Category: অর্থনীতি

  • ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার আশঙ্কা, সতর্কতা জারি করলো বাংলাদেশ ব্যাংক

    ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার আশঙ্কা, সতর্কতা জারি করলো বাংলাদেশ ব্যাংক

    বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সম্ভাব্য সাইবার হামলা সম্পর্কে সতর্ক করে আগাম নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।

    সোমবার (৩০ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক এসএম তোফায়েল আহমদের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ সতর্কতা জারি করা হয়।প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভিন্ন সূত্রের ভিত্তিতে জানা গেছে, অদূর ভবিষ্যতে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, স্বাস্থ্যসেবা, সরকারি ও বেসরকারি খাতের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (Critical Information Infrastructure – CII) সাইবার হামলার ঝুঁকিতে পড়তে পারে। বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি স্তরের সাইবার হুমকির বিষয়ে বেশি সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

    বাংলাদেশ ব্যাংক সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে তাদের সার্ভার, ডেটাবেইস এবং অন্যান্য সিস্টেমে প্রয়োজনীয় সিকিউরিটি প্যাচ আপডেট করার সুপারিশ করেছে। একইসাথে অপ্রয়োজনীয় পোর্টাল বন্ধ রাখা, ‘Least Privileged Access’ নীতি অনুসরণ, ডেটা ব্যাকআপ ও রিকভারির জন্য ৩-২-১ কৌশল বাস্তবায়ন এবং গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেমে মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (MFA) চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে

    তথ্যপ্রযুক্তি সিস্টেমে কোনো অনিয়ম দেখা দিলে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে Security Information and Event Management (SIEM) ও Network Intrusion Detection Systems (NIDS) ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।

    হুমকি শনাক্ত ও প্রতিরোধে Endpoint Detection and Response (EDR) প্রযুক্তির অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার এবং নিয়মিত থ্রেট সিগনেচার আপডেট রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আইটি টিমগুলোকে সবসময় সতর্ক ও প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন যেকোনো ধরনের সাইবার হামলার ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারে।

    অস্বাভাবিক লগইন, অনুমোদনহীন ফাইল বা ডেটা পরিবর্তনের ঘটনাগুলো তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে। একইসাথে ব্যাংকগুলোকে বাহ্যিক কানেকশন নিবিড়ভাবে মনিটর করতে এবং রিমোট অ্যাকসেস, ভিপিএন এবং প্রিভিলেজড অ্যাকাউন্টসমূহ সীমিত ও নিয়মিত পর্যালোচনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানিয়েছে, প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে যথেষ্ট জনবলসহ ২৪ ঘণ্টা চালু থাকা নিরাপত্তা মনিটরিং সেন্টার (Security Operations Center – SOC) পরিচালনার ব্যবস্থা নিতে হবে।

    সংস্থাগুলোর সচলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের একটি শক্তিশালী ব্যাকআপ ব্যবস্থা থাকতে হবে। নিয়মিত হালনাগাদ করা ব্যবসা অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা (Business Continuity Plan – BCP) এবং দুর্যোগ মোকাবিলা পরিকল্পনা (Disaster Recovery Plan – DRP) প্রস্তুত রাখতে হবে।×

    বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্দেশনার উদ্দেশ্য হলো ব্যাংক ও আর্থিক খাতকে সাইবার ঝুঁকি থেকে আগেভাগেই সুরক্ষা দেওয়া এবং জাতীয় অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।

  • ১৫ শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ২০ শতাংশ

    ১৫ শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ২০ শতাংশ

    এ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি দেশের ওপর ১০% থেকে ৪১% পর্যন্ত রেসিপ্রোকাল (পারস্পরিক) শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ট্রাম্প একে বর্ণনা করেছেন দীর্ঘদিনের বাণিজ্যগত অসাম্য দূর করার পদক্ষেপ হিসেবে।

    বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে নতুন এ হার ঘোষণা করা হয়। সবশেষ বাংলাদেশকে চিঠি দিয়ে ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্কের কথা জানিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। সে হিসাবে শুল্ক ১৫ শতাংশ কমিয়ে নতুন হার ঘোষণায় করা হয়েছে।

    হোয়াইট হাউসের ঘোষণায় বাংলাদেশ ছাড়াও কয়েক ডজন দেশের শুল্কের হার তুলে ধরা হয়েছে। অন্য দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানের ওপর ১৯ শতাংশ, আফগানিস্তানের ওপর ১৫ শতাংশ, ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ, ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মিয়ানমারের ওপর ৪০ শতাংশ, ফিলিপাইনের ওপর ১৯ শতাংশ, শ্রীলংকার ওপর ২০ শতাংশ ও ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।

    এ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি দেশের ওপর ১০% থেকে ৪১% পর্যন্ত রেসিপ্রোকাল (পারস্পরিক) শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ট্রাম্প একে বর্ণনা করেছেন দীর্ঘদিনের বাণিজ্যগত অসাম্য দূর করার পদক্ষেপ হিসেবে। হোয়াইট হাউজের একটি তথ্যপত্র অনুযায়ী, নতুন আমদানি কর হারগুলো আজ শুক্রবার থেকেই কার্যকর হবে।

    এর আগে, গত ২ এপ্রিল বাণিজ্য ঘাটতির কথা উল্লেখ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর উচ্চ হারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। পরে ৯ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর ওই শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এ সময় শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন দেশকে আলোচনার সুযোগ দেয় ওয়াশিংটন।

    যুক্তরাষ্ট্রের তিন মাসের সময়সীমা গত ৯ জুলাই শেষ হয়। এর আগের দিন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়ে ট্রাম্প জানান, বাংলাদেশের পাল্টা শুল্ক ২ শতাংশ কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে। যদিও ৯ জুলাইয়ের পর পাল্টা শুল্ক কার্যকর করেনি মার্কিন প্রশাসন। শুল্কের হার কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তির জন্য ৩১ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন দেশকে সময় দেয়া হয়।

    সেই সময়সীমা শেষে আজ শুক্রবার (১ আগস্ট) থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা। সে হিসাবে আজ থেকে বাংলাদেশকে বর্তমানের গড় ১৫ শতাংশ ও নতুন পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশ, অর্থাৎ মোট ৩৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানি করতে হবে।

    পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছে। শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে টানা তিন দিন আলোচনা করেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। গত মঙ্গল ও বুধবারের পর গতকাল বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো আলোচনা করা হয়। এ আলোচনায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। প্রতিনিধি দলে আরো আছেন প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী। দুদিনের বৈঠকেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কর্মকর্তারা ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়েছেন।

    যুক্তরাষ্ট্রে সেনসাস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৮৩৬ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করেছে ২২১ কোটি ডলারের পণ্য। এ হিসাবে বাংলাদেশের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত বা বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি ৬১৫ কোটি ডলারের।

    যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, দ্বিপক্ষীয় আলোচনা যদি শুধু শুল্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত, তাহলে বিষয়গুলো অনেক সহজ হতো। কিন্তু দরকষাকষি শুধু শুল্ক নিয়ে নয়, এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ চুক্তিতে থাকা বাণিজ্যিক বাধ্যবাধকতাবিষয়ক শর্ত, যা পুরো বিষয়টির জটিলতা বাড়িয়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া বাধ্যবাধকতা আবার অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের অর্থনীতির সক্ষমতার বাইরে। এমনকি সেগুলো দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

    সূত্র আরো জানায়, দরকষাকষির আলোচনাটি শুল্কের চেয়েও বেশি বাণিজ্য বিধিমালাবিষয়ক। এমনকি সেগুলো শুধু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কেন্দ্রিকও না। অনেকগুলো মন্ত্রণালয় ও খাতসংশ্লিষ্টদেরও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয় রয়েছে। বাণিজ্যবিষয়ক কিছু শর্ত একেবারেই অগ্রহণযোগ্য বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এসব বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত বাংলাদেশের পক্ষে মেনে নেয়া প্রায় অসম্ভব।

    এদিকে, এপ্রিলে ট্রাম্প টাইম ম্যাগাজিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন, তিনি দুই শতাধিক চুক্তি করছেন। কিন্তু বাস্তবে ১২০ দিনে মাত্র ১১টি চুক্তি হয়েছে, যার মধ্যে একটি পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে।

    ২ জুলাই ট্রাম্পের ঘোষণায় ভিয়েতনামের ওপর শুল্ক ৪৬% থেকে কমিয়ে ২০% করা হয়েছে। তবে পলিটিকো জানিয়েছে, ভিয়েতনাম মাত্র ১১% প্রত্যাশা করেছিল। ট্রাম্প একতরফাভাবে ২০% ঘোষণা করেন। ট্রান্সশিপমেন্টের ৪০% শুল্ক কীভাবে কার্যকর হবে তা এখনো পরিষ্কার নয়।

    ইন্দোনেশিয়ার জন্য পাল্টা শুল্ক ৩২ থেকে ১৯ শতাংশে হ্রাস করা হয়েছে। বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৯৯% পণ্যে শুল্ক বিলোপ ও নন-ট্যারিফ বাধা দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জাকার্তা।

    ২৩ জুলাই চুক্তির আওতায় জাপানের ওপর শুল্ক ২৫% থেকে ১৫% করা হয়েছে। গাড়ি উৎপাদন খাতে বিশেষ ছাড় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প বলেছেন, জাপান ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে যুক্তরাষ্ট্রে, যার ৯০% মুনাফা পাবে আমেরিকানরা।

    চীনের সঙ্গে এখনো চুক্তি হয়নি, আছে কেবল মে মাস থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত একটি সাময়িক বিরতি। এখন চীনের ওপর ৩০% ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ১০% শুল্ক বলবৎ। সর্বশেষ স্টকহোম বৈঠকে কোনো নতুন চুক্তি হয়নি।

    বুধবার ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, ভারতের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। রাশিয়া থেকে অস্ত্র ও জ্বালানি কেনার জন্য একটি অতিরিক্ত ‘পেনাল্টি’ও থাকবে। আগে এ হার ছিল ২৬%। ট্রাম্প বলেন, ‘ভারতের শুল্কহার বিশ্বের সর্বোচ্চের মধ্যে একটি।’

    এদিকে শুল্ক থেকে বাঁচতে মেক্সিকোকে আরো ৯০ দিনের সময় দিয়েছেন ট্রাম্প। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেনবাউমের সঙ্গে টেলিফোন আলাপের পর ট্রাম্প বলেন, ‘আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে আগের বাণিজ্য চুক্তিটি আরো ৯০ দিনের জন্য বহাল রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মেক্সিকোর সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি অন্য অনেক দেশ থেকে আলাদা, কারণ আমাদের মধ্যে সীমান্ত রয়েছে, যেখানে অনেক সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে অনেক সম্ভাবনাও রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, মেক্সিকো আগামী ৯০ দিন আগের মতোই যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতনির ক্ষেত্রে নির্ধারিত শুল্ক পরিশোধ করবে। এর মধ্যে রয়েছে ফেন্টানিলে ২৫ শতাংশ, গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ এবং স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম ও কপারের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক।

  • রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯২ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা কম

    রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯২ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা কম

    সদ্য বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণে বড় ঘাটতিতে পড়েছে সরকার। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করতে পারেনি রাজস্ব আহরণে নিয়োজিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অর্থবছরের শেষ দুই মাস—মে ও জুনে এনবিআরজুড়ে আন্দোলনের কারণে অস্থিরতা দেখা দেয়। সাধারণত শেষ মাস জুনে রাজস্ব আহরণ বেড়ে থাকে। কিন্তু এবার আন্দোলনের প্রভাব স্পষ্টভাবে পড়েছে। কাস্টমস ও ভ্যাট খাতে জুনের আহরণের চিত্র সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে।

    গত অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের সংশোধিত মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু আয় হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৪ কোটি ৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯২ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা কম রাজস্ব আহরণ হয়েছে। এর আগের অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৩-২৪ সালে আহরণ হয়েছিল ৩ লাখ ৬২ হাজার ৭৯৭ কোটি ১০ লাখ টাকা। সে হিসাবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২ দশমিক ২৩ শতাংশ। তবে মোট লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ঘাটতি ১৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

    মাসভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, জুনেও রাজস্ব আহরণ কম হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুনে আহরণ হয়েছিল ৫৩ হাজার ৪৬ কোটি টাকা। আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুনে আহরণ হয়েছে মাত্র ৪৩ হাজার ৯১ কোটি টাকা। ওই মাসে এককভাবে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৯ হাজার ৩৯ কোটি টাকা, যা অর্জিত টাকার চেয়ে ২৬ হাজার কোটি টাকা বা ৩৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ কম।

    জুনে কাস্টমস খাতে আহরণের চিত্র থেকে আন্দোলনের প্রভাব স্পষ্ট। এ খাতে জুনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা, কিন্তু আহরণ হয়েছে মাত্র ৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের চেয়েও কম। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুনে কাস্টমস খাতে আহরণ হয়েছিল ৯ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা। পুরো অর্থবছরে কাস্টমস খাতের মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৫১০ কোটি টাকা, যার বিপরীতে আহরণ হয়েছে মাত্র ১ লাখ ১৯৮ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে এ খাতে আয় ছিল ৯৯ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা।

    ভ্যাট খাতেও জুনে আহরণ কমেছে। ২৬ হাজার ৮৮ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে মাত্র ১৪ হাজার ২১৪ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের তুলনায়ও কম। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে আহরণ হয়েছিল ২০ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা। পুরো অর্থবছরে ভ্যাট খাতের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা, আর আহরণ হয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে এ খাতে আহরণ হয়েছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা।

    এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘গড়ে ছয় মাসের মতো সময় আমরা স্থিতিশীল পেয়েছি। অর্থবছরের শেষ দুই মাস এনবিআরে আন্দোলনের অস্থিরতা ছিল। সিগারেট খাতে ব্যাপক কর ফাঁকি হয়েছে। আমরা এ খাতে রাজস্ব হারিয়েছি। বাজারে অবৈধ সিগারেটে সয়লাব। সিআইসি ও আয়কর গোয়েন্দা সংস্থা ব্যাপক কর ফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে। সেই কর আদায়ে সংশ্লিষ্ট সার্কেলগুলো কাজ করছে। আশা করছি, চলতি অর্থবছরে আমরা এ ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে পারব।’

  • ৯৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা হবে দুই কার্গো এলএনজি

    ৯৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা হবে দুই কার্গো এলএনজি

    দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আন্তর্জাতিক কোটেশনে মাধ্যমে দুই কার্গো এলএনজি আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরমধ্যে এক কার্গো সিঙ্গাপুর থেকে এবং এক কার্গো দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আনা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৯৮৯ কোটি ৩৬ লাখ ৭০ হাজার ৩০৫ টাকা।
    মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
    বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো (৩০-৩১ আগস্ট ২০২৫ সময়ে ৩৭তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন চায় জ্বালানি ও খানিজসম্পদ বিভাগ। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।
    জানা গেছে, পেট্রোবাংলা থেকে এ এক কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমসিপিএ) স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৮টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দাখিল করা আটটি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়।
    দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বনি¤œ দরদাতা প্রতিষ্ঠান গানভর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড, সিঙ্গাপুর-এর কাছ থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ১১ দশমিক ৯৭ মার্কিন ডলার হিসেবে এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে মোট ব্যয় হবে ৫০২ কোটি ৯৪ লাখ ৯১ হাজার ৩৯৮ টাকা।
    বৈঠকে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে আর এক প্রস্তাবে ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে ১ কার্গো (২১-২২ সেপ্টেম্বের ২০২৫ সময়ে ৩৯তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন চাওয়া হয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এ প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে।

    পেট্রোবাংলা থেকে এই এক কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমসিপিএ) স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তব দাখিল করে। দাখিল করা ৩টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়।
    দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বনি¤œ দরদাতা প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ কোরিয়ার মেসার্স পোসকো ইন্টারন্যশনাল করপোরেশনের কাছ থেকে এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতি এমএমবিটিইউ ১১ দশমিক ৯৫ ডলার হিসেবে এ এলএনজি আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ৪৮৬ কোটি ৪১ লাখ ৭৮ হাজার ৯০৭ টাকা।

  • জুলাই মাসের প্রথম ২৬ দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২৩.৯৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে

    জুলাই মাসের প্রথম ২৬ দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২৩.৯৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে

    বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, জুলাই মাসের প্রথম ২৬ দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে ২৩.৯৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৯৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

    গত বছরের একই সময়ে, দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ১ হাজার ৫৫৯ মিলিয়ন ডলার।

    প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ ৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে প্রাপ্ত সর্বোচ্চ পরিমাণ।

    পূর্ববর্তী অর্থবছরে (অর্থবছর ২০২৩-২৪) প্রাপ্ত ২৩.৯১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় রেমিটেন্স প্রবাহ ২৬.৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

  • জুলাই মাসের  প্রথম ১২ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০৭১ মিলিয়ন ডলার

    জুলাই মাসের  প্রথম ১২ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০৭১ মিলিয়ন ডলার

    ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসের প্রথম ১২ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে  প্রায় ১,০৭১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, এই সময়ে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের  দৈনিক গড় ৮৯.২৫ মিলিয়ন ডলার।

    গত বছরের একই সময়ে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ৯৪৮ মিলিয়ন ডলার

  • আগামী অর্থবছরের আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দেওয়া যাবে যেদিন থেকে

    আগামী অর্থবছরের আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দেওয়া যাবে যেদিন থেকে

    জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান জানিয়েছেন, চলতি জুলাই মাস থেকে আগামী অর্থবছরের ব্যক্তিগত আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করা যাবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইআরএফ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি বলেন, কর ব্যবস্থাকে সহজ ও স্বয়ংক্রিয় করতে ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন চলছে। তিনি জানান, এ পর্যন্ত ১৭ লাখ রিটার্ন অনলাইনে জমা পড়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় তিনগুণ। চলতি অর্থবছর শেষে কর আদায়ের পরিমাণ ৩ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

    এনবিআরের চলমান সংস্কার ও কর্মীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা চলছে এবং জুলাইয়ের মধ্যেই সংশোধন আনা হবে। আজই এনবিআর কর্মীদের সঙ্গে সরকারের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

    চেয়ারম্যান আরও বলেন, “সবকিছুই হওয়া উচিত দেশের স্বার্থে। কর ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও স্বেচ্ছাসেবী সম্মতি বাড়াতে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।”

  • শেখ পরিবারের ১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা জব্দ

    শেখ পরিবারের ১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা জব্দ

    ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার পরিবারের সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা মোট ১৫৬টি ব্যাংক হিসাব থেকে প্রায় ১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই বিশাল অঙ্কের অর্থ জব্দের বিষয়টি ইতোমধ্যে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সম্পন্ন হয়েছে।

    দুদকের সূত্র জানায়, জব্দ করা টাকার মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশটি রয়েছে ‘শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’-এর নামে। এ ট্রাস্টের নামে ৩২টি ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা ৪৭৯ কোটি ২৭ লাখ ৬৪ হাজার ২৬৪ টাকা জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন’ (সিআরআই)-এর নামে ১৬টি ব্যাংক হিসাবে ৫৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৬ হাজার ১৩৬ টাকা, আওয়ামী লীগের নামে আটটি ব্যাংক হিসাবে ৩৩ কোটি ৮৫ লাখ ৩৮ হাজার ১৩১ টাকা এবং সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে ৯টি ব্যাংক হিসাবে ৩১ কোটি ৬০ লাখ ৭৯ হাজার ১১৫ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

    এছাড়াও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের নামে দুটি ব্যাংক হিসাবে ১৯ কোটি ৩৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩৪৪ টাকা, আবু সিদ্দিক মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নামে পাঁচটি হিসাবে ৫৬ লাখ ৭ হাজার ৭৪৩ টাকা, সায়মা ওয়াজেদের নামে পাঁচটি হিসাবে ২ কোটি ৭৬ লাখ ৫ হাজার ৮৫৪ টাকা এবং শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার যৌথ নামে থাকা চারটি ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ৭২ লাখ ১৪ হাজার ৮৬২ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

    ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবের মধ্যে শেখ হাসিনার নামে ১২টি হিসাবে রয়েছে ১ কোটি ২৯ লাখ ৬৮ হাজার ৭০৫ টাকা, শেখ রেহানার নামে দুটি হিসাবে ৮১ লাখ ৫ হাজার ৮৩৪ টাকা, সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে দুটি হিসাবে ১ কোটি ১৭ লাখ ১৫ হাজার ২৭১ টাকা, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির নামে দুটি হিসাবে ১ কোটি ২৭ লাখ ৫৬ হাজার ৯১৪ টাকা এবং ববির বাবা শফিক আহমেদ সিদ্দিকের নামে রয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫০ টাকা।

    দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম জানিয়েছেন, তদন্ত কর্মকর্তারা আদালতের অনুমোদন নিয়ে আইনানুগভাবে এসব ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছেন। তদন্তের অংশ হিসেবে কমিশনের উপপরিচালক মনিরুল ইসলামের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত সময়কালীন বিভিন্ন ধাপে জব্দের আদেশ দিয়েছেন।

    দুদক আরও জানায়, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, রাদওয়ান মুজিব ববি, শফিক আহমেদ সিদ্দিক ও তাদের নিকটাত্মীয়দের নামে বিদেশে—বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং ও কেম্যান দ্বীপপুঞ্জে—বিলাসবহুল সম্পদেরও খোঁজ পাওয়া গেছে। এসব সম্পদের উৎস ও বৈধতা খতিয়ে দেখতে বর্তমানে আন্তর্জাতিক তদন্ত সহযোগিতার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

  • সহায়তা প্রদানের চেয়ে এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশের পাচারকৃত টাকা ফেরত দিন

    সহায়তা প্রদানের চেয়ে এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশের পাচারকৃত টাকা ফেরত দিন

    স্পেনের ফাইনান্সিং ফর ডেভলপমেন্ট আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রাক্কালে বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের আহবান
    ফাইনান্সিং ফর ডেভলপমেন্ট (এফএফডি-৪) বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কারণ এখানে স্থানীয় সম্পদ আহরণ, বৈদেশিক দেনা বিষয়ক নীতিমালা এবং জলবায়ু অর্থায়ন ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে যা আগামী বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের (এসডিজি) অগ্রগতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।বাংলাদেশ একটি অনুন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের দিকে যাবে। কিন্তু তারপরেও বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য খাতের সাম্প্রতিক সময়ের কিছু তথ্য  বিশ্লেষণ করলে বর্তমান এসডিজির উন্নয়নের বিপরীতে একটি অন্ধকার চেহারা দেখা যায়। যেমন, জলবায়ু ঝুঁকিতে বাংলাদেশ বিশ্বের ৭ তম বিপদাপন্ন দেশ। দেশের মোট জনসংখ্যার ৫৬% (প্রায় ৯০ মিলিয়ন) জলবায়ু ইস্যুতে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে বাস করে। প্রায় ১.৭৮ মিলিয়ন শিশুরা শিশুশ্রমে নিযুক্ত। জাতীয় দারিদ্র্যের হার ১৮.৭%  এবং যা দেশটির সাম্প্রতিক দারিদ্র্যতা বৃদ্ধির হারকে নির্দেশ করছে। বাল্য বিবাহের বর্তমান হার ৫১.৪০%, ইত্যাদি।
    আজ সহায়তা প্রদানের চেয়ে টেকসই উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের পাচারকৃত টাকা ফেরৎ দিন শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ এসব তথ্য তুলে ধরেন। বক্তারা প্রশ্ন তোলেন যে, যখন বিদেশি উন্নয়ন সহায়তা  (ওডিএ) ক্রমাগতভাবে কমে যাচ্ছে, তখন বাংলাদেশ কিভাবে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন করতে পারবে? অন্যদিকে আইএমএফ এর অন্যায্য কর ব্যবস্থা, মানি লন্ডারিং, বড় রকমের বৈদেশিক ঋণের বোঝা বাংলাদেশের এসডিজি অর্জনের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে তারা মত প্রকাশ করেন। বক্তারা আরো বলেন যে, গত ১৫ বছরে, বিদেশে ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি পাচার হয়ে গেছে। এই অর্থ আগামী দুই বছরের জন্য বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটের সমান। এটি দেশের মোট বৈদেশিক দেনারও সমান। এই অর্থ যদি পাচার না করা হত তবে এটি বাংলাদেশের প্রায় সমস্ত বৈদেশিক দেনাকে পরিশোধ করতে পারতো। বক্তারা এফএফডি-৪ সম্মেলনের প্রাক্কালে এই পাচারকৃত অর্থ ফেরতের জোর দাবি জানান।
    কোস্ট ফাউন্ডেশন, ইক্যুইটিবিডি, বিসিজেএফ, এনডিএফ, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন, উদয়ন এবং ওয়াটার কিপারর্স বাংলাদেশ যৌথভাবে এফএফডি-৪ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রাক্কালে আজ রাজধানী ঢাকায় এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এফএফডি-৪  স্পেনের সেভিলা শহরে আগামী ৩০ জুন থেকে ৩ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। কোস্ট ফাউন্ডেশনের মোঃ ইকবাল উদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে মূল দাবিগুলো তুলে ধরেন এবং ইক্যুইটিবিডির প্রধান সমন্বয়কারী রেজাউল করিম চৌধুরী এতে সঞ্চালনা করেন।
    মোঃ ইকবাল উদ্দিন বলেন যে, এফএফডি-৪ কে অবশ্যই বৈশ্বিক অর্থ পাচার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং ইতোমধ্যে  পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ভূক্তভোগী দেশগুলোকে ফেরৎ দিতে হবে। রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন যে, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস, জার্মানী, সুইজারল্যান্ড এবং বেলজিয়াম ইতোমধ্যে তাদের বৈদেশিক সহায়তা প্রদান কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। তারা আমাদের এসডিজি অর্জনে আর তেমন সহায়তা করতে পারবে না। তাই সহায়তা প্রদানের চেয়ে বরং তাদের বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফেরৎ দেয়া উচিৎ এবং অবৈধ অর্থ পাচার রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ।
    ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশের শরীফ জামিল বলেন, যদি উন্নতদেশগুলোতে টাকা পাচারের ব্যবস্থা না থাকতো তাহলে আমাদের মতো দেশগুলো থেকে টাকা পাচার হওয়া বন্ধ হয়ে যেত। তিনি এফএফডি-৪ কে টাকা পাচার রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য  বলেন। এনডিএফ এর ইবনুল সাঈদ রানা বলেন, রোহিঙ্গা সংকট একটি বৈশ্বিক দায়। বাংলাদেশের উপর এটি চাপিয়ে দেয়া ঠিক নয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তিনি এর জন্য সহায়তা অব্যাহত রাখার কথা বলেন। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক  নিখিল চন্দ্র ভদ্র  পাচারকৃত অর্থ ফেরৎ এনে উপকূলের বিপদাপন্ন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ব্যয় করার দাবি জানান। উদয়নের অসাদুজ্জান বলেন, বাংলাদেশ ঐতিহাসিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ি নয়। তাই বাংলাদেশের জলবায়ু সংক্রান্ত সকল অবৈধ দেনাগুলো বাতিল করতে হবে এবং সেগুলোকে সহায়তা আকারে প্রদান করতে হবে। কোস্ট ফাউন্ডেশনের ওমর ফারুক ভূইয়া আইএমএফ এর কর ব্যবস্থা সংস্কারের সমালোচনা করে বলেন যে সেগুলো সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেই যায়। তিনি জাতিসংঘের নেতৃত্বে বৈশ্বিক ট্যাক্স কনভেনশনের আওতায় বাংলাদেশের কর ন্যায্যতা নির্ধারণের দাবি জানান।
  • চাল-তেল বাড়লেও কমেছে মুরগি, ডাল, আদা-রসুনের দাম

    চাল-তেল বাড়লেও কমেছে মুরগি, ডাল, আদা-রসুনের দাম

    রাজধানীর কাওরান বাজার, ফকিরাপুল, কাপ্তান বাজার, মুগদা, খিলগাঁও ও মালিবাগসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নিত্যপণ্যের দামে মিশ্র প্রবণতা বিরাজ করছে। একদিকে চাল ও খোলা ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে, অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগি, ডাল, আদা ও রসুনের দাম কমেছে।

    চালের বাজারে সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধি ভোক্তাদের কিছুটা অস্বস্তিতে ফেললেও মুরগি ও ডালের দামে স্বস্তি ফিরেছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মৌসুম শেষে সরবরাহ কমে যাওয়ায় চালের দাম বেড়েছে, তবে কিছু পণ্যের সরবরাহ বাড়ায় সেগুলোর দাম কমেছে।

    চালের দাম বাড়ছে, স্বর্ণা-ইরি কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা পর্যন্ত

    ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) জানায়, মাঝারি মানের পাইজাম, মোটা স্বর্ণা ও চায়না ইরি চালের দাম কেজিতে ২-৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

    • পাইজাম ও লতা চাল: ৫৬-৬৫ টাকা (আগে ছিল ৫৩-৬২ টাকা)

    • স্বর্ণা ও চায়না ইরি: ৫২-৬০ টাকা (আগে ছিল ৫০-৫৫ টাকা)

    তবে মিনিকেট ও নাজিরশাইল চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, বোরো মৌসুম শেষ ও বর্ষাকালে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় চালের সরবরাহ কমে গেছে, ফলে বাজার ঊর্ধ্বমুখী। তবে তারা আশাবাদী, খুব শিগগিরই দাম আবার স্থিতিশীল হতে পারে।

    খোলা তেলের দামও ঊর্ধ্বমুখী

    বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও খোলা সয়াবিন ও পামওয়েলের দাম বেড়েছে:

    • খোলা সয়াবিন: ১৫৭-১৬৮ টাকা/লিটার (আগে ছিল ১৬০-১৬২ টাকা)

    • খোলা পামওয়েল: ১৪৫-১৫৪ টাকা/লিটার (আগে ছিল ১৪৫-১৪৮ টাকা)

    ব্রয়লার মুরগির বড় ধস — কেজি মাত্র ১৫০ টাকা থেকে শুরু

    বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে।

    • ব্রয়লার মুরগি: ১৫০-১৭০ টাকা/কেজি

    • দেশি সোনালি ও কক মুরগি: দাম অপরিবর্তিত

    ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদা বাড়লেও সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় দাম কমানো সম্ভব হয়েছে।

    ডাল, আদা, রসুনে মিলছে বড় ছাড়

    • মোটা মসুর ডাল: ৯৫-১১০ টাকা/কেজি

    • আদা: ১১০-২০০ টাকা/কেজি

    • আমদানি করা রসুন: ১৪০-২২০ টাকা/কেজি

    বিশেষ করে চীন ও মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত রসুনের সরবরাহ বাড়ায় এর দাম কমেছে।

    ডিমে সামান্য বাড়তি চাপ, সবজিতে স্বস্তি

    • ফার্মের ডিম (প্রতি হালি): ৪০-৪৬ টাকা (হালকা বেড়েছে)

    • শাকসবজি: ৫০-৬০ টাকার মধ্যে (পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙে প্রভৃতি)

     

  • জাতীয় বাজেট  ঘোষণা, ঘোষণার পরই বাজারে আগুন! দাম বাড়বে এসব জিনিসের

    জাতীয় বাজেট ঘোষণা, ঘোষণার পরই বাজারে আগুন! দাম বাড়বে এসব জিনিসের

    বাংলাদেশের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট (২ জুন, ২০২৫) বিকেল ৩টায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ উপস্থাপন করেছেন। এটি দেশের ৫৫তম বাজেট এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে প্রথম বাজেট।

    বাজেটের সারাংশ

    • মোট বাজেটের আকার: ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা

    • রাজস্ব বাজেট: ৫ লাখ ৭৪ হাজার কোটি টাকা

    • উন্নয়ন বাজেট: ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা

    • জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা: ৫.৫%

    • মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা: ৬.৫%

    গুরুত্বপূর্ণ খাতসমূহে বরাদ্দ

    • শিক্ষা খাত: ৯৩৩ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়ে মোট বরাদ্দ হয়েছে ৮৪,০০০ কোটি টাকা। প্রাথমিক শিক্ষায় বরাদ্দ কমলেও মাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষায় বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে।

    • তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়: ১,১১০ কোটি টাকা বরাদ্দ, যা গত বছরের তুলনায় ৮৮ কোটি টাকা কম।

    • অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ: ৫৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ, পূর্ববর্তী বছরের ৮৩৫ কোটি টাকা থেকে কম।

    • নির্বাচন কমিশন: ২,৯৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ।

    • পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড: ১,৩৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ।

    • জুলাই আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের পরিবার: ৪০৫.২ কোটি টাকা বরাদ্দ।

    বিশেষ দিকনির্দেশনা

    • কালো টাকা সাদা করার সুযোগ: আবাসন খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে।

    • করমুক্ত আয়সীমা: করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হয়েছে।

    • সামাজিক নিরাপত্তা খাত: বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

    • ভর্তুকি ও প্রণোদনা: এই খাতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে।

    • সিগারেটের দাম: এবার সিগারেটের দাম না বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে।

    কোন খাতে কত টাকার বরাদ্দ হলো তা একনজরে

    🏗️ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)

    মোট এডিপি বরাদ্দ: ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা

    • পরিবহন ও যোগাযোগ খাত: ৫৯ হাজার কোটি টাকা

    • বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত: ২২ হাজার ৯১০ কোটি টাকা

    • সামাজিক নিরাপত্তা খাত: ৩৭ হাজার কোটি টাকা

    📚 শিক্ষা খাত

    মোট বরাদ্দ: ৯৫ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা

    • প্রাথমিক শিক্ষা: বরাদ্দ কমেছে

    • কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা: বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে

    👩‍👧 নারী ও শিশু খাত

    • মোট বরাদ্দ: ৫ হাজার ৭৭ কোটি ৮৯ লাখ ২৯ হাজার টাকা

    • পূর্ববর্তী বরাদ্দ: ৫ হাজার ২২২ কোটি ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা

    • কমেছে: ১৪৫ কোটি টাকা

    💰 রাজস্ব আয় ও বাজেট ঘাটতি

    • রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা: ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা

      • এনবিআর থেকে: ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা

      • অন্যান্য খাত থেকে: ৬৫ হাজার কোটি টাকা

    • বাজেট ঘাটতি: ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা

      • অভ্যন্তরীণ ঋণ: ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা

      • বৈদেশিক ঋণ: ১ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা

    📈 অর্থনৈতিক সূচক

    • জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা: ৫.৫%

    • মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা: ৬.৫%

    🛒 পণ্য ও সেবার দাম পরিবর্তন

    দাম বৃদ্ধি পাবে:

    • কনভেনশন হল, নির্মাণ খাত, সেল্ফ কপি পেপার, কোটেড পেপার, ই-কর্মাস কমিশন

    • প্লাস্টিক সামগ্রী, গৃহস্থালি সামগ্রী, টয়লেট সামগ্রী, কটন সুতা, কৃত্রিম সুতা, ব্লেড, জয়েন্ট, নাট, বোল্ট, ইলেকট্রিক লাইন হার্ডওয়্যার, সিগারেট

    • ওটিটি সেবা, এলইডি লাইট, আমদানিকৃত লিফট, সিফুড, নারিকেল তেল, স্যালমন ফিস, আমদানিকৃত মাংস, আমদানিকৃত টুনা, লবঙ্গ, এলাচ, জিরা, দারচিনি, মাখন, দুগ্ধজাত পণ্য, চিজ, বিদেশি সবজি, কাজু বাদাম, শুকনা ফল, আপেল, নাশপাতি

    • রড, কফি, চকলেট, শিশু খাদ্য, পাস্তা, বিস্কুট, চিপস, জ্যাম-জেলি, জুস, সস

    • দেশি তৈরি মোবাইল ফোন, ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ইলেকট্রিক ওভেন, ব্লেন্ডার, জুসার, মিক্সার

    • মার্বেল- গ্রানাইট, অ্যালকোহল, ফুড সাপ্লিমেন্ট, তামাক জাতীয় পণ্য, বিদেশি লবণ, আইসক্রিম, বার্নিশ, সুগন্ধি, এলপিজি সিলিন্ডার, অটো রিকশা, প্রসাধনী, সাবান, ডিটারজেন্ট

    দাম কমবে:

    • ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ, শিল্পের কাঁচামাল, এলএনজি, সিলিন্ডার, দেশি স্যানিটারি ন্যাপকিন, দেশি ডায়াপার, প্যাকেটকৃত তরল দুধ, বলপয়েন্ট, ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত কম্পিউটার মনিটর, রেন্ট, হাসপাতালের বেড, ওষুধের কাঁচামাল, হাসপাতালের যন্ত্রাংশ, কোল্ড স্টোরেজ, এলপিজি সিলিন্ডার, ব্যাটারি, কীটনাশক, ফ্রুট ব্যাগ, টায়ার, সার

    কর হার পরিবর্তন:

    • পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর হার ২.৫% কমে ২০% হয়েছে

    • মার্চেন্ট ব্যাংকের কর হার ৩৭.৫% থেকে কমে ২৭.৫% হয়েছে

    • ব্রোকারেজ হাউজের সিকিউরিটিজ লেনদেন কর ০.০৫% থেকে কমে ০.০৩% হয়েছে

    ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমা:

    • সাধারণ নাগরিক: ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা

    • নারী ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী: ৪ লাখ টাকা

    • প্রতিবন্ধী: ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা

    • গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা: ৫ লাখ টাকা

    • ‘জুলাই যোদ্ধা’: ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা

    সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ:

    • মোট বরাদ্দ: ৯৫ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা

    • বাজেটের ১২.১৮%

    • পূর্ববর্তী বরাদ্দ: ৯০ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকা (১১.৩৫%)

    সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা:

    • ১০% থেকে ২০% পর্যন্ত মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করা হয়েছে

    বেসরকারি চাকরিজীবীদের করযোগ্য আয় পরিগণনার ক্ষেত্রে:

    • সর্বোচ্চ বাদযোগ্য অংকের পরিমাণ ৪.৫০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হয়েছে

    কালো টাকা সাদা করার সুযোগ:

    • গতবারের মতো এবারও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে

    প্রাথমিক শিক্ষা খাতে বরাদ্দ:

    • বরাদ্দ কমেছে

    কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা খাতে বরাদ্দ:

    • বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে

    নারী ও শিশু খাতে বরাদ্দ:

    • মোট বরাদ্দ: ৫ হাজার ৭৭ কোটি ৮৯ লাখ ২৯ হাজার টাকা

    • পূর্ববর্তী বরাদ্দ: ৫ হাজার ২২২ কোটি ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা

    • কমেছে: ১৪৫ কোটি টাকা

    বাজেট ঘাটতি পূরণে ঋণ:

    • অভ্যন্তরীণ ঋণ: ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা

    • বৈদেশিক ঋণ: ১ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা

    জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা:

    • ৫.৫%

    মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা:

    • ৬.৫%

    বাজেট ঘাটতি:

    • ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২%

    রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা:

    • ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা

  • জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য বরাদ্দ ৪০৫ কোটি টাকা

    জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য বরাদ্দ ৪০৫ কোটি টাকা

    ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য ৪০৫ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। সোমবার জাতীয় গণমাধ্যমগুলোতে বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এ বাজেট প্রস্তাব করেন।

    বাজেট বক্তব্যে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস ও স্মৃতি সংরক্ষণ, গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবার এবং আহত ছাত্র-জনতার পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের আদর্শ ও চেতনাকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শীঘ্রই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ভাতা প্রদানের লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।

    তিনি তার প্রস্তাবে বলেন, তাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ৪০৫ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করছি।

  • পরবর্তী অর্থবছরের বাজেটে যেসব পরিবর্তন আসছে

    পরবর্তী অর্থবছরের বাজেটে যেসব পরিবর্তন আসছে

    ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বদলে গেছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে, তা স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের সবচেয়ে ব্যতিক্রমী একটি বাজেট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে—এটি হবে চলতি অর্থবছরের তুলনায় ছোট এবং সংসদের বাইরে ঘোষণা করা হবে।

    অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের প্রণীত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম।

    বিশেষজ্ঞদের মতে, এ বাজেটের মূল লক্ষ্য হবে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং স্বল্প আয়ের মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া।

    সাংবিধানিক কাঠামোর ব্যত্যয় এবং সংসদ না থাকায় এবার সংসদে বাজেট উপস্থাপন করা সম্ভব নয়। ফলে আসন্ন বাজেটটি সরকারি টেলিভিশন বিটিভিসহ বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে সম্প্রচার করা হবে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালাহউদ্দিন আহমেদ সোমবার বিকেল ৪টায় জাতির উদ্দেশে বাজেট বক্তব্য দেবেন।

    রাজস্ব ও ব্যয়ের খসড়া চিত্র

    • মোট আয়: ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা
    • এনবিআর থেকে: ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি
    • এনবিআর বহির্ভূত: ১৯ হাজার কোটি
    • কর বহির্ভূত আয়: ৪৬ হাজার কোটি
    • অনুন্নয়ন ব্যয়: ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৯০০ কোটি
    • উন্নয়ন ব্যয় (এডিপি): ২ লাখ ৩ হাজার কোটি
    • বাজেট ঘাটতি: ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা

    এই ঘাটতি মেটাতে সরকার অভ্যন্তরীণ ঋণ থেকে ১ লাখ ২১ হাজার কোটি এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের পরিকল্পনা করছে।

    মূল্যস্ফীতি ও প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা

    • মূল্যস্ফীতি: ৬.৫ শতাংশে সীমিত রাখার লক্ষ্য
    • জিডিপি প্রবৃদ্ধি: ৫.৫ শতাংশ

    সামাজিক নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান
    বাজেট পরিকল্পনায় গ্রামীণ অবকাঠামো, রাস্তা-ঘাট সংস্কার, নির্মাণ কাজে জোর দিয়ে কর্মসংস্থান তৈরির কথা বলা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ভাতার পরিমাণ ও উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হবে বলেও জানা গেছে।

    মতামত চাওয়া হবে নাগরিকদের কাছ থেকে
    এই ব্যতিক্রমী বাজেট ঘোষণার পর অর্থ মন্ত্রণালয় নাগরিকদের কাছে মতামত চাইবে, যা যাচাই-বাছাই করে ২৩ জুনের পর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের জন্য পেশ করা হবে। সেখানে অনুমোদিত বাজেট রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে ১ জুলাই ২০২৫ থেকে কার্যকর করা হবে।

  • নতুন নোট বিতরণ শুরু

    নতুন নোট বিতরণ শুরু

    জুলাই বিপ্লবের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ছাড়া নতুন নোট বাজারে ছেড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ রোববার প্রাথমিকভাবে সীমিত পরিসরে ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট বিতরণ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল অফিস।

    আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিলসহ সকল শাখা অফিস থেকে সীমিত পরিসরে মিলবে নতুন নোট। এছাড়া ১০টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের নির্দিষ্ট শাখা থেকেও টাকা বিতরণ করা হবে। নতুন ডিজাইনের নোটের পাশাপাশি প্রচলনে থাকা অন্য সব নোট চলবে।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা অফিসের বাইরে আজ যে ১০টি ব্যাংকে টাকা দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলো হলো- সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, পূবালী, উত্তরা, ডাচ্-বাংলা, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আল-আরাফাহ ইসলামী ও ব্র্যাক ব্যাংক। এসব ব্যাংকের লোকাল অফিসকে টাকা দেওয়া হয়েছে।

  • আগামী ২ জুন জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হবে

    আগামী ২ জুন জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হবে

    আগামী ২ জুন জাতির উদ্দেশে ২০২৫-২৬ অর্থ-বছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে সরকারি এক তথ্য বিবরণীতে এ তথ্য জানানো হয়।

    পূর্ব রেকর্ড করা বাজেট ভাষণটি ওই দিন বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারের মাধ্যমে সম্প্রচারিত হবে।

    জাতীয় বাজেটের ব্যাপক প্রচার নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিও স্টেশনগুলোকে বিটিভি থেকে ফিড গ্রহণ করে বাজেট ভাষণটি একই সঙ্গে সম্প্রচার করার অনুরোধ করা হয়।

    জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, এবারের বাজেট হবে অর্থনীতিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার বাজেট। সরকারের লক্ষ্য হলো ঋণের ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসা। যেখানে বাজেটের একটি বড় অংশ শুধু ঋণ ও সুদ পরিশোধেই খরচ হয়।

    সরকার আগামী অর্থবছরে মোট ব্যয় জিডিপির ১২ দশমিক ৭ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখতে চায়। যা চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ছিল ১৪ দশমিক ২ শতাংশ। বাজেটের আকার তুলনামূলকভাবে ছোট হলেও, এটি দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও টেকসই প্রবৃদ্ধিকে সামনে রেখে তৈরি করা হচ্ছে।

  • ঈদে আসছে নতুন টাকা

    ঈদে আসছে নতুন টাকা

    বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের অর্থনীতি ও সংস্কৃতি আরও ঘনিষ্ঠভাবে উপস্থাপন করতে বাজারে আনছে নতুন ডিজাইনের টাকার নোট। এসব নোটে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক, প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতীকগুলোকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। সব নোটে রয়েছে নতুন গভর্নর আহসান হাবিব মনসুরের স্বাক্ষর।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, দেশে আসছে নতুন ডিজাইনের টাকা। এসব টাকায় কোনো ব্যক্তির ছবি থাকছে না। এর বদলে থাকছে দেশের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা, প্রাকৃতিক দৃশ্য ও সাংস্কৃতিক প্রতীক।

    জানা গেছে, প্রথম ধাপে ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার নোট বাজারে ছাড়া হবে, যা পবিত্র ঈদুল আজহার আগেই– জুনের ২ অথবা ৩ তারিখের মধ্যে সাধারণ মানুষ হাতে পাবে। পর্যায়ক্রমে অন্য মূল্যমানের নোটও বাজারে আসবে। তবে এখনই সব নোট পুরোপুরি বাজারে না এলেও সীমিত পরিসরে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এক অনুষ্ঠানে জানান, নতুন নোটে দেশের প্রকৃতি, ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

    এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘নতুন ডিজাইনে কোনো ব্যক্তির ছবি রাখা হয়নি। নোটগুলোতে দেশের চিত্র ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়েছে।’

    জানা গেছে, নোটগুলো বাজারে ছাড়ার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেখানো হবে।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নোট নিয়ে ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, ‘নতুন নোটের ডিজাইন কেমন হবে, তা গভর্নর স্যার আগেই জানিয়েছেন। এসব নোটে কোনো ব্যক্তির ছবি থাকছে না। বরং দেশের ঐতিহ্য, প্রকৃতি ও সাংস্কৃতিক নিদর্শনকে গুরুত্ব দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে।’

    তিনি আরও জানান, ঈদের আগে– জুনের ২ বা ৩ তারিখের মধ্যে– ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার নতুন নোট সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছে যাবে। ছাপার কাজ চলছে পুরোদমে। প্রথমে এই তিনটি নোট বাজারে আসবে, পরে ধাপে ধাপে অন্য মূল্যমানের নোট ছাড়া হবে।

    গণমাধ্যমের কাছে ইতোমধ্যে নতুন ডিজাইনের কয়েকটি নোটের ছবি সংগ্রহ করেছে, যেখানে সুন্দরবন, ঐতিহাসিক স্থাপনা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতীক দেখা গেছে। এসব নোটে দেশের পরিচিতি ও গৌরবময় ইতিহাসের ছাপ সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

    ১০০ টাকার নতুন নোটে সুন্দরবনের ছোঁয়া
    ১০০ টাকার নতুন নোটে এক পাশে রয়েছে বাগেরহাটের ঐতিহাসিক ষাট গম্বুজ মসজিদ ও জাতীয় প্রাণী রয়েল বেঙ্গল টাইগারের জলছবি। অপর পাশে দেখা যাবে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন ‘সুন্দরবন’, যেখানে রয়েছে এক ঝাঁক হরিণ ও একটি বাঘের ছবি। সাদা অংশে বাঘের জলছবি সংযুক্ত করা হয়েছে।

    ২০০ টাকার নোটে ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রতিফলন
    নতুন ২০০ টাকার নোটে হালকা হলুদ রঙে দেখা যাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে অবস্থিত অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্য। অপর পাশে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি—মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের ধর্মীয় পোশাক ও উপাসনালয়সহ উপস্থাপিত হয়েছে। মাঝখানে সবুজের মধ্যে রয়েছে দেশের মানচিত্র।

    ৫০০ টাকার নোটে শহীদ মিনার ও সুপ্রিম কোর্ট
    নতুন ৫০০ টাকার নোটে একপাশে স্থান পেয়েছে জাতীয় চেতনায় অনন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। অপর পাশে রয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ছবি।

    ১০০০ টাকার নোটে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও সংসদ ভবন
    সবচেয়ে বড় মূল্যমানের ১০০০ টাকার নোটে একদিকে রয়েছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ, যা দেশের স্বাধীনতার প্রতীক। অপরদিকে রয়েছে জাতীয় সংসদ ভবন, যা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক।

    নতুন ডিজাইনের এই নোটগুলো বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একত্রে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন অর্থনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষ।

  • এবারের সম্মেলনে ৩১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে: বিডা চেয়ারম্যান

    এবারের সম্মেলনে ৩১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে: বিডা চেয়ারম্যান

    সদ্য সমাপ্ত বিনিয়োগ সম্মেলনে প্রাথমিকভাবে ৩ হাজার একশ’ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে বলে জানিয়েছেন বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। রোববার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি। আরও বিনিয়োগ প্রস্তাব পাইপলাইনে আছে বলেও জানান বিডা চেয়ারম্যান।

    এ সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের মোট ব্যয় হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। তবে এতে পার্টনার হিসেবে যারা অংশ নিয়েছেন তারা ব্যয় করেছেন প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। সব মিলিয়ে চার দিনের এই সম্মেলনে খরচ হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা।

    আশিক চৌধুরী বলেন, খরচের হিসেব দিয়ে সামিটকে মূল্যায়ন করা যাবে না। বিনিয়োগের সব ক্রেডিট এই সামিটের নয়, এটা আগে থেকে চলতে থাকা আলোচনার ভিত্তিতে হয়েছে। সামিটে এসেই বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়ে দিবেন বিষয়টি এমন নয়। তাই এটাকে সামিটের সফলতা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। সামিটের খরচ দিয়ে বিনিয়োগের পরিমাণ বিচার করলে হবে না।

    সংবাদ সম্মেলনে বিডার চেয়ারম্যান জানান, দশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া ৬টি কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের তথ্যও জানান তিনি।

    এবারের সম্মেলনে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বেশি ছিল জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি এবার ৫০টি দেশ থেকে ৪১৫ জন বিদেশি ডেলিগেট অংশ নিয়েছেন। সংখ্যার দিক থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ৫৮ শতাংশ।

    এ সময় বিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, দেশের মানুষের সহনশীলতা, বিনিয়োগ সম্ভাবনার অবস্থা সচক্ষে দেখে বিদেশিরা উচ্ছ্বসিত। সামিটের সফলতা নিয়ে বিডা চিন্তিত নয়, বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের সম্ভাবনা তুলে ধরাই ছিল সম্মেলনের প্রধান উদ্দেশ্য।

    অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও উপস্থিত ছিলেন।

  • রেমিট্যান্সে জোয়ার, ২১ দিনে এলো ২ বিলিয়ন ডলার

    রেমিট্যান্সে জোয়ার, ২১ দিনে এলো ২ বিলিয়ন ডলার

    চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম ২১ দিনে দেশে বৈধপথে ২০০ কোটি ৭৩ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে)। সে হিসেবে দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৯ কোটি ৫৫ লাখ ডলার বা এক হাজার ১৪৫ কো‌টি টাকা।

    রোববার (২২ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত সবশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। রেমিট্যান্সের এ ধারা অব্যাহত থাকলে ডিসেম্বরে দেশের প্রবাসী আয় রেকর্ড তিন বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি হবে বলে আশা করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

    কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ডিসেম্বরের মাসের প্রথম ২১ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬১ কোটি ৩১ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ৭৩ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৩১ কোটি ১৬ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫১ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

    ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে এসেছে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার, অক্টোবরে এসেছে ২৪০ কোটি (২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন) ডলার এবং নভেম্বরে মাসে এসেছে ২২০ কোটি (২ দশমিক ২০ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

    ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই হাজার ৩৯২ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। দেশীয় মুদ্রার যার পরিমাণ দুই লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। রেমিট্যান্সের অঙ্ক এ যাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আহরণ। দেশের ইতিহাসে রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে, দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার।