1. faysal.ce@gmail.com : dakshinermashal :
  2. abuhasan670934@gmail.com : Hasan :
  3. sakalctc.bd@gmail.com : Nityananda Sarkar : Nityananda Sarkar
বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৫ অপরাহ্ন
১৪ কার্তিক, ১৪৩১
Latest Posts

মে দিবসের ইতিহাস ও তাৎপর্য

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : শুক্রবার, ১ মে, ২০২০
  • ১৩৩ সংবাদটি পড়া হয়েছে

সুদীপ্ত রশিদ

দুনিয়ার মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের আশা আকাঙ্ক্ষার বার্তা নিয়ে আসে মে দিবস। প্রতিবছর মে মাসের ১ তারিখে এই দিবসটি পালন করা হয় যা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবেও পরিচিত।

মে দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের ঊনবিংশ শতাব্দীতে ফিরে তাকাতে হবে। পশ্চিমা বিশ্বে শিল্প বিপ্লব তখন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু অস্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ ও দীর্ঘ কর্মঘণ্টার ফলে প্রতি বছরই অসুস্থ হয়ে পড়ছিল অসংখ্য পুরুষ, নারী ও শিশু শ্রমিক। ১৯৮৪ সালে তৎকালীন দ্য ফেডারেশন অব অর্গানাইজড ট্রেডস অ্যান্ড লেবার ইউনিয়নস (এফওটিএলইউ) কর্মস্থলের অমানবিক পরিস্থিতি দূর করতে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে একটি কনভেনশনের আয়োজন করে।

পরবর্তীতে এফওটিএলইউ নাম বদলে আমেরিকান ফেডারেশন অব লেবারস (এএফএল) নামে পরিচিতি পায়। এফওটিএলইউ কনভেনশনের আয়োজকরা দাবি করেন, ১৮৮৬ সালের ১ মে থেকে সর্বোচ্চ কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টা হিসেবে ধরে যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমিকদের জন্য আইন পাস করতে হবে। ওই একই বছর তৎকালীন সময়ে আমেরিকার সবচেয়ে বড় শ্রমিক সংগঠন- নাইঠস অব লেবার এফওটিএলইউ’র দাবির প্রতি সমর্থন জানায়। দাবির পক্ষে শ্রমিকেরা প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ শুরু করে। ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ১৩ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ৩ লাখেরও বেশি শ্রমিক কাজ প্রত্যাহার করে বের হয়ে যায়। দুই দিনের মধ্যেই তাদের সঙ্গে আরো অনেকে যোগ দেয়। অচিরেই কাজ প্রত্যাহার করা শ্রমিকের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়ায়। ৩ মে’র মধ্যে পুরো দেশজুড়ে শ্রমিক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং সেই বিক্ষোভ ক্রমেই সহিংসতায় রূপ নেয়।

১৮৮৬ সালের ৪ মে শিকাগোর হে-মার্কেট স্কয়ার নামক এক বাণিজ্যিক এলাকায় শ্রমিকগণ মিছিলের উদ্দেশ্যে জড়ো হন। সেসময় অগাস্ট স্পীজ নামে এক নেতা জড়ো হওয়া শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলছিলেন। হঠাৎ দূরে দাঁড়ানো পুলিশ দলের কাছে এক বোমার বিস্ফোরণ ঘটে এবং এতে একজন পুলিশ তৎক্ষণাৎ এবং আরো ছয়জন পরবর্তীতে নিহত হয়। পুলিশ বাহিনী শ্রমিকদের উপর অতর্কিতে হামলা শুরু করে যা রায়ট বা দাঙ্গায় রূপ নেয়। এই রায়টে ১১ জন শ্রমিক শহীদ হন। পুলিশের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করে অগাস্ট স্পীজ সহ মোট আটজনকে প্রহসনমূলকভাবে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং তাদের ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়। তাদের মধ্যে ফাঁসি দেয়ার আগেই কারারুদ্ধ অবস্থায় একজন আত্মহত্যা করেন।

বাকিদের ১৮৮৭ সালের ১১ নভেম্বর উন্মুক্ত স্থানে ফাঁসি দেয়া হয়। শেষ পর্যন্ত এই মিথ্যা বিচারের অপরাধ ধরা পড়ে এবং ১৮৯৩ সালের ২৬ জুন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে ওই বিচার কার্যক্রম মিথ্যা ছিলো। শেষ পর্যন্ত শ্রমিকদের ‘দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ’-এর দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়। আর সেই থেকেই পহেলা মে শ্রমিকদের আত্মত্যাগ আর দাবি আদায়ের মুক্তির দিন হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

১ মে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে। পরবর্তী বছর অর্থাৎ ১৮৯০ সাল থেকে ১ মে বিশ্বব্যাপী পালন হয়ে আসছে ‘মে দিবস’ বা ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ হিসেবে। তবে মে দিবস আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পায় ১৯০৪ সালের ১৪ থেকে ১৮ আগস্টে অনুষ্ঠিত সেকেন্ড ইন্টারন্যাশনাল প্রতিনিধিদের ষষ্ঠ কংগ্রেসে। অ্যামস্টারড্যামে অনুষ্ঠিত এই কংগ্রেসটি দ্য ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট কংগ্রেস হিসেবে পরিচিতি পায়। আর এতে অংশগ্রহণ করে ইউরোপের সকল দেশের সব সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক রাজনৈতিক দল ও শ্রমিক সংগঠনগুলো। সেদিনই আইনের মাধ্যমে শ্রমিকদের জন্য একদিনে সর্বোচ্চ কর্মঘণ্টা আট ঘণ্টা প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানানো হয় এবং পহেলা মে স্বীকৃতি পায় শ্রমিক দিবস হিসেবে।

বর্তমানে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে প্রায় ৮০টি দেশে পহেলা মে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালিত হচ্ছে। এছাড়াও আরো অনেক দেশে এটি বেসরকারিভাবে পালিত হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে শ্রমিক দিবস পালিত হলেও রাষ্ট্রীয় আইনের মাধ্যমে পুরোপুরিভাবে শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি। ২০০৬ সালে শ্রমিকদের অধিকার আদায় এবং স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশে ‘জাতীয় শ্রম আইন’ গৃহীত ও কার্যকর হয়।

কিন্তু আজও এই আইনের সম্পূর্ণ প্রয়োগ দৃশ্যমান নয়। বর্তমানে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশও করোনাভাইরাসের আঘাতে জর্জরিত হলেও শ্রমিক শ্রেণীকে বলির পাঠা হিসেবে ব্যবহার করছে শিল্পকারখানার মালিক পক্ষসমূহ। তারা শ্রমিকদের জীবনের কথা চিন্তা না করে এই লকডাউনের মধ্যেও শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে বাধ্য করছে। শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য যেসকল সংগঠন আছে তারাও শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার নয়। তারাও বিভিন্নভাবে বুর্জোয়া ধনিক শ্রেণীরই স্বার্থ সংরক্ষণে ব্যস্ত।

লেখক: সুদীপ্ত রশিদ, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : সুত্র : বি বার্তা ২৪.নেট

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :
© All rights reserved © 2024
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd