Warning: Attempt to read property "post_content" on null in /home/dakshinermashalc/public_html/wp-content/plugins/pj-news-ticker/pj-news-ticker.php on line 202
dakshinermashal, Author at Daily Dakshinermashal - Page 376 of 398

Author: dakshinermashal

  • রোহিঙ্গাদের কানাডায় আশ্রয় দেওয়ার সুপারিশ বব রে’র

    রোহিঙ্গাদের কানাডায় আশ্রয় দেওয়ার সুপারিশ বব রে’র

    আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ভয়াবহতায় নিজ জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের কানাডায় আশ্রয় দেওয়ার সুপারিশ করেছেন কানাডীয় রাজনীতিক বব রে। একইসঙ্গে চলমান মানবিক সংকটের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির সুপারিশ করেছেন রোহিঙ্গা সংকটে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো’র এই বিশেষ দূত। ৩ মার্চ মঙ্গলবার রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে এক প্রতিবেদনে তিনি এসব সুপারিশ করেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কানাডাভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম সিটিভি।

    ‘টেল দেম উই আর হিউম্যান’ শিরোনামের প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কানাডাকে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান বব রে। আশ্রয় দেওয়া রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ারও সুপারিশ জানান এই কানাডীয় রাজনীতিক।

    বব রে বলেন, মিয়ানমারে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার প্রমাণ রয়েছে।

    এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর কানাডা সরকার জানিয়েছে, তারা বব রে’র প্রতিবেদনটি পড়ে দেখছেন। এ নিয়ে আসন্ন দিন ও সপ্তাহগুলোতে তারা আরও বেশি কিছু করতে আগ্রহী।

    বব রে’র প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের ঘটনায় যুদ্ধাপরাধ সংগঠিত হওয়ার বিষয়ে তদন্তের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে একইসঙ্গে এতে মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি’র সম্মানজনক কানাডীয় নাগরিকত্ব বাতিল না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

    ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। অক্টোবরে টরেন্টোর সাবেক এমপি বব রে-কে মিয়ানমারের বিশেষ দূত নিয়োগ দেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তদন্ত শেষে এ সংকট নিয়ে তিনি প্রতিবেদন জমা দেন।

    এর আগে গত ডিসেম্বরে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে বব রে লিখেছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে কী ধরনের মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। সরাসরি গুলি ও সামরিক সহিংসতা ছাড়াও আমি যৌন সহিংসতার শিকার নারীদের কাছ থেকে প্রত্যক্ষভাবে নির্যাতনের বর্ণনা শুনেছি। শরণার্থী শিবিরে আসার পথে শিশু ও বৃদ্ধদের মৃত্যুর কথাও শুনেছি। প্রথমদিকে রোহিঙ্গাদের মানবিক সংকট দেখার জন্য তাকে রাখাইন রাজ্যে প্রবেশ করতে দেওয়া না হলেও গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি সেখানে যান।

    বব রে’র চূড়ান্ত প্রতিবেদনে কানাডাকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বাগত জানানোর আগ্রহ প্রকাশের ঘোষণা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

    বব রে তার প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গকারী ব্যক্তি, সংগঠন ও কোম্পানির বিরুদ্ধে কানাডা ও এর মিত্র দেশগুলোকে সুর্নিদিষ্ট অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছেন। মে মাসে কানাডায় অনুষ্ঠিতব্য জি-সেভেন সম্মেলনেও রোহিঙ্গা সংকটকে প্রাধান্য দেওয়ার সুপারিশ করেছেন রে।

    মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনেকে বর্তমানে অনেক কষ্টে বাংলাদেশের ক্যাম্পগুলোতে বাস করছেন। আগামী মে মাসে শুরু হতে যাওয়া বর্ষা মৌসুমে ভারি বৃষ্টি ও অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন ‍সুবিধার অভাবে পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার হুমকি রয়েছে। কানাডার সরকার এই অঞ্চলে মানবিক সহায়তার জন্য ৩ কোটি ৭৫ লাখ ডলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কানাডা। এরপর বর্ষাকালে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য গত ১৬ মার্চ আরও ৮১ লাখ ৫০ হাজার ডলার তহবিল জোগানের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।

  • জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস পালিত

    জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস পালিত

    সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে ৬ষ্ঠ জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এনডিসি) মোশারেফ হোসাইন। এসময় তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সাহসী পদক্ষেপে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের মডেল হতে চলেছে। ঠিক তেমনি ঘুরে দাঁড়িয়েছে চলচ্চিত্র অঙ্গনও। চলচ্চিত্র অঙ্গনের সকলের চ্যালেঞ্জ ছিলো আধুনিক প্রযুক্তি রপ্ত করা, ডিজিটাল পদ্ধতিতে সিনেমা নির্মাণ ও প্রদর্শন করা। বর্তমান সরকার তা করেছে।’
    জেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্য সচিব মোশফিকুর রহমান মিল্টনের সভাপতিত্বে চলচ্ছিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক কর্মী মঈনুল ইসলাম মঈন, আব্দুর রহমান, আশরাফুল ইসলামসহ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মীবৃন্দ।

  • শ্যামনগরে মৎস্যঘের লুটের অভিযোগ

    শ্যামনগর ব্যুরো: শ্যামনগর উপজেলার বংশীপুর গ্রামের এবাদুল মোল্যার ছেলে বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে মৎস্যঘের লুটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শ্যামনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ঘের মালিক। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের সেন্ট্রাল কালীনগর গ্রামের মো. লুৎফার মালির ছেলে সিরাজুল, মো. ইসহাক মল্লিকের ছেলে বকুল, মোহাম্মাদ আলী মোড়লের ছেলে ফারুক হোসেন ও ই¯্রাফিল হোসেন তাদের সহযোগীদের নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে ২৭ মার্চ উপজেলার বংশীপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের মৎস্যঘের লুট, ঘেরের বাসা ভাংচুর করে নগদ টাকা সহ ৩ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করে। এ ঘটনায় বেল্লাল বাদি হয়ে ৩ এপ্রিল লুটকারীদের বিরুদ্ধে শ্যামনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত পূর্বক মামলার প্রস্তুতি চলছে।

  • কালিগঞ্জে দুই মটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত-২

    কালিগঞ্জে দুই মটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত-২

    কালিগঞ্জ প্রতিনিধি: কালিগঞ্জে দুটি মটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন।
    মঙ্গলবার সকালে কালিগঞ্জ-শ্যামনগর মহাসড়কের পিরোজপুর কাটাখালি নামকস্থানে এ দূর্ঘটনাটি ঘটে।
    দূর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, কালিগঞ্জ উপজেলার সোনাতলা গ্রামের আজগর আলির ছেলে নুর হোসেন(৩২) ও একই উপজেলার নীজদেবপুর গ্রামের মফিজউদ্দিনের ছেলে আব্দুল মান্নান সরদার(৫০)। আহতরা হলেন, তুহিন ও শান্ত নামের দুই মটর সাইকেল আরোহী।
    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নুর হোসেন বাড়ি থেকে বের হয়ে মটর সাইকেলযোগে সাতক্ষীরা শহর অভিমুখে আসছিলেন। পথিমধ্যে কালিগঞ্জ উপজেলার কাটাখালি নামকস্থানে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুত গামী আরেকটি মটরসাইকেলে তাদের মুখেমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নুর হোসেন ও মান্নান নিহত হন। এসময় আহত হন মটর সাইকেল আরোহী তুহিন ও শান্ত।
    সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সার্কেলের (এএসপি) ইমরান মেহেদী সিদ্দিকি জানান, মটর সাইকেল সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন। লাশ উদ্ধার করে কালিগঞ্জ থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছে। তিনি আরো জানান, আহতরা একই স্থানে চিকিৎসাধীন আছেন।

  • কালিগঞ্জে জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল মান্নানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

    কালিগঞ্জে জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল মান্নানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

    কালিগঞ্জ সংবাদদাতা: কালিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের উদ্যোগে জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল মান্নানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গবন্ধু মূর‌্যালের পাদদেশ থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ মিছিল শেষে কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সমাবেশে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্রী লক্ষন ঘোষের সঞ্চালনায় ও সভাপতি শেখ আনোয়ারুল কবির লিটুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শ্যামনগর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জি এম আব্দুল মজিদ, কালিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি এস এম মনজুরুল কবির মিঠু, খান শাহারুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফ মোস্তফা সোহাগ, দপ্তর সম্পাদক আনজারুল ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ, উপদপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান টোকন, সহ-সম্পাদক মহিবুল্লাহ, শফিকুল ইসলাম, খোকা, ভাড়াশিমলা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুল আলিম, সাধারণ সম্পাদক আজগার আলী, মথুরেশপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খোকন প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন, জেলা যুবলীগের আহাবায়ক আব্দুল মান্নানের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশ্বর্ত মুক্তি দিতে হবে। সেই সাথে পৌর যুবলীগের সভাপতি মনোয়ার হোসেন অনু ও সাধারণ সম্পাদক তুহিনুর রহমান তুহিনসহ সকল যুবলীগ নেতৃবৃন্দের নামে যে মিথ্যা, হয়রানি মূলক, উদ্দেশ্য প্রণোদিত যে মামলা করা হয়েছে তা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাই। তারা আরো বলেন, অতি দ্রুত নিঃশ্বর্ত মুক্তি না দিলে আগামীতে আরো কঠিন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

  • কাকডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবির গুলিতে আহত নজরুলের মৃত্যু

    শহর প্রতিনিধি: কাকডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবির গুলিতে আহত নজরুল ইসলাম একদিন পর মারা গেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খুলনার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
    কলারোয়ার কেড়াগাছি ইউপি চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন হাবিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তার বাড়ির লোকজন লাশ আনতে খুলনা গেছে। নিহত নজরুল ইসলাম(৩৫) তার ইউনিয়নের কাকডাঙ্গা গ্রামের আবদুর রকিবের ছেলে। সোমবার ভোরে বিজিবির গুলিতে আহত হন তিনি। পরে তাকে গোপনে খুলনায় নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।
    বিজিবির ৩৩ ব্যাটালিয়নের কাকডাঙ্গা বিওপি কমান্ডার সুবেদার সামসুল আলম জানান, সোমবার ভোরে ১০/১২ জনের একদল চোরাচালানি ভারতীয় শাড়ি নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছিল। বিজিবির টহল দলের সদস্যরা তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা বিজিবির ওপর পাল্টা আক্রমণ করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। এ সময় বিজিবি সদস্যরা এক রাউন্ড গুলি ছুড়ে তাদের প্রতিহত করে। তিনি বলেন, চোরাচালানিরা দুই গাঁইট ভারতীয় শাড়ি ফেলে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে রক্তের চিহ্ন ছিল বলে জানান তিনি। তবে কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন কিনা তা জানা যায়নি।

  • সাতক্ষীরা-৩ আসনে ভোটের চ্যালেঞ্জে তিন হেভিওয়েট প্রার্থী

    সাতক্ষীরা-৩ আসনে ভোটের চ্যালেঞ্জে তিন হেভিওয়েট প্রার্থী

    নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সুন্দরবন ঘেঁষা সাতক্ষীরা-৩ আসনে অন্যান্য দলে তেমন কোনো শক্তিশালী প্রার্থী নেই, তবে আওয়ামী লীগে দুজন ও বিএনপিতে একজন হেভিওয়েট প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পেতে কাজ করছেন। এরা হলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. রুহুল হক এমপি, নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি খুলনার উপাচার্য ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও এনাম মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (কার্ডিওলোজি) ডা. শহিদুল আলম। এই হেভিওয়েট তিন প্রার্থী ছাড়াও আওয়ামীলীগে বেশ কয়েকজন নতুন মুখের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে মাঠে তাদের অবস্থান নেই।

    একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-৩ আসনে (সম্প্রতি আশাশুনি-দেবাহাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত) বইতে শুরু করেছে ভোটের হাওয়া। এখনই জোরালোভাবে মাঠে না নামলেও নানাভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এই আসনের হেভিওয়েট নেতারা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির টিকিটে সম্ভব্য মনোনায়ন প্রত্যাশী কারা, প্রধানত তাদের নিয়েই মাঠপর্যায়ে চলছে জোর আলোচনা। নির্বাচন আরো ঘনিয়ে এলে বেড়ে যাবে এসব নেতার ব্যস্ততা ও প্রচার-প্রচারণা।

    জানা যায়, বারবার ভেঙ্গেছে আসনটি। সর্বশেষ ২০০৮ এর নির্বাচনে নতুন সীমানা নির্ধারণ অনুযায়ী আসনটি পুন:গঠিত হয়েছে। যুক্ত হয়েছে আশাশুনি উপজেলা ১১ টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলার ৫ টি এবং কালিগঞ্জ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন। তিন উপজেলার মোট ২০ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হলেও (বর্তমানে আশাশুনি-দেবহাটা নিয়ে পুন:গঠিত) সাতক্ষীরা ৩ আসন। এর আগে কেবলমাত্র আশাশুনি উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিল সাতক্ষীরা-৩। এ আসনে পর পর দুই বার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন দেশের প্রখ্যাত শৈল্য চিকিৎসক ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক।

    তিনি ২০০৮ সালে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে ৫ বছর সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে তার প্রচেষ্টায় সাতক্ষীরার বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে। বিশেষ করে তার প্রচেষ্টায় স্থাপিত হয়েছে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ। বেশ সুনামও কুড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তিনি তাঁর অর্জত সুনাম ধরে রাখতে পারছেন না বলে মনে করেন এলকার অনেকেই। গত ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি পুন:রায় এমপি নির্বাচিত হলেও মন্ত্রীত্ব পাননি। তবে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও ইউসুফ আব্দুল্লাহ’র নাম প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে। এবং তৃণমূলের নেতা-কর্মীদেরা আস্থা অর্জনের পাশাপাশি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়েও তার অবস্থান অনেকটা শক্ত।

    এদিকে ডা. শহিদুল আলম বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ব্যাপক চিকিৎসা সেবা দিয়ে সাধারণের মনোযোগ কেড়েছেন। এ কারণে সাতক্ষীরা-৩ আসনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তিনি আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হবেন বলে আশাবাদী। তিনি বলেন, বিভিন্ন হয়রানির কারণে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা মাঠে দাঁড়াতে পারছেন না। গত ঈদের সময় তার ঈদের শুভেচ্ছা পোস্টার পর্যন্ত ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এসবের মধ্য দিয়েই তিনি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, সাতক্ষীরাবাসী তার চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হয়নি, সামর্থ্য অনুযায়ী সেবা দেওয়ায় তার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। দল মনে করে, ওই আসনে তার কোনো বিকল্প নেই। তাই আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে অবশ্যই তিনি দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। নানান সংকটের মধ্য দিয়েও স্থানীয় নেতাকর্মীদের পাশে থেকে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি এমপি হতে পারলে নদী ভাঙন রোধ, কমিউনিটি ক্লিনিকে ছোট অপারেশনের ব্যবস্থা করা, ভোমরা স্থল বন্দরের আধুনিকায়ন ও সুন্দরবন অঞ্চলে অর্থনৈতিক অঞ্চর স্থাপন, উপজেলার সাব-সেন্টারগুলোকে পূণাঙ্গ হাসপাতালে রুপান্তর করা, বেড়িবাঁধ সংস্কার, সুন্দরবন পর্যন্ত চার লেনের মহাসড়ক নির্মাণ, ঢাকা থেকে সরাসরি সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেলযোগাযোগ স্থাপন, ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প স্থাপন, মেরিন ফরেস্ট এন্ড রিসার্স ইউনিভার্সিটি, আবাসিক সাতক্ষীরা বিশ^বিদ্যালয়সহ অবহেলিত আসনে জনগণের সঙ্গে থেকে উন্নয়নমূলক ও জনকল্যাণমূলক কাজ করবেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগে হেভিওয়েট দুজনের বাইরে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন সাবেক এমপি ডা. মোখলেছুর রহমান।

    নির্বাচনকে সামনে রেখে এ আসনে স্থানীয় নেতারা মাঠপর্যায়ে গিয়ে দলকে পুনর্বিন্যাস, বিগত দিনের ভুল বোঝাবুঝির অবসান এবং আন্তরিক হওয়ার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ডা. রুহুল হক এমপি, নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য খুলনার উপাচার্য ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও এনাম মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (কার্ডিওলোজি) ডা. শহিদুল আলম ও জনসংযোগ ও কর্মিসভা করছেন।
    অপরদিকে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা বলেন, বর্তমান এমপি ডা. রুহুল হক সাতক্ষীরায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এখন তার অনেক বয়স হয়েছে। সেজন্য নতুন প্রার্থী হিসাবে দেবাহাটা ও আশাশুনি অঞ্চলে আওয়ামী লীগ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ইউসুফ আব্দুল্লাহ’র আকাশচুম্বি যে জনপ্রিয়তা রয়েছে তাতে তাকে সাতক্ষীরা-০৩ নিবাচর্নী আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দিলে তার বিজয়ী হওয়া সুনিশ্চিত। তাই দেবাহাটা ও আশাশুনি অঞ্চলে আওয়ামী লীগের তৃণমূল ও সাধারণ মানুষ ইউসুফ আব্দুল্লাহকে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-০৩ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর দৃর্ষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

    তৃণমূল নেতা-কর্মীরা আরও বলেন, এখানে আওয়ামী লীগের কিছু রিজার্ভ ভোট রয়েছে। কিন্তু প্রার্থী নির্বাচনে দল সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে আসনটি হাতছাড়া হওয়ারও আশঙ্কা করছেন তারা। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে মরিয়া বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও এনাম মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (কার্ডিওলোজি) ডা. শহিদুল আলম। তিনি দেড় যুগ ধরে আশাশুনি-দেবাহাটা-কালিগঞ্জ নিয়ে গঠিত নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। পাড়া-মহল্লা ও গ্রামাঞ্চলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। খোঁজখবর নিচ্ছেন।

    এদিকে বর্তমান এমপি ব্যস্ত থাকায় তিনি ঘন ঘন এলাকায় গণসংযোগ করতে পারছেন না। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বলছেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য আমরা আবেদন করব। কিন্তু নেত্রী (শেখ হাসিনা) যা বলবেন তার ওপর আমাদের কোনো কথা নেই। নেত্রী যাকেই মনোনয়ন দেবেন, তার জন্য নির্বাচনে কাজ করতে ঝাঁপিয়ে পড়ব।’

    ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক বলেন, আমি পর পর দুই বার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর চারদলীয় সরকারের চেয়ে এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়ে দেশের জন্য এমডিজি পুরস্কারসহ বেশ কিছু ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার বয়ে এনেছি। দেশের স্বাস্থ্য সেবা সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো সক্রিয় করেছি। আজ মানুষ তার সুফল পাচ্ছে। আগামীতে এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। দলের হাইকমান্ড দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে আমার ইতিবাচক এসব কর্মকান্ডই বিবেচনা করে আমাকে মনোনয়ন দেন জনগণই আমাকে নির্বাচিত করবেন। তিনি আরও বলেন, নতুন কাউকে মনোনয়ন দিলে নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছি। তবে সাবেক এমপি ডা. মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘দলের জন্য এখনও কাজ করে যাচ্ছি। দল মনে করলে নির্বাচনে অংশ নেব। নৌকার বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখব।’

    ড. আবু ইউসুফ মো: আব্দুল্ল¬াহ বলেন, সাতক্ষীরার মাটিতেই তার জম্ম। লেখাপড়ার কারণে সাতক্ষীরার বাইরেও থাকতে হয়েছে। এখন সুযোগ হয়েছে এলাকার ফিরে মানুষের জন্য কিছু করার। এলাকার মানুষের পাশে থেকে তরুণ প্রজন্ম, গ্রাম্য-অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, দারিদ্র বিমোচন, শিক্ষাকে গ্রামমূখী করা, শিক্ষার ডিজিটাইলেশন করা এবং সততা ও পরিশ্রমের ভিতরেই নতুন প্রজন্মকে উদ্ভাসিত করা, উদ্বেলিত করা ও অনুপ্রাণিত করা জরুরী বলেও মনে করেন। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড মনে করলে আমাকে মনোনয়ন দিবেন। মনোনয়ন পেলে আমি জনগণের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে সাতক্ষীরার প্রধান সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করবো। এছাড়াও জনকল্যাণসহ সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন তিনি।

  • সাতক্ষীরার ১২০ কিলোমিটার সীমান্ত জুড়ে পাচার হয়ে আসছে ভারতীয় ফেনসিডিল

    ভোমরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার ১২০ কিলোমিটার সীমান্ত জুড়ে স্থলপথ ও নদীপথ সীমান্তের বিভিন্ন চোরাই পয়েন্ট দিয়ে ফেনসিডিলের বড় চালান ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে। বাংলাদেশে ঢুকে পড়া ফেনসিডিলের চালান গুলো সড়ক পথে বাধাহীন ভাবে নির্বিঘেœ সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে।

    প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ভারত থেকে পাচার হয়ে আসা মাদকের চালানগুলো চোরাকারবারীরা বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের মাধ্যমে সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌছে দিচ্ছে। মাদকের ছোট চালানগুলো চেকপোষ্ট বা প্রশাসনের তল্লাসিতে মাঝে মধ্যে ধরা পড়লেও বড় আকারের চালানগুলো অধরা রয়ে যায়। এসব বড় চালান যানবাহনে মালিক, চালক ও পাচারকারী সমন্বিত চুক্তিতে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌছে যায়।

    এবং শেষ পর্যন্ত সেসব চালান ধরা ছোয়ার বাইরে চলে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমান্ত শহর সাতক্ষীরা সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী যানবাহনগুলোর মধ্যে বেশ কিছু যানবাহন ফেনসিডিল পাচারে সরাসরিভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব যানবাহন ও পরিবহন ব্যবসার আড়ালে মালিকের জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বড় অংকের অর্থ চুক্তির মাধ্যমে ফেনসিডিলের বড় চালান বহন করে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে মাদক পাচারে চালকরা গাড়ীতে বিশেষ যোগান করে রাখে অথবা প্রয়োজনে গাড়ী কোন একটি যন্ত্রাংশ খুলে সেখানে ফেনসিডিল ভর্তি করে পুনরায় ওয়েল্ডিং করে দিয়ে বুঝে নেওয়ার কোন চিহ্ন না রেখেই নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছে ফেনসিডিলের পাইকারী ক্রেতাদের হাতে হস্তান্তর করে।

    এসব যানবাহনে এমন কৌশলে ফেনসিডিল বহন করা হয় যা প্রশাসনের ধরাছোঁয়ার বাইরে। সড়ক পথে ফেনসিডিল পরিবহনের ক্ষেত্রে ঢাকায় যাতায়াতকারী পাইভেটকার, মাইক্রো গাড়ী স্থল বন্দরের পণ্যবাহী ট্রাকেই সবচেয়ে বেশী ফেনসিডিল পাচার হয় বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়। অনেক সচেতন ব্যক্তি এখন সাতক্ষীরা-ঢাকা যাতায়াতে বিশেষ করে প্রাইভেটকার বা মাইক্রো ভাড়া করতে খুবই দ্বিধায় পড়ে যান।

    কেননা এসব যানবাহনের কোন কোন চালক সাতক্ষীরা-ঢাকার উদ্দেশ্যে গাড়ী ভাড়া হলেই সঙ্গে সঙ্গে তাদের মধ্যে চুক্তিবদ্ধ মাদক ব্যবসীদের কাছে গিয়ে ফেনসিডিল ভরে নিয়ে ভাড়ার লোকদের নিয়ে যাত্রা করে।

    সেক্ষেত্রে কখনো মাদকের চালান আটক হলে নিরাপরপাধ যাত্রীদের মাদক পাচার অভিযোগের ফেঁসে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এদিকে সীমান্তের একাধিক গোপন সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরার দেবহাটা থানার অন্তর্গত শাঁখরা কোমরপুর সীমান্ত নদী পথ দিয়ে ভারত থেকে পাচার হয়ে আসছে মাদকের বড় চালান।

    সীমান্ত নদী ইছামতীতে নৌকাযোগে হাজার হাজার ফেনসিডিলের কার্টুন নির্বিঘেœ পাচার হয়ে আসছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদকের অবাধ চোরাচালান। সাতক্ষীরার চিহ্নিত শীর্ষ চোরচালানিরা এই সীমান্ত নদীপথ ব্যবহার করছে।

  • শ্যামনগরে মৎস্যঘের লুটের অভিযোগ

    শ্যামনগর ব্যুরো: শ্যামনগর উপজেলার বংশীপুর গ্রামের এবাদুল মোল্যার ছেলে বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে মৎস্যঘের লুটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শ্যামনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ঘের মালিক। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের সেন্ট্রাল কালীনগর গ্রামের মো. লুৎফার মালির ছেলে সিরাজুল, মো. ইসহাক মল্লিকের ছেলে বকুল, মোহাম্মাদ আলী মোড়লের ছেলে ফারুক হোসেন ও ই¯্রাফিল হোসেন তাদের সহযোগীদের নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে ২৭ মার্চ উপজেলার বংশীপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের মৎস্যঘের লুট, ঘেরের বাসা ভাংচুর করে নগদ টাকা সহ ৩ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করে। এ ঘটনায় বেল্লাল বাদি হয়ে ৩ এপ্রিল লুটকারীদের বিরুদ্ধে শ্যামনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত পূর্বক মামলার প্রস্তুতি চলছে।

  • জেলায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু

    জেলায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু

    ডেস্ক রিপোর্ট: জেলার এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে শুরু হলে বেশ কিছু জায়গায় অনুপস্থিতির ঘটনা ঘটেছে। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সারাদেশের ন্যায় সাতক্ষীরায় আজ সোমবার সকাল ১০ টা থেকে শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমনা পরীক্ষা। পরীক্ষা চলবে দুপুর ১ টা পর্যন্ত। জেলায় এবার ৩৮ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ১৯ হাজার ৬১৭জন পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহন করেছে। এদিকে, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসমুক্ত, ফাঁসের গুজবমুক্ত এবং সুষ্ঠ ও সম্পূর্ন নকলমুক্ত করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করেছে জেলা প্রশাসন। তবে, প্রশপত্র ফাঁস ও নকল আতঙ্কে উদ্বিগ্ন অভিভাবক মহল।
    এবার শুধুমাত্র সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৮ টি কেন্দ্রে ৫ হাজার ৬১৫ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহন করছে। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সরকারী কলেজ কেন্দ্রে ১ হাজার ৮৩জন, সরকারী মহিলা কলেজে ১ হাজার ৭৬২ জন, সিটি কলেজে ৮০৩ জন, দিবা-নৈশ কলেজে ৩৫০জন, ভালুকা চাঁদপুর কলেজে ২৬৬ জন, আলিয়া মাদ্রাসায় ৩৮৬ জন, পিএন স্কুল এন্ড কলেজে ৮৬২ জন ও সরকারী টেকনিক্যাল কলেজে ১০৩ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহন করছে।
    সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন জানান, নকল ও প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধে যা যা করা দরকার সব করা হযেছে। পরীক্ষার নীতিমালা অনুযায়ী পরীক্ষা না নিলে কেন্দ্র বাতিলের সুপারিশ করা হবে। তিনি আরো জানান, বিষয় ভিত্তিক কোন শিক্ষক যাতে পরীক্ষার কক্ষ পরিদর্শন করতে না পারে তার জন্য সকল কেন্দ্র সচিবকে জানানো হয়েছে।
    দেবহাটা প্রতিনিধি জানান: দেবহাটায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে শুরু হওয়া ১ম দিনের পরীক্ষা নকলমুক্ত, সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় শুরু বেলা ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রথম দিনের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৭৬১ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ৫ জন। এর মধ্যে দেবহাটার সখিপুর খানবাহাদুর আহছান উল্লা কলেজ কেন্দ্রে ১৯১জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে একজন অনুপস্থিত ছিল। হাজী কেয়ামউদ্দীন মেমোরিয়াল মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ৪৩২জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২জন অনুস্থিত ছিল। দেবহাটা কলেজ কারিগরি (ভোকাশনাল) কেন্দ্রে ১৩৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ২জন। প্রথম দিনের পরীক্ষা নকলমুক্ত ও সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজ-আল-আসাদ, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হাই রকেট প্রতিটা কেন্দ্রে যেয়ে তদারকি করেন। পরিদর্শন কালে নির্বাহী কর্মকর্তা হল সুপার, সহকারী হল সুপার, পরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পরীক্ষাগুলো সুন্দর ও সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেন।
    কলারোয়া প্রতিনিধি জানান: কলারোয়ায় সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশ এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আজ ২ এপ্রিল সোমবার পরীক্ষার প্রথমদিনে অনুপস্থিত ছিলো ৩২জন পরীক্ষার্থী।এইচএসসি, এইচএসসি (বিএম) ও আলিম পরীক্ষায় কলারোয়া সরকারি কলেজ, বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ, শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রি কলেজ ও আলিয়া মাদরাসা কেন্দ্রে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত ও অনিয়মিত মিলে মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ৩০২৮ জন। এর মধ্যে প্রথম দিনে নিয়মিত পরীক্ষার্থী ছিলো ২৯৪৮জন। অংশ নেয় ২৯১৬ জন পরীক্ষার্থী। উপজেলার মোট ১১টি কলেজ থেকে অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো এইচএসসিতে ১৬জন ও এইচএসসি (বিএম)-এ ১৬ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে বিএম শাখায় সকাল সেশনে দ্বাদশ শ্রেণীর ও বিকেল সেশনে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন কেন্দ্রে সূত্রে জানা গেছে- কলারোয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে নিয়মিত ও অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর মোট সংখ্যা ৪৮৮জন। তাদের মধ্যে ৮০জন অনিয়মিত পরীক্ষার্থী। ফলে প্রথম দিনের নিয়মিত পরীক্ষার্থী ছিলো ৪০৮জন।বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ৮৩০জন। অনুপস্থিত ছিলো ১১জন।শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রি কলেজ কেদ্রে মোট এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলো ২৯২জন। অনুপস্থিত ছিলো ৫জন। আর বিএম পরীক্ষায় সকাল সেশেনে (দ্বাদশ শ্রেণি) পরীক্ষার্থী ছিলো ৪৯৭জন। অনুপস্থিত ছিলো ৬জন। সেখানে বিকালে সেশেনে বিএম পরীক্ষায় (একাদশ শ্রেণি) মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ৪৭০জন।আলিয়া মাদরাসা কেন্দ্রে বিএম পরীক্ষার সকাল সেশনে (দ্বাদশ শ্রেণি) মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ২২৪জন। অনুপস্থিত ছিলো ১জন। বিকেল সেশনে বিএম পরীক্ষায় (একাদশ শ্রেণী) মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ২২৭জন। অনুপস্থিত ছিলো ৯জন।এদিকে, পরীক্ষা শুরু ত্রিশ (৩০) মিনিট পূর্বে পরীক্ষার্থীরা স্ব স্ব কেন্দ্রে প্রবেশ করে। উপজেলার সব কেন্দ্রে নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা কেন্দ্রে বিভিন্ন কক্ষ পরিদর্শন করে সার্বিক পরিবেশে সন্তোষ প্রকাশ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মনিরা পারভীন। আইন-শৃংখলা বাহিনী, কক্ষ পরিদর্শকসহ পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা সকলে ছিলো অত্যন্ত সতর্কতায়। দরগাহপুর প্রতিনিধি জানান: দেশের সকল স্থানের ন্যায় দরগাহপুর কলেজিয়েট বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুটি ভেনুতে গত কাল সোমবার শান্তিপূর্ণ ভাবে এইচ এস সি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যে সকল কলেজ পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করছেন তারা হলেন বড়দল আফতাব উদ্দীন স্কুল এন্ড কলেজ হতে ১৭৭ জন, শালিখা কলেজ হতে ১৮৬ জন ও দরগাহপুর কলেজিয়েট বিদ্যালয় হতে ৪৭২ জন। সর্বমোট-৮৩৫ জন ছাত্র-ছাত্রী অত্র কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করছে। তার মধ্য হতে অনুপস্থিত-৪ জন। পরীক্ষায় হল সুপারের দায়িত্ব পালন করছেন মোহাম্মদ আলী, ভেনু হল সুপার মাহবুবার রহমান ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গৌরপদ মন্ডল। পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির দায়িত্বে আছেন সহকারী অধ্যাপক বিশ্বজিৎ রায়, প্রভাষক শাহাবুদ্দীন মোড়ল, সুশান্ত কুমার বিশ্বাস, রবিউল ইসলাম ও মনিরুজ্জামান। পরীক্ষা চলাকালীন সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাফফারা তাসনীন, বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট দেওয়ান আকরামুল হক, যশোর শিক্ষা বোর্ডের ভিজিলেন্স অফিসার বিজন কুমার মিত্র, ইউ এন ও প্রতিনিধি ভেটেনারী সার্জেন ডাঃ মিজানুর রহমান ও পল্লী দারিদ্র বিমোচন কর্মকর্তা এ বি এম ফিরোজ আহম্মেদ পরীক্ষা চলাকালীন সময় পরিদর্শন ও দায়িত্ব পালন করছেন। অত্র কেন্দ্রে শান্তি-শৃঙ্খলা ও নকল মুক্ত ভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

  • সামান্য বাতাসেই নেই হয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ!

    সামান্য বাতাসেই নেই হয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ!

    মো. মুশফিকুর রহমান রিজভি: একটু বৃষ্টি শুরু হলে কিংবা একটু জোরে বাতাস হলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ থাকে বিদ্যুৎ সংযোগ। পৌরসভায় মাঝে মাঝে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা দেখা গেলেও ইউনিয়নের অবস্থা আরো বেগতিক। একবার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হলেই ১০-১২ ঘণ্টা আর বিদ্যুতের দেখা মেলে না।

    গত ১ এপ্রিল সন্ধ্যার পর আকাশ একটু মেঘাচ্ছন্ন সাথে একটু জোরে বাতাস হতেই বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সংযোগ। জেলার পৌরসভার আওতাভুক্ত এলাকায় রাতে কয়েকবার বিদ্যুৎ লুকোচুরি খেলা করলেও স্থায়ীভাবে থাকেনি বেশিক্ষণ।

    অন্যদিকে ইউনিয়নগুলোতে সন্ধ্যার পরেই বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সংযোগ। পরে সারা রাত আর দেখা মেলেনি বিদ্যুতের। বিদ্যুতের দেখা মিলেছে পরদিন (২ এপ্রিল) সকাল ৯ টার পর।

    এব্যাপারে বিদ্যুৎ অফিস সংশ্লিষ্টদের মত, প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে বিভিন্ন স্থানে লাইনের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছিল। সেগুলো মেরামত করে সংযোগ পুনরায় চালু করতে গিয়ে দেখা দিয়েছে এ বিদ্যুৎ বিভ্রাট। প্রাকৃতিক দূর্যোগ ব্যাতিত অন্য সময়ে নিয়মিত লোডশেডিং এর ব্যাপারে জানতে চাইলে তাদের মন্তব্য, এখন আর আগের মত বেশি লোডশেডিং হয় না। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ একটু কম থাকার কারণে এরূপ লোডশেডিং হয়।

    কিন্তু জনসাধারণের বক্তব্য ভিন্ন, তারা বলছেন, গ্রীষ্মকাল আসতে না আসতেই শুরু হয়ে গেছে লোডশেডিং। বিদুতের এমন লুকোচুরি খেলায় চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জেলাবাসীকে। গত ১ এপ্রিলের এরূপ বিদ্যুৎ বিভ্রাটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে এইচ.এস.সি ও সমমানের পরীক্ষার্থীরা। গতকাল থেকে শুরু হয়েছে এইচ.এস.সি ও সমমানের পরীক্ষা। প্রথম পরীক্ষার আগের দিন এরূপ বিদ্যুৎ বিভ্রাটে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে তাদের পরীক্ষা প্রস্তুতি।

    এব্যাপারে এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থী নাজরাণ হোসেন রকি বলেন, সারা রাত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় কাক্সিক্ষত পরীক্ষা প্রস্তুতি নিতে ব্যর্থ হয়েছি। আরেক পরীক্ষার্থী তাজিম হাসান শাওন বলেন, চার্জার লাইটে পরীক্ষা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম কিন্তু চার্জার লাইটের চার্জ ২-৩ ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। সন্ধ্যা থেকেই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে পরীক্ষা প্রস্তুতি সন্তোষজনক হয়নি।

    বিদুতের এমন লুকোচুরিতে শুধু শিক্ষার্থীরাই নয় সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রেস ব্যবসায়ী, কলকারখানা, বেকারীসহ সকলপ্রকার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ও সর্বস্তরের জনসাধারণ। এমন লোডশেডিং এর কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা খাদ্যদ্রব্য।

    এব্যাপারে কদমতলা বাজারের ব্যাবসায়ী আশরাফুজ্জামান বলেন, সামান্য মেঘ-বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে এটা এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে আমাদের ব্যাবসায়ীদের জেনারেটরের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, বর্তমান সরকার দেশের উন্নয়নকে তরান্বিত করছে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভ্রাট সরকারের সকল উন্নয়নকে ম্লান করে দিচ্ছে।

    এব্যাপারে সাতক্ষীরা বিদ্যুৎ সরবারাহ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানের কাছে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, গত ১ এপ্রিল প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ সাময়িক বন্ধ ছিল। প্রাকৃতিক দূর্যোগ না থাকলেও প্রতিনিয়ত সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সন্ধ্যার পর বিদ্যুতের চাহিদা বেশি থাকে। বিদ্যুৎ সরবরাহের চেয়ে চাহিদা বেশি থাকার কারণে সৃষ্টি হয় এরূপ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের।

    রাতভর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার ব্যাপারে কালিগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার তুষার কান্তি মন্ডলের সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ ছিল। প্রাকৃতিক দূর্যোগ ব্যাতিত অন্য সময়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন আর আগের মতো লোডশেডিং থাকেনা। পিক আওয়ারে সামান্য লোডশেডিং থাকে।

    গত ১ এপ্রিল রাতের বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য আবহাওয়াকে দায়ী করছেন ঝাউডাঙ্গা বিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জিয়াউর রহমান। তার মতো পাটকেলঘাটা বিদ্যুৎ অফিসের জেনারেল ম্যানেজারও প্রাকৃতিক দূর্যোগকে দায়ী করছেন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য। নিয়মিত লোডশেডিং এর ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বলেন, লোডশেডিং এখন আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। এ লোডশেডিং এর পেছনে বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি দায়ী কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ একটু তো কম আছেই। তবে এখন বিদ্যুৎ বিভ্রাট অনেক কমে গেছে।

  • পরিপূর্ণ ইছামতি, দূর্বল বেঁড়িবাধ! যে কোন সময় প্লাবিত হওয়ার অতঙ্কে নদী পাড়ের জনসাধারণ

    পরিপূর্ণ ইছামতি, দূর্বল বেঁড়িবাধ! যে কোন সময় প্লাবিত হওয়ার অতঙ্কে নদী পাড়ের জনসাধারণ

    কবির হোসেন: সাতক্ষীরার জেলার সীমান্তবর্তী দেবহাটা উপজেলায় বয়ে চলেছে ইছামতি নদী। যেটির বেড়িবাধের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বর্ষার মৌসুমে দূর্বল বেঁড়িবাধ ভেঙ্গে বাধ টপকিয়ে পানি অনুপ্রবেশ ঘটবে। সেই সাথে আবারও দেখা দিতে পারে মহামারি। তাছাড়া বিগত কয়েক বছরে ঘটে যাওয়া বন্যার কথা ভুলতে পরেনি স্থানীয়রা। অসহোনশীল দূর্ভোগে পড়ে দেবহাটা, সুঁশিলগাতী, খাঁপাড়া, শিবনগর, টাউনশ্রীপুরসহ আশে পাশের এলাকার মানুষেরা। সে সময়ে নদী বাঁধের স্থায়ী সমাধানের কথা বলা হলেও পুরোপুরি ভাবে বাস্তবায়ন হয়নি এখনো পর্যন্ত। নতুন পুরাতন বেঁড়িতে পুনঃরায় দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন আর ফাটল। অতিরিক্ত পানির চাপে দূর্বল হয়ে পড়েছে নদীর বাধ। সেখানের বেঁড়িতে দেখা দিয়িছে বড় বড় ভাঙ্গন আর ফাঁটল। যে কোন সময় ভেঙ্গে যেতে পারে ইছামতির বাধ। আবারও প্লাবিত হয়ে ভেসে যাবে অসংখ্য ধন সম্পদ। কোন কিছুতে রক্ষা পাবে এমন নিশ্চয়তা নেই স্থানীয়দের। ঘুম নেই রাতে সীমান্ত পাড়ের মানুষের। সাম্প্রতিক দেবহাটার নাংলা, নওয়াপাড়া এলাকায় আবারো ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। যা আগামী বর্ষার মৌসুমে ভয়াবাহ রূপলাভ করতে পারে। নওয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা মহিদুল ইসলাম বলেন, ইতিপূর্বে ইছামতি নদী ভাঙ্গনের ফলে আশেপাশের মানুষের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। সে সব ক্ষতির শেষ ছিল না। যদি আবারো নদী ভাঙ্গন হয় তাহলে আমাদের ক্ষতির শেষ থাকবে না। ভাঙ্গন রোধে বর্ষা মৌসুমের আগে ব্যবস্থা গ্রহন করা দরকার। এবিষয়ে নওয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মুজিবর রহমান, নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধের সরকার কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে ভাঙ্গন রোধ করা যাবে না। আমি বালু উত্তোলন বন্ধের ব্যাপারে উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব। এছাড়া যে সমস্ত জায়গা অতিরিক্ত স্পর্শকাতর সে বিষয়ে আমি উপজেলা প্রাশসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যাবস্থা নিতে অনুরোধ জানাবো। এদিকে, নদী পাড়ের বাসিন্দাদের দাবি দ্রুত বেড়িবাধ ভাঙ্গন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

  • বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে স্থানীয় সরকার পরিষদকে সম্পৃক্ত করতে হবে

    বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে স্থানীয় সরকার পরিষদকে সম্পৃক্ত করতে হবে

    শহর প্রতিনিধি: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঝুঁকির মুখে থাকা সাতক্ষীরার উপকূলীয় বাঁধ দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছে জলবায়ু পরিষদ। একই সাথে বাঁধের সাবেক নকশা পরিবর্তন করে আর এল ৪ দশমিক ২০ এর স্থলে ৫ দশমিক ২৭ করারও দাবি জানিয়েছে পরিষদ। তারা বলেন, বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে স্থানীয় সরকার বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদকেও সম্পৃক্ত করতে হবে।
    গত সোমবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি তুলে ধরেন পরিষদ কর্মকর্তারা। তারা বলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় উপকূলীয় বাঁধের দৈর্ঘ্য ১৩৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ৩০ কিলোমিটার। ২০০৯ সালের আইলার আঘাতে বারবার ক্ষতিগ্রস্থ এসব বাঁধ যে কোনো মুহুর্তে ভেঙ্গে গিয়ে প্লাবিত করতে পারে বিস্তীর্ন জনপদ। তারা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে সাতক্ষীরা অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড় প্রায়ই আঘাত করে। এসব দূর্যোগে সাগর হয়ে ওঠে উত্তাল। জোয়ারের পানি বেড়ে প্রবল ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। ফলে প্রধান রক্ষাকবচ উপকূলীয় বাঁধ নাজুক অবস্থায় থাকায় সম্পদ ও জীবন রক্ষা কঠিন হয়ে পড়ে।
    সংবাদ সম্মেলনে পরিষদ কর্মকর্তারা আরও জানান, উপকূলীয় বাঁধের ৫ নম্বর পোল্ডারের আওতায় ঘোলা, বিড়ালাক্ষি, কুপট, পূর্বদূর্গাবাটী, ভামিয়া, নীলডুমুর, দাঁতিনাখালি, কালিকাপুর, হরিনগর, সিংহরতলী, চুনকুড়ি, জ্যোতিন্দ্রনগর, পারশেখালি, টেংরাখালী ও কৈখালি গ্রাম মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এছাড়া ১৫ নম্বর পোল্ডারের আওতায় ডুমুরিয়া, চকবারা, জেলেখালি, লেবুবুনিয়া, পারশেমারি, নাপিতখালি, চাদনীমুখা, গাবুরা গ্রাম এর বাঁধ যেকোন সময় ভেঙে যেতে পারে। একই অবস্থায় রয়েছে পদ্মপুকুর ইউনিয়নের সবগুলি গ্রাম। সেখানকার বাঁধ মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা।
    কর্মকর্তারা বলেন, দুর্যোগকালে ক্ষতিগ্রস্থ জনগণ প্রথমেই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বরদের সহযোগিতা চায়। কিন্তু তাদের হাতে যথেষ্ট অর্থ না থাকায় সমস্যার সমাধান করতে হিমশিম খেতে হয়। এমন অবস্থায় উপকূলীয় বাঁধের রক্ষনাবেক্ষনকারী পানি উন্নয়ন বোর্ড ‘বরাদ্দ নেই’ এই অজুহাত দিয়ে বাঁধ নির্মাণ থেকে বিরত থাকে। ফলে জনগনের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। এমন অবস্থায় স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ নির্মান সংস্কারের সাথে যুক্ত করা গেলে জনগনের ভোগান্তির লাঘব হতে পারে। এসব বিষয় সামনে রেখে তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের হাতে বাঁধ নির্মান সংস্কারের বরাদ্দ দেওয়ারও দাবি জানান। আপদকালীন এবং স্থায়ী ভিত্তিতে বাঁধ নির্মাণ সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে ইউনিয়ন পরিষদকে যুক্ত করার দাবি জানিয়ে জলবায়ু পরিষদ কর্মকর্তারা জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। এতে তারা উল্লেখ করেন, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ দ্রুত নির্মাণ সংস্কার, এর সাথে ইউনিয়ন পরিষদকের সম্পৃক্ত করা এবং বাঁধের পূর্বতন নকশা পরিবর্তন করে তা ৫ দশমিক ২৭ মিটারে উন্নীত করা। মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন আবু আহমেদ, সুভাষ চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, শেখ আব্দুল ওয়াজেদ কচি, মমতাজ আহমেদ বাপী, এম কামরুজ্জামান, রুহুল কুদ্দুস, গোলাম সরোয়ার প্রমুখ।
    সংবাদ সমে¥লনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জলবায়ু পরিষদ সভাপতি সাবেক উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জলবায়ু পরিষদ সদস্য সচিব অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, জলবায়ু পরিষদ সদস্য জাসদ শ্যামনগর উপজেলা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শেখ হারুন অর রশীদ, জলবায়ু পরিষদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার নূরুল ইসলাম, জাতীয় মহিলা সংস্থার শ্যামনগর উপজেলা সভাপতি ও জলবায়ু পরিষদ সদস্য শাহানা হামিদ প্রমুখ।

  • অনাবৃষ্টি ও উপকূলের কৃষি সংকট

    অনাবৃষ্টি ও উপকূলের কৃষি সংকট

    মফিজুর রহমান

    জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের নদ-নদী ও কৃষি জমিতে। ঝড়, বন্যা, খরা ও জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে যুদ্ধ করছে উপকূলের মানুষ। একটির পর একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপকূলে আঘাত হানছে। ঘর-বাড়ি নির্মাণ, জলাবদ্ধতা, লবণাক্ততা ও নদী ভাঙনের ফলে প্রতিবছর চাষযোগ্য জমি কমে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক। প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বাড়ছে, তেমনি কমছে বৃষ্টিপাত। নেমে যাচ্ছে পানির স্তর।
    অনাবৃষ্টি ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে উপকূলের কৃষিতে যে সংকট তৈরী হচ্ছে- সে সম্পর্কে জানতে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার শ্যামনগর, ঈশ্বরীপুর, রমজাননগর, মুন্সিগঞ্জ, আটুলিয়া, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, কৈখালী, কাশিমাড়ি, ভুরুলিয়া ও গাবুরা ইউনিয়নের ১৩৭জন কৃষক-কৃষাণীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। দলীয়ভাবে এবং একক সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহের কাজটি চলে।
    স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, অনাবৃষ্টি ও অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে চাষাবাদের সময়কাল সংকুচিত হচ্ছে। ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। বীজের অঙ্কুরোদগম কম হচ্ছে। গাছের দৈহিক বৃদ্ধি কমে যাচ্ছে। ফুল ও ফল কম হচ্ছে। ফল পুষ্ট হচ্ছে না। ফলের আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি পেকে যাচ্ছে। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে ফসলের পাতা বটে যাচ্ছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমান কমে যাচ্ছে। অনাবৃষ্টি ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য বোরো ধানের ক্ষেতে- যেখানে সেচের বিকল্প ব্যবস্থা নেই সেখানে আগাম থোড় ধরছে। হঠাৎ তাপমাত্রা উঠানামা করার ফলে হাঁস-মুরগীর ডিম উৎপাদন কমে যাচ্ছে। গরমের ক্ষেত্রে একই রকম ঘটছে। বিশেষ করে- বৃষ্টি যখন হওয়ার কথা তখন হয় না, আবার যখন হওয়ার কথা না তখন হয়।
    গড়কুমারপুর গ্রামের প্রবীণ কৃষক আব্দুল আজিজ বলেন, অনাবৃষ্টির ফলে জমিতে লোনা কেটে উঠছে। ধান গাছ লাল হয়ে যাচ্ছে। সেচের পানি দিলে ও তাপের কারণে পানি দুধনুনতা হয়ে যাচ্ছে। ধান গাছ বাড়ছে কম। জমিতে সেচের পানি বেশী দিতে হচ্ছে। প্রথম দিকে সপ্তাহে একবার সেচ দিলে হতো, কিন্তু অনাবৃষ্টির ফলে এখন সপ্তাহে দুই বার সেচ দিতে হচ্ছে। আগে এক বিঘা জমিতে এক লিটার ডিজেল লাগতো কিন্তু দীর্ঘ দিন বৃষ্টি না হওয়ায় বিঘা প্রতি আড়াই লিটার ডিজেল লাগছে। পানির লেয়ার নিচে নেমে গেছে। এতে স্যালোমেশিনে পানি কম উঠছে। মাটি ভাড়ে (শক্ত চাক) হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ দিন বৃষ্টি না হওয়ায় ধানের শীষ ছোট হয়ে যাচ্ছে। ধানের শীষ বের হওয়ার পর শুকিয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়াই জমিতে রাসায়নিক সার বেশী দিতে হচ্ছে এবং জ্বালানী খরচ ও বেড়ে যাচ্ছে। অনাবৃষ্টির কারণে বিঘা প্রতি ৬/৭ মণ ধান কম হবে।
    অনাবৃষ্টির কারণে আমের মুকুল, কাঠালের ফুল, আমড়া, লেবুর ফুল শুকিয়ে পড়ে যাচ্ছে বলে জানান ধুমঘাট গ্রামের কৃষক সামসুর রহমান। তিনি বলেন, অন্যান্য বছরে এ সময় বর্ষার দেখা মিললেও চলতি বছরের মার্চের শেষে দু’দিন পরপর কালবৈশাখীর ঝড় দেখা গেছে, কিন্তু বৃষ্টি হয়নি। ফসলের পাশাপাশি গবাদি পশু বিভিন্ন রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে, এমনকি মারাও যাচ্ছে। তাছাড়া বর্ষা না হওয়া এবং তাপের কারণে লবণ কেটে উঠছে। চারদিকে লোনা পানির কারণে মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুও পানির সংকটে ভুগছে।
    পাতড়াখোলা গ্রামের কৃষাণী নাজমা বেগম বলেন, আমি দিন মজুরের কাজ করি। জমি বর্গা নিয়ে কূপ পদ্ধতির মাধ্যমে বোরো ধান চাষ করি। কিন্তু এ বছর অনাবৃষ্টির কারণে কূপে আর পানি উঠছে না। সেচের অভাবে ফসল মার যাওয়ার মতো অবস্থা তৈরী হয়েছে।
    দেশের দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ততার আগ্রাসন বেড়েই চলেছে। ঘটছে কৃষি বিপর্যয়। পানির স্তর ক্রমে নিচে নেমে যাওয়ায় লবণাক্ততা ভূগর্ভস্থ সুপেয় পানিকেও গ্রাস করছে। প্রতি বছর লবণাক্ততার আগ্রাসী থাবায় উপকূলীয় জনপদ ক্রমশ পরিণত হচ্ছে বিরানভূমিতে।
    লেখক: কর্মসূচি কর্মকর্তা, বারসিক, শ্যামনগর রিসোর্স সেন্টার।

  • সুপেয় পানির তীব্র সংকটে সাতক্ষীরা

    সুপেয় পানির তীব্র সংকটে সাতক্ষীরা

    আসাদুজ্জামান সরদার: আইলার পর থেকেই জেলার উপকূলীয় এলাকায় শুরু হয় সুপেয় পানির তীব্র সংকট। এবারও শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, আনুলিয়া এবং কালিগঞ্জের কিছু এলাকায় চলছে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার। এনজিওদের দেওয়া বিশুদ্ধ পানির ফিল্টারগুলো অকেজো হয়ে পড়ায় পানি সংগ্রহ দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সুপেয় পানির অভাবে এসব এলাকায় বাড়ছে বিবিধ রোগ। নোনা পানির কারণে ফসল হচ্ছে না। মরে যাচ্ছে গাছপালা। ফলে এলাকার মানুষ জীবিকার তাগিদে চলে যাচ্ছেন অন্যত্র। লবণাক্ত পানির জন্য নারীদের অকাল গর্ভপাত ঘটছে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।
    এলাকাবাসী বলছেন, লবণ পানির প্রভাবে চর্মরোগ, কলেরা, ডায়রিয়া, আমাশয়সহ পানিবাহিত রোগ বাড়ছে। ক্ষেতে ফসল ফলে না। গো-খাদ্যের চরম সংকট চলছে। চিংড়ি চাষেও দেখা দিয়েছে মন্দা।
    সূত্রমতে, লবণাক্ত পানির জন্য নারীদের অকাল গর্ভপাত ঘটছে। জাতীয়ভাবে দেশে জন্মের হার ১.৫৯% হলেও এই এলাকার জন্মের হার ১% এর নিচে। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান এ তথ্য জানান।
    গাবুরা এলাকার সিরাজ হোসেন বলেন, ‘সুন্দরবন সংলগ্ন গাবুরা ও পদ্মপুকুরের মানুষ নদীতে মাছ ধরে এবং বনে কাঠ কেটে সংসার চালাতো। নোনা পানির কারণে গাছপালা জন্মায় না। জমিতে ধান-পাট হয় না। ফলে মানুষ বেকার হয়ে পড়ছেন।’
    পদ্মপুকুর ইউনিয়নের আয়েজবিল্লাহ শিমুল বলেন, ‘আইলার আট বছর পরও এলাকায় সুপেয় পানির সংকট কাটেনি। রেশনিংয়ের মাধ্যমে কিছু মানুষ খাবার পানি পেলেও চাহিদার তুলনায় তা অনেক কম। পুকুরের পানিই একমাত্র ভরসা। অনেক দূরে স্থাপিত ফিল্টারগুলোতেও (পিএসএফ) অসম্ভব ভিড়। এক কলস পানি আনতেই একবেলা কেটে যায়।’
    পদ্মপুকুর ইউনিয়নের আবুল কালাম ঢালী জানান, ‘ভালো পানি সব জায়গায় মেলে না। কিছু কিছু যায়গায় ভালো পানি আবার কিছু কিছু যায়গায় লোনা পানি। তবে লোনা পানির ভাগ বেশি। বেশির ভাগ মানুষ দুর থেকে পানি নিয়ে এসে থাকে।’
    ইউপি সদস্য আবুল কাশেম গাজী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আইলা হওয়ার পর থেকে পানি সংকট লেগেইে আছে। সুপেয় পানি সব জাগায় পাওয়া যায় না। আর এ ইউনিয়নের সকল যায়গায় তো লোনা পানি। কিছু কিছু যায়গায় নলকূপের পানি মিষ্টি। কিন্ত সেগুলো সিমিত। ইউনিয়নের বেশির ভাগ যায়গা লোনা পানির ঘের করে রেখেছে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা। ইউনিয়নে লোনা পানি ঢুকানো বন্ধ না হলে সুপেয় পানি তো দুরের কথা মানুষ যে সব পুকুর থেকে বর্তমানে পানি খাচ্ছে, সেগুলোও লোনা পানির কারণে লোনা হয়ে যাবে। আর ফসলতো এক প্রকার হয়না বললেই চলে।’
    গাবুরা ইউনিয়নের চাঁদনিমুখা গ্রামের আসাদুল হক বলেন, ‘চিংড়ি চাষের কারণে জমিতে কোনও ফসল ফলে না। জমিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন ফলজ গাছ মারা যাচ্ছে। জমিতে ধান, পাট, শাকসবজি চাষ না হওয়ায় সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে না। মাঠে ঘাস না জন্মানোয় গবাদিপশু পালন বন্ধ হয়ে গেছে। এলাকায় কাজ না থাকায় বউ-ছেলে-মেয়ে সংসার ফেলে শত শত মানুষ গ্রাম ছেড়েছেন।’ একই গ্রামের আবু হাসান বলেন, ‘লবণ পানির কারণে চর্মরোগ লেগেই থাকে। এখানে গোসলের পানিরও সমস্যা। প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে পুকুরের পানি পান করতে হয়। চাকরিজীবীরা তাদের উপার্জনের বড় একটা অংশ বোতলজাত পানি কিনতে ব্যয় করেন।’
    শ্যামনগর ও কয়রা এলাকার জলবায়ু পরিষদের সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী বলেন, ‘পুকুর সংস্কার এবং ফিল্টার (পিএসএফ) মেরামতের অভাবে এই এলাকায় পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। লবণ পানির কারণে এই অঞ্চলের মানুষের কর্মক্ষতা কমে যাচ্ছে। নারীদের গর্ভপাতের মতো ঘটনা ঘটছে। গত ১০ বছরে এই এলাকায় জনসংখ্যা খুব বেশি বাড়েনি। কাজের সন্ধানে পুরুষরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। ফলে বেড়েছে নারীর সংখ্যা।’
    গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, ‘পানির কারণে এলাকায় কাজ নেই। ফলে কাজের সন্ধানে পুরুষরা এলাকা ছাড়ছেন। অভাবের কারণে লবণ পানিতে কাজ করায় অনেক নারীর অকালে গর্ভপাত হচ্ছে।’ শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. মালিহা খানম বলেন, ‘বেশিরভাগ নারী চুলকানি, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, গায়ে ব্যাথা, বিভিন্ন মেয়েলি সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে আসেন। লবণ পানির কারণেই যে নারীদের গর্ভপাত হচ্ছে এটি গবেষণা ছাড়া বলা সম্ভব না। তবে সম্প্রতি এই এলাকার নারীদের গর্ভপাত বেশি হচ্ছে। ’
    সাতক্ষীরার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম জানান, উপকূলীয় এলাকার মানুষের সুপেয় পানির সুবিধা নিশ্চিত করতে ৩০টি পুকুর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
    শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘সুপেয় পানির সংকট নিরসনে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ ও পানির বড় ট্যাংকের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে তারা বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে পারে। পুকুর কেটে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের জলবায়ু ট্রাস্টের একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এটির মাধ্যমে বৃষ্টির পানি ধরে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও কাজ করছে।’
    তিনি বলেন, ‘আইলার পর কয়েক বছর পানি সংকটসহ বিভিন্ন কারণে অনেক মানুষ এলাকা ছেড়েছেন। বর্তমানে আর কেউ এলাকা ছাড়ছেন না। তবে এ এলাকায় কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ করা গেলে যেসব মানুষ এলাকা ছেড়ে গেছেন, তারা আবারও ফিরে আসবেন। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’ লবণ পানিতে কাজ করার কারণে নারীদের গর্ভপাত হচ্ছে, এমন কোনও বিষয় তার জানা নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
    প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ মে সোমবার দুপুরের দিকে আইলার আঘাতে উপকূলীয় বিস্তীর্ণ এলাকা ল-ভ- হয়ে যায়। প্রাণ হারান ১০৯ জন মানুষ। তার মধ্যে কেবল গাবুরা ও পদ্মপুকুর, মুন্সিগঞ্জ ও আশাশুনির প্রতাপনগরে মারা যায় ৭৩ জন নারী, পুরুষ ও শিশু।

    সুপেয় পানির তীব্র সংকটে সাতক্ষীরা
    আসাদুজ্জামান সরদার: আইলার পর থেকেই জেলার উপকূলীয় এলাকায় শুরু হয় সুপেয় পানির তীব্র সংকট। এবারও শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, আনুলিয়া এবং কালিগঞ্জের কিছু এলাকায় চলছে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার। এনজিওদের দেওয়া বিশুদ্ধ পানির ফিল্টারগুলো অকেজো হয়ে পড়ায় পানি সংগ্রহ দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সুপেয় পানির অভাবে এসব এলাকায় বাড়ছে বিবিধ রোগ। নোনা পানির কারণে ফসল হচ্ছে না। মরে যাচ্ছে গাছপালা। ফলে এলাকার মানুষ জীবিকার তাগিদে চলে যাচ্ছেন অন্যত্র। লবণাক্ত পানির জন্য নারীদের অকাল গর্ভপাত ঘটছে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।
    এলাকাবাসী বলছেন, লবণ পানির প্রভাবে চর্মরোগ, কলেরা, ডায়রিয়া, আমাশয়সহ পানিবাহিত রোগ বাড়ছে। ক্ষেতে ফসল ফলে না। গো-খাদ্যের চরম সংকট চলছে। চিংড়ি চাষেও দেখা দিয়েছে মন্দা।
    সূত্রমতে, লবণাক্ত পানির জন্য নারীদের অকাল গর্ভপাত ঘটছে। জাতীয়ভাবে দেশে জন্মের হার ১.৫৯% হলেও এই এলাকার জন্মের হার ১% এর নিচে। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান এ তথ্য জানান।
    গাবুরা এলাকার সিরাজ হোসেন বলেন, ‘সুন্দরবন সংলগ্ন গাবুরা ও পদ্মপুকুরের মানুষ নদীতে মাছ ধরে এবং বনে কাঠ কেটে সংসার চালাতো। নোনা পানির কারণে গাছপালা জন্মায় না। জমিতে ধান-পাট হয় না। ফলে মানুষ বেকার হয়ে পড়ছেন।’
    পদ্মপুকুর ইউনিয়নের আয়েজবিল্লাহ শিমুল বলেন, ‘আইলার আট বছর পরও এলাকায় সুপেয় পানির সংকট কাটেনি। রেশনিংয়ের মাধ্যমে কিছু মানুষ খাবার পানি পেলেও চাহিদার তুলনায় তা অনেক কম। পুকুরের পানিই একমাত্র ভরসা। অনেক দূরে স্থাপিত ফিল্টারগুলোতেও (পিএসএফ) অসম্ভব ভিড়। এক কলস পানি আনতেই একবেলা কেটে যায়।’
    পদ্মপুকুর ইউনিয়নের আবুল কালাম ঢালী জানান, ‘ভালো পানি সব জায়গায় মেলে না। কিছু কিছু যায়গায় ভালো পানি আবার কিছু কিছু যায়গায় লোনা পানি। তবে লোনা পানির ভাগ বেশি। বেশির ভাগ মানুষ দুর থেকে পানি নিয়ে এসে থাকে।’
    ইউপি সদস্য আবুল কাশেম গাজী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আইলা হওয়ার পর থেকে পানি সংকট লেগেইে আছে। সুপেয় পানি সব জাগায় পাওয়া যায় না। আর এ ইউনিয়নের সকল যায়গায় তো লোনা পানি। কিছু কিছু যায়গায় নলকূপের পানি মিষ্টি। কিন্ত সেগুলো সিমিত। ইউনিয়নের বেশির ভাগ যায়গা লোনা পানির ঘের করে রেখেছে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা। ইউনিয়নে লোনা পানি ঢুকানো বন্ধ না হলে সুপেয় পানি তো দুরের কথা মানুষ যে সব পুকুর থেকে বর্তমানে পানি খাচ্ছে, সেগুলোও লোনা পানির কারণে লোনা হয়ে যাবে। আর ফসলতো এক প্রকার হয়না বললেই চলে।’
    গাবুরা ইউনিয়নের চাঁদনিমুখা গ্রামের আসাদুল হক বলেন, ‘চিংড়ি চাষের কারণে জমিতে কোনও ফসল ফলে না। জমিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন ফলজ গাছ মারা যাচ্ছে। জমিতে ধান, পাট, শাকসবজি চাষ না হওয়ায় সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে না। মাঠে ঘাস না জন্মানোয় গবাদিপশু পালন বন্ধ হয়ে গেছে। এলাকায় কাজ না থাকায় বউ-ছেলে-মেয়ে সংসার ফেলে শত শত মানুষ গ্রাম ছেড়েছেন।’ একই গ্রামের আবু হাসান বলেন, ‘লবণ পানির কারণে চর্মরোগ লেগেই থাকে। এখানে গোসলের পানিরও সমস্যা। প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে পুকুরের পানি পান করতে হয়। চাকরিজীবীরা তাদের উপার্জনের বড় একটা অংশ বোতলজাত পানি কিনতে ব্যয় করেন।’
    শ্যামনগর ও কয়রা এলাকার জলবায়ু পরিষদের সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী বলেন, ‘পুকুর সংস্কার এবং ফিল্টার (পিএসএফ) মেরামতের অভাবে এই এলাকায় পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। লবণ পানির কারণে এই অঞ্চলের মানুষের কর্মক্ষতা কমে যাচ্ছে। নারীদের গর্ভপাতের মতো ঘটনা ঘটছে। গত ১০ বছরে এই এলাকায় জনসংখ্যা খুব বেশি বাড়েনি। কাজের সন্ধানে পুরুষরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। ফলে বেড়েছে নারীর সংখ্যা।’
    গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, ‘পানির কারণে এলাকায় কাজ নেই। ফলে কাজের সন্ধানে পুরুষরা এলাকা ছাড়ছেন। অভাবের কারণে লবণ পানিতে কাজ করায় অনেক নারীর অকালে গর্ভপাত হচ্ছে।’ শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. মালিহা খানম বলেন, ‘বেশিরভাগ নারী চুলকানি, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, গায়ে ব্যাথা, বিভিন্ন মেয়েলি সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে আসেন। লবণ পানির কারণেই যে নারীদের গর্ভপাত হচ্ছে এটি গবেষণা ছাড়া বলা সম্ভব না। তবে সম্প্রতি এই এলাকার নারীদের গর্ভপাত বেশি হচ্ছে। ’
    সাতক্ষীরার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম জানান, উপকূলীয় এলাকার মানুষের সুপেয় পানির সুবিধা নিশ্চিত করতে ৩০টি পুকুর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
    শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘সুপেয় পানির সংকট নিরসনে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ ও পানির বড় ট্যাংকের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে তারা বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে পারে। পুকুর কেটে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের জলবায়ু ট্রাস্টের একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এটির মাধ্যমে বৃষ্টির পানি ধরে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও কাজ করছে।’
    তিনি বলেন, ‘আইলার পর কয়েক বছর পানি সংকটসহ বিভিন্ন কারণে অনেক মানুষ এলাকা ছেড়েছেন। বর্তমানে আর কেউ এলাকা ছাড়ছেন না। তবে এ এলাকায় কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ করা গেলে যেসব মানুষ এলাকা ছেড়ে গেছেন, তারা আবারও ফিরে আসবেন। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’ লবণ পানিতে কাজ করার কারণে নারীদের গর্ভপাত হচ্ছে, এমন কোনও বিষয় তার জানা নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
    প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ মে সোমবার দুপুরের দিকে আইলার আঘাতে উপকূলীয় বিস্তীর্ণ এলাকা ল-ভ- হয়ে যায়। প্রাণ হারান ১০৯ জন মানুষ। তার মধ্যে কেবল গাবুরা ও পদ্মপুকুর, মুন্সিগঞ্জ ও আশাশুনির প্রতাপনগরে মারা যায় ৭৩ জন নারী, পুরুষ ও শিশু।

  • পৃথিবীর পরিচিত ভোর

    পৃথিবীর পরিচিত ভোর

    এই মাঝ রাতে যখন
    বন বিড়ালটাও গভীর ঘুমে মগ্ন
    যখন পরিচিত চোখ মুখগুলো
    রাত্রির ছাউনির নিচে শান্তির ঘুমে বিভোর
    তখনো সেই মাঝ রাতে আমি জেগে আছি
    কিন্তু কেনো?
    সে উত্তর বেড়াতে গ্যাছে পশ্চিমের-
    পরিচিত পিসির বাড়ি
    যেখানে এখনো দিনের দেবতা হাঁসে
    বৌদির কপালে আকা সকালের টিপে
    আর রাত্রিগুলো ভোর হয় হলুদ জোছনায় ভিজে
    তাই তো এখনো রাত্রি জাগতে ভালোলাগে-
    ভালোলাগে ভুল করে-করে
    নিজের ভুল ভাঙতে-আর ভুল ভাঙার পথকে
    নতুনের হাত ধরাতে
    যে হাত খুলে দেবে সব অন্ধ হৃদয়ের বন্ধ দোর
    ফিরে পাবে পৃথিবী তার পরিচিত ভোর।

  • অভিযোজন

    অভিযোজন

    আমার ভিতর একটা বাবুইপাখি ছিলো,
    হাতে ছিলো সরল বুননশৈলী
    একটা খরগোশ ছিলো , আর ছিলো কচ্ছপ,
    নিজের ভিতরে দৌড়ঝাঁপ করে গড়পড়তা জীবন।
    দৌড় দেখে যারা যারা হাততালি দিয়েছেন
    তাদের অনেকেই ছিলেন মাংসাশী।

    শরীরে এখন শজারুর ঢাল আঁকতে জানি,
    জিহ্বাকে লম্বালম্বি দুভাগ করে
    দাঁতের নিচে খনন করতে পারি হেমলকের কুয়ো,
    শিখেছি গোলাপকে ধুতরায় রূপান্তরের মন্ত্র,
    বুকের ভিতর গজিয়ে নিতে জানি প্রকা- আর্সেনাল,
    এখন গর্জন দিয়ে বার্তালাপ শুরু করে
    মাংসাশীদের চিনে নিতে পারি সহজে।

  • যদি কথা দাও

    যদি কথা দাও

    যদি কথা দাও সাজাবো সুখের নীড়
    মখমল দিনে উড়াবো রঙিন ঘুড়ি
    সন্ধ্যায় দেখবো উড়ে যাচ্ছে গাঙচিল
    মধ্যরাতে গাবো ঘুম পাড়ানিয়া গান।
    স্মৃতির মিনারে জমে থাকা কালো ব্যথা
    জল-জোছনায় ধুয়ে দেবো সারা রাত
    ভালবাসার চিঠি দেবো আকাশের গায়ে
    আলোয় ভরাবো পৃথিবীর নাভিমূল।
    যদি কথা দাও ভাসাবো প্রীতির খেয়া
    দেবো পথ পাড়ি যার নেই কোন সীমা
    আঙিনায় খুলে দেবো সুন্দরের ডালা
    স্বপ্নের মাঝেই স্বপ্ন হয়ে কাটাবো সময়।

    নিরবতা ভেঙে যদি কথা দাও তবে
    আবার ফিরবো রূপকথার নায়ক হয়ে।