Author: Hasan
-

আশাশুনিতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২
আশাশুনি পুলিশের অভিযানে দুই জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে এসআই মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, এসআই রাজীব মন্ডল অভিযান চালিয়ে সিআর-৪৭৪/২৩ এর আসামী খরিয়াটি গ্রামের নওশের গাজীর ছেলে মোবারক ও মামলা নং-৩(৯)২৪ এর আসামী গদাইপুর গ্রামের মৃত আলীমুদ্দীন মোল্যার ছেলে মজিদ মোল্যাকে আশাশুনি থানা এলাকার ভিন্ন ভিন্ন স্থান হতে গ্রেফতার করেন। -

আশাশুনিতে দুঃস্থদের মাঝে গরু বিতরণ ও প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
আশাশুনিতে দুঃস্থদের মাঝে বিনামূল্যে গরু বিতরণ, সুফলভোগিদের প্রশিক্ষণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের গোদাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে অভিঘাত মোকাবেলায় দুঃস্থদের মাঝে গরু বিতরণ প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কৃষ্ণা রায়। ইডা নলতা কালিহঞ্জ এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ আফতার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ তৌহিদুজ্জামান, সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম ও শোভনালী ইউপি চেয়ারম্যান মাওঃ আবু বক্কর সিদ্দিক। আলোচনা সভা শেষে গোদাড়া ও বৈকরঝুটি গ্রামের ৬ জন দুঃস্থ মহিলাকে বিনামূল্যে একটি করে গরু প্রদান করা হয়। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার কৃষ্ণা রায় বলেন, সবাই অবশ্যই যত্ন সহকারে গরু পালন করবেন এবং কেউ বিক্রি করবেন না। আপনারা সঠিকভাবে গরু পালন করতে পারলে অবস্থার পরিবর্তন হবে, ছেলে মেয়েরা পুষ্টিকর খাবার পাবে। -

সাতক্ষীরায় নিষিদ্ধ পলিথিন,পলিপ্রপাইলিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা আদায়
সাতক্ষীরায় নিষিদ্ধ পলিথিন,পলিপ্রপাইলিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ০৭/১১/২০২৪ জেলা প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তর, সাতক্ষীরা জেলা কার্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে সুলতানপুর বড় বাজারে সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। উক্ত অভিযানে ১টি দোকানকে মোট ২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং প্রায় ২০ কেজি নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ব্যাগ জব্দ করা হয়। এছাড়া আরো কিছু দোকান মালিককে সতর্ক করা হয়েছে। মোবাইল কোর্টে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করেন বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্রনয় বিশ্বাস। মোবাইল কোর্টে প্রসিকিউশন প্রদান করেন পরিবেশ অধিদপ্তর, সাতক্ষীরা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সরদার শরীফুুল ইসলাম ও অন্যান্য কর্মচারীবৃন্দ। অভিযানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় জেলা পুলিশ সহযোগিতা করেন। এ সময় পলিথিন ব্যবহার না করার জন্য মাছ বিক্রেতা, মাংস বিক্রেতা, দোকানদার, ক্রেতা সাধারণ সবাইকে সচেতনতা মুলক প্রচার করা হয়। পরিবেশ সুরক্ষায় এ ধরনের কার্যক্রম এ কার্যালয় হতে অব্যাহত থাকবে। -

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিনিধি : ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সাতক্ষীরা জেলা শাখার উদ্যোগে বর্ণনাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ৭ নভেম্বর জেলা বিএনপির আয়োজনে বেলা সাড়ে ১১ টায় শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জেলা বিএনপি, পৌর বিএনপি,সদর উপজেলা বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল, কৃষক দল, শ্রমিক দল ও থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ব্যানার ও বিভিন্ন রঙের বেলুন, ফেস্টুন ও ফ্লাগ নিয়ে সুসজ্জিত হয়ে সভাস্থলে সমবেত হয়। এরপর এক বর্ণাঢ্য আয়োজনে উৎসব মুখর পরিবেশ র্যালি সহকারে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সাতক্ষীরা খুলনা রোড মোড়ে মিলিত হয়। এসময় সংক্ষিপ্ত আলোচনা মধ্য দিয়ে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি শেষ হয়। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ ইফতেখার আলী’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান হবি,জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তাসকিন আহমেদ চিশতি, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মোঃ শের আলী, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মোঃ আব্দুস সামাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সোহেল আহমেদ মানিক, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আবু জাহিদ ডাবলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান মুকুল, জেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাউন্সিলর শফিকুল আলম বাবু, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব মোঃ সালাহউদ্দিন লিটন, জেলা জাসাস এর সভাপতি শেখ জিল্লুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফারুক হোসেন প্রমুখ। এসময় জেল বিএনপি’র সকল অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
-

সাতক্ষীরার ৫০ টাকায় তরুণ-তরুণীদের নিরাপদ ডেটিং স্পটে ভ্রাম্যমান আদালত
তরুণ-তরুণীদের অবাধ মেলামেশা জন্য ডেটিং স্পটে পরিণত হওয়া সাতক্ষীরার মোজাফফর গার্ডেন অ্যান্ড রিসোর্টে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রনয় বিশ্বাস অভিযানের নেতৃত্ব দেন।এর আগে গত ২৯ অক্টবর মোজাফফর গার্ডেন অ্যান্ড রিসোর্টে কর্মকান্ড নিয়ে বেশ কিছু গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয় মোজাফফর গার্ডেন অ্যান্ড রিসোর্টটি যেন পার্ক নয়, অনৈতিক কার্যকলাপের মিলনখানা। স্কুল কলেজ চলাকালিন প্রেমিক-প্রেমিকার পদচারণায় এটি হয়ে উঠেছে ‘নিরাপদ ডেটিং স্পটে। পার্কের প্রতিটি কোণায় কোণায় যেনো প্রেমিক যুগলের শারীরিক মিলনের আখড়া। কেউ স্কুল কলেজ ফাঁকি দিয়ে আবার কেউ পরকীয়া প্রেমিকের হাত ধরেই চলে যাচ্ছেন সেখানে। যেখানে অনেক প্রেমিক যুগল সুযোগ বুঝে লিপ্ত হচ্ছেন শারীরিক মিলনে। মাত্র পঞ্চাশ টাকার টিকিটে সেখানে চলছে এসব কার্যকলাপ।প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি মোজাফফার গার্ডেন এন্ড রিসোর্টে প্রকাশ্যে প্রেমিক যুগলের অনৈতিক কার্যকলাপের বেশ কিছু ভিডিও আসে প্রতিবেদকের কাছে। ভিডিওতে দেখা যায়, রিসোর্টের পুকুর পাড়ে ও ঝোপঝাড়ের আড়ালে চলছে অনৈতিক কার্যকলাপ। এদিকে পরিচয় গোপন করে কল দিয়ে পার্সোনাল রুম চাইলেও দিয়ে দিচ্ছেন।এছাড়া প্রতিবেদক পরিচয় গোপন করে রিসোর্টের রিসিপশনের মোবাইল নাম্বারে কল দিয়ে বান্ধবীসহ থাকার জন্য রুম বুকিং করতে চায় প্রতিবেদক। তখন রিসিপশনের দায়িত্ব থাকা তৈবুর রহমান বলেন দুজনের এনআইডি কার্ড নিয়ে আসলেই থাকার জন্য রুম পাবেন। আমাদের এখানে কোন সমস্যা হবে না। তবে সাংবাদিক পরিচয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে জানতে চাইলে মোজাফফর গার্ডেন অ্যান্ড রিসোর্টের রিসিপশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৈবুর রহমান অনৈতিক কর্মকাণ্ড অস্বীকার করে বলেন, এমন কোনো কর্মকাণ্ড হওয়ার উচিত না, এগুলো হয়ও না। আমরা যখন রুমগুলা বুকিং করি অফিশিয়ালি প্রোগ্রাম হলে অফিস থেকে মেইল আসে, তখন বুকিং করা হয়। আমরা যথেষ্ট যাচাই-বাছাই করে রুম বুকিং করে থাকি।এদিকে, সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। গত ৩১ অক্টবর তাৎক্ষনিক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিষ্ণুপদ পাল স্বাক্ষরিত এক পত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখিত বিষয়ে গ্ররুত্বারপসহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পার্ক কতৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। এছাড়া পার্কের পবিবেশ ভালো করতে সাতক্ষীরা থানার অফিসার ইনচার্জ শামিনুল হক কয়েক দফায় মোজাফফর গার্ডেন অ্যান্ড রিসোর্ট পরিদর্শন করেন।পরবর্তীতে, বৃহস্পতিবার ( ০৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ কায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রনয় বিশ্বাসের নেতৃত্ব মোজাফফর গার্ডেন অ্যান্ড রিসোর্টে অভিযান চালায়। এসময় তারা বিভন্ন স্পর্ট ঘুরে দেখেন এবং কর্তপক্ষকে বিভন্ন নির্দেশনা দেন। তবে আপত্তিকর অবস্থা কাওকে পাওয়া না যাওয়ায় কাওকে শস্তির আওতায় আনা হয়নি। এছাড়া ভবিষ্যতে মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্টে কোন ধরনের অশ্লীল কার্যকলাপ ঘটবে না। এ ব্যাপারে মালিকপক্ষ ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ সচেষ্ট থাকবে এবং ভবিষ্যতে কোন ধরনের আপত্তিকর ঘটনা ঘটলে তারা আইনানুকভাবে দায়ী থাকবে। ভ্রাম্যমান আদালত মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্ট এর ম্যানেজার আতিকুল আলম আতিকের কাছ থেকে এমন অঙ্গীকার নিয়ে তাদেরকে সতর্ক করেছেন।এ বিষয়ে মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্ট এর পরিচালক ফয়সাল মোজাফফর বলেন, আমি বাইরে আছি, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসেছিল বলে শুনেছি। পার্কের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য আমরাও চেষ্টা করছি, প্রশাসনের লোকও চেষ্টা করছে।সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামিনুল হক বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ সুপারের নির্দেশে পুলিশের পক্ষ থেকে আমি কয়েকবার মোজাফফর গার্ডেনে গিয়েছি। পার্কের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোসহ তাদেরকে বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া অপীতি কর ঘটনা এড়াতে পুলিশের পক্ষ থেকে তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রণয় বিশ্বাস বলেন, সম্প্রতি মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্টের পরিবেশ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে দেখা গেছে পার্কের মধ্যে প্রকাশ্য অনৈতিক কার্যকলাপ হচ্ছে। এসব বিষয়ে আমরা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেছি। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাকালে কাউকে আপত্তি করা অবস্থায় পাওয়া যায়নি। তবে ভবিষ্যতে যেন আপত্তিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মুচলেকা নেয়া হয়েছে। -

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে ও দোষীদের বিচারের দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন
বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশন সাতক্ষীরা জেলা কমিটির আয়োজনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে ও দোষীদের বিচারের দাবিতে সাতক্ষীরায়
মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৭/১১/২০২৪) সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সভাপতি মোঃ আমিনুর রহমান এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাসুম বিল্লাহ এর সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশন, সাতক্ষীরা জেলা কমিটির উদ্যোগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যলয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ মহোদয়কে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে ও দোষীদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
উক্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলার ১৪ টি কলেজ থেকে আগত শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। এ সময় শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, কোটা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে আবু সাঈদসহ সকল বীর শহীদের প্রতি মাগফিরাত কামনা ও আহতদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়ে জটিলতা দূরীকরণ, বিগত সময়ের দুর্নীতির শে^তপত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে গভর্নিং বডি গঠনসহ বিশ^বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে উপাচার্য মহোদয় রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন। নেতৃবৃন্দ আরো বলেনÑ মাননীয় উপাচার্যের এ সকল সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয় উদ্যোগের প্রেক্ষিতে অধিভুক্ত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো যখন সুফল পেতে শুরু করেছে, ঠিক সেই সময় একটি স্বার্থান্বেষী মহল এই সংস্কার ও সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রমকে ব্যর্থ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে হুমকি-ধামকি দিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধের কার্যক্রমকে নানা ভাবে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমরা এ ধরনের হত্যার হুমকির প্রতিবাদে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশন সাতক্ষীরা জেলা শাখার পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে এ ঘটনায় যে বা যারাই জড়িত থাকুক, তদন্ত সাপেক্ষে তাদেরকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানাচ্ছি। এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ মনিরুজ্জামান, প্রভাষক আবু সাঈদ, প্রভাষক গোলাম মোস্তফা, প্রভাষক উত্তম কুমার, প্রভাষক আশরাফুল ইসলাম, প্রভাষক পবিত্র কুমার মন্ডল, প্রভাষক মিহির কুমার মন্ডল, প্রভাষক গৌতম কুমার মজুমদার, প্রভাষক আব্দুল হাকিম, প্রভাষক জুতিকা, প্রভাষক মৃন্ময় মন্ডলসহ সাতক্ষীরা জেলার ১৪ টি কলেজের শিক্ষক নেতৃবৃন্দসহ। -

মৌচাক সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
মৌচাক সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বেলা ১১টায় তুফান কনভেনশন সেন্টার লেকভিউতে মৌচাক সাহিত্য পরিষদের সভাপতি বিশিষ্ট সমাজসেবক ডা: আবুল কালাম বাবলা’র সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। মৌচাক সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কবি- নাট্যকার আব্দুল ওহাব আজাদ’র সঞ্চালনায় সভায় সংগঠনকে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে বিভিন্ন মতামত তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি ড. মোঃ আব্দুল বারী, উপদেষ্টা আব্দুর রব ওয়ার্ছি,শেখ আজিজুল হক, তৃপ্তিমোহন মল্লিক,সংগঠনের সহ-সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ, শেখ মোসফিকুর রহমান মিল্টন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সোবহান,জেলা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কবি শহীদুর রহমান, মৌচাক সাহিত্য পরিষদের কোষাধক্ষ মোঃ আব্দুল মজিদ, সাহিত্য সম্পাদক বেদুঈন মোস্তফা, সহ সাহিত্য সম্পাদক মো. রফিকুল বারী,সহ সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা শাহানা জামান, সহ মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা গুলশানারা,কার্যনির্বাহী সদস্য মনিরুজ্জামান মুন্না, জাহাঙ্গীর হোসেন, সদস্য আলমগীর আলম, শাম্মী আক্তার রিতা, শফিউল আলম।উক্ত সাধারন সভায় মৌচাক সাহিত্য পরিষদের মূখপত্র, মৌচাক পত্রিকা প্রকাশনা, সাহিত্য সম্মেলন এবং গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ উপলক্ষে কবি সাহিত্যিকদের কাছে লেখার আহ্বান এবং আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্পাদক বরাবর লেখা পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়। -

বিনা উদ্ভাবিত জাত সম্প্রসারণ ও শস্যবিন্যাসে অন্তর্ভুক্তিকরণে কর্মশালা
খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলায় বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তিসমূহ সম্প্রসারণ ও বিদ্যমান শস্যবিন্যাসে অন্তর্ভুক্তিকরণ শীর্ষক আঞ্চলিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিনা সাতক্ষীরা উপকেন্দ্র ‘বিনার গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পের আওতায় এই কর্মশালার আয়োজন করে।
কর্মশালার প্রথমে পর্বে সাতক্ষীরা ও খুলনার কৃষক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, বীজ ডিলার, এনজিও, বিনা, বারি, ব্রি, বিএডিসি ও বিশ^বিদ্যালয়সহ অধিক্ষেত্রের ১০০ জন এবং দ্বিতীয় পর্বে নড়াইল ও বাগেরহাটের ১০০ জন অংশ নেন।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিনার উদ্ভিদ দেহতত্ত্ব বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ বাবুল আকতার।
এতে তিনি খুলনা অঞ্চলে জলাবদ্ধতা, লবণাক্ততা, জমি দেরিতে ফসল চাষের উপযোগী হওয়া, সেচ সংকট, উপযোগী জাতের সংখ্যা কম হওয়া ও মাটি ব্যবস্থাপনাসহ নানা সমস্যার কথা উল্লেখ করে ফসলের জাত নির্ধারণ, চাষাবাদ, ফসল উৎপাদন, বীজ সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের নানা কৌশল তুলে ধরেন।
কর্মশালায় উল্লিখিত প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে ফসল উৎপাদনের জন্য বোরো মৌসুমে বিনাধান ১০, বিনাধান ২৪ ও বিনাধান ২৫, আমন মৌসুমে বিনা ২৩, উঁচু জমির জন্য বিনা ১৭ ও জিঙ্ক ও আয়রন সমৃদ্ধ বিনা ২০, আউশ মৌসুমের জন্য বিনা ১৯, রবি মৌসুমের জন্য বিনা সরিষা ৪, বিনা সরিষা ৯ ও বিনা সরিষা ১১, বিনা খেসারী ১, বিনা মুসর ডাল ৮, বিনা চিনা বাদাম ৪ ও ৮, বিনা টমেটো ১০, বিনা হলুদ ১, বিনা লেবু ১ ইত্যাদি জাতের ফসল চাষের পরামর্শ দেওয়া হয়।
কর্মশালায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, খুলনা অঞ্চল লবণাক্ততা প্রবণ। বিনা প্রতিনিয়ত গবেষণার মাধ্যমে এই প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে নানা জাত উদ্ভাবন করছে। এবং এর মধ্যদিয়েই খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন, ক্ষুধা মুুক্তি ও পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব। এজন্য কৃষক ও সংশ্লিষ্ট অধিক্ষেত্রে কর্মরতদের সমন্বিত প্রচেষ্টা খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিনার পরিচালক (গবেষণা) ড. মোঃ ইকরাম-উল-হক, প্রকল্প পরিচালক ড. মোঃ মাহবুবুল আলম তরফদার, উপ-প্রকল্প পরিচালক ড. আশিকুর রহমান ও বিনা সাতক্ষীরা উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম।
-

সাতক্ষীরায় ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
সাতক্ষীরার বিনেরপোতা এলাকায় মাটিবহনকারী ট্রাকের চাপায় মোটরসাইকেলের চালকসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। সাতক্ষীরা-খুলনা বিনেরপোতা মেঘনা মোড়ে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানার কীর্তিপুর গ্রামের আকবর গাজীর ছেলে ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের চালক আরিজুল গাজী (২৮), যাত্রী সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জেঠুয়া গ্রামের সামছুর রহমান ফকিরের ছেলে আসাদুল ইসলাম ফকির (৫৫) ও একই উপজেলার সুজন সাহা গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে আব্দুস সেলিম (৩৫)।
পুলিশ জানায়, আজিজুর রহমান কয়েক বছর যাবৎ মাধবকাটি গ্রামে তাঁর শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন। তিনি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বৃহষ্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তিনি তালা উপাজেলার আসাদুল ফকির ও আব্দুস সেলিমকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মোড় থেকে যাত্রী হিসেবে নিয়ে মোটরসাইকেলে চালিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে সকাল ৬টার দিকে বিনেরপোতায় মেঘনা মোড়ে সাতক্ষীরাগামী একটি মাটিবহনকারী ট্রাক আজিজুরের মোটরসাইকেলে সামনে থেকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই চালকসহ তিনজনের মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ যৌথভাবে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের পাঠিয়েছে।
-

বেহাল অবস্থায় সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়ক
প্রায় দীর্ঘ দুই যুগ ধরে প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরা থেকে শ্যামনগর পর্যন্ত ৬২.৩২ কিলোমিটার সড়ক। দীর্ঘ এই সড়কের অধিকাংশ স্থানে পিচ উঠে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। পরিণত হয়েছে মরণ ফাঁদে। প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক ছোট বড় দুর্ঘটনা। ফলে চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছেন জেলার চার উপজেলার মানুষ। একইসাথে বেড়েছে পণ্য পরিবহন ব্যয়।
সড়ক বিভাগ বলছে, ৮২২ কেটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটি সংস্কারে টেন্ডার আহ্বান করা হলেও ঠিকাদার নির্বাচন না হওয়ায় কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।
সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলার মধ্যে শ্যামনগর, কালিগঞ্জ, দেবহাটা ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মানুষ সরাসরি সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। এছাড়া আশাশুনি উপজেলার একাংশের মানুষের যাতায়াতের রাস্তা এটি। সাতক্ষীরার এই সড়ক ধরেই জেলা শহরসহ রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করেন এই পাঁচ উপজেলার মানুষ। বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন সুন্দরবনে ভ্রমণের জন্য যেতে হয় এই সড়ক দিয়েই। অথচ গুরুত্বপুর্ণ এই সড়কটি গত প্রায় দুই যুগ ধরে সংস্কার করা হয়নি। মাঝে মাঝে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে পুডিং ও ইট ফেলে দায় সারছে সড়ক বিভাগ।
স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে সড়কটির অবস্থা এতোটাই খারাপ যে তা দিয়ে চলাচল করলে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেইসঙ্গে ধীরে ধীরে স্থবির হয়ে পড়ছে পণ্য পরিবহন। সাতক্ষীরা জেলা ব্র্যান্ডিংয়ের শ্লোগান ‘সাতক্ষীরার আকর্ষণ, সড়কপথে সুন্দরবন’। কিন্তু সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়কের বেহাল দশার কারণে জেলা ব্র্যান্ডিংয়ের এ শ্লোগান ভুলতে বসেছেন মানুষ। কারণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক হওয়ায় সাতক্ষীরা রেঞ্জের সুন্দরবনে আসতে উৎসাহ হারাচ্ছেন পর্যটকরা। এতে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটনের উপর নির্ভরশীল উপকীলীয় এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকায়। একইসঙ্গে ব্যহত সীমান্তের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিজিবি সদস্যদের চলাচল ও রসদ সরবরাহে।
এ প্রসঙ্গে শ্যামনগরের সাবেক প্রকৌশলী শেখ আফজাল হোসেন বলেন, সাতক্ষীরাই বাংলাদেশের একমাত্র জেলা যেখানে সড়কপথে সুন্দরবন উপভোগ করা সম্ভব। কিন্তু সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়কের যে নাজুক ও জরাজীর্ণ অবস্থা তাতে এখানে আর পর্যটকরা আসতে চান না।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা শহরে আসতে সময় লাগে সাড়ে চার ঘণ্টা থেকে পাঁচ ঘণ্টা। আর সাতক্ষীরা থেকে শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ আসতে সময় লাগে চার ঘণ্টা। তারপর বাসে বা অন্য কোন পরিবহনে আসতে গেলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এছাড়া শ্যামনগরের কোন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরায় নিতে তার জীবন প্রায় শেষ হয়ে যায়। অনেক রোগী পথেই মারা যায়। তিনি সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান।
কালিগঞ্জের নবিননগর গ্রামের গৃহবধূ জাহানারা খাতুন বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে ডাক্তার দেখাতে প্রায় সাতক্ষীরা শহরে যেতে হয়। কিন্তু এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়তে হয়। একবার সাতক্ষীরায় গেলে বাড়ি ফিরে এসে ২/৩ দিন বিশ্রামে থাকতে হয়।
দেবহাটা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী আলফেরদৌস আলফা বলেন, বর্তমানে সড়কটির বিভিন্ন অংশে পিচ উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। অল্প বৃষ্টিতে গর্তগুলো মরণ ফাঁদে পরিণত হয়। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এই সড়কে চলাচলকারীরা।
তিনি আরও বলেন, সাতক্ষীরায় প্রচুর মাছ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে কালিগঞ্জ ও শ্যামনগরে মাছের সাথে রয়েছে কাঁকড়ার ঘের। এসব পণ্য জেলার বাইরে পাঠাতে বা কোনো কিছু বাইরের জেলা থেকে আনতে চাইলে ট্রাকচালকরা এই সড়কের কথা শুনলে আসতে রাজি হয় না। ফলে বাড়তি ভাড়া দিয়ে যানবাহন ভাড়া নিতে হয়। এতে করে ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহন ব্যয় অনেক বেড়েছে।
তবে সাতক্ষীরা সড়ক বিভাগ বলছে, সড়কটি উন্নয়নে বিগত সরকারের সময় সাতক্ষীরা-সখিপুর এবং কালিগঞ্জ-শ্যামনগর-ভেটখালী মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়/ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে মোট ৬ টি প্যাকেজে ৬২ দশমিক ৩২৫ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়নে ৮২২ কোটি ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর একনেকে অনুমোদন হওয়ার পর ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল দরপত্র আহবান করা হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ১ আগষ্ট ২০২৩ থেকে ৩০ জুন ২০২৬ সাল পর্যন্ত। দরপত্র গ্রহণের পর ঠিকাদার নির্বাচনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ঠিকাদার নির্বাচন করা হয়নি। যে কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।
সড়কটি সর্বশেষ সংস্কার করা হয় ১৯৯৮ সালে। এরপর ২০০০ সালে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান গুলো মেরামত করা হয়েছিল। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি চলাচল উপযোগী রাখতে সেসময় কিছু কিছু স্থানে হেরিংবন্ড করা হয়। এছাড়া মাঝে মাঝে সওজ নিজ উদ্যোগে কিছু অংশ পুডিং করে মেরামত করে রাখার চেষ্টা অব্যহত রেখেছে।
সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার পারভেজ বলেন, সড়কটির ছোটখাটো মেরামতের জন্য ২০০০ সালে ১৮ কোটি ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। পরবর্তীতে সাতক্ষীরা থেকে কালিগঞ্জ পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার চারলেন ও কালিগঞ্জ থেকে ভেটখালী পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার ২৪ ফুট প্রস্থ রেখে ২০২৩ সালে একটি প্রকল্পের খসড় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ৮২২ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হয় ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল।
তিনি আরও বলেন, দরপত্র অনুমোদন করে সিএস (কনট্রাক্টর সিলেকশন) এর জন্য গত জুলাই মাসে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু এখনো সিএস অনুমোদন হয়ে আসেনি। গত চার মাস মন্ত্রণালয়ে এ কাজের দরপত্রগুলো অনুমোদনের জন্য আটকে রয়েছে। দ্রুত যদি অনুমোদন না হয় আর ঠিকাদার না আসে তাহলে আমাদের পক্ষে এই মুহুর্তে সড়কটি মেরামত করা সম্ভব হবে না।
-

সাতক্ষীরায় থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ২
সাতক্ষীরায় যৌথ বাহিনীর সদস্যরা এক অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) ভোরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুচপুকুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সাতক্ষীরা সেনা ক্যাম্প থেকে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাড়ি ইউনিয়নের কুচপুকুর গ্রামের শাজাহান আলীর ছেলে মুকুল হোসেন ও একই এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম।
সাতক্ষীরা সেনা ক্যাম্পের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল হক স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভোরে শহরের অদূরে কুচপুকুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে শাজাহান আলীর ছেলে অস্ত্র ব্যবসায়ী মুকুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী একই এলাকায় নজরুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগাজিন, তিনটি পাসপোর্ট, এক লাখ ইরাকি দিনার ও দুই লাখ দুই হাজার ৪৫০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া তার কাছ থেকে একটি আন্তর্জাতিক মানের ড্রাইভিং লাইসেন্সও জব্দ করা হয়েছে।
দুই অস্ত্র ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় ভাঙচুর, লুটপাট, ডাকাতি, ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীমুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি সদর থানায় জমা রাখা একজন পাবলিকের অস্ত্র। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে।
-

নেপাল ও ভুটানকে মোংলা বন্দর ব্যবহারের আহ্বান জানালেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা
প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল ও ভুটানকে মোংলা বন্দর ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। বুধবার (০৬ নভেম্বর) সকালে মোংলা বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে সাংবাদিকদের দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মোংলা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর। ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় এ সমুদ্র বন্দরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজধানী ঢাকা থেকে বন্দরটির সড়ক পথে দুরত্ব মাত্র ২১০ কিলোমিটার। এছাড়াও বন্দরটির সাথে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য প্রান্তের সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি রেল ও নৌযোগাযোগ রয়েছে। এজন্য মোংলা বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নত করা হবে। বন্দরের সক্ষমতা কয়েকগুণ বৃদ্ধি করা হবে। এতে মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী যেমন বাড়বে, তেমনি চট্টগ্রাম বন্দরের উপর চাপ কমবে বলে দাবি করেন এই উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনীতিতেও মোংলা বন্দরটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও, বন্দরের প্রচার-প্রচারণা তেমন নাই। বন্দর বলতে মানুষ চট্টগ্রামকেই বোঝে, এই চিন্তা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে।এজন্য আমরা বিভিন্ন রাষ্ট্রদূত ও বিদেশী এ্যাম্বাসি অফিসকে প্রচার প্রচারণা চালানোর অনুরোধ করেছি। সাথে সাথে সমুদ্রগামী সকল জাহাজ ও সমুদ্রকেন্দ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করা প্রতিষ্ঠানকেও মোংলা বন্দরের প্রচার-প্রচারণা চালাতে বলা হয়েছে।
এর আগে সকালে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে মোংলা বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে সভা করেন উপদেষ্টা। পরে মোংলা পশুর চ্যানেলের বিভিন্ন এলাকা, ভেসেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (ভিটিএমআইএস) ও বজ্র ব্যবস্থাপনা এলাকা পরিদর্শন, ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট এরিয়া ও স্থায়ী বন্দর জেটি এলাকা পরিদর্শন করেন। মোংলা বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি। এছাড়া বন্দরের উন্নয়নে চলমান প্রকল্পসহ নতুন নতুন প্রয়োজনীয় নানা প্রকল্প গ্রহনের আশ্বাস দেন এই উপদেষ্টা।
-

হোয়াইট হাউসে ফিরলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৮ বছরের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে এক মেয়াদের বিরতিতে দ্বিতীয় বারের মতো দোর্দণ্ড প্রতাপে হোয়াইট হাউসের মসনদে ফিরলেন রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনের আগের জনমত জরিপের সব হিসেব-নিকাশ উল্টে দিয়ে মঙ্গলবার মার্কিনিরা আরেকবার বেছে নিলেন সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে। এর মধ্য দিয়ে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর কমালা হ্যারিসের উত্থানের আশায় গুঁড়েবালি দেখল বিশ্ব; আর শীর্ষ ক্ষমতাধর দেশটিতে নতুন ইতিহাস গড়লেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নির্বাচনের আগে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কথার লড়াই আর বিভাজনের রাজনীতিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। শুরু থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও প্রতিষ্ঠান এই দুই প্রার্থীর মাঝে যে তুমুল হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে যাচ্ছে সেই আভাস দিয়ে আসছিল মতামত জরিপে। যদিও এসব জরিপের বেশিরভাগেই নীল শিবিরের প্রার্থী কমালাকেই এগিয়ে রাখতে দেখা যায়। কিন্তু মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত দেশটির ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘‘আমেরিকা প্রথম’’ নীতিতে অটল ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই বেছে নিলেন মার্কিন ভোটাররা।
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে প্রকাশিত নির্বাচনী ফল অনুযায়ী, দেশটির নির্বাচনে মোট ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য ২৭০টির প্রয়োজন। আর ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশ সময় বুধবার পৌন ৪টার দিকেই এই ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছে যান। দেশটির নির্বাচনে ফল নির্ধারণী ব্যাটেলগ্রাউন্ড রাজ্য খ্যাত জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা, ফ্লোরিডা, মেইন, পেনসিলভানিয়ায় লাল শিবিরের জয়ে হোয়াইট হাউসের মসনদ নিশ্চিত হয় ট্রাম্পের।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, চার বছর আগের ভোটে হেরে হোয়াইট ছাড়ার পর আবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই অসাধারণ প্রত্যাবর্তনে; নতুন আমেরিকান নেতৃত্বের সূচনা হতে যাচ্ছে। ট্রাম্পের নেতৃত্বে দেশটির গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান ও পররাষ্ট্র সম্পর্ক পরীক্ষার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বৈশ্বিক গবেষণা সংস্থা এডিসন রিসার্চ বলছে, ৭৮ বছর বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০টিরও বেশি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেয়ে বুধবার হোয়াইট হাউস পুনরুদ্ধার করেছেন; যা দেশটিতে চলমান মেরুকরণের রাজনীতিকে আরও গভীর করে তুলেছে।
বুধবার স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ৬ টার দিকে মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণী দোদুল্যমান রাজ্য-খ্যাত উইসকনসিনের ফল প্রকাশের সাথে সাথেই ট্রাম্পের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। উইসকনসিনের ১০টি ইলেক্টোরাল ভোটের মাধ্যমে ম্যাজিক ফিগার ২৭০ পেরিয়ে যান ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মার্কিন বার্তা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ২৭৯টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট দলীয় কমালা হ্যারিস পেয়েছেন ২২৩টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট। তবে এখনও কয়েকটি রাজ্যে আংশিক ভোট গণনা বাকি রয়েছে।
শুধু ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটই বেশি পাননি ডোনাল্ড ট্রাম্প, বরং পপুলার ভোটও প্রায় ৫০ লাখ বেশি পুড়েছেন নিজের ঝুলিতে। এর আগে, ফ্লোরিডার পাম বিচ কাউন্টি কনভেনশন সেন্টারে লাল ঢেউয়ের গর্জনে মেতে ওঠা সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমেরিকা আমাদের এক অভূতপূর্ব ও শক্তিশালী ম্যান্ডেট দিয়েছে।’’
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজয় মেনে না নেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টায় পরের বছরের ৬ জানুয়ারি মার্কিন ক্যাপিটল ভবনে তাণ্ডব চালান ট্রাম্পের কর্মী-সমর্থকরা। নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে চালানো ওই সহিংসতার পর ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের শেষ দেখেছিলেন অনেকে। কিন্তু সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে নিজ দলের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্বাচনী দৌড় থেকে দূরে সরিয়ে দেন তিনি।
এরপর মার্কিন অর্থনীতিতে জেঁকে বসা মুদ্রাস্ফীতি আর দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন দশায় ভোটারদের উদ্বেগকে পুঁজি করে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারণা চালান তিনি। ‘‘আমেরিকা ফার্স্ট’’ নীতির কথা জানিয়ে দেশ থেকে অবৈধ অভিবাসনের অবসানের রূপকল্প তুলে ধরে ভোটারদের মন জয় করেন তিনি।
বিপরীতে ভারতীয় বংশোদ্ভূত অভিবাসী পরিবারের সন্তান কমালা হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্রকে অভিবাসীদের জন্য স্বর্গরাজ্যে পরিণত করে তুলবেন বলে ভোটারদের কাছে কমালার বিষোদগার করেন। শেষ পর্যন্ত মার্কিন রাজনীতির বিদ্বেষ আর বিভাজনের রূপরেখায় কমালা হ্যারিসকে হারিয়ে দিলেন রিপাবলিকান ট্রাম্প।
ভোটের পর বুধবার হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সমর্থকদের নিয়ে ইলেকশন নাইট পার্টিতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল কমালা হ্যারিসের। কিন্তু নির্বাচনের ফলে বিপর্যয়ের আভাস মেলায় সেই অনুষ্ঠান স্থলে যাননি তিনি। সেখানে পড়ে থাকতে দেখা গেছে খালি চেয়ার আর জনশূন্য মঞ্চ। তবে হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচার শিবিরের কো-চেয়ারম্যান সেড্রিক রিচমন্ড মধ্যরাতের পর জনতার উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বুধবার দিনের কোনও এক সময় জনসম্মুখে কথা বলবেন কমালা হ্যারিস।
-

সংস্কার কাজের জন্য তহবিলের কোনো অভাব হবে না
সংস্কার কাজের জন্য তহবিলের কোনো অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্ভাব্য সব উপায়ে সমর্থন করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা পামপোলিনি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি সদস্য রাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন করে বলে পাওলা পামপোলিনি প্রধান উপদেষ্টাকে জানান। তিনি বলেন, ‘বার্তা খুব স্পষ্ট। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আপনার সঙ্গে আছে। আমরা আপনার সংস্কারকে সমর্থন করতে চাই।’
পাম্পালোনি জানান, সংস্কার কাজের জন্য তহবিলের কোনো অভাব হবে না। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তাও দেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ইউরোপীয় ইউনিয়নের আন্তরিকতার জন্য ধন্যবাদ জানান। গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ফাঁকে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েনের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা স্মরণ করেন। সেসময় উরসুলা ভন ডের লিয়েন বাংলাদেশকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষেত্রে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে প্রধান উপদেষ্টা জানান।
পাম্পালোনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে অন্যান্য অনেক দেশকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছে।
‘আমরা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আপনার ভাষণ মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এখন আমাদের এমন একজন আছে যার সঙ্গে বাংলাদেশে কাজ করা যেতে পারে। আপনার একা বোধ করার দরকার নেই। আমরা সত্যিই সমর্থন করতে আগ্রহী,’ পাম্পালোনি বলেন।
ইইউ কর্মকর্তারা বাংলাদেশকে আরও বেশি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরির আহ্বান জানান, যা আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং বাণিজ্য বাড়াবে।
রাষ্ট্রদূত মিলার প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের সঙ্গে আরও ব্যবসার সুযোগ খুঁজতে জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সফরের পরিকল্পনা করছেন।
প্রধান উপদেষ্টা ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের শ্রম অধিকার সংস্কারে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে আশ্বস্ত করেন, যা আরও বিনিয়োগ আনার পথ প্রশস্ত করবে।
‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে আমরা আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখি… কোনো লুকোচুরি থাকবে না। আমরা এই গেমটি আর খেলতে চাই না,’ ইইউ কর্মকর্তাদের বলেন তিনি।
ইইউ কর্মকর্তারা বিভিন্ন খাতে সংস্কারের জন্য অধ্যাপক ইউনূসের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন।
‘এই প্রথমবারের মতো আমরা এমন কিছু রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি দেখেছি যা আমরা সমর্থন করি। তাই, আমরা আপনার ওপর নির্ভর করছি,’ পাম্পালোনি বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা আঞ্চলিক বিদ্যুৎ সংযোগ বাড়াতে নেপাল ও ভারতের সঙ্গে কাজ করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অনুরোধ করেন।
তিনি জানান, নেপালের ব্যাপক জলবিদ্যুৎ রয়েছে, যা নষ্ট হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় নেপাল, বাংলাদেশ এবং ভারত অন্যান্যরাও এর থেকে উপকৃত হতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বাংলাদেশের তরুণদের দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান এবং দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল দলে বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের সাম্প্রতিক অর্জন তুলে ধরেন তিনি।
‘তারা এসেছে এবং জয় করেছে, শুধু একবার নয়, দুবার,’ প্রধান উপদেষ্টা বলেন। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে অনুপ্রাণিত করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে একটি ইউরোপীয় ফুটবল দল পাঠানোর অনুরোধও করেন তিনি।
-

পাইকগাছায় পাল্টা সংবাদ সম্মেলন ও ৭২ ঘন্টার মধ্যে সংবাদ সম্মেলন প্রত্যাহারের দাবি বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের
পাইকগাছায় পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে। গত ৩১অক্টবর খুলনা প্রেসক্লাবে পাইকগাছার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের খাটো করতে যে সংবাদ সম্মেলন করেছে, তার প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে পাইকগাছা প্রেসক্লাবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র আব্দুল কাদের নয়ন ছাত্র আন্দোলনের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনটি করেছেন।তিনি লিখিত সংবাদ সম্মেলনে জানান, খুলনা প্রেসক্লবে ৩১ অক্টবর উপজেলার লতা ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক আবু মুছা সরদার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কলংকিত করতে অসত্য ও ভিত্তিহীন যে সংবাদ সম্মেলনটি করেছেন, তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করছি। তিনি আরও বলেন, দেশের ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। সরকার হাজার হাজার মেধাবী ছাত্র ও জনতাকে গুলি করে ও পিটিয়ে হত্যা করেন। এ আন্দোলনে সারা দেশের ন্যায় পাইকগাছায় ছাত্র-জনতা ও সুশিল সমাজ, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহন করেন। এক পর্যায়ে এক দফা দাবিতে ৪ নভেম্বর পাইকগাছায় ছাত্রদের মিছিলে সরকারের সন্ত্রাসী বাহিনী আক্রমন করলে একাধিক শিক্ষার্থী জখম হয়। যেহেতু, আমরা ছাত্রলীগ, যুবলীগ বাহিনীকে ঠিকমত চিনতাম না। সে কারনে ১০ ইউপি ও পৌরসভায় বেষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্ব-স্ব ইউনিটের তালিকা মতে ২১ সেপ্টেম্বর থানায় মামলা করা হয়। যার বাদি হয় শিক্ষার্থী ঈশিতা এনাম ঋতু। পরে জানতে পারি এ মামলায় লতা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আবু মুছা সরদারের ছেলে আবু ইসা সরদারকে আসামী শ্রেনীভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু পু্র্বেই আমরা বলেছিলাম তদন্তে কেউ দোষি না হলে তাকে যেন আসামী থেকে বাদ দেয়া হবে। এসময় উপস্থিত ছাত্র নয়ন আরও বলেন, পাইকগাছা উপজেলা বিএনপি-র ডাঃ আব্দুল মজিদ-তুষার কান্তি মন্ডল ও আসলাম পারভেজ-এসএম এনামূল হক দুটি গ্রুপিং থাকায় লতা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক আবু মুছা ডাঃ মজিদ গ্রুপের। সে মামলার কারনে ঈর্ষান্তিত হয়ে মামলার বাদী ঈশিতা এনাম ঋতু ও তার পিতা এসএম এনামূল হককে জড়িয়ে অসত্য মনগড়া অভিযোগ এনে সংবাদিক সম্মেলন করেছেন। এসময় ৭২ ঘন্টার মধ্যে আবু মুছার সংবাদ সম্মেলনটি প্রত্যাহারের দাবি করা হয়। তিনি আরও জানান, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় হয়েছে। এখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সুনাম ক্ষুন্ন করতে আমাদের কেউ ব্যবহারের চেষ্টা না করার আহ্বান জানান। -

সাতক্ষীরা সদরে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন
২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় রবি মৌসুমে গম, সরিষা, সূর্যমুখী, পেঁয়াজ ও খেসারি ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।বুধবার (০৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে সদর উপজেলা হলরুমে সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. মনির হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবং বীজ ও সার বিতরণ করেন সদর ।প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোয়াইব আহমাদ বলেন, বাংলাদেশ সরকার কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষিখাতে সব সময় প্রণোদনা সহায়তা দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ, আর কৃষকরা হলো দেশের প্রাণ। সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার রুম্মান শাহরিয়া’ সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আফজাল হোসেন, কৃষক মেহেদী হাসান প্রমুখ।সদর উপজেলার ৩ হাজার ৫০০ জন কৃষকের মাঝে সরিষা বীজ ও সার বিতরণ করা হবে।এসময় সদর উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কৃষি অফিসার, সুবিধাভোগী কৃষক ও কৃষাণীরা উপস্থিত ছিলেন। -

এমআরপির চেয়ে বেশি দামে সিগারেট বিক্রি
তামাক কোম্পানি আইন ভঙ্গ করছে এবং রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে
বাংলাদেশে সবধরনের পণ্য সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে বিক্রি হলেও তামাকজাত দ্রব্য বিশেষত
সিগারেট সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। দশকের পর দশক ধরে এভাবে
অবৈধভাবে ব্যবসা করে তামাক কোম্পানিগুলো এবং ভোক্তার অধিকার হরণ করে আসছে।
একইসঙ্গে ব্যবসায়িক নীতি না মেনে অবৈধভাবে ব্যবসার মাধ্যমে প্রতিবছর হাজার হাজার
কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদন, এনবিআরের তদন্ত
প্রতিবেদন থেকে প্রমাণ হয়েছে বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো নিজেদের ইচ্ছে মতো
প্যাকেটে মুদ্রিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সিগারেট বিক্রি করছে। তামাক কোম্পনির
প্রতিনিধিরা খুচরা বিক্রেতাদের কোনো ধরনের ট্রেডমার্জিন না দিয়ে সিগারেট
বাজারজাত করে এবং ভোক্তাদের কাছে বাড়তি দামে বিক্রি করতে খুচরা বিক্রেতাদের প্ররোচিত
করে। বাড়তি খুচরা বিক্রয়মূল্যটিও তামাক কোম্পনির প্রতিনিধিরাই নির্ধারণ করে দেয়।
এভাবে সর্বোচ্চ খচরা মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সিগারেট বিক্রি করে তারা ভোক্তা অধিকার
সংরক্ষণ আইন ভঙ্গ করছে, একই সাথে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে।
বিভিন্ন গবেষণা ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে সিগারেট
বিক্রির পিছনে সব সবচেয়ে বড় বাধা তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ। চলতি বছরের বাজেটে
সিগারেটের চারটি স্তরে মূল্য বৃদ্ধি ও করহার বৃদ্ধি করা হয়েছে। দেশে সিহারেট সবচেয়ে বেশি
বিক্রি হয় খুচরা সলাকায়। এজন্য সরকার সিগারেটের মূল্য এমনভাবে নির্ধারণ করেছে যাতে ১
শলাকা সিগারেটের মূল্যে খুচরা পয়সা না থাকে। যা অত্যন্ত ইতিবাচক ছিলো। কিন্তু বরাবরের
মতো এবারও তামাক কোম্পানিগুলো ১ শলাকা সিগারেটের মূল্যে ভাঙতি পয়সা রেখে মূল্য
নির্ধারণ করেছে ভাঙতি পয়সার অংশটুকু বাড়িয়ে নিয়ে পূর্ণ টাকায় বিক্রি করছে। এর
মাধ্যমে সরকারের নীতিকে আরও একবার লঙ্ঘন করে রাজস্ব ফাঁকির পাশাপাশি ভোক্তাদের অধিকার হরণ
করা হচ্ছে।
জাতীয় বাজেটে সিগারেটের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে এবং
সিগারেটের মূল্য নির্ধারণ করে জাতীয় রাজস্ব বোড সিগারেটের প্যাকেটে সর্বোচ্চ খুচরা
মূল্য মুদ্রণ এবং সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের অধিক মূল্যে কোন পর্যায়েই সিগারেট বিক্র না করা
নিশ্চিত করতে আদেশ জারি করেছে। তার পরও তামাক কোম্পানির ভোক্তা অধিকার বিরোধি
কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরোর গবেষণায় উঠে এসেছে কোম্পানিগুলো
সিগারেটের প্যাকেটে একটি মূল্য (এসআরপি) লেখে, কিন্তু খুচরা বিক্রির সময় ৫% থেকে
২০% পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি করে। সিগারেটে খুচরা বিক্রয় মূল্যের ওপর কর পরিশোধিত হয়।
প্যাকেটে লেখা এমআরপি’র ওপর কর পরিশোধ করে ভোক্তা পর্যায়ে বেশি দামে বিক্রি করলে বাড়তি
দামের ওপর সরকার কোন রাজস্ব পায় না, এর পুরোটাই তামাক কোম্পানির মুনাফা হিসাবে জমা
হয়। এভাবে তারা বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে।
আবার জাতীয় বাজেটে সরকার যখন সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি করে তখন তারা আগের
অর্থবছরেরমূল্য লিখিত (এবং আগের অর্থবছরের মূল্যে কর পরিশোধিত) সিগারেট নতুন
বর্ধিত মূল্যে বিক্রি করে। এভাবে তারা আরো একবার ভোক্তা অধিকার হরণ করে এবং রাজস্ব ফাঁকি
দেয়।
তামাক কোম্পানিগুলো দেশের আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনা করবে বলেই প্রত্যাশা করি। কিন্তু
দশকের পর দশক এভাবে আইন ভেঙ্গে অবৈধভাবে ব্যবসা করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি এবং ভোক্তাদেরঅধিকার লঙ্ঘন করছে। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে এসব তামাক কোম্পানি বিগত দিনে ফাঁকি
দেয়া অর্থ ফেরত নেয়ার পাশাপাশি দ্রুত আইনের বাস্তবায়ন করা জরুরি। এ বিষয়ে অর্থ
মন্ত্রণালয়, এনবিআর ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সক্রিয়
ভূমিকা রাখতে হবে এবং পারস্পরিক সমন্বয় বাড়াতে জবে বলে আমরা মনে করি। -

পানি অভিযোজন কৌশল পরিকল্পনা তৈরির লক্ষ্যে সাতক্ষীরায় কর্মশালা
দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে ভৌগলিকভাবে ভিন্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে স্থানীয় নেতৃত্বাধীন পানি অভিযোজন কৌশল পরিকল্পনা তৈরি করার লক্ষ্যে সাতক্ষীরায় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৪ নভেম্বর) সুপেয় পানির সংকট ও পানি সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সোসাইটি অফ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এডুকেশন ফর স্মল হাউসহোল্ডস এবং পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক (প্রাণ) এই কর্মশালার আয়োজন করে।
স্থানীয় নেতৃত্বাধীন পানি অভিযোজন কৌশল পরিকল্পনার দ্বিতীয় কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর আব্দুল হামিদ, জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব এড. আবুল কালাম আজাদ, প্রাণ সায়ের খাল সুরক্ষা কমিটির সদস্য সচিব শরিফুল্লাহ কায়সার সুমন, প্রাণের প্রতিনিধি জাহিদ ইমরান, একশনএইড প্রতিনিধি ওবায়দুল্লাহ, পবিত্র মোহন দাশ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আগত অংশগ্রহণকারীরা কর্মশালায় স্থানীয় পর্যায়ে পানির সংকট সমাধানে ঐতিহ্যগত ও প্রচলিত পন্থার সাথে আধুনিক বিজ্ঞান ভিত্তিক উপায় ব্যবহার করে সুপেয় ও নিরাপদ পানি সংকটের সমাধানে কি ধরনের কৌশল গ্রহণ করা যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। একই সাথে প্রস্তাবনা আকারে দলীয় কাজের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন। যা জাতীয় পানি নীতিমালার আলোকে উপকুলের মানুষের সুপেয় এবং ব্যবহারিক পানি নিশ্চিতে সরকারী নীতিমালাকে প্রভাবিত করবে এবং একটি উপকুলীয় পানি নীতিমালা হিসাবে গৃহীত হবে।
আয়োজকরা জানান, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের সহযোগিতায়, উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকার হিসাবে বিশুদ্ধ পানির দাবিতে ওয়াটারমুভ ক্যাম্পেইন বা পানি অধিকার প্রচারাভিযানের সূচনা করেছে পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক (প্রাণ), যার লক্ষ্য বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের সুপেয় পানির অধিকারের জন্য কাজ করা এবং সবুজ রূপান্তরে তরুণদের উৎসাহিত করে এই প্রচারণায় সম্পৃক্ত করা।
এই প্রচারাভিযানের অন্যতম লক্ষ্য হল উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জন্য পানির অধিকারের দাবিতে বিভিন্ন অংশীদার ও জনপদের জোটকে একত্রিত করা, যাতে উপকূলীয় অঞ্চলে এবং বাংলাদেশের অন্যান্য অংশে বসবাসকারী প্রতিটি ব্যক্তির নিরাপদ পানির এই মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। ওয়াটারমুভ ক্যাম্পেইন চলাকালীন, প্রাণ এবং এর অংশীদার সংস্থাসমূহ বাংলাদেশের উপকূলে অবস্থিত বিভিন্ন জেলাতে স্থানীয়-নেতৃত্বাধীন পানি অভিযোজন কৌশল পরিকল্পনার খসড়া তৈরিতে কর্মশালা আয়োজন করবে। অঞ্চল ভিত্তিক প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে এই পরিকল্পনাটি এলাকা-নির্দিষ্ট সঙ্কট পরিস্থিতিকে নথিভুক্ত করবে, সংকট নিরসনে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা, ঐতিহ্যগত জ্ঞান ও আধুনিক বিজ্ঞানের সম্মিলনে কৌশল খুজে বের করবে এবং নীতিনির্ধারকদের মধ্যে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে আরোও কার্যকর সমাধানের কৌশল সমূহ প্রস্তাব করবে।