কালিগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পাক হানাদার মুক্ত দিবস পালিত


কালিগঞ্জ ব্যুরো: ২০ নভেম্বর কালিগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার ও তাদের এদেশীয় দোসরদের কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল কালিগঞ্জ অঞ্চল। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কালিগঞ্জ ইউনিটের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে। ২০ নভেম্বর (মঙ্গলবার) প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসটির শুভ সূচনা হয়। সকাল সোয়া ৮ টায় মুক্তাঞ্চল স্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ, সাড়ে ৮ টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে ও শহীদ ইউনুচ এর কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করা হয়। সকাল ৯ টায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী পার্কে অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন প্রাঙ্গনে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল সাড়ে ৯ টায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল, কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুদ্ধকালীন কমান্ডার আলহাজ্জ্ব শেখ ওয়াহেদুজ্জামান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরদার মোস্তফা শাহিনসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরবর্তীতে সোহরাওয়ার্দী পার্কে শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কালিগঞ্জ ইউনিটের সাবেক কমান্ডার আলহাজ্জ্ব শেখ ওয়াহেদুজ্জামানের সভাপতিত্বে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিটের কমান্ডার মোশারাফ হোসেন মশু। মু্িক্তযোদ্ধা সংসদ কালিগঞ্জ ইউনিটের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাকিমের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কালিগঞ্জ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এসএম গোলাম ফারুকের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কালিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিরুল ইসলাম, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান হাফিজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার আবু বক্কর সিদ্দিক, সাতক্ষীরা সদর কমান্ডার হাসানুল ইসলাম, আশাশুনি উপজেলা কমান্ডার আব্দুল হান্নান, তালা উপজেলা কমান্ডার মফিজ উদ্দীন, শ্যামনগর উপজেলা কমান্ডার দেবীরঞ্জন মন্ডল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড জেলা ইউনিটের আহবায়ক আবু রাহান তিতু, সদস্যসচিব ও দৈনিক পত্রদূত’র সম্পাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতি, মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এসএম মমতাজ হোসেন মন্টু প্রমুখ। ২০ নভেম্বর উপলক্ষে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন চারণ কবি বাবর আলী সরদার ও শিশু হাসনা হেনা। মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দ জেলার বিভিন্ন স্থানে পাক সেনা ও তাদের এদেশীয় দোসরদের সাথে সংঘঠিত যুদ্ধ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতাপূর্ণ কর্মকান্ড সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেন। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ^াসী শক্তিকে পূণরায় ক্ষমতায় নিয়ে আসার জন্য সকল মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।
এছাড়াও বাদ জোহর সকল শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা, দেশ ও জাতির অগ্রগতি, সম্মৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠান, মন্দিরে প্রার্থনা এবং প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *