Category: আইন-আদলাত

  • আজ বিশ্ব বাঘ দিবস : দু’দশকে বনদস্যুদের শিকার হয়েছে সুন্দরবনের বিপুল সংখ্যক বাঘ

    আজ বিশ্ব বাঘ দিবস : দু’দশকে বনদস্যুদের শিকার হয়েছে সুন্দরবনের বিপুল সংখ্যক বাঘ

    নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এদিনে ঘটা করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হলেও নানা সংকটে গত দু’যুগে বনদস্যু ও চোরা শিকারীদের শিকার হয়েছে সুন্দরবনের রেকর্ড পরিমাণ রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বন উজাড়, আন্তর্জাতিক বাজারে বাঘের চাহিদা এর অন্যতম কারণ।
    বিভিন্ন সময় উদ্ধার হওয়া বাঘের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, বাঘের শাবক সর্বোপরি বাঘ শুমারী তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ১৬ বছরে ৫৭ টি বাঘ হত্যার তথ্য থাকলেও বাস্তবে এর সংখ্যা অনেক বেশী বলে জানিয়েছেন বনজীবিরা।
    বিভিন্ন সময়ে নানা গবেষণা, ব্যক্তি বা সংস্থা বাঘ হ্রাসের কারণ হিসেবে নানা মন্তব্য করলেও বনজীবি ও সুন্দরবন বিশেষজ্ঞরা আশংক্সক্ষাজনকহারে বাঘ হত্যার জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বনবিভাগসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দূর্বলতাকেই দায়ী করছেন। সর্বশেষ ২০১৫ সালে ‘ক্যামেরা ট্র্যাপ’ পদ্ধতিতে গণনা শেষে দেখা যায়, সুন্দরবনে বাঘ রয়েছে মাত্র ১০৬টি। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফের শরু হওয়া বাঘ শুমারীর মাঠ পর্যায়ের কাজ শেষ হয় মে মাসে। তবে এখনো প্রকাশিত হয়নি শুমারীর প্রতিবেদন। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে পালিত হচ্ছে বিশ্ব বাঘ দিবস।
    প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে থাইল্যন্ডের হুয়ানে অনুষ্ঠিত হয় টাইগার রেঞ্জ দেশ সমূহের ‘এশিয়া মিনিষ্ট্রয়াল কনফারেন্স’। সম্মেলনে বাঘ সংরক্ষণে ৯দফা পরিকল্পনাসহ সিদ্ধান্ত হয় যে, প্রতি বছর ২৯ জুলাই পালিত হবে বিশ্ব বাঘ দিবস। তখন থেকেই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করা।
    জানা যায়, বিগত ২০১৫ সালে মাত্র ১০ মাসের ব্যবধানে সবোর্চ্চ ৯ টি বাঘের চামড়া উদ্ধার হয়। এর মধ্যে কয়রার গোলখালী থেকে অক্টোবর মাসে একসাথে ৩ টি বাঘের চামড়া উদ্ধার হওয়ায় বনবিভাগের ভূমিকা নিয়ে রীতিমত প্রশ্ন দেখা দেয়। ঐ বছরের ৮ আগস্ট ৬৯ পিচ বাঘের হাড়সহ কয়রার এনায়েত হোসেন ও বাবু হোসেন নামে দু’চোরা শিকারীকে খুলনার লঞ্চ ঘাট এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের রমজাননগরের টেংরাখালী গ্রামের চোরা শিকারীদের দ্বারা পাচারকৃত ৪ টি বাঘের শাবক উদ্ধার হয় ঢাকার শ্যামলী থেকে।
    ২০১৫ সালের ২৬ জুলাইয়ের ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতির শুমারী অনুযায়ী সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে মোট ১০৬ টি বাঘের অস্তিত্ব থাকলেও এর আগে ‘পাগ মার্ক’ পদ্ধতির শুমারী অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৫০ টি। শুমারী অনুযায়ী মাত্র ৫ বছরের ব্যবধানে সুন্দরবন থেকে বাঘ কমেছে ৩৪৪টি। ২০০৪ সালের এক গবেষনায় সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি। এর মধ্যে পুরুষ ১২১টি, স্ত্রী ২৯৮টি এবং বাচ্চা ২১টি। সব মিলিয়ে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় কয়েক বার বাঘ শুমারী হলেও বাঘের প্রকৃত সংখ্যা কত তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।

    ২০১৫ সালের ৬ জুলাই প্রকাশিত বাঘের ঘনত্ব শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয় অবৈধ শিকার, খাদ্যের অভাব ও প্রকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবনে বাঘের অস্তিত্ব কমেছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বনদস্যুসহ চোরা শিকারীদের বাঘ শিকার, সুন্দরবনের ভেতরের নদী সমূহে নৌচলাচল ও বনের পাশে শিল্প অবকাঠামো নির্মাণ বাঘের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
    ২০১৬ সালে আমেরিকার দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি অর্থায়নে ‘বাঘ প্রকল্পে’ ক্যামেরার সাহায্যে গণনার জন্য খুলনা বিভাগীয় বণ্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এ প্রকল্পকে জনবল ও ৭০টি ডিজিটাল ক্যামেরা সরবরাহ করে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ফের বাঘ প্রকল্প ক্যামেরা ট্রাপিং এর মাধ্যমে গণনার কাজ শুরু করে এবং মে মাসে এর কাজ সম্পন্ন করে। এখনো তার ফলাফল পাওয়া যায় নি। তবে বাঘের সংখ্যা বাড়বে না কমতে পারে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য না করলেও সুন্দরবনের ৩টি অভয়ারণ্য এলাকায় গাছের সাথে ক্যামেরা বেঁধে এর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
    বন সংরক্ষক কার্যালয়ের প্রধান সহকারী মন্দিরা বলেন, সর্বশেষ প্রতিবেদন প্রকাশের আগে এখন পর্যন্ত সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১০৬টি। খুলনা সার্কেলের উপ-বন সংরক্ষক মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, বাঘ গনণার প্রতিবেদন প্রকাশিত না হলে কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে আগের চেয়ে এখন অধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে গণনা কার্যক্রম হচ্ছে। বাঘ প্রকল্পের গবেষনা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল¬াহ আল মোজাহিদ বলেন, প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। বাঘের প্রতিবেদন প্রকাশ করবে সরকার। তবে বাঘের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করেন এ গবেষক।
    পশ্চিম বন বিভাগীয় কর্মকর্তা মোঃ বশিরুল-আল-মামুন বলেন, বাঘ শুমারী একটা কঠিন কাজ। আধুনিক পদ্ধতি গনণা হচ্ছে। প্রতিবেদন প্রকাশ না হলে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
    সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের সূত্র জানায়, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের লোকালয়ে ঢুকে পড়ে গণ পিটুনি, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডরের জলোচ্ছ্বাসে, বার্ধক্যজণিত কারণে এবং চোরা শিকারীদের হাতে মোট ১৭ টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার মারা পড়েছে। এর মধ্যে বন সংলগ্ন মোংলা ও শরণখোলা উপজেলার লোকালয়ে ঢুকে পড়লে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা, স্বাভাবিক মৃত্যু হয় ৪ টি ও সিডরের জলোচ্ছ্বাসে ১ টি বাঘ মারা যায়। আর ৮ টি নিহত হয় চোরা শিকারীদের হাতে। একই সময়ে ১ নারী সহ মোট ২৬ জন বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারায়। এদের মধ্যে ময়না নামের মোংলার জয়মনি এলাকার বৃদ্ধা গ্রাামবাসী ছাড়া সবাই বনজীবি।
    সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের বিভাগীয কর্মকর্তা বশিরুল আল মামুন জানান, গত দু’দশকে পশ্চিম বন বিভাগে ১৫ টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিহত হয়। এর মধ্যে লোকালয়ে ঢুকে গণপিটুনির শিকারে নিহত হয় ৮ টি। এছাড়া ২০০১ থেকে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারী পর্যন্ত প্রায় দু’দশকে সেখানে ২৩৪ জন নারী-পুরুষ বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশই বনজীবি ও সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে চিংড়ি রেণু আহরণকারী।
    সুন্দরবনের বণ্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা(ডিএফও) মোঃ মদিনুল আহসান বলেন, সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণে সরকার ‘বাংলাদেশ টাইগার এ্যকশন প্ল্যান ২০০৯-১৭’ বাস্তবায়ন করছে। এর অংশ হিসেবে বাঘ রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টি, বাঘের আক্রমণ থেকে বন সংলগ্ন লোকালয়ের জানমাল এবং মানুষের হাত থেকে লোকালয়ে চলে আসা বাঘ রক্ষায় ৮৯ টি টাইগার রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গত ১০ বছরে মানুষের হাতে ৯ টি বাঘ মারা পড়েছে। লোকালয়ে ঢুকে পড়া বাঘ রক্ষায় ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআর) কাজ করছে। বাঘ অচেতনে তাদের ৬ টি বন্দুক রয়েছে বলেও জানান তিনি।
    এদিকে সুন্দরবনের রেকর্ড সংখ্যক বাঘ হ্রাসের জন্য অন্যান্য কারণের সাথে বনজীবিরা জোর দিয়ে যোগ করেছেন বনদস্যুদের কথা। দীর্ঘ দিন সুন্দরবনের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থেকে তারা জীবিকা নির্বাহ করছেন। কাছ থেকে দেখেছেন অনেক কিছু। তারা বলছেন, প্রায় দু’যুগ ধরে সুন্দরবনে নিয়ন্ত্রণ করছেন প্রায় ২ ডজন বনদস্যু বাহিনী। একই বনে বাঘের সাথে বসবাস দস্যুদেরও। সুন্দরবন অভ্যন্তরে অবাধ বিচরণ ও রাত্রি যাপনে বাঘের সাথে দেখা হলেই দস্যুরা তাদের হত্যা করে। এর সাথে তারা আন্তর্জাতিক বাজারে সুন্দরবনের বাঘের চাহিদার বিষয়টিকে যোগ করে এতে বনদস্যুদের দস্যুতা বৃত্তির পাশাপাশি অধিক মুনাফা লাভে বাঘ হত্যার বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন। অভিযোগ রয়েছে, বাঘ বিলুপ্তির জন্য দায়ী চোরা শিকারীদের গ্রেফতার ও মামলায় র‌্যাবসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপরতা দেখালেও বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের তেমন কোন সফলতা নেই।

    এব্যাপারে শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়ার ষাটোর্দ্ধ আনসার আলী, বনজীবি রাহুল, মান্নান, কওছার, রাশেদুল, আঃ করিম, খালেক গাজী, বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের দাতিনাখালি গ্রামের আমিনুর, নওশাদ, সাত্তার, মুন্সীগঞ্জের দাউদ সানা, মন্তেজ, রাজ্জাক, মুনছুর, রমজাননগর গফুর, সিদ্দিক, জবেদ আলী, সফেদ আলীসহ শতাধিক বনজীবিরা জানান, সুন্দরবন থেকে বাঘ হ্রাসের কারণ হিসেবে গবেষক থেকে শুরু করে বনবিভাগ বা দেশী-বিদেশী সংস্থা যাই বলুক বাঘ হত্যার জন্য বনদস্যুরাই সবচেয়ে বেশী দায়ী।
    জানা গেছে, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড সীমান্তে আন্তর্জতিক বাজারে গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল এ সুন্দরবনের বাঘের চামড়া থেকে শুরু করে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের চড়া মূল্য থাকায় মূলত সুন্দরবনে বনদস্যুরা বাঘ হত্যায় মেতে উঠে। সুন্দরবন বনদস্যুদের এক সময়ের অভয়ারণ্য থাকায় ঐসময়ে ব্যাপক সংখ্যক বাঘ শিকার হয় তাদের হাতে। বর্তমানে সরকার সুন্দরবন রক্ষায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে তা বাঘ রক্ষায় ঠিক কি ধরণের প্রভাব ফেলছে তা নির্ভর করবে চলতি ক্যামেরা ট্রাপিংয়ে বাঘ শুমারীতে বাঘের প্রকৃত সংখ্যার উপর। তবে আশার কথা, বাঘ সংরক্ষণে মনিটরিং, টহল ব্যবস্থা জোরদার এবং বনরক্ষীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। কতগুলো বাঘ হত্যা করা হয়েছে বা কতটি মামলা হয়েছে এ ব্যাপারে কোন সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও জনববল সংকটের বিষয়টি স্পষ্ট হয় বন কর্মকর্তাদের বক্তব্যে। সর্বশেষ এমন পরিস্থিতিতে আজ ২৯ জুলাই পালিত হচ্ছে বিশ্ব বাঘ দিবস।

  • জেলায় ৮ জামায়াত নেতা-কর্মীসহ গ্রেফতার ৬৮

    মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি):  সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৮ জামায়াত নেতা-কর্মী এবং ৪ মাদক মামলার আসামিসহ বিভিন্ন মামলার ৬৮ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

    শুক্রবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে শনিবার (২৮ জুলাই) সকাল পর্যন্ত জেলার আটটি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

    এ অভিযান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২০পিস ইয়াবা, ৪৯০ বোতল ফেনসিডিল, ১০০ গ্রাম গাঁজা এবং একটি মোটরসাইকেল।
    অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ৬ জামায়াতকর্মীসহ ১৬ জন, কলারোয়া থানা থেকে ২০পিস ইয়াবা এবং ১০০ গ্রাম গাঁজাসহ ৮ জন, তালা থানা থেকে ২ জন, কালিগঞ্জ থানা থেকে ৪৯০ বোতল ফেনসিডিলসহ ৯ জন, শ্যামনগর থানা থেকে উপজেলা জামায়াতের সভাপতি মাওলানা ফারুক হোসাইনসহ ১৫ জন, আশাশুনি থানা থেকে ২ জন, দেবহাটা থানা থেকে ২ জন এবং পাটকেলঘাটা থানা থেকে ১ জামায়াতকর্মীসহ ২ জনকে আটক করা হয়।

    আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান জানান, জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন মামলার ৬৮ আসামিকে আটক করা হয়েছে।

  • জেলায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৭ জামায়াত-শিবিরকর্মীসহ আটক ৭২

    মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয় ৭ জামায়াত-শিবিরকর্মীসহ ৭২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলার আট থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
    গত মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে (২৫ জুলাই) সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২০ পিস ইয়াবা, ১০০ গ্রাম গাঁজা এবং বেশ কিছু জিহাদী বই।
    অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ২০পিস ইয়াবা, বেশ কিছু জিহাদী বই ও প্রচারপত্রসহ ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে যার মধ্যে ৪ জন জামায়াত-শিবিরকর্মী। কলারোয়া থানা থেকে ১০০গ্রাম গাঁজাসহ আটক করা হয়েছে ৭ জনকে। ৪ জামায়াত-শিবিরকর্মীসহ মোট ৮ জনকে আটক করা হয়েছে তালা থানা থেকে। এ থানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৬টি জিহাদী বই। এছাড়াও কালিগঞ্জ থানা থেকে ৯ জন, শ্যামনগর থানা থেকে ১১ জন, আশাশুনি থানা থেকে ১ জামায়াতকর্মীসহ ৮ জন, দেবহাটা থানা থেকে ৩জন এবং পাটকেলঘাটা থানা থেকে ২ জনকে আটক করা হয়েছে।
    আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত জেলার সবকটি থানায় অভিযান চালিয়ে বেশকিছু জিহাদী বই ও প্রচারপত্র সহ ৭ জামায়াত-শিবিরকর্মীসহ মোট ৭২ জনকে আটক করা হয়েছে।
  • হাসপাতালে প্রকাশ্যে মূল্য তালিকা টানাতে হাইকোর্টের নির্দেশ

    ঢাকা ব্যুরো : বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ল্যাবরেটরি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মূল্য তালিকা এবং ফি পাবলিক প্লেসে ১৫ দিনের মধ্যে আইন অনুসারে প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

    আদেশে বলা হয়েছে, দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ অনুসারে নীতিমালা তৈরি এবং বাস্তবায়নের জন্য ৬০ দিনের মধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে হবে।

    জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো.খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টে বেঞ্চ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন।

    স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

    আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ড. বশির আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ। হিউম্যান রাইটস লইয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের পক্ষে কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলম এ রিট দায়ের করেন।

    রুলে চলমান হাসপাতাল এবং ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স অনুমোদন, তাদের সেবার বিষয় তদারকি এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ অনুসারে নীতিমালা তৈরির কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, সব জেলা সদরের হাসপাতালে আইসিউ/সিসিইউ স্থাপনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

    মাসুদ হাসান চৌধুরী বলেন, অর্ডিন্যান্স অনুসারে কেন বেসরকারি ক্লিনিক মনিটর করা হবে না, কেন নীতিমালা তৈরি করা হবে না, এই মর্মে বিবাদীদের প্রতি রুল জারি করেছেন আদালত। একই সঙ্গে এই রুলস তৈরির জন্য একটি কমিটি গঠন করতে বলেছেন। ৬০ দিনের মধ্যে সরকার এ কমিটি গঠন করবে নীতিমালা তৈরির জন্য।

    এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ৭ অক্টোবর দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও র‌্যাবের মহাপরিচালককে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

  • জেলায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৭ জামায়াতকর্মীসহ আটক-৬১

    মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৭ জামায়াতকর্মী এবং ২ জন মাদক মামলার আসামীসহ ৬১জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (২১ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে রবিবার (২২ জুলাই) সকাল পর্যন্ত জেলার আটটি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ অভিযান থেকে বেশ কিছু মাদকদ্রব্যও উদ্ধার করা হয়েছে।

    অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ৬ জামায়াতকর্মীসহ ২৩ জন, কলারোয়া থানা থেকে ১০০ গ্রাম গাজাসহ ৯ জন, তালা থানা থেকে ৫ জন, কালিগঞ্জ থানা থেকে ৪ জন, শ্যামনগর থানা থেকে ৮ জন, আশাশুনি থেকে ১ জামায়াতকর্মী এবং ১০০ গ্রাম গাজাসহ ৭ জন, দেবহাটা থানা থেকে ২ জন এবং পাটকেলঘাটা থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

    গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান জানান, শনিবার সন্ধ্যা থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন মামলার আসামীসহ মোট ৬১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

  • ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের শ্রীরামপুর বাজার পরিদর্শন।

    সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরা জেলা কার্যালয়ের বাজার তদারকি টিম ১৮ জুলাই সকালে সাতক্ষীরা সদরের ভোমরা ইউনিয়নস্থ শ্রীরামপুর বাজার পরিদর্শন করেন।

    এতে সহায়তা করেন জেলা ক্যাব সদস্য মো. সাকিবুর রহমান ও জেলা পুলিশ প্রশাসন। এসময়ে হোটেলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, ফ্রিজে মিষ্টির সাথে কাঁচা মাংশ রাওা, দইয়ের পাত্রের অতিরিক্ত ওজন, দোকানে মেয়াদ উর্ত্তীণ, মেয়াদ ছাড়া পন্য বিক্রয় ও পন্যে অগ্রিম তারিখ দেওয়াসহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন’০৯ বাস্তবায়নসহ বিবিধ বিষয়ে পরিদর্শন করেন সহকারি পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান।

    এসকল অপরাধে করিম স্টোর, গোলাম রসুল ষ্টোর ও তৌহিদ হোটেলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন’০৯ এর ৪৩ ও ৫১সহ বিভিন্ন ধারা লংঘনের অপরাধে বিভিন্ন অংকের মোট ৭০০০ টাকা জরিমানা করা হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন কালে সচেতনামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়।

  • জেলা পরিষদের খেয়াঘাট ইজারার টাকা আত্মসাতের প্রাথমিক তদন্ত শুরু

    জেলা পরিষদের খেয়াঘাট ইজারার টাকা আত্মসাতের প্রাথমিক তদন্ত শুরু

    নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের খেয়াঘাট ইজারার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দায়েরকৃত অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে। বুধবার সকালে সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে এ তদন্ত করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক উপ-সচীব হোসেন আলী খন্দকার।

    বাস্তবতার আলোকে জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এসএম মাহাবুবর রহমান ও সংশ্লিষ্টদের অনিয়ম ও দূর্ণীতির বিষয়টি দালিলিক আকারে উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট সত্যরঞ্জন মন্ডল।

    অভিযোগ উপন্থাপনকালে এ্যাডভোকেট সত্যরঞ্জন মন্ডল বলেন, জেলা পরিষদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলা ১৪১৫ সাল থেকে ১৪২৪ সাল পর্যন্ত আশাশুনির ঘোলা-হিজলা-কল্যাণপুর খেয়াঘাটের ১০ বছরের মোট ইজারা মূল্য ১৮ লাখ ৩৮ হাজার ৫১০ টাকা দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে বাংলা ১৪১৮ সালে একইভাবে হাজরাখালি-বিছট খেয়াঘাটের ১০ বছরের ইজারা মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১০ লাখ ৬৯ হাজার ৭৫ টাকা।

    বাংলা ১৪১৮ ও ১৪১৯ সালে ওই খেয়াঘাট বাবাদ গ্রহণ করা হয়েছে ১০ লাখ ৫২৮ টাকা। ওই দু’টি খেয়াঘাট ইজারা নেন আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবু হেনা শাকিল। একইভাবে ইজারা নেওয়ার কিছুদিন পর খেয়াঘাটের শ্রেণী পরিবর্তণ করার অভিযোগে কেন তার ইজারা বাতিল করা হবে না জানতে চেয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা এসএম মাহাবুবর রহমান নোটিশ করেন। এরই বিরুদ্ধে তিনি মহামান্য হাইকোর্টে দু’টি খেয়াঘাটের বিপরীতে ২০১২ সালের ২ জানুয়ারি ২৫/১২ রিট পিটিশন দাখিল করেন।

    রিট পিটিশনে ঘোলা- হিজলা- কল্যাণপুর খেয়াঘাট বাবদ বাংলা ১৪১৮ ও ১৪১৯ সালে ১২ লাখ ৪০০ টাকা ইজারা গ্রহণ করা হয়। এরমধ্যে ১৪১৮ সালের ইজারা মূল্য বাবদ তিন লাখ ৫০ হাজার ৪০০ টাকা ছাড়াও ভ্যাট, আয়কর ও ১% প্রিমিয়াম বাবদ ৭৩ হাজার ৫৮৪ টাকা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এসএম মাহাবুবর রহমান ২০১১ সালের ২৬ জুন রশিদ বই এর মাধ্যমে গ্রহণ করেন। একই তারিখে হাজরাখালি বিছট খেয়াঘাটে বাংলা ১৪১৮ ও ১৪১৯ সালে ১০ লাখ ৫২৮ টাকার ইজারা গ্রহণ করার পর ১৪১৮ সাল বাবদ দু’ লাখ ২০ হাজার টাকা গ্রহণ ছাড়াও ভ্যাট, আয়কর ও ১% প্রিমিয়াম বাবদ ৪৬ হাজার ২০০ টাকা রশিদের মাধ্যমে গ্রহণ দেখানো হয়েছে। যেখানে আত্মসাতের বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়।

    ঘোলা- হিজলা-কল্যাণপুর খেয়াঘাটের ১৪১৯ সালের ইজারামূল্য ইজারাদার আবু হেনা শাকিল পরিশোধ করেছেন। কিন্তু তিনি ওই বছর ভ্যাট বাবদ ৫২,৫৬০ টাকা পরিশোধ করেন নাই।
    সেক্ষেত্রে ঘোলা- হিজলা ও কল্যাণপুর খেয়াঘাট থেকে দু’ বছরে দু’ লাখ ৮০ হাজার ২০০ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেখানোয় ইজারা মূল্য ৯ লাখ ২০ হাজার ২০০ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

    একইভাবে মানিকখালি খেয়াঘাটটি ১০ বছরে ২৫ লাখ ৩১২ হাজার টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। ইজারা গ্রহীতা কওছার আলী কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়ে ২২৭৯/২০০৫ নং রিট পিটিশন দাখিল করেন। ফলে ওই খেয়াঘাটে আদায়কৃত রাজস্ব যথাযথভাবে জেলা পরিষদ পাচ্ছে না।

    তিনি আরো বলেন, ২০১১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ইজারা নোটিশের শর্তাবলীতে সর্বোচ্চ বা কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত যে কোন কোটেশনে উদ্ধৃত দর অনুমোদনের পর নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে ১৪১৮ সালের ইজারা মূল্য বাবদ অবশিষ্ঠ ৫০ শতাংশ ইজারা মূল্যসহ ৫শতাংশ আয়কর, ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ১ শতাংশ প্রিমিয়াম এককালিন জেলা পরিষদে জমা দিতে হবে। ব্যর্থতায় ইজারা চুক্তি বাতিল বলে গণ্য হবে। কিন্তু সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা তা না করে আর্থিক সুবিধা নিয়ে ইজারা চুক্তি করেছেন।

    অভিযোগ শুনানীকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের ১৫জন সদস্য, কয়েকজন কর্মচারি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এসএম মাহাবুবর রহমানসহ সাংবাদিকরা। শুনানীকালে জেলা পরিষদ সদস্যরা এসএম মাহাবুবর রহমানের বিরুদ্ধে আব্দুর রউফ কমপ্লেক্স ও এতিমখানা পরিচালনা, এইচএসসি পাশ করে তার প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ অবৈধ ও তিন বার বদলী করার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট পিটিশন খারিজ হওয়ার পরও বহাল তবিয়তে সাতক্ষীরায় চাকুরি করা সংক্রান্ত বিষয়গুলি যথাযথভাবে উপস্থাপন করার পরও একই তদন্তকারি কর্মকর্তা অভিযোগের সত্যতা মেলেনি বলে প্রতিবেদন দেওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একইভাবে মন্ত্রণালয় চিঠি দেওয়ার পরও তাকে বদলী ও এক বছর ছুটি নেওয়ার আইনি বৈধতা সংক্রান্ত তদন্ত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা হল থেকে বেরিয়ে যান।

  • শিশু পাচারের অভিযোগে নারীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড

    শিশু পাচারের অভিযোগে নারীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড

    মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরায় প্রথম শ্রেণিতে পড়–য়া এক কন্যা শিশুকে পাচারের অভিযোগে এক নারীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দিয়েছে আদালত। বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার এ রায় দেন।
    সাজাপ্রাপ্ত নারী আসামী হলেন, শ্যামনগর উপাজেলার পরানপুর গ্রামের নূর ইসলামের মেয়ে মোছাঃ আফরোজা ও ওরফে তাছলিমা খাতুন। বর্তমানে তারা কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর গ্রামে বসবাস করেন।
    মামলার বিবরণে জানা যায়, পাচারের শিকার শিশু কন্যাটি শ্যামনগর উপাজেলার ৮৬নং পরানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রণিতে পড়তো। ২০০৩ সালের ৬ মার্চ সকাল ৮টার দিকে বাড়ি থেকে স্কুলে যায় সে। স্কুল শেষে সে আর বাড়ি ফেরেনি। সহপাঠি ময়না ও টুম্পার মাধ্যমে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারে যে স্কুল শেষে তাকে খালা পরিচয়ে এক নারী মাঠ থেকে ডেকে নিয়ে যায়।

    জানতে পেরে ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আব্দুল করিম বিভিন্ন মসজিদে মাইকিং করে শিশুটির সন্ধান নেয়ার চেষ্টা করেন। রাত ১০টার দিকে স্থানীয় বৈশখালি গ্রামের লোকজন পাচারকারী আফরোজাকে আটক করলেও তার সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। এ সময় উদ্ধার করা হয় ওই শিশুটিকে। এ ঘটনায় উদ্ধার হওয়া ওই শিশুর দাদা বারী সরদার বাদি হয়ে পাচারকারী আফরোজা খাতুন, রতনপুর গ্রামের বাবু, বাবলু ও আবু হান্নানের নাম উল্লেখ করে পরদিন শ্যামনগর থানায় একটি পাচারের মামলা দায়ের করেন।

    ২০০৩ সালের ৩০ জুন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক ফয়সাল জামান এজাহারভুক্ত আসামিদের নামে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

    ১০জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও মামলার নথি পর্যালোচনা শেষে বুধবার আসামি আফরোজা খাতুনের বিরুদ্ধে পাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করেন। একই সাথে অপরাধ প্রমানিত না হওয়ায় এ মামলার অপর তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। তবে, এ রায়ের সময় পাচারকারী আসামি আফরোজা পলাতক ছিলেন।

    রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দার বাবু।

  • সাতক্ষীরায় ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এক গৃহবধূকে হত্যা : ঘাতক গ্রেফতার

    নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় ধর্ষণে ব্যার্থ হয়ে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আক্তারুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে সদর উপজেলার ফিংড়ি ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই গৃহবধুর নাম বাঁচাখুকি(৪৫)। সে ফিংড়ি ইউনিয়নের ফয়জুল্যাপুর গ্রাামের আব্দুল মজিদ কারিকরের স্ত্রী।

    ফিংড়ি ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মধুসুদন মন্ডল জানান, বুধবার সকালে ওই গৃহবধূ পালিচাঁদ বিলে ছাগল চরাতে যান। সেখানে আগে থেকেই ওৎপেতে ছিলো একই গ্রামের আহাদ আলির ছেলে মাদকাসক্ত আক্তারুল ইসলাম(২৬) নামের এক যুবক।

    আক্তারুল ওই গৃহবধূকে পাশের বাগানে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। কিন্তু ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে সে মেহগনি গাছের ডাল দিয়ে ওই গৃহবধূর মাথায় আঘাত করে। ফলে তিনি মাটিতে পড়ে যান। এরপর তাকে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ পালিচাঁদ বিলের একটি খালে সে পুতে রাখে ঘাতক আক্তারুল। স্থানীয় এলাকাবাসী লাশটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।

    এদিকে, এ ঘটনার পর থেকে ঘাতক আক্তারুলকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান শুরু কওে পুলিশ। পরে আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। স্থানীয় ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিরাজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

    সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাাফিজুর রহমান জানান, খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। ইতিমধ্যে ঘাতক আক্তারুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • সাতক্ষীরায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে জামায়াতকর্মীসহ গ্রেফতার ৬০

    সাতক্ষীরায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে জামায়াতকর্মীসহ গ্রেফতার ৬০

    মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয়ে জামায়াতকর্মী ও মাদক মামলার আসামীসহ ৬০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত  জেলার ৮ থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
    অভিযানে ২২ পিস ইয়াবা, ১৪০ বোতল ফেন্সিডিল,  ৪০২ গ্রাম গাজা এবং ১৯ বোতল মদ উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন অভিযোগে আটককৃতদের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
    অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ১৮ জন, কলারোয়া থানা থেকে ৬ জন, তালা থানা থেকে ৪ জন, কালিগঞ্জ থানা থেকে ১০ জন, শ্যামনগর থানা থেকে ১৮ জন, আশাশুনি থানা থেকে ৮ জন, দেবহাটা থানা থেকে ২ জন  ও পাটকেলঘাটা থানা থেকে ১ জামায়াতকর্মীসহ ৪ জনকে আটক করা হয়।
    সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান তাদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটকদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।
  • জেলাব্যাপি পুলিশের বিশেষ অভিযানে ২ জামায়াতকর্মীসহ গ্রেফতার ৫৫

    জেলাব্যাপি পুলিশের বিশেষ অভিযানে ২ জামায়াতকর্মীসহ গ্রেফতার ৫৫

    মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি বিশেষ অভিযান চালিয়ে ২ জামায়াতকর্মী ও ৮মাদক মামলার আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত জেলার ৮ থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

    অভিযানে ২২ বোতল ফেন্সিডিল ও ১১০ গ্রাম গাজা উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন অভিযোগে আটককৃতদের বিরুদ্ধে ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

    অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা জামায়াতের ১ সুরা সদস্যসহ ১৭ জন, কলারোয়া থানা থেকে ৭ জন, তালা থানার ইসলামকাটি ইউনিয়ন জামায়াতের রোকনসহ ৪ জন, কালিগঞ্জ থানা থেকে ৭ জন, শ্যামনগর থানা থেকে ১১ জন, আশাশুনি থানা থেকে ৫ জন, দেবহাটা থানা থেকে ১ জন ও পাটকেলঘাটা থানা থেকে ৩ জনকে আটক করা হয়।

    সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান তাদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটকদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।

     

  • মানসিক অসুস্থতার মিথ্যা সনদ দিলে জেল-জরিমানা

     মন্ত্রিসভা মানসিক রোগীর সম্পদের ওপর অধিকারসহ সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে মানসিক স্বাস্থ্য অধিকার আইন-২০১৮’র খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।

    সোমবার প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সংস্কার ও সমন্বয়) এন এম জিয়াউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় একটি সময়োপযোগী আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে এই খসড়া তৈরি হয়েছে।
    তিনি বলেন, ১৯১২ সালের এ সম্পর্কিত আইনকে হালনাগাদ করে আলোচ্য খসড়াটি প্রণীত হয়েছে। এতে মানসিক অসুস্থ ব্যক্তিকে অপরাধে জড়িত হওয়ার প্ররোচনা এবং নিবন্ধন ছাড়া মানসিক হাসপাতাল স্থাপন ও পরিচালনার দায়ে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। সরকার মানসিক অসুস্থতায় আক্রান্তদের সেবার সম্প্রসারণ, উন্নয়ন, নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়ের জন্য সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করবে।
    সরকার মানসিক রোগীদের দীর্ঘমেয়াদে চিকিৎসা দেবে এবং সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির প্রতিকার পাওয়া পথ সহজতর করতে মানসিক স্বাস্থ্য পর্যালোচনা কমিটি গঠন করবে। এতে বেসরকারি খাতে হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট স্থাপনের বিধানও রয়েছে।
    খসড়ায় মানসিক অসুস্থতা নিয়ে মিথ্যা সনদ দিলে ৩ লাখ টাকা জরিমানা বা এক বছর কারাদন্ড বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে। মানসিক অসুস্থ ব্যক্তির চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা ও তাদের সম্পত্তির তালিকা প্রণয়নে অবহেলা বা এ সম্পর্কিত আদালতের কোন আইনের মান্যতায় ব্যর্থতার দায়ে সংশ্লিষ্ট অভিভাবক ও ম্যানেজারের ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা ৩ বছরের কারাদন্ডের বিধান রয়েছে খসড়ায়।
    সভায় জাতীয় ডিজিটাল কমার্স পলিসি-২০১৮’র অনুমোদন দেয়া হয়। জিয়াউল আলম বলেন, ক্রমবর্ধনশীল আইসিটি ভিত্তিক বাণিজ্যের সুযোগ সম্প্রসারণে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এ আইনের আওতায় ই-লেনদেন সম্পর্কিত বিভ্রান্তি নিরসনে প্রচারণার লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি সেল গঠন করবে।
    বৈঠকের শুরুতে বিশ্বকাপ টি-২০ ক্রিকেটের চূড়ান্ত আসরে স্থান করে নেয়ার জন্য বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানানো হয়।
    বৈঠকে আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হকের বড় বোন সায়মা হকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে একটি শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
    মন্ত্রিসভা বিদায়ী অর্থ সচিব মুসলিম চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানায়। তাকে ৪ বছরের জন্য কম্পট্রোলার ও অডিটর জেনারেল পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে জানান জিয়াউল আলম।

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

     

     

     

     

     

  • সাতক্ষীরার ৪টি থানায় ওসি রদবদল

     

     

    নিজস্ব প্রতিবেদক: একযোগে সাতক্ষীরা সদর, আশাশুনি, কলারোয়া, দেবহাটা ও শ্যামনগর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জদের (ওসি) বদলি করা হয়েছে। সোমবার প্রত্যেক থানায় বদলিকৃত ওসিরা দায়িত্ব বুঝে নেন।
    এদিন দুপুরে সাতক্ষীরা সদর থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে যোগদান করেছেন মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি আশাশুনি থানায় দায়িত্বরত ছিলেন। অন্যদিকে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশের ওসি মারুফ আহম্মেদ যোগদান করেছেন কলারোয়া থানায়। কলারোয়া থানা পুলিশের ওসি বিপ্লব কুমার নাথ যোগদান করেছেন আশাশুনি থানায়, শ্যামনগর থানা পুলিশের ওসি সৈয়দ আব্দুল মান্নান যোগদান করছেন দেবহাটা থানায়।
    দেবহাটা থানা পুলিশের ওসি কাজী কামাল হোসেন সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনে ওআর পদে যোগদান করবেন। শ্যামনগর থানায় ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জিয়াউর রহমান দায়িত্ব পালন করবেন।

  • টাউন বাজার বাজার পরিদর্শনে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ টিম

    নিজস্ব প্রতিনিধি: জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরা জেলা কার্যালয়ের বাজার তদারকি টিম ১৬ জুলাই সকালে সাতক্ষীরা শহরস্থ কাটিয়া টাউন বাজার পরিদর্শন করেন।

    এতে সহায়তা করেন জেলা ক্যাব সদস্য মো. সাকিবুর রহমান ও জেলা পুলিশ প্রশাসন। এসময়ে হোটেলগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, পঁচাবাঁসি খাবার রাখা, দইয়ের পাত্রের অতিরিক্ত ওজন, মেয়াদ উর্ত্তীণ পন্য ও পানীয় বিক্রয়সহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন’০৯ বাস্তবায়নসহ বিবিধ বিষয়ে পরিদর্শন করেন সহকারি পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান।

    এসকল অপরাধে নিউ সাতক্ষীরা সুইটস, বিসমিল্লাহ ষ্টোর ও মণ্ডল ট্রেডার্সকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন’০৯ এর ৪৩ ও ৫১সহ বিভিন্ন ধারা লংঘনের অপরাধে বিভিন্ন অংকের মোট ৫০০০ টাকা জরিমানা করা হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন কালে সচেতনামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়।

  • সাতক্ষীরায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে আটক-৫৪

    সাতক্ষীরায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে আটক-৫৪

    মোঃ মুশফিকুর রহমান (রিজভি): সাতক্ষীরা জেলাব্যাপী বিশেষ অভিযান চালিয়ে জামায়াত-বিএনপির ৮ নেতাকর্মী ও মাদক মামলার ১২ আসামীসহ ৫৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত রবিবার সন্ধ্যা হতে সোমবার সকাল পর্যন্ত জেলার ৮টি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
    অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ১০ জন, কলারোয়া থানা থেকে ৬ জন, তালা থানা থেকে ৪ জন, কালিগঞ্জ থানা থেকে ১১ জন, শ্যামনগর থানা থেকে ৬ জন, আশাশুনি থানা থেকে ৬ জন, দেবহাটা থানা থেকে ১ বিএনপি ও ৬ জামায়াত নেতাকর্মী, পাটকেলঘাটা থেকে ১ জামায়াতকর্মী ও অন্যান্য মামলার ৪ জনকে আটক করা হয়।
    অভিযান থেকে ১৩ পিস ইয়াবা, ২০ বোতল ফেন্সিডিল ও ৩ কেজি গাজা উদ্ধার করা হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।
    জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রোববার সন্ধ্যা হতে সোমবার সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জামায়াত-বিএনপির কর্মী ও মাদক মামলার আসামীসহ মোট ৫৪ জনকে আটক করা হয়েছে।

  • ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষী ছাড়া আর কেউ কিছু বলেননি’

    ঢাকা ব্যুরো : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজার বিরুদ্ধে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিল শুনানি সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট।রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান। তিনি এ মামলার প্রথম সাক্ষীর জবানবন্দীর বিষয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষী তদন্তকারী কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ছাড়া আর কেউ কিছু বলেননি। এ মামলার ১ম অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নুর আহম্মদ যে অনুসন্ধান রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদন তার বাইরে। সেই অনুসন্ধান প্রতিবেদনের বিষয়বস্তুর ভিতরে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কিছু ছিলনা। তিনি অনুসন্ধান রিপোর্টের বাইরে সাক্ষ্য দিয়েছেন। ব্যাংকের হিসাব খোলাসহ কোনো ডকুমেন্টে খালেদা জিয়ার নাম নেই। প্রথম সাক্ষীর জবানবন্দি পড়া শেষে সোমবার দুপুর দুইটা পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।

    রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানিকালে আদালতে এমন দাবি করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান।

    সোমবার বেলা দুইটায় খালেদা জিয়ার আপিল শুনানি শুরু হয়। শুরুতেই খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মাদ আলী আদালতে বলেন, এ আপিলের পেপার বুক অসম্পুর্ণ। এ অবস্থায় মামলার শুনানি করা যায় না। পেপার বুকের বিষয়ে সোমবার আদেশ দেবেন মর্মে দিন নির্ধারণ করেন আদালত।

    আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান ও মাসুদ রানা। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম।

    এই মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করে জামিন আবেদনের পর খালেদা জিয়াকে ১২ মার্চ চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের পর গত ১৬ মে তা বহাল রেখে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন উচ্চতর আদালত।

    পরে খালেদা জিয়া ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে হাইকোর্টে আপিল মামলার নিষ্পত্তিতে আপিল বিভাগের আদেশ পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করেন। গত বৃহস্পতিবার ওই আবেদন মুলতবি রেখে আপিল বিভাগ বলেছেন, খালেদা জিয়ার করা আপিল শুনানি ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ না হলে সময়ের প্রার্থনা বিবেচনা করা হবে। সে পর্যন্ত আবেদনটি স্ট্যান্ড ওভার (মুলতবি) রাখা হয়েছে।

    এ মামলায় ছয় আসামির মধ্যে খালেদা জিয়াসহ তিনজন কারাবন্দি। বাকি তিন আসামি পলাতক রয়েছেন। খালেদা জিয়া ছাড়া বাকি দুইজন হলেন-মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।

    পলাতক তিনজন হলেন-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

    গত ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান মামলাটিতে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

    রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকালে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ফেব্রুয়ারি তারা এ আবেদন করেন।

    ২২ ফেব্রুয়ারি সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করেন। এরপর ৭ মার্চ অপর আসামি মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামালের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।

    পরে ২৮ মার্চ খালেদার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল দেন হাইকোর্ট। ১০ মে আরেক আসামি শরফুদ্দিনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালত। এখন তিন আসামির আপিল ও দুদকের আবেদনের রুল এই আদালতে শুনানি হচ্ছে।

  • বন্দুকযুদ্ধ : ২ মাদক ব্যবসায়ী নিহত, ৫ পুলিশ সদস্য আহত

    নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। শনিবার মধ্যরাতে সদর উপজেলার বাঁশদহা গ্রামের কয়ারবিল ব্রিজের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
    উদ্ধার করা হয়েছে একটি ওয়ান শুটার গান, এক রাউন্ড গুলি ও বেশকিছু মাদকদ্রব্য। এ সময় আহত হয়েছে ৫ পুলিশ সদস্য।
    গুলিবিদ্ধ নিহত মাদক ব্যবসায়ীরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশদহা গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে দেলোয়ার হোসেন (৩৮) ও কলারোয়া উপজেলার কেড়াগাছি গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে আবুল কালাম আজাদ (৪০)। তারা দুজনেই আন্তঃজেলা মাদক ব্যবসায়ী বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলাও রয়েছে।
    আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, এসআই রিয়াদুল, এএসআই সুমন ,এএসআই মাজেদুল ও দুই কনস্টেবল রুবায়েত ও তুহিন।
    সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ আহমেদ জানান, শনিবার বিকালে মাদক ব্যবসায়ী দেলোয়ার ও আবুল কালামকে কিছু গাঁজা ও ফেনসিডিলসহ গোয়েন্দা পুলিশ বাঁশদহা বাজার থেকে আটক করে। রাতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা স্বীকার করে যে আজ রাতে মাদকের একটি বড় চালান ভারত থেকে আসবে। তাদেরকে নিয়ে মাদকের চালান উদ্ধারে যায় পুলিশ।
    তিনি জানান, বাঁশদহার কয়ার বিল এলাকায় পৌঁছাতেই আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা তাদের সহযোগীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। তিনি আরো জানান, গোলাগুলির এক পর্যায়ে তাদের দুজনকে গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। গ্রামবাসীর সহায়তায় তাদের উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাদের মৃত ঘোষনা করেন।
    তাদের কাছ থেকে এ সময় একটি ওয়ান শুটার গান, ১ রাউন্ড গুলি ও বেশ কিছু মাদক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়। এদিকে, আহত পুলিশ সদস্যদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।

  • বাড্ডায় ফরহাদ হত্যা : মূলহোতাসহ গ্রেফতার ৫

    ঢাকা ব্যুরো : ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা উত্তর বিভাগ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বাড্ডার আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ আলী হত্যা মামলার মূলহোতাসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার (১৩ জুলাই) গুলশান ও মিরপুর শাহআলী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ৪টি ম্যাগাজিনসহ ১২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
    গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. জাকির হোসেন, মো. আরিফ মিয়া, মো. আবুল কালাম আজাদ অনির, মো. বদরুল হুদা সৌরভ ও মো. বিল্লাল হোসেন রনি।
    আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আবদুল বাতেন এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান।

    তিনি বলেন, গত ১৫ জুন বাড্ডা থানাধীন আলীর মোড় এলাকায় শুক্রবার বাদ জুম্মা বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফরহাদ আলীকে মসজিদের সামনে অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে। ওই ঘটনায় বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়। এই ঘটনার পরে থানা পুলিশের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা উত্তর বিভাগ ছায়া তদন্ত শুরু করে।
    প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, অটোরিকশা স্ট্যান্ড ও ডিস ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধে ফরহাদ আলী খুন হয়।