ডেস্ক রিপোর্ট: কদমতলা ব্রীজ সংলগ্ন নদীটি (কদমতলা খাল) অপরিকল্পিত উন্নয়ন ব্যাবস্থাপনা ও দখলবাজীর কবলে পড়ে আজ প্রবাহ হারিয়ে মৃত খালে পরিণত হয়েছে। ফলে সাতক্ষীরা সদরের পশ্চিমাংশের পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ হয়ে পড়েছে। সাতক্ষীরা সদরকে জলাবদ্ধতা মুক্ত ও জলবায়ু পরিবর্তন ঝুকি মোকাবেলায় জলাধার তৈরিতে এ নদীকে সংস্কার করা গেলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
Category: উপকুল
-

জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে
শহর প্রতিনিধি: জলবায়ু পরিবর্তনজনিত মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। আর এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা । এরই মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তর গোলার্ধে বরফ গলছে। দেশ জুড়ে দুর্যোগও বাড়ছে।
গবেষণা ভিত্তিক এসব তথ্য তুলে ধরে ‘জলবায়ু পরিবর্তন, শ্যামনগর উপজেলার বিপন্নতা ও ঝুঁকি’ শীর্ষক পুস্তিকা প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। তারা বলেন, জলবায়ু তহবিল গঠন, নীতিমালা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নের জন্য স্বচ্ছতার সাথে কাজ করতে হবে।
একই সাথে উপকূলের বাঁধ নির্মাণ সংস্কার জোরদার করে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে। শনিবার সকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের শহীদ সম আলাউদ্দিন মিলনায়তনে আয়োজিত এই প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, এ অঞ্চলে ঘুর্নিঝড় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
১৯৭০ এর গোর্কি থেকে এ পর্যন্ত ১৪ টি ভয়াল ঘুর্নিঝড় আঘাত হেনেছে। বাংলাদেশের ৭২০ কিলোমিটার উপকূলে জলোচ্ছাস, দুর্যোগ বেড়েই চলেছে। কালবৈশাখী ঝড়ের ছোবল ও তীব্রতা বাড়ছে। বজ্রপাতে গত সাত বছরে দেড় হাজার মানবসন্তানের প্রাণহানি ঘটেছে। পানি ও মাটিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। পানীয় জলের সংকটও তীব্র হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ বাস্তুত্যাগী হচ্ছে।
‘গ্রামীণ জীবনযাত্রার স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান’ (সিএসআরএল) আয়োজিত প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জলবায়ু পরিষদের সভাপতি সাবেক উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. নাজিমউদ্দিন।
প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে সিএসআরএলএর প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন। তিনি বলেন, এই পুস্তিকা তথ্যবহুল। এই পুস্তিকা ব্যবহার করে জলবায়ু মোকাবেলায় আরও বেশি বেশি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সূচনা বক্তব্যে সিএসআরএলএর সাধারণ সম্পাদক লেখক গবেষক জিয়াউল হক মুক্তা বলেন, ২০০৯ এর ২৫ মে আঘাত হানা ভয়াল আইলায় ল-ভ- হয়ে যায় দেশের দক্ষিণ জনপদ বিশেষ করে সাতক্ষীরাসহ কয়েকটি জেলা। গৃহহারা আট লাখ মানুষ তাদের সহায় সম্বল নিয়ে টানা দুই বছর রাস্তায় কাটিয়েছে। সে সময় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে জীবন ও সম্পদ। সংযোগ সড়ক বিধ্বস্ত হয়েছে। পানীয় জলের উৎস হারিয়ে গেছে। উপকূলীয় বাঁধ ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। কৃষি সম্পদ ধ্বংস হয়ে যায়। মানুষের কর্মসংস্থানও নিঃশেষ হয়ে যাওয়ায় তারা পড়েন খাদ্য সংকটের মুখে। এসব তথ্য তুলে ধরে জিয়াউল হক মুক্তা বলেন, সে সময় বিশেষজ্ঞরা বলেন আগামী ৯৮ বছরে তাপমাত্রা যেন ২ ডিগ্রীর বেশি না হয়। অথচ এই প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে বৈশ্বিক তাপমাত্রা আগামি ১০০ বছরে তিন ডিগ্রী বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন এমনটি হলে আইলার চেয়েও ভয়ানক দুর্যোগ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে বলে বিজ্ঞানীরা বলছেন।
তিনি বলেন, এখন বিপন্নতা মোকাবেলার সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে। এর জন্য দরকার স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের ক্ষমতায়ন, অর্থায়ন, উপকূলীয় বাঁধ রক্ষনাবেক্ষণে জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ ভাঙ্গার আগে কিছু করতে পারে না। আবার বাঁধ ভাঙ্গলেও অর্থাভাবে কিছু করতে পারে না। এ অবস্থা থেকে সরে আসার আহবান জানিয়ে তিনি আরও বলেন প্রকৃত ঝুঁকি কোথায়, কারা কারা বিপন্ন হতে পারে এবং সরকার কি কি ব্যবস্থা নিয়েছে তার সমন্বয় হওয়া দরকার।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন আরও বলেন, সরকার জলবায়ু খাতে প্রতি বছর এক বিলিয়ন অর্থাৎ এক হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে। এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তিনি বলেন এই অর্থের শতকরা ৭৭ থেকে ৭৮ শতাংশ ব্যয় হচ্ছে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। বাকি ২২ -২৩ শতাংশ আসছে বৈদেশিক অর্থ থেকে। তিনি বলেন শিল্পোন্নত দেশগুলির কার্বন নিঃসরন বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে আমরা বিপন্নতার শিকার হচ্ছি। উপকূলে পানিতে লবনাক্ততা বাড়ছে। খাবার পানির সংকট তীব্র হচ্ছে। কৃষি উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। এখন নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, এজন্য দরকার তিনটি বিষয়। এক পলিসি প্রণয়ন। দুই অর্থায়ন এবং তিন বাস্তবায়ন। তিনি বলেন এসব বিষয়ে সরকার পূর্নমাত্রায় সচেতন রয়েছে। এরই মধ্যে তিন হাজার কোটি টাকার জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড তৈরি করা হয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশ এখন আর আর দরিদ্র নয় । দেশটি স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে পৌছেছে। এজন্য বৈদেশিক সাহায্য পাবার সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার অর্থ সংগ্রহে তৎপর রয়েছে। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ঝুঁকি মোকাবেলায় জনসচেতনা বাড়াতে হবে। স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে জেলা প্রশাসন কাজ করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয় ক্ষতি মোকাবেলায় জনপ্রতিনিধি হিসাবে যতোটা সম্ভব আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন টেকসই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঝুঁকি মোকাবেলা করতে হবে। আপৎকালিন তহবিল গঠন করে বাঁধ নির্মানের সুযোগ করে দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি ও তা মোকাবেলার কথা জনগনের কাছে পৌঁছাতে হবে। এতে তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে হবে। তিনি আরও বলেন জেলা পরিষদের ১৩১ টি পুকুর খননের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী এবিএমএ মামুন বলেন শুধুমাত্র প্রকৃতিগত কারণে নয় , স্থানীয় নানা কারণে আমাদের ঝুঁকি বাড়ছে। এসব মোকাবেলায় সমন্বিত উদ্যোগ ও প্রকল্পের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন জনপ্রতিনিধিরা সরকারের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন উপকূলে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা হচ্ছে। সাতক্ষীরার ৩৭৭ কিলোমিটার বেড়ি বাঁধ, ১২১ টি স্লুইস গেট ও ১২৬ টি খালের রক্ষনাবেক্ষণে পাউবো কাজ করে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিষদের সদস্য সচিব ও দৈনিক দক্ষিণের মশাল সম্পাদক অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আবদুল হামিদ, শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহসিন উল মুলক, জেলা পুলিশিং কমিটির সভাপতি ডা. আবুল কালাম বাবলা, প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, জেলা পরিষদ সদস্য এ্যাড. শাহনাজ পারভিন মিলি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আনিসুর রহিম, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম কামরুজ্জামান, বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান ভবতোষ মন্ডল প্রমুখ। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন সিএসআরএলএর সমন্বয়ক প্রদীপ কুমার রায়। অনুষ্ঠানে জলবায়ু পরিষদের সদস্যবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধি ও গনমাধ্যম প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে শ্যামনগরের ১২ টি ইউনিয়ন পরিষদে জলবায়ু ঝুঁকি এবং ঝুঁকি নিরসণে কি কি করনীয় তা তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে গুরুত্ব লাভ করেছে বাঁধ নির্মাণ সংস্কার, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, সংযোগ সড়ক নির্মাণ, লবন সহিষ্ণু ধান উৎপাদন, চিংড়ির সাথে ধান উৎপাদন, বাঁধ কেটে চিংড়ি চাষ না করা, লবনাক্ত পানি কৃষি জমিতে উঠোনো বন্ধ করা, খাল জলাশয় উন্মুক্ত রাখা, আশ্রয় কেন্দ্র নির্মান, জনসচেতনতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি। -

ইতিহাসখ্যাত আদী যমুনা নদীর চতুর্থ খন্ড
দক্ষিণ পশ্চিম উপকুলীয় অঞ্চলের ঐতিহাসিক নদী যমুনা। যমুনা নদী সম্পর্কে সতীশ চন্দ্র মিত্র তাঁর যশোর খুলনার ইতিহাস গ্রন্থে বলেন:
‘এ যমুনা সেই যমুনা
যে যমুনার তটে ইন্দ্রপুরী তুল্য রাজপাট বসাইয়া কুরুপান্ডবে ইন্দ্রপ্রস্থ
হস্তিনাপুরে রাঙ্গামেুয় যজ্ঞ সুসম্পন্ন করিয়া ছিলেন,
যে কালিন্দী তটে বংশীবটে শ্রীকৃষ্ণের প্রেমধর্মের অপূর্ব লীলাভিনয় হইয়া ছিল,
যে যমুনা তীরে দিল্লী-আগ্রায়-মথুরা-প্রয়াগে হিন্দু-মুসলমান
বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান মোঘল-ইংরেজ
শতশত রাজ-রাজেশ্বর সমগ্র ভারতের
রাজদভ পরিচালনা করিতেন
এ সেই একই যমুনা।
সেই তমালকদম্ব পরিশোভিত কোকিল কুজন মুখরিত
নির্ম্মল সলিলে প্রবাহিত
ভটশালিনী সুন্দর যমুনা।’যমুনা নদীকে কেন্দ্র করে ছিল ঐতিহাসিক ও প্রত্মাত্বিক স্থাপত্য নিদর্শন, ধর্মীয় এবং লোকজ উৎসব ও সংস্কৃতি। এ ক্ষেত্রে যমুনা নদীর চতুর্থ খ-ের বিষয়টা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতে চাই। যমুনা নদীর চতুর্থ খন্ডর মধ্যে রয়েছে অসংখ্য সংযোগ খাল, যা এক সময় স্থানীয় মৎস্য বৈচিত্র্যের আধার ছিল। খালগুলোর মধ্যে অন্যতম-ইছামতি, কদমতলী, সীমানা খাল, সোনার মোড় থেকে শরৎখানা খাল, বংশীপুর থেকে মাহমুদপুর সীমানা খাল, সোনার মোড় শ্মাশনঘাট দিয়ে সরদার বাড়ীর পশ্চিম দিক হয়ে হানারখালীর উপর দিয়ে কদমতলী সীমানা খাল, শরতখানা থেকে ভৈরব আলীর বাড়ীর দক্ষিণ দিক দিয়ে, বংশীপুর বীদগাহ সীমানা হয়ে গজলমারী, কদমতলী সীমানা খাল ও হাফরখালী শিশেল খাল ইত্যাদি।
এ খানে অসংখ্যা বিল আছে। যেমন: নলবিল, হাফরবিল, দিঘীর বিল, কাশিপুরবিল, পশ্চিমবিল, হানরখালী বিল, মৃতঘেরী বিল, কাঁদার বিল, মাহমুদপুর চর, ফুলবাড়ির চরের বিল, চরের বিল, আঠারখানার হুলোর বিল ইত্যাদি।
যমুনা নদীর চতুর্থ খ- ইতিহাস প্রসিদ্ধ স্থান। কাকশিয়ালী থেকে মাদার নদী পর্যন্ত যমুনা নদীর সর্বমোট ৫টি খন্ডর মধ্যে চতুর্থ খন্ডই প্রত্মাতাত্বিক নির্দশনের জন্য সবচেয়ে বিখ্যাত। এক সময় প্রবাহমান যমুনা নদীর চতুর্থ খ-ের দুই তীরে ছিল অনেক ঐতিহাসিক স্থাপত্য। যার মধ্যে বুরুজপোতা, বংশীপুর শাহী মসজিদ, যশোরেশ্বরী কালিমন্দির, হাম্মাম খান, শরৎবালা পুকুর, ত্রিকণা শিবমন্দির, খৃষ্টান গীর্জা, ধুমঘাট রাজধানী, জমিদারবাড়ীর চাউল ধোঁয়া পুকুর, শরতবালা স্মৃতিস্তম্ভ, জমিদার গোলাবাড়ী, শাহী মসজিদ গোরস্থান ও ঈদগাহ, সোনার মোড় শ্মশান ঘাট ইত্যাদি।
ইতিমধ্যে ঐ সমস্ত ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন গুলোর অধিকাংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। যমুনা নদীর চতুর্থ খ-ের বন্দোবস্ত বা ইজারা বাতিল করে প্রবাহ সুষ্ঠ করলে রক্ষা পাবে বিলুপ্ত প্রায় স্থাপত্য নিদর্শনগলো। অন্যথায় ইতিহাসের পাতা থেকে চিরতরে ধ্বংস হয়ে যাবে ইতিহাস প্রদিদ্ধ ঐ সমস্ত প্রত্মতাত্বিক স্থাপত্য নির্দশন সমূহ।
যমুনা নদীর চতুর্থ খ-ে হিন্দু ধর্মালম্বীদের কাছে অত্যান্ত পবিত্র স্থান। দেবরাজ ইন্দ্রের সহধর্মীনীর নাম বারুনী দেবী। মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথিতে মর্তে আগামন করেন ভক্তদের সাক্ষাতের জন্য। দেবীর আগমন উপলক্ষে উক্ত তিথিতে ভক্তবৃন্দ সমবেত হয়ে যমুনা নদীতে ¯œান করেন। তাদের ধারনা এই শুভদিনে বারুনী ¯œানমঙ্গল বয়ে আনবে। সেই আবহমান কালের ঐতিহ্য আজও হিন্দু ধর্মালম্বীরা পালন করে আসছে।
নদী শুকিয়ে গেলে সভ্যতা বাঁচেনা। দখল ও দূষণ, নদী ও জলাশয়ের দুশমন। নদীর জীবনের সাথে কৃষি, পরিবেশ, প্রতিবেশ, জীবন-জীবিকা, স্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্যের অস্তিত্ব জড়িত। শ্যামনরের ঐতিহাসিক যমুনা নদীর জীবন ও স্কৃতি আজ ধবংস ও ক্ষত-বিক্ষত।
কাকশিয়ালী থেকে মাদারনদী পর্যন্ত প্রবাহমান যমুনা নদীর সাথে সংযোগ ছিল ৪০টি খাল, ৪৪টি বিল, ৫৪টি স্থাপত্য নিদর্শন, ২৪ প্রকার লোকজ ও ধর্মীয় উৎসব। যমুনা নদী দখলের পূর্বে এ অঞ্চল ছিল স্থানীয় কৃষি প্রানবৈচিত্র্য, গবাদিপশুবৈচিত্র্য, মৎস্যবৈচিত্র্য, উদ্ভিদবৈচিত্র্য ও অসংখ্যা জলজপ্রালবৈচিত্র্য সমৃদ্ধ। ভূমি, নদী ও জলাশয় দুশমনদের ভোগ বিলাসীতার জন্য চিরতরে ধবংস ও বিলুপ্ত প্রায়া। নদী ভোগ দখলের অধিকার কখনও একজন ব্যক্তির হতে পারে না। তাহলেই নদী বিপন্ন হয়ে পড়ে, যেমনটি হয়েছে যমুনা নদী উপর সকলের অধিকার প্রতিষ্টা হবে, নদী বিপন্ন হয় না, নদী হয় প্রবাহমান ও জীবন্ত। -

সুন্দরবন উপকূলীয় জনপদে তরমুজ চাষে কৃষকদের বিপ্লব
সেলিম হায়দার: আবহাওয়ার অনুকুল পরিবেশ ও গত বছর দাম ভাল পাওয়ায় এবার পাইকগাছায় লক্ষমাত্রার চেয়ে প্রায় ২শ’ হেক্টর বেশি (৪১০ হেক্টর) জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। প্রথম দিকে পানির অভাবে তরমুজ আবাদ মাজ পথে বিঘিœত হলেও ফলন ভাল হওয়ায় চলতি মৌসুমে ৫০ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হবে বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট কৃষকরা। ধারণা করা হচ্ছে আগামীতে উপজেলায় তরমুজের আবাদ আরো বাড়তে পারে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ ও এলাকাবাসী জানায়, পাইকগাছার ২২ নং পোল্ডার ও গড়–ইখালী ইউনিয়নের বাইনবাড়িয়া ও কুমখালীতে দীর্ঘদিন যাবৎ তরমুজ চাষ করছেন সেখানকার কৃষকরা। আবহাওয়ার অনুকুল পরিবেশ ও সেখানকার মাটি তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় ঐ এলাকা উপজেলার তরমুজ চাষের জন্য সমৃদ্ধ। এখানকার তরমুজের ব্যতিক্রমী স্বাদের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাই এর চাহিদা ও দামও অপেক্ষাকৃত বেশী। সুন্দরবন উপকূলীয় ও চিংড়ি চাষ অধ্যুষিত জনপদে যখন পরিবেশ বিধ্বংসী চিংড়ি চাষ দিন দিন প্রসারতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেখানে তরমুজের আশা জাগানিয়া সম্ভাবনা স্থানীয় কৃষকদের পথ দেখাচ্ছে নতুন আলোর।
স্থানীয়রা জানান, তরমুজ চাষে শুধু চাষীরাই নয়, উৎপাদন মৌসুমে সেচ ও ক্ষেত পরিচর্যায় কর্মসংস্থান হয় এলাকার শ্রমজীবিদের।
কৃষি অফিস জানায়, চাষাবাদে গত কয়েক বছরে কৃষকদের সাফল্য ও উৎসাহের উপর নির্ভর করে এবছর পাইকগাছা উপজেলায় ২১০ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে কৃষকরা লক্ষমাত্রার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ৪১০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড পাকিজা ও ড্রাগণ জাতের তরমুজের আবাদ করেন। এর মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ জমিতে আবাদ হয়েছে পাকিজা ও ৩০ শতাংশ জমিতে ড্রাগন জাতের তরমুজ। কৃষি অফিস আরো জানায়, উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের ২২ নং পোল্ডারে চাষ হয়েছে সর্বোচ্চ ৩৮০ হেক্টর ও গড়–ইখালী ইউনিয়নের বাইনবাড়িয়া কুমখালী এলাকায় বাকি ৩০ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে।
কৃষি অফিস ও সংশ্লিষ্ট চাষীরা জানান, মৌসুমের শুরুতে সেচের জন্য পানির সংকট না থাকলেও এবছর বৃষ্টির পরিমাণ কম থাকায় শেষ দিকে পানির চরম সংকট দেখা দেয়। বিশেষ করে ২২ নং পোল্ডার এলাকার চাষীরা রীতিমত বিপাকে পড়েন। মূলত ঐসময় স্থানীয় খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় তাদের পানির এ সংকট বলে জানান তারা।
এ ব্যাপারে উপজেলার কালিনগর গ্রামের মিন্টু বালা জানান, তিনি এবছর ১২ বিঘা জমিতে তরমুজের আবাদ করেছেন। তবে শেষের দিকে খালে পানি না থাকায় পাইপ দিয়ে কয়েক শ’ মিটার দূর থেকে পানি এনে ক্ষেতে সেচ দিতে হচ্ছে। তবে এবার গতবারের চেয়ে আবাদ ভাল হয়েছে। ইতোমধ্যে তরমুজ মৌসুম শুরু হলেও আগামী সপ্তাহ খানেকের মধ্যে তার ক্ষেতের তরমুজ বিক্রির উপযোগী হবে। তার ধারণা, বিঘা প্রতি এবছর প্রায় ৬০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি হবে তার। সেখানকার আরেক চাষী পার্বতী সানা জানান, তাদের এলাকা তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী হলেও সেচ ব্যবস্থা না থাকায় শুরুতেই নানা মুখী সংকট তৈরী হয়েছে। বিশেষ করে অনেক দূর থেকে পাইপযোগে পানি এনে চাহিদা মেটাতে হয় তাদের।
এব্যাপারে চাষী ও শ্রমিক লতিকা ও কামনা বালা জানান, তরমুজ উৎপাদন মৌসুমে সেচ ও ক্ষেত পরিচর্যা করে ঘন্টা প্রতি ৫০ টাকা হারে অতিরিক্ত আয় করে থাকেন তারা। চাষী মেঘনা বালা জানান, তাদের উৎপাদিত তরমুজ পর্যায়ক্রমে ২/৩ বারে তরমুজ উঠাতে হয়। এরপর তা পাঠানো হয় ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত এলাকায়। দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল জানান, তার এলাকার ২২ নং পোল্ডার তরমুজ চাষের জন্য উপযুক্ত। গত বছর ঐ এলাকা থেকে প্রায় ২০ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হয়েছিল। দ্বিগুণ আবাদ ও ফলন ভাল হওয়ায় এবছর প্রায় ৪০ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তবে তরমুজ চাষের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপাদান পানির জন্য আগ্র হারিয়ে ফেলছেন সেখানকার অনেক কৃষক। বিশেষ করে ২২ নং পোল্ডরের ৫ টি ওয়ার্ডের মধ্য দিয়ে প্রায় ৭ কিঃমিঃ দৈর্ঘ্যরে একটি খাল রয়েছে। জনপদের কৃষকরা বিভিন্ন ফসল আবাদে এই খালের পানি দিয়েই চাহিদা মিটিয়ে থাকেন। তবে দীর্ঘ দিন সংষ্কারের অভাবে হ্রাস পেয়েছে খালটির পানি ধারণ ক্ষমতা। তাই মৌসুমের শেষের দিকে খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের ক্ষেতের সেচ করাতে অনেক দূর থেকে পাইপ যোগে পানি এনে চাহিদা পূরণ করতে হয় তাদের। এতে খরচের পাশাপাশি ভোগান্তিতে অনেকেই তরমুজ চাষের আগ্রহ হারাচ্ছেন। তার দাবি খালটি খননপূর্বক মিঠা পানির নিশ্চিত উৎস্য তৈরী হলে তরমুজের পাশাপাশি অন্যান্য চাষাবাদেও তাদের বেঁচে থাকার অন্যতম প্রাণ কৃষকরা ঘটাতে পারে এক ভিন্ন মাত্রার বিপ্লব।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএইচ এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উপজেলা ঐ অংশে দীর্ঘদিন যাবৎ তরমুজের আবাদ ভাল হওয়ায় সেখানকার কৃষকরা এখন তিল চাষের পরিবর্তে তরমুজ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। যে কারণে এবার সেখানে লক্ষমাত্রার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ জমিতে তরমুজের আবাদ করেছেন। এব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ট কৃষকদের যথোপযুক্ত প্রশিক্ষণসহ সকল প্রকার উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিত করেছেন। তার বিশ্বাস, উপযুক্ত পরিবেশ ও দাম ভাল পাওয়ায় সুন্দরবন উপকূলীয় জনপদের কৃষকরা আশা জাগানিয়া তরমুজ চাষে ঘটাতে পারেন এক নতুন বিপ্লব। -
আশাশুনির মানিকখালী স্লুইস গেটের মুখে ধ্বস
আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনি উপজেলা সদরের মানিকখালী স্লুইচ গেটের রিভার সাইটে পাইপের মুখে ধ্বস নেমে জোয়ার ভাটার পানি উঠানামা করছে। যে কোন সময় ভাঙ্গনে গেটের অংশ বিশেষ ছুটে গিয়ে এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা বিরাজ করছে। ফলে এলাকার মানুষ চরম ঝুঁকিতে রয়েছেন।
আশাশুনি উপজেলা পরিষদ হতে পূর্ব দিকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ক্ষতিগ্রস্ত মানিকখালী স্লুইচ গেটটি। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহিম জানান, পাকিস্তান আমলে নির্মীত এ গেটটি সংস্কারের অভাবে খুবই জীর্ণশীর্ণ হয়ে আছে। ২৫/৩০ বছর আগে একবার কোন রকমে একটু সংস্কার কাজ করা হয়েছিল। রক্ষণাবেক্ষণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন ভূমিকা না থাকায় এটি আরো জরাজীর্ন অবস্থায় পড়ে আছে। প্রায় এক বছর ধরে গেটটির নদীর দিকে দুফোকড়ের পাইপের মুখে ধ্বস নামে। বর্তমানে সেখানে আড়াই হাত-তিন হাত এলাকা জুড়ে বড় গর্তেও সৃষ্টি হয়েছে। বাইরের পাটা লাগানো থাকলেও ধ্বস নেমে ওয়াল থেকে পাইপ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে পানি ওঠা-নামা করছে। দিন দিন ওয়ালটি নদীর দিকে ঝুঁকে পড়ছে। যেকোন জোয়ার-ভাটায় সেটি নদীগর্ভে পড়ে গেলে গেট সহ ওয়াপদা রাস্তা ভেসে যেতে পারে। এতে জোয়ারের পানি ভেতরে ঢুকে প্লাবিত হতে পারে পুর্বের বিলের শতাধিক ছোট-বড় মৎস্য ঘের, উপজেলা সদরের অফিস এলাকা, হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির সহ আশাশুনি সদরের বাসিন্দারা। অফিস এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়লে প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়বে। এছাড়া গেটের ভিতরের মুখে লোনা লেগে পলেস্তারা উঠে ও ভেঙে যাওয়ায় পাঠ লাগানো যায়না। পাটা লাগানো থাকলেও পাট আটকে রাখার কলাম ভেঙ্গে যাওয়ায় পাট অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। ফলে জোয়ারের পানি ওঠা-নামায় প্রায়ই নিয়ন্ত্রন রাখা মুশকিলে পড়তে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে বাঁশের সাথে দড়ি দিয়ে পাট টানা দিয়ে রাখা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, এ গেটটি দিয়ে শতাধিক ঘেরের পানি ওঠা-নামা করা সহ ১ ও ২ নং ওয়ার্ড এবং উপজেলা সদরের বৃষ্টির পানি নিস্কাশন হয়ে থাকে। জনগুরুত্বপুর্ন এই গেটটি রক্ষনা-বেক্ষনে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন খোঁজ খবর নেয় না। যতদ্রুত সম্ভব গেটটি সংস্কার করে পাইপের সাথে ওয়ালের সংযোগ স্থাপন করা সহ ভেতরের দিকে প্লাষ্টার করে পাট বসানোর উপযোগী করে তোলা প্রয়োজন।
সদর ইউপি চেয়ারম্যান স ম সেলিম রেজা মিলন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, দীর্ঘদিন থেকে ঝুঁকিপুর্ণ এ অবস্থা চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলেছি কিন্তু তাদের ধীরগতির পদক্ষেপের ফলে সাধারণ মানুষ ও শতাধিক মাছ চাষীরা উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার মধ্যে আছে। এ ব্যপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এস ও আবুল হোসেন জানান, চেয়ারম্যান মারফত গেটটির কথা শুনেছি। যতদ্রুত সম্ভব আমরা এটা মেরামতের চেষ্টা করছি। -
উৎপাদন মৌসুমের শুরুতেই পাইকগাছায় বাগদা চিংড়িতে মড়কের হানা
বিশেষ প্রতিবেদক: উৎপাদন মৌসুমের শুরুতেই পাইকগাছার অধিকাংশ চিংড়ি ঘেরে ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে মড়ক রোগ। চাষীরা কারণ হিসেবে এটাকে ভাইরাস সংক্রমণ বললেও মৎস্য অফিস মরা চিংড়িতে কোন রোগ বালাইয়ের চিহ্ন খুঁজে পাচ্ছেননা। অন্যদিকে এনজিও’র দাবি পানি ও খাদ্যই চিংড়ির ব্যাপক মড়কের জন্য প্রধানত দায়ী। তবে কোন পদ্ধতিতেই রোধ করা যাচ্ছেনা বাগদা চিংড়ির এ মড়ক। জলবায়ু পরিবর্তনে অনাবৃষ্টি ও প্রচন্ড তাপদাহ চিংড়ির উপযোগী লবন পানির স্বাভাবিক পরিবেশকে মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করায় এমন পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টদের কেউ কেউ। এমন অবস্থায় চিংড়ির বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহতের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের ভবিষ্যত নিয়েও নানাবিধ আশংকা তৈরী হয়েছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে চিংড়ি চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন লোনা পানির জনপদের অধিকাংশ চাষীরা।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, সুন্দরবন উপকূলীয় পাইকগাছা উপজেলায় মোট কৃষি জমির পরিমান ৩০ হাজার হেক্টর। যার মধ্যে বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতেই আবাদ হয় লবণ পানির চিংড়ির। মৎস্য অফিস জানায়, এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৪ হাজার চিংড়ি ঘের রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা সংকটে গত দু’বছর উৎপাদন ভাল হয়নি। সেবার মৎস্য অধিদপ্তর চিংড়ি উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ৬ হাজার মেট্রিক টন।
তবে গত বারের ন্যায় এবারো মওসুমের শুরুতেই ব্যাপক হারে চিংড়ির মড়কে একদিকে যেমন আশংকা তৈরী হয়েছে লক্ষমাত্রা অর্জিত না হওয়ার, অন্যদিকে শুরুতে পোনার দাম ও জমির হারি বৃদ্ধি থেকে শুরু করে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করায় আন্তর্জাতিক বজারে দেশের চিংড়ির চাহিদা কমে যাওয়ায় দাম ভাল না থাকায় আগামীতে চিংড়ি চাষে নেমে আসতে পারে বিপর্যয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে এমনটাই মনে করছেন চিংড়ি সংশ্লিষ্টদের কেউ কেউ।
প্রসঙ্গত ৮০’র দশক থেকে সুন্দরবন উপকূলীয় কৃষি অধ্যুষিত এ উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শুরু হয় লবন পানির চিংড়ি চাষ। শুরুতেই উৎপাদন ও আন্তর্জাতিক বাজারে চিংড়ির দাম ভাল থাকায় মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে উপজেলার দুই তৃতীয়াংশ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে চিংড়ির চাষাবাদ। সোনার ধান, সোনালী আঁশ, সবুজ সবজি আর শষ্যের পরিবর্তে দিগন্ত জোড়া মাঠের সব দিকেই বিস্তার লাভ করে রুপালী পানি।
ফসলের জন্য আর দীর্ঘ অপেক্ষা নয়,সকাল-সন্ধ্যা ঝাঁঝালো গন্ধের চিকচিকে পানির নিচ থেকে উঠতে থাকে সাদা সোনা বাগদা। কিছুদিনের মধ্যে পাইকগাছাকে চিংড়ি উৎপাদনের জন্য বিশেষায়িত করা হয় “সাদা সোনার রাজ্য” হিসেবে। অল্প সময়ের ব্যবধানে কোটি পতি বনে যান চিংড়ি চাষের সাথে সম্পৃক্তদের অনেকেই। তবে মূল জমির মালিকদের অবস্থা চলে যায় আরো তলানিতে। জীবিকার প্রধান মাধ্যম কৃষি শষ্যও আসেনা চাহিদানুযায়ী জমির হারিও পায়না। এক সময় জীবিকার ভিন্ন উপায় ও ঋণের দায় মেটাতে ঘেরের জমিটুকুও বাধ্য হয়ে তুলে দেয় ঘের মালিকদের কাছেই।
তবে ১ থেকে দেড় দশকের মধ্যে ১৯৯৫ সালের পর থেকে চিংড়ি ঘেরে শুরু হয় “ভাইরাস” বা মড়ক রোগ সংক্রমন। ধীরে ধীরে তা বিস্তার লাভ করায় পুরোপুরি লাভের মুখে থাকা চিংড়ি শিল্পে নেমে আসে আকস্মিক ধ্বস। এভাবে সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের অনেকেই লাভের আশায় বছরের পর বছর ধার-দেনা করে চাষাবাদ টিকিয়ে রাখে। সফলতা না আসায় এক সময় চাপ সইতে না পেরে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন অনেকেই। আবার কেউ কেউ সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছেন। মাঝের দু’এক বছর কিছুটা ভাল হওয়ায় ফের কোমর বেঁধে মাঠে নামেন চাষীরা। তবে মাত্র এক বছর পর মৌসুমের শুরুতেই চিংড়ি ঘেরে আবারো মড়ক অব্যাহত থাকায় নতুন করে বন্ধের উপক্রম হয়েছে সম্ভাবনাময় এ শিল্প।
চিংড়ি চাষী নোয়াকাটির জাহাঙ্গীর আলম,কাশিমনগরের শেখ রবিউল ইসলাম,নজরুল শেখ,জাহাঙ্গীর শেখ,প্রতাপকাটির বজলু জানান, এবছর মওসুমের শুরুতেই তাদের ঘেরে দেখা দিয়েছে চিংড়িতে মড়ক। এখন পর্যন্ত অনেকে দু/এক কেজি মাছও বিক্রি করতে পারেননি তারা। অনেক ঘেরে প্রথম,দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় অবমুক্ত’র সকল মাছই মরে সাবার হয়ে গেছে।
ব্যাপক হারে অব্যাহত চিংড়ি মড়ক আসলে কি ভাইরাস সংক্রমণ? নাকি জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব? এনিয়ে চিংড়ি চাষী, মৎস্য অধিদপ্তর ও চিংড়ির উপর মাঠ পর্যায়ে কাজ করা এনজিও গুলোও পরষ্পর বিরোধী কারণ দাবি করছে। চাষীরা এটাকে ভাইরাস সংক্রমণ বললেও মৎস্য অফিস মৃত চিংড়িতে খুঁজে পাচ্ছেননা কোন সংক্রমণ চিহ্ন। আর এনজিও গুলোর দাবি,পানি ও খাদ্য সমস্যাই প্রধানভাবে চিংড়ির ব্যাপকহারে মড়কের জন্য দায়ী।
এ প্রসঙ্গে চিংড়ি চাষে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা বে-সরকারি সাহায্য সেবী প্রতিষ্ঠান নিউ সানের এ্যাকুয়াকালচার প্রোগ্রামের কো-অর্ডিনেটর সুকুমার অধিকারী বলেন,চিংড়ি চাষে মড়ক রোধ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে মাটি ও পানি পরীক্ষা এবং তার সঠিক পরামর্শ প্রদানই তাদের লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে তারা নিয়মিত চাষীদের নিয়ে মাঠ পর্যায়ে উঠন বৈঠক করছেন। এ উপায়ে সফলতা এসেছে বলেও দাবি এ এনজিও কর্তার। তিনি বলেন, মাটি ও পানি দূষণ এবং চাষীদের অজ্ঞতাই চিংড়ির ব্যাপকহারে মড়কের জন্য প্রধানভাবে দায়ী।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার মন্ডল জানান, মড়ক আক্রান্ত ঘেরের চিংড়িতে এখন পর্যন্ত তারা কোন জীবাণু বা সংক্রমণের চিহ্ন খুঁজে পাননি। তবে চিংড়ির এ ব্যাপক ভিত্তিক মৃত্যুর জন্য দায়ী কে? এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে না পারলেও মহস্য কর্মকর্তা, জলবায়ু পরিবর্তনে অনাবৃষ্টি ও প্রচন্ড দাবদাহে চিংড়ির লবন পানির উপযুক্ত পরিবেশ বাঁধাগ্রস্থ ও খাদ্য দূষণে মাছের মড়ক লাগতে পারে বলে মনে করেন।
এদিকে চিংড়ির মড়ক রোধে বিভিন্ন কোম্পানি বাহারী সব প্রচারে বাজারজাত করছে নানাবিধ প্রতিষেধক। অনেকে আবার পরিবেশ বান্ধবের ধুয়ো তুলে নিজেদেরকে চিংড়ি বিশেষজ্ঞ বলে দাবি করলেও মূলত তাদের কারো কোন পরামর্শেই চিংড়ির মড়ক রোধ না হওয়ায় মূলত দিশেহারা হয়ে পড়েছেন প্রান্তিক চাষিরা। -

শ্রীপুর-কুড়িকাহুনিয়া পাউবো’র ভেঁড়ীবাঁধে ফাটল
আশাশুনি প্রতিনিধি: শ্রীপুর-কুড়িকাহুনিয়ায় লঞ্চ ঘাটের দুই পার্শ্বে ২টি পয়েন্টে ভেঁড়ীবাঁধে ফাটল ধরে ভেঁড়ীবাঁধ ১/৩ অংশ নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ফলে যেকোন সময় বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হওয়ার শংকায় স্থানীয়রা।
জানা যায়, প্রতাপনগর শ্রীপুর-কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চ ঘাটের দক্ষিণ ও উত্তর পার্শ্বে পাউবো’র ভেঁড়ী বাঁধ দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে ভাঙ্গন কবলিত অবস্থায় পড়ে আছে। বাধে ফাটল ধরায় যে কোন মূহুর্তে পাউবো’র ভেঁড়ীবাঁধ ভেঙ্গে কপোতাক্ষ নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে এলাকার ফসলী জমি, মৎস্যঘেরসহ স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ মানুষের যান-মালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করতে পারে। স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বুলি স্থানীয় গ্রামবাসীদের অংশগ্রহণে বাঁেশর পাইলিং দিয়ে মাটিভরাট এবং বস্তাদিয়ে বাঁধ রক্ষায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয় উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তার সাথে মুটোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ভেঁড়ীবাঁধ সংস্কারের জন্য টেন্ডার হয়ে গেছে ২৩ তারিখ ওপেনিং হবে।
এ ব্যাপারে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ভেঁড়ীবাঁধ সংস্কারের টেন্ডার হয়েছে। সংস্কার কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অযথা সময় নষ্ট করছেন। তাদের সময় ক্ষেপণ ও অবহেলার কারণে ভেঁড়ীবাঁধের আজ এ অবস্থা। -

জলবায়ু পরিষদের মানববন্ধনের এক সপ্তাহের মধ্যে মুন্সীগঞ্জ বাজারের পাশে নির্মিত হচ্ছে স্লুইজ গেটের রেলিং
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: বৃহত্তর শ্যামনগর উপজেলার পর্যটন সড়ক মুন্সিগঞ্জ বাজারস্থ্য স্লুইজ গেটের রেলিং নির্মান কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। জলবায়ু পরিষদের মানববন্ধনের এক সপ্তাহের মধ্যে (গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে) মুন্সীগঞ্জ বাজারস্থ্য স্লুইজ গেটের রেলিং নির্মান কাজ শুরু হওয়ায় স্থানীয় বাজার ব্যবসায়ী, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, জেলা পরিষদ সদস্যসহ সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ জলবায়ু পরিষদের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
উপকুলীয় এলাকায় ৬০ এর দশকের পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর আওতায় কৃষি কাজের উদ্দেশ্যে পোল্ডার বাঁধ নির্মিত হয়। পরবর্তী সময়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় এই স্লুইজ গেটের উপর দিয়ে প্রতি দিন শতশত ভারী যানবাহনে যাতায়াত করতে শুরু করে। এখানে ৪ টি ইউনিয়ন গাবুরা, বুড়িগোয়ালিনী, আটুলিয়া ও মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের লক্ষ্যাধিক মানুষ এই স্লুইজ গেটের উপর দিয়ে বিভিন্ন যানবাহনে জেলা ও উপজেলা শহরে যাতায়াত করে থাকে। মুন্সীগঞ্জ বাজারটি নিত্য দিনের প্রয়োজনীয় মালামাল বিক্রয়ের প্রান কেন্দ্র, এছাড়া অর্ধ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে আকাশলীনা ইকো ট্যুরিজম সেন্টার ও ৩ টি স্থানে মৎস্য বিক্রয় কেন্দ্র, ৯ টি স্কুল, ২ টি কলেজের শিক্ষীর্থী, ৮ টি চিংড়ী ও কাঁকড়া হ্যাচারীর মালামাল এই স্লুইজ গেটের উপর দিয়ে মানুষের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়।
বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান বাবু ভবতোষ কুমার মন্ডল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সাল বাংলাদেশকে পর্যটন বর্ষ ঘোষণা করায়, পর্যটন শিল্পোউন্নতি করতে বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম উপকুলীয় অঞ্চলে সুন্দরবনকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন পার্ক, হোটেল-মোটেল, কমিউনিটি গেষ্ট হাউজ, রেস্টুরেন্ট। রেলিং নির্মান কাজ শুরু হওয়ায় চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছে জলবায়ু পরিষদ, শ্যামনগর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট সকলকে।
মুন্সীগঞ্জ বাজারের পাশে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নে কলবাড়ীতে প্রায় ৮০ একর জায়গাতে ৩ নদীর মোহনায় গড়ে উঠেছে আকাশলীনা ইকো ট্যুরিজম সেন্টার। এই বিনোদন মূলক পার্কে প্রতিদিন আগত দর্শনার্থীদের স্লুইজ গেটের উপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। শ্যামনগর উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, শ্যামনগর জলবায়ু পরিষদ উপকূলীয় অঞ্চলে নদী ভাঙ্গন, স্লুইচ গেট, জলাভূমি নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছে। আমি তাদের কাজে সবসময় সহযোগীতা করি।
-
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা অবৈধ্য গাইড বই বাজারজাত করতে সাতক্ষীরায় আসছেন বিএনপি নেতা
নিজস্ব প্রতিবেদক: মহান স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করা গাইড বই বাজারজাত করতে সাতক্ষীরায় আসছেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতিসহ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ। ওই প্রতিনিধি দলের সাথে সফর সঙ্গী হিসাবে আসছেন পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা মমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ঢাকার বিএনপি নেতা কাজী জহুরুল ইসলাম বুলবুল।
কয়েকজন পুস্তক ব্যবসায়ী জানান, কাজী জহুরুল ইসলাম বুলবুল ঢাকা মহানগরের সূত্রাপুুর থানা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং ২০১৩-১৪ সালে সুত্রাপুর থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতার অভিযোগ থাকায় তিনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। কিন্তু তিনি পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটনের আর্শীবাদ পুষ্ট হওয়ায় নাশকতার আসামি হয়েও বুলবুল কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মনোনীত হন। দায়িত্ব পাওয়ার পরে বুলবুল স্বাধীনতা বিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী প্রকাশনীর কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে সারা বাংলাদেশব্যাপি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ নোট-গাইড সহায়ক পাঠ্য বইয়ের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করতে মরিয়া হয়ে ওঠে।২০১৬-২০১৭ ও ২০১৮ সালে সারা বাংলাদেশের ন্যায় সাতক্ষীরাতেও তার আর্শীবাদ পুষ্ট পুস্তক ব্যবসায়ীরা তার কথামত জেলার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার পাঠ্য তালিকায় স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী বই অন্তর্ভুক্ত করে আসছেন। এর প্রেক্ষিতে গত ১৯ ফেরুয়াারি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাবির্ক) মো. জাকির সাতক্ষীরায় অসাধু পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতাদের স্বাধীনতা বিরোধী ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী বই বাজারজাত বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা শিক্ষা অফিসার ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি সাতক্ষীরার পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির বর্তমান আহবায়ক যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় অন্যতম প্রধান আসামি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের আপন ভাইপো ছাত্রদল নেতা সাইফুল ইসলাম বাবু ও যুগ্ম আহবায়ক(১) বিএনপি-জামায়াত পন্থী কাইয়ুম সরকারকে চিঠি দিয়ে অবগত করেন।
কিন্তু এখনও জেলার পুস্তক ব্যবসায়ীদের একটি অংশ এই বই বাজারজাত করে ক্রয়-বিক্রয় অব্যাহত রেখেছে। আর তাদের ওই স্বাধীনতা বিরোধী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী বই বাজারজাত করতে সার্বিক সহযোগিতার উদ্দেশ্যে সাতক্ষীরায় আগমন করছেন বিএনপি নেতা বুলবুল।
অভিযোগ রয়েছে, বিএনপি নেতা বুলবুল সাতক্ষীরার উর্ধ্বতন মহলকে ম্যানেজ করে ওই সব গাইড জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠ্য তালিকা থেকে বাদ না দেওয়ার তদবির নিয়ে আসছেন। আর এ কারণে তিনি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সংঘস্মারক ও সংঘবিধির ১৩ ধারা মোতাবেক সদস্য পদের অযোগ্যতা। জ) কোন প্রকাশনী ও পুস্তক ব্যবসায়ী টাকার বিনিময়ে বই পাঠ্য করাইলে তার সদস্য পদ থাকবে না। ট) গ্রন্থসত্ত্ব আইন: রাষ্ট্রবিরোধী, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এমন বই প্রকাশ ও বিক্রয় করিলে। কিন্তু সারা দেশব্যাপি প্রকাশকরা টাকার বিনিময়ে স্কুল, কলেজ মাদ্রাসায় বই পাঠ্য করায়। ফলে সংঘবিধি ১৩ জ ও ১৩ ট অনুযায়ী কোন প্রকাশনীর সদস্যপদ থাকার কথা না।
এঘটনায় কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কাজী জহুরুল ইসলাম বুলবুলের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি তার বিরুদ্ধের সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি আগে বিএনপি করতাম। এখন করি না।’ ১৩’র জ ও ট সম্পর্কে বললে তিনি এড়িয়ে যান। এঘটনায় সাতক্ষীরার পুস্তক ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
এদিকে, সাতক্ষীরার কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতে স্বাধীনতা বিরোধী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কোন বই পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভূক্ত হতে না পারে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন জেলার সচেতন মহল। -

জনতোপের মুখে দূর্ণীতিবাজ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধের কাগজপত্র গ্রহণ করতে বাধ্য হলেন ডিডিএলজি
নিজস্ব প্রতিবেদক: সদরের লাবসা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় টনক নড়ে প্রশাসনের। ফলে গতকাল পরিদর্শনে আসেন স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক আব্দুল লতিফ খান। তিনি এসেই বলেন, ‘আমি রুটিন মাফিক পরিদর্শনে এসেছি।’ এসময় ইউপির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ও স্থানীয় জনগণের পক্ষ থেকে পালাতক চেয়ারম্যান আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধের দূর্ণীতির অভিযোগ সম্বলিত কাগজপত্র তার নিকট জমা দিতে গেলে তিনি ‘নিজেদের সমস্যা নিজেদের মধ্যে মিলমিশ করে নিতে বলেন’।
উক্ত তদন্ত কর্মকর্তার দূর্ণীতিবাজ বিএনপির সন্ত্রাসী নেতার পক্ষ গ্রহণ করায় প্রথম থেকেই উপস্থিত জনতা ও ইউপি সদস্যরা মনে মনে ক্ষব্ধ হতে থাকে। এমতাবস্থায় তদন্ত কর্মকর্তার উক্ত কথায় সবাই বিক্ষেভে ফেটে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে তদন্ত কর্মকর্তা স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক আব্দুল লতিফ খান অভিযোগ গ্রহণ করেণ।
গত সোমবার বিকেলে লাবসা ইউনিয়ন পরিষদ পরির্দশনে আসেন স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক আব্দুল লতিফ খান। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সচিব আব্দুর রাজ্জাক, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া বাবু, মেম্বর মাসুদা বেগম, ফেরদৌসী ইসলাম, রামপ্রসাদ সরকার, সাঈদ আলী সরদার, মোঃ আজিজুল ইসলাম, মোঃ আসাদুজ্জামান, মোঃ কাজী মনিরুল ইসলাম, জামির হোসেন, আব্দুল হান্নান প্রমুখ। উপস্থিত ইউপি সচিবসহ ইউপি সদস্যবৃন্দ প্রকল্প সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে ডিডিএলজির সামনে লিখিত মতামত ব্যক্ত করেন।
তদন্তকালে ইউপি সচিব আব্দুর রাজ্জাক জানান, ৩৭ লক্ষ টাকা এবং হাটের ১২ লক্ষ টাকার প্রকল্পের সকল ফাইল আমার নিকট থেকে চেয়ারম্যান সাহেবের নিকট নিয়ে নেন। যা তার নিজ হেফাজতে আছে।
বর্তমান সরকারের উর্দ্ধতন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা কিভাবে ২০১৩ সালের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে যুক্ত বর্তমানে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও দূর্ণীতিবাজ চেয়ারম্যানের পক্ষে ভূমিকা গ্রহণ করায় স্থানীয় জনগণ ও সুধীমহলের মধ্যে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। তাদের মত তদন্তকর্মকর্তার ভূমিকা বতর্মন সরকারের রাজনৈতিক চেতনার প্রতিপক্ষ!উল্লেখ্য, সম্প্রতি লাবসা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে প্রকল্পের কাজ না করে ১২লক্ষ ১৫হাজার ৮৮৮ টাকা এবং হাট ইজারা থেকে পাওয়া ৩৭লক্ষ ২৮হাজার ৭২৩টাকা মোট ৪৯লক্ষ ৪৪হাজার ৬১১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। এঘটনায় রোববার বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম নাশকতা মামলায় পলাতক থাকায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া বাবু এ ঘটনায় রবিবার বিকেলে জরুরি সভার আহ্বান করেন। সভায় চেয়ারম্যান আব্দুল আলিমের দুর্নীতি তুলে ধরেন ইউপি সদস্যরা।
তদন্ত কর্মকর্তা প্রথমে রাজি না থাকলেও শেষ পর্যন্ত তদন্ত কার্যক্রমে আলিম চেয়ারম্যানের দূর্ণীতির বিষয়টি প্রাধান্য পায় এবং সকল কাগজপত্র গহণপূর্বক জেলা প্রশাসকের নিকট বিষয়টি তুলে ধরবেন বলে উপস্থিত সদস্য ও জনগণকে আশ্বস্ত করে এলাক ত্যাগ করেন। স্থানীয় অভিজ্ঞ মহলের অভিমত চেয়ারম্যানের দূর্ণীতির সহযোগী ইউপি সচিব আব্দুর রাজ্জাক লাবসা ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকলে তদন্ত নিরপেক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা কম।
-

পাইকগাছায় শিক্ষার্থীদের মাঝে উন্নতমানের খাবার বিতরণ
পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি: পাইকগাছায় মিড-ডে-মিল কর্মসূচির আওতায় শিক্ষার্থীদের মাঝে উন্নতমানের খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সরল দীঘিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ২ শতাধিক শিক্ষার্থীর মাঝে খাবার পরিবেশন করেন মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জি,এম,এম, আজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কাউন্সিলর গাজী আব্দুস সালাম, প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান, আমজাদ আলী গাজী। বক্তব্য রাখেন, শিক্ষক মুজিবর রহমান, ফাতেমা খাতুন, ছায়রা বেগম, আব্দুস সালাম, সমীরণ, খাবার প্রদানকারী অজিয়ার রহমান, পায়েল জামান, শিক্ষার্থী আসমা ও পলি খাতুন।
-

আজকের দিনটি কেমন যাবে?
আজ আপনার জন্ম হলে পাশ্চাত্য মতে আপনি কুম্ভ রাশির জাতক জাতিকা। আপনার ওপর প্রভাবকারী গ্রহ ইউরেনাস ও শনি। ১৭ তারিখে জন্ম হবার কারণে আপনার উপর শনির প্রভাব প্রবল। আপনার শুভ সংখ্যা: ৮,১৭,২৬। শুভ বর্ণ: নীলা ও গোলাপী। শুভ বার ও গ্রহ : রবি ও শনি। শুভ রতœ: গার্নেট ও নীলা।
চন্দ্রাবস্থান:আজ চন্দ্র তুলা রাশিতে অবস্থান করবে। ৬ষ্ঠী তিথি সকাল : ০৯:৫৬ পর্যন্ত, পরে ৭মী তিথি চলবে।
মেষ রাশি (২১ মার্চ-২০ এপ্রিল):আজ বন্ধের দিনে মেষ রাশির জাতক জাতিকারা সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকবেন। জীবন সাথীকে নিয়ে বই-মেলায় ঘুরতে যেতে পারেন। খুচরা ও পাইকারী ব্যবসায় ভালো আয় হতে পারে। আজ অংশীদারী ব্যবসায় অংশীদারের সাথে কোনো নতুন সাইট ভিজিটে যেতে পারেন। অবিবাহিতদের বিয়ের যোগ প্রবল।
বৃষ রাশি ( ২১ এপ্রিল-২০ মে):আজ বৃষ রাশির জাতিকারা সাংসারিক কাজে খুব ব্যস্ত থাকতে পারেন। গৃহে কোনো অতিথির আগমনের সম্ভাবনা। কাজের লোকেদের ওপর অকারনে চেচামেচি না করাই ভালো। আপনার মূল্যবান দ্রব্যাদি সাবধানে রাখুন। বাহিরে বেড় হওয়ার সময় মূল্যবাণ দ্রব্যাদি সতর্কতার সাথে বহন করুন। হটাৎ ঠান্ডা-জ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন।
মিথুন রাশি (২১ মে-২০ জুন): মিথুনের বন্ধুরা আজ সন্তানের সাথে ভালো সময় কাটাতে পারেন। প্রেমিক প্রেমিকাদের বই মেলায় বেড়াতে যাওয়ার যোগ প্রবল। পরিবার পরিজন নিয়ে কোনো পার্কে বেড়ানোর সুযোগ চলে আসবে। শিল্পীদের কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিতে হবে। চিত্রকর ও নাট্যাভিনেতারা বন্ধের দিনেও ব্যস্ত সময় পার করবেন।
কর্কট রাশি (২১ জুন-২০ জুলাই): পারিবারিক কাজে ব্যস্ততার দিন। গৃহ সংস্কার বা কোনো ফার্ণিচার মেরামতের কাজে ব্যস্ত থাকবেন। বাড়ীতে আত্মীয় স্বজনের আগমন হতে পারে। পারিবারিক পরিবেশ অনুকূল থাকবে। মায়ের শরীর স্বাস্থ্য ভালো হয়ে উঠবে। যানবাহ লাভের যোগ প্রবল। কোনো আত্মীয়র সহায়তায় কিছু সম্পত্তি সংক্রান্ত কাজের সমাধান হতে পারে।
সিংহ রাশি (২১জুলাই-২১ আগষ্ট): আজ সিংহ রাশির জাতক জাতিকাদের সাহস ও পরাক্রম বৃদ্ধি পাবে। প্রতিবেশীদের কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো ভালো সংবাদ আশা করা যায়। ছোট ভাই বোনের সাথে কোনো মেলায় বেড়াতে যেতে পারেন। সাংবাদিক ও প্রকাশকদের কাজের চাপ বৃদ্ধি পাবে।
কন্যা রাশি (২২ আগষ্ট-২২ সেপ্টেম্বর): আর্থিক অবস্থা ভালো হয়ে উঠবে। আজ খাদ্য ব্যবসায়ী ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা ভালো আয় করতে পারবেন। খুচরা বিক্রেতাদের বেচাকেনা বৃদ্ধি পাবে। বাড়ীতে শ্বশুড় শ্বাশুড়ীর আগমন হতে পারে। আজ কোনো ব্যক্তিগত ধারের টাকা ফেরত পেতে পারেন।
তুলা রাশি (২৩ সেপ্টেম্বর-২১ অক্টোবর): আপনার প্রভাব প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পাবে। কোনো আলোচনা সভায় আপনার সিদ্ধান্তকে সকলে মেনে নিতে পারেন। শারীরিক অবস্থা ভালো হয়ে উঠবে। মনের জোর ফিরে পাবেন। কোনো বন্ধুর সাহায্য পেতে পারেন। ব্যবসায়ীরা কোনো সুদূর পরিকল্পনা করতে চলেছেন। কাজ কর্মে জীবন সাথীর সাহায্য পাবেন।
বৃশ্চিক রাশি (২২ অক্টোবর-২০ নভেম্বর): আজ কোথাও ভ্রমনে যেতে পারেন। বৈদেশীক কাজে ব্যবসায়ীদের বিদেশ যাওয়ার যোগ প্রবল। ব্যয় কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায় কোনো চুক্তি করতে পারেন। বিদেশ থেকে কোনো ভালো সংবাদ পেতে পারেন। কোনো আত্মীয়র দেশে আগমনের যোগ দেখা যায়।
ধনু রাশি (২১ নভেম্বর-২০ ডিসেম্বর): আজ বড় বোনের বিয়ের যোগ প্রবল। বন্ধুর সাথে কোনো কাজে ব্যস্ত থাকতে হতে পারে। ব্যবসায় কিছু লাভের আশা করা যায়। বিদ্যার্থীরা কিছু অর্থ সাহায্য পেতে পারেন। ঠিকাদারদের আজ কোনো মিটিং এ অংশ নেবার সম্ভাবনা প্রবল।
মকর রাশি (২১ ডিসেম্বর-২০ জানুয়ারি): সামাজিক কাজে ব্যস্ততা বাড়বে। কোনো স্কুল কলেজ বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেন। সরকারী চাকরীজীবীদের ভ্রমনের সম্ভাবনা রয়েছে। রাজনৈতিক কোনো নেতার সাথে আজ দেখা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। বিদেশ সংক্রান্ত কাজে কোনো পরিকল্পনা সফল হতে পারে।
কুম্ভ রাশি (২১ জানুয়ারি-১৮ ফেব্রুয়ারি): আজ ধর্মীয় ও আধ্যাত্মীক কাজে কোথাও যেতে পারেন। কোনো মাজার বা দরগাহতে জিয়ারতের সম্ভাবনা বেশী। বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোনো পরীক্ষা প্রস্তুতি বিষয়ে ব্যস্ত থাকতে চলেছেন। জীবীকার জন্য হটাৎ করে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ পেয়ে যাবেন। বৈদেশীক কাজের সাথে সম্পৃক্তদের দিনটি ব্যস্ততায় কাটবে।
মীন রাশি (১৯ ফেব্রুয়ারি-২০ মার্চ): রাস্তাঘাটে কোনো প্রকার হয়রাণির শিকার হবার আশঙ্কা রয়েছে। কোনো পরিচিতজনকে দেখতে হাসপাতালে যেতে হতে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ কোনো বিনিয়োগের সুযোগ পেয়ে যাবেন। মামলা মোকর্দ্দমা ও আইনগত জটিলতা থেকে সতর্ক থাকতে হবে। পুলিশে কর্মরত বন্ধুদের ছুটির প্রচেষ্টা সফল হতে পারে।
জ্যোতিষ শাস্ত্রী ফকির ইয়াসির আরাফাত মেহেদী
সাংগঠনিক সম্পাদক (বাংলাদেশ এস্ট্রলজার্স সোসাইটি)
মোবাইল: ০১৭১৬-৬০৮০৮২
-

তালায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন
তালা প্রতিনিধি ( সাতক্ষীরা) : তালা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত তালা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এতে সভাপতিত্বে করেন।
এ সময় সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের এ ঋণ জাতি কোন কিছুর বিনিময়ে শোধ করতে পারবেনা। তিনি বলেন সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানীভাতা বৃদ্ধি করেছে। স্বচ্ছতার ভিত্তিতে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হবে।
তালা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন জমা পড়ে ৪শ’ ৪১টি এবং তলিকাভুক্তদের মধ্য থেকে অভিযোগ আসে ৫৬জনের বিরুদ্ধে। কমিটির সকলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে আপত্তি নিষ্পত্তি করা হয়। অনলাইনে জমাকৃত আবেদনের যাচাই-বাছাই সম্পন্ন এবং জামুকায় সরাসরি আবেদনকারী মুক্তিযোদ্ধাদের আপত্তি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদ হোসেন এবং সদস্য ছিলেন কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের প্রতিনিধি জি.এম.এ সবুর, জেলা কমান্ডারের প্রতিনিধি মঈনুল ইসলাম, তালা উপজেলা কমান্ডার মফিজ উদ্দিন, মুবিম এর প্রতিনিধি শেখ আবুল খায়ের ও জামুকা প্রতিনিধি এম এম ফজলুল হক।
-

তালায় ছাগল পালনে যুব নারীদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর উদ্বোধন
তালা প্রতিনিধি (সাতক্ষীরা) : জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে উন্নত পদ্ধতিতে ছাগল পালনের মাধ্যমে যুব উদ্যোক্তা উন্নয়ন, উৎপাদন বৃদ্ধি এবং পরিবারের জীবন যাত্রার মানোন্নয়’র লক্ষ্যে তালায় যুব নারীদের ছাগল পালনে প্রশিক্ষণ প্রদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে।
ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে এবং উইনরক ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এশিয়া ফারমার-টু-ফারমার প্রোগ্রামের আওতায় স্বেচ্ছায় কারিগরী সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে সাস কর্তৃক আয়োজিত ‘‘ক্লাইমেট স্মার্ট গোট রিয়ারিং ফর ইয়ুৎ এন্টারপ্রেনারশীপ ডেভেলপমেন্ট” শীর্ষক এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়।
বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা উন্নয়ন সংস্থা- সাস’র প্রশিক্ষণ কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে স্বেচ্ছায় প্রশিক্ষণ প্রদান করেন আমেরিকার বিশেষজ্ঞ এবং ফারমার-টু-ফারমার ভলান্টিয়ার ড. পিটার অগাস্টাস ফ্লানাগান। তার বক্তব্য ও আলোচনাকে বাংলায় অনুবাদ করে প্রশিক্ষনার্থীদের নিকট উপস্থাপন করেন এশিয়া ফারমার-টু-ফারমার প্রোগ্রামের এসিস্ট্যান্ট কান্ট্রি ডাইরেক্টর ড. এস এম শামছুর রহমান।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর উদ্বোধনকালে সাস কর্মকর্তা এ.কে.এম গোলাম ফারুক, মো. শাহ আলম, রুহুল আমীন, আব্দুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা- সাস এর উপকারভোগী ২০জন নারী অংশগ্রহণ করছে। ৩ দিনের এই প্রশিক্ষণ ২টি ব্যাচে অনুষ্ঠিত হবে এবং ৪০ জন যুব নারী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহন করবে।
-

পাইকগাছার সাম্য চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিভাগীয় সেরা
পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি: আন্তঃপ্রাথমিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় জেলার পর এবার বিভাগীয় পর্যায়েও চিত্রাংকনে সেরা হয়েছে পাইকগাছা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাম্য সরকার।
বৃহস্পতিবার খুলনা মডেল আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় খুলনা বিভাগের ১০টি জেলার ১০জন প্রতিযোগীর মধ্যে বিভাগীয় পর্যায়ে সেরা নির্বাচিত হয় সাম্য সরকার। সে পাইকগাছা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের সরল গ্রামের স্কুল শিক্ষক বিমল কুমার সরকার ও পুষ্প রানী সরকারের একমাত্র ছেলে। সাম্য একজন ক্ষুদে শিক্ষার্থী হলেও চিত্রাংকনে তার অসাধারণ প্রতিভা রয়েছে। এর আগে সে গত ৭ ফেব্র“য়ারি অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় জেলা পর্যায়ে সেরা হয়। আগামী যেকোন সময় সাম্যকে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করতে হবে বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশুতোষ কুমার মন্ডল জানিয়েছেন।
এদিকে অসাধারণ কৃতিত্ব ও সাফল্যের জন্য সাম্যকে অভিনন্দন জানিয়েছেন খুলনা-৬ সংসদ সদস্য এ্যাডঃ শেখ মোঃ নূরুল হক, উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডঃ স.ম. বাবর আলী, পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, উপজেলা শিক্ষা অফিসার গাজী সাইফুল ইসলাম ও মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও শিক্ষক মন্ডলী।
-

৬ বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিহত ২০০
এসবিএন : ২০১০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৬ বছরে দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ২০০ জন মানুষ নিহত ও ৪৩৮৪ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।
১৬ ফেব্র“য়ারি বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
এসময় মন্ত্রী জানান, ২০১৩ সালে ঘুর্ণিঝড় মহাসেনে ১৭ জন নিহত এবং আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৬০ কোটি টাকা এবং ২০১৪ সালে বন্যায় নিহতের সংখ্যা ৬৯, আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১২৮০ কোটি টাকা।
তিনি আরও জানান, ২০১৫ সালে ঘুর্ণিঝড় কোমেনে নিহতের সংখ্যা ৯ জন এবং আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপিত হয়নি। ২০১৬ সালে ঘুর্ণিঝড় রোয়ানুতে নিহতের সংখ্যা ২৭ জন এবং আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১১২৭ কোটি টাকা, একই বছর বন্যায় নিহতের সংখ্যা ৭৮ জন এবং আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৮১৭ কোটি টাকা।
অন্যদিকে সংসদ সদস্য নাসরিন জাহান রতনার (বরিশাল-৬) আরেক প্রশ্নের জবাবে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান জানান, সৌদি আরব সরকারের অনুদানে প্রতি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
-

রাখাইনে সেনা অভিযান সমাপ্তির ঘোষণা মিয়ানমারের
এসবিএন : রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান সমাপ্তির ঘোষণা দিয়েছে মিয়ানমার। দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা এমনটাই জানিয়েছেন। খবর রয়টার্সের
বুধবার রাতে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলর দফতর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, উত্তর রাখাইনের পরিস্থিতি এখন স্থিতিশীল হয়েছে। সামরিক বাহিনীর শুরু করা ক্লিয়ারেন্স অপারেশন শেষ হয়েছে, সান্ধ্য আইন শিথিল করা হয়েছে এবং শান্তি বজায় রাখার জন্য সেখানে শুধু পুলিশ উপস্থিত আছে।
মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট দফতরের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয়ও উত্তর রাখাইনে সামরিক অভিযান শেষ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে, কিন্তু ওই এলাকার ‘শান্তি ও নিরাপত্তা’ বজায় রাখার স্বার্থে সামরিক বাহিনী অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে তারা।
গত বছরের ৯ অক্টোবর রাখাইন সীমান্তে একাধিক পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা হয়। হামলায় পুলিশের ৯ সদস্যসহ ১৪ জন নিহত হন। হামলার পর রাখাইনে সহিংস অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ধরপাকড়, হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ওঠে।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, রাখাইনে দমন-পীড়নের মুখে প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে।
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংস দমন-পীড়ন চালিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে মিয়ানমার।
-

স্বাধীনতা পুরস্কার: ১৫ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ১টি প্রতিষ্ঠানের নাম মনোনীত
এসবিএন : সরকার জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতস্বরূপ ১৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’-২০১৭ প্রদানের জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত করেছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ কথা জানানো হয়।
পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান হলো: স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে গ্র“প ক্যাপ্টেন (অব.) শামসুল আলম বীরবিক্রম আশরাফুল আলম, শহীদ মো. নজমুল হক,মরহুম সৈয়দ মহসিন আলী, শহীদ এন এম নাজমুল আহসান, শহীদ ফয়জুর রহমান আহমেদ ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনী।
চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী, সাহিত্যে বেগম রাবেয়া খাতুন ও মরহুম গোলাম সামদানী কোরায়শী।
সংস্কৃতিতে প্রফেসর ডক্টর এনামুল হক ও ওস্তাদ বজলুর রহমান বাদল। সমাজসেবায় খলিল কাজী ওবিই।
গবেষণা ও প্রশিক্ষণে শামসুজ্জামান খান ও অধ্যাপক ড. ললিত মোহন নাথ (প্রয়াত) এবং জনপ্রশাসনে প্রফেসর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ পদক বিতরণ করবেন।
