখার আহ্বান জানান বক্তরা। আগামী ৪ আগস্ট সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১০ টা মানববন্ধনের আহ্বান করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরার কলারোয়ার দক্ষিণ মুরারীকাটি কালী মন্দির মাঠ সংস্কার কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১জুলাই) বিকেলে সাতক্ষীরা-১আসনের তালা-কলারোয়ার সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে ওই কালী মন্দিরের মাঠ সংস্কার কাজের শুভ উদ্বোধন করেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন-কলারোয়া পৌর সভার মেয়র প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান বুলবুল, পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, পৌর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন, দিতী খাতুন, দক্ষিণ মুরারীকাটি পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রনজিৎ কুমার মন্ডল, আমেরিকান প্রবাসী ও সমাজসেবক রফিকুল ইসলাম মল্লিক, ৭নং ওয়ার্ড আ,লীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার মন্ডল, নিমাই চন্দ্র হোড়, কাশিয়াডাঙ্গার ইউপি সদস্য আলী মাহমুদ সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র গীতা পাঠ করেন-অহনা পোদ্দার। অতিথিরা তাদের বক্তব্য মুরারীকাটি কালী মন্দির সংস্কার, দূর্গা মন্দির সংস্কার, কালী মন্দির প্রবেশ রাস্তা সংস্কার, পানি নিষ্কাশন, ফসলী মাঠ ও ড্রেন নির্মাণের দাবী করেন।

তালা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরা তালায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় ধাপের দ্বিতীয় পর্যায়ে ১০০ টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসাবে জমির দলিল ও ঘর বুঝে পেল।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালী উদ্বোধনের পর তালা শিল্পকলা হলরুমে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ১০০টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের সদস্যদের নিকট জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়।
জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাজমুন নাহারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল কুদ্দুস, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সরদার মশিয়ার রহমান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মুরশিদা পারভীন পাঁপড়ি।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: ওবায়দুল হক, তালা উপজেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দীন জোয়ার্দার, তালা শহিদ মুক্তিদযোদ্ধা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. এনামুল ইসলাম, তালা মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলামসহ ১২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ ও উপকারভোগীরা।

মশাল ডেস্ক: মহান মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার ও স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠিত গণবাহিনীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কর্নেল আবু তাহের বীর-উত্তমের হত্যার ৪৬ তম বার্ষিকী বৃহস্পতিবার ২১ জুলাই। কর্নেল তাহেরকে ১৯৭৬ সালের এই দিনে এক সামরিক ট্রাইব্যুনালের প্রহসনের রায়ে ফাঁসি দেওয়া হয়। ২০১১ সালে বিশেষ সামরিক ট্রাইব্যুনালে কর্নেল আবু তাহের ও তাঁর সঙ্গীদের এই গোপন বিচার অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। জাসদ ও কর্নেল তাহের সংসদ দিনটিকে ‘তাহের দিবস’ হিসেবে পালন করে।
তাহের দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচি দিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।
তাহের দিবসে জাসদের কর্মসূচিঃ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ আজ ২১ জুলাই মুক্তিযুদ্ধে মৃত্যুঞ্জয়ী সেক্টর কমান্ডার, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের মহানায়ক, জাসদ নেতা, মহান বিপ্লবী শহীদ কর্নেল তাহের বীরউত্তমের ৪৬তম হত্যাবার্ষিকী: তাহের দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচি
২১ জুলাই ২০২২, বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন। সকাল ১০ টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শহীদ কর্নেল তাহেরের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন। সকাল ১১ টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে আলোচনা সভা। সভাপতি: দলীয় সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি। আলোচক: সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড দিলীপ বড়ুয়া, জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, বাংলাদেশের ওর্য়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা এমপি , জাসদের কার্যকরী সভাপতি এড. রবিউল আলম, গণতন্ত্রী পার্টি সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, সাবেক অতিরিক্ষ এটর্নীি জেনারেল এড. এম কে রহমান, জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শহীদ কর্নেল তাহেরের অনুজ অ. ড. আনোয়ার হোসেনসহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং ১৪ দলের শরিক দলসমূহের নেতৃবৃন্দ ও জাতীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীগণ।
জেলা-উপজেলায় কর্মসূচি
তাহের দিবস উপলক্ষ্যে দলের জেলা ও উপজেলা কমিটিসমূহ কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অনুরূপ কর্মসূচি পালন করবে।
মুক্তিযুদ্ধে মৃত্যুঞ্জয়ী সেক্টর কমান্ডার, সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের মহানায়ক, জাসদ মহান বিপ্লবী শহীদ কর্নেল তাহের বীর উত্তমকে হত্যার ৪৬তম হত্যাবার্ষিকী: তাহের দিবসে আজ ২১ জুলাই ২০২২, সকাল ১১ টায় জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটি, নেত্রকোনা জেলা কমিটি এবং ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর কমিটির পক্ষ থেকে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার কাজলা গ্রামে শহীদ কর্নেল তাহেরের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
দলের সাধারণ সম্পাদকের আহবান
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি ২১ জুলাই ২০২২ মুক্তিযুদ্ধে মৃত্যুঞ্জয়ী সেক্টর কমান্ডার, সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের মহানায়ক, মহান বিপ্লবী শহীদ কর্নেল তাহের বীরউত্তমের ৪৬তম হত্যাবার্ষিকী: তাহের দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য দলের সকল জেলা ও উপজেলা কমিটির প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের কোয়েটার স্টাফ কলেজে প্রশিক্ষণরত তাহের পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে কলেজ ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর একের পর এক সামরিক অভ্যুত্থানের সময় তাহের ওই বছরের ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন। ওই অভ্যুত্থানের ফলে বন্দিদশা থেকে জিয়াউর রহমান মুক্ত হয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আরোহণ করেন। পরে তাহেরকে বন্দি করে এক প্রহসনের বিচারে ফাঁসিতে ঝুলানো হয় তাঁকে। ৩৪ বছর পর এই গোপন বিচারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হলে ২০১৩ সালের ২০ মে উচ্চ আদালতে এই হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ বিচার সম্পন্ন হয়। বিচারে আদালত তাহেরের মৃত্যুদণ্ডকে ঠাণ্ডা মাথার খুন বলে অভিহিত করতে সরকারকে নির্দেশ দেন।

সৈয়দ মনিরুজ্জামান
মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর ১১-এর অধিনায়ক মেজর (পরে কর্নেল)আবু তাহের। সেক্টরের সদর দফতর মেঘালয় রাজ্যের তুরা পাহাড়ের সীমান্তঘেষা মহেন্দ্রগঞ্জে। মহেন্দ্রগঞ্জ, মানকারচর, পুরাকাশিয়া, সাঙ্গু ও বাগমারা-এই পাঁচটি ‘সাব-সেক্টর’ নিয়ে গঠিত হয় সেক্টর-১১। মেজর আবু তাহের উল্কার মত ছুটে প্রতিদিন প্রতিটি ‘সাব-সেক্টর”-এ পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনা করতেন। সে এক বিস্ময়কর যোগ্যতা।
১৪ নভেম্বর ১৯৭১। ঘটনাবহুল ১১ নম্বর সেক্টরে ঐতিহাসিক কামালপুর যুদ্ধের অবিস্মরণীয় এক দিন।
১৩ নভেম্বর গোপন সংবাদে জানা গেল কামালপুর বিওপির উত্তর দিকে ভারতীয় বেড়িবাঁধ সংলগ্ন কিছু বাঙ্কার থেকে পাকিস্তানী সৈন্যরা সরে গেছে। এই সংবাদের ভিত্তিতে সেক্টর কমান্ডার আবু তাহের ঐ বাঙ্কারগুলোতে অবস্থান নিয়ে কামালপুর দখল করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হেলাল কোম্পানির মুক্তিযোদ্ধারা একটি গ্রুপ নিয়ে রাত সাড়ে দশটায় মহেন্দ্রগঞ্জ ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে গেল। বেড়িবাঁধ অতিক্রম করে কামালপুর পোস্টের উত্তর-পূর্ব কোণে পাকিস্তানীদের পরিত্যাক্ত বাঙ্কারগুলোতে অবস্থান নিল।
উত্তর পূর্ব দিকে প্রথম বাঙ্কারে মেজর তাহের, তাঁর দেহরক্ষী বেঙ্গল রেজিমেন্টের একজন সিপাহী এবং তাঁর দুই ভাই বেলাল-বাহার। হেলাল কোম্পানির কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাও একই সাথে অবস্থান নেয়। কয়েকশত গজ দূরে পশ্চিম দিকের বাঙ্কারগুলোতে হেলাল, লতা, মিঠু, সুজাসহ আরও কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান গ্রহণ করে। কামালপুর বিওপির মুখোমুখি ধানুয়াতে আবেদীন কোম্পানির জয়নাল আবেদীন, লেফটেন্যান্ট মিজান, সাঈদ কোম্পানির সাঈদ (তাহেরের ছোট ভাই), ক্যাপ্টেন মান্নান ও হারুন-হাবীব সহ আরো অনেকে তাদের গ্রুপ নিয়ে বিভিন্ন “হাইড আউটে” আগে থেকেই অবস্থান করছিল।
প্রত্যেক গ্রুপের সাথে যোগাযোগ ও সমন্বয় রক্ষার জন্যে ছিলো কয়েকটি ‘ওয়াকিটকি’। মহেন্দ্রগঞ্জ ক্যাম্পে আমার হাতে ছিলো আরেকটি সেট। প্রত্যেকটি গ্রুপের সাথে আমি যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিলাম। বেড়িবাঁধের উত্তর পাশে মহেন্দ্রগঞ্জ থেকে মিত্রবাহিনীর ১৩ গার্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি ফায়ারিং দিয়ে ঐতিহাসিক অপারেশনটিকে ‘কভারেজ’ দিচ্ছিল। পরিকল্পনাটি আগেই করা হয়েছিল।
ভোররাত ৩টা ৪৫ মিনিটে অপারেশন শুরু হল। সকাল সোয়া সাতটা পর্যন্ত দু’পক্ষের মধ্যে প্রচন্ড গুলিবিনিময় হলো। কিন্তু এতো প্রচন্ড গোলাগুলির পরও হানাদার বাহিনী তাদের বাঙ্কার থেকে উঠে আসেনি। ১৪ নভেম্বর সকাল সাড়ে আটটার দিকে মেজর তাহের তাঁর বাঙ্কার থেকে উঠে লে. মিজান ও হেলালের পজিশনে আসেন। তাদের কোন অবস্থাতেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে উঠে না যাওয়ার নির্দেশ দেন। এ সময় ধানুয়া ‘হাইড আউটের’ কোম্পানি কমান্ডার আবেদীন এগিয়ে এসে মেজর তাহেরের সাথে কথা বলতে থাকেন। সকলের সাথে কথা বলতে বলতে তাদের বাঁধের কাছে ঘাসের ওপর বসে পড়েন। মুহূর্তেই প্রচন্ড একটি শব্দ হয় এবং সকলের সামনেই মেজর তাহের মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। উপস্থিত সকলেই মনে করেন, কোন একটি মর্টার সেলের আঘাত- আবার কেউ কেউ মনে করেন যেখানে তাহের লুটিয়ে পড়েন সেখানে একটি ‘এন্টি পারসোনাল মাইন’ ছিল। সে যাই হোক, তাঁর বাম পায়ের হাঁটুর উপরের অংশ প্রায় দ্বিখন্ডিত হয়ে সামান্য কিছু শুধু চামড়ার সাথে ঝুলে থাকে।
এ ঘটনায় উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা হতভম্ব ও কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে এই মর্মান্তিক খবর। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ থেমে যায়। সে বারে কামালপুর বিওপি থেকে পাকিস্তানীদের হটিয়ে দেয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু কি আশ্চর্য, এত রক্তপাতের পরও মেজর তাহের সংজ্ঞা হারান নি। তিনি আঘাতপ্রাপ্ত অংশটিকে গামছা দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দিতে বললেন যেন রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়। দু’তিন জনকে তাঁর কাছে থাকবার এবং বাকী সবাইকে যার যার অবস্থানে চলে যেতে বললেন।
এরপর গামছা দিয়ে বেঁধে রাইফেলের বাঁট দিয়ে ঝুলিয়ে বহু কষ্টে বাঁধের ওপারে ভারতীয় সীমানায় আনা হয় আহত তাহেরকে। আসার সময় জয়নাল আবেদীনের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তোমরা এসো না-কামালপুর আজ দখল করতেই হবে।’ ভাবতে অবাক লাগে এ অবস্থায় এমন সঠিক নির্দেশ দেয়া কী ভীষণ মনোবলের পরিচয় বহন করে একজন সেনাপতির!
এ সময় ক্যাম্পে বসে আমি প্রতিটি গ্রুপের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিলাম। প্রায় ন’টার দিকে ক্যাপ্টেন মান্নান জানতে চাইলেন আমি মেজর তাহেরের সাথে কোন যোগাযোগ করতে পেরেছি কিনা। তিনি জানালেন কয়েকবার চেষ্টা করেও তিনি লাইন ধরতে পারেন নি।
কিছুক্ষণ পর আমি লে. মিজানের লাইন পেলাম। ধরেছিল কোম্পানি কমান্ডার হেলাল। হেলাল কান্নাজড়িত কন্ঠে মেজর তাহেরের অবস্থা জানাল এবং সেক্টর কমান্ডারকে সরিয়ে নেয়ার জন্যে এম্বুলেন্স পাঠাতে বলল। আমি বিএসএফের অধিনায়ক ক্যাপ্টেন নিয়োগীর সাথে যোগাযোগ করে এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করি। তিনি জানালেন, তিনি আগেই খবরটি পেয়েছেন এবং এম্বুলেন্স ইতিমধ্যেই পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এক ঘন্টা পর হেলালের সাথে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হলাম যে, মেজর তাহেরকে বাঁধের এপারে নিয়ে এসে এম্বুলেন্সে তুলে দেয়া হয়েছে। মিত্র বাহিনীর মেজর মুখার্জী (ডাক্তার) নিজেই এম্বুলেন্স নিয়ে এসেছিলেন। আমাদের মেডিক্যাল কোরের মুক্তিযোদ্ধা নাসিরকে এম্বুলেন্সের সাথে দেয়া হয়েছে। সেক্টরের ডাক্তার প্রেমাংকুর রায়ও এসেছেন। ডা. মেজর মুখার্জী মেজর তাহেরকে শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান। ক্যাম্পে আমি দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠায় পায়চারি করে কালক্ষেপণ করছি মাত্র। কিছুই যেন করার নেই। এমন সময় সেন্ট্রি মহেন্দ্রগঞ্জ থানার একজন পুলিশকে আমার কাছে নিয়ে এলো। সে আমাকে ভাঁজ করা একটি কাগজ হাতে দিয়ে বলল, থানার ও.সি. সাহেব পাঠিয়েছেন। চিরকুটটি হাতে নিয়ে পড়লাম।
হাতের লেখা স্পষ্ট, সুন্দর-কিন্তু আমার পরিচিত নয়। পুলিশকে জিজ্ঞাসা করে জানলাম, আহত তাহেরকে নিয়ে যে এম্বুলেন্সটি যাচ্ছিল, মহেন্দ্রগঞ্জ থানার সামনে থামিয়ে থানার ও.সি.কে ডেকে একজন ডাক্তার চিরকুটটি মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে পৌঁছে দিতে বলেন।
ঘটনার সাত-আটদিন পর ডাক্তার মেজর মুখার্জীর সঙ্গে মহেন্দ্রগঞ্জে আমার দেখা। তিনি কিছুক্ষণ সময় দিলেন। জানতে চাইলাম ১৪ নভেম্বর মেজর তাহেরকে কেমন দেখেছেন। জবাবে মেজর মুখার্জী বললেন, “কি বলব মেজর তাহেরের কথা। আমি সামরিক বাহিনীর ডাক্তার-যুদ্ধাহত সৈনিক নিয়েই আমার কারবার। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে যুদ্ধাহত কত সৈনিকই তো দেখলাম কিন্তু মেজর তাহেরের মত একজনও দেখিনি। অমন আহত অবস্থায় রোগীরা যন্ত্রণায় চিৎকার করে- বাবাগো, মাগো, আল্লাহ-ভগবান বলে বিলাপ করে। কিন্তু তাহেরকে যখন এম্বুলেন্সে উঠালাম-তিনি নিশ্চুপ তাকিয়ে ছিলেন, আমায় দেখলেন। ভাবলাম, অধিক রক্তক্ষরণে নির্জীব হয়ে গেছেন। আমি তাড়াতাড়ি স্যালাইনের ব্যবস্থা করলাম। এম্বুলেন্স নিয়ে যখন বাঁধরোড অতিক্রম করে মহেন্দ্রগঞ্জ থানার কাছে এসেছি-তিনি জানালা দিয়ে চারদিকে তাকালেন। এরপর আমাকে বললেন- উড়পঃড়ৎ, ও ংঁঢ়ঢ়ড়ংব ও ধস হবধৎ ঃড় গবযবহফৎধমধহল ঞযধহধ?
আমি বললাম, ‘ণবং’
বললেন ঝঃড়ঢ় ঃযব াবযরপষব. গাড়ি থামানো হল। তিনি বললেন, ‘চষবধংব ঃধশব ধ ঢ়রবপব ড়ভ ঢ়ধঢ়বৎ ধহফ ৎিরঃব যিধঃ ও ংধু.’
তাঁর নির্দেশমতো কাগজ কলম নিয়ে লিখলাম তিন লাইনের একটি চিঠি। তাঁর পরামর্শমতোই চিরকুটটি থানার ওসিকে দেয়া হলো, যা আপনি পেয়েছেন। তারপর থেকে সেদিনকার ঘটনাটি আমি অনেক ভেবেছি। অমন মারাত্মক আহত অবস্থায় একজন মানুষ অমন সুচিন্তিত কথা বলতে পারে-নির্দেশ দিতে পারে-তা আমি আজও ভাবতে পারি না। আমার মনে হয়-ওঃ ধিং হড়ঃ গধল. ঞধযবৎ ঃধষশবফ ঃড় সব ৎধঃযবৎ রঃ ধিং যরং রহারহপরনষব রিষষ ঢ়ড়বিৎ ধহফ ফবঃবৎসরহধঃরড়হ যিড় ঃধষশবফ. অমন সাহসী ও দৃঢ় মনোবলের অধিকারী মানুষ আমি দেখিনি!”
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মার্চ ১৯৭২ মেজর তাহের পুনা হাসপাতাল থেকে দেশে ফিরে আসেন। ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে তাঁর বাসায় দেখা করতে গেলাম। পুনা হাসপাতালে চিকিৎসার কথা, ‘ফলস’ পা লাগানোর কথা তাঁর মুখে বিস্তারিত শুনলাম। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধী তাঁকে দেখতে পুনা হাসপাতালে গিয়েছিলেন এবং কেমন আন্তরিকতার সাথে তাঁর চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন, সে ঘটনা বর্ণনা করলেন তিনি।
মেজর তাহেরের সাথে দীর্ঘ আলাপচারিতার এক পর্যায়ে তিনি হাসতে হাসতে বললেন,- ‘জামান, আমার জন্ম হয়েছে ১৪ নভেম্বর, পঙ্গু হলাম ১৪ নভেম্বর, মনে হয় আমার মৃত্যুও হবে কোন এক ১৪ নভেম্বর।’
তাই কি হয়েছিল?
প্রত্যেক ২১ জুলাই কর্নেল তাহেরের স্মৃতি উজ্জ্বল হয়ে ভেসে ওঠে আমার মনের আকাশে। আর ভাবি, তাই কি হয়েছিল?
-সান ফিচার সার্ভিস

মাহফিজুল ইসলাম আককাজ : বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য নৌ-কমান্ডো ০০০১ বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবির চেতনায় একাত্তর বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। গতকাল ভারতের কলকাতার একাদেমি অফ ফাইন আর্টস এর কনফারেন্স রুমে সম্মানিত অতিথি হিসেবে চেতনায় একাত্তর বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন ভারতের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রাবন্ধিক ড. পবিত্র সরকার ও ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপরাষ্ট্র দূত শ্রী আন্দালিব ইলিয়াস।
এসময় সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চেতনায় একাত্তর বইয়ের লেখক সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য নৌ-কমান্ডো ০০০১ বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। এমপি তার বক্তব্যে বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে সহযোগিতা করেছে। তাদের কাছে আমরা ঋণী। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতার কথা বাংলাদেশ কখনও ভুলবেনা। আমাদের নতুন প্রজন্মকে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা তাদের জানাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুন প্রজন্ম যত জানবে তত বেশি তারা দেশপ্রেম নিয়ে দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে। এজন্য মুক্তিযুদ্ধে নিজেদের বীরত্বগাথা লেখা বইগুলি পড়তে সকলকে উদ্বুর্দ্ধ করতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধ হঠাৎ ঘটে যাওয়া কোনও ঘটনা নয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রাম আর ত্যাগের ফসল হচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশ। স্বাধীনতাকে অর্থপূর্ণ করতে হলে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারতের সাহিত্যিক ড. নজরুল ইসলাম, শিক্ষাবিদ ড. সুবীর মৈত্র প্রমুখ। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে চেতনায় একাত্তর বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের শুভ সুচনা করা হয়।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভারতের সাহিত্যিক অমর মিত্র, সাহিত্যিক অনিন্দিতা গোস্বামী, গবেষক অর্থনীতিবিদ আতিউর রহমানসহ অন্যান্য সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কবি ও অন্যান্য সম্মানীয় গুণী ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শুভ সূচনা আগে গার্গী চক্রবর্তীর শিউলি ভট্টাচার্যের একটি সুন্দর সংগীত পরিবেশিত হয় এবং তার সাথে সাথে সম্মানীয় ব্যক্তিদের একটি করে গাছ উপহার দিয়ে এই অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করা হয়। সকল সম্মানীয় অতিথিদের একটি বার্তা যেভাবে এখানকার মানুষ বাংলাদেশের বইগুলিকে সম্মান দিলেন এবং এখানে প্রকাশিত করলেন আমরা গর্বিত আমরা কৃতজ্ঞ, এখানেও যে মানুষ বাংলাদেশের বই ভালোবাসে এবং বই পড়তে ভালবাসে তার উদাহরণ আজ আমরা পেলাম, আশা করি বইগুলি পড়লে আরো ভালো লাগবে এবং অনেক কিছু জানতে পারবেন বাংলাদেশ সম্বন্ধে। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গবেষক পার্থ বন্দোপাধ্যায়।