Warning: Attempt to read property "post_content" on null in /home/dakshinermashalc/public_html/wp-content/plugins/pj-news-ticker/pj-news-ticker.php on line 202
dakshinermashal, Author at Daily Dakshinermashal - Page 383 of 398

Author: dakshinermashal

  • ফুলের সমারোহে শোভিত খুবি ক্যাম্পাস

    ফুলের সমারোহে শোভিত খুবি ক্যাম্পাস

    স্টাফ রিপোর্টার : আজ বসস্ত। ফুলে ফুলে ভরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস যেনো বসন্তকে স্বাগত জানাতে অধীর অপেক্ষায়।

    বসন্তের প্রাক্কালে নানা বর্ণের ফুল ফুটেছে খুলনা বিশ্বদ্যিালয় ক্যাম্পাসে। ডালিয়া, জিনিয়া, হরেক রকম গাদা, গোলাপের মতো নাম জানা নানা বর্ণের ফুল তো আছেই, তার সাথে ফুটেছে এবার নতুন নতুন নামের নানা আকার ও বর্ণের অসংখ্য ফুল। আকাশী সাদা স্লোবল, সালভিয়া, দোপাটি,  ক্যালেন্ডোলা, দায়েনথাঁচ, ফ্লোগর্স, ইন্টালিয়াম, ¯œাকড্রাগন, পেনজি, কারিয়াফছি, ভারবিনা, পিটুনিয়া, ষ্টার গোল্ড, মৌচন্ডা, পানচাটিয়া, এ্যালমন্ডা, গ্লাডিয়া তালপাম্প, চন্দ্রমল্লিকা, ইনকা গাদা, চাইনিজ গাদা, জাম্বুস গাদা, মোরগ ঝুঁটি, কসমস, জুঁই, চামেলি ছাড়াও আছে টগর, বেলি এবং সাইকাস, ক্রিসমাস, জবা, পাতাবাহার রঙ্গন স্থায়ী নানা জাতের ফুল। সব মিলিয়ে ২৫-৩০ প্রকারের নানা জাতের ফুল ফুটেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।

    শীতকালীন নানা প্রজাতির প্রস্ফুটিত এই ফুলের সমারোহে এখন সুশোভিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ফুলে ফুলে সজ্জিত ক্যাম্পাস যেনো শিল্পীর তুলিতে আঁকা নয়ন জুড়ানো সৌন্দর্য্যমুগ্ধ কোনো ছবি। আর ফুলে সুশোভিত ক্যাম্পাস দেখতে আসছেন প্রতিদিন প্রচুর দর্শক। তাঁরা ফুলের বাগানে ঘুরছেন। ছবি তুলতেই যেন তারা বেশি ব্যস্ত। তবে সেলফি তুলতেও ভুলছেন না। বেশিরভাগই আসছেন সপরিবারে। আবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে খুলনায় শিক্ষাসফরে বা পিকনিকে আসা শিক্ষার্থী বা যুবক যুবতী, বন্ধু-স্বজনসহ নানা বয়সের মানুষও আছেন। এমনকি খুলনায় আসা বিদেশী পর্যটকরাও একবার আসছেন ক্যাম্পাসের এই ফুলের শোভা দেখতে। এবার সবচেয়ে নানা জাতের ফুল বেশি ফুটেছে উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে ও বাইরে। এর পর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে। আবাসিক হল গুলোতেও ফুটেছে নানা বর্ণের ফুল। তবে খানবাহাদুর আহসানউল্লা হল এবং অপরাজিতা হলে ফুলের সংখ্যা বেশি। আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনেও এবার নতুন জাতের ফুল ফুটেছে। আর জারবেরা সেন্টারেও ফুটেছে নানা বর্ণের জারবেরা ফুল।

    খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান ক্যাম্পাসে ফুল চাষে বিশেষভাবে আগ্রহী। গত কয়েক বছর ধরেই তিনি ফুলের বাগান সৃজনে এবং নতুন নতুন ফুল চাষে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাঁর তত্ত্বাবধানেই বিশেষ করে তাঁর বাসভবনের বাইরে ও ভেতরে এবং প্রশাসনিক ভবনের সামনে পরিকল্পিতভাবে শীতকালীন ফুল চাষ হয়েছে বলে জানা যায়। প্রতিদিন সকাল-বিকেলে ঘুরে ঘুরে তিনি দেখেন কোথায় কি সমস্যা। প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। এ ব্যাপারে তাঁর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ফুলের সৌন্দার্য মানুষকে মুগ্ধ করে। মানুষের চিত্তে এক ধরণের বিনোদন ও প্রশান্তি যোগায়। বিশ্ববিদ্যালয় শত সম্ভাবনার জায়গা। এখানে ফুলের সমারোহ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। উপাচার্য বলেন, আমি গত কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করছি ক্যাম্পাসে ফুলের বাগান বি¯তৃতির জন্য। তিনি ভবিষ্যতে সকল ভবনের সামনে এবং অন্যান্য সম্ভাব্য খোলা স্থানে ফুলের বাগান সৃষ্টিতে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট (সম্পত্তি) শাখার উপ-রেজিস্ট্রার কৃষ্ণপদ দাশ জানান এ বছর নানা জাতের ফুলের চারা লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে কেবল গাদা ফুলই আছে ৪-৫ জাতের। অন্যান্য ফুলের নতুন নতুন কয়েকটি জাতও এবার লাগানো হয়েছে। বৈরী আবহাওয়া সত্ত্বেও এবার ভালোভাবে ফুল ফোটায় আমরা খুশি। তিনি বলেন উপাচার্যের ব্যক্তিগত আগ্রহ ও তত্ত্বাবধানের কারণে সময়মতো ফুল চাষ সম্ভব হয়েছে। তবে এবার আবহাওয়ার যে অবস্থা তাতে আশংকায় আছি। কুয়াশা তুলনামূলক কম হলেও ভয় বৃষ্টি নিয়ে। বৃষ্টি হলেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে। প্রতিদিন প্রচুর দর্শক আসছেন। আমরা তাদের ফুলের সৌন্দার্য্য উপভোগ করতে বা ছবি তুলতে বাঁধা দেই না। তবে ফুল যাতে কেউ না ছিঁড়ে সে অনুরোধ জানাই। কারণ ফুল গাছে থাকতেই শোভা বৃদ্ধি পায়। উপাচার্যের ভবনের সামনে এবার যে দু’টি স্থানে নতুন বাগানে সব প্রজাতির ফুল ফুটেছে। বাগানের মালি মোঃ রেজাউল ইসলাম বলেন, এবার প্রথম ফুল লাগানো হয়েছে। মাটির অবস্থা এখনো অতোটা উপযোগী না হলেও ভালো ফুল ফুটেছে। উপাচার্য স্যার প্রতিদিন এই বাগান দেখেন। আমাকে নানা নির্দেশনা দেন। আমি সব সময়ই খুব যতœ নিচ্ছি। আগামী বছর আরও ভালো হবে আমার আশা।

    এদিকে ঋতুরাজ বসন্তকে স্বাগত জানাতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে দিনব্যাপী বসন্তবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

     

     

     

     

     

     

     

     

  • খুলনায় বিশ্ব বেতার দিবস পালিত

    খুলনায় বিশ্ব বেতার দিবস পালিত

    স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ বেতার, খুলনা কেন্দ্রের উদ্যোগে সোমবার র‌্যালি ও বেতার থেকে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে পালিত হয় জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব বেতার দিবস-২০১৭। সকালে র‌্যালির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক মোঃ বশির উদ্দিন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘তুমিই বেতার’।

    এ সময় অন্যান্যর মধ্যে বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রক মোঃ নূরুল ইসলাম, আঞ্চলিক প্রকৌশলী বিভাংশু কুমার সাহাসহ সরকারি কর্মকর্তা, বেতারের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, শিল্পী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

    পরে আঞ্চলিক পরিচালকের নেতৃত্বে র‌্যালিটি বেতার থেকে শুরু হয়ে শিববাড়ি হয়ে পুনরায় বেতারে এসে শেষ হবে।

     

  • বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ হাফিজুর রহমান আর নেই

    বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ হাফিজুর রহমান আর নেই

    স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য ও খুলনা জেলা  সভাপতি প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া (৭৬) আর নেই। রবিবার বেলা পৌনে ৩টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কমরেড হাফিজুর রহমান জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও পাট-সুতা-বস্ত্রকল সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গেল বছর ১৬ সেপ্টেম্বর কমরেড হাফিজুর রহমান ভূইয়াকে দিল্লির বিএলকে হাসপাতালে লিভারের টিউমার অস্ত্রপচার হয়। সেখান থেকে ফিরে এসে পরবর্তীতে চেক-আপের উদ্যেশে ২৮ ডিসেম্বর দিল্লির হাসপাতালে ভর্তি হতে দেশ ত্যাগ করেন। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ১৩ জানুয়ারি  তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। গত শুক্রবার একই অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

    মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ কন্যা, ২ পুত্র, পুত্রবধূ, জামাতা ও নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।আজ সোমবার ঢাকায় ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ঢাকায় শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর তাঁর মরদেহ খুলনায় আনা হবে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধার জন্য রাখা হবে। সেখানে শ্রদ্ধা ও জানাযা শেষে পর্যায়ক্রমে খালিশপুর প্লাটিনাম ময়দান, দৌলতপুর শহীদ মিনার চত্বর, আলীম-ইস্টার্ণ চত্বর, ফুলতলা পার্টি অফিস, ফুলতলা উপজেলা ডাবুর মাঠে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও জানাযা শেষে উপজেলা সরকারি কবরস্থানে সমাধিস্থ করা হবে।এদিকে কমরেড হাফিজুর রহমানের মৃত্যুর খবর খুলনায় ছড়িয়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। বিশেষ করে শিল্পাঞ্চল এলাকায় শ্রমিকরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। প্রয়াত কমরেডের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে খুলনা জেলা ওয়ার্কার্স পার্টি, আওয়ামী লীগ, ১৪ দলসহ খুলনার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।কমরেড হাফিজুর রহমানের সংক্ষিপ্ত জীবনী : তিনি খুলনার ফুলতলা উপজেলার দামোদর গ্রামে সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৪১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০-৬১ সালে দৌলতপুর বিএল কলেজে অধ্যয়নকালে ছাত্র ইউনিয়নে যোগদানের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক অঙ্গণে প্রবেশ এবং ছাত্র অবস্থায় ফুলতলার প্রবীন রাজনীতিবিদ কালিপদ ঘোষের হাত ধরে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন। এ সময় কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ থাকায় ভাষানী ন্যাপের রাজনীতি করতেন। ১৯৬৩ সালে আযমখান কমার্স কলেজ থেকে বিকম পাশ করেন এবং ১৯৬৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম কম পাশ করে কর্মজীবনের শুরুতে বটিয়াঘাটা ডেউয়তলা হাই স্কুলে ৬ মাসের জন্য প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে কমরেড নজরুল ইসলামের প্রেরণায় ১৯৬৬-র ৮ জানুয়ারি, শ্রমিক আন্দোলনে যুক্ত হয়ে খালিশপুরের প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলে চাকুরিতে যোগদান করেন। চাকুরির সুবাদে ওই মিলের এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নে বার বার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। এছাড়া আলিম ও ইষ্টার্ণ জুট মিলস মজদুর ইউনিয়নে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বহুবার বিজেএমসি কর্তৃপক্ষ পদোন্নতি দিতে চাইলেও তিনি শ্রমিক আন্দোলনের সার্থে পদোন্নতি নেননি, এমনকি ৮০ দশকের প্রথম দিকে ডিজিএম পদে লোভনীয় পদোন্নতি প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭০ সালের প্রথমদিকে পার্টির সভ্যপদ লাভ করেন। দেশ স্বাধীনের পর লেলিনবাদি কমিউনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত হন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৮ সালে ইউপিপি-তে এবং পরবর্তিতে ইউপিএলবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। ১৯৮৫ সালে ওয়ার্কার্স পার্টির এক অংশের কেন্দ্রীয় সদস্যের দায়িত্ব পালন করেন, এরপর ১৯৯২ সালে ৩ পার্টির ঐক্য কংগ্রেসের মধ্যদিয়ে গড়ে ওঠা বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির খুলনা জেলা সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সদস্য হন। ২০০৮ সালে পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৫ সাল থেকে অদ্যাবধি পার্টির খুলনা জেলা সভাপতি ছিলেন। তার বর্ণাঢ্য আন্দোলনমুখর জীবনে রক্ষীবাহিনীর হাতে নির্মম নির্যাতন ও কারাভোগসহ বিভিন্ন সময় ও মেয়াদে ৫ বার কারাভোগ করেন। শ্রমিক নেতৃত্ব ছাড়াও জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পর্যায়ে একাধিকবার নির্বাচনে অংশ নেন। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন কমিটির সদস্য, পাট-সুতা-বস্ত্রকল সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও খুলনা-যশোর পাট শিল্প সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক, বিল ডাকাতিয়া সংগ্রাম কমিটি, পানি ঠেকাও ফুলতলা বাঁচাও আন্দোলন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠান আন্দোলন, খুলনা শিল্প কারখানা রক্ষার ও মুজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন, বিভিন্ন সময় সা¤্রাজ্যবাদ ও সম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলন, স্বৈরাচারী-দুঃশাসনের আন্দোলন এবং রাষ্ট্রায়ত্ব পাট কলের শ্রমিক আন্দোলনের রূপকার হিসেবে খালিশপুরসহ দেশব্যাপী আন্দোলনের চালিকা শক্তি হিসেবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার হাত ধরে ফুলতলা এম এম কলেজ, ফুলতলা মহিলা ডিগ্রী কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়। জামিরা বাজার আসমোতিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, ফুলতলা রি-ইউনিয়ন হাই স্কুল, দামোদর মুক্তময়ী হাই স্কুল, ফুলতলা মহিলা ডিগ্রী কলেজ ও ফুলতলা এম এম কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, ফুলতলা লিটল এ্যাঞ্জেল কিন্ডার গার্টেনের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

    এদিকে রূপান্তর পরিবারের পক্ষে নির্বাহী পরিচালকদ্বয় স্বপন কুমার গুহ এবং রফিকুল ইসলাম খোকন এক শোক বার্তায় কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তাঁর বিদেহী রুহের মাগফিরাত কামনা করেছেন। সেই সাথে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।

    শোকবার্তায় বলা হয়, কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়ার মৃত্যুতে মেহনতি মানুষের মুক্তির লড়াইয়ে, খুলনাবাসীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্বের যে শূণ্যতার সৃষ্টি হলো তা’ পূরণ হবার নয়।

  • ফুলতলাকে মাদকমুক্ত ঘোষণা

    ফুলতলাকে মাদকমুক্ত ঘোষণা

    স্টাফ রিপোর্টার : খুলনা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা রোববার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।  খুলনা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল আহসান এতে সভাপতিত্ব করেন।শহরে সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান প্রবেশ করতে পারবে না এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ট্রাফিক পুলিশ যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া ট্রাক মালিক সমিতি এবং ব্যবসায়ী মালিক সমিতিকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অবহিত করণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। খুলনা মহানগরের রাস্তায় ইজিবাইক, অবৈধ স্থাপনা এবং রাস্তার খোড়াখুড়িতে ধুলাবালির কারণে জনগণের সীমাহীন দুর্ভোগের বিষয় উল্লে¬খ করে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সভায় জোর সুপারিশ করা হয়। এ প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ বলেন, প্রতিটি সমস্যা আলাদাভাবে চিহ্নিত করে নির্ধারিত সংস্থাগুলোকে পরিকল্পিতভাবে সমস্যার টেকসই সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে।খুলনা শহরে মাদকের ভয়াবহতার বিষয় উল্লে¬খ করে  বিভিন্ন জন উদ্বেগ প্রকাশ করে এটি নির্মূলে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলেন। এটি শুধু সমাজ ও দেশকেই ধ্বংস করে না বরং পুরো পরিবারকেই নি:স্ব করে দেয়, তাই অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার  এবং স্কুল-কলেজে-বিশ্ববিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম চলমান রাখলেই  হবে না, একে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।  এ প্রসঙ্গে মাদককে এক নম্বর সমস্যা হিসেবে এটি নির্মূলে প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় অঙ্গীকার বাস্তবায়নে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রথমেই ফুলতলা উপজেলাকে মাদকমুক্ত করার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, মাদকের বাহক ও গ্রাহক যে-ই হোক না কেন কোন রকম ছাড় দেয়া হবে না।  সভাপতি এটি বাস্তবায়নে যে কোন সময় অভিযানের প্রতিশ্র“তি দেন এবং অভিযানে জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে সংযুক্ত করার কথা বলেন। অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এবং হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের সেবার মান বাড়াতে সিভিল সার্জন-কে মনিটরিং জোরদার করার সুপারিশ করা হয়।

    সভায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, উপজেলা চেয়ারম্যান, সিভিল সার্জন, উপ-পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, কেসিসি’র প্রতিনিধি, র‌্যাব প্রতিনিধি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যগণ অংশগ্রহণ করেন।

    সভায় আইনশৃঙ্খলা প্রতিবেদনে জানানো হয়, খুলনা মহানগরীর আটটি থানায় গত জানুয়ারি-১৭ মাসে ডাকাতি ২টি, রাহাজানি ১টি,  চুরি ৬টি, খুন ২টি, অস্ত্র আইন ২টি, দ্রুত বিচার ৩টি, ধর্ষণ ১টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ৯টি, মাদকদ্রব্য ৭৭টি এবং অন্যান্য ৪৯টিসহ মোট ১৫৬টি মামলা দায়ের হয়েছে। গত ডিসেম্বর-১৬ মাসে এ সংখ্যা ছিল ১৩৮টি।

    জেলার নয়টি থানায় গত জানুয়ারি-১৭ মাসে রাহাজানি ১টি, চুরি ৩টি, খুন ১টি, অস্ত্রআইনে ১টি, ধর্ষণ ৩টি, অপহরন ২টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ১১টি ও  মাদকদ্রব্য ৩৩টি এবং অন্যান্য আইনে ৮৪টিসহ মোট ১৩৯টি মামলা দায়ের হয়েছে।  গত ডিসেম্বর-১৬ মাসে এ সংখ্যা ছিল ১৩১টি।

  • সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে  অনুষ্ঠানমালা শুরু আজ

    সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানমালা শুরু আজ

    স্টাফ রিপোর্টার : সুন্দরবন দিবসে বরাবরের মত এবারেও তিনদিন ব্যাপী কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানমালার শুরু হয়েছে রোববার থেকে খুলনায়। উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য চিত্রাঙ্কন ও বক্তৃতা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

    স্কুল পর্যায়ের শিশুদের জন্য ‘জীববৈচিত্র্যের সুন্দরবন, করবো মোরা সংরক্ষণ’ শীর্ষক চিত্রাঙ্কন ও বক্তৃতা প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচী শুরু হয়। আজ সকাল ১০টায় উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। চিত্রাঙ্কন এবং বক্তৃতা প্রতিযোগিতায়  ৭ম থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায়। শতাধিক শিক্ষার্থী চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। মহানগরীর খ্যাতনামা স্কুলগুলোর শিক্ষাথীরা এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে। সোমবার খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

    ১৪ ফেব্র“য়ারি সুন্দরবন দিবসে স্কুলভিত্তিক শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে জাতিসংঘ শিশু পার্কে। আশা করা হচ্ছে ১৪ ফেব্র“য়ারি খুলনায় কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী, সুন্দরবনপ্রেমী, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সাতশ’ মানুষ অংশগ্রহণ করবেন। এ ছাড়াও “বিশ্ব ভালবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালবাসুন” শ্লোগান তুলে ধরে দেশে ও দেশের বাইরে ব্যাপকভাবে ই-কার্ড মেইল করার কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে খুলনায় সুন্দরবন দিবস অনুষ্ঠান আয়োজনের পাশাপাশি সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা জেলা ্ও সুন্দরবন সন্নিহিত উপজেলাসমূহে সুন্দরবন দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হচ্ছে।

    উল্লেখ্য, সুন্দরবন একাডেমী ও বন বিভাগের যৌথ ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এ উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে-বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংগঠন, সুন্দরবন সংলগ্ন সাংবাদিক সমাজ এবং প্রকৃতিপ্রেমী আপামর মানুষ।

  • এবার একুশে পদক পাচ্ছেন যাঁরা

    এবার একুশে পদক পাচ্ছেন যাঁরা

    এসবিএন : সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতস্বরূপ দেশের সতের জন বিশিষ্ট নাগরিককে ২০১৭ সালের একুশে পদক প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

    তারা হলেন : ভাষা আন্দোলনে ভাষাসৈনিক অধ্যাপক ড. শরিফা খাতুন, শিল্পকলায় (সংগীত) সুষমা দাস, জুলহাস উদ্দিন আহমেদ, ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম ও রহমতউল্লাহ আল মাহমুদ সেলিম, শিল্পকলায় (চলচ্চিত্র) তানভীর মোকাম্মেল, শিল্পকলায় (ভাস্কর্য) সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ, শিল্পকলায় (নাটক) সারা যাকের, সাংবাদিকতায় আবুল মোমেন, গবেষণায় সৈয়দ আকরম হোসেন, শিক্ষায় প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, সমাজসেবায় অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান, ভাষা ও সাহিত্যে (মরণোত্তর) কবি ওমর আলী, ভাষা ও সাহিত্যে সুকুমার বড়–য়া, সাংবাদিকতায় স্বদেশ রায় এবং শিল্পকলায় (নৃত্য) শামীম আরা নীপা।

    আগামী ২০ ফেব্র“য়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৭ সালের একুশে পদক প্রদান করবেন।

  • প্রেম এবং যৌনতা

    প্রেম এবং যৌনতা

    শেখর দীপ, কলকাতা : প্রেম এবং যৌনতা দুটি শব্দ পরস্পর এতো কাছে থেকেও এর প্রতি মানুষের মনোভাবে এক অদ্ভুত সুয়োরানী এবং দুয়োরাণী গোছের মনোভাব। প্রথমটি সহজেই উদযাপনের বিষয়, দ্বিতীয়তই চিরকালের অবগুণ্ঠিত। দ্বারে বসন্ত জাগ্রত, শিয়রে প্রেমের মরশুম, কিন্তু এই একবিংশ শতকের উল্লাসী জীবনের মাঝে প্রেম বড়ই ম্যাড়মেড়ে হয়ে উঠেছে।

    উদযাপনে রয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়াতেও রয়েছে, কিন্তু জীবনে তার বড্ড অভাব। না এখানে ঠিক প্রেম বলবো না, বলবো সম্পর্ক, ভালোবাসা। যার উদযাপনের মাত্রাটা পৃথক। যার স্পর্শ-টা তেমন মোটা দাগের নয়। নিভৃতে যে নিজেকে গুছিয়ে রাখে এক মোলায়েম চারাগাছের মতো। তবে তাতে একদিনের, দুদিনের জোর বৃষ্টির দরকার হয় না। দরকার হয় প্রতিদিনের অল্প জলের। কিন্তু এখন মানুষের সেই সময় কোথায়?

    একদিন হেদিয়ে ভালোবাসা দেখিয়ে তারপর বছর ভর শুধু অভাব অভিযোগ এবং একটু এদিক ওদিক ছুঁক ছুঁক। আহা ওই ছুঁক-ছুঁকানি আজকাল আধুনিকতা। অন্তত এমনটি তাদের ধারণা বইকি। তারপর কথায় কথায় বিবাহবিচ্ছেদ, সম্পর্ক বিচ্ছেদ এবং আরও দ্রুততায় নতুন কোনও সম্পর্কের সন্ধান। এক নামী ঘড়ির বিজ্ঞাপনী ভাষাই তো-‘ এগিয়ে যান’। তা সে কোথায় এগিয়ে যাবো এবং কেন এগিয়ে যাবো তা নিয়ে সবাই চুপ। এই এগিয়ে যাওয়া সংস্কৃতিটাই তো বিজ্ঞাপনী কায়দা। ধরে রাখতে চাইলে তা তো খুব পুরাতন। সে সব তো খুব কঠিন, ম্যাড়ম্যাড়ে। তাই হেদিয়ে ছুটে চলেছি সামনে। যে পড়ে থাকার থাকুক, যে মরে যাওয়ার যাকগে। আমি তো এগিয়ে থাকলুম।

    সেখানে যদি আমার ভালোবাসার মানুষটি একটু ঘ্যানঘ্যানে হয়, একটু কল্পনা বিলাসী হয়, একটু দাবি দাওয়া বেশি থাকে তবে সে স্মার্ট নয়। এই স্মার্ট বাজারে যখন সবাই এতো আবেগ-বর্জিত সেখানে আন-স্মার্ট ন্যাকা-বোকা প্রেমে কি লাভ। বিশেষত যেখানে প্রেমটাই এতো সহজলভ্য। বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট আছে যেখানে সহজেই প্রেমে পড়া যায়। তাই থেমে চলা মুশকিল। মাঝে মাঝে এসবের মধ্যে থেকে নিজের গা থেকে কেমন একটা ডাইনোসর মার্কা গন্ধ আসে। ভাবি আমি কি বিলুপ্ত হচ্ছি, নাকি হয়ে গেছি বুঝতে পারছি না। এই চমৎকার মুখ দেখানো সভ্যতায় আমি এক স্বেচ্ছা নির্বাসন নেওয়া নাবিক।

    আসলে যে মানুষ একবার বুঝে যায় চমকের অগভীরতা সে খুব ভাবে নিজেকে সাজিয়ে তুলতে চায়, মননে, সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে চায় একটি জগত সুন্দর করে গড়ে তুলতে। এই ক্ষেত্রে একটি বিন্দু থাকা খুব আবশ্যক। সূচনা বিন্দু। একটি লক্ষ্য বা এপিসেন্টার। আমার জন্য সেটা চিরকালই প্রেম। একটি মানুষের ভালোবাসায় বিশ্বাস করা। এবং সেই ভালোবাসাকে কেন্দ্র করে একটি মায়া-জগত গড়ে তোলা। আমাদের মন বারবার এরকম একটি জগত গড়ে তুলতে চায় যেখানে আমরা ভালো থাকি। বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে এই জগত বিভিন্ন প্রকার। কেউ উচ্চ কোনো আদর্শকে কেন্দ্র করে একটা জগত গড়ে তোলেন, কেউ বা একটা রাজনীতি বোধ থেকে।

    আমি কোন কালেই রাজনীতি, উচ্চ আদর্শ অথবা কোনও মতবাদে( সে ঈশ্বর হোক অথবা শয়তান) বিশ্বাস করি নি। মনের মধ্যে একটা প্রকৃতি চিরকালই বাসা বেঁধে ছিল। মনের সেই প্রকৃতির সঙ্গে বাইরের প্রকৃতির একটি মেল-বন্ধন ঘটাতে চাইতাম ছোট থেকে। শৈশব থেকে কৈশোরে উপনীত হয়ে মেয়েদের প্রতি যে আকর্ষণ অনুভব করি তাই প্রথম প্রেম বলে মূলত জেনেছি। বলা বাহুল্য তা রূপের উন্মাদনা। কোন মেয়েটির মুখ বড়ই নরম, কোন মেয়েটির চলন বলন বড়ই সুমিষ্ট এই হল আমাদের আকর্ষণের মূল বিন্দু।আমার যে বান্ধবীরা সে যুগে আমাদের দলে ভিড়ে যথেচ্ছ ‘ছেলে’-মানুষী করেছে সেসব খাঁটি হীরেদের সেযুগে( বা হুজুগে) তুচ্ছ করেছিলাম, এটা স্বীকারোক্তি। পরবর্তীতে তারা সমস্ত বিদুষী হয়েছে এবং তাদের সেই মূল্য না বুঝতে পাড়ায় আমরা হাত কামড়ে মরেছি। আসলে যাদের সহজেই নাগাল পাচ্ছি এই মনুষ্য-জীবনে তাদের সঠিক মূল্য দিতে শিখলাম কই। আমাদের যত মোহ আভাসের প্রতি। সেসমস্তও শ্বেত-মরালীদের প্রতি যারা তাচ্ছিল্য ভরে সামান্য ঈশারা কিপটের মতো ছড়িয়ে দিয়ে যাবে এবং আমরাও ঘেউ করে চলে যাবো পেছন পেছন।

    যাই হোক, সে অবস্থা থেকে মস্তিষ্ক বর্তমানে কিঞ্চিৎ পরিণত হয়েছে। যে রূপজ এবং দেহজ সৌন্দর্যের প্রতি আমরা উন্মত্ত হয়ে ভুল পথে গিয়েছিলাম সেসব মোহ আর নেই আজকাল। আজকাল মানুষের মনের প্রতি এক তীব্র লোভ। কিন্তু মানুষের মনের প্রতি তীব্র লোভ থাকলে যে নিজের মনটিকেও গুছিয়ে নিতে হয়, সাজিয়ে নিতে হয়। অন্তত প্রেমের ক্ষেত্রে পকেটে অর্থ না থাকলে মনেতে শৌখিনতা অবশ্য কর্তব্য। দুটি মন নানাভাবে কাছে আসতে পারে। দৈহিক সৌন্দর্য একটি বড় বিষয়। মানসিক এবং দৈহিক। পূর্বরাগের ক্ষেত্রে তা অত্যন্ত দরকারি। মানুষের গুণ দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে একে অপরের কাছে আসে মানুষ। কোনও একটি দর্শন, একটি চমৎকার বোধ, অথবা অস্তিত্ব চেতনা দুটো মানুষকে সহজেই কাছে আনতে পারে। রূপের তুলনায় এই গুনের টান পাওয়া মানুষগুলো একটু অন্য গোত্রের হয়। তাদের মধ্যে এক শিল্প-চেতনা এমন ভাবে বিরাজ করে যাতে করে জীবনের অনেক গভীর স্তরে তাদের বসবাস। যে রূপ তারা দেখতে পায় তা সকলে দেখতে পায় না। যাক গে সে কথা আলোচনা করা আমার মুখ্য উদ্দেশ্য নয়।

    প্রেম থেকে একটি সম্পর্ক ভালোবাসায় আসতে গেলে একটি দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হয়। বলা বাহুল্য এই পথ তেমন সহজ হয় না, না হওয়াই মঙ্গল। যত কঠিন এই পথ একটি মানুষের সঙ্গে ওপর মানুষের থাকার ইচ্ছেটাও তত প্রবল ভাবে বেড়ে যায়। তারা বুঝতে পারে পরস্পরের সুবিধা, অসুবিধা এবং সীমাবদ্ধতাগুলো। পুরুষের ক্ষেত্রে কাম এবং প্রেম দুই বড্ড তাড়াহুড়োর। সহজেই তারা উন্মত্ত হয়ে যায়, সহজেই তারা সমস্ত প্রেম একবারে দেখিয়ে ফেললেই যেন বাঁচে। এই ভবসাগরে ডুব দিয়ে তারা এখুনি সব সম্পদ নিয়ে আসবে এই হল তাদের পণ। নারীদের ক্ষেত্রে কাম এবং প্রেম দুইই নানা স্তর পার হয়ে আসে। তাদের কোনকিছুই খুব আচমকা নয়, অনেক ধীর, অনেক পরিণতির মধ্যে দিয়ে যে ভালবাসাটা বাসে তা দীর্ঘস্থায়ী। কারণ তার মধ্যে বহুদিনের সঞ্চিত এক বোধের বসবাস। পুরুষের এই আচমকা উত্তেজনা তারা সহজে সইতে পারে না, আহত হয়, তবু এই উত্তেজনায় তারা আকৃষ্ট হয়। এই পাগলামো পেতে কম বেশি সমস্ত নারী ভালোবাসে। এই হল তাদের সমর্পণ। এই সমর্পণের পেছনে শারীরিক এবং মানসিক দুই বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ। দু ক্ষেত্রেই তারা কখনো নিয়ন্ত্রণাধীন হতে চায় এবং কখনো নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। পুরুষের ক্ষেত্রে যদিও এই দুই বৈচিত্র্য কিঞ্চিৎ কম।তাদের ক্ষেত্রে এই প্রাথমিক পাগলামি এবং দুর্বলতা ভালোবাসার শ্রেষ্ঠ প্রমাণ। তাতে সমর্পণ আছে, আবার অহং-ও প্রবল। সমস্ত জগত থেকে নারীকে বিচ্ছিন্ন করে সে পেতে চায়, এবং নিজেকে সমর্পণ করতে চায়। অন্তত প্রাথমিকে। নারী এই পাগলামি যে ক্ষণস্থায়ী তা বোঝে, তবু ক্ষীণ প্রশ্রয় দেয়, কারণ নারীর মধ্যে অবস্থিত পুরুষের ভাগ। মান, অভিমান, অহংকার, হিংসের এই পর্ব যদি দুটি মানুষ কাটিয়ে দিতে পারে তখন তাদের মধ্যে এক সেতু-বন্ধন হয়। সব কথা তখন বুঝিয়ে দিয়ে হয় না, চোখে চোখে কথারা নিজেদের অবস্থান খুঁজে নিতে পারে। শরীরে নৈকট্য আসে। মানসিক প্রেম শরীরকে গ্রহণ করে অধিকারের ভীত আরও একটু মজবুত করতে চায়। এই কাছে আসায় এক অদ্ভুত আনন্দ, অন্তত এই নীল গ্রহে একটি প্রাণ ওপর প্রাণকে অধিকারে বাঁধতে চাইছে এই বোধ বাঁধতেও আছে, বাঁধা পড়াতেও আছে। তাই যৌনতা অতি সুন্দর বিষয়, যতক্ষণ না তা কদর্য। মানুষ মাত্রেই তার মধ্যে রুচিশীল এবং রুচিহীন যৌনতা আছে, এবং সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুই-ই বাস্তব। কিন্তু রুচিহীন যৌনতা যদি রুচিশীল যৌনতাকে ছাপিয়ে ওঠে তখন কেবল মাংসের উৎসব থাকে। মন এবং মানুষ, কেউই থাকে না।

    আমাদের সমাজে এখন কেবল এই রুচিহীন যৌনতার উৎসব। রাষ্ট্র-শক্তির দ্বারা অবদমিত, বিভিন্ন বিজ্ঞাপন গোষ্ঠীর দ্বারা বিজ্ঞাপিত এই যৌনতা আদতে যৌনতার সুন্দর দিককে আমাদের চোখে নষ্ট করে দেয়। ফলে ক্রমাগত মন অপরাধী হয়ে ওঠে। যে বিষয়টি প্রকৃতির মতোই সুন্দর এবং স্বাভাবিক তা আমরা অপরাধ-বোধ নিয়ে অনুভব করি। এই অবদমিত যৌনতাই আমাদের জীবনে প্রচুর অপরাধের কারণ। এবং এটি একটি ব্যবসায়িক লাভ। বর্তমান প্রজন্মের কাছে একাধিক সম্পর্ককে স্মার্ট রূপে তুলে ধরা যেমন একটি ব্যবসায়িক চক্রান্ত। এটি একটি বিজ্ঞাপনী কায়দাও। একটি ভালোবাসাকে দীর্ঘদিন ধরে লালন করা, সেটিকে ধৈর্য দিয়ে, যতœ দিয়ে, অধিকার দিয়ে আগলে রাখা একটি বৃহৎ শিল্প। কিন্তু এই সমাজ শিল্পী নয়, শ্রমিক চায়। শিল্পিতে বিপদ, শ্রমিক কম ভাবে, তাই সে কম বিপদজনক। শ্রমিকের যতœ করার সময় নেই, কোনকিছুতে সে যদি বিশ্বাস করে তা হল অর্থ এবং উন্নতি। সমবয়স্ক বন্ধুদের মধ্যে এরকম বহু উদাহরণ দেখি যারা কেবল উন্নত চাকরি এবং উন্নত মায়না দিয়ে কিনে নিতে চায় নারী হৃদয়। তাদের ক্ষেত্রে নারী পরিচয় গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং নারী বিনিময় মূল্যটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এরা আধুনিক কারণ এদের কোনও আবেগ নেই। পিছুটান-হীনতাকে এরা আধুনিকতার শ্রেষ্ঠ পরিচয় রূপে জানে। এই ছদ্ম আধুনিকতায় হৃদয়ে এরা কতটা গরীব তা হয়ত এরা কোনোদিন বুঝতেই পারে না।

    ভালবাসা কোনও কিনে নেওয়া বিষয় নয়, কোনও মূল্যবান সম্পত্তি নয়। একটা বোধ, তাতে আর যাই হোক স্টেপ জাম্প হয় না। জিতে নিতে হয়, ছিনিয়ে নেওয়া যায় না। কথাটা শুধু কিছু পুরুষের ক্ষেত্রে নয়, নারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আসলে নিজেকে কোনও একটি মানুষের জন্য সমর্পণ করতে আমরা ভয় পাই। এই যুগ আমাদের মধ্যে এক খুঁড়োর কল এমন ভাবে লাগিয়ে দিয়েছে যাতে আমরা কেবল অন্ধের মতো অর্জন করতেই শিখেছি। কিন্তু তাতে আদৌ শান্তি পাচ্ছি কিনা, সেটা ভেবে দেখার মতো অবসরও আমাদের নেই। তাই আমাদের এই ছিনিয়ে নেওয়া জীবনে প্রেম বড় দুর্লভ। ভালোবাসা আমারই মতো বিলুপ্তপ্রায়। চিঠি নেই, অপেক্ষা নেই, চিরকুট নেই, চোখে চোখে কথা বলা নেই, একটা আলতো ছোঁয়ায় বুঝিয়ে দেওয়া নেই, কেবল আছে চিৎকার, উল্লাস, প্রেমের প্রকাশ্য-স্থূল উদযাপন এবং নিয়মিত কদর্য যৌনতা। তাতে শিল্প নেই, দুটো শরীরের মিলন নেই। তা ধর্ষণই একপ্রকার। শাস্তি-হীন। এই আধুনিকতায় সকলে সকলের মতো হতে চায়, সকলের মতো প্রেম করতে চায়, আর হতে চায় প্রেমিক এবং প্রেমিকা। বন্ধু হওয়ার কোনও দায় কারো মধ্যে নেই। শুধু এক বুক আত্মবোধ নিয়ে দুটো মানুষ পরস্পরের কাছে থেকেও দুটো ভিন্ন পৃথিবীর বাসিন্দা হয়ে যায়। খোঁজ পায়না একে অপরের মনের।

    প্রেম বিবাহে পরিণত হয়, প্রেম অভ্যাসে পরিণত হয়, একে অপরের ছোট ছোট চেষ্টা, আশাগুলো কিছুদিন পর নিজস্ব কবর খুঁজে নেয় অথবা খুঁজে নেয় অন্য কোনো মন। আদতে একটি মানুষকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকাই শ্রেষ্ঠ আধুনিকতা, অন্তত থাকার জন্য লড়াইটা। একান্ত না থাকার মানুষের সঙ্গে থাকা যায়না কিন্তু এই দায়-হীন সমাজ, এই বিশ্বাস- হীন সমাজ ক্রমাগত যে দিকে চলেছে তাতে করে তাকে কোনও সুবিখ্যাত চ্যানেলের সুবিখ্যাত সিরিয়াল বাঁচাতে পারবে না, বাঁচাতে পারবে না কোনও উদ্দাম শহুরে ভালোবাসার উদযাপন। বয়স, সময় নির্বিশেষে প্রতিদিন দুটো মানুষের একে অপরের জন্য আপাত নিরীহ কিন্তু প্রচণ্ড দামী চেষ্টাগুলো, বিশ্বাসগুলোই বাঁচিয়ে রাখতে পারে ভালোবাসা, সম্পর্ক। এই নীল গ্রহে এই ভালবাসাই তো সর্বশ্রেষ্ঠ, যৌনতাই তো সবথেকে সুন্দর সত্যি। এই অবিশ্বাসী সময়ের বুকে, প্রচণ্ড গতিশীল জীবনের গতিশীল সম্পর্ক এবং ব্রেক-আপে তাই বিশ্বাস- একটা আলো আধারি গলি ধরে হটাত হারিয়ে যাওয়া, একটা সুগন্ধি রুমালে কাঁথাস্টিচ, একটা সিগারেটের প্যাকেট হটাত হাওয়া, একসঙ্গে রান্নার মাঝে হটাত একবার এঁটো হাতে জড়িয়ে ধরা এবং একটা স্নান ভেজা শরীরে জড়ানো আঁচলের গন্ধে লেখা- ভালবাসি। ভালোবাসা গভীর নদীর নিঃশব্দে বয়ে চলা। ভালোবাসা এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের শ্রেষ্ঠ বিশ্বাস, একটা নরম বুকের আশ্রয়।

    সৌজন্যে: কলকাতা২৪

  • জমে উঠেছে ফুলের ব্যবসা

    জমে উঠেছে ফুলের ব্যবসা

    এসবিএন : পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসকে সামনে রেখে নগরে চলছে নানা প্রস্তুতি। উৎসবের রঙ-কে আরো একটু চড়িয়ে দিতেই তরুণ-তরুণীসহ উৎসব প্রিয় মানুষ কিনছেন পোশাক-আশাক ও অন্যান্য অনুষঙ্গ। ক্রেতাদের চাহিদা ও রুচির কথা মাথায় রেখে আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের মিশেলে হলুদ-কমলাসহ নানা রঙ ও ডিজাইনের বাহারি পোশাক নিয়ে এসেছে ফ্যাশন হাউসগুলো। জমে উঠেছে ফুলের ব্যবসাও। বাসন্তী সাজে ও ভালবাসা দিবসে ফুলের আবেদন চিরায়ত। বিশেষ এই দুই দিনে নগরবাসীর হতে রংবেরংয়ের বাহারি ফুল তুলে দিতে প্রস্তুত ফুল ব্যবসায়ীরা।

    বিক্রেতারা জানান, এই দিনগুলোতে গাদা, গোলাপসহ উজ্জ্বল রঙের ফুলের চাহিদা বেশি থাকে। আছে বিদেশি ফুলও। বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। তাই ভালো বেচা-বিক্রির আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

    প্রকৃতিতে ঋতুরাজ বসন্তের হাতছানি। বসন্তের রঙ, রূপ ও বৈচিত্র্যের ছোঁয়া পেতে অপেক্ষায় নাগরিক জীবন। প্রকৃতির সাথে মিলে বিশেষ দিনে সব বয়সী মানুষও চায় নিজেকে সাজাতে। পলাশ-শিমুলের রাঙা দোলের সাথে থাকতে হয় বাহারি পোশাকও।

     

  • ফিট থাকতে কী করেন ঐশ্বরিয়া?

    ফিট থাকতে কী করেন ঐশ্বরিয়া?

    এসবিএন : ফিটনেস মেনটেন না করলে পর্দায় দেখতে ভাল লাগবে না। এই তত্ব থেকেই ফিট থাকাটা তার প্রফেশনের অন্যতম শর্ত। তাই রুটিন করে নিজের স্পেশাল যতœ নেন তিনি। গণমাধ্যমের মারফত এমন তথ্যই দিয়েছেন ঐশ্বরিয়া রায় বচ্চন।

    সম্প্রতি এক সাক্ষাত্কারে ঐশ্বরিয়া বলেন, ‘হেলদি থাকাটা জরুরি। আমি সবসময়ই খাবারটা এনজয় করি। কখনও আজ পর্যন্ত কঠিন ডায়েট ফলো করিনি।’

    মেয়ে আরাধ্যার জন্মের পর ওজন বেড়ে গিয়েছিল তাঁর। কিন্তু পর্দায় উপস্থাপনের আগে ফের নিজেকে সাজিয়ে তুলেছিলেন তিনি। জানান, জিরো সাইজ হওয়ার ইচ্ছে তার কোনওদিনই ছিল না। বরং বরাবরই হেলদি ডায়েট ফলো করেছেন। কিন্তু নিজেকে সুস্থ রাখতে তিনি বেছে নিয়েছেন মর্নিং ওয়াকের পথ। যত কাজই থাকুক ভোরবেলা উঠে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে জুহুর রাস্তায় হাঁটা তাঁর দীর্ঘদিনের অভ্যাস।

  • সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ উচ্ছেদে আরো ভূমিকা রাখুন : প্রধানমন্ত্রী

    সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ উচ্ছেদে আরো ভূমিকা রাখুন : প্রধানমন্ত্রী

    এসবিএন :  জনগণের নিরাপত্তা বিধানে সততা, শৃঙ্খলা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার আনসার-ভিডিপি’র সদস্যদের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ উচ্ছেদে আরো বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের আহবান জানিয়েছেন।

    তিনি বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও মযাদাপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের সঙ্গেও তাদের সম্পৃক্ত হবার আহবান জানান।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের ভেতরে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং এই সামাজিক ব্যাধি প্রতিরোধ করে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখায় বিশেষ ভূমিকা আপনারা রাখবেন, সেটাই আমরা চাই।…যেন আমাদের ছেলে-মেয়েরা মাদকাশক্তি এবং জঙ্গিবাদে না জড়ায় এ ব্যাপারে আপনাদের একটা ভূমিকা রাখতে হবে।’

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা:রোববার সফিপুর আনসার একাডেমীতে ‘বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩৭তম জাতীয় সমাবেশ-২০১৭’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

    জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাাস কেবল বাংলাদেশেই নয় সমগ্র বিশ্বব্যাপ একটি সমস্যা আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আনসার- ভিডিপি’র সদস্যরা যারা গ্রামে-গঞ্জে বসবাস করেন তারা সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের মত অপকর্মের সাথে যারা জড়িত অথবা মাদকাশক্তি, মাদক পাচারের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে বিশাল ভূমিকা রাখতে পারেন। ছেলে-মেয়েরা মাদকাশক্তি এবং জঙ্গিবাদে যেন না জড়ায় এ ব্যাপারে আপনাদের একটা ভূমিকা রাখতে হবে।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা আমাদের শিখিয়েছেন কী করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হয়। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। এ ব্যাপারে আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগণের পাশে দাঁড়াবেন এটাই প্রত্যাশা। আপনারা আনসার ও ভিডিপিগণ সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।

    সফিপুর আনসার একাডেমির ইয়াদ আলী প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩৭তম জাতীয় সমাবেশের বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। বাহিনীর পরিচালক ফকরুল ইসলাম প্যারেড পরিচালনা করেন।

    এরআগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ এবং আনরার ও ভিডিপি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান খান আনসার একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, তিন বাহিনী প্রধানগণ এবং উচ্চ পর্যায়ের সামরিক ও বেসামরিক র্কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

    প্রধানমন্ত্রী জাতির ক্রান্তিকালে আনসার বাহিনীর সদস্যদের বলিষ্ঠ ভূমিকা স্মরণ করে বলেন, ‘আমাদের দেশে যখন কোন সমস্যা দেখা দেয় আনসার বাহিনীর সদস্যরা তখনই সেই সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।’

    তিনি বলেন, আমরা দেখেছি ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে, বিশেষ করে ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি-জামায়াত জোট অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছিল। তারা রেল লাইনে আগুন দেয়, রেল লাইন উপড়ে ফেলে, রেলের ফিস প্লেট উপড়ে ফেলে দেয়, বাসে আগুন, ট্রাকে আগুন, গাছ কেটে ফেলে, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। এসব কর্মকান্ডকে প্রতিহত করা এবং জনগণের জানমাল রক্ষায় আমাদের আনসার ভিডিপি বিরাট দায়িত্ব পালন করেছেন। বিশেষ করে অপারেশন রেল রক্ষা, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেইসাথে মহাসড়কের নাশকতারোধ থেকে শুরু করে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস দমনে আপনারা মহান ভূমিকা রেখেছেন, জাতিকে রক্ষা করেছেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের সর্বাত্মক সহযোহিতায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যার মধ্যদিয়ে আমরা টানা দ্বিতীয়বারের মত সরকার গঠন করে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছি। সেজন্য আমি আপনাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি, অভিনন্দন জানাচ্ছি।

    প্রধানমন্ত্রী ভাষার মাস ফেব্র“য়ারিতে মহান ভাষা শহীদ এবং ভাষা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পচাত্তরের ৩ নভেম্বর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে নিহত জাতীয় চার নেতাসহ মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ, সম্ভ্রমহারা ২ লাখ মা-বোনসহ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আনসার বাহিনীর ৬৭০ জন বীর সদস্যের কথাও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

    শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালে এ বাহিনীর স্বতঃস্ফূর্ত ও ব্যাপক অংশগ্রহণ ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। তাদের কাছে রক্ষিত ৪০ হাজার থ্রি নট থ্রি রাইফেলই ছিল মুক্তিযুদ্ধের মূল শক্তি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ দিনে আমি স্মরণ করছি এই বাহিনীর ১২ জন বীর আনসার সদস্যকে যারা ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের আম্রকাননে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকারকে শপথ গ্রহণকালে আনুষ্ঠানিক ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করেছিলেন।

    আনসার ও ভিডিপি’র উন্নয়নে তার সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৮ সালে আমাদের সরকারই আপনাদের সর্বোচ্চ সম্মান জাতীয় পতাকা প্রদান করে। আপনাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার ধারাবাহিকতায় ব্যাটালিয়ন আনসারদের চাকরি ৯ থেকে ৬ বছরের পূর্ণতা সাপেক্ষে স্থায়ীকরণের বিষয়টি সম্পন্ন হয়েছে।

    তিনি বলেন, এছাড়া আপনাদের সুযোগ-সুবিধা ও কল্যাণ প্রতিবছরই বিভিন্নভাবে বৃদ্ধি করা হচ্ছে। গত বছর ১৫টি মডেল আনসার ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর নির্মাণের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে ৫টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রতি বছর আপনাদের দৃষ্টান্তমূলক কর্তব্যপরায়ণতা ও সাহসিকতার স্বীকৃতিস্বরূপ যে পদক প্রদান করা হচ্ছে তা আমাদের সরকারই প্রবর্তন করেছে।

    আনসার ও ভিডিপি বাহিনীর সম্প্রসারণে সরকারের উদ্যোগের প্রসংগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি অস্থায়ী ব্যাটালিয়ন আনসার, অঙ্গীভূত আনসার, হিল আনসার এবং ভিডিপি দলনেতা-দলনেত্রীদের ভাতাদি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে ভিডিপি দলনেতা-দলনেত্রীদের পদসংখ্যা ৮ হাজার ৫শ’ জন থেকে ১৫ হাজার ২শ’ ৪৮ জনে উন্নীত করা হয়েছে। শহর এলাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে ওয়ার্ড দলনেতা ও দলনেত্রীর পদ বাড়ানো হয়েছে। পার্বত্য এলাকায় এ বাহিনীর ১৫টি ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে অপারেশনাল ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে। বিশেষ করে উপমহাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ দু’টি মহিলা ব্যাটালিয়নের সদস্যগণ দেশের সীমান্তে নাশকতা রোধ এবং অবৈধ চোরাচালান দমনে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাবে দায়িত্ব পালন করছে যা সত্যিই প্রশংসনীয়। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সন্ত্রাস দমনে রয়েছে এ বাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা।

    কর্মমুখী ও কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুবসম্পদকে কর্মদক্ষ করে গড়ে তোলা এ বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বাহিনীর সদস্যগণ বর্তমানে যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানসম্মত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে এবং কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দেশের বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। আমি এটা জেনে অত্যন্ত আনন্দিত যে, সাম্প্রতিক সময়ে এ বাহিনীর কর্মকর্তাগণ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসহ দেশে-বিদেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন।

    ‘সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০২১ সালের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করে জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলব, ইনশাআল্লাহ’, আশবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

    প্রধানমন্ত্রী পরে ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী, খুলনা এবং রাঙ্গমাটিতে আনসার ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর কমপ্লেক্স ভবনের নাম ফলক উন্মোচন করেন। পরে তিনি আনসার সদস্যদের নিয়ে একটি কেক কাটেন এবং তাদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। আনসার-ভিডিপি সদস্যদের তৈরি বিভিন্ন হস্তশিল্পের স্টল ঘুরে ঘুরে দেখেন।

  • অপাঠ্য লেখার কারণে বিশ্বে বছরে ৭ হাজার রোগীর মৃত্যু

    অপাঠ্য লেখার কারণে বিশ্বে বছরে ৭ হাজার রোগীর মৃত্যু

    বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া : দেশ থেকে আসার পর ভেবেছিলাম দেশ নিয়ে আরো কটি লেখা লিখবো। দুটি বিষয় নিয়ে লেখার পর ইউরোপ-আমেরিকায় এত কিছু ঘটে চলেছে যে লেখার বিষয় গেছে পাল্টে। ভাবছি এবার লিখবো ’হাতের লেখা’ নিয়ে। ভাবছেন এটা একটা লেখার বিষয় হলো নাকি। আমরা তো সবাই জানি কারো হাতের লেখা সুন্দর হয়, কারো মোটামুটি, পড়ার মত, কারো পড়ার অনুপযোগী, কারো একেবারে বাজে। আমার হাতের লেখার দশা এমনই যে কখনো-সখনো নিজে নিজের লেখাই উদ্ধার করতে পারিনে। হাতের লেখা কেমন সেটা কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। গুরুত্বপূর্ণ যা তা হচ্ছে পড়ার উপযোগী কিনা। বিশেষ করে কোন কোন পেশা আছে যেখানে হাতের লেখার উপর নির্ভর করে মানুষের বাঁচা-মরা। ভাবছেন মশকরা করছি? মোটেই নয়। সে কথায় একটু পরে আসছি।

    এখন তো হাতের লেখার চল প্রায় উঠে গেছে বললেই চলে। শৈশবে হাতের লেখা সুন্দর করার জন্যে, মনে পড়ে, একই বাক্যকে দশ বার করে এক পৃষ্ঠায় লিখতাম। বানান ভুল করলে এই ধরনের শাস্তির প্রচলন ছিল আমাদের সময়ে। তাতে বানান যেমন একদিকে শুদ্ধ হতো, তেমনি হাতের লেখাও সুন্দর হতে সহায়কের ভূমিকা পালন করতো। আমাদের দেশে স্কুলগুলোতে এখন তেমন ’সিস্টেমের’ চল আছে কিনা জানা নেই। প্রেমের চিঠির (প্রেম পত্র) ভাষা যেন সুন্দর হয়, হাতের লেখা যেন প্রেমিকের মন কাড়ে সেই জন্যে আমাদের সময় যারা প্রেম করতো, আমার বিশ্বাস সবার এই প্রচেষ্টা থাকতো, অচেতনভাবে হলেও। চিঠির ভেতর কয়েকটি গোলাপ ফুলের পাঁপড়ি, কিংবা একটু সুগন্ধি ছড়িয়ে দেয়া, দুটি ঠোঁটের লাল লিপিস্টিকের ছাপ কিংবা তীর বিদ্ধ হার্ট কত কী ছিল। কেবল প্রেমের চিঠির কারণে কবিতা, উপন্যাস ঘাঁটাঘাঁটি করতে দেখেছি অনেককে। দেখেছি তাদের সেখান থেকে ধার করা লাইন নিজের বলে চালিয়ে দিত। ভাষা জানুক আর না জানুক, প্রেমিক বা প্রেমিকাকে লেখা চিঠি সুন্দর হতে হবে, হতে হবে কাব্যে ভরা। এই প্রেমের চিঠি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় কত না দুষ্টমি করেছি। এখন মনে পড়লে হাসি পায়। আমার এক কাকা ছিলেন, দূর সম্পর্কীয়। বয়সে আমার চাইতে বছর কয়েক বড়, কিন্তু শারীরিক গঠনে ছোট। তার ছিল না টাকা পয়সার অভাব, অভাব যা ছিল তা হলো লেখাপড়া। কলমের ধার একেবারে ছিলনা বললেই চলে। তার সব ভাইয়েরা ব্যবসা করেন তখন, বাড়ীর আর্থিক অবস্থাও অতি সচ্ছল। ওই কাকা প্রেম করতো স্কুল পড়ুয়া তার প্রতিবেশী এক মেয়ের সাথে। মেয়েটি আমার চেনা। দেখতে চোখে পড়ার মত। সবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। দুপুর নাগাদ বাসায় ফিরতাম। বাবার ছিল সরকারী বড় বাসা। বাসায় ঢুকেই বা দিকে আমার ছোট্ট কামরা। ছিল বাইরের দিকে কাঠের জানালা। জানালা খুলেই নেট। রেলওয়ে স্টেশনের টিকেট কাউন্টারের মত ছিল একটি খোপ, তাতে হাত ঢুকিয়ে দেয়া যেত। জানালার দিকে থাকতো মাথা। দুপুরে ইউনিভার্সিটি থেকে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে বিশ্রাম নেব, এমন সময় এসে হাজির হতো আমার সেই প্রেমিক কাকা। এসেই বলতো, বাজি (বাবাজি) চল। সে কখন আসবে সে আগেভাগে বলে রাখতো, উদ্দেশ্যও। তারপর দুজন রিক্সা নিয়ে সোজা নিউ মার্কেট। দোতলায় উঠে ’ডায়মন্ড’ রেস্তোরাঁ। সব সময় ভীড় লেগেই থাকতো এই রেস্টুরেন্টে। ঢুকেই হাতের বাদিকে সারিবদ্ধ কয়েকটি কেবিন। পর্দা টাঙানো। স্কুল-কলেজ থেকে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আসা ছেলে-মেয়েরা সাধারণত: সেখানে বসতো, যতক্ষণ সম্ভব গল্প গুজব করতো, নিবিড় হয়ে পাশাপাশি বসে, কিংবা মুখোমুখি। আমি আর কাকা ঢুকে পড়তাম তেমনি একটি খালি কেবিনে। ওয়েটার কাছে এলে কাকা কখনো কাটলেট, কখনো চপ অর্ডার দিতেন চায়ের সাথে। খাবার আসার সাথে সাথে কাকা পর্দা টেনে দিতেন। পকেট থেকে বের করতেন কাগজ আর কলম। বলে, লেখ। আমি খেতে খেতে লিখে যাই তার প্রেমের চিঠি। মাঝে মাঝে সে বলে তার মনের কথা আর আমাকে মনে করিয়ে দেয় বারবার, ’একটু গুছিয়ে, সুন্দর করে লিখে দিও, বাবাজি’। প্রায়শ: এমন হতো, অর্ধেক পাতা লিখে চুপ করে আছি, কলম এগুচ্ছে না। কৌতূহলী কাকা প্রশ্ন করে, কী হলো? লিখছো না কেন? ’সামনে টেবিলের উপর খালি প্লেট দেখিয়ে বলি, কাটলেট-চা দুটোই তো শেষ। সেই কারণে কলম এগুচ্ছে না। উচ্চারণ করা যায়না এমন ধরনের একটা গালি দিয়ে ওয়েটারকে ডাকতো। এভাবে যে তার কত চপ আর কাটলেট খেয়েছি তার কোন ইয়াত্তা নেই। এখন ভাবি তেমনটি করা বোধকরি ঠিক হয়নি।

    সে দিনও নেই, সেই প্রেম পত্রও নেই। এখন তো আর প্রেম পত্র লেখা হয় না। এখন পাঠানো হয় খুদে বার্তা; স্কাইপ, ফেইসবুক, হোয়াটস্যাপ এখন দখল করে নিয়েছে হাতের লেখা চিঠির স্থান। এখনকার ছেলেমেয়েদের যদি বলা হয়, ‘পেন ফ্রেন্ডশিপ’, আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি, বেশীর ভাগই অবাক তাকিয়ে থাকবে, যেন উদ্ভট কিছু একটা বলা হচ্ছে। এখন লেখালেখি যা হয়, তা কম্পিউটারের মাধ্যমে। এই যে লিখছি বছরের পর বছর এই ‘কলামে’, লিখি ল্যাপটপে। ফলে হাতের লেখার চর্চা উঠেছে একেবারে শিকেয়। ফলাফল হাতের লেখার শ্রী, যা কোনো কালেই ছিলনা, তার বারোটা বেজে গেছে। আমারটা তাও কষ্ট করে হলেও উদ্ধার করা যায়। কিন্তু আমার চেনা জানা দশ বার জন ডাক্তারের (বাংলাদেশী) হাতের লেখা আমি কেন, মরণের ওপার থেকে নেমে এসে আমার বাবাও উদ্ধার করতে সক্ষম হবেন না সে আমি কোন দ্বিধা ছাড়াই বলতে পারি। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার যে অশিক্ষিত ছেলেটি বা কর্মচারীটি ওষুধের দোকানে চাকরী করে, সে ডাক্তারের ওই হিজিবিজি আঁচড় পড়তে পারে। অন্তত: আপাত:দৃষ্টিতে তাই মনে হয়। প্রশ্ন – সে কি সব আদৌ ঠিকঠাক পড়তে পারে? পারে না। গেল বছর সেপ্টেম্বরে আমেরিকার ইনস্টিটিউট অব মেডিসিন (আই ও এম) চালিত এক জরীপে দেখা যায়, ফি বছর কেবল আমেরিকায় ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনে অপাঠ্যযোগ্য হাতের লেখার কারণে প্রায় ১৫ লক্ষ রোগী অসুস্থ হন। ওই জরীপে আরো জানা যায় গোটা বিশ্বে প্রেসক্রিপশন বুঝতে না পেরে ভুল ঔষধ খেয়ে মারা যান ৭ হাজার মানুষ। ভাবা যায় ? নাকি এটি কোনভাবে গ্রহণ ও ক্ষমা করা যায়? বাংলাদেশে এই নিয়ে কোন জরীপ হয়েছে বলে আমার জানা নেই। হলে এই সংখ্যা যে আকাশ ছোঁয়া হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। কেননা দেশের আনাচে-কানাচে, শহরে, রাজধানীর হাজার হাজার ঔষুধের দোকানে যে সমস্ত বিক্রেতা আছে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটুকু থাকতে পারে তা আমাদের সবার জানা। সমস্যা হলো, শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেই যে ডাক্তারের হাতের লেখা প্রেসক্রিপশন পড়তে পারবে তার নিশ্চয়তা কি? আমি তো পারিনে। বাংলাদেশের ডাক্তারদের হাতের লেখার এমনই দুর্দশা যে হাইকোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। গেল মাসে হাইকোর্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এ বলে আদেশ দিয়েছে যে মন্ত্রণালয় যেন ৩০ দিনের মধ্যে সহজে পড়া যায় এমন করে লেখার জন্যে ডাক্তারদের নির্দেশ জারী করে। ত্রিশ দিন পার হয়ে গেছে। জানিনে মন্ত্রণালয় এই ব্যাপারে হাই কোর্টের দেয়া নির্দেশ পালন করেছে কিনা। ডাক্তারের হাতের লেখা নিয়ে মার্কিন লেখক, সাংবাদিক আর্ল উইলসনের (১৯০৭-১৯৮৭) একটি প্রচলিত কথা এখানে উল্লেখ না করে পারছিনা। তিনি বলেছিলেন, “ডাক্তারের হাতের লেখা প্রেসক্রিপশন আপনি হয়তো পড়তে নাও পারেন, কিন্তু লক্ষ্য করবেন তিনি যে বিল লিখেন তা কিন্তু সুন্দর করে টাইপ করা।’’

    হল্যান্ডে অনেক আগ থেকে ডাক্তারদের হাতের লেখা প্রেসক্রিপশন নিষেধ করা হয়েছে। এখানে ডাক্তাররা প্রেসক্রিপশন লিখেন কম্পিউটারে। আমাদের দেশে সব ডাক্তারের কম্পিউটার সম্পর্কে জ্ঞান আছে কিনা সেটাও দেখার বিষয়। দেখার বিষয় সব ডাক্তার, বিশেষ করে গ্রামে-গঞ্জের ডাক্তারদের পক্ষে তা সম্ভব কিনা। ডিজিটাল বাংলাদেশ বলছি বটে কিন্তু এখনো অনেক জরুরী ক্ষেত্রে এর প্রয়োগ হচ্ছে না। চিকিৎসার স্বার্থে ডাক্তারদের হাতের লেখা স্পষ্ট করে লেখা যেন বাধ্যতামূলক করা হয় তার ব্যবস্থা নেয়া যে খুব জরুরী হাইকোর্টের নির্দেশ তাই বলে দেয়। কি জানি তারা (ডাক্তাররা) আবার বেজার হন কিনা? বেজার হলে আমার ঘর থেকেই শুরু হবে। কেননা ঘরেই রয়েছে ডাক্তার, বড়দা। হাইকোর্টের নির্দেশ যদি তাদের ’ইগোতে’ লাগে তাহলে তারা আন্দোলনও করতে পারেন, চিকিৎসা ব্যবস্থার বারোটা বাজিয়ে দিতে পারেন। প্রয়াত নাট্যকার ও লেখক হুমায়ুন আহমেদ তার এক নাটকের মূল চরিত্র, ডাক্তারকে (আফজাল হোসেন) একটু বোকা কিছিমের দেখিয়েছিলেন। ডাক্তারদের গায়ে লাগলো, তারা মিছিল বের করলেন এর প্রতিবাদে। কদিন আগে দেখলাম ডাক্তাররা প্রতিবাদ করেছেন পাঠ্য বইয়ে ডাক্তারদের ’অর্থ লিঞ্ঝু’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে। হাতের আঙ্গুল সব সমান নয় যেমন, তেমনি সব ডাক্তারকে ঐভাবে চিত্রায়িত করা হয়তো সঠিক হয়নি। কিন্তু কথাটা কি একেবারে উড়িয়ে দেবার মত? দেশের কজন ডাক্তার বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন মানবতার সেবাই তাদের লক্ষ্য। এই প্রসঙ্গে সেদিন এক প্রবাসী বাংলাদেশী বললেন, ’ কথায় আছে থানার ধারে কাছে কানা যায় না। কিন্তু অবস্থা এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে ডাক্তারের কাছে মরাও যায় না।’ ব্যাখ্যা করতে বললে তিনি বলেন, ’ নেহায়েৎ অপারগ না হলে ডাক্তারের কাছে কেউ যেতে চায় না। কারণ সে জানে ডাক্তারের কাছে গেলে তাকে ’চেঁছে’ দেয়া হবে, অর্থাৎ প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে এই টেস্ট, ওই টেস্ট, ফী ইত্যাদি করতে করতে তাকে অনেকটা মেরে ফেলার মত।

    হাইকোর্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন ডাক্তারদের হাতের লেখা উন্নত করার জন্যে। আবেদন জানাবো, ডাক্তারদের (কিছু ব্যতিক্রম বাদে) রোগীর সাথে ভালো আচরণ কিভাবে করতে তার উপর ’কোর্স’ চালু করতে। ইউরোপে ডাক্তারের ব্যবহারে রোগীর অসুখ অর্ধেক ভালো হয়ে যায়। বাংলাদেশে এর ঠিক উল্টো। এ আমার দু -দিকের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে। হল্যান্ডের কথা বলি- ডাক্তারের সাথে এপয়েন্টমেন্ট করলেন তার সহকারীকে ফোন করে. নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট সময় আপনি গেলেন তার চেম্বারে। অপেক্ষা করছেন বসার কামরায়। নির্দিষ্ট সময়ে ডাক্তার তার কামরা থেকে বেরিয়ে রোগীর নাম ধরে ডাক দিলেন। রোগী এগিয়ে গিয়ে হাত মেলালেন। সহাস্যে ডাক্তার রোগীকে নিয়ে তার কামরায় গেলেন। রোগীর সমস্যা শুনে ডাক্তার তার কী সমস্যা, কী করতে হবে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেবেন। প্রয়োজনে সামনে কম্পিউটারের স্ক্রীনে দেখিয়ে দেবেন। আর আমাদের দেশে? কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া, ডাক্তার রোগীর সমস্ত সমস্যা শোনার আগেই কাকের ঠ্যাং বকের ঠ্যাং জাতীয় হাতের লেখায় এক ফর্দ ঔষুধ লিখে দিয়ে বলবেন, অমুক ক্লিনিক থেকে এটা-ওটার টেস্ট করিয়ে আনবেন, তারপর আবার আসবেন। কিছু যদি জিজ্ঞেস করতে যান, ডাক্তার এমন একটা ভাব করবে যেন আপনি প্রশ্ন করে মহাভারত অশুদ্ধ করে ফেলেছেন। এই অভিজ্ঞতা আমার নিজের, অসুস্থ মা এবং বাবার সাথে হাসপাতাল আর প্রাইভেট ক্লিনিকে ডাক্তারের (প্রফেসর) সাথে দেখা করতে গিয়ে। এই নিয়ে লিখতে গেলে কম করে হলেও কয়েক দফায় লিখতে হবে। সে সম্ভব না। তাই আর কথা না বাড়িয়ে কেবল এটাই ডাক্তারদের বলবো, ’অর্থ কামান, কোন সমস্যা নয়। এই অর্থ কামানোর জন্যে আমার মত অনেকের ইউরোপ আসা। কিন্তু রোগীরা আপনাদের কাছ থেকে একটু সহানুভূতিসম্পন্ন ব্যবহার আশা করেন। পেশাটিকে একটু মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও দেখুন। চিকিৎসা মহৎ পেশা। মানুষ খুব অসহায় হয়ে আপনাদের কাছে যান। তাদের ভালোবাসুন, পেশার মহত্বকে আরো মহৎ করে তুলুন। মানুষ তো মানুষের জন্যেই, তাই নয় কি?

    (সংগৃহীত)

  • ইসি নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট

    ইসি নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট

    এসবিএন : সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাসহ ৫ নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে

    রিটে নির্বাচন কমিশন নিয়োগের প্রজ্ঞাপন (নিয়োগ) বাতিল, সঙ্গে শপথ গ্রহণের বিষয়টি স্থগিত করতে বলা হয়েছে।

    রবিবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী আকন্দ এই রিট দায়ের করেন।

    রিট আবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭৪ সালের আইনের ৫(১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে পুনরায় নিয়োগ দেয়া যাবে না। এই আইন লঙ্ঘন করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

    চলতি সপ্তাহে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এই রিট আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।

    রিটে কেবিনেট সচিব, আইন সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট ৮ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

  • মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দুই বাংলার সংহতি অনুষ্ঠান শুরু

    মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দুই বাংলার সংহতি অনুষ্ঠান শুরু

    এসবিএন : ‘আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস : দুই বাংলার মেলবন্ধন’ স্লোগানকে সামনে রেখে ৯ দিনব্যাপী ‘সংহতি’ অনুষ্ঠান রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে শুরু হয়েছে।

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কোলকাতা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও বঙ্গ সাহিত্য সমিতি যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মশাল প্রজ্বলনের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

    আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে প্রতি বছর এই সংহতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

    উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. লীনা তাপসী, বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান পিপল্স ফোরামের প্রতিনিধি ভানুরঞ্জন চক্রবর্তী, ফ্রেন্ডস ফর বাংলাদেশ-এর কো-অর্ডিনেটর এ এস এম শামসুল আরেফিন, সংহতি-২০১৭ এর আহ্বায়ক দীপন দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

    উপাচার্য অধ্যাপক ড. আরেফিন সিদ্দিক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে।

    তিনি বলেন, বাংলা ভাষা সঠিকভাবে শিখতে হবে এবং শুদ্ধরূপে বাংলা বলতে ও লিখতে হবে। বিশ্বায়নের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে অন্য ভাষাও শেখা দরকার, তবে বাংলাকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে।

    উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ভাষাগত সংহতি বিরাজ করছে। দু’দেশের মানুষের মধ্যে বিরাজমান সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে এখন মনের সংহতি দরকার।

    আলোচনা পর্ব শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কোলকাতা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও বঙ্গ সাহিত্য সমিতির যৌথ উদ্যোগে সংহতি পদযাত্রা বের করা হয়।

    পদযাত্রায় কোলকাতা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের ৫জন শিক্ষার্থী, বঙ্গ সাহিত্য সমিতির নেতৃবৃন্দ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। পদযাত্রাটি কোলকাতা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে গিয়ে শেষ হবে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

  • ইসবগুলের ভুসির কার্যকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম

    ইসবগুলের ভুসির কার্যকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম

    এসবিনিউজ ডেস্ক : ঘুমানোর আগে আমরা অনেকে ইসবগুলের ভুসি খেয়ে থাকি। ইসুবগুলের ভুসি রাতের খাবারের পরে অনেকক্ষণ ভিজিয়ে না রেখে পানি দিয়ে গুলিয়ে সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে ফেলতে হবে।

    ইসবগুলের ভুসির কার্যকারিতা জেনে নেয়া যাক:

    ১. পেটের প্রায় সব ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ইসবগুল হতে পারে এক উত্তম দাওয়াই। পেট ঠাণ্ডা রাখতে ইসবগুল ভুসির ভূমিকা অনন্য।

    ২. তাছাড়া পেট ব্যথা দূর করতে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন। এর মিউসিলেজিনাস ভূমিকার কারণে আলসারজনিত পেট ব্যথা কম মনে হয়।

    ৩.ইসবগুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যামিনো এসিড রয়েছে। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। এক গ্লাস পানিতে চিনি বা গুড় মিশিয়ে খালি পেটে এ ভুসি খান। প্রতিদিন দুই থেকে তিন চা চামচ ইসবগুল ভুসি এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে দুই থেকে চারবার খেতে পারেন, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় সমাধান পাবেন।

    ৪.আঁশসমৃদ্ধ খাবার ইসবগুল। নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। আমাশয় কিংবা অর্শ রোগ থেকে দূরে থাকতে পারবেন। দ্রুত ফল পেতে দইয়ের সঙ্গে ইসবগুল মিশিয়ে খেতে পারেন।

    ৫.হজমের সমস্যায় ভুগছেন? এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন।

    ৬.কোলেস্টেরল ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ওজন কমাতে চাইলে ইসবগুলের ভুসি খেয়ে যান। পাশাপাশি টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য এটা এক দারুণ পথ্য।

    ৭.ডায়রিয়া উপশমে বেশ উপকারে আসে ইসবগুল ভুসি। এজন্য ৭-২০ গ্রাম ভুসি দিনে দুবার খাওয়া যেতে পারে।

    ৮.পাইলস রোগীদের জন্য সুখবর। এ রোগে আক্রান্ত হলে প্রতিদিন তিন থেকে চারবার ইসবগুলের ভুসির শরবত খেয়ে যান।

    ৯.নির্দিষ্ট মাত্রায় ইসবগুল খেলে তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা ভালো।

     

     

  • আবিস্কার হল বিশ্বের প্রথম ছোট পেসমেকার

    আবিস্কার হল বিশ্বের প্রথম ছোট পেসমেকার

    এসবিএন : বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রাকৃতির পেসমেকার আবিষ্কার করলো বিজ্ঞানীরা। এই পেসমেকার দেখতে ছোট আকৃতির ট্যাবলেটের মত। এতে মোস্ট অ্যাডভান্সড পেসিং টেকনোলজি ব্যবহৃত হয়েছে। পেসমেকার হচ্ছে এমন এক ধরণের ডিভাইস যেটি অনিয়মতান্ত্রিক হৃৎস্পন্দনকে নিয়ন্ত্রন করে। হৃদস্পন্দনের ছন্দময়তা বজায় রাখে।

    পেসমেকার দু’ধরনের। একটি হচ্ছে হৃৎপিন্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশরুপি সাইনো অ্যাট্রিয়াল নোড। যা প্রাকৃতিক পেসমেকার নামে পরিচিত। অন্যটি হরচ্ছ যান্ত্রিক পেসমেকার। এটি অসুস্থ প্রাকৃতিক পেসমেকারকে নজরদারির মধ্যে রাখে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছে, তারা ক্ষুদ্রাকৃতির এই পেসমেকারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক রোগীর শরীরে স্থাপন করতে পেরেছে। এই পেসমেকারটিকে বলা হচ্ছে টিপিএস। ডিভাইসটি সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন(এফডিএ) এর কাছ থেকে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেছে।

     

  • সুস্থতায় কোন খাবার কখন খাবেন?

    সুস্থতায় কোন খাবার কখন খাবেন?

    এসবিনিউজ ডেস্ক:  শরীরের সুস্থতা নিশ্চিত করতে খাদ্যের বিকল্প নেই। চাহিদা মেটাতে তাই প্রতিদিনই আমরা নানা ধরনের খাবার খাই। এসব খাবার শরীরের একেক চাহিদা মেটায়। কোন কোন খাবার আছে যা দিনের বেলা খাওয়াটাই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কোন খাবার আবার রাতের বেলা খাওয়া ভালো। যাহোক, শরীরকে সুস্থ রাখতে কোন সময়ে কোন খাবার খাওয়া উচিত তা জানা জরুরি। সেইসঙ্গে অবশ্য খাবারের পুষ্টিগুণ সর্ম্পকেও ধারণা রাখা উচিত। তা না হলে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পরও স্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি হয়। এক্ষেত্রে জেনে নিন কোন খাবার কোন সময়ে খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী-

    ডাল

    রাতে ডাল খাওয়া ভালো। এটি হজমশক্তিকে বৃদ্ধি করে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে। এছাড়া রাতে ডাল খেলে তা ভালো ঘুমাতে সাহায্য করে। আবার রুচি বাড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই ডাল।

    মাংস

    প্রোটিনের অন্যতম একটি উৎস হল মাংস। কিন্তু মাংস বিশেষত রেড মিট সহজে হজম হতে চায় না। তাই মাংস রাতের চেয়ে দিনে খাওয়া ভাল।

    আপেল

    পুষ্টিকর এই ফলটি দিনের বেলা খাওয়া ভালো। এতে পেকটিন নামক এমন এক উপাদান রয়েছে, যা অন্ত্রের কার্যকলাপ সহজ করে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। সন্ধ্যা অথবা রাতে আপেল খেলে তা পাকস্থলীতে গ্যাস সৃষ্টি করে।

    কলা

    কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় তা হজমে সাহায্য করে। এছাড়া এটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅ্যাসিড, যা বুক জ্বালাপোড়াও রোধ করে। কলা খাওয়ার উপযুক্ত সময় হলো সকাল কিংবা বিকাল। এটি রাতে খাওয়া কোনমতেই ঠিক না। রাতে কলা খেলে তা শ্বাসনালীতে প্রভাব ফেলে, ফলে ঠাণ্ডা কাশি হতে পারে। আবার এতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম থাকায় তা রাতে খেলে পাকস্থলিতেও সমস্যা দেখা দিতে পারে।

    টক দই

    অনেকেই ওজন কমাতে নিয়মিত টক দই খেয়ে থাকেন। তবে এই দই খাওয়ার উপযুক্ত এবং কার্যকর সময় হল দিন। এটি খাবার হজমেও সাহায্য করে। রাতে টক দই খেলে তা শ্বাসনালীর উপর প্রভাব ফেলে থাকে সর্দি কাশি সৃষ্টি করে।

    পনির

    প্রোটিনের ভালো উৎস হলো এই পনির। এই খাবারটি সকালে খেলে তা সারাদিনের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। কিন্তু রাতে পনির খেলে তা সহজে হজম হতে চায় না। এর ফলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।

    মিষ্টিজাতীয় খাবার

    সাধারণত সকালেই মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া ভালো। এটি সারাদিনের কাজের শক্তি জোগায়। রাতে মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে তা শরীরে চর্বি জমাতে সাহায্য করে। এমনকি হজমেও সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই মিষ্টিজাতীয় খাবার রাতে না খাওয়াই ভালো।

     

  • সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে কুয়েতে প্রতিবাদ সভা

    সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে কুয়েতে প্রতিবাদ সভা

    এসবিনিউজ ডেস্ক : সম্প্রতি বাংলাদেশে সাংবাদিক নির্যাতন, দুর্বৃত্তের হাতে খুন বেড়েই চলেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার ও রিমান্ডের নামে সাংবাদিক নির্যাতন এর সঠিক বিচার না হলে আগামীতে দেশে অপরাধের প্রবণতা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন প্রবাসী সাংবাদিকরা। কুয়েতে বাংলাদেশি বিভিন্ন প্রিন্ট ও টেলিভিশন সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ রিপোর্টার্স ইউনিটি কুয়েত এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।

    বাংলাদেশ রিপোর্টার্স ইউনিটি কুয়েত এর সভাপতি মঈন উদ্দিন সরকার সুমন এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ এহছানুল হক খোকন এর সঞ্চালনায় কুয়েত সিটির রাজধানী হোটেলে ৯ ফেব্র“য়ারি রাতে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

    বক্তারা সাংবাদিক শিমুল হত্যা, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাভার প্রতিনিধি নাজমুল হুদাকে মিথ্যা মামলায় নির্যাতন, বিশিষ্ট সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, এটিএন নিউজের দুই সাংবাদিককে পুলিশ কর্তৃক নির্যাতন কে ন্যাক্কারজনক ঘটনা বলে আখ্যা দিয়েছেন। সাগর-রুনিসহ সকল নিহত সাংবাদিকদের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

    উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক মোহাম্মদ ইয়াকুব, আবু সাদেক রিপন, মাহমুদুর রহমান, আবদুল হাই ভূইয়া, শাহী এমরান সিকদার, সংগঠক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী চৌধুরী, মোহাম্মদ মুসা, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কুয়েত সভাপতি আনিসুল হক সুমন, কবি মোহাম্মদ আনিসুর রহমান মিলান প্রমুখ।