দেবহাটা প্রতিনিধি: দেবহাটায় শালিসের নামে ইউপি সদস্য নির্মল কুমার মন্ডলের মধ্যযুগীয় কায়দায় বাঁশ দিয়ে পেটানোর নির্মম শারিরীক নির্যাতন-অপমান সইতে না পেরে আয়রা বেগম (৭৫) নামের এক অসহায় বৃদ্ধা মহিলা শালিস মজলিশেই বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করছে। এসময় বৃদ্ধা আয়রা বেগমের ছেলে আয়ুব হোসেন ও মেয়ে মাফুরা খাতুনকেও পিটিয়ে জখম করে ইউপি সদস্য নির্মল। এঘনার পর বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী বৃদ্ধা আয়রা বেগমকে তার পরিবারের সদস্যরা সখিপুর হাসপাতালে ভর্তি করতে গেলে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য তার অপকর্ম ঢাকতে সরকারি হাসপাতালে না নিয়ে স্থানীয় ঈদগাহ বাজারের গ্রাম্য ডাক্তার ইসলামের চেম্বারে মূমুর্ষূ অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। শুক্রবার বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের কাজীমহল্যা গ্রামে এঘটনা ঘটে। বর্তমানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন বৃদ্ধা মহিলা আয়রা খাতুন। তিনি সখিপুরের কাজীমহল্যা গ্রামের পঙ্গু দলু গাজীর (৮৫) স্ত্রী। এঘটনায় সখিপুরের কামটা গ্রামের কানাই লাল মন্ডলের ছেলে ইউপি সদস্য নির্মল কুমার মন্ডল ও কাজীমহল্যা গ্রামের বাবর আলীর ঘর জামাই শাহিনকে আসামি করে দেবহাটা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভিকটিম বৃদ্ধার ছেলে আয়ুব হোসেন। দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে বৃদ্ধার ছেলে আয়ুব হোসেন ও তার স্ত্রীর মধ্যকার পারিবারিক গোলযোগ সৃষ্টি হয়। এঘটনায় গত রবিবার স্থানীয় কেন্দ্র করে বাবর আলীর ঘর জামাই শাহিন আয়ুব হোসেনকে নিজের বাড়ীতে ফেলে পিটিয়ে জখম করলে আয়ুব হোসেন বিষয়টি নিয়ে মেম্বর নির্মলের কাছে বিচার দেন। এরই মধ্যে মেম্বর নির্মল শাহিনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে শাহিনের বাড়ীর উঠানে শালিস চলাকালে সুষ্ঠ বিচার না করে বরং উল্টো আয়ুব হোসেনকে বাশ দিয়ে পেটানো শুরু করে। এসময় আয়ুব হোসেনের পচাত্তর বছর বয়সী অসহায় বৃদ্ধা মা আয়রা বেগম ও বোন মাফুরা খাতুন বাঁধা দিতে গেলে শালিসের মধ্যেই মধ্যযুগীয় কায়দায় বৃদ্ধা আয়রা বেগমকে মাটিতে ফেলে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাথি মারার পাশাপাশি অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে মেম্বর নির্মল। মারপিটের একপর্যায়ে শারিরীক নির্যাতন ও অপমান সইতে না পেরে বৃদ্ধা মহিলা আয়রা বেগম শালিসের ঐ মজলিশেই বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। মূমুর্ষূ অবস্থায় তাকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করতে চাইলে আয়রা বেগমের ছেলে আয়ুব ও নাতি সিরাজুলকে হত্যা করার হুমকি দিয়ে বাধ্য করে স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তার ইসলামের চেম্বারে আয়রা বেগমকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় ইউপি সদস্য নির্মল কুমার মন্ডল। এঘটনায় দেবহাটা থানায় ইউপি সদস্য নির্মল ও শাহিনকে আসামী করে অভিযোগ দায়েরের পর থানার উপপরিদর্শক জুয়েলকে তাৎক্ষনিক তদন্তপূর্বক আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনসহ মূমুর্ষূ বৃদ্ধা আয়রা খাতুনকে সখিপুরস্থ সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে জরুরী চিকিৎসা নিশ্চিতের নির্দেশ দেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা। এদিকে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নির্মল কুমার মন্ডল ক্ষিপ্ত হয়ে এবং নিজের অপকর্ম ঢাকতে ভিকটিম বৃদ্ধার ছেলে আয়ুব হোসেন, মেয়ে মাফুরা খাতুন ও নাতি সিরাজুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করার হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারটির।
Leave a Reply