যানবাহন ও মানুষ চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞার পরও থামছে না দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাতক্ষীরায় আসা মানুষের ঢল। প্রতিদিনই করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে সারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাতক্ষীরায় আসছে শত শত মানুষ। গত দুই তিনদিনে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে সাতক্ষীরায় এসেছে শত শত মানুষ। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও কৌশলে ট্রাকের মধ্যে, এ্যাম্বুলেন্সে এবং ছোট খাটো যানবাহনে তারা সাতক্ষীরায় আসছে বলে বিভিন্ন এলাকার মানুষ নিশ্চিত করেছেন। এভাবে সাতক্ষীরায় প্রবেশের খবরে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে গত দুই তিনদিনে দিনে যে সব মানুষ সাতক্ষীরায় এসেছে তাদের অধিকাংশই ইটভাটা শ্রমিক। তাদের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন প্রত্যান্ত অঞ্চলে হওয়ায় বাড়িতে ফিরে তারা ইচ্ছামত প্রকাশ্যে হাটে-বাজারে চলাফেরা করছেন। তাদের সকলকেই কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা থাকলেও সে নিয়ম মানছেন না অধিকাংশই।
বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে গত দুই তিনদিনে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকাসহ বাইরের জেলা থেকে ট্রাক ভর্তি মানুষ সাতক্ষীরাতে প্রবেশ করছে। এদের মধ্যে প্রায় তিন ট্রাক ইটভাটা শ্রমিক দেবহাটাতে প্রবেশের খবর পাওয়া গেছে। প্রতি ট্রাকে উপরে পলিথিন ঢাকা শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় ৩৫ থেকে ৪৫ জন পর্যন্ত মানুষ গাদাগাদি করেই আসছে।
এছাড়া ফিংড়ী ইউনিয়নের এল্লারচর এলাকায় বুধবার রাতে ২০ থেকে ২৫ জন ভাটা শ্রমিকসহ শ্যামনগর, আশাশুনিসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে শত শত মানুষ এভাবেই প্রবেশ করেছেন। অধিকাংশ শ্রমিকদের বাড়ি জেলার শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাইরে থেকে আসা কোন যানবাহনকে সাতক্ষীরায় প্রবেশের ঘোষণা দেওয়া হলের কার্যকরা করা যায়নি। তবে শরিয়তপুর থেকে বাড়িতে ফিওে বাগান কোয়ারেন্টাইনে থাকা কালীগঞ্জ উপজেলার উফাপুর গ্রামের গৌরপদ মন্ডল বলেন, সরকারি ঘোষণা মাথা পেতে নিয়ে তিনি দিন ধরে বাড়ির পাশে ধানখেতে দোচালা বানিয়ে বাগান কোয়ারেন্টাইনে আছেন। অথচ ঢাকা থেকে বুধবার সন্ধ্যার পর ফিরে আসা সাতক্ষীরার এক জনপ্রতিনিধি কিভাবে জনসাধারণের মাঝে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তা তার বোধগম্য হচ্ছে না।
জানতে চাইলে শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন বলেন, শ্যামনগর উপজেলার বহু মানুষ ইটভাটায় কাজ করে। অনেকেই তারা এলাকায় ফিরছেন। এবিষয়ে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সাংসদসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে একটি মিটিং হয়েছে। সেখানে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের প্রাইমারী স্কুলে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, এখবর পেয়ে সাতক্ষীরার প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী অফিসার, চেয়ারম্যানগণকে এধরনের মানুষদের চিহ্নিত করে হোম কোয়ারেনন্টেইন নিশ্চিত করার জন্য বলা হয়েছে।
Leave a Reply