এবার কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ঈদ কাটবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে। সেখানেই পঞ্চমবারের মতো কারাবন্দি অবস্থায় ঈদ করবেন তিনি। এর আগে চারবার কারাগারে ঈদ করেছেন তিনি।
এ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করেছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুব আলম গণমাধ্যমকে বলেন, একজন বন্দির মতো খালেদা জিয়া কারা জেল কোড অনুযায়ী খাবার পাবেন। ঈদের দিন অনুমতি সাপেক্ষে পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।
এদিকে কারা সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন সকালে খালেদা জিয়াকে দেওয়া হবে পায়েস, সেমাই ও মুড়ি। এসবই ঢাকা কেন্দ্রীয় (কেরানীগঞ্জ) কারাগারের কারারক্ষীদের তৈরি। তবে অন্যান্য কয়েদির মতো নয়, তার খাবার তৈরি হবে চিকিৎসকের পরামর্শ ও ডায়েট চার্ট অনুযায়ী।
এ ছাড়া খালেদার দুপুরের মেন্যুতে থাকবে ভাত অথবা পোলাও। তিনি এই দুইটির মধ্যে যেটি খেতে চান সেটি আগে থেকে কারাগারে জানিয়ে দিতে পারবেন। ভাত অথবা পোলাও যাই অর্ডার করুক না কেন এগুলোর সঙ্গে পাবেন ডিম, রুই মাছ, মাংস আর আলুর দম। রাতে থাকছে পোলাও। সঙ্গে গরু অথবা খাসির মাংস, ডিম, মিষ্টান্ন, পান-সুপারি এবং কোমল পানীয়।
এসব মেন্যুর বাইরে খালেদা জিয়া অন্য কোনো খাবার খেতে চাইলে কারা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে পারবেন। তবে সেই আইটেম তাকে দিতে বাধ্য নয় কারা কর্তৃপক্ষ।
এদিকে বিএনপি দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবার ঈদের দিন দলের সিনিয়র নেতারা প্রথমে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করবেন। এরপর কারাবন্দি খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বিএসএমএমইউ যাবেন। সেখান থেকে বনানীতে খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করবেন।
এ ছাড়া ঈদের দিন কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে পারেন তার পরিবারের সদস্যরা। তারেক রহমানের পরিবার, কোকোর স্ত্রী ও মেয়েরা লন্ডনে থাকায় খালেদা জিয়ার ভাই, বোন ও তাদের ছেলে-মেয়েরা কারাগারে দেখা করতে যাবেন।
সূত্র আরো জানায়, ঈদের দিন বিএসএমএমইউ হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি চেয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে ২০০৭ সালের ১৪ অক্টোবর প্রথম রোজার ঈদ জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত সাবজেলে কাটান বিএনপি চেয়ারপার্সন। এরপর ২০০৭ সালের ২১ ডিসেম্বর কোরবানির ঈদও ওই সাবজেলেই উদযাপন করেন তিনি। ওই কারাগারে ৩৭২ দিন কাটানোর পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে মুক্তি পান।
১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর কয়েকবার গ্রেপ্তার হন খালেদা জিয়া। এ ছাড়াও এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর গ্রেপ্তার হন তিনি। তবে তখন তাঁকে বেশিদিন কারাবন্দি থাকতে হয়নি।
গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ফের অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় কারাবন্দি হয়ে সাজা ভোগ করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
Leave a Reply