ঢাকা ব্যুরো : ফ্লোরিডার হোটেল লবির ঘটনার ব্যাখ্যা দিলেন সাকিব আল হাসান। বলেছেন, অনেক সময় এমন কিছু পরিস্থিতির উদ্ভব হয়, যে সময়গুলোতে নিজেদের ঠিকমতো সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখতে বেগ পেতে হয় ক্রিকেটারদের।
ফ্লোরিডার হোটেলে ভক্তের সঙ্গে সাকিব আল হাসানের মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা তোলপাড় ফেলেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে হোটেলে ফেরার পরপরই এক ভক্তের সেলফি ও অটোগ্রাফের বায়না থেকে পুরো ব্যাপারটির সূত্রপাত। সাকিব বায়না মেটানোর পরেও সেই ভক্ত আরও বেশি কিছু আশা করেছিলেন তাঁর কাছ থেকে। বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সে ব্যাপারে রাজি না হওয়াতে বাজে মন্তব্য করে বসেন সেই ভক্ত। সাকিবও খেপে যান, তেড়ে যান সেই ভক্তের দিকে। মাথা গরম করেই হয়তো, একটু বাজে অঙ্গভঙ্গিই করে বসেন তিনি। ব্যাপারটা নিয়ে এখন সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্কের ঝড়। অনেকেই ভক্তের সমালোচনা করছেন। অনেকেই আবার বলছেন, ভক্ত তারকার কাছে অনেক কিছুর আবদার করতে পারে, কিন্তু তাই বলে তারকা কেন বাজে অঙ্গভঙ্গি করবেন। তবে সাকিব তাঁর ফেসবুক পেজে নিজেই পুরো ঘটনাটির ব্যাখ্যা দিয়েছেন। পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, অনেক সময় এমন কিছু পরিস্থিতির উদ্ভব হয়, যে সময়গুলোতে নিজেদের ঠিকমতো সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখতে বেগ পেতে হয় তারকা ক্রিকেটারদের।
সাকিব তাঁদের (ক্রিকেটারদের) যেকোনো অপারগতাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার ও ব্যক্তিগতভাবে না নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁর পোস্টে, ‘আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ থাকবে যে আমাদের মধ্যে কেউ যদি আপনাদের অনুরোধ রাখতে না পারি তবে তা ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না কারণ আমরা যে পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি তা হয়তো আপনি যা দেখছেন তা থেকে ভিন্ন হতে পারে। হুটহাট আমাদের পরিস্থিতি বিবেচনা না করে কিংবা আমরা কেমন মুডে আছি তা বোঝার চেষ্টা ছাড়াই কোনো সিদ্ধান্ত বা মতামত দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন না।’
সে রাতে হোটেল লবিতে যা হয়েছিল তার ছোট্ট একটা বর্ণনাও দিয়েছেন সাকিব, ‘সম্প্রতি আমাকে নিয়ে একটি ভিডিও আপলোড করা হয়েছে, যেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পর লবিতে আমাকে ও আমার তথাকথিত “ফ্যান”–এর সঙ্গে তর্ক–বিতর্ক করতে দেখা যায়। এই ভিডিও ক্লিপটি সম্পূর্ণ ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করে না। পরপর ম্যাচ থাকায় আমি এবং আমার সহকর্মী বেশ ক্লান্ত ছিলাম। আমরা আমাদের রুমে ফিরে যাচ্ছিলাম। আমরা আমাদের নিজস্ব সরঞ্জাম এবং ব্যাগ বহন করছিলাম তাই আমাদের হাত পূর্ণ ছিল, তাই কোনোভাবেই অটোগ্রাফ দেওয়ার অবস্থায় ছিল না। আমরা সর্বদাই আমাদের ভক্তদের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করি এবং তাদের সঙ্গে ছবি তুলে, অটোগ্রাফ দিয়ে মুহূর্তগুলো ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু ভক্তদেরও বুঝতে হবে আমরাও মানুষ।’
ভক্তদের প্রতি নিজের ভালোবাসা পুনর্ব্যক্ত করেছেন সাকিব তাঁর পোস্টে। আশা করেছেন, ভক্তরাও তাঁকে সঠিকভাবে বুঝতে পারবেন, ‘আমি আমার ভক্তদের অসম্ভব ভালোবাসি এবং আমি মাঠে তাদের জন্যই খেলি সেটা জাতীয় দলে হোক কিংবা কোনো লিগের জন্য হোক। একই সঙ্গে আমি আমার ভক্তদের কাছ থেকে সম্মান, ভালোবাসা এবং তারা আমাকে বুঝবে এমনটাই আশা করি।’
অতি সমালোচকদেরও এক হাত নিয়েছেন তিনি, ‘আমি জানি কিছু মানুষ, যারা হয়তো আমাকে ফলো করে অথবা করে না, কিন্তু সর্বদা ছোট ছোট বিষয়ে আমাকে নীচু করতে পছন্দ করে। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই আমাদের থেকে ভালো কিছু প্রত্যাশা করতে হলে এই নীচু মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। প্রত্যেকটা ম্যাচে আমরা এমনিতেই অনেক বেশি চাপে থাকি, নতুন কোনো চাপ প্রয়োগ না করার জন্য বিশেষ অনুরোধ করা হলো। আর এই মানসিকতার বাইরে যাঁরা আছেন, আমি সর্বদা তাঁদের পাশে আছি।’
Leave a Reply