Category: জাতীয়

  • বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৬৮ তম জন্মদিন আজ ২৬ এপ্রিল

    বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৬৮ তম জন্মদিন আজ ২৬ এপ্রিল

    ঢাকা : শুধু ভাষা আন্দোলনের অগ্নিগর্ভ থেকে নয়, অল-ইন্ডিয়া ছাত্র ফেডারেশন, পূর্ব পাকিস্তান যুব লীগ, খাপড়াওয়ার্ড ও ভাষাসংগ্রামের অগ্নিগর্ভ থেকেই পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের জন্ম। অর্থাৎ আজকের বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। আজ ছাত্র ইউনিয়নের ৬৮তম জন্মদিন।

    ‘বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন’ একটি স্বাধীন ছাত্র গণসংগঠনের নাম। ছাত্র ইউনিয়ন ছাত্রদের এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা ছাত্রস্বার্থ রক্ষা ও ছাত্রদের অধিকার আদায়কে অগ্রাধিকার দেয়। সকল শিক্ষার্থীর জন্য বৈষম্যহীন বিজ্ঞানভিত্তিক গণমুখী ও একই ধারার শিক্ষানীতি বাস-বায়নের জন্যে সে লড়ছে অবিরাম। ছাত্র ইউনিয়ন মনে করে যে শিক্ষা জীবনের সমস্যা সমাধান ও শিক্ষার্থীর স্বার্থ-অধিকার সুপ্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন সমাজ থেকে শোষণ-বৈষম্যের অবসান ঘটানো এবং তা নিশ্চিত করার জন্য সমাজতন্ত্রই সর্বোৎকৃষ্ট অর্থনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থা।

    ছাত্র ইউনিয়ন কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন বা সহযোগী সংগঠন নয়। ছাত্র ইউনিয়ন ব্যতীত অধিকাংশ ছাত্র সংগঠন কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন বা সহযোগী সংগঠন। সহযোগী সংগঠনের চরিত্রও এখন অঙ্গ সংগঠনের মতো। এরা সকলেই এদের নিজ নিজ রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ও নেতানেত্রীদের নির্দেশের গণ্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। এরা ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে ভাবনাকে কখনোই প্রাধান্য দেয় না। উল্টো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এরা সন্ত্রাস, লুটপাট, ভর্তি বাণিজ্য, টেণ্ডারবাজী, দখলদারিত্ব, খুন, ধর্ষণসহ নানাবিদ অপকর্ম করে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করে। এরা বিপুল অর্থ ব্যয় করে তথাকথিত ‘ক্যাডার বাহিনী’ লালন করে আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বড় বড় মিছিল বের করে ওমুক নেতা ওমুক নেত্রী জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ বলে শ্লোগান দেয় এবং হাতে তালি দেয়।

    ৫২’র মহান ভাষা আন্দোলনের সঠিক নেতৃত্ব দেয়ার মতো কোন ছাত্র সংগঠন সেসময় দেশে ছিল না। মুসলিম ছাত্রলীগ নামের যে সংগঠনটি তখন ছিল, সেটা ছিল নামে ও প্রবনতায় সাম্প্রদায়িক এবং বহুলাংশে আপোসকামী। তারা ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিল। ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব তাই স্বাভাবিক ভাবেই চলে এসেছিল সচেতন ও প্রগতিবাদী ছাত্রদের হাতে। এই আন্দোলন শুধু ছাত্র সমাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, দেশের আপামর জনতার মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। সালাম, বরকত, রফিক, শফিক ও জব্বারের তাঁজা রক্তের বিনিময়ে আমরা পে্যেছিলাম আমাদের প্রাণপ্রিয় বর্ণমালার মর্যাদা ও রক্তঝড়া ২১ ফেব্রুয়ারী ‘শহীদ দিবস’।

    ভাষা সংগ্রামের সফল উত্তরণের পরে ভাষা সৈনিকরা উপলব্ধি করেছিলেন, রক্তেগড়া ঐতিহাসিক এই সংগ্রামকে যথাযোগ্য পরিণতিতে এগিয়ে নিতে হলে প্রয়োজন অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী প্রগতিবাদী রাজনৈতিক চৈতন্যে উদ্বুদ্ধ একটি গণ ছাত্র সংগঠন। তাই ভাষা সংগ্রামের সামনের কাতারের প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনায় উজ্জীবিত প্রধান ছাত্র নেতৃবৃন্দ, যারা অনেকেই ছিলেন দেশভাগ পূর্ব ছাত্র ফেডারেশনের উত্তরসূরী, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-জেন্ডার রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থিকে প্রগতিশীল কর্মসূচীর ভিত্তিতে একতাবদ্ধ করতে পারে এমন একটি ছাত্র সংগঠন গড়ে তোলার জন্য সিদ্ধান- গ্রহণ করেন।

    ১৯৫২ সালের ২৬ এপ্রিল ঐক্য, শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতি- এ চার মূলনীতিকে ভিত্তি করে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয়। জন্মলগ্নে এই প্রতিষ্ঠানের যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন কাজী আনোয়ারুল আজিম ও সৈয়দ আবদুস সাত্তার। এরপর ১৯৫২ সালের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত প্রথম সম্মেলনে মোহাম্মদ সুলতান সভাপতি এবং মোহাম্মদ ইলিয়াস সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এই সম্মেলনেই সংগঠনের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা শিক্ষা জীবনে একজন ছাত্রের মৌলিক কাজ হচ্ছে তার ছাত্রত্ব অর্থবহ ও পরিপূর্ণ করা। ছাত্রত্ব হলো- শিক্ষার মাধ্যমে নিজেকে একজন প্রকৃত মানুষ হিসেবে তৈরী করা। যেন মানুষটি তার সমগ্র জীবনে সৎ, দেশপ্রেমিক, মানবিক গুনাবলীর অধিকারী, প্রগতিশীল, আদর্শবান, যুক্তিনিষ্ঠ ও বিজ্ঞানমনস্কতার পরিচয় বহন করার সক্ষমতা অর্জন করে। কোনো সংকীর্ণতা, সীমাবদ্ধতা যেন তাকে স্পর্শ করতে না পারে। সময়ের কাজ যেন সময়ে করতে শেখে। বুঝে শুনে কাজ করার সক্ষমতা অর্জন করে। যুক্তি ও বিজ্ঞানমনস্কতার নিরিখে পথ চলতে সক্ষম হয়।

    ছাত্র জীবনে একজন ছাত্রের মৌলিক কাজ হলো শিক্ষা অর্জন করা। শিক্ষা ও জ্ঞানের মাধ্যমে সমাজ, মানুষ, পৃথিবী, রাজনীতি, বিজ্ঞান, দর্শন, অর্থনীতি সংস্কৃতিসহ নানা বিষয়ে সম্যক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করা। শুধু জ্ঞান অর্জন করলেই হবে না, প্রয়োগের মাধ্যমে এ অর্জিত জ্ঞানের সাথে সমাজ, দেশ, দেশবাসী ও বিশ্ব সভ্যতা-বিশ্ব মানবতার যোগসূত্র তৈরী করতে হবে।

    একজন ছাত্রকে অবশ্যই অন্যান্য ছাত্রদের সাথে যুক্ত হয়েই তার প্রকৃত শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ প্রতিষ্ঠা ও অধিকার আদায় করতে হবে। এজন্য সকলের মধ্যে সচেতনতা এবং একতা গড়ে তোলা অপরিহার্য। কিন’ সেই সাথে নিজেকে উপযুক্তভাবে জ্ঞানসমৃদ্ধ ও সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। অন্যকে যুক্তিবান ও বিজ্ঞানমনস্ক করতে হলে প্রথমে নিজেকে যুক্তিবান ও বিজ্ঞানমনস্ক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সমাজটাকে পরিবর্তন করতে চাইলে নিজেকেও পরিবর্তন করতে হবে। বিপ্লব করতে চাইলে নিজেকেও বিপ্লবী হিসেবে তৈরী করতে হবে। আমি বা আমরা যা-ই করতে চাই না কেন তার জন্য মানুষের কাছে যেতে হবে। তাদেরকে বুঝাতে হবে এবং তাদেও কাছ থেকে শিখতেও হবে। কিন’ নিজে না বুঝলে অন্যকে সে কি বুঝাবে।

    ছাত্র ইউনিয়ন করার ক্ষেত্রে এই কাজগুলো যথার্থভাবে মেনে চলতে হয়। এই ধারায় উদ্বুদ্ধ একজন ছাত্রই কেবল ছাত্র ইউনিয়ন করার যোগ্যতা রাখে। ছাত্র ইউনিয়ন নিছক খাতায় নাম লেখানো মার্কার সংগঠন নয়। এই সংগঠন করতে হলে প্রথমত তাকে তার ছাত্রত্ব রক্ষা করতে হয়। তারপর সংগঠন সম্পর্কে বুঝতে হয়, জানতে হয়। ক্রমাগত সচেতনতা বাড়াতে হয়। শুধু তত্ত্ব চর্চা নয়, বাস-ব প্রয়োগ, সত্যিকার আন্দোলন সংগ্রাম, ছাত্র সমাজ ও জনগণের মাঝে প্রত্যক্ষ কাজ ইত্যাদির মাধ্যমে উন্নত জীবন দর্শন ও সামাজিক কর্মযজ্ঞের নিবেদিত প্রাণ কর্মী হয়ে ওঠার নিরন-ও প্রয়াস চালাতে হয়। প্রচলিত শিক্ষা কাঠামোর সীমাবদ্ধ জ্ঞান অর্জন করলেই যেমন জ্ঞান অর্জন করা যায় না তেমনি শুধু মাত্র ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দিলে বা নাম লেখালেই প্রকৃত অর্থে ছাত্র ইউনিয়ন করা হয়না।

    বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ক্ষমতার অপব্যবহারের রাজনীতি অথবা কোন রাজনৈতিক দল বা তাদের উপদলের লেজুড়বৃত্তি করে না। কিন্তু বাস্তব জীবনের কঠোর অভিজ্ঞতায় ছাত্রসমাজ দেখতে পায় যে, তারা যে গণতান্ত্রিক, অসামপ্রদায়িক, প্রগতিশীল, অবারিত ও সমৃদ্ধশালী শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষা জীবন চায়, তার পথে পদে পদে অন-রায় সৃষ্টি করে রাখছে দেশের প্রচলিত সাম্রাজ্যবাদ নির্ভর লুটপাটতন্ত্রের অর্থনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থা। আর সেই প্রতিক্রিয়াশীল আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থাকে লালন-পালন করে চলেছে দেশের বর্তমান শাসক-শোষক শ্রেণী।

    সাম্প্রদায়িকতা, স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা, মুক্তবাজারের নামে লুটপাটতন্ত্র, বিশ্বায়নের নামে সাম্রাজ্যবাদী শোষণ-আগ্রাসন ইত্যাদির ফলে ছাত্রসমাজের প্রত্যাশা ও সুন্দর স্বপ্নগুলো প্রতিনিয়ত নানাভাবে বিনষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা এই শিক্ষাই দিচ্ছে যে, প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার আমূল রূপান-র ও বর্তমান শাসক-শোষক শ্রেণীকে পরাভূত না করতে পারলে ছাত্র সমাজ তার বহু আকাঙ্খিত শিক্ষা জীবন নিশ্চিত করতে পারবে না।

    অন্যদিকে, দেশবাসীর অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ছাত্র সমাজ জাতীয় সমস্যাবলী থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন রাখতে পারে না। ছাত্র সমাজ সমগ্র জনগণেরই একটি সচেতন অংশ; তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক অধিকার, অসামপ্রদায়িকতা, সমাজ ও অর্থনীতির প্রগতিশীল বিকাশ, সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বায়নের আগ্রাসী আধিপত্য থেকে মুক্তি, বৈষম্য ও শোষণের অবসান, প্রকৃতি ও পরিবেশের বিপর্যয় রোধ, বিশ্ব শান্তি- জাতীয় মুক্তির স্বপক্ষে আন্তর্জাতিক সংহতি- এসব কোনো বিষয়ই ছাত্র সমাজের বিবেচনা বর্হিভূত বিষয় হতে পারে না।

    অনেকের মধ্যে এরকম ভুল ধারণা হতে পারে যে ছাত্ররা শুধু লেখাপড়া করবে। দেশ দুনিয়া নিয়ে ভাবার কোন প্রয়োজন তাদেও নেই, কেননা এগুলো তাদেও শিক্ষা জীবনের সাথে জড়িত নয়। কিন’ এরকম ধারণা সঠিক নয়। একটা ছোট উদাহরণ দেয়া যাক। ধরা যাক, পাটকল বন্ধ হয়ে গেছে। তাই এর প্রতিবাদ করা এবং প্রতিবাদে প্রয়োজনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট করা ছাত্র হিসেবে অসি-ত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই যুক্তিসংগত হয়ে ওঠে। যেসব ছাত্রের পরিবার পাটকলের উপর নির্ভরশীল তাদের শিক্ষাজীবন তখন এর ফলে হুমকীর মধ্যে পড়ে। এভাবেই অর্থনীতি-রাজনীতিসহ জাতীয় আন-র্জাতিক ঘটনাবলী অবিচ্ছেদ্য ভাবে ছাত্রসমাজের সামগ্রীক স্বার্থ ও মননে জায়গা করে নেয়।

    এজন্যই আপনাকে আমাকে ও সমগ্র ছাত্র সমাজকে জাতীয়-আন-র্জাতিক নানা মৌলিক ও ছোট-বড় বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়াটা স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। এটা ‘দলবাজি’ বা রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি নয়। ছাত্র সমাজের কোন ধরণের রাজনীতি করা উচিৎ সেটাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা অনেক রকম রাজনীতি দেখতে পাই। লুটপাটের রাজনীতি, খুন-ধর্ষণের রাজনীতি, অস্ত্রবাজী-টেণ্ডারবাজী-চাঁদাবাজীর রাজনীতি, নেতা-নেত্রীর নামে স্লোগানের রাজনীতি, ধর্মান্ধ-মৌলবাদী রাজনীতি ইত্যাদি। ছাত্র ইউনিয়ন রাজনীতির নামে চলতি হাওয়ার এই অপরাজনীতির সাথে মোটেই সমপৃক্ত নয়। এসবকে সে ঘৃণা করে, প্রত্যাখ্যান করে।

    আরেক ধরণের রাজনীতি হলো আদর্শ, দেশপ্রেম, ত্যাগের রাজনীতি। ছাত্র ইউনিয়ন সেই রাজনীতির সাথে যুক্ত- যেখানে বৃহত্তর ছাত্র সমাজের মৌলিক স্বার্থের পাশাপাশি এদেশের গরীব দুঃখী-মেহনতী মানুষের সার্বিক অধিকার ও মুক্তির পথনির্দেশ রয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় ছাত্র ইউনিয়ন যেমন অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানভিত্তিক, বৈষম্যহীন, গণমূখী ও একই ধারার শিক্ষানীতির বাস-বায়ন চায় তেমনি জাতীয় রাজনীতি ও অর্থনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থায় শোষণ-বৈষম্যহীন সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে। ইতিহাসের অভিজ্ঞতা হল ঐক্যবদ্ধ সচেতন লড়াই-সংগ্রাম ছাড়া কোনো অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। এ লড়াই সমগ্র ছাত্র সমাজের, আপনার আমার সকলের। সুন্দর সমাজের জন্য, মানুষ-মানবতা-মনুষ্যত্বের জন্য ও সাম্যের পৃথিবী গড়ার জন্য। এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব-কর্তব্য এড়ানো কোনো সচেতন-যুক্তিবাদী ছাত্র-ছাত্রীর, কোন মানুষের কাজ নয়।  (নিউজজি২৪.কম)

  • বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা রিপন রায়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ায় জাসদ সভাপতি ও সেক্রেটারীর বিবৃতি

    বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা রিপন রায়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ায় জাসদ সভাপতি ও সেক্রেটারীর বিবৃতি

    ছাত্রলীগ নেতা, কারমাইকেল কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষে মেধাবী ছাত্র রিপন রায়ের(২৪) অকাল মৃত্যুতে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপির শোকঃ

    বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রংপুর সরকারি কারমাইকেল কলেজ কমিটির সদস্য রিপন রায় আজ ২৬এপ্রিল ২০২০ রবিবার সকাল ৬টা ৩০মিনিটের সময় ৬ঃ৩০ মিনিটে রংপুর-সৈয়দপুর সড়কের পাগলা পীরে মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় রংপুরে যাওয়ার পথে ট্রাকে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছেন। বউকে নিয়ে রিপন এ সময় অন্যান্য যাত্রীদের সাথে অটোতে ছিলেন। রিপনের বউয়ের অবস্থাও আশংকাজনক।
    রিপন রায় মাস্টার্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শেষ বর্ষের মেধাবী ছাত্র ছিলেন।
    নীলফামারি জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার গারাগ্রাম মাগুড়া গ্রামে রিপন রায়ের বাড়ী । থাকতেন রংপুর শহরে।
    শোক

    জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ ২৬এপ্রিল ২০২০ রবিবার এক বিবৃতিতে , বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রংপুর সরকারী কারমাইকেল কলেজে কমিটির সদস্য রিপন রায়ের মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক ও অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। নেতৃদ্বয়, তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-স্বজন-সহযোদ্ধাদের আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন। তারা বলেন, আমরা একজন সম্ভবনাময় ভবিষ্যৎ ছাত্রনেতা ও মেধাবী রাজনৈতিক কর্মী হারালাম।

  • কিটের মাঝে কীট!

    জাহিদুল আহসান পিন্টু

    Image may contain: Zayadul Ahsan Pintu

    অবস্থাদৃষ্টে মনে হইতেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত করোনা ভাইরাস শনাক্তের কিট আবিস্কার লইয়া দুইপক্ষই পয়েন্ট অব নো রিটার্নে চলিয়া যাইতেছে। যাহা কখনোই কাম্য নহে। প্রথম যখন জানিতে পারিলাম দেশেরই একজন বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল ওই কিট আবিস্কার করিয়াছেন, তখন আনন্দে মন ভরিয়া উঠিয়াছিল। এখন বিষাদে মন জ্বলিতেছে।

    প্রধানমন্ত্রীও ওই বিজ্ঞানীরে ডাকিয়া কথা বলিতে চাহিয়াছেন। একটি তারিখও দেওয়া হইয়াছিল। কিন্তু ওই তারিখে প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ততা বাড়িয়া যাওয়ায় সাক্ষাতটি আর ঘটিতে পারে নাই। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হইতে ড. বিজনকে জানানো হইয়াছে, খুব শিগগিরই দুজনের সাক্ষাত ঘটিবে। করোনা পরীক্ষার যে দ্রুত পদ্ধতি উদ্ভাবন করা হইযাছে তাহা বাস্তবায়নের লাগিয়া রিএজেন্ট আমদানির অনুমোদনের ব্যবস্থাও প্রধানমন্ত্রী নিজ উদ্যোগেই করিয়াছেন। কারণ তিনি জানেন ঘাপলা হইতেই পারে।

    ড. বিজনের এমন সাফল্য ইহাই প্রথম নহে। দুই দশক আগে ছাগলের মড়ক ঠেকাইতে পিপিআর ভ্যাকসিন আবিষ্কার করিয়াছিলেন। ছাগলের মড়ক ঠেকাইয়া তিনি যে দেশে ছাগলের সংখ্যা বাড়াইয়া দিয়াছেন তাহা চারিপাশ দেখিয়াই বুঝিতে পারিতেছি। ওই বিজ্ঞানী সিঙ্গাপুরে সার্স ভাইরাসটিরও দ্রুত নির্ণয়ের পদ্ধতি উদ্ভাবন করিয়া ইতিহাসে নাম লেখাইয়াছেন। সার্স ভাইরাস শনাক্ত করার কিটের পেটেন্টে রহিয়াছে এই বিজ্ঞানীর নাম।

    প্রধানমন্ত্রী এই দেশপ্রেমিক বিজ্ঞানীকে আমন্ত্রণ জানাইয়া বিব্রতই করিয়াছেন বলিয়া মনে হইয়াছে। তিনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করিয়া থাকেন সেই প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা আরেক দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী নাখোশ হইয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন, একটা জিনিস পাইলেই আমরা সবাই মিলিয়া অন্যদিকে লইয়া যাই। এখানে ব্যক্তিপূজা তো মুখ্য নহে। প্রধানমন্ত্রী তো কেবল ড. বিজন কুমার শীলকে ডাকিতে পারেন না। পুরো একটা টিম কাজটি সম্পন্ন করিয়াছে। ডাকিলে তো সবাইকেই ডাকিতে হইবে।
    এক মাস পার হইয়া গেল বিজ্ঞানী বাবুর আর ডাক আসিল না।

    ২.
    দুইদিন আগে যখন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র বলিল, তাহারা অনুষ্ঠানের আয়োজন করিয়া সরকারের কাছে তাদের আবিস্কৃত কিট পরীক্ষার জন্য তুলিয়া দিবে তখনই খটকা লাগিল। রিপোর্টারদের বলিলাম, খোঁজ নিয়া দেখতো সরকারি লোকজন এই বদান্যতা দেখাইবে কিনা? তাহারা খোঁজ আনিয়া দিল সরকারের পক্ষ থেকে কারণ উল্লেখপূর্বক চিঠি দিয়া আগেই জানাইয়া দেওয়া হইয়াছে ওই অনুষ্ঠানে তাহাদের পক্ষে যাওয়া সম্ভন নহে। ওই অনুষ্ঠানে জাফরুল্লাহ সাহেব বলিলেন কী কারণে সরকারি লোকজন আসিল না তাহা তার বোধগম্য হইতেছে না।

    আজ যখন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের লোকজন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে গেল, তখন প্রশাসনের অধিকর্তা আমাদের জানাইলেন, কিট বাজারে আনিতে হইলে প্রটোকল মানিয়া কিভাবে কি করতে হয় সেই প্রসেসটা জানিতে তাহারা আসিয়াছিলেন। আমার সব কিছু তাহাদের বুঝাইয়া দিয়াছি। তাহারা বুঝিয়াছেন ইহাতেই আমার খুশী।
    এরপর বিকালেই সংবাদ সম্মেলন করিয়া জাফরুল্লাহ সাহেব অভিযোগ করিলেন, প্রশাসন ঘুষ চায়। ভয়ঙ্কর অভিযোগ। প্রশাসন ঘুষে সন্তুষ্ট হইয়া থাকে ইহা সত্যি। করোনাযুগে চিকিৎসা ব্যবস্থা যে ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছে ইহাতো দিব্য চোখেই দেখিতেছি। তাই বলিয়া নিজেদের বিজ্ঞানীর আবিস্কার করা কিট লইয়া এমন রঙ্গ তামাসাতো মানিয়া লওয়া যায় না। আবারো রিপোর্টারকে বলিলাম খোঁজ লাগাও ঘটিযাছে কী? অধিদপ্তরের অধিকর্তার সহিত যোগাযোগ স্থাপন কর। রিপোর্টার সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করিল। তাহার কথা শুনিয়া মনে হইলো কোথাও একটা গন্ডগোল পাকিয়াছে। তিনি বলিলেন গনস্বাস্থ্যের লোকজন আসিয়া কিট পরীক্ষার জন্য তিনটি প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করিযাছে। যাহা আমরা প্রথম থেকেই বলিয়া আসিতেছি। তাহার রাজি হইল। এজন্য আমাদের কাছ থেকে চিঠি চাহিল। আমারও চিঠি দিয়া দিলাম। তাহার কোন কিট নিয়া আসে নাই। এখন বলিতেছে আমরা কিট গ্রহণ করি নাই। এরকম উল্টাপাল্টা বলিলে আমি কী করিবো। রাগিয়া গিয়া তিনি বলিয়াই দিলেন এমন করিতে থাকিলেতো তাহাদের আর এই অফিসে ঢুকিতেই দিবো না। বড়ই রাগের কথা। তিনি যদি তখন জানিতেন জাফরুল্লাহ সাহেব তাহার সম্পর্কে আরো কটু কথা বলিয়াছেন তাহলে না জানি কী মূর্তি ধারণ করিতেন তাহা অনুমানও করিতে পারিতেছি না।

    ৩.
    আমরা চিকিৎসা বিভাগের লোক নই। বিজ্ঞানীও নই। আমরা পিসিআর টেস্টও বুঝি না। এন্টিবডিও বুঝি না। আমরা কিটও বুঝি না। আমরা বুঝি- মরিতে চাহি না আমি সুন্দর এই ভুবনে। আমরা বুঝি, আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম।
    আর এখন দেখিতেছি কিটের মাঝে কীট। আমরা কি হইতেছি ফিট।

    ( জাহিদুল ইসলাম পিন্টুর ফেসবুক ওয়াল থেকে)

  • রোজায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ রাষ্ট্রপতির

    রোজায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ রাষ্ট্রপতির

    পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষ্যে দেশবাসীসহ সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ। শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) এক বাণীর মাধ্যমে এই শুভেচ্ছা জানান রাষ্ট্রপতি। বাণীতে রমজান মাসের ফযীলত উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সংযম, আত্মশুদ্ধি ও ক্ষমালাভের জন্য যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ এ মাসটি পালন করে থাকে।

    তবে করোনা প্রাদুর্ভাবের কারনে এবার ভিন্ন প্রেক্ষাপটে রমজান পালন করবে মুসলিম উম্মাহ। করোণা সংক্রমণ প্রতিরোধে নিজ নিজ ঘরে বসে ইবাদত বন্দেগী করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শও দেন আব্দুল হামিদ।

  • গণস্বাস্থ্যের কিটের ফলাফল ‘ওয়ান্ডারফুল’

    গণস্বাস্থ্যের কিটের ফলাফল ‘ওয়ান্ডারফুল’

    করোনা ভাইরাস শনাক্তে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিটের ফলাফল ‘ওয়ান্ডারফুল’ বলে মন্তব্য করেছেন এর টাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বলেন, আক্রান্ত রোগীর রক্ত দিয়ে কিট পরীক্ষা করা হয়েছে। ফলাফল ওয়ান্ডারফুল। সবকিছু ঠিক থাকলে শনিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে সরকারকে কিট হস্তান্তর করা হবে আনুষ্ঠানিকভাবে। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) গণস্বাস্থ্যকে করোনা রোগীর রক্ত সরবরাহ করা হয়। আমাদের উদ্ভাবিত কিট পরীক্ষায়ও যার ফলাফল পজেটিভ পাওয়া যায়।

    এর আগে মঙ্গলবার জাফরুল্লাহ চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী সহযোগিতা করলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টরা সহযোগিতা করছে না। প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরে গণস্বাস্থ্যের প্রতিনিধি বসে থাকলেও তাদের করোনা আক্রান্ত রোগীর রক্তের নমুনা দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, পরে মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে অবহিত করা হলে রক্ত সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া হয়।

  • আজ ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ আনোয়ার হোসেন শহীদ দিবস

    এদেশে ‘প্রথম’ জেল হত্যার ঘটনা ঘটেছিল ১৯৫০ সালের ২৪শে এপ্রিল রাজশাহী জেলের ‘খাপড়া ওয়ার্ডে’। সেদিন ৭ জন গুলি করে হত্যা ও ৩২ জনেরও বেশি কমরেডকে গুরুতর ভাবে আহত করা হয়েছিল। তারা হলেন কুষ্টিয়ার কমরেড হানিফ শেখ,কমরেড দেলোয়ার হোসেন,দিনাজপুরের কমরেড বিজন সেন,কমরেড কম্পরাম সিংহ,রংপুরের কমরেড সুধীন ধর, ময়মনসিংএর সুখেন ভট্রাচার্য, খুলনার কমরেড আনোয়ার হোসেন। মারাত্নকভাবে আহত হয়েছিলেন সারা ভারত বর্ষের মধ্যে অর্থনীতিতে প্রথম শ্রেনীতে প্রথম হওয়া বাংলা মায়ের কৃতি সন্তান কমরেড আঃ হক সহ ৩২ জন।

    আনোয়ার হোসেন হচ্ছেন সাতক্ষীরার বুধহাটার গরীব বিধবা মায়ের সন্তান। খুলনায় জেলা স্কুলে পড়াকালে তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হন। উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় ভাষা আন্দোলনে থাকার দায়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। সেই বিবেচনায় ভাষা আন্দোলনের কারণে প্রথম শহীদ খাপড়া ওয়ার্ডে মৃত্যুবরণকারী আনোয়ার হোসেন।

    প্রথম ভাষা শহীদ আনোয়ার হোসেন আজও ভাষা শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি

  • শিক্ষকদের জন্য বিশেষ ত্রাণসহায়তার দাবি জাসদের

    শিক্ষকদের জন্য বিশেষ ত্রাণসহায়তার দাবি জাসদের

    নন-এমপিওভুক্ত স্কুল ও ননরেজিস্টার্ড স্কুল-কিন্ডারগার্টেন-মাদরাসার শিক্ষকদের বিশেষ ত্রাণ সহায়তার দাবি জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।

    বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।

    বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে সারাদেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় সেই সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার হাজার হাজার নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী এবং ননরেজিস্টার্ড স্কুল-কিন্ডারগার্টেন-মাদ্রাসার হাজার হাজার শিক্ষক-কর্মচারী যে যৎসামান্য বেতন পেতো তা না পেয়ে সম্পূর্ণ আয়-উপার্জনহীন অবস্থায় পতিত হয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। চক্ষুলজ্জায় তারা ত্রাণের জন্য লাইনেও দাঁড়াতে পারছেন না।

    তাই নেতৃদ্বয় শিক্ষক-কর্মচারীদের বিশেষ ত্রাণ সহায়তার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।

  • চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগ হতে জাসদকে ৫হাজার মাস্ক প্রদান

    চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগ হতে জাসদকে ৫হাজার মাস্ক প্রদান


    চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের পক্ষ থেকে বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদকে পাঁচ হাজার মাস্ক প্রদান করা হয়েছে। জাসদের যুগ্ম সাধারণ আব্দুল্লাহিল কাইয়ূম ও দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন আজ বৃহস্পতিবার ২৩ এপ্রিল ২০২০ সকাল ১০টায় বারিধারাস্থ চীনা দূতাবাসের মি. ফেংসহ উপস্থিত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে মাস্কের প্যাকেটগুলো গ্রহন করেন।
    জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি, চীনের সরকার, চীনের জনগণের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, চীন নিজ দেশের করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর পাশাপাশি করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বাংলাদেশসহ বিশ্বের জনগণ ও দেশগুলির পাশে দাড়িয়ে সমানতালে বৈশ্বয়িক দায়িত্বও পালন করছে। তারা বলেন, চীন ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং এই বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভাতৃত্বপূর্ণ সর্ম্পক চিরদিন অটুট থাকবে। জাসদ এই মাস্কগুলি করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সামনের কাতারের যোদ্ধা ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে পৌছে দিবে।

  • উপকূলে ৪৯% নি¤œবিত্ত মানুষের করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে ধারণা নেই

    উপকূলে ৪৯% নি¤œবিত্ত মানুষের করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে ধারণা নেই

    কোস্ট ট্রাস্টের করোনা ভাইরাস সচেতনতা জরিপ, এপ্রিল ২০২০

    অনলাইন ডস্কে : ২৩ এপ্রিল ২০২০: উপকূলে দীর্ঘদিন কর্মরত বেসরকারি সংস্থা কোস্ট ট্রাস্ট করোনা ভাইরাস বিষয়ে উপকূলের মানুষের মধ্যে পরিচালিত একটি জরিপ পরিচালনা করে। এতে দেখা যায়, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে একেবারেই ধারণা নেই ৪৯% নি¤œবিত্ত মানুষের। ৭৪% উত্তরদাতা আইইডিসিআর এবং এর সেবা সম্পর্কে জানেন না। কোস্ট সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে।


    কক্সবাজার ও ভোলা জেলায় দৈবচয়নের মাধ্যমে বাছাইকৃত নি¤œআয়ের খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে এই জরিপ পরিচালনা করে কোস্ট ট্রাস্টের পরিবীক্ষণ ও গবেষণা বিভাগ।
    করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে উপকূলের নি¤œ আয়ের মানুষের প্রস্তুতি কেমন, কতটা সঠিক তথ্য তারা জানেন এবং সর্বোপরি কতটুকু তারা মানছেন বা মানতে পারছেন তা জানাই ছিল এই গবেষণার উদ্দেশ্য। কোস্ট ট্রাস্টের পরিবীক্ষণ ও গবেষণা বিভাগ থেকে এ কথা বলা হয়।
    উত্তরদাতাদের মধ্যে নারী ছিলেন ৪৭% এবং পুরুষ ৫৩%। উত্তরদাতা নারীদের ৮০% গৃহিনী এবং বাকিরা শিক্ষার্থী বা পড়াশোনার বাইরে থাকা কিশোরী ও বৃদ্ধা। এ ছাড়াও ১০% কৃষক, শ্রমজীবী মানুষ ছিলেন ১৮% ,ক্ষুদ্র বাবসায়ী ১৯% এবং ১৩% জেলে। জরিপের জন্য উপকূলের দুইটি জেলা হিসেবে রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রভাবিত কক্সবাজার এবং দ্বীপ জেলা ভোলা বাছাই করা হয়। এর বাইরে বিচ্ছিন্ন চর হিসেবে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া এবং ভোলার চর মোতাহার বাছাই করা হয়।


    করোনা ভাইরাস যেহেতু স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় এ কারণে সরকারি বেসরকারি সকল প্রচারণায় নিয়মিত হাত ধোয়া এবং তার নিয়মকানুন সম্পর্কে ব্যাপক সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তারপরও এই জরিপে দেখা গেছে, ৪৯% উত্তরদাতা হাত ধোয়ার মৌলিক বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জানেন না। ৪৩% উত্তরদাতা বলেছেন, তারা হাত ধোয়ার বিষয়টি মেনে চলতে পারছেন না।
    করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কিভাবে ছড়ায় এমন প্রশ্নের উত্তরে দেখা যায় ২৬% মানুষের মাঝে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। ৫৩% উত্তরদাতা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক তথ্য ও লক্ষণ সম্পর্কে অবগত নন। হাঁচি বা কাশি দেবার শিষ্টাচার সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরে দেখা যায়, ৬৪% উত্তরদাতা টিস্যু বা রুমাল অথবা কনুইয়ের ভাঁজের কথা উল্লেখ করেন। বাকি ৩৬% উত্তরদাতা এ সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জানেন না।


    প্রায় শতভাগ গৃহিনী উত্তরদাতা জানান, তারা করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত সচেতনতা বিষয়ক তথ্য সরাসরি পাননি। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে যারা বাইরে যান, তাদের কাছ থেকে এসব তথ্য জেনেছেন।
    জরিপে দেখা যায়, উপকূলের নি¤œ আয়ের মানুষের পক্ষে ঘরে থাকা অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব নয়। ৩৭% উত্তরদাতা বলেছেন, তারা বাজার করার জন্য এক সপ্তাহ বা তার বেশি সময় পর পর বাইরে যান। বাকি ৬৩% একদিন বা দুই দিন পর পর বাজারে যান। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্পর্কে ধারণা নেই ২৪% উত্তরদাতার।
    ৬৬% উত্তরদাতা বলেছেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে তাদের এলাকার মসজিদে নিয়মিত মুসল্লীর সংখ্যা কমেছে। ২৮% উত্তরদাতা বলেছেন, মসজিদে সরকারের বেঁধে দেয়া নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে। ৫৬% উত্তরদাতা হোম কোয়ারেন্টিন সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জানেন না বা ভুল জানেন। মাস্ক কেন ব্যবহার করতে হয় এ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই ১৩%।
    জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে কোস্ট ট্রাস্টের পরিবীক্ষণ ও গবেষণা বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বাজারে সহজলভ্য মাস্কের দাম ৩০-৪০ টাকা, যা চরাঞ্চলের নি¤œ আয়ের মানুষের ক্রয়সাধ্যের অতীত। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রতিদিনই উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে হচ্ছে। বরং ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থা বন্ধ থাকায় তারা উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ পাচ্ছেন না।
    জরিপের ভিত্তিতে কোস্ট ট্রাস্ট থেকে ১১টি সুপারিশ করা হয়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ হচ্ছে, উপকূলীয় জেলাগুলোতে করোনা পরীক্ষার সেবা বাড়াতে হবে। সরকারের পাশাপাশি সকল বেসরকারি সংস্থাকে প্রচারণার কাজে যুক্ত করতে হবে। জনমনে সরকারি তথ্য সম্পর্কে আস্থা বাড়াতে হবে। যথাযথ


    স্বাস্থবিধি মেনে ক্ষুদ্র ও কৃষি উদ্যোক্তাদের উৎপাদন চালিয়ে যাবার জন্য তাদের ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের পাশাপাশি তাদের পণ্য পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, এটি সারা দেশের ভোক্তাদের জন্য জরুরি। প্রচারণার কাজে ধর্মীয় নেতা ও প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহন বাড়াতে হবে।
    এই জরিপ সম্পর্কে সংস্থার নির্বাহি পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, উপকূলের দরিদ্র মানুষ কিভাবে সম্পূর্ণ অজানা এই বিপর্যয় মোকাবেলা করছে তা জানার জন্যই কোস্ট এই গবেষণা করেছে। তিনি বলেন, উপকূলের দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই এই সংস্থা ১৯৯৮ সাল থেকে কাজ করে আসছে।

  • ইনু-শিরীনের শোক: মোহম্মদপুর প্রবীন জাসদ নেতা আনোয়ার হোসেন খান মারা গেছেন

    মোহম্মদপুর থানার জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি প্রবীন জাসদ নেতা আনোয়ার হোসেন খান আজ ২০ এপ্রিল ২০২০ সোমবার সন্ধ্যায় নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেছেন। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে,তিন মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। মরহুম আনোয়ার হোসেন খান পুর্ব-পাকিস্তান ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। জাসদের প্রতিষ্ঠালগ্নেই জাসদে যুক্ত হন। তিনি মোহাম্মদপুর থানার প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ছিলেন। আজ বাদ এশা মোহাম্মদপুর নুরজাহান রোড মসজিদে জানাজা শেষে এবং তাজমহল রোডে কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
    জাসদের শোক
    জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি এক বিবৃতিতে প্রবীন জাসদ নেতা আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতিআন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।

  • তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্য প্রকৃত চালচোরদের পরিচয় আড়াল করেছে-জাসদ

    তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্য প্রকৃত চালচোরদের পরিচয় আড়াল করেছে-জাসদ


    জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ ১৮ এপ্রিল ২০২০ শনিবার এক বিবৃতিতে তথ্যমন্ত্রী জনাব হাসান মাহমুদের ‘ত্রাণের চাল চুরির সাথে জাসদ, জাতীয় পার্টি, বিএনপির চেয়ারম্যান-মেম্বাররা জড়িত’ এবং ‘ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভের পিছনে রাজনৈতিক ইন্ধন আছে’ বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করেছেন। তারা বলেন, তথ্যমন্ত্রীর এ বক্তব্য শুধু সত্যের অপলাপই নয়, অপ্রয়োজনীয়ও বটে। তারা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন সামনে থেকে করোনা সংকটের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করছেন তখন তাঁর মন্ত্রীসভার কোনো সদস্যেরই কাজ করা বাদ দিয়ে এমন কোনো অপ্রয়োজনীয় কথা বলা উচিৎ না। যাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাজ ও কথার সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ এবং যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টার বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ তৈরি করে। জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, কারা ত্রাণের চাল চুরি করেছে তা জনগনের সামনে প্রকাশিত। চালচুরির ঘটনা মুলধারার গণমাধ্যমের কড়া নজরদারির বাইরে না। গণমাধ্যম তা প্রকাশও করছে। মাঠপ্রশাসন, পুলিশসহ আইনশৃংখলা রক্ষা বাহিনী, গোয়েন্দাসংস্থা, দুদকসহ সরকারী, আধা সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ত্রাণ বিতরণ কাজের উপর কড়া নজরদারি রাখছে। তাই ত্রাণের চালচুরির ঘটনার সাথে যুক্ত কেউই রেহাই পায়নি, পাবেও না। এরকম পরিস্থিতিতে তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্য চালচোরদের পরিচয় আড়াল ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে চিহ্নিত চালচোরদের পক্ষে নির্লজ্জ সাফাইয়ে পরিনত হয়েছে।
    জাসদ নেতৃদ্বয় দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য ও মন্তব্য প্রদান না করার জন্য তথ্যমন্ত্রীসহ দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রতি আহবান জানান।

  • জাসদ’র গভীর শোক : করোনা’র বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রথম কাতারের বীর যোদ্ধা প্র. ডা. মঈন উদ্দিনের মৃত্যুতে

    সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি এক শোকবার্তায় করোনা’র বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রথম কাতারের বীর যোদ্ধা সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দিন এর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-স্বজন-সহকর্মীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। তারা প্র. ডা. মঈন উদ্দিনকে একজন মানবতাবাদী সাহসী চিকিৎসক ও করোনা’র বিরুদ্ধে যুদ্ধে একজন নিবেদিত বীর যোদ্ধা হিসাবে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারা ইতিপূর্বে নারায়ণগঞ্জে করোনার বিরুদ্ধে প্রথম কাতারের যোদ্ধা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী স্বাস্থ্যকর্মী সেলিম আকন্দ এর প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
    তারা করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে মৃত্যবরণকারী এই দুই বীর যোদ্ধার প্রতি জাতীয় সম্মান প্রদান করে তাদের পরিবারের সকল দায়িত্বগ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান। তারা একইসাথে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সামনের কাতারের যোদ্ধা ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত, প্রণোদনা, ঝুঁকিবীমা, এককালীন সম্মানী ঘোষণার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।

  • জাতীয় পরামর্শসভা ডাকতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জাসদের আহবান

    জাতীয় পরামর্শসভা ডাকতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জাসদের আহবান

    জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ ১৩ এপ্রিল ২০২০ সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছেন বৈশ্বিক মহামারী করোনা বাংলাদেশের জন্যও জাতীয় দুর্যোগের ঝুঁকি তৈরি করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী-জনপ্রশাসন-পুলিশ-সশস্ত্র বাহিনী-জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।

    জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, যে কোনো মহামারি বা জাতীয় দুর্যোগে সরকার ও প্রশাসনই সামনে থেকে মাঠে কাজ ও সামগ্রিক সমন্বয় সাধন করে। এটাই মহামারি বা জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা সার্বজনীন পথ। মহামারি বা দুর্যোগ মোকাবেলায় জনগনকে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের পাশে থাকতে হয়। মহামারি বা দুর্যোগকালে রাজনৈতিক দলগুলিকেও দলীয় রাজনীতির উর্ধে উঠে জনগণকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ করে সরকারের পাশে দাঁড়ায়। রাজনৈতিক দলগুলি দলীয় রাজনীতির উর্ধে উঠে সরকার ও প্রশাসনকে সহযোগিতা করলে সরকার ও প্রশাসনের পক্ষে মহামারি বা দুর্যোগ মোকাবেলা অনেক সহজ হয়। এই বিবেচনা থেকেই জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্য জোরদার করে ও জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে অবিলম্বে জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকবৃন্দ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবীদগণ, প্রশাসন পরিচালনা অভিজ্ঞ ব্যক্তিগণ, সম্পাদক পরিষদসহ শীর্ষ সাংবাদিকগণের পরামর্শ নেয়ার জন্য ব্যক্তিগত পর্যায়ে যোগাযোগ ও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পরামর্শ গ্রহণ করার জন্য জাতীয় পরামর্শসভা ডাকতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

  • জাসদের দাবি `খাদ্য সহায়তা প্রার্থীদের তালিকা প্রণয়ন ও বিতরণে সমন্বয়হীনতা-দূর্নীতি-স্বজনপ্রীতি-দলীয়করণ বন্ধ এবং সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও সুষ্ঠুভাবে বিতরণ, ওএমএস-এর চাল কালোবাজারে বিক্রি, ত্রাণের চাল চুরি ও আত্মসাৎকারীদের মোবাইল কোর্টে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি'

    জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ ৯ এপ্রিল শুক্রবার বিকালে এক বিবৃতিতে বলছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বার বার কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণের পরও করোনা সংকটকালে লকডাউন পরিস্থতিতে দেশের হঠাৎ কর্মহীন নিরুপায় অসহায় মানুষের জন্য সরকার যে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সেই কর্মসূচি বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে বহু জায়গাতেই প্রকৃত খাদ্য সহায়তা প্রার্থীদের তালিকা প্রণয়ন ও খাদ্য বিতরণে সমন্বয়হীনতা-দূর্নীতি-স্বজনপ্রীতি-দলাবাজী-দলীয়করণ এবং ওএমএস-এর চাল কালোবাজারে বিক্রি, ত্রাণের চাল আত্মসাৎ ও চুরি, মজুদদারির ঘটনার খবর আসছে। তারা এই দূর্নীতির ঘটনার তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে দল না দেখে মুখ না দেখে এদকল দূর্নীতিবাজ, চোর, আত্মসাৎকারী, কালোবাজারি, মজুদদারদের মোবাইল কোর্টে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।

    জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, সরকার করোনা পরিস্থিতিতে ৭৫ লক্ষ পরিবার অর্থাৎ পরিবার প্রতি ৪ জন করে মানুষ হিসাব করে ৩ কোটি মানুষকে খাদ্য সাহায্য দেয়ার কর্মসূচি নিয়েছে। ইতিমধ্যে ২৯ লাখ ৭৫ হাজার পরিবারকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এখনও ৪৫ লাখ ২৫ হাজার পরিবারের তালিকা তৈরিই হয়নি।

    তারা অভিযোগ করে বলেন, তালিকা প্রণয়ণে বহুক্ষেত্রেই সমন্বয়হীনতা-দূর্নীতি-স্বজনপ্রীতি-দলবাজী-দলীয়করণ করে যাদের খাদ্যত্রাণ দরকার নাই তাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাদের নাম তালিকায় আছে তারা খাদ্যত্রাণ পায়নি, যাদের নাম তালিকায় নাই তারা খাদ্যত্রান নিয়েছে, কেউ কেউ একাধিকবার খাদ্যত্রাণ নিয়েছে, কেউ কেউ একবারও খাদ্যত্রাণ পায়নি। স্বজনপ্রীতি ও দলবাজী এমন জঘন্য পর্যায়ে পৌঁছেছে খোদ আওয়ামী লীগের সদস্য কর্মী নিরুপায় অসহায় প্রকৃত খাদ্যত্রাণপ্রার্থীদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করে বহু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাদের ব্যক্তিগত লোক যাদের খাদ্যত্রাণ দরকারই নাই তাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।

    জাসদের নেতৃদ্বয়, খাদ্যত্রাণ প্রার্থীদের তালিকা প্রণয়ন ও বিতরণে যে সমন্বয়হীনতা হয়েছে তা অবিলম্বে দূর করে প্রকৃত খাদ্যত্রাণ প্রার্থীদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সরকার ও প্রশাসনকে কঠোর অবস্থাণ গ্রহণ করার আহবান জানান। তারা একই সাথে লকডাউন পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার ঘোষিত ৭৫ লাখ পরিবার অর্থাৎ ৩ কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তা প্রদানের কর্মসূচি সম্প্রসারিত করে আরও ৭৫ লাখ পরিবার অর্থাৎ আরও ৩ কোটি সর্বমোট দেড় কোটি পরিবার অর্থাৎ ৬ কোটি মানুষকে খাদ্যসহায়তা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। তারা বলেন, সুষ্ঠু ও প্রশ্নাতীত তালিকা প্রণয়নের জন্য গ্রামে বা শহরে ওয়ার্ডকে ইউনিট হিসাবে ধরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির সাথে, ইউএনও বা ডিসির একজন প্রতিনিধি, ১ জন মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক, একজন কলেজ শিক্ষক, ঐ ওয়ার্ডে ববসবাসকারী ১ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারী বা কর্মকর্তা, ১ জন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য, কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, ১ জন স্থানীয় রেজিস্টার্ড পল্লী চিকিৎসক, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকাকে সদস্য করে কমিটি গঠণ করতে হবে। এই কমিটির তত্ত্বাবধানে গ্রাম পুলিশ, চৌকিদার, যুবক স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠনও করতে হবে। কারণ লকডাউন ও সামাজিক দূরত্ব রাখা কার্যকর করতে হলে জনসমাগম করে খাদ্যত্রাণ বিতরণ সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়াবে। তাই তালিকা অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে খাদ্যত্রাণ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়ার পদ্ধতি চালু করতে হবে। জাসদ নেতৃদ্বয় খাদ্যত্রাণ সাহায্যপ্রার্থীদের খাদ্যত্রাণ সাহায্য সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার পর তাদের বিকাশ/নগদ/রকেট নাম্বারসহ ডাটাবেজ তৈরি করে প্রয়োজনে খাদ্য দেয়ার বদলে সমপরিমান টাকা সরাসরি তাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার পদ্ধতি নিয়ে ভাবার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
    বার্তা প্রেরক

    সাজ্জাদ হোসেন
    দফতর সম্পাদক
    ০১৭১২৬৩৭৪৬৫, ০১৯১১৫৮৫৯৪৫

  • সুষ্ঠু ও প্রশ্নাতীত খাদ্যত্রাণ প্রার্থীদের তালিকা প্রণয়ন ও বিতরণে জাসদের প্রস্তাব

    সুষ্ঠু ও প্রশ্নাতীত খাদ্যত্রাণ প্রার্থীদের তালিকা প্রণয়ন ও বিতরণে জাসদের প্রস্তাব

    খাদ্যত্রাণ প্রার্থীদের তালিকা প্রণয়ন ও বিতরণে যে সমন্বয়হীনতা হয়েছে তা অবিলম্বে দূর করে প্রকৃত খাদ্যত্রাণ প্রার্থীদের নাম সুষ্ঠু ও প্রশ্নাতীত তালিকা প্রণয়নের জন্য গ্রামে বা শহরে ওয়ার্ডকে ইউনিট হিসাবে ধরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির সাথে, ইউএনও বা ডিসির একজন প্রতিনিধি, ১ জন মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক, একজন কলেজ শিক্ষক, ঐ ওয়ার্ডে ববসবাসকারী ১ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারী বা কর্মকর্তা, ১ জন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য, কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, ১ জন স্থানীয় রেজিস্টার্ড পল্লী চিকিৎসক, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকাকে সদস্য করে কমিটি গঠণ করতে হবে। এই কমিটির তত্ত্বাবধানে গ্রাম পুলিশ, চৌকিদার, যুবক স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠনও করতে হবে। কারণ লকডাউন ও সামাজিক দূরত্ব রাখা কার্যকর করতে হলে জনসমাগম করে খাদ্যত্রাণ বিতরণ সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়াবে। তাই তালিকা অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে খাদ্যত্রাণ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়ার পদ্ধতি চালু করতে হবে। জাসদ নেতৃদ্বয় খাদ্যত্রাণ সাহায্যপ্রার্থীদের খাদ্যত্রাণ সাহায্য সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার পর তাদের বিকাশ/নগদ/রকেট নাম্বারসহ ডাটাবেজ তৈরি করে প্রয়োজনে খাদ্য দেয়ার বদলে সমপরিমান টাকা সরাসরি তাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার পদ্ধতি নিয়ে ভাবার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।

  • ছুটি বেড়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত, সন্ধ্যা ৬টার পর ঘর থেকে বের হওয়া নিষিদ্ধ

    করোনাভাইরাসের প্রকোপ মোকাবেলায় সাধারণ ছুটির মেয়াদ ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ সময়ে পর্যন্ত সন্ধ্যা ৬টার পর বাইরে বের হওয়াও নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

    শুক্রবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজ্ঞাপনে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এতে বলা হয়, এই নির্দেশনা অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, আগের ছুটির ধারাবাহিকতায় ১৫ ও ১৬ এপ্রিল এবং ১৯ থেকে ২৩ এপ্রিল সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হল। সাধারণ ছুটির সময় আগামী ১৭-১৮ এপ্রিল এবং ২৪-২৫ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি সংযুক্ত থাকবে। বর্ণিত ছুটি অন্যান্য সাধারণ ছুটির মতো বিবেচিত হবে না জানিয়ে আদেশে এই ছুটির সময় যেসব নির্দেশাবলী কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে তাও বলে দেয়া হয়েছে।

    ১. করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রশমনে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে।

    ২. অতীব জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত ঘরের বাইরে বের না হতে সবাইকে অনুরোধ করা হল।

    ৩. সন্ধ্যা ৬টার পর কেউ ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন না। এ নির্দেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

    ৪. এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে সীমিত করা হল।

    ৫. বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত সকল কর্মকর্তাকে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে।

    আদেশে বলা হয়েছে, জরুরি পরিষেবার (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট ইত্যাদি) ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে না। এতে আরও বলা হয়, কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, জ্বালানি, সংবাদপত্র, খাদ্য, শিল্প পণ্য, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি, জরুরি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন এবং কাঁচা বাজার, খাবার, ওষুধের দোকান ও হাসপাতাল এ ছুটির আওতার বাইরে থাকবে।

    আদেশে আরও বলা হয়েছে, জরুরি প্রয়োজনে অফিস খোলা রাখা যাবে। প্রয়োজনে ঔষধশিল্প, উৎপাদন ও রফতানিমুখী শিল্প কারখানা চালু রাখতে পারবে। জনপ্রশাসনমন্ত্রণালয়ের ওই প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, মানুষের জীবন জীবিকার স্বার্থে রিকশা-ভ্যানসহ যানবাহন, রেল, বাস সার্ভিস পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে। জনগণের প্রয়োজন বিবেচনায় ছুটিকালীন বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।

  • দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের । নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৯৪ জন

    দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের । নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৯৪ জন। ফলে দেশে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের দিক দিয়ে একদিনে এ সংখ্যাটি সর্বোচ্চ।এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যু হলো ২৭ জনের। আর মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪২৪ জনে।

    Home » করোনায় দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৬ জনের মৃত্যু জাতীয়ফিচার

    করোনায় দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৬ জনের মৃত্যু

    এপ্রি ১০, ২০২০ 0 মন্তব্য 183 ভিউ 102 Shares

    facebook sharing button

    Share

    twitter sharing button

    Tweet

    whatsapp sharing button

    Share

    messenger sharing button

    Share

    অনলাইন ডেস্ক:

    প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৯৪ জন।

    এতে দেশে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের দিক দিয়ে একদিনে এ সংখ্যাটি সর্বোচ্চ।এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যু হলো ২৭ জনের। আর মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪২৪ জনে।

    শুক্রবার বেলা আড়াইটার পর অনলাইনে লাইভ ব্রিফিংয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এসব তথ্য জানান।

    তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ১৮৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।

    ফ্লোরা আরও জানান, নতুন করে যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৬৯ জন ও নারী ২৫ জন। এছাড়া নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার ৩৭ জন ও নারায়ণগঞ্জের ১৬ জন। বাকিরা অন্য জেলার।

    এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার করোনায় একজনের মৃত্যু ও ১১২ জনের আক্রান্ত হওয়ার কথা জানায় আইইডিসিআর।

    প্রসঙ্গত দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত (কোভিড-১৯) প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এক মাসের মধ্যে রোগীর সংখ্যা ৪০০ ছাড়াল।

  • কভিড-১৯ মোকাবিলায় আর্থিক বিষয়াবলিকভিড-১৯ মোকাবিলায় আর্থিক বিষয়াবলি-হাসান মেহেদী, জিয়াউল হক মুক্তা ও নুরুল আলম মাসুদ

    কভিড-১৯ রোগে বিপর্যস্ত পৃথিবী। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী স্বাস্থ্য খাতে বার্ষিক মাথাপিছু আট লাখ ৩৯ হাজার টাকা বরাদ্দকারী যুক্তরাষ্ট্র, তিন লাখ ৩৬ হাজার টাকা বরাদ্দকারী যুক্তরাজ্য আর দুই লাখ ৩৩ হাজার টাকা বরাদ্দকারী ইতালিতে সংক্রমণের হার ও মৃত্যুর সংখ্যা দেখলেই পরিস্থিতির ভয়াবহতা বোঝা যায়। আর ইতোমধ্যে বাতিল হয়ে গেছে শক্তিশালী দেশগুলোর জোট জি-২০-এর সম্মেলন, জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন, অলিম্পিক গেমস ও বিশ্ব পরিবেশ সংরক্ষণ সম্মেলনসহ বহু আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সভা। বিশ্বের বেশিরভাগ সীমান্ত বন্ধ এবং দুই-তৃতীয়াংশ শহর হয় অবরুদ্ধ অথবা চলাচল সীমিত করা হয়েছে। পর্যাপ্ত খাদ্য, ওষুধ ও সুরক্ষা সরঞ্জাম দিতে গিয়ে উন্নত দেশগুলোই হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নকামী দেশগুলোর কথা ভাবাই যায় না। একটাই আশার কথা, সরকারি হিসাব অনুসারে আমাদের দেশে রোগটি একটু দেরিতে ছড়াচ্ছে। এই অতিরিক্ত সময়টুকু ব্যবহার করতে পারি কিনা, তার ওপরই নির্ভর করছে এই মহামারি আমাদের জন্য কতটা ভয়াবহ হবে।
    ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাব, স্বাস্থ্য সংশ্নিষ্ট অবকাঠামোর ঘাটতি ও বায়ুদূষণ আমাদের বড় পরীক্ষার সামনে ফেলতে পারে। এ ছাড়া কৃষিসহ অনানুষ্ঠানিক খাতে ব্যাপক জনগোষ্ঠী যারা খাদ্যের জন্য নিরন্তর লড়াই করে, তাদের স্বাস্থ্যসেবা ও খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার প্রস্তুতি না থাকলে পুরো জাতির সামনে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে। সামনের মাসগুলোয় ব্যাপক খাদ্যসংকট দেখা দিতে পারে বলে জাতিসংঘ ও বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা সতর্ক করেছে। নিকট ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা বিবেচনায় নিয়ে ইতোমধ্যে খাদ্য রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে অনেক দেশ। শুধু খাদ্য নয়, বরং শিল্পপণ্যের আমদানি-রপ্তানিও কমে যাচ্ছে। এরই মধ্যে গত তিন মাসে তিন লাখেরও বেশি প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছেন এবং নতুন শ্রমিক অভিবাসনও বন্ধ হয়ে গেছে; এ বছর মার্চ মাসে রেমিট্যান্স কমেছে ১৭ কোটি ডলার।

    কিন্তু আস্থা রাখার মতো আছে অনেক কিছু। আমাদের আছে প্রধানমন্ত্রীর নেতেৃত্বে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যন্ত বিন্যস্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি, যা দুর্যোগ মোকাবিলায় পৃথিবীর সব থেকে শক্তিশালী নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। সারাদেশের কমিটিগুলোয় প্রায় দেড় লাখ দায়িত্বশীল ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি জড়িত। প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আপৎকালীন আশ্রয়কেন্দ্র আছে। এগুলোয় হাজারেরও বেশি রোগীকে আশ্রয় দেওয়া যায়। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখায় বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সুনাম আছে; অভ্যন্তরীণ দুর্যোগ মোকাবিলায়ও তাদের প্রাতিষ্ঠানিক অভিজ্ঞতা বিপুল। দেশের ৮১ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ রয়েছে, যা ভেন্টিলেটর ও জীবনরক্ষাকারী যন্ত্রপাতি চালাতে সাহায্য করবে। প্রতিটি ইউনিয়নে কমপক্ষে দু’জন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মী আছেন, যারা সামান্য প্রশিক্ষণেই দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর ভূমিকা নিতে পারবেন। উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছাড়াও আছে বড় আকারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যেখানে ইউনিয়ন থেকে আসা গুরুতর রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।
    এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোতে নিবন্ধিত প্রায় তিন হাজার প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সারাদেশে ১০ হাজারেরও বেশি বেসরকারি সংগঠন রয়েছে- যাদের কর্মীদলে আছেন ১০ লক্ষাধিক পেশাগত কর্মী। চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা অপ্রতুল হলেও আমাদের আছে প্রায় দেড় কোটি শিক্ষিত তরুণ, যারা সামান্য প্রশিক্ষণ পেলে স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়ক হিসেবে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারেন। ইতোমধ্যে স্থানীয় এনজিও ও স্বেচ্ছাসেবীরা যতটুকু সামর্থ্য আছে তাই নিয়ে শ্রমজীবী সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
    আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও কিছু জাতীয়তাবাদী সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সহমর্মিতা দেখা যাচ্ছে। চীন ও কিউবা অনেক দেশে স্বাস্থ্যকর্মী ও জরুরি উপকরণ দিয়ে সাহায্য করেছে। বাংলাদেশও নিজের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও কভিড-১৯ মোকাবিলায় চীনকে আপৎকালীন সহায়তা করা ছাড়াও সার্ক তহবিলে ১৫ লাখ ডলার দিয়েছে। কভিড-১৯ চিকিৎসায় ব্যবহূত ভেন্টিলেটরের সূত্র উন্মুক্ত করে দিয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠান মেডট্রনিক। রোগ উপশমে কোনো অগ্রগতি হলে চিকিৎসকরা সারা দুনিয়াকে জানিয়ে দিচ্ছেন। টিকা আবিস্কারের প্রক্রিয়ার তথ্য উন্মুক্ত হওয়ায় টিকা উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারছেন সব দেশের বিজ্ঞানী।
    কিন্তু কার্যকর উদ্যোগ নিতে রাষ্ট্রের প্রয়োজন জরুরি অর্থ। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নকামী দেশে যেখানে বাজেট ঘাটতি মেটাতে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা ঋণ নিতে হচ্ছে, সেখানে অতিরিক্ত অর্থ সংস্থান সত্যিই কঠিন। চলমান অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে মোট বরাদ্দ করা হয়েছে ২৫ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা; মাথাপিছু মাত্র এক হাজার ৫৬০ টাকা। অন্যান্য উপখাত ও প্রকল্পগুলো যোগ করলে এ ক্ষেত্রে মাথাপিছু বরাদ্দ দাঁড়ায় দুই হাজার ৯৫০ টাকা; যা ভারতে ৫ হাজার ৭৫৬ টাকা ও শ্রীলংকায় ১৩ হাজার ১৩ টাকা। শ্রীলংকার কথা বাদ দিই; এ সময়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সমান বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হলেও আমাদের স্বাস্থ্য খাতে অতিরিক্ত ৬৯ হাজার কোটি টাকা দরকার।
    এ বছর খাদ্য খাতে বরাদ্দ রয়েছে চার হাজার ৫০৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বরাদ্দ রয়েছে ৯ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাত যুক্ত করলে মাথাপিছু ব্যয় দাঁড়ায় ৮৮৮ টাকা। ভারতে এই বরাদ্দের পরিমাণ তিন হাজার ৬২০ টাকা। দুর্যোগকালে দারিদ্র্যসীমার নিচের তিন কোটি ৪০ লাখ মানুষের জন্য ভারতের সমান বরাদ্দটুকু নিশ্চিত করতে হলেও এই খাতে আরও ১৪ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা প্রয়োজন।
    এ বছর খাদ্য আমদানি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রেখে কৃষি খাত থেকেই খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় কিনা, সেটাও বিবেচনায় রাখতে হবে। কৃষি খাত দেশের সব থেকে বড় শ্রম খাতও বটে। এ খাতে বিনিয়োগের অর্থ চূড়ান্ত বিচারে স্থানীয় অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালু রাখতে ভূমিকা পালন করে। এ বছর কৃষি খাতে বরাদ্দ ১৪ হাজার কোটি টাকা মাত্র। প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ কৃষকের জন্য মাথাপিছু বার্ষিক বরাদ্দ মাত্র সাত হাজার ৮০৫ টাকা। বাজারের ধাক্কা সামলে কৃষক-পরিবারগুলোকে আউশ চাষে প্রণোদনা দেওয়ার জন্য সেচ, বীজ ও সারের জন্য সরাসরি ভর্তুকি দেওয়া দরকার। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কৃষক যে নতুন ফসল ঘরে তুলবে তার জন্য এখনই জরুরিভাবে ফসলের নূ্যনতম লাভজনক মূল্য ঘোষণার পাশাপাশি সরকারি ক্রয় কর্মসূচি ঘোষণা করতে হবে। সামগ্রিকভাবে কভিড-১৯ দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য অতিরিক্ত প্রায় এক লাখ কোটি টাকা দরকার।
    এরই মধ্যে কভিড-১৯-এর সম্ভাব্য অভিঘাত মোকাবিলায় গত ১৬ মার্চ বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ৮৫০ কোটি টাকা (১০ কোটি ডলার) অনুদানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কাছে প্রস্তাব পেশ করে। গত ৩ এপ্রিল বিশ্বব্যাংক সাড়ম্বরে প্রচার করল, তারা বাংলাদেশকে ১০০ মিলিয়ন ডলার দিয়ে সাহায্য করছে। এ বিবৃতি ডাহা মিথ্যে। বিশ্বব্যাংকের এই সাহায্য কোনো অনুদান নয় বরং তাদের ঋণ ব্যবসার অংশ। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) থেকে সাধারণত বার্ষিক ০.৫ থেকে ১.৫ শতাংশ হারে ঋণ পাওয়া যায়। অথচ বিশ্বব্যাংক থেকে নেওয়া ৩০ বছর মেয়াদি দুর্যোগকালীন এই ঋণের সুদের হার ২ শতাংশ, যা সাধারণ ঋণের সর্বোচ্চ সুদের চেয়েও ০.৫ শতাংশ বেশি। এদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশকে তিন লাখ ডলার অনুদান অনুমোদন করেছে, যা দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩৫০টি পিপিই (পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট) কেনা যায়। এডিবি প্রদত্ত ঋণের পরিশোধযোগ্য সুদের হিসাব করলে এটি গরু মেরে জুতো দানের শামিল।
    এডিবি, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফসহ বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক সংস্থাগুলোর কাছে বাংলাদেশের বর্তমান বৈদেশিক দেনার পরিমাণ প্রায় তিন লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা (৩৮.৪৮ বিলিয়ন ডলার), এ অর্থবছরে যার কিস্তি পরিশোধ করতে হবে ৫২ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। বিশ্বব্যাপী এই মহাদুর্যোগের সময় বৈদেশিক দেনার কিস্তি স্থগিত করে বিপুল আর্থিক ঘাটতি আংশিক জোগাড় করা সম্ভব। কোনো এক অসাবধান মুহূর্তে সেই পথও দেখিয়ে দিয়েছে স্বয়ং বিশ্বব্যাংক; পৃথিবীর শীর্ষ ২০টি ধনী দেশের (জি-২০) অনলাইন শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ এক যৌথ বিবৃতিতে গরিব দেশগুলোর ঋণের সুদ স্থগিত করার জন্য ধনী দেশগুলোর কাছে আহ্বান জানায়।
    কভিড-১৯-এর ধাক্কায় বাংলাদেশের মতো অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য ঋণের কিস্তি শোধ করা কঠিন হবে বলে আশঙ্কা করেছে শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংগঠন ওইসিডি। জুবিলি ডেট মুভমেন্টের পক্ষ থেকেও বহুজাতিক, আঞ্চলিক ও দ্বিপাক্ষিক সংস্থাগুলোর কাছে ঋণের কিস্তি স্থগিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। আফ্রিকার অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকেও একই দাবি করা হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এ দাবিতে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একত্র হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে জাতীয় দুর্যোগ আইন কার্যকর করে ব্রাজিল অন্তত আগামী ছয় মাস কোনো বৈদেশিক দেনা শোধ করার সামর্থ্য নেই বলে ঘোষণা করেছে।
    বৈদেশিক ঋণের সাড়ে ৫২ হাজার কোটি টাকার পাশাপাশি বাতিল করা উচিত জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর সক্ষমতা চার্জ (ক্যাপাসিটি চার্জ), যা এ বছরের বাজেট অনুযায়ী প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই ভাড়াভিত্তিক ও স্বাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো এই অর্থ নিয়ে যায়। বাংলাদেশের বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে সক্ষমতা আছে, তাতে এসব বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও বছরব্যাপী সরবরাহে ঘাটতি হবে না। ইতোমধ্যে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মেয়াদ ও কার্যক্ষমতা দুটোই ফুরিয়ে গেছে। দেশীয় সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর উচিত অন্তত আগামী ছয় মাস সব ব্যক্তিগত ঋণের সুদ ও কিস্তি স্থগিত করা। ইতোমধ্যে ইতালি, কানাডা, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলো এ ধরনের ঋণ পরিশোধ স্থগিত করেছে। বাংলাদেশের এনজিওগুলো মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরও) নির্দেশনায় ঋণ গ্রহীতাদের কাছ থেকে কিস্তি আদায় স্থগিত করেছে; এসব প্রতিষ্ঠান যেসব সূত্র থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তাদেরও উচিত দুর্যোগকালীন সময়ের সুদ ও কিস্তি মওকুফ করা।
    বৈদেশিক ঋণ ও সক্ষমতা চার্জের সর্বমোট ৬৪ হাজার কোটি টাকা দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা, জরুরি খাদ্য সরবরাহ ও কৃষি খাতে সহায়তা করতে হবে। তার আগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের ২২ ধারা অনুযায়ী দেশে অতি দ্রুত ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করতে হবে, যা একই আইনের ৩২ ধারা অনুযায়ী সরকারকে বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহের অধিকার প্রদান করবে। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলোর সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা সংশ্নিষ্ট প্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে গঠিত কমিটিগুলো অবিলম্বে সক্রিয় করা প্রয়োজন।
    দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী, চিকিৎসক ও সব যন্ত্রপাতিসহ বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো দুর্যোগকালীন অধিগ্রহণ করে দক্ষতা ও কর্মক্ষমতা বিবেচনায় প্রাতিষ্ঠানিক বিচ্ছিন্নকরণ (আইসোলেশন), সঙ্গনিরোধ (কোয়ারেন্টাইন) বা পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ) হিসেবে ঘোষণা করা দরকার। ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, স্পেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক ছাড়াও বেসরকারি হোটেলও অধিগ্রহণ করেছে। কভিড-১৯-এর দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠার পর ন্যায্য ক্ষতিপূরণসহ সেগুলো মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কভিড-১৯ আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের আনতে হবে বড় আকারের বীমার আওতায়, যা তাদের আর্থিক নিরাপত্তা ও প্রণোদনা দেবে।
    দেশের ইউনিয়ন ও উপজেলায়, এমনকি জেলা, বিভাগ ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে প্রস্তুতির জন্য দরকার ব্যাপক পরিমাণে সুরক্ষা সরঞ্জাম ও জীবনরক্ষাকারী যন্ত্রপাতি, যে ক্ষেত্রে চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোয় ঘাটতি আছে। সুরক্ষা সরঞ্জাম ও ভেন্টিলেটরের নির্মাণসূত্র উন্মুক্ত হওয়ায় যে কোনো বাংলাদেশি কোম্পানি এগুলো তৈরি করতে পারবে। ইতোমধ্যে বেসরকারি কোম্পানি ওয়ালটন ভেন্টিলেটর উৎপাদন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানিকে জরুরি ভিত্তিতে ভেন্টিলেটরসহ অন্যান্য সামগ্রী তৈরির কার্যাদেশ দেওয়া প্রয়োজন এবং এ ক্ষেত্রে যুদ্ধকালীন নিয়মানুবর্তিতা দেখানোর নির্দেশ দিতে হবে। অ্যাম্বুলেন্সের মানের কথা ভুলে গিয়ে দেশের ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে সম্ভাব্য জরুরি পরিবহন ব্যবস্থা, ব্যবহারযোগ্য অবকাঠামো, স্বেচ্ছাসেবীদের চিহ্নিত, তালিকা করা ও সংশ্লিষ্টদের ২-৩ ঘণ্টা মেয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার, যাতে জরুরি সময়ে সবাই মিলে ভূমিকা পালন করা যায়।
    আশা করছি, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ব্যাপক আকারে ছড়াবে না কিন্তু আমরা অন্যান্য দেশের সবচেয়ে ভালো উদাহরণগুলো ব্যবহার করে খারাপ পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকব। তাহলেই দুর্যোগের পাশাপাশি মহামারি মোকাবিলায়ও বাংলাদেশ পৃথিবীতে উদাহরণ হয়ে থাকবে। এ জন্য বাংলাদেশে কভিড-১৯ সংক্রমণকে ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করে রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল ও সারাদেশে জেলা-উপজেলা-ইউনিয়নের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সক্রিয়করণের বিকল্প নেই।
    হাসান মেহেদী, সদস্য সচিব, বাংলাদেশ বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোট
    জিয়াউল হক মুক্তা, সাধারণ সম্পাদক, গ্রামীণ জীবনযাত্রার স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান (সিএসআরএল)
    নুরুল আলম মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক, খাদ্যনিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি)

    সুত্র : সমকাল