Category: উপকুল

  • উপকুলীয় জেলা সাতক্ষীরার উন্নয়নে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে

    উপকুলীয় জেলা সাতক্ষীরার উন্নয়নে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে

    জহুরুল কবীর:

    উপকুলীয় জেলা সাতক্ষীরা। এশিয়ার বৃহত্তম সবুজ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন এই জেলায় অবস্থিত। এই উপকূলের গা ঘেঁষে বয়ে গেছে বঙ্গোপসাগর। শক্ষিাঙ্গণরে মহা পুরুষ খানবাহাদুর আহসান উল্লাহ এই শহরের গর্ব। তাছাড়া শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ জাতীয় অধ্যপক ডাঃ এম আর খান, ডাঃ রুহুল হক (সাবেক মন্ত্রী) (অর্থপেডিক্স), শৈল্য চিকিৎসক ডাঃ শ্যামাপদ পাল, ডাঃ আজিজার রহমান; বিশিষ্ট পরমানু বিজ্ঞানি ড. এম মতিয়ার রহমান; বিশ্ব বিখ্যাত বাঘ শিকারী পচাব্দী গাজী; প্রথম মুসলিম মহিলা কবি আজিজুননেছা খাতুন; বাঙালি লেখক/কবি মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী; বিশিষ্ট সাহিত্যিক সিকান্দার আবু জাফর; সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আবেদ খান; বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক আব্দুল মোতালেব; বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব অমর মিত্র (৩০ আগস্ট, ১৯৫১) ও আবুল কাশেম মিঠুন, পরীমনি; প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ও নীলুফার ইয়াসমীন; চিত্রনায়ক আমিন খান ও রানী সরকার; নাট্যশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, তারিক আনাম খান, আফজাল হোসেন, ফাল্গুনী হামিদ ও মৌসুমী হামিদ; বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী (একুশে পদকপ্রাপ্ত) সৈয়দ জাহাঙ্গীর; আব্দুল জলিল (ঈশিকা); ক্রিকেটার মুস্তাফিজুর রহমান ও সৌম্য সরকার; নারী ফুটবলার সাবিনা; রাজনীতিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা স ম আলাউদ্দীন (সদস্য, প্রাদেশিক পরিষদ-১৯৭০ ); এম মনসুর আলী (সাবেক মন্ত্রী), সৈয়দ কামাল বখত সাকি, সৈয়দ দীদার বখত; পশ্চিমবঙ্গ ভারতের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায়; সাবেক সেনা প্রধান ভারতের শঙ্কর রায় চৌধুরী প্রমুখ জ্ঞানী-গুণিজন এই জেলার অহঙ্কার। ভোমরা স্থল বন্দর, চিংড়ি ও কাকড়া শিল্প এই জেলার বৃহৎ রাজস্ব আয়ের উৎস।
    কপোতাক্ষ, ইছামতি (আদি যমুনা), কালিন্দী, কাকশিয়ালী, বেতনা(বেত্রাবতী), খোলপেটুয়া, গলঘেসিয়া, মরিচ্চাপ এই জেলার প্রধান প্রবহমান নদ-নদী সমুহ। এছাড়া প্রাণসায়র খাল জেলা শহরের প্রধান জল প্রবাহ।


    জলবদ্ধতা, লোনা পানি, আন্তর্জাতিক সীমানা এই জেলার প্রধান সমস্যার উৎস। জেলার দক্ষিণ উপকূলীয় উপজেলার প্রায় অধিকাংশ ইউনিয়ন মিষ্টি পানির অভাবে বছরের বার মাস খাওয়ার পানি সঙ্কটে ভোগে। জেলার নদীগুলোয় চলমান প্রবাহ না থাকায় প্রতিনিয়ত পানির লবনাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া চিংড়ি চাষের জন্য ঘেরে লোনা পানি উঠানোয় বসতি এলাকাও লবনাক্ত হয়ে যাচ্ছে। ফলে খাওয়ার জন্য মিষ্টি পানির প্রচ- অভাবী এই উপকূল।


    নদীগুলোয় চলমান প্রবাহ না থাকায় নদীর তলদেশ উচুঁ হয়ে যাচ্ছে। এতে করে নদীর পানি উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। বসতি এলাকা অপেক্ষা নদীর পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় নদীগুলো ওভারফ্লো হয়ে পানি বসতি এলাকায় প্রবেশ করায় বছারের প্রায় ১২মাস উপকূলের অধিকাংশ ইউনিয়ন পানির নিচে থাকে। ফলে পয়নিষ্কাশনের মারাত্মক অসুবিধায় ভোগে এলাকার মানুষ। গৃহপালিত পশুর জীবন যাপন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। কৃষি জমি পানির নিচে থাকায় এলাকায় কৃষি উৎপাদন একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বেকার হয়েছে খুলনা সাতক্ষীরা উপকূলীয় এলাকার প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। হাতে গোনা কিছু মানুষ জলে এবং জঙ্গলে কাজ করলেও তাতে পরিবারে স্বচ্ছতা ফেরে না। অভাবের তাড়ণায় পিতামাতা শিশু কিশোরদের লেখাপড়া বন্ধ করে জীবনের ঝুকি নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় শ্রমিকের কাজে পাঠাতে বাদ্য হচ্ছে। গত বছর শ্যামনগরের কয়েকটি পরিবারের একাধিক শিশু ঢাকা গাজীপুর ইট ভাটায় দাদন খাটতে যেয়ে প্রাণ হারায়। এছাড়া উপকূলীয় এলাকায় ভয়াবহ হারে হ্রাস পাচ্ছে শিক্ষার হার। কর্মহীনতা যার প্রধান কারণ। সাতক্ষীরা উপকূলের নিন্ম শ্রেনীর বড় একটা গোষ্টি সুন্দরবন নির্ভর হয়ে হরে পড়েছে। কাঠ ও গোলপাতা কাটা, মধু আহরণ, পশু শিকার, মাছ ধরা ইত্যাদি এদের প্রধান পেশা হয়ে উঠেছে। এতে করে প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে সুন্দরবন। জঙ্গলের ঘনত্ব হ্রাস পাওয়ায় জনপদে চলে আসছে বাঘ, হরিণসহ বনজ প্রাণী। যার জন্য বনজীবীরা বাঘের মুখে পড়ছে প্রতিনিয়ত।
    সাতক্ষীরা এমন একটা জেলা যেখানে সরকারি বে-সরকারি কোন কলকারকাখা নেই। আশির দশকে তৎকালিন বস্ত্রমন্ত্রী এম মুনছুর আলী একটি টেক্সটাই মিল (সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস) প্রতিষ্ঠা করলেও পরবর্তি সরকারের বাটপারেরা লুটপাট করে ধ্বংস করে দেয়। বর্তমানে এর (সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস) বিশাল জায়গা ছাড়া আর কিছু নেই। জেলার সামন্য একটা জনগোষ্টি ভোমরা স্থল বন্দরের সুবিধা ভোগ করে থাকেন।
    শিক্ষিত যুবসমাজের জন্য এই জেলায় কোন কর্মসংস্থান না থাকায় বৃহত্তর চাকরী প্রার্থি রাজধানি মুখি হয়ে ওঠে।
    সাতক্ষীরা ভারত সীমান্ত ঘেসা হওয়ায় উৎপাদন মুখি অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান মূল্য সংকটে পড়ে। রাজধানি ঢাকা থেকে কাচামাল এনে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করতে যে খরচ পড়ে দেখা গেছে পাশের রাষ্ট্র ভারতে তার দাম অনেক কম। আবার চায়না পণ্যের মূল্য আরো কম হওয়ায় ঢাকার মার্কেটেও স্থানীয় উৎপাদিত পণ্য বেঁচা যায় না।
    এরকম নানান সমস্যা ও জটিলাতার জেলা উপকূলীয় সাতক্ষীরা।
    শিক্ষা, কর্মসংস্থানসহ রাষ্ট্রীয় সব সুবিধা থেকে সাতক্ষীরা বঞ্চিত। বিভিন্ন নাগরিক সমাজের ব্যানারে সারা বছর আন্দোলন করলেও অদ্যবধি কোন জাতীয় বাজেটে দক্ষিণ উপকূলের জন্য বিশেষ কোন প্রকল্প গ্রহণ বা বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।


    এমতাবস্থায় সাতক্ষীরাবাসীর প্রধান দাবীসমুহ উপকুলীয় নদ-নদীসমুহে প্রবাহ বাড়াতে নদী খননসহ আন্তনদী সংযোগ সৃষ্টিতে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণপূর্বক বরাদ্ধ দিতে হবে। মাওয়া থেকে সুন্দরবন (লিঙ্ক মোংলা, ভোমরা ও বেনাপোল বন্দর) মহাসড়কের আওতায় হাইওয়ে সড়ক ও রেল লাইন নির্মান করতে হবে। পদ্মার এপারে খুলনায় আন্তর্জাতিক আমদানি নির্ভর মার্কেট তৈরি করতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানিকৃত পণ্য খুলনা থেকে দেশব্যাপী সরবরাহ করতে হবে। ভোমরা স্থল বন্দরকে পূর্ণাঙ্গতা দিয়ে রাষ্ট্রীয় সকল আমদানী এখান দিয়ে করতে হবে। জেলার সাত উপজেলায় সাতটি পৃথক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে সাতটি ২০ লাখ শ্রমিক নির্ভর ইকোনোমিক জোন তৈরি করতে হবে। ভারতের বিভিন কোম্পানীর ম্যানুফ্যক্সারিং কারখানা উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরাতে স্থাপন করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা প্রধান স্থপনা সুন্দরবনের শক্তি বৃদ্ধিতে বনের ঘনত্ব বাড়াতে হবে। বিশাল বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেষা সুন্দরবনের পরিধি দিনকিদিন সাগরে ভেঙে যাচ্ছে। বঙ্গপসাগরে সুন্দরবনের ভাঙন রোধে বিশেষ বাধ প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। এশিয়ার বৃহৎ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগরকে পর্যাটন নগর ঘোষণা করতে হবে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে বিশেষায়িত হাসপাতালে উন্নিত করতে হবে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী এমএলএসএস পদে প্রশাসনিক স্থায়ী নিয়োগ দিতে হবে।

  • জেলা নাগরিক কমিটির সভায় পৃথক উপকূলীয় বোর্ড গঠনের দাবী

    সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে সাতক্ষীরা জেলার সাধারণ মানুষকে সময়মত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়া এবং জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে সবধরণের প্রস্তুতি গ্রহণের আহবান জানিয়েছে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি। শনিবার বেলা ১১টায় সংগঠনের এক সভায় এ আহবান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক মোঃ আনিসুর রহিম।
    সভায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবলিত উপকূলীয় অঞ্চলকে দুর্যোগ প্রবন এলাকা ঘোষণা, এলাকার উন্নয়নে পৃথক উপকূলীয় বোর্ড গঠন ও আগামী জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবী জানানো হয়। এছাড়া সাতক্ষীরা জেলার উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত নাভারণ-মুন্সিগঞ্জ রেললাইন ও সাতক্ষীরা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে আগামী বাজেটেই বিশেষ বরাদ্দ রাখার আহবান জানানো হয়।
    সভায় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের গ্রেপ্তারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে তার নি:শর্ত মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানানো হয়।
    সভায় বক্তব্য রাখেন প্রবীন শিক্ষাবিদ প্রফেসর আব্দুল হামিদ, বাসদ নেতা এড. শেখ আজাদ হোসেন বেলাল ও নিত্যানন্দ সরকার, জেলা জাসদের সভাপতি ওবায়দুস সুলতান বাবলু, জেলা বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ইদ্রিশ আলী, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হারুণ অর রশিদ, জেলা গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক আলী নুর খান বাবলু, স্বদেশ পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, উত্তরণের এড. মুনির উদ্দিন, সুশীলনের জিএম মনিরুজ্জামান, নারী নেত্রী ফরিদা আক্তার বিউটি, সাংবাদিক ইয়ারব হোসেন, আসাদুজ্জামান লাভলু, মোঃ মোতাসিম বিল্লাহ, আশরাফ সরদার, এড. আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
    আবুল হোসেনের রোগমুক্তি কামনা:
    জেলা নাগরিক কমিটির অন্যতম নেতা ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটির জেলা সভাপতি কমরেড আবুল হোসেন গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় তার নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে তার আশু রোগমুক্তি কামনা করেছেন কমিটির নেতৃবৃন্দ।

  • প্রাণবৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে শ্যামনগরে মানববন্ধন

    প্রাণবৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে শ্যামনগরে মানববন্ধন


    শ্যামনগর ব্যুরো: ‘জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় আমরা সহযাত্রী’। এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে শনিবার (২২ মে) সকাল ১০ ঘটিকায় সাতক্ষীরার শ্যমানগর উপজেলায় বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নে আকাশনীলা ইকোটুরিজম সেন্টার এর সামনে বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্টান বারসিক’র সহযোগিতায় এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিডিও, সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিম ও উপজলো জনসংগঠন সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে প্রাণবৈচিত্র্য দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে এক মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্টিত হয়েছে।
    মানববন্ধন কর্মসূচিতে এলাকার স্থাণীয় যুব, পেশাজীবী জনগোষ্টী, সাংবাদিক ও উন্নয়ন কর্মী বৃন্দ অংশগ্রহন করেন। মানববন্ধনে উপকুলীয় এলাকার ‘জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে মানুষ কিভাবে ভূমিকা রাখছে এবং কি করা প্রয়োজন স্থাণীয় জনগোষ্টী সে দাবি গুলো ফেস্টুনের মাধ্যমে প্রদর্শন করেন। প্রদর্শন শেষে জনসংগঠনের সভাপতি শেখ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। আলোচনায় বারসিক কর্মকর্তা মননজয় মন্ডলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সিডিও ইয়থ টিমের সাধারন সম্পাদ হাফিজুর রহমান, সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিমের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলী হোসেন, কৃষক নেতা শেখ সিরাজুল ইসলাম, বনজীবী নারী সেলিনা বেগম সহ প্রমুখ।
    দাবি গুলো – সকল প্রাণবৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই, প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করি- বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ি, উপকুলীয় প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায়- টেকসই বাঁধের বিকল্প নাই, প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করি- জীব বৈচিত্র্য রক্ষা করি, উপকুলীয় বেড়ীবাঁধ রক্ষা করি- প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করি, মহামারী করোনায় নিয়ম না মানলে রক্ষা নাই, সুষম খাদ্য নিশ্চিত করি-করোনা সাথে লড়াই করি, সুন্দরবন রক্ষায় এগিয়ে আসি, বৈচিত্র্য রক্ষা করি- সক্ষমতা গড়ি, বৈচিত্র্য রক্ষা করি- দুর্যোগ ঝুঁিক কমাই। উপরোক্ত দাবি গুলো উত্তাপনের সাথে সাথে মানববন্ধন কর্মসূচীর সমাপ্তি হয়।

  • বাঘের আক্রমনে মৌয়াল নিহত


    সংবাদদাতা: সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের দক্ষিণ তালপট্টি এলাকায় বাঘের আক্রমণে রেজাউল ইসলাম (৩২) নামের এক মৌয়াল নিহত হয়েছেন। একই এলাকায় তার বাবাও বাঘের আক্রমণে নিহত হন। সুন্দরবনের সাতক্ষীরা জেলার বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন এর এসও আবু সাঈদ জানান, রেজাউল ইসলামসহ কয়েকজন মৌয়াল গত ৩ মে বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন থেকে মধু আহরণের উদ্দেশ্যে সুন্দরবনে যায়। ঈদের দিন শুক্রবার বিকেলে দক্ষিণ তালপট্টি এলাকায় মধু সংগ্রহকালে বাঘের আক্রমণের শিকার হন মৌয়াল রেজাউল। তবে অন্যান্য মৌয়ালদের প্রতিরোধে বাঘ রেজাউলের মরদেহ ফেলে পালিয়ে যায়। রেজাউলের সাথে থাকা মৌয়ালরা মরদেহ উদ্ধার করে শনিবার দুপুরে লোকালয়ে নিয়ে আসে। দুপুরে শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের চকবারা গ্রামের বাড়িতে মরদেহ পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে।
    মৃত রেজাউল ইসলামের স্ত্রী, বাঘ বিধবা মা, তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। মৃত রেজাউল ইসলামের মা রিজিয়া বেগম লিডার্স বাঘ বিধবা দলের একজন সদস্য। বাঘ বিধবা রিজিয়া বেগমের একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে লিডার্স পরিবারের পক্ষ থেকে লিডার্স এর নির্বাহী পরিচালক গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

  • বিশুদ্ধ পানির সংকটে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝৃকি

    বিশুদ্ধ পানির সংকটে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝৃকি

    মশাল ডেস্ক: জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সাতক্ষীরা জেলায় বিশুদ্ধ পানির সংকট ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে। লবনাক্ততা বৃদ্ধির ফলে এই অঞ্চলের পুকুর এবং নলকূপের মতো মিঠা পানির উৎস দিনদিন কমে আসছে। অপর দিকে বৃষ্টির পানি সংগ্রহের ক্ষেত্রে যে পদ্ধতি তারা অবলম্বন করেতা স্বল্প পরিসরে এবং দীর্ঘ মেয়াদী নয়। দূষিত পানি ব্যাবহারের ফলে বেড়েছে ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, জন্ডিস, গ্যাস্ট্রিক, ইউরিন্যালইনফেকশান, চর্মরোগ, কোষ্ঠকাঠিন্য, যৌনাঙ্গে চুলকানি, ঘা এবং জালাপোড়ার মতো রোগ। নারীদের মধ্যে এই সকল রোগের প্রাদূর্ভাব বেশি দেখা দিচ্ছে যা পরবর্তীতে দীর্ঘমেয়াদী রোগ যেমন টিউমার এবং জরায়ু ক্যান্সারে রুপান্তরিত হচ্ছে।


    সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার দুইটি ইউনিয়ন-ভাড়াশিমলা এবং মথুরেশপুরে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার। বৃষ্টি কম হওয়ার কারনে কালিগঞ্জ ওয়াপদা পুকুরে পানির একেবারে নিচে নেমে আসার কারণে বিভিন্ন পুকুরের সাথে যে পিএসএ ফিল্টার রয়েছে তা এখন একে বার বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। ফলে এই অঞ্চলের মানুষ সরাসরি অথবা ফিটকিরি দিয়ে পানি পান করছে। সরেজমিনে দেখা যায় এসকল পুকুরের পানিতে ব্যাঙাচি জন্ম নিয়েছে। কালিগঞ্জ উপজেলার দশটির বেশি গ্রামের ছয় হাজারের অধিক পরিবারের মানুষ এই পানির উৎস থেকে পানি সংগ্রহ করে থাকে।

    দৈনন্দিন ব্যাবহারের জন্য কালিগঞ্জ ওয়াপদার বিভিন্ন পুকুর থেকে ব্যাঙাচি যুক্ত পানি সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছেন নারীরা। এই ব্যাপারে নারায়নপুর গ্রামের রহিমা খাতুন বলেন“পানির আর কোন উৎস না থাকায় আমরা এই পানি সংগ্রহ করে ব্যাবহার করছি। এছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই। বাজারে যে পানি কিনতে পাওয়া যায় তার দাম পূর্বের তুলনায় দিগুণ। করোনা পরিস্থিতির কারণে আমাদের আয়ের উৎস কমে গেছে, তাই পানি কিনে খাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব না।”
    রহিমা খাতুন আরোও জানান নোংরা পানিতে গোসল করার কারনে নারীদের সাদা ¯্রাব বেশি হচ্ছে (লিউকোরিয়া)। ডাক্তাররা পরিষ্কার পানিতে গোসল করার পরামর্শ দেন, কিন্তু যেখানে খাবার পানিই পাওয়া যায়না সেখানে গোসলের জন্য পরিষ্কার পানি পাওয়া দুষ্কর।
    বিশুদ্ধ পানির সংকট নিয়ে একই গ্রামের সফুরা জানান, খাবার পানির যেমন সমস্যা রয়েছে তেমনই তাদের রান্না এবং গোসলের জন্য নোনা পানি ব্যবহার করতে হয়, ফলে তাদের অধিকাংশের ডায়রিয়া আর আমাশয় এর মতো রোগ লেগেই আছে।

    মথুরেশপুর ইউনিয়নের হাড়দাহেও দেখা গেছে একই চিত্র। কালা বোনিয়ায় পুকুরের পানিও তলানিতে ঠেকেছে, অগত্য মানুষ ঐ পানি সংগ্রহ করে খাচ্ছেন। এই পুকুরের পানি সাত গ্রামের তিনহাজার পরিবার সংগ্রহ করে খাচ্ছেন।
    ভূক্তভুগী হাড়দাহের হালিমা বেগম বলেন“পানি মেপে মেপে খাই। এই গরমে পানি মেপে খেলে কি শরীর থাকে? আমাদের বাড়ির সবারই উরিন্যাল ইনফেকশান। আমাদের এলাকায় শতকরা নিরানব্বইজনের এই সমস্যা আছে বলে আমি মনে করি।”

    পানি বিক্রি করে সংসার চালনো রূপবান বলেন“আগে পিএসএ ফিল্টারের পানি নিয়ে বিক্রি করতাম, কিন্তু এখন পানি নেই। এখন সরাসরি নলকূপের পানি তুলে বিক্রি করছি। এই পানিও অতোটা ভালোনা, কিন্তু উপায় নেই। এছাড়া আর পানি কই? এখনবাধ্য হয়ে এই পানি মানুষকে দিতে হচ্ছে।”

    এই ব্যাপারে মথুরেশপুরের এক গ্রাম্য চিকিৎসক বলেন “ ইউরিন্যালইনফেকশান এবং লিকোরিয়া রোগী এখন একটু বেশি পাচ্ছি। পানি কম খাওয়ার কারনেই উরিন্যালইনফেকশান এবং নোংরা পানিতে গোসলের জন্য লিকোরিয়ার মতো রোগের প্রকোপ বেড়েছে। পরবর্তীতে এই সকল অসুখ থেকে জরায়ুতে ইনফেকশান এবং ক্যান্সারও হতে পারে।”

    অপরদিকে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কর্তব্যরত এমবিবিএস ডাক্তার মাহাতাব হোসেন বলেন“ করোনার মধ্যে সাধারণত জ¦র ছাড়া রোগী কম ভর্তি হচ্ছে বা ডাক্তার দেখাতে আসছে। তবে ইউরিন্যালইনফেকশান, যৌনাঙ্গে চুলকানি এবং সাদা স্রাব (লিউকোরিয়া) এর মতো অসুখ নিয়েও অনেকে আসছেন।”
    এই বিষয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী বলেন “পানির সমস্যার বিষয়টি আমাদের অজানা নয়। ইতো পূর্বে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাথে আমরা বসেছি। বিষয়টি আমরা খুব গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছি,কিন্তু করোনার জন্য এই সমস্যা সমধানে তেমন অগ্রগতি হয়নি।”
    আগে জেলা পরিষদের অধীন বিভিন পুকুরে মাছচাষ করা হতো, স্থানীয় জনগনের পানির চাহিদা পূরণের জন্য এবছর সব পুকুর ছাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও জনান তিনি।

  • শুধু বাঁধ বাঁধলেই হবেনা, বাঁধ সুরক্ষায় গাছ লাগাতে হবে

    শুধু বাঁধ বাঁধলেই হবেনা, বাঁধ সুরক্ষায় গাছ লাগাতে হবে

    নিজস্ব প্রতিনিধি : পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, শুধু বাঁধ বাঁধলেই হবে না, বাঁধ সুরক্ষায় গাছ লাগিয়ে ভরে তুলতে হবে। বাঁধ যাতে আর না ভাঙে সেজন্য গাছ লাগিয়ে জঙ্গল তৈরি করতে হবে। নদীর স্্েরাতের টানে বাঁধ ভাঙন রোধে জেগে ওঠা চর কেটে স্্েরাতেরর দিক পরিবর্তন করতে হবে।

    প্রতিমন্ত্রী শনিবার সকালে সাতক্ষীরার উপকুলীয় উপজেলা আশাশুনি ও শ্যামনগরে সুপার সাইক্লোন আম্পানে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন।
    তিনি বলেন, ভাঙন কবলিত বাঁধের পাশে নদীর বুকে জেগে ওঠা চরের মাটি কেটে ভাঙনকূল রক্ষা করতে হবে। আর সেখানে গাছ লাগাতে হবে। তবেই টেকসই হবে বেড়িবাঁধ। তা না হলে বাঁধ টিকবে না। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী বর্ষার আগেই বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করতে সরকার কাজ করছে। সাতক্ষীরা এবং খুলনার কয়রা এলাকায় সমীক্ষা চালিয়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। উপকূলের ভাঙন কবলিত ১২টি পয়েন্টের বেড়িবাঁধ বাঁধার দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ জায়গায় সেনাবাহিনী কাজ সম্পন্ন করেছে। ১২টি প্রকল্পে সেনাবাহিনীকে ৭৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।


    এ সময় তার সাথে ছিলেন, সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিকল্যাণ মন্ত্রী ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক-এমপি, পানি সম্পদ মন্ত্রালেয়র অতিরিক্ত সচিব রোকন উদ দৌলা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহা পরিচালক পরিকল্পনা ডঃ মোঃ মিজানুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী রফিকউল্লাহ, শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলন, পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরা নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের। এর আগে তিনি সকালে আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার কামালকাটি, ঘোলা, হিজলিয়া-কোলা, হাজরাখালি ও হরিষখালীর আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত বেঁড়িবাধ পরিদর্শন করেন।

  • পাইকগাছা পৌরসভার শহর রক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ন

    পাইকগাছা পৌরসভার শহর রক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ন

    পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি: পাইকগাছা অঞ্চলের মানুষ খুলনার দক্ষিণে উপকূলবর্তী এ জনপদে জলবায়ু ও ভৌগলিক কারণে প্রায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার। বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ পাউবো’র বেড়িবাঁধের ভাঙ্গনে এলাকার মানুষ চরম বিপর্যয়ের মূখে পড়ছে। বাঁধ ভেঙ্গে গেলে তা মেরামত করা এলাকার মানুষের পক্ষে দুঃসাধ্য ব্যাপার। ষাটের দশকে নির্মিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদা বাঁধে সুদীর্ঘ সময় নিয়মিত মাটির কাজ না হওয়ায় বাঁধের বেশির ভাগ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে বর্তমানে নাজুক আকার ধারণ করেছে। বার বার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বেঁড়িবাঁধ গুলো এখন ক্ষত-বিক্ষত। জরুরী ভিত্তিতে টেঁকসই বেঁড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
    পাইকগাছা উপজেলা বিশিষ্ট মানবধিকার কর্মী ও এ্যাড. এফএমএ রাজ্জাক বলেন, পাইকগাছার বেশির ভাগ বাঁধে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে বেড়িবাঁধ নিচু ও চিকন হয়ে গেছে। তাছাড়া অনেক স্থানের বাঁধ কেটে লোনা পানি তুলে রাস্তার ক্ষতি করে চিংড়ি চাষ হচ্ছে। ফলে কর্তৃপক্ষ ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের জ্ঞাত থাকার পরও সেগুলো সংস্কারের কোন পদক্ষেপ না নিয়ে উপজেলা পাউবো জেগে জেগে ঘুমাচ্ছে। এলাকাবাসীরও একই অভিযোগ। তিনি আরও বলেন, “আমার জিজ্ঞাসা, এদের কাজ কি? বর্ষা মৌসুমের আগে এসকল বাঁধে সংস্কার কাজ না হলে যেকোন মুহুর্তে এসব বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হবে।
    এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানাযায়, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাত, ২০০৯ সালে ২৫ মে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় আইলার জলোচ্ছাস, পৌরসভার দক্ষিণ-পশ্চিমে শিববাটি থেকে বোয়ালিয়া পর্যন্ত একাধিক স্থানে ভেঙ্গে যায়। ঘরবাড়ি, ফসল ও লিজ ঘের পানিতে তলিয়ে যায়। এলাকাবাসী চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয় এলাকাবাসী ভাঙ্গনকৃত বাঁধগুলো স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে কোন মতে মেরামত করে পানি আটকানো রোধ করে। সে ভাবেই বেঁড়িবাঁধ পড়ে রয়েছে। সরজমিনে এসকল স্থান গুলো ঘুরে দেখা গেছে, অরক্ষিত পাইকগাছা পৌরসভা শহর রক্ষা বাঁধ। উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দুরে শিববাটির আশ্রায়ন প্রকল্পস্থ ইন্দুকাটা স্থানে ওয়াপদার একাধিক জায়গায় ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধ একই ভাবেই পড়ে রয়েছে। ভাঙ্গনের জায়গা দিয়ে চুয়ে চুয়ে লোনা পানি ঢুকছে। বাঁধটি এখনই সংস্কার না করলে বর্ষা মৌসুমে, অতিরিক্ত জোয়ারের পানি বৃদ্ধিতে ভেঙ্গে আবারও প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটার আশংকা করছে এলাকাবাসী। একইসাথে এই দীর্ঘ পরিক্রমায় এখনো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
    পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর জানান, গত ১০ বছর যাবত শুনছি বিশ্বব্যাংক ও জাইকা নতুন বেঁড়িবাঁধ নির্মাণ করবে। উপজেলা পর্যায়ে সভা সেমিনারের বেঁড়িবাঁধ নিয়ে বহুকথা বলেছি কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। তিনি সরকারের কাছে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জোর দাবি জানান। জরুরী ভিত্তিতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে স্থানীয় এমপি, উপজেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।

  • বর্ষা মৌসুমের আগেই উপকূলে স্থায়ী বেঁড়ি বাঁধের কাজ শুরু হবে: পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী

    বর্ষা মৌসুমের আগেই উপকূলে স্থায়ী বেঁড়ি বাঁধের কাজ শুরু হবে: পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী

    নিজস্বা প্রতিনিধি : পানি সম্পদ মন্ত্রানালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, সাতক্ষীরা এবং খুলনার কয়রা এলাকায় সমীক্ষা চালিয়ে টেকসই বেঁড়ি বাঁধের পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এটি একনেকে অনুমোদন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই এই এলাকায় স্থায়ী বেঁড়ি বাঁধের কাজ শুরু হবে।

    শুক্রবার সকালে আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী সাতক্ষীরার আশাশুনি ও শ্যামনগর এবং খুলনার কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে প্রতিমন্ত্রী


    তিনি গতকাল শুক্রবার সকালে আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী সাতক্ষীরার আশাশুনি ও শ্যামনগর এবং খুলনার কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন।
    তিনি আরও বলেন, আম্পানের পর এই এলাকার মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখেছি। আগামীতে যাতে আর কোন ক্ষয় ক্ষতি না হয় সেই লক্ষে আমরা কাজ করছি। ১২ টি পয়েন্টে সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ জায়গায় সেনাবাহিনী কাজ সম্পন্ন করেছে। ১২ টি পকল্পে সেনাবাহিনীকে ৭৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, করোনার কারনে একটু দেরী হলেও ইতিমধ্যে বেঁড়িবাধ সংস্কার করে লোকালয়ে পানি প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের দুঃখ দূর্দশা অনেকটা লাঘব হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বেঁড়ি বাঁধ দিতে গিয়ে যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। করোনা ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভ্যাকসিনে কোন ভয় নেই। অনেকে গুজব ছড়াচ্ছে। ৭ তারিখ থেকে ভ্যাকসিনের দেওয়া হবে। এটা দিলে সবাই সুরক্ষা থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন। মাক্স ছাড়া চলা যাবে না। দেশ সমৃদ্ধশালী হবে সেটা দেখতে হলে বেঁচে থাকতে হবে।
    এ সময় তার সফর সঙ্গী ছিলেন, খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের সাংসদ আক্তারুজ্জামান বাবু, পানি সম্পদ মন্ত্রালেয়র অতিরিক্ত সচিব রোকন উদ দৌলা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহা পরিচালক (পরিকল্পনা) ড. মো মিজানুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী রফিকউল্লাহ, কয়রা উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের প্রমুখ। তিনি এ সময় শ্যামনগরের দাতিনাখালী, লেবুবুনিয়া, কয়রার গোলখালী, বেদকাশী, হরিণখোলা ভাঙন এলাকার পরিদর্শন করেন।

  • আশাশুনিতে ভেড়ীবাঁধের নির্মাণ কাজ পরিদশর্নে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী

    আশাশুনিতে ভেড়ীবাঁধের নির্মাণ কাজ পরিদশর্নে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী

    আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহুনিয়া-চাকলায় আম্পানে ভেঙে যাওয়া ভেড়ীবাঁধ ও ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। শুক্রবার বিকাল ৩টায় ভেঙে যাওয়া ভেড়ীবাঁধ ও ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, ভাঙ্গন রোধে সরকার খুবই আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছে। সে লক্ষে আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থ ভেড়ীবাঁধের ভাঙ্গন আটকাতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

    আগামী অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই প্লাবিত অবস্থার হাত থেকে রক্ষা হবে ইনশাআল্লাহ। এসময় তিনি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন ও ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষের সার্বিক খোঁজ খবর নেন। ভেঙে যাওয়া ভেড়ীবাঁধ ও ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনকালে পাইকগাছা ও কয়রার সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবু, শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় চিপ ইঞ্জিনিয়ার, আশাশুনি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুধাংশু কুমার সরকার, প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু দাউদ ঢালী, চেয়ারম্যান প্রার্থী বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ ফকির, বীরমুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান গাজী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু দাউদ ঢালী, হারুন-উর-রশীদ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

  • ব্রহ্মরাজপুরে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ

    ব্রহ্মরাজপুরে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ

    ব্রহ্মরাজপুর (সদর) প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুরে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ডি বি ইউনাইটেড হাইস্কুল মাঠে স্টার্ট ফান্ড ও এফসিডিও এর অর্থায়নে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভূমিজ ফাউন্ডেশনের বাস্তবায়নে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ ১৯৯টি পরিবারের মাঝে পরিবার প্রতি ৯ হাজার টাকার প্রথম কিস্তিতে নগদ ৬টি সাবান, ১কেজি ডিটারজেন্ট, ১০টি মাক্স, ৪প্যাকেট ন্যাপকিন এবং ৪হাজার পাঁচশত টাকা করে বিতরন করা হয়। নগদ অর্থ ও হাইজিন বিতরণ অনুষ্ঠানে ৯নং ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম শহিদুল ইসলামের সভাপতিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান বাবু। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গনেশ চন্দ্র মন্ডল, ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নিলিপ কুমার মল্লিক, ভূমিজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী প্রধান অচিন্ত্য সাহা সহ প্রধান অতিথির সফর সঙ্গীরা। নগদ অর্থ ও হাইজিন বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে চলেছে তাই সকলকে এই টাকা দিয়ে দীর্ঘ পরিকল্পনা করে ছাগল, হাস-মুরগি বা বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যার আহ্বান রাখেন। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভূমিজ ফাউন্ডেশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক উজ্জ্বল কুমার চক্রবর্তী।

  • আশাশুনি দয়ারঘাট বেড়ী বাঁধের ভবিষ্যৎ নিয়ে এলাকায় সংশয়

    আশাশুনি দয়ারঘাট বেড়ী বাঁধের ভবিষ্যৎ নিয়ে এলাকায় সংশয়

    জহুরুল কবীর: আশাশুনি সদরে প্রলয়ঙ্করী ঘুর্ণিঝড়ে ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হওয়া পাউবো’র বেড়ী বাঁধের নির্মান কাজ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে শংসয়ের অন্ত নেই। আর কত মাস গেলে বাঁধের নির্মান কাজ করা হবে? এমন হতাশা জনক প্রশ্নের উত্তর কারো জানানেই।
    আশাশুনি সদরের দয়ারঘাট বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হয়েছে ৬ মাস আগে। দীর্ঘ ৬ মাসে নদীর জোয়ার ভাটার তোড়ে এলাকার মানুষের নাভিঃশ্বাস উঠছে। তাদের চরম দুরাবস্থা দেখলে শান্তনা দেওয়ার কোন ভাষা খুঁজে পাওয়া যাবে না। ৬ মাসের মধ্যে অনেক উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, জন প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সবাই দ্রুত বাঁধ রক্ষার কাজ করা হবে বলে আশ্বাসের বাণী শুনিয়েছেন। আশ্বাসের বাণী শুনতে শুনতে মানুষের মনে কর্মকর্তা, জন প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি ভিন্নরূপ ধারনার সৃষ্টি হয়েছে। আদতে আর কত মাস পরে নির্মান কাজ করা হবে এনিয়ে হতাশার অন্ত নেই। বাঁধ নির্মানের লক্ষণ না দেখে এবং কর্তৃপক্ষের বড় বড় বুলির ঝলকানি নামক আশ্বাসকে এলাকার ভুক্তভোগিরা তামাশা বলে আখ্যায়িত করছেন। তাদের বিতশ্রদ্ধ প্রশ্ন, এহেন তামাশা বন্ধ হবে কবে? তারা আর আশ্বাস, প্রতিশ্রুতি বা শান্তনার গল্প শুনতে চায়না, তারা বাস্তবে কাজ দেখতে প্রত্যাশী।

  • শ্যামনগরে প্রস্তাবিত উপকূল দিবস পালিত হয়েছে

    শ্যামনগরে প্রস্তাবিত উপকূল দিবস পালিত হয়েছে

    • শ্যামনগর প্রতিনিধি:

    শ্যামনগর উপজেলার নীলডুমুর আলাউদ্দিন মার্কেটে বিকাল তিনটার বুড়িগোয়ালিনী সুন্দরবন সমাজ উন্নয়ন ক্লাবের উদ্যোগে প্রস্তাবিত ১২ নভেম্বর উপকূল দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বুড়িগোয়ালিনী সুন্দরবন সমাজ উন্নয়ন ক্লাবের সভাপতি উপকুল সাংবাদিক আব্দুল হালিমের সভাপতিত্বে উপকুল দিবস ঘোষণার দাবী নিয়ে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃনাল কান্তি বিশ্বাস।

    বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মাস্টার তাজুল ইসলাম, সাংবাদিক রঞ্জিত বর্মন, টুরিস্ট পুলিশের এ এস আই রবিউল ইসলাম, সিএসআরএল শ্যামনগর জলবায়ু পরিষদের পীযূষ বাউলিয়া পিন্টু , সাংবাদিক বিল্লাহ হোসেন, প্রমুখ।সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বুড়িগোয়ালিনী সুন্দরবন সমাজ উন্নয়ন ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম ।

    উক্ত আলোচনা সভায় ১৯৭০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে সে সময় নামকরণ করা হয়েছিল ভোলা সাইক্লোন। উপকূল দিবস উপলক্ষে প্রস্তাবিত দাবি সমূহ নিয়ে আলোচনা করে আলোচক বৃন্দ, দাবি ১২ নভেম্বরকে উপকূল দিবস ঘোষণা করতে হবে, দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল কে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করতে হবে, উপকূল রক্ষার্থে উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে, উপকুলীয় এলাকার জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন, উপকুলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, সুপেয় পানির প্রকল্প গ্রহণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ বিভিন্ন দাবী উত্থাপন করা হয়।

    স্মরণীয় ৭০- এর ১২ নভেম্বর,১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর উপকূলবাসীর জন্য স্মরণীয় দিন এই দিন বাংলাদেশের উপকূল এর উপর দিয়ে বয়ে যায় সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় যার নাম ছিল ভোলা সাইক্লোন, এই ঝড়ে লন্ডভন্ড করে দেয় উপকূল। প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের প্রাণ হানি ঘটে। এই ঘূর্ণিঝড় গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল, সর্ব কালের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগে হিসাবে এ টি কে আখ্যা দেওয়া হয়েছে এটির নাম ছিল ভোলা সাইক্লোন। ওই ঘূর্ণিঝড় টি ৮ই নভেম্বর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট হয়।

    ক্রমশ শক্তিশালী হতে হতে এটি উত্তর দিকে অগ্রসর হতে থাকে, ১১ এটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ১৮৫ কিলোমিটারে পৌঁছায় , ঐ রাতে উপকূলে আঘাত হানে, জলোচ্ছাসের কারণে উপকূলীয় অঞ্চল ও দ্বীপ সমূহ প্লাবিত হয়, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ছিল ভোলা তজুমদ্দিন উপজেলা। ওই সময়ে সেখানকার ১ লাখ ৬৭ হাজার মানুসের মধ্যে ৭৭ হাজার মানুষের প্রাণ হারায় ঘটনাটী ছিল অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। ৭০-এর ঘূর্ণিঝড়ে মনপুরা উপকূলে সাত হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।

  • ‘সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্প’ :  পরিকল্পনা

    ‘সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্প’ : পরিকল্পনা

    i)     সুন্দরবনে জীববৈচিত্র্য রক্ষা, প্রকৃতি পর্যটন উন্নয়ন, বনজসম্পদ রক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বন ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জীববৈচিত্র্য উন্নয়নের জন্য ‘সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্প’ প্রস্তাবনা প্রস্তুত করে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ-প্রকল্পের অধীন বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত উল্ল্যেখযোগ্য কার্যক্রমসমূহ:

    • সুন্দরবনের ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহ নিশ্চিতকরনের জন্য পুকুর খনন, টহলফাঁড়ি নির্মাণ, ফাইবার বডি ট্রলার ক্রয়, পন্টুন গ্যাংওয়ে নির্মাণ, বুষ্টির পানি সংরক্ষণ আধার এবং স্টাফদের প্রশিক্ষণ প্রদান;
    • সুন্দরবন নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর টেকসই জীবিকা নির্বাহ নিশ্চিতকরনের জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মাধ্যমে ৫০,০০০ নির্ভরশীল জনেগোষ্ঠীর বিকল্প জীবিকায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ৩০,০০০ সম্পদ সংগ্রহকারীর আইডি কার্ড প্রদান;
    • সহব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রাতিষ্ঠানিকীকরনের মাধ্যমে সুন্দরবন সুরক্ষায় সহায়তা করার লক্ষ্যে কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপের সদস্যকে ভাতা প্রদান;
    • সুন্দরবনের অভ্যন্তরে পানির প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভরাট হয়ে যাওয়া খাল/ নদীসমূহ পুনর্খনন করা;
    • বিজ্ঞানভিত্তিক বন-ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যে সুন্দরবনের বনজসম্পদ, মৎস্যসম্পদ, বাস্তসংস্থান সংক্রান্ত সার্ভে ও তথ্য সংগ্রহ করা;
    • ২০২১-২২ সনে ক্যামেরা ট্র্যাপিং-এর মাধ্যমে বাঘ মনিটরিং (পরিবীক্ষণ) কার্যক্রম সম্পন্ন করা;

    ii)    সুন্দরবনে পরিবেশ বান্ধব পর্যটন (Ecotourism) সুবিধা সম্প্রসারণ ও মান উন্নয়নের মাধ্যমে স্থানীয় বন নির্ভর জনগোষ্ঠীর বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা এবং সুন্দরবনের সম্পদের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসকরনের মাধ্যমে সুন্দরবনের সুরক্ষায় সহায়তা করার উদ্দেশ্যে ‘সুন্দরবনে পরিবেশ বান্ধব পর্যটন (ইকোট্যুরিজম) সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্প’ প্রস্তাবনা প্রস্তুত করে অনুমোদনের জন্য ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে।  এ-প্রকল্পের অধীন বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত উল্লেখ্যযোগ্য কাযক্রমসমূহ:

    • প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে বিদ্যমান প্রকৃতি নির্ভর পর্যটন কেন্দ্র, যেমন: করমজল, হাড়বাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, হিরনপয়েন্ট, দুবলারচর, কলাগাছিয়া ইত্যাদি এলাকার সেবার মান উন্নয়ন সম্ভব হবে;
    • সুন্দরবনের অভ্যন্তরে নতুন ৪টি প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র যথা: শরণখোলা, আন্ধারমানিক, কালাবগী ও শেকেরটেক ইকোটুরিজম কেন্দ্র স্থাপন করা সম্ভব হবে;
    • প্রকল্পের মাধ্যমে সহব্যবস্থাপনা পদ্ধতিতে সম্পৃক্ত বননির্ভর জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করে প্রকৃতি পর্যটনের মাধ্যমে তাদের দারিদ্র্য বিমোচনে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

    iii)     সুন্দরবনে ডলফিন সার্ভের মাধ্যমে নতুন ডলফিন হটসুট নির্ণয় পূর্বক সংরক্ষক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

    iv)     সুন্দরবনে মৎস্যসম্পদ ও কাকড়া স্টক জরিপ করা হবে।

  • উপকূলবাসীকে রক্ষাসহ ২১ দফা দাবীতে দশসহ¯্রাধিক গণস্বাক্ষরসহ প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি দিয়েছে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি


    সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: সাতক্ষীরাসহ উপকূলীয় এলাকার মানুষকে নদীর বেড়িবাঁধ ভাঙন ও জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষার দাবীতে ১০ হাজার ৮৮৭ জনের গণস্বাক্ষরসহ প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়েছে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি। ১৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দুই ঘন্টাব্যাপি অবস্থান সমাবেশ শেষে বেলা ১টার দিকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে উক্ত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন।
    এরপূর্বে বেলা ১০টা ৪৫টায় শুরু হওয়া অবস্থান সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক মো. আনিসুর রহিম। সমাবেশের বক্তারা বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর সাতক্ষীরাসহ উপকূলের মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। এখনো অনেক স্থানে মানুষের বাড়ি ঘর রাস্তা-ঘাটে জোয়ার-ভাটা প্রবাহিত হচ্ছে। হাটু পানি-কোমর পানিতে বসবাস করছে সাতক্ষীরা শহরের বদ্দিপুর, ইটাগাছা, কাটিয়া মাঠপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ। কিন্তু সমস্যা সমাধানে সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও তা মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে তেমন কোন কাজে আসছে না।
    বক্তারা আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, উজানের নদ-নদীগুলোর সাথে এখানকার নদ-নদীর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের যত্রতত্র প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং অপরিকল্পিত মাছের ঘের নির্মাণের কারণে এবং পোল্ডারের ভিতরের পানি নিস্কাশনের খালগুলো লীজ প্রদান ও বেদখল হয়ে যাওয়ায় সাতক্ষীরাসহ উপকূলীয় এলাকা এখন দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পরিণত হয়েছে।
    বক্তারা আরো বলেন, এই এলাকা দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদের ভাটিতে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা ও আশাশুনির দক্ষিণাংশ এবং খুলনার কয়রা উপজেলা ও পাইকগাছার দক্ষিণাংশের বেড়িবাঁধ প্রতিবছর ভাঙছে। আবার ঐ কপোতাক্ষের উজানে পাইকগাছা ও আশাশুনির উত্তরাংশ তালা, কলারোয়া, কেশবপুর, মণিরামপুরসহ উজানের অংশে প্রতিবছর জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। একই অবস্থা খোলপেটুয়াসহ অন্যান্য নদীগুলোর। প্রতিবছরই নদী ভরাট প্রক্রিয়া ভাটির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আর সেই নদী ভরাটের কেন্দ্রস্থলের আশে-পাশেই সবচেয়ে বেশি ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে।
    বক্তারা আরো বলেন, ইতোমধ্যে কপোতাক্ষ নদ খননে ৫৩১ কোটি টাকার দ্বিতীয় প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সাতক্ষীরা শহর ও পাশ্ববর্তী এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে ৪৭৬ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শ্যামনগর, আশাশুনি ও কয়রা এলাকার ভাঙন প্রতিরোধে কয়েক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
    বক্তারা বলেন, একটি পোল্ডার বা একটি এলাকাকে কেন্দ্র করে প্রকল্প তৈরী করে ভাঙন বা জলাবদ্ধতা সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা কম। এজন্য উপকুলীয় এলাকা তথা সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলা নিয়ে সমীক্ষার পর একটি সমন্বিত প্রকল্প গ্রহণের দাবী জানান তারা।
    প্রধানমন্ত্রীর বরাবর প্রেরণকৃত স্মরকলিপিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নদী ভাঙন ও জলাবন্ধতা কবলিত উপকূলীয় এলাকাকে ‘দুর্যোগ প্রবন এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা, এই এলাকার উন্নয়নে পৃথক অথরিটি গঠন, দুর্যোগের কারণে ব্যাপকহারে অভিবাসন বন্ধ করতে বিশেষ বরাদ্দ ও অর্থনৈতিক প্রকল্প গ্রহণ, জলাবদ্ধ ও ভাঙন কবলিত এলাকার দরিদ্র মানুষের জন্য স্থায়ী রেশনের ব্যবস্থা, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী, মজবুত ও টেকসই বেড়িবাঁধ পুন:নির্মাণ, সামগ্রীক উন্নয়ন অংশিদার সুনির্দিষ্ট এসডিজি অর্জনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গৃহীত ডেল্টা ও ব্লু প্লানের আওতায় টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা ও বেড়িবাঁধ নির্মাণে স্থানীয় জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার দাবী জানানো হয়।
    স্মারকলিপিতে জলাবদ্ধতার হাত থেকে সাতক্ষীরা শহর বাঁচাতে পানি নিস্কাশে

  • ৬৫ দিন পর সুন্দরবনে প্রবেশের   অনুমতি প্রদান

    ৬৫ দিন পর সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি প্রদান

    নিজস্ব প্রতিনিধি: পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে বিভিন্ন নদী খালে দীর্ঘ ৬৫ দিন জেলেদের মাছ-কাঁকড়া আহরণ বন্ধ থাকার পর গত পহেলা সেপ্টেম্বর হতে পুনরায় বন বিভাগের পক্ষ হতে অনুমতি প্রদান শুরু হয়েছে। এতে করে সুন্দরবন উপকূলীয় পেশাদার জেলেরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ শুরু করেছে। সুন্দরবনে পুনরায় মাছ-কাঁকড়া আহরণ শুরু করতে পেরে জেলে পরিবারের মধ্যে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে।

    সংশ্লিষ্ঠ সুত্রে জানা যায়, গত পহেলা সেপ্টেম্বর হতে অদ্যবধি আড়াই হাজার জেলে প্রবেশ ফি দিয়ে সুন্দরবনের ভেতর প্রবেশ করেছে। যা বিগত বছরের তুলনায় দ্বিগুন। মাছ আহরনের জন্য জন প্রতি প্রবেশ ফি ৭ টাকা এবং কাঁকড়া আহনের জন্য ৬ টাকা নির্ধারন করা হয়েছে। একজন জেলে সর্বোচ্চ ৭ দিন সুন্দরবনে মাছ-কাঁকড়া আহরণ করতে পারবে। এসময়ে আহরিত মাছ-কাঁকড়ার পরিমান হিসাব করে সরকারি রাজস্ব দিতে হবে জেলেদের।
    দীর্ঘদিন পর সুন্দরবনে মাছ-কাঁকড়া আহরণ করতে পেরে তারা আনন্দিত। জনজীবনে স্বস্তি ফিরে পেয়েছে জেলে পরিবার।

    দীর্ঘদিন পর পুনরায় অনুমতি দেওয়ায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জেলে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে। তাছাড়া নদী খালে প্রচুর পরিমান মাছ ও কাঁকড়া পাওয়া যাচ্ছে। জেলেদের যাতে নিরাপদে মাছ-কাঁকড়া আহরণ করতে পারে সে জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে টহল জোরদার করা হয়েছে বলে বন বিভাগ সুত্রে প্রকাশ।

  • ৮০ হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দী  ॥ খাদ্য পানি স্যানিটেশন বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে

    ৮০ হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দী ॥ খাদ্য পানি স্যানিটেশন বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে


    বিএম আলাউদ্দীন,আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, শ্রীউলা ও আশাশুনি সদরে আম্ফানে ভেড়ী বাঁধ ভাঙ্গনের পর বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) নদীর পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে ও প্রচুর বৃষ্টিপাতের প্রভাবে রিং বাঁধ ভেঙ্গে ৮০ সহ¯্রাধিক মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। এলাকার খাদ্য, সুপেয় পানি, স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকায় হাহাকার বয়ে যাচ্ছে। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়া ও বিদ্যুত না থাকায় যোগাযোগের অভাবে মানুষ বিচ্ছিন্ন দীপে বসবাসের মত বসবাস করছে। ৩ মাস আগে ইউনিয়ন ৩টির একাধিক স্থানে আম্ফানের তান্ডবে ভেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে মানুষ ঘরবাড়ি, মৎস্য ঘের, ফসল, সহায় সম্পদ হারিয়ে করুন পরিণতির সাথে যুদ্ধ করে কোন রকে বেঁচে ছিল। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের থেকে কমপক্ষে ৩/৪ ফুট বেশী উচু হয়ে রিং বাঁধ ভেঙ্গে ইউনিয়ন ৩টির নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে শুরু করে। রবিবার পর্যন্ত প্রতাপনগর ইউনিয়নের (সম্পুর্ণ) ১৭টি গ্রামের ৩৬ সহ্রাধিক মানুষ, শ্রীউলা ইউনিয়নের (সম্পূর্ণ) ২২টি গ্রামের ৩৭ সহ¯্রাাধিক মানুষ এবং আশাশুনি সদর ইউনিয়নের আংশিক ৯ টি গ্রামের প্রায় ৭ হাজার মানুষ প্লাবিত হয়। প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের মানুষ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র, স্কুল, বাড়ির ছাদ, রাস্তার উপর পলিথিন দিয়ে ছেয়ে বসবাস করছেন। অনেকে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। পুরো এলাকার সড়ক ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। খাদ্য সংকট ও সুপেয় পানির অভাব প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। পশু পাখির বসবাস ও খাদ্য যোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। কাচা ঘরবাড়ি ভেঙ্গে পড়তে শুরু করেছে। কাদাকাটি প্রতাপনগর সড়কের আনুলিয়া থেকে প্রতাপনগর এবং আশাশুনি শ্রীউলা সড়কের অর্ধেকের বেশী পানি নিমজ্জিত ও সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকায় ভঙ্গস্তুপে পরিণত হয়েছে। পানি আটকানো সম্ভব না হওয়ায় পানি পাশ^বর্তী ইউনিয়নের দিকে ক্রমে ক্রমে ধাপিত হচ্ছে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। শ্রীউলা ইউনিয়নে ৭২ মেঃটন ও প্রতাপনগর ইউনিয়নে ১৩ ও ২৫ মেঃটন চাউল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মূল বাঁধ নির্মানের কাজ এখনই শুরু সম্ভব না হলেও দ্রুত রিং বাঁধ আটকে এলাকাবাসীকে রক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসক ঘোষণা দিয়েছেন। এসময় প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন, শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল ও আশাশুনি সদর ইউপি চেয়ারম্যান স ম সেলিম রেজা মিলন এসময় তাদের সাথে ছিলেন।